Skip to main content

Full text of "Girishchandra"

See other formats




পূর্ণ. বৌবনে__গিরিশচন্র ( ১৯৯ পৃঠ|) ০ 


উস ২৮০. :১ ৮:৬১ 





কাসিমবাজারাধিপতি 


মহ।রাজা স্তার্‌ মনীন্দ্রচন্্র নন্দী 


কে, সি, আই, ই মহোদয় 
মীশেজ্ু 


মহারাজ, 

গিবিশচন্দ্েব বচনার আপনি চিবদিন পক্ষপাতী গিবিশচন্দ্রও 
চিরজীবন মহাঁবাজেব প্রতি শ্রন্ধাবান ছিলেন। এই ভবসায় 
*গিবিশচন্ত্র* বাজ-করে সমর্পণ কবিতে সাহসী হইলাম । গ্রন্থপাঠে 
মহারাজ কিঞ্চিন্াত্র আনন্দলাভ কবিলে আমার সমস্ত শ্রম 
সার্থক হইবে। নিবেদন ইতি 


অনুগত 
শ্রীঅবিনাশচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় 


ই নিরিত নারির নে টিউটর 





্ 


০ পে 


স্থককিি 


ক 


১ সাদেক সা 





গিবিশচন্র 


প্রোটে-_ 


বীরভক্ত, সিদ্ধকবি, 
বঙ্গ রঙ্গভূমি-ববি, 
নটগুরু, নাট্যছবি 

সম্পদ ভাষার ! 
ধশ্ম-আত্মা, কম্মবীব, 
কৃতিপুজ ভারতীর, 
রামকুফ্চগত-প্রাণ, 

সর্ব রসাধার ! 
অমর লেখনী ধ'বে 
স্বজাতির স্মৃতি পরে 

লিখেছ €য নাম-_ 
চিরদিন উজলিয়ে রবে বঙ্গধাম। 


শ্ীদেবেন্্রনীথ বন্থু 





নিবেদন 


বহু মনীষী ও লেখক বলিয়! গিয়াছেন যে, “চবিত্র ও কীত্তি, এই দুইটা 
আখান-যোগা বিষয়; র্থাৎ, যাহাৰ চবিভ্রে বিশিষ্টতা আছে, ধাহাব 
কীত্ডতি সমাজের নিষ্বস্তবকে পরাস্ত আলোড়িত কবিতে পাবে, যাহার 
প্রভাব ব্হুজনের উপর ব্যাপ্ত, তাহাব জীবন-কথা লিখিয়া বাখিবার 
যোগা ।” এ বিবৃতি গ্রাহ্য কবিলে বলিতে হয়, গিবিশচন্দ্বের জীবন 
সম্পূর্ন আখ্যান যোগা | ১৭ বত্সব হইল, তাহাব মৃত্যু ঘটিয়াছে. তাহা 
স্হ্যুবৰ এতদিন পবেও তাহাব প্রভাব ক্ষ হওয়। দূবে যাউক, ববং তাহা 
সমুজ্ৰজল হইয়। উঠিতেছে বলিয়াই মনে করি। বঙ্গ-নাট্য-সাহিত্যের ও 
রঙ্গালয়ের সিংহাসন তাহাব অভাবে আজিও শূন্ত পড়িয়া আছে। 
একাধাঁবে গ্যাবিক ও সেক্সপীয়বেব শক্তি যদি কোনও ভাগ্যধব পুরুষে 
পুনঃ সংঘটনেব সম্ভাবনা ভয় তবে গিরিশেব শন্ত আসন পূর্ণ হইতে 
পারে। তাই তাহার দেশবাসী তাহাব অভাব প্রতিনিয়তই অনুভব 
কবিয়। থাকেন। এই তীব্র অভাব-নন্তভৃতি হইতেই স্পষ্ট বুঝা যায় যে, 
গিরিশচন্ছেব প্রভাব-প্রতিপত্তিব প্রসাব ও ব্যাপ্তি কত বেশী। 

১৩৯ সালে মৎ-সম্পা্দিত 'গিবিশ-গীতাবলী” ষখন প্রথম প্রকাশিত 
হয়, তখন তাহাব শেষভাগে গিরিশচন্দ্রের এক সংক্ষিপ্ত জীবনী অসম্পূর্ণ- 
ভাঁবে সন্িবিষ্ট কবিষাছিলাঁম ;__কেন না, গিবিশচন্ত্র সে সময়ে জীবিত | 
বল! বাহুল্য, তাহার সেই জীবন-কথা তীহাকে শুনাইয়া ভ্রমশুন্ত কবিয় 
প্রকাশের প্রয়াস পাইয়াছিলাম। সেই সময় হইতেই, গিবিশচন্ছের 
একটা স্ুবিস্তত জীবন-চবিত গ্রণয়নেব বামন! বলবতী হয়, এবং স্থযোগ-মত 
জীবনী উপাদান সংগ্রহে প্রবৃত্ত হই। গিবিশচন্র আমাৰ মনোভাব 
অৰগত হইয়া, তাহার জীবন কি ভাবে গঠিত, তৎসন্বন্ধে মধ্যে মধ্যে, 


৮5118) ৯ 


৪51 
2470) 


্বগীয় শিশিরকুমার ঘোঁ 





[| ৬ ] 

নান! রূপ গল্প কবিঠেন। তাহাব জীবনেব শেষ চতুর্দশ বসব (১৮৯৯ 
হইতে “৯১২ খুষ্টাব্ঘ) তাহার নিত্য সহচবরূপে থাকিয়া তাহা মুছে যে 
সকল কথা শুনিতাম এবং তাহাৰ চতুর্থা ভগিনী শ্নেহময়ী দক্ষিণাকালী, 
চতুর্থ প্রাঁতা! সতানিষ্ঠ অতুলকৃঞ্চ, তীহাব সুবোঁগা পুন্র- বঙ্গ -নাট্যশালাব 
শ্রেষ্ঠ নট শ্রদেয় শ্রীবুক্ত স্ুবেজ্্রনাথ ঘোষ (দানিবাবু) এবং গিবিশচন্দ্রের 
বন্ধ-বান্ধবগশেব মুখে তদতিবিক্ত যাহা কিছু অবগত হইতাম, তাহাই 
লিপিবদ্ধ কবিয়া রাখিতাম। 

গিপিশচন্দ্রেব পবলোক গমনের (১৩১৮ সাল ) পৰ ১৩২ সালে যে 
সময়ে “গিবিশ-গীতাবলী” দ্বিতীয় ভাগ প্রকাশ করি, সে সমযে গিবিশচন্দ্রেব 
জাবনীব শেষাংশ সংক্ষেপে বচিত হইলেও তাহাব সম্বন্ধে এত অধিক কথা 
তাগাতে প্রকাশিত হয যে, গ্রশ্থানি “গবিশচন্ত্র বা গিবিশ-গী তাখলী 
দ্বিতীয় ভাগ” নামে অভিঠিত কৰা সমীচীন বোধ কবি। 

যাহাঃ হউক, ততৎ্পবে গিবিশচন্দ্রেব একখানি সুরু জীবন-চবিত 
লিখিবাব নিমিত্ত অনেকেই আমাকে অন্রবৌধ কবেন। তীাঙ্কাদের বাব্য 
বক্ষা এবং আমারও বহুদিনেৰ জঙ্কল্প পিদ্ধিব নিমিত্ত বভ বৎসর ধবিযা 
উদ্যোগ-মাবোছন ও যথাসাধ্য পবিশ্রম কবিষ! এতদিন পরবে গিবিশচন্্রব 
জীবন-চবিত সাধাবণো প্রকাশ কবিতে অমর্থ হইয়াছি। বলিয়া বাখা 
ভাল, একান্তিক যত্ব সত্বেও গ্রন্থখানি মনোমত কবিয! প্রকাশ ক্তিে 
পাঁবিলাম না; কাবণ__-গিবিশচন্ত্র সম্বন্ধে এখনও অনেক কথ! বলিবাব 
আছে। গ্রন্থের অত্যধিক কলেবব বৃদ্ধিব ভে ধিবিত হইতে হইল । ভগবৎ- 
কপ! থাকিলে দ্বিতীষ সংস্কবণে গ্রন্থথানি ক্রুটিহীন কবিবাঁব চেষ্টা কবিব। 

পবম শ্রদ্ধাম্পদ নাট্যাঁচার্য্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বনু মহাশয়ের তনু গ্রহে 
এই গ্রন্থে বহু উপাদান লাভে রুতার্থ হইযাছি। আদি ন্যাসান্তাল 
থিয়েটারেব প্রবীণ নট শ্রীযুক্ত ক্ষেত্রমোহন গঙ্গোপাধ্যাঘ, গ্রেট স্কাসান্তাল 


ক 


টি 


/ 
রহ 





[9 ] 


খিয়েটাবেব স্বত্বাধিকারী স্বর্গীয় তূবনমোহন নিয়োগী, স্থ প্রসিদ্ধ অভিনেতা 
শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেব, প্রথিতযশা নট ও নাট্যকাব শ্রীযুক্ত অপবেশচন্ত 
মুখোপাধ্যায়, অদ্ধেষ স্থহাদ শ্রীযুক্ত শ্রুশচন্ত্র মতিলাল ও শ্রীযুক্ত কুমুদ্ন্ধ সেন, 
প্রতিভালম্পন। প্রবীণ। অভিনেত্রী শ্রীমতী বিনোদিনী দাসী প্রভৃতির 
নিকট এই গ্রন্থ প্রণয়নে অল্লাপিক সাহাধ্য লাভ কবিয়াছি এ নিমিভ 
তাহাদেব নিকট চিবকৃতজ্ঞ বহিলাম। 

স্থপ্রসিন্ধ সাহিতাক ও সমালোচক শ্রীযুক্ত অমবেন্দ্রনাথ বায় মহাশয় 
তৎ্-সম্পাদদিত সাবথা (১৩২৭ সাল) এবং বাসন্তী ( ১৩২৭২৮ সাল) 
'পত্তিকীধ মৎপ্রণীত গিবিশচন্ধ্রেব আংশিক জীবনী * এবং বঙ্গ নাট্যশালার 
ইতিহাস ধাবাবাহিকবশে প্রকাশিত কবেন। সেই সময় হইতেই তিনি 
গিরিশচন্দ্রে স্থবিস্তত একখানি জীবন-চবিত লিখিবাঁৰ জন্য আমায় 
সমভাবে উৎপাহিত কবিয়া আমিতেছিলেন। রচনা সৌষ্ঠব সাঁধনে- 
গ্রন্থেব গৌবব বন্ধনে প্রনৃত সহায়তা কবিয়া তিনি আমায় কৃতজ্ঞতা-পাশে 
বন্ধ কবিয়া:ছন। তীহাঁব এই গভীর স্হাদয়ত। হৃদয়ে চিব জাগরুক 
থা(কবে। 

পাঁবশেষে বাহাঁব সর্বতো ভাবে সাহাধালাভে এই গ্রন্থ স্ুসম্পন্ন কবিতে 
ঘমর্থ হইয়াছি, ঘিনি গিরিশচন্দ্র পবম আম্মীয় এবং বাল্যাবধি গিবিশ- 
চন্দ্রের গবম স্নেহপাত্র ও সহচর ছিলেন» ধাঁহাঁব দ্বাবা আমি গিবিশচক্রের 
সহিত প্রথম পবিচিত হই, সেই উদাব হুদয় পবম শ্রদ্ধাম্পদ শ্রযুক্ত 
দেবেন্দ্রনথ বন্থ মহাশযেব নামোল্েখ কবিতেছি। এই গ্রন্থেব পাঁওুলিপির 
অধিকাংশই তিনি দেখিরা দিয়াছেন এবং আবহকমত সংযোজন, 


স্পিন শী ্প্পাাীস্প্ী শপ শা পাপী | আর আশ 
পা সর (জি সস শপ সপ পাপা সপ আপন জ শট শা পপ শিপ পাপী শত শি শপ আস স্পা 


* তৎপব 'মজলিস' পত্রে (১৩৩০ সাল) গিরিশচন্দ্র সম্বন্ধে একটী ধারাবাহিক 
ইতিহাস বহুদূর পর্যন্ত প্রকাশিত হইয়াছিল। 


ন্যলীলায় 'নিতাই'এর ভূমিকায় 
শ্রীমতী বনবিহাবিণী (ভূী) 





[ ৮] 

মংশোধন 'ও পরিবর্ধন করিয়া আমাকে ছৃশ্ছেগ্গ কৃতজ্ঞতা-পাশে বদ্ধ 
কবিয়াছেন। 

ভোবতবর্ষ, প্রির্টিং বিভাগেব অধাক্ষ শ্রদ্ধেয় বন্ধু শ্রীযুক্ত বাঁমকুঞ্ণ ভট্টাচার্য্য 
মহাশয় এই গ্রন্থেব সৌষ্ঠবসাধন এবং মুদ্রণ-পাঁবিপাট্যে বিশেষ লক্ষ্য 
রাখিয়া আমাকে পবম বাধিত কবিয়াছেন। 

নাট্যাচাধ্য অমুতলাল লিখিয়াছেন,_-“দেহ-পট সঙ্গে নট সকলি 
হবাঁবায়!” এ কথা বাঙ্গলাদেশ-সন্বন্ধে সম্পূর্ণ সত্য। এদেশেব অনেক 
গ্রতিভাশালী অভিনেতা ও অভিনেত্রীবৰ অভিনয্র গ্রতিভাব পবিচয় 
আধুনিক পাঠক ও দর্শক-সমাজে অবিদ্রিতই আছে। সেই জন্য 
গিরিশচন্ত্রের এই জীবন-কাহিনীব মধো তাহাব সমসামারক বহু অভিনেত। 
ও অভিনেত্রীব অভিনয-কথ! অন্তনিবিছ কবিয়াছি। গুকব পৰিচয় শিশ্ঠে । 
অতএব গিবিশচন্ক্রেব সৃষ্টি-শক্তি বুঝাইবাব জন্ত তাহাব সহকম্মী ও শিষ্ক- 
বর্গেব কথাঁও বলা কর্তবাবোধ কবিয়াছি। 

আব এক কথাঃ গিবিশচন্দ্রেব নাম কবিতে গেলে বঙ্গার় নাট্যশালার 
কথা এবং বঙ্গীয় নাট্যশালাব কথা কহিতে গেলে গিবিশচন্দ্রের নাম ও 
কীর্তি স্বতঃই মনে উদয় হয়। একেব জীবনে সহিত অন্তেব জীবন 
অঙ্গাঙ্গীভাবে সংশ্রিষ্ট । কাজেই বঙ্গীয় নাটাশালাব ইতিহাসও যে ইহাতে 
বণিত হইয়াছে, তাহাব উল্লেখ নিশ্রয়োজন। 

ফলতঃ গ্রন্থখানি নুধীবৃন্দেব স্থখপাঠ্য ও হৃদয়গ্রাহী কবিতে যত্ব ও পরি- 
শ্রমের ত্রট৷ করি নাই,_-কতদূর কৃতকাধ্য হইয়াঁছি--শ্রীভগবানই জানেন। 


১৩নং বনপা! লেন, বিনীত 
ঝগবাজার, কলিকাত|। 
শ্রীঅবিনাশচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় 


৬ই কান্তিক, ১৩৩৪ সাল। 














51117 
ব ঠা 
মা 
] 
॥. 
(9 
51) 
] ] 
| 
. 
0.7] 
31 
| । 
। 
৯ 1 
মা । 
১ ্ 
/ 
1 । 
ঠ | 
4 
$ 
. 
রা 
তি 
৮ 
& 
্‌ 
) 
চা 
ধু ॥ । 
এ ? 
ফা) 
! 4 
| 
? 
| 4 
] ঢু 
| 
৮ ্ ঞ্র 
দা 1 ! 
/ ॥ 
| ৃ 
চি & 
2 
] 
] ॥ 
। 1 
1 ! 
1 । 
| 
4 
! 
. ৪ 
] 
ৰ । 
| 
ন্‌ ₹ 





স্টা-পত্র 
প্রথম পবিচ্ছেদ 


বিষয় 
বংশ-পবিচন-_তশ্ীর্দেব কথা--পিতাব প্রকৃতি_ তৎসম্বন্ধে 
কয়েকটা ঘটন।ব উল্লেখ -_মাঁতাঁমহ বংশ পবিচয 
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ 
জন্মোৎ্সব-__জন্মপত্রিকা__জননীব কঠিন গীড1-_বাগ্দিনীব 
স্তন্যপান-__বাল্যকথ|--শশা থাঁবাব গল্প-_পাঠশালায় প্রবেশ__ 
পৌবাঁণিক গল্প শ্রবণে অন্বাগ 
তৃতীয় পরিচ্ছেদ 
মাতৃন্নেহেব বিশেষত্ব _জ্ো্টব্রাতা ও মাত়বিয়োগ- “বুদ্ধদেব 
চবিত” নাটকে শেষোক্ত ঘটনাঁব ছায়৷ 
চতুর্থ পরিচ্ছেদ 
পাঠশালাব পাঁঠ শেষ-_গৌবমোহন আচ্যেব স্কুলে ভন্তি__ 
সহপাঠী খৃষ্টান অধ্যাপক কালীচবণ বন্দ্যোপাধ্যাযের উক্তি-_ 
হেয়াব স্কুলে প্রবেশ_পিতৃবিয়োগ--তাহার সম্বন্ধে নানা কথা 
পঞ্চম পরিচ্ছেদ 
জ্যেষ্ঠ ভগ্নী অভিভাঁবিকা-_সিপাহী বিদ্রোহে কলিকাতায় 
আতঙ্ক-_বিবাহ-_ভীষণ অগ্নিকাঁগু__স্বেচ্ছামত স্কুল পরিবর্তন-_ 
বিদ্যালয়েব পাঠ শেষ -“পশ্ চাঁবুকে বশ হয়ঃ মানুষ নয় 


২০-২৪ 


*৫-৩০৪ 


৩১-৩৪ 


3১৫১১১০৫৪৬৭ 





2 





কিউ পলিসি ভাবগাতাতাহাতরাত 


২ 


শা 





॥%৩ 


বিষয় 


ষষ্ট পবিচ্ছেদ 
গৃহে অধ্যযন--বিবাহে খোতুক-প্রপ্ত অর্থে গ্রন্থ ক্রয় 
ইংবাজি সাহিত্যে পাগ্ডিতালীভেব চেষ্টা_ স্বেচ্ছাচাবিতা-_ 
ব্রজবিহাঁবা সোমের অনুযোগে পুনবায় অধ্যয়ন আব ইংবার্জি 
কাব্যেব অনুবাদ-_মাতুল নবীনরুষ্ণ বন্গব পব্চিয় _গিবিশ- 
চন্দ্রেব তর্কশাক্ত ও পাঠলিগ্সা বন্ধনে তাহাব স্থকৌশল 
সপ্তম পরিচ্ছেদ 
পল্লীস্থ ভগবতী গাম্ছলীব বাটাতে হাঁফ, আঁখডাই-_-কবিবর 
ঈশ্ববচন্ত্র গুপ্তের সন্মান-_কবি হইবাঁব সাঁধ-_মাতৃ-ভাষায় 
অন্ববাগ-_কাঝ।গ্রন্থ পাঠ-_-কনিতা ও গাত বচন! 
অষ্টম পবিচ্ছেদ 
যৌবণেব উচ্ছঙ্খলতা-_পাড়া “বাটে দলেব হৃষ্টি-_ 
গিবিশচন্দ্র তাহাব নেতা__পীডিতেব সেবা--ভগু সন্গাসীগণের 
দও্ড বিধান--একগুয়ে প্রকৃতি__ছুইটী পটনা!--অফিসে গ্রবেশ 
নবম পবিচ্ছেদ 
নাটাজীবনেব সুত্রপাত--প্রাচান বঙ্গ ন+ট্যশালাব ইতিহ|স 
_ধনাঢ্য ভরনে সখেব থিষেটাব_-টিকিট সংগ্রহ দুঃসাধ্য 
বাপাব-_থিয়েটাৰ কবিবাব বাসনা__ব গবাজাবে সখেব যাত্রা 
-_ মাইকেলের “শন্িষ্ঠা'__যাত্রায় গীত বচন 
দশম পরিচ্ছেদ 
থিয়ে্টাবের স্চনা- নগেন্্রবাবুব আপত্তি _গিবিশচন্দ্রে 
“মধবার একা দশ+ অভিনয়-প্রস্তাব_-সকলের সম্মতি-_নাটকের 


পৃঠা 


৩৫-৪২ 


৪৩ ৪৬ 


8 ৭-৫০ 


৫১-৫৯ 





৮ 


5৪ 


1১1) ঠ১৫1৯215 


5০431৬ ৯৯)1৬) 


811৯1051521 ঠ১৫/৯1১৯)15 (৪ 


৬০০৯৮8৭ 


০ 


০০৬০৪ 





৪ 
ঠ. 1 
১২০০১৭১৯২১৬ 


47১ 
৯০১৬৬২৪ 






০১০০ 





॥/* 


বিশয় 
মহলা__গীত-সংবোঁজনা__অর্দেন্দুশেথবেব  যোগদান__“1079 
13181100770 45107550601 110)6৭ 016৮--4সদবাধ একাদশী? অভি- 
নর--গ্রন্থকাব দীনবন্ধু বাবুব আগমন-_মন্তব্য_-“ব্যে পাগলা 
বুড়ো”--একবাথে ২৬খা।ন গীত বচনা--৮াদনে “উধাহবণ” যাহা] 


একাদশ পবিচ্ছেদ 
“লীলাবতী” অভিন্য প্রশ্থাব শ্তায়া বঙ্গ“ঞ নিম্মাণে চটাদা 
সংগ্রভেব 'শশ্ঘল চে81-এঢনাগ দেবের পিচ স্থাৰা বন্থমথ, 
নিশ্মাণে তাহাবও উদ্ভম_-নিল্দীণকাধ্য আস্ত - ব্রজবাবুব মৃত্যু 
_গিবিশচন্দ্রব ভন্টবোধে অমম্দুর্ণ গঞ্চ বাগবাজীব সম্প্রদায়কে 
দান- বহ্ষিমচন্দ্র ও অথ য় সবকাঁবের শি বিধানে চু টুডার 'লালা- 
বতী+_ বাগবাজাৰ সন্রদাষের উত্ডেজনা-অমুতলাল বস্থ__ 
বাঞজেজ্জলাল পালেব বাটাতে বর্দনঞ্চ শিন্ম।ণ- গ্টাসান্তাল 
থিয়েটাব। নামকবণ--*লীলাবতী” নাটকে অভিন্য়__-দীনবন্ধু 
বাবুব উল্ভাম--“ছুঞো ব্িম !” 
দ্বাদশ পাবিচ্ছেদ 
নীলদপ+ত ন।টকেব নিহাবস্ত।ল - ঠাদ। সংগ্রহ-_ভূবন- 
মোহন নিযোগীব মগাগভতি_তীহ্াব গঙ্গ।তাবন্থ বৈঠকখানায় 
মহল]-_টিকিট বিত্রয়ে 'নীলদর্পণ” অশ্িিনর প্রন্তাব__গিবিশচন্ত্রেব 
অমন্মতি- _সম্গ্রদায়েব সহিত খিচ্ছেদ--গ্লেধাম্রক গত বচন 
ত্রয়োদশ পবিচ্ছেদ 
“বশ্বকোব ও গিবিশচন্দ্র-_বঙ্গীয় নাট্যশালাব হতিহাঁস-__ 
তুল ভ্রান্তি--তৎ্মান্বন্ধে আলোচন! 


পৃঠা 


৬০-৭২ 


৭৩-৮৫ 


৮৬ ৯১১ 


৯২-১৩০৬ 


পাস 
জিলা পট 








/০ 
বিষয় পৃ্া 
চতুদ্দশ পরিচ্ডেদ 
বঙ্গীয় সাধাবণ নাট্যশালাব প্রতিষ্ঠা__ন্টাসান্াল থিয়েটাব 
কন্তৃক প্রথম “নীলদর্পণ” অিনয়-__দীনবন্ধুবাবুব আঁক্ষেপ-_ 
তাহার সমস্ত নাদকেব অভিন্যয _বুধবাবেও অভিনয় আরম্ত-_ 
শব শো কপেযা”__গিবিশচন্ডেব শ্সাপান্তালে যোগদান _ “কষ- 
কুমাবা” অভিনয়-_মাইকেলেব আঁগমন-__তীহাব মন্তবা__ 
ক্ঞকুমাবাকে কোলে কবিরা নৃত্য-_ভীমসিংচ্কেখ ভূশিকাঁষ 
গিবিশচন্দ্র-_নাটোব্ঠধিপতিব স্বায় বাজপবিচ্ছদে গিরিশচন্দ্রকে 
সজ্জিত কখণ--বঙ্গালয়ে বিশিষ্ট ইংবাগ দর্শক__-ভাঁণতম'তা ও 
ক্ষদ্র ক্ষুদ্র বঙ্গাভিনষ-_ প্রম্টাবেব ত্যষ্টি--সম্প্রদায মধ্যে ্যাজ্ম- 
কলহ--.ঝড়-বুষ্টতে থিষেটাব বন্ধ-_বঙ্গ-সাহিতো ১৯৭৯ সাল ১*৭-১২৩ 
পঞ্চদশ পবিচ্ছেদ 
খিয়েটাবে দলাদলি -হিন্দ্‌ স্তাস+ন্যাল ও ন্যাসান্টাল-_হিন্দ 
2]সাম্তালের অপেবা হাউসে "শর্দিষ্ঠা” অভিনর-_ঢাকায গমন-_ 
মেয়ো হসপিটালে ও [01701871৮00 15500150101এব 
সাহাধ্য বজনী - ন্াসান্তাল থিয়েটাব কর্তৃক দুই বাঁত্রি টাউনহলে 
নীলদপ্ণ ও সধবাব একাদশী অভিনয়--উড সাহেব ও 
নিমটাদের ভূমিকায় গিবিশচন্দ্র--বাধাকা ন্ত দেবেব নাট-মন্দিবে 
কষ্তকুমারী__“কপালকুগুলা" অভিনয়-বাত্রে কপালকুগ্ুলাব খাতা 
উবি_ সম্প্রদায় মধ্যে হুলস্থুল-_-গিবিশচন্দ্র [:0707607-_ মুখে 
মুখে সকল ভূমিকা অভিনয় কবান- হিন্দু স্তাসান্তালেব হৃষশ 
শ্রবণে স্যাঁসান্তাল সম্প্রদায়ে ( গিবিশচন্দ্র বযতাত ) ঢাকায় 
গমন-_প্রতাযাবর্তন-_উভয় সম্প্রদায়েব পুনমিলন ১২৪-১৩২ 





ঠাস 





/৩০ 
বিবয় পৃষ্ঠা 
ষোড়শ পবিন্ছদ 


জন আ্যাটুকিনসন কোম্পানী অফিসে চাকুবী__মিসেস্‌ 
লুইসেব সহিত পবিচয়_-তীহাব সহিত নাটক ও অভিনয় 


সম্বন্ধে আলোঁচনা--অফিসেব ছাদে নীল শুকানব কথা ৩১-১৩৭ 
সপ্তদশ পরিচ্ছেদ 
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা-__তৎসগ্বন্ধে ছুই একটী গন্প-- 
চিকিৎসা পবিত্যাগ- গ্রন্থ পাঠে পুনবায় মনঃসংবোগ ১৩৭-১৩৯ 


অষ্টাদশ পবিচ্জেদ 
ধন্মজীতনেব প্রথমাবস্থা _নাস্তিকতা-_দৃগীগ্রতিমা খণ্ড- 
বিখণ্ড-_কালীনাথ বস্্রব ডাষেবী-বাঙ্ধ সমাজে যোগদান-- 
পরিত্যাগ --পিতৃভক্তি-_নিজমুখে ধর্ম-জীবনেব কথা ১৭০-১৪৬ 


উনবিংশ পরিচ্ছেদ 


পাবিবাবিক স্থখ ছুঃখ_-৬ষা ভগ্রী প্রসন্গকালীব অদ্ভুত মু ঠা- 
কাহিনী-_কবিতা-_নিত্যগোঁপালেব ভ্রাতনেহ-_চিৎপুবেব নাঁঠে 
শগালেব কথ_-১ম শিশুপুত্র ও ২য়া শ্রী কৃষ্ণকামিনীব মুত্্যু-_ 
৪র্থা ভগ্রী দক্ষিণাকালী ও ভাগিনেয় বিনোদবিহাবী সোম্ছে 
কথা-__৩য় ভ্রাতা কানাইলালেব মৃত্যু--২য় পুত্র স্থবেন্দ্রনাথ ও 
কন্ত! সবোঁজিনীব জন্ম--পাবিবাবিক শান্তি-_-অফিসে উন্নতি 
সথেব থিয়েটারে যৌগদান--পর্থ ন্রাতা অতুলকৃষ্ধেব ওকাঁলতি 
আবন্ত-_পুনবার অশান্তি-৩য় পুত্র প্রসবান্তে পত্রীর সৃতিকা 
পীড]__কনিষ্ঠ ত্রাতি। ক্ষীবোদচন্দরের মৃত্যু ১৪৭+১%% 


প্রফুল্ল” নাটকে যোগেশের ভূমিকায়__-গিরিশচন্ত্ 
“আমার সাজান বাগান শুকিয়ে গেল?” (৩৫৩ পৃষ্ঠা) 





% ৩ 


বিষয় পৃষ্ঠা 
বিংশ পিচ্ছেদ 
বেল থিয়েটাব প্রতিষ্ঠা কমিটি সংগঠন- মাইকেলের 
স্ত্রীলোক দ্বার! স্ত্রীচবি এ অভিনয় প্রস্তাব__িগ্যানাঁগব মহাশয়ের 
অসম্মতি--সংঅ্ব ত্যাগ--“মাঁয়া কানন”_মাইকেলেব মৃত্যু 
গ্রেট ভ্তাপান্তাল খিখেটারেব উৎপত্তি__প্রথমাতিনয় বাত্রে 
অগ্নিকাণ্ড -_মুণ!লিনী অভিনয়__পশুপতিব ভূমিকার গিরিশচন্দ্ 
_নাটক রচনাব প্রথম আভাস-_-কপালকুণ্ডলা ১৫৬-১৭২ 


একবিংশ পরিচ্ছেদ 


ওয়া ভগ্নী কৃষ্ণভাঁবিনীর মৃত্ু__পত্রী-বিয়োগ-_ম্যাকৃবেথ 
নাটকের অনুবাদ-_মফিস ফেল-ফ্রাইবাজ্জাৰ এণ্ড কোম্পানীব 
অফ্রিসে কাধ্য--ভাগলপুব-কবিতা বচনা--সর্বস্ব চুবি_ 


কলিকাতায় প্রত্যাগমন ১৭২-১৭৭ 
দ্বাবিংশ পরিচ্ছেদ 
শিশিবকুমাব ঘোষ-_ইপ্ডিয়ান লিগ--দ্বিতীয়বার দার- 
পরিগ্রহ--পার্কাৰ কোম্পানীব অফিস ১৭৭-১৮১ 
ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ 


. গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটাব-স্ত্রী-মভিনেত্রী গ্রহদ-_স্তী কি 
কলস্িনী--পুকবিক্রম-_সরোজিশী _রুদ্রপাল-_-নগেন্দ্র বন্দোব 
সহিত বিচ্ছেদ দি্লী ও পশ্চিম প্রদেশে অভিনয়-__-শক্রপংহাব__ 
তিলোভ্তমা সম্ভব-_শবৎসবোজিনী-__গোলাপস্থন্দবীব বিবাহ-_ 
স্থরেন্ত্র খিনোদিনী--জাতীয়তাব উন্মেষ _“গজদানন্দ' অভিনয়__- 
কর্ণাটকুমার-_হমুমান-চরিত্র-কাবাদণ্ত_হাইকোর্টে শোশান-_ 


3১0১8১5 


০-০৮৯১৮৯৯৯৬াল রিও সী পাশ পপ 








রা 


5৪৫৮১1151৬৩] ৮1152 








৪11) ৪৬ 1445 1৫২৮৮ ৪1145 14৬৮) ২2৪৮ 











২০৩৬ 


5522528 











॥: 

৭ 
11 

টা 

111 ৃ 
$1 

। 

1 

৯৮০০ 
ক 

1 1% চে 
]: ] 
1)£ 38 

হ)] 


2 
8 
- স্উনি 
চ 
2৪ 
৮ 





বিষয় 
দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ 
ধন্ম-জীবনেব তৃতীয়াবন্তা__শ্রারামকঞঝ্চদেবেক প্রথম হইতে 
সপ্তুবাব দশন ও তাহা আশ্রয়লাও 
ব্রয়োত্রিংশ পরিচ্ছেদ 
নাম-তক্তি প্র"াবেব য্গ- প্রহলাদ-চব্িত্র--মভিনয় দশনে 
শীবামকূসঃ _-বেঙ্গলে “প্রহলাদ কুপী'__নিমাহ সন্গাস_ শিশিব 
কুমাধ ঘোষ__[গিস্শিচপ্রকে শ্বামকঞ্ষেৰ আলিঙ্গন__প্রতাস- 
য্ত-__-“চল লো বেল গেল লো”__বুদ্ধদেব চবিত -স্বামী 
বিবেকানন-_“জুভাইতে চাই, কোথায় জুডাই,_ নন্দলাল বসুর 
বাটীতে ৬পৃজায় বলিবন্ধ__পুক্র শোকাতুব ভাক্তাব-_-থিবেটাবে 
গাব এডুইন্‌ আবনন্ড-_বিমঙ্গল ঠাঁকুব__“কঞ্চদণনের ফল রুঝ্ঃ 
দখন'- বিবেকানন্দ শ্বমীবধ মন্তবা-বেলিক বাজাধ--বপ- 
সনাতন - কোন কোন গোন্বামীব বিবক্তি 
চত্ুস্ত্ি শ পবিচ্জেদ 
আবামরুধ্চ ও গিবিশ5ক্র-_সন্দিপ্ধ চিত্তের কথাই কি 
2ভবেছিম, তোকে ঢ্যাম্না সাপে ধবেছে 7? গুবস্কপা- 
বকল্মা__গুকন্নেহ -আবদাব__কটুবাক্য-_“ধন্ত তোমাধ বিখাস- 
ভক্তি”__-অভয্ববাণী,“তোকে দেখে লোক অবাকৃ হনে বাবে”__ 
শ্রীবামকঞ্চদেবেব শিক্ষাদান কৌশল-_কানণা-পূঙ্জাঅগ্গলি- 
দান_-বিবেকানন্দেব সহিত তর্ক-যুদ্ব-_“লিখে নাও, যে ও হাঝ 
নান্লে 1৮-_ডাক্তাব মহেন্দ্লাল সবকার - শ্রবামকৃষ্ণের শ্রামুখে 
বেদান্ত-_প্পাচ সিকে পাঁচ"আনা বুদ্ধি” -“বিশ্বাম-ভক্তি মাঁক্ড়ে 
থ 


পৃ] 


২৯১১-৩০৪ 


৬5 ৪-৩৬ ৩ 


&। 


১১১১ 


৮া৮৭-:১১,, জুরে 
৪১ 


সিন 
।. ৮৯৯৮০০ 


পরলোৌঁকগতা--গোলাপন্থুন্দরী ( নুকুমারী দন্ত ) 





১০/৩ 


বিষয় পৃষ্ঠা 
পাওয়া যায় না+__গিবিশচন্দ্রে শক্তি সঞ্চার_-চবিজ্রেব বৈশিষ্ট্য-_ 
ওব ভৈরবে অংশে জন্ম*র-“বাবণেব ভাব--নাঁগকন্তা, 
দেবকন্তাও লিবেক -আবাঁব বাঁমকেও লিবেক ।” ৩১ ৭-৩৩৪ 


পঞ্চাত্রংশ পরিচ্ছেদ 
গোপাললাল থাল--্টাব থিয়েটাব বিক্রয়_-নববিভাকর 
সাধাবণী-এম।বেল্ড থিয়েটার প্রতিষ্ঠা_-পাগুব নির্বাসন-_ 
হাতিবাগানে ষ্টাব থিয়েটাব-_-এমাবেন্ডে গিরিশচন্ত্র__পূর্ণচন্ত্র_ 
শমভুচন্দ্র মুখোপাধ্যায়__বিষাদ _এমাবেল্ড ত্যাগ ৩৩৫-৩৪৪ 


যড়ত্রিংশ পরিচ্ছেদ 
দ্বিতীমা! পত্রী বিয়োগ- গণিত-চচ্চা--নসীবাম--স্টীবে যোগ- 
দন-__প্রত্প__হাবানিধি_-চ৩__মলিনা-বিকাশ_ মহাপূজা ৩৪৫-৩শ২ 


সপ্তত্রিংশ পরিচ্ছেদ 
অবস্থা বিপধ্যয় _শিশুপুল্রেব অদ্ভুত চবিত্র--পীড়া-_ 
বিবেকানন্দ স্বামীব সন্যাস মন্ত্রদান মৃত্যু - রব হইতে বিচ্ছিন্ন 
_বীণা ও সিটি থিয়েটাব-_হাঁইকোটে অভিযোগ-- ষ্টাবেব 
সহিত এগ্রিমেন্ট-_বিজ্ঞান-চচ্চা__গুকস্থান দর্শন__কামাঁবপুকুব 
_স্জয়বামবাটী__মিনার্ভ। থিষেটাব প্রতিষ্ঠা ৩৬৩-৩৭৪ 
অষ্টত্রিংশ পরিচ্ছেদ 
মিনার্ভায় গিবিশচন্ত্রব_নূতন দল গঠন _ম্যাকৃবেথ-অনবাঁদ 
ও অভিনয-_মুকুল-মুগ্তবা__মাবুহোৌসেন--সগুমীতে বিসর্জন__ 
জনা-__অর্ধেন্দুশখবের দএমাবেন্ড থিয়েটাৰ লিজ গ্রহণ-__ 
ণবিদুষকেব” ভূমিকাঁয় গিবিশচন্দ্র-_বড়দিনেধ বখসিস- স্বপ্নের 








অধটত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৮৭ 


00909 01085909113 &, 11501) 80889581০0০? 10001007716), 
9৪৮ 9: 7981)65 198)0 9000179019 19]):090096700, 0? ৪41 





/ 


০ ১০১৯১১৭০৮০১০৬০১১, সক ননী বাক ্হালসাস্বার্কসিকলিব কারান করিল বগ্রসকা হক 





১৩/০ 
বিষয় পা 
ফুল-__সভ্যতাঁৰ পাণ্ডাকবমেতি বাই-_ফণিবমণি--প্াঁচ 
ক'নে_ বেজায় আওয়াঁজ-_পুবাতন নাঁটকাঁভিনয়__মিনার্তাব 


সহিত বিচ্ছেদ ৩৭৫-৪১৩ 
উনচব্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
টটাবে পুনবায় গিরিশচন্ত্র--কালাপাহাড়__হীরক জুবিলী-_ 
পাবশ্য-প্রস্থন-_মায়াবসান- &াব পবিত্যাগ ৪১৩-৪২৬ 
চত্বারিংশ পরিচ্ছদ 
হাঁফ 'আখডাই -পাঁচালি-_গীত রচনা ৪২৬-৪৩২ 


একচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
কলকাতায় প্রেগ_ _বামপুব-বোয়ালিয়ায় গিবিশচন্দ্র-_ 
মাতাল থিয়েটার প্রেগে সংবীর্তন ৪৩২-৪৩৬ 
ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
অমবেন্ত্রনাথ দত্ত -_“সৌবভ” মাসিক পত্রেব সম্পাদকতা-_ 
ক্লাসিক খিয়েটাব প্রতিষ্ঠা-ক্লাঁসিকে গিবিশচন্দ্র_দেলদাব-_ 
পাঁগুব-গৌবব--পৌবাণিক চবিত্র__কঞ্চকী-চবিত্রেব বিশিষ্টতা 
_-পাণ্ডৰ গৌবব-রচনাব কথা-মিশার্ভায় দ্বিতীয়বাব__ 
নাঁট্যাকাঁবে সীতারাঁম-_উপন্তাম এবং নাটকে বৈশিষ্ট্য- নৃতা- 
গীত শিক্ষা-দানে গিবিশচন্ত্র-_উপন্তা ও নাটকে গীত-বচনাব 
পার্ক্ায-'খোদাব উপর খোঁদকাঁবী”_মণিহবণ--মণিহবণ- 
বচনাৰ কথা-_নন্দছুলাল- দোঁললীলা- পুনবায় ক্লাসিকে__ 
কন্ঠার মৃত্যু-_অশ্রধারা-_মনের মতন-হিন্দী গান ও স্বামী 
বিবেকানন্দ-_কপালকুগুলা__পাঁচটী ভূমিকায় গিরিশচন্ত্র_ 
হান্তরপাম্মক একটি দৃশ্য__মৃণালিনী- পশুপতি ভূমিকা- 


*3072/8৯1৮৮ 


৮৬০০,১৬৭র 





১০ 


বিষয় পৃষ্ঠা 
ভিনয়ে গিবিশচন্ত্রেব অসন্বমতি--অভিশাপ- শান্তি ভ্রান্তি__ 
তৎসম্থন্ধে মন্তবা--আয়না--সৎ্নাম ৪৩৬-৪৯৫ 
ত্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 


রেঙ্গালয' (সাপ্তাহিক পত্র)--“নাট্য-মন্দিব (মাসিক পত্র) 
চন্ত্রা-_বিবিধ মাসিক ও সাপ্তাহিক পরে গিবিশচন্দ্রেব বচনা ৪৯৫-৫০৯ 
চত্ুশ্ত্বাবিংশ পরিচ্ছেদ 
দ্বিতায়বাৰ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা__চিকিৎসা-নৈপুণা-_ 
কয়েকটি দৃষ্টান্ত-ডাক্তাব কাঞ্রিলাল ৫০৯-৫১৩ 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
অমববাবুব খণ__-মিনাতা” মনোমোহনবাবুব হস্তে চুনীলাল 
দেব_ থিপ্নেটাবে উপহাব-ক্লাসিকেব অবনতি- মিনা্তায় 
গিবিশচন্্র -মহেন্দ্রকুমাঁব হিত্র--হবগৌবী--বলিদান--সিবাজ- 
দ্বৌল৷__নবীনচন্দ্র ও ক্ষয় মৈত্রের পত্র-_সংবাঁদপত্রেব 
সমালোচনা__হাপানী পীড়াব স্ত্রপাত-_বাঁসর-_নাঁট্যাঁকাবে 
দুর্গেশনন্দিনী+ মীবকাসিম-য্যায়সা-কা-ত্যায়সা ৫১৭-৫৪৯ 
ষড়চত্বাবিংশ পবিচ্ছোদ 
কোহিন্ুবে গিবিশচন্দ্র_-টাঁদবিবি-__মিনার্তী ও কোহিনুবে 
“ছন্রপতি”_-কোহিন্থবের পতন-_মিনার্তায় পুনবায় গিবিশচন্ত্র ৫৫০ ৫৫৮ 


সপ্ততত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
শান্তি কি শাস্তি? __পীড়া বশত: ছুই বৎসর কাশী গমন-__ 
সিকৃরায় বামপ্রসাদদেব বাগানবাড়ী--ডাক্তার সাব+_কাশীব 
সুখ-স্বৃতি__শঙ্কবাচার্য্য-স্বামী সারদানন্দ_-শ্বামী বন্ধানন্দ-- 



















” র 4 ও শ ৫ 8 
1 ২২৮৮৮৬৯৪৮৭৬ পা রঃ * ৮৮ 
7 1 ১1৮1 
1 রা ৬ ঠা 
না 
এ 
রা 


৯:১৭ নং 


57511. (২), কপালকুগুলা 


চিক জল” গীতিনাট্ে লালু ও জুমেলিয়ার ভূমিকাঁর দানি 
২ কপালকুগুলা অভিনয়ে নবকুমার ও কাপাঁলিকের ভূ 


1 ঃ 


২৮, 










১1/৩ 


বিষর পৃষ্ঠা 
চন্দ্রশেখব'--অশোক-_শ্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায__মহেন্দর- 
কুমাব মিত্রেব হস্তে মিনার্ভা__স্বাস্থ্যভঙ্গ _ প্রতিধ্বনি _তপোবল 
_গিবিশ-প্রতিভাস্ত।ৰ জগদীশচন্দ্র বন্থু ৫৫৯-৫৮৭ 
ষ্টচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
কবিবাজ শ্বামাদাস বাচস্পতি___ঘুুডাঙ্গয় “নবেন্দ্-কুটাব+__ 
ডাক্তাব ববাট ও ইউনিয়।ন-_'এ বসব ভাল ভাঁলয় কাটিয়া 
গেল”__হঠাৎ জ্রব--ডাঁঃ বিপিনবিচাঁবী ঘোষ__অনিদ্রা-ডাঃ 
ণাউন- শেখ দৃশ্য-_-চলো চলো+__-নেশা কাটিয়ে দাঁও'__ 
“রামকষ”__ শ্রীবামকুষ্ণ-শিশ্তগণেব ইষ্টদেবেব নামগান-_“বামকুষ। 
হরিবোল”_-মহানিদ্রা__কাশীমিত্রেব শ্মশান ঘাট-- লোক- 
সমুদ্র__ববনিকা ৫৮৭-৫৯৮ 
উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ 
গিবিশ-প্রসঙ্গ__( গিবিশচন্দ্রেব চিন্তা-ধাঁবা সংক্রান্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র 
আলোচনা ) ৫১১-৩২ ৭ 
পঞ্চাশৎ পরিচ্ছদ 
গিবিশচন্র ও নবীনচন্দ্র (নবীনচন্দ ও গিবিশচন্দ্ের পত্র বিনিময়) ৬২৭ ৬৪৭ 


পবিশিষ্ট 


(১) 
টাউনহলে শোকসভা-_-সভাপতি বদ্ধমানাধিপতি মহাবাজা- 
ধিবাজ-_বক্তাগণ- মাননীয় সাব্দাঁচবণ মিত্র শ্যাব গুকদাস 
বন্দ্যোপাধ্যায়-_ডাক্তীব চুণীলাল বন্থ--পর্ডিত স্থবেশচন্ত্ 
সমাজপতি--( “গিবিশচন্দ্র' শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ )-__মাঁননীয় 











| 
॥ 
| 
/ 
] 





শ্রীযুক্ত মনোমোহন পাঁড়ে 


১1%৬ 


বিষয় পৃষ্ঠা 
ভূপেম্্রনাথ বস্থ-_অমুতবাঁজার সম্পাদক মতিলাল ঘোষ--প্রভু- 
পাদ 'অতুলকুষ্* গোস্বামী_শ্রীযুক্ত বিপিনচন্ত্র পাল--পপ্ডিত 

পাঁচকড়ি বন্দোপাধ্যায়-শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন ৩৪৮-৬৬৩ 

(২) 

গিরিশচন্ত্র-স্বতিদভা_ _মনোমোহন থিয়েটার-_সভাঁপতি দেশবন্ধ 
চিত্তবপ্রন দাশ ষ্টার থিয়েটাব__সভাপতি পণ্ডিতবব শ্রীহীব্ন্্র- 
নাথ দর্ভ বেদান্তবত্র এম-এ, বি-এল-মিনাভী থিয়েটার 
সভাপতি মশমহোপাধ্যায় পণ্ডিত শ্রীদুক্ত হবপ্রসাঁদ শান্ত্রী এম-এ, 


সি-আই-ই-_গিবিশচন্দ্রেব মন্বমূন্তি _গিবিশ-পাক ৬৬৩-৬৬৭ 
(৩) 

নাটকে পঞ্চসন্ধি (সংস্কত অলঙ্কাব-শান্ত্রমতে বিশ্লেষণ ) ৬৮৬৭২ 
(৪) 

গৃভলক্মী ( গিবিশচন্দ্রেব পবলে।ক-গমনেব পৰ অভিনীত ) ৩৭২-৬৭৮ 





ভরম-সংশোধন 


৭৩ পৃষ্ঠায়__“দশম পবিচ্ছেদ” পবিবর্তে “একাদশ পবিচ্ছেদ? হইবে। 
৮৬ ৮ _-৬বসিকমোহন নিয়োগীব মধ্যম পৌত্র” পবিবর্তে 
 বসিকচন্দ্র নিয়োগীব তৃতীয় পৌত্র+ হইবে। 
১৯২ ৮” -_-১ম গীতের প্রথম ছত্র হইবে-_-গড় কবি বাপ ঘব চলি-_” 
১৫৯ ৮» -_ সর্ব শেষ ছত্রে 'পনেব বৎসর পৰিবর্তে “চৌদ্দ বদর 
হইবে। 





০7 
1১১1 
র্‌ $18 
10111111 
] 
11111118 


] রা ” ্ঁ গাল, শা পাক, ৫. পিপাসা টিটি 
৬. ॥ & 1. ১ ) ২ 
1119 | ৃ 








লিক 


রি 


১ 











|| 


বাপ ছি আরা তা উপ 


সাগর. 


2 আনি আলী আপদ পাল ই সি পা সিরাত সপ টি চাইত ডএস্ছত জবান ল্নিন সস্নেহ রাত 
৪৮ 





সা: টিলার. এড 


শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেব ( দৌহিত্র ক্রোড়ে) 


. 





চিত্র 
১। 
| 
ও | 


৬। 
ণ| 
৮ | 
চি, 
১৪ । 
১১ । 
১২। 
১৩। 
১৪ | 


১৫। 


১৬ | 
১৭। 
১৮। 


১৪ | 


০ | 


চিত্র-মুচি 


পৃষ্ঠা 
(গিরিশচন্দ্র (গ্রন্থ বস্তে ) 
বামনাবাধণ তর্কবত্ ৫৫ 
গিবিশচন্্র ( যৌবনে ) ৬৭ 
নখেন্্নাথ বন্দ্যোপাধ্যাষ ৭৩ 
ব্রজনাথ দেব ৭৪ 
ধর্মদাম হৃব ৭৬ 
দীনবন্ধু মিত্র ৮৪ 
ভুবনমে।হন নিযোগী ৮৭ 
অন্ধেন্দুশেখব মুস্তফী ৯৬ 
অনুতলাল বৰ ১০১ 
মাইকেল মধুসদণ দত্ত ১১১ 
গিবিশচন্্র (পূর্ণ যৌবনে) ১২৯ 
প্র (প্রৌটে) 

বিহাবীল।ল চট্টোপাধ্যায ১৫৭ 
শিবিশচন্দ্র (মুণালিনীর 

'পশুপতি' ভুমিকা) ১৩৬৪ 
কিবণচন্দ্র বন্দোপাধাধ ১৬৬ 
ন্েত্রমেহন গঙ্গে।পাধ]ায ১৭১ 
শিশিবকুমাব ঘোষ ১৭৮ 


বিনে।দিনী দাসী ( মোহিনী- 
প্রতিমায 'সাহানা” ভূমিকায ) ১২১ 
মহেন্্রলাল বনু 
অমৃতল।ল মিত্র 


৩৮ 


২৪৭ 


চিত্র পষঠা 

২২। র।মতাবণ সান্ন্াাল ২৫৩ 
২৩। শমুতল।ল মুখে।পাধ্যায 

( বেলবাবু ব| কাণ্তেন বেল) ২৫৭ 
২৪। গুশ্র,থ বায ২৭৬ 
২৫। বিনোদিনী দাসী ২৮৯ 
২৬। বনবিহারিনী দ।সী 'ভুনী" 

( চেতম্যলীলায় "নিতাই" ) বী 
২৭ গিরিশচন্দ্র (বিশ্রামে ) ৩০৫ 


২৮| গিবিশচন্দ্র ( অবিনাশচন্্র 


গঙ্গোপাধ্যায ও পরেশচন্দ্র সেন সহ) এর 
২। শ্রীত্রীরামকৃম' দেব 


৩০ | 


৩২৮ 
বিবেকানন্দ স্বামী রী 


৩১। গিরিশচন্ত্র (যোগেশের ভূমিকা 
_-ওহে একটা পযস! দাও না') ৩৫০ 
৩২। গিবিশচন্দ্র (এ ভূমিকায় "আমাৰ 
সাজান বাগান গুকিষে গেল' ) শর 
১৩। শ্ুকুমাবী দন্ত (গোলাপসুন্দবী) ৩৫৯ 
৩৪। নাগেন্দ্র বণ মুখোপাধ্যায ৩৭৩ 
৩:। তিনকডি দাসী ৩৮৭ 
৩৬। হবিমতী দাসী (গুলফম হবি) ৪*৭ 
৩৭। স্থশীলাবাল। দাসী এ 
৩৮ | দেবেক্দ্রনাথ বহু ৪১৯ 


৩৯। সুবেন্দ্রনাথ ঘোষ (দ।নিবাবু) এ 


সরাজন্দৌলা”র ভূমিকায় যুক্ত রেন্রনাথ বোৌষ (দানি বাবু) 





8৫ 1 


৪৬ । 


এ | 


৪৮1 


পৃষ্ঠা 
নবীহন্দবী দানী ৪১৯ 
'অমবেজ্রনাথ দর ১৩৮ 
বাঁস্ছমচন্দ্র চটোপাধ্যায ৪৫৫ 


'অধে(বনাথ পাঠক ও অমবেজানাথ 
দত্ত (ঝ।পালিক ও নবকুমাব) 5৭৪ 
ঈুবেজ্্রনাথ ধে।ষ ও বাণীমণি 
(লাদু ও জুগোলয।ব ভাঁমবয) এ 
গিবিশউন্দ্র ও বুহমকুমাণা 


(বঙ্গলাল ও গর্গাব ভামিকাধ) ৪৮৮ 
মনোমোহন পা্ে ৫১৮ 
চুনালাগ দেব 0২৯ 
গবেন্ধনাথ খোষ--'দানবাবু' 

( দিবাজদেল।ব ভুস্কায) ৫৩৫ 
তাও, হুন্দধী দ।মা ৫& ৬ 


দাবা দপ্রসাণ বিদ্য।(বনোদ ৫৫১ 


অপদবশচন্দ্র মুগোপাধ]ায ৫ ৭৫ 
বক্ষ নন্দ সামা ৫৬৮ 
সাবদানন্। শামা ৪ 


মন্দথনাথ পল (৬1দুবাবু ) ও 
নাধদাহন্দবা (৬িপোবল' নাটকে 


সানন্দ ও ব্রঙ্গখ্যদ্বের ভূমিকায়) £৮৫ 


৫৫ | 
৫৬। 


৫৭ । 


শিবিশচন্জ (কগ্রাবস্থায ) ৫৮৯ 
(এ) এুশানে ৫৯৭ 
গিবিশচন্দেধ হস্তাক্ষব ৬০৮ 


১৯ 


 চত্র 


৫৮ | 


৪৯ । 


পষ্ | 
৭৭ | 
শ৮ | 


পন 


নবানচন্দ্র (সপবিধাবে ) 


পৃষ্ঠা 


৬৩০৯ 


গিবিশচন্দ্র (বাদীক্যেব প্রাবস্তে) ৬৭, 


জাবেব আ ভব্য ভ্-_- 


গা রশচত্ড্া (1217 1:১6 ) 
গভাব চিন্তা 

ধ্যম 

সন্ধপ্প-বিকর্প 

বুণা ও বিবক্তি 

মাম্লাদে আটথান 
হধভিমঞ্জ 

([বভাখক। 

বপ-মুং। 


দঢ প্রাঙতজণ 
[বিবক্তি 

কপট শোব 
আতঙ্ক 

মাতাল 

কৌছুহল 

হঠাৎ ঢুঃ-সংবাদে 
“দাগ 

অপেক্ষায় 

চিন্ত। 


৬৩১৭ 
৬১৩ 
১১৫ 
৬১৭ 
১, 


৬২১ 


১৫৮ 
৬৬২ 


৬৬৬ 








০০ 








৫8৪ 














গিবিধচনড 


প্রথম পরিচ্ছেদ 


লথম্-সলিিজ্া 





উচ্চ বংণেঠ গিবিশসন্দ্বেৰ জন্ম । কলিকাহাব বাগবাজাবে বন্সপাডা 
নামে যে পলী আছে, নেহ পাপ সন্থান্ত কাদস্ত কুলোছণ নানকমল পোষেব 
মধান পুত্র শিপিশচন্দ্র | ইহাবা বালিব ঘোষ (সমাজ ), সৌকানান গো, 
মধ্যাংশ | গিগিশগন্দেণ ১৬ পর্ধায়। ইহান পূর্বপুকষেণ আদি খাপ গোষাডি 
কৃষ্ণনগপ। ভতগ হইছে ভাচাব। ঠবিপ।শে আসিরা খন কপেন। 
গিবিশচন্দ্েব বুগ্ধ প্রপিখামহ কলিকাতাৰ খাগবাজাণ অন্তৃগত, কণা প্রনা? 
চক্রবস্তীন স্্ীনে ম্থপ্রাসন্ধ নিঝোগীবেপ বাটীৰ সন্নিকটে আাগিন। প্রগমে ণাস 
করবেন । তাছার চগ পুধ, বানান এ কানিক | কান্তিক তন গপণগণ[ব 
অন্তর্গত (উপস্থিত খুলনা জেলার অন্তর্ৃক্ত ) নগহা গ্রামেন জমাদাৰ 
জগন্নাথ ভপ্প চোুধাব ভগ্রীকে পিবাহ কপি নিকটনণ্ী পাড়, গ্রামে 
বাইয়া বাস ধবেন। কান্তিংকব প্রপৌব্র ভীকৃপ্বাবু কণিকাভ|ব, 
বেঙ্গল 'সেক্রেটোবিবেটেব অন্ত হুক্কি ইন্সপেক্টান জেনাবপ মদ বেজি/্টিখন 
অফিনে কাধ্য কপেন। ঝ্টাহাব মুখে কান্তিকেব সংপ্বী পত্রী সর্থন্ধে 
এক চমৎকাব গন্প শুনিয়াহি। যাভাঁকে সঙ্বন্মিণী বলে ভিনি হাহাব 
মাদর্শা ছিলেন। তিনি স্বরং বিদুষধী ছিলেন এবং পতিন প্রত্যেক 








সি %$% ৮7 
7801987676)135: 
£8085371 ৪: 

ন রি 





শ্রীযুক্ত অপরেশচন্দ্র'মুখোঁপাধ্যায় 


২ গিরিশচন্দ্র 


কার্যে মহক।বিনীৰপে থাকিতেন। স্বমীব সহিত বিদ্যালোচনা কবিতেন 
ও বিষর়কার্ষো তাহাকে সুমন্ত্রণা দিতেন। এমন কি, স্বামী দ।বাবডে 
খেলিতে ভালবামিতেন বলিয়। তাঁহাব সহিত তিনি দাবাবড়ে খেলিতেন। 
স্বামীব স্তায় খড়ম পায়ে দরিয়া বেড়াইতেন,__ আবার স্বমীব মৃত্যু হইলে 
এই নিতাসঙ্গিনী সতীলক্্ী স্বামীব সহিত সহমৃত! হইয়া একত্রে স্বর্গধামে 
গমন কবেন। কান্তিকেব বংশধবগণ এক্ষণে নপাড়াতেই বাস কবিতে- 
ছেন। কর্মপলক্ষে কেচ কেহ কালাঘাটেব সন্গিকটস্থ মনোভবপুকুবে 
অবস্থান কবেন। 

বামলোচন গিবিশচন্দ্েব বর্তমান আনাসবাটা ( ১৩নং বন্থুপাডা 
লেন ) ভ্রন্ন বিয়া! তাঁভানে বাঁ কখিতে আবন্ত কবেন। তাহাব ছুই পুত্র 
_বামপণতন ও ভবিশচন্দ্র | কনিষ্ঠ ভবিশচন্দ্রেব পুত্রসন্তান ছিল না। তাহাব 
একমাত্র কন্তা বিন্দুবাণিনীব বাগবাজাবেব স্ুপ্রপিদ্ধ বসুবংশীষ স্বর্গীং 
গোগীনাথ স্ব সহিত বিবাহ হয। ইনি সাব জজ ছিলেন। তাহাব চবিত্র 
উন্নত ছিণ। স্ুপপ্ডি» ও সুলেখক শ্রীপুক্ত দেবেন্দ্রনাথ বন্থু তাহাবই পুত্র । 

জোঠ পামবতনেব পাঁচ পুত্র--বামনাবায়ণ, গঙ্গানাবায়ণ, হববি- 
নাবাযণ, নীলকমল এবং মাধব । খামবতন ব্যবসা দ্বাব। অর্থোপার্জন 
কবিনেন এবং পুত্রগণকে দত্বেব পঠিত লেখাপড়া শিখাইয়াছিলেন । কনিষ 
মধবেব অবিবাহিত অবস্থায় মৃত্যু ঘটে। অবশিষ্ট চাবি ভ্রাতাব মধ্যে 
নীলকমল বাতীত দকলেই নিঃসন্তান ছিলেন। নীলকমলব।বু কলিকাতায় 
সওদাগবী অফিসে এবং তীহাব অগ্রজ গঙ্গানাবায়ণবাবু যশোহবে একটা 
নীলকবৰ অফিসে কার্য্য কবিতেন। অন্ত ছুই ভ্রাতা পিতৃ-প্রদর্শিত 
ৃষ্টাস্তানুসাবে ব্যবদাকার্য্য লইয! থাকিতেন। 

পাঠকগণেব বুঝিবাব স্ুবিধাব নিমিত্ত একটা বংশ-তলিক প্রদত্ত 


হইল।-__ 





মধ্যস্থলে দানিবাবুর বাম পার্শ্ব ও অমরেন্দ্রনাথ দতের দক্ষিণে 
গিরিশচন্দ্রের দৌহিত্র শ্রীমান ছুর্গাপ্রসন্ন বন্থু। 
চিত্রের বাম পার্থ উপবিষ্ট গিরিশচন্দ্রের জামাত শ্রীধুক্ত.অঙ্গয়কুমীর বন্ছ | 


শ্মশানে গিরিশচন্দ্র | 
















চে 


প্রথম পরি হ্দ 


( 12১ ) ( ঢা 2) ( উঠত 2৪) (& 
1550, চিন |হি৬ 8৪৫%41১21৩ £৯1০৪৭৪. ২ 
ই খ ০ ৫ 
সা ঁ7টাটটটট ০০ লু 
(8) (18১৭ ) 18২৯ 102 ) (106 /০৪) (1818০) (12 18২) (উঃ তু) (12২১1) 
৭৮২৮৬ তে ই এ 1511০ ০১৩, ই (51511 উ/৮৯৯ 
৪ 












€ 18৮০ ৫ ৪11৯৮] ) রর ৮1122)5] ) পা (148 
রা মা ই জা 15811 
6১৩ 48152. 88151৯ ৮৪ ১/৮৩১১ 
| ] | _7া ৷ ৯৯ হাচি 
নর 
এরা এডি (৪৬) ০1১ 
নি | ্‌ স৪৫/৮৯]৯ 1৪৪১৮ 
ধ11511% ] ূ | 
| 
১511৬ 5115211৮ 


টিসি ৯১৯০০০০০:০১৯০. | 
| 
(2১৬ 12৬ ৯2১৩ 10841, 21৬৬ তই ) 


এ৯5121০2। উইল 5558231৯৯31) 





৪ গিরিশচন্দ্র 


গিবিশচন্দ্রের জন্মলাভেব পূর্ব্বে গঙ্গানাবায়ণ ও হবিনাবায়ণ ইহলোক 
ত্যাগ কবেন। ইহাদেব অবস্থা বেশ ভালই ছিল। নীলকমলবাু 
সওদাগব অফিসেৰ বুককিপাৰ ছিলেন। অস্টেগড ব্যাণ্ড হিলজাব 
নাহেবেৰ অফিস তাহাব শেম কর্মস্থল। বর্তমান অফিসেব নাম_ হিলজাব 
কোম্পানী । হিসাব বাখিবাৰ 1০015 [017) পদ্ধতি প্রবর্তিত কবিয়া 
হখকালে ইনি একজন নথ প্রসিন্ধ ঝুককিপাব বলিয়। প্রতিষ্ঠালা5ভ কবেন। 
তাক্ষবুদ্ধি প্রভাবে তিনি অফিসেব সাহেবগণেব বিশেষ প্রিয়পাত্র 
5ইয়াছিলেন। 

নীলকমলবাবুব সাতটা কন্তা এবং পাঁচটা পুত্রসন্তান হইয়াছিল। 
পথম একটী কন্া জন্মগ্রঃণ কবে- নাম কৃষ্ণকিশোবী , পবে একটা পুত্র 
নিতাগোপাণ, তত্পবে পব পন পাঁচটা কন্তা-_কষ্ণচকামিনী, কঞ্চভামিনী, 
দক্গিণাকালী, কৃক্খপঞ্চিনী ও 'প্রসন্নকালী; তাহাব পবে চাবিটা পুত্র 
গিবিপচন্ত্র, কানাইলাল, অতুলকুষ্চ ও ক্গীবোদচন্ছু, সর্বশেষে একটা 
কণ্)। | 


ক্রীছিগেোল কু! 


নীলকমণবাবু বিশিষ্ট নন্াস্ত বংশে কন্ত।গণেব খিবাত দিয়াছিলেন। 
প্রথমা কণ্যা কৃ কশোবীণ বিবাহ--কলিকাত।, পটলডাঙ্গাৰ সুপ্রপিদ্ধ 
বমানাথ মজুমদ[বেব ভ্রাতুষ্পুর গোবিন্দচন্ত্র মজুনদাবেন সহিত পম্পন্ন হয়| 
হা/পিমন বোডেন মোডে "বমানাথ মন্ধুমদাবেখ স্বাট” এখনও উক্ত 
রংশব স্মৃতি বঙ্গা কবিতেছে । উপস্থিত ঘথায় সুবিখ্যাত পগ্ডিত জীবানন্দ 
বিগ্তাসাগৰ মুহাশযেব বংশধবগণ বাস কবিতেছেন, এই ভিটাই গোবিন্দ 
চন্দের বাস্তভিটা ছিল। 


প্রথম পরিচ্ছেদ ৫ 


দ্বিতীয়া কন্তা কৃষ্ণকামিনীব বিবাহ-_ চুঁচুড়াব ন্ুপ্রসিদ্ধ সোমবংশীয় 
হবলাল সোমেব নহিত নিষ্পন্ন হয়। * 

তৃতীয। কন্ত। কৃষ্ণভামিনীব বিবাহ__-কলিকা তা, শ্তামপুকুবেৰ স্ুগ্রপিদ্ধ 
মল্লিকবংণীয় নিমকিব দাওয়ান কালীশঙ্কব মলিক মহাশয়েব পুত্র প্রসন্ন- 
কুমাৰ মল্লিকের সহিত সম্পন্ন হয়। 


শ্পর 
.৮ গীশি্ 
শত শপ | আশ শপ শিস আপ টি লি সপ শশী পাম্প পি -সীপ্পীশি্ম? আনম শাম শিপ | পপ চপ আর অর রর 


&* চুঁটুডা ঘে সমযে ওলন্দীজের অধিকারে ছিল, সে সময়ে ইাদের পূর্ববপুধ্ষ 
গমগায নোম ও ভোতারাম সো ভ্রাতৃদ্ববঘ ওলন্াীজদের অধীনে কাষ্য করিতেন । 
গ্/মরায মৌজদাবী বিভাগে এবং তোতারাম দেওযানী ব্ভীগে নিযুক্ত ছিলেন। উহার! 
“কবলমান্তর কর্মচারী ছিলেন না, চচড়ার বাণিজ্যে ওলন্দীজদের যাহা লীভ হইত, 
ইহার! তাহার কতক অংশ পাইতেন। এক সময়ে কোনও কারণে নবাৰ সিরাজদদোল| 
ামরাযকে মশিদাবাদে ধরিয়। লইয়। যান ;-_-এক লক্ষ টাক। দিয| তবে ইনি নিদ্ুতিলাভ 
বরেন। ইনি হুগাষক ছিলেন, নবাব ইহার সথমধর সঙ্গীত শ্রবণে উীকে 'রাঁজা' 
উপাধি এবং নভবৎ পখিবাৰ গ্গমতা প্রদান করেন। সে সমধে নবাব ব্যতীত কেহই 
নহবৎ রাখিতে গারিতেন না। উতিপুর্ধ্বে ইীদ্বের বশী রাজবলভ “রাজা” উগাঁধি 
লাভ করায ঞ%মরাঘ বাজা উপাধি গ্রভণে অসম্মত হন, এ নিমিত্ত তিনি নবাবের নিকট 
“বাবু' উপাধি প্রাপ্ত হন৷ অগ্যাবধি চু চডার বিখা।ত "্ঠামবাবুর ঘাট" ইহার ন।ম রঙ্গ 
করিতেছে । গঙ্গা মাছ ধরিবার জন্য জেলেদের যে গভণমেন্টকে কর দিতে হইত, 
অনেকের ধারণ! মে-__রাণী রাসমণি মেহ জলকর প্রথম তুলিয়। দিখাছিলেন। কিন্ত এ 
কথা ঠিক নহে। এই ম্ভামরাঘই সব্ধ প্রথমে লড র্লাইবকে অনুরোধ করিযা গলকৰ 


বন্ধ করেন। 

ইংরাজ-অধিকারে ইহাদের বংশের অনেকেই কেহ জজিগরতি, কেহ ব! সাব জজিয়তি 
কাধ্যে নিযুক্ত ভিলেন। এ নিমিত্ত চু'চুড়ার সোমেদের বাটা এখনও 'সদরওয়ালাৰ বাড়ী' 
বলি কথিত হয়। এই বংশেই স্থপ্রসিদ্ধ চিটিৎসক দয়ালচন্ত্র সোম এবং “মাইকেল 
মধুহদন দত্তের জীবন-চরিত' প্রণেত। কবিশেখর-্রীযুক্ত নগেন্্রনাথ সোম কবিভূষণ 
মহাশয় জন্মগ্রহণ করেন। 


্ 14শট৩০ 


চতুর্থা কন্তা দক্ষিণাকালীব বিবাহ--কলিকাতা, সিমলান সুবিখ্য।ত 
রামছুলাল সবকাবেব ভ্রাতুণ্পুত্র ভুবনেশ্বব দেবেব (সবকাব ) সহিত নিষ্পন্ন 
হয়। বিধবা হইবার কয়েক বসব পনে তিনি পিত্রালয়ে মাপসিযা অবস্থান 
কবেন এবং জোষ্টা ভগ্রী কৃষ্কশোবীন মৃত্ুব পল গিবিশচন্ত্রেব সংস।বে 

তনিই কর্রী হইযাছিলেন। 

পঞ্চমা কন্তা কঞ্চনঙ্গিনাৰ বিবাহ--কলিক|ভা, ঠনঠনিয়াণ প্রপিদ্ধ 
গোখিন্দ সব্কাবেন পুত্র তজনাথ বকা (দে) মহাশষেন সি সম্পন্ন 
হইযাছিল। 

মষ্ভা কন্তা কাণ্া প্রসন্নেব ( প্রসন্নবাশী ) শৈশবাবস্তা মুভা ঘচ 

সপুমা কন্ঠাব উলে্ নিষ্খযোজন | গিরবিশউক্কেোন জননী এই মুত 
কন্তাটা প্রসণ কণশিয়া ইনছ্দোক ত্যাগ কপেন। 


7১ 
ঈদ 


্লিভ্ঞাক্র শ্ীক্কুত্তি 


নীলকমলবানু গন্তীণ প্রকতিপ কেক ছিলেন, বনিণযনুদ্দি তাভাণ 
মপাধাবণ ছিল। কপউভা কলির কেহ াহাবে, ঠবাইছে পাপিত না। 
তাভাঁব অদাধাবণ স্বৃতিণক্তি ছিল । খিষষ সংক্রান্ত কোনও চিঠিপাত্র বা 
দশিলাদি লিখিবাব সময়ে কোনও বাক্তি ভাভাব সহিত “কাশ ও প্রয়োজনে 
দেখ] কবিতে আদিলে, ভিনি তাভাণ সহিত দথাবীতি কথাবার্তী কহিতেন, 
এবং সে বাক্তি চলিয়৷ মাইবামাত্র তীহাপ লেখনী অমনি আঁবাঁব চনিনে 
আবন্ত কবিত। কতদৰ পর্যন্ত লিখিয়াছেন, ভাহাব পুর্ব অসমাপ্ত ছ 
মাব পড়িতেন না বা পড়িয! লঈবাব আবগ্ঠকও হইত না, ভাত] তাহাণ 
স্মতিপটে ঠিক অঙ্কিত থাকিত 

পল্লীবাধিগণ বিষয়কর্মথে বা কোনও সামাজিক ব্যাপাবে তাহার 


প্রথম পরিচ্ছেদ ৭ 


অভিমত না লইয়া! কোনও কার্ধা কবিতেন না। তিনি মিতব্যধী, বুদ্ধিমান 
এবং দুবদর্শী ছিলেন। দয়ালু এবং পবোপকাবী হইলেও তাহাব বাহ 
আড়ম্বব ছিল না। পবোপকাব-কার্য্যে তাঁভাৰ বেশ একটু বিশিষ্টতা ছিল । 
দৃষ্টান্ত স্ববূপ আমব! কয়েকটা ঘটনার উল্লেখ কবিতেছি £__ 

১। বন্গুপাড়া পল্লীব জনৈক গ্ুহস্থ ঘুনক হঠাৎ পিতৃনীন হওয়য 
বড়ই সাংসাবিক কণ্টে পতিত হয়। নীন্কমলবাবু দয়'-পব্ধণ তইয়! 
তাহাব একটা চ।কুবী কবিয়] দিয়ছিবেন | কিন্তু সেই বুবাব মাছ ধবিব|স 
বড়ই বাতিক ছিণ,কোনও পুকুনে মাছ ধবিখন সুযোগ পানে, অধিস 
কামাই কবিছে ইতস্ততঃ কবি না। এইবগে প্রামই অদিন বামাতি 
হওয়ায়, একদিন সাহেব বিপক্ত হহয়। গাহাকে কার্যে জনাব দেন। 
পুবক্টী আবাব সাংসারিক কষ্টে পড়িয়া, নীঞ্চকমলবাবুকে ছাল একটা 
চাকুবীব জন্য ধনিয়া বসেন। ঘ্খকেব স্বভাবচবিত্র ভালই ছিন-দোষেন 
মধ্যে এ এক মাছ ধাঁবঝাব ঝেঁক ! নীলকমলবাবু গ্রকৃত অবস্থা! অবগত 
হইয়।৷ একটা স্রকোশল আবিষ্কাৰ কবিঞখেন। তিনি নিজে মুলধন দিষ! 
গুবককে কয়েকটা পুকুব জম কবিয়। দিজেন। মনোমত কাব্য পাইয। 
মূবকেব উৎসাহ বাড়িয়া গেল । বন] তহুপা, এই কার্যে যুবকেন আর্থিক 
অবস্থ/বও উন্নতি ঘটিয়াছিল। 

২। পন্নীস্থ জাব একটা কারস্থ ঘুবাব অনেক গুলি 'প্রতিপ।ণ্য ছিল, 
কিন্ত সেকোনও কাজকনম্মে নিঘুক্ত থাকিয়া পবিবনবর্গেন ভবণ-পোষণে 
মনোযোগী ছিল না__বড়লোকেব মোনাহেবী কবিয়া! বেড়াইভ-_গ্রাষই 
বাড়ীতে থাকিত না! । যুবকটীব পিতামহী, নীলকমলবাবুব নিকট আসিয়! 
সাংসারিক দুববস্থা জানাইধ কাঁদ।কাটি কবেন এবং পৌত্রকে একটা কাজ 
কবিয়! দিবার জন্ত ধবিম্সা বসেন। নীলকমলবাবু অনুসন্ধানে জানিতে 
পাবিলেন,__যুবকটী বড়লোকেব ছেলেদেব সহিত মিশিয়া তাহাদের 


৮ গিরিশচন্দ্র 


সখের কোচয়ানি কবে। গাড়ী হাকাইবাব শুধু সখ নহে--একটু শক্তিও 
আছে। ঘোড়াব শুশ্রাধা করিতে পাবে-_ঘোড়া চডিতে ভাল বাসে-_ 
আবার বাছিয়া বাছিয়া৷ নীবোগ ও নিখুঁত ঘোড়া কিনিবারও কতকট। 
'অভিজ্ঞত। জন্মিয়াছে। এজন্ত বড়লোকের ছেলেব। তাহাকে পছন্দ কবে 
এবং মাঝে মাঝে কিছু কিছু অর্থ-সাহাযাও করিয়। থাকে-_কিন্তু তাহা! আব 
বাড়ী আপিয়। পৌছায় না। 
_ মন্ধুষ্য-চবিত্র বুঝিতে নীলকমলবাবুব যথেষ্ট ক্ষমতা ছিল। কাহাকে 
কোণ পথে চালালে সে স্ুশৃঙ্খলায় চলিতে পাবে--তাল। তিনি বিশেষ 
রূপে বুঝিতেন। তিনি স্বয়ং চাকুবীজীবী হইলেও বোধ হয় নিজ বংশগত 
ব্যবসান্থুবক্তিব প্রভাব বশতঃ ব্যবসায় কাধ্যেব প্রতি তাহাব আগ্রহ ও 
সহান্তৃতি ছিল। যুবককে ডাকাইয়] নীনকমলবাবু বলিলেন,_-“গুনিতে 
পাই, সংসারে তুমি একটী পয়সা! সাহাধা কবো ন1। কায়স্থেব ছেলে 
হইয়। বড়লোেব বাড়ী সখেব কোচয়ানী কবিয়া বেড়াও। গাড়ী-ঘোড়ায় 
যখন তোমা'ব এত সখ, তখন আমি তোমাকে নিজে মুল্ধন দিয় চাবি- 
খনি ঘোড়াব গাড়ী কবিয়া দিতেছি,_ তুমি তাহা লইয়! ভাড়া খাটাও। 
ঘোড়াব ঘাস-দান1 ও গাড়োয়ানেব মাহিন| বাদ যাহ! থাকিবে, তাহা হইতে 
ভোমাঁব সাংসাবিক খবচেব ন্যায্য টকা বাদ দিয়! অবশিষ্ট যাহা বহিবে__ 
তাহা আমাব নিকট জমা দিবে। যতদিনে পাব--এইকপে আমাৰ 
মূলধন শোধ কবিষ। দিয়া, তুমি স্বয়ং গাড়ী-ঘোড়াব মালিক হও। প্রত্যহ 
আমি কিন্ত হিসাব দেখিব |” যুবকটা নীলকমল বাবুব এই বদান্তায় 
বিশেষ উৎফুল্ী হইয়া! উঠিল এবং দ্বিগুণ উৎসাহে এই ব্যবসারে বিশেষ 
লাভবান্‌ হইয়। নীলকমল বাবুব প্রদত্ত মূলধনের টাক! ক্রমে পবিশোধ 
কবিয়া দিল । 

৩। পল্লীস্থ আব এক গৃহস্থ ব্যক্তি কন্ঠাদায়গ্রস্থ হইয়৷ নীলকমল- 


প্রথম পরিচ্ছেদ ৯ 


বাবুর নিকট পাঁচ*ত টাকা খণ গ্রহণ করিয়/ছিলেন। তাহার হাপানীব 
গীড়া-_তাহাব উপব পানদোষ ছিল। বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় শ্বজনগণেব 
বিশেষ অন্থুবোধ ও উপদেশেও তিনি পানদোষ পবিত্যাগ করিতে পাবেন 
নাই। নীলকমলবাবুব সহিত ত্াহাব সর্ত ছিল,_প্রতি মাসে বেতন 
পাইলেই তীহাকে পনেব টাক] কবিয়। দিতে হইবে। তিনি অফিসে 
যাহা! বেতন পাইতেন, তাহাতে সংসাব খবচ চালাইয়! সামান্যই উদ্ত্ত 
থাকিত,__নীলকমলবাবুকে পনেব টাক। কবিয়া দিয়। এবং পানদোষেব 
খবচ চাঁলাইয়! মাসে তাহাকে চাবি পাঁচ টাকা দেনা করিতে হইত। 
নীলকমলবাঁবুব দেন! বখন ৪৫০২ টাকা শোধ হইয়। আদিল, তখন 
তিনি তাহার নিকট আপিয়া প্রার্থনা কবিলেন,_-“থাকী পঞ্চাশটা টাকা 
হইতে আমাকে নিষ্কৃতি দিন।” নীলকমলবাবু বালিলেন,_-“আমি 
তোমাব নিকট সুদ্র লইব ন৷ বলিয়াছি, কিন্তু আসল একটী টাকাও ছাড়িব 
না। তুমি মদ খাইয়া! থাক-_নেসাব পয়সা জোটে, আব আমাকে 
স্টাঘ্য পাওন। ছাড়িয়া! দিবাব জন্য বলিতে তোমা লজ্জ। হয় না?” 
নীলকমলবাবু বাশভাবি লোক ছিনেন। লোকটা আব তাহাব সম্মুখে 
বেশী কথা না কহিয়। বাড়ী ফিবিয়া যান এবং স্ত্রীকে নীনকমলবাবুব 
বাড়ীতে পাঠাইয়া৷ দেন। বাটাব মেয়েব৷ তীাহাব স্ত্রীব কাতবতায় নীল- 
কমলবাবুকে বাকী পঞ্চাশটা টাকা ছাড়িয়া দিবাব নিশিত্ত বিশেষ 


অন্থুরোধ কবেন। কিন্তু তিনি কাহাব৪ অন্ভুবোধ বক্ষ না কবিয়। পুর্ণ 
পাচ শত টাকা লইয়! তবে ক্ষান্ত হন। 


খণ পবিপোধেব প্রায় এক বৎসব পবে কঠিন গীড়ায় লোকটাব 
অকালে মৃত্যু হয়। বলা বাহুল্য তিনি কতকগুলি লোকে নিকট 
শুচর1 দেনা ব্যতীত আব কিছুই বাখিয়! যাইতে পাবেন নাই। অপোগও 
পুত্র-কন্তা। লইয়া তাহা অনাথিনী স্ত্রী বড়ই বিব্রতা হইয় পড়েন। নীল- 


১০ গিরিশচন্দ্র 


কমলবাবু তাহাকে বাটীতে ডাকাইয়। আনিয়। বলিলেন, “দেখ, 
তোমাব স্বামীকে মদ ছাড়িবাব জন্ত আমি অনেকবাব বুঝাইয়। ছিলাম । 
একে হাপানীব ব্যামো--তাহাৰ উপব এ সব অত্যাচাব সহ হবে কেন? 
_-পে ঘে আৰ বেগ্াদিন বাচিবে না, তাহা আমি অনেক দ্বিন বুঝিয়া- 
ছিলাম, এবং শাহাব মুত্যুতে তোমাদেবই বাকি অবস্থা হইবে, তাহাও 
ভাবিয়াছিলাম । এই জন্তই তোমাদেখ সকল্দেব এত অনুবোধে একটা 
পয়সাও ছাড়িৰ। দি নাই । মাজ সেই পাঁচশত টাকা দিতেহি-_ণইয়া 
য।ও। খুচপ। দেনাগুলি শোধ কবিযা বাকী টাকা নাঁবলকদেব মানুষ 
কবো11” নীলকমলবাবুব এই অপুর্ধ বদান্ততা 'ও দুবদশিতাব পব্চিয় পাইয়া 
পল্লীবাসিগণ চমক হইয়! উঠেন। ইতি পুর্বে তাহাকে কৃপণ খনিয়া। ধাভাধ। 
প্রচাব কবিহেন, তাহাবা'ও তাহাদেব ভ্রম বুঝিতে পাপিষা লাজ্জত হইলেন । 


হভ্ভ্ত-লগস্প-সভ্রলি্ক্স 


নীলকমলবাবু-__-কপিকাতা, দিমলা, মদনমিত্রেব লেন-নিবাসী প্রসিদ্ধ 
চুনীবাম বস্থুব পুত্র বাধাগোবিন্দ বস্থুব মধ্যম! কন্তা বাইমণিকে বিবাহ 
কবেন। ইহাবা বৈষ্ণব ছিলেন। বাধাগোবিন্দেন পুত্র নবীনরুষ্ণবাবু 
অসাধানণ প্ডিত ছিলেন । গিবিশচন্দেব উপর তীহাব এই মাতুলেব বিশেষ 
প্রন্তাব পবিলক্ষিত হয । তীহাবই শিক্ষা€কৌশলে গিরিশচন্দ্র বাণী-মন্দিবে 
প্রবেশ-দ্বাবেব সন্ধান পাইয়াছিলেন ৷ যথাসময়ে সে কথাব উল্লেখ করিব। 

মানবেব চবিভ্রগত দোষগুণ অনেক পরিমাণে বংশ-ধাবার লহিত 
প্রবাহিত হয়। পিতৃ-মাত্‌ উভয় বংশেব দোযগুণ বীজরূপে সকল মানবে 
বিদ্যমান থাকে, সময় ও সুযোগ মত তাহ অঙ্কুবিত হয়। অসাধাব্ণ 
বুদ্ধিমত্তা, কর্মকুশলতা, লোক-চবিত্র-জ্ঞান ও আত্মনির্ভবতা--এ সমস্তই 


প্রথম পরিচ্ছেদ ১১ 


গিবিশচন্ত্রের পিতৃ-সম্পত্তি। ভাবপ্রবণতা, বিদ্ান্ুবাঁগ, অধ্যয়নশীলতা, 
তর্কশক্তি-_গিবিশচন্দ্র তাহাব মাতুল নবীনকৃষ্ণের নিকট প্রাপ্ত হইয়া 
ছিলেন। গিবিশচন্দ্রেব হৃদয়-নিহিত ভক্তি-বীজ তাঁহাব মাতামহ বংশেব 
যৌতুক। দৃষ্টান্ত স্ববূপ গিবিশচন্দ্রের প্রমাতামহ পবম বৈষ্ণব চুণীবাম 
বন্থুব অদ্ভুত মৃত্যু-ঘটনা উলেখ কবিতেছি ৫ 

চুণীবামবাবু প্রত্যহ গৃহদেবতা৷ “গিবিধাবী”কে ( নাবায়ণ-শিল। ) অন্ন 
নিবেদন কবিয়। পৰে সেই প্রসাদ খাইতেন। একদিন আহানেব বহুক্ষণ 
পবে-_একটা উদগাব উঠে, সেই সঙ্গে গিবিধাবীব প্রসাব এক কণা অন্ন 
মুখ হইতে বাহিব হয়। ভিনি চমকিত হইয়া সেই প্রসাদ-কণা মস্তকে 
ধাবণ কবিয়। বলিলেন,__প্বখন গিবিধাবীব্‌ প্রসাদানন জীর্ণ ভয় নাই, 
গন আর প্রাণ বাহিব হইবাব বিলম্বও নাই। আমায় শীপ্র গঙ্গায় লইয! 
চল।” বৃদ্ধেব আজ্ঞ৷ ও আগ্রহাতিপধো সকলে সংবীর্তন সহ তাহাকে 
গঙ্গাতীবে লইয়! চলিলেন । তিনি খাট ধবিয়া পদব্রজে ভবিনাম কবিতে 
কবিতে যাইতে লাগিলেন। পথিমধ্যে ছাতুবাবুব বাড়ীন সম্মুখে আসিয়! 
মবসন্ন হইয়। পড়িলে তাহাকে খাটে শোয়াইযা দেওঘা! ভয়। ত্তীবস্থ হইমা 
হবিনাম কবিভে কবিতে তিনি গঙ্গাজলে দেহত্যাগ কবেন। 

তাহাৰব পোত্রী অর্থাৎ গিবিশচন্দ্রের জননীও পবম ভক্কিমতী 
ছিলেন। নীলকমলবাবুব গৃহদেবতা শ্রীধবজীব সেবা তিনি মতি 
নিষ্ঠ। ও ভক্তিব সহিত সম্পন্ন কবিতেন। বাটাতে একদিন বৃহৎ একটা 
কাটাল আসিয়াছিল। তিনি এর কাটালটা শ্রীধবজীক দিব্নে বণিষা 
মতে তুলিয়৷ রাখিয়াছিলেন। কিন্তু বাড়ীন ছেলেপুলেবা৷ বালক-বুদ্ধি 
ব্শতঃ তাহার অগ্রভাগ খাইয়া ফেলে । জননী অত্যন্ত কুপিতা। হইয়া 
তাহাদিগকে ভর্র্দনা ও প্রহাব কবেন। আশ্চর্য্যেব বিষয়- সেই দিন 
বাত্রে তিনি স্বপ্নে দেখিলেন, যেন শ্রীধবজী হাসিতে হাসিতে বলিতেছেন 


১২ গিরিশচন্দ্র 


_আমিও বাড়ীৰ ছেলে-পুলেব মধ্যে, অগ্রভাগ-তৃক্ত কাটাল আমাক 
খেতে দিলে কোন দেষ হবে না ।” 

গিবিশচন্দ্র বলিতেন,__”অ।মার পিতা একজন প্রসিদ্ধ 20০040120 
ছিলেন, ত/হাব বিষয়-বুদ্ধি অতি প্রথব ছিল; আব আমার মাতা কৌমল- 
প্রাণা ছিলেন,__খৈশবকাল হইতেই দেব-দ্বিজে তাহ।র অতিশয় ভক্তি 
ছিল, ঠাকুব-দেবতাব কথ! শুনিতে এবং দেবদেবীব স্তব পাঠ কবিতে 
তিনি বড়ই ভাল বাদিতেন। বৈষ্ণব ভিখাবী বাটীতে আদিলে পয়সা 
দিয়! গান শুনিতেন। আমি পিতাব নিকট বিষষ-বুদ্ধি 9 মাতাব নিকট 
কাব্যনুবাগ ও ভক্তি পাইয়াছি ।” 


এইবাৰ গিরিপচন্দ্রেব জোষ্ঠতাত বামনাবায়ণবাবুব কথা৷ উল্লেখ 
কখিয়। বংশ-পবিচয় শেষ কবিব। ইনি বড় দয়ার এবং অমায়িক 
ছিলেন,__অধিক বেলায় আহাব কবিতেন। আহাবেব পুর্বে একবাব 
পাড়ায় ঘুবিয়া, কেহ অভুক্ত আছে কি না, অনুসন্ধান কবিয়। আসিতেন। 
বামনারায়ণনাবু যেমন উদাব ছিলেন, তেমনই আবাব আমোদী ও 
মাদকপ্রিয় ছিলেন,_-শিধিশচন্দ্র জ্যাঠামহাশয়েক এই তিন গুণেবই 
উত্তবাধিকাবা হইয়াছিলেন। ও 

কিন্তু কেবল খংশান্ুগত দোষগুণ লইফ্লাই মান্ুষেব চরিত্র সম্পূর্ণ 
গঠিত হয় না। দেশ, কাল, শিক্ষা, সংস্কাব 'ও পাবিপার্থিক অবস্থা 
প্রীতি মানব-প্রক্কৃতিকে বিশিষ্টভাবে গড়িয়া তুলে। ইহার উপব 
মাবাব প্রতিভাব প্রভাব মাছে। প্রাতিভা বংশান্ুগত গুণ নয় চেষ্টায় 
উহ! অর্জিতও হয় না,_-নব নব উন্মেষশালিনী বুদ্ধি প্রতিভা ইতি 
উচাতে |» মৌবভ যেমন কুস্থমেব গৌবব বাড়ায়__পরশমণি যেমন লৌহকে 
কাঞ্চনে পধিণত করে,_সাবদাব এই অযাচিত দানে তেমনই সাধারণ অসা- 
ধাবণ হয়__লৌকিক অলৌকিক হয় এবং যাহা! নশ্বব তাহ! অবিনশ্বর হয়। 


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ 


ল্য 


সন ১২৫০ সাল, ১৫ই ফাল্গুন, সোমবাব, শুরু পক্ষ, অষ্টমী ভিথিতে 
গিবিশচন্ত্র জন্মগ্রহণ কবেন। নীলকমলেব প্রথমে এক কন্যা, পবে এক 
পুত্র (নিতাগোপাল ) তৎপবে ক্রমান্বয়ে পাঁচটা কন্তাব পন এই অষ্টম. 
গঠজাত শিশু ভূমি হইলে খাটাতে একটা মহা আনন্দেব সাড়া 
পড়িয়া ঘায়। গিবিশচন্দ্রেব জোষ্ঠতাত বামনাবায়ণবাবুব পৰিচয় পুর্বব- 
পরিচ্ছেদেব খেবভাগে প্রদত্ত হইরাছে। ভিশি আনন্দোচ্ছাসে বলিয়া- 
ছিলেন, “এই তিথি-নক্ষত্রে ও অষ্টমগর্ভে গ্রীক, জন্মগ্রহণ কবিয়াছিলেন, 
_প্রতেদ কেবল শুরু ও কৃষ্ঃপক্ষে_-তা হেক, সেই কৃষ্ঃচন্ত্রই 
এসেছেন__এ ছেলে নিশ্চম্ন আমাব বংশ উজ্ন কর্বে।” শিশুব 
জন্মোৎ্সবে তিনি মুক্তহস্তে দান কবিতে লাগিলেন। বাড়ীতে ঢাক- 
ঢোল বাগ্ভেব খুব ধুম পড়িক্। গেল। গিবিশচন্দ্রেব খুল্লপিতামহ 
হবিশচন্দ্র, বগ্কাবগণকে গায়েব শান হইতে আবন্ভ কাবয়। পরিধেয় 
বস্ত্র পর্যন্ত বিতবণ কবিল্ছিলেন। এই বিতরণের সংবাদ প্রচাবিত 
হওর।গ নানাগ্বান হইতে বান্তকবগণ আপিগ্পা মাসাবণধ বন্থুপাড়া তোল- 
পাড় করিয়াছিন। এই স্নেহপ্রবণ খুল্পপিতামহ ও জোষ্টতাত উভয়েই 
গিরিশচন্দ্রের জন্মেব প্রায় ছয়মাস কাল পবে পবলোক গমন কবেন। 


১৪ গিরিশচন্দ্র 
পিল্লিশচক্ক্রেল্র জল্ম-সভ্িকা 
শকাবা। ১৭৬৫ 1১০1১৪1৪1৩৫ 
( সন ১২৫০, ১৫ই ফাল্তন, ২৮ ণে ফেব্রুয়াণী 
১৮৪৪ খৃঃ, সোমবাব, শুর্লা্মী ) 


2 ৬ ৃ ০১ 
৫. ৰ মনও ১৬ ৬ 
| চি ০ জাতাহঃ 
1 2০ চর 
| 1] 4৯ 
বন: | | স্ব ৪ ২৭ 
| 8 
1 শফ টরতি 
' ূ বু ২২ 
ৃ ... ৭৯ ৫৯ ৩৭ 
51 
নি ৃ ৪৭ ০ ১৫ 
/ ঘ 
/ - ১৮ 


€ক্ষকান্টীতে ভ্রিশ্পেআস ভশুল্য লিজ 


১। পগ্নে শুক্র তু্দী। ২। দ্বিতীযাধিপ মঙ্গল ২য়ে (স্বক্ষেত্রী)। 

৩। তৃতীয়ে চন্দ্র তুঙ্গী। ৪1 একাদশাধিপ শনি ১১ দনে স্বক্ষেত্রী।। 

৫। শনি বুধঘুক্ত। ইত্যাদি ইত্যাদি । 

গিরিশচন্দ্র ভূমিষ্ঠ হইবাব পর তাহাব জননীব কঠিন পীড়া হয়। 
সেই কাবণে নবশিশুব পালন -ভাঁব উমা নায়ী এক বাণ্দিনীৰ উপব প্রদত্ত 
হয়। কোকিল-শাবকেব পালনভার কাকেব উপর অপিত হইল। 
সে এই বাড়ীতে বাসন মাজিত। গিবিশচন্দ্র বা্দিনীর স্তগ্তপান কবিয়। 
মানুষ হন। তিনি তাহাব 'গোববা” নামক একটা ক্ষুদ্র গল্পে, তাহাঁব 


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ১৫ 


এই শৈশব-ইতিহাসের একটু আভাস দিয়াছেন। যথা £--্গৃহিশীব 
প্রসব কবিয়া অবধি বড় অন্ুখ, ক্রমে বোগ দুঃসাধ্য হইয়া উঠিল। 
এদিকে জাত শিশুব নিমিত্ত মাইদিউনী পাওর! যায় না। এক মাগী 
বাণ্দিনী, মণি তাহাব নাম- হসপিটালে প্রসব কবিয়া সেই দ্রিনই 
আসিয়াছে, ছেলেটা ছুই ঘণ্ট| বাচিয়াছিল মাত্র। বাগ্দিনী নবশিশুব 
মাইদিউনী হইল” (উদ্বোধন, ১ম বর্ষ, ১লা আষাঢ়, ১৩০৬ সাল )। 

দীর্ঘকাল বো ভোগ কথিয়া গিবিশচন্দ্েব মাতাঠাকুবাণী আবোগ্য 
লান্ভ কবেন। নীগকমলবাবুব উপর্যুপরি কতকগুলি কন্তাব পব 
গিবিশচন্ত্র জন্মিয়াছিলেন বলিয়া ত্বাহাব আদব কিছু অতিবিক্ত মাত্রায় 
হঈত। অত্যধিক আদবেই বোধ হয় শিশুকাল হইতে কোন কিছুব 
সামান্ট/ ত্রুটি হইলে বালকেব অভিমান উথলিয়া উঠিত। অনেক সময় 
এই অভিমান তাহ!কে ক্রোধান্ধ কবিত। বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়াও তিনি কোনও 
কার্ষোব সাণান্ত ক্রটি ৭ কিছু অন্তায় দেখিলে প্রথমেই কুপিত হইয়া 
উঠিতেন, পবে আত্মলংববণ কবিয়া লইতেন। ভূত্যগণকে তিনি 
ভালবাসিতেন, তাহাদেব সাংসাবিক সচ্ছনতাব দিকে তাহাব বিশেষ 
দৃষ্টি ছিল, দেশে তাহাদেব খণ-পবিশোধ বা জমি কিনিবাব জন্ত 
সময়ে সময়ে টাকাও দিতেন। কিন্তু কোনও কার্যে তাহাদেব ত্রুটি 
ঘটিলে তিনি অত্যন্ত কুপিত হইয়া উঠিতেন। দৃষ্টান্ত স্বরূপ একটা 
ঘটনাব উল্লেখ কবিতেছি £-- 

একদিন একখানি গ্রন্থ পাঠ কবিতে কবিতে তিনি সন্মুথেই সেখানি 
রাখিয়। দিয়াছিলেন, ঘব পবিষ্কাৰ কবিবাব সময় ভৃত্য তাহ অন্থান্ত 
পুস্তকগুলিব সহিত মিশাইয়। রাখিয়! দিয়াছিল। পুনঃ পাঠ কবিবাব 
সময় সন্ুখে সেই গ্রন্থথানি দেখিতে ন! পাইয়া! ক্রোধে অধীব হইয়া তিনি 
তাহাকে অত্যন্ত ভত্খননা করিলেন। ভৃত)টা আগিয়! যখন -কমননিকটস্থ 


১৬ গিরিশচন্দ্র 


অন্তান্ত পুস্তকগুলিব মধ্য হইতে সেই পুস্তকখানি বাহিব কবিয়! দিল, 
তখন তিনি শান্ত হইলেন, এবং ঈষৎ হাসিয়। উপস্থিত জনৈক ব্যক্তিকে 
বলিলেন,-_”ছেলেবেলায় বাগ্দিনীব মাই থেয়ে মানুষ হুয়লেছিলুম, তাই 
এমনি স্বভাব হয়েছে না কি?” বোম নগবেব প্রতিষ্ঠাতা বোমাস 
ও রমুলাস ত্রাতৃতয় খুল্লপতাত কর্তৃক পবিত্যন্ত হইয়া বিজন বনে নেকড়ে 
বাধিনীৰ স্তন্তপান করিয়৷ জীবন ধারণ কবিয়াছিলেন। ভবিষ্যৎ জীবনে 
এই দুই শিশুই বর্তমান সভ্যতাব লীলাভূমি বোমনগব প্রতিষ্ঠা কবেন। 

গিবিশচন্দ্র বাল্যকালে বড় ছুবস্ত ছিলেন। যে কার্ধা লোকে বারণ 
করিত, সে কাঁধ্যটা আগে ন। কবিতে পাবিলে তিনি স্থিব হইতে পাবিতেন 
না। তীহাব মুখে গন্ন শুনিয়াছিলাম £__ 

বাল্যকালে তাহাদেব খিড়কীৰ বাগানে শশ! গাছে প্রথম যে শশাটী 
ফলে, তৎম্গ্বন্ধে তাহার জ্য।-মা ( জ্যাঠাই মা, বামনা বায়ণেব স্ত্রী) বাটীন 
সকলকে বিশে শাদনবাঁকো বলিলেন_-“এই প্রথম ফলটা গৃহদেবত। 
ভ্রীধবকে দিব; দেখিও কেহ যেন এই শশায় ভাত দিও না» বালক 
গিবিশচন্ত্র সেই নিষেধ ব।ক্য শুনিয়া শশাটী খাইবাব জন্ত অস্থিব হ্ইয়। 
উঠিলেন, অথচ ভয়ে কিছু বলিতেও পাবেন না। বৈকাল হইতে কানা 
স্থরু কবিলেন। কাবণ জিজ্ঞাসা কবিলে বলেন__“তেষ্টী পেয়েছে ।” 
অথচ জল দিলে খান না! । 

সন্ধণাৰ সময় পিতা নীলকমল বাবু অফিস হইতে বাড়ী আপিয়! 
জিন্তাসা কবিলেন__“গিবিশ কাদচে কেন ?” জোঠ ত্রাতিবধূ বলিলেন, ৭৭ 
জানি ঠাকুবপো, তেষ্টা পেয়েছে বল্‌্ছে কিন্তু জল দিলে খাবে ন11” পুন্র- 
বতমল পিতা৷ আদব কবিয়। জিজ্ঞাস! কবিলেন-_“গিবি, তেষ্ট। পেয়েছে, জল 
খাচ্ছি নি কেন ?” গিবিশচন্দ্র বলিলেন--“জল খাবার তেষ্টা নয় |» পিতা- 
ঠাকুর হাসিয়। বলিলেন, “তবে কি খাবার তেষ্টা ?* পুত্র বলিলেন, “শশা 


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ১৭ 


খাবার তেষ্টা ।৮ ন্েহময় পিতা ভৃত্যকে বলিলেন, “শীপ্র বাজাব থেকে 
একটা শশ! কিনে আন।” 

পুর । বাজারের শশ! খাবার তেষ্টা নয়। 

পিতা । তবে আবাব কি শশা ? 

পুল্র। খিড়কীব বাগানে যে শশ! হয়েছে । 

পুক্রবসল পিতা ভূত্যটকে আলো! লইয়া খিড়কীর বাগান হইতে নেই 
শশা! তুলিয়া আনিতে বনিলেন। তখন জাঠাই ম! বাগ করিয়৷ বলিলেন, 
“ও শশা ঠাকুবকে দেব বলে বেখেছি। ওমা, সেই শশা খাবাব জন্যে 
কান্না ! ঠাকুবপো, ও শশা তুমি দিও না_যা ধববে তাই ?* নীলকমল 
বাবু উত্তবে ঈষৎ হাপিয়া বলিলেন-_“বড়বউ, বালক যাব জন্তঠ এত কবে 
কাদচে, ঠাকুব কি তা তৃপ্তি কবে খাবেন” যাহাই হউক, শশাটা খাইয়। 
বালক নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাইয়! পড়িলেন। 

গিবিশচন্্র বলিতেন, “আমি আজীবন এই প্রক্কতি-চালিত ভইয়া 
আপিতেছি। অন্তায় বা কঠিন বলিয়। যে কাধ্যে আমাকে নিষেধ কবা 
হইয়াছে, তাহাই সাধন কবিতে আমি আগে ছুটিয়াছি।” 

তাহার হেয়াব স্কুলে সহপাঠী হাইকোর্টের স্ুপ্রসিদ্ধ বিচারপতি 
পগ্ডিতবব ৬গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয বলিতেন, সেক্সপীয়ব প্রণীত 
'ম্যাকৃবেথ নাটকেব ডাকিনী ( ৬/1(0) ) দিগের কথা কিছুতেই বাঙ্গাল 
কবা যায় না। অন্তান্ত পপ্ডিতগণও তাহাব মতেৰ পোষকতা। কবিতেন। 
গিবিণচন্দ্রেব ঝৌক হইল--'ম্যাকবেথ অনুবাদ কবিব-বিশেষ এই 
ডাকিনীদের কথ! । 

হাতে খড়ি হইবার পর গিরিশচন্দ্র বাটার সন্নিকট ভগবতী 
গাঙ্ুলীর বাড়ীর পাঠশালায় প্রবিষ্ট হন। তথায় পাঠ সমাপ্ত হইলে, 
নীলকমল বাবু তাহাকে গৌরমোহন আট্যেব স্কুলে (পাঠশীল! 

২ 


১৮ গিরিশচন্দ্র 


ডিপাটমেণ্ট ) ভত্তি করিয়া দেন। তখন তাহার বয়ঃক্রম প্রায় আট 
বৎসব। 

গিরিশচন্দ্রেব খুল্লপিতামহী রামায়ণ, মহাভারত প্রভৃতি পুবাণের কথা 
অতি চমৎকাব কবিয়া বলিতে পাবিতেন। বালক গিরিশচন্দ্র সন্ধ্যার 
পব তাহার কাছে বসিয়া সেই সকল গল্প শুনিতেন, এবং উহ! তাহাকে 
এরূপ অভিভূত কবিত যে, তিনি সকল সময়েই সেই কল্পনায় বিভোব 
হয়! থাকিতেন। বয়সে জঙ্গে সঙ্গে তাহাব মনে পৌরাণিক চিত্র 
সকল মুদ্রিত হইয়। গিয়াছিল। তিনি যে পরিণত রয়সে উৎকৃষ্ট পৌবাণিক 
নাটকাদ লিখিতে সক্ষম হইয়াছিলেন, তাহাব ভিত্তি এইখানে । 

একদিন শ্রীকৃষ্ণের মথুবাযাত্রাব কথ! হইতেছিল। নির্দয় অক্তুব 
রথ লইয়! আসিপ্লাছে, শ্রীকষ্চ রথে উঠিয়াছেন। ব্রজাঙ্গনাগণ কেহ 
বথচক্র ধবিয়ণ্ছে, কেহ অস্থেব বল্গা ধবিয়াছে, কেহ বা রথেব সম্মুখে 
লম্বমানা হইয়া! পড়িয়া আছে। রাখাল বালকগণ নয়নজলে ভাদিতেছে, 
কেহ “কানাই, কানাই” বলিয়া মন্রভেদী চীৎকার করিতেছে, গাভীগণ 
উদ্ধনেত্রে শ্রীকৃষ্ণের মুখপানে চাহিয়া আছে। পাখী নীবব, শাখী স্থিব__ 
“গোপাল আয়বে, গোপাল আয়রে” বলিতে বলিতে মা যশোদ! ছুটিয়া 
আমিতেছেন। গোপ-গোপীদেব নয়নজলে পথ পিচ্ছিল, সেই পিচ্ছিল পথে 
মাঝে মাঝে তাহাব পদস্থলিত হইয়া! পড়িতেছে, আবার উঠিয়া "নীলমণি, 
নীলমণি” বলিতে বলিতে ছুটিতেছেন। নির্দয় অক্রুব কোন কথা শুনিল 
ন৷, কিছুই দেখিল না, কাহারও মুখ চাহিল না, গোকুলেব শুখের হাট 
তাঙ্গিয়! দিয়৷ গোকুলানন্দকে লইয়া! মথুবায় চলিয়া গেল। 

বালক গিরিশচন্দ্র অশ্রপূর্ণ নয়নে বাশ্পরুদ্ধক্ঠে জিজ্ঞাসা করিল, 
“আবার আদিলেন ?” পিতামহী কহিলেন, “না।” বালক গিরিশচন্্র 
পুনরায় জিজ্ঞাঁন। করিল, “আর আপিলেন ন1?” আবার উত্তর *লা” 


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ১৯ 


তিন বার এইরূপ নির্দয় উত্তর গুনিয়া, গিরিশচন্দ্রের কোমল প্রাণে বড় 
আঘাত লাগিল, বালক কাদিতে কাদিতে পলাইয়! গেল,_-তিন দিন আর 
গল্প শুনিতে আদিল না। এই শিশুকাল হইতেই গিরিশচন্দরেব হৃদয়ে 
আমরা তীব্র অনুভূতির উন্মেষ দেখিতে পাই। বস্তুতঃ বালক-হৃদয়ে 
বৃন্দাবনের বিরহভাব এতটা! গভীব ভাবে অঙ্কিত হইয়াছিল যে, তৎপবে 
বনু শান্তগ্রস্থ পাঠ করিলেও প্রবীণ বয়স পর্য্স্ত তিনি মথুরা-লীলা কখনও 
পড়িতে পাবেন নাই। 

পল্লীর নিকটস্থ কোন স্থানে কথকত। ব৷ বামায়ণ ইত্যাদি গান হইলে, 
গিরিশচন্দ্র সে স্থানে উপস্থিত ন। হইয়। থাকিতে পাবিতেন ন। ॥ বাল্যকাল 
হইতে বৈষ্ণব ভিখারীগণেব মুখে ধর্ব-সঙ্গীত শুনিতে জননীব ন্তায় তিনিও 
ভালবািতেন। বিষ্ভালয়েব পাঠ অভ্যাসে তাদৃশ মনোযোগ না৷ থাকিলেও 
কৃত্তিবাসেব রামায়ণ ও কাশীরামদাসেব মহাভাবত আস্ঘোপাস্ত কণস্থ 
কাবয়াছিলেন। শেষ বয়স পর্য্যস্ত তিনি বামায়ণ, মহাভাবতেব বনু স্থান 
অবিকল আবৃত্তি করিতে পারিতেন। এইরূপে বালক-হৃদয়ে কাব্যবস 
সঞ্চারের স্ব্রপাত হয়। 


তৃতীয় পরিচ্ছেদ 


হাভ-ন্িনিজোগ 


গিবিশচন্ত্র পিতাব কাছে যেবপ আদব পাইতেন, মাতাব কাছে তাহা 
পাইতেন ন1। ববং অনাদবটাই সেদিক হইতে বেশী আসিয়। তাহাকে 
ব্যথিত কবিত। তিনি বলিতেন, “আদর প্রত্যাশায় বদি কখনও মাব 
কাছে যাইতাম, মা দূৰ দূৰ কবিয়। তাড়াইয়া দ্রিতেন। যদি কখনও 
মিথ্যা কথ! ঝলিতাম বা কাহাকেও গালি দিতাম, মা মুখেব ভিতৰ গোবব 
টিপিয়া দিতেন। মাব মুখে কখনও মিষ্ট কথ শুনিতে পাইতাম না) 
এজন্য মনে বড় কষ্ট হইত। একদিন আমাব গাল-গল! ফুলে ভাবি জ্বব, 
অঘোবে পড়িয়া আছি । শুনিলাম, ম! বাবাকে বলিতেছেন-_মতি ব্যাকুল 
হুইয়াই বলিতেছেন, “তুমি যমন কবে পার+ বচাও। বাবা জানিতেন, 
মা আমায় মাদব কবেন না, বোধ হয় তেমন ভালও বাসেন না। তিনি 
বিশ্মিত ভইয়। বলিলেন, “তুমি যে এত ব্যাকুল হচ্ছ ? মা অতি কাতবকণ্ঠে 
উত্তব কবিলেন, “আমি রাক্ষপী, এক সন্তান ধেয়েছি, * এটা অষ্টমগর্ভের 
ছেলে, পাছে আমাব দৃষ্টিতে কোন অমঙ্গল হয়, তাই আমি একে কাছে 
আসতে দিতুম না, এলে দূৰ দূব কবে তাড়িয়ে দিতুম। কোলে করিনি, 
কখনে৷ একটা মিষ্টি কথ। বলিনি, আমাব হেনস্তা কত কষ্ট পেয়েছে, 
আমাব বুক ফেটে বাচ্ছে!, জননীব এই অস্তনিহিত গভীব স্নেহ এতদিন 


০ সস পিপাসা এরপর পপ ৯ সস সণ 


* ইহার পুর্ববে গিরিশচন্দ্রের জোষ্ঠভ্রাতা নিত্যগোপালের মৃত্যু ঘটিয়াছিল। 
পুত্রশোকাতুরা জননী সেই অবধি গিরিশচন্দ্রের মুখপানে চ।হিতেন ন|। 





তৃতীয় পরিচ্ছেদ ২১ 


পবে সম্যক উপলব্ধি কবিয়! আমি রোগেব যন্ত্রণা পধ্যস্ত ভুলিয়। 
গিয়াছিলাম |” 

গিবিশচন্দ্র-প্রণীত “অশোক” নাটকে তীাহাব এই বালাজীবন-স্থৃতিব 
আভাষ আছে । অশোক-জননী সুভদ্রাঙ্গী 'অশোককে বলিতেছেন £__ 

“বুঝি বা জানিতে মোবে মমতা-বর্জিত, 

বুঝি বা! ভাবিতে মম আদবেব ক্রটা, 

কিন্তু শোন, বত, 

মাঙ্জি কবি মনোভাব প্রকাশ তোমাবে,_ 

বাজবাজেশ্বৰ পুত্র জন্মিবে আমাব 

দৈবজ্ঞেব গণনা একপ ) 

শ্নেহ-ৃষ্টে চাহিলে তোমাব পানে 

পাছে তন হয় অকলাণ, 

স্নেহের প্রকাঁশ নাহি কবি সেই হেতু 1৮ 

মশোক। ১ অঙ্ক, ২য় গর্ভাঙ্ক । 
শিবিশচন্দ্র তাহাব ণগোবনা” গল্পেও স্বীয় শৈশব-জীবনেৰ কতক 

কথ। গিয়া দিয়া গিয়াছেন। মৃত্যুশয্যায় গোবরাৰ মাতা তাহাব 
স্বামীকে বলিতেছেন £-- 

“উমে| বড় অভাগ!, এক দিনও স্তন্ত দিতে পাবি নাই । বুদ্ধ বয়সে 
সম্ত।ন, পাছে অকল্যাণ হয়, এই ভয়ে ওর প্রতি আমি চাই নাই, কখনও 
আদব কবি নাই। পাছে তুমি তাড়না কব, এই ভয়ে আমি আগেই 
তাড়ন। কবিতাম ।” 

গোববাব প্রক্কৃত নাম ছিল উমাচবণ। গিবিশচন্দেরও রাশি নাম 
-_ উমাচবণ। এই গল্পটি পড়িলে দেখ! যায় যে, উহ্াব মধ্যে গিরিশচন্দ্রেব 
বাল্য-জীবনেব অনেক স্থৃতি জড়িত আছে । 


২২ গ্রিরিশচন্দ্র 


শোক গিরিশচন্ত্রেব চির সহচব ছিল। যখন তাহার দশ বৎসব মাত্র 
বয়স, সে সময়ে তাহাব জোষ্ঠ ভ্রাতা নিত্যগোপাঁলেব মৃত্যু ঘটে। 
উপযুক্ত সম্তান, লেখাপড়া! শিখাইয়া সংসারেব উপযুক্ত কবিয়া তুলিয়াছেন। 
পুত্রের জন্য দ্বিতলে বৈঠকখান৷ নির্মিত হইতেছে, এমন সময়ে 
হঠাৎ তাহাব মৃত্যু হওগায় নীলকমলেব বুকে শেল বিধিল! গিবিশচন্দ্রে 
পর নীলকমলবাবুব আবও কয়েকটা পুত্র জন্মে। ইহাবা তখন 
শিশু, নিত্যগোপালই উপযুক্ত হইয়াছিল। নীলকমলবাবু কোন্নগর 
মিত্র-বাটাতে ইহ।ব কিশোব-বয়সে বিবাহ দিয়াছলেন। উনিশ বসব 
বয়সে নিত্যগোপাল বাবুব নব বধুব মৃত্া হয়। ইহার অল্পদিন 
পরেই ইনি বাধুবোগাক্রা্ত হন। স্তুচিকিৎসায় বোগেব উপশম হইলে 
নীনকমলবাবু পুনবায় জোড়াসাকো।, খলবাম দেব ষ্রাটে পুত্রেব বিবাহ 
দিয়াছিলেন। বিবাহে দেড় বসব পবে বাতন্্েম্ম বিকাবে মাত্র 
২২ বসব বয়সে নিত্যগোপালেৰ মৃত্যু হয়। ন্ুতবাং জ্যেষ্ঠ সম্তানেব 
অকাল মৃত্যুতে তিনি কিরূপ ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছিলেন, তাহা সহজেই 
অনুমেয় । পুত্রেব নিমিত্ত তিনি যে নৃতন - বৈঠকখানা নির্মাণ 
কবিতেছিলেন, তখন তাহা প্রায় শেষ হইয়। আসিয়াছিল, নবনির্মিত 
বৈঠকথানায় জীবিত কাল পর্যন্ত এক দিনেব জন্তও তিনি আব প্রবেশ 
কবেন নাই। 

গিরিশচন্দ্র দশবৎসর বয়সে অগ্রজকে হারাইলেন। এগাব বনব 
বয়সে তাহার মাতৃবিয়োগ ঘটিল। তীহাব মাত। কলিকাতা, পিমলা, 
মদন মিত্রের লেনে স্ুপ্রসিদ্ধ চুণীবাম বন্ধুর পুত্র বাধাগোবিন্দ বন্ুব মধ্যম 
কন্তা__বংশ-পরিচয়ে তাহা বণিত হইফ়্াছে। পিত্রালয়ে ইহার খুবই 
' আদর ছিলি। মাতার আগ্রহাতিশয্যে প্রত্যেক বারেই সাধ ভক্ষণের 
নিমিত্ত ত্বাহাকে সেখানে যাইতে হইত। 


তৃতীয় পরিচ্ছেদ ২৩ 


গিরিশ-জননীর শেষ গর্ভাবস্থার সময় তাহার জোষ্ঠ পুত্র নিত্যগোপালের 
মৃত্যু হয়। নিদারুণ শোকে বছদিন পর্য্যন্ত বাটার সকলে মুহমান হইয়া থাকে। 
এরূপ অবস্থায় তিনি হয়ত সাধ খাইতে পিত্রালয়ে যাইবেন না, এইরূপ ইত- 
স্ততঃ কবিয়া তাহাব মাতাঠাকুরাণী সাধেব তত্ব বন্থুপাড়া৷ বাটাতে পাঠাইয়। 
দেন। ভূত্যগণকে সাধেব তত্ব আনিতে দেখিয়। গিবিশচন্দ্রেব মাত! জিজ্ঞাস 
করিলেন, “কে সাধ পাঠাইয়া৷ দিলে ?” ভৃত্য তীহাব মাতার নাম করিলে 
তিনি বলিলেন, “মাকে বলিম্‌, আমি তথায় যাইয়। সাধ খাইয়া! আসিব ।” 

যথা! সময়ে তিনি পিত্রালয়ে উপস্থিত হইলেন। নিত্যগোপালেব 
শোকে বাটীব সকলেই উচ্চৈস্ববে কাদিতে লাগিলেন। গিবিশচন্ত্রেব 
মাতাও ধুলায় লুটাইয়। কাদিলেন। পরে কিঞ্চিং প্ররুতিস্থা হইলে করুণ- 
কণ্ঠে জননীকে বলিলেন, “মা, আমি সাধ খেতে আসি নাই, তোমাকে 
দেখতে এসেছি । আবাব দেখা হবে কিনা ত৷ জানি না ।” 

পিত্রালয় হইতে শ্বশুর বাটাতে আসিয়া ছুই তিন দিন পবেই ত্তাহাব গর্ভ- 
বেদন৷ উপস্থিত হয়, পবে একটী মৃত। কন্তা প্রদব কবিয়া তিনি ইহলোক 
ত্যাগ কবেন। মাতৃদেবী যখন কন্তার এই আকম্মিক মৃত্যুব সংবাদ 
পাইলেন, তিনি মুচ্ছিত৷ হইয়। পড়িলেন। আসন্ন মুত্যু জানিয়া, কন্তা যে 
জোব কবিয়া আসিয়! তাহাকে শেষ দেখ! দেখিয়। গিয়াছেন, এ কথা 
মৃত্যুকাল পথ্যস্ত তিনি ভুলিতে পারেন নাই। 

গিরিশচন্দ্র তাহার মাতৃ-বিয়োগ সম্বন্ধে বলিতেন, “একদিন আমবা 
ক ভাই পাড়ার বালকগণের সঙ্গে মিলিয়! খেলা করিতেছিলাম, বাটাব 
নিকটে নিত্যই আমর। খেলা করিতাম, সন্ধ্যাব পুর্বে বাড়ী হইতে ভৃত্য 
আসিয়া ডাকিয়া লইয়। যাইত। কিন্তু সে দ্িন তাহাৰ আসিতে [বিলম্ব 
হইতে লাগিল। মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম-_ভূত্য আসিতে কেন বিলম্ব 
করিতেছে? কিন্ত অধিকক্ষণ থখেলিতে পাইয়া! আবার আহ্লাদও হইতে 


২৪ গিরিশচন্দ্র 


লাগিল। কিছুক্ষণ পরে ভৃত্য আসিয়া আমাদের (গিরিশচন্দ্রের কনিষ্ঠ 
কানাইলাল, অতুলকৃঞ্ণ ও ক্ষীরোদ; সর্ব কনিষ্ঠ ক্ষীরোদচন্ত্র তখন শিশু 
ছিল) বাড়ী লয়! গেল। বাড়ী ঢুকিয়া দেখি, সকলেরই কেমন বিমর্ষ 
ও ব্যন্ত-সমস্ত ভাব। ক্ষণকাল পবেই ভিতর বাটা হইতে এাখ বাজিগ়া 
উঠিল ) গুনিলাম-_আমার একটা ভন্মী হইয়াছে; কিন্তু দে শঙ্গবোল 
থামিতে না থামিতে সহ! বাটীতে ক্রন্দন-বোল উঠিল। জননী মৃত কন্তা 
প্রসব কবিয়৷ স্বর্গীবোহণ কবিলেন।” 
সে দিনের সেই নিদারুণ স্থৃতি গিরিশচন্দ্রেব হৃদয়ে গভাব ভাবে অস্কিত 
হইয়াছিল। তত্প্রণীত “বুদ্ধদেব চবিত” নাটকে ইহার ছৰি আছে। 
বুদ্ধদেবকে প্রসব কবিয়! বুদ্ধ-জননীব মৃত্যু-বর্ণনায় তাহাব মাত্‌ মৃত্যু ঘটনা 
চিত্রই প্রতিফলিত দেখিতে পাই। বুদ্ধদেবেব জন্মক্ষণে অস্তঃপুব হইতে 
শঙ্ঘখধ্বনি গুনিয়া বাজসভায় আমীন বাজ। শুদ্ধোদন সাগ্রহে বলিতেছেন £- 
“রাজ! । জন্মেছে নন্দন! 
শ্ীকাল দেবল। নাহি হও উচাটন, 
শুন _নীবব আনন্দ-ধবনি » 
নৃপমণি, ধৈর্য-পাশে বাধ বুক। 
( মন্ত্রীর প্রবেশ ) 
মন্ত্রী। মহাবাজ, জন্মেছে নন্দন । 
কিন্তু হে বাজন্‌, 
জড়িত রসনা! মম দিতে এ সংবাদ । 
মুচ্ছগাগত বাজরাণী, 
বাজবৈদ্থগণে__ 
সযতনে চেতন করিতে নাবে।” 
বুদ্ধদেবচবিত। ১ম অঙ্ক, প্রথম গরভাঙ্ক। 


চতুর্থ পরিচ্ছেদ 


স্লিভ” 


গিবিশচন্দ্র পল্লীস্ব পাঠশালাব পাঠ শেষ কবিয়া যখন গৌরমোহন 
আঢ্যেব স্কুলে পাঠশাল। ডিপার্টমেণ্টে ভন্তি হন, সে সময়ে তাহাব জ্োষ্ঠ 
ভ্রাতা নিতাগোপাল জীধিত ছিলেন। নিত্যগোপাল বাবু ভাল কবিয়া 
লেখাপড়। শিখিতে পাবেন নাই, এজন্ত গিবিশচন্র্রেব লেখাপড়া উন্নতিব 
দিকে তীাহ|ব বিশেষরূপ লক্ষ্য ছিল এবং প্রত্যহ গিবিশচন্দ্রকে বাটাতে 
পড়াইতেন। তীক্ষবুদ্ধিব প্রভাবে গিবিশচন্দ্র শিক্ষকগণেব স্নেহাকর্ষণ 
কবিয়াছিলেন। পাঠশালা-ডিপার্টমেন্টেব শেষ পবীক্ষায় যোগ্যতাব সহিত 
উত্তীর্ণ হইয়1, তিনি “মুগ্ধবোধ ব্যাক বণ” প্রাইজ প্রাপ্ত হন। প্রথিতনাঁম! 
্রীষ্টান অধ্যাপক ৬কালাচবণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাহাব তখন নহপ।ঠী ছিলেন। 
ব্যানাজি সাহেব আজীবন তাহাব গুণেব পক্ষপাতী ছিলেন। উত্তবকালে 
তিনি গিবিশচন্দ্রেব কনিষ্ঠ ভ্রাতা হাইকোর্টেব উকাল অতুপকৃষ্ণ বাবুকে 
প্রায়ই বলিতেন, “দেখ, গিবিশ বাবু ঘে একট! (5715, মামা 
ছেলেবেলা! থেকেই কেমন একটা! ধাবণ! ছিল” 

ওবিয়্যাণ্টল্‌ সেমিনাবী ( গৌবমোহন আদ্য এই স্থুবিখ্যাত বিষ্তালয়েব 
প্রতিষ্ঠাতা বলিয়! ইহা “গৌবমোহন আট্যের স্কুল” বলিয়! বিখ্যাত) বিদ্যালয়ে 
গিরিশচন্দ্র বদর ছুই পড়িয়াছিলেন। তারপব পিতাকে বণিয়! নিত্যগোপাল 
বাবু ভ্রাতাকে হেয়াব স্কুলে ভর্তি করিয়া! দেন। হেয়াব স্কুলে অধ্যয়ন- 
কালেই গিরিশচন্দ্রের জোষ্ঠ ভ্রাতা ও মাতৃদেবীব মৃত্যু হয়। 


২৬ গিরিশচন্জ 


মাতৃহাব! ছেলেদের যাহাতে যত্বেব কোনও ক্রটি না ঘটে, নীলকমল- 
বাবু সেদিকে সবিশেষ দৃষ্টি রাখিতেন। বাল্যে মাতার হতাদরের জন্ত 
গিবিশচন্দ্র যে অন্ুক্ষণ ক্ষুগ্জ থাকিতেন, বিচক্ষণ নীলকমলবাবু তাহ! 
বিলক্ষণ বুঝিতেন, সেই জন্ত বালকেব ক্ষত হৃদয়ে অজন্র ন্নেহ-ধাব! ঢালিয়াও 
তাহাব তৃপ্তি হইত না। পুত্রেব কল্যাণের জন্ত বাহিক কঠোর ভাব 
ধাবণ কবিয়। স্নেহময়ী জননী যে আপনা আপনি মনে মনে শত লাঞ্ছিত 
হইতেন, নালকমলবাবু অতি স্ুক্মদর্ণী হইলেও তাহা ধাবণায় আনিতে 
পাবিতেন না, ব্যথিত বালক-পুত্র তো নয়ই। নীলকমলবাবু পুত্রকে 
ন্নেভেব পক্ষপুটে ঢাকিয়া৷ বাখিয়া শত অপবাধ, সহস্র লাঞ্চনা হইতে 
তাহাকে বক্ষা কবিতেন। এই আদর্শ পুত্র-বাৎসল্য, গিবিশচন্দ্রেব 
আদর্শ হইয়ছিল। 

এক সময় তাহাব কোন নিকট-আত্মীয় তাহাকে বলিয়াছিলেন, 
“আমার একটা শিশু কণ্ঠা ছিল, একদিন তাহাকে একটা চড় মাবিয়া- 
ছিলাম, অনেক দিন হইল সে আমাকে পবিত্যাগ করিয়া গিয়াছে, তাহাব 
মুখ পধ্যস্ত ভাল মনে নাই; কিন্তু সেদিনকার সে প্রহাব তীক্ষশিব কণ্টকের 
মত এখনও আমাব বুকে বিধিয়! বহিক্নাছে। বিশ বংসবেও তাহা 
ভুদ্তে পারিতেছি না” গিপিশচন্ত্র শুনিয়। বলিলেন, আমার কথা 
শোন, তুমি কখনও সন্তানকে মারিও না, তুমি মাবিলে সে কার কাছে 
“থাবা” বলে কেঁদে এসে দাড়াবে ? 

যাহাই হউক, ছুঃসহ পুত্রশোকেব পর নিদারুণ পত্ীশোকে ক্রমশঃ 
নীলকমলবাবুব স্বাস্থ্য ভঙ্গ হয়। পুরাতন রক্তামাণয় পীড়া দেখা দিল, 
চিকিৎমকগণ গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের ব্যবস্থা দিলেন। অপোগণ্ড ছেলেদের 
লইয়া নীলকমলবাবু নৌকারোহণে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। কিছুদিন 
এইরূপ ভ্রমণ কবিতে করিতে একদিন নবদ্বীপ সন্নিকটে, যে স্থানে খড়ে 


চতুর্থ পরিচ্ছেদ ২৭ 


নদী গঞ্জার সহিত মিলিত হইয়াছে, তথায় নৌকা উপস্থিত হইলে সহসা 
তুফান উঠিল, নৌকা ভীষণ দুলিতে লাগিল__যেন এখনই ডূবিবে। জলমগ্ন 
হইবার আশঙ্কায় গিরিশ পিতাব হস্ত দু কবিয়! ধবিলেন। মাঝি অতি 
কষ্টে খড়ে নদীব ভিতৰ গিয়া নৌকা রক্ষা কবিল। এই নিবাপন স্থানে 
উপস্থিত হইলে নীলকমলবাবু গিবিশচন্দ্রকে বলিলেন, “তুই আমার হাত 
ধবেছিলি যে? আমাঁব নিজেব প্রাণ বড় না তোব? যদি নৌকা 
ডুবন্সে--আমি হাত ছিনিয়ে নিতুম__তুই কোথায় পড়ে থাকৃতিস 
জানিন? যেমন কবে পারি আগে আপনাকেই বাঁচাতুম |” বোধ 
হয় বিচক্ষণ নীলকমলবাবু বুঝিয়াছিলেন, যাহাকে ছইদিন পবে অকুল 
সমুদ্রে ভাসিতে হইবে, তাহাব পক্ষে এ শিক্ষা বিশেষ প্রয়োজন । 
সেদিনকার নে তুফান, সে বিপন্ন তবণী নীলকমলের মনে তাহাব আসন্ন 
মৃত্যুব দৃষ্টি অঙ্কিত করিয়াছিল কি না, কে বলিবে? কিন্তু এ ঘটন৷ 
উপলক্ষে তিনি যে শিক্ষ। দিয়াছিলেন, গিবিশচন্ত্র তাহা জীবনে বিশ্ৃত হন 
নাই, “বিপদে হাঁত ধবিবাব কেহ নাই !»__অতি তিক্ত ওষধ, কিন্তু বোধ 
করি, বিচক্ষণ নীলকমলবাবু বুঝিয়াছিলেন, তিক্ত হউক, ওঁষধ 'অমোঘ ) 
বুবিয়াছিলেন, পিতাব শ্লেহময় অঙ্ক ছাড়িয়া যে বালককে অদূব ভবিষ্যতে 
আপনার পায়ের বলে দীড়াইতে হইবে, তাহাকে সে শিক্ষ। দ্রিবাব এই 
উপযুক্ত সময়। গিবিশচন্ত্র বলিতেন, “বাবার কথায় জদয়ে গুরু৬ব 
আঘাত লাগিয়াছিল, কিন্তু শিখিয়াছিলাম যে বিপদে এক ভগবান ভিন্ন 
হাত ধরিবাব আর কেহ নাই।” 

ক্রমশঃ পীড়া বুদ্ধি হওয়ায় নীলকমলবাবু কলিকাতায় ফিরিয়া 
আসিলেন। গিবিশবাবু গল্প করিতেন, “বাব! খুব সাবধানী ছিলেন, একে 
আমাশয়ের পীড়া, আহাবাদি সম্বন্ধে খুব সতর্ক হওয়া উচিত। বাবা 
তাহাই করিতেন, বাটার মেয়েরা কোনওরূপ গুরুপাক খান্ভ খাইতে 


২৮ গিরিশচক্্র 


দিলে ভতগনা করিয়া বলিতেন, “আমার যে গীড়া, তাহাতে দুষ্পাচ্য খান্চ 
ভোজনেবই প্রলোভন অধিক, তোমব! কোথায় সাবধান হইয়া আমার 
আহার সম্বন্ধে লক্ষ্য বাখিবে, না, আমাকেই তোমার্দিগকে সাবধান 
করিয়া দিতে হইবে | অন্তিম কাল উপস্থিত হইলে উর্ধর মস্তিফও 
নিস্তেজ হইয়! যায়; বাবা এত সাবধানী ছিলেন, তিনিও মনেব বল 
হারাই়্াছিলেন। তাহার কঠিন গীড়াব সংবাদে তাহাব পঞ্চম৷ কন্তা 
কুষ্ণবঙ্গিণী * শ্বশ্তবালয় হইতে তাহাকে দেখিতে আসিয়াছেন। উপস্থিত 
কুষ্ণবঙ্গিণীই বাড়ীব ছোট মেয়ে, বাটাতে সেদিন নানারূপ আহাবেব 
উদ্চেগ হইয়াছে। মেয়ের বাটীতে উৎরুষ্ট কডাইন্থুটিব কচুবী তৈয়াৰি 
কবিয়াছে। ক্ৃষ্ণবর্জিণী আসিয়া বলিল, “ঝ/বা কি চমৎকাব কচুবী তৈবি 
হয়েছে, ছ'খানা খাবে? ন্নেহময়ী কন্তার অনুবোধে নীলকমলবঝ|বু এক 
খানি মাত্র আনিতে বলিলেন, কিন্তু কষ্রবী খানি খাইতে অত্যন্ত ভাল 
লাগায় তিনি আর একথানি আনিতে বলেন। কৃষ্ণবঙ্গিণী পাছে বাড়াতে 
বকে, সেক্ট জন্ত লুকাইয়। চাবি পাচ খানি কচুবী আনিয়! বাবাকে খাইতে 
দিল। বাবা আবাব খাইতে চাহিয়াছে, এই আনন্দে পিতৃভক্তি-অন্ধ। 
জ্ঞানহীন। কন্তা চাহিয়া দেখিল না__বাবাকে কি হলাহল খাইতে দ্িল। 
তাহাব পবই উত্তবোত্তব পীড়। বৃদ্ধি পাইতে লাগিল । ১৮৫৮ খ্রীষ্টাব্দে ৫২ 
বসব বয়ঃক্রমে তাহা লোকান্তব প্রাপ্তি হ"। 

তাহার পবলোক গমনকালে গিবিশচন্ত্রেব বয়স চতুর্দশ বৎসব মাত্র। 
সেই নাবালক পুত্র সংসাবেব কর্তা এবং জ্যষ্ঠা বিধবা কন্তা৷ কৃষ্ণকিশোরী 
তাহাব অভিভাবিকা। 1 এই ছুই জনেব উপর সংসার ও সম্পত্তির ভার 

* বংশ-পরিচযে পাঠকগণ ই'হাব পরিচয পাইয়াছেন। 

+ কৃষ্ণকিশোরী অল্পবয়সে বিধবা হইয। পত্র লযে আঁসিয| বাদ করেন। 


চতুর্থ পরিচ্ছেদ ২৯ 


দিতে অন্ত লোক হইলে ভীত হইত? কিন্তু সংদার-অভিজ্ঞ নীলকমলবাঁবু 
বুঝিয়াছিলেন যে অপব কাহাকে ভাব দিলে অর্থলোভে প্রবঞ্চনা কবিতে 
পাবে। বুদ্ধিমত্তী দুহিতা হইতে সে আশঙ্কা নাই। তিনি তাহাকে লেখা- 
পড়াও শিখাইয়াছিলেন। তিনি পিতাব সাংসারিক বুদ্ধিশক্তি পাইয়াছিলেন 
এবং বিশেষ সাবধানে ও বিচক্ষণতার সহিত সংসাব চালাইয়! ছিলেন। 

নীলকমলবাবু যেমন সাবধানী তেমনি নতর্ক ছিলেন, বিষয় সম্পত্তি 
সম্বন্ধে যে কিছু গোলযোগ হইতে পাবে এবং যাহ! কিচ্ছু কৰা! কর্তব্য, 
সমস্তই তিনি একখানি খাতায় স্বহস্তে লিপিবদ্ধ কবিয়া যান। আজ 
পর্য্যন্ত সেই খাতাখানি তাঁভাব বংখধবেব! সবত্বে বক্ষ কবিয়া আসিতেছেন। 
আমবা প্রথমেই উল্লেখ কবিয়াছি, সওদাগবী অফিসে হিসাব বাখিবাব ডবল 
এন্টি, প্রণালী ইনিই প্রথম প্রবস্তিত কবেন। বস্ততঃ সংসাবে যাহাকে 
ঠিসাবী বুদ্ধি বলে, নীলকমল বাবুব তাহ! বথেষ্ট ছিল এবং পুত্রও এই 
গুণেব অধিকাবী হইয়াছিলেন। ছুর্দমনীয় উচ্ছ,ঙ্খলতায় পিতৃপ্রদত্ত এই 
বিমৃগ্ঠ কাবিতা গিবিশচন্ত্রকে পদে পদে আজীবন রক্ষা কবিয়াছে। 
নীলকমলবাবুব যে নকল গুণ গিবিশচন্দ্রে পূর্ণভাবে বিকশিত হইয়াছিল, 
বাৎসল্য তন্মধ্যে নর্বপ্রধান। গিবিশচন্ত্র পিতাব স্তায় পুত্রবংসল ছিলেন। 
পিতৃম্নেহ স্মবণ কবিয়া তিনি বলিতেন, “আমাব ছোট ভাইদের বাবা হাত 
ধবিয়া লইয়। যাইতেন, কিন্তু তাহাব কোলে চড়িয়! যাইতাম আমি, আমি 
তাহাব কোলেব অধিকাবী ছিলাম ।” 

গিবিশচন্ত্র চিবজীবন পিতৃম্বতির পুজা করিহেন। যখন ঘোব 
নান্তিকতায় তাহার বুদ্ধি আচ্ছন্ন, তখনও তিনি গঙ্গান্গানে গিয়া পিতৃ-উদ্দেশে 
অগ্জলিপূর্ণ গঙ্গাজল গ্রদান করিতেন। প্রথম রচিত তাহার পৌরাণিক 
নাটকগুলিতে অনেক স্থলে কৌশলে তাহাব পিতৃ-নাম সংযোজিত করিতেন । 
যথা' ১ 


৩.০ 


গিরিশচন্্ 


“সংসাবে মোরে সকলে, নীলকমল-জীখি বলে ।” 
অকাল বোধন। ২য়দৃগ্ঠ। 

“গুহক প্রেমেব তরে নাম গেয়েছে, 
পেয়েছে নীলকমল জীথি |” 

সীতাব বনবাস। ৩গ্পু অঙ্ক, ১ম গর্ভাঙ্ক। 
রাখি নীলকমলে হৃদ্‌কমলে, 
হওবে ভোলা ভাবে ভোল 1” 

লক্ষণ বর্জন। নবম দৃশ্য । 

“চল্গে! সখি, চল্‌গো। তোবা৷ চল, 
কাল বাঙ্গা হবে নীলকমল |” 

বামেব বনবাস। ১ম অঙ্ক, ৩য় গ্ভাঙ্ক। 

ইত্যাদি ইত্যাদি। 


পঞ্চম পরিচ্ছেদ 


নিলাহ-ব্িল্যালজেক্র সানি শে 


তিনটি অপোগণ্ড ভাই লইয়া চতুর্দশ বৎসব বয়স্ক পিতৃমাতৃহীন 
বালক গ্রিবিশচন্দ্র সংসাবেব কর্তা হইলেন। অভিভাবিক1 জোষ্ঠ! বিধবা 
তগ্ী। ন্ুবৃহৎ সুখপূর্ণ সংসাবেব কি শোচনীয় পরিবর্তন! তবে শোকে 
সাত্বনা এই, নীলকমলবাবু পুত্রগণেব গ্রাসাচ্ছাদনেব অভাব বাথিয়। 
যান নাই; এবং দিগম্বব মিত্র নামক একজন বিশ্বাসী এবং স্ৃহিসাবী 
কর্মমচাবী বাখিয়া গিয়াছিলেন। 

১৮৫৮ খ্রীষ্টাব্দে গিবিশচন্দ্রেব যেবপ দুর্ব্বংমব, দেশেব অবস্থাও সেইরূপ 
ভয়ঙ্কব! একবৎসব পূর্বে সিপাহী বিদ্রোহেব শচনা হইয়াছে, ভাবতে 
ইংবাজ বাজত্ব টলমল কবিতেছে, বিদ্রোহীব দল আজ এখানে, কাল 
সেখানে! চাবিদিকে নৃশংস নির্ধ্যাতন-কাতিনী, হত্যা, অত্যাচার, দেশময় 
হাহাকাব! জনবব চারিদিকে শতমুথে কত কথা বলিতেছে। শঙ্কাচ্ছন্ন 
কল্পনা সহশ্রগুণে তাহা বধ্ধিত কবিয়া' লোকের মনে অমানুষী ভীতি 
উৎপাদন কবিতেছে। দেশ যেন ছুংস্বপ্নে আচ্ছন্ন! কলিকাতায় অবশ্য 
অপেক্ষাকৃত শান্তি বিরাজিত ছিল। কিন্তু একদ্দিনকাব একটি ঘটনা' 
সম্বন্ধে গিরিশচন্দ্র বলিতেন, প্বকৃবীদেৰ দিন জনবব উঠিল, বদমায়েস 
মুদলমানগণ কলিকাতা লুট কবিবে। আমরা তখন বালক, কিন্তু সে 
দিনকার কথা শ্তি-পটে অঙ্কিত হইয়া রহিয়াছে। সহরময় হুলুস্ুল, 
আবালবৃন্ধ-বনিত। শঙ্কাকুল! “কি হবে” “কি হবে? ব্যতীত লোকের মুখে 


৩২ গিরিশচন্দ্র 


অন্য কথা নাই। সহরেব এই ভয়-বিহ্বল অবস্থায় ইংরাজরাজ প্রজার 
ঘবে ঘবে অভয় বিলাইতে লাগিলেন, ঘরে ঘরে ছাপার কাগজ আসিতে 
লাগিল। “ভয় নাই, ভয় নাই; অস্ত্রধারী ইংরাজ-রাজকর্মমচাবিগণ 
বকবীদেব বাত্রে পথে পথে পাহাব| দরিয়া বেডাইবেন। প্রজাব বক্ষণে 
প্রাণপণ কবিবেন, নিঃশঙ্কচিত্তে সকলে নিদ্রা যাও ।” সে ঘোর হুর্দিনে 
ইংবাজবাজেব ধৈর্য্য, শৌধ্য, বীর্য ও ওদার্যা গুণে ভাবত বক্ষা পাইয়াছিল, 
শাস্তি পুনঃ স্থাপিত হইয়াছিল।” বুহৎ সংসাবের নেই করাল ছৰি 
দেখিতে দেখিতে গিবিশচন্দ্র তীহাব ক্ষুদ্র সংসাবে প্রবেশ কবিলেন। 

পিতার মৃতাব এক বসব পব ( ১৮৫৯ খ্রীষ্টাব্দে) জোষ্ঠা ভগিনী 
অভিভাবিকা কৃষ্ণকিশোরী গিবিশচন্দ্রেব বিবাহ দিলেন। গিবিশচন্দ্রেব 
বয়ম তখন পনব বৎসব। বাল্য বিবাহ মে সময় দূষণীয় বলিয়৷ কেহ 
মনে করিতেন না। বিশেষ গিবিশচন্ত্রেব পুরুষ অভিভাবক কেহ ছিলেন 
না। একজন গণ্যমান্ত বিজ্ঞ ব্যক্তিব কন্তাব সহিত সম্বন্ধ স্থাপন কবিলে 
সকল দিকেই ভাল। আ্যাটুকিন্মন টিলটন কোম্পানীৰ বুককিপাব 
শ্ঠামপুকুব নিবাসী নত প্রসিদ্ধ নবীনচন্জ্র ( দেব) সবকারেব কন্যা প্রমোদিনীব 
সহিত ১৮৫৯ খ্রীষ্টাব্দে গিবিশচন্দ্রের শুভ পরিণয় সম্পন্ন হইল । বিবাহে 
দিন কলিকাতাষ ভীষণ অগ্নিকাণ্ড হইয়ছিল। নিমতলায় একটী 
কাঠগোলায় আগুন লাগে। সেই অগ্নি ভীষণাকাবে জবলিতে জলতে 
বাগবাজাব-মভিমুখে ধাবিত হইয়া! গিবিশচন্ত্রেব বাটীব সন্নিকট আসিয়া 
উপস্থিত হয়। কোথায় বিবাহেব আমোদ আব এই আসন্ন সর্বনাশ ! 
চতুর্দিকে হাহাকাব শব্দ “পর্বনাশ হলো_সব গেল” শব্দে, সহস্র সহস্র 
নরনাবীর কাতর কে বাজপথ মুখবিত। “জল আন” 'জল আন*-_ 
গগনভেদী শব্দ, বাটার লোক ভয়ে কম্পমান! প্রাণপণে ভগবানকে 
ডাকিতেছেন। গৃহদেবতা শ্রীধবজীর দ্বাবে লুটাইয়! পড়িয়৷ বলিতেছেন, 


পঞ্চম পরিচ্ছেদ ৩৩ 


“ঠাকুব, রক্ষা কব? ঠাকুব, রক্ষা কব।” শ্রীধবজী প্রসন্ন হইলেন। 
আশ্চর্য, গিবিশচন্ত্রেব বাটাব ঠিক দক্ষিণপশ্চিমে একটা বৃহৎ তেঁতুল 
গাছ ছিল; সেই বুক্ষে ধাবিত অগ্নিবাশি আসিষা৷ প্রতিহত এবং ক্রমশঃ 
অগ্নিদেবের শক্তি নিঃশেমিত হ্ইয়৷ যায়। 

হেয়াব স্কুলে বে সময় গিরিশচন্দ্র প্রথম শ্রেণীতে অধ্যয়ন কবেন,সে সময় 
(১৮৫৮ খ্রীষ্টাব্দে ) তাহাব পিতাব মৃত্যু হওয়ায় তিনিও বিগ্ালয় পবিত্যাগ 
কবেন। হাইকোর্টে ভূতপূর্ব্ব বিচাবপতি স্বর্গীয় গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় 
এবং স্ুপ্রসিদ্ধ স্কুল ইন্স্পেক্টাব স্বর্গীয় বেণীমাধব দে হেয়াব স্কুলে তাহা 
সহাধ্যায়ী ছিলেন। গুরুদাসবাবু আজীবন বন্ধুব স্তায় তাহাব সহিত ব্যবহব 
কবিয়া আসিয়াছিলেন। স্বীয় ভবনে বা সভাসমিতিতে যেখানেই “গিবিশ 
বাবুব কথ! উঠিয়াছে, সেখানেই, গিবিশ বাবুতে আমাতে একসঙ্গে হেয়াব 
স্কুলে পডিতাম__তাহাব সবস কথাবার্তায় পরম আনন্দ উপভোগ 
কবিতাম-_এইবপ নান৷ কথাই বলিতেন। 

বিবাহের পব ১৮৬০ খ্রীষ্টাব্বে গিরিশচন্দ্র পুনবার ওবিয়েপ্টাল 
সেমিনারীতে প্রথম শ্রেণীতে ভস্তি হন। ন্প্রসিদ্ধ সাহিত্যিক চন্দ্রনাথ বন্ধ 
ও মিলিটাবী সিভিল সার্জন ডাক্তাব ফকিবচন্ত্র বন্থু এখানে ইহার সহাধ্যায়ী 
ছিলেন। পাবিবাবিক দুর্ঘটনা বশতঃ সে বসব তিনি পবীক্ষায় উপস্থিত 
হন নাই। পুনবায় ১৮১২ থ্রীষ্টাব্ধে পাইকপাড়। গভর্ণমেণ্ট সাহায্য-প্রাপ্ত 
বিদ্যালয় হইতে পবীক্ষা প্রদান কবেন। 

কিন্তু পিতৃ-বিয়োগে অভিভাবক না৷ থাকায় এবং স্বেচ্ছামত 'আজ 
এখানে কাল সেখানে ক্রমান্বয় স্ুল পবিবর্তন ইত্যাদি নানা প্রতিবন্ধকতাষ 
তিনি পবীন্ষায় উত্তীর্ণ হইতে পাবেন নাই। বিশ্ববিষ্থ(লয়েব সহিত সম্বন্ধ 
_তাহাব এইখানেই শেষ । 

গিবিণচন্দ্র চিবদিন অধ্যয়নপ্রিয় ছিলেন এবং বান্যকাল হইতেই 


৩ 


৩৪ গিরিশচন্দ্র 


রামায়ণ, মহাভারত, কবিকন্কন চণ্ডী, অন্নদামঙ্গল প্রভৃতি বিশেষ আগ্রহেব 
সহিত পাঠ কবিতেন। কিন্তু বিশ্ববিগ্ঠালয়েব অন্ুমোদিত শিক্ষা কখনও 
তাহাকে আকর্ষণ কবিতে পাবে নাই। বাল্যকাল হইতেই গিবিশচন্ত্রে 
স্বভাব ছিল, তিনি “ভান! ভাস” কিছুই বুঝিতে চাহিতেন না এবং 
পাবিতেনও না। সকল বিষয়েরই মূল তাৎপর্য বুঝিতে চেষ্টা কবিতেন। 
বিগ্বালয়ের শিক্ষকগণ তাহাব এই প্রর্কতিব ঠিক সন্ধান না পাইয়া! তীহাকে 
সময়ে সময়ে তাড়না করিতেন। আবাব বুদ্ধিমান বলিয়া মধ্যে মধ্যে 
প্রশংসাও কবিতেন। ছুই একবাৰ বাৎসরিক পবীক্ষায় তিনি 
পাবিতোধিকও পাইয়াছিলেন। কিন্তু তাহাব স্তায় প্রতিভাশালী বালকের 
নিকট যেরূপ উন্নতিব আশা কব! বায়, তিনি সেরূপ কৃতিত্ব কখনও 
দেখাইতে পাবেন নাই । গিবিশচন্দ্র বলিতেন, প্যদি শিক্ষকের. আমায় 
তাডনা না করিয়া মিষ্টকথায়, আমি যেরূপে বুঝিতে পাবি, সেইবপ বুঝাইয়। 
দিতেন, তাহা হইলে কিছু শিখিতে পাবিতাম। তত্প্রণীত "নল-দমযন্তী” 
নাটকে বিদষকেব মুখে তিনি ইহাব একটু আভাসও দিয়াছেন। «গুরুমণায় 
শালা যে কান মলে দিলে, নইলে “ক” “খ+ শিখতুম 1 নলদময়স্তী ৩য় অঙ্ক 
_-৫ম গর্ভাঙ্ক। 

তিনি বলিতেন, তাড়ন! বা ভয় প্রদর্শনে কেহ কখনও আমায় কর্ধে 
প্রবৃত্ত বা! তাহ! হইতে নিবৃত্ত কবিতে পাখেন নাই। পণ চাবুকে বশ 
হয়__মানুষ নয়। আমাব স্বভাব ছিল, জুজুব ভয় দেখাইলে জুজু দেখিতে 
আগে ছুটিভাম। ভে আশি কোন কাধ্য হইতে নিবৃত্ত হই নাই বা থে 
কার্ধেয আমোদ পাই নাই, সে কার্যে কথনই প্রবৃত্ত হই নাই। 


ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ 


দত জশ্যজন্ 


১৮১৯ খুষ্টাব্দে কলিকাতায় হিন্দু কলেজ স্থাপিত হইবাঁব পব বাঙ্গালী- 
জীবনে ইংবাজী চালচলন বিশেষরূপে প্রভাব বিস্তাব করিয়াছিল। 
কৃতবিদ্গণ ইংরাজী সাহিত্যেবই আদব কবিতেন। মুসলমান আমলে 
পার্শী-বিদ্যাব আদর হইয়াছিল, ইংরাজ-অভ্যুদ্রয়ে ইংরাজীবই আদব হইতে 
লাগিল। নুক্সদর্শী স্বদেশভক্ত কবি বামনিধি গুপ্ত (নিধু বাবু) দিব্য- 
চক্ষে তাহ! দেখিতে পাইয়। বলিয়াছিলেন £-_ 

“নানান দেশে নানান ভাষা, 

খিন। ন্বদেশীয় ভাষা, পূরে কি আশা, 
কত নদী সবোবব, কিবা ফল চাতকীর, 
ধারা জল বিনে কতু ঘুচে কি তৃষ! ?” 

কবিব এ প্রাণেব উক্তি প্রথম নিক্ষল হইলেও পরে অনেকে উহাব 
মন্ম উপলব্ধি করিয়াছিলেন । কবিবর মধুস্দ্ন বাণীচরণে বিজাতীয় 
ফুলে প্রথমাঞ্জলি দিলেও আপনাৰ ভ্রান্তি বুঝিপ্না সময় থাকিতে সতর্ক 
হইয়াছিলেন। গিবিশচন্দ্রেব জন্মের কিছুকাল পূর্ব হইতেই মাতৃভাষাব 
প্রতি বঙ্গবাসীব অন্ুবাগ ক্রমশঃ বদ্ধিত হইতেছিল। বে সকল মহাত্মা! 
আধুনিক ব্গভাষাব সৃষ্টিকর্তা, গিবিণচন্রেব জন্মেব পূর্বেই তাহার! 
প্রতিষ্ঠাভাজন হইপ়াছিলেন। ঈশ্বব-ন্ত্র গুপ্তেব গ্রতিভা-হু্য তখন পূর্ণ 
গবিমায় দীপ্তি পাইতেছে। অক্ষয়কুমার দত্তের সম্পাদকতায় 'তত্ববোধিনী” 


৩৬ গিরিশচন্দ্র 


প্রতিঠিত হইয়াছে, স্বনামধন্ত বিগ্ভাসাগব মহাশয় “বেতাল পঞ্চবিংশতি, 
প্রভৃতি বচনায় মাতৃভাষাব উন্নতি সাধন কবিয়। বঙ্গবাসীব কৃতজ্ঞতাভাজন 
হইয়াছেন । 

গিবিশচন্দ্র বছ পূর্বেই প্রাচীন কবিদিগেব কাব্য পাঠে বঙ্গভাষাব 
প্রতি বিশেষ অনুবাগী হইয়াছিলেন। এক্ষণে সাময়িক সাহিত্যও যত্ব 
সহকাবে পাঠ কবিতে লাগিলেন। কবিতা লিখিবাব তাহাব খেশব 
হইতেই সখ ছিল, তিনি ঈশ্ববগুপ্তেব অনুকরণ কবিয়া মাঝে মাঝে 
কবিতা লিখিতেন। * কিন্তু ইংবাজী শিক্ষাবই সে সময়ে সর্বাপেক্ষা 
আদব। যিনি ভাল ইংবাজী বলিতে ও লিখিতে প1বিতেন, সমাজে তিনি 
মহা সম্মানিত হইতেন। কেমন কবিয়৷ ইংবাজী সাহিত্যে পাগ্ডিত্য লাভ 
কবিবেন, সেই তাহার ধ্যানজ্ঞান হইল। গিবিশচন্্র যখন যে কার্যে 


ঢ 


পাপ পপর পর পপর পা. 


* নমুন! স্ববূপ ছুইটী কবিতা উদ্ধৃত করিলাম £__ 
প্রথম কবিতা । 
ধরিয়! মানব-কায়, সমভাবে নাহি যায়, 
হৃখ-ছুখ-মাঝে হেলে ছুলে ॥ 
কেমন লোকের মন, দুঃখ নামে অচেতন, 
সুখলাভে সকলেই চনে ॥ 
দ্বিতীয় কবিতা । 
নীরব মানব সব নিশি ঘোরতর, 
তমোময সমুদয় মহা! ভয়ঙ্কর । 
রণবেশে ঘন এসে ঘেরিল গগন, 
ঘন ঘন ঘোর নাদে গভীর গঙ্জন। 
চমকে চগলা, করে আাধার হরণ, 
কৃড কড় কুলিশের কঠোর নিঃন। 


ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ৩৭ 


ঝুঁকিতেন, একটু অতিবিক্ত মাত্রাতেই সে কার্য সম্পাদনে প্রবৃত্ত হইতেন। 
বিবাহেব যৌতৃকে যে অর্থ তিনি পাইয়াছিলেন, অন্ত যুবকেব মত তাহ! 
বিলাস-ব্যসনে অপবায় না কবিয়! ইংবাজী সাহিত্যেব কতকগুলি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ 
সেই অর্থে ক্রয় কবিলেন এবং গভীব মনোনিবেশ সহকাবে একনিষ্টভাবে 
পাঠ কবিতে লাগিলেন । দিবারাত্র কাহারও সহিত মেশেন না, কোথাও 
বেড়াইতে যন না, সর্বদ। পুস্তক লইয়।ই থাকেন। নিতান্ত অবসাদ উপ- 
স্থিত হইলে তালদেন ছুই মহল বাড়ীব অন্দবেব সিড়ি দিয়! ভিতবেব বিস্তৃত 
চত্বব পার হইয়া, বাহিবেব সিঁড়ি দিয়া উঠিয়। আবার ঘরে গিয়া দ্বাব বন্ধ 
কবিয়! পড়িতে বসেন। বন্ধু-বান্ধব কেহই তাহাব সাক্ষাৎ পায় না; বাড়ীর 
লোকে! তাহাব এতাদৃশ আচবণে চিন্তিত হইয়া পড়িলেন! এইবূপে বৎ- 
সবাধিক অতিবাহিত হইলে গিবিশচন্ত্র হঠাৎ পড়াশুনা! পরিত্যাগ কবিলেন। 
তখন তাহাব গঙ্গাতীব এবং “নিক্ষম্মী” ভাবে পাড়া বেড়ানই একমাত্র কার্ষ্য 
হইল। এই সময় হঠাৎ একদিন পল্লীস্থ ব্রজবিহাবী সোম (উত্তবকালে ইনি 
সাবজজ হইয়াছিলেন ) নামে তাহাব জনৈক বন্ধু বলেন, “কি হে, আজকাল 
যে খুব বেড়াচ্চ, পড়াশ্তনা আব কবোনা না কি?” গিবিশচন্দ্র বলিলেন, 
“দেখ, সব বই ভাল বুঝতে পাবি না, মাঝে মাঝে বড় আটকায়, স্পষ্ট মানে 
বোঝা যাঁয় না, তাই বিবক্ত হযে পড়া ছেড়ে দিয়েছি ।” ব্র্গবাবু তখন 
বি, এ, পাশ কবিয়াছেন ; তিনি বলিলেন, «আমবাই কি সব বইয়ের স্ব 
জায়গ।য় বুঝতে পাবি, আমাদেরও অনেক জাষগায় আটকায়, ভাবে বুঝে 
নিতে হয়; তবে এটা ঠিক, পড়তে পড়তে আপনিই বোবা যায়। আব 
প্রথম থেকে সমস্ত বুঝে ক*জনেই বা বই পড়ে , পড়তে থাক, দেখবে ক্রমে 
ক্রমে সব ঠিক হয়ে যাবে ।” বন্ধুব কথায় গিবিশচন্দ্র আবাব উৎনাহ সহকাবে 
অধায়ন আবন্ত কবিলেন। উত্তরক!লে তিনি বন্ধুর কথাব মূল্য বিশেষরূপে 
উপলব্ধি কবিয়াছিলেন। শেষ বয়সে প্রায়ই বলিতেন, “আমার যা কিছু 


৩৮ গিরিশচন্দ্র 


শেখা, ব্রজবাবুব জন্ত ; ব্রজবাবুব খণ শোঁধা যাঁয় ন।”৮ বন্ুপাড়াপল্লীস্থ 
্ব্গীয় দীননাথ বস্থু মহাশয়ও গিরিশচন্দ্রকে পড়াণুনা করিবার জন্য 
বিশেষপ উৎসাহিত কবিতেন। 
গৃহে অধায়নে গিরিশচন্দ্রেব এই উপকাব হয় যে, পবীক্ষাব জন্য বাস্ত 
না তইয়া পঠিত বিষয় আলোচন| ও চিন্তা কবিবাব তীভাব অনেক সময় 
থাকিত এবং সহজ প্রতিভ। দ্বাবা অনেক বিষয়েব প্রকৃত সিদ্ধান্তে উপনীত 
হইতে পাবিতেন। এই সময় তিনি বিশ্রামক।লে প্রায়ই বাঙ্গালা ও 
ইংবাজী উভয় ভাষায় কৃতিত্ব লাভ কবিবাব জন্ত ইংবাঁজী কাব্যের 
পদ্ান্থবাদ করিতেন। আমব! নিয়ে কয়েকটাব অনুবাদ প্রদান কবিলাম ॥ 
প্রথমতঃ তিনি অবিকল অন্থুবাদেব চেষ্টা কবেন। 
যথা £_৭7১০০৮ এর “121059, (0 4৮৪]৪1৭৮ এব কিয়দংশ-_ 
[0 00655 0561) 901100069 20 ৪.৮] 0119, 
$৬1)61৩ 1159%91]5 [6775150 0000610101901010 06115, 
4150 25০17-0005106 07518001001 161505 ) 
1.9 09062050015 810 10 2 9502125৮605 ? 
গভীব নিভৃত হেন ভীষণ মন্দিবে, 
চিন্তানতী মু্তিমতী বিরাজিত ধীবে, 
বিহবে বিষাদ বথ। ভাবনা মগন; 
কেন হেন বিচঞ্চল তপস্থিনী মন? 
দ্বিতীয়তঃ তিনি স্বাধীন অনুবাদের চেষ্টা পান । যথা £ 
“]01)0 08)” এর ”4১ 1391190* এর কিয়দংশ__ 
925 57170018000 9623 51216 1081108 
ড/1৮) 1101109% 101255 01 %/1770 3 
4 0810561 180 ৫60101308) 


ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ৩৯ 


4511 00 21001. 15011050, 
ড/109 031 0106 108.10105 101110/5 
16 ০850 2, ৮/156101 10০01 3 
1161 176590 ৮/2.5 070৮/1)50 ৮1101) 1110/3) 
11026 0০100150০১6 075 101008, 
161৮9 050001)3 219 £022 2110 ০৮67, 
4৮00 01776 1925 60195 09.5, 
৬177 01451 0704) ড20(01005 10৮01 
৬/17 41956 00০৪ 0550 0116 5685 3 
দেখাইতে আশু গতি, বেগে চলে আশুগতি, 
জলনিধি গবজে ভীষণ ; 
সন্তাপিতা৷ একা কিনী, শিলাতলে বিরহিণী, 
হেরিলাম শয়নে তখন। 
নয়ন-কমলে বাবি, ঝবিছে মুকুত। সাবি, 
বিস্তাব জলধি পানে চায়) 
বিবশ1 বর্জিত বেশ, আকুল কুঞ্চিত কেশ, 
মনেহর উড়িতেছে বাষ। 
বৎসর হয়েছে পাত, নয় দিন তাব সাথ, 
প্রাণনাথ এলোন। আমার) 
কেনহে হৃদয়ধন, কবিয়ে দারুণ পণ, 
জলনিধি হ'তে গেলে পার। 
অবশেষে অবিকল বা স্বাধীন অনুবাদ পবিত্যাগ কবিয়া, মূল অবিকৃত 
রাখিয়।, অন্থবাদের ভাষার মাধুর্য সংবক্ষণে যত্ববান হন। থা £__ 
৮ [১915৮ এব ৭1150180 [,0915 8075?এর কিয়দংশ-_ 


গিরিশচন্দ্র 


17956512910) (116 501) 1996) 52? 
4৮00 056 17002) 0)1055 (11161)0 215200105) 
07 055 00095080553 ৮/10109 101021509 
০৮৮ 10 91151115100 15 50162001065 
১11 15100510201 0650 1500996 
91151705 18505 00 6610. 200. 0/6111100, 
58৬০ ৮711276 002 09101 €০ 005 10956 
15 2 109৮-6816 3%788019 66111105, 
58565 006 11016, 9110 200 2, 
01 05 057 50109 2110195 
95016 25 0)1106 ০৮/17 1007107015 26১ 
৬/1)60 0709 115595 56019 01)10102, 
' এস প্পিয়ে ত্ববাত্ববি, ডুবিল তিমিব-অবি, 
চন্দ্রোদয় গোধূলি ভেদিয়ে, 
শুভ্র মস্জিদেব শিব, শোভিত বজত নীব, 
ধায় শুভ্র কিরণ বহিয়ে। 
নীবব সকল রব, নিত্রিত মানব সব, 
বুলবুল পাখী শুধু জাগে, 
প্রেমে পুলকিত হিয়া, গোলাপেব কাছে গিয়া, 
প্রেমকথা কয় অনুবাগে। 
দুরস্থিত স্রোতন্বতী, মবমবি কবে গতি, 
আসে ধনী জিনিয়া স্ুতান ; 
বেইরূপ মৃদ্ধ ববে, চুম্বন কবিহে যবে, 
ছি ছি বলি ফিরাও বয়ান। 


ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ৪১ 


প্রথম পরিচ্ছেদে উল্লেখ করিয়াছি, “গিবিশচন্দ্রেব উপব তাহাব মাতুল 
নবীনকৃষ্জ বন্তুব প্রভাব বিশেষবূপে পবিলক্ষিত হয় এবং ঘথাসময়ে আমবা 
মে কথা বপিব*--এক্ষণে দেই কথ! বলিবাব সময় আপিয়াছে। কিন্তু 
ততপুর্ব্্ব নৃবীনবাঁবুন একটু সংক্ষিপ্ত পৰিচয় প্রদান আবপ্তক ।__ 

নবীনরুষ্ণ বাবু “কপিকাা একাডমি, বি্ালয়ে সগৌববে পাঠ শেষ 
কবিয়া মেডিকাাল কলেজে প্রবিষ্ট হন। তথায় সর্ধববিষয়ে সর্বোচ্চ স্থান 
অধিকাৰ কবিয়। দখখানি সুবর্ণ পদক লাভ কবেন। তাৎকাণীন গভর্ণব 
জেনাবেল লর্ড ডাঁলহৌসি তাহাব অসামান্ত প্রতিভা! দর্শনে পবম গ্রীত 
হইয়! তীহ্থাকে স্বয়ং একখানি স্বর্ণ পদক প্রদান কবেন। ডাক্তারীতে 
তাহাব যথেষ্ট প্রতিপত্তি হইয়াছিল। এক সময়ে দুইটা কঠিন বোগীব 
চিকিৎাক!লে তিনি বলিয়াছিলেন,_প্প্রথম বোগীটির বচিবাঁব সম্ভাবন৷ 
নাই, দ্বিতীয় বোগীটি নিশ্চয় বাঁচিবে |” কিন্তু প্রথম নোগীটি আবোগ্যলাভ 
কবে এবং দ্বিতীরটাব মৃত্যু হয়। ইহাতে তাহাব চিকিৎসাশাস্্ অসম্পূর্ণ 
(10001)6050%) বলিয়। ধাবণ! জন্মে। এমন কি বিবেকেব বিকদ্ধে কার্যা 
কবিতে তিনি মপম্মত হইয়া চিকিৎসা-ব্যবসাযর় একেবাঁবে পবিত্যাগ 
কবেন। বাটীতে বিমা ন।ন। বিষধক গ্রন্থ পাঠে অগাধ বিদ্ভব অধিকাবা 
হন। কয়েক বংসব পবে গভর্ণমেণ্ট তাঁহাকে অতিবিক্ত সহকাবী 
কমিশনাবের (1৮যমোজ। 5519006 0010011015101091) পদ প্রদান 
কবিরা ঝ।কীপুবে প্রেনণ কবেন। এই উচ্চপদ প্রাপ্ত হইঘাও আজীবন 
তিনি অধ্যারনণীল ছিলেন। তাহাব ন্যায় স্ুতাকিক সে সময়ে বিধল ছিল। 
মিশনবি-প্রধন ডফ. সাহেব তর্কঘুদ্ধে তাহাকে হটাইতে ন! পাবিয়া পবিশেষে 
তাহাব সহিত সৌহার্দ্য স্থাপন কবেন। 

গিবিশচন্ত্র মধ্যে মধ্যে মাতুলালয়ে গিয়। তাহার সহিত তর্ক কবিতেন। 
তর্কে গিরিশচন্দ্রেব তীক্ষ বুদ্ধি ও প্রতিভাব পরিচয় পাইয়। যাহাতে তাহা 


৪২ গিরিশচন্দ্র 


পাঠ-লিগ্সা বদ্ধিত হয় এবং নান। গ্রন্থ-পাঠে অভিজ্ঞতা জন্মে, সেই 
অভিপ্রায়ে নবীনকৃষ্ণ বাবু একটী কৌশল অবলগ্ন করিয়াছিলেন। তিনি 
বনু পুস্তক লয়! এক সঙ্গে তর্ক না কবিয়া একখানি মাত্র গ্রন্থ অবলম্বন 
কবিয়া তর্কে স্থষ্টি করিতেন। গিবিশচন্ত্র মনে কবিতেন, সেই গ্রন্থখানি 
আরত্ত কবিতে প।বিলেই মাতুলেৰ সহিত তর্কে জয়লাভ কবিতে পাবিবেন। 
গিবিশচন্ত্র মেই গ্রন্থখানি মনোযোগ পূর্বক পাঠ কবিয়া মাতুলের সহিত 
তর্ক কবিতে যাইতেন। নবীনকৃষ্ণ বাবু পুনবায় অন্ত ছুইখানি গ্রন্থ হইতে 
নুতন কথা উথ্থাপন কবিতেন। গিরিশচন্দ্র আগ্রহসহকাবে আবাব সেই 
ছুইথানি গ্রন্থ পাঠ কবিয়। আসিতেন , মনে কবিতেন-_এইবাৰ জয়লাভ 
করিব। মাতুল মহাশয় আবাব অন্ত গ্রন্থ হইতে নুত্তন যুক্তি প্রদর্শন 
কবিতেন। নবীনকুঞ্চ খাবুব এই সুকৌশলে গিবিশচন্ত্র বু গ্রন্থেব গবেষণ! 
করিয়া গভীব ভ্ঞানন(ভ কবিতে লাগিলেন। সুবিখ্যাত পণ্ডিত ডাক্তার 
মহেন্দ্রপাল লরকাব, বিশ্ববিজয়ী স্বামী বিবেকানন্দ প্রভৃতি মনীষাগণেব 
সহিত উত্তরকালে তিনি অসাধারণ তর্কশক্তির পৰিচয় দিয়াছিলেন,_ 
মাতুলের শিক্ষাদান-কৌশলই তাহার সে পক্তিব ভিত্তি দৃঢ় কবে। 

এইরূপ অনবধত পবিশ্রমেব সহিত তিনি ইংবাজী সাহিত্য, ইতিহাস, 
দর্শন, প্রাণীতত্ব প্রশ্থতি নান বিষয়ক প্রধান প্রধান পুস্তক সমূহ পাঠ 
করিয়া সেই সকল গ্রন্থেব ভাববাশি আযয়ত্ত কবিয়াছিলেন। তাহাব 
অধ্যয়নশীল জীবন এই ভাবেই আজীবন চলিয়াছিল। কলিকাতাব গ্রসিদ্ধ 
প্রসিদ্ধ ঘ,ইব্রেবীন গ্রাহকশ্রেণীতুক্ত হইয়াও তীহাব অধ্যয়ন-তৃষ্াব 
পৰিতৃপ্তি না হগয়াষ, তিনি 'এসিয়াটিক সোসাইটাব” মনস্তশ্রেণীভূক্ত হন। 
এই লাইবেবীই তাহাব এ্রতিহাসিক নাটকগুলির উপকবণ সংগ্রহে বিশেষ 
সহায়তা করিয়াছিল । 


সপ্তম পরিচ্ছেদ 
ুন্বিত্র্িক্ষণম্ণ 


নৃশংস ব্যাধ যখন প্রমোদবত চক্রবাক-মিথুনেব প্রতি শব প্রয়োগ 
কবিয়।ছিল, মহামুনি ঝল্ীকি বি সে সময্ন উপস্থিত না! থাকিতেন, তাহাব 
হৃদয়ে কবিতাঁব উৎস স্ুবিত হইত না, জগতও বামায়ণ-ন্ধাপানে বঞ্চিত 
হহত। কার্নাইল বণিয়াছিলেন, মুগচুবি-অপবাঁদে লেকুম্পীয়াবকে যদি 
দারুণ নির্যাতন সহা কবিতে না হইত, সেই নিরধ্যাতন-ফলে যদি তিনি 
জন্মভূমি ত্যাগ কবিয়া লণ্ডন সহবে না আসিন্তেন, সম্ভবতঃ নাট্যজগতে 
তাহাব নাম অমব অক্ষবে লিখিত হইত না। বাগবাজাবে ভগবতী বাবুব 
বাড়ীতে যে দিন হাঁফ আকড়াই আসর হইয়াছিল, গিবিশচন্দ্র যদি সেদিন 
সেখানে উপস্থিত ন। হইতেন, তাহ! হইলে বোধ কবি সওদাগব অফিসেব 
থাতাপত্র লইয়াই তাহার জীবন অতিবাহিত হইত । 

একদিন বাগবাজাব, বন্ুপাড়ায় ৬ভগবতীচবণ গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয়েব 
বাটীতে হাফ আকড়াই উপলক্ষে বিশেষ সমাবোহ হয়। সে সময়ে 
কলিকাতায় ধনাঢ্য ও শিক্ষিত সম্প্রদার মধ্যে হাফ আকড়াই সঙ্গীতে 
বড়ই আদর ছিল। বহুমংখ্যক ভদ্র দর্শক সমাগমে এরূপ জনতা হয় 
যে নিমন্ত্রিত গণ্য-মান্ত ধনাঢ্য ব্যক্তিগণ অতিকষ্টে সেই ভিড় ঠেণিয়া 
বাটাতে প্রবেশ করিতে লাগিলেন। এমন সময় সামান্ত পবিচ্ছদধানী 
জনৈক ভদ্রলোক দ্বাবে আদিয়। উপস্থিত। তাহাৰ আগমনে জনতামগুলীব 
মধ্যেই মহা! উল্লাস ও মহ। অভ্যর্থনার ধুম পড়িয়। গেল, জনতা আপনা- 
আপনি অপসাষিত হইয়া, তাহাব প্রবেশের পথ করিয়া দিল,-_শত শত 


8৪ গিরিশচন্দ্র 


ন্তরাত্ত ব্যক্তি তাহাব অভ্যর্থনা নিমিত্ত ছুটিয়া আদিলেন। ইনিই 
কবিবব ঈশ্ববচন্ত্র গুপ্ত ;_ হাঁফ আকড়াইয়েব গান বাধিবাব জন্ত আহত 
হইয়াছিলেন। কবিববেন এইরূপ সম্মান দেখিয়া কিশোববয়স্ক গিবিশচন্দ্রেব 
মনে কবি হইবাব সাধ জাগিয়া উঠে। 

ইহাব পবই তিনি ঈশ্ববচন্ত্র গুপ্তের সম্পাদিত 'প্রভাঁকবের, গ্রাহক 
হন। পূর্বেই বলিয়াছি পণ্ডিত ঈশ্ববচন্দ্র বিগ্ভাসাগব মহাশয়েব “বেতাল 
পঞ্চবিংশতি এবং তৎকাল-প্রকাশিত অন্তান্ঠ প্রসিদ্ধ বাঙ্গাল! গ্রন্থগুলি 
পাঠ কবিয়া বাঙ্গালা ভাষাব প্রতি তাহার বিশেব অন্ুবাগও জন্মিয়াছিল। 
এক্ষণে তিনি ঈশ্ববচন্ত্র গুপ্তকে অস্তবে গুরুবূপে প্রতিষ্ঠিত কবিয়া তাহাব 
পদানুদবণে কবিত। রচনা করিতে প্রবুত্ত হইলেন । স্বভাবের প্রবোচনায় 
গিরিশচন্দ্র পূর্বে কবিতা লিখিতেন, কিন্তু এই ঘটনাব পব হইতে তাহার 
উৎসাহ শতগুণে বদ্ধিত হইল । বাঙ্গালাব প্রাচীন কাব্য পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে 
আলোচন! কবিতে লাগিলেন এবং ভাষাম্ম আধিপত্য লাভ কবিবাব জন্য 
ইংবাজি কবিতাব অনুবাদও করিতে লাগিলেন। ইংবাজি সাহিত্যে 
অভিজ্ঞতালাভেব নিমিত্ত এ সময়ে তাহার একাপ্তিক ত্র এবং দৃঢ় 
অধ্যবসায়েব কথা পুর্ব পবিচ্ছেদে বিস্তৃতভাবে বণিত হইয়াছে । নান! 
বিষয়ক গ্রন্থ পাঠে সতত নিবিষ্ট থাকিলেও তাহাকে বে কবি হইতে 
হইবে__এ কথা তিনি ভুলেন নাই । সময় ও সুযোগ পাইলেই কবিতা বা! 
গীত বচনা কবিতেন। যে সকল কবিতা বা গীত তানাঁব ভাল লাগিত, 
তাহা বন্ধুবান্ধবগণকে শুনাইতেন) আব যাহা তাহা নিজেবই ভাল 
লাগিত ন|, তাহা তৎক্ষণ।ৎ ছি'ড়িযা ফেলিতেন। বস্ততঃ তৎকাঁল-বচিত 
কবিতা! বা গান ছাপাইবাব ইচ্ছা দূরে থাকুক, একটী কবিতা! ব৷ একথানি 
গীতও তিনি যত্তবে বক্ষ। কবেন নাই। এ সম্বন্ধে ১৩০৭ সালেব পৌষমাসে 
মিনার্ড৷ থিয়াটাবে বঙ্গ-নাট্যশালাব সাম্বংদরিক উৎসব-সভায় নাট্যাচার্ধ্য 


সণ্তম পরিচ্ছেদ ৪৫ 


শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থু মহাশয় বক্তৃতাকালে বলিয়াছিলেন, “গিবিশবাবু যে 
সকল কবিতা ও গান বাঁধিয়া নষ্ট কবিয়াছিলেন, সেইগুলি যদি আমবা৷ ঘন্রে 
রক্ষা কবিতাম, তাহা হইলে বনুদ্দিন পুর্বে কবি হুইয়! যাইতাম ।» 
গিবিশচন্দ্রেব যে দুই তিনখানি গীত মনে ছিল, তাভাব মুখে শুনিয়া ম- 
সম্পাদিত গিরিশ-গীতাবলিতে বহুদিনপূর্বে প্রকাশ কবিয়াছিলাম। 
পাঠকগণেব জ্ঞাতার্থে নিয়ে উদ্ধত কবিলাম £-_ 

(১) গিবিশচন্দ্রের সর্বপ্রথম বচিত গীত £_- 

নথ কি সতত হয় প্রণয় হ'লে । 
স্ুখ-অন্ুগামী দুখ, গোলাপে কণ্টক মিলে ॥ 
শশী প্রেমে কুমুদিনী, প্রমোদিনী উন্মাদিনী, 

তথাপি সে একাকিনী, কত নিশি ভাসে জলে ॥ 

(২) সেকস্পীয়াবেব 409০ £০৪০” নামক সনেট (চতুর্দশ পদাবলী 
কবিত। ) হইতে নিয়লিখিত গীতটি বচিত হয়। গিবিশচন্দ্রেব শ্মবণ ন| 
থাকায়, সম্পূর্ণ গীতটা প্রকাশ কবিতে পাবি নাই ।-__ 

যাবে গোলাপ জেনে আয়, সে কেন আলাপ কবে না। 
স্থন্দবী বিন! সে নাবী, অন্ত কাবে আদবে ন! ॥ 

যদ্তপি ঘৌবন ভবে, আমাবে সে অনাদরে, 

শুকা/য়ে দেখা+য়ো! তাবে, যৌবন চিবদিন ববে ন1 ॥ 

(৩) স্বীয় কালীপ্রসন্ন মিংহ মহোদয়েব “দিবা অবসান ভেবিঃ 
শীর্ষক গীতের অন্থুকবণে বচিত।-_ 

'  ভ্রমব বিষঞ্ণ মন, নলিনী মলিনী হেবে। 
কুমুদিনী প্রমোদিনী হাসি হাসি ভাসে নীবে ॥ 
নিশারূপা নিশাচবী, তিমিব-বসন পবি, 
স্বভাবে ঘেবিল হেবি, অলোক লুকায় ডবে ॥ 


৪৬ গিরিশচন্দ্র 


জোনাকী জালিয়ে আলো, আধারে পরায় মাল” 
তাবক1 হীবক সম, ঝকিল গগন+ পরে ॥ 
(৪) নাট্যাচার্ধ্য শ্রীযুক্ত বাবু অমৃতলাল বস্থ মহাশয়ের নিকট 
গিবিশচন্দ্রেব যৌবনকালেব বচিত নিয়লিখিত গীতটা প্রাপ্ত হইয়াছিলাম।__ 
কথায় যদিও কিছু খলনি কখন। 
কখনে। কি বোন কথ। বলেনি তব নয়ন ॥ 
যে কথ! বলেছে আখি, ভূলিরে গিয়েছ না কি, 
ইসাদি আ"ছ হৃদয়, গুধালে হবে স্মবণ ॥ 
গিরিশচন্দ্রের মাতৃভাষায় কিরূপ এন্ুবাগ ছিল, এবং বাঙ্গল! ভাষা যে 
গদ্যের সকল ভাব, সকশ উচ্চ চিন্ত। প্রকাশ কবিতে সক্ষম, তাহা তিনি 
এই সময় একটা কবিতাক্স প্রকাশ কবিয়াছিলেন। কবিতাটা ধ্হুকাল 
পৃর্ব্বে রচিত হওয়ায় গিবিশচন্দ্রেব ম্মবণ ছিল না। তাহার মুখে যতটুকু 
শুনিয়াছিলাম, তাহাই নিক্পে উদ্ধৃত কবিলাম £_ 


পক ্ ৬ ক ষ ক 
দেব ভাষা পৃষ্ঠে যাব, কিসেব অভাব ভাব, 
কোন্‌ ভাষে বাক্য-ভাবে হেন সংযোজন ? 
মধুব গুঞ্জবে অলি, বিকাশে কমল-কলি, 
কোন্‌ ভাবে কুঞ্জবনে কোকিল কুহুবে? 
কালেব কবাণ শ।সি, দলকে দামিশীবাশি, 


নি€ড় অলদজাল ঢাকে বা অন্ববে 1” 


এই কয়েক ছত্র কণিভা এ৭ং উদ্ধত গীতগুলি পাঠেই গিবিশচন্দ্রেব 
কবিত্ব-বিকাশের পিন পাওনা যায়। 


অফ্টম পরিচ্ছেদ 
০মীবন্নে িক্রিস্পচন্্র 


গিরিশচন্দ্র নিবিষ্টমনে ও পরম উৎসাহে কাব্য-শান্ত্র আলোচনা কবিতেন 
সত্য, কিন্তু যৌবনেব প্রাক্কালে মাথাব উপর অভিভাবক ন| থাকিলে চবিভ্রে 
যে সকল দোষ ঘটে, গিবিশচন্দ্রে তাহা! অনেক পরিমাণে দেখ দিয়াছিল। 
পানদোষ ঘটিল, সঙ্গে সঙ্গে স্বেচ্ছাচাঁবিতা, উচ্ছৃঙ্খলতা, হঠকাবিত| ;_ 
পাড়ার একটী বওয়াটে দলের স্থষ্টি হইল-__গ্রিবিশচন্ত্র তাহাব নেত|। 
তুবড়িওয়ালা, সাপুড়েব সঙ্গে কখনো। বাণ খেলিতেছেন, কখনে। অত্যাচাবী 
ভণ্ড সম্ন্যাসীদিগকে দণ্ড দিতেছেন; * আবার কাহারও বাটাতে, 
লোকাভাবে মৃতের সৎকাব হইতেছে না, গিবিশচন্দ্র অগ্রগামী হইয়া 
আপনার দল লইয়! দাহকাধ্য সম্পন্ন করিতেছেন। পাড়ায় কোথায় 
পীড়িত ব্যক্তির লোকাভাবে শুশ্রযা' হইতেছে না, অর্থাভাবে ওঁষধ-পথ্য 
জুর্টিতেছে না, গিরিশচন্দ্র আপনার দলের ভিতব টাদ। সংগ্রহ করিয়া! শুঁষধ- 
পথ্য দিয়া! তাহাব সেবা কবিতেছেন।+ গিরিশচন্দ্রেব ভ্রাতা হাইকোটেব 


পা শশী ীসীশ শা শি শি শা ৮ পাস সত পা সপ অর 





* এই সমযে ভগ সন্যাসীগণ, মধ্যা্নে যে সময়ে পুকষের। অফিসে যাইত, সেই 
সমযে গৃহস্থের ঝ।টীতে প্রবেশ করিয়া স্ত্রীলৌকদের প্রতি নানারূপ অত্যাচার ও ভষ প্রদদশন 
করিয়! তৃর্থ ও বন্ত্রাদি আদায় করিত। গিরিশচন্দ্র, যাহাতে এই অভ্ঞচাপী ও ভও 
সন্গ্যানীগণেব পাড়ায় আস! বন্ধ হয, তদ্দিষয়ে চেষ্ট। করিতেন। 

+ এই শ্রেদীর বয়াটে দলের প্রতি তাহার আজীবন একট! টান 1ছন। তাহার 
'বলিদান' নাটকে সগ্ভবিধবা অসহাধ! হিরগ্য়ীর মুখে ইহ এবটু আভান দিঝাছেন। 
যথা__হিরিযগ্দী বলিতেছে £__“আহা, এই গরীব অনাথা (প্রতিবেশিনী )-_এ খবর নিতে 





৪৮ গিরিশচন্দ্র 


উকীল স্বর্গীয় অতুলকুষ্ণ ঘোষ মহাশয় এতদ্‌ প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন__পকিন্ত 
এ সকল সংকাধ্য সত্বেও অভিভাবকশূন্ত উচ্ছৃঙ্খল যুবককে প্রতিবাসীগণ 
'বয়াটেঃ বলিত অথবা তাহাকে '৪001160186 করিতে পাবিত 
না। তীহাব। মেজ্দাদাব নিকট উপকাব পাইলেও তাহাকে পছন্দ 
কবিতেন না ।” 

গিনিশচন্দ্র ববাববই একগুরে প্রকৃতির ছিলেন ;-_যাহা! তিনি উচিত 
বিবেচনা! কবিতেন, কাহাবে। কথায় তিনি সঙ্কল্পচ্যুত হইতেন না। সামাজিক, 
ভয় বা দণ্ডে তিনি কদাচ বিচলিত হইতেন না; যাহ! ভাল বুঝিতেন, 
তাহাই করিতেন। একদিন পল্ীস্থ হীবালাল বস্থুব পুষ্ধরিণীতে কোনও 
একটি ভদ্রলোক ছুবিয়! মাঁবা বায়। তাহাব আত্মীয়স্বজনেবা কেহই ভয়ে 
পুকুবে ন।মিয়া লাস তুলিতে সম্মত হয় না। গ্িবিশচন্দ্র যখন দেখিলেন, 
পুলিস আসিয়! মুন্দফবাস দ্বারা সেই ভদ্রলোকেব লাস তুলিবাব ব্যবস্থা 
কবিতেছে, তখন তিনি আর স্থিব থাকিতে পাবিলেন ন।। নিজেই 
পুকুবে লাফাইয়! পড়িয়া সেই স্দীত বিকৃত লাদ অতি কষ্টে উপবে তুলিয়৷ 
আনিলেন এবং নিজেই উদ্ঘোগী হইয়া তাহার দলবল ডাকিয়া মৃতদেহ 
হাসপাতালে লইয়া গেলেন এবং পৰীক্ষা শেষ হইলে দাহকাধ্য সম্পন্ন 
করিয়। বাটা ফিরিয়। আমিলেন। 

আব একটা ঘটন। তীহাব মুখে শুনিয়াছিলাম,_তিনি একদিন সন্ধ্যার 
পূর্বে গঙ্গাতীবে ভ্রমণকালীন ধসিক নিয়োগীব ঘাটে গঙ্গাধাত্রীদেন ঘরে 
একটী মুমূর্খ আর্তনাদ শুনিতে পাইলেন । ঘবেৰ মধ্যে প্রবেশ ববিয়া 


শপ সী শপ আস আআ শা শাশাীক্প 





এ শািশিশ আছ সপ শা শপ ৩ পাশ শশী শী শিশির 


এসেছে, কিন্তু পাড়ার কেউ উকি মাঁবূলে না । পাড়া বাদের বযটে বলে, তাৰ! বাধে 
করে সৎকার ক'ব্ন্তে নিযে গেল, কিন্তু পাড়ার ভদ্রলোক কেউ উকি মাবরে না। 
কি কববো--কি হবে ।” ইত্য।দি। বলিদান, ৩য় অন্ধ, ৫ম গঞ্াঙ্ক। 


অষ্টম পরিচ্ছেদ ৪৯ 


দেখিলেন, একটি মুমূর্ু এক। খাটে শুইয়া আছে, আত্মীয়স্বজন কেহই 
নিকটে নাই। অনুসন্ধানে জ্ঞাত হইলেন, বৃদ্ধের নিকট আত্মীয় রেহই 
নাই, যাহাব1 লইয়া আসিয়!ছিল, মৃত্যুব বিজ্ব দেখিয়া তাহারা বাটা চলিয়! 
গিয়াছে ; এখনও পর্য্যস্ত কেহই ফিরিফপ! আসে নাই । গিরিশচন্দ্র দেখিলেন, 
বোগীব কণ শুষ্ক হইয়া আসিতেছে, একটু জলেব জন্ত আর্তনাদ করিতেছে । 
তাড়াতাড়ি একটু গঙ্গান্জল মুমুষুুর মুখে দিয়! তিনি ছু্ধেব জগ্ত অনতি- 
দুবস্থু বাড়ীব দ্রিকে ছুটিলেন। সে লময় আকাশে একখান! ঘনকুষ্ঝ মেঘ 
উঠিতেছিল- বাড়ীতে আসিতে আসিতেই ভয়ঙ্কর ঝড় বুষ্টি আবন্ত হইল। 
বৃষ্টি একটু মন্দীভূত হইবামাত্র গিবিশচন্ত্র দুগ্ধ লইয়া বাটা হইতে বাহির 
হইয়! পড়িলেন। তখন বাত্র হইয়াছে, গভীর অন্ধকার, ঘন ঘন মেঘ 
গর্জন করিতেছে, থাকিয়া থাকিয়া বিদ্যুৎ ঝলসিতেছে, পথ জনমানব 
হীন-_গিরিশচন্ত্র গঙ্গাযাত্রীর জন্ত হুগ্ধ হস্তে ছুটিলেন। বল! বাছুল্য-_-নে 
সময়ে পথে আলোবও বিশেষ ব্যবস্থা ছিল না এবং রাস্তা-ঘাটে পুলিশ 
প্রহরীবও তেমন সুব্যবস্থা ছিল না। 

দ্বারের নিকট আসিয়া বিছ্যতালোকে দেখিলেন_ দ্বার বন্ধ, একটু 
ঠেলিলেন, খুলিল ন1) ভাবিলেন হয়ত মুমুর্ষব লোকেরা আসিয়াছে । 
ডাকিলেন-_-কেহ উত্তব দিল না। এবার জোব করিয়া দোব ঠেলিতে 
দ্বাব খুলিয়া গেল, সঙ্গে সঙ্গে একখানি কঠিন শীতল শীর্ণ হস্ত সেই অন্ধকাব 
গৃহ হইতে আসিয়া তাহার স্কদ্ধেব উপর পড়িল। গিরিশচন্দ্র হতবুদ্ধি 
হইয়। কিংকর্তব্যবিমুড় হুইয়৷ পড়িলেন, এমন সময়ে বিছ্যুৎ-আলোকে 
দেখিতে পাইলেন, সেই মুমুষূ বিকৃত মুখ-ভ্গী করিয়া ঈষৎ বন্ধিমভাবে 
দরজায় পিট দিয়! াড়াইয়। রহিয়াছে । গিবিশচন্দ্র মুমূর্ষুব হস্ত ধরিয়া 
তুলিবামাত্র বুঝিলেন, বন্ক্ষণ রোগীর মৃত্যু হইয়াছে । বোধ হয় বিকারের 


খেয়ালে খাট হইতে উঠিয়। দরজার কাছে আসিয়াই দণ্ডায়মান অবস্থায় 
২ 


৫০ গিরিশচন্দ্র 


প্রাণত্যাগ কবিয়াছে। তিনি আর স্থির থাকিতে পারিলেন না। ছুটিয়। 
চলিয়া আসিলেন। এরূপ ঘটন! তাহার বাস্তব জীবনে ঘটিলেও তশপবে 
বছ মুমুষ্ুব সেবা একাকী কবিতে তিনি ভীত হন নাই। 
জক্রিসে শ্রুন্েেম্ণ 

জামাতা ভাবগতিক দেখিয়া নবীনবাবু গিবিশচন্ত্রকে কর্ম শিখাইবাব 
জন্থ “আযাটকিনসন টিলটন* কোম্পানী অফিসে শিক্ষানবীণরূপে বাহিব 
কবিলেন। তিনি উক্ত অফিসে বুককিপাব ছিলেন, বুককিপাবি কাজেব 
তখন বড় আদব । নবীনবাবু গিবিশচন্দ্রেব পিত। নীলকমল বাবুব নিকট 
বুককিপাবেব কার্য শিখিয়াছিলেন ।__এন্সণে শ্বশুব-জামাত সগ্বন্ধ ব্যতীত 
গুরু-পুত্রেব আবাব গুরু হুইলেন। প্রথম পবিচ্ছেদে লিখিত হইয়াছে, 
নীলকমল বাবু সে সময়ে একজন ন্ুপ্রসিদ্ধ বুককিপাব বলিয়া প্রতিষ্ঠা লাভ 
কবিয়াছিলেন। তীহাৰ প্রবন্তিত "ডবল এটি, আযাকাউন্ট সিসটেম 
কলিকাতাব সকল সওদাগবি অফিসেই প্রচলিত হয়। পিতৃকীন্তিব 
অধিকাবী হইবাৰ নিমিত্ত গিবিশচন্দ্র বিশেষ উৎসাহিত হইয়া 
উঠিলেন। তীহার প্রতিবেশী দিগন্বব দে একজন খ্যাতনাম! বুককিপাঁ 
ছিলেন। গিরিশচন্তর যেন্প অফিসে কাজকর্ম শিখিতে লাগিলেন, 
সেইরূপ দিগম্বরবাবুব বাঁটাতে গিয়া তাহাব নিকটও যত্রলহকাবে 
বুককিপাবেব কার্য শিন্নাী কবিতে লাগিলেন। পিতাব গুণ পুত্র 
লাভ কবিয়াছিলেন, উত্তবক।লে গিরিশচন্দ্র এবজন স্ুনিপুণ ঝুককিপাব 
বলিয়া গণ্য হইয়াছিলেন। 


নবম পরিচ্ছেদ 
স্উ্যভ্লীবুল্লেল্র লুজ্জঞ্পাভ ! 


সাঁধাবণ বঙ্গনাট্যশাল। প্রতিষ্ঠাব ভিত্তি খনন-হইতে আরম্ভ কবিয়া, 
গিরিশচন্দ্র তাহার জীবনে শেষ পধ্যস্ত-_ প্রায় অর্ধ শতাবীকাল-_ 
প্রকান্তিক সাধনায় বঙ্গবঙ্গভূমিকে নব নব রূপ 'ও বসে অপূর্ব 
সৌন্দর্্যশালিনী কবিয়! গিয়াছেন। নাট্যশালাব সহিত তাহার কম জীবন 
বিশিষ্টবূপ গ্রথিত। এ নিমিত্ত কিবপে তাহাব নাট্যজীবনেব স্ুত্রপাত 
হইল, তাহা লিখিতে হইলে পূর্ববর্তী নাট্যশালাব কতকট৷ পরিচয় দিতে 
হয। পাঠকগণেব অবগতিব নিমিত্ত বঙ্গ-বঙ্গালয়েব জন্মবৃত্তাস্তেব একটা 
সংক্ষিপ্ত বিববণ প্রদান করিলাম ।__- 


৩পাঁীন্ন ইহ 

১৭৮৭ খৃষ্টাব্দে হেবাঁসিম লেবেডেফ নামক জনৈক কুসিয়া-নিবাসী 
পর্যটক কলিকাতায় আসিয়৷ বহুদিন বাস কবিয়াছিলেন। গোলকনাথ 
দাস নামক একজন ভাষাবিদেব নিকট তিনি বাঙ্গাল! ভাষা শিক্ষা করিয়া 
«05 1015510156৮ এবং ৮1,0৮5 15 0) 065 1)০০010:” নামক 
ছুইখানি ইংবাঁজী নাটকের বাঙ্গল। অনুবাদ করেন। গোলকবাবুব সাহায্যে 
তিনি বাঙ্গালী অভিনেতা ও অভিনেত্রী সংগ্রহ পুর্ববক ১৭৯৫ ও ৯৬ খ্রীষ্টাব্বে, 
২৫ নং ডোমতলায় পুবাতন চিনাবাজার মধ্যস্থ একটা গলিতে “বেঙ্গলী 
থিয়েটাব” নামে একটা বঙ্গীলয় নির্মাণ কৰেন এবং টিকিট বিক্রয় ক্রিক! 
দুইবাত্রি "[01585156” নাটকের অভিনয় পর্য্যস্ত করাইয়াছিলেন। ইহাই 
হইল দঙ্গীয় নাট্যশালাব প্রাচীন ইতিহাস। 


৫২ গিরিশচন্দ্র 


নুপ্রসিদ্ধ সাহিত্যিক শ্রীযুক্ত অমরেন্্রনাথ রায় মহাশয় লেবেডেফেব 
এই বাঙ্গাল! থিয়েটাবের সংবাদ বাক্‌ল্যাণ্ডের “01001017810 0 [00121 
31081570177” হইতে অন্ুবাদ করিয়! বাঙ্গাল! কাগজে প্রথম প্রকাশ 
করেন । ১৩২৮ সাল, ২২শে জ্যেষ্ঠ, রবিবার তারিখে “বাসন্তী, নায়ী সচিত্র 
সাপ্তাহিক পত্রিকায় 'পুবাতন প্রসঙ্গ” শীর্ষক প্রবন্ধে-প্বাঙ্গলার আদি 
নাট্যকার-_” বলিয়া এই প্রবন্ধ মুদ্রিত হয়। তৎপরে *০0৪109%8 
চ₹51০৬/* মাসিক পত্রে পপ্তিত 0. 4, 03511575079, প্রফেসর শ্রীযুক্ত 
শৈলেন্দ্রনাথ মিত্র ও শ্রদ্ধেয় শ্রীযুক্ত শ্ঠামাগ্রসাদ মুখোপাধ্যায় মহাশয়গণ 
কর্তৃক লিখিত প্রবন্ধে এতদ্‌ সম্বন্ধে আরও অধিক আলোচিত হয়। 
সম্প্রতি স্রসাহিত্যিক শ্রীযুক্ত হেমেন্দ্রনাথ দাসগুপ্ত ও অধ্যাপক শ্রীযুক্ত 
অমুলাচবণ বিগ্াভৃষণ মহাশয়দ্বয় যথেষ্ট পবিশ্রম কবিয়। লেবেডেফের 
থিয়েটারের বু তত্ব প্রকাশ করিয়াছেন। 

যাহাহউক বঙ্গরক্গালয় প্রতিষ্ঠার মূল ইংরাজ। ইংবাঁজি থিয়েটাব 
দেখিয়াই বাঙ্গালীর! রঙ্গমঞ্চ নিম্মাণ করিয়া! দৃশ্তপটাদি সংযোগে থিয়েটাব 
করিতে শিখেন। “মাইকেলের জীবন চরিত*লেখক স্ুপ্রদিদ্ধ শ্রীযুক্ত 
যোগীন্দ্রনাথ বস্তু মহাশয় বলেন,__“ইংবাঁজেরা প্রথমে ”চৌরাঙ্গি থিয়েটাব* 
নামক একটা থিয়েটাব স্থাপন কবেন। ৮ঘ্বারকানাথ ঠাকুরেব স্তায় ছুই 
একজন সন্্ান্ত বাঙ্গালীর কদাচ কথন গমন ব্যতীত সাধারণ বাঙ্গালী-দর্শক 
তথায় যাইতেন না ।» ক্রমশঃ ইংরাজেব রাজ্য বৃদ্ধি এবং তৎসঙ্গে বহুদংখ্যক 
ইংরাজের এদেশে আগমনে- তাহাদের নাট্যশালারও সংখ্যা এবং শ্রীবৃদ্ধি 
সাধিত হয়। ইংরাজদের সী-সুঁছি (9805-9০০) নামক থিয়েটারটী সে সময় 
সর্বাপেক্ষা গ্রতিপত্তিশালী হইয়! উঠিয়াছিল। সাধারণ বাঙ্গালীরা এ সকল 
থিয়েটাবে না যাইলেও অনেক গণ্যমান্ত বাঙ্গালী যাইতেন । এতাবৎ তাহার! 
যাত্রা, পাঁচালি, কবির লড়াই প্রভৃতি লইঙ্নাই আমোদ উপভোগ করিয়া 


নবম পরিচ্ছেদ ৫৩ 


আসিয়াছেন,_অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্ত-পট পরিবর্তন কখনো দেখেন 
নাই। ইংরাজি থিয়েটাবের এই নূতনত্ব দর্শন কবিয়! দেশীয় নাটকের 
শ্ীবৃদ্ধি সাধনে অনেকে উৎসাহিত হইয়া উঠেন। 

১৮৩১ খুষ্টা্বে কলিকাতা, শ্তামবাজার-নিবাসী নবীনচন্দ্র বস্থু নামক 
জনৈক ধনাঢ্য ব্যক্তি বিস্তর অর্থব্যয়ে তাহাব বাটাতে কবিবর ভাবতনন্ত্র 
রায় গুণাকরের “বিদ্যানুন্দব কাব্য” নাটকাকারে পরিবর্তিত করাইয়া 
অভিনয় আয়োজন করেন। তৎকালীন ইংরাজি থিয়েটার বা আধুনিক 
নাট্যশালার স্তায় অঙ্কিত দৃশ্ঠপটাদি ব্যবহৃত না! হইলেও এই অভিনয়ে 
বিশেষ নৃতনত্ব ছিল। নাট্যোল্লিখিত দৃশ্তগুলি সেই বৃহৎ ভবনে নান৷ স্থানে 
সজ্জিত হইয়াছিল । একস্থানে_ _বীরসিংহ রায়ের রাঁজসভা৷ ; একস্থানে__ 
সুন্বরেব বিবার জন্য বকুলতলা ; একস্থানে_ মালিনীর গৃহ; বাটার শেষ 
ভাগে মশান,_এইরূপ সঙ্জিত হইত এবং প্রত্যেক দৃশ্তের সম্মুখে আসনের 
ব্যবস্থা থাকিত। দৃশ্ঠ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দর্শকগণকেও অন্ত দৃশ্তের 
সম্মুখস্থ আমনে গিয়। উপবেশন করিতে হইত। এই অভিনয়ে স্ত্রী চরিত্রেব 
ভূমিকাগুলি বারাঙ্গন৷ কর্তৃক অভিনীত হইয়াছিল। এই অপূর্ব অভিনয় 
দর্শনে সাধারণে মুগ্ধ হইলেও ইংরাজী শিক্ষিত নব্য সম্প্রদায় বিদ্যানুন্দরের 
অশ্লীলতা। এবং বেগ্ঠ। লইয়। অভিনন্ব সম্বন্ধে সংবাদ পত্রে আন্দোলন করেন। 

পব বংসর ১৮৩২ খুষ্টাবধে ৬প্রসন্নকুমার ঠাকুব তৎকালীন সংস্কৃত 
কলেজের প্রফেসর উইলসন সাহেব কর্তৃক প্উত্তর রাম চরিত” নাটকের 
ইংবাজী অন্ুবাদ-_তীহাব শু'ড়োর বাগানে অভিনয় করান । স্বয়ং উইলমন 
সাহেবের শিক্ষকতায় সংস্কৃত ও হিন্দু কলেজের ছাত্রগণ ইহাতে অভিনয় 
করিয়াছিলেন । 

ক্রমে বিদ্যালয়ের ছাত্রদিগের মধ্যে ইংরাজী অভিনক্ন সংক্রামিত হইয়া 
উঠিন্াছিল। কলিকাতায় সেই সময় হিন্দু কলেজ ও ওরিয়েন্টাল 


৫৪ গিরিশচন্দ্র 


সেমিনারি--এই ছুইটী বিগ্যালয়ই বিখ্যাত ছিল। কাণ্জেন বিচার্ডসন 
সাহেব হিন্দু কলেজে এবং হারমান্‌ জেফ্রয় নামক জনৈক ফরাসী 
ওরিয়েপ্টাল সেমিনাবিতে সে সময়ে প্রধান শিক্ষক ছিলেন, ইহার! উভয্বেই 
নাট্যকলাবিদ্‌ ছিলেন। ইহাদেবই উৎসাহ ও যত্বে ছাত্রগণের হৃদয়ে 
অভিনয়ানুরাগ সঞ্চাবিত হইতে থাকে । 

ওবিয়েপ্টাল সেমিনারিতে ছাত্রগণ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত 'ওবিয়েশ্টাল 
থিয়েটাবেন” আদর্শে কয়েক বৎসর ধবিয়া নানাস্থানে ইংবাজিতে 
সেকৃসপীরারেব নাটকগুলি অভিনীত হইতে লাগিল। কিন্তু ইংবাজী ভাষায় 
অভিনয় হওয়ায় জনসাধাবণ নাটকীয় বসাস্বাদনে বঞ্চিত হইত । অভিনয়োপ- 
ঘোগী সে সময় বাঙ্গাল! নাটক'ও ছিল ন1। বিশ্বমঙ্গল ও ভদ্রার্জুন নামক ছুই 
একখানি নাটক ছিল, তাহাতে আবাব দৃশ্ঠ-বিভাগ ব৷ 'প্রবেশ-প্রস্থানও 
লিখিত ছিল না, ভাষাও মার্জিত নহে। পাশ্চাত্য নাটক সমূহে 
বসান্বাদ করিয়া শিক্ষিতগণেব তাহাতে তৃপ্তি না হওয়ায় কলিকাতায় 
অনেক অনন্ত ব্যক্তি নিজ নিজ গৃহে ইংবাজী নাটকেব অভিনয় কবাইতে 


লাগিলেন । 
শুভক্ষণে সুবিখ্যাত নাট্যকাব পণ্ডিত রামনাবায়ণ তর্করত্ব মহাশয় 


“কুলীনকুলসর্বন্থ* নামক একখানি নাটক রচন। কবিয়্াছিলেন, সাধারণেব 
নিকট এই নাটকথানি অতিশয় সমাদৃত হইয়/ছিল। যে মহান্‌ উদ্দেস্তে 
এই নাটকখানি বিবচিত হয়, তাহার ইতিহাস এইরূপ £__ 

রঙ্গপুর জেলায় কুণ্তীগ্রামের জমীদার দেশহিতৈষী, সম্থদয় কালীচন্ত্র 
রায়চৌধুরী মহাশয় তৎকালীন কৌলীন্ত ও বহু বিবাহ প্রথায় বঙ্গ 
সমজেব দিন দিন অধঃপতন দর্শনে বিশেষরূপ ব্যথিত ও চিস্তাকুল 
হন। তিনি দেশের এই অনিষ্টকারিতা সাধারণেব মর্মে মর্মে 
উপলব্ধির নিমিত্ত একটী কৌশল অবলম্বন করেন। কালীবাধু 


৫৫ 





পণ্ডিত বামনাবায়ণ তর্করত্ব 
“বঙ্গপুব বার্তীবহ” সংবাদ পত্রে নিম্নলিখিত বিজ্ঞাপন প্রকাশ 
করেন £_ 


“বিজ্ঞাপন । 
৫০২ পঞ্চাশ টাক পারিতোধিক । 
এই বিজ্ঞাপন দ্বারা সর্বসাধাবণ কৃতবিগ্ক মহোদয়গণকে বিজ্ঞাত 
করা যাইতেছে, ধিনি স্থুললিত গৌড়ীয় ভাষায় ছয় মাস মধ্যে “কুলীন- 
কুল সর্বস্থ নামক একখানি মনোহর নাটক রচন! করিয' রচকগণ মধ্যে 


৫৬ গিরিশচন্দ্র 


সর্ধোতকষ্টতা দর্শাইতে পারিবেন, তাহাকে সঙ্কল্লিত ৫*. পঞ্চাশ টাক! 
পাবিতোষিক প্রদান কব! যাইবেক। 

রঙ্গপুর পং কু্তী শ্রীকালীচন্ত্র রায় চৌধুরী-_কুণ্তী পং জমীদার। 

বঙ্গা্ব ১২৬০ সাল তারিখ ৬ কার্তিক» 

পণ্ডিতবর রামনারায়ণ তর্করত্ব মহাশয়ই সগৌববে এই পাবিতোধিক 
লাত কবিয়াছিলেন। 


এম্বাভ্য ভন্নে লখেশ্র শ্িক্সেজোক্প 


১৮৫৭ গ্রীষ্টাব্দে কলিকাতা পাথুরিয়াঘাট।, চড়কডাঙ্গায় জয়বাম বসাকের 
বাটীতে উক্ত নাটকের প্রথমাভিনয্র হয়। অভিনয় সর্বসাধারণেব এরূপ 
হৃদয়গ্রাহী হইক্সাছিল যে, ধনাঢ্য ও গণ্যমান্তি ব্যক্তিগণ তাহাদের ভবনে ইংবাজি 
নাটকাভিনয়ের পরিবর্তে বাঙ্গালা নাটকাভিনয়ে উৎসাহিত হইয়া উঠেন। 

উক্ত বৎসর হইতে আরম্ভ কবিয়। ১৮৬৭ খ্রীষ্টাবব পর্ধাস্ত কলিকাতায় 
বহু ধনার্টা ভবনে বাঙ্গলা নাটকের অভিনয় হইয়াছিল। তন্মধ্যে 
বিশেষরূপ উল্লেখযোগ্য--(৯) িমলায় ছাতুবাবুব- বাটীতে “শকুস্তল! 
অভিনয়, (২) মহাভারত-অনুবাদক কালীপ্রসন্ন সিংহের বাটাতে “বেণী- 

ংহাব+ অভিনয়, (৩) পাইকপাড়ার রাজা প্রতাপনারায়ণ সিংহ ও ঈশ্বরচন্তর 
সিংহের বেলগেছিয়৷ উদ্ভ/ন-ভবনে “রত্বাবলী” ও শর্মিষ্ঠটার অভিনয়, (৪) 
সিন্দুরিয়াপটার ৬গোপাল লাল মঙ্লিকের বাটাতে আচাধ্য কেশকচন্জ 
সেনেব উদ্যেগে এব্ধবাবিবাহ' অভিনয়, (৫) মহারাজ যতীন্ত্রমোহন 
ঠাকুরের পাঁথুরিয়াঘাটা রাজবাড়ীতে মালবিকা গ্নিমিত্র, বিছ্যান্ুন্দর, মালতী- 
মাধব, রুক্সিণীহুরণ, বুঝলে কি না? প্রভৃতি, (৬) যোড়ার্সাকে। 
*দ্বারকানাথ ঠাকুরের বাঁটাতে নব নাটক, (৭) শোভাবাজার রাজবাড়ীতে 
কৃষ্ণকুমারী, (৮) বটতলার জয়মিত্রেব পুত্র পাঁচকড়ি মিত্রের উদ্যোগে 


নবম পরিচ্ছেদ ৫৭ 


তাহার্দের অপার চীৎপুর রোডস্থ পুরাতন বাড়ীতে পদ্মাবতী, (৯) কয়লা" 
হাটায় ( রতন সবকার গার্ডেন ই্্রীট ) শ্তামলাল ঠাকুরের দৌহিত্র হেমেন্দ্রনাথ 
মুখোপাধ্যায়ের উদ্বেগে “কিছু কিছু বুঝি? 

সুপ্রসিদ্ধ পণ্ডিত স্বর্গীয় মহেন্দ্রনাথ বিদ্যানিধি মহাশয়, নাটযাচার্যয 
কেশবচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় ও বিহারীলাল চট্টোপাধ্যায় প্রভৃতি প্রবীণ নাট্য 
কলাবিদগণের সাহায্যে তৎসম্পার্দিত “অনুশীলন নামক মানিক পত্রে, শ্তাম- 
বাজাবেব নবীন বন্থুর বাটাতে “বিদ্যানুন্দরের” অভিনয় হইতে আরম্ভ 
করিয়া কলিকাতাব ধনাট্য-ভবনে অভিনয়েব ইতিবৃত্ত বিস্তৃতভাবে 
প্রকাশ কবেন। 

উল্লিখিত ধনাঢ্য ব্যক্তিগণেব ভবনে নাটকাভিনয়ে দৃশ্ঠপট এবং পোষাক- 
পরিচ্ছদ বহু ব্যয়েই প্রস্তুত হইত এবং শিক্ষিত অভিনেতারও অভাব হইত 
না। স্থতরাং তাহাদের অভিনয় দেখিবার জন্ত সাধারণের যে বিশেষ 
আগ্রহ জন্মিবে, তাহাতে আর আশ্চধ্য কি? কিন্তু বড়লোকের বাটাতে 
সথের থিয়েটার, _অধিক জনতায় পাছে অভিনয়ের ব্যাঘাত ঘটে, এনিমিত্ত 
স্থানোপযোগী নির্দিষ্ট সংখ্যক ফ্রি টিকিট বিতরিত হইত-_তাহার অধি- 
কাংশই তাহাদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং উচ্চপদস্থ মান্ত-গণ্য 
ব্যক্তিদেব দিতেই ব্যয়িত হইত ; সুতরাং নাট্যামোদী গৃহস্থ ভদ্রলোকের 
অভিনয় দর্শনের নিমিত্ত টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা প্রায়ই ব্যর্থ হইত । আত্ম- 
সন্ত্রম-জ্ঞানহীন কোনও ব্যক্তি বিন! টিকিটে রঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টা 
করিলে, দ্বারবান কর্তৃক লাঞ্ছিত হুইয়! বহিষ্কত হইত। 

গিরিশচন্দ্র গল্প করিতেন, পাথুরিয়াঘাটায় ঠাকুরবাড়ীতে থিয়েটার 
দেখিবার একখানি টিকিট সংগ্রহ করিয়া আমাদের বন্থুপাড়ার একটা 
ভদ্রলোক, গৌরবে সেই টিকিটখানি প্রত্যেক লোককে দেখাইয়া 
বেড়াইতেন এবং কিরাপ বুদ্ধি-কৌশলে--কিরূপ যোগাড়-যন্ত্র করিয়। তিনি 


৫৮ গিরিশচন্দ্র 


টিকিটখানি সংগ্রহ করিয়াছিলেন, তাহাঁর গল্প কবিয়! পল্লীবানীগণকে 
অবাকৃ করিয়া দিতেন । 

যুবক গিবিশচন্দ্রেব মনে এ প্রকাবে অভিনয় দর্শন করিবাব 
পবিবর্তে, এইনপ যদি একটা থিয্পে্টাব কবিতে পারেন, সেই বাসনাই 
প্রবল হইয়াছিল। কিন্তু মধাবিত্ত গৃহস্থেব সন্তান__এত অর্থ কোথায় 
পাইবেন? মনের আশা মনেই থাকিত। কিছুদিন পরে তাহাব সেই 
ইচ্ছা কার্ষ্যে পবিণত কবিবাব স্থযোগ উপস্থিত হইল । স্তীহাব প্রতিবাসী 
স্ব্গায় নগেন্্রনাথ বন্যোপাধ্যায় নিজ বাটীতে একটি কনসার্টেব দল 
বসাইফ়্াছিলেন। গিবিশবাবু মধ্যে মধ্যে তথায় যাইতেন। সেই সময় 
কলিকাতায় যেমন স্থানে স্থানে খিয়েটাব হইতেছিল, সেইৰপ আবাব স্থানে 
স্থানে সথেব যাত্রাও হইতেছিল। থিয়েটাব অপেক্ষা যাত্রাব খবচ 
অনেক কম পড়িত। গিবিশবাবু, নগেন্ররবাবু, ধর্মদাস সুব, 
রাধামাধব কব প্রভৃতি বন্ধুগণ মিলিত হইয়া ১৮১৭ ্রীষ্টাব্দে 
বাগবাজাবে একটি সখের যাত্রা সম্প্রদায় প্রতিষ্টিত কবেন। মাইকেলেব 
“নিষ্ঠা নাটক অভিনয়ার্থে মনোনীত হয় । যাত্রাব উপযোগী কতকগুলি 
গীত বচনাব আবপ্তক হওয়ায়, সকলে তৎসাময়িক প্রসিদ্ধ গীত-রচয়িতা 
বাবু প্রিয়মাধব বনু মল্লিকেব নিকট গমন কবেন, কিন্তু বহুবার যাতায়াতের 
পর তাহার নিকট একখানিও গীত না পাওয়ায় গিবিশবাবু বিরক্ত হইয়! 
তহাব সমবয়ঙ্ক উমেশচন্দ্র চৌধুবী মহাশয়ফে বলেন, “এত কষ্ট কেন? 
আর, আমর! ছু'জনে যেমন পারি, গান বাধি।”৮ উভয়ে উৎসাহের সহিত 
উক্ত মাত্রার গান রচনা কবিলেন। গিরিশ বাবু-যিনি আজ শ্ররেষ্ঠ 
গীতরচয়িতা বলিয়। প্রসিদ্ধ, তাহাব রচিত গীত এইসময় সাধারণের নিকট 
প্রথম পরিচিত হইল। আমবা গিরিশবাবুর এ সময়ের রচিত ছুইখানি 
গীত সংগ্রহ করিতে সমর্থ হইয়াছি, নিয়ে তাহ! প্রকাশিত হইল। 


নবম পরিচ্ছেদ ৫৯ 


১। দেবযানীকে কূপ হইতে উদ্ধার কবিয়। ধাতি__ 


( সথি ধব ধর+ সুরে গেয় ) 
আহ! ! মবি! মরি! 
অন্থপম। ছবি, মায় কি মানবী, 
ছলন। বুঝি কবে বনদেবী! 
বঞ্জিত বোদনে বদন অমল, 
নয়ন-কমলে নীব ঢল ঢল, 
নিতম্ব-চুম্বিত, বেণী আলোড়িত, 
বিমোহিত চিত হেরি মাধুবী ॥ 
জনহীন হেন গহন কাননে, 
এ কুপ ভীষণে, পড়িল কেমনে, 
কি ভাবে ভামিনী, ত্যজিয়৷ ভবনে, 
আসিয়াছে এই স্থানে, 
দারুণ কঠিন এব পবিজন, 
তাই একাকিনী বমণী বতন 
কেবা এ কামিনী, কেন অনাখিনী, 
পাগলিনী বুঝি প্রিয় পবিহবি ॥ 


২। সখীর প্রতি শর্ষি্াব উক্তি ।__ 


অতুল বূপ হেবিয়ে। 
বিমুগ্ধ মন, নিয়ত সে ধন, সাধন কবি সই-_ 
সে বিন! দহে হিয়ে ॥ 
চিত-মোহন, বিনোদ-বদন, আব কি কভু পাৰ দবশন, 
মধুব বচন, করিব শ্রবণ, 
পরশে পুরাব সাধ-_ 
সরস হাসি বিমল-অধরে, অন্থপম আঁখি মানন হবে, 
কেন রতনে না রাখিন্ু ধবে, লুকাল মন হবিয়ে ॥ 





দশম পরিচ্ছেদ? 


সম্রন্রাক্র একা দম্পীল্র ভিন্ন 

প্রায় বৎসবাবধিকাল বাঁগবাঁজাবে মাঝে মাঝে "শর্দিষ্ঠার, অভিনয় 
হইত। গিরিশচন্ত্র যে আশ! এতকাল ধরিয়। হৃদয়ে পোঁষণ কবিয়। 
আসিতেছিলেন, তাহ। এক্ষণে ফলবতী তইবাব উপায় হইল। তিনি 
নগেন্দ্রবাবুব সহিত পরামর্শ করিতে লাগিলেন, এইতো৷ যাত্রায় বেশ সুখ্যাতি 
লাভ কবা গেল, এসোন! একট! থিয়েটারেব দল বসান যাক । নগেন্দ্রবাবু 
বলিলেন, প্দৃশ্তপট ও পোষাক-পবিচ্ছদে বিস্তব খবচ পড়িবে, সে টাকা 
কি আমবা সঙ্কুলান কবিতে পারিব ?” নান! নাটকাভিনয়েব কথ 
উত্থাপিত হইল, কিন্তু পেষাক-পরিচ্ছদের বাহুল্য বুবিয়৷ তাহ! পবিত্যক্ত 
হইতে লাগিল। বহু চিন্তার পর গিরিশবাবু দীনবন্ধুবাবুর “সধবার 
একাদশী” অভিনয়ের প্রস্তাব কবিলেন। স্ুপ্রসিদ্ধ নাট্যকার রায় দীনবন্ধু 
মিত্র বাহাছবের সেই সময়ে নূতন নাটক “নধবার একাদশী” বাহিব 
হইয়াছে। সাহিত্যক্ষেত্রে এই নুতন নাটক লইয়া মহা আন্দোলন 
চলিতেছে, নব্য সম্প্রদায় মহা আগ্রহে *নিমে দত্তেব” ইংরাজী আওড়াইতে- 
ছেন। পোষাক-পরিচ্ছদের হাঙ্গামা নাই। ভদ্রলোকের ন্যায় কাপড়, 
জামা, চাদর পরিয়া অভিনয় চলিতে পারে। বাকী দৃশ্তপট-_দকলে 
মিলিয়া সেটা কি আব থাড়। করিতে পারিবে ন। ! 

নগেন্ত্রবাবু প্রভৃতি সকলেই গিরিশচন্দ্রের এই প্রস্তাব সমীচীন বোধে 
আনন্দসহকারে গ্রহণ করিলেন এবং পরমোৎসাহে প্সধবার একা'দশী*র 
মহল! দিবার জন্ত প্রস্তত হইতে লাগিলেন । আজ আমোদের জন্ 
বাগবাজারের এই যুবকগণ মিলিয়৷ যে নাট্যবীজ বপন করিতে অগ্রসর 


দশম পরিচ্ছেদ ৬১ 


হইলেন, তাহারা ম্বপ্নেও ভাবেন নাই, এই বীজ অন্কুরিত হইয়া! ক্ষুদ্র তরু 
হইতে ক্রমে বিরাট মহীরুহ্রূপে পরিণত হইন্না ইহাব শাখাপল্লব বঙ্গদেশ 
ছাড়াইয়া সমস্ত ভাবতবর্ষে একদিন বিস্তৃত হইয়া পড়িবে । বস্ততঃ-_দীনবন্ধু 
বাবুব নাটকই সাধারণ নাট্যশাল। সংস্থাপনেব ভিত্তি স্থচিত কবিল। 
গিরিশবাবু তাহাব “শান্তি কি শাস্তি” নামক নাটক দীনবন্ধুবাবুব নামে 
উৎসর্গ কবেন। উৎসর্গ-পত্রের "কিয়দংশ উদ্ধৃত করিতেছি £- 

৬ কচ যে সময়ে 'সধবাব একাদশীব” অভিনয় হয়, সে সময় ধনাঢ্য 
ব্যক্তির সাহায্য ব্যতীত নাটকাভিনয় কৰা একপ্রকাব অসম্ভব হইত, 
কাবণ পবিচ্ছদ প্রভৃতিতে যেরূপ বিপুল ব্যয় হইত, তাহা নির্বাহ করা 
সাধাবণেব সাধ্যাতীত ছিল। কিন্তু আপনাব সমাজচিত্র “সধবাব 
একাদশী”তে অর্থব্যয়ের প্রয়োজন হয় নাই। সেইজন্য সম্পত্তিহীন 
যুবকবৃন্দ মিলিয়া "সধবাব একাদশী” অভিনয় কবিতে সক্ষম হয়। 
মহাশয়ের নাটক যদ্দি না থাকিত, এই সকল যুবক মিলিয়। “ন্যাসান্ঠাল 
থিয়েটার” স্থাপন কবিতে সাহদ কবিত না! । সেই নিমিত্ত আপনাকে 
বঙ্গালয়ত্র্ট। বলিয়া নমস্কাব কবি। * +*” 

বাগবাজাবেব সখেব “শর্মিষঠ। যাত্রা” সম্প্রদায় হইতেই অভিনেতৃগণ 
নির্বাচিত হইল। বাগবাঁজাব মুখুজ্জেপাড়ায় হরলাল মিত্রেব লেনে, 
নাট্যামোদী অরুণচন্দ্র হালদাবের বাঁটাতে মহল! (বিহাবস্তাল ) বসিল। 
গিরিশবাবু সে সময়ে "জন আযাটকিনমন কোম্পানী* অফিসে সহকারী বুক- 
কিপারের কার্য্য করিতেন এবং গৃহে নানা গ্রন্থ অধ্যয়ন ও ইংরাজি 
কবিতাব অনুবাদ ইত্যাদিতে ব্যাপূত থাকিতেন। সম্প্রতি শর্শিষঠা- 
যাত্রাব গান বাঁধিয়া কবি বলিয়াও কিঞ্চিৎ সুখ্যাতি অর্জন করিয়াছেন। 
সম্প্রদায়স্থ যুবকগণের মধ্যে ইনি বয়োজ্যেষ্ঠ এবং বিদ্বান বলিয়। পরিচিত 
ছিলেন, এই নিমিত্ত “সধবার একাদশী” সম্প্রদায়ের শিক্ষক ও নেতার 


৬২ গিরিশচন্দ্র 


পদ গিবিশচন্দ্রেব উপর অপিত হুইল। নাট্যকলার চরমোৎকর্ষ সাধনেব 
নিমিত্ত রাজটাকা কপালে দিয়া যে নাট্যসমাটকে বিধাতা বঙ্গে পাঠাইয়! 
দিয়াছিলেন, এই তাহার প্রথম আচার্যেৰ আসন গ্রহণ । গিবিশচন্দ্র বোধ 
হয় তখন জানিতেন না, এই আসনেব মর্যাদা তাহাকে আজীবন বক্ষ! 
কবিতে হইবে। 

সে সমস্বে প্রত্যেক নাটকেই প্রায় নট-নটা লইয়া একটী প্রস্তাবন! 
থাকিত, কিন্তু সধবাব একাদণাতে তাহা না থাকায় তখনকাব প্রথামত 
গিবিশবাঁবু নট-নটা লইয়া! একটা প্রস্তাবনা! এবং আবশ্তক বোধে কয়েকটি 
গানও বচনা কবিয়া দেন। এই গীতগুলি তৎকাল-প্রচলিত প্রসিদ্ধ 
প্রসিদ্ধ হিন্দিগানের অবিকল ছন্দ বঙ্জায় রাখিয়া বচিত হইয়াছিল। কাবণ, 
সে সময়ে নূতন গানে স্থব সংযোগেব সুবিধা ছিল না। এ দকল আদর্শ 
হিন্দী গানেব সহিত গিবিশচন্দ্র-বচিত গীতগুলিব তুলনা করিলে, তাহাব 
ছন্দ বোধ ও রচনা-দক্ষতাব প্রভূত পবিচয় পাওয়! যায়। যে কয়েকথানি 
গীত সংগ্রহ কবিতে পারিয়াছিলাম, নিযে তাহা উদ্ধৃত কবিয়া দিলাম। 

১ম্‌ গীত । * 
কাল কোকিল তানে প্রাণে হানে শব, 
প্রেমে আকুল ধাইল কত মধুকর। 
ঢলে টলে রসে, ভ্রমে চুমে কুম্ুম-সধর ॥ 
অনিল চঞ্চল ধীবে বহিল, 
লুটিল পবিমল দিক মোহিল, 
বিপিন নবীন মুঞ্জবিল, 
চিত মেহিত হেবি শোভা-_বিরহিণী জর-জব ॥ 


শিস সপ পপ সা পপ পপ শপসপ স্পা পপি পাস 


* এই গীতটা উত্তরকালে রচয়িত| তাহার “ভ্রান্তি” নাটকে মংযে।জিত কবেন। 


্প্ 


দশম পরিচ্ছেদ ৬৩ 
২য় গীত। 


নকুলেশ্বরেব উক্তি £-_ 
( মদ্দিরা ) তোমায় সঁপেছি প্রাণমন। 
মাতাল-মোহিনী, অশেষ বঙ্গিনী, 
তবঙ্গিণী বিবিধ বরণ ॥ 
হলে প্রবীণ, হও নবীন।, 
তোমাব ততই বাড়েলে! যৌবন ॥ 
মবি কি মাধুখী, জানন! চাতুবী, 
সম সবে কব বিনোদন ॥ 
ওয় গীত। 
কমুদিনীব উক্তি 
এই কিবে কপালে ছিল। 
কেদে কেদে দিন বহিল ॥ 
করি যাব উপাসন!, সেই কবে প্রতারণা, 
নাবী হ'য়ে কি লাগ্চনা, বিধি বাদ সাধিল ॥ 
ধসন-ভূষণ-ধন, সখ হল অকাবণ, 
দিয়ে সুথ বিসর্জন, পোড়া প্রাণ বহিল ॥ 


৪র্থ গীত। 


বল ওলে। বিনোদিনি, ভুলিয়েছিলে কেমনে? 
এস এন প্র1ণধন, বমলো হৃদি-আসনে। 
বলিলে মিলন যবে, পুন তব! দেখ। হবে, 
অদর্শনে কেন তবে, বেদনা! দ্রিলেহে মনে ॥ 


৬৪ গিরিশচন্দ্র 


৫ম গীত। 


ত্রমে মধুপগণে-_ 
লোটে ফুল-মধু প্রমোদ-বনে। 
পুলকিত চিত গীত গায় পিকববে, 
শ্রবণ-রঞ্জন স্বরেবে__ 
মন হবে তরু মুগ্জুবে রে-_ 
চ্মকে প্রাণ মলয় পবনে ॥ 


৩ষ্ঠ গীত । 


(সরিমিঞাব টগ্লার স্ুব, অবিকল বজায় রাখিয়া রচিত ) 
শুনহে মদন, করিহে বারণ। 
অবলা বধিতে শব করে৷ না সংযোজন ॥ 
কোমলপ্রাণ। ললন1,__ 
তাবে দেহ বেদনা হে এ কেমন ॥ 


এই সধবার একাদশী-সম্প্রদায়ের নাম হইয়াছিল--“]1) 739810১5281 
£51056507 1079806-৮ সম্প্রদায় নবোতৎসাহে যে সময়ে অভিনয় খুলিবাব 
জন্য প্রস্তুত হইতেছিলেন, সেই লময়ে নটকুলশেখর অর্দেন্ুশেখব মুস্তফী 
মহাশয় আসিয়া যোগদান করেন। “বঙ্গীয় নাট্যশালার নটচূড়ামণি স্বর্গীয় 
অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী” প্রবন্ধে গিরিশচন্দ্র লিখিয়াছিলেন,__-“যখন বাগবাজারে 
সধবাৰ একাদশী থিয়েটার সম্প্রদায়েব আকড়া বসে, তখন উক্ত সম্প্রদায়ের 
উৎসাহী প্রসিদ্ধ অভিনেতা স্বর্গীয় নগেন্্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে তিনি 
কয়লাহাটায় পকিছু কিছু বুঝি” প্রহ্মনের অভিনয় দেখিতে গিয়া একজন 
অত্যুতকৃষ্ট অভিনেতা দেখিয়াছেন, অভিনেতা বাঁগবাজারেই থাকে । 
আমার বিশেষ আগ্রহে নগেন্ত্রনাথ অভিনেতাটাকে আনেন। দেখিলাম-_ 


নবম পরিচ্ছেদ ৬৫ 


আমার পূর্ব্-পবিচিত অর্দেন্ুশেখর |” পাথুরিয়াঘাটা রাজবাটাতে মহাবাজ 
যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর-প্রণীত পবুঝলে কি ন1?” নামক একখানি প্রহসন 
অভিনীত হইয়াছিল, তাহাব উত্তর স্বরূপ “কিছু কিছু বুঝি* নামক একখানি 
প্রহসন কয়লাহাটায় অভিনীত হয়। এই প্রহসনের একটী ভূমিকায় 
রাজবাটাব কোন সন্ত্ান্ত ব্যক্তির উপর বিশেষরূপ কটাক্ষ ছিল। 
অর্ধেন্দুবাবু সেই তূমিকাটাই বাজবাটার প্রতিপক্ষ সম্প্রদায়ে যোগ দিয়! 
জীবস্তভাবে অভিনয় কবিয়া সাধারণের নিকট যেরূপ প্রশংসালাভ 
করেন, বাঁজবাটীতে সেইরূপ বিরক্তিভাজন হন। অর্ধেন্দুবাবু মহাবাজ 
যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরেব মাতুল-পুত্র ছিলেন, এবং রাঁজবাটাতে পিতৃস্বসাঁব 
নিকট থাকিয়। তিনি লেখাপড়া করিতেন। এই অভিনয় করিয়া তিনি 
বাজবাটী পরিত্যাগ কবিতে বাধ্য হন। যাহা হউক তথা হইতে 
বাগবাজারেব পিতৃভবনে আসিয়! “দধবার একাদশী” সম্প্রদায়ে যোগদান 
করেন।” 

গিরিশচন্ত্র অফিসে চাঁকরি কবিতেন, এ জন্য অন্ঠ সময়ে অবসব হইত 
না, তিনি সন্ধ্য/াব পর আখড়ায় যাইয়া শিক্ষা! দিতেন । অর্ধেন্দুবাবুর কে।নও 
কাজকর্ম ছিল না, এ জন্ত তিনি সকল সময়েই আখড়া-বাটাতে থাকিতে 
পাবিতেন এবং দিবসে যাহাকে পাইতেন, তাহাকেই শিক্ষা দিয়া গিবিশবাবুব 
সাহায্য কবিতেন। ছোট ছোট পাটগুলি তিনি বেশ উজ্জল কবিয়৷ 
লিয়াছিলেন। গিবিশবাবু ও নগেন্দ্রবাবুব অন্ুবোধে অর্দেন্দুবাবু “কেনা- 
রামের” ভূমিক গ্রহণ কবেন। অরুণচন্ত্র হালদাব মহাশয় এই ভূমিকার 
রিহারস্তাল দিয়াছিলেন, তিনি ইচ্ছ! করিয়াই এই ভূমিকা! অর্দেন্দুবাবুকে 
ছাড়িয়া দেন। 

১৮৬৯ থুষ্টাবে অক্টোবৰ মাসে ৬শারদীয়। পূজাব রাত্রিতে বাগবাজাব, 


মুখুয্যেপাড়ায় ৬প্রাণরৃষ্ণ হালদারের বাড়ীতে "সধবার একাদশীর” প্রথম 
€ 


৬৬ (গাঁরশচন্্ 


অভিনয় হয়। গিরিশবাবু ণনিমাদের, ভূমিক! গ্রহণ কবিয়া রঙ্গমঞ্চে 
এই প্রথম অবতীর্ণ হইলেন। নিমর্টাদের ভূমিকা অভিনয় কবিতে হইলে, 
নানাবিধ ইংবাজী কাব্য আবৃত্তি করার অভ্যাস থাকা আবশ্ঠক, এই নিমিত্ত 
উক্ত ভূমিকার অভিনয়, সাধারণ অভিনেতার দ্বার! অসম্ভব, এইরূপ সকলেব 
ধাবণা ছিল। কিন্তু রঙ্গমঞ্চে গিরিশচন্দ্রের মুখে উক্ত উদ্ধত ইংবাজী 
কাব্যেব আবৃত্তি শুনিয়। দর্শকবুন্দ যেরূপ আনন্দলাভ কবিয়াছিলেন, তদ- 
ধিক বিস্মিত হইয়াছিলেন। সধবার একাদশী* নাটকের প্রথমাতিনয় 
বজনীব অভিনেতৃগণেব নাম £-_ 


নিমর্চাদ '** গিরিশচন্দ্র ঘোষ । 

অটল ***  নগেক্্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় | 
কেনারামা ...  অধেন্দুশেখর মুস্তফী। 

বামমাণিকা রাধামাধৰ কব। 

কুমুদিনী : অমুতলাল মুখোপাধ্যায় ( বেলবাবু) 
জীবনচন্দ্রা '**  ঈশানচন্দ্র নিযোগী। 

সৌদামিনী "'*  মহেন্দ্রনাথ দাস। 

কাঞ্চন ** নন্দলাল ঘোষ। 

নকুড় *** মহেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় । 

নটা '-  নগেন্ত্রনাথ পাল। 


প্রায় সপ্তাহ পবে কোজাগর লক্ষমীপুজায় শ্তামপুকুরস্থ /নবীনচন্দ্র দেবেব 
বাঁটীতে ( গিরিশচন্দ্র শ্বগুবালয়ে ) সধবার একাদশীর দ্বিতীয়াভিনয় হয়। 
তৃতীয় অভিনয় গড়পাবে জগগ্নাথ দত্তের ভবনে এবং চতুর্থাভিনয় দেওয়ান 
৮বায় রামগ্রসাদ মিত্র বাহাছুরের শ্তামবাজার-বাটীতে হয়। এই অভিনয় 
সবিশেষ উল্লেখযোগ্য । এই দিনে বিশেষ কোনও কারণে, অপ্বেন্দুবাবু 


৬৭ 





যৌবনে গিবিশচন্ত্র 


'জীবনচন্দ্রে+' এবং অবিনাশচ্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায় “কেনারামের, তৃমিকাভিনয় 
কবেন। বঙ্গমঞ্চের মুখপটেব উপর লিখিত হইয়াছিল, "176 1,0105 1176 
10110100 9) 6০ 720016,* স্বয়ং গ্রন্থবর্তী দীনবন্ধু বাবু ও তাহার বন্ধুবর্গ, 
শোভাবাজারের বিজু, বাহাদ্বব, কলিকাতা মিউনিসিপ্যাল অফিসের ভাইস 
চেয়াবম্যান গোপাললাল মিত্র, ্থগ্রসিদ্ধ ডাক্তাব ছুর্গাদাস কব প্রভৃতি গণ্যমান্ত 
ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। অভিনয়াস্তে দীনবন্ধুবাবু, গিবিশচন্দ্রেব অভি- 
নয়:প্রতিভা দর্শনে এরপ মুগ্ধ হইয়াছিলেন যে, গিরিশবাবুকে বলেন, “তুমি, 


৬৮ গিরিশচন্দ্র 


না থাকিলে এ নাটক অভিনয় হইত না। নিমটাদ যেন তোমার জন্যই 
লেখা হইম্াছিল”। অর্ধেন্দুবাবুকে বলেন,__“জীবনেব অটলকে লাখি মাবিয়! 
যাওয়া (১ম অঙ্ক, দ্বিতীয় দৃশ্ত ) 11017900951768)6 07 0106 2001)07, 
বিজু বাহাদুর, গোপালবাবু ও হূর্গাদাসবাবু একবাক্যে “নিমটাদেব 
প্রশংসা কবেন । গিবিশচন্দ্রেব 'নিমটাদ” অনন্ুকবণীয় ও অতুলনীয় । গিবিশ- 
বাবুব স্বর্গাবোহণের পবদিন «বেঙ্গলী* সংবাদপত্রে লিখিত হইয়াছিল,_ 
”/0০ 001109556 7€215 820 0311151) 01020015, 20199815010 
(116 11010112101 7015 2 ব্ব10)01)9150 11) 1)100102,001)1853 
৪৪1)2,011910217 [0020991% 200 51760 116 2৮৮01 (116 0650 
[00111775116 10190 1)1075611 20 20607,৮ 

চতুর্থাভিনয় বজনীতে আব একটা প্রতিভাশালী যুবা এই নাট্যামোদ 
উপভোগ কবিয়াছিলেন,_-তিনি পৰে অসামান্ত পাণ্ডিত্য-গুণে হাইকোর্টেব 
বিচাবকের আনে উপবিষ্ট হইয়া! অসাধারণ প্রতিভ। দেখাইয়া দেশবিখ্যাত 
হইয়াছিলেন।__এই স্বনামধন্ত স্বর্গীয় সারদাচরণ মিত্র মহাশয় উক্ত দিবস 
অভিনয় দর্শনে কিরূপ মুগ্ধ হইয়াছিলেন, তাহ ১৩২১ সাল, অগ্রহায়ণ 
মাসের “বঙ্গদর্শনে” তল্লিখিত “দীনবন্ধু মিত্র” শীর্ষক প্রবন্ধে যেরূপ বণিত 
হইয়াছে, তাহা! পাঠকগণেব বিদ্িতার্থে উদ্ধত কবিলাম £-- 

*১৮৭০ সালেব ফেব্রুয়াবী মাসে সরম্বতী পুজার বাত্রে কলিকাতাব 
স্তটামবাজাবেব রায় বাম প্রসাদ মিত্র বাহাছুবের বাটাতে আমি “সধবার একা- 
দ্রশীর” অভিনয় 'পথম দেখি । সেই দিন আমাদের এম, এ, পরীক্ষ। শেষ 
হইয়াছিল। নিদ্রাদেবীর আবাধন। ত্যাগ করিয়া আমি রামবাবুব বাঁটাতে 
অভিনয় দেখিতে গিক্াছিলাম। বাবু গিরিশচন্দ্র ঘেষ বালললাব নব্য 
ধরণের নাটকের স্থষ্টিকর্ত। ১ সেদিন কবিবর “গিরিশ” স্বয়ং নিমাদ। 
সধবার একাদশী পূর্বে পড়িয়াছিলাম, কিন্তু সেদিনের অভিনয় দেখিয়া, 


নবম পরিচ্ছেদ ৬৯ 


বিশেষতঃ *নিমঠাদেব” অভিনয় দেখিয়া আমি আননো আপ্লত হইলাম। 
বয়োবুদ্ধি বশতঃ ক্রমশঃ অনেক জিনিন ভুলিয়াছি আবও কত ভুলিব, 
ইংরাজী, বাঙ্গলা, সংস্কৃত, অনেক নাটক পড়িয়াছি, অধিকাংশের নাম মাত্র 
স্মবণ আছে। কিন্তু সে রাত্রের নিমাদের অভিনয় বোধ হয় কখন 
ভূলিব না । সেই বাত্রি হইতে কবি দীনবন্ধু উপব আমার শ্রদ্ধা! ভক্তি 
পূর্ব্বাপেক্ষা অনেক বেশী হইল, অভিনয়ের নৈপুণ্যের জন্য গিবিশেব উপব 
বিশেষ শ্রদ্ধা হইল। গিবিশবাবুব ভ্রাত৷ অতুলকুষ্জ আমাব সহাধ্যায়ী ও 
চিববন্ধু, স্থৃতবাং অনতিপবেই আমি গিবিশবাবুব সুপবিচিত হইলাম । 
গিবিশবাবু এখন আমাব শ্রদ্ধেয় পরম বন্ধু” 
উক্ত নাটকেব পঞ্চমাভিনয় বাগবাজা'র, বন্থুপাড়াব স্ুবিখ্যাত সদবাল। 

লোকনাথ বসু মহাশয়েব ভবনে এবং ষষ্ঠাভিনয় ( ১২৭৬ সাল ) ৬দুর্গাপুজ। 
উপলক্ষে খিদিবপুরে নন্দলাল ঘোষেব বাটীতে হয়। সপ্তমাভিনয় চোব- 
বাগানেব ৬লক্মীনাবায়ণ দত্ত (পণ্ডিত প্রবব শ্রীযুক্ত হীবেন্দ্রনাথ দত্ত এবং 
স্প্রসিদ্ধ অভিনেতা ৬অমবেন্ত্রনাথ দত্বেব পিতামহ ) মহাশয়ের বাঁটাতে 
হইয়াছিল । “সধবার একাদশী” অভিনয়েব শেষে দীনবন্ধুবাবুব “বিয়ে পাগলা 
বুড়ো” প্রহমন অভিনীত হয়। বিয়ে পাগল! বুড়োর” ইহাই প্রথম 
অভিনয় । গিবিশবাবু “নিমঠাদ'বেশেই প্রহসনেব প্রস্তাবনা শ্ববপ মুখে 
মুখে নিয়লিখিত কবিতাটা আবৃত্তি করেন £-_ | 

মাতলামীটে ফুরিয়ে গেল, দেখুন বুড়োব রং। 

বানর ঘরে টোপর প/রে কিবা বিষ্বেব ঢং ॥ 

আম্না নসে রতা৷ কোথা যা পাবিম তা বল। 

ক্ষম। করিবেন দোষ রসিকমগ্ডল ॥ 

আসছে এবার ছড়ার দল, ভূবন! নসে রতা। 

সভ্যগণ নমস্কার, ফুরাল আমার কথ। ॥ 


৭০ গিরিশচন্দ্র 


এইরূপে কলিকাতার বন্থ্‌ সন্তরান্ত ব্যক্তিব বাটাতে ”“সধবার একাদশী” 
অভিনয় হওয়ায় বাগবাজাব নাট্যসন্প্রদায়েব যথেষ্ট প্রতিপত্তি বাড়িতে 
লাগিল। পূর্বেই বালিয়াছি যে গিবিশবাবু, নগেন্দ্রবাবু, ধর্মদাসবাবু, 





নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় 
বাধামাধব বাবু প্রভৃতি কয়েকটা বদ্ধ মিলিয়া গ্রথমে বাগবাজারে মাইকেলের 
শর্দিঠা নাটক লইয়া! একটী সখের বাত্রা! সম্প্রদায় স্ট্টি করেন। কিন্ত 


নবম পরিচ্ছেদ ৭১ 


গিরিশবাবু ও তাঁহার কতকগুলি বন্ধু উক্ত যাত্রা সম্প্রদায় হইতে পৃথক 
হইয়া থিয়েটারে লিপু হইলেও যাত্রা! সম্প্রদায়েব অস্তিত্ব লোপ হয় নাই, 
তাহারা বস্থপাড়ায় গতি দত্তের বাড়ীতে আকড়া বসাইয়া মধ্যে মধো 
'শর্দিষ্ঠার অভিনয় করিতেন। 

'সধবার একাদশী” অভিনয়ের কৃতকাধ্যত। দর্শনে উক্ত যাঞ্জা সম্প্রদায়ের 
কেহ কেহ গিরিশবাবুকে বলেন, “পর্দাৰ আড়াল থেকে শুনে শুনে থিয়েটাব 
কবে সুখ্যাতি পাওয়া সহজ, কিন্তু খোল! যায়গায় স্থুর-তান-লয়-শুদ্ধ গান 
বাজনায় যাত্রা কব। বড় শক্ত ।” যৌবনসুলভ উত্তেজনায় গিবিশবাবু বলেন. 
“আট দিনেৰ মধ্যে তোমাদিগকে ঘাত্র| শুনাইয়। দিব।” নগেন্দরবাবু, 
অর্ধেন্দুবাবু, বাধামাধববাবু প্রভৃতি বন্ধুগণেব সহিত মিলিত হইয়া মণিলাল 
সবকাবেব “উমাহবণ নাটক অভিনয়ার্থে মনোনীত কবিয়া! সেই বাত্রেই 
গিরিশবাবু বাত্রাউপযোগী ছাব্বিশ খানি গান বীধিয়1 দিলেন । মহ1 উৎসাহে 
দিবারাত্রি মহলা! চলিতে লাগিল। বর্ধমান, মেমাবী ছেঁসনেব সন্গিকট 
আমাদপুবেব স্থ প্রসিদ্ধ গায়ক উমাচরণ চক্রবস্তী ও তাহার ভাগিনেয় কথক 
দু্লভচন্ত্র গোস্বামী প্রধান জুড়িব গায়ক হইলেন। ঠনঠনিয়াব বিখ্যাত 
নিতাইঠাদ চক্রবর্তীকে বাজাইবার জন্ত আন! হইল। স্ুপ্রসিদ্ধ অভিনেতা 
মতিলাল স্গুব এই যাত্রাব দলে যোগদান কবিয়া ইহাদেব সহিত এই প্রথম 
মিলিত হন। ১২৭৬ সালে জগদ্ধাত্রী পুজার দিন নগেন্দ্রবাবুর বাড়ীতে ঠিক 
আট দিনেৰ মধ্যে মহা উৎসাহে এই “উধাহবণ অভিনীত ভইয়া 
সাধাবণের বিস্ময়োৎপাদন করিয়াছিলেন । 


“বিশ্বকোষে” লিখিত হইয়াছে, "শর্িষ্ঠা যাত্রা সম্প্রদায়ের জনৈক 


ব্যক্তিকে অর্ধেন্দুবাবু পনের দিনের মধ্যে ঘাত্র! গুনাইয়। দিবেন বলিয়া- 
ছিলেন।” আমরা গিরিশবাবু ও ধর্মমদাসবাবুর মুখে যাহ শুনিয়াছি, তাহাই 
লিপিবদ্ধ করিলাম । “উষাহরণঃ যাত্রার জন্ত গিরিশচন্ত্র-রচিত নিয়লিখিত 


৭২. গিরিশচন্দ্র 


তিনখানি গীত সংগ্রহ কবিতে সমর্থ হইয়াছি। প্রথম ছুইথানি গীত ন্ুকবি 
ও সুমাহিত্যিক নুহৃদ্র শ্রীযুক্ত কিবণচন্ত্র দত্তের চেষ্টায় পাইয়াছি। 
(১) স্বপ্রদর্শনেব পব নিদ্রোখিতা উষা ২ 
যামিনীতে একাকিনী ঘুম ঘোরে অচেতন । 
হেবিন্থ স্বপনে সখি, কামিনী মনোবঞ্জন ॥ 
ধীবে ধীরে গুণমণি, রমণী হৃদয়মণি, 
আসিয়ে প্রাণ জনি, চুবি কবে গেছে মন ॥ 
অলসে ঘুমেব ঘোবে, ধবিতে নাবিন্ন চোবে, 
পাগলিনী কবে মোরে, পলায়েছে প্রাণধন ॥ 


(২) অনিরুদ্ধেব কাবাববোধেব সংবাদ পাইয়া! শিবপুজাব্তা। উধী 2-_ 
পুঁজিতে মহেশে হেখি প্র।ণধনে । 
শিব-শিবে দিতে বাবি, বাবি বহে হ,নয়নে ॥ 
ত্রিপুবাবি কবি ধ্যান, হদে জাগে সে বয়ান, 
ব্যাকুল পাগল প্রাণ, বাখিতে নাবি যতনে ॥ 
কাতবে করুণ কব, হে শঙ্কব পুজী. ধব, 
আশুতোষ হুথ হব, কৃপাকণ। বিতবণে ॥ 


(৩) ললিত বিভাস--__আড়াঠেকা। 


পোহাল” যামিনী, বহে ধীর সমীরণ। 
ধূঘববরণ শশী তাবকাহীন গগন ॥ 

গাহিছে বিহগকুল, ফোটে নানাবিধ ফুল, 
কাননে শোভ। অতুল, আকুল নধুপগণ ॥ 
বিনোদে বিদায় দিয়ে, কাতর! কুমুদী-হিয়ে, 
জলে মুখ লুকাইয়ে করিছে রোদন ॥ 

কমল বিমল নীরে, ভাসিছে হাপিছে ধীরে, 
পুনঃ পাইবে মিহিরে, হবে শুভ সম্মিলন ॥ 


দশম পরিচ্ছেদ 
ভনীভ্লান্বভ্ভী মণউ-্কাভিন্নজ্ম 


“সধবার একাদশীব+ অভিনয় দর্শনে গ্রীত হইয়া দীনবন্ধুবাবু উক্ত 
সম্প্রদায়কে অতঃপর 'লীলাবতী” অভিনয় কবিতে বলেন । গিবিশবাবুব 
প্রস্তাবান্ুসাবে সম্প্রদায় লীলাবতীব রিহারস্তাল দিতে আবস্তভ কবিলেন। 
এই লীলাবতী সম্প্রদায় কাহাবও বাটীতে অভিনয় করেন নাই। শ্তাম- 
বাজাবে ৬বাজেন্ত্রলাল পালের বাটাতে স্থারী বঙ্গম্্চ নিন্মাণ কবিয়া 
লীলাঁবতীব অভিনয় হয়। স্থবিখ্যাত ষ্েজ-ম্যানেজাব ধর্মদাস স্ব এই 
বঙ্গমঞ্চ নিম্মাণ কবিয়াছিলেন। “সধবাব একাদশী, অভিনয়ে বঙ্গীয় 
সাধাবণ নাট্যশালাব বীজ বোপণ এবং তাহাবপব লীলাবতীব অভিনয়ে 
তাহাব অস্কুব দেখ! দেয়। লীলাবতী নাটক লহইয়াই 'ন্তাসান্তাল থিয়েটাবের, 
চন] হয়। স্ুতবাং লীলাবতীর কিছু বিস্তৃত বিবরণ দেওয়! আবশ্তক । 

পূর্ববে বিত হইয়াছে, “সধবার একাদনী*ব রিহারন্তাল বাগবাজাব 
হবলাল মিত্রেব লেনে, অরুণচন্ত্র হাঁলদাব মহাঁশয়েব বাটীতে হয়। উক্ত 
গলিতেই গোবিন্দচন্ত্র গঙ্গোপাধ্যায় নামক জনৈক পুর্ববঙ্গীয় ভদ্রলোকেব 
শ্বৃশুব বাটা ছিল। তিনি উদ্াারহৃদয় এবং নাট্যামোদী ছিলেন । তীহারই 
আগ্রহ ও সাহায্যে তাহার শ্বশুরালয্নের বৈঠকথানায় “লীলাবতীর? বিহাবস্ত।ল 
আবম্তভ হয়। সধবার একাদশী সম্প্রদায়ের অভিনেতাগণ ব্যতীত নুপ্রসিদ্ধ 
অন্ডিনেত! মহেন্দ্লাল বন্থ, ক্ষেত্রমোহন গজ্োপাধ্যা়, যছুনাথ ভ্টচরধ্য, 
স্থুরেন্্র নাথ মিত্র, কান্তিকচন্ত্র পাল প্রভৃতি নাট্যামোদী যুবকগণ নুতন, 
নূতন অভিনেতারূপে এই দলে আসিয়া যোগদান করেন। বেলগেছিয়া ও 
পাথুরিয়াঘাটার রাজাদের স্ভায় একটা স্থায়ী রঙ্গমঞ্চ নির্াণ করিয়। 


৭8 গিরিশচন্দ্র 


স্বেচ্ছামত অভিনয়-মানসে বাগবাজার সম্প্রদায় অর্থ সংগ্রহের জন্ত চাদ 
তুলিতে চেষ্টা কবেন, কিন্তু টাদার খাতা! হস্তে নান! স্থানে যাতায়াত 
কবিয়! সেরূপ সুবিধা কবিতে পারেন নাই; ছই একটা ধনাঢ্য ব্যক্তিব 
বাটাতে গিয়। ববং লাঞ্ছিতই হন। অবশেষে পাড়াপ্রতিবাসী ও বন্ধুবান্ধব- 
গণেব মধ্যে চাদ। তুলিয়া সামান্ত যাহ। জমিয়াছিল, গোবধ্ধীন পোটো-_ 
বাজপথের একখানি সিন আকিয়! দিয়া তাহ! নিঃশেষ কবিয়া দেয়। 
সম্প্রদায় হতাশ হইয়া পড়িলেন। কিছুদিন পৰে বঙ্গমঞ্চ নিম্াণেব একটা 
বিশেষ সুবিধা হইল । 





স্বগীয় ব্রজনাথ দেব 


দশম পরিচ্ছেদ ৭৫ 


সিধবার একাদশীর' ছিতীয়াভিনয্র গিবিশবাবুর জোষ্ঠ শ্তালক সুগ্রসিদ্ধ 
নবেন্দ্রকু্জ (নস্তিবাবু) চুণীলাল ও নিখিলেন্দ্র কৃষ্ণ দেব ভ্রাতৃত্রয্নেব পিতা 
ব্রজনাথ দেব মহাশয়েব বাটাতে হয়__একথ| পুর্ব্রেই বলিয়াছি। এই 
অভিনয়েব সময় হইতে ব্রজনাথ বাবু পাথুবিয়াঘাট! ঠাকুর-বাড়ীব স্তায় 
একটা স্থায়ী বঙ্গমঞ্চ নির্শ্াণ কবাইয়া নিয়মিতভ।বে অভিনয় চালাইবাব 
সঙ্কন্ন কবেন! কিন্তু এই ব্যয়সাধ্য কার্ধ্য-সাধনের জন্য কিরূপে অর্থ সংগ্রহ 
কবিবেন, একথা! লঈয়! গিবিশবাবুব সহিত তীহাব প্রায়ই পবামর্শ চলিত। 

ব্রজনাথবাবু গিবিশবাবুব শুধু নিকট আত্মীয় নয়, সখা, সহচব ও সোদর- 
প্রতিম বন্ধু ঝলিতে বাহা৷ বুঝায়, গিবিশবাবুব তিনি তাহাই ছিলেন। 
ইহ্াব। শৈশবে এক বিদ্যালয়ে পাঠ কবিতেন, যৌবনে আত্মীয়তা-স্ত্রে 
আবদ্ধ হইয়াছিলেন। ব্রজবাবু গিরিশবাঁবু অপেক্ষা ছুই বসবে বড় 
ছিলেন,-_-গিবিশবাবুকে তিনি কনিষ্ঠ সহোদবেব স্তায় স্নেহ কবিতেন 
গিবিশবাবুও জ্যেষ্ঠেব ম্তাফ তাহাকে শ্রদ্ধা কবিতেন। ব্রজবাবু 
হোমিওপাাথি চিকিৎসানুবাগী ছিলেন, এই বিষ্ভায় তিনি বিশেষপ 
জ্ঞানলাভ করিয়৷ বিনামূল্যে প্রতিবাসী ও দরিদ্রগণকে ওষধ প্রদান 
কখিতেন। তাহাব উৎসাহেই গিবিশবাবু প্রথম উক্ত বিদ্যায় অনুবাগী 
হন। উভয়ে সে সময়ে জন্‌ আটুকিনসন কোম্পানীর অফিসে কার্য 
কবিতেন। ব্রজবাবু উক্ত অফিমেন বুককিপাব এবং গিবিশবাবু সহকাবী 
বুককিপাব ছিলেন। 


প্রত্যেক অফিসেই দালালেবা৷ বড়বাবুদের নান! বাদে টাক। দিয়া 
থাকেন) কিন্ত বঞ্জবাবু তাহ! লইতেন না। উপস্থিত উভয়েব পবামর্শে 
এইরূপ স্থিব হইল যে, স্থার়ী বঙ্গমঞ্চ নির্মাণের জন্ত দালালদেব নিকট টাদা 
তুলিয়া, ব্রজবাবু কতকট। টাক যোগাড় কবিবেন। ব্রজবাবু কৃতী পুরুষ 
ছিলেন, তাহাব সঙ্কল্ম অনেকটা সফলও হইয়াছিল। শ্টামপুকুরে 





দশম পরিচ্ছেদ ৭৭ 


গরোপালচন্দ্র বন্য্যোপাধ্যায়েব মাতামহ ৬গোঁপীনাথ তর্কালঙ্কাব মহাঁশয়েব 
বাড়ীব উঠানে বঙ্গমঞ্চ-নির্মিত হইতে লাগিল। গিরিশ বাবুব অনুরোধে 
ধর্মদাসবাবুও গিয়! উক্ত বঙ্গমঞ্চ-নিম্মাণ-কারধ্যে সাহায্য করিতেন। কিন্তু 
পাঁটাতন পর্য্স্ত প্রস্তুত হইতে না হইতে ব্রজবাবু সাংঘাতিক গীড়ায় 
আক্রান্ত হন, নিম্াণ-কাধ্যও সেই সময় বন্ধ হইয়া যায়। দীর্ঘকাল বোগ 
ভোগ কবিয়া ব্জনাথবাবু অকালে ইহলে।ক ত্যাগ কবেন। 

তর্কালঙ্কার মহাশয়েব বাঁটাব উঠানে কাঠকাঠবাগুলি নষ্ট হইয়া 
বাইতেছে দেখিয়া, গিবিশবাবু ব্রজবাঁবুব কনিষ্ঠ ভ্রাতা দ্াঁবকানাথ দেবের 
অনুমতি লইয়। সেগুলি বাগবাজাব সম্প্রদায়কে লইয়। যাইতে বলেন। 
ধর্মুদাসবাবু কাষ্ঠগুলি লইয়া গিয়া! কালীপ্রসাদচক্রবত্তীব স্ীটে তীহাব 
বাটাব সন্নিকটস্থ খানিকটা মাঠ ঘিবিয়া লইয়! রঙ্গমঞ্চ নির্মাণ এবং দৃষ্তপট 
অঙ্কন আবন্ত কবিয় দ্েন। এই সময়ে ম্যাকলিন নামে একজন 
দ্বিদ্র ইংবাজ-নাবিক বাগবাজাবে মাঝে মাঝে ভিক্ষা কবিতে আসিত। 
জাহাজে সে বং প্রস্তুত কবিতে শিখিয়্াছিল। ধশ্মদাসবাবু সাহেবের 
গুণেব পবিচয় পাইয়। তাহাব সহিত এইরূপ বন্দোবস্ত কবেন যে, সাহেব 
রং বাঁটিবে ও কাষ্ঠগুলিব বক্ষণাবেক্ষণ কবিবে, এবং তাহার বিনিময়ে 
ধর্মদাসবাবু তাহাকে খাইতে দিবেন | ম্যাকলিন কিছুদিন এই ব্যবস্থামতই 
কাধ্য কবে। ইহাব পর ধর্মদাসবারুব প্রতিবামী স্ুপ্রসিদ্ধ ভূম্যধিকাবী 
/কৃষ্ণকিশোব নিয়োগী মহাশয় এ সাহেবকে তাহাব কোচম্যান নিষুক্ত 
করেন এবং এক সুুট নূতন পোষাক কবিয়া দিয়াছিলেন। নূতন পরিচ্ছদে 
সজ্জিত হইয়া, ছিন্ন-বন্ত্-পবিহিত সাহেবেব প্রাণে জাত্যাভিমান জাগিয়া 
উঠিয়াছিল কি না৷ জান! যায় নাই, কিন্ধ তাহাবপবৰ দে যে কোথায় 
চলিয়। গেল, আর তাহার সন্ধান মিলিল ন!। 

ফলত: ব্রজবাবুব চেষ্টাঞজ্জিত উক্ত কাঠকাঠরাগুলি স্তাসান্তাল থিয়েটাবেব 


৭৮ গিরিশচন্দ্র 


ভিত্তি স্থাপনে যে প্রথম স্বর্ণইষ্টক স্বরূপ প্রোথিত হইয়াছিল, তাহা 
মুক্তকণ্ঠে শ্বীকার করিতে হইবে। ব্রজবাবু কেবল নাট্যামোদী ছিলেন 
না, তিনি একজন সুপ্রসিদ্ধ সঙ্গীতশান্ত্রজ্জ ছিলেন৷ গানবাজনায় ইহাব 
বিশেষ সথ ছিল। শ্ুগ্রসিদ্ধ গায়ক ও বাদক জোয়ালা প্রসাদ, নিমাই 
অধিকারী (সঙ্গীতাচার্ধ্য বেণীবাবুব পিত।) প্রভৃতি ওস্তাদেবা বেতন 
লইয়া তাহাকে শিক্ষা দিতেন যখন যে গুণী গায়ক ও বাদক কলিকাতায় 
আমিতেন, ব্জবাবুব ত্র ও সঙ্গীতান্থুবাগে বাধ্য হইয়া! তাহাবা ব্রজবাবুব 
বাটাতে আসিয়া সঙ্গীতালোচনা! কবিয়া আনন্দ কবিতেন। এই হুত্রে 
গিবিশবাবু রাগবাগিনী ও তানলয় সম্বন্ধে ব্রজনাথ বাবুব নিকট মোটামুটি 
একটা জ্ঞান লাভ করেন । উত্তবকালে এই শিক্ষাব ফলে তিনি বঙ্গালয়েব 
সঙ্গীত ও নৃত্য-শিক্ষকগণকে ববাবব উপদেশ ও শিক্ষা প্রদানে পবিচালিত 
কবিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। 

ব্রজবাবুই প্রথমে ইংবাজী নোটেশন ও ইংবাজী বাগ্যন্ত্র বঙ্গালয়ে প্রচলন 
কবেন। বেতন দিয়া সাহেব শিক্ষক নিযুক্ত করি ইনি ইংরাজি সঙ্গীত- 
শান্্র আলোচন! ও শিক্ষা করিতেন। ন্বয়ং তিনি একটী কনসার্টেব দল 
গঠন করিয়াছিলেন । “বিশ্বকোষে” লিখিত হইয়াছে £__“ইহাবই কনসার্টের 
দলে প্রথম র্লযারিওনেট বাণী বাজান আরম্ত হয়। তখনও কর্ণেট বাজান 
হইত না। তাত ও তারের যন্ত্র সমস্ত, শিকলো, ক্ল্যানেট বাণী, জল 
তরঙ্গের বাটাও এই দলে একত্র বাজান হইত। এততিন্ন শঙ্খ বাজ"ইয়। 
স্বর দেওয়া হইত। ডি-স্থরে কনসার্ট বাজান হইত, বাছিয়া বাছিয়া 
ডি-স্থরের শাখ আন! হইয়াছিল। যতক্ষণ বাজন! হইত, শানাইয়েব পৌ৷ 
ধবা হিসাবে এই শীখে সেইরূপ স্ুব দেওয়া হইত । ব্রজ্জবাবুব বাজনার 
দল নবগোপাল বাবুর উদ্োগে প্রতিষ্ঠিত চৈত্র মেলায় প্রথম 
বাজাইয়াছিলেন। 


দশম পরিচ্ছেদ ৭৯ 


এক্ষণে আমবা “লীলাবতীর” রিহারস্তালের কথ! ব্লিব। বহুদিন 
ধরিয়৷ লীলাবতীর রিহারন্তাল হয়। কারণ গিরিশবাবু রিহারস্তালে নিয়মিত 
আসিতে পাবিতেন না। তিনি অফিস হইতে বাটা আসিয়৷ সন্ধ্যাব পৰ 
প্রত্যহই শয্যাশীয়ী ব্রজবাবুব তত্বাবধানে শ্তামপুকুর শ্বগুরালয়ে যাইতেন। 
বজবাবু স্বয়ং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা! শিখিয়াছিলেন এবং নিজেব 
চিকিৎসাও হোমিওপ্যাথি মতে করাইতেন। পুর্বে বলিয়াছি, ব্রজবাবুব 
উৎসাহেই গিরিশবাবু উক্ত চিকিৎসার অন্ুবাগী হইয়াছিলেন। ব্রজবাবু 
বুসংখ্যক মুল্যবান হোমিওপ্যাথিক গ্রন্থ ক্রয় করিয়াছিলেন। গিবিশবাবু 
গ্তামপুকুরে গিয়। মনোযোগের সহিত তাহ পাঠ করিতেন এবং উক্ত 
চিকিৎসা! সম্বন্ধে নানারূপ আলোচনা ও গবেষণায় প্রারই অধিক রাত্রি 
কাটাইয়া৷ বাড়ী ফিবিতেন। যে পিন সকাল সকাল ফিবিতেন, সেইদিন 
আখড়া হইয়া! আসিতেন। ন্ুুবিখ্যাত ডাক্তার সাল্জাব সাহেব ব্রজবাবুব 
চিকিৎদক এবং বন্ধু ছিলেন, তিনি তাহাকে প্রায়ই দেখিতে আমিতেন। 
এই সুত্রে গিরিশবাবুব সহিতও তাহাব ঘনিষ্ঠতা হয়। ব্রজবাবুব এই কঠিন 
পীড়। সম্বন্ধে সাহেবের সহিত চিকিৎসা-শান্ত্রের আলোচনাকল্পে তাহাকে 
উক্ত চিকিৎসাশান্ত্র গভীবভাবে অধ্যন্নন করিতে হইত । 

ব্লজবাবুব মৃত্যুব পরেও চিত্ত-চাঞ্চল্য বশতঃ গিরিশবাবু লীলাবতীব 
বিহ্বারস্তালে বিশেষরূপ মনঃসংযোগ করিতে পাবেন নাই । ধীবে ধীবেই 
লীলাবতীব রিহাবস্তাল কার্য চলিতেছিল। কিন্তু এই সময়ে এমন একটা 
ঘটন! ঘট্টিল, যাহাতে এই মন্থবগামী লীলাবতী সম্প্রদায় প্রবল উৎসাহে 
মাতিয়া উঠিল। 

“অমৃতবাজাব পত্রিকাক়” প্রকাশিত হয়, সাহিত্যসম্রাট বঙ্ছিমচন্ত্র ও 
সাহিত্যবথী অক্ষয়চন্ত্র সরকার মহাশয়ঘয়েব শিক্ষাবিধানে এবং অন্তান্ত 
কৃতবিদ্ধ ব্যক্তিগণেব তত্বাবধানে চুঁচুড়ায় “লীলাবতী* নাটক অভিনীত 


৮০ গিরিশচন্ত 


গুইতেছে। বঙ্কিমবাবু 'লীলাবতী, নাটকের কিছু কিছু বাদ দিয়া ও 
কিছু কিছু পরিবর্তন করিয়া অভিনয়োপযোগী করিয়া দিয়াছেন। 
অমৃতবাজারে ইহার ন্ুখ্যাতিও বাহির হয়। এই সংবাদ পাঠে নগেন্দরবাবু, 
অর্দেদ্দুবাবু, ধর্মদাসবাবু ও গোবিন্দচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় প্রভৃতি গিবিশবাবুর 
বাটা আসিয়। তাহাকে বলেন,_“চুচুড়াব দলেব নিকট হারিয়৷ যাইব, 
তুমি কি বসিয়। দেখিবে ?” গিরিশবাবু বন্ধগণেব অন্ুযোগে উত্তেজিত 
হইয়া বলেন,_-“নাটককারেব একটী কথাও বাদ না দিয়। আমাদের 
অভিনয় করিতে হইবে এবং শুধু অভিনয় নয়, চু'চুড়াব দলকে অভিনয়ে 
হারাইতে হইবে ।” অধ্যাপক শ্রীযুক্ত মন্সথমোহন বন্থু মহাশয়ের পিতৃদেব 
্বর্গীয় উমেশচন্ত্র বস্তু মহাশয় এই চুঁচুড়াব দলভুক্ত ছিলেন । 

দ্বিগুণ উৎসাহে গিবিশচন্ত্র লীলাবতীর রিহারশ্ত/ল দিতে আব্ত 
করিলেন। ধর্ধদাসবাবু দিবারাত্রি খাটিয়। দৃপ্তপট ও রঙ্গমঞ্চ প্রস্তুত 
করিতে লাগিলেন। তিনি এই সময়ে শ্তামবাজার বঙ্গ বিগ্যালয়-সংলগ্ন 
40761071807 5011001' এ শিক্ষকতা করিতেন । & ধর্মদাসবাবুকে 
কেবল এই কাধ্যে নিযুক্ত রাখিবাব জন্ত অর্ধেন্দুবাবু এবং স্ুবিখ্যাত নট 
ও নাট্যকার শ্রীযুক্ত বাবু অমৃতলাল বস্থ মহাশয় তাহার হইয়৷ বিগ্যালয়ে 
গিয়! পড়াইয়৷ আসিতেন। অমৃতবাবু কাণীধামে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা 
করিতেন, এই সময়ে কিছুদিনের জন্য কলিকাতায় আসিয়াছিলেন এবং 
নাট্যান্ুরাগ বশতঃ ধর্মদাস বাবুব “সিন আকা দেখিতে আসিতেন। 


পল পপ অপ সম পপ |. পপ 


* রায় বাহাদুর ডাক্তার শ্রীযুক্ত চুণীলাল বন্থ মহাশয় তাহার একজন ছাঞ্র ছিলেন। 
চুণীবাবুর একখানি পাঠ্যপুস্তকে ধর্্মদানবাবু এবপ স্ন্বর অক্ষরে তাহার নাম লিখিয়। 
দিয়াছিলেনন যে, চুণীবাবু শবগ্যাবধি দেই পুস্তকখানি সযত্বে রাখিয়! দিয়াছেন। 


একাদশ পরিচ্ছেদ ৮৯ 


“সান্যাল হিমেভোল্ল আসক লণ 

বিহারস্তাল সমাগ্ড হইলে, শ্তামবাজাবে রাজেন্দ্রলাল পাঁলেব বাটাতে 
স্থায়ী বঙ্গমঞ্চ নির্মাণ করিয়া ১২৭৮ সালের আধাঢ়মাসে (ইং ১৮৭১, জুলাই ) 
মহা পমাবোহে “লীলাবতী” নাটকে প্রথম অভিনয় হয়। “সধবাব 
একাদশী* অভিনয় কালে এই সম্প্রদায়ের নাম “1176 73881009221 
425818751006806৮ (বাগবাজ।ৰ আ্যামেচাব থিয়েটার) ছিল। 
“লীলাবতী” অভিনয় কালে এ নাম বদলাইয়! (প্রথমে *[0)6 09109112 
[9(10908] 116805% পরবে 02109015 বাদ দিয়| 1006 17110925] 
[7686৮ ( ন্তাসান্তাল থিয়েটাব) নামকরণ হয়। “হিন্দুমেল1”. প্রতিষ্ঠাতা 
নবগোপাল মিন্র মহাশয় এই সময়ে “লীলাবতী সম্প্রদায়ে” যাতায়াত 
কবিতেন। ইনি “৪6028] চ21:67% এব সম্পাদক ছিলেন । পা ৪/10751 
8[7£821)০” নামে একখানি মাসিকপত্রও বাহিব কবিয়াছিলেন। 
«₹৪/10221” শব্দ প্রয়োগেব ইনি বিশেষ পক্ষপাতী ছিলেন বলিয়!, ইহাকে 
সকলে ণন্যাপান্তাল নবগোপাল” বলিয়৷ ডাকিত। * ইহাবই প্রস্তাবে 1176 
138010022৭7 800800151106805 এব নাম পরিবত্তিত হইয়া "176 


পপ ২৯ ৯ অত 








পপ সপ সপ 





৮০. 


* সুপ্রসিদ্ধ দাশ[নক পঙ্ডিত স্বর্গীষ দবিজেন্দ্রন[থ ঠাকুর মহ।শয় নবগোপাল বাবুর 
সম্বন্ধে লিখিয়াছিলেন,_-”“নবগোপাল একটা স্তাশনল ধু তুলিল। সে খুব কাজ 
করিতে পারিত ; কুস্তি, জিম্্তাষ্টিক্‌ প্রভৃতির প্রচলন করার চেষ্টা! তা'র থুব ছিল; 
একটা! মেল! বসাইয।ছিল-_-ঠাতি, কামার, কুনীব ইত্যাদি লইয়।। একখান! ন্যাশন্তাল 
»কাগজ বাহির করিল, নবগোপালেব সময় থেকে এই "ন্যাশনাল" শব্দট! দীডাইয়া৷ রহিয় 
গেল। স্তাশনাল সঙ্গীত রচিত হইতে আরম্ভ হইল।” 
ভারতবর্ষ (আধাঢ, ১৩২৮ সাল)। 
১২৭২ সাল, চৈত্র মাসে (ইং ১৮৬৬, মার্চ) নবগোপাল বাবু প্রথম হিন্দুমেলা 


প্রতিষ্ঠিত করেন । ৭৮ পৃষ্ঠায় লিখিত হইয়াছে, ব্রজবাবুর বাজনার দল এই প্রথম চৈত্র- 
মেলায় বাজাইয় ছিলেন। 


ঙ 


৮২. গিরিশচন্দ্র 


০2100662 1800172111762%05 নাম হয় ; কিন্ত 'স্ুুগ্রদিধ অভিনেতা? 
মতিলাল সুর মহাশয় বলিলেন, “আবার 08109168 কেন? শুধু "7১৩ 
500081 11)6805 নাম রাখা হউক” সম্প্রদায় তাহাই সাব্যস্ত 
কবিলেন। 

“সধবার একাদণী,ব স্ায় 'লীলাবতী+ অভিনয়েও গিবিশবাবু কতকগুলি' 
গান বধিয়! দিয়াছিলেন। আমবা নিম্নলিখিত ছুই খানি গানের সন্ধান 
পাইয়াছি। 

প্রথম গীত। 
হর শঙ্কব, শশিশেখব, পিনাকী ত্রিপুবাবে। 
বিভূতি-ভূষণ, দ্রিক-বসন, জান্রবী-জটাভাবে ॥ 
অনল ভালে মদনদমন, তরুণ অকুণ কিব্ণ নয়ন, 
নীলকণ্ঠ বজত-ববণ, মণ্ডিত ফণী-হাবে ॥ 
উক্ষারূঢ় গবল ভক্ষ্য, অক্ষমালা৷ শোভিত বক্ষ, 
ভিক্ষা-লক্ষা, পিশাচ-পক্ষ, বক্ষক ভবপারে ॥ 
দ্বিতীয় গীত। 
বসেছিল বধু ইেসেলেব কোণে। 
বল্লে না ফুটে, খামকা উঠে_- 
হাম। দিয়ে গিয়ে সেছুলো! বনে ॥ 
সাজে সকালে, ফেবে চালে চালে 
(আহা) পগাঁব পাবে বধু যেত এগোনে ॥ 

উত্তরকালে প্রথম গীতটা গিবিশচন্দ্রেব প্লক্ষ্মণ বর্জন” নাটকে এবং 
দ্বিতীয় গীতটা “বিহ্মঙ্গল” নাটকে সংযোজিত হইয়াছিল। 

লীলাবতী নাটকেব প্রথমাভিনয় বজনী বঙ্গ-রঙ্গালয়েব ইতিহাসে 
চিবন্মবণীয় থাকিবে । কাবণ ভবিষ্যতে এই »ন্াসাষ্ঠাল থিয়েটারের” নাম 


একাদশ পরিচ্ছেদ ৮৩ 


গ্রহণ করিয়৷ এবং এই থিয়েটাবেরই অধিকাংশ অভিনেতা লইয়! সাধারণ 
বঙ্গ নাট্যশাল। প্রতিষ্ঠিত হয়। অভিনয় রাত্রে ডাক্তার মহেন্দ্রল!ল সরকার, 
স্বয়ং গ্রন্থকাব দীনবন্ধু শিত্র এবং বহু গণামান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। 
শীলাবতী নাটকের ভূমিক1 লইয়া! নিয়লিখিত অভিনেতাগণ প্রথম স্তাসান্তাল 
রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন £-_ 

ললিত গিরিশচন্দ্র ঘোষ। 

হেমটাদ নগেন্্রনাথ বন্দোপাধ্যায় । 

হববিলাম ও ঝি- অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী। 

ক্ষীবোদবাসিনী রাধামাধব কর। 

নদেব্াদ যোগেন্্রনাথ মিত্র । 

সারদান্ুন্রী অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় ( বেলবাবু)। 

ভোলানাথ মহেন্দ্রলাল বস্থু। 

মেজোখুড়ে। মতিলাল সুর । 


রাজলক্জী ক্ষেত্রমোহন গঙ্গোপাধ্যায় । 
যোগজীবন যছুনাথ ভট্টাচার্য | 
শ্রীনাথ শিবচন্দত্র চট্টোপাধ্যায় । 


লীলাবতী স্থরেশচন্দ্র মিন্র। 

রঘু উড়ে হিন্কুল খ!। 

স্ুপ্রসিদ্ধ অভিনেত। মহেন্দ্রলাল বনু, অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় (বেলবাবু) 
'এবং মতিলাঁল সুর লীলাবতী নাটকে-_-এই প্রথম রঙমঞ্চে অবতীর্ণ হন। 

অভিনয় দর্শনে দীনবন্ধু বাবু এতদৃব মুগ্ধ হইয়াছিলেন, যে, অভিনয়ান্তে 
অতি ব্যস্তনার সহিত ষ্টেজের মধ্যে আসিয়াই বলেন, “এবার চিঠি লিখবো, 
ছুয়ে। বঙ্কিম” । গিরিশবাবুকে বলেন, “আমার কবিতা যে এমন করিয়! 
পড়া যায় তাহা আমি জানিতাম না। 815 015 00100111)606 26 


৮৪. 





স্বর্গীয় দীনবন্ধু মিত্র 


15551. বস্ততঃ দীনবন্ধু বাঁবুব দীর্ঘ কবিতাসমূহ গিবিশবাবু যে ভাবে 
আবৃত্তি কবিয়াছিলেন, তাহ! সাঁধাবণের আয়াসসাধ্য নভে । অর্ধেন্দুবাবু 
মেদিনীপুবেব ভাষায় “ঝিএব ভূমিকাভিনয় কবার দর্শকগণ বিলক্গণ 
আমোদ উপভোগ কবিয়ছিলেন ) দীনবন্ধু বাবু নাটকে এ দেশীয় ভাষায় 
বিয়েদেব কথা ছিল। মহেন্দ্রপাঁল বন্থু “ভোলানাথ চৌধুবীর, ভূমিকাভিনয়ে 
পাড়াগেয়ে ছাবল। জমীদাবেব এমন একটী ছবি দেখাইয়াছিলেন, যে, 
সেইদিন হইতে দীনবদ্ধুবাবু আজীবন তাঁহাকে ভোলানাথ চৌধবী বলিয়। 
ডাঁকিতেন। যোগেন্দ্রনাথ মিত্র “নদেরচাদ ভূমিকাভিনয় কবিয়াছিলেন। 
দীনবন্ধুবাবু বলিয়াছিলেন, “যখনই দেখ্লুম, নদেবঠাদ কাপড় গলায় 
দিয়। প্রথম বলমঞ্চে বাহিব হইল, তখনই জেনেছি মেরে দিয়েছি । 
চুঁচুড়ার অভিনয়েব সহিত তুলন! করিয়াই তিনি এ কথ বলিয়াছিলেন। 


একাদশ পরিচ্ছেদ ৮৫ 


চরিভ্রোপযোগী বেশ-ভুষার প্রতি এই স্থাসান্চাল সম্প্রদায়ের বিশেষ দৃষ্টি ছিল 
গিরিশচন্ত্রের শিক্ষাদানের ইহাই বিশেষত্ব । জীলাবতী অভিনয় সম্বন্ধে 
গিরিশবাবু তীহার *বন্গীয় নাট্যশ।লায় নটচুড়ামণি শ্বগীয় অর্দেন্দুশেখব মুস্তফী* 
পুস্তিকায় (১৯ পৃষ্ঠায়) লিখিয়াছেন,_-“গীলাবততী অভিনয়ের অতিশয় প্রথংসা 
হইল। অভিনয় দর্শনে মুগ্ধ হইয়া দীনবন্ধুবাবু আমায় বলিয়াছিলেন, 
“তোমাদেব অভিনয়েব সহিত চুঁচুড়া-দলেব তুলনাই হয় না,_আমি পত্র 
লিখিব--“ছুয়ে। বঙ্কিন !” স্থুপ্রপিদ্ধ ডাক্তার ৮ কানাইনাল দে, ঠাকুব বাড়ীব 
অভিনয়েব সহিত তুলনা কবিয়া আমাদের নিকট প্রকাশ কবেন যে, 
তিনি তথায় ব্য! আসিয়াছেন,__-আপনাদেব অভিনয় সোনাব খাঁচায় 
দাড়কাক পোরা।” 

প্রত্যেক শনিবাবে গ্তামবাজাবে বাজেন্দ্রবাবুব বাটীতে বাধা বঙ্গমঞ্চে 
“লীলাবতী” অভিনয় দর্শনেব নিমিত্ত ফ্রি-টিকিটের ব্যবস্থা হইয়াছিল। 
কিন্তু অভিনয়ের ন্থুযশ বিস্তৃত হইয়! পড়ায়, টিকিটেব নিমিত্ত এরূপ জনতা! 
ও এত অধিক চিঠি আসিতে আরম্ত হইল যে সম্প্রদায় নিয়ম করিলেন, 
যে সে লোককে টিকিট দেওয়া হইবে না, ধাহাবা অভিনয় বুঝিতে 
সক্ষম, তাহাদিগকেই টিকিট দেওয়া হইবে । তাহাতে অনেক দর্শক আপনা- 
পন যোগ্যতাব সার্টিফিকেট লইয়া অভিনয়-রাত্রেব তিন চাবি দিন পূর্ব 
হইতে দলে দলে আমিতে আরম্ভ কবিতেন। 

প্রায় পাচ রাত্রি অভিনয়ের পর প্রবল বর্ষধাব জন্ত থিয়েটার বন্ধ হইয়া 
যায়। আশ্বিন মাসে পুজার সময় উক্ত শ্টামবাজার নিবাসী স্ুপ্রসিঘ 
বন্দুকওয়ালা মথুবামোহন বিশ্বাসের বাড়ীতে (উপস্থিত যথায় 1). '. 
[319789এব রাটী ) ইহার শেষ অভিনয় হয়। 


দ্বাদশ পরিচ্ছেদ 


লীভ্নদতর্পশেল মভ্ভ্না পিক্রিম্শচজ্্রেল্র সহ্ছিভ 
ম্লান হিক্্ছেদ 


“লীলাবতী, অভিনযেন পৰ স্টাসান্তাল থিষেটাব দ্বিগুণ উৎসাহে দীনবন্ধু 
বাবুব “নীলদর্পণ” নাটকাভিনয়েব জন্ত এবৃত্ত হইলেন। বিহাবস্তাল আবস্ত 
হইল। দৃহাপট, বিহাবন্তাণ ইত্যাদি বায় নির্বাহার্থে সম্প্রদায় পাড়া- 
প্রতিবেশী এবং বন্ধুবান্ধবগণেব মধ্যে টাদ] সংগ্রহ কবিতে আরম্ভ করিলেন। 
এমন সময়ে বাগবাজাব নিখাসী বিখাত জমিদাব ৬ বসিকমোহন নিয়োগীব 
মধ্যম গৌত্র শ্রীযুক্ত ভূধনমোহন নিয়োগী মহাশয়েব সহিত ইহাদেব পরিচয় 
হয়। ধর্মদাসবাবু ভুবনমোহনবাধুব প্রতিবেশী; তিনিই এই মিলন 

ংঘটন করিয়াছিলেন। ভূবনমোহনবাবু এই সম্প্রুদায়েব প্রতি বিশেষরূপ 
সহান্থৃভৃতি প্রকাশ কবেন। টাদ| প্রদান ব্যতীত, নীলদর্পণ নাটকেব 
উত্তমরূপ রিহাবস্তাল দিবাব নিমিত্ত তাহাব পিতামহ-প্রতিষ্ঠিত বাগবাজাব 
অন্নপূর্ণীঘাটেব টাদনীৰ উপর বাবদ্ধারী বৈঠকখান! ছাড়িয় দিয়াছিলেন। 
সম্প্রদায় ভাড়াটিয়া! আখড়াঘব ছাড়িয়া দিয়৷ গঙ্গাৰ উপব এই মনোরম 
স্থানে দ্বিগুণ উৎসাহে নীলদর্পণেব রিহাবন্তাল দিতে লাঁগিলেন। 
উপস্থিত সে বাটাব নিম্নতলাব কিছু চিহ্ন আছে। অবশিষ্ট অংশ পোর্ট 
ট্রাষ্ট লুপ্ত করিয়! দিয়াছে। যাহাই হউক, নাটকের রিহারন্তাল সমাপ্ত 
হইলে, সম্প্রদাযস্থ কতকগুলি অভিনেত৷ পূর্ব হইতেই দর্শকগণের 
আগ্রহাতিশয় দর্শনে এবং প্রত্যেক নূতন নাটক খুলিবার সময় দৃশ্ঠ-পটাদির 
জন্ত টাদ! সংগ্রহ বিশেষ কষ্টকর ইত্যাদি নান! কথ। তুলিয়া টিকিট বিক্রয় 


৮৭ 





শ্রীযুক্ত ভুবনমোহন নিয়োগী 


পূর্ব্বক “নীলদর্পণ” অভিনয়েব প্রস্তাব উত্থাপন কবেন। গিরিশবাবু এ 
প্রস্তাবে অসম্মত হন। তিনি বলেন, “আমাদেব রঙ্গমঞ্চ, দৃশ্তপট ও অন্ঠাগ্ত 
সাজ সবঞ্জাম এখনও এরূপ উৎকর্ষ লাভ কবিতে পাবে নাই, যাহাতে 
"ন্টাসান্তাল থিয়েটার নামকরণ পূর্বক টিকিট বিক্রয় কবিয়! সাধাবণের 
সম্মুখে বাহিব হওয়া যায়। 'ন্ঠাপান্তাল থিয়েটার নাম গুনিয়! অনেকেই 
মনে করিবেন এই থিয়েটাব দেশেব সমস্ত ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সমবেত 
চেষ্টার ফল__ইহা জাতীয় বঙ্গমঞ্চ। কিন্তু কতকগুলি মধ্যবিত্ত গৃহস্থ 
যুব একত্র হইয়! ক্ষুদ্র সাজ-সরঞ্জামে স্তাসান্তাল থিয়েটার করিতেছে ইহা 
বড়ই বিলদৃশ হইবে ।” টিকিট বিক্রয় করিয়া থিয়েটারের তিনি বিরোধী 


৮৮ গিরিশচন্দ্র 


ছিলেন না। তবে সামান্ত সরঞ্জাম লইয়া টিকিট বিক্রয়ে তিনি অসম্মত 
ছিলেন। কিন্ত নম্প্রদায়েব অধিকাংশই এপ উত্তেজিত হন যে তাহার! 
তাহাদের প্রধান পরিচালকের কথ! রক্ষা করিতে অমম্মত হুইলেন। 
চির স্বাধীন গিরিশবাবু তৎক্ষণাৎ সম্প্রদায়ের সংশ্রব ত্যাগ করিলেন। 

টিকিট বিক্রপ্ন করিয়। থিয়েটার করিতে সম্মত নহেন, এরূপ আরও 
কয়েকজন অভিন্তে। স্ুুরেশচন্দ্র মিত্র ( লীলাবতী অভিনুয্নের লীলাবতী ), 
রাধামাধব কর ( সধবাব একাদণীৰ রামমাণিকা ও লীলাবতীব হঁরোদ- 
বামিনী), যোগেন্্রনাথ মিত্র (লীলাবভীব নদেব চাদ), নদলাঁল পু 
(সধবার একাদশীব কাঞ্চন ), মহেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ( সধবাৰ একাদশী 
নকুড়) প্রভৃতি ইহার! গিরিশবাবুব গায় গ্ঠাসান্তল থিয়েটার পবিত্যাগ 
করেন। এই সময়ে বঙ্গগৌবব নটন/টাকাব ও নাট্যাচারধ্য শ্রীযুক্ত অমৃত- 
লাল বন্থ মহাশয় কাশী হইতে কণিকাতায় আগিয়াছিলেন। রাধামাধঝ 
বাবু নীলদর্পণ নাটকে সৈরিস্কী ভূমিক। গ্রহণ কবিয়াছিলেন। তিনি 
চলিয়া! যাওয়ায় অর্দেন্দুবাবু, নগেন্দ্রবাবু প্রভৃতি অমৃতবাবুকে সৈরিন্ধীর 
ভূমিক। গ্রহণে বিশেষ অনুরোধ কবেন। প্রথমে তিনি অসম্মত হন কিন্ত 
বন্ধু-বান্ধবগণের অনুরোধ ও চাপাচাপিতে? শেষে স্বীকৃত হন। নাট্যশালার 
সহিত ইহাই তাহার প্রথম ও প্রকাহা যোগদান । 

ইহার পর স্টাসান্তাল থিয়েটাব সম্প্রদার সন্ধান করিগ্না কলিকাতা, 
জোড়াসীকো, অপার চিৎপুর €রাডের উপর .মধুসদন সান্যাল মহাশয়ের 
বাটার ( উপস্থিত যথায় ঘড়ীওয়াল! মল্লিকদের বাড়ী ) উঠান, মাসিক চল্লিশ 
টাকায় ভাড়৷ লইয়া, তথায় স্টেজ প্রস্তত করিতে প্রতৃত্ত হইলেন। স্ুপ্রসিন্ধ 
ঠ্েজ-ম্যানেজার ধর্দাস স্থুর এবং “কলিকাতা৷ আরটম্কুলের, ছাত্র ও স্তাসান্তাল 
'খিয়েটাবের অভিনেতা শ্রীযুক্ত বাবু ক্ষেত্রমোহন গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয়দঘয়ের 
অক্লান্ত পরিশ্রমে ষ্টেজ নির্দিত, হইতে লাগিল।, এদিকে রানে, ভুবনমৌহন 


দ্বাদশ প্ররিচ্ছেদ ৮৯ 


বাবুর গঙ্গাতীরস্থ বৈঠকথানায় নীলদর্পণের রিহারস্তাল চলিতে লাগিল। 
গিরিশবাবুর স্থলে বেণ্মাঁধব মিত্র নামক জনৈক .ব্যক্তিকে সম্প্রদায়ের 
গ্রেসিডেণ্ট নির্ব্বাচিত করা হইল । 
এই সময়ে বাগবাজারে একটা সখের যাত্রা দলেব স্থষ্টি হয়। গিরিশবাবু 
তাহাদের একটা সংএব পা বীধিয়া দেন। স্ুপ্রসিদ্ধ অভিনেতা ও 
সুগায়ক রাধামাধব কব প্রহসনের একটী ভূমিক1 লইয়া! স্ুক্ঠে নিম়- 
লিতিশ্লীতটা গাহিতেন। গানটি প্রয়াগেব লুপ্ত বেণী ত্রিধাবা ভাগীরঘীব 
- 
বর্ণনু্লীক । গানটাতে নীলদর্পণ সম্প্রদায়স্থ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হইতে 
আঁরস্ত কবিয়া প্রত্যেক অভিনেতা ও উৎমাহদাতাগণেব নাম অতি 
সুকৌশলে গ্রথিত আছে। গীতটা শ্লেধাত্মক হইলেও ইহা! জইয়া৷ উভক 
পক্ষই বিলক্ষণ আমোদ উপভোগ কবিয়াছিলেন ।__ 


গীত 
(কবির সুবে গে) 


লুপ্ত বেণী ১ বইছে তেরোধার। ২ 
তাতে পূর্ণ ৩ অর্ধইন্দু ৪ কিরণ ৫ 
সিছুব মাঝ! মতিব ৬ হাব ॥ 
নগ ৭ হতে ধারা ধায়, সরস্বতী ক্ষীণাকায় ৮, 
বিবিধ বিগ্রহ ৯ ঘাটেব উপর শোভ! পায় ) 
শিব ১০ শল্ুম্ত ১১ মহেন্ত্রাদি ১২ যছুপতি ১৩ অবতাব ॥ 
কিপ্ব। ধর্ম ১৪ ন্গেত্র ১৫ স্থান, 
অলক্ষোতে বিষ্ণু, ১৬ করে গান, 
অবিনাশী ১৭ মুনি-খবি কর্ছে বসে ধ্যান? 
সবাই মিলে ডেকে বলে, “দীনবন্ধুঃ ১৮ কর পার ॥ 


০ গিরিশচজ্জ 


কিবা বালুময় বেলা ১৯, 
পালে পাল ২* বেতেব বেল ২১ 
ভুবনমোহন ২২ চবে ২৩ কবে গোপালে ২৪ খেল 
মিহে কবে আশা, যত চাষ ২৫ 
নীগেব গোড়ায় ২৬ দিচ্ছে সাব ২৭ ॥ 
কলঙ্কিত শশী ২৮ হবষে, অমৃত ২৯ ববষে, 
জ্ঞান হয় বা দিনেব গৌবব এতদিনে খসে, 
স্থান মাাত্যযে হাডীস্ত'ড়ি পরস। দে দেখে বাহার ৩০ ॥ 
চিহ্নিত মাত্রান অর্থ £__ 

(১) দলেব প্রোমডেন্ট--৬বেণীমাঁধব মিত্র। ইনি অভিনয় কবিতেন 
না, গিবিশবাবু সম্প্রদায় পবিত্য।গ কবিবাধ পর তাহাব স্থলে বেণীবাবুব 
উপণ কন্ৃত্ব ভাব অপিত হয়। ইাব নাম অপ্রকাশ থাকায় “লুপ্ত” 
বিশেষণ প্রদত্ত হইয়াছে । অপব পক্ষে গঙ্গ! যমুন! সবস্বতী-সঙ্গ। 

(২) তেবোধাব-ত্রিধাবায়। 

(৩) পূর্ণচন্ত্র মিত্র-_মভিনেতা। 

(৪) অর্ধেন্দুশেখব মুস্তধী-_নাট্যাচা্য ও অভিনেত]। 

(৫) কিবণচন্দ্র বন্দ্যপাধ্যায়__অভিনেতা। 

(৬) মতিলাল সুব_-অভিনেত| ৷ 

(৭) নগেন্ত্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়__অভিনেত। ও প্রধান পরিচালক । 

(৮/ সবস্বতী ক্ষীণ।কায়__অল্ন বিদ্ত। অর্থাৎ মুর্খ । 

€৯) বিগ্রহ সঙ্গমে দেবমুর্তি অপব পক্ষে কুৎসিত গালি। 

(১০) শিবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়__অভিনেতা। 

(১১) কার্থিকচন্ত্র পাল-_সম্প্রদায়ের উৎমাহদাতা। 

€ ১২) মহেমন্্লাল বন্ু--অভিনেত| | 


দ্বাদশ পরিচ্ছেদ ৯ 


(১৩) যছুনাথ ভট্র।চাধ্য-_অভিনেত1। 

(১৪) ধর্মদাস সুব_ষ্রেজ-ম্যানেজার । 

( ১৫) শ্রীযুক্ত ন্েত্রমোহন গঙ্গোপাধ্যায়_-অভিনেতা ও সহকারী গ্রেজ 
ম্যানেজাব। 

(১১) ব্রাহ্মনমাজেব গায়ক বিষুন্ত্র চট্টোপাধ্যায়, ইনি নেপথ্য হইতে 
গান কবিতেন। 

(১৭) অবিন'শচন্দ্র কব__অভিনেতা। 

(১৮) নীলদর্পণ-প্রণেত] জুবিখাত নাট্যক।ব দীনবন্ধু মিত্র। 

(১৯) অমৃহ্ণাল মুখোপাধ্যায় (বেপবাবু)মহিনেতা | 

(২০) পাজেন্দ্রলাণ পাণ প্রল্লঠি গালবংশাৰ কয়েকজন । 

(২৯) বেতের বেচা অর্থাৎ বাত্রিকাণে বিহানস্যাল হহত। 

(২২) শ্রীঘুক্ত ভূথনমোগ্ন নিযোগী । 

(২৩) চবে অর্থাৎ বেডায $ ভূবনমোতন বাবুব কোন দিপ্দিষ্ট কার্ষ্য 
ছিল না। অপব পক্ষে ভূুবনমোহন চরে 'অর্থাৎ গঞ্গাতীবস্থ ভূবনমোহন 
বাবুব বৈঠকথানায় । 

(২৪) গোপালচন্দ্র দাস__অভিনেত|। 

(২৫) সদেগাপ জাতীয় অনেকেই এই সম্প্রদায়ভূক্ত ছিলেন । 

(২৬) নীলদর্পণ নাটক। 

(২৭) সার-_ঝিষ্টা। এস্থলে কাধ্য-নিপুণতাব অভাব বুঝাইতেছে। 

(২৮) শশিভূষণ দাঁস__-অভিনেত।। 

(২১) নাটযাচাধ্য ও অভিনেত। শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বু। 

(৩০) সম্প্রদায় বৈতনিক হওয়ায় কাহারও আর প্রবেশ-নিষেধ রহিল 
না,-_অর্থাৎ টিকিট কিনিলেই প্রবেশাধিকার । 


০৮০ 


8 


ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ 


“নিতে মর” ও লিভ্িশত্রক্র 


পণ্ডিত শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বন্থু প্রাচ্যবিগ্তামহার্ণব মহাঁশয়-সম্পাদিত *বিশ্ব- 
কোষ” অভিধানে “বঙ্গালর” শীর্ষক শব্দেব মধ্যে বঙ্গীয় নাট্যশালাব একটা 
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস প্রকাশিত হইয়াছে । তাহাতে অনেক স্থানেই ভ্রম 
প্রমাদ দৃষ্ট হয়, বিশেষতঃ গিবিশবাবু সম্বন্ধে উহাতে এমন অনেক মিথা। 
কলম্ব-কুৎসাব কথা আছে, যাহা অমার্জনীয় । কর্তব্যেব অনুরোধে 
বিশ্বকোষে প্রকাশিত সেই সব অন্তায় ও মিথ্য। উক্তিব প্রতিবাদ কবিয়। 
প্রন্কত বন্স্ত প্রকাশে বাধ্য হইলাম । 

১৩০৭ সালে বঙ্গনাট্যশালাব ইতিহাস সংগ্রহেব নিমিত্ত সুকবি ও 
স্থুসাহিত্যিক শ্রীধুক্ত কিবণচন্ত্র দত্ত, নাট্যামোদী ৬বিপিনচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় 
এবং আমি-_এই তিন্জন একত্রে সাঁধাবণ বঙ্গনাট্যশালার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা 
ধর্মদাস স্ব মহাশয়েব নিকট গমন কবি। ধর্মদাস বাবু প্রথম হইতেই 
অক্লান্ত পরিশ্রমে ছ্েঁজ নির্মাণ ও স্বয়ং তুলি ধরিয়। দৃম্তপট আঁকিতে আবস্ত 
না করিলে গৃহস্থ যুবক-সম্প্রদায় থিয়েটার করিতে পাবিতেন কিনা সন্দেহ । 
ধর্মদাসবাবু তাহাদেব গৌরবজনক নাট্যশালার একটা ধারাবাহিক 
ইতিহাস আমাদের নিকট বর্ণনা করেন। পরে কিরণবাবুর অন্থরোধে 
তিনি তাহাকে বঙ্গনাট্যশালার একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিখিয়া 
পাঠাইয়াছিলেন। ধশ্ম্দাম বাবুর লিখিত বিবরণ ও নাট্যসআাট গিরিশচন্দের 
প্রমুখাৎ এবং অন্তান্ত নানা স্থান হইতে তত্ব সংগ্রহ করিয়া কিরণবাধু 


ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ৯৩ 


স্বর্গীয় নাট্যব্ধী অমবেন্ত্রনাথ দত্ব-প্রতিষ্ঠিত এবং সুপ্রসিদ্ধ গণ্ডিত 
পাচকড়ি বন্দোপাধ্যায়-সম্পাদিত “রঙ্গালয়” সংবাদ পত্রে ১৩০৭ সাল, ২বা 
চৈত্র (১৫ই মার্চ, ১৯০১৭ুঃ ) তাবিখে “বঙ্গীয় নাটাশালাব ইতিহাস” লিখিতে 
আরম্ভ করেন । ১৩১ সালে মণ্য়ম্পাদিত "গিবিশ-গীতাবলী” পুস্তক বাহিৰ 
হয়। গ্রন্থের শেষ ভাগে বঙ্গনাট্যশালাব ইতিহাস সহ গিবিশবাবুব সংক্গিপ্ন 
জীবনী গ্রকাশ কবি । কিব্ণবাবু কর্তৃক প্রবাশিত ধর্মানাসবাবুব লিখিত 
উক্ত বিববণ হইতে আমি বিশেষ সাহাধা গ্রহণ কবিয়াছিলাম । পব বৎসব 
১৩১১ সালে বিশ্বকোষে “বঙ্গীলয শব্দেব ব্যাখা। উপলক্ষে বঙ্গীয় বঙ্গালয়েব 
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বাহিব হয়। ইহাতে লিখিত আছে, অর্ধেন্দুবাবু 
লীলাবভী ন।টকেব বিহাবস্তাল দেন এবং ব্রজবাবুব কাছে ষ্টেজেব কাঠ- 
কাঠব! চাওয়াতে তিনি আনন্দিত হইয়। অর্ধেন্দুবাবুকে তাহা দান কবেন। 
“বিশ্বকোষে? প্রকাশিত সংবাদেব যাথার্থা সম্বন্ধে ধর্মদাসবাবুকে জিজ্ঞাস! 
কৰি। কাবণ_-"গিবিশ-গীতাবলীষ্তে মুদ্রিত ধম্মদাস বাবুব লিখিত বিববণ 
অবলম্বনে যাহ! প্রকাশিত হয়-_তাহাঁব সহিত বিশ্বকোবেব লেখাব সামপ্রস্ত 
নাই। ধর্মদাসবাবু গিবিশ-গীতাঁবলীব সেই অংশ পাঠ কবিয়া স্বতঃ- 
গ্রবুন্ধ হইয়া! উক্ত মুদ্রিতাংশ পৃষ্ঠাব পাঙ্থে 4765) [77 50205107616 15 
001601 লিখিয়! নাম সহি কবিয়। দেন। আমি সে পুস্তকখানি সমস্ত 
বক্ষা কবিয়া আসিতেছি। পাঠকগণেব অবগতির জন্ত সেই অংশ নিয়ে 
উদ্ধৃত কবিলাম £-_ 

“নধৰাব একাদশীব প্রথমাভিনর বজনীব পব হইতে আমি, গিবিশবাবু 
কর্তৃক ষ্টেজ ম্যানেজার নিযুক্ত হই। পবে সধবাৰ একাদশীর অভিনয় 
চলিতে থাকে । ইতিমধ্যে আমর! কয়েকজনে টাঁদা তুলিয়া স্থায়ী রঙ্গমঞ্চের 
স্থাপনমানসে একখানি 7195060/3 ছাপাইয়া চাদা সংগ্রহ কবিতে 
থাকি। ছুই মাস চেষ্টা করিয়। আমর! অকৃতকার্য হই। এই সময় 


৯৪ গিরিশচন্দ্র 


গিরিশবাবুর শ্তালক স্টামপুকুরের সবকার বাটার ৬নবীনচন্ত্র দেবের জোট 
পুত্র ৬ব্রনাথ দেব [ নাট্যামোদীগণের বিশেষ পবিচিত স্থুপ্রসিদ্ধ শ্রীযুক্ত 
নরেন্দ্রকৃষ, চুণীলাল ও নিথিলেন্্রকুঞ্চ দেব ( সবকাব উপাধি ) ভ্রাতুত্রয়েব 
পিতা ] একটা নাট্যশালা স্থাপন জন্য কিছু টাকা সংগ্রহ করিয়৷ একটা ষ্টেজ 
নির্মাণ করিতে থাকেন। গিরিশবাবুব আদেশক্রমে আমি শ্তামপুকুবে 
যাইয়া! এ ষ্েজ নির্াণ-কার্য্যে বিশেষ সাহায্য কবি। উজ ষ্টেজ নির্মাণ 
সমাপ্ত হইতে ন। হইতেই, ব্রজবাবু ইহলৌোক পবিত্যাগ কবেন। নির্মাণ 
কার্ধ্য স্থগিত থাকে । তিন মাস পবে গিবিশবাবু, আমাকে উক্ত ষ্টেজের 
কাষ্টাদি লইয়। নূতন ষ্টেজ প্রস্তত কবিতে বলেন ও আমাকে সমস্ত 
সাজ-সবঞ্জাম প্রদান করেন। আমি স্বীয় বাটীতে এ সকল কাষ্ঠাদি লইয়া 
আদিয়া ও,আপনা-আপনিব মধ্যে ৬০২ ষাট টাকা চাদ? তুলিয়া ষ্টেজ নির্মাণ 
ও একজন পেন্টাবকে দিয়! 9067 78101178 আরম্ভ কবি। একখানি 
সিন আকা হইতে না হইতেই টাঁক1 ফুবাইয়৷ গেল। টাকাব জমাখরচ 
আমি করিতাম। তখন আমাদেব লীলাবতীব বিহবাবস্তাল চলিতেছে । 
আমাদের মধ্যে এমন কি অধিকাংশ লোকই 91271 8275 ( অমিত্রাক্ষব 
ছন্দ) পড়িতে জানিত না! গিবিশবাবু, তাহ! কিরূপে পড়িতে হয়, 
সকলকে শিখাইয়! দেন। প্রকৃত পক্ষে থিয়েটাবের বা অভিনয়েব ক, খ, 
শিক্ষ। হইতেই গিবিশবাবু মাষ্টাব। বিহারম্তাল খুব চলিতেছে, অথচ ষ্টেজ 
নাই। ক্রমে ক্রমে এক একখানি কবিয়! লীলাবতীব সমস্ত সিনগুলি আমার 
দ্বাৰা আঁক। হল এবং আমিও সকলেব নিকট অত্যন্ত আদব পাইলাম । 
তাহাব পৰ স্টেজ 0০0701615 ( সম্পূর্ণ) হইলে, আমব1 বৃন্দাবন পালের 
গলিব বাজেন্দ্রলাল পালে বাটাতে ষ্টেজ বাধিয়া লীলাবতীব অভিনয় 
স্থচারু বপে সম্পন্ন কবি।৮ 117 51966106106 15 000601, (5৫) 
7), 1), ১৪ 


ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ৯৫ 


ধর্মদাস বাবুর 519167)611 পাঠে ভরসা করি, বিচক্ষণ পাঠকগণ 
“বিশ্বকোষেব” রঙ্গালয় লেখকের সত্যতাব পবিমাণ বুঝিতে পারিবেন। 
যিনি শ্তামপুকুব যাইয়। ব্রজবাবুব ঠ্রেজ-নিম্মীণে সাহাযা করিতেন, সেই 
ধর্মদ।স বাবু লিখিতেছেন, ব্রজবাবুব মৃত্যুব তিন মাস পরে আমি গিবিশ 
বাবুব কথামত শ্ঠামপুকুব যাইয়া কাষ্ঠার্দি লইয়া! আমি । আব “বিশ্বকোষে” 
লিখিত হইয়াছে,__“ব্রজবাবু তখনও শধ্য/গত। অর্দেন্দুবাবু ব্রজবাবুব 
নিকট এই কাঠকাঠ্বা প্রার্থনা করায় তিনি আনন্দিত হইয় তাহ! দান 
কবিলেন।” যে ব্যক্তি বড় সাধ কবিয়। রঙ্গমঞ্চ নির্মাণ কবিতেছিলেন, 
বোগমুক্ত হইলে তাহা সম্পূর্ণ কবিবার আশ! বাখেন, তাহা শয্যাশায়ী 
অবস্থায় গিয়। তাহাব নিকট কাষ্গুলি প্রার্থনা করা সম্ভবপর নছে। 
আবার নেই সংবাদ শুনিম্া রোগী আনন্দিত হইয়া উঠিলেন, ইহাও 
নৃতনত্ব বটে! 

ব্রজবাবুর পীড়াকালীন গিরিশবাবু প্রায়ই রিহারন্ত/লে যাইতে পারিতেন 
না বলিয়াই বোধ হয় *অর্ধেন্দুবাবু শিক্ষাদাতা হইলেন” বিশ্বকোষে 
লিখিত হইয়াছে । কিন্তু নগেন্দ্রবাবু, রাধামাধববাবু তাহারাও যে গিবিশ 
বাবুর অনপস্থিত-কালে ছোট ছোট তৃমিকাগুলি শিখাইতেন, এ কথা 
“বিশ্বকোষে* লিখিত হইল না কেন? 

ন্াসান্তাল থিয়েটারস্প্রদায় “লীলাবতী”র পর “নীলদর্পণেব” রিহারন্তাল 
দিতে আবন্ত কবেন। *বিশ্বকোষে” নীলদর্পণেব রিহাবন্তাল ব্যাপার হইতে 
গিরিশবাবুকে একেবাবে ছা'টিয়। বাদ দেওয়া হইয়াছে। বিশ্বকোষ 
বলিতেছেন,__"গিরিশবাবু ব্যতীত লীলাবতীর দলেব সকলেই আসিয়া 
জুটিলেন। পূর্বোক্ত বন্ধুবান্ধবগণেব যত্বে এবাৰ কার্যেব একট! শৃঙ্খলা 
স্থাপিত হইল। নগেন্ত্রবাবু সম্পাদক (সেক্রেটারী ), ধম্মদাস বাবু কর্মাধাক্ষ 
( মানেজাব), কার্তিকবাবু বেশকারী (ড্রেদার) আর অর্ন্দুবাবু, 


৯৬ গিরিশচন্দ্র 





সব্গীয় অর্দেন্দুশেথব মুস্তফী 
পরিচালক ও শিক্ষক (1)150107 ও 620761 ) হইলেন। *% ++ 


অর্ধেন্দুতাবুব প্রস্তাবে “নীলদর্পণ” অভিনয কৰা স্থিব হয়।» কিন্তু একথ। 
একেবাবেই সত্য নহে। তৎকালীন ম্যানেজার ধর্মমদ/সবাবু এবং পৃষ্ঠ- 


ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ৯৭ 


পোষক শ্রীযুক্ত ভুবনমোহন নিয়োগী মহাশয়ের স্বাক্ষরিত-অংশ “গিরিশ- 
গীতাবলী” হইতে নিয়ে উদ্ধত করিতেছি £__ 

প্যাহাই হউক সম্প্রদায় তৎপরে দ্বিগুণ উৎসাহে শ্রীযুক্ত ভূবনমোহন 
নিয়োগীর গঙ্জাতটন্থ বৈঠকখানায় গিরিশবাবুব প্রস্তাবমত “নীলদর্পণের, 
বিহারস্তাল দিতে লাগিলেন। রিহারস্তাল সমাপ্ত হইলে, দর্শকৰৃন্দের 
আগ্রহাতিশয় দর্শনে সম্প্রদায়, টিকিট বিক্রয় করিবার প্রস্তাব কবেন। এ 
প্রস্তাবে তীহারদ্দেব অভিনয়-শিক্ষক শ্রীযুক্ত গিরিশচন্দ্র ঘোষ অসম্মত হন। 
তিনি বলেন,__-“আমাদের বঙ্গমঞ্চ, দৃশ্তপট ও অন্যান্থ সাজসরঞ্জাম এখনও 
এরূপ উতকর্ধ লাভ করিতে পরে নাই, যাহাতে "ন্তাসান্তাল থিয়েটার” নাম- 
কবণ পূর্বক টিকিট বিক্রয় করিয়া, সাধাবণে প্রকাশিত হওয়1 যায় ।” কিস্তৃ 
সম্প্রদায়স্থ অধিকাংশই এরূপ উত্তেজিত হন যে, তীহাদেব শিক্ষাগুরু,_ 
ধাহাব অসাধাবণ শিক্ষা-নৈপুণ্যে তাহাদেব সম্প্রদায় এত প্রতিপত্তি লাভ 
করিয়াছিল এবং বাহার ধিপুল অধ্যবসায়-গুণে সুশিক্ষিত হইয়া, তাহাব! 
'নীলদর্পণ” অভিনয়ে এরূপ নবোৎসাহে প্রস্তত হইয়াছিলেন, সেই গিরিশ- 
বাবুব কথা বক্ষা কবিতে অসম্মত হইলেন। চিবস্বাধীন গিবিখবাবু, তাহার 
বনু যত্বের শিক্ষাদানের “নীলদর্পণ” অভিনয় দর্শনে, সাধারণে কিরূপ মন্তব্য 
প্রকাশ কবে, মে কৌতুহল নিবৃত্তিব আগ্রহ পরিত্যাগপুর্বক তৎক্ষণাৎ 
সম্প্রদায়েব সংঅব ত্য।গ করিলেন ।” 

(90. ) 10101011002 10855 981 

(5.) 73110002.0 1101901 1২6০8), 

(সাঃ) শ্রীতুবনমোহন নিয়োগী। 

১৩১৭ সাল, ভাদ্মাসের “নাট্যমন্দিরে” ধর্মদাসবাবুর স্বরচিত 
আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়। তাহা হইতেও নীলদর্পণেব রিহারস্তাঁল- 
বৃস্তাস্ত উদ্ধত করিতেছি ।__ 

৭ 


৯৮ গিরিশচন্দ্র 


পজ & ৬ পরে 'নীলদর্পণেকঃ রিহারস্তাল আরম্ভ হইল। আমার স্বজাঁতি 
ও প্রতিবাসী শ্রীধুক্ত ভুবনমোহন নিক্বোগী মহাশর তাহার গঙ্গার উপরিস্থিত 
বৈঠকখান! আমাদের রিহারস্তাল ও আপিস করিতে দিলেন এবং 
আমাদেব সময়ে সময়ে সাহায্য করিতে প্রতিশ্রুত হইলেন। আমরাও 
দ্বিগুণ উৎসাহে কাধ্য করিতে লাগিলাম। ক্রমে আমাদের “নীলদর্পণ, 
অভিনয় উপযোগী সিনগুলি সব প্রস্তুত হইয়া আদ্িল। টিকিট বিক্রয় 
কবিয়। থিয়েটার করিবার জন্ত জোড়াসাকোর ৬মধুশ্দন সান্নাল 
মহাশয়েব বাটা (যে বাটী এখন ঘড়িওয়ালা বাটা 'বলিয়৷ খ্যাত) 
শ্রী বাটা জোগাড় করা হইল। আমি ষ্টেজ প্রস্তত করিলাম। আমবঝ 
সকলেই উৎসাহিত ) কেবল গিবিশবাবুব অমত। কিন্তু আমাদেব 
সকলে একেবারে উন্মত্ত হইয়া উঠিয়'ছে- কেহই গিবিশবাবুব আপত্তি 
ও অম গ্রাহা কবিল না, বরং সকলেই একমত হইয়া স্থিব 
কবিল,-.গুব অমত হয়, আমব। উহাকে চাহি না। উহাকে বাদ 
দিতে গেলে আমাদের সকলকে দমনে রাঁথে-_-এমন একজন আবশ্তুক। 
কাজেই শ্রীদুক্ত বেণীমাধব মিত্র মহাশয়কে আমব। প্রেসিডেপ্ট কবিলাম। 
তাহাতে গিরিশবাবু আমাদের সকলেব উপব রাগ কবিলেন ও সেই 
কাবণেই গিরিশবাবুব “লুণ্তবেণী” গানের সৃষ্টি হইল। কারণ আমর! 
বেণীবাবুব নাম বিজ্ঞাপনে ছাপাই নাই । * * * *%” 

এ সম্বন্ধে গিবিশচন্ত্র তত্প্রণীত “অর্ধেন্দু-জীবনীতে” (বঙ্গীয় নাট্য- 
শালায় নট-চূড়ামণি স্বগীক্ন অর্দেন্দুশেখব মুস্তফী” 'নামক পুন্তকে ) যাহা 
লিখিয়াছেন, তাহাও আমরা (২০ পৃষ্টা হইতে ) উদ্ধত করিতেছি £-_ 

“নীলদর্পণের শিক্ষাস্্বন্ধে নানাবিধ তর্কবিতর্ক শুনিতে পাই ও 
মুদ্রা্কিত কাগজ দেখিতে পাই। সেই সব কাগজ ও কথার 
বিশেষ যত্ব, যাহাতে প্রতীয়মান হয় যে নীলদর্পণের রিহারস্তালে 


ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ৯৯ 


আমার কোন হম্তক্ষেপ ছিল না, কেবল অর্দেনুর শিক্ষাতেই সম্প্রদায় 
গঠিত হইয়াছিল । আমার সংশ্রব ছিল বা না ছিল, তাহা জানাইবার 
প্রয়োজন নাই; কিন্তু নীলদর্পণ সম্প্রদায় গঠিত করিয়াছিলেন, এ কথায় 
অর্ধেন্দুর বিশেষ প্রশংসা হয় না। কারণ উক্ত সম্প্রদায়তুক্ত বাক্তিগণ 
দুইবার অতি উচ্চ প্রশংসাব সহিত “সধবার একাদশী” ও 'লীলাবত্তী। 
অভিনয় করিয়াছে । নীলদর্পণে নাটককাবেব কৃতিত্ব “লীলাবতীব 
অপেক্ষা অধিক হইলেও “লীলাবতীতে” নীলদর্পণ অপেক্ষা অধিক শিক্ষা 
প্রয়োজন ছিল। হার! লীলাবতী অভিনয় করিয়াছিলেন, তাহাদেব মধ্যে 
কয়েকজনকে চাষাব শিক্ষা দিলেই যথেষ্ট হইত); কারণ কঠিন কঠিন 
ভমিকা-_-সাবিত্রী, উড, গৌঁলকবন্থু প্রভৃতি অর্ধেন্দুশেখর স্বয়ং গ্রহণ 
করিয়াছিলেন । “লীলাবতীতে+ সম্প্রদায় যেরূপ শিক্ষিত হইয়াছিল, তাহাতে 
নবীনমাধব, বিন্দুমাধব, সৈবিন্ধী, সবলা প্রভৃতি ভূমিকার অধিক শিক্ষার 
প্রয়োজন ছিল না । যথ! “লীলাবতীব" শ্রীনাথেব পক্ষে নীলদর্পণেব দেওয়ান 
বিশেষ কঠিন নয়। নীলদর্পণে আমাব কোন সংস্্ব ছিল না, ইহ প্রমাণ 
কিয় ধিনি অর্ধেন্দুশেখরেব বিশেষ প্রশংসাব চেষ্টা কবিবেন, তাহাতে 
তিনি ক্ৃতকার্ধ্য হইবেন না। অদ্ধেন্দুশেখবেব মহিত নীলদপণে শিক্ষার 
অংশ না হোক, সধবাব একাদশী ও লীপাবতীব শিক্ষাৰ দাবী শ্রীযুক্ত 
রাধামাধব কবও বখেন। নালদর্পণ শিখাইবাব অংশ অগ্যাবধি জীবিত 
ধন্মদাসবাবু আমাকে কাগঞজে-কলমে দেন। নীলদর্পণ সম্প্রদায়ের 
অনেকেই মহেত্দ্রলাল, মতিলাল, কাপ্ডেন বেল, শিবচন্ত্র প্রভৃতি আজীবন 
আমাকে গুরু বলিয়া গৌবব কধিতেন। ধীাহার অপব প্রশংসা নাই, 
তীহার পক্ষপাতী ব্যক্তি যদি সতের অপলাপ কবিয়। তাহার প্রশংস। বুঁদ্ধব 
প্রয়াস পান, তাহাতে ফল না৷ হোক, কতক পরিমাণে মার্জনীয় হুহতে 
পারে। 'নীলদর্পণঃ লইয়। আমার সহিত অর্ধেন্দুর বিবাদ কেহ কেহ প্রকাশ 


১০৩ গিরিশচন্ছ 


করিয়া থাকেন, কিন্তু ইহা! অমুলক। ন্তাসান্তাল থিয়েটার স্থাপনের কর্তৃত্ব" 
ভার শ্রীযুক্ত ধর্মদাস স্থুর ও ৬নগেন্ত্রনাথ বন্দ্োপাধ্যায়ের অন্ন ছিল 
না। নগেন্্রনাথ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের শিক্ষাও দিতেন। কতকটা ষ্টার 
থিয়েটারের ম্যানেজাব শ্রীযুক্ত অমৃতলা'ল বস্ও এ কর্তৃত্ব দাবী বাখেন। 
তিনি এই নীলদর্পণে 'লীলাবতীর, ক্ষীরোদবাসিনী চলিয়া! যাওয়ায় 
সৈবিদ্বীর ভূমিক! পান ও এই তাহার প্রথম নাটক শিক্ষা। যে সময়ে 
অমুতবাবু নীলদর্পণে যোগ দেন,সে সময়ে আমি না৷ থাঁকিবাব কারণ কোনও 
বিবাদ নয়, মতের অনৈক্য মাত্র। আমাব রচিত গান 'লুণ্তবেণী বইছে 
তিবোধার+ তাহাব প্রমাণ । গানের শ্লেষ এই--স্থান-মাহাজ্ম্যে হাড়িশুঁড়ি 
পয়সা দে দেখে বাহাব।" স্তাসান্তাল থিয়েটার নাম দিয়া, ন্তাসান্তাল 
থিয্েটাবের উপযুক্ত সাজ-নবঞ্জাম ব্যতীত, সাধাবণেব সম্মুখে টিকিট বিক্রয় 
করিয়৷ অভিনয় কর! আমার অমত ছিল। কাবণ একেই তে৷ তখন 
বাঙ্গালীর নাম শুনিয়া ভিন্নজাতি মুখ বাঁকাইয়! যায়, এরূপ দৈন্ত অবস্থা 
স্তাসান্তাল থিয়েটারে দেখিলে কি না বলিবে-এই আমার আপত্তি । 
্যাসান্তাল থিয়েটার নামে অনেকেই বুঝিবে যে ইহ! জাতীয় বঙ্গমঞ্চ, বঙ্গেব 
শিক্ষিত ও ধনাঢ্য ব্যক্তিগণেব সমবেত চেষ্টায় ইহ! স্থাপিত । কিন্তু কয়েকজন 
গৃহস্থ যুবা একত্র হইয়া ক্ষুদ্র সবঞ্জামে স্তাসান্াল থিয়েটার করিতেছে, ইহ! 
বিসদৃশ জ্ঞান হইল। এই মতভেদ। কিন্তু সে সময় টিকিট বেচিয়া টিকিটের 
অর্থ আত্মসাৎ করিবেন, এমন ছুই এক ব্যক্তি পৃষ্ঠপোষক হইয়াছেন। 
তাহারাই এই মতভেদকে শক্রত৷ বলিয়! ব্যাখ্য! করিতে লাগিলেন।” 
টিকিট বিক্রয় কবিয়া অভিনয় করিবাব ধাহাদের অধিক আগ্রহ ছিল, 
অর্ধেন্দুবাবুও তাহাদের মধ্যে একজন প্রধান। তাহার কারণ, তিনি তখন 
অন্ত কোন কাজ কর্ম করিতেন না, নাট্যান্থরাগ বশতঃ আকৃড়া-গৃহেই 
স্দাদর্বদ! থাকিতেন। পুর্বে উল্লিখিত হইয়াছে, আস্মীয়তাস্থত্রে পাথুরিয়া- 





১০২ গিরিশচন্দ্র - 


ঘাটায় মহাবাজ। যতীন্দ্রমোহন ও সৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুব ত্রাতৃদ্বয়ের বাটাতে 
থাকিয়! অর্দেন্দুবাবু লেখাপড়া কবিতেন। কিন্তু কয়লাহাটায় (জোড়ার্সাকো, 
রতন সবকার গার্ডেন স্ত্রাটে) অভিনীত “কিছু কিছু বুঝি” প্রহমনে িস্ত- 
বক্রে ভূমিকা (দস্ত-বোগাক্রান্ত সৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুবের প্রতি শ্লেষ- 
ব্যঞ্জক ) অভিনয় কিয়! তিনি পাখুবিয়াঘাটা রাজবাটীতে বসবান পরিত্যাগ 
কবিতে বাধা হন। এই মনোমাপিন্ত এত অধিক বৃদ্ধি পাইয়াছিল যে ঠাকুর- 
বাটী হইতে অর্ধেন্দুবাবুন পিতা ৬ম্তামাচবণ মুস্তফী মহাশয় যে মাসোহারা 
পাইতেন, তাহাও বন্ধ হইয়া যায়। এই নিমিত্ত শ্ত।মাচরণবাবু অর্ধোনদু 
বাবুব উপর বিশেষ বিবজ্ত হইয়া উঠিয়াছিলেন। এ সম্বন্ধে নাট্যাচাধ্য 
ীুক্ত অমৃতলাল বনস্থ মহাশয়-বণিত “মানসী ও মর্ধববাণী' মাসিক পত্রিকায় 
(শ্রাবণ, ১৩২৩ পাল) যাহ! লিখিত হইয়াছে, তাহ। উদ্ধৃত করিতেছি 8 
“* ও ঞ'অর্দেন্দুব কিছু টানাটানি ছিল তীহাকে প্রায়ই টাক দিতে 
হইত। নীলদর্পণেব তৃতীয় অভিনয় বজনীতে অর্ধেন্দুর অদর্শনে আমর! 
অস্থিব হইয়। পড়িলাম; কোনও রকম করিয়া যোগেন্দ্রনাথ মিত্রকে দিয় 
তাহার কাজ চালাইয়া! লইলাম। পরদিন প্রাতে অর্ধেন্দুব বাড়ীতে গিয়। 
তাহাব পিত। ৮ শ্তামাচরণ মুস্তফী মহাশয়ের হন্তে নগেন বন্দ্। চটষ্লিশটা 
টাকা দিয়! আমিলেন। তখনকার মত গোল মিটিয়৷ গেল। ইহার জন্ত 
অর্ধেন্দুকে দোষ দিতে পারি না। থিয়েটারের সর্বাঙ্গীন উন্নতি করিতে 
গিয়। তিনি নিজের সংসারের দিকে দৃক্পাত করিবার অবসর পান নাই। 
তাহারা পাথুরিয়াঘাটার ঠাকুরবাড়ী হইতে বরাবর মাদে মাসে যে বৃ 
পাইয়! আসিতেছিলেন, *কিছু কিছু বুঝি” প্রহমন অভিনয়ের পর হইতেই 
তাহ! বন্ধ হইয়! যায়। সুতরাং ধিয়েটারের জন্ত তাহাদিগকে বিশেষ ক্ষতি- 
গ্রস্ত হইতে হইল। যদি আমর! তাহার অর্থাভাব মৌচনের চেষ্টা না করি- 
তাম, তাহ হইলে আমাদের আচরণ অত্যন্ত গঠিত হইত।” (৬৭০ পৃষ্ঠা) 


ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ১০৩ 


লীলাবতী নাটকের ক্ষীরোদবাসিনীর ভূমিকার অভিনেত| রাধামাধ 
বাবু চলিয়! যাওয়ায়, নীলদর্পণ নাটকের সৈরিষ্বীর ভূমিক1 অমৃতবাবুকে 
প্রদান করা হয়। “বিশ্বকোষে' লিখিত হইয়াছে, অর্ধেন্দুবাবুই তাহাকে 
সম্পূর্ণ শিক্ষ। প্রদান করেন। কিন্তু অমৃতবাবু তাহা স্বীকার করেন ন|। 
পূর্বোক্ত তারিখের “ম।নসী ও মর্ধববাণী” পত্রিকায় এতদ্সম্বন্ধে তাহার যে 
প্রতিবাদ বাহির হইয়াছিল, তাহাও নিয়ে উদ্ধত হইল £__ 

“বিশ্বকোষ অভিধানে “রঙ্গালয়+ শীর্ষক প্রবন্ধে একটু আধটু ভূল 
রহিয়া গিয়াছে । প্রথম দেখুন রেবতীর ভূমিকা লইয়াছিলেন 
তিনকড়ি মুখোপাধ্যায়, তিনকড়ি মানা নহে। &* গিরিশবাবুর গানে 
আছে--“কলঙ্কিত শশী হরষে, অমুত বরষে” ; এ স্থলে বিশ্নকোষের 
লেখক টাক করিয়াছেন-__'অমৃত বরষে-_-অমৃতলাল পাল একজন 
অভিভাবক ।” অথচ সকলেই জানিতেন যে এ “অমৃত” দৈরিন্ধীবেশী 
অমৃতলাল বন্থু। সৈরিন্ধীর অশ্রবর্ধণের উল্লেখ করিয়া “অমৃত বরষে, 
লেখ! হইয়াছে। আর অমুতপাল পাল কোনও কালে "অভিভাবক" 
অথবা! থিয়েটারের ভাবুকও ছিলেন না। এই রকম ছোটখাট 
অনেক ভুল উক্ত প্রবন্ধে আছে। পুনশ্চ দেখুন, লেখক একস্থলে 
বলিতেছেন, নবীনমাধরের মৃত্যুশধ্যাব দৃষ্তে পদৈরিষ্ধণকে যে 
মড়াকান্না” কাদিতে হইত, অমৃতবাবু সহজে তাহা! আয়ত্ব করিয়া উঠিতে 
পারেন নাই। শেষে অমৃতবাবু নিজ বাড়ীর পার্স একট! খালি ভাগ! 
বাড়ীতে প্রত্যহ ছুপ্রহর বেলায় গিয়া এই ক্রন্দন শিখিবার জন্ত নাধন। 
করিতেন'। অর্দেন্দুবাবু সেখানে গিয়। কাদ্িতে শিখাইতেন, উভয়ে গল! 
মিলাইয়! কান্না অভ্যা করিতেন । আট দশ দিন এইরূপ কঠোর সাধনায় 
অযৃতবাবু মড়াকান্ন আয্মত্ত করিস লইয়াছিলেন। তাহাদের প্রত্যহ এই 
স[ধনার নিষন্ব পল্লীন্থ স্ত্রীলোকের! জানিত না, কাজেই টিয়া থেঁল যে 


১০৪ গিরিশচন্দ্র 


“ভাঙ্গা বাড়ীতে ভূতে বোজ কাদে, এই বর্ণনায় কিছু গলদ আছে। 
ব্যাপাবটা এই £__আমি ত সৈরিন্ধীব ভূমিকা! গ্রহণ করিলাম । প্রথমে 
নিজে নিজেই আমাব পাটা আয়ত্ত করিবার চেষ্টা করিতে ত্রুটি 
কবি নাই। একদিন অর্দেন্দুবাবু বলিলেন, “তোমাব পার্টটা কেমন 
হ'ল দেখি? তিনি আমাব পবীক্ষা লইয়া বলিলেন__“না, হয়নি |” 
এই বলিয়। সৈরিন্ধীব প্রথম দৃশ্তে চুলেব দড়ি বিনানর সময় 
কথার ভঙ্গি কেমন হওয়! উচিত, তাহা তিনি আমাকে বুঝাইয়! দিতে চেষ্টা 
করিলেন। আমাব মেয়েলিপন| ঠিক হইল না। গৃহে প্রত্যাবর্তন কবিয়। 
আমি ভাবিলাম, বক্তা ধবণট। ঠিক কবিয়া লইতে বেনী দেবি হইবে না) 
আসল ব্যাপাবট! হইতেছে-_এ&ঁ কানা । এ্রটাকে আয়ত্ত কবিতে হইবে। 
এই মনে কবিয়া আমি আমাদেব ঘনিষ্ট প্রতিবেশী কালিদাস সান্যাল মহা- 
শয়ের নিকটে কান্না শিখিতে গেলাম | তা'র সেকেলে ধবণেব কানন। ; স্থুবটাই 
মেয়েলি, কিন্ত আমাব মনে হইল যেন ০০1০10%এব অভাব । আমাব ঠিক 
উহা! ভাল লাগিল না। আমি একাই চেষ্টা করিয়! দেখিব, এই প্রতিজ্ঞ 
করিয়! প্রত্যহ এ পড়ো-বাড়ীন্ে দ্বিপ্রহরে আমি মড়াকান্না অভ্যাস 
কবিতাম। একাকী কবিতাম; অর্ধেন্দু বা অন্ত কেহ আমার দোসর 
ছিলেন না । কয়েকদিন পবে আমি অর্ধেন্দুকে বলিলাম,_-একবাব 
আমাৰ কান্না জায়গাটা]! শোনো! দেখি »॥ মড়াকান্নার অভিনয় দেখিয়া 
তিনি সানন্দে আমাব হাত ধরিয়া বলিলেন__বনস্থৎ আচ্ছা! 
বেশ হয়েছে।” 

অমৃতবাবু সম্বন্ধে বিশ্বকোষে “এক আধটু ভুল আছে, কিন্ত গিরিশবাবু 
সম্পর্কে সেই ভুলের মাত্র! অত্যধিক বাড়িয়া গিয়াছে। ১৩১৫ সালে, 
আশ্বিন মাসে মিনার্ভ। থিয়েটারে অর্ধেন্দুবাবুর শোঁক-সভায় গিরিশবাবু 
অর্ধেন্দুবাবু সম্বন্ধে ষে প্রবন্ধ পাঠ করেন, তাহাতে বিশ্বকোষের এই সকল 


ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ১৪৫ 


ক্রটি সম্বন্ধে উল্লেখ কবেন। “বিশ্বকোষ-সম্পাদক” পণ্ডিত শ্রীযুক্ত নগেন্্রনাথ 
গ্রাচ্যবিষ্ঠামহার্ণব মহাশয়ও নেই সভাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সভাস্থলে 
বলেন,--“বিশ্বকোষে প্রকাশিত “রঙ্গালয়ঃ প্রবন্ধটা অর্দেন্দুবাবুর পুত্র 
ব্যোমকেশ বাবু আমাকে লিখিয়া দেন। নান! কাবণে আমি এই প্রবন্টা 
গিরিশবাবু বা অমৃতবাবুকে দেখাইয়। লইতে পাবি” নাই। এক্ষণে 
বুঝিতেছি, এই প্রবন্ধটীতে অনেক গলদ রহিয়! গিয়াছে । যাহাই হউক 
পুনমুর্রন কালে আমি ইহা সংশোধিত কবিয়া৷ বাহির করিব। আমি এ 
বিষয়ে অনভিজ্ঞ, ভবস! কবি, আপনাবা এতদ্বিষয়ে আমাকে সাহায্য 
কবিবেন।” 

বিশ্বকোষ কবে পুনমুদ্রিত হইবে এবং পুনরুঁদ্রনকালে এ সব 
ভুলল্রাস্তিব সংশোধন হইবাব স্ুুবিধ! হইবে কিন! বলিতে পারি না। তাই 
“বিশ্বকোষের+ লেখা-সম্বন্ধে আবও ছুই একটা অমূলক কথ। এথানে বল! 
প্রয়োজন বোধ কবি। যথা £-- 

«এই অভিনয়েব (সধবাব একাদণী ) পব ব্গমঞ্চ মেবামতি হিসাবে 
৪০২ টাকাব গোলমাল হয়। সেই গোলমাল লইয়া গিরিশবাবু রঙ্গমঞ্চ 
আটকাইয়। রাখেন। এই স্ত্রে গিরিশঝাবুব সহিত সমগ্র দলেব বিবাদ হয়, 
এবং গিবিশবাবু দল ছাড়িয়া দেন। এই অভিনয়ে পব গড়পাবে 
জগন্নাথ দত্তেব বাড়ী ইহাদেব তৃতীয় অভিনয় হয়। এই অভিনয়েব জন্ত 
বঙ্গমঞ্জের অভাব হয়। শিবপুবে তখন কৃষ্খকুমাবীব অভিনয় হইত। সেই 
দলের রঙ্গমুচ ক্রয় কবিয়! আনিয়া অভিনয় করা স্থির হয়। গিরিশবাবু 
এই সংবাদ পাইয়া নিজে আসিয়া নিমটাদ অভিনয়ের জন্ত গ্রস্ত হইলেন।» 
বিশ্বকোষ রঙ্গালয় (বঙ্গীয়) ১৮৭ পৃষ্ঠা। 

“এদিকে দৃশ্তপট আকা ও প্ল্যাটফম্ম তৈয়ারী যখন অর্ধেক হইয়াছে, 
তখন ইহাদের মধ্যে এক ব্যক্তি শক্রতা করিয়া উহা পুড়াইয়! দিবার চেষ্টা 


১৬ গিরিশচন্দ্র 


করিতে লাগিলেন। এই ব্যক্তি ইহাদের মধো বয়ে।জ্যোন্ট ছিলেন, মধ্যে 
মধ্যে দলে আসিয়া অভিনয়ার্দি কবিতেন। অভিনয়ে তিনি সুখ্যাতি 
পাইয়াছিলেন, কিন্তু টিকিট বেচিয় থিয়েটাব করিতে তাহার আপত্তি ছিল 
বলিয়া তিনি দল ছাড়িয়া দিয়াছিলেন। তাঁহার অভাবেও যখন দেখিলেন, 
এই সম্প্রদায় স্বচ্ছন্দে রঙ্গমঞ্চ প্রস্তুত করিয়! তুলিতে লাগিল, তখন তিনি 
ঈর্ষাপরবশ হইয়। এই কুৎপিৎ উপায় অবলম্বন করিবেন স্থির করিলেন। 
অর্দেন্দুবাবু, নগেন্দ্রবাবু ও ধর্মদাসবাবু এত পরিশ্রমে সংগৃহীত কাষ্ঠগুলি 
অনায়াসে ভন্মীভূত হইবে এই ভয়ে, সংবাদ পাইবামাত্র সেইদিনই সমস্ত 
খুলিয়া শ্তামবাজাবে ৬বৃন্বাবন পালেব বাড়ীতে লইয়! আলিলেন। বৃন্দাবন 
বাবুব পোষ্যপুব্র রাজেন্দ্রবাবু ইহাদের বালাবন্ধ। তিনি সাহায্য করিতে, 
স্বীকাব করায় তাহার বুহৎ উঠানে মঞ্চ বাঁধ। হইতে লাগিল। এই সমস্ক 
ধর্মদাসবাবু ও কাত্তিকচন্ত্র পাল এক প্রকার ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করিয়া; 
কাধ্য কবিতে .লাগিলেন। রাজেন্ত্রবাবুব বাড়ীতে আশ্রয় লওয়ায় আবার 
ইহাদ্িগকে টিকিট বেচিবাব আশ! ত্যাগ করিতে হইল। নগেন্দ্রবাবুব: 
বাড়ীতে আধ্ড়াই চলিতে লাগিল। টিকিট বেচা হইবে না! শুনিয়া গিরিশবাঝু 
আবার দলে মিশিলেন। সম্প্রদায় তাহা হইতে ইতিপুর্ক্বে নানারপে 
উৎপীড়িত হইলেও চক্ষু লজ্জ|য় পড়িয়া! তাহাকে গ্রহণ করিলেন।” বিশ্বকোষ 
- রঙ্গালয় ( বঙ্গীয় ) ১৯০ পৃষ্ঠা । 

ইহা৷ হইতেই পাঠকগণ আমাদের বাক্যেব সত্যতা উপলব্ধি করিবেন 
এবং স্পষ্ট বুঝিতে পারিবেন, গিরিশবাবুকে সাধারণের নিকট হীন, 
প্রতিপন্ন করাই যেন “রঙ্গালয়,-প্রবন্ধকারের উদ্দেস্ত | 


চতুর্দশ পরিচ্ছেদ 


সাজ্যাল-ভ ন্নে ল্যাসান্যাল থ্িত্অিউান্ল 
€ সাগ্রাল্রল নাক্যশালাক্র অভিষ্।) 


১২৭৯ সাল, ২৩শে অগ্রহায়ণ ( ৭ই ডিনেম্বব, ১৮৭২ গ্রীষ্টাব্ ) শনিবার, 
বঙ্গীয় সাধারথ নাট্যশালার চিরশ্মরণীয় দিন। এই দিনেই সাধারণ বঙ্গ- 
নাট্যশালা প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। বাঁগবাজারে স্থাপিত ষে ন্াসান্তাল 
থিয়েটার এ পধ্যস্ত বিনামুল্যে টিকিট বিতরণে অভিন্ন করিয়া! প্রাইভেট 
থিয়েটার নামে অভিহিত হইয়া আসিতেছিল, টিকিট বিক্রয়ে সর্ব 
সাধাবণকে অভিনয় দর্শনার্থে আহ্বান করিয়া এই দ্বিনে তাহ! সাধাবণ 
রঙ্গালয় (24010 71)5815 ) নাম ধারণ কবিল। জোড়াসাকো, ৩৬৫ নং 
অপার চিৎপুর রোভস্থ ৬মধুনুদন সান্ন্যাল মহাশয়েব বাটীও বঙ্গনাট/শালাব 
ইতিহাসে চিরম্মবণীয়্ হইয়! রহিল, কারণ এই সান্ন্যাল-ভবনেই বঙ্গনাট্য- 
শাল! সর্বসাধারণের নিমিত্ত প্রথম উন্দক্ত হইল। স্থুবিখ্যাত নাটাকার 
রায় দীনবন্ধু মিত্র বাহাছবরের “সধবার একাদশী” নাটক লইয়াই__ 
স্কাসান্তাল থিয়েটারের বীজ রোপিত, পলীলাবতী*তে তাহ। অস্কুরিত এবং 
“নীলদর্পণে* তাহা বিকশিত হইয়া! সর্বসাধারণের গোচরীভূত হইল 7 
এ নিমিত্ত বঙ্গনাট্যশালার অন্তিত্বেব সহিত তাহার নামও চিরজাগরূক 
থাকিবে। 

মহাসমারোহে সান্ন্যাল-ভবনে ১২৭৯ সাল, ২৩শে অগ্রহায়ণ তারিখে 


১০৮ গিরিশচন্দ্র 


বহু সন্ত্রাস্ত দর্শক-সমাগমে '“নীলদর্পণ” নাটকের প্রথমাভিনয় হয়। 
প্রথমাভিনয় বজনীর & অভিনেতাগণ £__ 
গোলক বন্ু, উড সাহেব, জনৈক 


রাইয়ত এবং সাবিত্রী অর্ধেন্দুশেখব মুস্তফী। 
নবীনমাধব নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় | 
বিন্দুমাধব কিরণচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় । 
তোঁবাপ, রাঁইচবণ, গোপ এবং 

নীলকরদিগেব মোক্তাঁব মতিলাল সুর । 

সাধুচবণ, ম্যাজিষ্ট্রেট ও পদী মধবাণী মহেন্ত্রলাল বস্তু। 

সৈবিন্ধী শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্ু। 
বোগ সাহেব ও খুত্ী অবিনাশচন্ত্র কব। 
গোপীনাথ দেওয়ান শিবচন্্র চট্টোপাধ্যায় । 
নবীনমাধবেব মোক্তাব ও আছবী গোপালচন্ত্র দাস। 
কবিবাজ শশীলাল দাঁস। 

সরলতা শ্রীযুক্ত ক্ষেত্রমোহন গঙ্গোপাধ্য।য়। 
বেবতী তিনকড়ি মুখোপাধ্যায় । 
লাঠিয়াল পূর্ণচনদ্র মিত্র । 

বাখাল যছুনাথ ভট্টাচার্য | 

খালামী গোলকনাথ চট্টোপাধ্যায় । 


অভিনয় দর্শনে সকলেই একবাক্যে সুখ্যাতি করিয়াছিলেন; কেবল 


* 'নীলদর্পণের' ইহ! গ্রথমাভিনয় নহে । নীলদর্পণ নাটক ১৮৬১ খুষ্টাবে ঢাকায় 
প্রথম মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। গ্রস্থকার দীনবন্ধুবাবুর উৎসাহেই তথায় ইহার 
অভিনয় হুইয়াছিল। 


চতুদ্দশ পরিচ্ছেদ ১৩৯ 


দীনবন্ধুবাবু আক্ষেপ করিয়! বলিয়াছিলেন,__“ইহাতে একজন যোগ্য 
গম্ভীর অংশের (59671995 781৮) 4806০: যোগদান করেন নাই। 
বল! বান্ছল্য, গিরিশবাবুকে লক্ষ্য করিয়াই এ কথা বলা হইয়াছিল। 

১৪ই ডিসেম্বর (১লা পৌষ) নীলদর্পণের দ্বিতয়াভিনয় কবিয়া 
্তাসান্তাল সম্প্রদায় পব সপ্তাহে ২১শে ডিসেম্বব (৮ই পৌষ) দীনবন্ধবাবুব 
“জামাই বাবিকের” অভিনয় কবেন। তৃতীয় ও চতুর্থ রজনী ণ্জামাই 
বাবিক” অভিনয়েব পর ৪ঠা জানুয়ারী ( ২২শে অগ্রহায়ণ ) পঞ্চম রজনীতে 
দীনবদ্ধুবাবুব “নবীন তপস্থিনী” নাটকের অভিনয় ইয়। তৎপবে স্তাসান্তালে 
দীনবন্ধুবাবুব “বিয়ে পাগল! বুড়ো” ১৫ই জানুয়ারী ( ৩রা! মাঘ ) বুধবারে 
অভিনীত হয়। পাঠকগণেব বোধ হয় স্মরণ আছে, বাগবাজাব আযামেচার 
থিয়েটাবে প্সধবার একাদশীব” সঙ্গে “বিয়ে পাগল! বুড়ো* চোববাগানে 
্বগীর লক্ষমীনাবায়ণ দত্ত মহাশয়েব বাটাতে পূর্কবে অভিনীত হইয়াছিল। 
্যাসান্াল থিয়েটারে বুধবাবে অভিনয় এই প্রথম আবন্ত হইল। “বিয়ে 
পাগল! বুড়োব সঙ্গে আর কয়েক খানি রঙ্গনাট্যও অভিনীত হইয়াছিল। 
তনুধ্যে “মুস্তফী নাহেব কা পাক। তামাস1” বিশেষ উল্লেখযোগ্য । 

দীনবন্ধু বাবুব একমাত্র “কমলেকামিনী” ব্যতীত আর সমস্ত নাঁটক- 
গুলি এইরূপে একে একে ন্তাসান্তাল থিয়েটারে অভিনীত হইয়। যাইলে 
সম্প্রদায় নূতন নাটকেব সন্ধান কবিতে লাগিলেন । সুপ্রসিদ্ধ "অমৃত বাজাব 
পত্রিকা*-সম্পাদক ন্বর্গায় শিশিরকুমাব ঘোষ মহাশয় পুর্ব হইতেই 
্তাসান্তাল থিযেটারেব হিতৈষী ও উৎসাহদাত। ছিলেন। “্নয়েশো রূপেয়া” 
নামক একধানি সামাজিক নাটক তিনি প্রণয়ন করিয়াছিলেন। এই 
না-কখানি অতঃপর ন্তাসান্তাল থিয়েটাবে অভিনীত হয়। 


১৯৩ গিরিশচন্দ্র 


হুই মাসল স্ল্ে ন্াস্ান্যালে। লিক্লিশ্ভ্ত্রে ল্ 
2মাগক্ষান ওও 'ক্রষ্ণকুমাজীঃল্র অভ্ভিনম্স 


“নয়শো রূপেয়া” অভিনয় করিয়া সম্প্রদায় আর একখানি ভাল 
নাটকের জন্য ব্যস্ত হঈয়! পড়িলেন। কিস্ত সেরূপ কোনও নাটক ন৷ 
পাওয়ায়, পুরাতন হইলেও উংকৃষ্ট বোধে তীহাবা মহাকবি মাইকেল 
মধুস্ছদন দত্ত বিবচিত “ক্ৃষণকুমারী” নাটক পুনবভিনয় কর! স্থিব করিলেন। 

পকৃষকুমাবী” নাটকে কে কোন ভূমিকা গ্রহণ করিবেন, সম্প্রদায় 
তাহাব একট। থসড। প্রস্তত কবিলেন। কিন্তু “ভীমসিংহের” ভূমিক1 কে 
গ্রহণ কবিবে? ধাহাদের নাম নির্ব(চিত হইল, তাহ! সর্ববাদীসম্মত হইল 
না। কেহ কেহ বলিলেন, “গিবিশবাবু যদি ভীমসিংহেব ভূমিকা অভিনয় 
করেন, তাহা হইলে স্তাসান্তাল থিয়েটাবে আবাব একটা 9875800) 
উপস্থিত হয়।” এইরূপ নান! তর্কবিতর্কেব পর সম্প্রদায় ইতস্ততঃ কবিয়া 
অবশেষে গিবিশবাবুব বাটী আসিয়া তাহাকে ধবিয়া বদিলেন। পেশাদারী 
থিয়েটাব কবিতে গিবিশচন্দ্রের যে কাবণে আপত্তি, তাহা পুর্বে বণিত 
হইয়াছে । যাঁহাই হউক, শৈশব-বান্ধবগণেধ অন্থুবোধ এড়াইতে না পারিয়! 
সর্বশেষে এই স্থিব হইল, তিনি অবৈতনিক ( ৪77)91601 ) ভাঁবে থিয়েটাৰে 
যোগদান কবিবেন, এবং থিযেটাবের বিজ্ঞাপনে তাহার নাম অপ্রকাশিত 
থাকিবে । সেইরূপ ব্যবস্থাই হইল। ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে 
তিনি স্াসান্তাল থিয়েটারে যোগদান করিলেন। সাধাংণ নাট্যশালার 
প্রতিষ্ঠার দিন হুইতে ছুইমাস কাঁল পর্য্যস্ত গিবিশচন্্র থিয়েটাঁবের সহিত 
কোনও সম্পর্ক বাখেন নাই। 

কষ্চকুমারী নাটকের শিক্ষা গিরিশচন্দ্র অতি যত্বের সহিত প্রদান 
করিয়াছিলেন। কারণ, শোভাবাঁজার রাজবাড়ীতে পূর্ব ইহার একবার 





মাইকেল মধুহুদন দত্ত 
অভিনয় হইয়। গিয়াছিল। বেঙ্গল থিয়েটারের প্রথিতনাম। ম্যানেজার ও 
নট-নাটাকার বিহারীলাল চট্টোপাধ্যায় মহাশয় ইহাতে ভীয়সিংহের 
'ভূমিকাঁভিনয় করিয়াছিশেন। যথাসময়ে কুষ্ণকুমাবীর অভিনয় ঘোষণ! 


১১২ গিরিশচন্দ্র 


কবা হইল। গিরিশচন্দ্র আপনাব নাম প্রকাশে অসম্মত হওয়ায়, কৃষঃ- 
কুমাবী নাটকেব হ্যাগুবিলে এইরূপ লিখিত হইল,_ “ভীমসিংহ-_১ 
015010500151060 4১0860 * ২২শে ফেব্রুয়ারী, ১৮৭৩ খ্রীষ্টাবে 
(বঙ্গা ১২৭৯, ১২ই ফাল্গুন ) শনিবাবে, স্তালান্তাল থিয়েটাবে কৃষ্ণকুমারী 
নাটকের প্রথমাভিনয় হয়। প্রথমাতিনয় রজনীর অভিনেতাগণের নাম £__ 

ভীমসিংহ-_গিবিশচন্ত্র ঘোষ। 

ধলেন্দ্রসিংহ--নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় । 

ধনদাস- _অর্দেন্দুশেখর মুস্তফী। 

সত্যদাস-_-মতিলাল স্ব । 

জগৎমিংহ-_-কিরণচন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায় । 

নাবায়ণ মিশ্র-- গোপালচন্ত্র দাস। 

দূত__শিবচন্ত্র চট্টোপাধ্যায়। 

অহল্যাদেবী-_মহেন্দ্রলাল বসু | 

কুষ্ণকুমারী- শ্রীযুক্ত ক্ষেত্রমোহন গঙ্গোপাধ্যায় । 

বিলাসবতী-_অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় ( বেলবাবু )। 

মদনিকা শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থ। 





্ গিরিশবাবু "অর্ধেন্টু-জীবনীতে" লিখিয়াছেন,__” যখন কৃষ্ণকুমারীর অভিনয় 
হইয়াছিল, তখন আমায় (স্থাসান্তাল থিয়েটারে ) যোগ দিতে হয়। ভীমসিংহের ভুমিকা! 
আমার উপর অপিত হয়। বণিত মতভেদ এই সময় কিছু বিস্তৃত হইয়া বিচ্ছেদের 
আকার ধারণ করে। আমি আমার নাম 4১260 বলিয়া, বিজ্ঞাপতি না হইলে, 
অভিনয় করিতে অসম্মত হই। অর্থলোভী ব্যক্তিরা আমার যোগদানে তাহাদের 
মনোবাঞ্ পূর্ণ হইবে না, এই আশঙ্কায় ওরূপ বিজ্ঞাপন দিতে আপত্তি কমিলেন। 
অর্ধেন্দুকেও সে আপত্তি বুঝাইতে তাহার! সক্ষম হইয়াছিলেন। কিন্তু উক্তরূপ বিজ্ঞাপিত 
ন| হইয়া আমি রল্গমঞ্চে অবতীর্ণ হইতে একাস্ত আপত্তি করায়, "ভীমসিংহ--39 ৪. 
015105015)60 91780601* প্র্যাকার্ডে প্রকাশিত হয়।» 








চতুর্দশ পরিচ্ছেদ ১১৩ 


প্রথমাভিনয় বজনীতে গ্রন্থকাব স্বয়ং মাইকেল মধুন্দন দত্ত মহাশয় 
উপস্থিত ছিলেন। ন্ষেত্রমোহন বাবু বলেন,_-"অভিনয়াস্তে ভিতবে আসিয়া, 
তিনি গিবিশবাবুব নাট্যপ্রতিভাব ভূয়পী প্রশংসা কবেন। নগেন, অর্দেন্দু 
এবং ভুনিবাবুব (শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্্ব ) ও খুব স্ুখ্যান্তি কবিলেন। পবে 
আমাকে দেখিতে পাইয়া, 1রা151)ছল, 02181 900 1)%৮€ 00178 10 
[):০01107+ বলিয়। আমাকে কোলে কবিয়া নাচিয়াছিলেন।” বস্তুতঃ 
“কৃঞ্ণকুমাবী” নাটক সর্বা্গ হুন্দব অভিনীত হইয়াছিল। গিবিশচন্দ্ 
ভামনিংহেব ভূমিকাভিনয়ে অসাধাবণ কল!-নৈপুণ্য প্রদর্শন কবিযাঁছিলেন। 
নবম পবিচ্ছেদে লিখিত হইয়াছে, শোভাবাজাব রাজবাটাতে “কষ্চকুমাবা, 
নাটক প্রথম অভিনীত হইয়াছিল। নাট্যাচাধ্য স্বর্গীয় বিহাবীলাল 
চট্টোপাধ্যায় মহাশয় ইভাতে ভীমনিংহের ভূমিকাভিনয় কবিয়া গৌরবলাভ 
কবিয়াছিলেন; কিন্তু উৎকুষ্টৰপে অভিনীত ভূমিকা যে চিস্তাব 
দ্বাবা উৎকৃষ্ঠতর অভিনীত হইতে পাবে, ভীমমিংহের অভিনয়ে গিবিশচন্তর 
তাহাব দৃষ্টান্ত প্রদর্শন কবিয়াছিলেন। কৃষ্ণকুমাবী নাটকে (৫ম অঙ্গ, 
৩য় গর্ভাঙ্কে ) একমাত্র কন্ত। কৃষ্ণকুমাবীব শোকে উন্মাদগ্রস্ত ভীমসিংহ 
বলিতেছেন, “মানসিংহ- _মানসিংহ- মানসিংহ | ছুঃ- তাকে তো। এখনই 
নষ্ট করবো । আমি এই চল্লেম।* বিহাবীবাবু 'মানসিংহ” নামটা একই 
স্থরে তিনবাব উচ্চাবণ কবিতেন। কিন্তু গিরিশবাবু, প্রথম মানসিংহ 
নামটা একপ ভাবে উচ্চারণ কবিতেন যেন নামটা ক্ষিপ্ত ভীমসিংহেব 
মস্তিফে ছুঃনবপ্েব ছায়াব স্তায় পতিত হইত, দ্বিতীয় মানসিংহেষ উচ্চাবণে 
বোধ হইত, যেন সেই ছায়। কিঞ্চিৎ দীপ্তি পাইয়াছে-_যেন কি তুর্থটন! 
স্মবণ হইতেছে ; তৃতীয়বারে ক্ষিপ্ত বাজাব শ্থৃতিপটে শত্রু মানসিংহ স্পষ্ট 
দাড়াইল ; এই শেষেব মানসিংহ দেখিবামাঞ্জ অসিমোচন পূর্বক ভীমসিংহ 


তাহাকে বধ কবিতে ছুঁটিল। শুনিয়াছি, গিরিশচন্দ্রেব এই তৃতীয়বাবে 
৮ 


১১৭ গিরিশচন্দ্র 


উচ্চারিত মানসিংহেব গম্ভীর গঞ্জনে সন্তুখস্থ কয়েকজন দর্শক বিহ্বল হইয়। 
চেয়ার হইতে পড়িয়া গিয়াছিলেন। তন্মধ্যে একজন মুচ্ছিত হইয়। পড়েন। 
উক্ত গর্ভাঙ্কেই কন্তাশোকাতুব। রাণীকে ভীমসিংহ বলিতেছেন, 
পমহিষী যে? দেখ, তুমি আমাব ব্ৃষ্ণাকে দেখেছ ? কৈ ?” বিহাবীবাবু এই 
ংশ কাদিতে কাঁদিতে অভিনয় কবিতেন। গিবিশবাবুব অভিনয়ে 
ক্রন্দন ছিল ন1; কৃষ্ণকুমারী যেন কোথায় গিয়াছে-_ভীমসিংহ প্রিয় 
ছুহিতাকে খুঁজিতেছেন । গিবিশবাবুব এই পবিবত্তিত অভিনয় বিহাবীবাবুব 
রোদন অপেক্ষা দর্শকগণেব হৃদয়তেদী হইয়াছিল । 

প্রাতঃন্মবণীয়া বাণী ভবানীবৰ বংশধব নাটোবেব রাজ! চন্দ্রনাথ রায় 
বাহাছ্বব এই সময়ে স্তাসান্তাল থিয়েটাবে আফিতেন। তিনি যেরূপ উদাব 
হৃদয় ও মহানুভব- সেইরূপ নাট্যামোদীও ছিলেন। গিরিশ-গুণমুগ্ধ 
চন্দ্রনাথ শ্বহস্তে আপনাব রাজ-পবিচ্ছদে গিবিশচন্ত্রকে ভীমসিংহ সাজাইয়! 
তাহাব তথ্বাবি গিবিশচন্দ্রকে প্রদান কবিয়াছিলেন। 

“বিশ্বকোষে” বাজা চন্দ্রনাথ কর্তক গিবিশবাবুকে সাজাইয়। 
দিবাব উল্লেখ তো নাই-ই, পক্ষান্তবে লিখিত হইয়াছে,__পগিবিশ 
বাবু প্রথম দিন “ভীমপিংহ* অভিনয় কবিরাই বিনা কারণে দলত্যাগ 
কবেন। দ্বিতীয় দিনেব অভিনয়ে অর্দেন্দুবাবু একাই “ভীমসিংহ, এবং 
তাহাব নিজের অংশ 'ধনদাস* অভিনয় কবেন। এই অভিনয়ে এক ব্যক্তি 
দ্বারা যুগপৎ ছুই বিরোধী রস-_-করুণ ও হাম্তবসেব অভিনয় দেখিয়! বাঁজা 
চন্দ্রনাথ মুগ্ধ এবং বিল্মিত হুইয়! অর্ধেন্দুবাবুকে উপহার দিয়াছিলেন।” 
নাট্যাচার্য অমৃতলালবাবু “বিশ্বকোষে” উহা! পাঠ কিয়া আমাকে বিশেষ 
করিয়া ইহাই লিখিতে বলেন যে,__প্রাজ। চন্দ্রনাথ যদি অর্ধেন্দুবাবুকে উপ- 
হার দিয়। থাকেন, তাহ! লুকাইয়! দিয়াছিলেন। কারণ, সে সময়ে সম্প্রদায় 
তাহা জানিতে পারিলে দকলেই দল ছাড়িয়া দিতেন, সে সময়ে তাহাদের 


চতুদ্দিশ পরিচ্ছেদ ১১৫ 


এতটা মনেব তেজ ছিল । গিরিশবাবুকে নিজের গাত্র হইতে পোষাক খুলিয়া 
পবাইয়া দেওয়ায় সকলেই সম্মান বোধ করিয়াছিল মাত্র; এবং সে পবিচ্ছদ 
থিয়েটাবেরই হইয়াছিল । গিবিশবাবু তাহা! নিজেব বাটীতে লইয়া যান 
নাই। প্রথম রাত্রি মাত্র ভীমসিংহের ভূমিক! অভিনয় কৰিয়। গিবিশবাবুব 
চলিয়। যাওয়াব সংবাদও অমূলক | মার্চ মাসে খিঙ্ছেটাব উঠিয়া! যাঁয়, তিনি 
শেষ পর্যাস্ত ছিলেন |” 

সান্ন্যাল-ভবনে ২২শে ফেব্রুয়াবী, “কষ্ণকুমারী নাটকেব 'পথমাভিনয় 
হয়, ৮ই মার্চ উক্ত ভবনে স্তাসান্তালের শেষ অভিনয় হইয়া থিয়েটার বন্ধ 
হইয়া যায়। ইহ! হইতে বুঝা! যাইতেছে, “কৃষ্ণকুমাবা” নাটকাভিনযেব 
পব ন্তাসান্তাল থিয়েটাব সান্্যাল-ভবনে আব পনেব দিন মাত্র ছিল। 
“বিশ্বকোষে” তৎপর লিখিত হইয়্াছে,__“বন্ধ হইবাব কিছু পূর্বে গিরিশবাবু 
বঙ্কিমচন্দ্রেব “কপালকুগুলাঃ নাটকাকাবে পরিবর্তন কবিয়। দেন। উপগ্তাস 
হইতে নাট্যগঠন এই প্রথম । ইহাব অভিনয় হইয়াছিল |” বিশ্বকোষেব 
কণাই যদ্দি সত্য হয়, প্রথম দিন ভীমসিংহ অভিনয় কখিয়াই যদি গিবিশ 
বাবু দলত্যাগ করিয়া যান, তাহ! হইলে পুবায় বিশ্বকোষেব উক্তি 
অন্ুনাবেই আমব৷ জিজ্ঞাসা কবি, অবশিষ্ট এ পনের দিনের মধ্যে গিবিশবাবু 
আবার কবে আসিয়া থিয়েটাবে যোগদান কবিলেন, কৰে “কপালকুগুল/? 
নাটকাকাবে গঠিত করিলেন, কবেই বা! তাহার অভিনয় হুইল? 

“বিশ্বকোষ” হইতে আব একটা মজাব সংবাদ উদ্ধত কবিতেছি। 
বিশ্বকোষে প্লকাশিত হইয়াছে,-“এক মঙ্গলবারে তখনকাব বড়লাট 
সাহেব নিজে থিয়েটাব দেখিতে আসেন। তিনি পুর্বে কোন সংবাদ ন! 
দিয়াই অভিনয়ের প্র।ক্কালে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। একেবাবে দরজায় 
গাড়ী আসিয়। লাগিলে, সকলে জানিতে পারিলেন, বড়লাট সাহেব আসিয়।- 
ছেন।(” বিশ্বকোষ-__রঙ্গালয় ( বঙ্গীয় ) ১৯৪ পৃষ্ঠা । 


১ গিরিশচন্দ্র 

প্রকৃত ঘটন। এই,-২৫ণে সে ক্রুমাপী (১৮৭৩থুঃ) মঙ্গলবাবে মহাবাজা 
বন্ন্রমোভন ঠাকুব, হকাণীন ব্ভন|ট এড নঞ্চভূককে তাতাদেব পাথুবিয়া- 
ঘাট বাজবাটাব অভিন্ন দেখ।ভবাব জন্য এদিন পে মহাপমাবেোহে 
খাজা) পুদাতশ মঞ্চ পুনঃ সংস্কৃত কাতর অভিনয় আযষোজন কবেন। 
বড়লাট খাহাছুন মঙ্গণবাবে পাথুবিয়াঘাটাপ বাঁজবাদীব অভিন্য দেখিতে 
অ।পিখেন, এ সংবাদ হবে কারী হইবা পড়ে । লাট দর্শনে সেদিন চিতপুৰ 
€বাডে খু লোক-নমাগম হইবে, নিমন্ত্রিত বাক্তিগণ বাজব।টাতে গিয়। 
মভিনয় দর্শন কবিবে, কিন্তু অভিনষ দর্শনে একান্ত ইচ্ছা! থাকিলেও 
প্রবেশাধিকার না পাইনা অশিমন্ত্রি তগণে শিলাশ হঠথ। হিবিতে হইবে । 
সে দিন ঘি স্তাসান্তাল থিয়েটাবে একটা পিখ্য অভিনয় ( 51960171 1)৩7- 
(011718100উ ) ঘোষণ| কবা যায়, তাহ। হলে এই হুপ্ধুগে একট। বিক্রয়ের 
সম্তাবন! বুঝিয়। সম্প্রদায উত্ত মঙ্গনবাব তাপণিখে “নীলদর্পণেব অভিনয় 
বিজ্ঞাপি 5 কবেন। ভোডামাকো স্থ “ন্তাসান্তাল থিষেটাব” হইতে অতি অল্প 
দূবেই পাথুবিয়াঘাট। রাজবাটান গান গোড। আলোকমালায় সজ্জিত 
ন্াসান্তাণ থিয়েটার ধর্শনে ভ্রনবশ তত খডলাটেৰ গাডা আসিয়া! থিয়েটাবেব 
সম্মুখে দীডাইয|ছিল। ই্াবা সন্ত্রমলহকাবে পাথবিবাঘাটাব গলি দেখাইয়া 
দিযাছিলেন। এই ঘটনাটুকু অধনম্বন, শিশ্বকোষেব “বঙ্গালয়ত 
প্রবন্ধলেখক তীভাব অপুর্ব কল্পশায় এই আজ্গুবি সংবাদ বাহিব 
কৰনিয়াছিলেন। 

দকৃষ্চকুমাবী” নাটক 'অভিনক হইবান পুর্বে ভাবতথতা বলিয়। 
একখানি নাটিকা স্তাসান্তাণ থিয়েটাবে অভিনীত হইম়। দর্খকগণেৰ নিকট 
অতিএয় সমাদৃত হইয়াছিল । “ভাবতনাত+ সম্বন্ধে নাট্যাচার্যয শ্রীধুক্ত 
অমৃহলাল বস্থু মহাশয় বলেন,_“এই মধ সহবে আব একট।| বিষগেন 
অল্পে অল্পে আদব হচ্ছিল, সেটা স্বদেশ হিতৈবিভা, স্বাধীনতা ইত্যাদি । 


চতুর্দশ পারচ্ছেদ উঠ 


হ্যানান্ঠাণ নপগোপ।লেব হিনুমেলা টেলা উপণক্ষে নবগোপাল ও নমনোনোহন 
বন্থুব বভ্তাদিতে এ মনল কথাব 'আমাচনা হত,তখন হেমপাবুন ভাবত 
সঙ্গীত, নূতন ভবেছে, তখন সতোন্বনাথ ঠাকুবেব “'মণিন মুখচন্দ্রম। ভাত 
তোমাণি' গানটা নৃতণ খচিত ভরেছে। এই সমন্ধে আমা শ্যাণান্তাণ 
গিমেটাপে ভিনিহম!ভাঠ ঝলে একট। ছোট খাট দশ্ঠকাবা দিণ্মে। এই 
ভাপহমা হা আভনঘ বড়গ্‌ শুভ্ষণে আবস্ত ভল্বছিন। জাধাণণে বিদিবটা 
বড 11)601516 বখ্লে। ভাব্মাহার বঃখানা গ্রচনিহ শন ছিগ, 
সেগুনাব আদব এনন থেহড শেন থে,শেনে আমাদের থে দিন ভাবতমাতা 
'আভিনয না ভত, সে পিন দর্শকে? ভুট্টিব ডন্ গ্রাকাডব পাঁরণেসে গাধত- 
সঙ্গীত” বুল পিদ্ভাপন দিতে 551 মহেশ বাবু ভাপতমাহ। নাঁজিতেন। 
এত সুন্দৰ আঁনিণপ্ব কপছিণেন থে, আমতা তাকে মী? খালে 
ড।কৃত্ডেম্‌ |” 

পাননগ্ধ ধুর শীঘদর্প বদি আভিনধেৰ প্‌ ইণুবোপীৰ নাটকের আদণে 
গঠিত বাইকেণেপ কৃপ্কুনাবা শাউথাভিনষে গ্রাসান্ত।লেব বিবেনকণ গোপব 
বুদ্ধ হইবাছিল। বহু সন্্রপ্ত বাক্তি হ্যাণাগ্তঘন গিষেটাপে আসিতেন ও 
সম্্রনন্ সহিত অ.লাশ পাধচদ্ধ করিতেন নাটোবাধিপতি বাজ। 
চন্দ্রনাথ ও স্রখিখা।ত ইতিহাসিক ১। ১৮. ৬৬, 1187০ প্রভৃতি গ্ঠাসান্ত।ন 
সম্প্রদায়েক খিশেষ শুভ্াকাজ্ষা হিলেন। হণ্ট।ব সাতেখ প্রাস্ই 
ইংবাজ দর্শকশণ স্গে লইখ! খিযেটাব দেখিতে আগিতেন। 

্াসান্ত)ল থিষেটাবে প্রায় প্রত্যেক সপ্টা্েই নুতন নাটক অঠিনীত 
হইত। নাটকাভিনয়ের পব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হঙ্গাভিনয় ভইত যথা_-[+৬ 
11110010400 (কুব্জ ৭ দজ্জি), ১1০৫1 ৭০09] 9100 10৯ 17210 
110১1, 1116 8০005501111] 1511)1) বিলাতী বাবু, (01)711141)16 1)151)61- 


50755100110 ১০1950111)00 13১০1 06০1) 1901) 01 2 [01526 


১১৮ গিরিশচন্দ্র 


06906) 10150009007 01105 ০1 7000 8০) পরীস্থান, মুস্তফী 
সাহেবক! পান্ধ। তামাস! ইত্যাদি । 'বিশ্বকোষে লিখিত হইয়াছে, “তখন 
সহবে যে সকল প্রাত্যহিক ঘটন! ঘটিত, তাহা হইতেই অভিনয়ের বিষয় 
নির্বাচিত হইত। ইহাব জন্য পুর্ব হইতে বিশেষ আয়োজন কব! 
হইত না। অনেক বিষয় লিখিয়া লিপিবদ্ধও কর! হইত না। অর্ধেন্দুবাবু, 
অমৃতবাবু গিরিশবাবু, মহেন্দ্রবাবু প্রভৃতি প্রধান প্রধান অভিনেতাব! 
কোন একট! বিষয়ে আপন আপন বক্তব্য স্থিব কবিয়৷ লইয়া! স্টেজে 
বাহিব হইয়া পড়িতেন।” অভিনেতাবা বঞ্চমঞ্চে ঈীড়াইয়া উত্তব 
প্রতত্তব নিজ ইচ্ছামত কবিতেন। বাহাছুরি এই, পরস্পবেব এই উক্তি 
প্রত্বাক্তিতে গল্পটা ঠিক বজায় থাকিত। 

পাঠকগণ জিজ্ঞাসা কবিতে পারেন, প্রতি সপ্তাহে নৃতন নৃতন নাটক 
এবং নৃতন নূতন বঙ্গ-নাট্যাভিনয় কিরূপে হইত? পূর্বের সধবার একাদণী, 
লীলাবতী ও নীলদর্পণ দীর্ঘকাল ধবিয়৷ রিহারন্তাল দেওয়ায় সর্বাঙ্গ- 
সুন্দব অভিনীত হইয়াছিল। কিন্তু সান্ন্যাল-ভবনস্থ স্যাসান্তাল থিয়েটাবে 
এত অগ্ন সময়েব মধ্যে কেমন কবিয়া সম্প্রদায় এরূপ ঘন ঘন নূতন 
নাটক অভিনষ করিতেন ?” ইহাব উত্তব আমব! গিবিশবাবুর কথাতেই 
দিব। তিনি “অর্দেন্দু জীবনীতে” লিখিয়াছেন, “এরূপ বিশ্ময় জন্মিতে 
পাবে, কাবণ পাঠক জানেন ন৷ যে স্তাসান্তাল থিয়েটার হইতে প্রম্টাব 
নামে একজন নেপথ্যে অভিনয্কারী সৃষ্টি হইয়াছে। প্রম্টারের বলেই 
স্াসাগ্ঠাল থিয়েটাবে নূতন নূতন নাটক বুধবাবে ও শনিবার অভিনীত 
হইত | ইহাতে রঙ্গাণয়ের যে ক্ষতি হইয়াছে, তাহা আজও চলিতেছে ।” 

নগেনবাবু, অমৃতবাবু, মহেন্্রবাবু, মতিলাল বাবু প্রভৃতি স্থুগ্রসিদ্ 
অভিনেতাগণ তাহাদের স্থযোগমত প্রম্টারেব কাধ্য করিতেন। তন্মধ্যে 
কিরণ বাবুই সর্বোৎবুষ্ট প্রম্টার ছিলেন। 


চতুর্দশ পরিচ্ছেদ ১১৯ 


স্ল্ঞপ্রদ্ণজজ সত্য আড্রক্ষল্লহ 

প্রত্যেক সপ্তাহে নূতন নাটকের অভিনয়ে ন্যাঁসান্তাল থিয়েটারেব আয় 
বেশ হইত। প্রথম প্রথম যেরূপ অধিক বিক্রয় হইয়াছিল, ক্রমে. তাহা 
কিছু কিছু করিয়া কমিতে থাকে বটে, কিন্তু “কৃষ্ণকুমাবীঞ্জ অভিনয়ে আবার 
বিক্রয় বাড়িয়। যায়। পূর্বেই বলিয়াছি, প্রতি সপ্তাহে শনি ও বুধবারে 
অভিনয় হইত। বাত্রি ৯টা হইতে আরম্ভ করিয়! ১২টা পর্য্স্ত অভিনয় 
চলিত। এত অল্প সময়েব মধ্যে অভিনয় শেষ হইয়! যাওয়ায় প্রথমে 
দুরাগত দর্শকগণ বিবক্ত হইয়া উঠিতেন । ক্রমে তীহাদেব অভ্যাস হইয়া 
গিয়াছিল এবং তাহারা বুঝিয়াছিলেন, থিয্্টারেব অভিনয় তিন ঘণ্টার 
বেশী হয় না। 

সান্ন্যাল-ভবনে টিকিট বিক্রয় কবিয়৷ অভিনয়েব পূর্বে থিয়েটারেব 
খবচ চালাইবাব জন্ত অভিনেতাগণকে চাদ! তুলিতে হইত । চাদ। সব সময়ে 
আদায় হইত না, এ নিমিত্ত অনেক লময়ে তাহাদিগকে বিশেষ ব্যস্ত হইয়| 
পড়িতে হইত। এক্ষণে টিকিট বিক্রয় করিয়া অভিনয় করায় এবং তাহাতে 
বেশ অর্থ সমাগম হওয়ায়, থিয়েটারের খবচ চালাইবার জন্ত আর কোন 
চিন্তা ছিল ন1। নির্ভাবনায় থিয়েটাব চলিয়া যাইতেছে, ইহাতেই তাহাদের 
আনন্দ ছিল। অধিক বিক্রয় দেখিয়া অর্থ গ্রহণে নিমিত্ত কেহ ব্যস্ত 
ছিলেন না। কর্তৃপক্ষীয়েবাও নানা খবচ দেখাইয়া! "কিছু আয় হইতেছে 
না” বলিতেন। অভিনেতাগণ তাহাই বিশ্বান কবিতেন, কেহ কোনরূপ 
আপত্তি ঝুঁরিতেন না। নাট্যামোদেই তাহাবা বিভোব হইয়া থাকিতেন, 
তবে উপস্থিতি আমোদ-আহ্লাদ, পান-ভোজনাদিব জন্ত হঠাৎ কিছু 
প্রয্লোজন হইলে, ছুই চারি টাকা গ্রহণ করিতেন মাত্র । নাটযাচারধ্য শ্রীযুক্ত 
অমৃতলাল বন্ধু প্রভৃতি ছুই একজন থিয়েটার হইতে এক কপর্দাকও গ্রহণ 
করিতেন না। বর্তমান রঙ্গালয়ে অভিনেতারা কোনরূপ দোষ করিলে 


১২০ গিরিশচন্দ্র 


কর্তৃপক্ষীযেবা জবিমানা ( [1706 ) করিয়া তাহাব দণ্ড দিয়া থাকেন। 
তখনকাব দণ্ড ছিল পার্ট না দেওয়!) ইহাব অধিক গুরুতর দণ্ড তাহাদের 
আব কিছু ছিল না। নূতন নাটকে ছই তিনটাব অধিক প্রধ/ন ভূমিকা 
থাকিত না, কিন্তু সে সময় শক্তিমান অভিনেতা অনেক ছিল, কর্তৃপক্ষীয়দেব 
পক্ষপ[তিতায় সব সময়ে যোগ্য লোকে 70৪7 পাইতেন না। ফ্লতঃ 
কর্তৃপক্ষীরগণেব সমদৃষ্টিব অভাবে প্রথমে অভিনেতাগণেব হৃদয়ে অভিমান, 
অভিমান হইতে মনোমালিন্য, মনোমালিম্ত হইতে ঘবোয়া বিবাদেব উৎপত্তি 
ভইল। ক্রমে তাহাব। বুবিতে পাঁখিলেন, ছুই চাখিজন মভিনেতা| রীভিমতই 
টাক] লইয়া! থাকেন, এবং কর্তৃপক্গীয়গণ যে সমস্ত টাক। থিয়েটাব পরি- 
চালনে খবচ হইয়া বাইতেছে বলির। কৈকিয়ৎ দিতেন, ভাভাও সত্য নহে। 
দল ভাঙ্গিবার এইখানেই হুত্রপাত হইল। ধরন্রদাসবাবুব কথা বোধ হয় 
পাঠকগণেব স্মণ আছে-_পিল্প্রদায়কে দমনে বাখিতে একমাত্র গিখিশবাবুই 
পাবিভেনঃ । গিবিশচন্ত্রকে থিয়েটাবে লইয়া আসিবার ইহাও অন্ততম 
কাবণ। ইনি ন্তাসান্তালে যোগদান কবিলে ইহাকে থিয়েটাবের পবিচালন- 
দণ্ড গ্রহণ কবিতে অনুরোধ কব! হয়। কিন্তু তিনি সম্প্রদায়েব আভাত্তবিক 
অবস্থা জ্ঞাত হইয়! তাহাতে অস্বীকৃত হন। পবে তাহাকে, “অমৃতবাজাৰ 
পত্রিকা”-সম্পাদক শিশিব বাবু এবং নগেন্দ্রবাবুব জ্যেষ্ঠ ভ্রাত। দেবেন্দ্রবাবুকে 
থিয়েটাৰ পবিচালনেব নিমিত্ত ডাইবেক্ীব নির্বাচিত কব হইল; ইহাদেব 
তিনজনের নামাস্কিত মোহবযুক্ত হইয়। টিকিট বিক্রয় হইতে আরম্ত 
হইল। কিন্তু তথাপি ভিতবেব গোল মিটিল না। শ্রীবুক্ত কিরণচন্ত্র দত্ত 
মহাশয় 'ন[ট্যমন্দিব মাসিক পত্রিকায় তাহাব সংগৃহীত “বঙ্গীয় নাট্যশালার 
ইতিহাস প্রবন্ধে এই সময়েব ইতিহাস বিস্তৃতভাবে প্রকাশ কবিয়াছেন। 
ধর্মদাসবাবুন লিখিত “নোট; হইতে তিনি উপাদান সংগ্রহ কবিয়াছিলেন । 
এ নিমিত্ত তাহা হইতে কিয়দংশ উদ্ধত করিলাম £-_ 


চহুদ্দশ পরিচ্ছেদ চুহও 


“কিন্ত একপ সুপ্রণালীমন সম্প্রৰায়েব কার্ধ্যাদি চগিলেও নানা 
গোলযোগ উঠিতে লাগিল। একদিণন দেখেন্্রবাবু ধর্মদ/সবাবুকে 
বলিলেন,_-তুশি, নগেন্্র, অ্দন্দু ও অমূত বথেষ্ট পবিশ্রম কব, ভোমর। 
চাবিজনে থিয়েটালেব স্বত্ব ধিকাবা (১) হও, ও অন্থান্য সক্চলে ভোম।দেব 
বেতনভোগী হউক ॥ এ প্রস্তাবে ধর্খ্দাসনবু অসম্মতি প্রকাশ কবি্যি। 
বলিলেন, “কেবল 'আমবাই কেন, অনেবে ই এই সম্প্ররায়েখ উন্নতির ভন্গ 
পরিশ্রম কবেন (২)। আমবা চাখিজনে স্বত্বাধিকাবী হইলে, তাহাদিগেব প্রন্তি 
অবিচাব কৰা হয় । আবও বোধ হয ইভাহে যখেই মনেবিবাদেব কাংণ 
ভইয়] উঠিবে। ধল্মদাস বাঝুব তনুমান সত্যে পব্ণিত হইল । ডাইবেক্টাৰ 
দেবেন্দ্রবাবুব প্রস্তাব ভিতবে ভিতবে কার্য কখিয়। মনোমানিন্ ফুটাইয়া 
তুনিয়া দলমধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাইল। “অর্থমনর্থ্ত এই খষিবাক্যেব সার্থকত। 
সম্পাদিত হইল। হায় রজতথণও্ড! হোমান মাহাত্ম্য চিবদিনই সমান! 
এদিকে ১২৭৯মালেব চৈত্রেব প্রাবস্তেই “কাল খৈশাখীব” জল-ঝডেৰ উৎপাত 
দেখ! দিতে লাগিল। সেই “চটাতপতঞস্থ মঞ্চে সম্্রদায়েব অভিনয়াদি 
চালান অসম্ভব বোধ হইল। সম্প্রদায় তখন গুহে-বাহিবে নানারূপে 
বিপর্ধ্যস্ত হইয়। তখনকাব মত “কাজেব খহম” কবিতে বাশ্য হইলেন ।” 
ন।টামন্দিব, ৩য় বর্ষ, পৌব (৩০২ পৃষ্ঠা )। 

সে বসব ফাল্তুন মাসেব শেষ হইতেই অপবান্ধে বড়বৃষ্টি হইতে আরম্ত 
হয়। সান্নাল-ভবনেৰ উঠানেব উপব সামিয়ান! খাটান ছিল, তাহাতে 
ঝড়বৃষ্টিব ত্েগ রক্ষিত হইল না। দর্শকগণ উঠি পড়ে, ্টেজ ভিন্িয় 


শশী শশী শিশি স্পা শা পু শে 


(৯) নাট্যাচার্য্য শু অমুতল।ল বস্থ বলেন, দে সঙযে স্বহাধিকাগী বনি কান 
এ না, প্রধান পরিচালক মাত্র বল! যাইতে পারিত । 

(২) স্থগ্রসিদ্ধ অভিনেত। মহেন্দ্রলাল বন, অনৃতলাল মুখোপাধ্য।/য় (বেলবাবু ), 
মতিলাল হুর, অবিনাশচন্্র কর প্রভৃতি । 


কথা 


৯১২২ গিরিশচন্দ্র 


যায়। এদিকে সম্প্রদায়ের ভিতরে আত্মকলহ আর বাহিরে প্রকৃতির এই 
অত্যাচাব। সম্প্রদায় থিয়েটাৰ বন্ধ করিতে বাধ্য হইলেন। ১৮৭৩ 
ষ্টার ৮ই মার্চ (সন ১২৭৯) ২৬শে ফাল্গুন) শনিবার স্তাসান্তাল থিয়েটারে 
বুড়ো। শালিকেব ঘাড়ে বৌ, যেমন কর্ম তেমনি ফল এবং বিলাতিবাবু 
প্রভৃতি কয়েকটা ক্ষুদ্র রঙ্জনাট্য শেষ অভিনয় হয়। 
অভিনয় সমাপ্ত হইলে, যবনিকা পতনের পূর্বের স্তাসান্তাল থিয়েটারেব 
বিদাষ গ্রহণ উপলক্ষে অদ্ধেন্দু বাবু একটা বক্তৃতা কবিলেন। সর্বশেষে 
গিরিশবাবু-বিরচিত একটা বিদায়-সঙ্গীত গীত হয়। ন্তাসান্তাল থিয়েটারের 
উক্তিতে গিবিশচন্দ্র গানটা বধিয়। দিয়াছিলেন ।__ 
গীত 

“কাতব অন্তবে আমি চাহি বিদায় । 

ন[ধি ওহে গ্ুধীব্রজ, ভূলোনা আমায় ॥ 

এ সভ। রসিক মিলিত, হেরিয়ে অধানি-চিত, 

আধ পুলকিত, আধ হছুতাশে শুকায় ॥ 

অন্তগামী দিনমণি, েমতি হেরি নলিনী। 

আধ ধনী বিমলিনা, আধ হাসি চায় ॥ 

মমপ্রতি খভুপতি, হয়েছে নিদয় অতি, 

হাসাইছে বন্ুমতা, আমারে কাদায় ॥ 

নিশ্মাইয়। নাট্যালয়, আরম্ভিব অভিনয়, 

পুনঃ যেন দেব! হয়, এ মিনতি পায় ॥” 


এই অল্প সময়ের মধ্যে নাট্যকলা-নৈপুণ। প্রদর্শনে স্তাসান্তাল থিক্েটার 
'নাট্যামোদ্দিগণের এরূপ হদয় আকর্ষণ করিয়াছিল যে উক্ত সকরুণ 
গীতখানি সমাপ্তির সহিত ধীরে ধীরে যখন যবনিক। পতিত হুইল, অনেক 


চতুর্দশ পরিচ্ছেদ ১২৩ 


দর্শকই অশ্রু সংবরণ কবিতে পারেন নাই। সদয় নাট্যান্ুরাগিগণ পরম 
ব্যথিত হইয়া গৃহে প্রত্যাগমন করিয়াছিলেন । 

্তাসান্তাল থিয়েটার স্থাপিত হইবাব পূর্বে কলিকাতার নানাস্থানে বহু 
সখের (2709016 ) থিয়েটাবে বু নাটকাদিব অভিন্টীহয়। যে সকল 
থিয়েটারে অভিনেতার! সাধারণতঃ ভালবপ আবৃত্তি কবিতে 
পাবিতেন, তাহাবাই উৎকৃষ্ট অভিনেতা বলিয়া সকলের নিকট সমাদৃত 
হইতেন। কিন্তু স্তাসান্টাল থিয়েটাবের অভিনেতাগণ যে রসের ভূমিকা 
গ্রহণ করিতেন, ত্বাহাবা কেধলমাত্র আবুত্বির দিকে লক্ষ্য না কবিয়া, 
স্বভাব-সঙ্গত সেই রস ফুটাইবাব চেষ্টা করিতেন; প্রতোক চবিত্রাভিনয়ে 
একটা ছবি দেখাইবাৰ তাহাদেব যত্ব ছিল। প্রবীণ নাট্যাচাধ্য অমুতলাল 
বাবু বলেন, পূর্ববর্তী থিয়েটারেব প্রধান অভিনেতাব! ভাব ও ভঙ্গীহ 
রসাভিনয় কবিতেন বটে, কিন্ত অনেক সময়েই তাহা অন্ুকবণ বোধ হইত, 
ভিতব হইতে যেন বলিতেন না। কিন্তু গিবিশবাবু ও অধন্দুবাবু যাহা! 
বলিতেন, তাহ! যেন ভিতব হইতে বাহির হইত । তাহাবা 66] কবিষ! 
৪০07€ করিতেন এবং সেইবপ শিখাইতেন। ৃ 

বঙ্গনাট্যশালাব সৌভাগ্যবশত:ই যেন সে সময়ে কতকগুলি শক্তিশালী 
যুব একত্র হইয়াছিলেন। গিরিশচন্দ্র ও অদ্েন্দুশেখরেব স্তায় শিক্ষক এবং 
মহেন্দ্রলার্ল* নগেন্দ্রনাথ, অমৃঙলাল, বেলবাবু, মতিলাল স্থুবেব স্তায় অভি- 
নেতাই বা আর কয়জন জন্দিয়াছেন? 

নাট্য)চার্য অমৃতলালবাবু বলেন, ১২৭৯ সাল বঙ্গসাহিত্যসেবীব 
বিশেষ শ্মরণীয় বসব । সেই বৎসবেই ধর্মাচা্য কেশবচন্ত্র সেন- 
সম্পাদিত “মুলত সমাচার+, সাহিত্যাচারধ্য বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যাক্-সম্পাদিত 
'ব্লদর্শন, এবং স্তাসান্তাল থিয়েটাবের অভ্যুদয় হইয়াছিল ।” 





পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ 
সান্যাল শ্রিস্েভোল্ লাম] হন্নে 


সান্যাল-ভখনে শেষ অভিনয় কবিয়! ম্যাপান্তাল ₹ম্প্রাদায় আত্মকলছেন 
ফলে ছুইদলে বিভক্ত হইল। প্রথম দলে নগেন্দরবাবু, ,অদ্ধেন্দুবাবু, 
অমুন্ধবাবু, কিনণবাবু, বেলবাবু, ক্ষেপ্রবাবু, ভোলানাথ কন্সু, বিভাবীলাল 
বন্থ (জাঠ।) প্রতি এবং দ্বিতীয় দলে ধর্মদাসবাবু, মহেন্্রলাল, মতিলাল 
নুর, অবিনাশচদ্দ কব, গোপালচন্ত্র দাস, শিবচন্ত্র ভট্ট।চার্যা, ভিনকড়ি 
মুখোপাধ্যা্র, বাজেন্দ্রলাল পাল ( ইহার খাটাতেই প্রথম লীলাখ হী অভিনয় 
হন) প্রভত যোগ 1দিলেন। নগেন্দ্রবাবু সান্ন্যাল-বাটা হইতে পোষাক- 
পবিচ্ছদ ও তাবমোনিয়াম নিজ বাটীতে আনিয়া বা খণেন। ধর্মনাস বাবুব 
তত্বাবধানে ইেঁজ ছিল, ভিনি তাহা! খুলিয়া শোভাবাজাবে স্তাব বাধাকাস্ত 
দেব বাহাছুবেব নাটমন্দিবে আনয়ন পূর্বক তথায় ছ্েেজ বাধিত্া অভিনয় 
কবিনাব আয়োক্ষন কবিতে লাগিলেন । নগেশ্ত্রথাবুব দল কালী প্রসন্ন মিংহের 
১৪৭ নং বারাণপাঘোষ ্টাটস্থ বাটাব হলঘবে £্েঁজ বাঁধিয়। অভিনয় কবিখাব 
জন্য সচেষ্ট হইলেন । এই সময়ে ধন্মদাসবাবুদেব দলেব এমন একটা 
স্থনোগ ঘটল, বাহানে সাধাবণের দৃষ্টি তাহাদেব উপবই প্রথম আকৃষ্ট 
হইণ। 

পাথুবিরাঁঘাটাষ গঙ্জাব ধাণে দেশীষগণেব চিকিৎসাব নিমিত্ত ঘে “মেয়ো 
হন্পিটাল* আছে, এই চিকিৎসালয় নির্মাণেব নিমিত্ত তৎকালীন বড়লাট 
লর্ড নর্থব্ূক ৩ব! ফেব্রুয়াবী, ইহাব প্রথম ভিত্তি-পরস্তব প্রোথিত কবেন। 
বড় বকমেব বাড়া নিম্মীণেব নিমিত্ত বাজ, মহারাজ।, জমীদাব ও সন্্রাস্ত 


পঞ্চরশ পরিচ্ছেদ ১২৫ 


ধনাঢ্যগণেব নিকট হইতে চাদ! সংগ্রহ ভইতে থাকে । ডাক্তাৰ 
ম্যাকৃনামাবা নামক জনৈক লবপ্রতিষ্ঠ চক্ষ-চিকিৎসকও সে সময়ে উক্ত 
শুভানুষ্ঠ।নে বিশেষ উৎদ্য।গী হইয়। টাদ। সংগ্রহ কবিতেছিলেন । তোবাখানাব 
দেওয়ন সুপ্রপিদ্ধ গিবিশচন্দ্র দাস মহাশয় ম্যাক্নামাধা সাহেবকে বিশেষ 
সাহাব্য কবেন। বাজেন্দ্রলাল পাল ও ধশ্দাস স্ুব উভয়ে তাহাদেব 
ডাইবেক্টার গিরিশচন্দেব সহিত পরামরশ করিয়া উক্ত দেওয়ান মহাশয়েব 
সহত সাক্ষাৎ করেন। তিনি আনন্দেব সহিত ম্যাকৃনামাবা সাহেবেব সাহত 
হহাদেব পাগ্চয় কিয়া দেন। পবম্পবেব কথাবার্তায় এইবপ স্থির হইল, 
ম্যাকনামাা সাহেব টাউনহল ভাড়া লইয়া তথায় তাহাদেব অভিনয়ের 
যাবতীয় খায়ভাব বহন কবিবেন, এবং ইহাবাও সে বাঁত্রর বিক্রয়লব্ধ। সমস্ত 
অর্থ উক্ত হসপিটাল নিন্মাণেব লাহাধ্যার্থে সাহেবকে প্রদান কবিবেন। 
অধিণম্বে নীলদর্পণ অভিনয়োপযোগী কয়েকজন লোক বাহির হইতে সংগ্রহ 
কবিয়া ভাঙ্গা দল স্থগঠিত কৰা হইল । গিরিশচন্দ্রে৭ শিক্ষাদানে এক সপ্তাহের 
মধ্যে সম্প্রদায় আভনয়েব নিমিত্ত প্রস্তুত হইলেন । বল৷ বাল্য) সম্প্র্ায়স্থ 
অনেকেহ যথা- মতিলা'ল স্ব, অবিনাশচন্ত্র কব, মহেন্্রলাল বনু প্রভৃতি 
নীলদর্পণে প্রথমাভিনয় রজনী হইতে তাহাদেব মৌলিক (01712/21 ) 
ভূমিকাভিনয় করিয়! আসিয়াছেন। বাগবাজাবে প্রথম যে সময়ে নাল- 
দর্পণেব বিহবাবন্ত।ল বসে, সেই সময়েই গিবিশচন্দ্রেব উড সাহেবেব ভূমিক৷ 
ছিল, স্থতবাং ইহাও তাহাব পক্ষে নুতন ছিল না। কেবল সৈরিন্ধীর 
ভূমিক। €যাহা নাট্যাচাধ্য অমৃতলাল বস্ত্র মহাশয় অভিনয় কবিতেন ), 
রাধামাধববাবুব ভ্রাতা বাধাগোবিন্দ কব ( পবে স্থপ্রসিদ্ধ ডাক্তাব আব, জি, 
কব) গ্রহণ করিয়াছিলেন । ২৯শে মার্চ, শনিবাব তাবিখে মহাসমাবোহে 
নানাবিধ আলোক ও পুষ্পমালায় সজ্জিত টাউনহলে নীলদর্পণেব অভিনয় হয়। 

থিয়েটাবে সাহায্য রজনীর (86761070180) এই প্রথম হুত্রপাত। 


১২৬ গিরিশচন্দ্র 


টাউনহলেব স্তায় বুহৎ হলে দেশীয়গণ কর্তৃক নাট্যাভিনয় এই প্রথম। 
দর্শক সমাগমে টাউনহলের ন্তায় সুবৃহৎ হলে তিলার্দ স্থান ছিল না । 
গিরিশচন্দ্র অ্ধ প্রথম উড সাহেবের ভূমিক1 লইয়! বঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হইবেন, 
হ্যাণ্ডবিল এবং সম্প্রদায়েব মুখে মুখে এ সংবাদ বনু বিস্তৃত হইয়া পড়ায় 
নাট্যামোদিগণেবও যথেষ্ট সমাগম হইয়াছিল। সেদিনের অভিনয় বড়ই 
মর্মস্পর্ণী হইয়াছিল । দর্শকগণেব কখনও ক্রোধবাঞ্জক চীৎকাব, কখনও ব1 
উল্লামজনক কবতালি-ধ্বনিতে টাউনহল ক্ষণে ক্ষণে মুখরিত হইয়া উঠিয়্াছিল। 
গিরিশচন্দ্রেব উডসাহেবেব ভূমিকাভিনয়ে চবিভ্রোপযোগী হাব-ভাব, আদ্দব- 
কায়দ৷ এবং প্রবেশ-প্রস্থানে--এরূপ একটী জীবস্ত ভাব ফুটিয়। উঠিয়াছিল 
যে কাহারও কাহারও সন্দেহ হইয়াছিল, বুঝি বা ম্যাক্নামাবা সাহেবের 
চেষ্টায় কোনও বাললা-জান৷ সাহেব আজিকাব অভিনয়ে যোগদান 
করিয়াছে । অবিনাশচন্ত্র কব “বোগ সাহেবেব» এবং মতিলাল সুর 
£তোবাপের+ ভূমিকাভিনয়ে পূর্ব্ব হইতেই অদ্ভুত কৃতিত্ব প্রদর্শন করিয়া 
আসিয়াছেন, _অগ্ভকাব অভিনয়ে আবও একটু নৃতনত্ব হইয়াছিল। যে 
দৃস্তে অত্যাচাব-পীড়িত তোবাপ আত্মহাবা হইয়৷ বোগ সাহেবকে আক্রমণ 
করে, সে দৃশ্তে অবিনাশবাবু ও মতিলালবাবু উভয়েই এপ অভাবনীয় 
অভিনয় কবিয়াছিলেন যে দর্শকগণ অভিনয়েব কথ। ভুলিয়া গিয়৷ যেন 
সত্যঘটন। প্রত্যক্ষ কবিতেছেন বোধে__ক্রোধে উন্মত্ত হইয়া উঠিম়্াছিলেন। 
এমন কি একজন দর্শক * আত্মহারা হইয়া লন্ফ প্রদানে বঙ্গ মঞ্চে উঠিয়া 
তোরাপের সহিত যোগদান করিয়া রোগ সাহেবকে প্রহাব করিন্যে কবিতে 
মুচ্ছিত হইয়৷ পড়িয়াছিলেন। রাধাগোবিন্দ বাবু সৈবিন্ধীব ভূমিকাভিনয়ে 
বিশেষরূপ কৃতিত্ব দেখাইয়াছিলেন । ৩১শে মার্চ তারিখেব ইংলিসম্যানে 
অভিনয়ের সমালোচনা বাহির হয় ৮1176 [50155 [61107109170 


স্বগীয দ্বীনদয়াল বন্ধ । ইনি স্থবিখ্যাত ব্যারিষ্টার উদ্রোফ সাহেবের বাবু ছিলেন। 


পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ ১২৭ 


2৮ 0)6710%/0 17911.--07 9851057 0151)6 016 1061000615 
01 0)6 0210016. 80100591 16206 061001006ণ 2 005 2007) 
[791] 606 0197 ০01 “বা! 10210217510: 075 06706? 01 
076 18656 170501021, [6 15 2. 57691 016) (080 ৪০ 91১07 
00006 85 51561, 259 07) 01180 209001)10) 67 [6৬ [070- 
ঢ52705 /616 [0165606, 1710/661) [106 1901553 0)0516160 
৮০1 90:010517 ০0৮. 0)6 09009851009 2170. 66১1560 7 11627 
6062660 [01800165 1১0 10001) (16 €10]0960 (108 [)61601- 
17)91706,1106 200106৮7825 83066021819 £০০0 (10100511091, 
ড/5 10706 1006 11509560760 111 5156 21)011)61 79671011721006 
51101017,৮1502119101021১ 110102.99 2156 12101), 1825, 

সে দ্দিন এগার শত টাকাব টিকিট বিক্রয় হইয়াছিল। চারিশত টাকা 
খবচ বাদে ম্যাক্নামাবা সাহেব সাত শত টাক! প্রাপ্ত হন। 

৪0৮০ 11090119] এব সাহায্য-বজনীতে অসম্ভব বিক্রয় দেখিয়া 
«]1)0181 [501) 8,59901511017%এর সভ্যগণ তাহাদের? 0%02116515 
980০৮ এর সাহাষ্যার্থ জন্প্রদায়কে বিশেষ অন্ুবোধ কবেন। 
নবোৎসাহে সম্প্রদায় পর সপ্তাহেই পুনরায় টাউন হল ভাড়া লইয়া “সধবার 
একাদশী” এবং “ভারতমাতা” অভিনয় করেন। 

নগেন্দ্রবাবু, অর্ধেন্দুবাবু প্রভৃতি ভিন্ন সম্প্রদায়স্থ টাউনহলে এ বিক্রয়াধিক্য 
দেখিয়া, তৃটহারাও লিগুসে স্্রটে “অপেরা হাউস ভাড়া লইয়া নিজ 
সম্প্রদায়ের “হিন্দু স্তাসান্তাল থিয়েটার নামকরণ পূর্বক মাইকেলেব শির্িষ্ঠাঃ 
নাটক ও অন্তান্ত রঙ্গাভিনয় এবং অখিলবাবুর ব্যায়াম-ক্রীড়া প্রদর্শনেব 
বিজ্ঞাপন ঘোষণা কবেন। 

্তাসান্তাল ও হিন্দন্তাসান্ভাল থিয়েটার একই দিনে অভিনয় ঘোষণা 


১২৮ গিরিশচজ্দ্র 


কবায় পুর্ব সপ্তান্েব স্থায় ন্যাসান্তাল থিয়েটাবে বিক্রয় হয় নাই, তথাপি 
পবিশচন্দেব এনিমাদ ভূমিক। অভিনয় দশনেব নিথিত্ত বছুদর্শকের 
সমাগম হওয়ায় মোট 'আট এত টাক] বিক্রয় হইয়াছিল। প্রতভোক 
অভিনে তাই সুখা।ভিব সহিত অভিনন্ধ করিপ্াছিলেন। নাট্যাচাধ্য অমৃভ- 
লাল বাবু বলেন, পবা! চন্দ্রমাথ বাহাছুবেব ইচ্ছায় আমবা পন্সিষ্টা নাটক 
অভিনষ কথ্য়াছিলীম। ত'ডাতাড়ি অভিনয়ে নিমিত্ত প্রস্তত হওয়ায় 
হিন্দ ন্ানাগ্তালে আমাদের অভিনপনও মনোনীত হয় নাই এবং বিক্রয়ও 
স্থবিধংজনক হম্প নাই ৮ 
বাহাই হউক স্তাসাগ্তাণ সম্প্রদার টাউনহলে ছুইবাত্রি অভিনয় করিয়া 
পুনবায় বাধাকান্ত দেবেব নাটমন্দিবে ব্্গমঞ্চ বাধিতে আবন্ত করিল। 
কঞ্চকুমাবী নাটক সর্ধবপ্রথমে শোহাবাজাব বাজবাঁটাতে অভিনয্ হয়, পৰে 
নান্যাল-ভখনে ইহাব পুনবভিনয় বুন্াস্ত পাঠকগণ জ্ঞাত আছেন । শোভা- 
ব'জাব বাবাটাব কুমারগণেধ বিশেষ আগ্রহে আবাব কৃঞ্চকুমাধী নাটক 
লইয়া স্তাসান্ঠাল থিয়েটাপ এখানকার প্রথম অভিনয় ঘোষণা কবিলেন্ন ৷ অভি- 
নয় সর্বজন সমাদৃত হইয়াছিল। গিবিশবাবুব দ্বিতীয়বাব ভীমসিংহের ভূমিকা- 
ভিনয় দশনে এবং তাহার নাট্য-প্রভিভব ফম্যক পবিচয় পাইয়া মকলেই মুগ্ধ 
হইয়াছিলেন। বাণী অহল্যাবাঈয়েব ভূনিকাভিনয়ে মহেন্ত্রলাল বসু যথেষ্ট 
গুণপনা দেখা ইয়াছিলেন। গিবিশবাবু “মহেন্দ্লাল বন্থু* প্রবন্ধে লিখিয়াছেন, 
*শোভাবাজাব বাজবাটীন্তে প্রথম কুমাব অমবন্ভ্্েকুষ্জ দেব বাহাছুব, 
কৃষ্ণকুমারীর ভূমিকাভিনয় কবিয়াছিলেন, তিনি মহেন্্রবাবুব্*অতি হুন্দর 
অভিনয় দর্শনে ঈর্ষ। ভুলিয়া তাহাব ভূয়সী প্রশংদ। ববেন।” 
প্ঠাসান্তাল থিয়েটাব” নাটমন্দিপে সুপ্রতিষ্ঠিত হইতে দেখিয়া! হিন্দু 
স্তাসান্তাল সম্প্রদায় ঢাকায় অভিনয়ার্থে গমন ববধিলেন। ঢাবায় গিয়। 
ইহাদের বেশ সুবিধা হইয়াছিল। *পূর্বববঙ্গ-রঙ্গভূমি” নামে ঢাকায় একটা 


পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ ১২৯ 


খ্িয়েটার ছিল; নাট্যকার দীনবন্ধবাবুর উদ্ভোগে তথায় একটা রঙ্গমঞ্চ নির্মিত 
হইয়! প্রথম নীলদর্পণ নাটক অভিনীত হয় । নীলদর্পণ নাটক যখন তিনি 
প্রণয়ন করেন, গন্র্ণমেণ্টের চাকুরীতে সে সময় তিনি ঢাকাতেই 
থাকিতেন। ঢাকাবাসী ষুবকগণ মাঝে মাঝে সেই রঙ্গষমঞ্চে অভিনয় 
করিতেন। হিন্দু স্তালাক্তাল থিয়েটার সম্প্রদায় ঢাকায় গিয়া তথাকার 
নুপ্রসিন্ধ মোহিনীমোহুন দাস মহাশয়ের সহায়তায় সেই রঙ্গমঞ্চ সংগ্রহ 
করেন, এবং আবম্তককমত 519৪8৩টি নুসংস্কৃত করিয়া অভিনয় আরম্ভ 
করেন। 

কলিকাতায় কৃষ্ণকুমারী নাটকাভিনয়ের পর ন্তাসান্তাল থিয়েটারে 
“কপালকুণ্ুলা» অভিনীত হয়। অভিনয় রাত্রে কোন কারণে কপালকুগডলার 
খাতাখানি হারাইয়। যায়। এদিকে অভিনয় দর্শনার্থ শত শত দর্শক আসিয়া 
উপস্থিত হইয়াছে । সম্প্রদায়ের মধ্যে ছুলগ্ুল পড়িয়। গেল, না জানি আজ 
কি একটা কেলেঙ্কারী হইবে । শক্র হাসিবে, স্তাসান্তালের স্ুনায় 
আজই ডুবিয়া যাইবে ! দর্শকগণ এখনই হৈ হৈ করিয়া .টিটকারী দিতে 
থাকিবে। 

মহেন্দ্রলাল বনু, ধর্মদাসবাবু এবং মতিলাল সুর প্রভৃতি প্রধান প্রধান 
অভিনেতার! আসিয়া তাহাদের সম্প্রদায়ের ডাইরেক্টার গিরিশবাবুকে 
বলিলেন, “মহাশয়, যাহা! হউক একটা উপায় করুন।” গিরিশবাবু 
ইতিমধোই্‌ রাজবাটার লাইব্রেরী হইতে বষ্কিমচন্দ্রের কপালকুগুলা পুস্তক 
সংগ্রহের জন্ত লোক পাঠাইয়্াছিলেন। এমন সময় পুস্তক আসিঙ়৷ 
পৌছিল। পুস্তক পাইবামাত্র গিরিশবাবু হর্ষোৎফুল্ল হইয়া বলিয়া উঠিলেন, 
«কোনও ভয় নাই, আমি [7০770 করিয়! যাইতেছি, তোমরা রঙজমঞ্চে 
বাহির হও ।” তাহাই হইল, নিবিবন্বে কপালকুগুলা অভিনীত হুইল, 
দর্শকগণ ভিতরের বিভ্রাট কিছুই উপলব্ধি করিতে পারিল না। একমাত্র 


১৩০ গিরিশচন্দ্র 


উপন্তাস ও প্রোগ্র্যাম অবলম্বনে সগ্ধ সন্ত নাটকের দৃষ্ভ ও চরিত্রাবলীর 
সর্বাদিকে সামঞ্ন্ত রক্ষা করিয়! [70119 করিয়া! যাওয়। সাধাবণ শক্তির 
কার্য নহে, তাহা একমাত্র গিবিশবাবুতেই সম্ভব ছিল। 

ঢাকায় হিন্দু স্তাসান্তাল থিয়েটাবের অভিনয় খুব জমিয়াছিল। তথায় 
সম্প্রদায়ের বিশেষ সুযশ এবং অর্থলাভেব সংবাদ কলিকাতায় 
আসিয়া! পৌছিলে, ন্তাসান্তাল থিয়েটার সম্প্রদায় চঞ্চল হইয়া উঠিলেন। 
রাজেন্দ্রলালবাবু, ধর্ম্াসবাবু প্রভৃতি সম্প্রদায়স্থ সকলেই ঢাকা! যাইতে 
মনস্থ করিলেন। শোভাবাজার রাজবাটাব নাট্যমন্দিবে ১*ই মে, 
শনিবাব, কপালকুগ্ডল! ও ভারতসঙ্গীত শেষ অভিনয় কবিয়া, গিবিশবাবু 
ব্যতীত থিয়েটাবেব আর সকলেই ঢাক যাত্রা কবিলেন। গিবিশবাবু 
সে সময়ে জন আ্যাটুকিনসন অফিসের বুককিপার ছিলেন। “অর্ধেন্দু- 
জীবনীতে” তিনি লিখিয়াছেন,__“একদলে অর্ধেন্দু আর এক দলে আমার 
থাক না! থাক। সমান, কাবণ নান। স্থানে বেড়াইবাব আমাব শক্তি, স্থযোগ 
ও ইচ্ছা ছিল না । ৬বাজেন্দ্রলাল নিয়োগী দ্বিতীয় দলের প্রকৃত পবিচালক, 
শ্রীযুক্ত ধর্ম্মদাস স্থুব সেই দলে ছিলেন ।” 

যাহাই হউক কলিকাতা হইতে প্ল্যাকার্ড ও হ্াগুবিল ছাপাইয়া লইয়! 
মহাসমাবোহে ও বিপুল উদ্যমে স্যাসান্তাল থিয়েটাব ঢাকায় গিয়। প্রথমেই 
সহবময় বিজ্ঞাপন প্রচারিত কবিলেন,_-”110 ঠ9108106 ন50০05] 
76515 &10550৮ অর্থাৎ কলিকাতা হইতে প্রথমে ফে, থিয়েটার 
ঢাকায় আসিয়া অভিনয় কবিতেছে, সে থিয়েটার হ্থবিখ্যাত স্তাসান্তাল 
থিয়েটাব নহে,-_প্রকৃত ন্তাসান।ল থিয়েটাব এইবার আমিল। যত শীন্ 
সম্ভব, ্টেজ বাঁধিয়া! ও থিয়েটাব সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের ব্যবস্থ। করিয়া 
ন্টাসান্তাল সম্প্রদায় অভিনয় ঘোষণ। করিলেন। 

প্রথম ছুই এক রাত্রি যথেষ্ট বিক্রয় হইলেও ক্রমশঃ স্াসান্তালের বিক্রয় 


পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ ১৩১ 


হাস পাইতে লাগিল। হিন্দু স্তাসান্তাল সম্প্রদায় পূর্ব হইতে আসিয়াই 
নীলদর্পণ, সধবার একাদশী, ক্কষ্চকুমারী, নবীন তপন্থিনী প্রভৃতি . উৎকৃষ্ট 
নাটক ও প্রহসনার্দি অভিনয়ে বিশেষনপ প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছিলেন । 
কিন্তু স্তাসান্ঠাল থিয়েটার আসিয়া ইহার উপর আব কিছু একট! নুতনত্ব 
দেখাইতে পাবিলেন না । গিরিশবাবু আসিলে হয় তো! তিনি অভিনয়- 
চাতুর্য্যে পুবাতন নাটকেও নব সৌন্দর্য ফুটাইয়৷ দর্শক আকর্ষণ কবিতে 
পাবিতেন কিম্বা এই সম্কটাবস্থায় নূতন কোনও একটা উপায় উদ্ভাবন 
করিতেন। ফলতঃ প্রতিভাশালী পরিচালক অভাবে দিন দিন ইহার। 
ক্ষতিগ্রস্ত হইতে লাগিলেন । অবশেষে হিন্দু স্তাসান্াল সম্প্রদায়েব নিকট 
ছ্েঁজ বাধা রাখিয়া তথাকার খণ পরিশোধ পূর্বক কলিকাতায় ফিরিয়। 
আসেন । হিন্দু ্তাসান্তাল থিয়েটাব সম্প্রদায়ও ক্রমশঃ আয় কম হইতে 
থাকায় অল্পদিন পবেই ঢাকা হইতে কলিকাতা প্রত্যাগমন করেন । 
কলিকাতায় আসিয়া উভয় সম্প্রদায়ই কিছু দিন নীরব থাকেন। 
এই সময়ে দিঘাপতিয়াব রাজ! প্রমদানাথ রায় বাহাছরেব অন্নপ্রাশন 
উপলক্ষে তদীয় পিতৃদেব প্রমথনাথ রায় বাহাছ্বব কলিকাতা হইতে 
হ্যানান্তাল থিয়েটাবকে অভিনয়ার্থে নিষুস্ত করিবার জন্ত তিনি তাহার 
কলিকাতাস্থ আমমোক্তার ঈশ্ববচন্দ্র বন্থু মহাশয়কে অনুজ্ঞ পাঠান । 
ঈশ্বরবাবু অনুসন্ধানে জ্ঞাত হইলেন, সান্ন্যাল ভবনস্থ স্তাসান্তাল থিয়েটাব 
এক্ষণে ছুইট, দলে বিভক্ত হইয়া গিয়াছে। উপস্থিত তিনি বায়না সম্বন্ধে 
কোন্‌ দলেব সহিত কথাবার্তা কহিবেন__বড়ই সঙ্কটে পড়িলেন! তাহারই 
অন্থুরোধে উভয় সম্প্রদায়ের সমবেত অভিনয়ের ব্যবস্থা হয়; এই স্কুত্রে 
কাধ্যতঃ ছই দল এক হইয়া যায়। পারিশ্রমিক লইয়! অর্থাৎ বায়ন। 
গ্রহণ করিয়া কাহারও বাটীতে অভিনয় এই প্রথম। গিরিশবাবু, ' অমৃত- 
বাবু এবং নগেন্দ্রনাথ ও কির্ণচন্র শ্রাতৃত্বয় ব্যতীত সকলেই দিশ্াপতিসস 


১৩২ গিরশচক্র 


গিয়াছিলেন। বাজবাটীতে চাবি রাত্রি অভিনয় হয়। দ্িঘাপতিম্া হইতে 
কিবিবাব সময় স্যাসান্তাল সম্প্রদায় রামপুব 'বায়ালিয়া ও বহরষপুরে অভিনয় 
কবিয়া কলিকাতায় আসেন। কিছু দিন পরে আর একবার তাহার! 
বন্ধমান ও চু'চুড়ায় গিয়। কয়েক রাত্রি অভিনয় কবিয়৷ আসিয়াছিলেন। 
ইহাই শেষ 'মভিনয়। 


যোড়শ পরিচ্ছেদ 


আ্যাউন্কিনস্ন্ন ক্ষাম্পান্দীল্র অক্রি এরলহ 
চ্বিস্লেসল জুইস্সেল্স সহিত হবন্িউভ্ডা 


ন্/ানান্াল থিয়েটারঃ প্রতিষ্ঠিত হইবার বছ পূর্ধ হইতে কলিকাতায় 
ইংবাজদেব ছুইটী মাত্র সাধাবণ থিয়েটার ছিল। ১মটী চৌরাঙ্গিতে 
অবস্থিত 'থিয়েটাব বয়েল+$ ২য়টী লিগুসে ট্ট্রাটে অবস্থিত-__-“অপেরা 
হাউস, | মিসেস লুইস নামে জনৈক আমেবিকা-নিবাসী মহিল1 ব্পুর্বব 
হইতে “থিয়েটাব বয়েল” ভাড়া লইয়া অভিনয় করিতেছিলেন্‌) তীহ্াব 
নামান্নাবে লুহস থিয়েটার রয়েল (1,6৬/1১/5 11162615 1০951) 
নামে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হইত । সাধাবণে লুইস থিয়েটাব বলিত। 
নাট্যাচার্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্তু মহাশয় বলেন,_পনুলতানা৷ নামক 
জনৈক আমেবিকাবাসী বেষ্টিষ্ক ফ্রাটের মোড়ে থাকিতেন, তিনি “ময়দান 
প্যাভেলিয়ান* নাম দিয়া এই থিয়েটার প্রস্তুত করিয়়াছিলেন। মিসেস 


ষোড়শ পরিচ্ছেদ ১৩৩ 


লুইস (1119, 0. 3, /, [.5%15 ) তাঁহার নিকট ভাড়া! লইয়াছিলেন। 
রাজপুরুষগণেব রঙ্জালয়ে আগমনের জন্ত এই থিয়ে্টাবের নাম “থিয়েটার 
বয়েল” হইয়াছিল। 

গিবিশচন্ত্র মিসেস লুইসেব সহিত বহুপূর্ব হইতেই শ্তুপবিচিত ছিলেন 
এবং তীহাব থিয়েটাবে প্রায়ই যাতায়াত করিতেন। কিরূপে এই পবিচয় 
হইল, এবং এই পরিচয় ক্রমে কিরীপে ঘনিষ্টতাঁয় পবিণত হইয়াছিল, 
তাহাব কথা এইবাব বলা প্রয়োজন । কারণ এই ঘনিতাই গিরিশচন্ত্রের 
নাট প্রতিভা-্ফ,বণে বিশেষ সহায়ত কবিয়াছিল। 

পাঠকগণ অবগত আছেন, গিবিশচন্ত্র গ্রথমে 'আ্যাুকিনসন টিলটন 
কোম্পানী অফিসে শিক্ষানবীশরূপে বাহির হন। তখন তাহার বয়স 
কুড়ি বব মাত্র। তথায় বেতনভোগী হুইয়৷ পবে ইনি “আরজেন্টি 
সিনিজি কোম্পানী” অফিসের সহুকাবী বুককিপার হইয়া যান। কিছুকাল 
পৰে আ্যাটুকিনসন সাহেব 'আ্যাট্ুকিনসন টিলটন এও কোম্পানী, অফিস 
হইতে বাহির হইয়া নিজে “জন্‌ আযাটুকিনসন এও কোম্পানী নামে একটা 
নূতন অফিলি খোলেন এবং নবীনবাবুকে তাহা অফিসে যাইবার জন্ 
অনুরোধ করেন; কিন্তু তিনি না যাইয়৷ পুত্র ব্রজবাবু ও জামাতা 
গিরিশবাবুকে নৃতন অফিসে পাঠাইয়৷ দেন। তথায় ব্রজবাবু বুককিপার 
এবং গিবিশবাবু তাহার সহকারী নিধুক্ত হন (১৮৬৭ খৃঃ)। ব্রজবাবু 
গিবিশবাবু অপেক্ষা! বয়োজোষ্ঠ ছিলেন এবং তাহাব পূর্বব হইতেই অফিসে 
বাহিব হইতেছিলেন। ব্রজবাবুর পর গিরিশবাবু প্রধান বুককিপাব হন। 
এই অফিসে তিনি প্রায় আট বৎসর কার্যা কবিয়াছিলেন। 

আ্যাটুকিনসন সাহেব আমেরিকনিবাসী ছিলেন, মিসেস লুইসও 
তদ্দেশবাসিনী ছিলেন এবং ইহীর্দের পবস্পবেব মধ্যে বিশেষ বন্ধুত্ব ছিল। 
মিসেস লুইস প্রত্যহই একবার করিয়া অফিমে আ]াটুকিনসন সাহেবের সহিত 


১৩৪ গিরিশচন্দ্র 


দেখা করিতে আসিতেন । উক্ত অফিসে টাকাকড়ির লেন দেন” সম্বন্ধ 
থাকায় এবং গিরিশবাবু অফিসের হিসাবরক্ষকের কার্য্যে ব্রতী থাকায় 
তাহার সহিত লুইসের পরিচয় হয়। ক্রমে উভয়ের মধ্যে এতটা ঘনিষ্ঠত। 
জন্মে যে, লুইসেব নিজন্ব হিসাবপত্র সমস্তই গিবিশচন্দ্রের নিকট থাঁকিত। 

মিসেস লুইস নুবিখ্যাত। অভিনেত্রী ছিলেন। বনুসংখ্যক বিল।তী সাহেব 
ও এতন্দেশীয় সুশিক্ষিত ও ধনাঢ্য বু দর্শক সমাগমে তাহার থিয়েটারের 
আয়ও যথেষ্ট ছিল। অভিনয়-নৈপুণ্য এবং সৌজনো তীহার সে লময়ে 
এরূপ সম্মান ও প্রতিপত্তি হইয়াছিল যে তৎকালীন মন্ত্াত্ত ইউবোপিয়ান- 
গণেব সভাসমিতি হইতে ড1০67181 7৪70তে পর্য্যন্ত তিনি সাদরে 
নিমন্ত্রিতা হইতেন। 

লুইস থিয়েটারে কোন নাটক অভিনীত হইলে সে নাটকেব এবং 
অভিনেতৃগণেব অভিনয়েব দোষগুণ সম্বন্ধে গিরিশচ্ত্র তাহার স্বাধীন মত 
প্রকাশ কবিতেন। মিসেস লুইস সওদাগরি অফিসেব গঁনৈক হিসাববক্ষক 
যুবকেব মুখে একজন প্রতিভাবান কলাকৌশলীর স্তায় সমালোচনা শুনি! 
বিশ্মিত ও মুগ্ধ হইতেন। দিন দিন তিনি তাহাকে এত ন্পেহ কবিতে 
লাগিলেন যে, অফিসের ছুটী হইলে, গিবিণচন্দ্রকে তাহাব পার্থে বসাইয়া 
ফিটনে চড়িয়! হাওয়া খাইতে যাইতেন। প্রতিভাশালিনী প্রো অভিনেত্রী 
মিসেস লুইসেব সহিত নানারূপ বিদেশীয় নাটক ও অভিনয় সমালোচনায় 
এবং সেই সঙ্গে প্রায়ই অভিনিবেশ লহ লুইস থিয়েটাবের অভিনয় দর্শনে 
গিরিশচন্ত্রের নাট! প্রতিভা ক্রমণঃ ক্কবিত হইতে থাকে । সেই প্রতিভাব 
প্রথম বিকাণ-_ স্বীয় পল্লীতে 'দধবার একাদণী নাটকে 'নিমাদেরঃ 
তুমিকাভিনয়ে ( ১৮৬৯ খুঃ)। 

গিবিশচন্ত্র যে যে স্থানে কর্ম করিয়াছিলেন, সেই সেই স্থানেই সাহেবে 
্রিয়পাত্র হয়াছিলেন। কর্মস্থলে প্রভৃব হিতের প্রতি তীহাব বিশেষ 


ষোড়শ পরিচ্ছেদ ১৩৫ 


ক্ষ্য ছিল। এইজস্ত আযাটকিনসন সাহেব তাহাকে পুত্রবৎ ভ্েহ করিতেন। 
অফিস প্রসঙ্গে গিরিশচন্দ্র একদিন একটী ঘটনার কথা৷ বলিয়াছিলেন-_ 
“আমি তখন আযাটুকিনসন সাহেবের অফিসে কাজ করি। ইহাদের 
নীলের কাজ ছিল। একদিন অফিসেব ছাদে নীল শুকাইতে দেওয়া 
হয়। বৃষ্টিব কোনও সম্ভাবন। নাই বুঝিয়৷ নীল গুদামে তোল! হয় নাই। 
রাঞ্রে দেখি, ভয়ানক মেঘ দেখা দিয়াছে । আমার তখনই মনে হইল, 
অফিসেব ছাদে নীল পড়িয়া আছে, বৃষ্টি হইলে বিস্তর টাকা ক্ষতি হইবে। 
তাড়াতাড়ি একথা।ন গাড়ী ভাড়া কবিয়া অফিসে গেলাম । দারোয়ানদের 
জাগাইয়। দ্বিগুণ মন্তুবী দিয়া কুলী সংগ্রহ কবিলাম, পবে নীল গুদামে 
তুলাইয়! বাড়ী ফিরিয়া আমিলাম। পবদিন অফিসে গিয়। শুনিলাম, আমি 
চলিয়। আসিবার পর আ্যাটুকিনসন লাহেব নীল রক্ষার জন্ত ব্যস্ত হইয়! 
অফিসে গিয়াছিলেন। দবোয়ানেব মুখে আমাব নীল তোলার কথ! শুনিয়া 
তিনি নিশ্চিন্ত হইয়। বাটা যান। বড় সাহেবের আদেশমত আমি কুলীদের 
মজুবীর বিল দাখিল কবিলাম । অফিসেব ছোট সাহেব এবং অংশীদার__ 
নাম ব্যান্ক্রপ্ট, বড় সঙ্জন ছিলেন না-_তিনি বলিলেন, “মজুরী অত্য্ত 
অধিক চার্জ কর! হইয়াছে ।* আ্যাটুকিনসন সাহেব বলিলেন--“বল কি? 
একে বাত্রি কাল, অফিস অঞ্চল একরূপ জনশুন্ত, অকালে মেঘের 
আড়নম্বর, এ অবস্থায় লোক সংগ্রহ কঠিন,দর কসাকমি করিবাব তখন 
অবস্থাই নয়। আমাব অনেক কর্মচাবী আছে, আমি সে সময়ে আসিয়া 
কাহাবও মুখ দেখিতে পাই নাই। এই ব্যক্তি আমাদের বছৎ লোকসান 
বাচাইন্াছে। ইহাকে পুরস্কৃত করা কর্তব্য । আযাটুকিনসন সাহেবের 
মনোগত ভাব ছিল, আমার বেতন বুদ্ধি কবিয়। দিবেন। কিন্তু বিচক্ষণ 
সাহেব, ছোট সাহেবের মনোভাব দর্শনে স্পষ্ট বুঝিলেন, ইহাতে অনেকেই 
ঈর্ষান্থিত হইবে । তিনি আর কিছু না বলিয়া! লোহার সিম্ধুক খুলিয়া দিয়া 


১৩৬ গিরিশচন্ু 


আমার বলিলেন, 'বাবু, তোমার পুবস্কাব স্বরূপ হাতে বত ধরে, তিন 
আচল টাকা! তুলিয়! লও |” আমি রুমাল পাতির লিদ্ধুক হইতে তিন 
আচল টাক। তুলিয়া লইলাম। আমার হাতের চেটো হুইখানি দেখতে 
নেহাত ছোট খাট নয়। ব্যান্ক্রপ্ট সাহেব নীববে একবাব আমার হাতের 
আঁচলের বহর দেখিতে লাগিলেন, আর একবার নিন্দুকেব টাকাব দিকে 
চাছিতে লাগিলেন ।” 

ব্যান্ক্প্ট সাহেব, আটুকিনসন সাহেবেব অফিসেব অংশীদাব ছিলেন 
বটে, কিন্তু আট্কিনসন সাহেব যেরূপ তীক্ষবুদ্ধিসম্পর, কর্মী এবং সম্ৃদয় 
ছিলেন, তিনি একেবাবেই তাহাব বিপবীত ছিলেন। কয়েক বংসব কাধ্য 
কবিবাব পব উভয়েব মধ্যে মত-বিবোধ ঘটিল, মনোমালিন্য ক্রমশঃ এতটা! 
বাড়িয়। উঠিল যে, আটুকিনসন সাহেব ছোটসাহেবকে ত্াহাব অফিসের 
বখব! বিক্রয় কবিয়! স্বদেশে চলিয়া যান। 

এই আটকিনসন সাহেবেব অফিসেব সহিত গিবিশচন্দ্রেব সাহিত্য- 
জীবনেব একটা ক্ষুদ্র স্থৃতি বিজড়িত আছে । এই অফিসে কাধ্যকালীন 
তিনি 'ম্যাকৃবেথ নাটকেব তর্জমা কবিতেছিলেন। সময় পাইলেই 
কখনও বাড়ীতে, কখনও বা অফিসে একটু একটু কবিয়৷ অনুবাদ 
কবিতেন। অনুবাদ প্রায় শেষ হইলে তিনি খাতাধানি মানিয়৷ অফিসের 
ডেক্সেব ভিতব বাখিয়া দিয়াছিলেন, কার্যের ফুবসৎ পাইলে আবস্তাকমত 
খাতাখানি সংশোধন কবিতেন। 

নিজ ওদ্ধত্য বশতঃ ব্যান্ক্রপ্ট সাহেবও অধিকদিন অফিস চালাইতে 
পাবেন নাই। শ্রীঞ্জইই তিনি সমব্যবসায়িগণেব সহানুত্ূতি হারাইলেন। 
বথাকালে অফিস ফেল হইয়া যখন আনবাবপত্র_ চেয়াব টেবিল নিলাম 
হইয়া! যায়, সেই লঙ্গে গিবিশচন্ত্রেব ডেক্সেব মধ্যে বক্ষিত 'ম্যাকবেথের+ 
পাঁুলিপিখানিও খোয়! যায়। এই সময়ে পত্রী-বিয়োগে মানসিক অশান্তি 


সপ্তদশ পরিচ্ছেদ ১৬৭ 


বশতঃ খাতাখানি যে অফিসে আছে, তাহাও তীহাব শ্বারণ ছিল না। 
উত্তরকালে তিনি মিনার্ভা থিয়েটারেব নিমিত্ত ম্যাকৃবেথ নাটকেব পুনরায় 
অনুবাদ আরম্ভ করেন। পুর্বস্থতি হইতে অনেক স্থানে তিনি সাহায্য 
পাইয়াছিলেন। যথাসময়ে ইহ্াব উল্লেখ কবিব। 


সগ্তদশ পরিচ্ছেদ 


তহ্ানিশুস্যাথ্িক্ জিক্ষিশুস্াা 

একাদশ পরিচ্ছেদে বণিত হইয়াছে, গিবিশচন্ত্র তাহার জোষ্ঠ শ্তালক 
বজনাথ বাবুব নিকট প্রথমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কবেন। 
ব্রজবাবুব মৃত্যুর পর গিরিশচন্দ্র তাহার আ্যানাটমি ও হোমিওপ্যাথিক 
চিকিৎসার পুস্তকগুলি এবং ওষধেব বাক্সটি নিজ বাটাতে আনেন এবং বিশেষ 
বত্বের সহিত গ্রন্থগুলি অধায়ন কবিয়! বিনামূল্যে গ্রতিবাসী ও দীনদবিদ্রগণকে 
ওষধ বিতবণ করিতে লাগিলেন। ক্রমে তাহাব সুঁচিকিৎসাব বার্তা বস্থুপাড়া 
পল্লীতে বিস্তৃত হইয়া পড়িলে_ভদ্ত্র ও ইতব শ্রেণীব বহু ব্যক্তি প্রাতঃকালে 
তাহার বাটীতে ওঁধধের নিমিত্ত সমবেত হইতেন। গিবিশচন্দ্রেব রোগ নির্ণয় 
ও ওঁষধ নির্ব্বাচনেব উপব তাহাব বন্ধুবান্ধবেব যথেষ্ট বিশ্বাস ছিল। একদ! 
বন্থপাড়, পল্লীর জনৈক ভদ্রলোক তাহাব মাতাঠাকুবামীব অস্তিমা-স্থায় 
তাহাকে গঙ্গাতীরস্থ কবেন। গিবিশচন্দ্র জনৈক বন্ধুব সহিত গঙ্গাতীরে 
তাহাকে দেখিতে যান। বৃদ্ধার শবীবেব অবস্থা ও নাড়ী পবীক্ষ। 
কবিষ়া' তিনি বলেন, *ইহাব মৃত্ার এখনও বন বিলম্ব আছে। আমার 


১৩৮ 1গরিশচন্দ্র 


বিশ্বাস, ওষধ সেবনে এ যাত্র। রক্ষা পাইতে পাবেন; বলেন তো আমি 
ওঁষধ পাঠাইয়। দিই । রোগীকে ওষধ খাওয়ান সকলের মত হইলে 
গিবিশচন্ত্র অগ্রেই বাটা চলিয়। আসেন এবং চিকিৎসা.-পুস্তক খুলিয়া বিশেষ 
যত্বের সহিত রোগীব সমস্ত লক্ষণ মিলাইয়া একটা ওধধ নির্বাচিত করেন। 
কিন্তু গষধ লইতে কেহ আর আসিল না। পবে তিনি শুনিলেন, তাহাঝ 
মত পরিবর্তন করিয়াছেন। গিরিশবাবুব প্রদত্ত ওষধেব উপর তাহাদের 
দ় বিশ্বাস ছিল; _যগ্তপি ওঁষধ সেবনে রোগী পুনজ্জীবন লাভ করে, তাহ 
হইলে গঙ্গাতীব হইতে পুনরায় বাটী লইয়। যাওয়া লৌকিক আচাবে বড়ই 
বিপজ্জনক হুইবে। 

ভদ্রলোকটির মাত। বহুদিন গঙ্গাতীবস্থ “মুমুধু-নিকেতনে+ থাকায়, 
তাহাকে প্রত্যহ বহুবাব বাড়ী ও গঙ্গাতীব যাওয়াআস। করিতে হইত। 
গিবিশবাবুব বাটাব সম্ুখস্থ গলি দিয়াই যাতায়াতেব ন্ুবিধা ছিল। 
গিবিশচন্ত্রের মুখে শুনিয়াছি, পাছে তিনি ওষধ দেন, এই ভয়ে ভত্রলোকটা 
উক্ত গলি-পথ দিয় যওয়া-আসা বন্ধ কবিয়। দিয়াছিলেন। 

তিনি বাহার্দিগকে ওষধ দিতেন, তাহাদিগকে ওষধ সেবনেব পব বোগী 
কিরূপ থাকে, সে সংবাদ দিবাব নিমিত্ত বিশেষ কবিয়। বলিয়া দিতেন, 
এমন কি অনেক সময়ে ওষধেব ফলাফল জানিখাব জন্ত অফিসেব কার্যে 
তিনি অগন্তমনস্ক হইয়।! পড়িতেন এবং বান্ছে ওৎস্ুকাবশতঃ তীহাব নিদ্রার 
বিশেষ ব্যাঘাত হইত। কিন্তু অনেকেই যথাসময়ে তাহাকে বোগীব 
অবস্থা! জ্ঞাপন কবিতেন না, কেহ বা সম্পূর্ণ দুস্থ হুইয়! তাহাব সহিত আর 
সাক্ষাতই করিতেন ন1। দৃষ্টান্ত স্বরূপ একটী ঘটনাব উল্লেখ কবিতেছি।__ 
নিকটবর্তী কাটাপুকুবে এক ব্ক্তিব কলেবা হইয়াছিল। গিরিশচন্্ 
তাহাব চিকিৎসা! কবেন। বাত্রি ১২টা পর্যাস্ত ওধধদানে বোগেব উপসর্গ- 
গুলি গ্রারই দুর কবিয়। আনেন। বিশেষ করিয়া রোগীর আত্মীয়কে 


সপ্তদশ পরিচ্ছেদ ১৩৯ 


বলিয়। দেন-_“অন্য কোনও উপসর্গ দেখ! দিলে রাত্রেই আসিয়া আমাকে 
জানাইবে, নচেৎ কল্য প্রাতে আগিয় সংবাদ দিবে ।* 

প্রভাত হইতে না হইতে গিরিশচন্দ্র উৎকণ্ঠায় উঠিয়া পড়েন এবং 
বৈঠকথানায় আসিয়! রোগীর আত্মীয়ের আগমন প্রতীক্ষা কবিতে থাকেন, 
কিন্তু বেল! ৮টা বাজিতে যায়, তখন পর্য্যস্ত কাহারও দেখা নাই। তীহার 
একবার সন্দেহ হইল, রোগীব কি মৃত্বা হইল ?__-আবার ভাবিলেন, .ওষধে 
যেরূপ সুফল দেখা দিতেছিল-_তাহাতে তো মৃত্যু হইবার সম্ভাবন! নাই। 
যাহাই হউক তিনি আব স্থিব থাকিতে পাবিলেন না-স্বম্₹ং রোগীর 
বাড়ীতে গিয়। উপস্থিত হইলেন। দেখেন_ রোগী পিড়ে॥ ঠেস দিয়া 
দাওয়ায় বসিয়া আছে। তিনি তাহার আত্মীয়কে অনুযোগ কবিয়া 
বলিলেন,--”"তোমাব সকালেই খবর দিবার কথা--কেন দিলে না?” 
আত্মীয়টা বিনীতভাবে বলিল,-_-“আজ্জে, রোগী বেশ ভাল আছে, আর 
কোন ভয় নাই। সেই জন্যই আর খবর দিই নাই।” 

এইরূপ নান! কারণে বিরক্ত হইয়া, তিনি উক্ত চিকিৎসা এক প্রকাব 
পরিত্যাগ করেন, ক্লাসিক থিয়েটাবে কার্য্য কালীন ( ১৩০৯ সালে ) পুনরায় 
তিনি দ্বিগুণ উৎসাহে এই চিকিৎসায় প্রন্ৃতত হন। যথাসময়ে তাহার 
বিস্তৃত বিবরণ পাঠকগণ জ্ঞাত হইবেন। 

এই সময়ে অফিসের কার্ধযও খুব জোরে চলিতেছিল। সমস্ত দিনের 
পবিশ্রমের পর গিরিশচন্দ্র বাটা আমিয়। আর কোথাও বড় একটা বাহির 
হইতেন ন| ৷ রাত্রে সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, বিজ্ঞান ও রাজনীতি-সক্রান্ত 
নান! বিষয়ক গ্রন্থ পাঠে নিবিষ্ট থাকিতেন। বিশেষ আবশ্বক না থাকিলে 
তিনি পাঠের ব্যাঘাত করিতে চাহিতেন না । অধ্যয়নই তাহার জীবনের 
প্রধান আনন্দ ছিল। 


অধ্টাদশ পরিচ্ছেদ 


প্রষ্গ-ভ্ঞী নে অআশ্থনানস্ছা 

অষ্টম পবিচ্ছেদে বলিয়াছি,_ যৌবনেব প্রাবস্তে গিরিশচন্দ্র অভিভাবক- 
বিহ্বীন হট স্বেচ্ছাচাবী হইয়া! উঠিগাছিলেন। সে সময়ে শিক্ষিত সমাজে 
একটা ধর্ম্-বিপ্রবেব দিন আিয়াছিল। সনাতন ধর্মে অনাস্থা, চতুর্দিকে 
নব নব মত উখিত। কিসতা কি মিথা। স্থির করিতে না পারিয়া 
গিরিশচন্দ্রেবও হিন্দু ধর্ম তাঁদৃশ শ্রদ্ধা ছিল না, ক্রমে তিনি নাস্তিক হইয়া 
উঠিয়াছিলেন। এই সময়েব একি ঘটনাব উল্লেখ করিতেছি £-__ 

৬শারদীয়। পৃজাব পুর্বদিন প্রভাতে বাটার লোক উঠির৷ দেখিল, 
বহির্বানীর প্র।ঙ্গণে কাহাব! প্রতিমা ফেলিয়৷ দিয়া গিয়াছে । বাড়ীতে 
হুলস্থূল পড়িয়। গেল। পল্লীবাসীবা জানিত, নীলকমল বাবু যথেষ্ট অর্থ 
বাখিয়। গিয়াছেন এবং তীহাব জোষ্টা কন্তাবও ঠাকুব-দেবতার উপর 
বিশেষ ভক্তি-শ্রদ্ধ। আছে । বোধ হয় নেই কারণেই___পাড়াব কয়েকজন 
হুজুগপ্রিয় লোক মজা দেখিবাব ন্ত গোপনে এই কার্য করিয়াছিল । 
ধাহাই হউক গিবিশচন্ত্রেব জ্যেষ্ঠ! ভগিনী কৃষ্ণকিশোরী এই অপ্রত্যাশিত 
ঘটনায় চঞ্চল! হইয়। উঠিলেন,_মহামায়িব পুজ! না করিলে পাছে বাড়ীর 
অকল্যাণ হয় এখন কি কর কর্তব্য-_-এই সকল চিস্তা করিতেছেন__ 
এমন সময়ে বাটীতে বন্থ লোকেব সমাগমে একট! কোলাহল উত্থিত হওয়ায়, 
গিরিশচন্দ্র ঘুম হুইতে উঠিয়। পড়িপেন। বহির্বাটাতে আলিয়া প্রতিমা 
দর্শনে বুঝিলেন, পাড়ার জনকতক দুষ্টলোকেব এই কীর্ডি। তিনিও 
তাহাদের এই কীর্তি লোপ করিবাব জন্ত “কালাপাছাড়' মুর্তি ধারণ 


অষ্টাদশ পচ্ছেদ ১৪১ 


সকরিলেন। মগ্তপান করিয়া! কোথা হইতে একখানি কুঠার সংগ্রহ করিয়া 
আনিয় প্রতিমা! খণ্ড-বিখও করিতে আরম্ভ করিলেন। “করিস্‌ কি, 
করিম কি” বলিয়া আর্তনাদ কবিতে করিতে ক্ৃষ্ণকিশোরী ছুটিয়া 
আসিলেন - বাটাতে কান! পড়িয়া! গেল। দিগম্বরবাবু থাকিলে হয় তো 
তাহাকে নিরম্ত করিতে পাবিতেন, কিন্তু কিনি ৬পুজায় দেশে গিয়াছিলেন। 
তাহার সেই সংহার-মুণ্তি দর্শনে অন্ত কেহ নিকটে যাইতে সাহস করিল না, 
একে একে সকলেই সরিয়৷ পড়িল। 
ংস-কার্ধ্য শেষ করিয়। গিরিশচন্দ্র প্রতিবাৰ এক এক টুক্‌রা 

তাহাদেব খিড়কিব ধাগানেব এক আমগাছ-তলায় লইয়া! গিয়া স্তপীক্কৃত 
করিলেন। পরে সমস্তদিন "ধরিয়া সেইগুলি মাটীতে পু'তিয়।! তবে 
নিশ্চিন্ত হইলেন। + 

গিবিশচন্্রের তৎকালীন উচ্ছ্‌ঙ্খল জীবনেও, তীহার হৃদয়ের অস্তস্তলে 
ফস্তব সায় যে এক মহাপ্রাণতাব ক্ষীণ ধাবা! প্রবাহিত হইতেছিল, তাহা 
তাহাৰ বাল্যন্থৃহাদ স্বর্গীয় কালীনাথ বন্থু মহাশয়ের ডায়েরী পাঠে অবগত 
হওয়া যায় । 

* ইনি যেরূপ বুদ্ধিমান সেইরূপ বিশ্বাসী এবং সাহসী ছিলেন। সাংসারিক প্রত্যেক 
কায্যেই কৃঞ্ককিশোরী ইহার পরামর্শ গ্রহণ করিতেন। পারিবারিক আপদ-বিপদে 
দিগম্বরবাবু প্রাণদানেও পরাসুখ হুইতেন না । ইহীর সহ্গুণের ছায়। লইয়া উত্তরকালে 
গিরিশচন্দ্র তাহীর "প্রফুল্ল" নাটকে “পীতাম্বর' চরিত্র অস্কিত করিয়াছিলেন । 

+ অদ্ধাম্পদ শ্রীযুক্ত সরেন্ত্রনাথ ঘোষ (দানিবাবু) মহাশয়ের মুখে গুনিয়াছি, সেই 
রাত্রে গিরিশচন্দ্রের প্রবল জ্বর হয়, মুখ ভীষণ ফুলিয়। উঠে। মহাত্রাসে কৃষ্ণকিশোরী 
শিরিশচন্দ্রের এই গুরুতর পাপস্থালনের নিমিত দেব-দেবীর নিকট “মানসিক' করেন। 
কয়েকদিন জ্বর ভোগ করিয়া গিরিশচন্দ্র নিরাময় হন। পরবর্তী চারি বৎসর কৃষ্ণকিশোরী 
সমারোহ করিয়। বাটীতে ছুর্গাপুজ! করিয়ছিলেন। 


১৪২ গিরিশচন্দ্র 


কালীনাথবাবু তাহার সমবয়সী, প্রতিবানী এবং বন্ধু ছিলেন। পুলিশ. 
বিভাগে ইনি কার্য করিতেন। বাঙ্গালার নানাস্থানে ঘুরিয়া ১৮৭০ 
ৃষ্টাব্বে ২৭শে জুলাই তারিখে কলিকাতায় ইনি কোর্ট ইন্স্পেক্টাব হুইয়৷ 
আসেন। ১৮৭২ থৃষ্টাবে ইনি প্রথম শ্রেণীর ইন্স্পেক্টার, পবে শ্বীয় 
যোগ্যত। এবং বুদ্ধিমন্তায় ১৮৮১ থুষ্টা্ে বাঙ্গালীব মধ্যে প্রথম 
পুলিশ স্ুপাবিপ্টেণ্ডেণে পদ প্রাপ্ত হন। তিনি তাহাব ডায়েবীতে 
জীবনেব ঘটনাবলী লিপিবদ্ধ কবিয়। রাখিতেন। তাহার সুযোগ্য পুত্র 
শ্রীযুক্ত উপেন্দ্রনাথ বন (4950 0077710195197)0 01 00110৮,) 
মহাশয়ের সৌজন্কে কালীনাথবাবুব স্বহস্তে লিখিত ডায়েবী পাঠ কবিবাব 
স্থযোগ পাইয়াছি। 

১৮৬৭ খৃষ্টাব্দে কালীনাথবাবু যে সময়ে বাণীগঞ্জ রেলওয়ে পুলিসেব 
কার্ষ। কবিতেছিলেন, গিরিশচন্দ্র সে সময়ে বাণীগঞ্জে বেড়াইতে যান এবং 
তাহাব বাসাতেই অবস্থান কবেন। গিবিশচন্দ্রে বয়ঃক্রম তখন তেইশ 
বসব মাত্র। কালীনাথবাবুব ভায়েবী পাঠে বুঝা যায়, গিবিশচন্দ্র এই 
সময়ে চরিত্রহীন হইলেও তাহা সংশোধনের চেষ্টা কবিতেছিলেন এবং 
ঈশ্বব্বে অস্তিত্বে প্রত্যয় না কবিলেও ঈশ্বব বিশ্বাসে যে নির্মল আনন্দ 
আছে, স্বীকার কবেন। গিবিশচন্দ্রেব এই মতাবাক্যে আশ্বস্ত হইয়া 
কালীনাথ বাবু অতঃপব প্রত্যহ ঈশ্বব উপাসনায় উতমাহিত হন। আমবা 
কালীনাথবাবুব ১৪ই ফেব্রুয়াবী (১৮৬৭ ঘ্রীঃ) তাবিখেব ডায়েবী হইতে 
সবটুকুই উদ্ধত কবিলাম । 

৪/১ 0000 0151 200 [) 51101795017 07 00801)) 1020 
৪19) 00001) 00018] 0000001 011116, 01151) 2.01010050 00861)6 
$/29 [02551057102 1816 2100 ৮/25 06561617911051)1075511 200 


191)60 (0 00176011)107561 1 20] 56170 9০011 101: 1)1হ) 200 


অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ ১৪৩ 


19) 0018 150০৬615,. ৬৬182 015250001 ০1৫ 105 985) 10৩ 
125 00 10811518006 83013651506 01 0116 4১100151701 1 5081] 
0129 101 10110, [17068 01015 (0 10210 2৮ ৮৮126 0708 01081756 
91:68 01920 11) 110), 01191) 200715 01)615 15 ও, 10810011655 
11 (1)6 1211910৩ 00 (00. 010১ ॥ 00096 0০ 601) 0080 25 
[1001) 7.৭ 70095101. 017.7৩1 ] &1 2.0067% 00৬ 55170 02,” * 

গিবিশচন্দ্র খয়ং মগ্ধপান কবিতেন, কিন্তু বন্ধুবান্ধবদেব মগ্তপ দেখিতে 
ইচ্ছ! কবিতেন -না। কানীনাথবাবু কলিকাতায় “মগ্কপান নিবাবণী 
নভা*র অঙ্গীকাব-পত্রে নাম লিখিয়াও অনিয়মিত মস্তপান কবিতেন। এ 
নিমিত্ত গিবিশবাবু তাহাকে পূর্ব প্রতিজ্ঞ। স্মরণ কবাইয়। অনুযোগ করেন। 
কালীনাথবাবু গিবিশচন্ত্রকে ধন্যবাদ দিয়া তাহাব ২৪শে ফেব্রুয়ারী 
তাবিখের ভায়েবীতে নিয়লিখিতরূপ লিখিয়! বাখিয়াছেন ।-_ 

00510 150010060 006 0126 1 512060 0 020) ]0 9060- 
৪00? 16000)619006 ১০০16 ! 909 10150 02 ] 
06৮6] (10081) 01 1৮ 1] জা ৮69 5011৭ 1 50211 0561 
011010 006 25 01950101980 1709 1 €0)[১6191706 ১০০86, 11201 
(০ 09171518101 1)15 00105 ৪০০০.” 

কালীনাথবাবুব ডায়েরীব পব তাবিখে লিখিত হইয়াছে, তাহার ভৃত্য 
পূর্বব রাত্রে বাড়ীতে চুবী কবাম্র» তিনি তাহাকে পুলিস সোপরদ্ কবিষা 
উপযুক্ত 'দগুপ্রদানে সমুদ্ধত হন। কিন্তু গিরিশচন্দ্র তাহাকে বিশেষ 
কবিয়৷ অন্থরোধ করেন-__প্রথমেই গুরুদণ্ডের ব্যবস্থা না কবিয়া এবাবটা 


* মাত্র ৬৮ বৎসর বয়ঃক্রমে কালীনাথবাবু অকালে ইহলোক ত্যাগ করেন ॥ নে 
তিনি দেখিয়! যাইতেন, প্রঞ্ীরামকৃষণদেবের কৃপালাত করিয়! গিরিশচান্ত্রের ধর্নমাজীবনের 
কিরূপ পরিবর্তন হইয়াছিল। 


১৪৪ [গান্শচজ্জ 


তাহাকে ক্ষমা কর হোক ।” কালীনাথবাবু কর্তব্যকর্ধে বড়ই কঠোর 
ছিলেন, গিরিশচন্দ্র বহুকষ্টে ভূত্যটীকে মুক্তিদান করিয়াছিলেন । * 
কালীনাথ বাবু কলিকাতায় আদিলে, গিরিশচন্দ্র তীহার সহিত কিছু- 
দিন আদি ব্রাঙ্গদমাজে উপাসনাদিতে যোগদান করিয়াছিলেন। একদা উক্ত 
সমাজে উৎসবের দিন প্রথমে মহধি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুব, পরে স্বর্গীয় বেচারাম 
বাবু, তৎপবে পূর্ববঙ্গদেশীয় জনৈক প্রচারক বক্তৃতা করেন। পরদিবস 
স্থবিখ্যাত ধর্মাচার্ঘ্য কেশবচন্ত্র সেনের বাটীতে আদি ব্রাহ্মদমাজের 
বক্তৃতাদি নন্বন্ধে আন্দোলন হইতেছিল। গিরিশবাবু সেদিন তথায় উপস্থিত 
ছিলেন। এই আন্দোলনে উক্ত পূর্বববঙ্গদেশীয় প্রচারক নম্বন্ধে কেশব 
বাবু যাহ! বলিয়াছিলেন, তাহ তরুণ বয়স্ক গিরিশচন্ত্রের মনে যেন ভ্রাতৃভাবের 
উপেক্ষা বলিয়া বোধ হইল । সেইরূপ উপেক্ষা অনুভব হওয়ায় ভিনি 
ব্যথিত হইলেন এবং ভ্রাতৃভাব একট! কথার কথা তাহার ধারণা জন্মিল। 
মেইদিন হইতে তিনি ব্রাহ্মদ্িগের দল পবিত্যাগ করিয়া পূর্ব আবার 
নাস্তিক হইয়। উঠিলেন। কালীনাথবাবু কেশব সেনের নিকট ব্রাহ্গ- 
ধর্মে দীক্ষিত হন। মুঙ্গেবে কার্ধ্যকালীন তথায় তিনি কেশববাবুর সহিত 
পরিচিত হইয়া! তদবধি তাহাব অনুরক্ত হইয়াছিলেন। 
গিরিশচন্দ্র মনে মনে এই সিদ্ধান্ত কবিলেন, যদি ঈশ্বর থাকেন এবং 
ধর্ম, মানব-জীবনেব অতি প্রয়োজনীয় বস্তব হয়, তাহ। হইলে জীবন ধারণেব 
অতি আবস্তক জল, বাযু ও আলোক যেমন যথেষ্ট বহিয়াছে, ধর্ম তদপেক্ষা 


০০ 


* এই প্রসঙ্গে উপনিষদের সেই গ্লোকটী ম্মরণ হয়-_ 
অপরাদ্ধেযু সম্পেহ। মুদবে। মৃছুবৎসল1। 
আরাধন নুখাশ্চাপি পুকষাঃ ্বর্গগামিনঃ ॥ 
অর্থাৎ ধাঁহারা অপরাধীর প্রতি সদঘ, কোমল ও মৃছবৎসল এবং ধীহারা রঙ্গের 
আরাধনায় সুখী হয়েন, তাহারা! ম্বর্গগামী হন। 


অস্টাদশ পরিচ্ছেদ ১৪৫ 


সুলভ লভ্য হইত। ধর্মন্ত তত্বং নিহিতং গুহায়াং” হইয়| থাকিত ন!। 
কিন্তু এই নাস্তিক অবস্থাতেও পিতৃদেবের উপর অচল ভক্তি বশতঃ 
যেদিন তিনি গঙ্গাদ্দান করিতেন, পিভৃমাতৃ-লোকের উদ্দেশে রামতর্পণের 
মন্ত্র * পাঠে, তিন অঞ্জলি করিয়া জল প্রদান করিতেন। ভাবিতেন, “জল 
দিই, কি জানি সত্যই যদি পিতার কোন কার্ধ্য হয় |” এই পিতৃভক্তির 
প্রভাবেই গিবিশচন্ত্র সাংসারিক বু শোক, তাপ ও বিপদ সহ করিয়! 
পবম শাস্তি লাভে সমর্থ হইয়াছিলেন। 

গিবিশচন্দ্র তাহাব ধর্-জীবনেব প্রথম ইতিহাস এইরূপ বর্ণনা! কবিয়া- 
ছিলেন £__“আমাদেব পঠদ্বশায় ইংরাজী-শিক্ষার প্রভাবে কেহ জড়বাদী, 
কেহ গ্রীষ্টান, কেহ বা ব্রাহ্ম হইয়াছিলেন। হিন্দু ধ্ধের উপর বিশ্বাস কেহু 
বড় একটা করিতেন না। বাহার! হিন্দু ছিলেন, তাহাদের ভিতর আবাব 
নানান্‌ দলাদলি। কেহ শান্ত, কেহ বৈষব) আবার বৈষ্ণবের ভিতরও 
নানান্‌ সম্প্রদায়। প্রত্যেক মতাবলম্বী অপর মতাবলম্বীকে নরকে 
পাঠাইবার ব্যবস্থা কবিতেন। এই তো অবস্থা, তার উপর আধার অনেক 
যাজক ব্রাহ্মণ ভ্রষ্টাচাবী, কেহ সতানাবায়ণের পুথি লইয়া! শ্রাদ্ধ করিতে 
বদন, কেহুবা, স্বচক্ষে দেখিয়াছি, শৌচ হইতে আসিয়া পাইখানাব গাড়,র 
জলে অঙ্কুলি সিক্ত কবিয়৷ মাটির দেওয়ালে ঘসে, কপালে ফৌটা কেটে 
পূজা করিতে যাঁন। একূপ অবস্থায় প্রধন্মে আব কোন আস্থা রহিল না । 
আবার ছু'পাত ইংবাজী পড়িয়া দেখিলাম, যাহারা জড়বাদী-__বিস্তাবুদ্ধিতে 
তাহারা সকুলের শ্রেষ্ঠ । ঈশ্বর ন! মান। একট। পাগ্ডিত্যের পরিচায়ক বলিয়া 





* ও আব্রঙ্গভূবনাল্লোক! দেবর্ষিপিতৃমানবাঃ। 
তৃপ্যস্ত পিতরঃ সর্বেধ মাতৃমাতামহাদয়ঃ ॥ 
অতীতকুলকোটানাং সপ্তত্বীপনিবাসিনাম্‌। 
ময় দত্তেন তোয়েন তৃপ্যঙ্ক ভূবনত্রয়মূ্‌ ॥ 

সও 


58৬ গিরিশচন্দ্র 


মনে হইত ।কিস্তু হিন্দুর দেশে চারিষুগ ধরিয়া যাহার নাম চলিয়। আসিতেছে, 
হিন্দুর প্রাণ সে ঈশ্বরকে একেবারে হট্‌ করিয়া! উড়াইয়৷ দিতে পারে না । 
বন্ধ-বান্ধবদিগের মধ্যে ধাহার! ক্কৃতবিগ্ভ ছিলেন, ঈশ্বর লইয়। মাঝে মাঝে 
সাহাদের সহিত তর্ক করিতাম। ব্রাঙ্গগমাজেও মাঝে মাঝে যাওয়া-' 
আস৷ করিতে লাগিলাম। কিন্তু যে অন্ধকার-_সেই অন্ধকার, কিছুই বুঝিতে 
পারিলাম না । ঈশ্বর আছেন কি না,__-থাকেন যদি, কোন ধন অবলম্বন 
করা উচিত? মনে মনে ঈশ্বরকে ডাকিতাম, ঈশ্বর যদি থাক, আমায় 
পথ দেখাইয়। দাও ।” ক্রমে মনে হইল, সব ঝুট,_-জল, বায়ু, আলোক-_ 
যাহ! ক্ষণিক ইহজীবনের প্রয়োজন, তাহ! ছড়ান রহিয়াছে-_-না চাহিলেও 
পাওয়া যায়; তবে ধর্-_যাহ! অনস্ত জীবনের প্রয়োজন, তাহ! খু'ঁজিয়। 
লইতে হইবে কেন? সব ঝুট কথা! জড়বাদীর! বিদ্বান, বিজ্ঞ,__ত্তাহার! 
যাহা বলেন, তাহাই ঠিক |” 

গিরিশচন্ত্রের ধর্ধ্-জীবন বড়ই বিচিত্র। যথাসময়ে পাঠকগণ তাহ 
জ্ঞাত হইবেন। 


উনবিংশ পরিচ্ছেদ 


শ্শক্রিন্ান্তিক্ক স্খ্খ-হু£ুথ 


গিরিশচন্দ্র বলিতেন, “বালো মাতৃবিয়োগ, কৈশোরে পিতৃবিয়োগ এবং 
যৌবনে পত্বীবিয়োগ যে বিরূপ নিদারুণ, তাহ! আমি ভুক্তভোগী হইয়! 
মর্মে মন্মে উপলব্ধি কবিয়াছি।” বাস্তবিক গিবিশচন্দ্রের জীবনী আলোচন 
কবিলে সুস্পষ্ট বুঝ! যায়, পাবিবাবিক স্থথশাস্তি প্রদানে ভাগ্যবিধাতী। 
ত্তাহার প্রতি বড়ই কৃপণতা! দেখাইয়াছিলেন। একটা ধাবাবাহিক 
শোক-আ্রোত তাহাব সমস্ত জীবনের উপর দিয়। বহিয়। চলিয়াছিল। 

যে নব শিশুব গুভাগমনে তাহাব খুল্লপিতামহ হুরিশচন্দ্র এবং জোষ্ঠ- 
তাত রামনাবার়ণ আনন্দে আত্মহার। হইয়। মুক্তহস্তে দান করিয়াছিলেন, 
তাহারা উভয়েই গিবিশচন্ত্রের জন্মের ছয়মাস পরে ইহলোক ত্যাগ কবেন। 

প্রহ্থতিব কঠিন গীড়ায় গিরিশচন্দ্র, জননীব স্তস্তপানে বঞ্চিত হইয়া এক 
বাপ্দিনীর স্তন্তপানে প্রাণধারণ করেন । মাতৃবক্ষের পবিত্র অমুত পান 
শিশ্তর ভাগ্যে ঘটে নাই। 

শৈশবে গিবিশচন্দ্রেব ষষ্ঠা ভগিনী কালীপ্রসম্নের (প্রদন্নকালীর ) মৃত্যু 
ঘটে। এই কণ্তার জন্মের ছুই বৎসর পরেই গিরিশচন্ত্রের জন্ম। এই 
বালিকা! গ্িবিশচন্ত্রকে অত্যন্ত তালবানিত। গিরিশচন্দ্রকে আদর করিয়! 
সে ধগিরি ভাই+ বশিয়া। ডাকিত। গ্িবি ভাইকে একবার কোলে কবিতে 
পারিলে তাহাব আনন্দের আব সীমা থাকিত না। ছাদে গিবিশচন্দ্রের 
শুইবার কাথ। শুকাইতেছে, হঠাৎ বৃষ্টি আদিয়াছে, পাছে “গিরিভাই'এর 
কাথ। ভিজিয়। যায়, বালিক। কদিয়। আকুল। গিবিশকে কোলে লইবার 


১৪৮ গারশচক্ 


জন্তু বালিক! সতত স্থযোগ খু'জিত ) কিন্তু পাছে কোলে তুলিয়া ফেলির! 
দেয় _এ নিমিত্ত বাটার মকলকে সতত সাবধানে থাকিতে হইত । 
গিরিশচন্দ্র, অতুলকুষণ ও তাহার ভগিনী দক্ষিণাকালীর মুখে বহুবার 
এই বালিকার সম্বন্ধে গল্প গুনিয়াছি। বালিকার মৃত্যুব করুণ কাহিনী 
বড়ই মর্ধম্পশী। নীলকমল বাবুর বাটীতে একজন ভিখাবী প্রায়ই ভিক্ষা 
করিতে আমিত, সে “জয় রাধাগোবিন্দ নাচে”, বলিয়া গান গাহিত। 
প্রসন্নকালী তখনও তেমন স্পষ্ট কবিয়া কথ! বলিতে পাবিত না, সে সেই 
গানের অনুকরণ করিয়! বলিত “ধেও নাধার গোবিন্দ” । বালিকা] মায়েব 
নিকট পয়স। লইয়া সেই ভিথারীকে দ্রিত। কিছুদিন পবে বালিক কঠিন 
গীড়ায় সংস্তাহীন হইয়। পড়ে, মৃত্যু হইয়াছে জ্ঞানে তাহাকে শ্মশানঘাটে 
লইয়৷ বাওয়। হয়। গঙ্লাতীবে আনিবার পর বালিকাব পুনবায় চৈতন্ত হয়। 
বাটাতে এ সংবাদ পৌছিলে নীলকমল বাবু প্রভৃতি ছুটিয়। আসেন। কিন্তু 
চৈতন্তলাভ করিয়াও বালিকাব আবাব ভাবাস্তর ঘটে। সেই অবস্থায় 
বালিক! বলিল, “ধেও নাধার গোবিন্দ এয়েছে, বথ এয়েছে, পয়সা দাও ।” 
এমন সময় দেখ। গেল, জনৈক মুমূরু বৃদ্ধকে তাহাব আতমীয়-স্বজন সংকার্তন 
করিতে করিতে গঙ্গাতীরে আনয়ন কবিল । সংকীর্তন শ্রবণে বালিকাব মৃত্যু- 
ছারাঙ্কিতমুখ সহস! হর্ষোৎফুল্প হইয়। উঠিল, সে পুনবায় বলিতে লাগিল, “ধেও 
নাধার গোবিন্দ __ধেও নাধাব গোবিন্দ।” ক্ষুদ্র বালিকাব এই অদ্ভুত ভাব 
দর্শনে সমাগত লোকগণ আসিয়া! তাহাকে ঘিরিয়। দাড়াইল। আশ্চধ্যের 
বিষয়, এই সংকীর্ভনকাবীর দল সেই বৃদ্ধ মুমুধূকে পবিত্যাগ করিয়া 
বালিকার,সম্ুথে আসিয়! “জয় বাধাগোবিন্?” বলিয়া নাম সংকীর্তবন কবিতে 
লাগিল। মধুর নাম গুনিতে গুনিতে শাপতভ্রষ্টাব স্তায় বালিক! দিব্যধামে 


চলিয়। গেল! 
এই সরল! মমতাময়ী ভগিনীর অদর্শনে শিশুহদয়ে কি ব্যথা জাগিয়াছিল, 


উনবিংশ পরিচ্ছেদ ১৪৯ 


তাহ! ধিনি সকল হৃদয়েরই সংবাদ রাখেন, সেই অন্তর্ধ্যামীই জানিতেন। 
তবে গিবিশচন্দ্রের জান হইলে, তাহার ভগিনীদ্দের সুখে কালী প্রসন্নের 
( প্রসন্নকালীর ) এই অদ্ভুত মৃত্যু কাহিনী এবং তাহাব প্রতি বালিকা এই 
অকৃত্রিম স্পেহেব গল্প শুনিয়া! গিরিশের হৃদয় দ্রবীভূত হুইন্বা' পড়িত, এবং 
বয়োবৃ্ধির সহিত এই দেবী-প্রতিমাকে মানসপটে অক্কিত কবিয়া, 
ভক্তি-পুষ্পাঞ্জলি দানে পবম তৃপ্তি লাভ কবিতেন। মনে পড়ে, একদিন 
নিশীথকালে অপ্ররুতিস্থ অবস্থায় কালী প্রসন্ন প্রসঙ্গে তিনি অত্যন্ত অভিভূত 
হইয়া পড়েন, এবং মেই অবস্থায় তাঁহাব উদ্দেশে একটী কবিতা বচন! 
কবেন। কবিতাটা তিনি মুখে বলিয়। যান, আমি লিখিতে থাকি । এই 
স্থলে বল আবগ্যক, গিরিশচন্দ্রেব শেষজীবনের পঞ্চদশ বৎসরকাল আমি 
তাহাব লেখকেব কার্যে নিযুক্ত ছিলাম এবং প্রায় নিত্যসঙ্গীরূপে থাকিতাম। 
কবিতাটা সযত্ে বাথিয়! দিয়াছিলাম। নিয়ে উদ্ধত কবিলাম ঃ-- 


“প্রসন্ন তোমাবে কালী প্রসন্ন তোমার, 
'গিবি ভাই” দেখ কি গো আর ? 
তোমাব নাহিক মনে, অলৌকিক জগজ্জনে 
শুনি তব মুর্তি ছিল স্েহেব আধার-_ 
অলৌকিক লাবণ্য রূপের জ্যোতিহার ! 


মনে পড়ে করে ধ'বে বলিতে আমায়,__ 

“তুমি মাব কাছে যাও, আমারে বিদায় দাও!” 
--সংসার-নাগরে ভাসি ভূলেছি তোমায়, 

দেখ কি এখন আমি আছি কি দশায়? 


সরল সংসারে দেখ! তোমায় আমায়, 
জানন। আমার বিবরণ-_- 


১৫০ গারশচজা 


গুন গুন এ সংসার কুটালতামম্ন 
নহে- তুমি দেখেছ যেমন । 


ংসার মাঝাবে রণ করি দিবানিশি, 
হাসি গুধু বিলাসের হাসি। 
তুমি যদি ফিবে চাও, তুলাইয়ে নিয়ে যাও, 
গিবি বাবুঃ তোমার, দেখন! ছুথে ভাসি ! 


ভঙ্কুব এ দেছ আমি জানি চিবদিন ) 
জানি স্থ্ষ্টি কালেব অধীন; 
তথাপি তোমাবে চাই, মনে সাধ দেখ! পাই, 
স্বপ্নে যদি তুমি দেখ দাও একদিন,__ 
বলি, দিদি, তোমায়-_সংসাব কি কঠিন! 


“গবিশচন্ট্রের যে সময় দশ বংসব বয়ঃক্রম, সেই সময়ে তাহাব জেষ্ 
ভ্রাত। নিত্যগোপাল বাবুব মৃত্যু হয়। নিত্যগোপাল বাবু গিবিশচন্ত্রকে 
বড়ই ভালবাসিতেন, মুহ্র্তেব নিমিত্ত চক্ষুব অন্তরাল কবিতেন না, নির্মল 
ন্লেহেব আবরণে পৃথিবীর সকল আবিলতা। হইতে ভাইটিকে বক্ষা 
কবিতেন। ভ্রাতার লেখাপড়ায় যাহাতে সমধিক উন্নতি হয়, সেই উচ্চাশায় 
নিত্যগোপাল বাবু পিতাকে অন্ুবোধ কবিয়া গিবিশচন্দ্রকে হেয়ার স্কুলে 
ভণ্তি করিয়৷ দেন। নীলকমল বাবুব ঘবেব গাড়ী ছিল, অফিস যাইবাব 
সময় পুভ্রকে স্কুলে নামাইয়া দিয়! যাইতেন। বাল্যকাল হইতেই 
নিত্যগোপাল বাবুব ঘোড়ায় চড়িবাব সথ ছিল, এ নিমিত্ত স্নেহময় পিতা 
তাহাকে একটী ঘোড়া কিনিয়। দিয়াছিলেন, ক্রমে তিনি একজন ভাল 
অস্বারোহী হইয়া! উঠিয়াছিলেন। 


উনবিংশ পরিচ্ছেদ ১৫৯ 


লেখাপড়! ছাড়িয়। নিত্যগোগাল বাবু পিতার নিকট বিষয়কর্ শিক্ষা 
করিতেন। গিরিশচন্দ্র স্কুলে যাইলে তিনি বড়ই বিমন! হুইয়। থাঁকিতেন, 
তাইকে স্কুল হইতে আসিতে দেখিলেই আবার প্রফুল্ল হইয়া উঠিতেন। 
যেদিন গিবিশচন্দ্রকে দেখিবার নিমিত্ত মন বড়ই ব্যাকুল হুইক্ন! পড়িত,__ 
তখনই অশ্বারোহণে বাগবাজার হইতে পটলডাঙ্গায় ছুটিতেন এবং ভাইকে 
একবাব দেখিয়া! ও স্কুলে তাহাব কিরূপ লেখাপড়া হইতেছে, সে সংবাদ 
লইয়া প্রসন্নমনে বাড়ী ফিবিয়া আসিতেন। 

বাইশ বৎনর বয়সে বাতশ্লেম্বা বিকাবে হঠাৎ ইহাব মৃত্যু হয়। 
গিরিশচন্দ্রের বয়ঃক্রম তখন দশ বসব মাত্র। উপযুক্ত পুত্রেব অকালমৃত্াতে 
নীলকমল বাবু একপ ভগ্নোৎসাহ হইয়া পড়েন যে সেই হইতে গিবিশচন্দ্রে 
শিক্ষার দিকে তাহাব আর তেমন দৃষ্টি রহিল না। 

এক বৎসব যাইতে না যাইতে একাদশ বর্ষ বয়সে গিবিণচন্দ্র মাতৃহীন 
হইলেন। দুঃসহ পুত্রশোকের পর পত্বী-বিয়োগে নীলকমল বাবুব স্বাস্থ্য 
ভঙ্গ হইয়া পড়ে। পূর্বেই লিখিত হইয়াছে, স্ত্রীর মৃত্যুর তিন বসব পৰে 
তাহাব মৃত্যু হয়। গিরিশচন্দ্রের বয়ঃক্রম তখন চৌদ্দ বসব মাত্র। এই 
বয়সে তিনটি কনিষ্ঠ ভ্রাতার-_-কানাইলাল, অতুলকুষ্ণ ও ক্ষীরোদচন্ত্েব হস্ত 
ধরিয়া জেষ্টা ভগিনী কুষ্কিশোবীর অভিভাবকতায় গিবিশচন্ত্র সংসাবে 
প্রবেশ করিলেন। এই অল্প বয়সে সমাজমান্ত, স্থশিক্ষিত, উপার্জনশীল, 
পবম শ্নেহময় জনকেব অকাল মৃত্া-_গিরিশচন্দ্রেব ছুর্ভাগ্য তাহাতে আব 
সন্দেহ কি| 

জ্যোষ্ঠা ভগিনী কৃষ্ণকিশোবী এই বৃহৎ সংসাবে একজন পুরুষ 
অভিভাবকের প্রয়োজন বোধে ষোল বৎসর বয়সে গিবিশচন্দ্রেব বিবাহ 
দিলেন। বিবাহের দিন ভীষণ অগ্নিকাণ্ডেব কথা পূর্বেই বর্ধিত হইয়াছে। 

পিতৃবিয়োগে ন্বেচ্ছাচারী হইয়! হেয়ার স্কুল হইতে ওরিয়্যান্টাল 


১৫২ গিরিশচন্দ্র 


সেমিনারী, তথা হইতে আবার পাইকপাড়া গভর্ণমেন্ট বিদ্যালয়--এইরূপ 
ক্রমান্বয় স্কুল পরিবর্তনে বিশ্ববিদ্তালয়েব পবীক্ষায় তিনি কৃতকার্যযতা৷ লাভ 
কবিতে পাবিলেন না। * ইহাব কিছুদিন পূর্বে তাহার পঞ্চম! ভগিনী 
কৃষ্ণরঙ্গিনী কালগ্রাসে পতিতা হন। 

যে প্রতিভা লইয়া! তিনি জন্মগ্রহণ কবিয়াছিলেন, এই সময়ে সংযত 
হুইয়া লেখাপড়া শিখিলে হয়তো! তিনি ভবিষ্যতে «একজন বিথাত 
অধ্যাপক, উকীল বা চিকিৎসক হইতে পাঁবিতেন,_কিন্ত্ব বিধাতা তাহাব 
জন্য অন্ত পথ নির্দিষ্ট কবিয়! বাখিয়াছিলেন। 

তেইশ বৎসব বয়সে গিবিশচন্দ্রেব একটা পুব্র সম্তান জন্মগ্রহণ কবে। 
কিন্ত ছুঃথের বিষয়, পুত্রটী ছুই এক মাসেব অধিক জীবিত ছিল ন|। 


পা ০৯৯ এ লস শি শাীশিশক্দক্ল 


* পাইকপাড়া স্কুলের কথ! লিখিতে গিযা, গিরিশচন্দ্র-কথিত একটা উপদেশ 
শ্রণ হইল। শহিনি একদিন কথাপ্রসঙ্কে বলেন,__“তখন আমি পাইকপাড়া স্কুলে 
পড়িতাম। একদিন স্কুল যাইতেছি, দেখিলাম-_একটী আট বছরের সাহেবের ছেলে 
চিৎপুরের মাঠে একটা শিয়ালকে তাড। করিয়৷ ছুটিাছে। তখন চিৎপুরে অনেক 
পাটকল ও পাটের গুদাম হওয়ায়, অনেক সাহেব তথায় সপরিবারে বাস করিত'ন। 
আমি ব্যস্ত হইয| উচ্চৈঃম্বরে ছেঞ্চেটাকে বলিলাম, 'অহে দ্রীাডাও দাডাও-_কি ক'চ্চ? 
এখনই যে শিয়ালে কামডে দেবে।' সাহেবের ছেলেটী আমার চীতকারে থমকিয়। 
দ্রাড়াইল । আমি নিকটবত্বী হ্ইয়। ইংরাজিতে বলিলাম, “তুমি কি শিযালকে ভয় 
করো না?" ছেলেটা সদর্পে বুক যুলাইয়! বলিল-_'01) 170 1710, 0115 17015] 9111 
06 11151106060 20179 51811 ।'আরম সেই আট বছরের ছেলেটার সাহস ও নিভাকত। 
দেখিয়৷ আশ্চর্য হইলাম। আমর! মায়ের কোল হষ্টতে “ছেলেদের জুজু ও ভূতের ভয় 
দেখাইতে সুরু করি। তাহার পর পানে কোন বিপদ্দ ঘটে, এই আশশ্কায়_প্রত্যেক 
কার্যে বাধ! দিয় চেলেগুলিকে অত্যন্ত নিরীহ গোবেচার৷ করিয়া তুলি । ছেলেদের 
শিক্ষাদান সম্বন্ধে আমাদের মহিত ইংরাজের কতটা! পার্থকয দেখ ।” 


উনবিংশ পরিচ্ছেদ ১৫৩ 


১৮৬৮ স্বীষ্টাৰবে গিরিশচন্দ্রের দ্বিতীয়া ভগিনী কৃষ্ণকামিনী পরলোক 
গমন করেন। প্রথম পরিচ্ছেদে লিখিত হুইয়াছে,_-চুঁচুড়ার স্প্রসিদ্ধ 
সোমেদের বাটীতে ইহীাব বিবাহ হয়। ইনি ছুইটী পুত্র রাখিয়া যান । 
প্রথম পুত্র ভ্রিলোক্যনাথ সোম মহাশয় সাবঞ্জ্‌ হইয়া, কয়েক বৎসব গত 
হইল, ইহলোক ত্যাগ করিয়াছেন। দ্বিতীয় পুত্র শ্রীযুক্ত বিনোদবিহারী 
সোম মহাশয় উপস্থিত চুঁচুড়াতেই বাম কবিতেছেন। ইনি আজীবন, 
অধ্যয়নশীল। শৈশবাবস্থায় মাঁতৃহীন হওয়ায় গিবিশচন্দ্রেব চতুর্থ! ভগিনী 
দক্ষিণাকালী ধিনোদবাবুকে আপনার নিকট বাখিয়া আজীবন গর্ভধাবিণী 
জননীব স্থায় প্রতিপালন কবিয়াছিলেন। বিধবা হইয়া ইনি পিত্রালয়ে 
আসিয়৷ অবস্থান কখিলে, খুছ্ধমণি বাবুও (বিনোদ বাবুব শৈশবেব আদরেব 
নাম) তাহাব সঙ্গে আসিয়৷ মাতুলালয়ে অবস্থান কবেন। * 








সস স্পা পপ পপ সা পা ০০ 


* এই প্রসঙ্গে গিরিশচন্ত্র-কথিত একটী গল্প মনে পড়িল। তিনি একদিন 
বলিয়াছিলেন,__“ন"দিদি ( দক্ষিণাবালী। খুদ্ধমণিকে তাহার মায়ের মৃত্যুর পর নিজের 
কাছে রাখিয়! দিয়াছিলেন। এত ভাল বাগিতেন যে, একদও চক্ষুর আড করিতেন 
না। একদিন খুদুমণির বাঝ! হরলালবাবু আসির় 'বাড়ীতে ছেলেকে একবার দেখিতে 
চাহিতেছে' বলিয়! ছুই দ্দিনের কড়ারে থু€ছুমণিকে চুঁচুড়ায লইয়া যান, চুচুডায় লইয়া 
গিয়া কিন্তু আর পাঠাইয| দিতে চাহেন ন1। বলেন--“নিজের বাড়ী থাকিতে ছেলে 
পরের বাড়ী থাকিবে কেন? আমি আর পাঠাইব ন|।” এদিকে ন'দিদি ছেলের জন্য 
কাদিয! আকুল। লোকের উপর লোক পাঠান-কিন্তু তাহার! হরলাল বাবুর ধমক 
খাইয়| ফিরিয়া! ৪মাসে। অবশেষে ন'দিদ্ি আহার-নিদ্র! পরিত্যাগ করিলেন। একদিন 
কাদিতে কীদিতে আমাকে জিদ করিয়া বলিলেন,--তুমি ন৷ যাইলে, কেহই আমার 
থুদুমণিকে আনিতে পারিবে ন।। তাহার ম| নাই, সেখানে ছেলের অযত্র হইতেছে।” 
বাধ্য হইয়। আমাকে চু'চুড়া যাইতে হইল । সঙ্গে একজন ন্ুচতুর ভূত্য লইয়াছিলাম। 
আমি চু'টুড়া যাইয়। থুছুমণিকে পাঠাইবার জন্য হরলালবাবুকে বিশেষ অনুরোধ 
করিলাম; কিন্তু তিনি কোনওমতে রাজী হইলেন না। বাটার অন্তান্ক লোকের 


১৫৪ গিরিশচন্দ্র 


কুষ্চকামিনীর মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই গিরিশচন্দ্রের তৃতীয় ভ্রাতা 
কানাইলাল অকালে কাল-গ্রাসে পতিত হন। বাটাতে হাহাকার পড়িয়া 
যায়। কয়েকমাস পূর্বে হাটখোলাব সুগ্রসিদ্ধ দত্তদেব বাটীতে বাধিকানাথ 
দত্ের কন্াব সহিত ইহাব বিবাহ হইয়াছিল। ভাই তিনটা যাহাতে 
সুশিক্ষিত হয়, গিরিশচন্দ্র সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখিতেন। এফ, এ 
পরীক্ষা! দিবাব অল্পদিন পূর্বেই তাহার জব হয়, সেই জ্ববেই মৃত্যু ঘটে। 
গিবিশচন্দ্র কানাইলাল অপেক্ষা তিন বংসবের বড় ছিজেন; তাহার 
মৃত্যুতে তিনি সহোদর এবং সুহাদ উভয়ই হাবাইলেন। 

এই বসব গিবিশচন্ত্র যেইরূপ উপধু্যপবি ছুইটী গভীব শোক 
পাঁইয়াছিলেন, সেইরূপ একটা পুত্রবত্ুও লাভ কবেন। ১৮৬৮ খ্রীষ্টাবে, 
১১ই ডিসেম্বব (১১৭৫ সাল, ২৮শে অগ্রহায়ণ ) গিবিশচন্দ্রেব দ্বিতীয় পুত্র 
শ্রীযুক্ত ন্বেন্্রনাথ ঘোষ (দানিবাবু) শ্ঠামপুকুবস্থ তাহার মাতুলালয়ে 
ভূমিষ্ঠ হন। গিধিশচন্ত্রের বয়স তখন পঁচিশ বৎসব। বর্তমান বঙ্গনাটাশালাব 
অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা স্ুুবেন্ত্রবাবুর সহিত পাঠক মাত্রেই পবিচিত। 
প্রথম পুত্র-বিয়োগেব পব এই নব শিশুব অভ্যুদয়ে বাটাতে আনন্দ কোলাহল 
উত্থিত হয়। 

স্্রেন্দ্রনাথেব জন্মগ্রহণেব প্রায় চারি বসব পবে গিবিশচন্ত্রেব প্রথমা 


ররর এরর পরপর পাপা. লস 


পাঠাইবার ততটা অমত ছিল না, তবে হরলাল বাবুর ভয়ে কিছু বলিতেও পারিতেন ন!। 
আমি তাহাদের সহিত পরামর্শ করিয়! আহারাদির পর বৈঠকখানায় হরলীলবাবুর সহিত 
নানাবপ গল্পগুজব করিতে লাগিলাম, ইতিমধ্যে উপদেশমত আমার ভূত্য খুছমণিকে 
লইয়া নৌকাযোগে কলিকাতায় রগন। হইল। আমি তারপর এক! কলিকাতা 
আসিয্লাছিলাম। হরলাল বাবু সঙ্গে আমিয়! আমাকে গ্যাঁমবাবুর ঘাটে নৌকার তুলিয়া 
দিয়া গেলেন। পরে বাটী গিয়া যখন শুনিলেন, ছেলেকে ভূতা বহপূর্বেধ লইয়! গিয়াছে, 
তিনি ক্রোধে ত্বলিয। উঠেন। অনেক বুঝাইয়! অবশেষে বাটার লোকে তাহাকে 
গ্রকৃতিস্থ করেন। 


উনবিংশ পরিচ্ছেদ ১৫৫ 


কন্তা সরোজিনী জন্মগ্রহণ করে। * স্থবেন্ত্রবাবুর জন্মের পর নুনাধিক 
ছয় বংসরকাল গিরিশচন্ত্র পারিবারিক শাস্তিলাভ করিয়াছিলেন। এই 
সময় বাগবাজাবেব সখেব থিয়েটারে ইনি সধবাব একাদণী, লীলাবতী 
এবং সান্ন্যাল-ভবনে অভিনীত কৃষ্ণকুমারী নাটকে যথাক্রমে নিমটাদ, 
ললিত ও ভীমসিংহেব ভূমিকাভিনয় করিয় প্রতিভাবান অভিনেতা বলিয়৷ 
যশঃলাভ করিয়াছিলেন। কার্ধ্যদক্ষতায় অফিসেব বড় সাহেবেব প্রি্পপাত্র 
হইয়াছিলেন এবং প্রত্যেক বসব বেতন বুদ্ধি হইতেছিল। এই সময়েই 
চতুর্থ ভ্রাতা অতুলকৃষ্ণ বি, এল পবীক্ষায় উত্তীর্ঘ হইয়া! হাইকোর্টে ওকালতি 
কবিতে আবস্তভ করেন । 

জিশ বসব বয়ঃক্রমকালে গিবিশচন্দ্রেব বাটাতে আবার অশাস্তি দেখ! 
দেয়। এই সময়ে ত্তাহাব পত্বী একটা সন্তান প্রসব কবিয়। স্থতিকা-গীড়ায় 
আক্রান্ত হন। শিশুটাও জীবিত ছিল না। ইহাব অল্পদিন পবেই 
গিবিশচন্ত্রেব সর্বকনিষ্ঠ ( পঞ্চম ) ভ্রাতা ক্ষীরোদচন্দ্র একুশ বসব বয়সে 
ইহলোক তাঁগ কবেন। সন্ধাকালে বন্তুপাড়া পল্লীব জনৈক প্রতিবেশী 
বাঁটাতে ইনি নিমন্ত্রণ বাখিতে গিয়াছিলেন, তথায় হঠাৎ অসুস্থ হইয়া 
পড়ায় ভোজন না কবিয়াই বাটাতে ফিবিয়া আসেন। সেই বাত্রেই 
তাহার মৃত্যু হয়। বিবাহ তখনও হয় নাই, নানা স্থান হইতে সম্বন্ধ 
আসিতেছিল মাত্র । সর্বকনিষ্ঠ ভ্রাতাব এই আকন্মিক মৃত্যুতে গিবিশচন্তর 
বড়ই মর্মাহত হইয়৷ পড়িয়াছিলেন। 

এই সময়ে গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটার খোল! হয়। মানসিক অশাস্তি 
ও নানা কাবণে গিবিশচন্দ্র প্রথম হইতে এ সম্প্রদায়ে ছিলেন না। 
বিশেষরূপ অনুরুদ্ধ হইয়া এক মাম পরে অবৈতনিকভাবে তথায় যোগদান 
করেন। 

* ইনিই উদীয়মান অভিনেতা গ্রমান্‌ ছূর্গা প্রসন্ন বন্র জননী । 


বিংশ পরিচ্ছেদ 


0৬টি নযাস্নান্য্যাল্লে লিল্িম্পচকক্ 


গ্রেট ন্তাসান্তাল থিয়েটাবে গিবিশচান্দ্রব যোগদান কবিবাব পূর্বে 
কিরূপে গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটাবেব স্থাষ্টি হইল এবং কিরূপ অবস্থায় 
গিরিশচন্দ্র তথায় যোগদান কবিলেন, তৎসম্বন্ধে কিছু বলা আবশ্তাক। 
বেঙ্গল থিয়েটাব ইহাব পূর্বে প্রতিষ্ঠিত নী হইলে গ্রেট ন্তাসান্তাল থিয়েটাব 
হইত কি না সন্দেহ, সুতবাং সর্ধপ্রথমে বেঙ্গল থিয়েটাব সম্বন্ধে ছুই 
চাবি কথা বলিব । 


তভ্্ল শ্রিজেভোল্ল জ্রর্ভি? 


সার্ন্যাল-ভবনে ন্ভাসান্যাল থিয়েটাবেব অভিনয় দেখিয়া, সিমলার 
নুপ্রসিন্ধ জমীদার স্বর্গীয় আশুতোষ দেব ওরফে "্ছাতু বাবুব” দৌহিত্র 
স্বর্গীয় শবচ্ন্ত্র ঘোষ মহাশয় একটা সাধাবণ নাট্যশাল1 সংস্থাপনে উদ্যোগী 
হন। দেশেব গণামান্ত লোক লইয়। তিনি এই নব নাট্যুশালা প্রতিষ্ঠার 
নিমিত্ত একটী কমিটি সংগঠিত কবেন। প্রাতঃস্মবণীয় ঈশ্ববচন্দ্র বিগ্ভানাগব, 
মহাকবি মাইকেল মধুস্থদন দত্ত, খামবাগানের দত্তবংশীয় সু প্রসিদ্ধ উমেশচন্ত্র 
দত্ত (0 0. 7৮), পণ্ডিত সত্যব্রত সামাশ্রমী প্রভৃতি মনীষিগণ এই 
কমিটির মেম্বাব ছিলেন। সিন্দুরিয়াপটার ৬গোপাল লাল মল্লিকের 
বাড়ীতে আচাধ্য কেশবচন্ত্র সেনেব উদ্ভোগে পবিধবা। বিবাহ, নাটক এবং 
স্বর্গীয় ঘ্বারকানাথ ঠাকুরের মধ্যম পুল্র গিরীন্ত্রনাথ ঠাকুরেব পুত্রগণের 
উদ্ভোগে তীহাদের জোড়া্সাকো ভবনে “নব নাটক+ অভিনয় দেখিয়া, 


বিংশ পরিচ্ছেদ ১৫৭ 


বিদ্যাসাগর মহাশয় বেশ বুঝিয়াছিলেন যে, নাট্যশাল! সমাজের কুসংস্কার 
দূব করিবার এক্টা প্রকৃষ্ট উপায়। 


শরচ্চন্ত্র বাবু তাহার মাতামহের নিকট হইতে তাঁহার বৃহৎ ভবনেব 
সম্ধুথস্থ মাঠে কিয়দংশ ভাড়া লইলেন এবং বাল্যবন্ধু গ্রপ্রসিদ্ধ অভিনেতা 


দূ 8 
2 





্বগয় বিহারীলাল চট্টোপাধ্যায় 


বিহাবীলাল ' চট্টোপাধ্যায়, অখিলচন্ত্র চট্টোপাধ্যায় প্রভৃতি বন্ধুগণেব সহিত 
মিলিত হইয়া, খোলার ঘর বীধিয়া] থিয়েটার-বাটী নির্মাণ আবস্ত 
করিলেন। ( এই স্থানে উপস্থিত বিডন স্কোয়ার পোষ্টাফিসের নৃতন বাটা 
নির্মিত হইয়াছে । ) থিয়েটারের নিমিত্ত মাইকেল মধুসদন দত্ত খয়ং “মায়া- 
কানন, নামক একখানি নাটক প্রণয়নে প্রবৃত্ত হইলেন। স্ত্রীচরিত্র 


১৫৮ গিরিশচন্দ্র 


অভিনয়ের নিমিত্ত বালক-সংগ্রহের চেষ্টা হইতে লাগিল। কিন্তু 
মাইকেল মধুস্থাদন, চিরদিনই নূতনত্বেব পক্ষপাতী, তিনি বলিয়৷ বসিলেন,_ 
“ধালক গরইয়। অভিনয্ব কৰিলে অভিনয় কখনই স্বাভাবিক হইতে পারে না, 
্রীচবিত্রের অভিনয় ল্লীলোক লইয়াই করা কর্তৃব্য |” বহু তর্ক-বিতর্ক করিয়া 
অবশেষে অভিনেতাগণ বাবাঙ্গনা৷ লইয়৷ অভিনয় কবিতে সম্মত হইলেন। 
কমিটিও পবিশেষে ইহাব অনুমোদন করিলেন )--কেবল বিগ্তাসাগর 
মহাশয় এ গ্রস্তাবে সম্মত ন। হইয়! থিয়েটাবেব সংশ্রব ত্যাগ কবিলেন। 
ইততিপূর্ব্বে মধুস্থদন পঞ্চকোটে ব বাজাব ম্যানেজাব ছিলেন, কিন্ত 
নানাকারণে রাজার প্রতি বিবস্ত হইয়৷ কার্যে জবাব দিয়া কলিকাতায় 
চলিয়া আসেন। এই সময়ে তিনি উমেশচন্দ্র দত্তেব উৎসাহে এই নব 
নাট্যশাল। প্রতিষ্ঠার আয়োজনে যোগদান কবেন। তিনি মনে কথিয়।- 
ছিলেন, স্বয়ং নাটক লিখিয়া ও শিক্ষাদান কবিয়া বঙ্গ নাট্যশালাব, 
উৎকর্ষতা সাধন কর্ববেন এখং সেই সঙ্গে নিজেবও অর্থোপার্জনেব 
একটা উপায় হইবে । কিন্তু অন্পদিন পরেই ইনি কঠিন গীড়ায়, 
আক্রান্ত হন। শয্যাশাস্িত অবস্থাতেই তিনি "মায়াকানন নাটক 
সমাপ্ত কবিয়া, নাটকখানির ন্বত্ব-দারুণ অর্থাভাব বশতঃ-_পাচখত, 


টাকায় শরৎ বাবুকে বিক্রয় করেন। 
উত্তরোত্তর মাইকেলের পীড়া বুদ্ধি হইতে থাকায়, সম্প্রদায় নৃতন নাটকেব 


রিহারন্তাল না দিয়! তাহার পুবাতন “শর্িষ্ঠা, নাটক অভিনয়েই থিয়েটার 
খুলিবাব সঙ্কল্প কবিলেন। গোলাপসুন্দরী ( স্ুকুমাবী দত্ত) এলোকেণী, 
জগত্তারিণী এবং শ্।ম নামী চাবিজন স্ত্রী অভিনেত্রী লয়! ইহারা 'শন্বিষ্ঠ।ব” 
মহল! দ্রিতে আরম্ভ করিলেন। রঙ্গালয়ও প্রায় প্রস্তুত হইয়া আদিল, এমন 
সময়ে গুনা গেল, মাইকেলেব মৃত্যু হইয়াছে ( ১৮৭৩ থুষ্টাব, ২৯শে জুন, 
রবিবাব, বেলা! প্রায় ২ টার সময়)। যাহাই হউক সম্প্রদায় নূতন নাট্য- 


বিংশ পরিচ্ছেদ ১৫৯ 


শালার “বেঙ্গল থিয়েটার” নামকরণ পূর্বক ১৮৭৩ খুষ্টাব্ষ, ১৬ই আগষ্ট 
(১২৮* সাল, ১ল৷ ভাদ্র ) শর্শিষ্ঠা নাটকের প্রথম অভিনয় ঘোষণ। করেন । 
কিন্তু "শর্দিষা” নাটক অভিনয়ে সাফল্য লাভ করিতে ন! পারিয়! সম্প্রদায় 
বিশেষ চিন্তিত হইয়| পড়িলেন। 

এই সময়ে তারকেশ্বরেব “মোহাস্ত ও এলোকেশী' লইয়া বাঙ্গলাদেশে 
একটা তুমুল আন্দোলন চলিতে থাকে | বেঙ্গল থিয়েটার এই হুন্ছুগে 
“মোহান্তব এই কি কাঙ্জ 1? নামক একখানি নাটকের অভিনয় ঘোষণা 
কবেন। নাটকখানি বড়ই সময়োপযোগী হুইয়াছিল। প্রত্যেক অভিনয়- 
বজনীতে এত ভিড় হইত, যে স্থানাভাবে দর্শকগণ দলে দলে হতাশ 
হইয়া! ফিবিয়া যাইত । 

€গ্রনৈ ন্ঠাস্নান্যাল খিস্েেভোল্লেব্র শশুসন্ভি 

এই সময়ে এক রাত্রি নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ধর্মদাস সুব, 
শ্বুক্ত তুবনমোহন নিয়োগী মহাশয়কে সঙ্গে লইয়া বেঙ্গণ থিয়েটাব 
দেখিতে আসেন, কিন্তু এত ভিড় যে তাহাবা চারি টাকার টিকিট 
অট টাক! দিল্ন। কিনিতে চাহিয়াও পাইলেন না। ত্ববনমোহন বাবু 
ধনাঢ্য জমীদাবের পুত্র; তখন পিতৃবিয়োগ হওয়ায় বিপুল সম্পত্তিব 
অধিকাবী হইয়াছেন। টিকিট ন! পাইয়। তিনি উত্তেজিত হইয়া! উঠিলেন, 
এবং ফিবিবার পথে বিডন উগ্ভানেব কোণে আসিয়া তিন জনে 
পরামর্শ করিয়া স্থিব কবিলেন--একটা নূতন থিয়েটার করিতেই 
হইবে। ভূবনমোহনবাবুব অর্থে নগেন্দ্রবাবু এবং ধর্মদাসবাবু, বিপুল 
উদ্ধমে কাধ্যক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইলেন। সিমলানিবাসী মহেন্ত্রদাসের, 
বর্তমান মিনার্ভা থিয়েটাব যথায় প্রতিষ্ঠিত, খালি জমী মাসিক চক্লিশ 
টাক। ভাড়ায় পাচ বৎদরেব জন্ত লিজ লওয়া হইল । ধর্মীদাসবাধু 
অক্লান্ত পবিশ্রমে লুইদ থিয়েটাবেব আদর্শে কাণ্ঠনির্মিত বঙ্গালয় নির্মাণ 


১৬০ গিরিশচন্দ্র 


করিলেন। ১৫৭৬--৭৭ গ্রীষ্টাৰে লগুনে জেমস্‌ বার্ধেজ নামক জনৈক 
সুত্রধার-ব্যবসায়ী নট কাষ্ঠনির্শিত রঙ্গাণয় প্রথম নির্মাণ করেন। প্রায় 
তিন শত বৎসর পরে আমাদের ধর্মদাসবাবুও কলিকাতায় বাঙ্গালীর জন্ত 
প্রথম কাষ্ঠনির্মিত রঙ্গালয় নির্মাণ করিলেন । 

১৮৭৩ খ্রীষ্টাব্, ৩১শে ডিসেম্বর, শনিবার মহাসমারোহে গ্রেট স্তাসান্তাল 
থিয়েটার খোল! হয় । ইহাব পাচ মাস পূর্বে বেঙ্গল থিয়েটার প্রতিষ্ঠিত 
হয়। সুতরাং সাধারণ বঙ্গনাট্যশালাগুলির মধ্যে খোলাব ঘব হইলেও 
বাটা নির্মাণ হিনাবে বেঙ্গল থিয়েটাবের নাম প্রথম উল্লেখযোগ্য | 

“কাম্যকানন” নাটক লইয়া গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটাব খোলা হয়। 
হঠাৎ সেদিন থিয়েটাবে অগ্নিকাণ্ড উপস্থিত হওয়ায় “কাম্যকানন? 
কিয়দংশমাত্র অভিনীত হুইয়াই বন্ধ হইয়া যায়। থিয়েটাবেব সম্মুখে 
501 [18170 হইতে হঠাৎ আগুন জলিয়। উঠে । দেওয়ালের গায়ে 
গ্যাসবাক্সে চিমনি বসান হয় নাই, সে জন্ত উত্তাপের আধিক্য বশতঃ 
এই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়াছিল। “গ্রেট স্তানান্তাল থিয়েটারের” স্বত্বাধিকারী 
শ্রীযুক্ত ভূখনমোহন নিয়োগী মহাশয় বলেন,__্থিয়েটারের খাহিরেব মাথায় 
ঘড়ি দিবার ব্যবস্থা কর! হইয়াছিল । তখন ঘড়ি তৈয়ারী না হওয়ায় 
সেই স্থানে ধর্মদাসবাবু একটী পিচবোর্ডে ঘড়ি স্থুচিত্রিত করিয়া 
তাহার চারিপাশে লাল সালু দিয়া বাহার করেন এবং তাহার পারে 
গ্াসলাইট জালাইয়। দিয়াছিলেন। শক্র পক্ষের লোক আসিয়। লাঠি 
দিয়া খোচাইয়া সেই সালু গ্যাসের মুখে লাগাইয়া দেয়। আগুন 
জ্বলিয়া উঠিলে হৈ-চৈ পড়িয়া যায়। দর্শকগণ প্রাণভয়ে বাহির হইয়া 
পড়ে।” যাহাই হউক বনুলোকের সমবেত চেষ্টা শীঘ্র অগ্নি নির্বাপিত 
হয়। “কাম্যকানন” আর অভিনীত হয় নাই। পরদিন ( ১৮৭৪ খ্বীঃ 
১ল! জানুয়ারী ) বেলভেডিয়ারে 78:00) [৪1 উপলক্ষে গ্রেট স্তাসান্তালে 


বিংশ পরিচ্ছেদ ১৬১ 


নীলদর্পণ নাটক অভিনীত হয়। অতংপর সান্যাল-ভবনে "্নাসান্তাল 
থিয়েটার কর্তৃক অভিনীত দীনবন্ধুবাবুর নাটকগুলির পুনরভিনয় 
করিয়া ইহারা কৰিবর মনোমোহন বস্থু মহাশয়ের «প্রণয়পরীক্ষ।” নাটক 
প্রথম অভিনয় করেন। অভিনয় দর্শনে দর্শকগণ শ্রীতিলাভ করিলেও 
সেরূপ অর্থ সমাগম হয় নাই। 

১১ই ফেব্রুয়ারী তারিখে “অমৃতবাজার পত্রিকা». সম্পাদক শিশির- 
কুমার ঘোষ মহাশয়ের বিরচিত প্বাজারের লড়াই” নামক একখানি 
সামগ্িক নাটক গ্রেট স্তাসান্তালে প্রথম অভিনীত হয় । কলিকাতার বিখ্যাত 
শীলেদের সহিত বাজাব লইয়। হগ সাহেবের যে দাঙ্গা হয়, সেই ঘটন। 
লইয়া এই নাটকখানি রচিত হইয়়াছিল। 

ইহার প্রায় দেড় মাস পূর্বে (২ শে ডিসেম্বর, ১৮৭৩ খুঃ ) বেঙ্গল 
থিয়েটারে বিহারীলাল চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক নাটকাকারে পরিবস্তিত 
হইয়া বহ্কিমচন্দ্রেব “ছুর্গেশনন্দিনী প্রথম অভিনীত হয়। থিয়েটারের 
সত্বাধিকারী শরচ্চন্দ্র ঘোষ মহাশয় জগৎসিংহের ভূমিক1 গ্রহণে ঘোড়ায় 
চড়িয়া রঙ্গমঞ্চ অবতীর্ণ হইয়! দর্শকগণকে চমতকৃত করিয়। দিতেন ।* 
দুর্গেশনন্দিনীর অভিনয়ও খুব জমিয়নাছিল এবং দর্শক সমাগমও যথেষ্ট হইত। 

* রঙ্গমঞ্চের উপর ঘোড়। বাহির করা_শরৎ বাবুই প্রথম প্রবন্তিত করেন। এ 
নিমিত্ত বেঙ্গল থিয়েটারের প্র্যাটফরম আগাগোড়। মাটীর ছিল, মাঝে খানিকটা! তন্ত। 
বসান থাকিত মাত্র। শরৎবাবু একজন বিখ্যাত ঘোড়সওয়ার ছিলেন। প্রতিভা- 
। শালিনী প্রবীণ! *“অভিনেত্রী প্রীমতী বিনোদিনী দাসী বলেন,--“আমরাও দেখেছি, 

ষ্টেজে ঘোড়া! বেরিরে ছুষ্টমি কচ্চে, কিন্ত যেই শরৎবাবু ঘোড়ার গায়ে হাত দিলেন, 
অমনি নে শান্ত শি্ট, যেন কিছুই জানে না। শরৎবাবুর একট! নখের টাটু, ঘোড়! ছিল ; 
তিনি দেই ঘোড়া চ'্ড়ে ঠাদ্বের বাড়ীতে একতলা থেকে সিড়ি তেঙ্গে তেতালায় 
ঠাকুরধরের সাম্‌নে গিয়ে দাড়াতেন। আর তার দিদিস! ঠাকুরের প্রনার্দী ফলমূল 
'ঘোড়াকে খেতে দিতেদ।” 
১১ 


১৬২ গিরিশচন্দ্র 


গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটারে ধর্মমদাসবাবু প্রথমে ম্যানেজার এবং 
নগেন্দ্রনাথ বন্য্োপাধ্যায় ও তাহার জ্যেষ্ঠ দেবেন্ত্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভ্রাতৃদ্য় 
প্রধান পরিচালক ছিলেন। 

ষে সময়ে গ্রেট ন্াসান্তাল থিয়েটার খোল। হয়, প্রায় সেই সময়েই 
গিরিশচন্মের সর্ব কনিষ্ট ভ্রাতা ক্ষীরোদচন্দ্রের হঠাৎ মৃত্যু হয়। মানসিক 
অশান্তি বশতঃ তিনি যে থিক্নেটাব খুলিবাঁর প্রথম হইতে ছিলেন 
না, ইহাই প্রধান কারণ নহে। বস্ততঃ ধর্মদাসবাবু এবং নগেন্্রবাবুই 
ভূবনমোহনবাবুকে থিয়েটার করিবাব নিমিত্ত প্রথমে উত্তেজিত 
করিয়াছিলেন; তাহাদেৰ বিশেষরূপ উৎসাহেই পিতৃহীন ধনাঢ্য কিশোববয়স্ক 
ভুবনমোহন বাবু বছ অর্থব্যয়ে নূতন নাট্যশালা নিম্মাণ কবেন এবং 
তাভাদের মতানুযায়ী চলিতে থাকেন। গিরিশবাবুব সহিত তাহাদের 
কোনওরূপ অকৌশল ছিল না। তবে নগেন্দ্রবাবু প্রভৃতিব কতকটা 
ভবদা! ছিল, গিবিশচন্দ্রেব সাহায্য না লইয়াও তাহাবা থিয়েটার 
চালাঈতে পারিবেন। কিন্ত প্রথমেই “কাম্যকানন” অভিনয়ে অকৃত- 
কাধ্য হইয়া! ইহারা অনেকটা ভগ্রোৎসাহ হইয়া! পড়েন। মাসাবধি 
পুরাতন নাটকাভিনয়ে থিয়েটার চালাইয়া যখন তীহাবা দেখিলেন,__ 
থিয়েটারেব বিক্রয় ক্রমশঃ কমিয়া যাইতেছে এবং বেঙ্গল থিয়েটাব 
'ছুর্গেশনন্দিনী” অভিনয় কবিয়া স্ুযুশে এবং প্রচুব অর্থাগমে দিন দিন 
সুপ্রতিষ্ঠিত হইয়া উঠিতেছে, তখন তাহারা আব নিজ শক্তিব উপর নির্ভর 
ন| করিয়! গিবিশচন্দ্রেব শরণাপন্ন হইলেন । 


৮ 


০৬লমীক্তি্নী৯” ভিন্নমত 


গ্রেট স্তাসান্তাল সম্প্রদায় কর্তৃক অনুরুদ্ধ হুইয়া গিবিশচন্ত্র অবৈতনিক 
ভাবে বঙ্কিমচন্ত্রের “মৃণালিনী” নাটকাকারে পরিবর্তিত করিয়। দেন, 


বিংশ পরিচ্ছেদ ১৬৩ 


এবং স্বয়ং পণ্ডপতির* ভূমিকাভিনয়ে স্বীকৃত হন। ১৮৭৪ খ্রীঃ, ১৪ই 
ফেব্রুয়ারী, গ্রেট স্তাসান্তালে মৃণালিনীর প্রথমাভিনয় হয়। প্রথমাভিনক় 


রজনীর অভিনেতাঁগণের নাম $-- 


পশ্তুপতি 
হৃযীকেশ 
হেমচন্ত্র 
দিখিজয় 
ব্যোমকেশ 
মাধবাচাধ্য 
বখতিয়াব খিলিজি 
জনার্দীন 
মুণালিনী 
গিরিজায়। 
মনোরম 
মণিমালিনী 


গিরিশচন্দ্র ঘোষ । 

অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী। 

নগেন্দ্রনাথ বন্দোপাধায়। 

শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্ধু । 

অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় ( বেলবাবু )। 
মৃতিলাল স্ব । 

মহেন্ত্রলাল বসু । 

রাধাপ্রসাদদ বসাক। 

বসস্তকুমাব ঘোষ। 

আগুতোব বন্দযোপাধ্যায়। 

শ্রীযুক্ত ক্ষেত্রমোহন গঙ্গোপাধ্যায় । 
মহেন্দ্রনাথ সিংহ। 


প্রত্যেক ভূমিকাই স্থযোগ্য অভিনেতাগণ কর্তৃক অভিনীত হওয়ায় 
নাট্যামোদীগণ “মুণালিনী* অভিনয় দর্শনে অতীব আননলাভ করিয়া- 
ছিলেন। পণ্তুপতিব তৃূমিকাভিনয়ে গিরিশচন্দ্র অদ্ভুত অন্চিনক্ন-প্রতিভার 
পরিচয় দিয়াছিলেন। ক্ষেত্রমোহন বাবু বলেন,-_-্যে 'ম্ত্ে পণুডপতি 
মনোরমার মুখে পরিচয় পাইলেন, ইনিই কেশবের কন্। ও তাহার 


পরিনীত। ভার্য্যা, সে 


দৃপ্তে পশুপতি'-বেশী গিরিশচন্দ্রেব তৎকালীন 


বদনমণ্ডলের অপূর্ব পরিবর্তন__এখনও যেন চক্ষের সম্মুধে দেখিতেছি__- 
তাহার কণ্ঠস্বরের সেই বিচিত্রতা-_-এখনও যেন কর্ণ পটাহে প্রতিধ্বনিত 
হইতেছে, মুখে বলিয়্া। তাহা ঠিক বুঝান যায় না। যে সময়ে মুসলমান- 


বি্টী পরিচ্ছেদ ১৬৫ 


পরিচ্ছদ-পরিছিত পণ্ডপতি বিধর্মী সৈম্তবেষ্টিত হইয়া রাজপথে চণিয়াছেন, 
লে সময়ে পণুপতির সেই উন্মাদ অবস্থা-_মধ্যে মধ্যে জ্ঞানসঞ্চার__ 
গিরিশবাবু অতি আশ্চর্ধযভাবে দেখাইতেন-__মন্তমুগ্ধের স্তায় দর্শকগণ সেই 
অলৌকিক অভিনয় দেখিতেন |” 

নাট্যাচার্ধ্য অযৃতলাল বাবু বলেন,__পনাটকের শেষ দৃশ্তে মেই অগ্রি- 
রাশির মধ্যে অষ্টভূজ! মৃত্তবি আলিঙ্গনে গিরিশচন্দ্রের অদ্ভুত অভিনয় নৈপুণ্য 
দর্শনে আমরা! পর্যন্ত অভিভূত হইয়া পড়িতাম--দর্শক তো৷ দুরেব কথা !” 

সান্ন্যাল-ভবন হইতে স্তাপান্তাল থিয়েটার উঠিয়া যাইবার পর নাট্যাচার্য্য 
অর্ধেন্দুশেথর প্রায়ই মফঃস্বলে ঘুরিয়। বেড়াইতেন, মধ্যে মধ্যে কণিকাতায় 
আসিয়। আবার চলিয়া! যাইতেন। গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটার যে দিন খোলা 
হয়, সে দিন তিনি নিমন্ত্রিত দর্শকরূপে থিয়েটার দেখিতে আসিয়াছিলেন। 
মূণীলিনী নাটক খুলিবার পূর্বে তিনি কলিকাতায় আসির় বন্ধু বান্ধবদেব 
অনুরোধে অল্পদিনের জন্ত থিয়েটারে যোগদান করেন এবং হৃধীকেশের 
ভুমিক] গ্রহণ করিয়৷ আবার রঙ্গমঞ্জে অবতীর্ণ হন। 'মনোরমা*র ভূমিকা 
শ্রীযুক্ত ক্ষেত্রমোহন গঙ্গোপাধ্যায় এত সুন্দর অভিনয় করিয়াছিলেন যে 
গিরিশচন্ত্র মৃণালিনীর বিজ্ঞাপনে লিখিয়! দিয়াছিলেন, -“[.0৫] 1০91: 6০ 
9০: 71070010109) 518 101))3 ৪1116 1151” যাহাই হউক বেল 
থিয়েটারে অভিনীত “ছুর্েশনন্দিনীর+ স্তায় গ্রেট স্তালান্তাল থিয়েটারও 
'মৃণালিনী' অভিনয়ে যথেষ্ট গৌরব লাত করিয়াছিল। 

নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনিষ্ঠ ভ্রাত। লব্ধ প্রাতিষ্ঠ অভিনেতা কিরণচন্দ্র 
বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় ইতিপূর্বে বেল থিয়েটারে যোগদান করিয়াছিলেন। 
তাহার নিকট হইতে গিরিশচন্ত্র কর্তৃক নাটকাকারে গঠিত 'মৃণালিনীর 
পাওুলিপি পাইয়! বেঙ্গল থিয়েটার সম্ত্রদায়ও ইহার পর বছুকাল ধরিয়া 
এই নাটকের অভিনয় করেন। কিরণবাবু “পপুপতির' ভূমিক! অভিনয় 


১৬৬ গারশচন্দ্র ' 


করিতেন। গোলাপনস্ুন্দরীর “গিরিজায়ার গান শুনিবার নিমিত্ত বছু 
দর্শকের সমাগম হইত।। 






গাম |কসণচন্ত্র এপো)]পাধ্যায় 

গিরিশচন্দ্র যে সময়ে ( ১৮৭৪ থুষ্ঠাবে ) “মৃণালিনী, নাট্যাকারে পরিবন্তিত 
করেন, তখন পর্যাস্ত তিনি স্বয়ং কোন নাটক রচনা করেন নাই। 
আমর! “মৃণালিনী” হইতে গিরিশচন্দ্র-লিখিত দ্বইটা দৃশ্তের কিয়দংশ 
পাঠকগণকে উপহার প্রদান করিলাম । এতৎ পাঠে পাঠকগণ পঞ্চাশ বৎসর 
পূর্ব্বে গিরিশচন্দ্রের রচনা-শক্তির পরিচয় পাইবেন। 

[ বঙ্কিমচন্দ্রের 'মৃণ।'লিনী* ধাহার! পাঠ করিয়াছেন, তাহাদের স্মরণ 
থকিতে পারে যে, নবদ্বীপাধিপতি বুদ্ধ লক্ষ্ণসেনের ধর্মাধিকার পঞ্জপতির 
সহিত মুনলমান সেনাপতি বখতিয়ার খিলিজির এইরূপ ষড়যন্ত্র হয় যে, 


বিংশ পরিচ্ছেদ ১৬৭ 


পণ্ডপতি যুদ্ধে নিরস্ত থাকিলে বখতিয়ার নবদ্বীপ অধিকার করিয়া তাহাকে 
বঙ্গ সিংহাসনে বসাইবেন। পণুপতির এই বিশ্বাসঘাতকতা ও ম্বদেশ- 
দ্রোহিতার ফলে বখতিগ়্ার নির্বিবাদে বঙ্গ দিংহানন লাভ করিলেন বটে, 
কিন্তু নিজ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করিলেন না। পরস্ত পণ্ডপতিকে বলিলেন, 
“যে অবিশ্বাপী-_সে নরাধম কখনও সিংহাসনের উপযুক্ত নয়। এক্ষণে 
তুমি বন্দী।» 

এই সময় কারারুদ্ধ পণুপতির মনে যে আক্ষেপের ঝড় উঠে, তাহারই 
চির গিরিশবাবু এই ভাবে ফুটাইয়াছেন £__ 


শ্রম ভুস্্য 
( ৪র্থ অঙ্ক, ৩য় গর্ভীঙ্ক) 
কারাগারে- পশুপতি 


পশুপতি। রাজ্যনাশ-_কারাবাস-_করম্মদদোষে আমার সকলই উপস্থিত । 
কিন্ত আমি কেমন ক”রে মনোরমাকে বিশ্বৃত্ব হব! মনোরমা, তোমার 
জন্য সব, তোমার কথা না শুনে আমি সব হারালুম। কিন্তু তোমাহারা 
হয়ে কি পশুপতি জীবন ধারণ করতে পারে? কে বলে- পৃথিবী 
হুঃখময়। পৃথিবীতে এমন কি দুঃখ আছে যে পণ্ডপতিকে গীড়িত 
করতে পারে? নরক-যন্ত্রণা, উদয় হও! পশ্তপতির পাপের শান্তি 
বিধান কর। নরকে কি এন্প শান্তি আছে-_পশুপতির উপযুক্ত শাস্তি 
কি নরকে *আছে ? আমার অন্তঃকরণ অপেক্ষ। কি নরক ভীষণ? শত 
শত নরক একত্রিত করো- আমার অন্তঃকরণের নিকট তার! পরাস্ত হবে। 
আত্মীয়-স্বজন-শোপিতে চরণ প্রক্ষালন করেছি--তথাপি কি পশুপতির 
হৃদয়ে স্নেহের উদয় হয়? স্নেহ, তুমি বৃক্ষ-শাখা অবলম্বন করো-_পাষাথে 
বাস করো-_পশুপতির হৃদয়ে তোমার স্থান নাই। 


১৬৮ গিরিশচন্দ্র 


( মহম্মদ আলীর প্রবেশ ) 

মুদলমান, আবাব তুমি কি প্রিয় সন্ভাষণ করতে এসেছে? একবার 
তোমার প্রিয় সম্ভাষণ বিশ্বাস ক'রে এই অবস্থাপক্ন হয়েছি, বিধর্মীকে 
বিশ্বাস করবার প্রতিফল পেয়েছি, এখন আমার মৃত্যু সংকল্প--আর 
তোমাদেব কোন প্রি সম্ভাষণ শুনবে না । 

ছিভ্ডীল হৃশ্খয 

[ তাহার পর পণ্ডপতিকে মুসলমান-পবিচ্ছদ পরাইয়৷ যে সময়ে 
মহম্মদ আলী ও মুসলমান সৈম্ভগণ রাজপথ দিয়! চলিয়াছে, সে সময় বিকৃত 
মস্তিষ্ক পণডপতি বলিতেছেন £--] 

পশুডুপতি। আকাশ আমার চন্দ্রাতপ! হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ রাজা 
জন্মেজয়ের মত আমাব চন্ত্রাতপ কৃষ্ণবর্ণ হওয়। উচিত। মহাভারত শ্রবণ 
তার চন্দ্রাতপ শ্বেতবর্ণ হয়েছিল, আমার চন্দ্রাতপ কৃষ্ণবর্ণই থাকবে । শত 
শত মহাভাবত শ্রবণ স্বেতবর্ণ হবে না। 

মহম্মদ আলী । আপনি, পাগলের মত্ত কি ব'ল্ছেন 1 যা! হবার হয়ে 
গিয়েছে, হ্ঃখ ক'র্ূলে আর ফির্বে না। 

পশ্তপতি। মন্ত্রীবর, বল দেখি পা রাখি কোথায়? এই দেখ, 
ভ্রাতৃবর্গেব শোণিতাক্ত চবণের ভার মেদিনী আর বহন ক"র্তে পাচ্ছে 
না। মেদিনীরই ৷ অপরাধ কি ?_ চাবি যুগ হতে মনুষ্যের বাস- এখন, 
বৃদ্ধ হয়েছেন, আর বহন কণ্রৃতে অসমর্থ । 

২ম সৈম্তভ। একি পাগল হ'ল নাকি? 

পশুপতি। লক্ষ্মণ সেন, তুমি বৃদ্ধ ও অকর্ধণ্য। তোমাকে পদচ্যুত 
করায় আমার পাপ নাই। তিরস্কার করবে ?--করো_সহা কণ্র্বে ॥ 
পণুপতির হৃদয়ে সব সয়- পণুপতির হৃদয়ে অসহথও সন্থ হয়। 

২য় সৈম্ক। হা! হতভাগ্য ! 


বিংশ পরিচ্ছেদ ১৬৯ 


পণুপতি। মহারাজ! মহারাজ কে 1?-মহারাজ তো! আমি। 
লক্ষ্মণ মেন, তোমার মুখ-কাস্তি মলিন কেন? এতে কি আমাব দয়ার 
উদ্রেক হয়? তোমার স্তায় শত শত ব্যক্তির ছিন্ন মন্তক পদতলে দলিত 
ক'রে সিংহাসনে আরোহণ ক”র্তে পশ্তপতির হৃদয় কুষ্ঠিত হয় না। এই 
দেখ, চরণ দেখ-_জান্ পর্য্স্ত শোণিত দেখ, রাজপথে দেখে এস-_- 
শোণিত-আ্োত ভাগীরথীতে গিয়ে পড়ছে । 

মহন্মদর। এই ছূর্তাগ্কে কি কবে নিয়ে যাই। 

পণ্ডপতি। মন্ত্রীবর, গুকে ডাকো । লক্ষ্মণ সেন, ফেরে -ফেরো--- 
উপায় নাই, উপায় থাকলে ফির্ৃতেম । আমার মস্তক দিলে যদি উপায় 
হয়, এই দণ্ডেই দিতে প্রস্তুত আছি। 

মহন্মদ। (ম্বগত)কি করি! “রাজা” বলে সম্বোধন ক'রে দেখি, 
যদি আমার সঙ্গে আসে। (গ্রকান্তে ) মহারাজ, চলুন-নৌক। প্রস্তত। 

পণুডপতি। কে ডাকে--কাকে ডাকে? 

মহল্মদ। আনুন, নৌকা প্রস্তত। 

পণুপতি। মন্ত্রীবর, বিশ্বকর্মা আমার সিংহাসন আন্ছে। দেখ-- 
দেখ--ষম কেমন পুরোহিত, সেই আমার অভিষেক কণ্র্বে। দেখ__ 
মন্তকশূন্ত গ্রজাগণ কেমন আহ্লাদে নৃত্য ক'চ্চে! ছত্রধারী, ছত্র ধর। 
মনোরম মনোরমা-_-আহ লিংহাসনের বাম পার্থে মনোরমা কি অপূর্ব 
শোভ৷ ধারণ ক'রেছে! 

১ম সৈম্ভ। বোধ হয় আমাদের কথ বিশ্বাস ক'চ্ছে ন|। 

মহল্মদ। (ম্বগত ) ন1, আমার কথায় বিশ্বান ক+রেই এর এই দশ! 
হয়েছে। (প্রকাণ্ে) আমার কথ বিশ্বাস করুন, আপনার প্রাপরক্ষার 
জন্ত নৌকা প্রস্তত, চলুন! 

পণুপন্তি। বিশ্বান--কাকে বিশ্বাস? জগতে কে বিশ্বাসের যোগ্য? 


১৭০ [গরিশচন্দ্র 


বক্্ণ সেন আমাকে বিশ্বাম করেছিল, _পশ্ুপতি কাকেও বিশ্বাস 
করে না। 

মহম্মদ । মহাশয়, আপনি আপন অবস্থা ভূলে যাচ্ছেন। 

পশ্ডপতি। হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ-_তুই কে ?-_মুনলমান। রক্ষক, একে 
বধ করো। হাঃ হাঃ হাঃ_এ যে আমাব সিংহাসন আস্ছে,--দেখ 
দেখ-_সিংহাসন আমাকে ডাকৃছে ! 

মহণ্সদ। ( নেপথ্যেব দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া) একি! পণ্ুপতির গৃহে 
কে আগ্ন দিলে? বোধ হয়__সৈন্যেরা লুট কণ্রৃতে ক"র্তে অগ্নি 
দিয়েছে। 

পশুপতি | মন্ত্রীবব, প্রজাবা এ দিকে আস্ছে কেন? তার্দেব 
বলো--আজ অভিষেক নয়-_-মধিবাদ । মনোবমা কোথায়? মনোরম! 
ঘে আমাব সঙ্গে অধিবাস কগ্রবে। মনোবম। কোথায় গেল? এয 
কোথায় গেল ? আমার গৃহে আছে। (গমনোগ্তোগ ) 

মহল্মদ। ( পশুপতিকে ধরিয়া) তোমাব গৃহ কোথায়? এ দেখ, 
সৈম্তেবা তোমার গৃহে আগুন দিয়েছে । 

পশুপতি । (সচকিতে) মনোবম। যে গৃহে আছে! ছাড়ো-- 
ছাড়ো-_( মহম্মদ আলীব ইঙ্গিতে সৈষ্ুদ্য়ের পশুপতির উভয় হস্ত ধাবণ )। 

মহম্মদ। তুমি বন্দী, তোমাকে কাবাগাবে নিয়ে যাব। 

পণুপতি। এয বন্দী! স্থিব হও, ছাড়ো-_আমি যাচ্ছি। জীরন 
স্বপ্নের স্ায় স্মবণ হচ্ছে। ছেড়ে দাও- ছেড়ে দাও-__ 

মহম্মদ । বোধ হয় জ্ঞান হ/য়েছে। 

পশুুপতি । (অদূরে স্বীয় ভবন দর্শন কবিয়া ) এ কি আমার গৃহ? 

মহম্মদ । হ্যা তোমার গৃহ । 
' পণুপতি। হা, আমারই গৃহ বটে! আগুন দিয়েছে। (সহসা 


বিংশ পরিচ্ছেদ ১৭১ 


উন্মত্তাবস্থায়) মনোরম! যে গৃহে আছে, ছাড়েো--ছাড়ো-_( সবলে হাত 
ছাড়াইয়া ধাবিত হইলেন ) 


মৃণালিনীঃ অভিনয়ের পরে গিরিশচন্ত্র কর্তৃক পুনরায় নাটকাকারে 
গঠিত হুইয়৷ বন্কিমচন্দ্রের “কপালকুগুলাঃ ৪ঠা এপ্রিল (১৮৭৪ শ্রীঃ) 





শ্রীযুক্ত ক্ষেত্রমোহন গঙ্পোপাধায় 
গ্রেট শ্লাসান্তাল থিয়েটাবে অভিনীত হয়। পাঠকগণের ন্মরণ থাকিতে 
পারে, ১৮৭৩ হীঃ ১০ই মে তাবিখে রাজ! রাধাকাস্ত দেবেব নাটমন্দিরে 
স্ঠাসান্ঠাল থিয়েটাব কর্তৃক “কপালকুগ্ডল।” গ্রথমাভিনীত হইয়াছিল । 


১৭২ গিরিশচন্দ্র 


নাট্যাচার্া শীবুক্ত অমৃতলাল বন্থ মহাশয় বলেন,_“নগেনবাবু দেখিতে 
যেরূপ সুপুরুষ ছিলেন, সেইরূপ একজন উৎকৃষ্ট নট ছিলেন। নবকুমারের 
ভুমিকা তিনি অতি যোগ্যতার রহিত অভিনয় করিয়াছিলেন। মতিলাল 
সুরের “কাপালিকের, ভূমিকাতিনয় অতুঙ্লনীয় হইয়াছিল। নীলদর্পণে 
'তোরাপ” এবং কপালকুগুলায় “কাপালিকের অভিনয়ে এ পর্য্স্ত কেহই 
তাহাকে অতিক্রম করিয়া যাইতে পাবেন নাই । “কপালকুগুলা*র অভিনযে 
ভীযুত্ত ক্ষেত্রমোহন গঙ্গোপ।ধায় এবং “মতিবিবি'র অভিনয়ে বেলবাবু বিশেষ 
কৃতিত্ব দেখাইয়াছিপ্েন। সে সময়ে প্রত্যেক নাটকের প্রধান স্ত্রী- 
চরিত্রের ভূমিকাগুলি ক্ষেত্রবাবু ও বেলবাবুর এক চেটিয়া ছিল। মিষ্ট পার্টের 
অভিনয়ে ক্ষেত্রবাবু এবং একটু বাঁগাল পার্টের অভিনয়ে বেলবাবু 
অদ্বিতীয় ছিলেন।” 


একবিংশ পরিচ্ছেদ 
আন্বান্ ভু৪সমক্স- সক্রীশন্নিজ্জোগ ইভ্ভা্ি 

ত্রিশ বৎসর বয়লে গিবিশচন্দ্রেব পুনরায় ছুঃসময় উপস্থিত হয়-_আবার 
নিদারুণ অশাস্তি দেখা দেয়। কনিষ্ঠ ভ্রাত। ক্ষীরোদচন্দ্রের মৃত্ার কয়েক 
মাস পরে গিরিশচন্ত্রের তৃতীয়। ভগিনী কৃষ্ণভাবিনী ওব্রণ পীড়ায়, মাঘ 
মানে তীমাষ্টমীর দ্রিবস চল্লিশ বৎসর বয়ঃক্রমে পরলোক গমন করেন । * 
লা রর 
মলিকদের বাটীতে ইহীর বিবাহ হুইয়াছিল। মৃত্যুকালে ইনি ছুইটী পুত্র ও তিনটা কন্ঠ 
রাখিয়া যান। পুত্রত্বয়ের নাম ব্রজেন্দ্রকৃষচ ও নগেন্দ্রকৃক । কয়েক বৎসর গত হইল, উভয় 
ত্রাতারই মৃত্যু হইয়াছে। ব্রজেন্দ্রবাবুর চারি পুত্র-_মনীন্ত্রকৃষণ, সত্যেন্্রকৃষণ, নলিনেন্দ্রকৃষ: 
ও নবগোপাল | নগেন্ত্রবাবুর পাঁচ পুত্র লালগোপাল, জয়গোপাল, গগোপাল, বছু- 
গোপাল ও নৃতাগেপাল | কন্ত। তিনটার নাম-কৃষ্চবিনো না, কৃষ্প্রকাশিনী এবং 
কুষ্গ্রমোদিনী। 


একবিংশ পারচ্ছোদ ১৭৩ 


গিরিশচন্ত্রের পত্থী দীর্ঘকাল নুৃতিক! রোগে কষ্ট পাইতেছিলেন। গীড়। 
উত্তরোত্তর বৃদ্ধি হইতেই থাকে । এই সময় তীহার অফিসেও গোলযোগ 
উপস্থিত হয়। ষোড়শ পরিচ্ছেদে বলিয়াছি,_মিঃ আযাটুকিনসনের সহিত 
ব্যান্ক্রপ্ট সাহেবের বনিবনাও হইত ন1। শেষে বড় সাহেব বিরক্ত হুইয়। স্বদেশে 
চলিয়। যান। নিজ ওদ্ধত্য বশতঃ ব্যান্ক্রপ্ট সাহেবও অধিক দিন অফিস 
চালাইতে পারেন নাই ।-_-এই সময়ে অফিস 'ফেল' হইবার উপক্রম হয়। 

দুঃসময় ক্রমে ঘনীভূত হইয়া আমিল। গ্িরিশচন্দ্রের বিবাহের দিন যে 
অগ্নি তাহার বাটাব সন্নিকট পর্য্যন্ত আসিয়া নিরস্ত হইয়াছিল, সেই 
অগ্সি যেন আবাব জাগিয়। উঠিয়! গিরিশচন্ত্রের সংসার বিপর্যস্ত করিল। 

গিরিশচন্ত্র পত্বীর সুচিকিৎসার নিমিত্ত অধিকতর মনোযোগী হইলেন। 
দিবসে অফিধ যাইতেন মাত্র; রাত্রে থিয়েটার যাওয়া বন্ধ কবিলেন। 
বোগীব তত্বাধধান করিয়া অবশিষ্ট সময় গ্রস্থপাঠে নিবিষ্ট থাকিতেন। পড়িতে 
পড়িতে কোন কোন দিন সমস্ত রাত্রি কাটিয়৷ যাইত, কখন প্রভাত হইত-_ 
তাহাব হুশ থাকিত না। এই সময়ে তিনি মহাকবি সেক্সপীয়ারের 

'ম্যাকৃবেথ” নাটকের বঙ্গানুবাদ করিতেছিলেন। * 

& ইতিপুর্ব্বে (১৩ই অক্টোবর, ১৮৭৪ খ্বং) হেয়ার স্থুলের হেড মাষ্টার হরলাল রায় 
প্রণীত 'রুদ্রপাল' নামক একখানি নাটক গ্রেট ভ্কাসান্তালে অভিনীত হয়। এই নাটক. 
থানি মহাকবি সেকস্পীয়রের 'ম্যাকৃবেখ' নাটক অবলম্বনে লিখিত হুইয়াছিল। 

'রুদ্রপাল' নাটক অভিনয়ের পর একদিন গিরিশচন্ত্রের সহিত তাহার হেয়ার ন্ুলের 
সহপাঠী,ভৃতপূর্ব্ব হাইকোর্টের জজ পণ্ডিতবর স্বগাঁয় গুরুদাস বন্যোপাধ্যায়ের সহিত সাক্ষাৎ 
হয়। তখন তিনি হাইকোর্টে ওকালতি করিতেছিলেন। কথায় কথায় থ্রেট ্তাসান্তাল 
থিয়েটারে রুদ্রপাল নাটক অভিনয় প্রসঙ্গে 'ম্যাকৃবেথের' কথ! উঠে। গুরুদাস বাবু বলেন, 
সেক্সপীয়রের নাটকগুলির বঙ্গানুবাদ হইলে বঙগভাষার পুষ্টি সাধিত হয়, কিন্তু তাহা 
বড়ই কঠিন, বিশেষতঃ এই ম্যাকৃবেথ নাটকের ডাকিনী ( %1107) দের ভাষায় অনুবাদ । 
পাঠকগণ জ্ঞাত আছেন, ইহার বহুপূর্বব হইতেই গিরিশচন্ত্র ইংরাজি কবিতার বঙজানুবাদ 


করিয়৷ থাকিতেন। গুরুদাস বাবুর সহিত এই কথাবার্তার পর ওৎসকা বশতঃ তিনি 
ম)াকৃবেধ নাটকের অনুবাদ করিতে আরগ্ত করেন। 


১৭৪ গিরিশচন্দ্র 


এইরূপে প্রায় এক বদর গত হইতে চলিল, কিন্তু গিরিশচন্দ্রের 
সহধর্মিণীর আরোগ্যের লক্ষণ কিছু দেখ গেল না। বছ অর্থ ব্যয়ে 
নুচিকিৎসার ক্রটি হইল না কিন্তু গীড়া ক্রমশঃই কঠিন হইয়া উঠিল। 
চিকিৎনকগণ আশা! ত্যাগ করিলেন । ১২৮১ সাল, ১০ই পৌষ (১৮৭৪ 
খ্রীঃ, ২৪শে ডিসেম্বর ) পুত্র ও কন্তাব পালনভার পতির হস্তে সমর্পণ করিয়া 
সাধবী সতী সংসার হইতে শেষ বিদায় গ্রহণ করিলেন। 
ত্রিশ বসব, নয় মান ব্যুঃক্রমে গিরিশচন্দ্রেব পত্বীবিয়োগ হয়। প্রথমে 
তাহাকে তাদ্রশ বিচলিত হইতে দেখা যায় নাই। কিন্ত ক্রমে সেই শোক 
গাড় হইয়। তাহাকে দিন দিন অধিকতর আচ্ছন্ন কবিতে লাগিল। পরম 
শীস্তিদাত। পরমেশ্বরেব পদে আত্ম সমর্পণ করিয়া, হতভাগ্য মানবেব শোক- 
সস্তপ্ত হৃদয় যে কথঞ্চিৎ শানস্তিলাভ কবে, _নিরীশ্বরতা-প্রভাবে গিরিশচন্ত্রের 
সে সাত্বনা ছিল না। আবাব এই সময় আযাটুকিনসন কোম্পানীর অফিস 
ফেল হওয়ায়, কাজকর্মে মন দিয়! যে ক্ষণিক শোক ভুলিয়া! থাকিবেন, সে 
সুযোগ পধ্যস্ত রহিল না। কবিবর টেনিসন বলিয়াছেন £-- 
801) 101 076 80001601062 200 10181) 
4 056 10101623010 121)£086 1155 ) 
1106 58.0 10601025010 5:610159 
10106 00011 10910011095 01013300115 10211). 
মাদকে যেমন তীব্র দৈনিক যন্ত্রণাব ক্ষণিক নিবৃত্তি হয়, ছন্দোময়ী ভাষ। 
রচনার প্রয়াদ তেমনি তীব্র মর্ম-বেদনায় ও মানসিক অশ্াস্তিতে মানবকে 
ক্ষর্ণিক আত্মবিস্বৃতি প্রদান কবে। ক্ষণিক আত্মবিস্বতিলাভের আকাখায় 
গিরিশচন্দ্র কবিত। লিখিতে আরম্ভ করিলেন। এই সকল কবিত৷ পাঠে 
ত্বাহার তৎকালীন শোকপুর্ণ হদয়েব করুণ পরিচয় পাওয়া যায়। “আজি” 
নামক কবিতায় তিনি লিখিয়াছেন £-_ 


একবিংশ পরিচ্ছেদ ১৭৫ 


প্তিন-দশ পুর্ণকায় অতীত যৌবন, 
তিন-দশ পূর্ণ কায়, জীবন-প্রবাহ ধায়, 
মহাকাল মহার্ণব সহ সম্মিলন । 
৪ ষ ৪ 
শৈশব স্থুথের স্বপ্ন নাহিক এখন, 
যৌবনে ঢালিয়ে কায, পেয়েছি প্রমদায়, 
ম'লে কি ভুলিব হায় প্রথম চুম্বন !” 
এই সময়ে যে কয়েকটী কবিতা রচিত হইয়াছিল, তাহার সকল 
গুলিতেই হতাশেব দীর্ঘস্বান বহিতেছে, হৃদয়ের রুদ্ধ বোদন-ধারা উথলিয় 
উঠিতেছে। সুখের স্বপ্ন ভাঙ্গিয়াছে, সংসারের আলোক নিভিয়াছে, সঙ্গে 
সঙ্গে জীবনের আলোকও অন্তহিত হইয়াছে ;_-এখন একমাত্র আশ্রয় 
অন্ধকার! কৰি অন্ধকাবকে সম্ভাষণ করিয়া বলিতেছেন $-_ 
"তোমায় জানে না নরে, তাইত তোমারে ডরে, 
অসময় তুমি সথ৷ কেহ নাহি আর, 
একক বান্ধবহীন, আশার উচ্ছ্বাস লীন, 
হৃদয়ে শুকায়ে যায় রোদনের ধার? 
জলে শুধু স্বৃতি-_-চিতে চিতানল প্রায়, 
তখন অভাগা তব মুখ পানে চায়।” 
এই “জাধার, কবিতা সম্বন্ধে বঙ্গভাষার বিখ্যাত লেখক স্বর্গীয় কালী- 
প্রসন্ন ঘোষ বলিয়াছিলেন,__*আধারের স্তায় কবিত| পৃথিবীর যে কোনও 
ভাষায় রচিত হইত, তাহার গৌরব বর্ধন করিত ।” 
কিছুদিন পরে কিঞ্চিৎ প্রর্ৃতিস্থ হই! তিনি পফ্রাইবার্জার এগ 
কোম্পানীর অফিসে প্রবেশ করেন। উক্ত অফিসের মাল খরিদের কার্ধ- 
ভার লইয়! তাহাকে ভাগলপুরে যাইতে হয় । ভাগলপুর হইতে বহু গ্রামে 


১৭৬ গিরিশচন্দ্র 


গিয়া! তাহাকে মাল খরিদ করিতে হইত। নেই আত্মীয়-্বজনহীন সুদূর 
প্রবাসে তিনি অবসর মত ধুতুরা, গিরি, চাতক, শৈশব-বান্ধব, হলদিঘাটের 
দ্ধ প্রভৃতি আরও কতকগুলি কবিতা লিখিয়াছিলেন। সেই কবিতাগুলি 
পাঠ করিলে বুঝা যায় যে এখনও তাহার হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশ হইতে 
সেই দীর্ঘশ্বাস উঠিতেছে, এখনও সেই শোকাশ্র ঝরিতেছে ! কিন্তু হৃদয়ের 
অতি নিভৃত স্থানে একটা নূতন আকাঙ্াা! জাগিয়৷ উঠিতেছে। জড় জগৎ 
যতই সুন্দর হউক, সে জড় মানব-হৃদয়েব বেদন। বুঝে না। ব্যথিত হৃদয় 
যে সহানুভূতি অন্বেষণ কবে, জড় সে সহানুভূতি দিতে অক্ষম । সত্যই 
কি এ জড়েব অন্তরালে কিছু আছে? ব্যাকুল হৃদয়ে কবি ধুতুরাকে 
লিজ্ঞাসা করিতেছেন,_ 

“ত্যজিয়ে সংসার সার করেছ শ্মশান, 

যার লাগি অনুরাগী, হইয়াছ সর্বত্যাগী, 
দেখিতে কি পাও তার বাঞ্ছিত বয়ান ?” * 
ভাগলপুরে থাকিয়া অফিসেব কার্যে এবং অবকাশ মত কবিতাদি 

ব্চনায় গিরিশচন্দ্র কিছুদিন অনেকট।! শাস্তিলাভ করিয়াছিলেন বটে, কিন্ত 
তখনও তাহার দুঃসময় দূর হয় নাই। ভাগলপুর হইতে কলিকাতা। আমিবার 
পূর্ব দিবদ তাহার যথাসর্বন্ব চোবে লইয়া যায়। পরিধেয় বস্ত্র ব্যতীত 


* এই কবিতাগুলি বহুকাল পরে “নলিনী" নামে মাসিক পাত্রকায় প্রথম প্রক।শিত 
হয়। “হলদিঘাটের যুদ্ধ' কবিতাটা এত সুন্দর হুইয়াছিল যে, হ্ববিখ্যাত সাহিতাক গীয় 
অক্ষয়চন্্র মরকার মহাশয় তাহার “সাধারণী” পত্রিকায় উক্ত কবিত! সম্পূর্ণ উদ্ধৃত করিয়া 
লিখিয়াছিলেন,--“এরূপ গভীর শোকপুর্ণ কবিত| বঙ্গভাষায় বিরল ।* স্ত্রী-বিয়োগের পুর্বে 
গিরিশচন্দ্র যে কল কবিতা গীত, ইংরাজির অনুশদ ঝ| পুস্তক রচন| করিয়াছিলেন এবং 
অপ্রকাশিত অবস্থায় ডাহার নিকট রক্ষিত ছিল, সেগুলি নিদারুণ শোকজনিত অগ্রক্ৃতিস্থ 
'অবস্থায় নষ্ট হইয়া! যায়। 


দ্বাবিংশ পরিচ্ছেদ ১৭৭ 


আর কিছুই ছিল না। ভাগলপুরে তখন তাহার এক প্রতিবাসী থাকিতেন, 
নিরুপায় হইয়! গিরিশচন্দ্র তাহার নিকট গিয়া দশটা টাক! খণ প্রার্থন। 
করেন। কিন্তু ভদ্রলোকটা তাহাতে উত্তর দেন,_-”তোমায় দণ টাক! 
ধাব দিতে পারি না, পাচ টাক! দান করিতে পারি।” তখন আর উপাক্ক 
কি? সেই ভিক্ষার দান লইয়া! গিরিশচন্দ্র গৃহে ফিরিলেন। তিনি 
বলিতেন, অতি ছুঃথেও সহজে আমার চক্ষে জল পড়ে না, কিন্তু এই ভিক্ষা 
গ্রহণ কবিতে অশ্রপাত হইয়াছিল ।” 

পবে ভদ্রলোকটী যখন কলিকাতায় আসেন, গিরিশচন্দ্র টাক। কয়টা 
ফিবাইয়। দেন। ফিরাইয়। দিবার সময় ভদ্রলোকটী বলিয়াছিলেন,-_ 
“তোমাকে তে। এ টাক! দান কবেছি।” গিরিশচন্দ্র বলিতে ন,.-”এ কথার 
উত্তব আমার জিহ্বায় আসিয়াছিল; কিন্তু যেরূপেই হউক-_-উপক্ৃত 
হইয়াছি। কিছু ন1 বলিয়া টাক। পাঁচটী তাহার কাছে রাখিয়া নমস্কার 
পূর্ববক চলিয়া আমিলাম ।” 


দ্বাবিংশ পরিচ্ছেদ 


ছ্িভীল্সহান্ দ্কাল্র স্পন্ত্িগ্রহ- ন্ুুভ্স্ম অস্ক্রি্স 


ভাগলপুর হইতে প্রত্যাগমন করিয়। অল্পদিন পরেই গিরিশচন্্র 
“ফুাইবার্জার কোম্পানী” অফিপের কর্ম পরিত্যাগ করেন। বিদেশ গমন 
ইত্যাদি নানাকারণে উক্ত অফিসের কার্য তাহার মনোনীত হয় নাই, 
এবং ত্বাহার মানদিক অবস্থাও তখন পর্য্স্ত ভাল ছিল না। ৃ্‌ 
স্থুবিখ্যাত “অমৃতবাজার পত্রিকা-সম্পাদক স্বর্গীয় শিশিরকুমার ঘোষ 


মহাশয় তাহার একজন বিশিই নুহদ ছিজেন। শিশিরবাবুকে সকলেই 
১২ 


দ্বাবিংশ পরিচ্ছেদ ১৭৯ 


পরম বৈষ্ণব, ন্বদেশভক্ত এবং তেজশ্বী সম্পাদক বলিয়াই জানেন, কিন্ত 
বঙ্গীয় নাট্যশালার শ্রীবৃদ্ধি সাধনের নিমিত্ত তিনি যে প্রথম হইতেই একজন 
প্রধান উৎসাহদাত। ও উদ্তোগী ছিলেন, এবং অভিনয়ার্থে স্বয়ং নাটক পর্যস্ত 
রচনা! করিয়! দিয়াছেন, ইহা! বোধ হয় অল্লসংখ্যক পাঠকই জানেন । 
বঙ্গবঙ্গভূমি তাহার অক্ষয়-স্বৃতি চিরদিন বক্ষে ধারণ করিয়৷ গৌরবাস্থিতা 
হইবেন। তাহারই উৎসাহে গিরিশবাবু অমৃতবাজার পত্রিকায় মধ্যে মধ্যে 
প্রবন্ধাদিও লিখিতেন। ফ্রাইবার্জার কোম্পানীর অফিসেব করব 
পরিত্যাগ কবিবাব পর শ্শিশিরবাবুব অনুরোধে তিনি ১৮৭৬ ্রীষ্টাবে 
ইও্ডিয়ান লিগেব হেড ক্লার্ক ও কেসিয়ারের পদ গ্রহণ করেন। ছোট 
লাট টেম্পেল সাহেবের স্থায়ত্ত-শাসনপ্রথ! প্রবর্তনের সময়, “ইতিয়ান লিগ, 
নামে একটা সাধাবণ সভা! গঠিত হয়। এখানে প্রায় এক বসব কার্য। 
করিয়া গিবিশচন্ত্র পার্কার কোম্পানীর অফিসে বুক-কিপার হইয়! 
প্রবেশ করেন। 

£ইঞ্ডিয়ান লিগে? কাধ্য করিবার সময় ইনি দ্বিতীয়বার দার পরিগ্রহ 
করেন। দ্বিতীয়া স্ত্রীব নাম ছিল স্ুরতকুমারী। ইনি কলিকাতা, সিমলাব 
বিখ্যাত লালাদ মিত্রেব প্র-পৌত্রী এবং বিহারীলাল মিত্রের প্রথম! কনা] । 

পার্কার সাহেব এক অদ্ভুত প্রকৃতির লোক ছিলেন। বাক্যব্যয় 
সঙ্কোচের নিমিত্ত তিনি অফিসে নিয়ম করেন, যাহাকে ডাকিবার প্রয়োজন 
হইবে, তিনি ঘণ্টা বাজাইম্না ডাকিবেন। একদিন গিরিশচন্দ্রের নিমিত্ত 
এইরূপ ঘণ্ট। ঝজিল। গিরিশচন্দ্র তাহা শুনিয়াও শুনিলেন না। সাহেবের 
চাপরাসী আসিয়া ঝলিল,_-“বাবু, সাহেব আপনাকে ডাকৃছেন, গুনতে 
পাচ্ছেন না?” গিরিশচন্দ্র মুখ ন! তুলিয়। কার্ধ্য করিতে করিতেই 
বলিলেন, “না, । চাপরানী বিশ্মিত হইয়। চলিয়া গেল। 

ততক্ষণাৎ গরম মেজাজে পার্কার সাহেব আমিয়। গিরিশচন্ত্রকে জিজ্ঞাস! 


১৮০ গিরিশচন্দ্র 


কবিলেন,_“তোঁমাকে ডাকিতেছি, তুমি শুনিতেছ না কেন?” গিরিশচন্দ্র 
গভ্ভীবভাবে উত্তর করিলেন,__”“আমি গুনি নাই।” এইরূপ ছুই তিনবার 
কথ! কাটাকাটি হইবার পর তেজস্বী গিরিশচন্দ্র সাহেবকে বলিলেন,_ 
“সাহেব, আমি এতক্ষণ ভদ্রতার সহিত তোমার কথার উত্তর দিতেছিলাম। 
এখন প্রকৃত কথা বলি শোন,_-“তুমি মনে করো না যে আমি তোমাৰ 
খানসাম! কি বেয়ারা,--তোমার ঘণ্টায় উঠবো-বনবো |” গিরিশচন্দ্রেব 
নির্ভীক উত্তরে সাহেবেব শ্বেতমুত্তি সহস। রক্তিম হইয়। উঠিল, কিন্তু তিনি 
তখনই আত্ম ংবরণ করিয়া লইয়! বলিলেন, “বাবু, ছুঃখিত হইও না, 
আমি আমার এইরূপ অন্তায় কার্যের নিমিত্ত হুঃখিত হইয়াছি।৮ দেই 
অবধি গিরিশচন্দ্রকে তিনি প্রীতির চক্ষে দেখিতেন,_-মধ্যে মধ্যে আপনাব 
কক্ষে তাহাকে ডাকিয়। লইয়। গিয়। নানারূপ কথাবার্ত। কহিতেন। এক 
সময় অফিসের কার্যে বিস্তর লোকসান হওয়ায় অফিস ফেল হইবার 
সম্ভতাবন। হয়। গিরিশচন্দ্র সে সময়ে কিরূপ উপায় অবলম্বন করিলে 
অফিস নিরাপদ হইতে পারে, পার্কার সাহেবকে সেইরূপ ন্থযুক্তি প্রদান 
করেন। তাহার পরামর্শমত কার্ধ্য কবিয়া সাহেব উক্ত ক্ষতির হাত 
হইতে রক্ষা পান এবং আনন্দের সহিত তাহার আশাতিরিক্ত বেতন 
বাড়াইয়৷ দেন। 

দ্বিতীয়বার দার পরিগ্রহ করিয়া এবং অফিসে সাহেবেব সধ্ধ্যবহারে 
গিরিপচন্্র অনেকট! মানসিক শাস্তিলাত করিয়াছিলেন । এই লময়ে 
মাঝে মাঝে আবার তিনি থিয়েটারে যাইতে আরম্ভ করেম।* 

গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটারের অবস্থা এ সময়ে শোচনীয় হইয়া 
দাড়াইয়াছিল । ভূবনমোহনবাবু দিন দিন খণজালে জড়িত হইয়! 
পড়িতেছিলেন। কোনও কালেই থিয্লেটার সংক্রান্ত হিসাবপত্রের 
তাহার সুব্যবস্থ। ছিল না। যে দিন অধিক বিক্রয় হইত, সে দিন রাত্রে 


ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ ১৮১ 


থিয়েটারে পান-ভোজনের ধূম পড়িয়া যাইত। গোত্রিক বিষয় ভূবনমোহন 
বাবুব মাতার নামে ছিল, এ নিমিত্ত অর্থ সংগ্রহের জন্ত প্রায়ই তাহাকে 
হ্াাগুনোট কাটিতে হইত। ছচ্সবেশী হিতৈষী বন্ধুরও অভাব ছিল না, 
হাজার টাক। পাইয়া ছুই হাজার টাকা লিখিয়! দেওয়ার মহাজনেরও 
অসন্তাব ঘটিত না। 


ব্রয়োবিৎশ পরিচ্ছেদ 


৫গ্রত ন্ৃযাস্ান্যা্ন শ্রিস্েউীল্র ভিনজভ্ক গ্রহণী 
১৮৭৩ খ্রীষ্রাব্ব, ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটার 
খোল! হয়,--১৮৭৭ খ্রীষ্টাবঝ, জুলাই মাসে স্বত্বাধিকারী ভূবনমোহনবাবু 
গিরিশচন্দ্রকে থিয়েটাব লিজ প্রদান করেন। এই সুদীর্ঘ সময় মধ্যে 
অভিনয়-নিয়ন্ত্রণ-আইন (1015108080 139100108910065 00001 1311] ) 
প্রবর্তন বিশেষরূপ উল্লেখযোগ্য । গিরিশচন্দ্রের জীবন-ইতিহান নাট্যশালার 
সহিত সর্বাপেক্ষা অধিক জড়িত। এ নিমিত্ত গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটারের 

এই কয়েক বৎসবের একটী সংক্ষিপ্ত বিবরণ গ্রদদান করিলাম £__ 
ধর্ম্দাস বাবু প্রথমে গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটারের ম্যানেজার ছিলেন। 
তাহার হাতে ০51) থাকিত এবং হিসাব-নিকানের ও টিকিট 15585 
করিবার ভারে তাহার উপর ছিল। গিরিশচন্দ্র কর্তৃক নাট্যাকারে 
পরিবর্তিত মৃগালিনী ও কপালকুগুল৷ অভিনয়ের পর গ্রেট স্তাসান্তালে 
মনোমোহন বস্থুর রামাভিষেক, দীনবদ্ধুবাধুর কমলে কামিনী, হুরলাল 
রায়ের হেষলতা! নাটক প্রথম অভিনীত হয় এবং রামনারায়ণ তর্করত্তবের 
নব নাটক, শিশিরকুমার ঘোষের নয়শে। রূপেয়া, উমেশচন্ত্র মিত্রের 


* ১৮২ গিরিশচন্দ্র 


বিধবা-বিবাহ নাটক প্রভৃতি পুনরভিনীত হইয়া থাকে। স্ুযোগা 
অভিনেতাগণ কর্তৃক নাটকগুলি অভিনীত হইলেও ক্রমশঃ থিয়েটারের 
আয়ের হাস এবং টাকাকড়ির গোলযোগ হওয়ায় ভূবনমোহনবাবু ধর্মাদাস 
বাবুর স্থলে নগেন্ত্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ম্যানেজার ও তাহার জ্যষ্ঠ 
ভ্রাতা দেবেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে থিয়েটারেব ডাইরেন্টার নিযুক্ত 
করিলেন। 

্রঅভিনেত্রী কর্তৃক স্ত্রী-চরিত্র অভিনীত হওয়ায় বেঙ্গল থিয়েটাবে 
দর্শকগণ সমধিক আকৃষ্ট হইত। ছুর্গেণনন্দিনী' অভিনয়ে সম্প্রদায় 
নুপ্রতিষ্ঠিত হইয়া উঠিয়াছিল। সম্প্রতি জ্যোতিরিন্্রনাথ ঠাকুবেব 
«পুরু বিক্রম নাটকাভিনয়ে ইহাদের যশঃ-সৌবভ আরও বিস্তৃত হইয়! 
পড়ে। থিয়েটারের আয় বৃদ্ধি করিবার নিমিত্ত বেঙ্গল থিয়েটাবের 
অন্থকরণে গ্রেট স্তাসাগ্তাল সম্প্রদায়ও রাজকুমারী, ক্ষেত্রমণি, কাদস্থিনী, 
যাছুমণি এবং হরিদাসী নায়ী পাঁচটা স্ত্রী-অভিনেত্রী সংগ্রহ কবিয়। “সতী 
কি কলঙ্কিনী' গীতিনাট্যের অভিনয় ঘোষণা! করেন (১৮৭৪ খৃঃ ১৯শে 
সেপ্টেম্বব )। স্ত্রী-অভিনেত্রী প্রবর্তনে এবং সঙ্গীতাচাধ্য মদনমোহন বর্ণের 
স্থমধুর স্থরসংযোজনে “সতী কি কলক্কিনী” আবালবুদ্ধবনিতাব চিত্ত আকর্ষণ 
করিয়াছিল। অভাবনীয় কৃতকার্যযতা লাভ করিয়৷ গ্রেট স্তাসান্তাল 
সম্প্রদায় বিজয়গর্ধবে বেঙ্গল থিয়েটারে অভিনীত 'পুরুবিক্রম* অভিনয়েই 
কৃতদক্কল্প হইলেন। নাটকের নায়িকার ভূমিক! কাহাকে দেওয়! হইবে, 
তাহ! স্থির করিবার জন্য উপরোক্ত পাঁচটা অভিনেত্রীকে পরীক্ষ! কর! হয়। 
পুরুবিক্রম নাটকের এক স্থানে আছে, “পাঞ্জাব প্রদেশস্থ সমস্ত ৃপতিবৃন্দ* 
ইত্যাদি__এই ছত্রতী একসঙ্গে স্প্ট করিয়। উচ্চারণ করিবার জন্ত প্রত্যেক 
অভিনেত্রীকে বলা হইল। তন্মধ্যে ক্ষেত্রমণিই কেবল পরীক্ষায় উত্তীণ 
'হুইলেন ;-__এজন্ত তাহাকেই নাটকের নাগ্নিক! 'লবিলার, ভূমিকা প্রদত্ত 


ওয়োবিংশ পরিচ্ছেদ ১৮৩ 


হয়। ইহার পরে হরলালবাবুর “কুত্রপাল” নাটক অভিনীত হইয়! থাকে ।* 
পুরুবিক্রম ও ক্ুএপাণ নাটকাভিনয়ে গ্রেট স্কাসান্তাল বিশেষ কৃতকাধ্য 
হইতে পারে নাই,_দর্শকগণ “সতী কি কলছ্িনা”র স্তায় আর একখানি 
গীতিনাটে)র জন্ত সে সময়ে উতল! হইয়। উঠেন। যাহাই হউক তৎপরে 
লক্মীনারায়ণ চক্রবর্তীর "আনন্দ কানন” গীতিনাট্যাভিনয়ে দশকগণকে প্রীত 
করিয়া সম্প্রদায়ও বিশেষ লাভবান হইয়াছিলেন। 

এই সময়ে নগেন্দ্রবাবু একদিন ভুবনমোহন বাবুকে বলেন,__-“তুমি 
একথানি এগ্রিমেণ্ট পত্রে আমাকে লাঁখয়। দাও, যগ্ঘপি আমাকে কখনও 
ম্যানেজাবেৰ কার্য; হইতে ছাড়াহয়া৷ দাও,__-আমাকে কুড়ি হাজার টাকা 
ড্যামেজ দিবে ।” ভুবনমোহন বাবু এরূপ এগ্রিমেণ্ট লিখিক্ব! দিতে অস্থীকর্কৃত 
হওয়ায়, নগেন্দ্রবাবু থিয়েটার হহুতে মদনমোহন বশ্ধণ, কিরণচন্ত্র বন্দ্যো- 
পাধ্যায়, শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্ধু, যাছুমণি, কাদস্থিনী প্রভৃতি কতকগুলি 
অভিনেতা ও অতিনেত্রা সঙ্গে লইয়। চলিয়া যান। 

ধর্মদাসবাবু পুনরায় [থয়েটারের ম্যানেজার হইলেন এবং মহেন্ত্রণাল 
বন্থ, মতিলাল সুর, ক্ষেত্রমণি, গোলাপনুন্বরী প্রভৃতিকে লইয়া পুনরায় 
দল গঠিত করিলেন । হরলাল বাবুর “শত্রু সংহার+ এবং উপেন্ত্রনাথ দাসের 
শরৎনরোজিনী নাটক যথাক্রমে অভিনীত হয়। “শরৎ নরোজিনী' নাটকখানি 
সাধারণের বিশেষ হাদয়গ্রাহী হইয়াছিল। 

নগেন্দ্রবাবু সম্প্রদায় লইয়! প্রথমে “লুইস থিয়েটার তথ। হইতে “হাওড় 

বেলওয়ে ষ্টেজে' কয়েকরাত্রি অভিনয় করিয়া শেষে বেঙ্গল থিয়েটারের সহিত 


* রুপ্রপাল সেক্সপীয়রের “ম্যাকৃবেখ' নাটক অবলম্বনে রচিত হইয়াছিল। এই 
নাটক অভিনয়ের পর গিরিশচন্্র ম্যাকৃবেধ নাটকের মুল অনুবাদে প্রবৃত্ত হদ। বিস্তৃত 
বিবরণ ১৭৩ পৃষ্ঠার টীকায় ভুষটব্য। 


১৮৪ গিরিশচন্দ্র 


মিলিত হইলেন। কিছুদিন পরে মদনমোহন বর্মণ কাদদ্থিনীকে লইয়া? 
পুনরায় গ্রেট স্তাসান্তালে আসিয়া যোগ দেন। 

গিরিশচন্ত্র দাস নামক কলিকাত। “ফরেন অফিসের, জনৈক উচ্চকর্ম- 
চাবী সে সময় সবকারী কার্যে (দিল্লীর দববার উপলক্ষে ) দিল্লীতে 
থাকিতেন, তাহার উৎসাহে ধর্মদাসবাবু তথায় অভিনয়ার্থে গ্রেট 
স্তাসান্তাল হইতে কতকগুলি লব্বপ্রতি্ঠ অভিনেতা ও অভিনেত্রী 
লইয়া ১৮৭৫ থৃঃ, মার্চমাসে দিল্লী যাত্রা করেন। কলিকাতায় মহেন্ত্লাল 
বন্থু ম্যানেজারেব প্রতিনিধি (০16. 11918851 ) হইয়! প্রথমে সধবার 
একাদশী, হেমলতা! প্রভৃতি পুবাতন নাটক অভিনয় করিয়! ১৭ই 
এপ্রিল (১৮৭৫ থুঃ) তারিখে মাইকেল মধুস্থদন দত্তেব “তিলোত্তমা 
সম্ভব কাব্য+ নাটকাকারে গঠিত করিয়া এই প্রথম অতিনয় করেন? 
কিন্তু অভিনয়ে কৃতকার্য্যতা লাভ করিতে না পারিয়া, ৮ই মে তারিখে 


“নন্দন কানন, নামক একখানি গীতিনাট্য অভিনয় করেন। 
দিল্লী হইতে লাহোর, আগ্রা, বৃন্দাবন, কানপুব, লক্ষৌ প্রভৃতি 


নানাস্থানে অভিনয় কবিয়া, মে মাসের মাঝামাঝি ধর্মদ্রান বাবু সদলে' 
কলিকাতায় ফিবিয়া আসেন। সম্প্রদায় যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করিয়া আনিয়া- 
ছিলেন, বিশেষতঃ লাহোবে কাশ্মীরের মহারাজের সমন্মুথে অভিনয় করিয়া' 
গ্রেট স্তাসান্তাল সম্প্রদায় যেরূপ অধিক অথ পাইয়াছিলেন, সেইরাপ শাণ, 
জামিয়ার, স্বচ্ছ পাথব প্রভৃতি বহুমূল্য পুরস্কাব শাভ করিয়াছিলেন । 
কলিকাতায় আসিয়া ইহাব! থিয়েটারেব মালিক ভুবনমেঁহন বাবুকে 
যৎসামান্ত অর্থ এবং কাশ্মীবাধিপতিব উপহার স্বরূপ একখানি অল্পমূল্যের 
রুমাল ও একথানি ছোট পাথবেব বেকাবি প্রদান কবেন। কিছুদিন, 
পরে সমস্ত রহস্ত প্রকাশ হওয়ায় এবং থিয়েটারে লোকসান ও হিসাব- 
পত্রের গোলমাল ইত্যাদি নানা কাবণে বিরক্ত .হইয়া! ভুবনমোহন বাঝু 


ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ ১৮৫ 


আগস্ট মাম (১৮৭৫ ধৃঃ) হইতে শ্তামপুকুর-নিবাসী কৃষ্ণধন বন্দ্যোপাধ্যায়কে 
থিয়েটার লিজ প্রদান করেন। কৃষ্ণধনবাবু থিয়েটারের “ইগ্ডিয়ান স্কাসান্তাল 
থিয়েটার নামকরণ পূর্বক মহেন্্রলাল বন্থুকে ম্যানেজার করিয়া থিয়েটার 
চালাইতে আরস্ত করেন; কিন্তু চারিমাস যাইতে না যাইতে লাভ হওয়া 
দুরে থাকুক, তিনি খগগ্রস্ত হইয়। পড়িলেন, থিয়েটারের ভাড়া পর্যন্ত দিতে. 
পারিলেন না। ভৃবনমোহন বাবু বাধ্য হইয়া পুনরায় থিয়েটার নিজহস্তে 
গ্রহণ করিলেন । 

এবার গ্রেট স্াপান্তালেব ডাইরেক্টার হইলেন উপেন্দ্রনাথ দাস এবং 
ম্যানেজার হইলেন নাট্যাচারধ্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্থা। 'শবৎসরোজিনী 
এবং 'মুরেন্দ্রবিনোদিনী” নাটক লিখিয়া উপেন্ত্রবাবু নাট্যামোদীগণের' 
নিকট স্থপরিচিত হইয়াছিলেন। তিনি দেশভক্ত এবং কর্মা পুরুষ ছিলেন। 
বঙ্গালয়ের অভিনেত্রীগণ হীন বারাঙ্গনাশ্রেণীভূক্ত ন হইয়৷ সমাজ-অস্তর্গত 
একটা স্বতন্ত্র জাতি মধ্যে গণ্য হয়-উপেন্্রবাবুর ইহাই ইচ্ছা ছিল। 
তিনিই উদ্যোগী হইয়া! গোলাপনুন্বরীর সহিত গোষ্ঠবিহারী দত্তেব বিবাহ 
দিয়াছিলেন। গোলাপন্ুন্দরী 'শরত্সরোজিনী+ নাটকে “ন্ুকুমারী”র ভুমিকা 
এত ন্ন্দর অভিনয় করিয়াছিলেন যে সেই সময় হইতে ত্বাাকে সকলে 
“স্থুকুমারী” বলিয়া ডাকিত। তাহার পর গোষ্ঠবিহারী দত্তের সহিত বিবাহ 
হওয়ায় সাধারণের নিকট তিনি “ম্থকুমারী দত্ত” নামে অতিহিতা৷ হন। 

উপেন্দ্রবাবুর উৎসাহেই গ্রেট স্তাসাস্তালে নু প্রসিদ্ধ নাট্যকার জ্যোতি- 
রিক্্রমাথ ঠাকুরের পুরুবিক্রম ও সরোজিনী নাটকের পুনরভিনয় হয়। 
বহুদিন পূর্ব্বে বেঙ্গল থিয়েটারে উক্ত নাটক ছুইথানি প্রথমে অভিনীত- 
হইয়াছিল ? কিন্তু গ্রেট স্তাসান্তাল সম্প্রদায় দক্ষতা সহকারে নাটক ছুইখানির, 
অভিনয় করিয়া দর্শক-হাদয়ে জাতীয়তার বীজ অস্কুরিত কবিয়াছিলেন। 
পুরুবিক্রম নাঁটক্কের সঙ্গীত-_প্জয় ভারতের জন, গাও ভারতের জয়” এবং 


১৮৩৬ গিরিশচন্দ্র 


সরোজিনী নাটকের ক্ষত্রিয় মহিলাগণের জহর-বেতের গান-_“জল্‌ জল্‌ চিতা 
জবলরে দ্বিগুণ--পরাণ সঁপিবে বিধবা বাল1” সে সময়ে পথে মাঠে ঘাটে-_ 
সর্বত্র গীত হইতে থাকে। 


“গগভক্কান্ লক” আঅভিডন্জ্স 


মহারাণী ভিক্টোবিয়ার জ্যো্টপুত্র, ভূতপুর্ব সম্রাট সপ্তম এডওয়ার্ড সে 
সময়ে যুবরাজ ছিলেন। তিনি ১৮৭৫ খীষ্টাব্বের শেষভাগে ভারতবর্ষ দর্শনে 
শুভাগঘন কবিয়াছিলেন। ১৮৭৬ খীঃ, জানুয়ারী মাসে তিনি কলিকাতায় 
পদার্পণ করেন। যুবরাজের অভ্যর্থনার নিমিত্ত কলিকাতায় অপূর্ব 
সমারোহ হইয়াছিল। সে সময়ে ভারতের ঝড়লাট- বর্ড নর্থক্রুক ছিলেন। 
কলিকাতা, হাইকোর্টের স্থগ্রসিদ্ধ উকীল স্বর্গীপ্ন জগদানন্দ মুখোপাধ্যায় * 
মহাশয়, যুবরাজকে তাহার ভবানীপুরস্থ ভবনে আহ্বান কবেন। যুবরাজ 
বধির্বাটীতে প্রবেশ করিবার পর মুখোপাধ্যায়-গৃহিণী এবং অন্তান্ত কুল- 
মহিলাৎ1 শঙ্খধবনি, ভুলুধ্বনি, বরণ প্রভৃতি দেশীয় হিন্দু আচার-অন্ুষ্ঠানে 
খুবরাজকে ন্বর্ধন! করেন। শিক্ষিত এবং অন্ত্রাস্ত অনেক হিন্দু-পরিবাবে 
বর্তমান চাল চলন-_পাশ্চাত্য রীতি-নীতির অন্ুকবণে যতটা পাশ্চাত্য 
ভাবাপন্ন হইয়াছে-_সে সময়ে ততট! হয় নাই। জগদানন্দবাবুব উক্ত 
কাধ্যের জন্ত দেশে ও সমাজে তুমুল আন্দোলন চলিতে লাগিল-_ 
ংবাদপত্রসমূহে তীব্র প্রতিবাদ এবং নিন্দা বাহির হইতে লাগিল । “বেচে 
থাকে। মুধুজ্যের পো, খেল্লে ভাল চোটে” বলিয়া কবিবর' হেমচন্দ্রের 
“বাজীমাৎ, কবিতা বাহির হইল। গ্রেট স্তাসান্াল থিয়েটারও এই 
হুছ্ুগে পগজদানন্দ”দ নামক একথানি প্রহমনের অভিনয় ঘোষণ। 
করিলেন। স্বর্গীয় উপেন্দ্রনাথ দাস প্রহসনখানি রচনা করেন এবং 


৪ 


* সুগ্রদিদ্ধ অভিনেত] গ্রীধুক্ধ রাধিকানন মুখোপাধ্যায় ইহ্হারই একজন বংশধর । 


ভ্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ ১৮৭ 


অনুরুদ্ধ হইয়া নট-গুরু গিরিশচন্দ্র তাহাতে কয়েকখানি গান বাঁধিয়। 
 দিয়াছিলেন।* ১৮৭৬ খ্ীষ্টাব্ষ, ১৯শে ফেব্রুয়াবী, শনিবার তারিথে গ্রেট 
প্তাসান্তাল থিয়েটারে “সরোজিনী+ নাটক এবং 'গজদানন্' প্রহসন অভিনীত 
হয়। বল! বাহ্ছল্য-_রঙ্জালয়ে লোকারণা হইয়াছিল। প্রথিতনাম। 
সন্ত্রান্ত ও ধনাঢ্য ব্যক্তির উপর ব্যঙ্গ ও বিদ্রপের তীর কটাক্গ-__দর্শকগণ 
পরম আনন্দের সহিত উপভোগ করিয়াছিল। ২৩শে ফেব্রুয়ারী বুধবারে-_ 
নাট্যাচার্য্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থু মহাশয়ের 7376? 10181); উপলক্ষে 
গ্রেট স্টাসান্টালে পুনরায় 'গজদানন্ন, এবং “সতী কি কলঞ্চিনী*র অভিনয় 
হয়। একজন নিরপরাধ, সন্ত্াস্ত এবং রাজভক্ত গ্রজাকে থিয়েটারে এইরূপ 
ঘ্বণিতভাবে চিত্রিত হইতে দেখিয়া পুলিশ হইতে "গজদানন্দ” প্রহমনের 
অভিনয় বন্ধ করিয়। দেওয়া হয়। ২৬শে ফেব্রুয়ারী, শনিবার তারিখে 
গ্রেট স্তাসান্তালে “কর্ণাটকুমার নামক একখানি নৃতন নাটক এবং 
গজদানন্দ প্রহসনের নাম পরিবর্তন করিয়া “হন্ুমান-চরিআ গ্রহন 
অভিনীত হয়। অভিনয় রাত্রে ডাইরেক্টার উপেন্ত্রবাবু রঙ্গমঞ্চ হইতে 
একটা তীব্র বক্তৃতাও করেন। 

পুনরায় পুলিশ হইতে “হন্থমান চরিত্র এবং “কর্ণাটকুমাবের অভিনন্ন 
বন্ধ করিবার আদেশ আইসে। তৎপরবস্তী বুধবার ১লা৷ মার্চ তারিখে 
উপেন্ত্রবাবুর 136766 718) উপলক্ষে *মুরেন্দ্রবিনোদিনী* নাটক এবং 
7 [17৩ চ১০1105 ০1 [১18 270 51166” নামক নূতন প্রহসন অভিনীত 





* আমরা বহু অনুসন্ধানে ছুইখানি শীতের কিয়দংশ সংগ্রহ করিতে পারিয়াছি। 
প্রথম গীতটা অমৃতলাল মৃখোপাধ্যায় (বেল বাবু) গাহিতেন। দৃগ্ভ--হাইকোর্টের 
সন্থুখ । গানের প্রথম ছত্র--“( ওরে ) জজ হ'তে চাও গজ গিরিধন!- দ্বিতীয় গীতটা 
সুপ্রসিদ্ধা অভিনেত্রী ক্ষেত্রমণি গাহিতেন। যথাঃ--"আমি পিসী ধাকতে ভাবন| কিরে 
'বোকা ছেলে । অনেক হুকৃতির ফলে আমার মতন পিদী মেলে ॥ ইত্যাদি । 


১৮৮ গিরিশচন্দ্র 


হয়। অভিনয় রাত্রে উপেন্ত্রবাবু পুনরায় একটা উত্তেজনাপূর্ণ ইংরাজি বক্তৃতা: 
করেন। 

ইহার পরিণাম বড়ই ভীষণ দাড়ীইল। গভর্ণমেণ্ট থিয়েটার সম্প্রদায়কে 
কঠোর শিক্ষাানে প্রস্তত হইতে লাগিলেন । বড়লাটের নিকট হইতে 
০:৫0178,008 বাহির করিয়া, পুলিশ হইতে--গজদানন্দ, হনুমানচরিত্র, 
কর্ণাটকুমার এবং [৩ 7১০1105 ০01 1১0 270 91960.এর অভিনয়! 
বন্ধ করিয়া দেওয়া হইল। গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটাব সম্প্রদায় যদিও 
তৎপরে সংঘত হুইয়া ৪ঠা মার্চ, শনিবার তারিখে “সতী কি কলঙ্কিনী 
গীতিনাট্য এবং “উভগ্ন সঙ্কট প্রহপনেব অভিনয় ঘোষণ। করিয়াছিলেন, 
তথাপি সেই দিন-_অভিনয় রাত্রে যে ঘটনা ঘটিল, তাহ! নাট্যশালাঁৰ 
ইতিহাসে চিরন্মরণীয় হইয়া থাকিবে। 

ভভিন্স্স-ন্নিঅভ্দ্র- ন্ন 
(10191709010 1768100011772,0)065 0০000019111 ) 

যে গ্রহন অভিনয় করিয়া গ্রেট স্তাসান্তাল সম্প্রদায় গভর্ণমেণ্টের 
বিরাগভাজন হইয়াছিলেন, তঙ্লিমিত্ত তাহাদেব উপর দোষারোপ না করিয়! 
অন্ত এক অপ্রত্যাশিত কারণে গভর্ণমেন্ট তীহাদের দণ্ডেব ব্যবস্থা! 
করিলেন | ইতিপুর্ক্বে যে “ম্ুরেন্্রবিনোদিনী” নাটক গ্রেট স্তাসান্তাল 
থিয়েটারে অভিনীত হইয়াছিল, তাহা অশ্লীল (0৮5০59০ ) এবং সেই 
অশ্লীল নাটক অভিনয় ও অশ্লীল দৃশ্য প্রদর্শনের জন্য গভর্ণমেন্ট থিয়েটারের 
কর্তৃপক্ষ এবং অভিনেতাগণকে গ্রেপ্তার করিবাব আদেশ দিলেন। 

৪ঠা মার্চ, শনিবাব গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটারে “সতী কি কলঙ্কিনী 
গীতিনাট্য অভিনীত হইতেছে, এমন সময়ে হঠাৎ ডিপুটি পুলিশ কমিশনার 
ল্যান্বার্চ সাহেব স্বদ্দলবলে আসিয়া, গ্রেট স্তাসান্তালের ডাইরেক্টার 
উপেন্দ্রনাথ দাস, ম্যানেজার জীযুক্ত অমৃতলাল বনু, লন্বপ্রতিষ্ঠ অভিনেতা 


ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ ১৮৯ 


অতিলাল নুর, অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় ( বেলবাবু ), শিধচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, 
গোপাল চন্দ্র দাস, সঙ্গীতাচাধ্য রাঁমভারণ সান্ন্যাল প্রভৃতিকে ওয়ারেন্টে 
ধরিয়! লইয়া! যান। & সহস৷ পুলিশ আসিয়া ধরপাকড় আরম্ভ করিলে 
থিয়েটারে একট! ভীষণ হুলস্থুল পড়িয়া যায়। দর্শকগণ আতঙ্কে ছত্রভঙ্গ 
হইয়া! পড়ে। অভিনেতার! ব্যাকুল হইয়া! উঠেন এবং অভিনেত্রীগণ 
ক্রন্দন করিতে সুরু কবেন; কিন্তু উপেকন্দত্রবাবু এবং অমৃতবাবুব নির্ভীকতায় 
ও প্রবোধ বাক্যে তাহার! আশ্বস্ত হন। 

লালবাজাব পুলিশ কোর্টে প্রেসডেন্সি ম্যাজিষ্রেট মিঃ ডিকেন্দের নিকট 
বিচাব হয়। গ্রেট গ্তাসান্তাল থিয়েটারের শ্বত্বাধিকারী শ্রীযুক্ত ভূবনমোহন 
নিয়োগী কোটে গিয়া ১৪:5৫: করেন। ডাইরেক্টার উপেন্দ্রনাথ 
দাম (হাইকোর্টের স্ুপ্রলিদ্ধ প্রাচীন উকীল শ্রীনাথ দাসের পুত্র) 
থিয়েটার সংক্রাস্ত সর্ধবিষয়ের দাগ্লিত্, তিনি স্বপ়্ং শ্বত্বাধিকারীর নিকট হইতে 
গ্রহণ করিয়াছিলেন স্বীকার করায়, ভুবনমোহন বাবু অব্যাহতি পান। 

বন্ধ শিক্ষিত এবং মন্্রাস্ত ব্যক্তি নাটকথানি অশ্লীলতা-বজ্জিত বলিয়া 
সাক্ষ্য প্রদান করেন। কিন্তু তথাপি ম্যাজিষ্রেট সাহেব ইত্ডিয়ান পিনাল 
কোডের ২৯২ ও ২৯৪ ধারাম্থুপারে দোষী সাব্যস্ত কবির! থিয়েটারের 
ডাইরেক্টার উপেন্ত্রনাথ দাস এবং ম্যানেজার শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থুকে 





* শুনা যায় ই্রেজম্যানেজার ধর্মনদাস সুর মহাশয় ষ্টেজের উপর সিলিংএ উনিয়া 
লুকাইয়াছিত্তেন। মতিলাল নূর দেখিতে কৃষ্ণবর্ণ ছিলেন, তিনি ঝাঁক! মুটে সাজিয় 
পলায়ন করিবার সময় ধর! পড়েন। মহেম্্রলাল বন্গ তৎপর দিবস প্রাতে পান্কীর দোর 
বন্ধ করিয়া! যাইতেছিলেন, কিন্তু পুলিশের চক্ষু এড়াইতে ন। পারিয়। ধৃত হন। নটগুরু 
গিরিশচন্দ্র ঘোষ সে সময়ে থিয়েটারের সহিত বিশেষরূপ সংশ্লিষ্ট ছিলেন ন! । মাঝে মাঝে 
খিয়ে্টারে আসিতেন এবং প্রয়োজনমত সাহীয্য করিতেন। তখন তিনি 'ইও্ডয়ান লিগে" 
কাধ্য করিতেন। পুলিশ আসিবার পুর্ব্বেই তিনি থিয়েটার হইতে চলিয়া গিয়াছিলেন। 





১৯০ গিরিশচন্দ্র 


বিন। পরিশ্রমে একমান করিয়৷ কারাদণ্ড এবং অন্তান্ত কলকে অভিনেতা 
মাত্র বলিয়! মুক্তি গ্রাদান কবেন। (৮ই মার্চ, ১০৭৬ খ্রীষ্াৰ )।. 
হাইকোর্টে মোশান হয় । ইহাদের উকীল ছিলেন সুগ্রসিদ্ধ গণেশচন্দ্র 
চন্ত্র। সেদিন দোলের বন্ধ থাকা সত্বেও হাইকোর্টের জজ ফিয়ার 
সাহেব কোটে আসিয়া ইহাদিগকে জামিনে খালাস প্রদান করেন। পরে 
বিচার হয়। বিচারে বসেন জাষ্টিস ফিয়ার ও মার্কবি। ইহাদের ব্যারিষ্টার, 
ছিলেন মিঃ ব্রান্সন, মনোমোহন ঘোষ এবং টি, পালিত। বিচারে 
নন্ুরেন্্র বিনোদিনী” অশ্লীল (9০৫7০) প্রমাণিত না৷ হওয়ায় উপেন্দ্রবাবু এবং 
অমৃতবাবু অব্যাহতি লাভ করেন ( ২*শে মার্চ, ১৮৭৬ খ্রীঃ)। ইহারা 
তিন দিন মাত্র জেলে ছিলেন। সে সময়ে ডাক্তাব মেকাপ্জি সাহেব জেল 
সুপারিন্টেণ্ডে্ট ছিলেন। তিনি ইঞ্াদিগকে সাহেবদের কোয়াটাবে 
থাকিতে দিয়াছিলেন এবং ইহীদেব সহিত বিশেষ সন্ধ্বহাব করিয়াছিলেন। 
£পর আদালতের উপব নির্ভর ন! কবিয়া গভর্ণমেন্ট স্বয়ং 
যাহাতে থিয়েটারে সন্দেচ্জনক নাটকাদির অভিনয় বন্ধ করিতে পারেন, 
তন্নিমিত্ত অভিনয়-নিয়ন্ত্রণ-আইন (7018)9110 7১6710)10817069 0০01101 
[31] প্রস্ততের নিমিত্ত তৎপর হুইয়! উঠিলেন। মার্চ মাসের মধ্য- 
ভাগেই মাননীয় মিঃ হবহাউন কাউন্সিলে আইনের একটী খসড়া দাখিল 
করিয়াছিলেন । যথাঃ_ 


£[0080 ত15106557005 00981701010 98301 00101017 0080 ৪0] 
018278010 [9810010)91806 13 50810091008 01 06190720170, 01 11051) 
[0 67:0109 165911088 01 015581151801101) (0৬2708 (1)60306110)61)0 01 
1617 0 08085 1810) 10 277) [0180 08110 10 105 0511010281106, 01 
783 ০0761 918৩ [016]00108] (01106 1770916909 01 0116 [000110) 00%৩10- 


"20617029161 01001016800) [9671010)91)068,1, 


ভ্রেয়োবিংশ পরিচ্ছেদ ১৯১, 


গভর্ণমেন্ট বগ্পি -কোনও নাট্যাভিনয় কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর বা, 
গভর্ণমেন্টের বিরুদ্ধে সাধারণের অসস্তৌষ উৎপাদক ও ব্যক্তিবিশেষের' 
মনঃপীড়াকারক ব! জনসাধারণের স্বার্থ হানিকর বিবেচন! কবেন, তাহ। 
হইলে এইরূপ নাট্যাভিনয় বন্ধ করিয়া দিতে পারিবেন। 

কাউম্সিলের মেম্বাবগণ বিলখানি মমর্থন করিলে তাহা সিলেক্ট কমিটব 
হস্তে প্রদত্ত হয়। মিঃ ককরেল, রাজ! নরেকন্দ্রকৃষ্জ বাহাছুর, স্তাব 
আলেকজেগ্ডার আরবুদনট, এবং মাননীয় মিঃ হবহাউস এই চারি জনকে 
লইয়া সিলেক্ট কমিটি গঠিত হয় । সকলে একমত হইয়া বিল খানি পাশ 
করাই সাব)স্ত করেন ) এবং ইগ্ডিয়। গেজেটে ( ৩৪৬ পৃষ্ঠা, ২৫শে মার্চ, 
১৮৭৬ থুঃ ) ইহা! বিজঞাপিতও হয়। 

কলিকাতা! ও ভারতের নানাস্থান হইতে এই বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ 
হইয়াছিল, তন্মধ্যে কলিকাতায় একটি প্রতিবাদ সভার বিবরণ ইংলিশমযান 
হইতে সংগ্রহ করিতে পারিয়াছি। ৪ঠা এপ্রিল, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টাব 
সময় হাইকোর্টের জঙ্গ দ্বারকানাথ মিত্রের বাটাতে একটি প্রতিবাদসভা হয় । 
প্রখ্যাতনাম! গ্রাণনাথ পণ্ডিতের প্রস্তাবে ও চন্দ্রকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের অন্থু- 
মোদনে সুপ্রসিদ্ধ “রেজ এও রায়ত* সম্পাদক শ্ভূনাথ মুখোপাধ্যায় মহাশয়: 
সভাপতির আসন গ্রহণ করেন। সভায় বন্ুগণ্যমান্ত ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন । 
একটি 71617)0118] ব্যবস্থাপক সভায় প্রেরণ করা স্থির হয়। সুবিখ্যাত 
রাসবিহারী ঘোষ, আশুতোষ বিশ্বান গ্রভৃতি কমিটির মেঘ্ার ছিলেন। 

সাধারণের প্রতিবাদ সত্বেও রাজ! নরেন্দ্র বাহাঁছব এবং আরও 
অনেক শিক্ষিত ব্যক্তি গতর্ণমেণ্টের এই নূতন আইনের নমর্থন করিয়া 
ছিলেন। যাহা হউক ১৮৭৬ খুষ্টাব্বের ১৭ই ডিসেম্বর তারিখে বড়লাট 
বাহাছুব 'অভিনয়-নিয়ন্ত্রণ-আইন মঞ্জুর করেন। সেই দিন হইতে, বঙ্গ- 
নাট্যশালার চরণে যে শৃঙ্খল জড়িত হইয়াছে, আজিও তাহ! সমভাবেই আছে।' 


১৯২ গিরিশচন্দ্র 


উপেন্রনাধ্‌ দাস হাইকোর্ট হইতে মুক্িলাত করিয়া ১৮৭৬ খৃষ্টাব্ের 
এপ্রেল মানে বিলাত চলিয়া! যান। নাট্যাচার্যয শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্থ 
মহাশয়েরও উপেন্দ্রবাবুব সহিত বিলাত যাইবার বড়ই ইচ্ছা! ছিল, কিন্তু 
ব্মটীতে বিশেষ বাঁধা পাটা! মনংক্ষ্র, হইয়া থাঁকিতেন। তৎপর বৎসর 
১৮৭৭ থৃষ্টাবের এপ্রিল মাসে পুলিস ইন্স্পেক্টার স্বর্গীয় বিহারীলাল 
চট্টোপাধ্যায় ( খ্যাতনাম! অভিনেত। শ্রীযুক্ত হীরালাল চট্টোপাধ্যায়ের পিতা৷ ) 
মহাশয়েব সহিত পুলিশের কণ্ম গ্রহণ করিয়। পোর্ট ব্রেয়ার গমন করেন। 

গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটার এ সময়ে ধর্মদানবাবুর অধযক্ষতায় পরিচালিত 
হূইতেছিল। নাটকের আইন পাশ হওয়ায় থিয়েটারের কর্তৃপক্ষগণ আব 
স্থেচ্ছামত নাটক অভিনয় করিতে সাহস করিতেন না৷ । গীতিনাট্যেবই 
প্রায় অভিনয় হইত। ন্ুপ্রসিদ্ধ গীতিনাট্যকাব স্বর্গীয় অতুলকৃষ্ণ মিত্র 
প্রনীত “আদর্শ সতী ব! সাবিত্রী-সত্যবান” নামক একথানি গীতিনাট্য এই 
সময়ে অভিনীত হয়। যুবক অতুলকৃষ্ণের প্রথম উগ্ভমেব এই গীতি- 
নাট্যথানি রামতারণবাবুব সুমধুর সুর-সংষোগে সাধারণের নিকট 
বিশেষ সমাদৃত হুইয়াছিল। 

তাহার পর স্বর্গীয় রাধামাধব হালদার মহাশয্ন-বিরচিত একথানি 
গীতিনাট্য গ্রেট স্তাসান্তালে অভিনীত হয়। গীতিনাট্যথানি শ্রবিধাজনক 
হয় নাই। নাট্যাচার্য্য অমৃতলাল বাবুব মুখে শুনিয়াছি, গিরিশচন্দ্র এই 
গীতিনাট্যের অভিনয় দেখিয়। ছুইথানি হাসিব গান বাঁধিয়াছিলেন। যথা £-_ 


১ম গীত 


আমায় ফিরিয়ে দে না আধুলি__ 
কি ঠকানটা ঠকালি! (ইত্যাদি) 


(বলা বাছুলা, সে সময়ে সর্ব নিয়শ্রেণীর টিকিটের মুল্য আট আন ছিল। ) 


ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ ১৯৩ 
হয় গীত 
ও রাখানাথ, বাশরী কই? 
'তোমার কোথায় গেল চূড়োধড়া, 
কৌচড়তর! মুড়কি খই? 
যাছু, খাঁকড়া টেনেছ, যেন ওগড়। বুনেছ, 
চাকা চাকা লেখা জোকা কতই লিখেছ ; 
( ইত্যাদি ) 

” যাহাই হউক দর্শক-সংখ্যা দিন দিন কমিয়৷ যাওয়ায় এবং দেন! 
উত্তরোত্তর বৃদ্ধি হইতে থাকায়, ভূবনমোহন বাবু পুনরায় থিয়েটার 
লিজ দিবাব সন্কল্প করিলেন । 

গ্রেট স্যাসান্তাল থিয়েটাব প্রথম হইতেই একট বিশ্ঙ্খলায় পরিচালিত 
হইয়া আদিতেছিল। তুবনমোহন বাবুব উপর যখন যিনি আধিপত্যলাভ 
করিতে পাবিয়াছেন, তিনিই তখন থিয়েটারের কর্ণধার হইয়াছেন। 
গিবিশচন্ত্র এ পধ্যস্ত থিয়েটারের কোনও দাক্সিত্ব গ্রহণ কবেন নাই। 
তাহাকে সমস্ত দিন অফিসে কার্য করিতে হইত, তাহার উপর পারি- 
বাবিক শোকতাপ ও অশান্তিতে দীর্ঘকাল তিনি থিয়েটারের সংশ্রৰই রাখেন 
নাই। অনুরুদ্ধ হইয়া মাঝে মাঝে আলিয়। মৃণালিনী ও কপালকুগুল! 
নাটকাকারে গঠিত করিয়। দিয়াছিলেন, পশুপতি প্রভৃতি কয়েকটা ভূমিকায় 
রজমঞ্চে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন এবং মাউসি, 0118110015 10190605917, 
ধীবর ও দৈত), আলিবাবা, দুর্গাপূজার পঞ্চরং, (87095 10819001211106, 
'সহিস হইল আজি কবি চুড়ামণি' প্রভৃতি কয়েকখানি ক্ষুদ্র রঙ্গনাট্য এবং 
প্রয়োজনমত অন্তান্ত নাটকাদিতে কতকগুলি গান বাধিয়া৷ দেন | 





* পাওুলিপি না থাকায় গিরিশ-গ্রস্থাবলীতে এই সকল রঙ্গনাটয প্রব্কাশিত "হয় 
নাই। সান্ন্যাল-বাটাতে অতিনীত ন্টাসান্যাল থিয়েটারে 01111919 10150505210 
১৩ 


* ১৯৪ গিরিশচন্দ্র 


পূর্বে এববার ভূবনমোহন বাবু স্তামপুকুব-নিবাষী কৃষ্ধধন বন্দ্যো- 
পাধ্যায় মহাশয়কে থিয়েটাব লিজ দিয়াছিলেন, কিন্তু ভাঁডা ন! পাইয়! নালিশ 
কবিষ্! গুনবায় থিয়েটাব স্বহস্তে গ্রহণ কবিতে বাধ্য হন। এবার তিনি 
কোনও বিশ্বস্ত গলেসি” খুঁজিতেছিলেন। গিবিশচন্দ্র লিজ লইবাব ইচ্ছা 
গ্রকাশ কবিলে ভুবনমোহন বাবু আনন্দ সহকাবে তিন বৎসবের নিমিত্ত 
তাহাকে থিয়েটাব ভাড়া দেন। স্ুুশিক্ষা দানে কলা-কৌশল দেখাইয়া ভাল 
নাটকেব অভিনয় কৰবিতে পাবিলে আবাব এই নিশ্রভ নাট্যশালাটাকে 
সমুজ্জল কবিয়। তোলা যায়, গিবিশচন্দ্রেব এ বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাস 
বলেই এবং*তাহাব কনিষ্ঠ শ্তালক দ্বাবকানাথ দেব ও সুসাহিত্যিক সুহৃদ 
কেদাবনাথ চৌধুবী মহাশয়দ্বয়েব বিশেষ উৎসাহে গিবিশ্চন্ত্র গ্রেট গ্ভাসান্তাল 
থিয়েটাব স্বয়ং পবিচালনে অগ্রসব হইয়াছিলেন। 





পূর্বে অভিনীত হইয়াছিল, গ্রেট স্তাসান্তালে তাহা! কিছু সংশোধিত এবং পরিবদ্ধিত হয়। 
“মাউনি" পঞ্চরং খানি গ্রেট স্তাসান্তালে যে দিন প্রথম অভিনীত হইবে বলির! বিজ্ঞাপিত 
হয়, সেদিনও বইখানি লেখা সমস্ত শেষ ন! হওয়ায়, বিষয়ের ভাব গ্রহণ করিয়াই গিরিশচন্দ্র 
অর্ধেন্দুশেখর এবং নুপ্রমিদ্ধা৷ অভিনেত্রী ক্ষেত্রমণি এঙনঞ্চে অবতীর্ণ হইয়! মুখে মুখে 
অভিনয় করিয়াছিলেন। এরূপতাবে অনেক পঞ্চরং অভিনীত হইত । 

“ধীবর ও দৈত্যেশ বেলবাবু ধীবরের তূমিক! অভিনয় করিতেন। 'প্যাণ্টোমাইম' 
অভিনয়ে তিনি অদ্বিতীয় ছিলেন। নৃত্য ও অঙ্গভঙ্গির সহিত যখন তিনি গান গাহিতেন, 
দর্পকগণ যেন একটী ছবি দেখিতেন। গীতখানি এই £- 

“যেরা হাস্‌কে ঝলো॥ ও মুন্নাজান, জান গিয়ারে। 
তোমার নাম ফুলকুমারী, তোমায় ন! দেখুলে মরি, 
তবে কেন রাধ! পিয়ারি, নজর! মারারে ॥” 

“রঙ্গালয়ে নেপেন* পুস্তিকার গিরিশচন্দ্র লিখিয়াছেন, “এই সময়ে পঞ্চরংয়ের 
বিশেষ প্রাছুর্ভাব ॥ ময়দানে লুইস ধিয়েটারের আদর্শে “একাধিক সহম্র রজনীর" বিষয় 
বিশেষ লইয়! পঞ্চরং রচিত হইত ও তাহাতে নৃত্যগীত তৃরি পরিমাণে থাকিত। 
রামতারণ এই সকল পঞ্চরংযের এক প্রকার পরিচালক ছিলেন। “আলিবাবাতে” 
রামতারণ মু্টী (মুগ্তাফা ) সাজিতেন। তাহার উক্ত ভূমিকার নৃত্যগীত ও রং ঢং আমার 
টক্ষের উপর আজও রহিয়াছে ।” 


চতুবিবংশ পরিচ্ছেদ 
গিল্লিশ5ত্েল্প কত্তুত্ান্্ীন্ন হ্যাস্ান্ভাজ্ন খ্িস্সেটীল্তর । 


“€হ্বহ্বম্বাদক বঞ্ধা আভ্িম্সস্্ 

গ্রেট স্টাসান্তাল থিয়েটার লিজ লইয়া ( ১৮৭৭ খ্রীঃ, জুলাই ) গিরিশচন্ত্ 
থিয়েটারের নাম পরিবর্তন করিয়া! পূর্বের -্তাসান্তাল থিয়েটার নাম দিলেন 
এবং অভিনয্বার্থে মহাকবি মাইকেল মধুন্দন দত্তের মহাকাব্য “মেঘনাদ বধ, 
নির্বাচিত কবেন। মেঘনাদ বধ নাটকাকারে পরিবন্তিত হইয়া বু পুর্বে 
বেঙ্গল থিয়েটারে অভিনীত হইয়াছিল। উক্ত থিয়েটারে কাব্যখানি 
যেবপভাবে নাট্যাকাবে গঠিত হইয়াছিল, তাহাতে নাট্য-কৌশলেব ক্রুটা 
দেখিয়। এবং অভিনয়-শিক্ষাদানও তাহার মনঃপুত না হওয়ায়, তিনি সম্পূর্ণ 
নূতনভাবে “মেঘনাদ বধ, অভিনয্বের সন্কল্প করেন। 

বেঙ্গল থিয়েটাবেব অভিনক্বে কাব্যের মাধুর্য অনেক স্থলে অক্ষুঃ 
থাকিত না। একপ্রকার গণ্ করিয়া বলিবারই চেষ্টা হইত। উক্ত 
খিয়েটাবের অভিনেতার গৌরব করিতেন যে, তাহাদের অভিনয় স্বাভাবিক 
এবং স্রবজ্জিত | কিন্তু পদ্য, গঞ্চ করিতে যাইলে সে একট! অস্বাভাবিক 
স্বব আসে এবং তাহাতে কাব্য-মাধুরীও নষ্ট হয়, ইহা তাহাদের লক্ষ্য 
ছিল না। 

গদ্য করিবার চেষ্টায় অভিনয়েরও হানি জন্মে। যথাস্থানে ভাবান্ধযায়ী 
নিম্ন ও উচ্চ সুর প্রয়োগ কর! চলে ন|।. কিন্তু বেঙ্গল থিয়েটারের অভিনয়ও 
কাব্যের গুণে দর্শকক্ষে আকৃষ্ট করিত। বেঙ্গল থিয়েটারে অভিনীত 


১৯৬ গিরিশচন্দ্র 


“মেঘনাদ বধ নাটকে রামের ভূমিকা অতি সামান্যই ছিল এবং পর পর দৃশ্ত 
স্থাপনও নাটকীয় সুকৌশলে সংযোদ্ধিত হয় নাই। 

নাট্য-কাব্য অভিনয়ে “যতি, রক্ষার প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা কর্তব্য । 
ইহা! প্রকাশ করিবার অভিপ্রায়ে এবং পূর্ববর্তী গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটারে 
উপধু্ণপরি গীতিনাট্যাভিনয়ের প্রতি কটাক্ষপাত করিয়া! গিরিশচন্দ্র একটা 
প্রস্তাবনা-কবিতা৷ রচনা করেন । “মেঘনাদ বধ' অভিনয়ের প্রথম রজনীতে 


ইহা সর্ব প্রথমে পঠিত হয় £-_ 


“যদি ধন প্রয়োজন না! হুইত কদাচন 
রঙ্গভূমি হেরিত কি রসহীন জন? 

বিমল কবিত্ব-আশে, কেহ রঙ্গালয়ে আসে, 
কেহ হেরে কামিনীর কটাক্ষ ঈক্ষণ। 

আসি এই রঙস্থলে, কত লোক কত বলে, 
সবার কথান্ন মম নাহি প্রয়োজন, 

কাব্যে যার অধিকার, দাস তার তিরস্কার, 
অকপটে কহে, করে মস্তকে ধারণ। 

সুর্ধীজন-পদধূলি, রাখি আমি মাথে তুলি, 


তিরস্কার তার-_-দোষ বারণ কারণ; 
“এন্‌কোর, ক্ল্যাপে” যার আছে মাত্র অধিকার, 
তার (ও) আজি করি আমি চরণ বন্দন। 


সবিনয়ে কহে ভূত্য, নহে বারাঙ্গনা-নৃতা, 
মেঘনাদে বীরমদ্ধে বিপুল গর্জন ? 
ঝুন্ধ ঝুন্ধু নাহি আর, কন্কপের ঝনৎকার, 


অস্ত্রে ন্ত্রাধাত ঘোর অশনি পতন । 


চতুবিবংশ পরিচ্ছেদ ১৯৭ 


গভীর তুলিয়া তান, মধুর মধুর গান, 
গন্ত পদ্ধ মাঝে এই মনোহর সেতু $ 

শেষাক্ষরে মিল নাই, গস্ভ যদি বল তাই, 
পদ্য বল! যাঁয় যতি বিভাগের হেতু । 

হলে কাব্য অভিনয়, জীবন সঞ্চার হয়, 
কোন্‌ অন্থরোধে যতি করিব বর্জন ? 

পাষাণে বীধিয়। প্রাণ, সে যতিরে বলিদান 
নাহি দিব, হই হব নিন্দার ভাজন। 

বাব মনে উঠে যাহা, তিনি বলিবেন তাহা, 


আমার য৷ কাধ্য আমি করিব এখন ॥* 

উপরোক্ত কবিতাটা গর্বব্যঞ্জক | সেই গর্ব ন্য্যসান্তাল থিয়েটারের 
অভিনয়ে সম্পূর্ণ বক্ষিত হইয়াছিল। বস্তুতঃ গিরিশচন্দ্র এরূপ নিপুণতার 
সহিত এই মহাকাব্য নাটকাকারে পরিবর্তিত করিয়া ইহার শিক্ষাদান 
করিয়াছিলেন এবং অভিনয্ব-সৌকর্ধ্যার্থে কয়েকটা সঙ্গীত বচন! করিয়। 
নাটকথানি এরূপ উপাদেয় করিয়! তুলিয়াছিলেন, যে, ধাহার! তৎপূর্ব্বে কেবল 
“মেঘনাদ বধ কাব্য” পাঠ করিয়াছিলেন, তাহার! এই দৃহ্টকাব্যের অভিনয় 
দর্শনে মাইকেলের ভাব ও ভাষার জীবস্ত মুত্তি প্রতাক্ষ করিয়া বিশ্বয় ও 
আনন্দে অভিভূত হন। শিক্ষিত ও সাহিত্যিক মহলে এই নাটকাভিনয় 
লইয়া কিছুদিন একটা আন্দোলন চলিতে থাকে । 

মেঘনাদ*বধ, লক্ষণের শক্তিশেল এবং প্রমীলার চিতারোহণ এই তিনটা 
বিষয় লইয়। “মেঘনাদ বধ (21029 ) অভিনীত হইয়াছিল। এক্ষণে 
যেসকল স্থযোগ্য অভিনেতৃবর্থের কলা-নৈপুণ্যে “মেঘনাদবধ' দর্শকগণের 
গ্রীতি আকর্ষণ করিয়াছিল, তাহাদের নায় উল্লেখ করিতেছি £_ 

রাম ও মেঘনাদ--গিরিশচন্ত্র ঘোষ, লক্ষমণ--কেদারনাথ চৌধুরী, 


১৯৮ গিরিশচন্দ্র 


রাবণ-__অমুতলাল মিত্র, বিভীষণ ও মহাদেব-_-মতিলাল সুর ; সুগ্রীব, 
মারীচ ও সাবণ-_অতুলচন্ত্র মিত্র ( বেডৌল ), হন্ুমান-_-যছুনাথ ভট্টাচার্য, 
ইন্দ্র- আশুতোষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাত্তিক ও দূত-_অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় 
(বেলবাবু ), মদন-_রামতারণ লান্যাল, মন্দোদরী--কাদস্থিনী দাসী, 
প্রমীলা- শ্রীমতী বিনোদিনী দাসী, চিত্রাঙ্গদা! ও মায় _লক্ষমীমণি দাসী, 
শচী-__বসস্তকুমাবী, রতি ও বাসন্তী_কুন্থমকুমারী (খোঁড়া ), 
নৃমুণ্মালিনী ও প্রভাদ।-_ ক্ষেত্রমণি দেবী ইত্যাদি । 

বামের ভূমিকা বেঙ্গল থিয়েটারে একরূপ পরিত্যক্ত হইয়াছিল, কিন্ত 
্টাসান্তাল থিয়েটারে রামের ভূমিকা! একটা উচ্চ ভূমিকায় পরিগণিত হয়। 
“সাধাবণী*-সম্পাদক সাহিত্যরথী অক্ষয়চন্্র সবকার মহাশয় গল্প করিতেন, 
"গিরিশবাবু যখন “রাম*-রূপে লক্ষ্মণকে বিদায় দেন, একদিন অভিনয় রাত্রে 
ঠিক সেই সময়ে মহিলা-আসনের সম্মুখস্থ চিক থসিয়া৷ পড়ে; কিস্তৃস্ত্রী ও 
পুরুষ উভয় দর্শকই তৎকালে এরপ মুগ্ধ যে, কাহারও ইহ। লক্ষ্য হয় নাই। 
অন্ক-শেষে পট ক্ষেপণ হইলে, নারীদর্শকবুন্দ সতর্ক হইলেন।” এখনকার 
রঙ্গালয় দেখিয়া! চিক পতন কি, হয়তো! পাঠক বুবিতে পারিতেছেন ন|। 
তখন রঙ্গীলয় দ্বিতল ছিল এবং দ্বিতলের একপার্থে চিক দিয়া স্ত্রীলোকের 
বসিবার স্থান হইত । 

স্ুপ্রসিদ্ধ অভিনেতা! কিরণচন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় বেঙ্গল থিয়েটারে 
“মেঘনাদ বধ নাটকে মেঘনাদের ভূমিকা! অভিনয় করিতেন । যুদ্ধযা্- 
কালীন মন্দোদরীর নিকট বিদাক়-দৃশ্তে, মাতাকে গ্রবোধ দিবার নিমিত্ত 
"মেঘনাদ-বেলী কিরণবাবু “কেন মা, ডরাও তুমি রাঘবে লক্ষণে 
রক্ষোবৈরী* বলিয়া এমনই সবেগে তরবারী কোষমুক্ত করিতেন যে, সত! 
কাটিয়া গিয় এক রাত্রে মন্দোদরীর হাতের তাবিজ ষ্টেজে পড়িয়া যাক্প। 
বল! বাহুল্য গিরিশচন্দ্র তরবারী স্পর্শও করিতেন না। সন্তানের . অযঙ্গল 


চতব্বিংশ পরিচ্ছদ ১৯৯ 


আশঙ্কায় বাকুল! জননীকে প্রবোধ দিবার নিমিত্ব, বীর ও মাতৃভঞ্ 
সস্তানের যেরূপ বিনয়, গানতীর্ধ্য এবং বীবত্বভিমানের আবশ্তক, গিরিশচন্্ 
এই দৃষ্টে সেই রস অবতারণা! করিতেন। আবার যজ্ঞাগার-দৃশ্তে যখন 
তিনি “ক্ষত্রকুলগ্লানি শত ধিক তোরে লশ্্বণ” বলিয়া! গর্জন করিয়! উঠিতেন, 
তখন তাহার সেই শান্ত ও সৌম্য মূর্তি মুহূর্তেব মধ্যে ক্রোধে আরক্তিম হইয়া 
উঠিত-__বক্ষঃস্থল যেন দ্বিগুণ ফুলিয়! উঠিত। পলকের মধ্যে এই তীষণ 
পবিবর্ভনে দর্শকগণ স্তত্ভিত হইয়া যাষ্টতেন। ১৮৭৯ শ্রীষ্টা্বের ১০ই 
ফেব্রুয়াবী তারিখের 'সাধারণী' পত্রিকায় 'মেধনাদ বধ অভিনয়ের দীর্ঘ 
সমালোচন! বাহির হয় । আমব! গিবিশচন্দ্রের “মেঘনাদ ভূমিকার অভিনয় 
সম্বন্ধে যেরূপ মন্তব্য বাহির হইয়াছিল, সেই অংশটুকু নিয়ে উদ্ধৃত 
করিলাম ।-- 

পন্যাম্পীন্পাল খিক্েউীল্র । ২রা ফেব্রুয়ারী রাত্রিতে "মেঘনাদ 
বধেব” অভিনয় দেখিতে গিয়া আমর! যে শ্রীতিলাভ করিয়াছি, 
অনেক দিন আমাদের ভাগ্যে সে প্রকার সুখ আর ঘটে নাই। 
রামচন্দ্র এবং মেঘনাদ, এই ছুই রূপে নাট্যাধাক্ষ শ্রীযুক্ত গিরিশচন্ত্র 
ঘোষ অভিনয় করেন। পাত্রদ্বয়ের চরিত্র, কাধ্য এবং ভাব সমস্তই 
বিভিন্ন, সুতরাং একই ব্যক্তিব দ্বিবিধ রূপ পরিগ্রহ কিছু বিসদৃশ্ঠতা 
হইয়াছিল, তাহা স্বীকার করিতেই হুইবে। কিন্তু গিরিশচন্ত্রের 
অভিনয়-দক্ষতায়, তাহার অসাধারণ ক্ষমতায়, এ দোষ দেখিয়াও আমরা 
মনে কিছু “করিতে পারি নাই, দোষ একেবারে ভূলিয়৷ গিয়াছিলাম 
এবং তাহার রামরূপের অভিনয়ে বারংবার আমাদের কঠোর চক্ষুও 
অশ্রুসিক্ত হুইয়াছিল। লক্ষণ যখন পৃজাগারে প্রবেশ করেন, তখন 
গিরিশচন্দ্রের মেধনাদ-সম্ভব সৌম্যভাব দর্শনে আমর! মুগ্ধ হই) আবার 
তৎপরক্ষণেই যখন মেঘনাদ সহম! রোষকষায়িত নেত্রে বীরমুর্তি পরিগ্রহ 


২০০ গিরিশচন্দ্র 


করিয়া বক্ষ প্রসাবণপূর্ব্বক লক্ষণের সহিত ছন্ঘ-ুদ্ধে প্রবৃত্ত হইবার উপক্রম 
করিলেন, তখন গিরিশচন্দ্র অভিনয়-পটুতাব চরম সীমা দেখা ইলেন, 
তাহার সে ভাব অদ্ভূত, বিস্ময়কর! তাহাতে আমরা মুগ্ধেরও অধিক 
হুইয়্াছিলাম। ইংলগ্ডের প্রথিতনাম! গ্যারিকেব ক্ষমতাব পরিচয় পুস্তকে 
পাঠ করিয়াছি, কিন্তু বঙ্গের গিরিশ অপেক্ষা কোনও গ্যারিক যে অধিকতর' 
ক্ষমত। প্রদর্শন কবিতে পাবেন, ইহ! আমাদের ধাবণা হয় না। গিরিশচন্দ্র 
দীর্ঘজীবী হউন, 'আ'র এইরূপে আমাদের সখ বদ্ধীন করিয়। সাধুবাদ গ্রহণ 
করিতে থাকুন। গিরিশ বঙ্গের অলঙ্কাব |” * সাধাবণী, ৯ম ভাগ, 
১৫ সংখ্যা । 


ঞ্শল্নাম্পীত্র হু” অভিন্নজ্জ 


“মেঘনাদ বধ অভিনয়ে বিশেষূপ কৃতকার্ধ্য হইয়! গিবিশচন্ত্র তৎপবে 
নবীনচন্দ্রের মহাকাব্য “পলাশীব যুদ্ধ" নূতন করিয়া নাটকাকাবে গঠিত 
কবেন। প্রায় ছুই বৎসর পূর্ব্বে বেঙ্গল 1থয়েটাব ভাড়া লইয়া “নিউ 
এবিয়ান থিয়েটাব” সম্প্রাদায় একবার “পলাশীর যুদ্ধ* অভিনয় করিয়াছিলেন। 
কিন্তু গিরিশচন্দ্রের নবভাবে গঠিত এবং নুতনত্ব পূর্ণ শিক্ষাদান-চাতুর্য্যে 
“পলাশীব যুদ্ধ'ও “মেঘনাদবধেব স্তায় নাট্যামোদিগণের পরম সমাদব 
লাভ করিয়াছিল। প্রথম অভিনম্ন বজনীব অভিনেতৃগণ £__ 

ক্লাইভ- গিরিশচন্দ্র ঘোষ, পিবাজদ্দৌলা-_মহেন্ত্রলাল বনু, জগৎশেঠ, 
ও ঘাতক-_অমুতলাল মিত্র, রাজবল্লভ-_-অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় 
(বেলবাবু), রায়ছর্নভ ও উদাসীন-মতিলাল স্ুর, ম্রোহনলাল-_ 
কেদারনাথ চৌধুৰী, মীরণ-__রামতারণ সার্ন্যাল। বেগম-_লক্ষমীমণি দাসী, 








* সাধারণী'-সম্পাদ্দক অক্ষয়চন্দ্রের পুত্র প্রীধুক্ত অজয়চন্ত্র সরকার মহাশয়ের 
সৌজন্তে “সাধারণীর" প্রাচীন ফাইল হইতে সংগৃহীত 


চতুব্বিংশ পরিচ্ছেদ ২০১ 


রাণী ভবানী--কাদদ্বিনী, ইংলগও"রাজলক্ী শ্রীমতী বিনোদিনী দাসী 
ইত্যাদি। ৃ 

পলাশীর যুদ্ধের সায় এরূপ নিখূ'তি অভিনয় বনকাল বঙ্গ রঙ্গালয়ে 
প্রদশিত হয় নাই। প্রত্যেক অভিনেতা! ও অভিনেত্রী তাহাদের তৃমিকার 
একটি আকার প্রদান করিয়া! দর্শক-হদয় রসাগ্নত করিয়াছিলেন। 

গ্রন্থকার নবীনচন্ত্র সেন এ সময়ে মফঃম্বলেব ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন। 
তিনি ছুটাতে কলিকাতায় আনিয়া! পলাশীর যুদ্ধের অভিনয় দেখিয়া 
নিরতিশয় আনন্দ প্রকাশ করেন। এই সময় হইতেই গিরিশচন্দ্রের সহিত 
নবীনচন্দ্রেব সৌহার্দ্য স্থাপিত হয়। এই সৌহার্দ্যের ভিত্তি শুধু পলাশীর 
যুদ্ধ” অভিনয়ে নহে_-অনেকট! প্রতিত্বন্দিতায়। প্রথম আলাপেব দিন 
গিরিশচন্দ্র নবীনচন্দ্রকে বলেন, "আপনার পলাশীর যুদ্ধে “দ্রম ক'রে 
দুরে তোপ গর্জ্জিল অমনি” লাইনটা লর্ড বায়রণের “010110 1767010% 
হইতে গৃহীত। & বায়বণ যেমন ওয়াটারলু যুদ্ধের পূর্বাবস্থা বর্ণনা 
কবিয়াছেন, আপনিও পলাশীব যুদ্ধেব পূর্বাবস্থা সেইরূপ বর্ণনা! করিয়াছেন। 
কিন্ত আমার মনে হয়, “ক্রম ক'রে দূবে তোপ গঞর্জিল অমনি” এ লাইন 
ভাল অন্কবাদ হয় নাই।” নবীনচন্ত্র বলিলেন, আপনি কিরূপ অনুবাদ 
করিতেন ?” উত্তবে গিরিশচন্দ্র বলিলেন, *মুথে মুখে হঠাৎ বায়বণের 
অন্গবাদ কর! সহঞ্জ নয়, ৩বু বোধ করি, এইরূপ হইলে বায়রণের ভাব 
কতক বজায় থাকে-_ 


নিকট, প্রকট ক্রমে বিকট গর্জন, 
অস্ত্র ধর” অস্ত্র ধর” কামান ভীষণ 1» 


ক 810 1562151) 0162101, 08901161 011217061015, 


£চযা। | হা 11019605075 0801001515 005010£ 00201 


২০২ গিরিশচন্তর 


উদার কবি গুণমুদ্ধ হইয়। গিরিশচন্দ্রকে ভ্রাতৃ সম্বোধনে আলিঙ্গন 
কবেন এবং সেই দিন হইতে বরাবর “ভাই” বলিয়া সম্বোধন করিতেন। 
শেষ বয়স পধ্যন্ত কবিঘয়েব পরস্পর একট! প্রাণের আকর্ষণ ছিল, 
যথাসময়ে পাঠকগণ নে রস আম্বাদন করিবেন । 

ভআগমন্নী আভ্ভিনজ। 

এই সময়ে আশ্বিন মাসে শারদীয় পুজা উপলক্ষে গিরিশচন্ত্র স্তাসান্তাল 
থিয়েটারের জন্ত “আগমনী” ও,অকালবোধন, নামক ছুই খানি নাট্যরাসক 
বচন। কবেন। আগমনী ১৪ই আশ্বিন, (১২৮৪ সাল) প্রথম অভিনীত 
হয়। গিবিরাজ, মহাদেব, উম! এবং মেনকার ভূমিকা যথাক্রমে রামতারণ 
সান্নাল, কেদারনাথ চৌধুরা, শ্রীমতা বিনোদিনী এবং কাদন্বিনী দাসী 
গ্রহণ করিয়াঁছলেন। আগমনীর গীতগুপি (ওম! কেমন কণরে পরের 
ঘরে ছিলি উমা বল ম তাই!” প্রভৃতি ) এত মধুব এবং ।মর্মম্পশী 
হইয়াছিল যে দর্শক মাত্রেই মুগ্ধ হইয়! মুক্তকঞ্ঠে ইহার প্রশংসা 
কবিয়াছিলেন। 


ওসক্গাজত্বান্রন আভ্ভন্জ্স 


“আগমনী, সর্বজন-সমাদৃত হওয়ায় গিরিশচন্দ্র উৎসাহিত হইয়া সঙ্গে 
সঙ্গে “অকাল বোধন নামক আর একখানি নাট্যরাসক প্রণয়ন করেন। 
“আগমনী” অভিনয়ের চারি দিন পরেই (১৮ই আশ্বিন ) স্তাসান্তালে ইহ! 
অভিনীত হয়। গিরিশমন্ত্র স্বয়ং রামচন্্রঞ এবং মহেন্দ্রলাল কমু “ইন্দ্র, 
'ভূমিক। অভিনয় করিয়। দর্শকগণের তৃপ্তি সাধন করিয়াছিলেন। 

“আগমনী+ ও “অকাল বোধন” ছইথানি পুস্তিকাই মুদ্রিত ও প্রকাশিত 
হইয়াছিল। গিরিশচন্দ্র হ্বীয় নাম গ্রস্থকাররূপে প্রকাশ না করিয়। 
“মুকুটাচরণ মিত্র” ছগ্প নাম ব্যবহার করেন। গ্রেট দ্তাসান্তাল থিয়েটারে 


চতুব্বিংশ পরিচ্ছেদ ২০৩ 


তিনি যে কয়েকখানি রঙ্গনাট্য রচনা করিয়া দিয়াছিলেন, সে গুলিকে 
তিনি রচনার মধ্যেই গণ্য করেন নাই। 'আগমনী”ই তিনি তাহা 
প্রথম রচন1 বলিয়! জ্ঞাপন করেন। আগমনীর উৎসর্গ-পত্র পাঠে তাহার 
পরিচয় পাওয়া যায় । যথা $- 
"স্সেহাস্পদ শ্রীযুক্ত কেদারনাথ চৌধুরী । প্রিয় ভ্রাতঃ কেদার-__, 

শারদীয় পুনম্সিলন ছলে-তোমাব কর-কমলে-_অস্তক এই ক্ষুত্র 
পুস্তিকাখানি অর্পণ কবিলাম-_অবন্ত পূর্বভাব ভূলিবে, এমন সকলে তুলে 
থাকে-_তা! বলে এটীকে ভুলন! ; আমাব এই প্রথম রচনা-কুম্থমটাকে 
অনাদর-অনল-শিখায় অর্পণ কবনা। কিন্তু কি বলিয়! যত্ব করিতে 
বলিব, জানিনা; কাবণ এ পুন্তিকাখানির নাম “নব যোগিনী'--“নবীনা 
কামিনী” বা “নবীনা তপস্থিনী” নয়, স্থতবাং প্রাচীন পদ্ধতি মতে «এই 
পুন্তিকাখানি নবীনা কামিনী বা যোগিনী বা তপস্থিনী আপনার করে 
অর্পণ করিলাম ইত্যাদি” বলিতে পারিলাম না; এখানি তোমায় দিলাম, 
যাহা ইচ্ছা! করিও, এই ছুই পংক্তি লিখিয়৷ নিশ্চিন্ত থাকিলাম। 

তোমারই-_মুকুটা ।” 

অতি অল্পদিনেব মধ্যেই ন্যানান্তাল থিয়েটার সাধারণের সুদৃষ্টি আকর্ষণে 
সুগ্রতিষ্ঠিত হইয়া উঠিয়াছিল ; কিন্তু এই উন্নতির প্রথম মুখেই এমন একটি 
ঘটন! ঘটিল, যাহাতে গিরিশচন্ত্রকে থিয়েটাবের “লিজ"নত্ব পরিত্যাগ করিতে 
হইল। তাহার ভ্রাতা অতুলরুষ্খ ঘোষ তথন হাইকোর্টের নৃতন উকীল 
হইয়াছেন ।,তিনি একদিন গিরিশচন্ত্রকে বলিলেন, “মেজ দাদা, তুমি দিনের 
বেলায় অফিসে কাজ করো',__রাত্রে থিয়েটারে বই লেখা,রিহারস্তাল দেওয়া, 
অভিনয় করা এই সব লইয়াই ব্যস্ত থাকে। তুমি বিশ্বাসী ও নুযোগাবোধে 
যাহাদের উপর টিকিট বিক্রয়, হিসাব রক্ষা, গার্ড দেওয়া! এবং থিয়েটারের 
অস্তান্ত বিষয়ের তত্বাবধানের ভার দিয়াছ, তাহারা যে বরাবর হ্থ'সিয়ার 


২০৪ গিরিশচন্দ্র 


হইয়া! কার্ধ্য করিবে, তাহারই ব৷ প্রমাণকি ? ইহাদের দোষেই ভূবনমোহন 
বাবু নান। প্রকারে খণগ্রন্ত হইয়া! অবশেষে থিয়েটার ভাড়া দিতে বাধ্য 
হইলেন। ভূবনমোহন বাবুর পরিণাম দেখিয়। আমি চিস্তিত হইয়া 
পড়িয়াছি। হয় তুমি থিয়েটাব ছাড়ো, নচেৎ এসে।__-আমরা! পৃথক হই।» 
অনুগত ত্রাতার এইরূপ স্পষ্ট বাক্যে গিরিশচন্দ্র বিশ্মিত হইয়া বলিলেন, 
“তুমি কি মনে করো, থিয়েটারের আয়-ব্যয় ও তত্বাবধানের দিকে 
আমাব দৃষ্টি নাই? আর যেরূপ বিক্রয় হইতেছে, তাহাতে কি তোমার 
ধারণা, আমার লোকদান হইবে?” অতুলকৃষ্ণ বলিলেন, “থিয়েটারেব 
আভ্যন্তরিক অবস্থা যেরূপ, তাহাতে আমার বিশ্বাস, থিয়েটার করিয়া 
কেহই খণগ্রন্ত ভিন্ন লাভবান হইতে পারিবে না1” গিরিশচন্দ্র ভাতার 
মানসিক চাঞ্চল্য বুঝিয়া বলিলেন,_ “তোমার যদি এইরূপ বিশ্বাসই হয়, 
ভুমি নিশ্চিন্ত থাক, আমি তোমাকে বলিতেছি, থিয্লেটাবেব সংস্রবে 
যতদিন থাকিব, আমি আর স্বত্বা'ধকাবী হইবাব কখনই চেষ্টা করিব ন1।” 

গিরিশচন্দ্র আজীবন স্বীয় বাক্য রক্ষা করিয়াছিলেন। তিনি প্রধান 
পরিচালক হইয়া ইচ্ছামত যাহাকে তাহাকে থিয়েটারেব স্বত্বাধিকারী 
করিয়। স্বয়ং তীহার্দের বেতনভোগী হইয়া কাধ্য করিতেন। ইংলগ্ডে 
“আল অফ. ওয়াব উইক” যেরূপ বাজ হইবার যোগ্যতা রাখিয়াও কখন 
স্বয়ং রাজ! হইবার প্রয়াম ন৷ করিয়] নৃপতি-অষ্টা (70195-7791:6£ ) নামে 
অভিহিত হইয়াছিলেন,__গিরিশচন্দ্রও সেই পথ অবলম্বন করিয়াছিলেন । 
তিনি লিজের স্বত্ব পরিত্যাগ করিলে, তাহার শ্যালক দ্বারকাঁনাথ দেব 
থিয়েটার ভাড়! লইলেন। 


পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ 
লঠাসান্যাজ্ন হিক্েসেলাল্ল্র াম্না হজ্ভে 


দ্বারকানাথ বাবুর লিজের সময় গিরিশচন্ত্র-_মেঘনাদ বধ, কৃষ্ণকুমারী 
প্রভৃতি নাটকে রাম ও ইন্ত্রজিৎ, ভীমপিংহ প্রভাতি ভূমিকা অভিনয় 
করিয়াছিলেন। এতদ্ধ্য তীত তিনি দীনবন্ধুবাবুর প্যমালয়ে জীয়স্ত মানুষ” গল্পটা 
প্রহসনাকারে পরিবর্তিত করিয়া দেন। প্রহ্সনখানি বেশ জমিয়াছিল। 
কয়েক মাস পরে দোয়ারীবাবু থিয়েটার ছাড়িয়৷ দিলে ১৮৭৮ খৃষ্টাবের 
প্রথম হইতে কেদারনাথ চৌধুরী মহাশয় সাব লিজ গ্রহণ করিলেন। 

কেদারবাবুব জন্মভূমি ডায়মগুহারবারের অন্তর্গত ঘাটেশ্বর গ্রাম । 
ইনি তথাকার জমীদার ছিলেন। বাল্যকাল হইতেই কাব্য ও নাটট্যচ্চ 
লইয়া থাকিতেন )-_-যৌবনের মধ্যভাগে ন্তাসান্তাল থিয়েটারে আসিয়া 
যোগদান করেন। গিরিশচন্দ্রকে তিনি “বাদসা বলিয়া ডাকিতেন। 
তাহারই উৎলাহু এবং সাহায্যে কেদারবাবু মহাসমারোহে দল গঠিত 
করিয়া! ৫ই জানুয়ারী “পলাখীর যুদ্ধ* অভিনয় ঘোষণ। করেন। লব্বপ্রতিষ্ঠ 
অভিনেতা ও অভিনেত্রী সম্মিলনে “পলাশীর যুদ্ধ” অতি সুন্দররূপ 
অভিনীত হয়। 


হতচ্ষ াউ্যম্পাজ্পায ডক্রনাউি 


এই নবগঠিত ন্তাসান্তাল সম্প্রদায়ের প্রতি দর্শকগণের বিশেষরূপ 
সহানুভূতি দেখিয়া বেঙ্গল থিয্বেটার সম্প্রদায় একটা! বড় রকম “চাল” চালেন। 
এই সময়ে কলিকাতায় “পশুরেশ-নিবারণী সভা” প্রতিষ্ঠিত হুইয়াছিল। 


২০৬ গিরিশচন্দ্র 


সভার তহবিল বৃদ্ধির নিমিত্ত উক্ত সভার সেক্রেটারী গ্র্যাণ্ট সাহেব 
উঠিয়া! পড়িয়। লাগিয়াছিলেন। দেশের রাজা, মহারাজা ও জমীদারগণের 
নিকট তিনি চাদ! সংগ্রহ করিতেছিলেন। বেল থিয়েটারের বর্তৃপক্ষগণ 
এই সময়ে গ্রাাণ্ট সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া উক্ত সভার সাহায্যার্থ 
একরাত্রি অভিনয় করিবার প্রস্তাব করেন এবং ত্াহারই উৎমাহে 
তৎকালীন বড়লাট লর্ড লিটনকে তাহার উপস্থিতি ও আন্ুকুলোর 
নিমিত্ত আবেদন-পত্র গ্রেব৭ কবেন। গ্র্যান্ট সাহেবের চেষ্টায় বড়লাট- 
বাহাছ্ুর বেঙ্গল থিয়েটাবের প্রার্থন। মঞ্জুর করেন। ১৮ই জানুয়ারী, 
শুক্রবার তারিখে, বাজপ্রতিনিধির সম্মুথে বেঙ্গল থিয়েটার পশকুস্তল!” 
নাটক অভিনয় করেন। বঙ্গবঙ্গালয়ে রাজগ্রতিনিধিব এই প্রথম শুভাগমন, 
- বঙ্গ নাট্যশালাব ইতিহাসে ইহা একটা ন্মবণীয় বজনী । * 


* মে রাঁত্রর অভিনয় সম্বন্ধে 'ইংলিসম্যানে' নিম্বলিখিত মন্তব্য প্রকাশিত 


হইগ্লাছিল $-- 

176 98721 1175206-7707 00102502106 07611 [03506112170155 17000 
81809 1510015 ৬10) 917 [২1010910 2151000155 200017100211160 109 0611 
165106011৮6 50015. 15106011015 01169016 2170. ৮1101695560 0106 012 ০1 
52000070212) 07 008 1:05 106, ৮/5. 9106150000 0120 015 15 075 
2056 00075101101) %/171011 2 ৬1081011985 8৮৪: ৬191160 2 179.01৮6 076205, 
(16590199175 5616 01010151510821)19 05121) 109 006 10210591777 00 
1719162 661/011125 1016952170 101 00617 20611900125, 210 0108 [718117181 
10 11101 006 01600 ৬25 700৮ 01) 0176 99856 1916005 170801] 01601 ০02 
116 [9701116101, 1118 50610619 25 ৮219 £0900, 0116 0095585 01 (6 
80515 ৮675 €06000৮6, 200 08005108865 £০9০এ, 1100£1) ৮71] 
50006515006 2 (50061705 10 01985) 50901811910 015 085 506169 1 
৮1101) 2 ৮0008 1500 2170 1)0 0 21121702165 816. 10001) 00170611180 & 


* পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ ২০৭ 


হ্থিক্মেজীলে্ে ন্বহিঃহমিভেন্ল আুগ্ 
২৬শে জানুয়ারী তারিথে স্থাসান্তাল থিয়েটারে "আনন্দ-মিলন* নামক 
একখানি নৃতন গীতিনাট্য অভিনীত হয়। কিন্তু গীতিনাটাখানি তেমন 


জমে নাই। 
দীনবন্ধু বাবু এবং মাইকেল মধুহদন দত্বের পর এই সময়ে বঙ্গ 


নাটাশালায় বঙ্কিমচন্দ্রের যুগ চলিতেছিল বলা! যায়। বেঙ্গল থিয়েটারে 
দর্গেণনন্দিনী এবং মৃখারিনী গৌরবে অভিনীত হইতেছিল। স্তাসান্তাল 
থিয়েটারেও মৃণালিনী এবং কপালকুগুলার অভিনয় ঘোষণা করিলে 
সমধিক দর্শকসমাগম হুইত। বস্কিমচন্দ্রের প্রতি দর্শকগণের বিশেষরূপ 
অনুবাগ দেখিয়া গিরিশচন্দ্র “বিষবৃক্ষ” নাটকাকারে পরিবন্তিত কবিয়া 
স্বয়ং নগেন্ত্রনাথের ভূমিকা অভিনয় করেন। দেবেন্ত্র, শ্রীশ, হৃর্য্যমুখী, 
কুন্দনন্িনী, কমলমণি এবং হীরার ভূষিক। যথাক্রমে রামতারণ সান্ন্যাল, 
মহেন্ত্রলাল বন, কাদদ্িনী, শ্রীমর্তী বিনোদিনী, কমল! (স্থকুমারী দত্তের 
ভগ্রী) এবং নারায়ণী গ্রহণ করিয়াছিলেন। বিষবৃক্ষ অভিনয়ে ন্তাসান্ত!ল 
থিয়েটারের গৌরব আরও বাড়িত্া যান্স। নগেন্জ দত্তের বিভিন্ন অবস্থার 
চিত্রগুলি গিবিশচন্দ্রে ্ু$ভিনয়ে দর্শক-হৃদয়ে মুদ্রিত হইয়া 
যাইত। 


06 6%61510010110819 06199101101 2 088 01 10010121156  001)610510115, 
[00 800 [509 1,7000025 1195106 59550 হও 1008৮ 17 06 0116209, 
1516 81100610510: 815৬610) 0+ 010016, 1176 07626 585 0121007095 200 
00850 1)96 00000100160 07961198119 (0 118 10705 9 015 5001809 191" 
079 915৬6010102 06 010610 00 411101816) 211 21001 ৬0101 075 001006605 
01 0115 5৬৬1৮ 5016 05$0160, 101. 0819009 078 879155010 5600627%, 
35 [85600 2170 28551506017 00216107006 59617176 0955 00 2£7621019. 
[112179110815 2100055) 2150 05008, 187১ 


£ 


২০৮ গিরিশচন্ 


বিষবৃক্ষের আদর দেখিয়া! বেঙ্গল থিয়েটার সম্প্রদায়ও উৎসাহের সহিত 
১৮৭৮থূঃ, ১৬ই মার্চ তারিথে বন্ধিমচন্দ্রের চন্্রশেখর অভিনয় করেন। 
চন্ত্রশেখর, প্রতাপ, ফষ্টর, দলনী ও কুলসমের ভূমিক1 যথাক্রমে বিহারীলাল 
চট্টোপাধ্যায়, হরিদাস বৈষ্ণব, শরচ্ন্দ্র ঘোধ, শ্রীমতী বনবিহারিলী এবং 
এলোকেশী গ্রহণ করিয়াছিলেন । চন্দ্রশেখর কিন্তু ইহারা তেমন জমাইতে 
পারেন নাই। উত্তর কালে ষ্টার থিয়েটাবে নাট্যাচার্যয শ্রীযুক্ত অমৃতলাল 
বনু কর্তৃক নাট্যাকারে গঠিত চন্দ্রশেখরেব অভিনয় দর্শনেই দেশ মাতিয়। 
উঠিয়াছিল। 

যাহাই হউক বেঙ্গল থিয়েটারে “ছুর্গেশননিনীর+ সর্বাপেক্ষা অধিক 
প্রতিপত্তি দেখিয়া! কেদারবাবুও ন্যাসান্তালে “ছূর্গেশনন্দিনী” অভিনয় কবিবাব 
জন্ত গিরিশবাবুকে ধরিয়। বসিলেন। 

কেদাববাবুৰ বিশেষরূপ আগ্রহ দর্শনে গিরিশচন্দ্র দুর্গেশনন্দিনী নূতন 
কবিয়! নাটকাকারে গঠিত করিয়! দিয়াছিলেন। ২"শে জুন (১৮৭৮ খুঃ) 
তারিখে স্থাসান্তাল থিয়েটারে ইহার প্রথম অভিনন্ধ হয়। গ্রথমাতিনয় 
রজনীতে জগৎসিংহ্থের ভূমিকায় কেদারবাবু এবং ওসমানের ভূমিকায় 
কিরগচন্্র বন্য্যোপাধ্যায় রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন। কিন্তু বেঙ্গল 
থিয়েটারে শরচ্চন্দ্র ঘোষ ও হরিদাস দাস (জাতিতে বৈষ্ণব ) উক্ত ভূমিকা 
দুইটীর বন্থবার অভিনয় করিয়া এতটা প্রতিষ্ঠা লাভ করিক্নাছিলেন, যে 
দর্শকগণ উভয় থিয়েটারের অভিনয় তুলন! করিয়া বেঙ্গল থিয়েটারেরই জয় 
ঘোষণ। করেন। তেজন্ব' গিরিশচন্দ্র ইহা সহা করিতে না পাঁরিস্বা স্বয়ং 
জগংসিংছের ভূমিকা গ্রহণ করিলেন এবং ওসমানের ভূমিকা! কিরণবাবুর 
পরিবর্তে মহেম্ত্রলাল বসকে প্রদান করিলেন। 

পূর্ব হইতেই তিলোত্তম। ও আয়েষার উভয় ভূমিকা শ্রীমতী বিনোদিনীকে 
এবং কতলু খাঁ! বিস্ভাদিগ্গজ, রহিম শেখ, বিমল ও আমমানির ভূমিকা 


পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ ২০৯ 


যথাক্রমে মতিলাল ন্থুর, অতুলচন্্র মিত্র (বেডৌল), অমৃতলাল 
মুখোপাধ্যায় (বেলবাবু), কাদদ্বিনী ও লক্ষ্মীমণিকে দেওয়া হইয়াছিল। 
শিক্ষাদানেও গিরিশচন্দ্র এবার একটু নূতনত্ব দেখাইয়া পুনরায় অভিনয় 
ঘোষণা করিলেন। 

অপুর্ব্ব অভিনয়-নৈপুণ্যে এবার ন্টাপান্তাল থিয়েটার সাধারণের মত 
পরিবর্তনে সমর্থ হুইয়াছিল। নাট্যামোদী-মহলে আবার স্তাসান্তালের 
জয়ধ্বনি উখিত হয়। কিন্তু কেহ কেহ একথা বলিতেও ছাড়েন নাই- 
বেঙ্গল থিয়েটারের ন্তায় ইহার! তো৷ আর ঘোড়। দেখাইতে পারিল ন! 1” 

আকৃতি, কণ্ন্বর, সুশিক্ষা এবং পর্যবেক্ষণ (0999158000 ) ও 
পরিকল্পন। ( ০0206700£. ) শক্তির সম্যক মিলনে উৎকৃষ্ট অভিনেত। স্থষট 
হয়। কবির ম্তায় অভিনেতার জন্মগ্রহণ করেন- কেবলমাত্র শিক্ষায় 
গঠিত হন না। গিরিশচন্দ্রের এই সমস্ত গুণগুলিই ছিল। এ নিমিত্ত 
সধবার একাদশী নাটকে নিমাদ হইতে আরস্ত করিয়া যে কোনও ভূমিকায় 


তিনি রঙ্গমঞ্চে বাহির হইয়াছেন, তাহাতেই দর্শকগণের চিত্তহরণে সমর্থ 
হইম্াছিলেন। 


্াসান্তাল থিয়েটারে এই জুটি গিরিশচন্দ্রের মেঘনাদ, রাম, ক্লাইব, 


পশুপতি, নগেন্দ্রনাথ, জগৎসিংই প্রভৃতি তুমিকার অভিনয় দর্শনে দর্শক 
মণ্ডলী যেন মন্ত্মগ্ধ হইয়া যাইতেন। এই সকল ভূমিকায় অসাধারণ 
অভিনয্-নৈপুণ্যে মধ্যাহ্ন-ভাঙ্কব সম তাহার অভিনয়-গৌরব চতুর্দিকে 
পরিব্যাপ্ত হইয়! পড়িয়াছিল। 

হুর্গেশনন্দিনী অভিনয়কালে একরাব্রি বিশেষ একটি দুর্ঘটন। ঘটে ) এই 
ঘটনার পর গিরিশচন্দ্রকে দীর্ঘকাল অভিনয্ব-কার্য্য হইতে অবসর গ্রহণ 
করিতে হইয়াছিল। যেদৃহ্ঠে আসমানি, গজপতি বিস্তাদিগ্গজের গৃহে 
প্রবেশ করিয়া, ব্রাহ্মণের ভোজনাবশিই খিচুড়ি নিজে খাইয়া! বাকিটুকু 


১৪ 





২১০ গিরিশচন্দ্র 


বিস্তাদিগ্গজকে খাওয়াইত,_-মে দৃন্তে ফুটি গুলিয়া খিচুড়ি পরিকল্পিত 
হইত। উক্ত দৃগ্াভিনয়ের পর জগৎসিংহ-বেশী গিরিশচজ্জ রঙ্গমঞ্চ 
প্রবেশ করেন। যে স্থানে বিস্কাদদিগৃগজ খিচুড়ি খাইয়াছিল, সে স্থানে যে 
কইটর খোষ। পড়িদ্বাছিল, তাহা! তিনি নক্ষ্য না করিয়া যেমন তাহার 
উপর পা দিয়াছেন, অমনি পা হড়কাইয়। রঙ্গমঞ্চের উপর পড়িয়া 
যান। আঘাত এত গুরুতর হইয়াছিল যে তাহার বাম হস্তের কজি 
ভাঙ্গিয়৷ যায়। দর্শকগণ হায় হায় করিয়া! উঠেন। সঙ্গে সঙ্গে 'ডুপ 
ফেলিয়া দেওয়া! হয় | কেদারবাবু দর্শকগণের অনুমতি লইয়! স্বয়ং জগৎ- 
সিংহ সাজিয়। সেদিনের অভিনয় একরূপ চালাইয়া দেন। সম্পূর্ণরূপ. 
হাতেব বাথা৷ সারিতে গিরিশচন্দ্রেব তিনমাস সময় লাগিয়াছিল। তীহার 
এই দীর্ঘকাল অনুপস্থিতিতে থিয়েটারের বিক্রয় কমিয় যায় এবং তৎসঙ্গে 
সম্প্রদায় মধ্যে নানারূপ বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হয়। 
2গাক্ীষ্ভাচ -্ণেলিল্ল ক্নিজ্কগ্রহঞ। 

কেদারবাবু নান! কারণে থিয়েটার ছাড়িয়া দিলে, অবিনাশচন্ত্র করের 
উদ্ভোগে গোপীাদ কেঁইয়া (শেঠি) নামক জনৈক মাড়োয়ারী ১৮৭৯ 
থুষ্টাবধের প্রথম হইতে স্তাসান্তাল €ি সাব-লিজ গ্রহণ করেন। 
অবিনাশবাবু তাহার থিয়েটারের ম্যানেজার হন। 

অবিনাশচন্দ্র কবের অধ্যক্ষতায় স্তাসান্তাল থিয়েটারে যে কয়েকখানি 
নাটক ব৷ গীতিনাট্য অভিনীত হইয়াছিল, তন্মধ্যে গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্যায় 
প্রণীত “কামিনীকুপ্র” গীতিনাট্য খানিই বিশেষরূপ উল্লেথযাগ্য। এই 
গীতিনাট্যখানি অভিনয়ে থিয়েটারের স্থনাম হইয়াছিল । 

ল্রন্বিাল্রে অভ্ন্নজ্স 

সা্মাল-ভবনে প্রথমতঃ সপ্তাহে শনিবার মাত্র রাত্রি ৯টার সময় অভিনয় 

আরস্ত হইত; কিন্তু শনিবারে মফঃহ্বলবাসী চাকুরীজীবিরা বাটী যাইত্েন, 


পঞ্চবিংশ পারচ্ছেদ স্১১ 


বর্তমান সময়ের গ্তা় তাহারা 1981] 085580551 হইয়! প্রত্যহ বাটা 
হইতে যাতায়াত করিতেন না! । তাঁহাদের সুবিধার নিমিত তৎপর বুধবারেও 
রাত্রি ঈটায় অভিনয় হইতে আরভ্ভ হয়। অবিনাশবাবু একদিন রবিবার 
বেল! ২টার সময়, মখ করিয়া অভিনয় ঘোষণা করেন-_তাহাতে খুব 
বিক্রয় হয় । সেই হুইতে রবিবারেও অভিনয় চলিতে থাকে । ক্রমে সাধারণের 
সুবিধার নিমিত্ত তাহ! সান্ধ্য অভিনয়ে দঈীড়ায়। অবিনাশবাবু উদ্যোগী পুরুষ 
ছিলেন। এতদ্দেণীয় অনাথ বালকগণের শিক্ষার নিমিত্ত সে সময়ে 
কলিকাতায় একটা সভ। প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। এই সভার সাহাষ্যার্থে 
তিনি তৎকালীন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গার্থ সাহেবের উপস্থিতি ও 
আমনুকুল্যে স্তাসান্তাল থিয়েটারে 'নননকুসুষ নামক একখানি নৃতন 
স্গীতিনাট্য অভিনয় করেন ( ২৬শে জুলাই, ১৮৭৯ খৃঃ)। এইকপে প্রায় 
ছয় মাস কাটিল। তাহার পর নূতন নাটক জমাইতে ন1 পারিয়া শরৎ- 
নরোজিনী, বৃত্রসংহার প্রভৃতি পুরাতন নাটক অভিনয় করিয়া অবিনাশবাবু 
'শেষে সম্প্রদায় লইয়! ঢাকায় অভিযান করেন (আগস্ট ১৮৭৯ থৃঃ)। 
ঢাকায় একটা ্টেজ ছিল, সেই ঠ্রেজ অধিকার করিয়া সম্প্রদায় 
অভিনয় ঘোষণা৷ করিলেন। ্াীয়াল থিয়েটারের আগমনে সহর সরগরম 
হইয়া উঠিল। হঠাৎ ঢাকার বিস্তালয়ের ছাত্রগণমধ্যে একটা মহা 
উত্তেজনার স্থষ্টি হইল। তথাকার বিস্তালয়ের কর্তৃপক্ষগণ বিজ্ঞাপন প্রচার 
করিলেন, কলিকাতা! হইতে সমাগত স্কাসান্তাল থিয়েটারের অভিনেত্রীগণ 
বারাঙগন! ; সুক্তরাং এই বেস্ঠা-সংঙ্লিষ্ট থিয্লেটার দেখিতে যাওয়। কোন 
ছাত্রের কর্তব্য নহে। নিষেধ সত্তেও ষে ছাত্র অভিনয় দেখিতে যাইবে, 
তাহাকে বিস্তালয় হইতে বহিষ্কৃত করিয়। দেওয়া হইবে। বিগ্তালয়ের এই 
কড়। হুকুমজারিতে থিয়েটার সম্প্রদায়কে প্রথমে বিশেষ বিব্রত হইয়া 
পড়িতে হইয়াছিল, কিন্তু টাকার নবাব গনিমি,%1 বাহাদুর এবং স্ুপ্রসিদ্ধ 


২১২ গিরিশচন্দ্র 


জমীদার মোহিনীমোহন বাবুর সহানুভূতি এবং আন্ুুকুল্যে তাছাদিগকে 
বিশেষূপ বেগ পাইতে হয় নাই। তথায় মাসাবধি অভিনয় করিয়া" 
দ্বারভাঙ্গার মহারাজার রাজ্যাভিষেক উপলক্ষে বায়ন! পাইয়া সম্প্রদায় 
বাকীপুরে যাত্রা৷ করেন। বীকীপুর হইতে বেধিয়ার রাজবাটা__-তথা 
হইতে কাশী, এলাহাবাদ, লক্ষৌ প্রভৃতি স্থানে অভিন্ন করিয়৷ 
১৮৮* খৃষ্টাব্বের প্রথমেই থিয়েটার কলিকাতায় প্রত্যাগমন করেন। 
সত্বাধিকারী গোপীর্টান বাবু সম্প্রদায়ের সহিত বিদেশে গিয়াছিলেন ; 
কিন্তু নানা কারণে বিরক্ত হইয়া তিনি অবিনাশবাবুকে থিয়েটার ছাড়িয়া! 
দিয় কাণী হইতে কলিকাতায় ফিরিয়া আসেন। 
শ্রিক্সেজীল্ত্রে ভসসহ 

বিদেশ হইতে আসিয়া অবিনাশবাবুর দল ভাঙ্গিয়! যায়। এই সময়ে 
কেদাব নাথ চৌধুরীর মাতৃল কালিদাস মিত্র স্তাসান্তাল থিয়েটার তাড়া লইয়া 
অভিনয় চালাইতে ছিলেন। কয়েক মাস পরে তিনিও ছাড়িয়! দিলেন। 
তাহার পর অনেকেই কেহ বা একমাসের জন্ত কেহ বা এক সপ্তাহের জন্ত 
ভাড়। লইয়া অভিনয় করেন। এইবূপে থিয়েটারের অবস্থা চরম অবনতির 
পথে আসিয়া টাড়াইয়াছিল। অবশেষে যোগেন্ত্রনাথ মিত্র (ওরফে লঙ্কা 
মিত্র) থিয়েটার ভাড়। লইয়! দর্শক সংখ্যা বাড়াইবার জন্ত অন্গুবীয়, ইয়াবিং, 
আয়না, রুমাল, সাবান, এসেন্স প্রভৃতি উপহার দিতে আরম্ত করেন। 
থিয়েটারে উপহার প্রদান এই প্রথম | গ্যালারি ও পিটের দর্শক সংখ্যা 
ইহাতে বাড়িয়া যায়। সর্বশেষে তরমুজ, ফুটা, লাউ, কুমড়া প্রভৃতি 
ফলমূলাদি গ্রদানে যোগেন্দ্রবাধু এ কাধ্যের চরম করেন। বল! বাছুল্য 
ইহার পরেই থিয়েটার বন্ধ হইয়া যায়। কিছু দিন পরে ভুঁবনমোহন বাবুর 
দেনার দায়ে থিয়েটার নিলামে উঠে, প্রতাপচাদ জঙ্থরী নামক জনৈক 
মাড়োয়ারী ন্তনাগ্তাল থিয়েটার হাউস কিনিয়া লন। 


ষড়বিংশ পরিচ্ছেদ 


ও্রভাস্পউগদ জকল্ল্রল্ হ্যাসানুচালন শ্রিশ্রেউাল্ে 
গিক্িম্কুক্রেকিল্প অশ্যক্ষভ্ডা গ্রহণ 

এ পধ্যস্ত বঙ্গীয় সাধারণ নাট্যশালার ইতিবৃত্ত যতদুর লিখিত হইল, 
তশপাঠে পাঠকগণ কতকট। বুঝিতে পারিয়াছেন,__সান্ল্যাল-ভবনে টিকিট 
বিক্রয় করিয়। প্রথম পেশাদারি থিয়েটার খোল! হইলেও ব্যবসায়ীর হিসাবে 
তাহা পরিচালিত হয় নাই। আয়-ব্যয়ের হিনাব, অভিন্তোদের বেতন 
ইত্যাদি সম্বন্ধে ইহাদের কোনওরূপ একটা পাক। ব্যবস্থা ছিল না। তাহার 
পর ভুবনমোহন বাবু বৃহৎ বাড়ী তৈয়ারি করিয়। যখন গ্রেট স্তাসাগ্তাল 
থিয়েটার খুলিলেন,-_তখনও হিসাব রাখিবার দস্তরমত সুব্যবস্থা হয় নাই। 
একটা বড় ব্যবস! চালাইতে হইলে যেমন তাহার সকল দিকে ছুশ্ঙ্খল! 
স্থাপন এবং উপযুক্ত কর্মচারী 1নয়োগের আবশ্তক, তিনি সে বিষয়ে 
যত্ববান হন নাই। ইহার অন্ত কারণ কিছুই নাই,_তিনি সথ করিয়া 
থিয়েটার করিয়াছিলেন, ব্যবসা! করিব বলিয়া নহে। সথও সকল প্রকারে 
'মিটাইয়াছিলেন। ঢোল বাজাইবার গাহার সখ ছিল,-_কিছুদিন কনসার্ট 
পার্টির পার্থ স্বতন্ত্র আসনে বসিয়া! তাকিয়ায় হেলান দিয়। ঢোলও 
বাজাইলেন। দর্শকগণ কৌতুহলাক্রান্ত হইয়। সত্বাধিকারীকে দেখিতেন। 
ফলতঃ ভুবনমোহন বাবু সরল এবং আমোদশ্রিয় ছিলেন, বিন! পয়সায় 
আমোদ করিবার লোকেরও অভাব ছিল না। ক্রমে তিনি খণগ্রন্ত হইয়! 
থিয়েটার ভাড়া দিতে বাধ্য হইলেন। কৃষ্ণধন বন্দ্যোপাধ্যায় হইতে আরম্ত 
করিব! বছ লোকই থিম্সেটার ভাড়া লইয়াছিলেন, কিন্তু তাহাদের মধ্যে 
'কেহুই ব্যবসাদার ছিলেন না। প্রায় সকলেই নাট্যামোদী অথবা 


২১৪ গিরিশচন্দ্র 


অভিনেতা । একমাত্র গোপীচাদ শেঠি ব্যবসাদার ছিলেন, তিনিও. 
থিয়েটারে লাভ না৷ পাইয়। বিদেশে অভিনয়কালীন অবিনাশচন্ত্র করকে 
থিয়েটার ছাড়িয়া! দেন। ভূবনমোহন বাবু থিয়েটার ভাড়া দিলেও তাহার, 
সময়ে যেরূপ প্রত্যেক অভিনয় রাত্রেই পান-ভোজনের ধূম চলিত, _ভন্তান্ 
সত্বাধিকারীগণের সময়েও সম্প্রদায় মধ্যে মে রোগ সংক্রামক হইয়া 
দঁড়াইয়াছিল। যেদিন কিছু বেশী বিক্রয় হইত, সেদিন সত্বাধিকারীরও 
উদারতা বাড়ির! যাইত, আয্বায়ের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া কেহই চলেন নাই। 

নুশিক্ষিত নাট্যান্থুরাগিগণ সে সময়ে থিয়েটার দেখিতে আদিতেন বটে, 
এবং অভিনয়-নৈপুণ্য দর্শনে প্রশংপাও করিতেন, কিন্ত তীহারা' 
অভিনেতাদের সংসর্ণ পছন্দ করিতেন ন|। মহিলাগণের জন্ত থিয়েটারে 
প্রথমে আসনের পৃথক ব্যবস্থা ছিল না-_পরে হইয়াছিল; কিন্ত স্ত্রী-দর্শক 
অধিক হইত না। অভিনেতাদের পান-দোষের ছূর্নাম শুনিয়া অনেকে 
বাটার স্ত্রীলোকদের থিয়েটারে পাঠাইতে ইচ্ছা করিতেন না । 

প্রতাপাদ জহ্ছরীর সময় থিয়েটারের এই ধার! সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত 
হইল। কর্খচারিগণের নির্দিষ্ট বেতন ও হাজিরা-বহি এবং আর়- 
বায় ও হিসাব-নিকাসের জন্ত দস্তরমত খাতা বাহির হইল। এক কথায় 
থিয়েটারের নৃতন অধ্যায় আরম্ভ হইল। 

প্রতাপটাদ বাবু পাক বাবসাদার ছিলেন। তিনি বিশেষ সন্ধানে: 
বুঝিয়াছিলেন,_উপযুক্ত অভিনেতৃগণ কর্তৃক ভাল নাটক অভিনীত হুইলে. 
ধিষ্পেটারে যথেষ্ট অর্থাগম হয়) তবে নুযোগ্য পরিচালক. চাই। তীহার' 
জহরতের দোকান ও অন্তান্ত ব্যবসায় ছিল। থিয়েটারটাও একটা লাভগ্জনক 
ব্যবসায়ে পরিণত করিবার জন্ত তিনি বিশেষ উদ্ভোগী হইলেন। গ্রতাপাদ 
বাবু গিরিশচন্দ্রের প্রতিভার পরিচয় পাইয়। তাহাকেই তাহার থিয়েটারের 
বেতনভোগী ম্যানেজার করিবার লঙ্বল্প করিলেন। গিরিশবাবু, মে সমঙ্গে 


ষড়বিংশ পরিচ্ছেদ ২১৫ 


পার্কার কোম্পানীর অফিসের বুককিপার ছিলেন; মাসিক দেড়শত টাকা 
বেতন পাইতেন। প্রতাপটাদ বাবুর প্রস্তাবে গিরিশচন্দ্র বলিলেন, “আমি 
অফিসের কাধ্য বজায় রাখিয়! পূর্বের যেরূপ সন্ধ্যার পর থিয়েটারে আসিয়। 
শিক্ষাদান এবং আবস্তকবোধে অভিনয় করিতাম,__-আপনার থিয়েটারেও 
সেইরূপ করিব, ইহার জন্ত কাহারও নিকট কখনও অর্থ গ্রহণ করি নাই, 
_-আপনার নিকটও করিব না।” প্রতাপটাদবাবু বলিলেন, _পনা, ন! 
বাবু- তাহা হুইবে না, ছুই কার্য একজনের দ্বারা ভাল হয় না-_ আপনাকে 
অক্ষিসের কার্ধ্য ছাড়িয়া দিয়া আমার থিয়েটারের সকল ভার লইতে হইবে। 
আমি এখন আপনাকে মাসিক একশত টাকা করিয়া বেতন দিব। 
থিয়েটারের যেরূপ মুনাফা বাড়িবে, আপনার বেতনও সেইরূপ বাড়িতে 
থাকিবে ।* 

প্রতাপটাদবাবুব উদ্ভম ও আগ্রহ দর্শনে এবং তাহার বিষয়বুদ্ধির 
পরিচয় পাইয়া গিরিশচন্দ্রের মনে উদয় হইয়াছিল__এরূপ একজন পাক 
বাবসাদারের সহিত মিপিত হইয়া যস্পি থিয়েটারের পরিচাঁলন-ভার 
গ্রহণ করি,তাহা হইলে মনোনীত অভিনেতা ও অভিনেত্রী গ্রহণে থিয়েটারে 
একটা! সুশৃঙ্খল স্থাপন এবং ভাল নাটক অভিনয়ে নাট্যশালারও উৎকধত! 
সাধন কর] যায়। থিয়েটারটা শুগ্রতিষ্ঠিত করিতে পারিলে ভবিষ্যাতে 
নাট্যাভিনয় কবিয়া অনেকের উপজীবিকার পথও শ্ুপ্রশস্ত হইবে। বন্ছু 
চিন্তা করিয়া গিরিশচন্দ্র পার্কার কোম্পানীর, অফিসের দেড়শত টাক! 
বেতনের কম্ম ত্যাগ করিয়! গ্রতাপটাদ বাবুর থিয়েটারে এক শত টাকা 
বেতনে ম্যানেজারের পদ গ্রহণ করিলেন। থিয়েটারের কার্য্যে তিনি 
এই প্রথম বেতনভোগী হইলেন । 

পাঠকগণ পূর্বেই জ্ঞাত আছেন, -পার্কার সাহেব গিরিশচন্ত্রকে 
অতিশয় ন্বেহ করিতেন। তিনি গিরিশচন্্রকে অফিসের কাধ্যে নিযুক্ত 


২১৬ গিরিশচন্দ্র 


রাখিবাব জন্ত বিশেষ চেষ্টা করিয়াছিলেন, অবশেষে অফিস ও থিয়েটারের 
উভয় কার্য্যই করিতে বলিয়াছিলেন ; এমন কি বেলা ১২টার পর তাহাকে 
অফিসে আগিবার অনুমতি দিয়াছিলেন। তথাপি গিরিশচন্দ্র মত 
পরিবর্তন করিতে পারেন নাই। বিধাত! ধাহার উপর রঙ্গালয্ প্রতিষ্ঠিত 
কবিবার ভার দিয়! এখানে পাঠাইয়াছেন, তীহাব মত পবিবর্তন করিবে 
কে ?-যাহাই হউক অফিসের হিসাব-নিকাশ বুঝাইয়! দিয়া যে দিন 
গিরিশচন্ত্র পার্কার সাহেবের নিকট শেষ বিদায় গ্রহণ করেন, তিনি 
সাশ্রনয়নে স্বতিচিহ্ন স্বরূপ তাহাকে একটা হীরকাশ্ধুরীয় প্রদান করেন। 
সওদাগরি অফিসেব কার্য গিরিশচন্দ্রের জীবনে এইথানেই শেষ । 





সপগ্তবিংশ পরিচ্ছেদ 


মাট্যকাল্-ভ্কীন্দেল্ লুজঞস্ীভি 

অনুজ অতুলকুঞ্ণ কর্তৃক প্রতিহত হইয়া গিরিশচন্দ্র কেদারনাথ 
চৌধুবীকে অবপন্বন করিয়া নাট্যশালার শ্রীবৃদ্ধি সাধনে অগ্রমব হইয়াছিলেন। 
কিন্তু নানা কারণে কেদারবাবুর থিয়েটার স্থায়ী ন! হওয়ায়, তাহার ঠ 
উদ্দেস্ত সিদ্ধ'হয় নাই। এক্ষণে প্রতাপাদ বাবুর স্তায় ধনাঢ্য বাবসায়ীর 
সহিত মিলিত হইয়া থিয়েটারটা যাহাতে সুপ্রতিষ্ঠিত কবিতে পারেন, 
গিরিশচন্্র তছিষয়ে অধিকতর মনোযোগী হইলেন। ন্তাসাক্লালের প্রবীণ 
ও নবীন অভিনেতৃগণকে তিনি আবার সাদরে আহ্বান করিলেন। 
ইতিপূর্বে তাহাদের মধ্যে অনেকেই থিয়েটার ছাড়িয়। দিয়া নান! দিকে 
ছড়াইয়! পড়িয়াছিলেন। দলপতির সাদর আহ্বানে আনন্দের সহিত 


সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ , ২১৭ 


আবার নকলে আসিয়া! একত্র হইলেন। নগেন্্রনাথ বন্দোপাধ্যায় বহুকাল 
পূর্বে থিয়েটার ছাড়িয়া দিয়াছিলেন। * অর্দেনদু বাবু এ সময়ে কলিকাতায় 
ছিলেন না, ভারতবর্ষের নান স্থানে ভ্রমণ করিয়া নাট্যসম্প্রদায় গঠন 
এবং অভিনয়-বিষ্ভা। প্রচার করিয়া বেড়াইতেছিলেন। এ সময়ে সকলেই 
তাহার অভাব অন্থভব করিলেন। 
যাহা হউক, নাট্যুশিল্পী ধর্মমদাস সব, মহেত্ত্রলাল বনু, শ্রীযুক্ত অমৃতলাল 
বন্থ, মতিলাল সুর, অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় ( বেল বাবু), সঙ্গীতাচাধ্য 
রামতারণ সান্যাল, অমৃতলাল মিত্র, নীলমাধব চক্রবর্তী, অভুলচন্দ্র মিত্র 
( বেডৌল ), ক্ষেব্রমণি, কাদস্বিনী, লক্্মীমণি, নারায়ণী, শ্রীমতী বিনোদিনী, 
বনখিহারিণী প্রভৃতি অভিনেত। ও অভিনেত্রীগণকে একত্রিত করিয়া 
গিবিশচন্ত্র নূতন থিয়েটাবের ভিত্তি সুদৃঢ় করিলেন । 
ভান? আাউক্কাভ্ডিনয্ত 
মনোমত সম্প্রদায় গঠিত করিয়৷ গিরিশচন্দ্র অতঃপর নূতন নাটক 
গ্রহে মনোনিবেশ করিলেন। সুগ্রসিদ্ধ “মহিলা কাব্য-প্রণেত। কবিবৰ 
সুরেন্্রনাথ মভ্ুমদার মহাশয়কে-_তিনি বদন পূর্বে গ্রেট ন্যাসান্তাল 
থিয়েটাবের জন্ত একখানি এরতিহামিক নাটক লিখিতে অনুরোধ করিয়া- 
* প্রথম! কন্ঠার বিবাহের সম্বন্ধ লইয়! বহুদিন ব্যস্ত থাকাষ এবং অন্তান্ত কারণে 
নগেল্সবাবু দীর্ঘকাল থিয়েটারের সহিত পৃথক ছিলেন। তাহার পর আর রঙ্গালয়ে 
যোগদান করেল নাই। ইহার তিনটা কন্ত! ছিল। ১ষ! কন্ত ধরাহুন্দরী | প্রাতঃম্ময়ণীয 
৬ডূদেব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র রায় বাহাছুর মুকুন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের সহিত ইহার বিবাহ 
হয় ) ইহারই কন্তাঘয় ব্র্গায়! ইনার দেবী এবং গ্রীমতী অনুরূপা দেবী উৎকৃষ্ট উপন্যাস 
রচনায় বঙ্গসাহ্িত্যে যশস্বিনী হইয়াছেন। ২য়া কষ্ঠা- ব্রজহুন্দরী। ওয়া কন্া। 


পুরহন্দরী ৷ পুরন্ন্দরীর জ্যেষ্ঠ পুত্র সুসাহিত্যিক ও উঁগন্তাসিক গ্রীযুক্ত সৌরীজামোহন 
মুখোপাধ্যায়। 


২১৮ গিরিশচন্র 


ছিলেন) সুরেন্ত্রবাবু টডের রাজস্থান, হইতে উপাদান সংগ্রহ করিয় ॥ 
হামির* নামক একখানি প্রতিহাসিক নাটক লিথিয়াছিলেন। নাটকখানি 
শেষ হইবার অল্পদিন পরেই তাহার মৃত্যু হয়। গিরিশচন্দ্র উক্ত নাটকের 
পাওুলিপিখানি করিবরেব ভ্রাতা দেবেন্দ্রনাথ মজুমদার মহাশয়ের নিকট 
হইতে আনাইয়-_এই নাটক লইয়াই থিয়েটার খুলিবার অভিপ্রায় 
করিলেন । নাটকে গান ছিল না, প্পন্মিনীর গীত” বলিয়া একটী সুদীর্ঘ 
কবিত! ছিল মাত্র । আবশ্তক্মত গিরিশচন্দ্র চারিখানি গান বীধিয়! ইহাতে 
সংযোজিত করেন। অতি যত্বের সহিত ইনি হামিরের শিক্ষা প্রদান 
করেন এবং মনোমত করিয়। যথাযথ দৃশ্তপট এবং পোষাক পরিচ্ছদ প্রস্তত 
করান। ১৮৮১ থৃষ্টাব্ধের ১লা! জানুয়ারী তারিখে মহাসমারোহে “হামিরের? 
অভিনয় ঘোষিত হয়। 

হামিরের ভূমিকা গিরিশচন্ত্র স্বয়ং গ্রহণ করেন। উদয়, জাল, 
বীলনদেব, কমলা, লীল! এবং পান্নার ভূমিকা যথাক্রমে মহেন্ত্রলাল বনু, 
শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থ, অমৃতলাল মিত্র, কাদস্থিনী, শ্রীমতী বিনোদিনী এবং 
বনবিহারিণী অভিনয় করিয়াছিলেন। 

হামির হইতে আরম্ভ করিয়! সামান্য দূতের ভূমিকাটার পর্য্স্ত নিখুঁত 
অভিনয় দর্শনে দর্শকগণ সাতিশয় গ্রীতিলাভ করিয়াছিলেন। চিতোরের 
ছুর্গতোরণ প্রদর্শনে ধর্মদাস বাবু বিশেষরূপ কৃতিত্বের পরিচয়, দিঁয়াছিলেন। 
কিন্তু এতৎসত্বেও 'হামিরঃ উচ্চ শ্রেনীর নাটক বলিয়া শিক্ষিত নাট্যামোদী- 
গণের নিকট গৃহীত হয় নাই। ন্ুরেন্ত্রবাধু অসাধারণ কঁবি হইলেও 
নাটক-রচনার উদ্ভম তাহার এই প্রথম। যখন এই নাটকথানি রচিত 
হয়, তখন তাহার জীবন-নাটকের যবনিকা পতনের অধিকর্দিন বিলম্ব ছিল 
না, এবং তাহার প্রতিভাও নিশ্রভ হইয়া আমিতেছিল। গিরিশচজ্ও 
কবির প্রতি অসামান্ত শ্রদ্ধা বশতঃ নাটকখানির কোনওরুপ পরিবর্তন 


সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ ২১৯ 


করেন নাই। নাট্যকার এ সময় জীবিত থাকিলে হয় তো৷ উ্ভ়-শক্তির 
সন্মিলনে নাটকখানির অধিকতর উৎকর্ষ সাধিত হইত। 

হামির অভিনয়ের পর গিরিশচন্ত্র ভাল নাটকের অভাব বড়ই অন্থতব 
করিতে লাগিলেন। দীনবন্ধু মিত্র, মধুহ্দন দত এবং বঙ্িমচন্ত্র 
চট্টোপাধ্যায়ের গ্রস্থগুলির অভিনয় পুরাতন হইয়া গিয়াছে। উৎকষ্ট' 
নাটকের অভিনয় দর্শন করিয়! দর্শকগণও আর নিম্নশ্রেণীর নাটকাভিনয় 
দেখিতে চাহেন না এবং অভিনেতারাও অভিনয় করিয়! তৃপ্তিলাভ করিতে 
পারেন না। গিরিশচন্দ্র মহা সমস্তায় পড়িলেন। তিনি ক্ষমতাশালী 
লেখকগণকে উৎমাহিত করিবার নিমিত্ত থিয়েটারের হ্বাগবিলের 
নিম্নে উৎকৃষ্ট নাটকের অন্ত পুরস্কার ঘোষণা করিয়া বিজ্ঞাপন দিতে 
লাগিলেন। 

ভাল নাটকের প্রতীক্ষায় থাকিয়া ইতিমধ্যে তিনি স্তাসান্তাল থিয়্েটাবের 
জন্য “মায়াতক্, ও “মোহিনী প্রতিমা” নামক ছুইখানি গীতিনাট্য এবং 
“আলাদিন” নামক একথানি পঞ্চরং রচনা করেন । মায়াতর ১২৮৭ সাল, 
১০ই মাধ তারিথে এবং মোহিনী প্রঞ্রিমা ও আলাদিন একসঙ্গে ২৮শে চৈত্র 
তারিখে অভিনীত হয়। 


জ্সাভিল্সত ' 

'মায়াতরু' গীতিনাট্যের প্রথমাতিনয় রজনীর অভিনেতৃগণ £-_চিত্রতভানু 
_মহেন্দ্রলাল বস, সুরত-_রামতারণ সাল্স্যাল, দমনক--বেল বাবু, 
মার্কগু-_বিহারীলাল বস্তু, উদাসিনী-ক্ষেত্রমণি, ফুলহাসি-শ্রীমতী 
বিনোদিনী, ফুলধূল।-_ জ্রীমতী বনবিহারিণী ইত্যাদি । 


“মায়াতর” গীতিনাট্যথানমি সর্ধজন-সমাদূত হইয়াছিল। ইহার গান 
গুলি অতি সুন্দর । সাহিত্য-সম্ত্রাট বন্ছিমচন্ত্র 'নায়াতরু” অভিনয় দেখিতে 


২৯২৩ গিরিশচক্্র 


আমিয়! “ন! জানি সাধের প্রাণে, কোন প্রাণে প্রাধ পরায় ফাসি !” * গীত 
শ্রবণে গিরিপচন্তরের ভূয়সী প্রশংসা করিয়৷ যান। ব্রাঙ্গ-দমাজ্জের আচাধ্য 
্বর্গার রাজনারায়ণ বস্তু মহাশয় "পবিত্র সঙ্গীত রসে মাতাও হৃদয়!” গীত 
শ্রবণে বলিয়াছিলেন,_প্রচয়িতা একজন উচ্চদরের কৰি হইবে এবং তাহার 
্রম্মজ্ঞান লাভ হইবে ।* মায়াতরুর সর্বশেষ "হাসরে যামিনী হাস” প্রাণের 
হাসিরে ।” লঙ্গীতটী সাধারণের মুখে মুখে এতটা প্রচারিত হইয়! পড়িয়াছিল, 
যে রাস্তার গাড়োয়ানের! পর্য্যন্ত এই গান্থানি গাহিতে গাহিতে চলিত । 
তমাহি-ী শপ্রভিমা 

“মোহিনী প্রতিমা” গ্রীতিনাটাখানি একটু উচ্চভাবাপন্ন হইয়াছিল। 
গিরিশচন্ত্র এই গীতিনাট্যের নার়িক1 'নাহানারঃ মুখে একটা গল্প বলাইয়াছেন, 
--পএকটা স্ত্রীলোক একজনের জন্য ভেবে ভেবে পাষাণ হয়েছিল, সে সত্য 
কালের কথা। পাষাণ-মূর্তি হয়ে কতদিন থাকে ) দৈবে একদিন যার জন্ত 
পাষাণ হয়েছিল, সে তার কাছে উপস্থিত। পাষাণ-প্রতিমা মনে মনে 
ভাবলে যে, হে পরমেশ্বব! আমি তে! পাষাণ, কিন্তু যদি এক মুহূর্তের জগ্ত 
মানু হই, তা”হলে আমি উহার সঙ্গে কথা কই,-_বল্তেই মানুষ হলে! !” 

প্রেমের এই গভীরতা লইয়। গীতিনাট্যথানি রচিত হয়। ভাবুক 
দর্শকগণের নিকট ইহা! প্রশংসিত হইয়াছিল। 

প্রথম অভিনয়-রজনীব অভিনেতৃগণ £- হেমস্ত _রামতারণ সান্যাল, 
জম্ুভয়-_বিহারীলাল বস্থ, মহীন্দ্র-_মহেন্দ্রলাল বন্থ, নীহার- জীমতী 
বনবিহারিণী, সাহানা-_্রীমতী বিনোদিনী, কুন্ম__কাদদ্ধিনী ইত্যাদি । 


* “ফুলহাদির' নিমিত্ত গিরিশচন্দ্র প্রথমে এই গীতের প্রথম ছত্রটী এইরাপ রচন৷ 
করিয়।ছিলেন-_“ন৷ জানি স্বাধীন প্রাণে, কোন প্রাণে প্রাণ পরায় ফাসি!” ফুলহাসির 
ভূমিক! নাটাসপ্রান্জী প্রীমতী বিনোদিনী দাঁসী গ্রহণ করিয়াছিজেন। তিনি "না জানি 
সাধের প্রাণে" বলিয়! গান খানি গাহিতেন ॥ সেই হইতে "স্বাধীন" স্থলে “সাধের” কথাটা 
ন্টলিয়া যান্ব। পুম্তকেও সেইরূপ প্রকাশিত হয়। 





২২২ গিরিশচন্দ্র 


পাঠকগণকে লক্ষ করিয়া স্বুকবি কেদারনাথ চৌধুরী মহাশয় নিয্নলিখিত 
কবিতাটা রচনা করিয়ান্থিলেন, “মোহিনী প্রতিম/ পুস্তকের প্রচ্ছদ-পৃষ্ঠায় 
তাহ প্রকাশিত হইস়্াছিল। যথা £-- 


“পাঠক ধীমান্-_ 
পাষাণে প্রেমের স্থান, গাঁধাণে (ও) গলে প্রাণ, 
পাষাণে প্রেমের খেলা, কোথা তার সীম! ? 
প্রতি দিন আশা যায়, পাষাণ ফিরিয়! চায়, 


পাষাণে অঙ্কিত দেখে মোহিনী প্রতিমা |” 


আআজ্লাচ্িজ্ন 


পূর্বে লিখিত হইয়াছে, “মোহিনী প্রতিমা” ও “আলাদিন” একসঙ্গে 
অভিনীত হইয়াছিল। “মোহিনী প্রতিমা” যেমন একটু ভারি হইয়াছিল,__ 
“আলাদিন+ দেইূপ হাল্ক! করিয়। একটু নৃতন টংয়ে রচিত হুইয়াছিল। 
প্রথমাভিনন্, রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ $-_-কুহকী--গিরিশচন্্র 
ঘোষ, আলাদিন--রামতাবণ সান্যাল, বাদসাহ__ মহেন্দ্রলাল বন্থ$ উজীর-_. 
নীলমাধব চক্রবর্তী, উজীর-পুত্র-_শ্রীঅপূর্বক্ৃষ্ণ দত্ত, কলু-_গিরীকজনাথ ভদ্র, 
জিনি-_-বেলবাবু, আলাদিনের মাতা-ক্ষেত্রমণি, বাদসাহ-কন্ত! ও পরী-_ 
ভ্ীমতী বিনোদিনী, দাসী-_নারায়নী ইত্যাদি । 

দৃশ্$পট উত্থিত হইলেই “কার তোগ়াক। বাঁধি আর” শীর্মক গীতটা 
নৃত্য সহকারে গাহিতে গছিতে “চীনেম্যানের” বেণী ছুলাইয়! “আলাদিন 
যখন রজমঞ্চে বাহির হইত, দর্শকগণ আনন্দে যেন মাতিয়া উঠিত। 
গিরিশচন্দ্র কুহুকীর স্মিক। অদ্ভূত অভিনয় করিয়াছিলেন। যখন তিনি 
কফাছদণ্ড ঘুরাইয়া! মঞ্ত্রো্চারণ এবং পল্যাড়খারে* বলিয়া আলাদ্দিনকে 


সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ ২২৩ 


সঙ্থোধন করিতেন, তখন তাহার সেই যাছ্মিশ্রিত বিস্ফারিত রক্তিম চক্ষু 
এবং অপূর্ব কস্বরে গুধু আলাদিন নহে-_দর্শকগণ পথ্যস্ত অভিভূত হইয়া 
পড়িতেন। আলাদিনের মাতা, বাদসাহ, উজীর প্রভৃতির ভূমিকাভিনয়ে 
হান্তরসের ফোয়ার! ছুটিত। এই পঞ্চরংখানি সাধারণ দর্শকশ্রেণীর এতই 
মুখরোচক হইয়াছিল, যে এখনও পর্যস্ত অভিনয় ঘোষণ! করিলে রঙ্গালয়ে 
যথেইই লোক সমাগম হইয়া থাকে । 


আসম্মম্ক ল্রতৃহা। 


বিজ্ঞাপন ঘোষণ| করিয়াও গিরিশচন্দ্র যখন মনোমত নাটক প্রাপ্ত 
হইলেন না, তখন তিনি স্বয়ং নাটক লিখিবার সংকল্প করিলেন। উত্তর- 
কালে গিরিশচন্দ্র প্রায়ই বলিতেন, আমি সথ করিয়া। নাটক লিখি নাই, 
অভাবে বাধ্য হইয়াই নাটক লিখিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলাম। 'আননা রহে 
তীহার প্রথম নাটক। ৯ই জ্যৈষ্ঠ (১২৮৮ সাল) স্থাসান্তাল থিয়েটারে 
ইহার প্রথম অভিনর হয়। 

রাণ। প্রতাপনমিংহের সহিত আকবরের যুদ্ধ-সংক্রান্ত সন্ধি-গ্রন্তাব 
ইত্যাদি কতকট! এঁতিহাসিক ঘটন। থাকিলেও অন্থান্ত কাল্পনিক চরিত্রের 
অবতারণায় এবং রহস্তপূর্ণ নান৷ ঘটনা সমাবেশে “আনন রহো” নাটক- 
খানি যেরূপ গ্রধিত হইয়াছে, তাহাতে ইহাকে এক এ্রতিহানিক নাটক 
বল! যায় না। ইহার প্রধান চরিত্র “বেতাল । নাটকেই প্রকাশ-_ 
“যেখানে দেখানে একটা গবেতাঁলা কথা কয়ে ফেলে-তাই ওর নাম 
বেতাল।” বেতাল” চরিত্র গিরিশচন্দ্রের সম্পূর্ণ নৃতন ও অপূর্ব সৃষ্টি। 
এই সময়ে ইনি ইচ্ছা-শক্তি ( ড1111-0706 ) এবং মন্ত্রশক্তির বিশেষক্নপ 
আলোচন! করিতেছিলেন,--“আনন্দ রহো নাটকে গুরুমন্ত্র সাধন! সম্বন্ধে 
'ঠাহার তৎকালীন মানসিক ভাবের পরিচন্র পাওয়! যায় । বেতাল নিষ্কাম 


২২৪ গিরিশচন্দ্র 


ও সদানন্দময়--জীবনের সকল অবস্থাতেই সে “আনন রহ” বলি 
এবং কি সম্পদে, কি বিপদে--সকলকেই সে'আনন্দে থাকিবার পবামশ 
দিত; বেতালের এই উক্তি অন্ুারেই নাটকের নাম “আনন্দ রহো” 
হইয়াছে। মানদিক বলে বলীয়ান-__নুখে-ছুঃখে সমভাব-_সদানন্দ ও 
নিঃস্বার্থ পরোপকারীব যে মহান্‌ চিত্র গিরিশচন্দ্র “বেতাল” চবিত্রে প্রথম 
ফুটাইবার চে! করিয়াছেন,__উত্তরকালে শ্রীবৎস-চিত্তায় “বাতুল, 
্রাস্তিতে “রঙ্গলাল” ছক্রপতি শিবাজীতে গেঙ্গাজী', অশোকে “আকাল 
প্রভৃতি চরিত্র স্থষ্টি, তাহারই বিভিন্ন আকারের সম্পূর্ণ .বিকাশ মান্র। 
বেতালের ভূমিক। স্বয়ং গিরিশচন্দ্র অভিনয় করিয়। বিশেষরূপ 
নৃতনত্ব দেখাইয়াছিলেন। অন্তান্ত ভূমিকা যথা_-আকবর ও রাণাপ্রতাপ, 
সেলিম, মানসিংহ, ভামসা, মহিষী, লহনা এবং যমুনা যথাক্রমে 
অমৃতলাল মিত্র, অমৃতলাল মুখোপাধ্যায়, শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থ, 
মতিলাল মুর, ক্ষেত্রমণি) শ্রীমতী বিনোদিনী এবং কাদদ্বিনী ভালই 
অভিনয় করিয়াছিলেন। কিন্তু তথাপি “আনন্দ রহো+ সাধারণেব 
নিকট সেরূপ আতৃত হয় নাই। ইহার প্রধান কারণ, “আনন্দ রহো 
গিরিশচন্দ্রের নাটক-রচনার প্রথম উদ্যম,-বহু বিদেশী নাটক ও 
গল্পের বহি পড়িয়া তাহার করল্পনা-শক্তি এই নাটকে অসংযতভাবে 
পরিচালিত হইয়াছিল। আকবর-্প্রাসাদে তূগর্ভনিয়স্থ কাবাগার, ুড্গ, 
ষড়যন্ত্র, নানারূপ বহ্তপূর্ণ ঘটনাবলী-_এই নাটকে সংযোজিত হ্ইয়াছে। 
নাট্টোল্লিখিত পাত্রপাত্রীগণও যেন কুজ্াটকায় আচ্ছন্ন, সুস্পষ্ট মুত্তি লইয়! 
কেহই নয়ন-সন্মুখে উপস্থিত হয় না। বস্ততঃ “আনন্দ রহে” নাটকে 
গিরিশচন্দ্রের নাট্য-প্রতিভার ছায়! পতিত হইয়াছে মাত্র-_কায়া৷ গঠিত 
হয় নাই। 

্ব্গীয় দ্বিজেন্ত্রনাথ ঠাকুর-সম্পাদিত 'ভারতী” মাসিক পত্রিকায় এই 


অস্টারিংশ শীরিচ্ছেদ ই 


নাটারেতর নিন্দা বাহির ইযাছিত,লমানোডনীর গেম ছি এই.»জ্গিকিথ্যাবুর 
লেখায় নর এনধপ কল্পমাজ অবাজির়। দাগ! ফেরি লাই” জনরলজ 
পরে মিনার্ভ! থিয়েটারে “ঘ্যাকবর, নাঁষ দিয়া “আনল রহোঃ পুনরভিনীত 
হইয়াছিল । ইদানীং ইহার কলার অভির হয় ন। বটে, ক্ষিত্ত ,এই জাকের 
“মেচে মনুচে দ্দায় মা! সামা” পীষ্চত্রী এখনও বভিথারীগণ পান 
গাহিজ। থাকে । 


অফ্টাবিশে পরিচ্ছেদ 


ন্ণট্যম্পভ্তি্ল হিকাম্ঠ 


বঙ্গ-নাট্যশালায় প্রথম এঁতিহানিক নাটক অঞ্ভিনীত হয়স্পমাইকেল 
মধুহ্দন দত্তের পকুষ্চকুমারী।” প্রাচ্চাত্য প্রথার নাটক রচনার ইনিই 
প্রথম প্রবর্তক। তাহার পর বের পিয়েটারে যখন বহ্ধিমচন্দরের 
দুর্গেশনন্দিনী নাট্যাকারে পরিবর্তিত হুইয়৷ অভিনীত হইল,--সেই আদর্সেই 
পুক্রুবিক্রম, সরোজিনী, অশ্রমতী, হামির, আনন! বহে! প্রভৃতি নাটক 
রচিত হইয় থাকে । কিন্ত ইহা্দিগকে ঠিক এ্রতিহানিক নাটক বলা 
যার না) কারণ এই সকল নাটকে ইতিহাসের একটা কঙ্কাল থাকিত 
মাত্র, কাল্পনিক নায্নক-নায্সিকাঁর প্রণয়কাহিনীর রক্ত-মাংদেই ইহাদের 
দেহের পরিপুষ্টি সাধিত হয় । এই জাতীয় নাটক “আনন্দ রহো” পর্য্যস্ত 
( এই নাটকে একটু বাড়াবাড়ি হুইয়াছিল ) অভিনীত হইয়। কিছুকালের 
জন্ত স্থগিত থাকে | 
১৫ | 





২৬ -গিরিশচক্দ্ু 


:, সিরাজদ্দৌলা, মীরকালিম, ছত্রগতি শিবানী প্রভৃতি প্রকৃত এ্রতিহাসিক 
নাটক বহুকাল পরে রচিত হয়। যথাসময়ে তাহার আলোচনা করিব। 
ল্াঞ সঞ্র অভ্ডন্মম্ 

অত্তঃপর পৌরাণিক নাটক অভিনয়েব যুগ আরম্ভ হয়। :গিবিশচন্ত্র 
ছামিব বা “আনন্দ রহে” অভিনয়ে দর্শক-হাদয় সেরূপ আকুষ্ট হইল 
না দেখিয়া, ধর্মপ্রাণ বাঙ্গালীর প্রিয় সামগ্রী, পৌরাণিক চিত্র অঙ্কণে 
মনোযোগী হইলেন,_-তিনি “রাবণ বধ নাটক লিখিলেন। ইহাই তাহার 
দ্বিতীয় নাটক। বাবণবধ ১৬ই শ্রাবণ (১২৮৮ সাল) ন্তাসান্তাল 
থিয়েটারে প্রথম অভিনীত হয়। প্রথম অভিনয় বজনীর অভিনেতা ও 
অভিনেত্রীগণ £-রাম-_ গিরিশচন্দ্র ঘোষ, লক্ষণ-_মহেন্দ্রলাল বন্থ, 
্রহ্মা_নীলমাধব চক্রবর্তী, ইন্ত্র--অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় (বেলবাবু ) 
হম্ুমান--অঘোর নাথ পাঠক, স্গ্রীব_উপেন্ত্রনাথ মিত্র, রাবণ-_-অমৃত 
লাল মিত্র, বিভীষণ-_শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্থু ? নিকষা, কালী, ছুর্গ। ও ত্রিজটা 
-_ ক্ষেত্রমণি, সীতা- গ্রীমতী বিনোদিনী, মন্দোদরী-_কাদদ্বিনী ইত্যাদি। 

নাটকের প্রত্যেক ভূমিকা যেরূপ সুন্দর অভিনীত হুইয়াছিল, অভিনয় 
দর্শনে দর্শকহাদয়ও সেইরূপ রসাপ্লুত হইয়! উঠিয়াছিল। এ পর্য্য্ত 
গিবিশচন্দ্র সাধাবণেৰ নিকট একজন উৎকৃষ্ট অভিনেতা এবং আচার্য 
বলিয়াই পরিচিত ছিলেন, “রাবণ বধ” রচনার পর তিনি সাধারন্ণর 
নিকট স্থুনিপুণ নাট)কার বলিয়া অভিনন্দিত হুন। নাট্যাচার্ধয শ্রীযুক্ত 
অমৃতলাল বন্থ মহাশয় বলেন,_“রাবণ বধ নাটক যেদিন প্রর্থম অভিনীত 
হয়, আমাদের বড়ই ভাবন। হইয়াছিল- পৌরাণিক নাটক চলিবে কি না? 
কিন্ত অভিনয়কালীন যে সময়ে জগজ্জননীর অভয় পাইয়া রাবণ অবধ্য হইয়া 
উঠিঝাছে, রামচন্দ্র হতাশ হইয়! লক্ষণ, বিভীষণ, স্মুগ্রীব, হনুমান প্রভৃতি 
নৈতৃবৃন্দকে বলিতেছেন ৮ 


অষ্টাবিংশ পরিচ্ছেদ ২২৭ 


দেহ সবে বিদায় আমায়, 
সাগর-সলিলে-_-ত্যজিব তাপিত প্রাগ ! 
তখন লক্ষণ ক্রোধান্ধ হইন়। বলিলেন £__ 
ব্রহ্মঅন্ত্র দিয়াছেন গুরু দান-_ 
স্থাবর জম, দেব নর, গন্ধর্ব কিন্নর, 
সষ্ট বস্ত যা' আছে সংসারে__ 
এখনি দহিব আমি অস্ত্র-অগ্নি-তেজে। 
তহত্তরে রামচন্দ্র বলিতেছেন -- 
কি কাজ সাধিবা ভাই, নাশিপা সংসার 
নাশিবে আমারে-_যার তরে 
বনবাসী তুমি রাজ্য পবিহরি 
নাশিবে জানকী 
শক্তিশেল হাদে ধরেছিলে যার তরে; 
বিনাশিবে পবননন্দন হন্গু-_ 
বারবার প্রাণদান মোরা 
পাইয়াছি যাহার প্রসাদে ; 
ভন্ম হবে অযোধা! নগরী $-- 
সর্বনাশ কর কি কারণ? 
তাহার পর বলিলেন £__ 

_. হেররে তৃণীরে মম-_কাল সর্পাকৃতি শর, 
পুল, চক্র, পাশ, দণ্ড আদি মহ! অন্ত 
কি আছে জগতে-__ 
বিমুখিতে নাহি পারি কোদগু-প্রভাবে? 
কিন্তু, তথাপিও নারি বিনাশিতে দশাননে ! 


২২৮ শািরিখ 


তারার চরণে ভক্তি-্সন্ত্র বিন 
কি পরয়ে বিদ্ধিতে আর ! 
রামচন্জ্বেশী-গিরিশচন্দ্রের জলদগন্জীর কঠ সইতে অগ্রন শেষ 
হই ছত্র-_ 
তারার চরণে ভক্তি“অগ্ত্র বিজ 
কি পারে বিদ্ধিহে কার! 
উচ্চারিত হুইল, তখন বর্শকমন্ুলী ভক্িবিহ্যবা-্াঞ্জে যেরূপ সমবেত 
উল্লাস-ধ্বনি করিয়। উঠিলেন, তখনই আমাদের মনে র্ইবা, এ বাটক 
চলিবে, ভক্তিগ্রধান বাঙ্গালী তাহার জদ্মগত্ত বংঘ্ধার ভুলে নাই-_ 
বর্ঘপ্রাণ জাতির মর্মস্থান এ নাটক ঠিক স্পর্শ করিয়াছে ।” 
£গন্জিম্সী ভল্ম। 
রাবণবধ নাটকে গিরিশচন্দ্র ভাঙ্গা! অমিব্রাঙ্ষর ছন্দ--প্রথম প্রবর্তিত 
করেন। মধুনুদন তাহার মেঘনাঘবধ কাব্য অমিত্াক্ষর ছে প্রথম 
প্রচলন করিলেও পয়ারের স্থায় চ্ুর্দশ অক্ষর বজায় রাখিয়াছিলেন,_ 
এই চতুর্দশাক্ষরে আবদ্ধ থাকিয়! অনেক সময়ে ছন্দের দ্বচ্ছন্দগতি ব্যাহত 
হয়, 'মেঘনাদ বধ অভিনয় ও তাহার শিক্ষাদানকালে গিরিশচন্দ্র ইহা 
উপলব্ধি করিয়াছিলেন। যথা-_- 
“সত্য যদি রামান্থুজ তুমি, ভীমবাহু 
লক্ষণ 3” ইত্যাদি । 
চতুর্দশ অক্ষরের বন্ধন হইতে মুক্তিলাভ করিতে পারিলে ছন্দ আরও 
স্বাধীনতা প্রাপ্ত ও সুমধুর হয় এবং তাহ অধিকাংশ স্বল্প শিক্ষিত অভিনেত। 
ও অভিনেত্রীগণের আয়ত্বাধীন করিবার পক্ষেও বিশেষ সুবিধ! হয়-- 
গিরিশচন্দ্রে এই ধারণা জন্মে । এই অভাব পূরণের নিমিত্ত যখন তিনি 
চিন্ত। করিতেছিবেন,--হ্ঠাৎ একদিন স্বর্গীয় কানীগ্রস় সিংহ মহোদয়ের 


অফ্ীফিংশ' পরিচ্ছেদ ২২৯ 


“ছতোম পর্টাচার নল্সা” গ্রন্থের গ্রচ্ছন-পৃষ্ঠায় (01৬ [১88৩ ) সু্রি 
করেফ ছে কবিতায় প্রতি তীর দৃষ্টি পড়ে। যখা:-_ 

“হে ষজ্জন ! 

সতাবের সুনির্ধল পটে, 

রহ"রসের বলে, 

চিজিন্ু চরিজ দেখ ষবন্যতী-বরে । 

কপা-চক্ষে হের' একবার ; 

শেষে বিবেচন্নামতে, 

তিরাফার কিংবা পুরস্কার যাহ হয়) 

দিন তাহ! মোরে, 

বু মানে লব শির' পাতি ।” 

গিরিশচন্ত্রের মুখে শুনিয়াছি, এই ভাঙ্গা অমিদ্রাক্ষর ছগ্দে প্রর্থিত 
কবিভাটি পাঠ করিফ। তিনি পরম উৎসাহিত হুইয়! উঠিয়াছিলেন। ভিমি 
যেটা চাহিতেছিবেন, কানীগ্রনন্গ বাধু যেন সাহার মনোভাব পুরহ্ঘ হইতে 
জানিতে পারিয়াই নমুনা স্বরূপ এই করেক ছক্জ জিথিয়! রাখিয়া! গিয়াছেন। 
যাহাই হউক, এই ছন্দই নাটকের উপযোগী বলিয়া! তিনি গ্রহণ করিলেন 
এরং ঝাধণব্ হইসে আরন্ত' করিয়া সীতার বলবান, অভিষনূ বধ, লক্ষণ 
বর্জন গ্রভৃতি ষে সকল পৌরাধিক দৃষ্তকাব্য তিমি রচন! করে. 
সকলগুলিতেই এই ছন্দ ব্যবহার করিতে লাগিলেন। সরল, কুমিষউ 
এবং সহ্জানত্ব হওয়ায় খিরিশচচ্ক্বর প্রবর্তিত এই ভাঙ। অধিতাক্ম্র ছনের 
ব-রঙ্গালয়ে বন্ধসংখ্যক নাটক' রষিত হইয়াছে এবং এখনও হইতেছে। 
অনেক বক দেখ! যায়, গ্ঁতিভাশালী ব্যক্তি কোমও একটা নূতন 

জিনিৰ ৃষ্টি করিলে প্রথমে তীঁছাকে সাধারণের নিকট লামা জ্োগ 
কন্ধিতে হয়| মধুহুফদ যে সময়ে অগিআক্ষ- ছন্দ প্রথম প্রবর্তন করিয়া 


২৩০ গিরিশচন্দ 


“মেঘনাদ বধ" কাব্য বাহির করেন, নে সময়ে তাহাকে উপহাস কবির! 
“ছুছুন্দরী বধ* কাব্য প্রকাশিত হয়। গিরিশচন্দ্রেরও এই ভাঙ্গ। অমিত্রাক্ষর 
ছন্দ বাহির হইলে অনেকেই বলিয়াছিলেন, _-*্শ্লেটে গণ্ভ লিখিয়! তাহার 
ছই দিক মুছিয়! দাও, দেখিবে--“গৈরিণী ছন্দ হইয়াছে ।” 

কিন্তু এই নূতন ছন্দ প্রকাশিত হইলে,--লক্ষমী ও সরম্বতীর আনন্দ- 
নিকেতন যোড়ান্গাকোর স্ুপ্রসিদ্ধ ঠাকুরবাড়ী হইতে গিরিশচন্দ্র গ্রথম 
হইতেই বিশেষরূপ উৎসাহ প্রাপ্ত হন। ন্ববর্গীয় দার্শনিক পণ্ডিত 
ছিজেন্্রনাথ ঠাকুর-সম্পাদিত “ভারতী” মাসিক পত্রিকায় বাহির হয়,-- * 
"আমরা শ্রীযুক্ত গিরিশচন্দ্রের নূতন ধরণের অমিত্রাক্ষর ছন্দের বিশেষ 
পক্ষপাতী । ইহাই যথার্থ অমিত্রাক্ষর ছন্দ। ইহাতে ছন্দের পূর্ণ স্বাধীনতা 
ও ছন্দের মিষ্টত! উভয়ই রক্ষিত হুইয়াছে। কি মিক্রাক্ষরে কি অমিত্রাক্ষরে 
অলঙ্কার শাস্তোক্ত ছন্দ না থাকিয়! হৃদয়ের ছন্দ প্রচলিত হয়, ইহাই 
আমাদের একাস্ত বামন! ও ইহাই আমরা করিতে চেষ্টা করিয়া! আমিতেছি। 
গিরিশবাবু এ বিষয়ে আমাদের সাহায্য করাতে আমরা অতিশয় সুখী 
হইলাম।” (ভারতী, মাঘ, ১২৮৮ সাল।) 

১৯০৬ থুষ্টাব, ২৩শে এপ্রিল তারিখে গিরিশচন্দ্র মহাকবি নবীনচন্্ 
সেনকে রেস্কুনে যে পত্র লিখেন, তন্মধ্যে গৈরিণী ছন্দের একটা কৈফিয়ৎ 
দিয়াছিলেন। নিম্নে তাহা উদ্ধৃত করিলাম। এতৎপাঠে এই ছন্দ- 
প্রচলনের প্রয়োজনীয়তা কি-_প্রবর্তীকের মুখেই তাহা পরিস্ফুট হুইয়্াছে।"__ 

পক & ঞ তুমিযুদ্ধনা করিলেকি হয়? আমি যুদ্ধ ক'গূবো। ঘুদ্ধ 
আর কিছু নয়, “গৈরিশী ছন্দের একটা কৈফিয়ৎ। «গৈরিশী ছনা” বলিয়া 
যে একটা উপহাসের কথা আছে, তার প্রতিবাদ । প্রতিবাদ এই, আমি 
বিস্তর চে! কঃরে দেখেছি, গন্ভ লিখি সে এক শ্বতগ্্ কিন্তু ছন্দোবদ্ধ 
ব্যতীত আমরা ভাষাকথা কইতে পারি না। চেষ্টা করলেও ভাবা-কথ 


অফ্টাবিংশ পরিচ্ছেদ ২৩১ 


কইতে গেলেই ছন্দ হবে। সেই অন্ত ছন্দে কথা--নাটকের উপযোগী । 
উপস্থিত দ্রেখা! যাক, কোন্‌ ছন্দে অধিক কথা হয়। দীর্ঘ ভ্রিপদী, লঘু 
ত্রিপদী ব1 যে যে ছন্দ বাঙ্গলায় ব্যবহার হয়, সকলগুলি পয়ারের অন্তর্গত । 
অমিত্রাক্ষর ছন্দ পড়িবার সময় আমার যেমন তাঙ্গ। লেখা, তেমনি ভেঙ্গে 
ভেঙ্গে পড়তে হয়। যেখানে বণনা, সেখানে স্বতন্ত্র, কিন্তু যেখানে কথাবার্তা. 
সেইখানেই ছন্দ ভাঙ্গা । তারপব দেখা যাউক, কোন্‌ ছন্দ অধিক। 
দীর্ঘ ব্রিপদীব দ্বিতীয় চরণের সহিত শেষ চরণ মিলিত হুইয়া' অধিকাংশ কথা 
হয় 2 

ক * **, দেখিলাম সরোববে, কমলিনী বান্ধিয়াছে করী ।, 
লঘু ত্রিপদীব দ্বিতীয্প চরণ ও শেষ চরণ অনেক মিলিত হয় 

'* *%* *%, বিরস বদন, রাণীর নিকট যায়। 

এ সওয়ায় পয়ার, লঘু ব্রিপদীর এক এক পদ বিশেষতঃ শেষ পদ 
পুনঃ পুনঃ ব্যবহৃত হয়। আমার কথ! এই যে, এ স্থলে নাটকে চৌদ 
অক্ষরে বীধা পড়া কেন? চৌদ্দ অক্ষবে বাধা পড়লে দেখা যায়, সময়ে সময়ে 
সরল যতি থাকে না £-_ 

“বীরবাহু, চলি যবে গেল৷ যমগুবে 

অকালে ।, 
এইরূপ হামেসা-ই হবে। বাঙ্গাল। ভাষায় ক্রিয়া “হইয়াছিল, প্রভৃতি অনিক 
সময়েই যতি জড়িত করিবে। কিন্তু গৈরিশী ছন্দে সে আশঙ্কা নাই। 
যতি সম্পূর্ণ *করিয়৷ সহজেই লেখা যাইবে। আর এক লাভ, ভাষা নীচ 
হতে বিনা চেষ্টায় উচ্চ স্তরে সহজেই উঠবে । সে স্থুবিধা চৌদয় কিছু 
কম। কাব্যে তার বিশেষ প্রয়োজন নাই ) কিন্তু নাটকে অধিকাংশ সময় 
তার প্রয়োজন । কর %” 

সাহিত্যরথী স্বর্গীয় অক্ষয়চন্ত্র সরকার মহাশয়, তাহার “সাধারণ? 


হ৩২ গিরিপডজ 


পদ্রিকার গিরিশচন্তের প্রবন্তিত এই স্ভাজ। ছন্দের উল্লেখ করিষ্ধা লিখিরা- 
ছিলেন,-এতদ্িনে নাটকের ভাষ। স্থজিত হাইয়াছে।* 

চৌঙ্গ অরে লেখ ফে অধিক কঠিন নয়, তাহা দেখাইবার জন্ত তিনি 
চত্ত, মুকুল*মুজজরা এবং কালাপাহাড় নাটক চঁডুর্দশাক্ষরযুস্ত অনিত্বাঞ্গর 
ছলো রচঞ। কজিনিজেন। 


'রাবণবধ” নাটকের সমালোচন। ইত্যাদি 


শুধু ছনা সম্বন্ধে নহে, ১২৮৮ সালের মাঘ মাসের “ভারতীতে” 
গিরিশচন্দ্রের “রাবণবধ' এবং সেই সঙ্গে 'অভিমস্াবধ, নাটকেরও উচ্চ প্রশংসা 
বাহির হইয়াছিল। সমালোচন! হইতে কিয়দংশ উদ্ধত করিতেছি £-- 
“কি তাহার অভিমন্ুবধ, আর কি তাহার রাবণবধ-.এই উভয় 
নাটকেই তিনি রামান্নণ ও মহাভারতের নায়ক ও উপনায়কর্দের চরিত্র 
জতি স্থন্দররূপে রক্ষা করিতে পারিয়াছেন। ইহ! সীমান্ত সুখ্যাতির 
করানছে। এক খণ্ড কয়লার মধ্যে সুর্যের আলোক ত প্রবেশই করিতে 
পারে ন!, কিন্তু এক থণ্ড শ্ষটিকে শুদ্ধ যে সুধ্যকিরণ প্রবেশ করিতে পারে 
এমন নয়, আবার শ্ফার্টিক্যগ্তণে সেই কিরণ সহল্রবর্ণে প্রতিফলিত হইয়া 
নুর্য্যের মহিমা ও শ্ফটিকের হ্থচ্ছতা প্রচার করে। শ্রীযুক্ত গিরিশবাবুর 
করনা সেই স্ফটিকখণ্ড__ এবং তীহার অতিম্াবধ ও রাবণবধ প্রকৃত রামায়ণ 
ও মহাভারতের প্রতিফলিত রশ্মিপুঞ্জ । %** তাহার রাবণবধে যদিও 
রাম-লক্ষণের প্রক্কৃতি বিশেষরূপে পরিপ্ুট হয় নাই, তবুও তাহার রাবণ ও 
মন্দোদরী এমন জীবন্ত হইয়াছে, যে সেই জন্তই রাবপৰধ নাটকথানি এত 
প্রীতিকর লাগে । রাৰণের মহ্থান্‌ বীরত্ব, ও দন্দোদরীক্ন কবিত্বময় তেজদ্থিত 
এত পরিস্ফুটরূপে রাবপবধ নাটকে প্রতিফলিত হইয়াছে যে ভাঙার উপর 
আমাদের একটি কথা কহিবার আৰপ্তক নাই। বিঃশষতঃ দেবী আক্মাধন! 


অফীিংঙা পরিচ্ছেদ হ্ঙ$ 


ও দেখীব্োদতুলি অভি গজায় হইগাছে। কেধ্গ মৃষ্টযুবাণ আঁদকস 
খটনাটা ও সেই স্থানের বর্শনাঠী'আমাদের বড়' মনঃপুত হয নাই” 
'ভারতীর? লেখক বোধ হঝ তত ভাবিয়া দেখেন নাই, _ধিকেটীরে 
শিক্ষিত, অশিক্ষিত সকল শ্রেণীরই দর্শক আসিঙ্া থাকে। সাধারণ শ্রেণী 
প্রাতিন নিমিত্ত নাটকে তরল হান্তরলের ছই একটা দৃশ সংঘোজনাত এই 
অন্তই প্রয়োজন হয়। রাবগে মৃত্যুবাঁণ সংগ্রহের নিশি বুদ্ধ আহ্মণবেণী 
হৃহমান লঙ্কা গ্রবেশ' করিদ! মনোদীর' পৃজানদিরে প্রবেশকালীন প্রিভটা 
কর্তৃক বাধ। পাইক কৃত্রিম কোপে বলিতেছে £-- 
“হনুমান খেয়ে পূজোর কলা গণ্ড। গন্তা, 
তুই বেটা হ,য়েছিস বস্তা, 
উগ্রচণ্ড! বাক্যি বেটা ছাড়তে । 
দ্বোরে ছিল চাপদেড়ে, 
বামুন দেখে দেছে ছেড়ে, 
বেটা এলি থোবন! নেড়ে ? 
ত্রিজট|। বুড়োর ভেল। বাড়তে! । 
বাড়া, লাগাই তোরে তিন সৌটা, 
কপালে কেটেছিস ফোটা-_ 
মাথায় তোর তরমুজেন্ধ বৌটা 
উপড়ে নেব ট্েমে।” ইত্যাদি 
সমস্ত নাটকের মধ্যে মাঞ্জ এই একটা হাত্তরসাত্মক দৃশ্ত। তাহা 
হইতেও বঞ্চিত করিতে যাইলে বেচারীদের, উপত্ব বড়ই অবিচার কর! 
হয়। অবশ্ঠই সুরুচির গণ্ভী পার ন! হইলে থে হাশ্ঠরসের অবতারণা করা 
যায় না, এ কথ! বল! ভূল 7 কিন্ত ইন প্র স্থগগে বঙ্গ? আবস্ঠীক, সে সমস্নে 
সমস্ত বঙগজদশে যাত্রা ও কবির দলের, পূর্ণ প্রভা, অবং ফাত্রায় কুরুচিপূর্ণ 


২৩৪ গিরিশচন্দ্র 


সংয়ের তখন বড়ই আদর। বলা বাহুল্য, গিরিশচন্দ্র তাঁহার রচনাক়্ কুন্ত্াপি 
কুরুচির পোষকতা করেন নাই । তবে নাটকে জীবস্ত চরিত্র-অস্কণের 
প্রয়াসে, সময়ে সময়ে গ্রামাও চলিত ( 9০011090589] ) ভাষা প্রয়োগ 
করিয়্াছেন-_-এই মাত্র। 
এক্ষণে গিরিশচন্দ্রের ভাষার প্রাঞ্জলত৷ ও রম-মাধুর্য্যের দৃষটাস্তস্বরূপ 

সীতাদেবীর মুখ-নিঃস্থত কয়েকছত্র পাঠকগণকে গুনাইতেছি। এই দৃষ্ 
অভিনয়কালীন এমন দর্শক ছিল না যিনি অশ্রবর্ষণ না করিয়া! থাকিতে 
পারিতেন। রাবণ বধের পর অশোক-কানন হইতে রামচন্দ্র-সন্মুখে 
মীতাদেবী আনীতা৷ হইলে রামচন্দ্র বলিলেন £__ 

শুন শুন জনকনন্দিনি, 

রঘুকুল-বধু তুমি, 

করিলাম ছুফধর সমর-_- 

রাখিতে বংশের মান ; 

ছিলে দশ মাস রাক্ষসের ঘরে, 

অযোধ্যা নগরে 

না পারিব লইতে তোমারে, 

ন1 পারিব কুলে দিতে কালি, 

যথা ইচ্ছা করহ গমন। 

উত্তরে সীতাদেবী যাহা বলিলেন, তাহার শেষাংশ এই £_- 

কোন্‌ দোষে অপরাধী শ্রীচরণে? 

কহ, অধীনীরে কেন ত্যজ গুণনিধি ? 

সতী নারী আমি, 

কহি চন্ত্র-ূর্য্য সাক্ষী করি, 

সাক্ষী মম দিবস শর্বরী, 


অফ্টাবিংশ পরিচ্ছেদ ২৩৫ 


সাক্ষী রুক্ষ কেশ, মলিন বসন, 
সাক্ষী শীর্ণকায়, 

সাক্ষী আপাদমত্তক বেত্রাঘাত, _ 
সাক্ষী বয়ানে রোদন-চিহ্ন 

সাক্ষী দেখ নয়নের নীর 
ঝরিতেছে অবিরল, 

সাক্ষী পবননন্দন হন্থু 

সাক্ষী বিভীষণ,_ 

সাক্ষী, নাথ, তোমার অন্তর ! 

গিরিশচন্দ্রের প্রথম উদ্ভমে রচিত নাটকের অনেক স্থানেই এইরূপ 
ভাবের সুগন্ধ আত্রাণে মুগ্ধ হইতে হয় । 

'রাবণবধ নাটকে বণিত শ্রবামচন্ত্রের ছুর্গোৎদব মুল বাম্সিকীর 
রামায়ণে নাই, ইহ! ক্কত্তিবাসের রামায়ণে আছে। গিরিশচন্দ্রের বাল্য 
ইতিহাসে লিখিয়াছি,_-শৈশবকাল হইতেই কৃত্িবালের রামায়ণ এবং 
কাশীরামদামের মহাভারত তাহার কণ্ঠস্থ ছিল। বাল্যকাল হইতেই এই 
কবিছ্য়ের ভাব ও ভাষা তাহার হৃদয়ে এতটা প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল, 
যে, তিনি আজীবন কৃত্তিবাম ও কাশীরামদাসের কবিত্বের একান্ত অনুরাগী 
এবং তাহাদেব প্রতি সাতিশয় শ্রদ্ধান্থত ছিলেন । এক সময়ে সুগ্রসিদ্ধ 
সাহিত্যিক ও পণ্ডিত চন্দ্রনাথ বসু কোনও সাহিতিককে বলিয়াছিলেন-_ 
“গিরিশবাবুর'পৌরাণিক নাটকের অনেক স্থানে ক্কত্তিবাস ও কানীরাম- 
দাসের শুধু তাব নহে, ভাষ। পর্যাস্ত আসিয়। পড়িয়াছে।” সেই সাহিত্যিকের 
মুখে চক্্রনাথবাবুর মন্তব্য গুনিয়া গিরিশচন্দ্র তাহাকে বলিয়াছিলেন,-_ 
“চন্্রনাথবাবুকে বলিবেন, ইহাতে আমি গৌরবাদ্বিত। কৃতিবাসের রামায়ণ 
এবং কাশীরামদাসের মহাভারত বাঙ্গালী কবির পৈত্রিক সম্পত্তি । 


২৩৬ লিরিক 


মহাকবি মাইকেল আত্তরিক শ্রদ্ধার সহিত তাঁহার" গুণগান করিয়া 
গিয়াছেন।” 
রাবণবধ নাটকের প্রচ্ছদ-পৃষ্ঠায় গিরিশচজ মাইকেলের নিম্নলিখিত 
কবিতা! উদ্ধৃত করেন ₹-_ 
“নমি আমি, কবি-গুকু, তব পদানুজে; 
বাল্ীকি ! হে ভারতের শিরঃ-চুড়ীমণি।” 


ক ১৩ $ 
“্কৃতিবাস কীর্তিবাস কবি-_ 
এ বঙ্গের অলঙ্কার !” 

মাইকেল মধুহ্দন দন্ত ।” 


গুণগ্রাহী মহারাজ যতীন্ত্রমোহন ঠাকুর গিরিশচন্ত্রের নাট্য-প্রতিতার 
বিশেষ গক্ষপাতী ছিলেন । যীাছাদের চেষ্টায় ও উৎসাহে বাঙ্গালায় প্রথম 
খিয়েটাবের-কুন্রপাতি হয়, মন্থারাজার নাম তন্মধ্যে বিশেষরূপ উল্লেখযোগ্য 
কৃতজ্ঞতা প্রাদর্শনের নিষষিতত গিরিশচন্ত :রাবশবধ+ নাটক তাহার নামে 
উৎসর্গ করেন। যথ| $-_ 

“গরম পৃজনীয় শ্রীযুক্ত মহা রাজ! ফতীন্রমোহন ঠাকুর বাছান্থর 

মি, এস, আই মছোদন্ব ভ্রীচরণেযু। 

'দেখ! 

ষু্র যত্তের ফলাফল যজেশ্বর হরিতে অপিত হয়। এই দু 
কাবাঙ্ধানি জন-পালক রাঁজ-করে অর্পণ করিলাম। মহাত্বন্! নিজগুণে 
গ্রহণ করিবেন, কমল সুত্র হইলেও তান্ু-করেই বিক্ষাশ পায়। ইতি 


কলিকাতা, বাগবাঞ্জার ] সেবক 
১২৮৮ সাল উ্রীপিক্িষ্ণভুজদ্র ব্বাজ্ম 1” 


উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ 
এস্পেটীযন্দি আনাটিযানািক রোযার সুরাজা 
গাঁরীযাচারার আজহআরাজ্ম 

রারণতধ* নাটমাভিলার এপেন্িউ। লা বসির গামাণশৌরাদিক আটকে 
সাধারণের ন্সাগ্রহ দর্শনে "গিনি সউখগাতের পহিচ্চ 'প্রাঙার 'চৃষ্ঠীর বাটিক 
সীতার ক্যযাল+ ঘচনা হিজেন | লা আকগিন।(-১২৮৮ পাল )-্াসাক্তাল 
থিয়েটারে ইহা আম স্বন্ডিনয় হয়ে। 

প্রথমাভিনয় রজনীর আআভিনেকগশ --াম-_গিকিশচাজ ঘোষ, জাকাগ__ 
মহেন্্রলাল বনু, ভরত- স্জমৃগাল রুধোপাধ্যায় :( ফেলঘাঘু), রপিষ্ঠ-_ 
নীলমাধব চন্রুবর্তী, বান্সীকি__অনুতলাল মিত্র, হূর্ম'খ-- যুক্ত অমৃতলাল 
বন্ধ, স্থুমন্ত্র--অতুলক্ক্ণ মিত্র ( বেডৌল ), অন্থরক্ষক-_.অঘোরনাথ পাঠক, 
লব- শ্রীমতী বিনোদিনী, কুশ-_কুন্ুমকুমারী (খোঁড়া), লীতা-_ 
কাদঘ্বিনী, অলিক্ষরা-_-ছ্ীমতী বনবিহারিনী, নিকষা--ক্ষেত্রমণি ইত্যা্দি। 

ভূমিকা-লিপির পরিচয় পাইয়া পাঠকগণ বুঝিয়াছেন, কিরূপ সুযোগ্য 
অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ কর্তৃক নাটকখানি অভিনীত হুইয়াছিল। 
সাধারণতঃ প্রত্যেক নূতন নাটকের প্রথমাভিনয় রজনীতে দেখিতে পাওয়া 
যার, সুশিক্ষাদানসত্তবেও ছোট ছোট ভূমিকাগুলি অল্পশক্তিবিশিষ্ট অভিনেতা 
ও অভিনেত্রীগণ কর্তৃক অভিনীত হওয়াক্ম প্রায়ই নিখুত হয় না। কিন্ত 
এই নাটকের ক্ষুত্র ক্ষুদ্র ভূমিক। লইয়। -ধাহারা৷ অবতীর্ণ হুইয্াছিলেন,--- 
ইতিপূর্বে তাহাদের মধ্যে অন্নেকেই অন্তান্ত নাটকের নায়ক বা তন্ধল্য 


২৩৮ গিরিশচন্দ্র 


ভূমিকা অভিনয় করিয়া! যশস্থী হইয়া আসিয়াছেন। “সীতার বনবাদ? বিষঙ্নটী 
একেই রামায়ণ মধ্যে সর্বাপেক্ষা করুণবসাত্মক, তাহার উপর গিরিশচন্দ্রের 
রচনাকৌশলে এবং সম্প্রদ্দায়েব এই পূর্ণশক্জি সন্মিলনে অভিনীত 





দ্বর্গায় মহেন্দ্রলাল বন্ধু 
হওয়ায় নাটকথানি--কি শিক্ষিত কি অশিক্ষিত সকলশ্রেণীর 


দর্শকেরই মনোহরণে সমর্থ হইয়াছিল। রাম ও লক্ষণের ভূমিকা 
গিরিশচন্ত্র ও মহেন্ত্রলাল রন্থ এত সুন্দর অভিনয় করিয়াছিলেন যে 


উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৩৯ 


প্রবীণ নট্যামোদিগণের মুখে আজি পর্যন্ত তাহাদের সেই অতুলনীয় 
অভিনয় কাহিনী গুনা যায়। লব ও কুশের অভিনয়ে শ্রীমতী বিনোর্দিনী ও 
কুন্ুমকুমাবী এই নাটকথখানিকে আরও মধুর এবং আরও উজ্জল করিয়া 
তুলিয়াছিলেন। বার বার ইহাদের অভিনয় দেখিয়াও দর্শকমণ্ডলীর সাধ 
মিটিত না । মহিলাগণের নিমিত্ত পূর্ব হইতেই দ্বিতলের একপার্্ব চিক 
দিয়া ঘেরা ছিল, এবং ইতিপূর্বে প্রায়ই তাহ! খালি পড়িয়! থাকিত। 
রাবণ বধ” নাটক হইলে স্ত্রী-দর্শক কিছু বুদ্ধি পায়,_কিন্তু “দীতার বনবাসের” 
শতমুখে সুখ্যাতি শুনিয়া মহিলাগণের সংখ্যা প্রত্যেক সপ্তাহে এরপ বৃদ্ধি 
পাইতে লাগিল যে সত্বাধিকারী গ্রতাপটাদ জন্থরী মহাশয়কে স্ত্রীলোকের 
আসনের সংখ্য! বাড়াইবার বিশেষ ব্যবস্থা করিতে হয়। ফলতঃ সীতার 
বনবাস অভিনয় করিয়। স্তাসান্তাল থিয়েটার যেরূপ অজল্ সুখ্যাতিলাভ, 
তৎমঙ্গে সেইরূপ প্রচুর অর্থ উপার্জনও করিয়াছিল। , 

১২৮৮ সাল, ফালন্ুন “মাসের 'ভারতী*তে মনীষী দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর- 
লিখিত “সীতার বনবাসের' দীর্ঘ ্মালোচন! বাহির হইয়াছিল। তাহা হইতে 
কিয়দংশ উদ্ধত করিলাম £-_ | 

প্গিরিশবাবুব রচিত পৌরাণিক দৃষ্বকাব্যগুলিতে তাহ।র কবিত্ব- 
শক্তির যথেষ্ট পরিচয় পাওয় গিয়াছে। তিনি তাহার বিষয়গুলির সৌনাধ্য 
ও মহত্ব কবির স্তায় ঝুঝিয়াছেন ও তাহা অনেক স্থলে কবির স্তায় প্রকাশ 
করিয়াছেন । * & * যতগুলি ঘটন! লইয়। এই কাব্যখানি রচিত হইয়াছে, 
তাহা একট ক্ুদ্রায়তন দৃশ্তকাব্যের মধ্যে পরিপ্ফুটজ্জাবে বর্ণিত হইতে 
পারে ন। ইহাতে সমস্তটার একটি ছায়ামাত্র পড়িয়াছে। কিন্তু ইহাতে 
কবিতার অভাব নাই। সীতা বঙ্জনেব ভার লক্ষণের প্রতি অর্পিত হইলে 
লক্ষ্মণ রামকে যাহ। কহিয়াছিলেন, তাহা অতি সুন্দর । যদ্দিও বনবামের 
পর লীতার বিলাপ সংক্ষেপ ও মন্মরভেদী হয় নাই, দীর্ঘ ও অগভীর হইয়াছে, 


৪৪ 'নারিশ্চজ 


তথ্যাণি নীতার শেষ প্পার্ধনাটী তি কনার হইয়াছে। খন পৃথিরীতে 
জ্লীবনর ক্লোন রজ্ধন বাই, আচ জীবন রঙ্গ! রর্ার্য, তক্খন.দেরতার 
কাঞ্ছে এই ল্ীর্ঘন। কর], সজান-নাঃযন্য 'ভিক্ষ। জর 

“জগৎ মাতা, 

শিখাঞ্জগো স্মহিত্ারে গাননীর রেপ) 

ছিয় ঞ্জ ভুরি, 

এখনে বাধা রেগে নানংসারে ও 

এরে, কে কভাগা! এসেছে জলে 1” 

আহি সুন্বর হইয়াছে " 

*্যবে গভীর৷ বামিনী, বসিব্কায়ে | 

শিগু ছটা ঘুমায় হুটীরে, 

টাদপানে চাহি কাদি সই, 

চাদ দুখ পড়ে মনে।” 

এই নকল কথায় সীতার বেশ এটা চির ছেওয়! হইয়াছে ।” 

“সীতার বনবাস নাটকথানি গিরিশচন্দ্র পুণায়্োক ঈীশ্বরচন্জ্র বিভ্যানাগর 
মহাশয়ের নামে উৎসর্গ করিয়াছিজেন। উৎসর্গপত্রটী নিয়ে উদ্ধৃত 
হইল £-_ | 

"্পৃজনীয় শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচঞ্জ বিস্তাসাগর মহাশয় শ্রীচরণেযু- 

গুরুদেব দ্ীননাথ, 

মাতৃভাষা জানি ন। বল! ভাল নয়, মন্দ । মহাশয়ের ঘবেতাল” পাঠে. 
বুঝিলাম । আচার্য! আমার পরীক্ষ। গ্রহণ করুন। আমি চিরদিন 
মহাশয়কে মনে মনে বন্দনা করি। সেবক শ্রীগিরিশচন্দ্র ঘোষ । 

কলিকাতা, বাগবাজার ; মাঘ, ১২৮৮। 


উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৪১ 


ভসভ্ভিমন্্য শর 


"সীতার বনবাস নাটকে আশাতীত সাফল্যলাত করিয়া গিরিশচন্জ 
এবার রামায়ণ ছাড়িয়া মহাভারত হইতে বিষয় নির্ব্যাচন করেন। তাছার 
চতুর্থ নাটক অভিমন্যু বধ। ১২ই অগ্রহায়ণ ( ১২৮৮ সাল ) স্লাসান্তাল 
থিছেটারে প্রথম অভিনীত হয় । প্রত্থমাভিনয় রজনীর প্রধান অভিনেতা। ও 
অভিনেত্রীগণ £-_ 

যুধিষ্ঠির ও দুর্যেযোধন-__গিরিশচন্দ্র ঘোষ, শ্রীরুঞ্জ ও দ্রোণাচাধ্য-- 
কেদারনাধ চৌধুরী, ভীম ও গর্গ-__অমৃতলাল মিত্র, অর্জুন ও জয়দ্রথ-_ 
মহেন্্রলাল বসু, অভিমন্ধ্য-_অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় (বেলবাবু), ছঃশাসন-_ 
নীলমাধৰ চক্রবর্তী, কর্ণ ও গণক-_-অঘোরনাথ পাঠক, স্ুভদ্রা _গঙ্গামণি, 
উত্তরা--শ্রীমতী বিনোদিনা, রোহিণী-_কাদস্িনী ইত্যা্দি। 

অভিমন্াবধ নাটকের অভিনয় যেরূপ সর্বালনুন্দর হইয়াছিল, 
নাট্যামোদিগণের নিকট ইহার আদরও সেইরূপ হইয়াছিল। বেলবাবু 
অভিমন্থার ভূমিক। অতি চমংকার অভিনয় করিয়াছিলেন। গিরিশচন্দ্র 
ঘুধিষ্টির ও ছুর্য্যোধন ভূমিকার পরম্পর বিরোধী ছুইটা বিভিন্ন রমের অভিনয়ে 
সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ুইটা ছবি দেখাইয়া! দর্শকগণের বিদ্মরোৎপাদন করিম্বাছিলেন। 
'আধ্যদর্শন* ব্যতীত সমন্ত সংবাদপত্রে এই নাটকের সুখ্যাতি বাহির 
হইয়াছিল। “ভারতী*.( মাঘ, ১২৮৮ সাল) মানিক পন্রিকায় প্রকাশিত 
সমালোচনাটা উদ্ধৃত করিলাম ; 

*অভিমন্যুর নাম উচ্চারণ হইলেই আমাদের মনে যে ভাব উদয় হয়, 
“অভিমন্থ্য বধ” কাব্য পড়িয়া! সে ভাবের কিছুমাত্র বৈলক্ষণ্য হুয় না, বরং সে 
ভাব আরও উজ্জ্লতর রূপে ফুটিয়। উঠে । যে অভিমন্থ্য বিশ্ববিজয়ী অঞ্জুন ও 
বীরাঙ্গনা স্ুভদ্রার সন্তান, তাহার তেজন্বিতা ত থাকিবেই, অথচ 

১৩ 


২৪২ গিরিশচন্দ্র 


অভিমন্থ্যর কথা মনে আসিলেই হুর্যের কথা মনে আসে না, কারণ সুর্য 
বলিতেই কেবল প্রথর তীব্র তেজোরাশির লমষ্টি বুঝায়__কিস্তু অভিমন্থ্যুর 
সঙ্গে কেমন একটা সুকুমার সুন্দর যুবার ভাব ঘনিষ্ঠভাবে নংযোজিত 
আছে যে, তাহার জন্ত অভিমন্গ্যুকে মনে পড়িলেই চন্দ্রের কথা মনে হওয়৷ 
উচিত, কিন্তু তাহাও হইতে পারে না, কারণ চন্দ্রের তেজন্বিত। ত কিছুই 
নাই। সেই জন্ত অভিমন্থ্যকে আমর! চন্দ্র সুষ্য মিশ্রিত একটা অপরূপ 
সামগ্রী বলিয়াই মনে করি। অভিমন্থ্যুবধের অভিমন্যু, আমাদের সেই 
মহাভারতের অভিমন্থ্য, সেই আমাদের অভিমন্যু- সেই কল্পনার আদর্শভূত 
অভিমন্যু। এই বঙ্গীয় নাটকখানিতে যেখানেই আমরা অভিমন্াকে 
পাইয়াছি-_কি উত্তরার সঙ্গে প্রেমালাপে, কি সুভদ্রার সঙ্গে ন্নেহ বিনিময়ে, 
কি সপ্তরথীর ছুর্ভেষ্চ ঝাহমধ্যে বীর-কার্ধ্য সাধনে, _সকল স্থানেই এই 
নাটকের অভিমন্থ্য প্রকৃত অভিমন্থ্যই হইয়াছে । বলিতে কি, মহাভারতের 
সকল বাক্তিগুলিই শ্রীযুক্ত গিরিশচন্ত্রের হস্তে কষ্টকর মৃত্যুতে, জীবন না 
ফুরাইলেও অপঘাত মৃত্যুতে প্রাণত্যাগ করে নাই। ব্যাসদেবের কথ! 
অনুসারে, যাহার যখন মৃত্যু আবশ্তক, গিরিশবাবু তাহাই করিয়াছেন । 
মাইকেল মহাশয় যেমন অকারণে লক্ষণকে অসময়ে মেঘনাদের সঙ্গে যুদ্ধে 
মারিয়াছেন, অর্থাৎ প্রত প্রস্তাবে লক্ষণের ধ্বংশ সাধন করিক়্াছেন, 
গিরিশ বাবু অভিমন্থ্যকে, কি অজ্জুনকে, কি ক্বষ্ণকে কোথাও সেরূপ হত্যা 
করেন নাই-_ইহ! তাহার বিশেষ গৌরব। তাহার আরও গৌরবের কথা 
বলিতে বাকী আছে। তাহার কল্পনার পরিচয় দিতে আমর! অত্যন্ত 
আনন্দলাভ করিতেছি। স্বপ্রদেবীর সঙ্গে রজনীর যে আলাপ আছে, তাহ। 
আমাদের অত্যন্ত গ্রীতিকর বোধ হইয়াছে, এবং রোহিণীও আমাদের প্রিয় 
সখী হইয়া! পড়িয়াছেন। ন্বপ্র ও তদীয় সঙ্গিনীগণের গানে আমরা মুগ্ধ 
হইয়াছি। তবে দোষ দেখাইয়! দেওয়। সমালোচকদের কর্তব্য ভাবিয়াই 


উনাত্রংশ পরিচ্ছেদ ২৪৩ 


বলিতে হইল যে নাটকের রাক্ষম-রাক্ষপীদের কথাগুলিতে বেণীসংহারের 
কথ! আমাদের মনে পড়ে। কিন্তু তাহ! মনে পড়িলেও আমরা এ কথা 
বলিতে সন্কুচিত হুইবন! যে শ্রীযুক্ত গিরিশচন্দ্র একজন প্রক্কৃত কবি__ 
একজন প্রক্কৃত ভাবুক।” 

ইহার উপর 'অভিমন্ধ্য বধ নাটক সন্বদ্ধে অধিক রেখা! নিশ্রয়োজন। 

“অভিমন্ত্ুবধ, বীররস প্রধান নাটক হওয়ায় “দীতার বনবাসের, স্তায় 
আবালবৃদ্ধবনিতার প্রিয় হয় নাই। মুচতুর প্রতাপটাদ জঙ্ছরী মহিলামহলে 
লব-কুশেব সমধিক আকর্ষণ বুঝিয়! গিরিশবাবুকে বলিলেন,-_-”বাবু যব 
দোসর] কিতাব লিখগে, তব ফিন্‌ ওহি ছুনো৷ লেড়ক। ছোড় দেও ।” জঙ্রী 
মহাশয়ের পুনঃ পুনঃ অন্থুযোগে গিরিশচন্দ্র পুনরায় লবকুশের অবতারণার 
জন্ত তৎপরে “লক্ষ্মণ বর্জন নাটক লিখেন। “অভিমন্থ্যু বধ নাটকখানি 
তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি রমেশচন্দ্র মিত্র মহাঁশয়কে উৎসর্গ করেন। 
যথ। £-- 

“পরম শ্রদ্ধাম্পদ অনারেবল্‌ 
জীযুক্ত রমেশচনতর মিত্র মহাশয় বহুমাননিধানেযু। 

যিনি স্বয়ং উৎকর্ষ লাভ ও মাতৃভূমির মুখোজ্জল করেন, তিনি সংসারে 
আদর্শ। মহোদয় আমাব ক্ষুদ্র উপহার গ্রহণ করুন; ভক্তির সহিত 
অর্পণ করিলাম। ইতি-_বিনয়াবনত শ্রগিরিশচন্ত্র ঘোষ। 

কলিকাতা; বাগবাজার, ১২৮৮ লাল । 

৪ কনক্ষমণ ্জম্ন 

১৭ই পৌষ ( ১২৮৮ সাল ) স্তাসান্তাল থিয়েটারে লেঙ্ষণবর্জন” প্রথম 
অভিনীত হয়। এক অক্কে সমাপ্ত এই দৃষ্ধকাব্যধানিতে গিরিশচন্দ্রের 
অপূর্ব্ব কবিত্ব এবং গভীর ভাবের পরিচয় পাওয়! যায়। রাম ও লক্ষণের 
চরিত্র তিনি নাটকে যেক্ধপ উচ্চভাবে আকিয়াছিলেন, অভিনয়েও সেইরূপ 


২৪৪ গিরিশচজ্ 


উজ্জবলভাবে ফুটাইয়াছিলেন | 'রাঁমচন্ত্র-বেশী গিরিশচন্দ্র এবং “লক্গণ-বেশী 
মহেন্দ্রলীল বসুর সজীব অভিনয়ে দর্শকমণ্ডলী আত্মবিশ্বৃত হইয়া বাইতেন। 
দৃশ্ত কাব্যখানি কিরূপ উচ্চভাবাপন্ন হইয়াছিল, নুপ্রসিদ্ধ "ভারতী মাসিক 
পত্রিকায় (১২৮৮ সাল, ফাল্গুন ) প্রকাশিত নিয়োদ্ধৃত সমালোচন! পাঠে 
তাহার কতকট৷ পরিচয় পাওয়। যায় । 

“লক্ষণ বর্জন বিষ্পটী অতি মহান্‌, কিন্তু তাহা দৃশ্তকাব্য রচনার 
উপযোগী কিনা সন্দেহ। লেখক বামচরিত্রের অর্থ, রামচরিত্রেব মন 
ইহাতে নিবিষ্ট করিয়াছেন। রামের সমস্ত কার্যা, সমস্ত বীরত্ব-কাহিনীকে 
তিনি হুইটী অক্ষবে পবিণত করিয়াছেন । সে ছুইটী অক্ষর-_প্রেম । এই 
পংক্ষেপ দৃশ্য কাবাখানিতে লেখক একটি মহান্‌ কাবোব বেখাপাত মাত্র 
করিয়াছেন । ইভাতে লক্ষণের মহত্থ অতি সুন্দর হইয়াছে । কবি যাহ! 
বলেন, তাহার মন্ত্র এই, যে, বীরত্ব নামকণ্গুণ স্বাবলম্বী গুপ নহে, উহা 
পরমুখাপেক্ষী গুণ। যেখানে বীবত্ব দেখা! যাইবে, সেইথানেই দেখিতে 
হইবে, সে বীরত্ব কাহাকে আশ্রয় কবিয়া! আছে, সে বীরত্বের বীরত্ব কি 
লইয়া। কে কত মান্থৃয খুন কবিয়াছে, তাহা লইয়। বীবত্ব বিচার কব! 
উচিত নহে, কাহাকে কিনে বাব কবিয়! তৃলিয়াছে, তাহাই লইক্স/ বীরত্বেব 
বিচার । কেহ বা আত্মরক্ষার জন্ত বীর, কেহ বা পরেব প্রাপরক্ষার জন্ত 
বীর। জননী সন্তান-ন্গেহের জন্তঠ বীর, দেশ-হিতৈষী স্বদেশ-প্রেমে বীর । 
তেমনি লক্গ্পণও বীর বলিয়াই বীর নহেন, তিনি বীর হইয়া! উঠিয়াছিলেন। 
কিনে তাহাকে বীর করি! তুলিয়াছিল? প্রেমে । রামের প্রেমে। 
অনেকে প্রেমকে হুদয়ের ছুর্বলতা বলেন, কিন্তু সেই প্রেমের বলেই লক্ষণ 
বীর। যখন দতোর অনুরোধে রাম লক্ষ্মণকে ত্যাগ করিলেন, তখন লক্ষ্মণ 
কহিলেন-_ | 

“সেবা দম পূর্ণ এতদিনে, 


উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৪৫ 


আত্ম-বিসর্জনে পুজা করি সম্পৃরণ ! 
ত্যাগ শিক্ষা মোরে শিখাইল। দন্বামন্ন, 
করি আপন! বঞ্চন 
৪ ০ % 
সেই প্রেম স্মরি, সেই প্রেমবলে 
জিনি অবহেলে পুরন্বরজয়ী অরি , 
পঙ্গু আমি লঙ্গিিনথ স্ুমের ! 
সেই প্রেম-বলে 
না টলিনু শক্তিশেল হেরি, 
উচ্চহদে পেতে নিন্ুু শেল। 
রাম-প্রেমে শেলে পাইন ত্রাণ !, 
রাম ও লক্ষণ-_হিংসা, দ্বণা, যশোলিগ্পা ব! ছরাকাজ্ষার বলে বীর 
নহেন, তাহাব৷ প্রেমের বলে বীর । তাহাদের বীরত্ব দর্বোচ্চশ্রেণীর বীরত্ব। 
এই মহান্‌ ভাব এই সংক্ষেপ দৃশ্তকাব্য খানির মধো নিহিত আছে।” 
গিবিশচন্দ্র এই নাটকখানি তাহার শ্রদ্ধেয় নুহৃদ “অমৃত বাজার 
পত্রিকা*-সম্পাদক পরম বৈষ্ঞব স্ব্াঞ়্ শিশিরকুমার ঘোষের নামে উৎসর্গ 
করিয়াছিলেন । যথা £-_ 
“যুক্ত বাবু শিশির কুমার ঘোষ মহাশয়েযু। 
হে বৈষ্ণব! রামচরিত্র .লিখিয়াছি; কির্নপ হইয়াছে অনুগ্রহপূর্ব্বক 
দেখুন। অন্ুগত-_শ্রীগিরিশচন্দ্র ঘোষ । 
কলিকাতা, বাগবাজার, মাঘ ১২৮৮ সারা ।” 
“লক্ষণ বর্জন, নাট্যামোর্দিগণের আনন্দ বর্ধন করায় গিরিশচঙ্জ 
তৎপরে বধাক্রমে “সীতার বিবাহ”, "রামের বনবাদ” এবং “সীতাহরণ 
লিখিয়! রামলীলা সম্পূর্ণ করেন। পাঠফগণের ধৈর্যযচ্যুতি এবং তৎনঙ্গে 


২৪৬ গিরিশচন্দ্র 


গ্রন্থের কলেবর অত্যন্ত বাড়িয়া যাইবার আশঙ্কায় আমরা সংক্ষেপে 
নাটকগুলির পরিচয় প্রদান কবিব। 


সীভ্ডাল্র ভ্রিন্বাহু 


২৮শে ফাল্গুন (১২৮৮ সাল) সীতাব বিবাহ, স্তাসান্তাল থিয়েটারে 
প্রথম অভিনীত হয়। প্রথম অভিনয় রজনীর অভিনেতৃগণ £-_. 

বিশ্বামিত্র- গিরিশচন্দ্র ঘোষ, জনক -_নীলমাঁধব চক্রবর্তী, রাম-_ 
অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় ( বেলবাবু ), লক্ষণ__প্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, 
রাবণ_-অঘোরনাথ পাঠক, পরশুরাম ও কালনেমী-_-অমৃতলাল মিত্র, 
জনকপত্বী-_ক্ষেত্রমণি, অহল্য।-_-কাদস্বিনী, সীতা-_ছোটবরাণী ইত্যাদি। 

গিরিশচন্দ্রের বিশ্বামিত্রেব ভূমিকাভিনয় হইতে আর্ত করিয়া! প্রত্যেক 
ভূমিকাই নুন্দররূপ অভিনীত হইয়াছিল। ধর্মাদাসবাবু জনকের রাজনভায় 
অভিনয় উপলক্ষে রঙ্জমঞ্চের উপর বঙ্গমঞ্চ নিম্মাণ করিয়া দর্শকমণ্ডলীর 
প্রীতি আকর্ষণ করিয়াছিলেন। রজমঞ্চের উপর রঙ্গমঞ্চ বঙ্জনাট্যশালায় 
এই প্রথম প্রদশিত হয়। কিন্তু এতৎসত্বেও "সীতার বিবাহ দর্শকমণ্ডলীর 
নিকট সেরূপ সমাদৃত হয় নাই । বোধ হয়__রাবণবধ, সীতার বনবাল ও 
লক্ষণ বর্জনেব অভিনয়ে রামচবিত্রের চরমোতকর্ষ দেখিয়া, রামের বাল্য- 
লীল! দর্শনে দর্শকের আর ততটা আগ্রহ জন্মে নাই। 


ল্রালেক্র নাল 
ইহার একমাস পরেই-_৩ব! বৈশাখ (১২৮৯ সাল) গ্থাসান্তাল 
থিয়েটারে গিরিশচন্দ্রের রামের বনবাস” নাটক প্রথম অভিনীত হয়। 
প্রথম অভিনয়-রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণের নাম 2-_ 
রাম-_মহেন্ত্রলাল বনু, লক্্ষণ_-বেলবাবু, কঞ্চুকী ও ভরত-_ 
নাট্যাচার্ধ্য শ্রীযুক্ত অমৃত লাল বনু, শত্রত্ব--রামতারণ সান্যাল, দশরথ-_- 


উনব্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৪৭ 


অমৃতলাল মিত্র, বশিষ্ঠ__নীলমাধব "চক্রবর্তী, গুহক-_অধোরনাথ পাঠক, 
কৈবেয়ী- শ্রীমতী বিনোদিনী, লীতা- _ভূষণকুমারী, মন্থরা-_ক্ষেত্রমণি, 
কৌশল্যা__কাদস্বিনী, গুহকপত্বী__গঙ্গামণি ইত্যাদি। 

“সীতার বিবাহ” সাধারণের সেরূপ শ্রীতি আকর্ষণ করিতে না পারিলেও 
গিরিশচন্দ্র ইহাতে রাম-চরিত্রের যে উন্মেষ দেখাইয়াছিলেন, তাহ “রামের 
বনবাঁস” এবং 'সীতাহরণে, দর্বাঙ্গীন বিকাশ লাভ করিয়াছিল। 

নাট্যসম্পদ এবং অভিনয়-গৌরবে “রামের বনবাস' নাটক দর্শকমণ্ুলীর 
নিকট বিশেষ সমাদৃত হইয়াছিল। দশরথ, কৈকেয়ী এবং মন্থ্রার 
ভূমিকাভিনয়ে অমৃতলাল মিত্র, শ্রীমতী বিনোদিনী এবং ক্ষেত্রমণি সর্ধ্বাপেক্ষা 
অধিক যশোলাভ করিয়াছিলেন। কঞ্চুকীর ভূমিকাটী ছোট হইলেও 
ভীমরথিগ্রস্ত বৃদ্ধের একটা লজীব ছবি দেখাইয়া নাট্যাচাধ্য শ্রীধুক্ত অমৃতলাল 
বন্ু মহাশয় সর্ব সাধারণের ধন্যবাদার্থ হইয়াছিলেন। 

বনবাসে গমনকালীন রামচন্দ্র গুহকের রাজ্যে উপস্থিত হইলে, গুহক ও 
চগ্ডঁলগণের সরলতা-মাথা উদ্ছ্বাসপূর্ণ__”হো॥ হো, হো, এলে! রামা৷ মিতে” 
-পজোর কাটি বাজা, আমার রাম। রাজা, রাম। আমার রে-_রাম! 
আমার!” প্রভৃতি গানের তুলন৷ হয় ন!। সীতার প্রতি গুহকপত্বীর একখানি 
গীত উদ্ধৃত করিবার লোভ সম্বরণ করিতে পারিলাম না। গীতটা এই £__ 

( সীতার প্রতি গুহক-পত্বী ) 
গুটি গুটি ফির্‌বে! বনে ছুণ্টী, 
লত৷ ছিড়ে তোর বীাধবে ঝুটি। 
তোর কাণে দোলাব লো ঝুম্‌কো ফুল, 
কত ডাকে বুল বুল,_ 
কোয়েল! দোয়েলা। মিঠি মিঠি। 
তোর কাছে বলি, বড় নেচে চলি, 


২৪৮ ,  শিরিশচন্ 


মিন্সেকে বলিনি,নতোরে ফুটি_ 
হেত৷ থাকৃনা মিতিনি, তোর পায়ে লুটি। 

চগ্ডাল-পত্বীর সারলা, সখ্যতা ও সহানুভূতি প্রকাশের কি সজীব 
ভাষা! 

রামের বনবাস+ নাটকথানি গিরিশচন্দ্র সাহিত্যরথী স্বর্গীয় অক্ষয়চন্্র 
সরকারের নামে উৎসর্গ করিয়াছিলেন । উৎসর্গ-পত্রটা নিয়ে উদ্ধৃত 
করিলাম £__ 

"্ভীযুক্ত বাবু অক্ষয়চন্ত্র সরকার বি, এল; 
“সাধারণী"-_সম্পাদক মহোদয়েযু 
নুহধর, এখানি কিরূপ হইয়াছে দেখুন। আমি যত্ব করিয়। লিখিয়াছি, 
আপনি যত্বে গ্রহণ করিলে- শ্রম সফল জ্ঞান করিব। ্রীতিপ্রয়াসী-_ 
শ্ীগিরিশচন্ত্র ঘোষ। কলিকাতা, বাগবাজার, ১২৮৯ সাল ।” 
সীভ্ড হল্রঞ্প 

৭ই শ্রাবণ (১২৮৯ সাল ) “সীতাহবণ নাটক স্তাসান্ভাল থিয়েটারে 
প্রথম অভিনীত হয়। প্রথম অভিনয়-রজনীর অভিনেতৃগণ £-_ 

রাবণ ও বালি--অমৃতলাল মিত্র, রাম-_মহেন্দ্রলাল বস্তু, লক্ষ্ণ__ 
বেলবাবু, স্থগ্রীব-_শ্রীধুক্ত অমৃতলাল বনু, ব্রহ্মা-_নীলমাধব চক্রবর্তী, 
সাগর-- শ্রীযুক্ত কাণিনাথ চট্টোপাধ্যায়, ইন্ত্র-_প্রবোধচন্দ্র ঘোষ ইন্দ্রজিৎ_ 
উপেন্দ্রনাথ মিত্র, খর ও হম্ুমান--অঘোরনাথ পাঠক, জান্ুবান-_গিরীন্্র- 
নাথ ভদ্র, মহাদদেব--গোঁপালচচ্্র মল্লিক, ব্যোমচর-_-রামতারণ সান্স্যাল ; 
ছর্গা, মায়! ও তারা-_কাদঘিনী ; উগ্রচণ্ড, হুর্পনখা ও চেড়ী- ক্ষেত্রমণি, 
সাগর-পত্বী-_ভূষণকুমারী, মন্দোদরী-_গঙ্গামণি। সরমা- শ্রীমতী বন- 
বিহারিণী, সীতা--শ্রীমতী বিনোদিনী ইত্যাদি। 

'ীত! হরণ নাটকে যেরূপ ঘটনা বৈচিত্র্য--গিরিশচন্দ্রের নাট্য-চাতৃধ্যও 


উনভ্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৪৯ 


ইহাতে সেইন্ষপ প্রস্ফুটিত হইবাছিন্কপ্ক্রমেই তীঁহাব ভাব, ভাবা ও 
নাটকীয় শক্তি উৎকর্ততা লাভ করিত্েছিল। “নীতা হরণের” প্রত্যেক 





বর্গীর অমৃতলাল মিত্র 
চরিজ্রই চমৎকার ফুটিয়াছে। অধিকস্ত “রাবণ চরিত্র অন্কনে গিরিশচন্ের 


সষ্টিকৌশলের বিশিষ্টরূপ পৰিচয় পাঁওয়! যায়। নুবিখাত অভিন্তো। 
অমৃতলাল মিত্র মহাশয় ইহাব অভিনয়ও অতি চমৎকাঁর করিয়াছিলেন। 


২৫০ গিরিশচন্দ্র 


বিস্তৃত সমালোচনার ভার সমালোচকগণের হস্তে অর্পণ করিয়া! কেবলমাত্র 
তাহাদের দৃষ্টি আকর্ষণের নিমিত্ত একখানি গান উদ্ধৃত করিলাম। 
সুগ্রীবের সভায় নর্ভকীগণ নৃত্য করিতেছে । বানর রাজার সভায় অবস্তই 
বানরীরা নাচিতেছে। গিরিশচন্দ্র বানরীদের প্রকৃতি অবিকল বজায় 
রাখিয়। গানথানি কিরূপ কৌশলে রচনা করিয়াছেন দেখুন £__ 


( সুগ্রীব-সভায় নর্তকীগণের গীত ) 


বনফুল মধুপান, 
বনে বনে কবি গান. 
মোরা, বনবিহঙ্গিনী লো! 
বনে বনে ভ্রমি, ফুলে ফুলে চুমি, 
মোরা, বনবিলাসিনী লে! | 
বনফুলহাবে বাধিলো৷ কবরী, 
বনফুল-হার হৃদয়ে ধবি, 
মোরা, বন-ফুল-হাব-অঙ্গিনী লো!। 


যগ্যপি কোন রাজকুমাবীব সথিগণ বন-ভ্রমণে আসিয়া এই গীতখানি 
গাহিতেন, বাহৃতঃ তাহ! কোনওরূপ অশোভন হুইত না। কিন্তু রসিক 
পাঠকগণ কিঞ্চিং মনোযোগ দিয় পড়িলেই বুঝিবেন, বাহিরেব গানের 
চাকচিকা থাকিলেও ভিতরে ভিতরে ঠিক বানরীর স্বভাব ফুটিয়! উঠিম্নাছে। 
অন্তত্র অশোকবনে চেড়ুগণের গীত-_প্ছ”টা সাধ রইল মনে, একটি যাব 
ঈশেন কোণে,» ইত্যাদি ঠিক রাক্ষসী-চরিব্রেরই পরিচায়ক । ইহাই 
গিরিশচন্দ্রের গীত-রচনার বৈশিষ্ট্য। সীতাকে লইয়া! রাবণের পুষ্পক 
রথারোহণে শূন্ত-পথে গমন-_-এই দৃশ্য দেখাইয়! ধর্মদাস বাবু বিশেষরূপ 
সুখ্যাতিলাভ করিয়াছিলেন । 


উনান্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৫১ 


€সঙক্মনাল স্লঞ্ আ্রজম্যাল্স স্তর 
এই সময়ে গ্রিরিশচন্ত্র “মেঘনাদ বধ” নাটক লিখিতে প্রবৃত্ত হইয়া- 
ছিলেন। তিনি বলিতেন, - “মাইকেল রাম চরিত্র ঠিক অস্কিত করেন 
নাই। পৌরাণিক নাটক লিখিবার সময় একবার “মেঘনাদ বধ নাটক 
লিখিবার কল্পনা করি ; লেখাও আরম্ভ করিয়াছিলাম। যথা £-_ 
রাবণ। রামরূপে কে এলে লঙ্কায়, 
কোন্‌ পুর্ব অরি পূর্ব ছঃখ ম্মরি 
পশি স্বর্ণগৃহে জালিল এ কালানল । 
কিন্তু কিম্নদংশ লিখিবার পর গুরুস্থানীয় মাইকেল মধুস্দনের সহিত 
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে হুইবে ভাবিয়া! উক্ত নাটক লেখার সংকল্প পরিত্যাগ 
করি ।” 


জ্রত্ত-ন্বিহণল্র 
'দীতার বিবাহ” লিখিবার পর স্তাসান্তাল থিয়েটারের জন্ত গিরিশচন্দ্র 
'ব্রজবিহার নামক একখানি গীতিনাট্য রচন! করিয়াছিলেন । চৈত্রমাসে 
( ১২৮৮ সাল) ইহার প্রথমাভিনয় হয়। ইহাতে কথা ছিল না, সমস্তই 
গান__গানে গানেই অভিনয় চলিত--এই জাতীয় গীতিণাট/কে “ইটালিয়ান 
অপেরা” বলে। '্রজবিহারের” গান গুলি অতি স্থন্দর। “আমার এ 
সাধের তরী প্রেমিক বিন! নেইনি কাবে”-_প্ধরম করম সকলি গেল জো, 
শ্যামা-পুজ। মম হ'ল ন1।” প্রভৃতি গীত বঙ্গবালী মাত্রেরই পরিচিত । 
০্ডাউ-মভ্ছত্ল 
২২শে আশ্বিন (১২৮৯ জাল) গিরিশচন্দ্র প্রণীত “ভোট-মঙ্গল* 
( বা সজীব পুত্লে। নাচ ) নামক একখানি সামক্লিক ব্যঙ্গ-নাট্য স্তাসান্তাল 
থিয়েটারে প্রথম অভিনীত হয়। বড়লাট লর্ড রিপনের শাসন সময়ে 


২৫২ গিরিশচন্জু 


কলিকাতা মিউনিলিপ্যালিটিতে গুথম স্থাক্ত্বশাদন-প্রথা। (1.০05] 961 
0৬615019501) প্রচলিত হয়। এই সময়ে কমিশনার নির্বাচনে, ভোট 
লইয়৷ হরে মহা! হ্ুরম্থুল পড়িয়। যায়; সেই সময় এই ব্যঙ্গ নাট্যখানি 
রচিত হইস়্াছিল। গিরিশচন্ত্র স্বয়ং "নাচওয়ালার* তুমিক! অভিনয় করিয়। 
সম্পূর্ণ নৃতন ঢংয়ে প্রহসনথানি আস্ঘোপাস্ত পরিচালিত করিতেন। বাহারা 
অভিনয় না দেখিয়াছেন, তাহার! পুস্তকখানি পাঠে সে রস ঠিক উপলব্ধি 
কবিতে পারিবেন না । 


হভ্িলন্ম-াভল। 


“মলিন-মালা” গীতিনাট্যথানিও 'ব্রজবিহারের, স্তায় “ইটালিয়ান অপেরার, 
অনুকরণে রচিত হয়। ১২ই কান্তিক ( ১২৮৯ সাল ) স্তাসান্তাল থিয়েটারে 
ইহা প্রথম অভিনীত হয়। স্থবিখ্যাত সঙ্গীতাচাধ্য রামতাবণ সান্যাল মহাশয় 
'লহর কুমারের” ভূমিকা গ্রহণে সুধাবর্যী সঙ্গীত-ধারায় দর্শকগণকে মুগ্ধ 
করিতেন। রামতারণ বাবু বঙ্গনাট্যশালার যুগগ্রবর্তক দঙ্গীতাচাধ্য ; 
কারণ-_পূর্বে সুপ্রসিদ্ধ মদনমোহন বর্মণ প্রভৃতি জঙ্গীতাচার্যাগণ মনোমত 
স্থুর বসাইবার জন্থ নাট্যকারগণকে পুরাতন গানের আদর্শ দিতেন, তাহারা 
সেই গানের কথাগুলি মাত্র বদলাইয়! দ্িতেন। গিরিশচন্দ্রকেও প্রথমে 
এইরূপ নমুনা পাইয়া! তবে গান বাধিতে হইত। কিন্তু ইহাতে নাট্যকার- 
গণের স্বাধীনত। বড়ই ক্ষু্ন হইত। রামতাবণ বাবুই গিরিশচন্দ্র কর্তৃক 
অনুপ্রাণিত হুইয়! তাহাকে বলেন,__"মহাশয়, আপনি ইচ্ছামত গান বাধিয়। 
যান, আমি পরে আপনার গানেব ভাব ও রসাম্ুষায়ী স্থর সংযোজন 
করিব।” এই নূতন পদ্ধতি প্রবর্তনই রামতাঁরণ বাবুর অক্ষয় কীর্তি। 
স্তাসান্তাল থিয়েটারে অভিনীত গিরিশচন্দ্রের সমস্ত নাটকাদিতেই রামভারণ 
বাবু স্থুর সণ্যোজনা! করিয়। অদ্ভূত কৃতিত্ব প্রদর্শন করিয়াছিলেন । 


উনভ্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৫৩ 


“মবিন মালা? গীতিনাটযখানি গিরিশচঙ্্র রামতারণ বাবুকে উপহার প্রদান 
কবেন। উৎসর্গ-পত্রে লিখিয়াছিলেন £-_ 





্বর্গায় রামতারণ সার্যাল 


“ব্রাহ্মণ !--তোমার অন্ুকম্পায় আমার পুস্তকগুলি উজ্জল হহয়াছে। 
এখাদির তুমিই অধিকারী, তোমার চরণে উপহার রাখিলাম। 
সেবক শ্রীগিরিশচন্দ্র ঘোষ |» 


গানগুলি সুন্দর গীত হইলেও 'মলিন মালা, দর্শকমগ্লীর মনঃপুত 


২৫৪ গিরিশচন্দ্র 


হয় নাই। রচনা-চাতুধ্যের নমুন! হ্বরূপ আমর! একখানি গীতের কিরদংশ 
উদ্ধত করিলাম । পোত হইতে নামিয়া সাগরকুলে আসিয়। নাবিকগণ 
গাহিতেছে £-_ 

“হৈ হৈ হৈ-__জমী দোলেন৷ চল্‌তে ঘুরি ! 

হেথা বালি ভারি, চল। কারিকুরি |” ইত্যাদি। 

হেলিয়া ছুলিয়া জাহাজ চলে _নাবিকগণ সেইরূপ ভাবে চলিতে 

অভ্যন্ত। বেলাতৃমিতে আসিয়৷ তাহারা সেইরূপ হেলিয়া ছুলিয়৷ চলিতে 
গি্৷ ঘুরিয়৷ পড়িতে লাগিল। কারণ" জমীতো৷ আর ছুলিতেছে না । 
এই নুক্ষ দু্টিই__রচগ্রিতার কৃতিত্বের পরিচায়ক | 


গশাগ্ডব্বেক্র ভতভ্তাজ্ড নাস 


রামায়ণ ছাড়িয়! গিবিশচন্দ্র পুনরায় মহাভারত ধরিলেন। মহাভারত 
হুইতে নির্বাচিত তাহার দ্বিতীয় নাটক “পাওবের অজ্ঞাতবাস। 

১ল! মাধ ( ১২৮৯ সাল ) স্াসান্তাল থিয়েটারে “পাওবের অজ্ঞাতবান' 
প্রথমাভিনয় হয়। প্রথম অভিনয়-বজনীর অভিনেতৃগণের নাম £-_ 

কীচক ও দুর্য্যোধন___গিরিশচন্ত্র ঘোষ, অর্জুন ( বৃহন্নল। )-__মহেন্দ্রলাল 
বনু, ভীম, ভীম্ম ও জনৈক ব্রাঙ্ণ_অমৃতলাল মিত্র, গ্রীক ও 
দ্রোণাচাধ্য-_কেদারনাথ চৌধুরী, বিরাট-_অতুলচন্ত্র মিত্র ( বেডৌল ), 
যুধিষ্ঠির-শ্রীযুক্ত উপেন্ত্রনাথ মিত্র, নকুল-_বিহারীলাল বস্থ (জেঠা), 
সহদেব- শ্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, উত্তর-_অমৃতলাল মুখো! (বেলবাবুঠ 
রুপাচার্য--নীলমাধব চক্রবর্তী, গোপ-_জীবনকৃষ্ণ সেন, অভিমন্থ্য-_ 
শ্রীমতী বনবিহারিণী, দ্রৌপদী-_ শ্রীমতী বিনোদিনী, সুদেঞ্চা__কাদগ্িনী, 
উত্তরা-_ভূষণকুমারী, হাড়িনী- ক্ষেত্রমণি ইত্যাদি-_ 

এই নাটকখানি রচনায় গিরিশচন্দ্র যেরূপ ক্কৃতিত্বের পরিচয় 


উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৫৫ 


দিয়াছিবেন,_-অভিনয়ও সেইরূপ আবালবুদ্ধবনিতার হৃদয়স্পর্শী 
হইয়াছিল। মহধি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন-বিরচিত মহাভারতের চরিত্রগুলি তাহার : 
তুলিকাম্পর্শে যেন জীবন্ত হইয়া! উঠিয়াছিল। নাটকথানি নাতিদীর্ঘ 
হইলেও অভিনেতৃগণ নাটকীয় চরিত্রাভিনয়ে নিজ নিজ কৃতিত্ব দেখাইবার 
যথেষ্ট স্বযোগ পাইয়াছিলেন। যেমন অর্জুন তেমনই ভীম-_তেমনই 
কীচক--তেমনই ভ্রৌপদী। এই নাটকের অভিনয়ে অভিনেতাগণের 
মধ্যে প্রতিযোগিতার ভাব এমনই পরিস্ফুট হুইয়৷ উঠিত, যে দর্শকগণের 
মধ্যে একটা উন্মাদনার নশ্লোত বহিয়! যাইত। অজ্ঞুন--মহেন্দ্রলাল বস্থ, 
তাহার-_ 

“বার বার দ্রৌপদীর অপমান-_ 

সম্মুথে আমার! 

বনবাস, পরবাস, 

লুক্কাক্সিত ক্লীববেশে,_ 

ভগবান] কিম্বধিক আর? 

হৃদয়ে অনল যত, 

শরানল প্রজলিত তত 

করিব সমর-্থলে ; 

খাগুডব-দাহনে হেন অগ্নি না জন্মিল ! 

দেখিব দেখিব-_অন্ষয় তৃণীর দ্বয় 

কত শর করিবে প্রসব 

সব্যসাচী করে মোর, 

বুঝিব- বুঝিব গাগ্ীবের কত বল।* 
ইত্যাদি বীররসাআ্মক অপূর্ব অভিনয-নৈপুণ্যে দর্শকগণকে মোহিত 
করিলেন।-_পরবন্তী দৃস্তে ভীমের আবির্ভাব, দর্শকগণ মনে করিতেছেন, 


২৫৬ গিরিশচন্দ্র 


মহেন্ত্বাবুর পর আসর জমান সহজ হইবে না, _কিস্তু ভীম অমৃতলাল 
মিত্র 

“কোথ। তৃণ্ডি--কীচকের একমাত্র প্রাণ! 

ছার স্থতের নন্দন, 

পদ্দাঘাতে পদাঘাত কিবা হবে শোধ! 

মৃত্যু দেখি দয়াশীল যুধিষ্ঠির হ'তে । 

ক্ষুদ্র বক্ষ ধরে ছুঃশাসন,- 

বিদারি শোণিত-তৃষ! কি মিটিবে মোর ! 

দুধ্যোধন, হুতাশন হুতাশন জ্বলে * 
ইত্যাদি এমন ভাবে অভিনয় কবিলেন যে দর্শক পু্ব্ব দৃশ্তের চিত্র একে- 
বারে ভুলিয়া গেলেন। তাহার পর কীচক-লাঞ্ছিতা দ্রৌপদীর বন্ধন- 
শালায় প্রবেশ । দর্শক ভাবিতেছেন-_ইহার উপব সুর চড়ে কি করিয়া ! 
কিন্তু দ্রৌপদী যখন সতীব তেজ ও অভিমানের ঝঞ্কারে কহিলেন £__ 

“্ধিক্‌ ধিক্‌ বীরাঙ্গন। বলি মনে করি অভিমান। 

তিন দিন যদি কয়ে যায়, 

কীচক ন৷ হাবায় পবাণ, 

তগবান্‌, আত্মহত্যা না ডবিব__ 

পাসরিব ছুঃশাসনে__ 

বেণী না বীধিয়া, 

জলে তন্থু দিব বিসর্জন । 

নিদ্রিত, কি শুইয়াছ মহানিত্রা+কোলে--_ 

উঠ উঠ স্থপকার !” ইত্যাদি-_ 
দর্শকগণ ত্তত্তিত হইয়া যাইলেন-_তীহাদের যেন শ্বামরোধ হইয়া আলিতে 
লাগিল। তাহার পর-দৃশ্তেই উপবনে কীচক-_ 


উনাব্রংশ পরিচ্ছেদ ৯৪৭ 


“প্রভাত-সমীরে শীতল ন। হদ্ব প্রাণ, 

জলে--দেহ জলে, 

উষ্ণ ভালে না পরশে বায়ু, 

উষ্ণ ওঠ সলিলে সয়স মাহি হয়!» ইত্যাদি 
গিরিশচন্তর সম্পূর্ণ বিভিন্ন রসের অবতারণা করিয়া কীচকের যে মুক্তি দর্শকের 
সন্মুথে ধরিলেন, সে মুর্তি দেখিয়। দর্শক বিল্বয়ে নির্বাক হুইয়! গেলেন। 





স্বর্গীয় অমৃতলাল মুখোপাধ্যায় 


(বেলবাবু বা কাণ্তেন বেল) 
বেলবাবুর উত্তব, কেদার বাবুর শ্রীরুষ্*__তাহারই বা তুলনা কোথায়? 
যুধিষ্ঠির, ভীম্ম, দ্রোণ, কর্ণ, ব্রাহ্মণ প্রভৃতির ভূমিকাগুলি ক্ষুদ্র হইলেও যেন 


১৭ 


২৫৮ গিরিশচন্দ্র 


সজীব_ কোন ভূমিকাই উপেক্ষণীক্ন হয় নাই। বু প্রতিড়ার একত্র 
সমাবেশ এবং পরস্পরকে পরাজিত করিবার একটা তীব্র প্রতিযোগীতায় 
তখনকার অনেক নাটকই এমনি ভাবে দর্শকের মনে একটা স্থায়ী ছাপ 
দিয়! দিত, যাহা দর্শক সহজে ভূলিতে পারিত না । এ সময়ের অভিনয়-_ 
অভিনয়ের একট। [০9172076100 বলিলেও অতুক্তি হয় ন। 
“সাশ্বজী কক? অভ্ডন্স্্ 

প্রতাপটচাদ বাবুব থিয়েটারে "পাওবেব অজ্ঞাতবাস*ই গিরিশচন্দ্রেব শেষ 
নাটক । ইহাব পূর্বে শ্বর্গীয় রমেশচন্ত্র দত্ত মহাশয়েব “মাধবী কক্কণঃ 
উপন্তাসথানি তিনি নাটকাকাবে পবিবন্তিত করেন। গ্াসান্তাল থিয়েটাবে 
ইহা অভিনীত হইয়াছিল। নাটকাস্তর্গত সাজাহান, দর্জি, মুদ্দফরাস 
( £1৮-01858) প্রভৃতি সাতটা ছোট বিভিন্ন প্রকাব চবিভ্রেব 
তুমিকাভিনয়ে-_সাত রকম ছবি দেখাইয়া গিরিশচন্দ্র অভিনেতাগণকে 
বুঝাইয়৷ দিয়াছিলেন যে- শক্তি বা প্রতিভা থাকিলে অভিনয়-চাতুর্্যগুণে 
ক্ষুদ্র ভূমিকারও প্রাণপ্রতিষ্ঠ। কবিয়। দর্শকসাধারণকে মুগ্ধ করিতে পাব 
যায়। বল! বাহুল্য__এই সময়ে নাটকেব বড় পার্ট লইয়! প্রধান 
অভিনেতাগণের মধো বেসারেসিব ভাব দেখ! দিয়াছিল। 

গিল্ল্িশশচতেক্রল্র লুম্মা-স্বন্ভি 

ন্তাসান্তাল থিয়াটাবে গিবিশচন্দ্র ছুই বৎনব অধ্যক্ষতা করিয়াছিলেন । 
ইহাব মধ্যে তিনি নয়থানি নাটক এবং ছয়থানি গীতিনাট্যাদি লিখিয়াছিলেন। 
প্রায় হ্ুই মাস অন্তব তাহার নূতন নাটক অভিনীত হইত । সান্ন্যাল- 
ভবনন্থ স্টাসান্তাল থিয়েটার বা৷ গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটারে কোনও নাটক 
ধারাবাহিকরূপে ছই তিন সপ্তাহের অধিক অভিনীত হইত না। ইহাব 
কারণ--.সে সময়ে থিয়েটারের দর্শক সংখ্যা সীমাবদ্ধ ছিল-_বর্থমান কালের 
ন্তায় আপামর লাধারণ পর়স! খরচ করিয়! থিয়েটার দেখিত না । যে সকল 


উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৫৯ 


নাট্যামোদী সে সময়ে টিকিট কিনিয়! থিয়েটার দেখিতেন-_নূতন নাটক 
দই তিন সপ্তাহ অভিনীত হইলেই, তাহাদের নিকট তাহা পুরাতন হ্ইয়। 
াইত--আবার তাহার! নূতন নাটকের প্রতীক্ষা করিতেন। বঙ্কিমচন্ত্ 
টহ্থার্দিগকেই রহুম্ত করিয়া “ঙ্গদর্শনে”__“বাবু, প্রবন্ধে লিখিয়াছিলেন,__ 
প্াসান্যাল থিয়েটার ধাহাদের তীর্থ-_তাহারাই বাবু ।” 

যাহাই হউক প্রতাপষাদ জদ্ছরীর সময়ে গিবিশচন্দ্রের সরল ভাষায় 
বচিত পৌরাণিক নাটকগুলি একেই স্ুন্দররূপ অভিনীত হইত, তাহার 
উপব উৎকৃষ্ট পোষাক-পরিচ্ছদ এবং দৃশ্তপটের সুযশ বিস্ৃত হুইয়। 
পড়ায়, পুরুষ ও স্ত্রী দর্শকের সংখ্যা অনেকট! বাড়িয়া গিয়াছিল। এ নিমিত্ত 
পর্বপ্রথ। পরিবর্তিত হইয়া ছুই সপ্তাহেব স্থলে গিবিশচন্ত্রের নৃতন নাটকের 
উপধূর্ণপরি প্রায় ছুই মাস ধবিয়। অভিনয় চলিত। ন্তাসান্তালে সে সময়ে ইহ! 
একটা গৌরবের কথ! ছিল। 

কৌতুহলী পাঠক ভিজ্ঞাসা করিতে পারেন,--গিবিশচন্দ্র ছুই মাস 
অন্তর কিরূপে নৃতন নাটক লিখিয়। এবং তাহার শিক্ষাদান করিয়া অভিনয় 
ঘোষণ! করিতেন ? প্রথমে আমাদেরও এইরূপ আশ্চর্য্য বোধ হইত, কিন্ত 
তাহার সংশ্রবে আসিয়া! এবং তঁহাব দ্রুত রচনা-শক্তির পরিচয় পাইয়া 
বুঝিয়াছিলাম-__-ইহ। তাহার ঈশ্বরদত্ত ক্ষমতা । 

তাহার গ্রস্থ-রচনার বৈশিষ্ট্য ছিল। তিনি স্বহন্তে পুস্তক লিখিতে 
অভ্যস্থ ছিলেন না। তিনি মুখে মুখে বলিয়। যাইতেন এবং অপরে লিখিতে 
থাকিতেন'। নাট্যাচার্্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন, কেদারনাথ চৌধুরী, 
অমৃতলাল মিত্র, 'মহিল! কাব্য-প্রণেত। স্ুরেন্্র বাবুর ভ্রাতা দেবেন্দ্রনাথ 
মভুমদার, গিরিশচন্দ্রের পরমাত্মীয় এবং পরম ক্নেহাম্পদ শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ 
বন্থ প্রভৃতি মহাশয়েব! তাহার পুস্তকলিখন-কার্য্ে ব্রতী ছিলেন। তাহার 
জীবনের শেষ পনের বদর আমি তাহার সংঅবে আমির! প্রায় 


২৬৬ গিরিশচন্ত 


নিত্যসহচররূপে অতিবাহিত করিয়াছি । এই পনের বৎসয়ের মধ্যে যান 
কিছু তিনি রচন! করিয়াছেন, আমাকেই তাহা লিখিতে হইয়াছে । 
মাট্যাচাধ্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্ু মহাশয়ের মুখে শুনিয়াছি,_ন্তাসান্তাল ও 
ষ্টার থিয়েটারের অভিনীত নাটকগুলি রচনাকালে গিরিশচন্দ্র কখনও বলিয়া, 
কখনও বেড়াইতে বেড়াইতে এত ক্রুত বলিয়া! যাইগেন, যে, কলমে কালি 
ভুলিয়া লইবাব অবকাশ হইত না) এ নিমিত্ত তিন চারিটি পেন্সিরা কাটিয়া 
পইয়। তাহার সহিত লিখিতে হইত। গিরিশচন্ত্র ভাবে বিভোর হইয়া 
বলিয়া যাইতেন, লেখার দিকে একেবাবেই লক্ষ্য থাকিত না। প্রথম 
প্রথম আমি তীাহাব সহিত লিখিবার সময় মধ্যে মধ্যে অনুনরণ করিতে ন৷ 
পারিয়া “কি ? বলিয়। পুনরুল্লেখ কবিতে অনুরোধ করিতাম । গিরিশচন্দ্র 
ভাব-ভঙ্গে বিরক্ত হইয়া! বলিতেন--প্কি ক্ষতি করিলে জানো? যাহা 
বলিয়াছি, তাহা তে৷ মনেই নাই, আব যাহা বলিতে যাইতেছিলাম, তাহাও- 
গোলমাল হইয়া গেল। যে স্থান লিখিতে না৷ পারিবে, ছুইটী তারা 
(551) চিহ্ন অঙ্কিত করিয়া, তাহার পর লিখিক্স! যাইবে, পরে আমি সেই 
পরিত্যক্ত অংশ পৃবণ করিয়! দিব। যাহা বলিগ্নাছি, তাহা! ঠিকটি আর 
তেমন বাহির ন! হইলেও একট! লাভ এই হুইবে, যাহা! বলিতে যাইতে- 


ছিলাম, সেট। ঠিক থাকিবে ।” 
ন্তাসান্তাল থিয়েটাবে অভিনীত পৌরাণিক নাটকগুলির এক একখানি 


লিখিতে গ্রিরিশচন্ত্রের এক সপ্তাহের অধিক সময় লাগিত না। গিরিশচন্্র 
একাধারে নট ও নাট্যকার ছিলেন। নাটক লিখিবার কালে অনেক সময়ে 
্রত্যক্গ করিয়াছি, তিনি নাট্যোক্ত পান্র-পাত্রীর উক্তি-প্রত্যুক্তি অভিনয়- 
ভঙ্জিতেই বলিয়া যাইতেন। এই নিমিত্তই তাহার নাটক অভিনয় করিতে 
আভিনেতা ও অভিনেত্রীগণের বিশেষ স্থৃবিধা হইত। কেহ কেহ বলিয়া 
থাকেন, এরূপ দ্রুত রচনার জন্তই তাহার ভাষা অনেক স্থলেই সালঙ্করা, 


উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৬১ 


হইবার স্থুযোগ পায় নাই, এবং এই কারণে তাহার নাটকে উপমার, বাছুল্য 
দেখা যায় না। কিন্তু গিরিশচন্দ্র বলিতেন,_প্ঘাত-প্রতিঘাতই নাটকের 
জীবন, _-শবখালঙ্কারে তাহাকে অযথ! ভূষিত করিতে যাইলে অস্বাভাবিক 
এবং কৃত্রিমতাপূর্ণ হইয়! পড়ে। নাটকের ভাষা যত প্রাঞ্জল হইবে, অভিনয়ও 
সেইরূপ সাফল্যমপ্ডিত হইবে । আমি যেখানে সহজ কথায় ঠিক মনোভাব 
পরিস্ফুট হইতেছে ন! বুঝিয়াছি__সেই স্থানে মাত্র উপম! ব্যবহার করিয়াছি 3 
নচেৎ অযথা উপম! কিস্বা অলঙ্কারের ছটায় ভাবকে ভারাক্রান্ত করিতে 
প্রবৃত্ত হই নাই । নাটকের ভাষ! সরল এবং স্বাভাবিক হইলে উচ্চশিক্ষিত 
হইতে অল্পশিক্ষিত পর্্যস্ত সকলেই সমভাবে উপভোগ করিয়। থাকে । 
ভাঙ্গ৷ অমিত্রাক্ষর ছন্দও-_এই উদ্দেস্ত্েই প্রবপ্তন করিয়াছিলাম ।” 


ম্াভ্যক্কান্ল্র গিল্ডিস্পভভ্দ্র 

প্রতাপটাদ বাবুর সত্বাধিকাবিত্বে বঙ্গ-নাট্যশালা একটী প্রকৃত 
ব্যবসায়েব ক্ষেত্র হইয়! দাড়ায় । গ্রেট স্তাসান্তাল থিয়েটারের বিশৃঙ্খলতা৷ 
এখানে ছিল না। এই থিয়েটার হইতেই গিরিশচন্দ্রের মানেজার-জীৰন 
আরম্ত। তাহার অধ্যক্ষতায় থিয়েটাব ঠিকমত বিধি-নিষেধ মান্ত করিয়! 
এই সময় হইতেই সুশৃঙ্খলায় পরিচালিত হইতে আরম্ত হয়। গিরিশচন্দ্র 
পুর্বে একজন উৎকৃষ্ট অভিনেত! বলিয়াই সাধারণের নিকট পরিচিত 
ছিলেন- স্তাসান্তাল থিয়েটার হইতেই তিনি নট, নাট্যকার ও নাট্যাচার্যয 
বালয়া দেশবাসীগণের নিকট সমাদৃত হন। ভাল নাটকের নিমিত্ত তিনি 
পুর্বে পুরস্কার ঘোষণা করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন,_বীণাপাগি বাগ্দেবী 
কিন্তু তীহার অধ্যবসায়ের পুরস্কার স্বরূপ তাহাকেই বঙ্গ-রঙ্গালয়ের 
নাট্যকার-পদে গ্রতিষিত করেন। 

থিয়েটারের এই সময়ের অবস্থ। বর্ণনা! করিয়। স্থপ্রসিদ্ধ নাট্যকার 
শীযুক্ত অপরেশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রূপ ও রঙ্গ” নামক সাপ্তাহিক পত্রে 


২৬২ গিরিশচন্দ্র 


“রঙ্ালয়ে ত্রিশ বৎসর” প্রবন্ধে যাহা লিখিয়াছিলেন, তাহার কিয়দংশ উদ্ধৃত 
করিয়৷ বর্তমান পরিচ্ছেদ সমাপ্ত করিলাম ।-_- 

পক ৬ ** এতদিন থিয়েটার নাটকের জন্য পরমুখাপেক্ষী ছিল।' 
পরদত্ত অনুগ্রহে পুষ্ট তাহাব ক্ষীণকায় ঠিক পায়েব উপর ভগ দিয়! দাড়াইতে 
পারিতেছিল না। আজ দীনবন্ধুব নাটক, কাল বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্তাস 
নাটকাকারে অভিনীত হইয়৷ কায়ক্লেশে যেন থিয়েটারের মর্যাদা রাখিতে 
ছিল। তাব পর দ্ুভিক্ষেব সময়ে যেমন অন্নেব বিচাব থাকে না, লোকে 
কদন্ন আহার কবে, তেমনি যার তার ছাই পাঁশ বাবিশ নাটক অভিনয়েব 
চাপে রঙ্গমঞ্চ প্রাণশুন্ত হইয়া পড়িতে লাগিল। নাট্যবাণীর ববপুক্ 
গিরিশচন্দ্র ইহার সেই মুতকল্প দেহে জীবন সঞ্চাৰব করিলেন। তাহার 
সময় হইতেই লোকে বুঝিল, কেবলমাত্র অভিনয়-প্রতিভ। লইয়া জন্মাইলেই 
নাট্যশালার সর্ববালীন শ্রীবৃদ্ধি কবিতে পাবা যায় না। নাট্যবাণীব পুজার 
প্রধান উপকরণ- ইহার প্রাণ-_ইহাব অন্ন__-নাটক | গিবিশচন্দ্র এ দেশের 
নাট্যশালার প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন মানে-_তিনি অন্ন দিয়! ইহার প্রাণরক্ষা 
করিয়াছিলেন, ববাবব স্বাস্থাকব আহাব দিয়া ইহাকে পবিপুষ্ট 
কবিয়াছিলেন ; ইহার মজ্জায় মজ্জায় বস সঞ্চাব করিয়া ইহাকে আনন্দপুর্ণ 
করিয়। তুলিয়াছিলেন; আব এই জন্তই গিবিশচন্দ্র £৪81)67 ০1 006 
911৮০ 509৪০. ইহার খুড়া, জ্যাঠা আব কেহ কোন দিন ছিল ন!। 
ইহ! এক প্রকার অভিভাববশৃন্ত বেওয়ারিশ অবস্থায় টলিতেছিল, পড়িতে- 
ছিল, ধূলায় গড়াইতেছিল। যে অমুত পানে বাঙ্গলায় নাট্যশাল। এই পঞ্চাশ 
বৎসরাধিক বীচিয়া আছে, প্ররুতপক্ষে সে অমুতের ভাগ বহন করিয়া 
আনিয়াছিলেন গিরিশচন্দ্র । কাজেই বাঙ্গল! নাট্যশালার পিতৃত্বের গৌরবের 
'্রপিকাবী এক গিবিশচন্ত্র 1” (রূপ ও রঙ্গ, ১৬ই শ্রাবণ, ১৩৩২ সাল ।), 


ত্রিংশ পরিচ্ছেদ 
এরল্ভ-ভলীন্নেল্র দ্িভীন্ান্ছা 1 


অষ্টাদশ পরিচ্ছেদে গিবিশচন্দ্রেব নাস্তিক-অবস্থাব কথা বণিত হইয়াছে । 
সে সময়ে তাহার দেহে তস্তাব বল, বিস্তাবুদ্ধির অভিমানে কিছুই দৃক্পাত 
করিতেন ন৷। নান্তিকতাব সম্্বনকাবী অধিকাংশ গ্রস্থই তিনি এই 
সময়ে অধ্যয়ন কবিতেন এবং বেশ ডাকহাক্‌ করিয়া বলিতেন-_“ঈশ্বর 
নাই ।” কিন্তু চিরদিন সমান যায় না। সংসারে রোগ, শোক, ছুদ্দিন, 
দুর্ঘটনা, ছুর্জনের গীড়ন আছেই। 

দ্বিতীয়বাব দাব পবিগ্রহের প্রায় ছয় মাস পরে গিরিশচন্দ্র বিস্চিকা 
গীড়ায় আক্রান্ত হইলেন। বোগ অবশন্ত জড়-নিয়মের অধীন, কিন্তু 
আরোগ্যঙ্লাভ কবিলেন--অলৌকি করূপে । আবার আশ্চর্য্য এই যে, জড়েব 
নিয়ম যেমন প্রত্যক্ষ, যে আলীকিক উপায়ে জীবন রক্ষা হইয়াছে, 
গিরিশচন্দ্রের কাছে তাহাও তেম্‌্নি প্রত্যক্ষ। চিকিৎসকগণ জীবনের 
আশ ছাড়িয়৷ দিয়াছেন.-_আত্মীয়স্বজন রুদ্ধকণ্ঠে মৃত্যুর অপেক্ষা করিতে 
ছিলেন। এমন সময়ে গিরিশচন্ত্র দেখিলেন- তাহার স্বর্গগতা জননী 
আসিয়া! তাহার মুখে কি বস্ত দিয়া বলিলেন--“এই মহাপ্রসাদ খাও, তুমি 
ভাল হইয়াছ, ভয় নাই।” এতটুকু পধ্যন্ত স্বপ্ন হইতে পারে, কিন্তু যখন 
পুর্ণ চেতন! হইল, ইন্দ্রি়গণ যখন নিজ নিজ কাধ্য করিতে লাগিল, 
গিরিশচন্দ্রের রলনায় সেই মাতৃদত্ত মহাপ্রসাদের আস্বাদ তখনও অনুভূত 
হইতেছে । এ কি ?__গিরিশচন্দ্রের মনে একটু চমক লাগিল। এই ঘটনার 
পর হইতেই তাহার আধ্যাত্মিক জীবনের নূতন অধ্যায় আরম্ভ হইল। 


২৬৪ গিরিশচন্দ্র 


বিস্থচিকা হইতে আরোগ্যলাভ করিবার পর নানা কারণে তিনি নান। 
বিপদে পতিত হৃইয়াছিলেন, সে কথ! তাহার নিজের কথায় বলি,_- 
প্বদ্ধুবান্ধবহীন, চারিদিকে বিপজ্জাল, দৃঢ়পণ এক্র সর্বনাশের চেষ্টা 
করিতেছে; এবং আমারই কার্য্য তাহাদের সম্পূর্ণ সুযোগ প্রদান করিয়াছে। 
উপায়াস্তর ন! দেখিয়। ভাবিলাম, ঈশ্বব কি আছেন? তাহাকে ডাকিলে 
কি উপায় হয়? মনে মনে প্রার্থনা কবিপাম যে, হে ঈশ্বব, যদি থাক, এ 
অকুলে কুল দাও। গীতায় ভগবান বলিয়াছেন, কেহ কেহ আর্ত হইয়। 
আমায়! ডাকে, তাহাকেও আমি আশ্রয় দিই। দেখিলাম গীতার কথা 
সম্পূর্ণ সত্য । ্ুর্যোদয়ে অন্ধকাব যেরূপ দূর হয়, অচিবে আশা-হুরধ্য উদয় 
হইয়। হৃদয়ের অদ্ধকার দূর করিল, বিপদ-সাগরে কুল পাইলাম ।” কিন্ত 
তবু মনের সন্দেহ যায় না। মনেব এই সন্দেহাকুল জবস্থা গিরিশচন্দ্র 
তাহাব কোন কোন নাটকে বর্ণনা করিয়াছেন। ঘথাঃ__ 


*সোমগিরি। এ সংসার সন্দেহ-আগার, 
বিভূ নহে ইন্দ্রিয় গোচব। 


ঈশ্বব লহয়। 

তর্কযুক্তি কবে অনুমান । 

বত কবেস্থির, 

সন্দেহ-তিমির ততই আচ্ছন্ন কবে।” 

বিন্বমঙ্গল। ৩য় অঙ্ক, ওম গর্ভাঙ্ক। 
ক্রমে এই সংশয়-সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় জীবন ধারণ কর! তাহার পক্ষে এক 

প্রকার অসম্ভব হুইয়৷ উঠিল । আপনার অবস্থাব কথ! ভাবিতে ভাবিতে 
তাহার যেন শ্বাসরুদ্ধ হইয়া! আলিত। যাহাকেই জিজ্ঞাসা করেন, তিনিই 
রলেন-_গুরূপদেশ ভিন্ন সন্দেহ দূর হইবে না। কিন্তু গিরিশচক্রের মন 
বলিল--“গুরু কে? শাস্ত্রে বলে--গুরুবন্ধা গুরুর্বিষু। গুরুর্দেব 


ব্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৬৫ 


মহেশ্বরঃ মান্থষকে কেমন করিয়। এ কথা বলিব ? মনের মাৎসর্ধা কি সহজে 
যায়? গিরিশচন্দ্রের “চৈতন্তলীলায় মাৎর্ধ্য বলিতেছে ২ 
“যদি মাতা কর গে! প্রতায়, 
এক। আমি করি সমুদয় ) 
অতি হীন শ্রেষ্ঠ ভাবে আপনায় ; 
কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ পবাজয় 
বুদ্ধিবলে অনায়াসে হয়, 
সেই বুদ্ধি কিন্কর আমার; 
বুদ্ধি তারে বলে, 
ভূমগুলে ধার্মিক স্থুজন সেই। 
গুরু কেবা, কিব! উপদেশ দিবে ?” 
চৈতন্তণীলা । ১ম অস্ক, ১ম গর্ভাঙ্ক। 
তবে কি আমার কোন উপায় হইবে না? গিরিশচন্দ্র ভাবিতে 
লাগিলেন, তারকনাথ ব্যাধি হবণ করেন-__তাবকনাথের শব্ণাপন হই। 
গিরিশচন্দ্র কেশশ্মশ্র রাখিলেন, নিত্য গঙ্গা স্নান, শিবপুজ। ও হুধিষ্যান্ন 
ভোজন করিতে লাগিলেন। প্রতি বংসর পদরজে ৬তারকেশ্বরে গমন 
করিয়া! অতি নিষ্ঠার সহিত শিবরাত্রির ব্রতও করিতেন। &* প্রার্থনা, 


* সবধ প্রথম পদত্রজে এ৬তারকনাথ দশন করিয়। ফিরিবার সময় পথে গিরিশচন্দ্র 
এই গীতটা রচনা করিয়াছিলেন £__ 
ওরে হ'রে সন্ন্যাসী ! 
মিটবে প্রেমের ক্ষুধা,হুধ! পাবিরে রাশি রাশি । 
দেখুরে আমি প্রেমের তরে, জটাঘট! শিরোপরে, 
জাহুবী শিরে বিহরে, প্রেম অভিলাবী। 
যুগে ঘুগে ক'রে ধ্যান, হয়নি প্রেমের তত্বজান, 
ভেবে পরম শি, চাইনি মুক্তি, আজও রে শ্বশানরাসী। 


২৬৬ গিরিশচন্দ্র 


তারকনাথ আমার সংশয় ছেদন কর। যদি গুরুপদেশ ব্যতীত সংশয় দূর না' 
হয়, তুমি আমার গুরু হও।” কিছুদিন এইরূপ করিতে কবিতে তারকনাথের 
কুপায় গিরিশচন্দ্রের হুদয়ে ক্রমে বিশ্বাস বদ্ধমূল হইতে লাগিল । এই সময়ে 
তিনি, তাহাব কোনও আত্মীয়কে বলিয়াছিলেন,__আমাব মনে হয়, এক 
শতাব্দীর উন্নতি আমার একদিনে হইতেছে। কিছুদিন এইরূপ নিয়ম ও 
ব্রত পালন করিবাব পব, শ্রীভণবানের প্রত্যক্ষ দর্শনেব জন্ত গিরিশচন্দ্রের 
মন একান্ত ব্যাকুল হুইয়। উঠিল । শুনিয়াছিলেন, কালীঘাট সিদ্ধ গীঠস্থান, 
সেখানে সকল কামনাই নিদ্ধ হয়। প্রতি সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবাবে 
নিয়মিতরূপে গিবিশচন্দ্র কালীঘাটে যাইতেন এবং কালীঘাটে হাড়কাঠের 
নিকট বসিয়া! তিনি সমস্ত বাত্রি জগদম্বাকে ডাকিতেন। তাহার ধারণ! 
ছিল, এইস্থান হইতে কত প্রাণী কাতব প্রাণে মাকে ডাকিয়াছে, এই 
স্থানের উপব নিশ্চয় মাব দৃষ্টি আছে। কিছুদিন এইবপ কবিতে কবিতে 
তাহার হৃদয়ে বিশ্বাসেব সহিত ভক্তি প্রবাহ বহিতে লাগিল !__“কালী 


০ কা 


সম আস টি সপ প্ 


ক্ষীরোদ সাগর মন্থন ব ক রে,  স্রাহথর ধা হরে, 
বিদিত আছে চরাচরে, আমি গরল-প্রয়াসী । 
নিয়ে বাঘের ছাল আর ধূতুর! ফুল, দেখবো প্রেমের পাই কি কুল, 
(ওরে ) নকুলে কি আছেরে কুল, (প্রেম'নীরে সদাই ভামি। 
ভূত নাচে সব ফেরে সঙ্গে, মত্ত সদ! ভূতের রঙ্গে, 
হবি অভিভূত ভূতের ভঙ্গে, মহাকাল, আমি নাশি। 
প্রাণ তে। কেবল চায়রে ভোগ, হয়রে তার যোগাযোগ, 
সুখ আশে কর্মভোগ, আমি হুথে উদ্দাসী। | 
স্থথ পাবিনে সুখের তরে, মিছে ঘুরিস ভ্রান্ত নরে, 
ছুঃখ ধ'রে থাকলে পরে, সুখ তোমার হবে দাসী । 
(ওরে) দেখ্রে চেয়ে দারা-ম্ত, তোর মত সব অভিভূত, 
কেন মনকে দিয়ে থাতামূত, আপন গলায় দাও ফাসী। 


ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৬৭ 


করালবদনা১ প্রভৃতি মাতৃনাম সদাসর্ধদা তিনি আন্তরিকতার সহিত 
উচ্চারণ করিতেন। 

পাঠকগণ জ্ঞাত আছেন, গিরিশচন্দ্র পূর্বে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎস! 
কবিতেন, পরে তাহা ছাড়িয়া! দিয়াছিলেন। এক্ষণে গ্ীভ্ীতারকনাথ ও 
জগন্মাতার উপব তাহাব বিশ্বাস এতটা দৃঢ় হইয়াছিল যে তিনি মাতৃনাম 
স্মরণে, ওষধ না দিয়া, কেবলমাত্র বিশ্বাবলে এবং একাগ্র ইচ্ছা-শক্তি 
প্রয়োগে অনেকের পুরাতন ও কঠিন পীড়৷ আবোগ্য করিতে লাগিলেন । 


অহ্মভ্ হালুল্র একী কা 


গিরিশচন্ত্রেব বর্তমান ধর্ম-জীবন সম্বন্ধে প্রবীণ নাট্যাচার্য্য শ্রীযুক্ত 
অমৃতলাল বস্থ মহাশয়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার একটি বিষয় তাহার নিজের 
কথায় নিম্নে লিপিবদ্ধ করিলাম ।-_ 

প্রায় ৪২ বমরেব সৌহার্দ্য ও সাহচধ্যে নাটাকল! সম্বন্ধে অনেক 
জ্ঞান আমি গিবিশবাবুব নিকট লাভ করিয়াছি, বিশেষতঃ সেই স্থদুব 
কৈশোবকালে তিনি একরূপ জোর করিয়া! আমার প্রবৃত্তিকে জাগাইয়৷ না 
তুলিলে, আমি বা ছুই একখানা নাটক বা কবিতা লিখিয়াছি, তাহাও 
লিখিতাম কি না_সন্দেহ। কিন্তু অভিনগ়-বিগ্ভার হাতে খড়ি আমাব 
অর্দেন্দুর কাছে; হান্তবস-অভিনয়ে নিত্যসিদ্ধ অর্ধেন্্ আব আমি বিদ্যালয়ে 
সহপাঠী ছিলাম, কিন্তু তাহার নিকটই আমার অভিনয়-বিদ্তার হাতেখড়ি। 
গিবিশচন্দ্রকে যে আমি গুরু বলিয়া ভক্তি ও সম্বোধন কবিতাম, তাহার 
কারণ-_নাটাবিষ্তাশিক্ষা অপেক্ষা অনেক উচ্চতর । 

আমাদের সংলার সেকেলে ধবণের ; ছেলেবেলা খুব ঠাকুরদেবত! 
মানিতাম, খেলার ছলেও ঠাকুরপুজ1 করিতাম। পরে যৌবনেব প্রথম 
উদগমে কেশববাধুর নব অভভুান্য়কালে প্রতিমা-পুজাকে পৌনত্তলিকতা| মনে, 


২৬৮" গিত্রিশচজ্ু 


করিয়। ব্রাঙ্মভাবে মনকে গঠিত করিতে চেষ্ট। করি। তারপর যখন সাধারণ 
নাট্যশাল! প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে থিয়েটার করিতে আর্ত করিলাম তখন 
কেমন একটা মনে হইল যে ঈশ্বরকে ডাকিবার আমার আর কোনও অধিকার 
নাই। শেষে অভ্যাসেব আধিপত্যে দেবতার দ্বার হইতে বহুদূরে অন্ধকারে 
পড়িয়া গেলাম । এইরূপে কতক দিন যায়, একদিন গিরিশবাবুতে আমাতে 
তাহার বাড়ী হইতে বিডনদ্রীটে থিয়েটার যাইবাব উদ্দেস্তে একত্রে যাত্রা 
করিয়াছি, পথিমধ্যে বাগবাজারের প্র সিদ্ধেশ্ববা তলায় দীড়াইয়। গিরিশবাবু 
মাঁকে প্রণাম করিলেন ; আমি চুপ করিয়। দাড়াইয়৷ রহিলাম। প্রণাম শেষ 
করিয়৷ যাইতে যাইতে গিরিশবাবু আমাকে জিজ্ঞাস! করিলেন, “তুমি প্রণাম 
করিলে না? আমি বলিলাম, “না»। গিরিশবাবু আর কোনও কথা 
কহিলেন না। পরে শোভাবাজারের যে পঞ্চানন্দ ঠাকুব আছেন, গিরিশবাবু 
আবার সেখানে প্রণাম করিলেন, আমি অন্তদ্দিকে মুখ ফিবাইখ রহিলাম। 
পবে চলিতে আরম্ভ কবিলে এবার গিরিশবাবু আমায় জিজ্ঞাসা করিলেন, 
“ওথানে ঘাড়টা ফিরিয়ে ছিলে কেন? অমি উত্তব কাবিলাম, “ও বাব! 
ঠাকুবটি অপয়া ।” গিরিশবাবু বলিলেন, “অপয়া বলিয়া! তোমার বেশ বিশ্বাস 
আছে ? আমি বলিলাম, “নকলেই তো বলে, কাজেই বিশ্বাস করিতে হয় ।* 
গিরিশবাবু বলিলেন, “বেশ, প বিশ্বাসই ঠিক রেখো, ও ঠাকুরের আর মুখ 
দেখো না। এসম্বস্ধেসে দিন আর কোনও কথা হইল না? কিন্তু 
আমার মনে কেমন একটা খটুকা লাগিল,ভাবিলাম,বদি অপয় বিশ্বাস করি, 
তবে পরমন্ত বিশ্বাম করি না কেন? গিরিশবাবুব জীবনে' তখন একটা 
অসাধারণ পরিবর্তনের অবস্থা) ঘোর অবিশ্বাসী নিরীশ্বরবাদী গিরিশের রসনা 
তখন “মা, মা,» রবে মুখরিত। তিনি অনবরত ম। মা, ম! কালী, কালী 
.করালবদন! ইত্যাদি উচ্চারণ করেন, আর আমরা দেখিতে পাই যে তাহার 
বক্ষ যেন শক্তিতে স্ফীত হয়ঃ মুখমণ্ডল যেন এক অনৈনর্গিক তেজে সমুজ্দল 


জ্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৬৯ 


ইইয়। উঠে। শ্তীহার বিশ্বাস তখন এত দু; এত সংশয়ের ছায়! মাস লট 
যে তিমি দর্প করিয়া বগিতেন, €বেটীকে গাল ভয়ে, ঘুক ভরে চেঁচিয়ে, 
ডেকে যা চাব, গাই পাব।* লভাসমাজে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মুর্খ বলিয়! গ্রাতিপন্ 
হইবার আশঙ্কাকে উপেক্ষ। করিয়া বলিতেছি যে ম৷ কালী-_করালবদনা 
ইত্যাদি স্োত্র পাঠ করিয়া গিবিশবাবু অতি অল্প সময়ের মধ্যে অনেকেব 
মজ্জাগত বছদিনব্যাপী পুবাতন পীড়ার উপশম করিয়াছেন, ইছা| আমি 
স্বচক্ষে দেখ্য়াছি। পনে একদিন “মৃপালিনী+ নাটকে পণুপতির ভূমিক! 
অভিনয় কবিতে কবিতে তাহার এমন এক অবস্থা হয় যে তিনি সেই দিন, 
সেই সময়েই প্রতিজ্ঞা কবেন যে, আর মাব নিকট শক্তি চাহিব না, কিছু 
চাহিব না, ক্ষমতা জাহিব করিষ ন1। আমাদেরও বলিতেন, "মাকে 
ডাকো, কিন্ত কিছু চেয়ে টেয়ে কাজ নাই।* গিরিশবাবু মা, মা” 


“৮. *. * গ্ীধুত গিরিশ এই সময়ে অন্তিনয়ান্তে একদিন নির্জনে অন্ধকারে বমিয়! 
শীশ্রীজগন্মাতাকে সকাতরে ডাকিতেছেন, এমন সময় তীহার মনে হুইল, ঘর যেন দিবা 
আবেশে পুর্ণ হইতেছে এবং দূর হইতে কে যেন তাহাকে সম্বোধন করিয়! বলিতেছেন, 
“গিরিশ, তুই আমাকে দেখিতে চাহিয়াছিস্‌, আমি আমিয়াছি, ঘ্বাধ! ইহ জীবন্রে যত 
কিছু আশা, ভরসা, আনন্দ, উল্লাস,__সর্ধ্বস্ব অন্তর হইতে পরিত্যাগ করিয়া গ্কাথু, কারণ, 
নিজে শব না! হইলে কেহ কখন শবশিবাকে দেখিতে পায় না এবং আমার দর্শনলাভের পর 
সংসারে আবার কেহ কথন ফিরিয়া আসে না! অতএব শব হইয়। আমাকে দেখিতে 
প্রস্তুত হ, মুহুর্তমাত্র পরেই আমি তোর সম্মুখে আদিতেছি !” 

গিরিশচন্দ্র বলিতেন-_“রাপ শুনিবামাত্র প্রাণভয়ে হৃদয় ব্যাকুল হইয়া উঠিল এবং 
এখনি মরিলে আমার পুত্রকম্তার এবং আমার মুখাপেক্ষী আমার দরিগ্র বন্ধুবর্গের কি দশা 
হইবে, সে নকল কথ! যুগপৎ মনে উদ্দিত হইল! তখন চক্ষু মুদ্রিত করিয়া বারশ্বার 
বলিতে লাগিলাম, “না, আমি প্ররূপে তোমাকে এখন দেখিতে পারিব না ।' তখন 
পূর্ববাগেঙ্গ স্পষ্ট শু!নতে পাইলাম--আচ্ছ!, না! দেখিবি ত আমার নিকট হইতে বর 
গ্রহণ কব্‌, আমার আগমন কখনও ব্যর্থ হয় না, ইহ সংঙগারে লঙ্য যাহ! কিছু তোর ইচ্ছ! 


২৭০ . গিরিশচন্দ্র 


করিতেন, তাই থিয়েটারের অন্তান্ক সকলেও “মা মাঃ করিত, সঙ্গে সঙ্গে 
আমিও বচন আওড়াইতাম, কিন্তু গ্রাণে তৃপ্তি হইত না, কেমন ফাঁক! ফাঁক! 
ঠেকিত। একদিন সন্ধ্যার পর আমর! থিয়েটারে ষ্রেজের উপর বলিয়। 
আছি, মেদিন যেটুকু রিহারন্তাল দিবার কাধ্য ছিল, তাহা সকাণ সকাল 
শেষ হইয়! গম্নাছে। গ্রিরিশবাবু আমাদের সঙ্গে মার নাম সম্বন্ধে নানা 
কথ। বলিতেছেন, এমন সময় আমার প্রাণেব ভেতর কেমন একটা কষ্টকর 
কাতরতা আমিল, বেদনার কণ্ঠে অতি দীনভাবে গিরিশবাবুকে বলিলাম 
যে মশায়, আমি তো এক বকম ছিলুম, আপনার দেখাদেখি এখন “মা মা 


এ ০ পর রর রর পল ৯ পপ 





হয়, তাহাই চাহিয়া নে।' তখন রূপরসাদিবিশিষ্ট ভে।গ্য পদার্থ মকলের যে কোনটা 
চাহিযা লইব বলিয়া কল্পন। করিতে লাগ্লাম, জাগ্রত বিবেকবুদ্ধি তদুপভোগ্গেরই ভীষণ 
পরিণাম-ছবি জবলস্ত বর্ণে অস্কিও করিয়া পুর্ব হইতে মৃত্যুভয়ে ত্রস্ত হৃদয়ের সম্মুথে ধারণ 
করিতে লাগি! তখন সভয়ে বলিয়৷ উঠিলাম, 'আমি বর লইব না।' ধীর গম্ভীর 
স্নরে পুনরায় উত্তর আসিল-_-'আমার আগমন কখনই ব্যর্থ হইবে না, যদি বরও ন লইবি 
ত আনায় ডাঁকিয়। আনিলি কেন--আমার অভিপম্পাত গ্রহণ কব, আমার এ উদ্যত 
খড়গ তোর কিদের উপর পাতিত করিয়। বিনষ্ট করিব, তীহ! বল ?' শুনিয, মনে ভীষণ 
ভয় হইল; কিন্তু ভয় হইলেও বিবেকবুদ্ধি বলিয! উঠিল- দেবতাকে মন্দ দ্রব্য দ্দিতে 
নাই। তখন ভাবিষ! চিত্তিয়া বলিলাম__'মা, কুনট বলিয়া আমার যে সুনাম আছে, 
তাহীর উপরে তোমার খড়গ পতিত হউক ।' উত্তর আ[সল--তথাস্ত।-__পরে আর 
কিছু দেখিলাম ন!, শুনিতেও পাইলাম ন|। শাস্ত্রে ষে বলিতে শুনিয়াছি, দেবতার 
ক্রোধও বরের তৃলা-_ “ক্রোধোপি দেবস্ত বরেণ তুল্য ১-_ আমি তাহ! পপুর্ববোক্ত ঘটনার 
বিশেষরূপে হাঁদয়ঙ্গম করিয়।ছি ; কারণ, এ দর্শনের পর হইতে সত্যসত্যই আমার নটত্বের 
যশকে আমার হুলেখক বলিয়। খ্যাতি ক্রমে সম্পূর্ণরূপে প্রচ্ছন্ন করিয়৷ ফেলিয়াছিল।” 
উদ্বোধন, ১৫শ বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা। বৈশাখ, ১৩২*। ভক্ত গিরিশচন্দ্র । ২৯২৯১ 
পৃষ্ঠা । শ্রীশ্রীশচন্দ্র মতিলাল। (নম্থামী গ্রনারদানন্দ কর্তৃক সম্যক সংশোধিত, 
পরিবর্তিত ও পরিবঞ্ধিত ) 


ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৭১ 


কবিয়। ডাকি, কিন্তু তাতে প্রাণের ভেতর যেন আরও ফাক পড়িয়৷ যায়, 
এর চেয়ে না ডাক। ছিল ভাল। গিরিশবাবু প্রায় মিনিটখানেক চুপ করিয়া 
থাকিয়। উঠিয়। দীড়াইলেন এবং আমাকে বলিলেন, *'শোনো-_এদিকে 
এসে11 ষ্রেজের মাঝখানে একথানি পিন জোড় ছিল, তাহার পশ্চাতে 
সব অন্ধকাব। গিরিশবাবু সেইথানে গিয়| আসন পিড়ি হইয়া বলিলেন, 
এবং আমাকে সেইরূপ ভাবে সন্মুথে বসিতে বলিলেন। পরে আমার ছুই 
উঞতে তাহাব দুইথালি হন্ত স্থাপন কবিয়া অন্ভুরনাশিনী শ্রাম৷ নামেব 
কোন স্তোত্র বিশেষ ঘন ঘন পাঠ করিতে লাগিলেন, তাহার উপদেশমত 
আমিও তীহাব ছুই উরুতে হস্ত দিয়া, তাহাব সঙ্গে সঙ্গে নেই স্তোত্র পাঠ 
করিতে লাগিলাম ; ক্রমে আমাব শরীর কণ্টকিত হইয়া উঠিল, ভিতবে 
যেন কি একট! স্ুখদ বিদ্যুৎ থেলিতে লাগিল; কম্পিত কলেবব কম্পিত 
ক আমি গিবিশবাবুব পা আকৃড়াইয়। ধরিয়া বলিলাম, “গুরু, গুরু, আজ 
তুমি আমায় মাকে ডাকাই্লাছ, এ শাস্তি_এ উল্লাস_এ আনন্দ আমি 
আর কখনও অনুভব করি নাই । লোকে জানে গিরিশবাবু কেবল আমাব 
নাট্যকলার গুরু; আমি জানি, তিনি আমার মনুষ্যত্বের গুরু | 
ভঅমৃতলান্‌ বসু ।* 
উচ্ছাম্পভ্ভি্িজোগ (৬৮)1-0০1০6) 

গিরিশচন্দ্র একদিন ন্তাসান্তাল থিয়েটারের সম্মুখে পাদচারণা! করিতে 
কবিতে তাহার পূর্ব-বন্ধু “কামিনী-কুঞ্জ” গীতিনাট্য-রচন্মিতা ও “সাহিত্য- 
সংহিতা”-সম্পাদক শ্রীযুক্ত বাবু গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্যায়কে দেখিতে 
পাইয়। তাহাকে ডাকিয়। জিজ্ঞাসা করিলেন, "কিহে গোপালবাবু, তোমার 
চেহারা এত খারাপ হয়ে গেল কিনে? তোমাকে আমি প্রথমে চিন্তেই 
পারি নাই।” গোপালবাবু উত্তর করিলেন, *অন্বলের ব্যারামে ভারি 
ভূগছি, এমন হ,য়েছে ধে সা বাপি খেলেও অশ্বল হয়। উপবাস করেই 


২২ খিত্িখচন্দ্র 


দেখুছি, নীগ্গির মৃত্যু হবে। এখন ম»লেই বীচি।” গিরিশচন্র সে' সময়ে 
ইচ্ছা-শক্তি ( ড/111-107০5 ) প্রয়োগে অনেকেরই উতফট রোগ আরোগ্য 
করিতেছিলেন। তিনি গোপালবাবুর কথ! শুনিয়া হানিতে হাঁসিডে 
বলিলেন, "আজই তোমার ব্যারাম ভাল ক'রে দিব।» এই বলিয়া 
বাজার হইতে গরম গরম কচুরী এক ঠোঙ। কিনিয়া আনাইলেন ও “তাহাকে 
বজিলেন, “নির্ভয়ে পরিতোষপুর্বক আহার করো! ।” গোঁপালবাবু ভয় 
পাওয়ায় গিবিশচন্দ্র বলিলেন, "ভয় কি-_ খাও, এইতো বল্ছিলে, ম/লেই 
বাঁচি, না থেয়ে মরতে, না হয় খেয়েই মন্বে। আমার কথায় বিশ্বাস 
করো, আজ তোমার রোগ আবোগ্যের দিন।” গিরিশবাবু এত উৎসাহেব 
সহিত অথচ গাল্ভীর্যসহকাবে কথাগুলি বলিলেন, যে, গোপালবাবু ভরসা 
পাইয়৷ পরম তৃপ্তিব সহিত সেগুলি আহাব করিলেন । গিরিশচন্দ্র পৰে 
স্বাহাকে এক গ্রাস স্থণীতল জল খাইতে দিলনা বলিলেন, “তুমি নিশ্চয় 
জান্বে, তুমি আরোগ্য হয়ে গেছ, যাহা ইচ্ছ! হবে খাবে, ভয় কবে 
না।” কিছুদ্দিন পরে বোগমুক্ত গোপালবাবু বেশ হৃ্পুষ্ট হইয়া থিক্পেটারে 
গিরিশচন্দ্রের সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসেন এবং তাহাকে আস্তরিক 
ধন্তবাদ প্রদান করেন। 

ষ্টার থিয়েটারে একদিন বাত্রে নাট্যাচাধ্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন 
মহাশয়েব বিস্থচিক! গীড়ার স্ুত্রপাত হয় । অমুতবাবু ব্যাকুল হইয়। পড়েন, 
থিয়েটারেব লোক সব ব্যস্ত। গিরিশচন্ত্র ইচ্ছাশক্তি গ্রয়োগ কাবয়া বণেন, 
প্যা তোর রোগ ভাল হয়ে গেছে ।” বাস্তবিক সেই রাত্রি হইতৈই অমৃতবাবু 
আরোগ্য হইতে থাকেন। 

গিরিশচন্দ্রের ইচ্ছাশক্তি-প্রয়োগে রোগ আরোগ্য সম্বন্ধে শ্রদ্ধাম্পদ 
'জীযুক্তবাবু দেবেন্দ্র নাথ বন্থু মহাশয়েব নিম্নলিখিত পত্রখানি প্রকাশিত 
হইল ।-- 


ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৭৬ 


“আর্মীর বাল্যবন্ধু পরম গ্রীতিভাজন শ্রীযুক্ত উপেন্্রনাথ মুখোপাধ্যায় 
উক্ত সময় ম্যালেরিস। জরে পীড়িত হন। একদিন অন্তরে বেল! দ্বিপ্রহরে 
জর আদিত। এই রূপে ছয় মাস অতীত হইয়। গেল, কিছুতেই কিছু 
হইল ন1। আমি গিরিশ দাদাকে বলিলাম। তিনি একটা সাগুদানা 
আমার হাতে দিয়। বলিলেন-_তুই উপেনকে বলিস্‌, গিরিশ দাদ। এই 
ওধষধ দিয়াছে, নিশ্চয় আরাম হবে ! জরের পালার দিন উপেন্দ্রবাবুকে 
সাগুদানাটা খাওয়াইয়' আমি সেইরূপ বলিলাম । িগ্রহরের সময় উপেন্দ্রের 
চোথ চীষৎ রক্তবর্ণ হইয়া! উঠিল, কপাল প্রততিও ঈষৎ উষ্ণ হইল । আমি 
বলিলাম, “আজ আর কিছুতেই জর আসিবে না, অল্পক্ষণের মধ্যেই 
উপেন্দ্রবাবুব অল্প অল্প ঘাম হুইয়া সে ভাব কাটিয়। গেল এবং সেই দিন 
হইতে এ পধ্যস্ত আর তাহার সেরূপ জর হয় নাই। ছয়টা পালার সময় 
অতীত হইবার পর আমি উপেন্দ্রবাবুকে কল কথ। ভাঙ্গিয়।৷ বলি। 
| শ্ীদেবেন্ত্রনাথ বনু 1» 

বন্ধবর দেবেন্দ্রবাবুর বণিত ঘটন। সম্পূর্ণ সত্য। 

গউপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। 

৭ নং শ্তামপুকুর স্ব, কলিকাতা । ৬ই ফেব্রুয়ারী, ১৯১৩ থৃঃ।” 

গিরিশচন্ত্রের পুত্র শ্রদ্ধাম্পদ শ্রীযুক্ত স্ুরেন্ট্রনাথ ঘোষ ( দানিবাবু) 
মহাশয় বলেন £-- 

প্বাল্যকালে আমার একটা শালিক পাখী ছিল, তাহাকে বড়ই ভাল- 
বাদিতাম, নিজে তাহাকে খাওয়াইয়। দিতাম । একদিন স্কুল হইতে আদিয়া 
দেখি, পাখীটি খাঁচার ভিতর মরণাপন্ন অবস্থায় রহিয়াছে_-আমি কীদিতে 
লাগিলাম। সে সমফ্বে বাপি (সুরেন্ুনাথ বাব ন! বলিয়৷ “বাপি+ বলিয়! 
ডাকিতেন ) বাটার ভিতর আহার করিতেছিলেন। আমার কার শুনিষ্ব! 
বলিলেন, ণকি হয়েছে? আমি বলিলাম, “আমার পাখীর “গুকো” 

১৮ 


২৭৪ গিরিশচন্দ্র 


ধরেছে__ম,রে যাবে । তখন আমের সময়, তাহাকে আম খাইতে দেওয়া 
হইয়াছিল, পাতের সামনে আমের খোস! পড়িয়াছিল। তিনি একটী 
খোসা! তুলিয়া! লইয়! বলিলেন,_-এই খোসা! উহাকে খাইয়ে দে। 
আমি বলিলাম,--“ও মরে, ও খাবে কি করে? তিনি বিরক্ত হইয়। 
জোর করিম! বলিলেন।__“তুই দে ন।। আমি এক টুকরা খোস! লইয়! 
খাচার ভিতর গলাইয়। দিয়া-_ঠিক ঠোটের সামনে ফেলিয়া 
রাখিলাম। তাহার পর গৃহশিক্ষক আসায় পড়িতে যাইলাম। মাষ্টার 
মহাশয্ পড়াইয়! চলিয়া! গেলে তাড়াতাড়ি পাখীর কাছে আসিয়া দেখি, 
পাখীটি ভাল হুইয়। গিয়াছে,_-সে খাঁচার ভিতর আনন্দে গা'ঝাড়। দিয়া 
লাফাইয়। বেড়াইতেছে।” 

স্থরেন্্রবাবু এ সম্বন্ধে আর একটা ঘটন। বলেন, _”আমার পুরাতন গৃহ- 
শিক্ষকের পেটের মধ্যে কি হইয়াছিল-_পেট উচুনিচু করিলে ঘট্ঘট্‌ করিয়া 
শব্ধ হইত। সে শবা ঘরের বাহির পর্যন্ত শোন! যাইত। মাষ্টার মশায় 
নানারকম চিকিৎসা করাইয়াছিলেন, কিন্ত কোনও ফণ পান নাই। আমি 
ৰাপিকে মাষ্টার মহাশয়ের পীড়ার কথা বলায়, তিনি তাহাকে একটী 
শিশিতে জল পুবিয়৷ তাহাতে একটু কপুর্ব মিশাইয়! খাইতে দিলেন। 
প্রান সপ্তাহ পরে মাষ্টার মহাশয় আদিয়। বলিলেন, _আশ্চর্যা, আমার পীড়া 
একেবারে সারিয়া গিয়াছে !” 

ভ্ীঞ্ীরামকৃষ্ণ পবমহংসদেবের শ্রীচরণে আশ্রয় লাভের পর গিরিশচন্দ্র 
এই শক্তি বর্জন কবেন। পরমহংসদেব এরূপ শক্তি-চালনার পক্ষপাতী 
ছিলেন না। তিনি বলিতেন,__“এ সকল মান্ুষকে ক্রমে বুজ্রুক করিয়া 
তোলে );ও সব ভাল নয়।” গিরিশচন্দের আর একটা বিশেষ শক্তি 
ছিল, পত্র না খুলিয়া পত্রের মন্ত্র বলিয়৷ দিতে পারিতেন। ইচ্ছা 
শক্তি-বর্জনের সঙ্গে সঙ্গে ইহাঁও পরিত্যাগ করেন। 


একত্রিংশ পরিচ্ছেদ 
ছাল খিয্সেজীন্র শু গিল্ড্রিম্পহভ্ক্র 


প্রতাপটাদ বাবুব থিয়েটার ছুই বৎসর খুব জোরের সহিত চলিয়াছিল। 
তাহার থিয়েটারেই প্রথম গ্রাতিপন্ন হয় যে বাঙ্গল। দেশেও থিয়েটার করিয়া 
লাভ করা যায়। জঙ্রী মহাশয় পাক ব্যবসাদার হইলেও, তাহার 
অর্থনীতি উদ্দার ছিল না। যখন থিয়েটারে যথেষ্ট লাভ হইতেছে, তখন 
সম্প্রদায়ের বেতন বৃদ্ধির সঙ্গত প্রার্থনার কর্ণপাত না করিয়!, তিনি দলের 
সহিত মনোমালিন্কের সুত্রপাত করিলেন । ফলতঃ বাঙ্গালী অভিনেত। ও 
অভিনেত্রীদের প্রতি তাহার তেমন একট! সহান্থভূতি ছিল না । গিরিশচন্জ 
ছিলেন অধ্যক্ষ_-দলপতি তিনি, স্ৃতরাং সম্প্রদায়ের অনুযোগ ও প্রার্থনাদি 
স্বাহাকেই শুনিতে হইত। কিন্তু ক্কপণন্থভাব প্রতাপটাদ বাবু যখন 
গিরিশচন্দ্রের পুনঃ পুনঃ অন্থরোধ সত্বেও তাহার কথ! রাখিলেন না, তখন 
অগত্যা গিরিশচন্ত্রকে স্তাসান্তাল থিয়েটারের সংশ্রব পরিত্যাগ করিতে 
হইল। তাহার সঙ্গে অমৃতলাল মিত্র, অঘোবনাথ পাঠক, নীলমাধব 
চক্রবর্তী, উপেন্দ্রনাথ মিত্র, কাদম্থিনী, ক্ষেত্রমণি, শ্রীমতী বিনোদিনী 
প্রভৃতিও থিয়েটার ছাড়িয়া! দিলেন। 

ইহা্দিগকে বেশী দিন বলিয়৷ থাকিতে হয় নাই। প্রতাপচাদ বাবুর 
থিয়েটারে অনেক মাড়োয়ারীও দর্শক হিসাবে থিয়েটার দেখিতে 
আসিতেন। এই মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের একটা তরুণ যুবক থিয়েটারের 
ব্যবসায়ে আমোদ ও অর্থের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ দেখিয়া বোধ হয়-_আর একটা 
নূতন থিয়েটার খুলিবার ইচ্ছা! করেন। ইহার নাম গুন্ুথ রায়। ইহার 


২৭৬ গিরিশচন্দ্র 


পিতা হোবমিলাব কোম্পানীব প্রধান দালাল ছিলেন। পিতৃবিয়োগের 
পব অল্পবয়সে ইনিও উক্ত কোম্পানীব গ্রখান দালাল হইয়াছিনেন। 


ইহাব স্বত্বাধিকারিত্বে এবং গিবিশচন্দ্রেব তত্বাবধানে ৬৮নং বিভন ্রীটস্ক জমী 





স্বর্গীয় গুন্খ বায় 
(উপস্থিত যেখানে মনোমোহন থিয়েটার ) বাগবাজারের সুবিখ্যাত 


কীষ্চিন্ত্র মিত্র মহাশয়েব নিকট হইতে লিজ লইয়া তথায় নূতন নাটাশাল! 
নির্মাণ আরম্ভ হইল। ন্তাসাস্ভাল থিয়েটাব কাষ্ঠনিম্সিত হুইয়াছিল--এবার 


ইষ্টকনিক্ষিত বাটা হইল,_নাম হইল-্টাব থিয়েটাক'। 


এককব্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৭৭ 


দহ তত্ত 

গিরিশচন্ত্রের রচিত “দক্ষযন্ঞঃ নামক নূতন পৌরাণিক নাটক লইয়া 
৬ই শ্রাবণ (১২৯০ সাল) ষ্টার থিয়েটার মহাসমারোহে প্রথম খোল! হয়। 
প্রথম অভিনয়-রজনীর অভিনেতৃগণ ঃ-- 

দক্ষ-_-গিরিশচন্দ্র ঘোষ, মহাদেব__-অযৃতলাল মিত্র, দধীচি__ যুক্ত 
অমৃতলাল বনু, ব্রন্ধা-_নীলমাধব চত্রবর্তী,বিষু _্রীযুক্ত উপেন্ত্রনাথ মিত্র, 
নাবদ__মথুবানাথ চট্টোপাধ্যায়, নন্দী-_অঘোরনাথ পাঠক, তৃঙ্গী-_ 
প্রবোধচন্্র ঘোষ, মন্ত্রী_গিরীক্তরনাথ ভদ্র, দুতগণ-_প্রবোধচন্্র ঘোষ, 
মহেন্দ্রনাথ চৌধুবী। এবিনাশচন্ত্র দাদ (ব্রা ) ও শ্রীযুক্ত পরাণকৃষ্ শীল) 
প্রশ্থতি-__কাদপ্িনী, ভূগুপত্রী--গঙ্গামণি, চেড়ী-_যাছকালী, তপন্থিনী-- 
ক্ষেত্রমণি, সতী- শ্রীমতী বিনোদিনী ইত্যাদি । 

সম্পূর্ণরূপ হান্ত-রস-বজ্জিত হুইয়! আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার শ্রীতি আকর্ষণে 
“দক্ষযজ্ঞ* নাটক বেরপ সু প্রতিষিত হইয়াছিল, বঙ্গ-রঙ্গালয়ে এরূপ দ্বিতীয় 
নাটক বড়ই বিরল। নাটকান্তরগত “তপস্থিনী” চরিত্রটা গিরিশচন্দ্রের মৃতন 
সথষ্টি। নাটাসম্পদে এবং ভাবের গভীরতায় “দক্ষষ্ঞ' যেমন সাহিত্যিক-মহলে 
সমাদৃত হইয়াছিল, ইহার অভিনয়ও সেইরূপ অতুলনীয় হইয়াছিল। 
গিরিশচঙ্ট্রের দক্ষের ভূমিকাভিনয় যিনি একবার দেখিয়াছেন, বোধ হয় 
তিনি তাহ! জীবনে ভুলিতে পারেন নাই। ব্র্ধার বরে দক্ষ প্রজাপতি-- 
গ্রজা স্ঙ্টি করিবার শক্তিলাভ করিয়াছিলেন। গিরিশচন্তরের অনাধারণ 
অডিনয়ে-.ষ্তাহার অদ্ভুত ভাবভক্ষিতে__যণার্থই যেন তাহাকে স্থষটিকর্তা 
(10:58০: ) বঙিক্না বোধ হইত। যেবেদৃসশ্তে তিনি বলমঞ্চে অবতীর্ণ 
হইতেন, র্শকগণ সিংহের ভ্তায গীহা'র গাসতীর্ধ্য এবং বজ্র স্তার কাঠি 
দেখিরী-..ধেন প্পন্দঘনহীন হইয়া! অবস্থান করিতেন। জনৈক আহিত্ত্িফ 
গল্প করিয়াছিলেন,_*ষ্টার থিয়েটারে দক্ষের অভিনর দেখা! আঁদিযা 


২৭৮ গিরিশচন্দ্র 


দক্ষের মুখ-নিঃস্থত সতীর প্রতি সেই "অপমান-_মান আছে যার; 
ভিখারীর মান কিরে ভিখারিণী ?” তীব্রোক্তি সাতদিন ধরিক্! তাহার কাণে 
বাজিয়াছিল।” মহাদেবের ভূমিকায় অমৃতলাল মিত্র যখন ”কে--রে 
দে রে--দতী দে আমার!” বলিয়া রঙ্মঞ্চে প্রবেশ করিতেন -. তখন যেন 
রঙ্গমঞ্চের সহিত সমস্ত দর্শকগণ পধ্যস্ত কীপিয়! উঠিত। এই সময় হইতেই 
অমৃতলাল বাবু অতি উচ্চশ্রেণীর অভিনেত। বলিয়। পরিগণিত হন । শ্রীমতী 
বিনোদিনীর সতীর ভূমিকাভিনয়ে সতীত্বের প্রভা যেন প্রত্যক্ষীতৃত হইত । 
যজ্ঞস্থলে পিতার প্রতি সম্মান গ্রদর্শন অথচ দৃঢ় বাকো স্বামীর পক্ষ সমর্থন, 
পতিনিন্দায় প্রাণের তীব্র ব্যাকুলতা৷ তৎপরে প্রাপত্যাগ-_স্তরে স্তরে অতি 
দক্ষতার সহিত প্রদণিত হইত। দধাচি, গ্রস্থতি, তপস্থিনী, নন্দী, ভূল্গী, 
রহ্ধা, বিষুঃ, প্রভৃতি প্রত্যেক ভূমিকাই নিখুঁতরূপ অভিনীত হইয়াছিল। 
দক্ষষজ্ঞ নাটকে কাচের উপর আলো! ফেপিয়া দশ মহাবিদ্তার 
চমকপ্রদ আবির্ভাব ও তিরোভাব দেখাইর়! সুগ্রসিন্ধ নাট্যশিল্পী ভহবলা'ল 
ধর বিশেষ্নপ প্রশংসা লাভ করিয়াছিলেন । স্ুপ্রসিদ্ধ সঙ্গীতাচার্য্য বেণীমাধব 
অধিকারী দক্ষষত্তের গানগুলির সুমধুর সুর সংযোজন! করিয়াছিলেন। 

এ স্থলে বল! আবশ্তক, গিরিশচন্দ্র প্রতাপচাদ বাবুব থিয়েটার পরিত্যাগ 
করিয়া আসিবার সময় অনেককে তাহার সঙ্গে চলিয়া আসিতে দেখিয়া 
গ্রতাপ বাবু ব্স্ত হইয়া মহেন্্রলাল বনু, কেদারনাথ চৌধুরী, রামতারণ 
সান্যাল, বেলবাবু, ধর্দাস সুর, শ্র্রম্তী বনবিহারিণী (ভূনি) প্রস্ৃতি 
কয়জনকে আট্কাইয়৷ ফেলেন এবং কেদারনাথবাবুকে ম্যানেজার করিয়া 
থিয়েটার চালাইতে আরম্ভ করেন। নাট্যাচাধ্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্ধ 
মহাশয় “সীতাহরণ' নাটকাভিনয়ের পর স্থাসান্তাল থিয়েটার হইতে বেজল 
থিয়েটারে চলিয়া গিয়াছিলেন। বেজল থিয়েটার ছাড়িয়া এই সময়ে তিনি 
গিরিশচন্ত্রের সহিত পুনর্শিলিত হন। 


একত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৭৯ 


ূর্ব্ব পরিচ্ছেদ লিখিত হইয়াছে, গিরিশচন্দ্র কালীঘাটে গিয়া কালীমন্দিরে 
মাতৃনাম জপ করিতেন। এই সময়েই তিনি দক্ষষজ্ঞ নাটক রচনা। করেন। 
নাটকের শিক্ষা দান সমাপ্ত হইলে, এক রাত্রি মায়ের নাট-মন্দিরে দ্রেল 
রিহার্সাল স্বরূপ দক্ষষজ্ঞ অভিনীত হয়। জগজ্জননী-সক্মুথে অভিনয় 
করিয়। গিরিশচন্দ্রের প্রাণে পরম তৃপ্তিলাভ হইয়াছিল। তাহার পর 
নিয়মিত বিজ্ঞাপন ঘোঁষণ। করিয়। ষ্টার থিয়েটারে ইহা! অভিনীত হয়। 

এভল্রলল্ভ্িক্র 

ষ্টার থিয়েটারে গিরিশচন্ত্রের দ্বিতীয় নাটক ক্রবচরিত্র ২৭শে শ্রাবণ 
(১২৯০ সাল) প্রথম অভিনীত হয়। প্রথম অভিনয়-রজনীর অভিনেতৃগণ £-- 

উত্তানপাদ--অমৃতলাল মিত্র, বিছুষক-_শ্রীযুক্ত অমূতলাল বনু, 
মহাদেব-_উপেক্্রনাথ মিত্র, ব্রহ্মা_নীলমাধব চক্রবর্তী, নারদ-_ 
অঘোরনাথ পাঠক, ঞ্ুব--ভূষণকুমারী, মুনীতি-_কাদস্ষিনী, সুকুচি-_ 
শ্রীমতী বিনোদিনী ইত্যাদি । ৃ 

এই ভক্তিরসাত্মক পৌরাণিক নাটক থানির অভিনয় সর্বজন-সমাদৃত 
হইয়াছিল। প্রবের ভূমিক। ভূষণকুমারী অতি সুন্দর অভিনয় করিয়াছিলেন ॥ 
গ্রবের সুমিষ্ট কথায় এবং গানে দর্শকমাত্রেই মুগ্ধ হইতেন। সাহিত্যরথা 
অক্ষয়চন্দ্র সরকার মহাশয় “ফুটিলে ফুল গ্রব তোলে না,_ফুলে পুজ। হবে ত! 
তে। ভোলে ন। |” গীতথানির বিশেষরূপ সুখ্যাতি করিয়াছিলেন । উত্তানপাদ, 
বিছষক, নারদ, সুনীতি, জুরুচি প্রভৃতি ভূমিকাগুলিরও চমৎকার অভিনয় 
হইয়াছিল । * “বিছ্ষক+ চরি্রাঙ্কনে গিরিশচন্দ্রের অপুর্ব সৃষ্টি-শক্তির কথা 
নাট্যামোদী মাত্রেরই নিকট পরিচিত। বলিয়া! রাখ! ভাল, এই নাটকেই 
তাহার স্মষ্ট বিছ্ধক চরিত্রের প্রথম শুচন1!। এক্ষণে কি হৃত্রে ঞ্বচরিত্র 
নাটকখানি লিখিত হয়, তৎ্সম্বন্ধে প্রবীণ অভিনেত। শ্রীযুক্ত হরিদাস দত্ত 
মহাশয় যাহ! বলিয়াছিলেন, তাহা! উদ্ধত করিতেছি ;__ 


২৮৩ গিরিশচন্দ্র 


স্র্খক্ষভা-স্ণভ্তি 

শনুপ্রসিদ্ধ অভিনেতা ও নাট্যকার স্বর্গীয় কেদারনাথ চৌধুরী মহাশয়ের 
কলিকাতার বাসা-বাটীতে একদিন কথকতা সম্বন্ধে প্রসঙ্গ উঠে। গিরিশ 
বাবু বলেন, “কথকতা বড়ই কঠিন, একই ব্যক্তিকে একই সময় ভিন্ন ডিন্ 
চরিত্র ও রসের অবতারণা কবিয়া৷ অভিনয় করিতে হয়। বিশেষরূপ 
যোগ্যতা না থাকিলে প্রত্যেক চবিত্রের বিভিন্নতা দেখাইতে পাব! বড় 
কঠিন, তার উপব সাজসরঞ্জাম, দৃশ্তপট ও সহকারী অভিনেতার সহায়তা 
থাকে না।” কেহ কেহ বলিলেন, “ম্থুনিপুণ হইলেও একই ব্যক্তি কর্তৃক 
ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র অভিনয়, বিশেষতঃ কঞ্ম্ববের বিভিন্নতা। প্রদর্শন, কদাচ 
সম্ভবপর নহে। গিবিশচন্ত্র বলিলেন, “আচ্ছা, কাল আমি কথকতা 
করিয়। তোমাদিগকে গুনাইব। চরিন্ত্রগত পার্থক্য দেখান যায় কি না, 
কঠম্বরের বৈলক্গণ্য হয় কি না, এবং রসের অবতারণায় শ্রোতাকে মুগ্ধ 
করা যায় কি না, তোমরাই বিবেচন! করিয়া দেখিবে |” 

তৎপর দিবম কেদারবাবু বন্ধ বন্ধুবান্ধব নিমন্ত্রণ করিয়া বাঁসায় একটা 
ক্ষুদ্র উৎসবের আয়োজন করেন। গিরিশবাবু শ্বয়ং কথকতা করিবেন 
গ্ুনিয়া ৫০1৬৪ জন ভদ্রলোক একত্র হন। গিরিশচন্দ্র ফ্রবচরিত্রের কথা 
বলেন। বিভিন্ন রসে, বিভিন্ন ভাষাক্স এবং বিভিন্ন ভঙ্গীতে প্রত্যেক চরিশ্রের 
বিভিন্ন অভিনয়ে সে দিন সকলেই এক অনির্বচমীয় আনন্দ অনুভব 
করিয়্াছিলেন। এই সকল শ্রোতার অনুরোধে গিরিশবাধু পরে ঞ্চবচবিন্র 
নাটক প্রণয়ন করেন ।* | 

নমভ্পদ্লসহাজ্ভী 

৭ই“পৌধ (১২৯০ সাল) ই্রার থিয়েটারে গিরিশচন্ত্রের তৃতীয় নাটক 
নঙগদময়স্তী প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রর্জনীর অভিনৈতা ও 
অভিনেত্রীগণের নাম £-- 


একত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৮১ 


নল-__অমৃতলাল মিত্র, বিদুষক- শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্দ, পুঞ্চর_ 
নীলমাধব চক্রবর্তী, কলি--অঘোরনাথ পাঠক  দ্বাপব, রক্ষী ও গ্রামবাসী__ 
যুক্ত পবাণকষ্ণ শ্রীল ; ভীমসেন, মন্ত্রী ও মুনি-_মহেন্ত্রনাথ চৌধুবী, খতুপর্ণ 
ও যম-_উপেন্দ্রনাথ মিত্র, ইন্দ্র ও প্রথম ব্যাধ__প্রবোধচন্ত্র ঘোষ, অগ্নি ও 
সারথী- শ্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, বরুণ ও দূত__শরৎচন্ত্র বন্য্ো- 
পাধ্যায় (রাণবাবু ), দূত-_শ্তামাচরণ কু, ব্যাধ__গিরীন্ত্রনাথ ভর, 
দময়স্তী__গ্রীমতী বিনোদিনী, রাজমাতা-_গঙামণি, সুনন্না-_ভূষণকুমারী ; 
রাণী, ব্রাঙ্গী ও জনৈক বৃদ্ধা__ ক্ষেত্রমণি, ধাত্রী-যাছুকালী ইত্যাদি । 

্তাসান্তাল থিয়েটার উভয় সম্প্রদায়ে বিভক্ত হইয়া যাওয়ায় টার 
থিয়েটারে অনেক নবীন অভিনেতা! প্রবেশলাভ করিয়াছিলেন। উত্তর 
কালে তাহারাও শিক্ষা-নৈপুণো লব্বগ্রতিষ্ঠ হইয়াছিলেন। 

'নলদময়স্তী” নাটক রচনায় গিরিশচন্ত্রের যেরূপ কৃতিত্ব প্রকাশ 
গাইয়্াছিল, ইহার অভিনয়ও সেইরূপ চমৎকার হইয়াছিল। অনৃতলাল 
মিত্রের নল, অমৃতলাল বন্ুর বিছুষক, নীলমাধব চক্রবর্তীর পুষ্কর, অঘোরনাথ 
পাঠকের কলি এবং গ্রীমতী বিনোদিনীর দময়স্তী ভূমিকার জীবস্ত অভিনয় 
দর্শনে দর্শকগণ শতমুখে নুখ্যাতি করিয়াছিলেন। প্রত্যেক ভূমিকাই নির্দোষ 
ভাবে অভিনীত হইয়াছিল। বেণীবাবুর স্থুর ও কাশীনাধবাবুর নৃত্যশিক্ষায় 
নাচগানেরও বড়ই বাহার খুলিয়াছিল। পূর্বে থিয়েটারে নাচের কোনওরূপ 
একটা নিয়ম-পন্ধতি ছিল না। নৃত্য যে নঙ্গীতের একটা প্রধান অঙ্গ, 
তাহাও নৃত্যে প্রশ্ছুটিত হইত না-গুধু তালে তারে পা ফেলিয়া চলিয়া 
যাইত মীত্র - তাহাকে নৃত্যকলা বলা যায় না। এই নলদময়ন্তী নাটক 
হইতে কাশীনাথ বাৰু পূর্ব-গ্রচলিত নৃত্যের ধার! অনেক বদলাইয়া৷ কতকট! 
পরিষার্জিত হরিগ্বাছিলেন। বৈজ্ঞানিক পিল্প-প্রবর্তনে রঙ্গমঞ্চের সৌগর্ধ্য 
বাঁ্ধর অতিগ্রায়ে গঁরিশচন্্র নলদময্ত্রী নাটকে কমল-কোরক প্রপ্দুটিত 


২৮২ গিরিশচন্দ্র 


হইয়া অপ্মরাগণের আবির্ভাব, বস্ত্র লইয়। সহসা পক্ষীর আকাশে উখান 
ইত্যাদি কয়েকটা দৃশ্ঠ সংযোজন করিয়াছিলেন। নাট্যশিল্পী জহরলাল 
বাবু তাহা সুসম্পন্ন করিয়! দক্ষষজ্জে দশমহাবিস্তা-প্রদর্শনের সায় সু 
অর্জন করিরাছিলেন। 

উপধূর্পপরি তিনখানি নাটক সগৌরবে অভিনীত হওয়ায়, ষ্টার 
থিয়েটারের ভিত্তি যেরূপ সুদৃঢ় হইয়া উল, গিবিশচন্ত্রের রচন!-শক্তি এবং 
নাট্যগ্রতিভাও সেইরপ সুপ্রতিষ্ঠিত হইল। 


€০স্গ্ঙ্খ ল্রীম্েক্স খ্রিত্সেটীব্র ভ্যাঞ্গ 


উন্নতির এই প্রথম প্রভাতেই গুন্সুথ রায় অনুস্থ হুইয়। পড়েন 
এবং তাহাকে সামাজিক শাসনের কঠোরতায় থিয়েটার ছাড়িয়া 
দিতে বাধ্য হইতে হয়। তিনি থিয়েটার বিক্রম করিবার সঙ্কল্প করিলে 
গিবিশচন্ত্র সম্প্রদায়ের নেতা! হুইয়া' তাহাদের সন্কটাবস্থবর কথা গন্সুথ 
বাবুকে বিশেষ রূপ বুঝাইলে তিনি বলেন,--”"আমি বিস্তর টাকাব্যয়ে 
বাড়ী তৈরী করিয়াছি, আপনারা আমায় এগার হাজার টাকা 
মাত্র দিন, আমি আপনাদের হস্তে থিয়েটার ছাড়িয়া দিতেছি”। 
এই অপ্রত্যাশিত উত্তর পাইয়! গিরিশচন্দ্র সানন্দে সম্প্রদায়স্থ সকলকে 
বলিলেন,_-প্যে টাক আনিতে পারিবে, তাহাকেই থিয়েটারের 
মালিক করিয়া দিব, কে টাকা আনিৰে আনে! 1” গিরিশচন্দ্র 
সৎপরামর্শে এবং উৎসাহ-বাক্যে উৎসাহিত হুইয়। অমৃতলাল মিত্র, প্রীত 
হরিগ্রসাদদ বনু & এবং দাস্ুচরণ নিয়োগী__ ইহারা কয়েক সহম্র টাক! 


* হরিপ্রসাদ বাবুর বাগবাজার চীৎপুর রোডের উপর একটী ডাক্তারখান! ছিল। 
গিরিশচন্দ্র থিয়েটারে যাইবার সময়ে প্রায়ই তাহার ডাক্তারখানায় একবার বসিয়া ছুইটা গল্প 
করিয়া! ধাইতেন। হরিবাবুও গ্রিরিশচন্দ্রকে বিশেষ শ্রদ্ধা! করিতেন। তিনি ছিসাবপত্রে 


একত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৮৩ 


লইয়া! আসিলেন, অবশিষ্ট টাকা যোড়ার্সাকো-নিবাসী নুগ্রসিদ্ধ হরিধন দত্ত 
মহাশয়ের ভ্রাতা কৃষ্ণধন বাবুর নিকট খণ গ্রহণ কর! হইল। নাট্যাচারধ্য 
শ্রীযুক্ত অমৃতলা'ল বনু মহাশয় কার্য)কুশল, বুদ্ধিমান এবং সুশিক্ষিত বলিয়া 
থিয়েটারে গিরিশচন্ত্রের দক্ষিণহত্ত শ্বরূপ ছিলেন। গিরিশচন্দ্র ইহাকে 
লইয়া থিয়েটারের চারিজন স্বত্বাধিকারী নির্বাচিত করিলেন, এবং গুশ্মুথ 
রায়ের টাক। শোধ করিয়া দিয়া থিয়েটারের স্বত্ব উক্ত চারিজনের নামে 
রেজেষ্টারী করিয়া লইলেন | গিরিশচন্দ্র ইচ্ছা করিলে তিনিও এ সময়ে 
একজন স্বত্বাধিকারী হইতে পারিতেন, কিন্তু অনুজ অতুলকৃষ্ণের নিকট 
তিনি সত্যবদ্ধ হইয়াছিলেন, যতদিন থিয়েটারের সংস্পর্শে থাকিবেন, 
থিয়েটারের স্বত্বাধিকারী হইবার কখনও চেষ্টা করিবেন না। সে প্রতিজ্ঞা 
তিনি ভোলেন নাই। তিনি ইহাদিগকে স্বত্বাধিকারী করিয়া! যেরূপ 
থিয়েটারের অধ্যক্ষতা, নাটক রচনা, শিক্ষাপ্রদান এবং আবশ্তকবোধে 
অভিনয় করিয়া! আসিতেছিলেন__সেইরূপই করিতে লাগিলেন।  স্বত্বাধি- 
কারিগণও ইহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করিয়। ইহারই অধিনায়কত্বে আপন 
আপন নির্দিষ্ট কার্য্য করিয়! যাইতে লাগিলেন । 

এই সময়ে কলিকাতায় গড়ের মাঠে “ইন্টার স্তানাগ্তাল এক্জিবিসন্য 
আরম্ভ হয়। এরূপ বিরাট এবং মহাসমারোহের এক্জিবিসন্‌ কলিকাতায় 
এপর্যাস্ত হয় নাই। সমস্ত ভারতবর্ষের নৃপতিগণ, দেশীয় রাজারাজড়। ও 





বিশেষ গারদর্শী ছিলেন। গিরিশবাবু ভাহার হিসাব রাখিবার সপ্রণানী এবং খাতীপত্রের 
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নত! দেখিয়া! বড়ই আনন্দ প্রকাশ করিতেন। গুন্দুখ বাবুর থিয়েটার বাটা 
নির্দাশকালে ছিসাবগত্র রাখিযার নিমিত্ত একজন স্ুনিপুণ কর্দাচারীর আবন্তক হয়। 
গিরিশচন্দ্র হরি প্রা বাবুকে লইয়া! গিয়া উক্ত পদ প্রদান করেন। থির়েটার-বাটী নির্াণ 
হইবার গর হরিবাবু থিয়েটারের কোবাধাক্ষের পদ প্রাপ্ত হন। 


২৮৪ গিরিশচন্দ্র 


জমিদারগণ কলিকাতীয় সমাগত হইয়াছিলেন। দেশ-বিদেশ হুইতে 
অসংখা লোক সমাগমে কলিকাতা সহর সরগরম হইয়! উঠিয়াছিল। 
চৌরাঙ্গিব পথে লোক চলাচলের স্থুবিধার নিমিত্ত মিউজিয়ম হাউস হইতে 
গড়ের মাঠ পর্ধ্যস্ত একটা স্ুপ্রশস্ত সেতু নির্মিত হইয়াছিল। সহরে 
এইরূপ লোক-সমুদ্র দেখিয়! ষ্টার থিয়েটার সম্প্রদায়ও প্রত্যহ নলদময়স্তীর 
অভিনয় চালাইতে লাগিলেন। বিক্রয়ও যথেষ্ট হইতে লাগিল। ফলতঃ 
এই এক্জিবিসন হইতে সম্প্রদায়ের খণ-পরিশোধের বিশেষরূপ স্থবিধা 
হইয়াছিল। থিয়েটারে একটা মাত্র রয়েল বক্স থাকিত, এই সময়ে একদিন 
থিয়েটারে অনেক রাজ আনিয়! উপস্থিত। কর্তৃপক্ষগণ কি করিবেন 
সম্মান সহকারে সাধারণ বক্সগুলিতেই তাহাদের বসাইয়া দিলেন। 
রয়েল বলের পূর্ণ মূল্য দিয়া! সাধারণ বক্সে বসিয়াই তাহার আনন্দের 
সহিত অভিনন্প দেখিয়। গেলেন । 


মসলেন ক্কান্সিম্ী 


নলদমন্স্তী নাটকে অভাবনীয় কৃতকার্ধ্য হইয়। গিরিশচন্দ্র অতঃপর 
কবিকন্বণের চণ্ডী অবলম্বনে “কমলেকামিনী” নাটক রচনা! করিলেন। 
১৭ই চৈত্র (১২৯* সাল) ষ্টার থিয়েটারে ইহার প্রথম অভিনয় হয়। 
প্রথম অভিনয় রজনীর অভিনেতৃগণ £-- 

গুরুমহাশয় ও সভাসদ- প্রযুক্ত অমৃতলাল বনু; ধনপতি, গণক 
ও নারদ--অঘোরনাথ পাঠক, বিশ্বকণ্দী ও জল্লাদ--নীলমাধব চক্রবর্তী, 
দারুবদ্ষ।--শরতচন্ত্র বন্য্যোপাধ্যায় (রাণু বাবু), হনুমান শ্তামাচরধ 
কু, শালিবাহন-_উপেন্্রনাথ মিন, ক্রীমস্ত-জীমর্তী বনবিহারিলী, স্ত্রী-- 
ত্রেলোক্যনাথ ঘোষাল, কারাধ্যক্ষ ও কোঁটাল-_ছ্ীযুক্ত পরাণরুঞ্চ গীগ, 


একত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৮৫ 


চণ্ডী ও খুল্পনা- শ্রীমতী বিনোদিনী, পল্সা! ও ছর্বল!-_ক্ষেত্রমণি, লহনা-_ 
গঙ্গামণি, সুণীলা-_ভূষণকুমারী, ধাত্রী__যাদ্বকালী ইত্যাদি-_ 

“কমলেকামিনী”র উপাখ্যান একেই বঙ্গবাসী মাত্রেরই সুপরিচিত, 
তাহাতে গিরিশচন্ত্রের রচনা"কৌশলে এবং বিচিত্র স্থষ্টি-নৈপুণ্যে নাটক- 
থানি পরম উপভোগ্য হইয়্াছিল। জহরলাল বাবুর গুণপনায় কালীদছে 
কমলেকামিনী প্রভৃতি দৃশ্তগুলিও অতি সুন্দর দেখান হইত । তাহার উপব 
শ্রীমস্তের তুমিকায় শ্রীমতী বনবিহারিণী সুমধুর ভক্তিরসাত্মবক সঙ্গীতে 
দর্শকগণকে মুগ্ধ করিয়। রাখিতেন। কমলেকামিনী ঠ্টাব থিক্েটার 
ব্যতীত ক্লামিক ও মিনার্ভ থিয়েটারে বহুবার স্ুখ্যাতির সহিত 
অভিনীত হুইয়াছে। 

“কমলেকামিনী” লিখিবার পূর্বে গিবিশচন্দ্র সমুদ্র দর্শন করেন নাই। 
শ্রীমতী বনবিহারিণী শ্রীমস্তের ভূমিকাভিনয়ের কিছুদিন পবে ৮পুরীধামে 
জগন্নাথ দর্শনে গমন করেন। কলিকাতায় ফিরিয়া! আসিয়া একদিন 
থিয়েটাবে গিরিশচন্ত্রকে বলিলেন মহাশয়, আপনি “কমলেকামিনী” 
নাটকে যে রকম সমুদ্রেব বর্ণনা করেছেন, ঠিক সেই রকম সাগর দেখে 
এলুম। আপনি সমুদ্র দেখে এসে বুঝি সেই ছবিটা মিলিয়ে নাটক 
লিখেছেন?” গিরিশচন্দ্র বলিলেন__-"আমি এ পথ্যস্ত সাগর দেখি নাই, 
তবে নানা বই-এ সমুদ্রের বর্ণনা পড়েছি--লোকের্‌ মুখে শুনেছি, সেই 
ভাবেই লিখেছি” বনবিহারিনী কোনও মতে গিরিশচন্দ্রের কথান়্ বিশ্বাস 
কবিতে পারিলেন না৷ । তিনি পুনরায় বলিলেন, “না মশায়, চোখে না 
দেখে শুধু বইপড়ে এমন ঠিকঠাকটা লেখা যায় না.।” বনবিহারিণী 
কিছুতেই ধাবণ! কবিতে পারিলেন না, যে, কবি ও নাট্যকার অনেক সময়ে 
অনেক জিনিষ প্রত্যক্ষ না৷ করিয়াও স্বীয় কল্পনাবলে তাহার স্বরূপ মুষ্তি 
চিত্রিত করিতে পারেন। 


২৮৬ গিরিশচন্দ্র 


ব্রমক্েত্ভু ও াল্লাল্ হ্রুল্ল 


€ই বৈশাখ (১২৯১ সাল) গিরিশচন্দ্রের ছুই অন্ধ সমাপ্ত “বুষকেতু” 
নাটক এবং “হীরার ফুল নামক একখানি 'অপ্গারা-গীতিহার* ষ্টার থিয়েটারে 
প্রথম অভিনীত হয়। ইহার সহিত নাট্যাচার্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্থুর 
'চাটুযো-বাড়,য্ে নামক একথানি প্রহসন-_-মোট তিন খানি একরাত্রে 
অভিনীত হুইয়াছিল। বৃষকেতু নাটকের প্রথম অভিনয়-রজনীর 
অভিনেতৃগণ £-_ 

কর্ণ--উপেক্্নাথ মিত্র, গ্রহরী-_পরাণকৃষ্ণ শীল, বিষুঃ-_-অঘোব্নাথ 
পাঠক, বুষকেতু-_ভ্ষণকুমারী, পাচক ব্রাঙ্গণ_ব্রেলৌক্যনাথ ঘোষাল, 
ভৃত্যগণ-_ নীলমাধৰ চক্রবর্তী, অবিনাশচন্ত্র দাস ( বাণ্ডী )ও পরাণকৃষ্ণ শীল, 
পল্মাবতী-_শ্রীমতী বিনোদিনী, পরিচারিক।--গঙ্গামণি, জনৈক স্ত্রীলোক-_ 
ক্ষেত্রমণি ইত্যাদি । 

উপযুক্ত অভিনেত৷ ও অভিনেত্রীর সম্মিলনে বুষকেতু অতি সুখ্যাতির 
সহিত অভিনীত হইয়াছিল। জহরলালবাবু রঙ্গমঞ্চেব উপর বৃষকেতুর 
শিরশ্ছেদ দেখাইয়। দর্শকগণকে বিন্মিত ও চমকিত করিতেন। ষ্টার 
ব্যতীত মিনার্ভা, ক্লাদিক, মনোমোহন প্রভৃতি থিয়েটারে ইহার বছবার 
অভিনয় হইয় গিয়াছে । 

হীবাব ফুল” গীতিনাট্যের প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতৃগণ £-_ 

মদন-_ শ্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, অরুণ-__প্রবোধ চন্তু ঘোষ, দৈত্য 
--অঘোরনাথ পাঠক, বতি--ভৃষণকুমারী, শশীকলা শ্রীমতী বিনোদিনী । 
সঙ্গীত-শিক্ষক-_বেণীমাধব অধিকারী, নৃত্য-শিক্ষক- শ্রীযুক্ত কাশীনাথ 
চট্টোপাধ্যায় । 

চুটকী গান ও চুটকী সুরের উপর “হীরার ফুল? দর্শকগণের বড়ই মুখ- 


একত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৮৭ 


রোচক হইয়াছিল । মদন ও রতির নৃত্য-গীতকালীন দর্শকগণের ঘন ধন 
আনন্দ ও করতালি-ধ্বনিতে রঙ্গালয় মুখরিত হুইয়! উঠিত। হীরার ফুলের 
গানগুলি সে নময়ে সাধারণের মুখে মুখে ফিরিত। বন থিয়েটারে বহুবার 
ইহার অভিনয় হইয় গিয়াছে। 
উ্রীবশুস্-চ্ম্ভা 

২৬শে ক্যেষ্ঠ (১২৯১ সাল) ষ্টার থিয়েটারে গিরিশচন্ত্রের “ভ্রীবংস- 
চিন্তা" নামক পৌরাণিক নাটক প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় 
রজনীর অভিনেতৃগণ £-_ 

শ্রীবংস-__-অমৃতলাল মিত্র, বাতুল-_প্ু)যুক্ত অমৃতলাল বনু, বাহুরাজ-__ 
উপেন্দ্রনাথ মিত্র, শনি--নীলমাধব চক্রবর্তী, মন্ত্রী-_মহেন্দ্রনাথ চৌধুরী, 
সওদাগর-_অঘোরনাথ পাঠক, চিস্তা--শ্রীমতী বিনোদিনী, ভদ্রা__ 
ভূষণকুমারী, লক্ষমীদেবী__গঙ্গামণি ইত্যাদি 

'শ্রীবৎস-চিন্তাঃ নাটকের বচন! এবং অভিনয় অতি ুন্দর:হইলেও 
"নলদময়ন্তী* নাটকের পর অভিনীত হওয়ায় ইহ! দর্শকগণের নিকট তেমন 
নৃতনত্বপূর্ণ হয় নাই। কলি কর্তৃক লাঞ্চিত নলরাজার উপাখ্যানের সহিত 
শনি কর্তৃক লাঞ্ছিত শ্রীবংস রাজার উপাখ্যান যে প্রায় একইরূপ, পাঠক- 
গণকে তাহা বিস্তৃতভাবে বুঝান বাহুল্যমাত্র। কিন্তু এই নাটকে গিরিশ 
চন্দ্রের “বাতুল” চরিত্র সম্পূর্ণ নূতন স্থষ্টি। দরিদ্র বাতুল মৃত্যুকে তে৷ গ্রাহই 
কবে না, দুঃখের সঙ্গে বহুদিনের প্রণয়-_ছুঃখের সঙ্গে তার ঠাট্টা বটুকিরি 
চলে। রা! দয়ার্ হইয়। বাতুলকে রাজপুরে স্থান দেন। বাতুলের পেটে 
অন্ন পড়েছে শোবাব শয্যা জুটেছে, বাতুলের চোখে আর নিদ্রা নাই৷ 
বাতুল বলে_ পন বাবা, ঘুম হবার যে! নাই, আজ রাস্তার সেই স্থকোমল 
কাকর নাই, আর মাঝে মাঝে কোটাল সাহেবের হুঙ্কার নাই, আবার 
বিষমস্ত বিষমং, উদরে অন্ন পড়েছে_ইত্যাদ্দি। 


২৮৮ গিরিশচন্দ্র 


বহুকাল পরে এই নাটকের মিনার্ভ! থিয়েটারে পুনরভিনয় হইয়াছিল । 
সম্প্রদায় অভিনয়ে বিশেষ নুখ্যাতি লাভ করেন। নুবিখ্যাতা অভিনেত্রী 
এবং কোকিলকণ্ঠী গায়িক! শ্রীমতী স্ুশীলাবাল! “লক্ষমীর+ ভূমিকা গ্রহণ 
করিয়। সুমধুর সঙ্গীতে দর্শকগণকে মুগ্ধ করিয়াছিলেন। 


টচভ্ন্লুজ্লীলা। 


১৯ শে শ্রাবণ (১২৯১ সাল) ২রা আগষ্ট, ১৮৮৪ খুষ্টাবে ষ্টার 
থিয়েটাবে গিরিশচন্ত্রের “চৈতন্তলীলা” প্রথম অভিনীত্ত হয় । প্রথম অভিনয্- 
রজনীর অতিন্তো। ও অভিনেত্রীগণ £-_ 

জগন্নাথ মিশ্র-_নীলমাধব চক্রবর্তী, নিমাই (চৈতন্)__ শ্রীমতী বিনোদিনী, 
নিত্যানন্দ ও পাপ--শ্রীমতী বনবিহাবিণী, গঙ্গাদাল-_মহেক্ত্রনাথ চৌধুরী, 
অদ্বৈত-_উপেন্দ্রনাথ মিত্র, প্রতিবাপী ও লোভ-_শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বনু, 
শ্রীবাস__ অবিনাশচন্ত্র দাস,মুকুন্দ ও মাৎসর্ধ্য- শ্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, 
অতিথি ও হরিদান--অঘোরনাথ পাঠক, জগাই ও বিবেক-_গ্রবোধচন্্র 
ঘোষ ? মাধাই, ক্রোধ ও কলি-_অমৃতলাল মিত্র, শচী ও ভক্তি-_-গঙ্গামণি, 
লক্ষমী-_প্রমদান্ুন্দরী, বিষুপ্রিক্া- কিরণবাল!, বৈরাগ্য-_পরাণরুঞ্ণ শীল, 
মোহ-_ক্ষেত্রমণি ইত্যাদি 

সঙ্গীতাচার্ধ; বেণীমাধব অধিকারী মহাশয় এই নাটকের স্ুমধুব সুর 

ংযোজনা করেন । “ইনি রামাৎ বৈষ্ণব? স্ুপ্রসিদ্ধ গায়ক আহম্মদ খার 
প্রধান ছাত্র ও সহবে একজন উচ্চশ্রেণীর গাক়ক বলিয়া পরিচিত ছিলেন। 
বৈষণথা ঢংয়ে নৃত্য ইই। দ্বারাই প্রথম প্রবর্তিত হয়। শ্রীমতী বিনোরদিনীব 
চৈতন্তের ভূমিকায় নৃত্য দর্শনে অনেক সাধুহদয় বিমুগ্ধ হইয়াছিল ।, 
চৈতন্থলীলার রচনা যেরূপ মধুব এবং ভগবদ্তক্তি-উদ্দীপক, ইহার 
অভিনয়ও সেইরূপ প্রাম্পর্শী ও সর্বালসুন্দর হুইয়াছিল। 'চৈতন্ঠেব' 


একত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৮৯১ 


ভূমিকাভিনয়ে শ্রীতী বিনোদিনী অদ্ভুত কৃতিত্ব প্রদর্শন করিয়া- 
ছিলেন। এতদ্সম্বন্ধে গিরিশচন্দ্র শ্রীমতী বিনোদিনীর “আমার কথা 
গ্রন্থের ভূমিকায় লিখিয়াছিলেন,--”গৌরাঙ্গমুর্তির ব্যাখ্যা-_-“অস্তঃ কৃষ্ণ 
বহিঃ রাধা-_পুরুষ-গ্রকৃতি এক অঙ্গে জড়িত” । এই পুরুষ-প্ররুতির 
ভাব বিনোদ্দিনীর অঙ্গে প্রতিফলিত হইত। বিনোদিনী যখন “কৃষ্ণ 
কই-_কৃষচ কই? বলিয়া সংজ্ঞাহীন হইত, তখন বিরহবিধুর! 
রমণীর আভাম পাওয়া যাইত। আবার চৈতন্তদেব যখন ভক্তগণকে 
কৃতার্থ করিতেছেন, তখন পুরুষোত্বম-ভাবেব আভাস বিনোদিনী আনিতে 
পারিত। অভিনম্ন দর্শনে অনেক ভাবুক এরূপ বিভোর হইয়াছিলেন যে, 
বিনোদিনীব পদধূলি গ্রহণে উৎন্ুক হন। & * * বিনোদিনী অতি হস্তা, 
পরমহংসদেৰ করকমল দ্বারা তাহাকে স্পর্শ করিয়! শ্রীমুখে বলিয়াছিলেন, 
_ “চৈততন্ত হোক*। অনেক পর্বত-গহ্বরবাপী এ আশীর্ঝাদের প্রার্থী 

শুভক্ষণে গিবিশচন্ত্র এই নাটক লিখিয়! পাশ্চাত্যশিক্ষাভিমানী নব্য বঙ্গ 
ও মুস্ডিত মস্তক তিলকধারী বৈষ্ণবকে একাসনে বসাইয়। কীদাইয়াছিলেন। 
নাট্যমন্দিরকে এই সময়ে বঙ্গবাসী ধ্শমন্দিরের চক্ষে দেখিয়া যথেষ্ট 
শ্রদ্ধা! ও ভক্তি প্রদর্শন করিতে আরম্ভ করেন। চৈতন্তলীলার অভিনয় 
দর্শনে সমস্ত বঙ্গদেশ হরিনামে মাতিয়া উঠিয়াছিল। আমবা এম্থলে 
একটী ঘটনার উল্লেখ না করিয়া! থাকিতে পাবিলাম না। নব্দীপের 
স্থবিখ্যাত পণ্ডিত ব্রজনাথ বিস্তারত্ব মহাশয় চৈতন্তলীলার অভিনয় দর্শনের 
নিমন্ত্রণ-পত্র,পাইয়া, এবং উক্ত নাটকের দেশব্যাপী স্থখ্যাতি শ্রবণে, তাহার 
পুত্র পণ্ডিত মথুরানাথ পদরত্বকে বলেন, _ষথ্যারে, থিয়েটারে চৈতন্তলীল। 
হচ্ছে কি ?__তবে কি আবার গৌর এলে। ? একবার কোল্কাতা গিয়ে দেখে 
আদ্ব তো ।* মথুরানাথ কলিকাতা আসিয়া “চৈতত্তলীলার, অভিনয় দর্শনে 
উন্মত্বের স্ায় গ্রস্থকারের পদধুলি লইতে অগ্রনর হইয়! পুনঃ পুনঃ 

১৪) 


২৯০ গিরিশচন্দ্র 


বলিয়াছিলেনঃ--“তোর মনোবাঞ্ছ! গৌর পূর্ণ কঃর্বেন।” স্থবিখ্যাত 
সাধক প্রতৃপাদ্দ বিজয়কষ্চ গোম্বামী “চৈতন্তলীলা” দেখিতে আসিয়া 
প্রেমোন্মত্তভাবে দর্শকের আসন হইতে উঠিয়া! নৃত্য করিতে থাকেন। 
নাট্যাচার্্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্তু মহাশয় 'চৈতন্তলীলা” অভিনয় সন্বন্ধে 
লিখিয়াছিলেন,__ 
প্বখাটে নট ও অর্খাটি নটাবৃন্দ দ্বাবা! দেশে ধর্ম প্রচার হইল । ছিঃ ছিঃ! 
এ কথ! মনে আসিলেও, স্বীকার করিতে নাই, তাতে মহা পাপ আছে! 
কিন্ত কে জানে কেমন, তারিখে একটু গোলমাল করে, মনে হয় যেন 
এই নগণ্য সম্প্রদায়কে 'জঘন্ত বেদীতে শ্রীকুষ্ণ-মহিম1-কীর্ভন করিতে 
গুনিয়ই ধর্মবিপ্রবকারী বীবগণ অন্তবে ঈষৎ কম্পিত হইলেন, আর ধর্ম- 
প্রাণ নিদ্রিত ভিন্দু জাগবিত হইয়! ব্রজবাজ ও নবদ্বীপচন্দ্রেব বিশ্বমোহন প্রেম 
প্রচাব কবিতে আবস্ভ কবিলেন। নগরে নগবে, গ্রামে গ্রামে, পলীতে 
পল্লীতে সংকীর্ন সম্প্রদায়েব স্থ্টি হইল, গীতা ও চৈতন্ত-চরিতের বিবিধ 
সংস্করণে দেশ ছাইয়া পড়িল । বিলাত-প্রত্যাগত বাঙ্গালী সন্তানও লজ্জিত না 
হইয়। সগর্ধে আপনাকে হিন্দু হিন্দু বলিয়া! পবিচয় দ্রিতে আবস্ত করিল |” 
ভগবান শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পবম্হংসদেব 'চৈতন্তলীলা” অভিনয়ের সুখ্যাতি 
শ্রবণে দক্ষিণেশ্বর হইতে ৫ই আশ্বিন তারিখে ভক্তগণসহ ষ্টাবে আসিয়! 
চৈতন্তলীল। অভিনয় দেখিয়া পরম আনন্দ প্রকাশ কবিয়। যান। অভিনন্ব 
সমাপ্ত হইলে জনৈক ভক্ত জিজ্ঞাসা কবিয়াছিলেন, “কেমন দেখলেন ?” 
ঠাকুব হাসিতে হাসিতে বলেন, “আসল নকল এক দেখ্ামশ* * 
ঠাকুরের পদার্পণে নটনটাগণেব জীবন সার্থক এবং রঙ্গালয় ধন্ত হয়। 
থিয্নেটারে ঠাকুবের এই প্রথম আগমন । 


* াঁহারা বিভ্তৃত বিবরণ জানিতে ইচ্ছা করেন, তাহারা ভ্রীম-কধিত *্ীপ্ররামকৃফ্- 
কথামৃত” (দ্বিতীয় ভাগ ) পাঠ করুন। 


দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ 


প্রন্ত-ভকীবন্দেক্র ভুভ্ভীম্স অন্স্া--হল্সভলাভ্ভ 


গুরুলাভের নিমিত্ত গিবিশচন্দ্রের তীব্র ব্যাকুলতার কথা ত্রিংশপরিচ্ছেদে 
বলিক্মাছি। মাতৃ-নাম সাধনে ক্রমে তাহাব হৃদয়ে, বিশ্বাসের সহিত ভক্তির 
প্রবাহ বহিতে লাগিল,_ গিরিশচন্দ্র “চৈতন্তলীলা” লিখিলেন,_-পরম গুরু- 
লাভেব পথ মুক্ত হইল। ্রীন্রীবামরুঞ্চদেব ইচ্ছ। করিয়াই “চৈতন্তলীলা? 
দেখিতে আসিলেন। গিবিশচন্ত্র ইহাব পূর্বে তাহাকে আর ছুইবার দেখিয়। 
ছিলেন, এইবাৰ তাহাব তৃতীয় দর্শন । কিন্তু কাল পুর্ণ না হইলে কোন 
কাধ্যই হয় না। চতুর্থবার দর্শনে গিবিশচন্দ্রের সুদিন উদয় হইল-_-তিনি 
গুরুরুপা লাভ কবিলেন। প্রথম ও দ্বিতীয় দর্শন কিরূপে হইল-_ইহা 
জানিবাব নিমিভ্ত অনেকের আগ্রহ জন্মিতে পাবে। তল্লিখিত “ভগবান্‌ 
শ্রীবামকঞ্চদেব* গ্রন্ধে তিনি গুরু-সন্ধর্শন সম্বন্ধে শ্বয়ং যাহা 
বলিয়া গিম়্াছেন। দ্দর্শনগ বিভাগ কবিয়। নিয়ে তাহা উদ্ধৃত 
কবিলাম।__ 


এর দকম্প্নি 
“বহুদ্দিন পূর্বে “ইও্ডিয়ান মিরার” (সংবাদ পত্র ) এ দেখিয়াছিলাম যে 
দক্ষিণেশ্্ব একজন পবমহংন আছেন, তথায় স্বর্গার় কেশবচন্ত্র লেনের 
সশিষে। গতিবিধি আছে । আমি হীনবুদ্ধি, ভাবিলাম--যে ব্রাহ্মবা৷ যেমন 
হবি, ম৷ প্রভৃতি বল। আরম্ভ করিয়াছে, সেইরূপ এক পবমহংসও খাড়! 
করিয়াছে। হিন্দুর যাহাকে পরমহংস বলে, সে পরমহংস ইনি নন। তাহার 


২৯২ গিরিশচন্দ্র 


পর কিছুদিন বাদে গুনিলাম, আমাদের বন্পাড়ায় ৬দীননাথ বস্তুর বাড়ীতে 
পরমহংস আদিয়াছেন, কৌতৃহুল বশতঃ দেখিতে যাইলাম-_কিরূপ পরমহংস। 
তথায় যাইয়। শ্রন্ধার পরিবর্তে তাহাব প্রতি অশ্রদ্ধা লইয়া! আদিলাম | দীননাথ 
বাবুব বাড়ীতে যখন আমি উপস্থিত হই, তখন পবমহংস কি উপদেশ 
দিতেছেন ও কেশববাবু প্রভৃতি তাহা আনন্দ করিয়! শুনিতেছেন। সন্ধা 
হইয়াছে, একজন সেজ জ্বালিয়৷ আনিয়া পরমহংসদেবের সম্মুখে রাখিল। 
তখন পরমহংসদেব পুনঃ পুনঃ জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন,__“সন্ধ্য। 
হইয়াছে ?” আমি এইকথ শুনিয়া ভাবিলাম-__প্চং দেখ, সন্ধ্য। হইয়াছে, 
সম্মুথে সেজ জলিতেছে, তবু ইনি বুঝিতে পারিতেছেন ন! যে, সন্ধ্যা 
হইয়াছে কি না? আর কি দেখিব, চলিয়। আসিলাম |” 


ছ্িভীল্ম দর্শন্ন 


পইহাব কয়েক বৎসব পরে রামকান্ত বন্থুর স্বীটস্থ ৬বলরাম বন্থুর তবনে 
পরমহংদদেব আসিবেন। সাধৃত্বম বলরাম তাহাকে দর্শন কবিবার নিমিত্ত 
পাড়ার অনেককেই নিমন্ত্রণ করিয়াছেন । আমারও নিমন্ত্রণ হইয়াছিল,__ 
দর্শন কবিতে গেলেম। দেখিলাম_-পরমহংসদেব আপিয়াছেন, বিধু কার্ভনী 
তাহাকে গান গুনাইবার জন্ত নিকটে আছে । বলরাম বাবুর বৈঠকথানায় 
অনেক লোক সমাগম হইয়্াছে। পরমহংসদেবের আচরণে আমার একটু 
চমক হইল। আমি জানিতাম, ধাহার। পরমহংন ও যোগী বলিয্না! আপনাকে 
পবিচয় দেন, তীহাবা কাহারও লহিত কথা কন ন1, কাহাকেও নমস্কার 
কবেন না; তবে কেহ যদি অতি সাধ্য সাধন! করে, পদসেবা করিতে দেন। 
এ পরমহংসেব ব্যাপাব সম্পূর্ণ বিপবীত। অতি দীন ভাবে পুনঃ পুনঃ মস্তক 
ভূমিষ্পর্শ করিয়া নমস্কার করিতেছেন। এক ব্যক্তি, আমার পূর্বের ইয়ার, 
তিনি পরমহংমকে লক্ষ্য করিয়! ব্যঙ্গ করিয়া বলিলেন, “বিধু ওঁর পুর্বের 


দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৯৩ 


আলাপী, তাব সঙ্গে রঙ্গ হচ্ছে” কথাটা আমাব ভাল লাগিল ন|। 
এমন সময়ে অমৃতবাজাব পত্রিকার স্ুবিখ্যাত সম্পাদক শ্রীযুক্ত শিশিরকুমার 
ঘোষ উপস্থিত হইলেন। পরমহংসদেবের প্রতি তাহার বিশেষ শ্রদ্ধা বোধ 
হইল না। তিনি বলিলেন, “চল, আর কি দেখবে?” আমাব ইচ্ছা 
ছিল, আবও কিছু দেখি, কিন্তু তিনি জেদ করিয়া আমায় সঙ্গে লইয়া 
আসিলেন। এই আমাব দ্বিতীয় দর্শন ।৮ 


ভভীল্স দম্ন্ি 


“আবাব কিছুদিন যায়, ষ্টার থিয়েটাবে (৬৮ নং বিডন গ্রীট ) “চৈতন্ত- 
লীলার অভিনয় হইতেছে, আমি থিয়েটারের বাহিবের কম্পাউও 
(বহিঃ প্রাঙ্গণ ) এ বেড়াইতেছি, এমন সময়ে মহেন্ত্রনাথ মুখোপাধ্যায় 
নামক একজন ভক্ত ( এক্ষণে তিনি দ্বর্গগত ) আমায় বলিলেন, “পরমহংস- 
দেব থিয়েটার দেখিতে আসিয়াছেন, তাহাকে বসিতে দাও, ভাল, নচেৎ 
টিকিট কিনিতেছি।” আমি বলিলাম, “তাঁহার টিকিট লাগিবে না, কিন্তু 
অপরের টিকিট লাগিবে |” এই বলিয়া তাহাকে অভ্যর্থনা করিতে 
অগ্রদর হইতেছি, দেখিলাম তিনি গাড়ী হইতে নামিয়া থিয়েটারের 
কম্পাউণ্ড মধ্যে প্রবেশ করিয়াছেন; আমি না নমস্কার কবিতে 
কবিতে তিনি অগ্রে নমস্কার করিলেন, আমি নমস্কাব করিলাম, পুনর্ধার 
তিনি নমস্কার কবিলেন; আমি আবার নমস্কার কবিলাম, পুনর্বার 
তিনিও নমস্কার করিলেন । আমি ভাবিলাম, এইরূপই তো *দেখিতেছি 
চলিবে । আমি মনে মনে নমস্কার করি! তাহাকে উপরে লইয়া আসিয়া! 
একটী “বক্পো বসাইলাম ও একজন পাখাওয়াল৷ নিযুক্ত করিয়া 
দিয়। শরীরের অন্ুস্থত। বশতঃ বাড়ী চলিয়া আমিলাম। এই আমার 
তৃতীয় দর্শন।” 


২৯৪ গিরিশচন্দ্র 


চুর দকম্শন্নি 

“আমার চতুর্থ দর্শন বিবৃত করিবার পুর্বে আমার নিজের অবস্থ। বলা 
প্রয়োজন । আমাদের পঠদ্দশায় ধাহার! “ইয়ং বেঙ্গল নামে অভিহিত 
হইতেন, তাহারাই সমাজে মান্তগণ্য ও বিদ্বান বলিয়৷ পরিগণিত 
ছিলেন। বাঙ্গালায় ইংবাজী-শিক্ষার তাহারাই প্রথম ফল। তাহাদের মধ্যে 
অনেকেই জড়বাদী, অল্প সংখাক ক্রিশ্চিয়ান হুইয়। গিয়াছিলেন) এবং কেহ 
কেহ ব্রাহ্মধন্্ন অবলম্বন করেন । কিন্তু হিন্দুধর্ম প্রতি আস্থা! তাহাদের 
মধ্যে প্রায় কাহাবও ছিল না, বলিলেও বল! যায়। সমাজে যাহার হিন্দু 
ছিলেন, তাহাদের মধ্যে মতভেদ, শাক্ত-বৈষবেব দ্বন্ব চলে এবং বৈষ্ঠব- 
সমাজ এমন নান! শ্রেণীতে বিভক্ত যে, পবস্পব পবস্পবেব প্রতিবাদী । 
ইহা ব্যতীত অন্তান্ত মতও প্রচলিত ছিল। প্রত্যেক মতেই অপর 
মতাবলম্বীর নরক ব্যবস্থা । ইহার উপব তনেক যাজক ব্রাহ্মণ 
্ষ্টাচাব হইয়াছেন । সত্যনারায়ণেব পুঁথি লইয়| শ্রাদ্ধ করেন, মেটে 
দেওয়ালে পাইখানার ঘটা হইতে জল দিয়! গঞঙ্গামৃত্তিকাব ফৌট। ধাবণ 
কবেন। তাহার উপর ইংরাজীও ছূ-পাত। পড়িয়াছি, কালাপাহাড় 
জগন্নাথ ভাঙ্গিয়াছে গ্রভৃতি। আবাব জড়বাদীর! বুদ্ধি-বিগ্ায় সকলেব 
শ্রেষ্ঠ বলিয়া! গণ্য, ঈশ্বর না মান। বিদ্যার পরিচয়, এ অবস্থায় স্ব-ধর্মের 
প্রতি আস্থা কিছুমাত্র রহিল ন1; কিন্তু মাঝে মাঝে ঈশ্বর লইয়৷ সমবয়ন্ক 
বন্ধুর সহিত তর্ক-বিতর্কও চলে । আদি সমাজেও কনে! কখনে। যাওয় 
আসা করি,. একটা ব্রাঙ্গদমাজও পাড়াব কাছে ছিল, সেখানেও মাঝে 
মাঝে যাই। কিন্তু কিছু বুঝিতে পারিলাম ন1। ঈশ্বর আছেন কিনা সন্দেহ, 
যদি থাকেন, কোন্‌ ধর্মাবলম্বী হওয়া উচিত ? নান! তর্ক-বিতর্ক করিয়া কিছু 
স্থির হইল না, ইহাতে মনের অশান্তি হইতে লাগিল। একদিন প্রার্থন! 
করিলাম, “ভগবান্‌, যদি থাকো, আমায় পথ নির্দেশ করিয়া! দাও।” 


দবাত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৯৫ 


ইহার কিছুদিন পরেই দাস্তিকতা! আসিল। ভাবিলাম- জল, বায়ু, আলো 
ইহ-জীবনের যাহা প্রয়োজন-__তাহা অজন্র রহিয়াছে ; তবে ধর্ম, যাহা 
অনস্ত জীবনের প্রয়োজন, তাহ। এত খুঁজিয়৷ লইতে হইবে কেন? সমস্তই 
মিথ্যা কথ1) জড়বাদীর! বিদ্বান__বিজ্ঞ, তাহারা যে কথা বলেন, সেই কথাই 
ঠিক। ভাবিলাম_ ধর্মের আন্দোলন বৃথা, এইরূপ তমাচ্ছন্ন হইয়। চতুর্দাশ 
বর্ষ অতিবাহিত হুইল। পরে ছূর্দিন আসিয়া ঠিক নিশ্চিন্ত থাকিতে দিল 
না। ছুন্দিনের তাড়নায় চতুর্জিক অন্ধকার দেখিয়া ভাবিতে লাগিলাম, 
বিপন্ুক্ত হইবার কোনও উপায় আছে কি? দেখিয়াছি, অসাধ্য রোগ 
হইলে তারকনাথের শরণাপন্ন হইয়া থাকে, আমারও তে। কঠিন বিপদ; 
একরূপ উদ্ধার হওয়া অনাধ্য, এ সময়ে তারকনাথকে ডাকিলে কিছু 
হয় কি? পরীক্ষা করিয়া দেখ! যাকৃ। শরণাপন্ন হইবার চেষ্টা করিলাম, 
কিন্তু সেই চেষ্টাই সফল হইল, বিপজ্জাল অচিরে ছিন্নভিন্ন হইয়া! গেল। 
আমার দুঢ় ধারণ! জন্মিল- _দেবত! মিথ্যা নয় । বিপদ হইতে তো মুক্ত 
হইলাম, কিন্তু আমার পরকালের উপায় কি? আবার মনোমধ্যে ঘোর 
ঘন্ব, কোন্‌ পথ অবলম্বন করি? তারকনাথের মহিম! দেখিয়াছি, তারক 
নাথকেই ডাকি। ক্রমে দেবদেবীর প্রতি বিশ্বাস জন্মিতে লাগিল। কিন্ত 
সকলেই বলে যে গুরু ব্যতীত উপায় নাই । ভাবিলাম, কেন উপায় নাই? 
এই তো ঈশ্বরের নাম রহিয়াছে, ঈশ্বরকে ডাকিলে কেন উপায় হইবে না? 
কিন্ত সকলেই বলে গুরু ব্যতীত উপায় হয় না। তবে গুরু কাহাকে 
করিব? শুনিতে পাই, গুরুকে ঈশ্বর জ্ঞান করিতে হয়; কিন্তু আমার 
সায় মনুষ্যকে ঈশ্বরজ্ঞান কিরূপে করি? মন অতি অশাস্তিপুর্ণ হইল। 
মানুষকে গুরু করিতে পারি না। 
“গুরুত্রন্গা গুরুবিষু গুরুদেবো মহেশ্বরঃ। 
গুরুরেব পরংব্রক্ধ তশ্মৈ শ্ীগুরবে নমঃ ॥৮ 


২৯৬ গিরিশচন্দ্র 


"এই বলিয়। গুরুকে প্রণাম করিতে হয়। সামান্ত মান্থষকে দেখিয়া 
তগ্ডামি কিরূপে কবিব? ঈশ্বরের নিকট অকপট হৃদয়ের প্রয়োজন, 
গুরুর সহিত ঘোব কপটতা কবিয়! কিরূপে তাহাকে পাইব ! যাক আমা'র 
গুরু হইবে না। বাব! তারকনাথেব নিকট প্রার্থনা করি, যদি গুরুর 
একান্ত প্রয়োজন হয়, তিনি কৃপা কবিয়৷ আমাব গুরু হোন । গুনিয়াছিলাম, 
নববেশ ধবিয়া কখনো কখনে। মহাদেব মন্ত্র দিয়া থাকেন। যদি আমার 
প্রতি তাহাব এরূপ কপ হয় তবেই। নচেৎ আমি নিরুপায়। কিন্তু 
তারকনাথের তো! কই দেখা পাই না, তবে আর কি করিব? প্রাতে 
একবার ঈশ্বরের নাম করিব, তার পর যা হয় হইবে। এ সময়ে একজন 
চিত্রকবের সঙ্গে আমার আলাপ হয়, তিনি একজন গৌড়ীয় বৈষ্ণব ছিলেন, 
সত্য হোক আর মিথ্যা হোক-_একদ্িন তিনি আমায় বলিলেন, "আমি 
প্রত্যহ ভগবানকে ভোগ দিই, তিনি গ্রহণ করেন, কখনো কখনে! রুটাতে 
দাঁতের দাগ থাকে, কিন্তু এভাগ্য গুরুর নিকট উপদিষ্ট না হইলে হয় 
না।” আমাব মন ঝড়ই ব্যাকুল হইল। তাহার নিকট হইতে চলিয়া 
গিয়া ঘরে দোববন্ধ করিয়। রোদন কারতে লাগিলাম। এ ঘটনার তিন 
দিন পবে আমি কোন কারণ বশতঃ আমাদের পাড়ার চৌরাস্তা একটা 
বকে বসিয়া আছি; দেখিলাম চৌরাস্তাব পূর্ব দিক হইতে নারায়ণ, আর 
ছুই একটা ভক্ত সমভিব্যাহাবে পরমহংসদ্দেব ধীরে ধীরে আসিতেছেন। 
আমি তীহাব দিকে চক্ষু ফিরাইবামাঞ্র তিনি নমস্কার করিলেন। সেদিন 
আমি নমস্কার করায় পুনর্ধবার নমস্কার করিলেন না। আমার সম্মুখ 
দিয়া ধীরে ধীরে চৌমাথার দক্ষিণ দিকের রাস্তায় চলিলেন। তিনি 
যাইতেছেন, আমার বোধ হইতে লাগিল, ধেন কি অজানিত হুত্রের দ্বারা 
আমার বক্ষঃস্থল তাহার দিকে কে টানিতেছে। তিনি কিছুদূর গিয়াছেন, 
আমাব ইচ্ছ! হইল তাহার সঙ্গে যাই। এমন সময় তাহার নিকট হইতে 


দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৯৭ 


আমায় একজন ডাকিতে আসিলেন, কে আমার স্মরণ হইতেছে না। 
তিনি বলিলেন, “পরমহংসদ্দেব ডাকিতেছেন ।” আমি চলিলাম, পরমতংসদেব 
৬বলরাম বাবুর বাঁটাতে উঠিলেন, আমিও তীহাব পশ্চাতে গিয়া বৈঠক- 
খানায় উপস্থিত হইলাম । ( তৎকালে বলরামবাবু দেহ পরিত্যাগ কবেন 
নাই।) বলরাম বাবু বৈঠকথখানায় গুইয়াছিলেন, বোধ হইল গীড়িত, 
পরমহংসদেবকে দেখিবামাত্র সসম্ত্রমে উঠিয়! সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত করিলেন। 
বিয়া বলরাম বাবুর সহিত ছুই একটা কথা বলিবার পর পরমহংসদেব 
হঠাৎ উঠিন্া, “বাবু আমি ভাল আছি-_বাবু আমি ভাল আছি*”__-বলিতে 
বলিতে কিরূপ এক অবস্থাগত হইলেন । তাহাব পর বলিতে লাগিলেন, 
“না না, ঢং নয়-ঢং নয়।» অল্প সময় এইরূপ অবস্থায় থাকিয়া পুনরায় 
আসন গ্রহণ করিলেন । আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “গুরু কি? তিনি 
বলিলেন, “গুরু কি জান,_-যেন ঘটক।” আমি ঘটক কথ ব্যবহাব 
করিতেছি, তিনি এই অর্থে অন্ত কথা ব্যবহার করিয়াছিলেন । আবাব 
বঝলিলেন__”তোমার গুরু হ'য়ে গেছে।” মন্ত্র কি?" জিজ্ঞাসা কবাতে 
বলিলেন,_ *ঈশ্বরেব নাম।” দৃষ্টান্ত দিয়। বলিতে লাগিলেন “রামানজ 
প্রতাহই প্রাতঃঙ্নান কবিতেন। ঘাটের মিড়িতে “কবীর, নামে এক 
জোল! গুইয়াছিল। রামানুজ নামিতে নামিতে তাহার শরীরে পাদস্পর্শ 
করায় সকল দেহে ঈশ্বরের অস্তিত্ব জ্ঞানে “রাম শব্ধ উচ্চারণ করিলেন। 
সেই রাম নাম কবীরের মন্ত্র হইল । আর সেই নাম জপ করিয়া কবীরেব 
সিদ্ধিলাভ হইল।” থিরেটারেরও কথ পড়িল। তিনি বলিলেন,_“আর 
একদিন আমায় থিয়েটার দেখাইও।” আমি উত্তর করিলাম, প্যে আজ্ঞে, 
যে দিন ইচ্ছা দেখিবেন।” তিনি বলিলেন, _পকিছু নিও।” বলিলাম, 
“ভালে আট আনা দিবেন” পরমহুংসদদেব বলিলেন,__“সে বড় ব্যাজল! 
জায়গা! |” আমি উত্তর করিলাম, “ন। আপনি সে দিন যেখানে বসেছিলেন, 


২৯৮ গরিশচন্দ্র 


সেইখানে বস্বেন।* তিনি ববিলেন, "না একটা টাকা নিও।» আমি 
“যে আজ্তে” বলায় একথা শেষ হইল। (স্থির হুইল-_“প্রহলাদচরিত্র 
দেখিতে যাইবেন।) 

বলরাম বাবু তাঁহার ভোগের নিমিত্ত কিছু মিষ্টান্ন আনাইলেন। তিনি 
একটা সন্দেশ হইতে কিঞ্চিৎ গ্রহণ করিলেন মাত্র। অনেকেই প্রসাদ 
ধারণ করিলেন । আমাবও ইচ্ছ' ছিল, কে কি বলিবে, লজ্জায় পারিলাম 
না। ইহার কিছুক্ষণ পরেই হরিপদ নামে এক ভক্তের সহিত পরমহংস- 
দেবকে প্রণাম করি৷ বলরাম বাবুব বাঁটা হইতে বাছিব হইলাম। পথে 
হরিপদ আমায় জিজ্ঞাসা করিলেন,_ “কেমন দেখিলেন 1” আমি বলিলাম 
-_-বেশ ভক্ত |” তখন আমার মনে খুব আনন্দ হইয়াছে; গুরুর জন্তে 
হতাশ আর নই । ভাবিতেছি গুরু করিতে হয় মুধে বলে। এই তো 
পরমহংন বলিলেন--“আমার গুরু হ/য়ে গিয়েছে ।” তবে আর কাব কথ! 
শুনি? 

প্যে কাবণ মনুস্তকে গুরু কবিতে অনিচ্ছুক ছিলাম, তাহা একরূপ 
বলিয়াছি, কিন্তু এখন বুঝিতেছি, যে, আমার মনের প্রবল দস্ত থাকায় 
আমি গুরু করিতে চাহি নাই। ভাবিতাম- এত কেন? গুরুও মানুষ, 
শিশ্যও মানুষ, তাহা নিকট জোড়হাত করিয়া থাকিবে, পদসেবা করিবে, 
তিনি যখন যাহা বলিবেন, তখন তাহ! যোগাইবে ; এ একটা আপদ 
যোটান মাত্র। পরমহংসদদেবের নিকট এই দস্ত চুর্ণ-বিচুর্ণ হইয়! গেল। 
থিয়েটারে প্রথমেই তিনি আমায় নমস্কার করিলেন, তাহার পর' রাস্তায় 
আমায় প্রথম নমস্কার করিলেন। তিনি যে নিরহঙ্কার ব্যক্তি, আমার ধারণ! 
জন্মিল এবং আমার অহঙ্কারও খর্ব হইল। তাহার নিরহস্কারিতার কথ! 
আমার মনে দিন দিন উঠে। 


দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ ২৯৯ 


সহ্য দস্প্নি 

“বলরাম বাবুর বাটীব ঘটনার কিছুদিন পরে আমি থিয়েটারের সাজঘরে 
বসিয়া আছি, এমন সময় শ্রদ্ধাম্পদ ভক্তপ্রবর শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ মজুমদার 
মহাশয় ব্যস্ত হইয়| আসিয়। আমায় বলিলেন, “পরমহংসদেব আসিয়াছেন।” 
আমি বলিলাম, “ভাল, বক্সেএ লইয়া গিয়া বসান।” দেবেন্দ্র বাবু 
বলিলেন, “আপনি অভ্যর্থনা করিয়া লইয়া! আসিবেন ন।?” আমি বিরক্ত 
হইয়! বলিলাম, আমি ন! গেলে তিনি আর গাড়ী থেকে নামতে পার্বেন 
না!» কিন্তু গেলাম। আমি পন্থছিয়াছি, এমন সময় তিনি গাড়ী হইতে 
নামিতেছেন। তাহার মুখপন্ম দেখিয়া আমার পাষাণ-হাদয়ও গলিল। 
আপনাকে ধিক্কার দিলাম, সে ধিক্কার এখনও আমার মনে জাগিতেছে। 
ভাঁবিলাম, এই পরম শান্ত ব্যক্তিকে আমি অভ্যর্থন করিতে চাহি নাই ? 
উপবে লইয়া যাইলাম। তথায় শ্রীচরণ স্পর্শ করিয়। প্রণাম করিলাম । 
কেন যে করিলাম, তাহ! আমি আজও বুঝিতে পাবি না। আমার 
ভাবাস্তব হইয়াছিল নিশ্চয়, আমি একটা প্রস্ফুটিত গোলাপ ফুল লইয়৷ 
তাহাকে দিলাম। তিনি গ্রহণ করিলেন, কিন্তু আমায় ফিরাইয়া 
দিলেন, বলিলেন,_“ফুলের অধিকার দেবতার আব বাবুদেব, আমি কি 
কবিব ?* 

ড্রেস সার্কেলের দর্শকেব কনসার্টের সময় বসিবার জন্ত ষ্টার 
থিয়েটারেব দ্বিতলে, স্বতন্ত্র একটা কামরা ছিল। সেই কামবায় 
পবমহংসদেব আমিলেন। অনেকগুলি ভক্ত তাহার সহিত আসিলেন। 
শবমহংসদেব একখানি চৌকিতে বদিলেন, আমিও অপর এক চৌকিতে 
বসিপাম। কিন্তু দেবেন বাবু প্রভৃতি ভক্তের অপর চৌকি থাকা সব্বেও 
বসিতেছেন না । দেবেন বাবুর সহিত আলাপ ছিল। আমি পুনঃ পুনঃ 
বলিতে লাগিলাম, “বন্থন না ।৮ কিন্তু তিনি অসম্মত। কারণ বুঝিতে 


৩০৩ গিরিশচন্দ্র 


পারিলাম না । আমাব এতদুব মুত ছিল যে গুরুব সহিত সম আসনে 
বগিতে নাই, ইহ! আমি জানিতাম না। পরমহংসদেব আমার সহিত 
নানা কথ। কহিতে লাগিলেন। আমাব বোধ হুইতে লাগিল, যে কি 
একটা স্রোত যেন আমাব মস্তক অবধি উঠিতেছে ও নামিতেছে । ইতিমধ্যে 
তিনি ভাব নিমগ্ন হইলেন। একটী বালক ভক্তেব সহিত ভাবানস্থায় যেন 
ক্রীড়া করিতে লাগিলেন। বহু পূর্বে আমি এক হূর্দান্ত পাষ্ডের নিকট 
পবমহংসদেবের নিন্দা শুনিয়াছিলাম, এই বালকের সহিত এইরূপ ক্রীড়া 
দেখিয়া আমার সেই নিন্দার কথ! মনে উঠিল। পবমহংসদেবেব ভাব ভঙ্গ 
হইল। তিনি আমার লক্ষ্য করিয়া বলিলেন,_”তোমাবৰ মনে বাঁক 
( আড়) আছে।” আমি ভাবিলাম, অনেক প্রকাব বাক তে। আছেই 
বটে, কিন্তু তিনি কোন বাঁক লক্ষ্য কবিয়া বলিতেছেন, তাহা বুঝিতে 
পাবিলাম ন1। জিজ্ঞানা কবিলাম,--প্বাক (আড়) যায় কিসে?” 
পবমহংসদেব বলিলেন-_“্বিশ্বাস করে৷ 1” 


মি দস্পন্নি 


"আবাব কিছুদিন গত হইল, আমি বেল! তিনটাব সময় থিয়েটাবে 
আসিয়াছি, একটু চিবকুট পাইলাম, যে মধুবায়েব গলিতে রামচন্দ্র দত্তেব 
ভবনে পবমহংসদেব আমিবেন। পড়িবামাত্র আমাদেব পাড়ার চৌরাস্তায় 
বিয়া আমাব হৃদয়ে যেরূপ টান পড়িয়াছিল, সেইরূপ টান পড়িল। আমি 
যাইতে ব্যস্ত হইলাম, কিন্তু আবার ভাবিতে লাগিলাম, যে অজানিত 
বাটাতে বিন! নিমন্ত্রণে কেন যাইব? এ অজানিত হুত্রেব টানে সে বাধ! 
রহিল না। চলিলাম, অনাথ বাবুর বাজারের নিকটে গিয়া ভাবিলাম-_ 
যাইব না। ভাবিলে কি হয়, আমায় টানিতেছে। ক্রমে অগ্রসর হই 
আর থামি। রামবাবুর গলির মোড়ে গিয়াও থামিলাম। পরে রাম: 


দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩০৬ 


বাবুব বাড়ী গিয়া প্ছছিলাম। দোরে রামবাবু বসিয়। আছেন। ভক্ত- 
চূড়ামণি সুরেন্ত্রনাথ মিত্রও ছিলেন। স্থরেন্্রবাবু আমায় স্পষ্টই জিজ্ঞাসা 
কবিলেন, “কেন আমি তথায় গিয়াছি ?” আমি বলিলাম, “পরমহংস- 
দেবকে দর্শন করিতে ।” রামবাবুর বাড়ীর নিকটেই স্থুরেন্দ্র বাবুর বাটা। 
তিনি তথায় আমায় লইয়া গেলেন এবং তিনি কিরূপে পরমহংস- 
দেবের ক্ক্প৷ পাইয়াছেন, তাহ! আমায় বলিতে লাগিলেন। আমার 
সে সব কথা ভাল লাগিল না। আমি তীহারই সহিত রামবাবুর বাটাতে 
ফিরিয়! আসিলাম । 

তখন সন্ধা! হইয়াছে, রামবাবুর উঠানে, রামবাবু খোল বাজাইতেছেন, 
পবমহংসদদেব নৃত্য করিতেছেন, ভক্তেরাও তীহাকে বেড়িয় নৃত্য 
কবিতেছেন। গান হইতেছে, “নদে টল্মল্‌ টল্মল্‌ করে গৌর- 
প্রেমেব হিল্লোলে!”  আমাব বোধ হইতে লাগিল, সত্যই যেন 
রামবাবুব আঙ্গিনা টল্ষল্‌ করিতেছে । আমার মনে থেদ হইতে 
লাগিল, এ আনন্দ আমাব ভাগ্যে ঘটিবে না। চক্ষে জল আসিল। 
নৃত্য করিতে করিতে পরমহংসদেব সমাধিস্থ হইলেন, ভক্তের! পদধুলি 
গ্রহণ কবিতে লাগিলেন, আমার ইচ্ছ। হইল- গ্রহণ কবি, কিন্তু লঙ্জায় 
পাবিলাম না। ভাবিলাম, তাহার নিকটে গিয়া পদধূলি গ্রহণ করিলে 
কে কি মনে কবিবে। আমার মনে যে মুহুর্তে এইরূপ ভাবের উদয় 
হইল, তৎক্ষণাৎ পরমহংসদেবেব লমাধি ভঙ্গ হইল ও নৃত্য করিতে 
করিতে ঠিক আমার সম্মুথে আসিয়। সমাধিস্থ হইপেন। আমার আব 
চবণ-্পর্শেব বাধ! রহিল না। পদধুলি গ্রহণ করিলাম। সংকীর্ভনের পর 
পবমহংসদেব রামবাবুব বৈঠকথানায় আনিয়া বদিলেন। আমিও 
উপস্থিত হুইলাম। পরমহংঘদেব আমারই সহিত কথা কহিতে 
লাগিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “আমার মনের বাক (আড়) 


৩০২ গিরিশচন্দ্র 


যাইবে তে?” তিনি বলিলেন--'যাইবে ।” আমি আবার এ কথা 
বলিলাম। তিনি এ উত্তর দিলেন। আমি পুনর্ধার জিজ্ঞাস! করিলাম, 
পরমহংসদেবও শ্রী উত্তব দিলেন। কিন্তু মনোমোহন মিত্র নামে একজন 
পরমহংসদেবের পবম ভক্ত কিঞ্চিৎ বুঢ়স্বরে আমাম়্ বলিলেন,__প্যাও 
না, উনি বল্লেন, আর কেন ওঁকে ত্যক্ত কচ্ছ? এরূপ কথার 
উত্তর না দিয়া আমি “ইতিপূর্বে কথন” ক্ষান্ত হই নাই । মনোমোহন 
বাবুব পানে ফিবিয়া চাহিলাম, কিন্তু ভাবিলাম--ইনি সত্যই বলিয়া- 
ছেন; যাহার এক কথায় বিশ্বাস নাই, তিনি শতবার বলিলেও তো 
তাহার কথ! বিশ্বাসেব যোগ্য নয়। আমি পরমহংসদেবকে প্রণাম 
কবিয়া থিয়েটাবে ফিরিলাম।  দেবেনবাবু কিয়দ্ব আমার সঙ্গে 
আমিলেন, ও পথে অনেক কথ বুঝাইয়। আমায় দক্ষিণেশ্বরে যাইতে 
পরামর্শ দিলেন ।, 


গুম দস্পম্ন 


"এই ঘটনার কিছুদিন পবে একদিন দক্ষিণেশ্ববে যাইলাম। উপস্থিত 
হইয়া দেখি, তিনি দক্ষিণদিকের বারাগায় একখানি কম্বলের উপর 
বসিয়। আছেন, অপর একখানি কম্বলে ভবনাথ নামে একজন পবম 
ভক্ত বালক বসিয়া তাহার সঙ্গে কথা .কহিতেছেন। আমি যাইয়। 
পরমহংসদেবের পাদপদ্মে প্রণাম করিলাম। মনে মনে “গুরত্র্া 
ইত্যাদি”-_এই স্তবটাও আবৃত্তি করিলাম। তিনি আমায় বসিতে 
আদেশ করিলেন এবং বলিলেন,_-”আমি তোমার কথাই বলিতে- 
ছিলাম; মাইরি, একে জিজ্ঞাসা কবো'।” পবেকি উপদেশের কথ৷ 
বলিতে আরম্ভ করিলেন। আমি তাহাকে বাধ! দিয়। বলিলাম, আমি 
উপদেশ শুনিব না, আমি অনেক উপদেশ লিথিয়াছি, তাহাতে কিছু 


দ্বাত্রিংশ প্ররিচ্ছেদ ৩০৩ 


হয় না। আপনি যদি আমার কিছু করিয়! দিতে পারেন, করুন|” 
এ কথায় তিনি সন্তুষ্ট হইলেন। রামলাল দাদ! উপস্থিত ছিলেন,__ 
তাহাকে বলিলেন,_-“কিরে__কি শ্লোকট।৷ বলতো? রামলাল দাদা 
শ্লোকটী আবৃত্তি করিলেন, _ক্লেকের ভাব- -প্পর্বত-গহবরে নির্জনে 
বসিলেও কিছু হয় না, বিশ্বাই পদার্থ। আমার তখন মনে 
হইতেছে__মামি নির্মল। আমি ব্যাকুল হইয়া জিজ্ঞাস করিলাম-_ 
"আপনি কে?” আমাব জিজ্ঞাসাব অর্থ এই, যে, আমার স্তায় 
দাস্তিকেব মস্তক কাহার চরণে অবনত হুইল। এ কাহাব আশ্রয় 
পাইলাম__যে আশ্রয়ে আমার সমুদয় ভয় দুর হইয়াছে। আমার 
প্রশ্নের উত্তরে পরমহংসদেব বলিলেন,__”আমায় কেউ কেউ বলে-_ 
আমি রামপ্রনাদ, কেউ বলে-_রাজ! রামকৃষ্চ,-আমি এইথানেই 
থাকি” আমি প্রণাম করিয়া! বাটাতে ফিরিতেছি, তিনি উত্তরের 
বাবাণ্ড অবধি আমাব সঙ্গে আসিলেন। আমি তখন তাহাকে 
জিজ্ঞাসা করিলাম,__“আমি আপনাকে দর্শন করিয়াছি, আবার কি 
আমায় যাহা কবিতে হয়, তাহা করিতে হইবে ?* প্ঠাকুর বলিলেন,__ 
“তা করে৷ না1* তীহার কথায় আমাব মনে হইল, যেন যাহা কবি, 
তাহা কবিলে দোষ স্পশিবে ন!। 

“তদবধি গুরু কি পদার্থ, তাহার কিঞ্চিৎ আনাম আমাব হাদয়ে 
আদিল, গুরুই সর্বস্ব আমাব বোধ হইল। ধাঁহার গুরু আছেন, 
তাহাব উপত্থ পাপের আব অধিকার নাই। তীাহাব সাধন-তজন 
নিম্পয়োজন। আমার দৃঢ় ধাবণ| জন্মিল-__-আমার জন্ম ঘফল। 

ইহার পব অনেক ঘটন! ঘটিয়াছে, এই যে পরম আশ্রয়দাতা, 
ইহার পুজা আমাব দ্বারা হয় নাই। মদ্যপান করিয়া ইহাকে গালি 
দিয়াছি। শ্রীচরণ সেবা করিতে দিয়াছেন-_ভাবিয়াছি--এ কি আপদ। 


৩০৩৪ গিরিশচন্দ্র 


কিন্ত এ সকল কার্য করিয়াও আমি ছুঃখিত নই। গুরুর কৃপায় 
এ সকল আমার সাধন হইয়াছে । গুরুর কৃপায় একটী অমূল্য রত্ব পাইয়াছি। 
আমার মনে ধাবণ। জন্মিয়াছে যে, গুরুর কপ আমার কোন গুণে 
নহে। অহেতুকী কৃপাসিদ্ধর অপার ক্কুপা, পতিতপাবনেব অপাব 
দয়া সেই জন্ত আমায় আশ্রয় দিয়াছেন। আমি পতিত, কিন্তু 
ভগবানেব অপার করুণ, আমার কোন চিন্তার কারণ নাই। জয় 
রামকৃ্চ !” 


ব্রয়োত্রিংশ পরিচ্ছেদ 


সা-ভ্ক্ত্ি শুলাল্তরেন্র সুগ্গ 


শ্ীবৎস-চিন্তা+ অভিনয়েব পর পৌরাণিক নাটকাঙিনয়ের যুগ 
শেষ হয়। এই যুগে নাটকে নৃত্য-গীত পূর্ববাপেক্গ! অনেক বাড়িয়া 
গিয়াছিল এবং অভিনয-প্রথারও কতকটা পরিবর্তন ঘটিয়াছিল। 
ন।ট্যাচার্য্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্থু মহাশয় বলেন,__“এই যুগেই দর্শকের 
রুচিপরিবর্তনের একট! মহা সন্ধি্থল।” তাহাব পর “চৈতন্তলীণার, 
অভিনয় হইতেই বঙ্গনাটাশালায় ছরিনামের যুগ আরম্ভ হয়। এই 
যুগেই গিরিশচন্দ্রেব__প্রহলাদচরিত্র, নিমাই-সন্যাস, প্রভাস-যজ্ঞ, বিন 
মঙ্গল ঠাকুর ও রূপ-সনাতন নাটকগুলির অভিনয় হইয়া থাকে । এই সময়ে 
বুদ্ধদেব-চরিত নাটক এবং বেল্লিকবাজার নামক একধানি পঞ্চরং 
রচিত হইয়া অভিনীত হইয়াছিল__-অবণই এই ছইখানি ভিন্ন রসাত্মক | 
আমর! সংক্ষেপে নাটকগুলির পরিচয় প্রদান করিতেছি ।__ 


ব্রেয়োত্রিংশ পারচ্ছেদ ৩৩৫ 


। ,শ্রহলাদ চেল্ভ্িভ্র ' 

“চৈতন্তলীলা'র” পব গিবিশচন্ত্র দুই অঙ্কে সমাপ্ত পপ্রহ্লাদচবিত্র' নাটক 
রচনা কবেন। ৮ই অগ্রহায়ণ (১২৯১ সাল) প্রহলাদচবিত্র এবং 
নাট্যাচারধ্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থ প্রণীত “বিবাহ বিভ্রাট” প্রহসন ষ্টাব 
থিয়েটাবে, প্রথম অভিনীত হয। প্রহলাদচরিত্র সংক্ষিপ্ত ন্কাবে লিখিত 
হওয়া, হিবণ্যকশিপু এবং প্রহলাদ-_-এই ছুইটা চবিত্রই বিশেষরপ প্রস্ফাটিত 
হইয়াছিল। স্বর্গীয অমৃতলাল মিত্র এবং শ্রীমতী বিনোদিনী হিব্যকশিপু 
ও প্রহলাদেব ভূমিকা অতি স্তুন্দব্ূপ অভিনয় কবিষাছিলেন। * ষ্টারে 

£ ৩০ শে অগ্রহায়ণ তারিখে ্ীনএামকুকণ পরনহংলদব ভক্তগণ সঙ্গে ঠার থিয়েটা'র 
“প্রচ্লাৰ চরিত্র" অ'ভনন্প দর্শনে আনিয়াছিলেন | গিরিশচন্দ্রের সহিত তাহার এইরূপ 
কথাব্ত। হইউযাছিল ৫ 

“শ্রীরামকৃষ্ণ ( সহান্তে )। ব! তুমি বেশ দব লিখেছে! ! 

গিগিশ | মহাশর, ধারণ! কই? শুধু লিখে গ্েছি। 

ভীএামরুঞ্চ। ন।, শোমার ধারণ। আছে। দেদিন তে! তোমায় বল্লাম, ভিতরে ভক্তি 
না থ'কৃলে চাল ত্র আক। যায় না-_ 

গিরিশ । মনে হয়, থিয়েটার গুলো আর কর! কেন। 

ভী।ীনকৃষ্ণ। না না, ও থাক্‌, ওতে লোৌকশিক্ষা। হবে। 

শিরিশ । * * * কি রকম দেখলেন? 





জীবামকুদ্ট। দেখলাম, সাক্ষাৎ তিনিই সব হ'য়েছেন। যার! সেজেছে, তাদের 
দেখলাম, সাক্ষাৎ আননাময়ী মা । যার! গোলকে রাখাল সেজেছে, তাদের 
দেখলাম, সাক্ষাৎ নারাঃণ | তিনিই সব হয়েছেন। 

গিরিশ । * « *« আর কর্্বই ঝা কেন? 

শীরামকুঞ্চ । না গো, কর্ম ভাল । জমি পাট কর! হ'লে যা রুইবে, তাই জন্মাবে। 
তবে কন্ম নিধামভাবে কত্ত হয়। দস তুমি পরের চন্য রাখবে। 

গিরিশ। আপন তবে অ'শীর্বাদ করুন।” ইতাদি 

ুম-কধিত “প্রঃীরামকৃঞ্ণ কথামৃত, ৩য় ভাগে” বিস্তারিত বিবরণ স্রষ্টব্য। 
২৩ 


€৩৬ গিরিশচন্দ্র 


“চৈতন্যলীলা*ব অভাবনীয় কৃতকাধ্যত। দর্শনে বেঙ্গল থিয়েটারও এই সময় 
করিবর রাজকুষ্ণ বায়-বিবচি 5 “প্রহলাদচবিভ্রঁ অভিনয় করেন। ভক্তিরমাত্মুক 
“চৈতন্তলীলার পর পাছে «প্রহ্ছাদচরিত্রঁ একই রূপ হইয়া যায় এ নিমিত্ত 
গিবিশচন্দ্র ইহাতে অধিক সংকীর্তনাদি না দিয়া ইহাকে অনেকটা! পাশ্চাত্য- 
শিক্ষিত দর্শকগণেব রুচি-উপযোগী করিয়া রচনা কবেন। হিরণ)কশিপুব' 
চিত্রাঙ্কনে তিনি অদ্ভুত কৃতিত্বের পরিচয় দিয়াছিলেন। কিন্ত 
“চৈতন্তলীলাব” অভিনয়ে দেশ তখন: হবিনামে মাঁতিয়। উঠিয়াছে ৮ 
গিধ্শিচন্দ্েব উচ্চ নাট্যকলা শিক্ষিত-সমাঁজে সমাদৃত হইলেও সাধাবণ দর্শক 
তাহাতে তেমন তৃপ্তিলীভ কবিতে পাবিল না। বেঙ্গল থিয়েটারে 
অভিনীত প্রহলাদচরিত্রে প্রচুব সংকীর্তন, প্রহলাদের মুখে সহজ কথা ও 
ভক্তিবসাত্মক সঙ্গীতে-বঙ্গেব নব্"নাবী সাধারণের সংস্কাবগত ভক্তির, 
উৎস মুক্ত কবিয়া দিয়াছিল। আবাব ষণ্ড ও অমার্কের নিম়শ্রেণীব 
হান্যরসের তবতাবণায় এবং সাপুড়িয়। প্রভৃতিব গতে বঙ্গালয়ে হাসিব তবঙ্গ 
ছুটিতে থাফিত। কুন্মকুমাঁবী নামে এক অভিনেত্রী বেঙ্গল থিয়েটারে 
প্রহলাদেব ভূমিক! অভিনয় কবিতেন,_-তাহাব দ্ুমধুব সঙ্গীতে দর্শকগণেব 
কর্ণে যেন স্ুুধাবর্ষণ করিত। সেই হইতে প্রহলাদ কুধা” নামে তিনি 
সাধাবণের নিকট পবিচিতা হইয়াছিলেন। শ্রীমতী বিনোদিনী ও তিভা- 
পালিনী অভিনেত্রী হইলেও সেরূপ গায়িকা ছিলেন না। যাহাই হউক 
গ্রহলাদচবিত্র অভিনয়ে বেঙ্গল থিষেটাবই সাধাবণেব অধিক গ্্রীতি আকর্ষণ 
করিয়াছিল । ট্টাব থিরেটাবে “বিবাঁহ-বিত্রাটেব' সুখ্যাতি কিন্তু অপরিসীম, 
হইয়াছিল। এই চিবনৃতন প্রহমনখানির পৰিচয় প্রদান বাহুল্য মাত্র । 


ন্বিহাা ইশ্দজ্যানন 


প্রহলাদচরিত্রের পব “নিমাইসন্ন্যাম” । চৈতন্তলীল! দ্বিতীয় ভাগ । ঠার 


ত্রয়োত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩০৭ 


থিয়েটারে ১৬ই মাধ (১২৯১ সাল ) প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় 
বজনীর অভিনেতৃগণ £__ 

নিমাই--শ্রীমতী বিনোদিনী, নিতাই-_শ্রীমতী বনবিহারিণী, প্রতাপরুদ্র 
_-প্রবোধচন্দ্র বোষ, রায় রামানন্ম-_উপেন্দ্রনাথ মিত্র, কেশব ভাবতী-__ 
অস্বতলাল মিত্র, সার্বভৌম-+অঘোরনাথ পাঠক, অদ্বৈত__নীলনাধব 
চক্রবন্তী, হ'বদাস-_-মবিনাশচন্দ্র দাস, মুকুন্দ শ্রীযুক্ত কাণনাথ 
চট্টোপাধ্যায়, চন্ত্রশেখর মহেন্দ্রনাথ চৌধুবী (মা্টীব ), সার্বভৌমের 
শি্বদ্ধয - বেলবাবু ও শ্রীযুক্ত পরাণকষ্ শীল, সার্ব্বভৌমেব জাধাতা- অতুল 
চন্দ্র মিত্র ( বেডোল ), নট _ রামতাবণ সান্যাল, শচী-_গঙ্গামণি, বিষ্ুপ্রিয় 
__ভূষণকুমীরী, মালিনা ও ধোপানী- ক্ষেত্রমণি ইত্যাদি। 

চৈতন্ত ীলার অশনর দঘনে “অমৃতবাঁজাঁব পত্রিক।' সম্পাদক পবম 
বৈষ্ণব স্বর্গীয় শিশিবকুমাঁব ঘোষ মভাঁশয় মুগ্ধ হইয়া গিবিশচন্্রকে “নিমাই- 
সন্্যাস' লি'বাব নিমিত্ত বিশেষরূপ উৎসাহিত কবিয়াছিলেন এবং গ্রন্থ বচন৷ 
কালে মহাপ্রহ্বব লালার যে আধ্যাত্মিকভাব তাহার নিজেব প্রাণে ছিল, 
সেই ভা্টী বাহাতে গিরিশচন্দ্রেব লেখনী দ্বাবা নাটকে প্রকটিত হয়, 
তন্নিমত্ত বিশেষ যত্ত্রবান হইয়াছিলেন। নাট্যাচাধ্য অমৃতলাল বাবু বলেন, 
_-”বোধ হর এই গুড আধ্যাত্মিক ভাবেব আধিক্য--আঁনয়ে তেমন 
অভিব্যন্ত হয় নাই বা হওয়া! সম্ভব নহে, এবং সেই ভাব সাধাবণ দর্শকের 
পক্ষে উপলঙঞ্জি কবাও কঠিন হইক্লাছিল, এই নিমিত্তই চৈতন্যলীলাব স্ঠায় 
“নিমাইসন্ন্যা+ সর্ধজন সমাদৃত হর নাই। এই নাটকেব গানগুলি দীর্ঘ 
হইলেও বড়ই মর্মম্পর্শী। পুবীধামে প্রবেশকালীন দৃবে শ্রমন্দিবেব চূড়া! 
দেখিয়। যখন নিতাই ও ভক্তগণ বিভোবন্গাবে গাহিতে লাগিলেন 
--্দেখ দেখ কানাইয়ে আখি ঠাবে ওই!” শ্রীশ্ীবামকৃষ্দেব 
একদিন থিরেটাঁৰব দেখিতে আসিয়া এ সময়ে ভাবাবি্ হইয়! 


৩৪৮ গিরিশচন্দ্র 


পডেন। অভিনপানস্তে তিনি গিরিশচন্দ্রকে উন্মন্তভাবে আলিঙ্গন 
কবিয়াছিলেন। 


শ্্ভাস্ন ভন 


“নিমাই সন্যাসেব পর ২১শে বৈশাখ (১২৯২ সাল) প্রভাস যজ্ঞ নাটক 
ষ্াবে প্রথম অভিনীত হয। প্রথম অভিনষ বজনীব অহিনেতৃগণ £__ 

বহ্থদেব_ শ্রীবুক্ত অমৃতলাল বন্গ, নন্দ-_ শ্রীযুক্ত উপেন্দ্রনাথ মিত্র, শ্রীকৃষ্ণ 
_-বেল বাব্‌, বলবাম-_প্রবোধচন্ত্র ঘোষ, ব্রহ্া__নীলমাঁধব চক্রবর্তী, নাবদ 
_-অবোধনাথ পাঠক, আয়ান--শ্তামীচবণ কু, শ্রীদাম_ রামতাবণ 
সান্নালঃ স্থদাম-_ শ্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়। যখোদা__গঙ্গামণি, 
বাধিকা-শ্রামতী বনবিহাব্ণী, সত্যঙামা-_শ্রীমতী বিনোদিনী, বিশাখ। 
কুন্ুমকুমাবী ( খোঁড়া ), জটিলা _ ক্ষেত্রমণি ইত্যাদি । 

গপ্রভংস যজ্ঞ” বিষয়টী একেই গভীব করুণবসাত্মক» তাহাঁৰ উপব 
গিবিশচক্্রেব রসমাধূর্য এবং ভাঁষাব লাঁলিত্যে নাটকথানি বডই হৃদয়ভেদী 
হইয়াছিল । বযশোদা, বাধিকা এবং বাখালবাঁলকগণেব গীতগুলি পাঠ 
কবিলেও পাষাণহদয বিদীর্ণ হইয়া যায় । এই নাটক বচনার গিবিশচন্ত্র 
বিশেষকূপ কৃতিত্বেব পবিচয় দরিয়াছিলেন, কিন্তু ইহাব অভিনয় সেবপ 
সাফল্যমগ্ডিত হয় নাই। শ্রীকৃষ্ণ বলবাম, শ্রীদাম, আদ্দাম প্রভৃতিব 
ভূগিকা বেলবাবু, প্রবোধ বাবু, রামতারণ বাবু, কাণীনাথ বাবু প্রভৃতি 
অধিকবস্ক অভিনেতাব! গ্রহণ কবাষ দর্শকগণেব চক্ষে বড়ই বিসদৃশ 
ঠেকিয়াছিল। বেঙ্গল থিয়েটারেও এই সময় নাট্যাঁচাধ্য বিহাবীলাল 
চট্রোপাধ্যায়-বিবচিত প্রভাস মিলন” অভিনীত হয়। ইহাবা শ্রীকৃষ্ণ 
বলরাম ও বাখাঁলবাঁলকগণেব ভূমিকা অভিনেত্রীগণ কর্ক অভিনয় 
কবাইয়! ষ্টার থিয্টোর অপেক্ষা দর্শকগণেব অধিকতর সহানুভূতি লাভ 


ত্রযোত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩০৯ 


কবিযাঁছিলেন। বহৃকাল পরে মিনার্ভা থিযেটারে স্থগ্রসিদ্ধ অভিন্তো 
শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেব মহাশয়ের উৎসাহে গিবিশন্দ্রেব “প্রহাঁস বজ্ঞ” 
পুনবভিনীত হয। স্ুবিধ্যাতা অভিনেত্রী তিনকড়ি দাসী বশোদাবঃ 
স্ুধাকন্ঠ গাবিকা স্ুশীনাবাঁলা শ্রীক্কষ্ণেব এবং শ্রীমতী হিঙ্গনবাল! (হেনা ) 
বাঁধিকাব ভূনিক| অভিনয কবিযাছিলেন ) বাখালবালকগণ অবগই বালিকা 
অছিনেত্রীগণ কর্তৃক অভিনীত হইযাঁঠিল। অশ্রভাবাক্রীন্ত নযনে দণকগণ 
প্রথন হইতে শের পর্যযন্থ নাটকের অভিনয দেখিয়াছিলেন এবং একবাক্যে 
উহাঁব প্রশংসা কবিষাছিলেন। প্রন্গাস যাত্র/কাঁলে বাঁধিকার মগিগণেব 
একথানি গীত এই নাটককে চিবন্মবণীব কধিষা বাখিযাঁছে। এমন বাঙ্গালী 
খুব কমই 'আছেন-__বিনি প্রভীসবজ্ঞেব এই গানটা জানেন না বা শোনেন 
নাই, তখনকা নব 'দনে কাপডেব পাঁড়েব উপন পধ্যন্ত এই গানটি উঠিবাছিল। 
গানখানি এই১_-“চললে! বেল! গেললো, দেখবো বাধা শ্যানেব বামে” 
ইত্যা্দি। 


লুদসুদন্ চেল্লিভ্ড 


৪টা আশ্বিন (১২৯২ সাল) “বুদ্ধদেব চবিত” নাটক ষ্রাব থিষেটাবে 
প্রথম অভিনীত হয। প্রথমাভিনয় বজনীব অভিনেত্ৃগণ £_- 

সিদ্ধার্থ (বুন্ধদেব)__-অমৃতলাল মিত্র, শুদ্ধোদন-_শ্ীযুক্ত উপেন্দ্রনীথ মিত্র, 
গণকদ্ধয এবং সিন্ধার্থেব শিল্পদ্ধয-_শীষুক্ত অমৃতলাল বনু ও বেলবাবু, বিষ্তু ও 
সত্রী--শ্রীযুক্ত কানীনাথ চট্টোপাধ্যায়, বাছুল-_শ্রীমতী পুঁট্বাণী, ছন্দক-__ 
বেলবাবু, শ্রীকালদেবল ও কাশ্ঠপ-_মহেন্দ্রনাথ চৌধুবী, ব্রাহ্ষণ- নীলমাধব 
চক্রবর্তী, বিভ্ষক-_শিবচন্ত্র ভট্টাচার্য, নালক-_বাণুবাবুঃ বিশ্বিগাব ও 
বণিক-__প্রবোধচন্জ্র ঘোষ, মার-__অধোবনাথ পাঠক; আত্মবৌধ, দয়া ও 
পুক্রহাবা রমণী-_ক্ষেত্রমণি, সন্দেহ_-অবিনাশচন্ত্র দাস, মন্ত্রী_-ত্রেলোক্যনাথ 


৩১০ গিরিশচন্দ্র 


ঘোঁষাল, বাখাল-_অন্গুকুলচন্দ বটব্যাল, কগ্র-শ্রীযুক্ত পবাণকৃষ্ণ শীল, 
ম্ামাযা_ শ্রীমতী বনবিহাবিণী, গৌতমী-_গঙ্গামণি, গোপা- শ্রীমতী 
বিনোদিনী, সুজাতা-__প্রমদাস্ন্দরী, পূর্ণ ও বাণীব সখী- কুস্থমকুমাবী 
[ খোঁড! 7 দ্েববালাদ্ধধ-_কুস্থমকুমাঁবী ( খোড়া ) ও ভূষণকুমাৰী ইত্যাদি। 

বুদ্ধদেব চবিত ব্চনায় গিবিশ্চন্ত্র যেরূপ তীহাঁৰ অসামান্য কৃতিত্বের 
পবিচব দিধাছিলেন, ইহাঁব অভিনয়ও সেইরূপ সর্ধাঙ্গনুন্দব হইয়াছিল। 

“সিদ্ধার্থ-বেশী অমৃতলাল মিত্র_ তাহার অম্বতকণ্ঠে দর্শকমণ্ডলীব কর্ণে যেন 
অমৃতেব ধাঁ! বর্ষণ কবিতেন। চৈতন্তলীলাৰ অভিনযে দেশবাসীব হৃদবে 
যেরূপ একটা প্রেমানন্দেব উচ্ছ্বাস তবঙ্গীয়িত হইয়াছিল, বুদ্ধদেব চবিত 
অভিনবেও সেইরূপ শীম্তবসেব উৎস ছুটিযাছিল। এই নাঁটকেব 
“জুডাইতে চাই কোথায় জুডাই, কোথা হ'তে আমি কোথা ভেসে যাই” 
বৈবাগাপুর্ণ গীতটী গিবিশচন্ত্রকে অমব কবিয়৷ রাখিয়াছে। গানখানি 
শ্ীশ্রীবাম দেবে পবম প্রিয় ছিল। এই গীতিখাঁনি গাহিতে গাঁহিতে 
বিবেকানন্দ স্বামী আত্মহাবা হইয়া যাঁইতেন। * 

৯». স্বামী বিবেকানন্দের মধামত্রাতা অদ্ধাল্পদ ছুক্ত মহেজ্জনাথ দত্ত সহায় তাহার 
প্ভ্রীমৎ বিবেকানন্দ প্বমিজীর জীবনের ঘটনাবলী” গ্রন্থে লিখিয়'ছিলেন ২ “নরেন্ত্রনাথ 
(বিবেকানন্দ) যখন এই গানটী গভীর রা'ত্রতে শষাত্যাগ করিয়া সিমলার গৌরমোহন 
মুখাজ্জাঁর স্বীটস্থ বাড়ীর দালানে আপনার মনে পায়চারি করিতে করিতে গাহিতেন, তখন 
তাষ্কার যুগ তইতে গানটী এমন শ্রুতিমধূর হইত যে বাড়ীর আশেপাশের ঘরের নিন্রিত 
বাক্তির! নিদ্রাত্যাগ করিয়! স্থির হইয়। গুনিতেন। অুরতাল রাগের কথা নভে, কিন্ত 
ভিতরের প্রাণ থেকে ঠিক নিজের অবস্থাটা! প্রকাশ করিয়৷ তিনি জীবস্তঙাবে গানটা 
গ্রাহিতেন। বাহার! নরেন্ত্রনাথের মুখে ব্রান্িতে গেই গান শুনিতেন, তাঠাদের তখন 
আর বাহজ্ঞান কিছু থাকিত না--সংসারের মায়! মমতা] ভূলিয় গিয়া কোথায় এক অসীম 
জগ্নতে গ্রাবেশ কারতেন। এই গানটা বরাহনগর মঠে সকংদাই গীত হইত।” (ওর ভাগ, 


৯৬ পৃষ্ঠা )। 


ভ্রযোত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩১৯ 


৬শাবদীয় পৃজাব অব্যবহিত পূর্বে, এই নাইকের অভিনয় দর্ণনে 
বাগবাজাবেব স্থপ্রসিদ্ধ জমীদাব স্বর্গীয় রায় নন্দলাল বস্থ মহাশয়ের 
জীবহিংসায় এতদুব বিবাগ জন্মিয়াছিল যে, সেই বৎসব হইতেই তিনি 
তাহাব ব'টাতে এপুজ্জায় বলি বন্ধ কবেন এবং বলিব নিমিত্ত সগ্যক্রীত 
ছাঁগগুলিকে মুক্ত কবিয়! দিয়াছিলেন। 

কলিকাতাব জনৈক লক্বপ্রতিষ্ঠ চিকিৎসক পুত্রশোকাতুব হইয়া! ক্ষণিক 
মন্যমণন্ক হইবাব নিমিত্ত “বুদ্ধদেব অভিনয দেখিতে আপিয়াছিলেন। 'বুন্ধদেব 
চবিতে, বণিত আছে, জনৈক পুত্রহাবা বমণী বুদ্ধদেবে নিকট আসিয়া মৃত 
পুত্রেব জীবন প্রার্থনা কবা, বুদ্ধদেব বলেন,”-_-“যে বাটাতে মৃত্যু হয় নাই__ 
সেই বাটী হইতে কিঞ্চিৎ রুষ্খ তিল লইয়া আইস 1” বমণী বহু অনুসন্ধানে 
সেরূপ বাড়ী না পাইয়া পুনবায় বুদ্ধদেবেব নিকট ফিবিয়া আসেন। 
বুদ্ধদেব তখন স্ত্রীলোকটীকে বলি্ন,__“তবেই বুঝ, মৃত্যুব হস্ত হইতে 
পরিত্রাণ পাইবাঁর কাহাবও উপায় নাই। ধৈধ্যই ইহাব একমাত্র ওষধ।” 
স্ত্লোকটা উত্তবে বলিলেন-_ 


“পিতা, তব উপদেশে-_ 
ধৈর্য্যেব বন্ধন দিব প্রাণে । 
কিন্তু, নয়ন-আনন্দ ছিল নন্দন আমাৰ !” 


ডাক্তাঁব উদগ্রীব হইয়া বমণীর উত্তব শুনিতেছিলেন । কিন্ত, নয়ন- 
আনন্দ ছিল নন্দন আমার!” এই কথাটা শুনিবামাত্র তিনি আত্মহারা 
হইয়া কাঁদিয়া ফেলেন এবং উত্তেজিতভাবে গিরিশচন্দ্রের সহিত সাক্ষাৎ 
করিয়৷ বলেন,__“মহাশয়, আপনি এ প্রাণের কথা কেমন করিয়৷ বাহির 
করিলেন? আমার এই দারুণ পুত্রশোকে আত্মীয়বন্ধুবান্ধবগণ আমাকে 
অনেক সান্তনা দিয়াছে-_অনেক রকম করিয়া বুঝাইয়াছে, “কিন্তু, নয়ন" 


৩১২ গিরিশচন্দ্র 


আনন্দ ছিল ননন আমাঁব 1 আমার প্রাণে ভিতবেব এ কথা তো কেহ 
বুঝিতে পারে নাই।” 

কবিবব ্যাব্‌ এডুইন আবনন্ডেব [1819 ০1 48৯৪৮ কাব্য অবলন্বনে 
গিরিশচন্দ্র এই নাটকখানি বচনা কবিয়াছিলেন এবং ৭্খণী শ্রীগিবিশচন্ত্র 
ঘোষ” নাম স্বাক্ষব কবিষ! পুস্তকখানি তীহাঁব নামে উৎসর্গপূর্বক নিজ 
মহত্বেব পবিচয় প্রদান কবেন। আবনন্ড সাহেব দেশ পধ্যটনে বাহিব 
হইয়! যে সমমে কলিকাতাষ আঁসেন, তিনি মে সময়ে “বুদ্ধদেব চবিতে 
অভিনয় দেখিযা _বঙ্নাট্যশিল্পের উন্নতিকল্পে গিবিশচন্দ্রেনে বত, 
উদ্ঘম ও অভিজ্ঞতাঁব যথেষ্ট প্রশংসা কবিবা যাঁন। তাহাধ ভ্রনণ- 
বৃত্তান্তেব এক স্থানে লিখিত আছে “বঙ্গ-বঙ্গভমিব দৃশ্যপটাদি দেখিয়া 
বিলাতী থিষেটাঁবেব অধ্যক্ষেবা বদিও ভাশ্য কবিতে পাবেন, কিন্তু গভীব 
ভাবসম্পন্ন নাঈকাভিনয ও অন্িনয়-চাঁকুর্য দর্শনে তাহাদিগকে নিশ্চয়ই 
চমতকৃত হইতে হইবে ।” 

শ্লিজ্রল্ভঙ্চল্ন জাল 

*বিন্বমঙ্গল ঠাকুব ২*শে আধাঢ (১২৯৩ সাল) ্টাব থিষেটা ব প্রথম 
অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় বজনীব অভিনেতা ও অভিনেত্রীগন £-- 

বিন্বমঙ্গল- _অমুতলাল মিত্র, সাধক- বেলবাবুঃ ভিক্ষুক-_ অঘোবনাথ 
পাঠক, সোমগিবি--প্রবোধচন্তর ঘোর, বণিক ও দাবোগা- শ্রীযুক্ত 
উপেন্দ্রনাথ মিত্রঃ বাখাল বালক--পু'টুবাঁণী, পুবোহিত-_শহামাঁচবণ কু, 
ভৃত্য- শ্রীযুক্ত পরাণরুষ্ণ শীল, দেওযান-__মহেন্ত্রনাথ চৌধুবী, 'সোমগিবির 
শিল্তগণ - বামতাবণ সান্যাল, অবিনাশচন্্র দাস, শ্রীযুক্ত কাণনাথ 
চট্টোপাধ্যায় ও শ্যামাচবণ কু, চিন্ামণি-_ শ্রীমতী বিনোদিনী, থাক__ 
ক্ষেত্রমণি, পাঁগলিনী-_গঙ্গীমণিঃ অহল্যা_ শ্রীমতী বন্বিহাবিণী, মঙ্গলা_ 
কুহ্থমকুমারী ( খোঁড়া) জনৈক ্ত্রীলোক- প্রমদান্ুন্দরী ইত্যাদি । 


ভ্রযো'ত্রংশ পরিচ্ছেদ ৩১৩ 


“বিন্বমঙ্গল ঠাকুব_শ্রেম ও বৈবাগ্যমূলক নাটক। ইহাব আখ্যান 
ভাগ “ভক্তমাল” হইতে গৃহীত । শ্রীশ্রীবামকৃষ্ণদেবেব শিয্পত্ব গ্রহণের পর 
পবমহংসদেবেব শ্রীমুখে বিন্বমঙ্গলেব উপাখ্যান শুনিয়া গিবিশচন্ত্র এই নাটক 
লিখিতে প্রবৃত্ত হন। ভক্ত চবিভ্রেৰ সহিত একটী ভণ্ড চবিত্র অস্কনে তিনি 
ইঙ্গিত কবিষাছিলেন। সাধক চরিত্রের ইহাই মূল। পবমহংসদেব 
একদিন ভও সাধুদেব হাঁবভাব গিবিশচন্ত্রকে হুবহু নকল কবিবা! দেখাইয়া 
ছিলেন। এই নাটকেব “পাঁগলিনী” চবিত্র গিবিশচন্ত্রেব সম্পূর্ণ নৃতন কৃষ্টি 
এবং বঙ্গসাহিত্যে ইহা তাহাব একটা অপূর্বব দান। * সাংসাধিক স্কুল 
ঘটনাব নধ্যে অধ্যান্স চবিত্র স্বষ্টি বিঘা এবং তাঁহাব দ্বাব! নাঁটকেব অন্যান্য 
চধিত্র বিশ্লেষণে গিবিশচন্দ্র যে কৃতিত্ব ও নৈপুণ্য দেখাইয়াছেন, তাহা 
জ্গতেব যে কোন সাহিতো স্ুৃহূর্ণভ। পাগলিনীব পব পৰ গানগুলি 
সধকেব সাধন অবস্থাব ক্রমবিকাশ-_ইহা! একটা লক্ষ্য কবিবাঁব বিবয়। 
জনৈক ভাবুক দশক এই নাটকেব অভিনয় দেখিয়া! সাগ্রহে গিবিশচন্দ্রে 
সহিত মান্মাৎ কবিয়া বলেন,--“মহাশয়, আপনি যে “কৃষ্দর্ণনেব ফল-_ 
রুষ্দণন+ |লখিয়াছেন,”_এ এক কথাতেই বিন্বমঙ্গল লেখা সার্থক 
হইয়াছে ।” 

ধিনি কেবল মনস্তত্ব হিসাবে “বিন্বমঙ্গল+ পড়িবেন, বিশ্বমঙ্গল তাঁহাকে 
যেমন তৃপ্তি দিবে, তেমনই তৃপ্তি দিবে হিন্দু দার্শনিক পাঠককে । 
বাববণিতা ও লম্পটের প্রেমাভিনয়েব মধ্যে উচ্চ বৈষ্ণব দর্শন__ নাটকীয় 
বসেব ব্যাঘাত না করিয়া যে ভাবে বসবিকাশেব সাহায্য কবিয়াছে, তাহা 
ভাঁবতেব কবি গিরিশচন্দ্রেই সম্ভব। “চৈতন্থলীলা” ও “বুদ্ধদেব চবিতঃ 








» দাক্ষণেম্বরে পরম£ংসঙ্গেবের নিকট স্হ পুব্ধে এঃ ক্রঙ্গণী ভৈরবী আগমযাছিক্ননে। 
তাচ্ঠার অনেক পরে এক পাগ.লী যাতায়াত কাগ্ত। গুনিয়াছি --ইহ'দের জড় চরিত্রে 
সম্বন্ধে নানারূপ গল্প শুনিয়া গিরিশচন্ত্র এই 'পাগলিনী' চরিত্র পরিকজ্পন! করিয়াছিলেন । 


১৪ গিরিশচন্দ্র 


লিখয়৷ তিনি বঙ্গবাসীব শ্রদ্ধা আকর্ষণ কবিয়াছিলেন,_-“বিন্বম্গল” নাটক 
রচনার [তিনি দেশবাসীব হৃদয় অধিকাৰ করেন। 

বিথাবজধী স্বামী বিবেকানন্দ বলিয়াছিলেন,--«বিন্বমঙগল সেব্সগীয়ারের 
উপব গিয়াছে । আমি এরূপ উচ্চ ভাবে গ্রন্থ কখনও পড়ি নাই।” 
সুপ্রমিদ্ধ সাহিত্যিক ও সমালোচক স্বর্গীয় চন্দ্রনাথ বস্থ বাঁলতেন,__ 
“বিন্বণঙ্গল গিবিশবাবুব [02,১06 -02506.% স্থদূৰ ইযুবোপ ও আমেবিকায় 
পর্য্যন্ত এই নাটকেব অভিনয় হইয়া থাকে । 


০্বভিনকক জাজ 


১০ই পৌষ ( ১২৯৩ পাল) ষ্টার থিয়েটাবে “বেল্লিক বাঁজার? পঞ্চবং 
প্রথম অভিনীত হয় । গ্রথমাভিনর বজনীব অভিনেতৃগণ £__ 

ললিত- শ্রীযুক্ত কাণীনাথ চট্টোপাধ্যাষ, পু টিবাম--মহেন্ত্রনাথ চৌধুবী, 
খুদিবাম-__ গ্রবোধচন্ত্র ঘোষ, দোকড়ি _ নাট্যাচাধ্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্গু, 
কান্তিবাম-_শ্রীযুক্ত উপেন্দ্রনাথ মিত্র, নসীবাম- শ্টামীচবণ কু, মুক্তাবাম 
_ রাণ্বাবু, শিবু চৌধুবী-_-অমৃতলাল মিত্র, পুবোহিত-_-অবিনাশচন্ত্র দাস, 
খানসান! ও বাঁম। মুর্দফবাস- শ্রীযুক্ত পবাণকৃষ্ণ শীল, মুর্দফবাসঃ মেথর ও 
চিনাম্যান__বাঁমতাবণ সান্যালঃ বঙ্গদার-_বেলবাবু, ললিতের মা ও 
মুর্দকবাসণী- গঙ্গীমণি, ললিতেব পিসী ও মগ-_ক্ষেত্রমণি, বঙ্গিনী-শ্রীমতী 
বিনোদনী দাসী, খেমটাওয়ালীঘয়-_ভূষণকুমারী ও কুস্থুমকুমারী 
(খোঁড়া) ইত্যাদি । | 

সমাজের উচ্ছজ্ঘল এবং বিরুত চরিত্র স্বার্থান্ধদের উপর তীব্র 
কটাক্ষপাত কবিয়৷ “বেল্লিক বাজার, রচিত হয়। বহু বঙ্গচিত্রে এই 
নক্মাথানি এরূপ বিচিত্র ভাবে চিত্রিত, ষে ইহা পঞ্চরং নামেই আখ্যাত 
হইয়াছে । এই সংরং-ং পুর্ণ সজীব অভিনয়ের সম্পূর্ণ নৃতনত্ব পঃইয়া 


ত্রযোত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩১৫ 


সে সময়ে বঙ্গ না্যশালায় একট! তুমুল আন্দোলন পড়িয়৷ গিষাছিল। 
€বেশ্লিকবাঙ্গাবে গিবিশচন্ত্র যে একটা নৃতন ধরণেব পঞ্চবংএব সৃষ্টি করেন, 
সেই অন্থকবণেই এ পর্যন্ত রঙ্গালয়ে নক্মাগুলি বচিত হইতেছে । স্ুবিধ্যাত 
সমালোচক স্বপ্ন অক্ষয়চন্দ্র সরকাব মহাশয় লিখিয়াছিলেন,__“বেল্লিক- 
বাজার রুচি বিকাবে ফুটিয়াছে। বেল্লিকবাজার অভিনয়ে বড়ই ফুটন্ত! 
জীবন্ত ! রঙ্গকচি যে আমাদিগেব মজ্জায় মজ্জায় প্রবেশ কবিয়া নীতি- 
প্রীতিব মূল উল্টাইয়! আমাদিগকে পদে পদে পেষণ করিতেছে, পদে পদে 
স্বার্থের দায় ভদ্রাচাবে জলাঞ্রলি দিতেছে, তাহা ইহাতে এক বকম চক্ষে 
অঙ্কুলি দিয় দেখান হইয়াছে ।” নববিভাকর সাধাবণী, ১৯৮ পৃষ্ঠাঃ 
১২৯৪ সাল। 


ক্মস্প-ননাভিন্ন 


৮ই জ্যৈষ্ঠ (১২৯৪ সাল) ষ্টার থিয়েটাবে “রূপ-সনাতন” নাটক প্রথম 
অভিনীত হয। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £__ 

চৈতন্যদেব-__বেলবাবু, সনাতন-_-মমৃতলাল মিত্র, রূপ-শ্রীযুক্ত উপেন্্র- 
নাথ মিত্র, বনু শ্রীযুক্ত কাণীনাথ চট্টোপাধ্যায় ঈশান-_মহেন্্রনাথ চৌধুবী, 
সুবুদ্ধি__নাট্যাচা্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থ, জীবন চত্রবর্তী__নীলমাধৰ 
চক্রবর্তী, হোসেন স! ও দস্্য-_ অঘোরনাথ পাঠক, রাঁমদিন ও শ্রীকান্ত-_ 
প্রবোধচন্ত্র বোষ, নপির খাঁ -শ্যামাচবণ কু চৌবে বালক-_ভূষণকুমাবী, 
অলকা-_-্রীমতী বনবিহাঁবিণী, করুণা ও চৌবে-বম্ণী-__গঙ্গামণিঃ বিশাখা-_ 
কিবণবাল! ইত্যাঁদি। 

“বুদ্ধদেব চরিত” কি “বিদ্বমঙ্গল ঠাঁকু+--এমন কি “বেল্লিক বাজার 
পথ্যন্ত দর্শক সমাজে যেরূপ উৎসাহ ও আনন্দের উচ্চ তরঙ্গ তুলিয়াছিল,-_ 
“রূপ-সনাতন” যদিচ তাহা পারে নাই, তথাপি এই নাটক রচনায় গিরিশচন্দ্র 


৩১৬ গিরিশচন্দ্র 


তাহাব বিশেষ শক্তিমত্তার পবিচয় দিবাছিলেন এবং আুদক্ষ অভিনেত-' 
সম্মিলনে ইহার অভিনয়ও উতকষ্ট হইয়াছিল । এই নাটক প্রসঙ্গে একটা 
ঘটনাব উল্লেখ করিতেছি ।__ 

রূপ-সনাতন নাটকে ( এ মন্কঃ ২য় গভাক্কে) কাণাধামে বপ, অনুপম ও 
বৈষ্ণবগণ-পবিপূ্ চন্ত্রশে ধবেব ব।টাতে চৈতনুদেব কর্তুক ভক্তগণেব পদধূলি 
গ্রহণ দণ্য গিবিশচন্ত্র এইবপ দেখাইবছেন। যথা 2 

“হয বৈষ্ুব। প্রভু, কবছেন কি? 

চৈতন্দেৰ। আনি কৃষ্ধ-বিবহে বড় কাতিব, তাই ভক্তবৃন্দেব পদবজ 
'অঙ্গে ধাব1 ক'বছি, ভক্তেব রুপা হবে|” 

্টাব গিবেটাবে এই দৃশ্টেষ অভিনয দর্শনে কোন কোন গোন্বামী 
বিবন্তু হন এবং মহা প্রভুখ এইবপ ভভ্ত-পদখুলি শ্রীমঙ্গে গ্রহণ অতি গত 
বলিরা ক্রোধ প্রকাশ, এমন কি গিবিশচন্দ্রকে কটুক্তিও কবেন। 
গিবিশচন্দ্র তীহাদেব বিবক্তিতে বিচলিত না হইগ্লা দূঢতাব সহিত 
বলিয়াছিলেন, “আমি যে স্বচক্ষে পবমহংসদেবকে ভক্তপদধূলি গ্রহণ কবিতে 
দেখিযাঁছি।৮_-তিনি বলিতেন,_-“আমি স্বযং বিশেষষপ উপলব্ধি না 
কলিযা কোনও কথা লিখিনা। একদিন কোনও এক ভক্তেব বাটীতে 
ভগবং প্রসঙ্গ এবং সংকীত্তনাদিব পব শ্রীশ্রীবামকুষ্চ পবমহংসদেব সেই 
স্থান ধূলি লইয়া অঙ্গে প্রদান কবিলেন। ভক্তগণ ব্যস্ত হুইয়৷ নিবারণ 
কবিতে যাইলে ঠাকুব বলিলেন, “কি জাঁনোঃ বহু ভক্তেব সমাগমে এবং 
ঈশ্ববীয় কথা ও নাঁম-সংকীর্তনে এই স্থান পবিত্র হইরাছে। হবিনাম হইলে 
হবি স্বয়ং তাহা শুনিতে আমেন। ভক্ত-পাদম্পর্শে এই স্থানের ধুলি পর্য্যন্ত 
পরম পবিত্র হইরাছে+ |» 


চতু:স্ত্রংশ পরিচ্ছেদ 


শ্ললান ক্স শু গিক্রি্লজক্র 
পরী-লামক্ররম্কেতেক্র ক্রুসাশসল্ীক্কা 


শ্রীবামকৃঞ্ণদেবেব শিষ্যন্র গ্রহণ কবিয়া গিবিশচন্দ্রেব মনে প্রশ্ন উঠিতে 
লাগিল যে_-ইনি কে? আমিতো ইহাঁব কাছে আসি নাই ;- ইনিই 
আমায় গুঁজিয়! লইয়াছেন। ইনি কখনই সামান্ধা মানব নন। পবমহংসদেব 
কিরূপ তাহাকে কৃপা কবিয়াছেন, এবং তাহাব মহিমা কিবপ-_ তাহা 
পরীন্ম! কবিবাঁর নিমিত্ত গিবিশচন্দ্র একদিন কোনও অভিনেত্রীৰ আলয়ে 
বাত্রি যাপনেব সঙ্কল্প কবেন। তাহার স্বভাব ছিল, বাহিবে যে কোনও 
কাধ্যে যত বাত্রিই হউক না কেন, বাত্রিব শেষভীগেও বাটী আমিয় 
আপন শব্যায় শয়ন করিবেন। তিনি ইচ্ছা কবিয়াই বাবাঙ্গনা গৃহে 
বাত্রি কাটাইবাব নিনিত্ত তথায় শবন কবিলেন। তাহার মুখেই শুনিয়াছি, 
_বাখি যখন তৃতীষ প্রহৃব, তখন তীহাঁব অর্বাঙ্গে একট] আবাল] উপস্থিত 
হইল-_বেন তাহাকে বিছা'ষ কামড়াইতেছে ,_ ক্রমে যন্ত্রণা এরূপ অসহ্া 
হইযা উঠিল যে তিনি শধ্যা হইতে উঠিয়া! পড়িলেন, এবং বাক্সব চাঁবি 
বৈঠকখানায় ফেলিয়া আসিয়াছেন বলিয়া তত্ক্ষণা্ড বাটী চলিয়া 
আঁমিলেন। বাটা আমিষ! তবে তিনি শান্তি্াভ কবিলেন। তৎপব- 
দিবস দশ্শিণেশববে গিরা তিনি গত বাঠির ঘটনা এব' তাঁহাব সন্দিপ্ধ চিত্তের 
কথা অকপটে ঠাকুরকে নিবেদন কবিলেন। পবমহংসদেব ধীবভাবে সমস্ত 
শুনিয়া) হঠাৎ উত্তেজিত ভাবে বলিলেন,_-“শালাঃ তুই কি ভেবেছিষ__ 
তোকে ঢ্যাম্না সাপে ধরেছে, যে পালিয়ে যাবি?--এজাত সাপে ধ'বেছেশ- 


৩১৮ 1গরিশচন্দ্র 


তিন ডাক ডেকেই চুপ ক'র্তে হবে।” ঠাঁকুবেব কথায় গিবিশচন্্র সম্পূর্ণ 
আশ্বস্ত হইলেন এবং সম্পূর্ণ বিশ্বাস কবিলেন-ধিনি শ্রীচৈতন্ত অবতারে 
জগাই-মীধাইকে উদ্ধাব কবিয়াঁছিলেন, ইনি নিশ্চয় তিনি । 


উীল্লা ন্ক্রম্ুতদেকন্িতি করুনা ও্রচ্কান্ন 


গিবিশচন্ত্র এইরূপে পবমহংমদেবকে সর্বতোভাবে আন্মসমর্পন কবিয়া 
একদিন তাহাকে বলিলেন,_“এখন থেকে আনি কি ক'ব্বো ?” 
শ্রীবামরুষ্ণদেব বণিলেন,_-“্যা ক'রচ, তাই ক'রে যাও । এখন এ দিক 
(ভগবান) ও দিক (সংমাব) ছু*দিক বেখে চল; তাৰ পব যখন এক 
দিক ভাঙ্গ বে, তখন য! হয় হবে। তবে সকাল-বিকালে তার স্মবণ-মননটা 
রেখে 1” গিবিশচন্ত্র ভাবিতে লাগিলেন, “তাই ত! সকল সময় মকল 
কাজেব আমাঁব ছু'স থাকে না। হয তো কোন কঠিন মকন্দধ! লইয়াই 
ব্যস্ত হইয়া আছি; গুরুব কাছে স্বীকাব কবিব, যদি কথা রাশিতে না 
পারি!” এই ভাবিয়া নীবব হইয়া ধহিলেন। গিবিশচন্ত্রকে নীবব দেখিয়া 
শ্রীবামকৃষ্ণদেব বলিলেন,__“আচ্ছা তা যদ্দি না পাবো ত খাবাব-শোবাৰ 
আগে একবাব ম্মবণ-মনন ক'বো11৮ কোন বাধাবাধি নিরমেব ভিতব 
গাঁকিতে গিবিশচন্ত্র একেবাবেই অপা'বক ছিলেন, এ ভন্য তাহার জীবনে 
'আহাব-নিদ্রাব পধ্যন্ত কোন বীধাবাধি নিয়ম ছিল না। তাহাব 
স্বভাঁবত: মুক্ত স্বভাব মন যেমন বন্ধকক্ষে অবস্থান কবিতে হাপাইয়া 
উঠিত, একটা বীধবাধি নিয়মেব ভিতব পড়িতেও তেমনি 
ব্যাকুল হইয়া উঠিত। এবাবেও গিবিশচন্ত্র নীবব হইয়! বহিলেন। তাহার 
ভাঁব দেখিয়৷ পবমহূংসদেব সহম! ভাবাবিই হইয়া বলিলেন, "তুই বলবি, 
“তাও যদি না পাবি? আচ্ছা, তবে আমায় বকল্ম৷ দে।” ্রী্গবানে 
পাপ-পুণ্যের ভাব দিয়া! সম্পূর্ণ আত্ম-সমর্পণের নাম বকনৃমা। গিবিশচন্তু 


চতুস্ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩১৯ 


আর কাল বিলম্ব না করিয়া বকল্ম! দিয় নিশ্চিন্ত হইলেন। “গিরিশচন্দ্র 
তখন বকলম বা ঠাকুরের উপর সমস্ত ভার দেওয়ার এইটুকু অর্থই 
বুঝিলেন। যে তাহাকে আর নিজে চেষ্টা বা সাধন-ভজন করিয়া কোন বিষয়, 
ছাঁড়িতে হইবে না, ঠাকুরই তাহার মন হইতে সকল বিষয় নিজ শক্তিবলে 
ছাঁড়াইয়া৷ লইবেন। কিন্তু নিয়ম বন্ধন গলায় পবা অসহা বোধ কারয়! 
তাহার পবিবর্তে যে তদপেক্ষা শতগুণে অধিক ভালবাসার বন্ধন__্বেচ্ছায় 
গলায় তুলিয়া লইলেন, তাহা তখন বুঝিতে পাঁবিলেন না । ভাল মন্দ যে 
অবস্থায় পড়ন না কেন, যশ-অপযশ যাহাই আন্মক না কেন, দুঃখ-কষ্ট 
যতই উপস্থিত হউক না কেন, নিঃশবে তাহা সহ কব! ভিন্ন তাহাৰ বিরুদ্ধে 
তাহাব যে আর বলিবার ব৷ করিবাব কিছুই বহিল না, সে কথা তখন আর 
তলাইয়৷ দেখিলেন না,_ দেখিবার শক্তিও হইল না। অন্য সকল চিন্ত] 
মন হইতে সবিষ্নাা যাইয়া কেবল দেখিতে লাগিলেন- শ্রারামকৃষের 
অপাব করুণ! !” * 


[০ 


ক্র ক্কম্দেলতল্র শ্শিষ্য-ত্েহ 


গিবিশচন্দ্র বলিতেন,_“বাল্যকালে পিতাব কাছে ধেরপ আদর 
পাইয়াছিল[ম, পরমহংসদেবেব কাছে ঠিক সেইরূপ আদর পাইয়াছি। 
আমাব মকল আবদাবই তিনি পূর্ণ কবিতেন। অন্য সকলে তাহার 
কত গুণেব কথা বলেন, আমি কেবল তাব অপাব অলৌকিক ন্নেহেব কথাই 
ভাবি। তিনি তাহাব “পরমহংসদেবেব শিশ্ত-ন্নেহ+ প্রবন্ধে লিখিয়াছেন £__ 
“পবমহংসদেবেব নিকট ধাহাব! গিয়াছিলেন, তাহাবা সকলে শি্ট, শান্ত ও 
ধন্মপবারণ। নরন্দ্র প্রভৃতি ধাহাবা তাহাব স্বগণেব মধ্যে গণ্য, নি 


*. স্থামা সার্দানন্দ-প্রণী৩ “&ঞয়ামকৃকণ লীল- প্রন” ( গুরুভাক-_পুার্) থে 
মবিস্তার পাঠ করন। 


৩২০ গিরিশচন্দ্র 


নির্মল বালক বয়সে প্রভৃব নিকট যাঁন ও প্রত্তুব'ন্নেহে আবদ্ধ হইয়া পিতা- 
মাত। ভুলিয়া, প্রভূব কার্যে নিষুক্ত হন।' তাহাদেব' প্রতি প্রতৃব স্লেহ- 
বর্ণনায়, তাহাব প্ররুত স্নেহ হয় তো বুষ্কান যাইবে না। পবিত্র বালকবুন্দ 
সমস্থ পবিত্যাগ কবিয়া শবণাঁপন্ন হইয়াছে, ইহাতে স্নেহ জন্মিবাব কথা । 
কিন্ট আনা প্রতি ন্নেহ, অহেন্তুকী দধাসিম্কুব পবিচয়। 'ভগবানেব একটা 
নাম পতিতপাঁবন, মানবদেহে সে নামেব সার্থকতা আমিই দেখিয়াছি । 
পতিতপাবন বামরুধ্ণ আমায় স্নেহ কবিয়াছেন, সেই নিমিত্ত আনাব প্রতি 
ন্নেহেব কথা বলিতে প্রবৃত্ত হইলাম" পবমহংসদেবেব নিকট ধাহাবা 
গিয়াছিলেন, তাহাদেব মধ্যে কেহ বা চঞ্চল প্রকৃতিব থাকিতে পাবেন, 
কিন্ত আমাব তুলনায় সকলেই মাধু। কাহাব কখনও বা পদম্থলন হইযা 
থাকিতে পাবে, কিন্ত আমাঁব গঠনই স্বতন্, সোজ! পথে চলিতে জানিতাম 
না। পবযহংসদেবেব ন্নেহেব বিকাশ আমাতে যেবপ 'পাইয়াছে, সেবপ 
আব অন্য কোথাও হয় নাই । 

“যে সময়ে পবমহংসদেব আমায় আশ্রয় প্রদান কবেন, তখন আমি 
হৃদি-ছন্দে বিকলিত। পূর্ব্বের শিক্ষা-দীপ্ষ, বাল্যকাল হইতে অিভাঁবক 
শৃন্ট হইযা৷ যৌবন-স্থলভ চপলতা-__সমব্তই আমায় ঈশ্ববপথ হইতে দুবে 
লইয়া যাইতেছিল। সে সময়ে জড়বাদী প্রবল, ইঈশ্ববেব অস্তিত্ব স্বকাঁব 
কব! এক প্রকার মূর্খত! ও হৃদয় দৌর্বল্যেব পবিচয়। স্ুত€ং সমবযান্কেব 
নিকট একজন কৃষ্ণ-বিষু বলিয়া পৰিচয় দিতে গিয়া, “ঈশ্বব নাই'_-এই 
কথাই প্রতিপন্ন কবিবাঁব চেষ্টা কবা হইন। আন্তিককে উপহাস কবিতাম, 
এবং এ পাত ও পাত বিজ্ঞান উল্টাইবা স্থিব কবা হইল যে ধর্ম কেবল 
_সংসাব বক্ষার্থ কল্পনাঃ__সাধাবণকে ভয় দেখাইয়া কুকার্য হইতে বিবত 
বাখিবার উপায় | ছৃষ্বন্ত্ম ধরা পড়িলেই দুষ্বর্ম। গোপনে করিতে পার৷ 
বুদ্ধিমানের কাধ্য, কৌশলে স্বার্থ সাধন করাই পাত্ডিত্য। কিন্তু ভগবানের 


চতুম্ত্িংশ পরিচ্ছেদ ৩২১ 


রাজ্যে এ পাপ্ডিত্য বহুদিন চলে না, ,ছুর্দিন) অতি কঠিন শিক্ষক। সেই 
কঠিন শিক্ষকেব তাড়নায় শিখিলাম যে, কুকাঁয্যু গোপন বাখিবাঁৰ কোনও 
উপায় নাই-_ধর্মের ঢাঁক আপনি বাঁজে।। শিখিলাম বটে” কিন্ত 
কা্যজনিত ফলভোগ আবন্ত ইই্াছে_নিরাশ্যগরক পরিণাম মানস পটে 
উদয় হইতেছে। শাস্তি আরম্ভ হইয়াছে মাত্র কিন্তু শাস্তি এড়াইবার 
কোনও উপায় দেখিতেছি না। বনবান্বহীন, চতুর্দিকে বিপজ্জাল” 
ইত্যাদি ( *৬৪ পৃষ্ঠা ডষ্টব্য )। ৰ ূ 

তাহাব পর শ্রীরামরুঞ্জদেবেব আশ্রম লাভ করিয়া গিবিশচন্ত 
লিখিতেছেন £-_“্মন তখন আনন্দে পরিগ্ুত! যেন নূতন জীবন 
পাইয়াছি। পূর্বে সে ব্যক্তি আাঁমি নই_হদয়ে বাদান্ুবাদ নাই। 
ঈশ্বব সত্য- ঈশ্বর আশ্রয় দাতা---এই মহাঁপুকুষের আশ্রয় লাভ কবিয়াছি, 
এখন ঈশ্বরলাভ আমার অনায়াসসাধ্য) ।এই ভাবে আচ্ছন্ন হইয়৷ 
দিন-যামিনী যায়। শয়নে-ন্বপনেও এই ভাব_পরম সাহম-_পবমাত্মীয় 
পাইয়াছি-__আমার সংসারে আর কোনও ভয় নাই। মহাভয়__ 
মৃত্যুতয়-__-তাহাঁও দূৰ হইয়াছে । 

“আমি তো৷ এইরূপ ভাবি। এ দিকে পরমহংসদেবের নিকট হইতে 
যেব্কি আসেন, তাহারই মুখে শুনি, যে প্রতু আমার কথা! কতই 
বলিয়াছেন। যদি কেহ আমার নিন্দা করে, খু'জিয়া নিন্দা বাহির করিতে 
হয় নাঃ তিনি তৎক্ষণাৎ বলেন”__“না+ জান নাঃ ওর খুব বিশ্বাস? |, 

“মাঝে মাঝে থিয়েটারে আসেন। দক্ষিণেশ্বর হইতে, আমাকে 
থাওয়াইবাব জন্ত খাবার লইয়৷ আসেন'। প্রসাদ না হইলে আমার 
খাইতে রুচি হইবে না, সেই জন্ত মুখে ঠেকাইয়! আমাকে খাইতে দেন। 
আমার ঠিক বালকের ভাব হয়, পিত৷ মুখ হইতে খাবার দ্িতেছেন, আমি 
আনন্দে তাহা ভোজন করি। 

২১ 


৩২২ গিরিশচন্দ্র 

“একদিন দক্ষিণেশ্বরে গিঁয়াছি, তাহার ভোজন শেঁধ হইয়াছে । 
আঁ্ীর' বলিলেন, পায়েস খাঁ 1 আমি খাইতে বসিয়াঁছি তিনি 
বলিলেন,_“তোমায় খাওয়াইয়! দিই। আর্মি বার্লকের ন্টায়' বসিয়া 
খাইতে লাঁগিলাম। তিনি কৌমল হন্তে আমাকে খাঁওয়াইয়৷ দিতে 
লাঁগিলেন। মা যেমন চেঁচে-পুঁছেঁ খাওয়াইয়। দেন, সেইরূপ ঠেঁচে-পু'ছে 
খাওয়াইয়া দিলেন। আমি যে ঝুঁড়ো ধাড়ি, তাহী আঁমীর মনে রহিল না। 
আমি মাঁয়েব বালক, মা খাওয়াইয়। দিতেছেন - এই মনে হইল। যখন 
মনে হয় যে অনেক অন্পর্শাঁয় ওষ্ঠে আমাব ওষ্ঠ স্পর্শিত হইয়াছে, সেই ওঠে 
তিনি নির্মল হস্তে পায়েস দিয়াছেন, তখন যেন আত্মহাবা হইয়া ভাবি__ 
এ ঘটন! কি সত্য হইয়াছিল নী'ন্বপ্রে দেখিয়াছি ! একজন ভক্তের মুখে 
গুনিয়াছিলাম যে তিনি দেব-দৃর্টিতে আমাকে উলঙ্গ বালক দেখিয়াছিলেন। 
সত্যই আমি তীহাঁর নিকট গিয়া, ধেন নগ্ন বালকেব ন্থাঁয় হইতাম। যে 
সকল দ্রব্য আমাঁব রুচিকব, তিনি কিরপে জানিতেন, তাহা আমি জানি 
না, সেই সকল ড্রবা, আমাকে সন্ুথে বসাইয়া খাঁওয়াইতেন। স্বহস্তে 
আমাকে জল ঢালিয়া দিতেন। * আমি বর্ণনা করিতেছি মাত্র কিন্ত 

* গিরিশের জগ্ত জলখা গার ম্মার্সিাছে। ফাগুর দোকানের গরম কচুরী, লুচি ও' 
অন্তান্ত মিলন । বরাহনগ:র ফাগুর দোকান'। ঠাকুর নিজে সেই সমস্ত খাবার সম্মুখে 
রাখাচর। প্রনাদ করিয়। দিপেন। তারপর নিব হাতে করিয়। খাবার গিরিশের হাতে 
দিলেন। বলিগেন, বেশ কচুরী। 

গিরশ দন্যুপে বাসর! খাইতেডেন। গিরিশকে খাবার জল দিতে হইবে, ঠাকুরের, 
শধার দ ক্ষ"-পুব কোণে কু'ঞ্জোর ক "য়া জল আছে। গ্রীষ্মকাল বৈশাখ মান, ঠাকুর' 
রলিবেন, 'এপানে বেশ জন অত | 

ঠা? অতি অথথ । ঁড়াউবার শক্তি নাই। 

ভক্তের জবাক হইয়া ক দোখতেছ্ন? দেখিতেছেন,--ঠাকুরের কোমরৈ কাপড় 


চতুন্তিংশ পারচ্ছেদ ৩২৩ 


আঁ তীহার ক্লেহ্‌গ্রকাশ করিতে পাঁরিতেছি কি না জানি নাঁ। বোধ 
হয়, আমার সম্পূর্ণ অন্থভব হইতেছে না। সম্পূর্ণ অনুভব হইলে, যাহ] 
বলিতোছি, বলিতে পারিতাঁম না, কচিৎ কখনও সে ভাব উদয় হইলে 
জড় হইয়া যাই। 

একদিন পদসেবা করিতে দিয়াছেন, আমি বেজার! ভাবিতেছি, 
কি আপদ, কে বসে এখন পায়ে হাত বুণোয়! সে কথা যখন মনে হয়, 
আমার প্রাণ বিকল হঃয়ে উঠে, কেবল তাহার অসীম ন্নেহ ম্মবণ কবি 
শীস্ত হই। পীড়িত অবস্থায়, আমি দেখিতে যাইতাম না। কেহ যদি 
বলিত, অমুক দেখিতে অ|সে না, তিনি অমনি বলিতেন,_-“আহা সে 
আমার যন্ত্রণা দেখিতে পারে না”।” 


জ্রীল্লামক্রষে্র শভি কুটুবাক্যসুজোগ 


ঠাকুরেব অগুন্ঠি তক্তগণকে অতি নিষ্ঠাব সহিত গুরুর্সেবা কবিতে 
দেখিয়া গিবিশচন্ত্রেব মনে হইত, _“গুরুসেবা কেমন কবিয়! কবিতে' হয়, 
আমি জাঁনি না_-আমি কিছুই করিতে পারিলাম না ! ঠাকুর যদি আমার 
সন্তানরূপে জন্মগ্রহণ কবেন, তাহা হইলে বোধ হয়, মমতা বশতঃ সাধ 
মিটাইয়া সেবা করিতে পারি।” 





নাই। দিগম্বর £ বালকের সভার শব হইতে এগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। নিজে জল 
গড়াইয়! দিনেন। তক্তদের নিশ্বাস বায়ু স্থির হইয়া গ্রিয়াছে। ঠাকুর রামকৃষ্ণ জল 
গড়াইলেন ! গেলাস হইতে একটু জল হাতে লইয়া! দেখিতেছেন, ঠাণ্ড। কি না। 
দেখিতেছেন, জল তত ঠাণ্ড। নয়। অবশেষে অন্ত ভাল জল পাওয়া! যাইবে ন৷ বুঝিয়া 
অনিচ্ছাসন্বে এ জলই  দলেন।” 

কথিত &গ্রীরামকৃ্কখামৃত | দ্র্তীয়' ভীগ, হড়বিংশ খওড। (ঠাকুর রামকৃ 
কার্গীপূরী বাগানে ভক্ত সঙ্গে) 


৩২৭ গিরিশচক্দ্র 


শ্রীবামরুঞ্*দেব একদিন থিয়েটার দেখিতে আসিয়াছেন। গিরিশচন্র 
দৌকান £ইতে গবম গরম লুচি ভাজাইয়া আনিয়া পরমহংসদেবের 
আঁহাবেব ব্যবস্থা করিলেন, কাবণ দক্ষিণেশ্ববে গিয়। আহার করিতে 
তাঁহাব অধিক রাত্রি হইয়। যায়। পবমহংসদেব অছিনয় দর্শনান্তে 
আহাব কবিবা যে সময়ে বাহিব হইবাৰব উদ্যোগ কবিতেছেন। 
গিবিশচন্দ্র মগ্যপান কবিয়া আসিয়! ঠাকুবকে ধবিযা বসিলেন__“তুমি 
আমাব ছেলে হও।» পবমহংসদেব বলিলেন,__-“তা কেন, আমি তোর 
ইষ্ট হযে থাকবো |» গিবিশচন্ত্র যত বলেন, পবমহংসদেবেব এঁ এক কথ, 
«“তোঁব ইষ্ট হয়ে থাকবো । আমাব বাপ অতি নির্মল ছিলেন, আমি 
তোব ছেলে কেন হব?” মন্ততাপ্রযুক্ত গিবিশচন্দ্র অকথ্য ভাষায ঠাঁকুরকে 
গালি দিতে আবন্ত কবিলেন। ভক্তগণ কুপিত হইযা গিবিশচন্ত্রকে শাস্তি 
দিতে উদ্যত. শ্রীবাঁমকৃষ্ণদেব তাহাদিগকে নিবাবণ কবিয়া হাঁসিতে 
হাসিতে বট লেন-_-“এটা কোন্‌ থাকেব ভক্ত বে? এটা বলে কি?” 
গিরিশচন্দ্রেব মুখেব তোড় ততই চলিতে লাগিল। 

ঠাকুব ভক্তগণকে লইয়া যে সময়ে গাড়ীতে উঠিলেন,_গিবিশচন্দ্র সঙ্গে 
সঙ্গে আসিষা, গাড়ীব সম্মুথে কর্দিমাক্ত বাস্তাব উপব লম্ববান হইয়া শুইয়া 
পড়িয়া সাষ্টাঙ্গ প্রণাম কবিলেন। পবমহংসদেব দর্ষিণেধরে চলিয়া! গেলেন । 

গিবিশচন্দ্রে মনে কিছুমাত্র শঙ্কা নাই । আছুবে গোপাল- ক্সাটে 
ছেলে মেরূপ বাপকে গালি দরিয়া নিশ্চিন্ত থাকে, তিনিও পবমহংসদেবের 
আছুরে বয়াটে ছেলেব মত কাধ্য করিয়া নির্ভয়ে রহিলেন। ঠাঁকুরের 
ন্নেহের উপর তাহার এতটা নির্ভব, তাহাব শ্পেহ এত অসীম-_যে ঠাকুর 
তাহাকে পরিত্যাগ করিবেন__-এ আশঙ্কা একবাবও ত্ীহীব জন্মিল না । 

পরমহংসদেবের তক্তগণ সকলেই ব্যথিত এবং বিরক্ত। পুরদিন 
দক্ষিণেশ্বরে গিয়া! ঠাকুরের সন্মুথে অনেকেই বলিতে, লাগিলেন--স্গটা। 


চতুস্ত্বংশ পরিচ্ছেদ ৩২৫ 


পাঁষ্ড আমরা জানি, ওব কাছেও আপনি যান?” কেহ বলিলেন, _ 
“আব ওর সঙ্গে সম্বন্ধ বেখে কাজ নাই।” এইরূপ কথাবার্ভা হইতেছে, 
এমন সময়ে ঠাকুবেব পবম ভক্ত বামচন্দ্র দন্ত আপিয়া উপস্থিত। ঠাকুব 
তাহাকে বলিলেন-_-*শুনেছগাঃ বান! দেঁড়খানা লুচি খাইয়ে গিবিশ 
ঘোষ "মামাব পিতৃস্ছন্ন-মাতৃচ্ছন্ন কবেছে।” ভক্তচুড়ামণি রাঁনবাঁবু বলিলেন, 
“কি কব্বেন? সে তো ভালই কবেছে।” শ্রীবামকৃ্দেব উপস্থিত 
ভক্তগণকে বলিলেন,__“শোন শোন, বাম কি বলে,_এব পব আমার যদি 
মাবে?” অক্নানবদনে বানচন্ত্র উত্তব কবিলেন, “মা খেতে হবে ।” ঠাঁকুৰ 
কহিলেন-“মাব খেতে হবে!” তখন বামবাবু বলিলেন,__“গিবিশেব 
অপবাধ কি? কালীষ সর্পেব বিষে বাখালবালকগণেব মৃত্যু হ'লে শ্রী 
কালীয়নাগেব যথাবিহিত শাস্তি বিধান ক'রে বলেছিলেন, “তুমি কি জন্ 
বিষ উদগীবণ কব? নাগ তাহাতে উত্তব দিয়াছিল-_“প্রত্, বাঁকে অমৃত 
দিয়েছ, সে তাই দিতে পাবে, কিন্ধ আমায় খালি বিষ দিয়েছ, আমি অমৃত 
কোথায় পাৰ? গিবিশ বোঁষধকে যাহা দিযাছেন, সে তাই দিষে আপনাবৰ 
পূজা ক'বেছে। আশমাদেব বলিলে, হয়ত, এতক্ষণ তার নামে বাজদ্বাবে 
অভিযোগ কব! হ'ত, আপনি পতিতপাবন-_নিজে অঞ্জলি পেতে ল'য়ে 
এসেছেন !” 

প্রামবাবুর কথায় ঠাকুরেব মুখমণ্ডল আঁবক্কিম হইয়! উঠিল, তাহার 
অক্ষিঘ্ধয়ে জল আঁসিল। ভক্তবংসল করুণাময় তখনই উঠিগ্াা দাড়াইলেন 
এবং বলিলেন,_“রাঁম, তবে গাড়ী আন, আমি গিরিশ ঘোষের বাড়ী 
যাব।' কোন কোন ভক্ত সেই ছুই প্রহরের স্ৃর্য্যোত্তাপে তাণর কেশ হইবে 
বলিয়া আপত্তি কবিলেন, কিন্ত তিনি তাহা না৷ শুনিয়৷ সেই দণ্ডে 
শকটারোহণে গিরিশের বাটীতে চলিলেন।” * 


* ন্বসীয় রামচগ্র দত্ত প্রনত "পরমহংলদেবের জীবন-বৃত্তান্ত” দ্রব্য । 


৩২৬ গিরিশচন্দ্র 


এদিকে গিরিশ্চন্জ্র নিশ্চিষ্মঘনে আছেন, তীহার বন্ধুগণ ক্কীহ্কে 
বুঝাইবাৰ চেষ্টা করিতে লাগিলেন যে তাহার মহা অপরাধ হইয়াছে । 
গিবিশচন্ত্র বলিলেন, “অপবাধ ক'টা সামলাইব, তিনি যদি আমার অপরাধ 
ধরেন, তাহ'লে আমি বেণুর বেণু হয়ে যাই! তবে ঠাকুবের ভক্তগণে 
হৃদয়ে ব্যথা দিরাছেন বলিগ্া গিরিশচন্দ্র অতিশয় অন্ুতপ্ু--ভক্তসমাজে 
কেমন কবিয়া আর মুখ দেখাইবেন ! 

এমন সময় ভক্তগণসঙ্গে সহস! শ্রীবামরুষ্জদেব আসিয়া বলিলেন, 
“ঈশ্বব ইচ্ছায় এলুম।” 

এ দিন পূজাপাদ স্বামী বিবেকানন্দ গিবিশচন্দ্রেব পদধূলি লইয়া 
বলিষাছিলেন,__“ধন্ত তোমার বিশ্বাস ভক্তি !” 

গিবিশচন্্র লিখিয়াছেন,__“জন্মদাতা পিতা যে অপবাধে ত্যজাপুত্ 
কবেন, সে অপবাধ__আমার পরম পিতাঁর নিকট অপবাধ বলিয় গণ্য হইল 
না। তিনি আমার বাঁড়ী আসিলেন__-দর্শনলাভে চবিতার্থ হইলাম । 
কিন্ত দিন দিন অন্তর কুঞ্চিত হইতে লাগিল! তিনি ন্নেহময়-__সম্পূর্ণ 
ধাঁবণ বহিল, কিন্তু নিজ কাধ্যেব আলোচনাষ আপনি লক্ষিত হইতে 
লাগিলাম-_ভক্তেরা কত প্রকাবে তাহার পূজা! কবে, ভাবিতে লাগিলাম-_ 
আপনাকে ধিক্কাব দিতে লাগিলাম !” 

উ্ীল্রা সনক্কক্েতেলে ভসভভক্সহানী 

“ইহাঁব কিছুদিন পবে ভক্তচুড়ামশি দেবেন্দ্রনাথ মন্তুমদীবেব বাসায় প্রত 
উপস্থিত হইলেন। আমিও তথায় উপস্থিত, চিন্তিত হইয়া বসিয়া আঁছি। 
তিনি ভাবাবেশে বলিলেন,__গগিরিশঘোষ, তুই কিছু ভাঁবিস নেঃ তোকে 
দেখে লোক অবাক্‌ হয়ে যাবে? 1৮ % 
7 শ্ররমরু্চ।  (তাবাবিঃ তই গিরণের প্রতি) তুমি গালাগাল খারাপ কথ! 


অনেক বল ; তা"হউক. ওসব বেরিয়ে যাওয়াই ভাল। বদবক্ত রোগ কারু কারুর আছে। 
বৃত বেরিয়ে যায় ততই ভাগ । 


চতুস্ত্রংশ পরিচ্ছেদ ৩২৭ 


শরীল্লাক্কষগুন্কেবেেক শ্পিল্কদ্কান-এক্কীল্পল ? 

গিবিশচন্দ্র তাহার “পরমহংসদেবের শিষ্য-স্নেহ” গ্রবন্ধে লিখিয়াছেন ₹__ 
“তাহার শিক্ষাদানের এক আশ্চর্য্য কৌশল, বাল্যকাল হইতে আমার 
প্রকৃতি এই যে, যে কাধ্য কেহ নিবাঁবণ করিবে, সেই কার্য আগে 
করিব। পবমহংসদেব একদিনে নিমিত্ত আমায় কোনও কাঁধ্য কবিতে 
নিষেধ করেন নাই। সেই নিষেধ না করাই, আমার পক্ষে পবম নিষেধ 
হইয়াছে। অতি ্বণিত কাঁ্য মনে উদর হইলে, আমাঁব পুরুষ-প্রকতিকে 
প্রণাম আসে । সেস্থলে পবমহংসদেবেব উদয় । কোথায় কোন ঘ্বণিত 
আলোচিন! হইলে পবমহংসদেবের কথায় বহুরূপী ভগবানকে মনে পড়ে। 
তিনি মিথ্যা কথা কহিতে সকলকে নিষেধ করিতেন। আমি বলিলাম, 
“মহাশয়, আমি তো মিথ্যা কথা কই, কিরূপে সত্যবাদী হইব?” তিনি 
বলিলেন, “তুমি ভাবিওনা, তুমি আমাব মত সত্য মিথ্যাৰ পার।” 
মিথ্যাকথা মনে উদয় হইলে, পরমহংসদেবের মুত্তি দেখিতে পাই, আর 
মিথ্যা বাহির হইতে চাহে না। সাংসারিক ব্যবহাবে চক্ষুলজ্জায় ছুঃএকটা 
এদিক ওদিক কথ! কহিতে হয়, কিন্ত যেআমি মিথ্যা! বলিতেছি, তাহা 
জানান দিবাব বিশেষ চেষ্টা থাকে । পরমহংসদেব আমার হৃদয়ের সম্পূর্ণ 
অধিকারী, সে অধিকাব তাহার স্নেহেব। এ স্নেহ অতি আশ্চর্য ! তাহাব 


উপাধি নাশের সময়েই শব হয়। কাঠ পোড়বার সময চড় চড় শব করে। সৰ 
পুড়ে গেলে আর শব থাকে না। 
"তুমি দিন দিন শুদ্ধ হবে। তোমার দিন দিন থুব' উন্নতি হবে। লোকে দেখে 
অবাক হবে। 
"আমি বেশী আস্তে পারবে! না £--ত। হউক,--তোমার এক্জিই হবে। 
জ্রীম-কখিত “প্র্ীরামকৃফকথামৃত" । ৩য় ভাগ, ৫ম খণ্ড, ৩য় পরিচ্ছেদ । 
( দেবেন্রের বাড়ীতে ঢক্ত সন্গে। ৬ই এগ্রেল, ১৮৮৫ খষ্টাব, ২ৎশে চৈত্র ।) 








৩২৮ গিরিশচন্দ্র 


কপায় যদি আমাব কোনও শুণ বর্তিয়া থাকে, সে গুণ-গৌরৰ আমাব, 
তিনি কেবল আমাঁব পাঁপগ্রহ্ণ করিয়াছেন, স্পষ্ট কথায় গ্রহণ কবিয়াছেন। 
তাহাব ভক্তেব মধ্যে যদি কেহ বলিত-__-“আমি পাপী! তিনি শাসন 
কবিতেন, বলিতেন__“ওকি ? পাপ কিসেব? আমি কীট-_আমি কীট 
বলিতে বলিতে কীট হইধা যাঁয়। আমি মুক্ত__আমি মুক্ত এ অভিমান 
রাখিলে মুক্ত হইয়া ঘায়। সর্বদা মুক্ত অভিমান বাঁখো, পাপ স্পর্শ 
কবিবে না|” 


হুম্রল্রভভান্নে জ্রীল্রাসক্কম্তসণে প্রশ্থম ভগুজত্লি 


*বামদাদা* প্রবন্ধে গিবিশচন্ত্র লিখিয়াছেন,__“পীড়িত অবস্থায় প্রত 
শ্যামপুকুবেব একটি বাঁটী ভাড়া কবিয়া আছেন। কালীপূজার দিন 
উপস্থিত হইল (৬ই নভেম্বব, ১৮৮৫ খুষ্টাব্ব )। ঠাঁকুব শ্রীমান কালীপদ 
ঘোষ *।মক একজন ভক্তকে বলিযাঁছিলেন, “আজ কালীপুজাব উপযোগী 
আয়োজন কবিও।” কালীপদ অতি ভক্তিব সহিত উদ্যোগ করিয়াছে। 
সন্ধ্যাব সময় প্রভৃব সম্মুখে পুজাঁৰব উপযোগী সামগ্রী স্থাপিত হইল। 
একদিকে নানাবিধ ভৌজ্যসামগ্রী, প্রত অন্ত আহাঁব কবিতে পাঁবিতেন না, 
তাহাব জন্য বালিও আছে। অপবদিকে স্তপাকাব ফুল, বক্তকমল, 
বক্তজবাই অধিক। পূর্বব-পশ্চিমে লম্বা ঘব ভক্তে পবিপূর্ণ। ঘরেব পশ্চিম 
প্রান্তে রাম দাদা, আমি তীহাব নিকটে আছি । আমাৰ অন্তর অতিশয় 
ব্যাকুল হইতেছে, ছট্‌ফট কবিতেছে, প্রতুব সম্মুথে যাইবাব' জন্য আমি 
অস্থির। রামদাদা আমায় কি বলিলেন, ঠিক আমার স্মরণ নাই, আমাব 
প্রকৃত অরস্থা তখন নয়, কি একটা ভাবান্তব হইয়াছে । .রামদাদ৷ যেন 
আমায় উৎসাহ দিয়া বলিলেন-__ যাওঃ যাও না!” রামদাদার কথায় 
আর সঙ্কোচ রহিল না, ভক্তমণ্ডলি অতিক্রম করিয়! প্রভুর সম্মুথে উপস্থিত 


চতুস্ত্রংশ পরিচ্ছেদ ৩২৯ 


হইলাঁম। প্রভু আমান দেখিয়া! বলিলেন, “কি কি - এ সব আজ ক'র্তে 
হয়।, আমি অমনি “তবে চবণে পুষ্পাঞ্জলি দিই” বলিয়া ছুই হাতে ফুল 
লইযা “জয় মা” শব্দ কবিয়! পাদপন্লে দ্িলাম। অমনি সকল ভক্তই 
পাদপদ্সে পুষ্পাঞ্জলি দিতে লাগিলেন । প্রভূ ববাভয়কবে প্রকাশ হইয়া 
সমাধিস্থ বহিলেন। সে দৃশ্ট যখন আমাব স্মরণ হয়, রামদাদাকে মনে 
পড়ে। মনে হয়, বাম দাদা আমাকে সাক্ষাৎ কালীপৃজ। করাইলেন |” * 
অগাধ বি্বাস এবং প্রথল অনুবাগেই গিবিশচন্ত্র তাহাঁব গুকত্রাতাগণেব 
মধ্যে সর্বাগ্রে ঠাকুবকে বুঝিয়া৷ তাহাৰ আধ্যাত্মিক সুক্মদশিতার পৰিচয় 
দিষাছিলেন। 


গিল্লেম্পচ্ত্ত্র ও বিতনকানত্কেক্ ভর্ক সুদ 


বিশ্ববিজয়ী স্বামী বিবেকানন্দ হৃদয়মধ্যে গুরুদেবকে সাক্ষাৎ ভগবান 
জানিলেও গিট শচন্দ্রেব সহিত তর্ক কবিয়া বলিতেন,_“ঠাঁকুবকে ভগবান 
বলিয়া আমি স্বীকাব কবি না।” পবমহংসদেব উভয়কে এ সম্বন্ধে তর্কে 
লাগাইয়া দিয়া আনন্দ অন্থভব কবিতেন। গিবিশচন্ত্র বলিতেন, 
“ভগবানেব সর্ব লক্ষণ তাহাতে, অস্বীকাৰ কবিবার উপায় নাই” এই 
তর্ক চলিত। উভয়েই শিক্ষিত, উভয়েই নান! বিষ্যায় পণ্ডিত, সমাগত 
ভক্তম গুলী নীরবে সেই সুদীর্ঘ সাববাঁন ত্কুক্তি শ্রবণ কবিতেন। (বিস্তৃত 
বিবরণ-__্রীম কথিত শ্রীস্ীরামকৃষ্জ ক্থামৃত, প্রথম ভাগ, ১৪দশ খণ্ড 





*  এতদ্সন্বন্ধে ধাহার! বিস্তৃত বিবরণ পাঠ কাঁরতে ইচ্ছা করেন, তাহার! ন্বগাঁয় 
রামচন্ত্রদত্ত প্রণীত 'পরমহংসদেষের জীবন বৃত্তান্ত” ( অষ্টবিংশ পরিচ্ছেদ ), স্বাসী 
সারদানন্দ প্রণীত “ট্রপ্রীরামকৃ্ণলাল! প্রসঙ্গ” (ঠাকুরের দিব্ভাব ও নরেন্্রনাথ, দ্বাদুশ 
অধ্যার-_দ্বতীয় পাদ) এবং শ্রীম-কথিত “্রীঞ্রীয়ামকৃষকথামৃত” ওর ভাগ, (এক বিংশ খণ্ড, 
৬ কালীপুঙ্জার দিবসে গ্যাষপুকুর বাটীতে ভক্ত সঙ্গে ) পাঠ করুন। 





৩৩০ গিরিশচন্দ্র 


ষটব্য ) «এরূপ তর্কে স্বামীঞ্জিব মুখেব সাম্নে বড় একটা! কেহ দ্াড়াইতে 
পাঁবিতেন না এবং স্বামীজিব তীক্ষুযুক্তিব সম্মুখে নিরুত্তব হইয়৷ কেহ কেহ 
মনে মনে ক্ষুগ্নও হইতেন। ঠীকুবও সে কথা অপবেব নিকট অনেক সময় 
আনন্দেব সহিত বলিতেন__অমুকেব কথাগুলে! নরেন্দব সেদিন ক্যাচ ক্যাচ 
ক'বে কেটে দিলে-_কি বুদ্ধি! সাকাববাদী গিরিশের সহিত তর্কে কিন্ত 
স্বামীজিকে একদিন নিকত্বব হইতে হইয়াছিল। সেদিন ঠাকুব শ্রীযুত 
গিবিশেব বিশ্বাস আবও দৃঢ় ও পুষ্ট কবিবাব জন্যই যেন তীহাব পক্ষে 
ছিলেন বলিয়া আমাদেব বৌধ হইয়াছিল ।” * 

স্বামীজি নিরুত্তব হইলে ঠাকুর আনন্দ কবিয়! গিরিশচন্দ্রকে বলিলেন, 
“ওর কাছ থেকে লিখে নাঁও যে, ও হাঁৰ মানলে!” (ভক্ত গিরিশচন্দ্র 
উদ্বোধন, জ্যৈষ্ঠ, ১৩২* সাল) 


সত্হত্ক্রলাল্ন সল্সক্কাত্ল্রল্প ভদ্র সক্সপাভষস্স 


স্বনামধন্য চিকিৎসক মহেন্্রলাল সবকাব সি-আই-ই মহাশয় পবমহংস- 
দেবেব চিকিৎসায় আসিয়া একদিন গিবিশচন্দ্রকে বলেন,__“আব সব কব 
_--990 4,0০0 ৮1৯10) 00107 5 ত০এ এমন ভাললোকটাব মাথা 
খাচ্চ ?” গিবিশচন্দ্র বলিলেন,“কি কবি মহাশয়! যিনি এ সংসার- 
সমুত্র ও সন্দেহ সাগব থেকে পার কর্লেন, তাকে আব কি ক'র্বো বলুন । 
তাব গু কি গু বোধ হর?” 

তাহাব পব গুরুপুজ1, মহাঁপুকষ ও জীবের পাপ গ্রহণু সম্বন্ধে তর্ক 
চলিতে লাগিল। ভক্তগণ বিস্মিত হইয়া উভয়ের তর্ক শুনিতেছেন। 
অবশেষে ডাক্তার সরকার গিরিশচন্দ্রকে বলিলেন,__-“তোমার কাছে হেরে 
গেলুম, দাও পায়ের ধুলো! দাও ।” গিরিশচন্দ্র পদধুলি লইয়া তিনি 


* স্বমী মারদানন্দ প্রণীত “প্রস্ীরামকৃষ্ণ লাল! প্র “( রু-ভাব- _পূর্বঘার্ধী )। 


চতুস্ত্রংশ পরিচ্ছেদ ৩৩১ 


নরেন্জ্রকে (.বিবেকানন্দ স্বামী ) বলিলেন, আর কিছু নাঃ 171৭ 17161180- 
(8৪1 [১০৬৮1 (গিবিশের বুদ্ধিমত্তা ) মান্তে হবে।” ধীঁহারা বিস্কৃত 
বিবরণ জানিতে ইচ্ছা! করেন, তাঁহারা *শ্রস্রীরামকৃষ্ণ কথামূত ( ১ম ভাগ)” 
পাঠ করুন। টাকায় কিয়দংশ উদ্ধত কবিলাম। 


ত্রীব/সক্রষ্জ্ের শ্রীমুছে ন্বক্কাম্ড শ্রবণ 


গিবিশচন্্র বলিতেন,__“আমাব মস্তিষ্ক নিতান্ত দুর্বল নহে, একদিন 
তাহাব শ্রীমুখে বেদান্তেব কথা শুনিতেছিলাম। তিনি বলিতেছিলেন_ 
“সচ্চিদানন্দ স্বরূপ মহাসমুদ্র দূব হ'তে দর্শন ক'বেই মহর্ষি নাবদ ফিয়লেন 


পা শি আশ "পল পপ আস পপ পপ সার রত জা 


* “ডাক্তার। (শ্রীরামকুঞ্চের প্রতি ) ভাল, তুমি যে ভাব হ'য়ে লোকের গায়ে প 
দাও, সেট! ভাল নঘ। 

শ্রীরামকৃষ্ণ । আমি কি জান্তে পারি গা, কাক গায়ে পা দিচ্ছি কি না? 

ডাক্তার। ওটা ভাল নয়, এটুকু তো৷ বোধ হয়? 

শ্রীরামকৃঞ্ণ । আমার ভাবাবস্বা আমার কি হয়, তা তোমার কি বলবো? সে 
অবস্থার পর এমন ভাবি, বুঝি রোগ হ'চ্ছে ধ জন্ভে। সঈশ্বরের ভাবে আমার, উন্মাদ হুয়। 
উম্মাদে এরাপ হয়, কি ক'ব্বে। ) 

ডক্তার। ( শিষাগণের প্রতি ) উনি মেনেছেন। 176 63107656০ 16151 101 
৬1020 118 0065 3 কাজট! 51041 এচী বোধ আছে। 

শ্িরিশ। (ডাক্তারের প্রতি) মহ্াশদ। আপনি ভুল বুঝেছেন। উনি সে জন্য” 
ছঃখিত হননি । এ'র দেহ শুদ্ধ-_-অপাপ বিদ্ধ। ইনি জীবের মলের জন্য তাদের স্পর্শ 
করেন। তাদের পাপ গ্রহণ ক'রে এর রোগ হবার খুব সম্ভাবনা, তাই কথনও কখনও 
ভাবেন। আপনার যখন 0০11০ ( শুল বেদনা) হয়েছিল, তখন আপনার কি 7£161 
(দুঃখ) হয় নাই, কেন রাত জেগে এত পড়তুম? তা বলে রাত জেগে পড়াটা কি অস্তায় 
কাজ? রোগের জঙ্য 16515 হ'তে পারে, ত! বলে জীবের মঙ্গল সাধনের ভন্ত স্পর্শ 
করাকে অন্যায় কাজ মনে করেন না।” 


৩৩২ গিরিশচন্দ্র 


শুকদেব তিনবার মাত্র স্পর্শ কবেছিলেন আঁর জগদ্গুরু শিব তিন গণ্ুষ 
জলপান ক'রেই কাৎ হযে পঞ্ড়লেন !, শুনিতে শুনিতে আমি তাহাকে 
বলিতে বাধ্য হইলাম, “মহাশয় আঁব বলিবেন না । আমাব মাথা টন্‌ টন্‌ 
করিতেছে, আব ধাবণা কবিতে আমি অক্ষম ।৮ 
গ্িক্িশ্-্ত্ত্ভল্র নিস্াস5 ভি ও জুন 

পবমহংসদেব বলিতেন, “গিবিশেব বুদ্ধি পাঁচ সিকে পাঁচ আনা” 
(অর্থাৎ ষোল আনাব উপব)। তাঁব বিশ্বাস ভক্তি আকৃডে পীওয়া 
বায় নাঁ।” 

ভক্তচূড়ামণি স্বর্গীয বামচন্ত্র দত্ত তীঁহাঁৰ “পবমহংস দেবেব জীবনবৃত্তান্ত 
গ্রন্থে লিখিয়াছেন,__“গিবিশবাবুব ভক্তিব তুলনা নাই। পবমহংসদেব 
তাহাকে বীবভক্ত, সুবভক্ত বলিয়৷ ডাকিতেন। গিবিশকে পাইলে তিনি 
যে ক আনন্দিত হইতেন, তাহ! ধাহাঁব৷ দেখিয়াছেন, তাহাঁবাই বুঝিতে 
পাবিধাছেন। তিনি বলিতেন যে, গিবিশেব ন্তায় বুদ্ধিমান ব্যক্তি আর 
দ্বিতীয় দেখেন নাই । মধুববাবুব বাবো৷ আন! বুদ্ধি ছিল এবং গিরিশের 
যোল আনাব উপরে চাণব ছয় আনা। 

পরম পৃজনীয় শ্রীমৎ স্বামী সারদানন্দ তাহাব শ্রীশ্রীবামকৃষ- 
লীল! প্রসঙ্গে ( গুরুভাব-_পূর্ববার্ধ ) লিখিয়াছেন,__“গৃহী ভক্তগণেব ভিতর 
শ্ীযৃত গিবিশের তখন প্রবল অন্ুবাগ । ঠাকুর কোনও সময়ে তাহার 
অদ্ভুত বিশ্বাসেব ভূয়সী প্রশংসা করিয়! অন্য ভক্তগণকে বল্য়াছিলৈন,__ 
“গিরিশেব পাচ সিকে পাঁচ আন! বিশ্বাস! ইহার পব লোকে ওর অবস্থা 
দেখে অবাক ভবে !” বিশ্বাস-ভক্তিব প্রবল প্রেরণায় গিবিশ তথন হইতে 
ঠাকুরকে সাক্ষাৎ ভগবান _জীবোদ্ধারের জন্য কৃপায় অবতীর্ণ বলিয়া 
অন্গক্ষণ দেখিতেন এবং ঠাকুব তাহাকে নিষেধ করিলেও তাহার এ ধারণা 
সকলের নিকট প্রকাশে বলিয়৷ বেড়াইতেন ।” 


চত্ন্ত্ংশ পরিচ্ছেদ ৩৩৩ 


গিল্িশ্পেল্র ন্নিচি্ভ আল্লাকক্ষেল্র শক্তি আনা . 
“* * * ঠাকুরের নিকটে যখন বহু লৌকের সমাগম হইতে থাকে, 
তখন ধন্ম বিষয়ে আলোচনা করিতে কবিতে পবিশ্রান্ত ও ভাবাবিষ্ট হুইয়! 
তিনি এক সময়ে শ্রীশ্রীজগন্মীতাকে বলিয়াছিলেন, “মা; আমি আর এত 
বকৃতে পাবি না) তুই কেদাব, রাম, গিবিশ ও বিজয়কে * একটু একটু 
শক্তি দে, যাতে লোকে তাদের কাছে গিয়ে কিছু শেখবার পরে এখানে 
( আমাব নিকটে ) আসে এবং ছুই এক কথাতেই চৈতন্লাভ করে !” . 
“শ্রশ্রীবামকৃষ্ণ লীলা প্রসঙ্গ” (ঠাকুরের দিব্যভাঁব ও নবেন্দ্র নাথ )। 


গিল্িশভত্ত্রেল্র জল্রিজেক্র হম্পিষ্য 


পবমহংসদেব বলিতেনঃ__“মন ও মুখ এক কবাই সর্ধব সাধনের অেষ্ঠ 
সাধন” | গিবিশচন্দ্র ভাল বা মন্দ__কোন কাঁধ্যই লুকাইয়া করিতে অভ্যস্থ 
ছিলেন না। তিনি স্থবাপান করিতেন, তাহা প্রকাশ্টেই কবিতেন, 
লোক-নিন্দাব ভয়ে লুকাইয়া পান কবিতেন না। “চৈতন্ত-লীলা* অভিনয় 
দর্শনে মুগ্ধ হইয়া কতকগুলি গোম্বামী ও বিশিষ্ট বৈষ্ণব তাহাকে দর্শন 
করিবাব নিমিত্ত তাহাঁব বাঁটীতে আসেন। গিরিশচন্দ্র তখন মগ্পান 
কবিতেছিলেন, নিকটেই বোতল বহিয়াছে। বৈষ্ণবগণেব ধারণা ছিল-_ 
তিনি একজন পবমভক্ত এবং সাধু পুরুষ কিন্তু তাহাকে মদ থাইতে দেখিয়া 
জনৈক গোস্বামী সন্দিপ্ধ হইয়! জিজ্ঞাসা কবিলেন৮-“ও কি, ওঁষধ মেবন 
কণচ্চেন ?” , নিভীক গিবিশচন্ত্র অক্লানবদনে উত্তর করিলেন,--“নাঃ মদ 
খাচ্চি।” বৈষ্ণবেবা বড়ই ব্যথিত হুইয়! প্রস্থান করিলেন। গিরিশচন্দ্র 
বলিতেন,__«উষধ খাইতেছি বলিলেও .বৈষবগণ সন্তষ্ট হইতেন, কিন্ত 





* ধৃত কেদারনাথ চট্োপাধ্যার, রামচন্দ্র দত, ক যোষ ও প্রভুপাদ 
বিজয় কৃ গৌদামী । 


৩৩৪ গিরিশচন্ড্র' 


মিথ! বলিতে আমার প্রবৃত্তি হইল না। ভক্তি লইয়া তীহাঁরা আঁসিয়া- 
ছিলেন-_ত্বণা করিয়া চলিয়৷ গেলেন ।” 

মদ্দিরা তীহাকে উত্তেজিত করিলেও উচ্ছল করিত না, পবস্ত তাহার 
কবিত্ববিকীশেরই সাহাঁষ্য করিত, এ নিমিত্ত পরমহংসদেবের আশয় গ্রহণ 
করিয়াও গিরিশচন্দ্র স্ুরাপান পরিত্যাগ করেন নাই এবং পরমহংস দেবও 
তাহাকে কখনও নিষেধ কবেন নাই। 

কোন কেন ভক্ত বেশ্টা-সংসর্গ এবং মছপানেব নিমিত্ত শ্রীপ্রীবামকৃফ 
দেবের নিকট গিবিশচন্দ্রের নিন্দা কবিতেন। তাহাতে তিনি উত্তর 
কবিয়াছিলেন --“তাতে ওর দোষ হবে না। ওব ভৈববের অংশে জন্ম। 
আমি বহুদিন আগে গিরিকে মা কালীর মন্দিবে দেখেছি__-উলঙ্গ অবস্থা, 
ঝাঁকড়া ঝাঁক! চুল, কাপড়খানি মাথায় পাঁগড়ির মত জড়ান, বগলে 
বোতল, নাচতে নাচতে এসে আমার কোলে ঝাঁপিয়ে পণ্ড়ে-__আমাব 
বুকে মিশিয়ে গেল !” 

গিবিশচন্ত্রকে ঠাকুব একদিন বলিয়াছিলেন,_-“**%* সংসাঁব করো,-_ 
অনাঁসক্ত হয়ে । গায়ে কাদা লাগবে, কিন্তু ঝেড়ে ফেল্বে, পাঁকাল মাছের 
মত। কলঙ্ক সাগরে সাতার দেবে” তবু কলঙ্ক গায়ে লাগবে না !” 
শ্রীশ্রীরামরু্ণ কথামত, ৩য় ভাগ (ত্রয়োদশ খণ্ড )। 

আর একদিন পবমহংস দেব, গিবিশচন্ত্র সম্বন্ধে বহু ভক্তগণ সমক্ষে, 
বিবেকানন্দ স্বামীকে বলিয়াছিলেন,--“ওর থাক আলাদা। যোগ 
আছেঃ ভোগও আছে, যেমন রাবণের ভাব--নাগকন্তাঃ দেবকন্তাও লেবে 
আবার রামকেও লাভ ক/র্বে।” শ্ীশ্রীরামরুঞ্চ কথামত, ২য় ভাগ 
(ভ্রয়োবিংশ খণ্ড )। 


পঞ্ুত্রিংশ পরিচ্ছদ 


জাছবাতনেঞ্ভ শ্রিক্ছেটাকব্তে গিক্িস্পডক্র 


“রূ্-সনািন” নাটর্ক অভিনয়কালীন টার থিয়েটারে এক বিপ্লব, 
উপস্থিত হয়। ষ্টারের অসামান্ প্রতিপত্তি দর্শনে কলুটোলার স্ুবিখ্যাত 
মতিলাঁল শ্লীলের পৌত্র স্বগায় গোপাললাল শীল মহাশয়ের থিয়েটার 
করিবার সখ হইল। পিতৃবিয়োগের পব তখন তিনি অগাঁধ সম্পত্তির 
অধিকারী হইয়াছেন। গোঁপীলবাবু ষ্টার থিয়েটাবের জমী কিনিয়া লইয়া 
উক্ত থিয়েটাবের স্বত্বাধিকারীগণকে থিয়েটার বাটা স্থানান্তরিত করিবাৰ, 
নোটিস দিলেন। সম্প্রদায় বিষম সমস্যায় পড়িলেন। বড়লোকের সহিত 
বিবাদের পরিণাম চিন্ত। করিয়া__তীহার! বড়ই উদ্বিগ্ন হইয়! উঠিলেন। 

অবশৈষে গিরিশচন্দ্র শ্রীযুক্ত অম্ুতলাল বস্থঃ ৬অমৃতলাল মিত্র, 
শীযুক্ত হরিপ্রসাদ বন্থু এবং ৬দাশুচবণ নিয়োগী-_ স্বত্বাধিকারীগণের সহিত 
পবামর্শ করিয়া স্থিব করিলেন, __থিয়েটার বাটাটি গোঁপাললাল বাবুকে 
বিক্রয় করা যাঁউক, কিন্ত ছ্রার থিয়েটারের নাম (গুড উইল) হাত 
ছাঁড়া কর! হইবে ন) বিক্রয় করিয়! যে টাকা পাওয়া যাইবে, তাহা লইয়া 
অন্থাত্র জমী থবিদ কবিয়া ষ্টাব থিয়েটারের নৃতন পত্তন করিতে হইবে । 

তাহাদের প্রস্তাবে গোপাললাল বাবু সম্মত হইয়! ত্রিশ হাজার টাকা 
দিয়া বাড়ীথানি ক্রপ্ন করিয়। লইলেন। বিদায়-সম্ভাষণের বিশেব বিজ্ঞাপন 
প্রচার পূর্বক ষ্টার থিয়েটার সম্প্রদায় “বুদ্ধদেব ও বেল্লিকবাজার' শেষ 
অভিনয় করিয়া বিডন স্ট্রীট হইতে চিরবিদায় গ্রহণ করিলেন। সে দিনের. 


৩৩৬ গিরিশচন্দ্র 


অভিনয় রাত্রে সাহিত্যরঘী স্বর্গায় অক্ষয়চন্ত্র সরকার মহাঁশয় উপস্থিত 
ছিলেন। তৎ-সম্পার্দিত “নব বিভাকর সাধারণী” সাপ্তাহিক পত্র .হইতে 
তাহাব মন্তব্য নিম উন্নত কবিলাম £-- 

“গি রশবাবু সদলে ষ্টার থিয়েটার ভবন হইতে বিদায় লইলেন। ষ্টাব 
থিয়েটাঁব-বাঁড়ীটির সহিত আব ত্াহাদেব কোন সম্পর্ক রহিল না। বঙ্গের 
সর্ধপ্রধান রঙ্গালয়েব এই আকস্মিক তিবোভাব বড়ই আক্ষেপেব কথা । 
দর্শকে-__সমালোচকে প্রকৃত বঙ্গবসপান গিবিশবাবুর প্রসাদেই কবিতে- 
ছিলেন। *** বুদ্ধদেব চবিত ও বেল্লিক বাজাব ষ্টার থিয়েটাবেব ছুটা 
শেষ অভিনয়। শেষদিনে রঙ্গশালা জনতায় যেন ভাঙ্গিয়া পড়িতেছিল। 
বঙ্গক্ষেত্রেব প্রতিষ্টা পর্য্যন্ত কোথাও কখন এত জনত! হইয়াছিল কি না 
সন্দেহ। নবীন প্রবীণ দর্শকদল সাধ মিটাইয়! গিবিশব'বুব বঙ্গময়ীকল্পনব 1 
সাধনে বিজয়! দেখিলেন। অভিনয়ান্তে “বিবাহ-বিত্রাট” প্রণেত। শ্রীযুক্ত 
অমৃতলাল বস্থ এই ক্ষুদ্রকালে তাহাদেব যে বাশি বাশি ক্রটি হইয়াছে, 
তাহা শ্বীকাৰ কবিয়া! অতি বিনীত বচনে সর্বসমক্ষে ক্ষমা চাহিলেন। 
পর্ণকুটার বীধিয়৷ কখনও প্রকান্যে আবার দেখা! দিবেন, তাহাঁব আভাস 
দিলেন। কলুটোলাস্থ প্রসিদ্ধ শীল বংশীয় শ্রীধুক্ত গোপাললাল শীল যে 
ইহার সর্ধবসন্বে অধিকাব লাভ কবিয়াছেন, তাহাও স্পষ্টাক্ষরে সাধারণেব 
গোচব কবিলেন। সকলেই ধেন শোকে ঘিয়মাঁন। 

গোপালবাবুব একে তরুণ বয়স, তায় তিনি অতুল এশ্বর্যযের অধিকাবী; 
এ সময় কিছু সাবধানে অন্তর্পণে চল] তাহার পক্ষে অতি কর্তব্য। 
তিনি যেমন ভাগ্যবন্তঃ তাহাতে তাহার নিকট অনেক আশা করা যার়। 
গোপালবাবুর এটা বেশ বোঝ! উচিত, যে, ষ্টার থিয়েটার গৃহ অর্থ-সামর্থ্যে 
যেমন সহজে দখল লইলেন, অর্থ সামর্্যে যশের রাজ্যে তেমন স্হজে 
দল লইতে পারিবেন না । আমাদের শেষ কথা) * * * সঙ্গে সঙ্গে 


পঞ্চত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৩৭ 


যেন নাটকাভিনয়েব পবিপোঁধণে ভাগ্যবান গোপালবাবুব বিশেষ দৃষ্টি 
থাকে।» নববিভাকব সাধারণী, ১৯ পৃষ্টা, ১২৯৪ সাল। 

গোঁপাঁললাল বাবুর নিকট প্রাপ্ত উক্ত ত্রিশ হাঁজার টাকায় ষ্রাব 
থিষেটাব সম্প্রদায় কর্ণওয়ালিন্‌ স্্ীটস্থ হাতিবাগানে জায়গা কিনিয়৷ পুনবায় 
্টাব থিয়েটাবের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা কবিলেন, এবং শ্রীযুক্ত যোগেন্দ্র নাথ শিত্র ও 
ধর্শদাস স্থরেব উপব বঙ্গালয় নির্মীণেব ভাঁবার্পণ কবিয়া ঢাকায় সদলে 
'অভিনয়ার্থে গমন কথিলেন। 

গোপালবাবু ষ্টাীব থিয়েটাবেব নাম পবিবর্তন করিয়া! এমাবেন্ড থিয়েটার 
নাম দিলেন এবং নাট্যশালা স্ুসংস্কৃত কিয়া ভা! ন্যাসান্ঠাল থিয়েটাঁব * 











* পুরে উন্পখিত হইয়াছে, স্যাসান্থাল থিয়েটার হইতে গিরিশচন্্র চলিয়। আসিবার 
পর প্রতীপট্টাদ জন্থরী, কেদারনাথ চৌধুরীকে মানেজার করিয়! থিয়েটার চালাইতে 
থাকেন। কেদারবাবু-বিরচিত চত্রতঙ্গ ( ছুর্য্যোধনের উরুতক্ষ ) নাটক এবং তৎকর্তৃক 
নাটকাকারে পাঁরবর্ত্রিত বন্ধিমচন্দের 'আনন্দ মঠ' এই সমযে খ্যাতির সহিত অভিনীত 
হইয়াছিল। তাহার পর প্রতাপটাদ্দবাবুর নিকট হইতে থিয়েটার ভাড়া লইয়! 
অনেকেই অনেক নাটক অভিনয় করিয়াছিলেন । তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ অভিনেতা পণ্ডিত 
গ্রিহরিভূষণ ভট্টাচার্য মহাশয়ের “কুমার সম্ভব” নাটক বিশেষ উল্লেখযোগ্য । ধন্মদাসবাবু 
কর্তৃক চমকপ্রদ সুন্দর দৃগ্তপটা'দ সংযোজ্জনে এবং অভিনয়-নৈপুণ্যে নাটকথখানির সুখ্যাতি 
হইয়াছিল । ইহার কিছুদিন পরে ভুবনমোহন বাবুর মীতৃবিয়োগ ( ১৮৮৪ খুঃ) 
হইলে তিনি পুনরায় গাহার স্ত্রীর নীমে এ বাটা কিনিয়। লন এবং কেদারনাথ 
বাবুকেই তাহার থিয়েটারের ম্যানেজার রাখেন। এই সময়ে যে কয়েকখানি নাটক 
আভনীত হয় তগ্মধ্যে কেদারবাবু কর্তৃক নাটকাঁকারে পরিবর্তিত কবীন্র রবীন্্রনাথ ঠাকুরের 
'বউঠাকুরানীর হাট' খুব জমিয়াছিল। প্রবীণ অভিনেত! স্বর্গীয় রাধামাধব কর 'বস্স্ 
রায়ের" ভূমিব! গ্রহণ করিয়! নুমধুর সঙ্গীতে দর্শকগণকে মুখ করিয়াছিলেন। অতঃপর 
ভূধনমোহন বাবুর দেনার দায়ে পুনরায় খিরেটার নিলামে উঠ এবং ষ্টার থিশ্নেটারের 
স্বত্বাধিকারিগ্বণ তাহ! কিনিয়! লইয়া বাড়ী ভাঙ্গিয়! ফেলেন। 

তথ 


৩৩৮ গিরিশচন্দ্র 


হইতে অর্দেন্দুশেখব মুস্তফী, মহেন্দ্লাল বস্তু, কেদারনাথ চৌধুরী, রাধামাধব 
কব, মতিলাল স্থুর প্রভৃতিকে লইয়া দল গঠিত কবিলেন। কেদীববাবু 
ম্যানেজার হইলেন । তাহাব রচিত “পাগব নির্বাসন নাটকেব মহলা 
আরম্ত হইল। গোঁপালবাবু বিস্তব অর্থব্যয়ে স্বতন্ত্র ডায়নাম! বসাইয়া 
থিয়েটাবেব ভিতব-বাহিব এই প্রথম বৈদ্যুতিক আলোকমালায় বিভূষিত 
কবিলেন। বলা বাহুলা মে সময়ে কলিকাতায় ইলেকটিক লাইটের 
এপ প্রচলন ছিল না। ৮ই অক্টোবব (১৮৮৭ খুঃ ) মহাঁসমীবোহে 
এমাবেল্ড থিয়েটাবে “পাণ্ডব নির্ববাঁসন+ প্রথমাভিনীত হয়। সুপ্রসিদ্ধ শিল্পী 
জহবলাল ধব এবং শ্রীযুক্ত শশিভূষণ দে-সম্পাদিত উৎকুষ্ট দৃশ্ঠপট এবং 
বহুমূল্য পৌঁষাঁক-পরিচ্ছদ, বিছ্যুতাঁলোকে প্রতিফলিত হইয়া দর্শকমগুলীকে 
চম্তরুত কবিয়া তুলিয়াছিল। 

কিন্তু তই মাস যাইতে না যাইতে গোঁপাললাঁল বাবু গিরিশচন্দ্রে 
অভাব বোঁপ করিতে লাগিলেন । এত টাঁকা ঢ।লিলেন-__কিন্তু থিয়েটাব 
তেমন জমিল কই? গোপালবাবুকে অনেকেই বলিতে লাগিলেন__ 
“মহাশয়, থিয়েটাবে যদি ফুল ফুটাইতে চান__গিরিশবাঁবুকে লইয়া আম্মুন, 
এ যে আঁপনাঁব শিবহীন যজ্ঞ হইতেছে ।” গোপালবাবু _গিবিশচন্ত্রকে 
তাহাঁব থিয়েটাঁবের ম্যানেজাব কবিবাব নিমিত্ত তৎপর হইলেন। 

হাঁতিবাঁগানে ষ্টাব থিয়েটাবেব নূতন বাড়ীর নির্্ীণকাধ্য তখন প্রায় 
শেষ হইয়া আসিয়াছে। যে টাকা তীাভাবা গোপালবাবুব কাছে 
পাইয়াছিলেন, তাহা! জমী কিনিতেই গিয়াছিল , পরে স্বত্বাধিকাবিগণ 
নিজ নিজ চেষ্টায় যে টাকা আনিয়াছিলেন, তাহা! হইতেই বাটা নির্মিত 
হইতেছিল,_এক্সণে সে টাকাও ফুবাইয়! গিয়াছে, টাকার এক্ষণে বড়ই 
'টানাটানি। গ্রিরিশচন্দ্রের উৎসাহ ও ভরসা! পাইয়৷ এবং তাহাকেই 
'অবলগন করিয়া টার থিয়েটারের স্বত্বাধিকারিগণ খণগ্রন্ত হইয়৷ নৃতন বাড়ী 


পঞ্চত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৩৯ 


নির্মাণে প্রবৃত্ত হইয়াছেন, _এক্ষণে এই সঙ্কটাবস্থায় তাহাদিগকে ফেলিয়া 
তিনি যান কি করিয়? গিরিশচন্দ্র গোপালবাবুর প্রেরিত লোককে 
এমারেন্ড থিয়েটাবে যোগদানে তাহার অসম্মতি জানাইলেন। গোপাল- 
বাবুও ছাড়িবার পাত্র নহেন, তিনি নগদ কুড়ি হাঁজার টাঁক। বোনাম এবং 
মাসিক ৩৫০-২ টাঁকা কবিয়৷ বেতন দিবার প্রস্তাব করিয়া পুনরায় লৌক 
পাঠাইলেন। 

এই প্রস্তাবে গিবিশচন্ত্র ভাবিলেন,_-'গোপালবাবু বোনাস স্ববপ 
তাহাকে কুড়ি হাঁজার টাক! দিতে চাহিতেছেন,_-সেই অর্থে তাহাব ষ্টাব 
থিয়েটারেব প্রিয় শিষ্তদের অর্থাভাব ঘুচিয়! নির্ব্িশ্বে বঙ্গালয়-নির্মীণ সুসম্পন্ন 
হইবে। তাহার শিক্ষাতে তাহাবা কাধ্যক্ষম হইয়াছে-_কাঁধ্য চালাইতেও 
পাবিবে। কিন্তু না যাইলে গোপালবাবুব কোপে পড়িতে হয়। গোঁপাল- 
বাবু পরম্পরায় প্রকাশ করিতেছিলেন যে, “গিরিশবাবু কুড়ি হাজার টাকা 
লইয়া, এমাবেন্ড থিয়েটারের ম্যানেজার হন--ভাল, নচেৎ তিনি এ কুড়ি 
হাজার টাঁক৷ ব্যয় করিয়া টার থিয়েটাবের সমস্ত অভিনেতা ও অভিনেত্রী 
ভাঙ্গাইয়৷ লইবেন। এইবপ সঙ্কটে পড়িয়৷ গিবিশচন্ত্র গোপালবাবুব 
নিকট ২০ হাজার টাকা! বোনাস ও ৩৫০২ টাঁকা মাসিক বেতনে, পাঁচ 
বৎসবেব এগ্রিমেণ্টে আবদ্ধ হইয়া! এমাবেন্ড থিয়েটাবে প্রবেশ করিলেন। 
শিশ্বংসল গিরিশচন্দ্র উক্ত কুড়ি হাজার টাকা! হইতে ষোল হাঁজার টাকা 
শিষ্দের নিঃম্বার্থভাঁবে দান কবিয়া» বঙ্গালয় নির্শাণেব ব্যয় সন্কুলান কবেন 
এবং স্বত্বাধিকারিগণকে বিশেষ অনুরোধ কবিয়া বলেন,_“তোমরা 
ভদ্রসম্তান, নান! প্রোপ্রাইটাব কর্তৃক লাঞ্ছিত হইয়া, এক্ষণে ঈশ্ববের 
ইচ্ছায় স্বাধীন হইলে ;- আমার অনুরোধ, যে সকল ভদ্রসস্তান, 
তোমাদের আশ্রয় গ্রহণ করিবে, তাহাবা যেন কখন কোনরূপ লাঞ্চিত 
না হয়।” 


৩৪০ গিরিশচন্দ্র 


প্পুর্শাভিতুজ 

এমারেল্ড থিয়েটাবে গিবিশচন্ত্রেব “পূর্ণচ্ত্র” এবং «বিষাদ নামে দুইখানি 
নাটক অভিনীত হয়। দুইখানি নাটকই আজি পর্য্যন্ত নাট্যামোদিগণেব 
নিকট পরম আঁদবেব জিনিষ হইয়া বহিয়াছে। পূর্ণচন্ত্র নাটক €ই চৈত্র 
(১২৯৪ সাল) প্রথম অভিনীত হয। অভিনয় আবস্ত হইবার পূর্বে 
থিয়েটাবেব স্বত্বাধিকাঁবী গোপাললাল বাবুব উক্তি ও তাহাব স্বাক্ষবিত 
একটা কবিতা মহেন্দ্রলাল বস্ত্র কর্তক পঠিত হয়। কবিতাটা গিবিশচন্দ্রেব 
বচিত। যথা 

“সঞ্চালিত বাসনায়, মত্ত মন সদা! ধায়, 
বাবণ না মানে হার প্রমত্ত বাবণ ! 


অবহেলি প্রতিবাদ, যখন যা! উঠে সাধ, 
আশাব ছলনে ভুলি, কবি আস্বাদন । 

আছে যাব ধন জন, বসহীন সে জীবন__ 
প্রেমেব কাঙ্গীলী কেবা তাব সম ভায় ! 

বিস্জন প্রেম-আশে, স্বার্আঁশে সবে আসে, 
বিড়ম্বনা__বুঝিবে কি অন্ধ সে ঈর্ষায় ! 

প্রতাবণাপূর্ণ হাসি, নহি আব অভিলাষী, 
পবিত্ৃপ্ত-_তিক্ত বৌধ হয় সমুদয়, 

বিমল কবিত্ব বসে অন্তব আনন্দে বসে, 
বস-বশে বঙ্গালয় করেছি আশ্রয় । 

দেখায়ে প্রাণেব ছবি, ভাবে ভোব গায় কবি; 
প্রাণ খুলি ধবি তুলি চিত্রে চিত্রকব। 

ভাঙ্গিয়৷ কালেব দ্বাব, প্রকাশে ঘটনা হাব, 
হাওয়ায় নৃতন স্থষ্টি করে নটবর। 


পঞ্চত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৪১ 


উচ্চ সাধ অপরাধ, লোকে দেয় অপবাদ, 
পবিহাসে মন্দ ভাঁষে নিন্দক কুজন; 
কেহ কত বলে ছলে, এত অর্থ গেল জলে, 
বোধহীন যুবা-_শীপ্র হইবে পতন ! 
কেহ কয় অভিনয়, নির্দোষ তেমন নয়, 
অজ্ঞ যেই__বিজ্ঞ সাজে, বোঝে কি কথায়? 
ক্রমে ফুলকলি হাসে, পদ্মে মধু ক্রমে আমে, 
শশধর পূর্ণকায় কলায় কলায় ! 
গঞ্জনায় নাহি ডবি, কুচ্ছ কথা তুচ্ছ করি, 
নব বসে ভাঁসে দীন__এই আকিঞ্চন, 
নরত্ব বিহীন দীন যেই জন বসহীন,__ 
কাব্যবসে তারও যেন মগ্ন বহে মন। 
শ্রীগোপাললাল শীল, প্রোগ্রাইটার।” 
এই নাটকের প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_ 
শীলিবাহন- মহেন্দ্রলাল বস্থ; পূর্ণচন্ত্র-গোলাপন্থন্দবী (স্থুকুমারী 
দত্ত), দামোদর--মতিলাল সুর, সেবাদাস- পণ্ডিত শ্রীযুক্ত হরিভূষণ 
ভষ্টাচার্য্যঃ জম্মু ( চাঁমাব )--শিবচন্ত্র চট্টোপাধ্যায়, গোরক্ষনাথ-__ঠাকুরদাঁস 
চট্টোপাধ্যায় (দাস্বাবু ), ইচ্ছ1-_ক্ষেত্রমণিঃ লুনা--শ্রীমতী বনবিহাৰিণী, 
শাবী-_কুম্ুমকুমারী (হাঁড়কাটা গলিব ), সুন্দরা__কিরণশনী (ছোট রাঁণী ) 
ইত্যাদি।, জঙ্গীতাচাধ্য__শশীভূষণ কর্মকার; রঙ্গভূমিসজ্জাকব-_ 
ধর্মদাস স্থব ও শ্রীযুক্ত শশীভূষণ দে। 
গিবিশচন্দ্রের জীবনই আধ্যাত্মিকতা পূর্ণ। যৌবনের উচ্ছৃত্খল 
অবস্থাতেও আমবা তাহাকে মুমুুর সেবা! করিতে দেখিয়াছি এবং ভগব্থ- 
কপালাভের নিমিত্ত তাহার আন্তরিক ব্যাকুলতার পরিচয় পাইয়াছি। 


৩৪২ গিরিশচন্দ্র 


পরমহংসদেবের আশ্রয়লাভ কবিবাব পূর্বেও তিনি যে সকল নাটক 
লিখিয়াছিলেন, সে সকল নাটকের স্থানে স্থানে তাহার ম্বভাবজাত 
আধ্যাত্মিক ভাবের স্ফুরণও লক্ষিত হয়। প্রথম প্রথম সাক্ষাতে পর 
শ্রীরামরুষ্জদেব গিরিশচন্দ্রকে বলিয়াছিলেন,__"তোমার হ্ৃদয়-আঁকাশে 
অরুণোদয় হয়েছে, নইলে কি “চৈতন্যলীলা লিখতে পারো, শীগৃগির 
জ্ঞান-হ্য্য প্রকাশ পাঁবে।” যাঁহাই হউক ঠাঁকুবেব কৃপালাঁভ করিবাব পর 
বুদ্ধদেব, বিহ্মঙ্গল ও কপসনাতন নাটকে গিবিশচন্রেব আধ্যাত্মিক ভাঁব 
বিশেষরূপ বিকশিত হইয়াছিল। তাহার পৰ “পূ্ণচন্ত্র নাটক হইতে 
তাহার হুক্ম আধ্যাত্মিক দৃষ্টি কিরূপ খুলিয়া গিয়াছিল»_-ধাহাঁবা তাহা 
নসীরাম, জনা, কবমেতি বাই, কাঁলাপাহাড়, পাণ্ডব-গৌবব, ভ্রান্তি, 
শন্করাঁচার্ধ্য প্রভৃতি নাটকগুলি মনোযোগেব সহিত পাঠি কবিয়াছেন, 
তাহাদিগকে আর বিশেষ কবিয়! বুঝাইতে হইবে না। 

“ইশ্বর মঙ্গলময়, শিক্ষার নিমিত্ত তিনি মাঁনবকে দুঃখ দেন,_-অসংশয় 
চিত্তে ভগবানে বিশ্বাস রাখেো”-_গিবিশচন্ত্র “পূর্ণচন্ত্র নাটকে এই শিক্ষা 
প্রদান করিয়াছেন। নাটকেব অভিনয় সর্বাশস্থন্দর হইয়্াছিল,__ 
সংবাদপত্র ও শিক্ষিত সমাজে ইহাব বথেষ্ট স্থখ্যাতি বাহিব হইয়াছিল। 
দামোদর, ইচ্ছা! ও পূর্ণচন্দ্রের ভূমিকাভিনয়ে-_মতিলাল স্ুব, ক্ষেত্রমণি 
ও গোলাপন্ুন্দরী অদ্ভুত কৃতিত্বেব পৰিচয় দিয়াছিলেন। এই নাটকের 
অভিনয় দর্শনে স্থপ্রসিদ্ধ 'রেজ এগ বাইয়ৎ+ পত্রের প্রতিভাঁশালী সম্পার্দক 
স্বর্গীয় শভভূচন্দ্র মুখোপাধ্যায় মহাশয় লিখিয়াছিলেন,_-“এরু 'পূর্ণচন্ত্রে 
গোপালবাবুর বিশ হাঁজাব টাঁকাব উপর আদাঁয় হইয়াছে ।” 

ন্িমীদ্ 

২১শে আশ্িন (১২৯৫ সাল) এমারেন্ড থিয়েটারে গ্িরিশচন্ত্রের “বিষাঁদ” 

নাটক প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতা৷ ও অভিনেত্রীগণ 


পঞ্চত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৪৩ 


অলর্ক- মহেন্ত্রলাল বন্থ মাঁধব-_মতিলাল স্থুর, শিবরাঁম ও দূত-- 
পণ্ডিত শ্রীযুক্ত হরিভূষণ ভট্টাচাঁধ্য) জিৎসিং__খগেন্দরনাথ সবকার, ফকিরত্রয় 
- শ্রীযুক্ত পর্ণচন্তর ঘোঁধ, শ্রীযুক্ত ঠাকুবদাস চট্রোপাধ্যায় ( দ্বাস্থবাবু) ও 
যাদবচন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, চোরগণ-_শিবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কুমুদনাথ সরকার 
ও ক্ষীরোদচন্দ্র পলশ্রী, াড়ী__দান্তু বাবু, সরন্বতী ( বিষাদ )_ কুন্ুমকুমাবী 
( হাঁড়কাটা গলিব), উজ্জলা-_কিবণশনী ( ছোটরানী ), সোহাগী__ 
ক্ষেত্রমণি, রীজমাতা-_হরিমতী (গুলফন ) ইত্াার্দি। সঙ্গীত-শিক্ষক-_ 
মোহিতমোহন গোস্বামী ও শ্রীযুক্ত পূর্ণচন্ত্র ঘোষ, বঙ্গভূমি-সঙ্জাকর-_ 
ধ্মদাঁস স্থুর ও শ্রীযুক্ত শণীভূষণ দে। 

সবন্বতী (বিষাদ ) চরিত্র-_গিরিশচন্ত্রেব একটা অপূর্বব স্ষ্টি। স্বামী 
বেগ্রাসক্ত- বেশ্টাগৃহেই থাকেন। সরস্বতী পতি-সেবায় জীবন উৎসর্গ 
করিয়! বালকের ছন্মবেশ ধাবণ করিলেন এবং পবিষাদ” নাম গ্রহণ করিয়! 
বেশ্তার দাসত্ব স্বীকাঁ করিলেন। 'নববিভাঁকরে প্রকাশিত হয়-- 
“হিন্দু-রমণীর পতিব কল্যাণে আত্মবিসঙ্জন বিবল নহেঃ কিন্তু পত্বীভাব 
বিস্থৃত হইয়া, পতি প্রত বুঝিয়া__তদগতা-প্রাণা হইয়! দাসীর ন্যায় থাকিতে 
মাত্র এই সবম্বতীকে দেখিলাম। গিবিশবাবুব এটা একটি সৃষ্টি। 
“বঙ্গবাসীতে” বাহিব হয়-লোকশিক্ষার জন্যই অভিনয়ের স্থষ্টি। বিষাদে, 
এ লোকশিক্ষাব প্রচুব চেষ্টা আছে। হ্থনিপুণ অভিনেতা এবং অভিনেত্রী- 
গণেব অভিনয় চাতুর্ধ্যে এ চেষ্টা বঙ্গমঞ্চে আরও প্রস্ফুটিত হইতেছে? 
সম্গতিসম্পন্ন যুবক সঙ্গদৌষে কুলটাব কৌশলে পড়িয়া কেমন করিয়া 
সর্বস্বান্ত হয়, আপনার বংশমাহাত্্য ন্ট কবে, নীচাদপি নীচ হইয়! 
পশুবৎ হইয়া পড়ে__গিরিশবাঁবুর লেখনী-কৌশলে এ পাপচিত্র অতি উজ্জল 
বর্ণে “বিষাদে" চিত্রিত হইয়াছে । একদ্দিকে যেমন এই নারকীয় দৃস্ত, 
অপরদিকে তেমনই পুণ্যাত্ম৷ সতীর পবিত্র পতিভক্তি। স্বামী ক্রমে ক্রমে 


৩৪৪ গিরিশচক্ 


যতই পাঁপপন্ধে ডুবিতেছেন, সতীর পতিভক্তি ততই ্বর্ণাক্ষবে প্রতিভাত 
হইতেছে । কেমন করিয়! পতিভক্তি করিতে হয়, কেমন করিয়া স্বামী 
দৌবসমুহ উপেক্ষা করিয়৷ নিবিবশেষে স্বামীপূজা কবিতে হয়, ত্বামীর জন্য 
কেমন করিয়া স্বার্থত্যাগ কবিতে হয়, আত্মবলি দিতে হয়, বিষাদে এ চিত্র 
অতি স্ুন্দররূপে চিত্রিত হইয়াছে । বিসদৃশ এই চিত্রদ্বয়ের সমাবেশে 
“বিষাঁদ” বড়ই মনোঁহব হইয়াছে । চরিক্র-চিত্রে অতি বঞ্জনের দোষ কেহ 
কেহ দিয়া থাকেন, আমবা কিন্তু রঙ্গমমঞ্চজে বিষাদেব অভিনয় দেখিয়া বচয়িতা 
কবিব মহত্বই উপলব্ধি করিলাম । ইত্যাদি ।” 

“মাধব” চরিত্র গিবিশচন্দ্রের একটী অভিনব স্থষ্টি। মাঁধবের উদ্দেশ্য সৎ 
কিন্তু মন্দ কাঁধ্য দ্বারা সেই সং উদ্দেশ্ত সাধন করিতে গিয়া, মাধব শুধু নিজে 
ঠকে নাই+__ অলর্ক ও বিষাঁদের সর্ধনাঁশ কবিয়াছিল! “বিষাদ নাটকেব 
গাঁনগুলি অতুলনীয় । “আমর! চাঁব বকমের চার বিবহিনী”, “চাও চাও 
মুখ ঢেকো৷ নাঃ, “প্রেমের এই মানা” “বিবহ ববং ভাল এক বকমে কেটে 
যায়+ প্রভৃতি গানগুলি অতি প্রসিদ্ধ । 

“ুখিয়া” নাম দিয়া এলাহাঁবাদ হইতে ধবষাদ? নাটকেব একখানি হিন্দি 
অনুবাদ বাহির হইয়াছিল। 

'ঞমবাক্লেক্েক্র' সন্দ্রক্ ভ্যাঞ্গ 
ছুই বসব পর গোঁপাঁললাল বাবুব সখ মিটিয়৷ গেলে তিনি এমাঁবেন্ 
*থিয়েটাব মতিলাল নুর, শ্রীযুক্ত পূর্ণচন্দ্র ঘোষ, পণ্ডিত শ্রীহরিভূষণ ভট্ীচার্ষ্য 
এবং ব্রজলাল মিত্র-_এই চাঁরিজনকে ভাড়া দ্িলেন। এই স্থলে গিবিশচন্দ্রে 
সহিত গোপালবাঁবুব কাঁ্য-সন্বন্ধ ফুরাইল। তিনি পুনবায় কর্ণওয়ালিস্‌ 
্বীটে প্রতিষ্ঠিত ষ্টার থিয়েটারে আসিয়া! ম্যানেজারেব পদ গ্রহণ করিলেন। 





ষড়াত্রিংশ পরিচ্ছেদ 


ভ্বিভীল্সা সভ্বী-ভিজ্োগগ5 গিভ্ভন্কচ্6া১ ্যস্ীী- 
ল্লাহ। অভিিন্ম্স»-_ উ্লান্রে আোগগ্কান্স 

এমাবেল্ড ঘিযেটারে কার্যযকালীন গিরিশচন্দ্রেব দ্বিতীয় পক্ষের পত়ী 
ইহলোঁক ত্যাগ কবেন। ইহার গর্ভে দুইটী কন্তা এবং একটা পুত্রসন্তান 
হইয়াছিল। প্রথম! কন্তা রাঁধাবাণী যেরূপ সুন্দবী, সেইবপ শ্নেহশীলা ছিল; 
বাটার কেহই তাহাকে নয়নেব অন্তবাঁল কবিয় থাঁকিতে পাঁবিত না । কিন্তু 
দুইটী কন্ঠাই জননীর জীবদ্দশায় তিন বৎসর বয়ংক্রমেই মৃত্যুমুখে পতিত 
হয়। শেষে একটা পুত্র প্রসব করিবার পব প্রস্থতি কঠিন পীড়ায় আক্রান্তা 
হন। বহু চিকিৎসায় যখন কোনও ফললাভ হইল না, এবং চিকিৎসকগণ 
জীবনের আঁশ! পবিত্যাগ করিলেন, তখন আত্মীয় স্বজনগণ গিরিশচন্ত্রকে 
বলিলেন, “ইহাকে গঙ্গাতীবস্থিত কোনও এক বাটাতে লইয়া গ্রিয়া রাখিতে 
পারিলে, গঙ্গার হাঁওয়! লাগিয়৷ রোগের উপশম হইলেও হইতে পারে ।» 
গিরিশচন্দ্রের সম্মতি পাইয়! ইহাঁব! গঙ্গার উপব স্যার বাজ বাধাকান্ত 
দেবের মুমুযু-নিকেতনে রোগীকে লইয়! যান। 

তিন চারি দিন তথায় বাস করিবাৰ পব গিরিশচন্দ্রের ভ্রাতা 
অতুলকষ্ণ ঘোষ তাহার পরমাত্মীয় শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ বস্থু মহাশিয়কে 
বলিলেন, _“দেখ, মেজদা, মন থেকে মেজে! বউকে বিদায় দিচ্চে না 
বলে গর এই ভোগ । দেবেন, তুমি বই আব কেউ পার্বে না, যদি 
মেজদার ছুটী পায়ের ধূলো৷ এনে দিতে পার তাহলে বোগী যন্ত্রামুক্ত 
হয়। একবার ভাই চেষ্টা করে দেখ ।” দেবেঙ্ছবাবু বাটা আসিতেই 


৩৪৬ গিরিশচন্দ্র 


গিবিশচন্ত্র বলিলেন, “কিরূপ অবস্থা?” দেবেন্দ্রবাবু বলিলেন, “অবস্থা 
অত্যন্ত শোচনীয়, মৃত্যু-মুখে, মৃত্যু হইতেছে না, তাকে আব আট্‌কে রাখা 
উচিত নয়। অন্ততঃ আমর! আর সে যয্ত্রণা দেখতে পার্বো না।” 
গিবিশচন্ত্র বলিলেন, “তাহলে ছেড়ে দিই?” দেবেন্দ্রবাবু এক টুকরা 
কাগজে কিছু ধূলা সংগ্রহ কবিরা তাহাব পাঁষে ঠেকাইয়৷ গঙ্গাতীবে লইয়! 
গেলেন এবং মুমুুর মাথায় দিবামাত্র অন্ততঃ বিংশতিজন দর্শকের সমক্ষে 
তাহার প্রাণবায়ু (১২৯৫ সাল, ১২ই পৌষ, বুধবার প্রাতে) অনস্তে লয় হইল। 

এই পত্বীৰ জীবিতাবস্থায় গিরিশচন্দ্র অদ্বিতীয় নট, নাট্যকার এবং 
নাট্যাচার্য বলিয়া! সুপ্রতিষ্ঠিত হইয়াছিলেন। গুরুলাঁভ, যশঃলাঁত এবং 
অর্থসমাগমে এই সমযে ইনি পবম শান্তিতে কাটাইয়াছিলেন। অনেকে 
বলিয়া থাকেন,_-“এই পত্বী হইতেই তাহা সব্ঘ সৌভাগ্যেব সচনা ।” 
যাহাই হউক-_পত্বী-বিয়োগের পৰে গিবিশচন্ত্র পরমহংসদেবকে বকল্ম! 
প্রদানেধ গুকত্ব উপলব্ধি কবিলেন। তিনি তীহাব পাপ-পুণ্যঃ সুখ-দুঃখ 
_-সমন্তই পবমহংসদেবকে অর্পণ করিয়াছেন,_ এক্ষণে এই দাকণ শোক 
নীববে সহ্‌ কবা ভিন্ন তাহার আঁব অন্য উপায় নাই। তবে সান্বনার 
কথা এই;-_পুত্রটী মতি স্থুলক্ষণধুক্ত হইয়াছিল । গিবিশন্ত্র শ্রাবামকৃ্ণ 
দেবকে বলিয়াছিলেন, “তুমি আমাব ছেলে হও; আমি সাধ মিটাইয়া 
তোমাৰ সেবা কবিব।”__এক্ষণে তীহাব দৃঢ় প্রতীতি জন্সিল, নিশ্চয় 
ঠাকুব তাহাব পুভ্রৰপে আসিয়াছেন। গিবিশচন্ত্র পবম যত্তে এই মাতৃহারা 
শিশুটাকে লালন-পালন করিতে লাগিলেন। এই পুত্রেব অদ্ভুত চবিত্র 
যথাসময়ে পাঠকগণ জ্ঞাত হইবেন। 

গিভু-ষ্চা 

নিদারুণ মানসিক চাঞ্চল্য দৃূব করিবাঁব নিমিত্ত এই সময়ে তিনি গণিত- 

শাস্ত্রে আলোচনা করিতে আরন্ত করেন। তিনি বলিতেন, অস্ক- 


ষড়ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৪৭ 


বিগ্ভার অনুশীলনে মতি স্থির হয় । তত্প্রণীত “নলদময়স্তী” নাটকে খতুপর্ণ 
নলকে গণনা-বিদ্ধ। দিবাঁব সময় বলিতেছেন £-_ 

প্থাতুপর্ণ। চিত্তন্র্য এ বিষ্তাঁব মূল ।৮ 

নল-দময়ন্তী, তৃতীয় গর্ভাঙ্ক, চতুর্থ অন্ক। 

শরদ্ধাম্পদ শ্রীযুক্ত স্থবেন্ত্রনাথ ঘোষ (দীনিবাবু) মহীশয়েব মুখে 
শুনিরাছিং_এই সময়ে কতকগুলি গণিত-গ্রস্থ লইয়া! তিনি সমস্ত দিন, 
শ্নেট-পেন্শিল লইয়া বালকেব ন্যায় অঙ্ক কসিতেন ও মুছিয়! ফেলিতেন। 

ম্বসীল্র 1 

গিবিশচন্দ্র গ্রণীত “নসীবাম” নাটক লইয়! ১৩ই জ্যৈষ্ঠঠ ১২৯৫ সাল 
(২৫শে মে ১৮৮৮ খৃঃ) ফুলদোলেব দিন, হাঁতিবাঁগানে ষ্টাব থিয়েটাব 
মহাসমারোহে প্রথম খোলা হয় । গিবিশচন্দ্র সে সময়ে এমাজেজ্ড থিয়েটাবে 
কাঁধ্য করিতেছিলেন। এ নিমিত্ত 'নসীবাম” নাটকে তীাহাব নাম প্রকাশিত 
না হইয়া “সেবক প্রণীত” বলিয়া বিজ্ঞাপিত হইয়াছিল। শুনিয়াছি,__ 
গিবিশচন্দ্র পূর্বের গ্াঁব থিয়েটাবেব জন্য “পৃণ্চন্দ্র নাটকখানি লিখিয়া 
দিরাছিলেন, কিন্তু এমারেন্ড থিয়েটারে যোগদান করিয়। দেখিলেন,__ 
খিয়েটাবে নৃতন নাঁটকেব বিশেষ প্রয়োজন, এবং স্বত্বাধিকাবী গোপাললাল 
বাবুও নূতন নাঁটকেব জন্থ বড়ই ব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছেন। গিবিশচন্ত্র ষ্টার 
থিষেটাবেব স্বত্বাধিকাঁরিগণেব নিকট হইতে পূর্ণচন্ত্র নাটকে পাওুলিপি 
লইয়া এমাবেন্ড থিয়েটারে প্রদান কবেন এবং সেই সঙ্গে প্রতিশ্ত হন,_ 
তাহাদেব নর প্রতিষ্ঠিত রঙ্গালয়েব নিমিত্ত একখাঁনি নৃতন নাটক লিখিয়া 
দিবেন। 

“চৈতন্তলীলা+ অভিনয়ে অভাবনীয় রুতকাধ্যতা লাঁভ কবার, ছার 
থিয়েটারেব স্বত্বাধিকারিগণ গিবিশচন্ত্রকে হরিভক্তিপূর্ণ একথানি নাটক 
লিখিবার নিমিত্ অনুবোধ কবেন। গ্িবিশচন্ত্র তাহাদের অনুরোধে 


৩৪৮ গিরিশচন্দ্র 


পরমহংসদেবের ভাব গ্রহণে ভগবদ্বাক্যমূলক এই “নসীরাম” নাটকখাঁনি 
লিখিয়! দিয়াছিলেন। 
নাটকাভিনয়ের পূর্ব্বে গিরিশচন্দ্র-বিবচিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবনা" 
কবিতাটি * নাট্যাচা্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থু মহাঁশয় কর্তৃক পঠিত হয়। 
“হে সঙ্জন, পদে নিবেদন__ 
নির্বাসিত মনোছুঃথে, বঞ্চিলাম অধোমুথে 
বঞ্চিত বাঞ্ছিত তব চবণ বন্দন। 
যুগ সম বর্ষের ভ্রমণ__ 
আজি পুনঃ পূর্ণ আকিঞ্চন 
স্বাগত সুজন ! 
কবে দাঁস- ককণা! প্রয়াস, 
বস-বশে গুণাকৰ ভূল” দোষ_গুণ ধব”-_ 
তব পূজা আশৈশব উচ্চ অভিলাষ ! 
পাঁবি হারি না বুঝি আভাষ, 
হর্ষ সনে দ্বন্দ করে ত্রাস 
পূরিবে কি আশ? 
অভিনয় ইতিহাস কয়__ 
দেশ ভেদে নানা মত, যে জাতি যে বসে বত, 
আদি, হাস্য, বীভৎস, শোৌণিত কোথা বয়, 
হিন্দু-প্রাণ কোমলতাময়, 
ধর্ম প্রাণ শ্রেষ্ঠ পবিচয়,- 
ধর্ম বঙ্গালয়! 





ক নুবতত] প্রযুক্ত ললিতমোহন ঘোষাল মহাশয়ের সৌল্পন্যে কবিতাটা প্রাপ্ত হইয়াছি। 


ষড়ান্রংশ পরিচ্ছেদ ৩৪৯ 


প্রথমাভিনর বজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ ঃ__- 

নসীবাম-_ শ্রীযুক্ত 'অমৃতলাল বন, যোগেশনাথ শ্রীযুক্ত উপেন্ত্রনাথ 
মিত্র, অনাথনাথ-_অমৃতলাল মিত্র, কাপালিক--অঘোব্নাথ পাঠক, 
শন্তুনাথ_ বেল বাবুঃ ভূতনাথ- শ্রীযুক্ত কাণীনাথ চট্টোপাধ্যাব, পাহাড়িয়া 
বালক--শ্রীমতী তাবাস্থুন্দরী, * বিবজা-_কাঁদগ্বিনী, মীধুলী-_হরিমতী, 
সোণা__গঙ্গামণি ইত্যাদি । শিক্ষক-__-শ্রীবুক্ত অমৃতলাল বন্ধু, সঙ্গীতাচাধ্য 
বামতারণ সান্যাল, নূহ্য-শিক্ষক-_্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, বঙ্গভূমি- 
সজ্জাঁকব-_দাম্ুচবণ নিয়োগী | 

নৃতন বঙ্গমঞ্চে__নব উদ্যমে অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ যথাসাধ্যমত 
অভিনয় কবিলেও “নসীবাম” সর্বসাধারণেব মনোহবণে সমর্থ হয় নাই । 
নাট্যাচীধ্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থু মহাশয় বলেন, _“চিন্তাথীল দর্শকেবা 
“নসীবাম” খুব লইয়াছিলেন, কিন্তু সাধাবণ দশক সেরূপ ভাব গ্রহণ করিতে 
পাবে নাই । কাবণ ভগবান শ্রীরামকষ্দেবেব ভাঁবকে মুন্তিমন্ত কবিঝ়। “নসী- 
বাম__চবিত্র গঠিত। সে সময়ে পবমহংসদেবেব বানা সাঁধাবণ-মধ্যে ততটা 
প্রচারিত হয় নাই, __বোঁধ হয়, এই ভাব গ্রহণে অক্ষমতাই ইহাঁৰ প্রধান 
কাবণ। ক্রমে পবমহংসদেব সম্বন্ধে নানাবপ গ্রন্থ গ্রচাবিত হইতে লাগিল। 
কযেক বংসব পৰে ষ্টার থিষেটাবে পুনরায় খন “নসীবাম অভিনয় কবিয়া- 
ছিলাম, সে সময়ে 'নসীবাম” খুব জমিয়াছিল। এই নাটকেব গানগুলিব 
বিশেবতঃ সোণাঁব গাঁনেব তুলনা হয় না। গিবিশবাবুব কি বাধাকৃষণ- 
বিষরক, কিন্শ্যামাবিষয়ক গান-_-মহাঁজন-পদাবলীব পবেই উল্লেখযোগ্য |” 

টব থিষেটাৰ ব্যতীত ক্লাসিক, মিনার্ভা ও আর্ট থিয়েটাবেও 





** প্রতিভামধী অভিনেত্রী গ্রমতী তারাহুন্দরী এই পাহাড় বালকের ভূমিকায় 
একটীমাত্র কথ! (ওরে হরি বল, নইজে কথ! বি কইবে না) লইয়া রঙ্গমকে সর্বধপ্রথম 
অবতীর্ণ হন। 


৩৫০৩ গিরিশচন্দ্র 


“নসীবাম অভিনীত হইয়াছিল। নসীবাম ও সোণ! গিবিশচন্দ্রেব অপূর্বব 
সৃষ্টি, দর্শকগণ ইহীদেব অপূর্বরভাবে অপূর্ব আনন্দলাভ করিতেন । 

কামেৰ দুর্দমনীয় ও বীভৎস প্রভাব--এই নাটকেব জীবন। ইহাতে 
যে নাটকীয় সংস্থান (])1810/010 916980100) আছে, বঙ্গ-নাট্য-সাহিত্যে 
তাহা অতি বিবল। একমাত্র “ওথেলোব' সঙ্গে তাহাব তুলনা হইতে পারে। 
অরুত্রিম ভালবাসা স্বার্থে ষড়যন্ত্রে ভিন্ন ভাবে প্রতীরমান হইয়া! যে কিবপে' 
ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হইয়! যায়, এ নাটকে তাহাব অতি মর্মম্পর্শী চিত্র প্রদত্ত 
হইয়াছে । তবে দেশভেদে-_-কচিভেদে নাটকেব গতি ভিন্নৰপ হয়, ওথেলো 
নাটকের পরিণাম নিবিড় তিমিবাচ্ছন্ন,_-এ নাঁটকেব পরিণাম-_ভক্তির 
আলোকময় চিত্রে সমুজ্ছল। 

াল্রে শিল্লিম্পভ্্ 

নসীবাম” নাটকের পৰ ্টাব থিয়েটাবে শ্রীযুক্ত অমৃতলাঁল বস্থ কর্তৃক 
নাটকাঁকাবে পবিবন্তিত স্বর্গীয় তাঁবকনাঁথ গঙ্গোপাধ্যাব প্রণীত '্বর্ণলতাঃ 
উপন্যাস “সবলা” নাম দিয়া অভিনীত হয়। ককণ ও ভাস্তবসেব গ্রবল 
সম্মিলনে বাঙ্গালীব ঘবের নিখু'ত ছবি দেখাইয়া! "সবলা” আবালবৃদ্ধবণিতাঁব 
নিকট সমাদৃত হইয়াছিল। তৎপবে অমৃতলালবাবু-বিবচিত “তীজ্জব- 
ব্যাপাব' নামে একখানি সামাজিক নক্সা! অভিনীত হয়। নক্সাখাঁনি যেরূপ 
নৃতনত্পূর্ণ হইয়াছিল, সেইরূপ দর্শকম গুলীকে মাতাইয়াছিল। 

“তাজ্জব ব্যাপার অভিনয়কালে গিবিশচন্ত্র ্টাব থিয়েটারে যোগদান 
কবিয়! পুনবায় ম্যানেজ্জাবের পদ গ্রহণ কবেন। ইতিপূর্বের শ্রীযুক্ত অমৃত- 
লাল বস্তু মহাশয়েব নাম “ম্যানেজার বলিয়া বিজ্ঞাপিত হইত। 

৩৭ হল 

“সরল!” অভিনয়ে নাট্যামোদিগণের সামাজিক নাটকের দিকে প্রবল 

আগ্রহ দেখিয়া এবং স্বত্বাধিকারিগণ কর্তৃক অন্ুরুদ্ধ হইয়া! গিরিশচন্দ্র 


ষড়ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৫১ 


প্রফুল্ল নাটক প্রণয়ন কবেন। পত্বীবিয়োগজনিত শোকাগ্রি তখনও 
ত্াহাব অন্তঃস্থল দগ্ধ করিতেছিল,__সেই অগ্নিশিখাঁরই বোধ হয় এক কণা ' 
/-আমার সাঁজান বাগান শুকিয়ে গেল 1» 
* , ১৬ই বৈশাখ (১২৯৬ সাল) ট্টাব থিযেটারে গিবিশচন্দ্রেব প্রফুল্ল, 
সামাজিক নাটক প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাঁভিনয় রজনীব 
তভিনেতৃগণ ৫ 
| বৌগেশ-অমৃতলাল মিত্র বমেশ- শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থু, স্ুবেশ 
শ্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যার, বাদব-_ শ্রীমতী তাবাস্ুন্দবী, পীতান্থব 
_মহেন্ত্রনীথ চৌধুবী, কাঁঙালীচবণ-_শ্ঠামাচবণ কু শিবনাথ-_বাণু 
বাবু, মদন ঘোষ ও ১ম ব্যাপাঁবী--নীলমাঁধব চক্রবর্তী, ভজহবি-_বেলবাবু, 
অনাঃ ম্যাজিষ্ট্েট--বামতাব্ণ সান্যাল, ব্যাঙ্কের দাওয়ান ও জমাদার__ 
শীযুক্ত উপেন্ত্রনাথ মিত্র, ইন্স্পেক্টাব__প্রবোধচন্দ্র ঘোষ, ইন্টারপ্রেটার ও 
জেল-ডাক্তার-_-বিনোদবিহারী সোম ( পদ বাবু), ২য় ব্যাঁপাবী ও টারনূকি 
_ অক্ষয়কুমাঁব চক্রবর্তী, শ্র'ড়ি__শশীভূষণ চট্টোপাধ্যায়, ডাক্তার--নীলমণি 
ঘোঁধ, জনৈক লোৌক-_অঘোরনাথ পাঠক, উমাস্ুন্দবী__গঙ্গামণি, জ্ঞানদা 
_কিরণবালা, প্রফুল্প-_ভূষণকুমীরী, জগমণি-_টুনামণি, বাঁড়ীওয়ালী, 
- শ্রীমতী জগত্তীবিণী, ইতব স্ত্রীলোক ( মাতাঁলনী )-_ শ্রীমতী বনবিহারিণী, 
খেমটা ওয়ালী ছয়--প্রমদীসুন্দবী ও কুন্গুমকুমীবী ( খোঁড়া ) ইত্যাদি। 
অনেকেব ধারণা ছিল, 'সবলা”ব পব পুনবাঁয় সামাজিক নাটক জমাঁন 
বড়ই কঠিন হইবে। কিন্তু প্রফুল্ল নাটকে বচনা-নৈপুণ্য এবং হৃদয়ভেদী 
অভিনয় দর্শনে তাহাদেব সে ধাবণা দূর হইয়াছিল। সুরার মোহিনীশক্তি 
এবং অমোঘ আকর্ষণ এই নাঁটকেব মূল ভিত্তি। গিরিশচন্দ্র স্বয়ং ভুক্তভোগী 
হইয়া তৎবিরচিত সঙ্গীতে, খগ্ডকাব্যে এবং নাটকীয় চরিত্রের উক্তিতে 
বহুবার এই মোহিনী মায়াবিনীব অমোঘ অনিবাধ্যশক্কির প্রভাব ব্যক্ত 


৩৫২ গিরিশচন্্ 


কবিয়াছেন। এ নাটকে তাহা কিৰপ অত্যুজ্জল চিত্রে চিত্রিত হইয়াছে-_ 
পাঠক মাত্রেই তাঁহা অবগত, অধিক বলিবার প্রয়োজন নাই। 

এই নাঁটকেব সমালোচনা 'ষ্টেট্সম্যাঁন” পত্রিকায় ধাঁবাবাহিক তিন 
দিবস বাহিব হয। এবপ সমালোচন! দেণায় কোনও পুস্তকে 
এতাঁবৎ ঘটে নাই। ন্বর্গায অমুতলাল মিত্র, শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থু, 
বেলবাবু, নীলমাধব চক্রবর্তী প্রভৃতি নাট্যব্থীগণ যৌগেশ, বমেশ, 
ভজহবি, মদনঘোৰ প্্রভৃতিব ভূমিকা অতি দক্ষতাঁৰ সহিত অভিনষ 
কবিয়াছিলেন। অমৃতবাবুব “বমেশেব+ অভিনয় অতুলনীয় হইয়াছিল । 
্ব্গীয় শ্বামীচবণ কুও$ এবং টুন্নীমণি 'কাঙ্গীলাচবণ, ও জগমণির 
অভিনয়ে দুইটি জীবস্তছৰি দর্শকগণ সম্মুখে ধরিয়াছিলেন। ফলত: নাট্যা- 
মোদ্দিগণেব নিকট “প্রফুল্ল” পরম সমাদৃত হইয়াছিল; কিন্তু ইহার কয়েক 
বৎসর পবে মিনাভা থির়েটাবে বে সময়ে প্রফুল্ল” পুনবভিনীত হয় এবং 
গিবিশচন্্র স্বয়ং যোগেশেব ভূমিকা অভিনয় কবেন, সেই সময় হইতেই 
প্রফুল্ল নাটকের বিশেষত্ব সাঁধারণেব চক্ষে ধর! পড়ে ।* “প্রফুল্ল” নাটকে 


পি 








আপ আপ পি সস সপ শি পা শি শি পি | পপি পপ পপ ৯০ 





* রে আভনীত হইবার ছয় বৎসর পরে মিনার্ভ। থিকেটারে 'প্রফুল্ল” নাটকাভিনয়ের 
আয়োজন হয়। প্রতিযোগিতায় €£&ার'ও এই সমযে "প্রফুল্ল'র পুনরভিনয় ঘোষণ| করেন। 
টার থিয়েটারের বিজ্ঞাপনে গিরিশচন্দ্রকে লক্গ্য করিয। লিখিত হইয়াছিল £-- 

“তোমাব শিক্ষিত-বিগ্ঞা দেখাব তোমায় |” 

মিনাভায় প্রথমে যোগেশ্রে ভূমিকা দেওয়! হইয়াছিল, স্ুবিস্যাত অভিনেত] 
স্বর্গীয় মহেক্রলাল বহ্ুকে । মহেন্্রবাবু যৌগেশের ভূমিকার শরছারস্তাল'ও দিয়াছিলেন। 
গিরিশচন্দ্র ষ্টারে শ্বশাঁয় অমৃতলাল মিত্রকে যোগেশের তৃমক! শিক্ষা প্রদান করেন। 
মিন।ভার় মে ছবি বদলাইয়। দিয়। মহেন্্রবাবুকে নুততনবপে শিখাইতে আরম্ভ করেন। 
পরে সম্প্রায়স্থ সকজের অন্থরোধে গিরিষ্চন্ত্রকে বাধ্য হইয়। এই ভূমিকা লইতে 
হইয়।ছিল। তিনি এই সময়ে বলিয়াছিলেন,_“আমাকে আমার আপনার বিরুদ্ধে, 


ষড়ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৫৩ 


"বিচিত্র চরিত্র-স্থষ্টির বিশ্লেষণ পূর্বক নানা সমালোচন! নান! সাময়িক পত্রে 
হইয়। গিয়াছে। গ্রন্থের কলেবর বৃদ্ধিভয়ে আমর! চবিত্র-সমালোচনায় ক্ষান্ত 
থাকিয়া সম্পাদ্কশেষ্ট, সুপণ্ডিত স্বর্গীয় পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়-বিখিত 
প্রফুল্ল, নাটক সমালোচনাঁব কিয়দংশ উদ্ধত করিলাম £__ 


অস্ত্র প্রয়োগ করিতে হইবে | যোগেশের ভূমিকায়, যা! [শিখাইবার, অমৃতকে তাহ! 
শিখাইয়াছি। এখন কি নূতন চবি জিব, তাহাই তাবতেছি।” 

ষ্টারে যোগেশ--অমৃতলাল মিত্র, মিনাায় শ্বং গিরিশচজা--গুরু-শিষ্ে যুদ্ধ! 
নাটামোদীগণের মধ্যে একটা মহ। আন্দোলন পঞ্িয়। গেল__-মহর সরগরম হইয়া উঠিল। 
গিরিশচন্ত্র আত সুক্ক্রভাবে অভিন্তৃগণকে শিক্ষাদান করিয়াছিলেন এবং প্রত্যেক 
চরিত্রটী জীবস্ত করির! ফুটাহবার চেঞ্ছ। পাইয়াডিলেন। উভয় থিয়েটারেই মহ। সমারোছে 
অভিনয় আরম্ভ হইল। 

পুরাতনকে কেমন করিয়। সম্পূর্ণ নু*ন ছাচে গড়িতে হয়, গিরিশ্চন্ত্র যোগেশের 
(ভৃমিকাভিনয়ে তাহ! দেখাইয়াছিলেন। ঘে অতুলনীয় নুতন ছবি তিনি পর্শকসাধারণের 
চক্ষের সম্মুখে ধরিয়াছিলেন,__দশক+ণ সে দৃশ্য দশনে বিস্মিত ও স্তাস্তত হইয়! গেলেন। 
হুরাপানে সুশিক্ষিত ও সন্্রান্ত ব্যক্তি কিরূপ স্তরে স্তরে অধঃপতিত হই! ছুর্দশার 
গভার পক্ষে নিমাজ্জত হছুয়,-আদশচারত্র, লোকমান ব্যক্তি মঙ্গের মহিমায় কিরূপে 
স্ত্রীকে পথের 1ভখারণ্ী করিয়া! তাহার শেষ সম্বল ভাঙ্গ। বাজসটী পর্যন্ত কাড়ি 
লইয়| ষায়,_শিশুপুজ্রের হাত মুচড়াইয়। তাহার খাবারের পয়স ছিনাইয়া লইয়। 
যার,-এক ছটাক মদ পাইবার লোভে শ্মশানে আসির। ঘুরিয়। বেড়ার়,_-একটী 
পর়সার জন্য হাত পাতিয়। পাঁথকের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ছোটে, চক্ষের সম্মুখে এই 
ভীষণ গু জীব চাব দোখয়। দর্শক শিহরিয়া উঠিল! বুঝিল--এই হথরাপানে দেশের 
কি সবধনাশ হইতেছে--কত বড় ঘর উৎসন্ন যাইতেছে--কত লোকের কত সাজান 
বাগান শুকাইয়! যাইতেছে! 

এই অভিনয়ের পর হইতেই “প্রফু্' নাটকের চরিব্র-ন্থষ্টির বৈচিত্র্য-_ইহার রস-মাধুয্য 
দর্শকগণ বিশেষরূপ উপলব্ধি করিয়াছিলেন। সেই হইতে “প্রফুল্া' সর্বোৎকৃষ্ট পামাজিক 
নাটক বলিয়া বঙ্গ নাট্যশালায় এবং বঙ্গস!হিত্যে সুপ্রতিষিত হয়। 


ও 


৩৫৪ গিরিশচজ্দ্র 


প্বাঙ্গালীব গার্স্থ্য জীবনে দুঃখের যে বিবাট কাল মেঘ সর্বদাই 
বিভীষিকা উৎপাদন করে, তাহাকে অবলম্বন করিয়া অপূর্ব লিপি- 
চাতুরীব বলে এই শোকপূর্ণ বিয়োগাস্ত নাটক বচিত হইয়াছে । আমার্দের 
মনে হয় যে, এমন মর্দ্মভেদী বিয়োগাস্ত নাটক বাঙ্গালা ভাষায় বুঝি আর 
নাই। * * * যোগেশেব “সাজান বাগান শুকাইয়! গেল", আর হইল না। 
পরন্তু পুণ্যের প্রতিষ্ঠা তো৷ হইল, পাপেব দমন তো হইল। সমাজের পক্ষে 
ইহাই লাঁভ। যে কবি এই সৎশিক্ষার প্রচাব করিয়াছেন, তিনি সমাজের 
পূজ্য। কবি গিরিশচন্দ্র নির্দয়ভাবে শোকের এবং পাপের চিত্র অঙ্কিত, 
কবিয়াছেন বটে, কিন্তু তাহার এ নির্দিয়তা কুলালের নির্দয়তার তুল্য ।' 
কুম্তকাব পাকা হাড়ি গড়িবার জন্য মাটীর হাঁড়িতে ঘন ঘন আঘাত করিয়া! 
থাকে, তখন সে আঘাত দেখিয়া মনে হয়, এ কার্ষ্য বড়ই নির্দয়তার 
কাধ্য। কিন্তু যখন সেই হাঁড়িতে দেবতাব প্রসাদ প্ররস্তত হয়, তখন 
মাটাব সংসারে মাটীব হাড়িও ধন্ত হইয়া যায়। গিরিশবাবুও তেমনই 
মানুষের সংসারে মানুষেব সমাজকে দেবতাব উপভোগ্য করিবাব অঙ্ক 
নির্দয়ভাবে পপ্রফুল্লের ন্যায় ভীষণ বিয়োগাস্ত নাটককে লোক-লোচনের 
গোচব করিয়াছেন। তিনি ধন্য ।” বঙ্গালয় ৪ঠা মাঘ, ১৩০৮ সাল। 

প্রফুল্ল নাটকের বহ্ছে “গান্ধি হিন্দি-পুস্তক-ভাগ্াঁর, হইতে একখানি 
হিন্দি-অনুবাদ বাহিব হইয়াছে । 

ভাক্রান্িপ্রি 

প্রফুল্ল” নাটক সর্বজন সমাদৃত হওয়ায় গিবিশচন্দ্র তৎপধে “হারানিধি” 
নামে আর একখানি সামাজিক নাটক প্রণয়ন কবেন। বঙ্গ-রঙ্গালয়ের এই 
সময়টাকে সামাজিক নাটকের যুগ বল! যাইতে পাবে। ২৪ শে ভাদ্র 
(১২৯৬ সাল) ষ্টার থিয়েটাবে সর্বপ্রথম “হারানিধি, অভিনীত হয়। 
প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেত! ও অভিনেত্রীগণ £-_ 


ষড়ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৫৫ 


মোহিনীমোহন- শ্রীযুক্ত উপেন্্রনাথ মিত্র, হরিশ_-অমৃতলাল মিত্র, 
নীলমাধব- শ্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, অঘোর-_অমুতলাল মুখো- 
পাধ্যায় (বেলবাবু ), নব-_মহেন্দ্রনাথ চৌধুরী, গুণনিধি-_গ্রিয়লাল মিত্র, 
ধবণীধর-_গ্রবোধচন্দ্র ঘোষ, তেজবাহাছুর-_রাণু বাঝু। ভৈরব- নীলমাধব 
চক্রবর্তী, ব্রজেন্্রন্দ্র-শ্রীবুক্ত পরাণকৃষ্ণ শীল, ধনীরাম- শ্ঠামাঁচরণ কুওু, 
সোনাউল্লা_-উমেশচন্ত্র দাস, হৈমবতী--শ্রীমতী জগত্তারিণী, স্ুুণীলা-_ 
শ্রীমতী নগেন্দ্বালাঃ কমলা-_-কিরণবালা, হেমাঙ্গিনী__-শ্রীমতী তারানুন্দরী, 
কাদন্ধিনী-__গঙ্গামণি ইত্যাদি। 

গিরিশচন্ত্র তাহার অপুর্ব প্রতিভাবলে প্রফুল্ল ও হারানিধি নাটকে 
দেখাইয়াছেন-__গৃহস্থ বাঙ্গালীর শাস্ত হৃদয়েও ঘটনার ঘাত প্রতিঘাঁতে 
ইয়োরোপেব সাহিত্য-গর্বব গ্রীক ট্রাজিভির তমসাপূর্ণ উত্তাল তরঙ্গও 
সংঘটিত হইতে পারে। হারানিধি মিলনাস্ত নাটক। সাধারণতঃ 
মিলনান্ত নাটকের ঘটনা! ও ঘাত-প্রতিঘাত কিছু মৃদু হইয়! থাকে, কিন্তু 
“হারানিধি' ট্রাজিডির ঘটনার মধ্য দিয়া চলিতে চলিতে সহস! বিছ্যুৎ- 
বিকাশের স্তায় এক অপ্রত্যাশিত ঘটনার সমাবেশে মিলনান্ত নাটকে 
পবিণত হইয়াছে । বঙ্গসাহিত্যে এ ধরণের কমিডি আর নাই বলিলেও 
অত্যুক্তি হয় না। 

এই নাটকে অঘোর চরিত্র গিরিশচন্দ্রের সম্পূর্ণ নৃতন স্থষ্টি--বড়ই 
বৈচিত্র্যময়। হরিশ আজন্ম পরোপকার-মন্ত্রে দীক্ষিত। পুত্র-কন্তাকেও 
বাঁল্যাবধি সেই শিক্ষাদীনে গঠিত করিয়াছিলেন, সেই শিক্ষার প্রভাবেই 
নীলমাধব এবং স্থণীলাব আদর্শ চরিত্রে নাটকখানি আরও সমুজ্জ্ল হই- 
যাছে। মোহিনী স্বা্থান্ধ ও লম্পট ধনাঢ্য ব্যক্তিব জীবন্ত দৃ্ীস্ত, কিন্ত 
একমাত্র কন্তা-স্নেহেই তাহার পরিবর্তন ঘটিল-_চরিজ্র অস্কনে এই কৌশল 
টুকুই গিরিশচন্রের কৃতিত্ব ।' নব কাদছ্গিনী, হেমাঙ্গিনী প্রভৃতি চরিত্র 


৩৫৬ গিরিশচন্দ্র 


স্জনেও গিরিশচন্দ্র বিলক্ষণ নৈপুণ্য দেখাইয়াছেন। ধনাট্যের সহিত 
গৃহস্থেব বন্ধুত্ব এবং অসৎ উপান্নে সছুদ্দেশ্য সাধনেব প্রচেষ্টা উভয়েরই 
পরিণাম যে অশুভজনক, গ্রন্থকার তাহা! এই নাটকে সুম্পষ্টরূপে দেখাইয়া 
দিয়াছেন। বিচিত্র নাট্য চবিত্র এবং অপূর্বব ঘটনা সংঘটনে “হারাঁনিধি, 
বড়ই উজ্জলে-মধুরে ফুটিয়াছে। অনেকে বলিয়া থাকেন, 'হারানিধি' 
গিরিশচন্দ্রেব সর্বশ্রেষ্ঠ সামাজিক নাটক । 
গ্রন্থের সর্ব শেষ দৃশ্যে গ্রন্থকার স্বয়ং এই অপূর্ব নাটকেব মূল 
ভাব মোহিনীব মুখে ব্যক্ত কবিয়াছেন। হবিশ যখন গ্রিজ্ঞাসা 
করিল,_“মোহিনী, আমার সর্ধনাশে তোমাৰ প্রবৃত্তি হলে! কেন?” 
মোহিনী উত্তবে বলিল,_ণ্ধন-মদ-মাতালের আবার প্রবৃত্তি, অপ্রবৃত্তি 
কি? অর্থেব আশ্চর্য মহিমা! এই অর্থকে আমি জর্বন্ছ জ্ঞান 
করেছি, কি মত্ত! কেউবা মনে করতে পারে_-“আমি অর্থহীন, 
অর্থ হ'লে অকাতরে দান করে দেশের ছুঃথ নিবারণ করতে 
পাবতুম ;_-অনাথাব, বিধবাব অশ্রজল মোচন ক্বতে পারতুম, 
ক্ষুধাতুবকে অন্ন দিতুম, নিরাশ্রয়কে আশ্রয় দিতুম ! কিন্তু না__তাব 
ভ্রম' যার অর্থ নাই, সে অর্থ কি বিষময় পদার্থ-_দে জানে না, 
'অর্থে কেবল অনর্থ হয়, দুর্বলকে আশ্রয় দেওয়া দুবে যাগ, দুর্ববল-গীড়ন 
প্রথম শিক্ষ। দেয়। অষ্টপ্রহব মনকে উপদেশ দেয়, -সতীর সতীত্ব নাশ 
কব, পবের অপহরণ কর! এই অর্থের প্রতারণায় যে প্রতারিত ন৷ 
হয়,__সে সাধু) আমি মত্ত হঃয়েছিলুম |” 

নাটকের প্রত্যেক ভূমিকাই অতি স্থন্দররূপ অভিনীত হইয়াছিল। 
“অঘোরের ভূমিকা বেলবাবু এত সুন্দর অভিনয় করিয়াছিলেন এবং তাহার 
' অভিনয় দর্শনে দর্শকমণ্ডলী এরূপ উত্তেজিত হইয়া উঠিতেন যে, হঠাৎ 
অমৃতলালের শোচনীয় মৃত্যুতে থিয়েটারের কর্তৃপক্ষগণ 'হারানিধির, 


ষড়ব্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৫৭, 


অভিনয় বন্ধ করিতে সে সময়ে বাধ্য হইয়াছিেন। বেলবাবু সম্বন্ধে 
গিরিশচন্দ্র বলিয়াছিলেন, _“বেলবাবু দেখিতে যেরূপ সুপুরুষ, সেইরূপ 
অমায়িক এবং মিষ্টাভাষী ছিলেন। ভগবান তীহাকে থেন অভিনেতা 
করিয়াই সংসারে পাঠাইয় ছিলেন। হারানিধি নাটকে অঘোবেব 
ভূমিকাই তাহার শেষ অভিনয়। ভাঁরানিধি খুপিবার কয়েকমাস পৰে 
বেলবাবুব মৃত্যু হয়। এই নাটকথানি বেলবাবুব স্থতিচিহ্ন স্বরূপ 
তাহাব নামে উৎসর্গ কবিবার মনস্থ করিয়া ছিলাম; কিন্তু পুস্তক- 
প্রকাশক দুর্গাদাস দে-কে শ্রদ্ধা উপহার প্রদ্দানে বিশেষরূপ উৎনুক দেখিয় 
তাহাকে অনুমতি দিয়া নিরম্ত হই। * বেলবাবুব অকাল মৃত্যুতে বঙ্গভূমির 
যে ক্ষতি হইয়াছে, তাহা এ পর্যন্ত পরিপূর্ণ হয় নাই ।” 
ভিঞ্9 


“চ”-_গিরিশচন্দ্ের প্রথম এঁতিহাসিক নাটক । টডেব 'রাঁজস্থান, 
অবলম্বনে ইহা লিখিত। ন্তাসান্তাল থিয়েটারে তত্প্রণীত “আনন্দবহো 
এঁতিহাসিক নাটক বলিয়া পূর্বে অভিনীত হইলেও সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদে 


* ভুর্গাঙাস বাবুর লিখিত উৎমর্গ-পত্রটী উদ্ধত করিলাম £__ 
“্মরণোপভার । ৰ 

প্রকাঙ্চ নাটামন্দিরের সংস্থাপন! হইতে যে নটকুলভূষণ অসৃতায়মান সরস বচনচ্ছটায় 
রসজ্ঞ শ্রোতৃবর্গকে জ্বপরিমের আননা প্রগান করিয়াছেন, যে রসভাব-বিশারদ রঙ্গতৃমি- 
সমূজ্জল নাটাশাস্্কুশল অভিনেতার বিচিত্র হাবভাব-বিলীে দর্শকমণ্ডলী অমৃত হুদ নিমগ্ন 
হতেন, ধাস্থার অন্ৃতময় ছবি অদ্ভাপি রমগ্রান্ী দর্শক-হাদয়ে অনুর রহিয়াছে, যাহার 
জীবন-নাটকের শোচনীর যবনিকা! পতনের অব্যবহিত পূর্বেও টিরপরিচিত অভিনয়- 
পারিপাটা এই নাটকেয় “অধোয়ে” বিশেষ প্রর্তিলা করিয়াছে, সেই জন্বপ্রতিষউ 
“বেজবাবু' ব। হবার অন্ৃতলান' দুগোপাধ্যায়েয় স্মরণীর্থে “উর” রজ ফেব: "হারা মূর্ধ। 
্রন্থ-রটরিস্তার অধুষতযারুসারে উপহার গ্রদণ হইল । প্রকাশক ।” 


৩৫৮ 'গিরিশচন্ছ 


'আননাবহো+ প্রসঙ্গে উল্লেখ করিয়াছি. ইহাঁকে, ঠিক এ্ঁতিহাসিক নাটক 
বলা যাঁষ না। *চণ্ড নাটকে গিবিশচন্ত্র মাইকেল মধুসদনেব প্রবর্তিত 
চৌদ্দ অক্ষবে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহাঁব কবিয়াছেন। তিনি বলিতেন,_- 
“যেরূপে 'মেঘনাদ” পড,_-পব পব লিখিয়! যাও। তাহা চৌদ্দ অক্ষবে না 
লাখষ! মামি যেবপ লিখি, তাহাব সহিত কি প্রভেদ? যদি প্রভেদ 
না থাকে, তবে আবদ্ধ হইবাব প্রয়োজন কি? আমাব লেখা না দেখির। 
যদি কেহ বলিতে পারেন, যে ইহা চৌদ্দ অক্ষবে লিখিত হয় নাই, তাহা 
হইলে চৌদ্দ অক্ষবেব লেখাব মহিত আমাঁব যে পার্থক্য আছে, তাহা 
স্বীকাৰ কবিব। চৌদ্দ মক্ষবে লেখা যে কঠিন নয়, তাহা দেখাইবাঁব 
জন্য মামি “চগু+ নাটক লিখিয্লাছি। মুকুল-মুগ্বা, কালাপাহাড় নাটকেও 
আঁমার চৌদ্দ অক্ষবেব বচন! দেখিতে পাইবে ।” 

১১ই শ্রাবণ (১২৯৭ সাল) ষ্টাব থিয়েটাবে গ্রিবিশচন্দ্রেব চণ্ড” প্রথম 
অভিনীত হয। প্রথম অভিনয় রজনীব অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_ 

চণ্ত_-অমৃতলাল মিত্র, পূর্ণবাম_ শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বস্থ, রঘুদেবজী__ 
শ্রীযুক্ত সুবেন্্রনাথ ঘোষ ( দানিবাবু ), মুকুলজী-_শ্রীমতী তাবাস্ুন্দবী, 
শিথতী-_শ্রীযুক্ত উপেন্দ্রনাথ মিত্র, রণমল্প-_নীলমাধব চক্রবর্তী, বৌধরাও-_ 
প্রবোধচন্্র ঘোষ, খাগাঁধাবী__মহেন্ত্রনাথ চৌধুবী, ভীল-দর্দীর_ 
অঘোবনাথ পাঠক, ঘাঁতক-_বিনোদবিহারী সোম ( পদবাবু), গুঞ্জমালা-_ 
শ্রীমতী নগেন্্রবালা, বিজুরী--গোলাপন্ুন্দরী ( স্থকুমাবী দত্ত )১ ,কুশলা-_ 
টুন্নামণি, সুচনা- শ্রীযুক্ত কার্শীনাথ চট্টোপাধ্যায়, পবিশিষ্ট__ শ্রীমতী 
মানদাসুন্দবী ইত্যাদি । 

ুর্জয় রাজ্যলিগ্মা-_-কামের সংমিশ্রণে কিরূপ আত্মবিস্বত হইয়া, নি 
আত্মজের সর্ধনাঁশ সাধনে প্রবৃত্ত হয়, গিরিশচন্দ্র এই নাটকে তাহা চিত্রিত 
করিয়াছেন। কালোপযোগী পোষাক-পরিচ্ছদ ও দৃশ্ঠপট সংযোগে এবং 


৩৬০ গিরিশচন্দ্র 


রণস্থলে বহুসংখ্যক চিতোব, বাঠোর ও ভীল-সৈস্ভের সুশ্ঙ্খলার সহিত একত্র : 
সমাবেশে চণ্ড' মহাসমারোহে অভিনীত হইয়াছিল। 

নাট্যাচার্য্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্, নীলমীধব চক্রবর্তী, গোঁলাপন্থন্দরী 
(স্থকুমারী দন্ত) প্রভৃতি অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ তাহাদের 
অভিনয়-চাতুরধ্য প্রদর্শন করিলেও নাটকথানি অধিক দিন চলে নাই। 
ইহার কারণ, বোধ হয়, পাঁচ অঙ্কের উপাদান থাঁকিতেও নাটকখানি চারি 
অঙ্কে সমাপ্ত হওয়ায় শেষাঁংশ কতকটা সংক্ষিপ্ত হইয়াছিল ;-_-তাহার 
উপৰ সে সময়ে সামাজিক নাটকাভিনয়েব যুগ চলিতে থাকায় এই 
ধতিহাসিক নাটকথানিব যে প্রভাব বিস্তার কবা উচিত ছিল, তাহাও 
করিতে পারে নাই । 

গিরিশচন্ত্রেব শিক্ষার নৃতনতে সুবিখ্যাতা অভিনেত্রী গোলাগন্থন্দরী ' 
(স্ুকুমাবাঁ দন্ত) বিজুরীর ভূমিকায় সর্বোচ্চ প্রশংসালাভ করিয়াছিলেন। 

চণ্ড নাটক অভিনীত হইবার কিছুদিন পূর্ধে গিরিশচন্দ্রের সুযোগ্য 
পুত্র বঙ্গের অপ্রঠিদন্্বী অভিনেতা শ্রীযুক্ত সুরেন্্রনাথ ঘোষ (দানিবাবু ) 
মহাশয় ষ্টার থিয়েটারে যোগদান কবিয় প্রথম প্রথম পুরাতন দক্ষষজ্ঞ, 
নলদময়ন্তী ও রূপ-সনাতন নাটকে যথাক্রমে বিষু, ইন্দ্র ও চৈতন্তদেবের ছোট 
ছোট ভূমিকা অভিনয় কবিয়াছিলেন। “রঘুদেজী”র ভূমিকা লইয়া নূতন 
“নাটকে তিনি এই প্রথম রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হন। সুরেন্্রনাথের সুমধুর ও 
মন্মষ্পর্শী মভিনয় দর্শনে আরুষ্ট হইয়া দর্শকমণ্ডলী এই কিশোরব্যস্ক 
দিব্যকাস্তি নবীন যুবকটীৰ পরিচন়্ পানিতে আগ্রহ প্রকাশ কবেন, যখন 
ত্রাহাবা জাত হইলেন--ইনিই নটগুরু গিরিশচন্দ্রের পুক্র_'তখন তাহারা 
বিশ্য়-আননে মুক্তকঠে বলিয়াছিলেন,-_-“ভবিষ্তে এই যুবক অভিনর-কলা 
প্রদর্শনে পিতৃগৌরব রক্ষা! করিতে পাঁবিবে ।” 


ষড়ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৬১ 


হমক্িজা-ন্হিক্কাম্ণ 

২৯শে ভাদ্র (১২৯৭ সাল ).গিরিশচন্দ্রের “মলিনা-বিকাশ' গীতিনাট্য 
এবং শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন্থ-প্রণীত “বাঞ্ছাবাম, নামক একথানি প্রহসন 
একসঙ্গে ষ্টার থিয়েটারে সর্বপ্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাতিনয় রজনীর 
অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ :-_ 

বিকাশ- গোলাপনুন্দরী ( স্থকুমারী দত্ত), বিলাস- শ্রীযুক্ত কাশীনাথ 
চট্টোপাধ্যায় মহেশ্বরী__এলোকেশী, মলিনা-_শ্রীমতী মানদাহ্বন্দরী, 
তরলা-__শ্রীমতী নগেন্ত্রবাল! ইত্যাদি। 

রচনা-মাধুর্য, অভিনয়-চাতুর্ধ্য এবং গীতি-নৃত্যের সৌন্দর্যে “মলিনাবিকাশ 
আবালবৃদ্ধবনিতার চিত্তবিনোদন করিরাছিল। মলিনার সুধাবর্ষী সঙ্গীত এবং 
বিলাস ও তবলার অপূর্ব দ্বৈত-গীতে দর্শকগণ আনন্দে উৎফুল্ল হইয়। উঠিতেন।” 
পাখী তোব পেলে মধুর ত্বর+, “দেখলে তাবে আপনহার! হই”, “যদি ওই 
মনোমোহিনী পাই, “মন কেড়ে নে দেখ গে! পলায়__ইত্যাদি গীতগুলি 
দর্শকগণের এত ভাল লাগিয়াছিল যে, সে সময়ে ইহ! পথে-ঘাটে গীত হইতে 
আরম্ত হয়। আধুনিক গীতিনার্যুগুলিতে যে নৃত্যসহ দ্বৈত-গীতের ছড়াছড়ি 
দেখিতে পাওয়া যাঁয় 'মলিনা-বিকাশ" গীতিনাট্যেই ইহার স্থচনা, এবং “আবু 
হোসেনে, তাহার পূর্ণবিকাশ | “রঙ্গালয়ে নেপেন, নামক পুক্তিকার় গিরিশচন্্ 
“মলিনাবিকাশ” সম্বন্ধে যাহা লিখিয়াছেনঃ তাহা নিম়্ে উদ্ধত করিলাম £-_- 

স্টার থিয়েটার হাতীবাগানে উঠিয়া আসিবাঁর পর মলিনা-বিকাঁশ গীতি- 
নাট্য অভিনীত হয় । সঙ্গীতাচাধ্য রামতারণ গীতগুলির সুর সংযোজন করেন 
এবং নৃত্যশিক্ষা প্রদানের ভার ঙনপরিচিত দর্শকপ্রিয় কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়ের 
উপর অপিত হয়। কাণীনাথের লাহাধ্যার্থে কাস্তা নামে একজন হিন্দস্থানী নিষুক্ত 
হইয়াছিল । কিন্তু ঢংঢাং সমঘ্যই কাণী শিক্ষ) দেন। [)061য়ে নৃত্যগীত মলিনা- 
বিকাশেই প্রথম উল্লেখযোগ্য । নৃত্যের পারিপাট্যে দর্শকবৃনদ বিশেষমুগ্ধ হন” 


৩৬২ গিরিশচন্দ্র 


মহাগ্পুভ্কা 
১০ই পৌষ (১২৯৭ সাল ) গিবিশচন্ত্র-প্রণীত মহাঁপৃজা” নামক এক 
খানি রূপক ষ্টার থিয়েটাবে প্রথম অতিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীব 
অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_ 
বুটানিকা- শ্রীমতী মানদাসুন্দবী, সবস্বতী- শ্রীমতী তারাস্ুন্দরী, 
লক্মী--শ্রীমতী নগেন্দ্রবালা, ভাবতমাতা--শ্রীমতী বনবিহাৰিণী, ভাঁবত- 
সম্ভীনগণ-_অমৃততলাল মিত্র, অঘোঁবনাথ পাঠক, বামতাবণ সান্ন্যাল, 
শ্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, মহেন্ত্নাথ চৌধুবী ইত্যাদি । 
কলিকাতায় জাতীয় মহা সমিতিব (007%7059 ) অধিবেশন উপ লক্ষে 
এই রূপকথানি বচিত হইয়াছিল । এই ক্ষুদ্র গ্রন্থে গিরিশচন্দ্রের গভীব 
'দেশভক্তিব পবিচয় পাঁওযা যাঁ। বিস্তৃত আলোচনায় বিবত হইয়৷ আঁমব! 
ভাবত-সন্ানগণেব একখানি মাত্র গান উদ্ধত কবিলাম :-_ 
“নয়ন-জলে গেঁথে মালা পবাঁব ছুখিনী মাঁয়। 
ভক্তি-কমল-কলি দিব মায়েব বাঙ্গ| পায় ॥ 
শিখ হাদী উচ্চ শিক্ষা, মাতৃ-মন্ত্রে লহ দীক্ষা 
ত্যজ স্বার্থ মাগি ভিক্ষা, রহ জননী-সেবায় ॥ 
যে নামে দৃবিত হবে, রাখ যত্রে হদে ধরে, 
অবনী তাবে আদবে, জননী প্রসন্ন যায় ॥ 
অভিনয় দর্শনে গ্রীত হইয়া স্বর্গীয় কালীকৃষ্ণ ঠাকুর মহোদয় গিবিশ- 
চন্দ্রকে এক হাঁজার টাক! পুবস্কার প্রদান করেন। গিরিশচন্দ্র সে টাকা 
অভিনেতা! ও অভিনেত্রীগণকে ব্টন করিয়া দিবার নিমিত্ত থিয়েটাবের 
স্বত্বাধিকারিগণের হন্তে প্রদান করেন । 
ইহার অল্পদিন পরেই ষ্টার থিয়েটারের সহিত গিরিশচন্দ্রের মে কারণে 
সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হয়, তাহ! পববর্তী অধ্যায়ে সবিস্তারে বলিতেছি ।. 


সপ্তত্রিংশ পরিচ্ছেদ 


সন্বদ্হাভ্িলম্াজ- তওল্সত-ভ্হীন্বকম্পণন্ছি 
প্পুতস-ন্িিসোগ্গ 

কর্ণওয়ালিস স্টন্থ ঈীব থিয়েট(বে গিবিশচন্দ্র তুই বৎসব কার্য্য কবিয়া- 
ছিলেন। এ সময়টা তাহাঁব মানসিক অশান্তিতেই কাটিতেছিল। পূর্ব 
পরিচ্ছেদে উল্লেখ কবিয়াছ, দ্বিতীয় পক্ষেব পত্বী বিয়োগের পব শিশু 
পুক্রটীকে তিনি পবম যন্ত্রে প্রতিপালন কবিতেছিলেন। এই পুত্রটি সম্বন্ধে 
গিবিশচন্ত্র এবং তাহাব ভগ্নি দক্ষিণাকালীব মুখে নানারূপ অদ্ভুত গল্প 
শুনিয়াছি। * শিশুটি অন্ত কাহারও কোলে যাইতে চাহিত না, 
কিন্তু পবমহংসদেবের শি্তগণ আদব কবিয়া কোলে লইতে যাইলে-__ 
আনন্দে তাহাদের বক্ষে ঝাঁপাইয়া পড়িত। অন্ত দ্রব্য ফেলিয়া ঠাকুর 
লইয়া খেলা করিতে ভালবাসিত,_-কখনও বা ঠাকুবেব মুত্তি সম্মুথে 
রাখিয়া চক্ষু মুদ্রিত কবিয় বসিয়া থাকিত। পবমহংসদেবের ছবি দেখিয়া 
একদিন শিশু অতিশয় বোদন কবিতে লাগিল, কোনও মতে তাহাব কানা 
থামান যায় না, অবশেষে--“ছবিখানি পাড়িয়া দিতে বলিতেছে,,_-এইবূপ 
অন্জমান করিয়াঃ দেওয়াল হইতে নাঁমাইয়া দেখা গেল-_ছবিখানির 
পশ্চাত্ভাগ “অসংখ্য পিগীলিকায় পরিপূর্ণ হইয়া বহিয়াছে। তৎক্ষণাৎ 
বস্ত্র ঘারা পিপীলিকাগুলিকে ঝাড়িয়া ফেলিয়! ছবিখানি পরিফার করিয়া 
ফেলা হইল,__শিশুও শান্ত হইল । শ্রীস্রীরামকৃষ্দেবের সহ্ধন্মিনী__পরম 





* যুক্ত নুরেন্দ্রনাথ ঘোব (দ্বানিবাবু ) বলেন,--“গর্ভাবস্থায় জননী মধ্য মধ্যে 
“হরিযোল' “হরিবোল' বলিয়া উদ্যানের স্তায় চীৎকার করিক। উঠিতেন। কুলবধূ হইয়! 
এইরপ চীৎকার করান বাটীতে গাঁহাকে প্রথমে অনেক তিরস্কার সহ্য করিতে হইয়াছিল । 


৩৬৪ গিরিশচক্ 


পূজনীয়৷ মাত! ঠাকুরাণী সময়ে সময়ে গিরিশচন্দ্রের বাটাতে আসিলে-_ 
শিশু তাহার কোলে বসিয়া! পরম আনন্দ প্রকাশ করিত। 

অল্পদিন পরেই কিন্তু শিশুটি পীড়িত হইয়! দিন দিন কশ হইয়া পড়িতে 
লাগিল।॥। যখন রোগের যন্ত্রণায় কাঁদিতে থাকিত_-কোনও মতে তাহাকে 
শান্ত কর! যাইত না, কিন্ত হরিনাম করিলে শিশু স্থিব হইয়া ঘুমাইয়া 
পড়িত। পুত্রেব এই সব লক্ষণে গিবিশচন্দ্রের সম্পূর্ণ ধারণ! জন্মিয়াছিল _ 
ভক্তবাঞ্াকর্পতরু পরমহংসদেব সত্যই তাহার প্রার্থনা পূর্ণ করিয়াছেন । 
দেবশিশু জ্ঞানে তিনি সর্ধবকর্্ম পরিত্যাগ কবিয়৷ পুভ্রেব সেবা! শুশ্রষায় 
তৎপর হইয়াছিলেন। 

নানারূপ চিকিৎসার পর বিশেষ ফল না পাওয়ায় এবং ডাক্তাবগণের 
পরামর্শে গিরিশচন্দ্র বায়ু পরিবর্তনের নিমিত্ত পুত্রকে লইয়া মধুপুরে 
যাইলেন। তথায় কিছুদ্দিন অবস্থানেব পব হঠাৎ একদিন--্টাব 
থিয়েটাবেন স্বত্বাধিকারিগণ তাৰ নামে হাইকোর্টে অভিযোগ আনয়ন 
করিয়াছেন”__ সংবাদে উদ্দিগ্ন হইয়া পুক্রসহ কলিকাতায় ফিরিয়া আসিলেন। 

পীড়া উত্তরোত্তব বৃদ্ধি পাইতে থাকায়, গিরিশচন্দ্র পৃজ্যপাঁদ বিবেকানন্দ 
স্বামীকে ডাকিয়া বলিলেন,__“নরেন, আমি ইহাঁফে কিছুতেই বাচাইতে 
পারিতেছি না, যদি আমি স্বত্ব ত্যাগ করিলে বক্ষা পায়, তৃমি ইহাকে 
সন্াস-মন্ত্র দান করিয়া! তোমাদের দলভৃক্ত করিয়া লও ।” স্বামীজি 
গিবিশচন্দ্রের আগ্রহ দর্শনে শিশুর কর্ণে সন্গ্যান-মন্ত্র দীন করিলেন। কিন্ত 
কিছুতেই কিছু হইল না-ন্বর্গীয় কুস্থম দিন দিন শুকাঁইতে লাগিল । 
প্রায় তিন বংসর বয়ঃক্রমে শিশুটি ইহলোক ত্যাগ করিল । এই পুত্রের 
মুখ দেখিয়! গিরিশচন্দ্র প্রিয়তম! পত্ীর শোক সহ করিয়াছিলেন, কিন্ত 
প্রাণাধিক পুজ্রের বিরহে তাহার হদয় দগ্ধ হইতে থাকিলেও পরমহংসদেবের . 
প্রতি অটট্া বিশ্বাস বশতঃ. নীরবে এই শেল তাহাকে বক্ষে ধারণ করিতে 


সপ্তত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৬৫ 


হইয়াছিল। পত্বী ও পুত্র বিয়োগে শ্রীরামকৃষ্ণদেবকে বকল্ম! প্রদানের 
নিগৃঢ মর্ম গিরিশচন্দ্র সম্পূর্ণরূপ হৃদয়ঙ্গম করিয়াছিলেন, বুঝিয়াছিলেন__ 
পুলেব প্রাণরক্ষার নিমিত্ত ঠাকুরের নিট প্রার্থনা করিবার অধিকারও 
ঠাহার আর ছিল না। 
ক্ুম্গ্যনভ্ভি 

পুল্রটি দীর্ঘকাল ধবিয়া রৌগভোগ কবায় গিরিশচন্ত্র থিয়েটারে নিয়মিত 
রূপ যাইতে পারিতেন না । তত্রাচ এই সময়ে “মলিনা-বিকাঁশ* গীতিনাট্য 
ও হাঁপুজা; রূপক খানি তিনি লিখিয়া দিয়াছিলেন। দুর্ঘটনা শ্রোত সে 
সময়ে তাহাব উপর থবতব বহিতেছিল,-- প্রথমতঃ শিশু পুক্রটিব সাংঘাতিক 
গীড়া, গিরিশচন্দ্রও স্বয়ং কঠিন পীড়া হইতে আরোগ্য লাঁভ করিয়াছেন 
মান্র। এই সময়ে নবকুমার বাহ! নামক এক ব্যক্তি গ্রার থিয়েটারে 
অবৈতনিক সেক্রেটাবী হইয়াছিলেন। তাহারই ভেদমন্ত্প্রভাঁবে, খিয়ে- 
টাবেব স্বত্বাধিকারিগণ-_গিবিশচন্ত্রকে কর্মচ্যুতি-পত্র প্রেবণ কবিলেন। 

যেউৎসাহ ও আনন্দ লইয় তিনি ষ্রাব থিয়েটারে পুনরায় ফিরিয়া 
'আসিয়াছিলেন, দিন দিন তাহ! নৈরাশ্য এবং বিষাদে পরিণত হইয়াছিল। 
“গিবিশচন্্র ষ্টাবে ফিরিয়। দেখিলেন, যে ছ্টার তিনি ত্যাগ করিয়া গরয়া- 
ছিলেন, সে ষ্টাব আব নাই, ষ্টার এখন স্বাবলম্বন শিখিয়াছে, গিরিশ- 
চন্দ্রকে বাদ দিয় যে থিয়েটার চলিতে পারে, “সরলা”, “তাজ্জব ব্যাপার 
প্রভৃতি খুলিয়া ষ্টার তাঁহা বুঝিয়াছে। ইতঃপূর্বে ষ্টারের অধ্যক্ষ ছিলেন 
অমৃতলাল বন্ধ ; গিরিশচন্দ্র আসিয়া অধ্যক্ষ হইলেন বটে, কিন্তু নানাবিষয়ে 
তাহার সহিত কর্তৃপক্ষের মতবিবোধ ঘটিতে লাঁগিল। শাস্ত্রে লেখে, পুত্র 
বড় হইলে তাহার সঙ্গেই তো মিত্রবৎ ব্যবহার করিতে হয়, স্থতবাং শিষ্য 
বড় হইলে ব৷ মুনিৰ হইলে চাণক্যনীতি কিরূপ হওয়! উচিত, গিরিশ- 
ডন তাহা অত্যধিক শিষ্য-ন্নেহের মৌহে বোধ হয় ভুলিয়া গিয়াছিলেন, 


৩৬৬ গিরিশচত্্র 


অবস্থা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মান্থষের মনও ত বদলায়! পূর্বকাঁর মত 
গিরিশচন্ত্রের কর্তৃত্ব টার সম্প্রদায়েব আঁর ভাল লাগিল না । যে গ্িরিশ- 
চক্র আত্মগোপন করিয়া একদিন ঠ্টারের জন্ত নাটক লিখিয়৷ দিয়াছিলেন, 
যে গিরিশচন্দ্র পাঁচ বৎসরের জন্য নিজেকে বিক্রয় করিয়া যোল হাজার' 
টাক! ্রারকে দিয়াছিলেন, ষ্টার থিয়েটার সেই গিরিশচন্ত্রকেই বরখাস্ত 
করিয়া চিঠি পাঠাইলেন।” * 

গিরিশচন্ত্রের কর্মচ্যতিব পর ট্টাব থিয়েটার সম্প্রদায় মধ্যে একটা 
বিশৃঙ্খল! উপস্থিত হয়। নাট্যসম্রাটের প্রতি এরূপ অপ্রত্যাশিত ব্যবহাবে' 
অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণের মধ্যে অনেকেই চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছিলেন। 
সম্প্রদায় মধ্যে একট! চক্রান্ত চলিতে থাকে-_হঠাৎ একদিন স্বর্গীয় নীল- 
মাধব চক্রবর্তী, অঘোরনাথ পাঠক, প্রবোধচন্দ্র ঘোষ, রাণবাবু, দানিবাবুঃ 
প্রমদান্ন্দরী, মাননান্ন্দরী প্রভৃতি পনেব জন অভিনেতা ও অভিনেত্রী 
থিয়েটার পরিত্যাগ করিলেন। ইহাদের দলপতি ছিলেন--নীলমাধব 
বাবু, সে সময়ে মেছুয়াবাজার স্ত্রীটে কবিবব রাজকষণ রায়-প্রতিষ্ঠিত “বীণা 
থিয়েটার; খালি পড়িয়াছিল।+ নীলমাধব বাবু, অঘোরনাথ পাঠক ও 


.*. ইতুক্ত অপরেশচন্্র মুখোপাধ্যায়-লিখিত “রঙ্গালয়ে ব্রিশবৎসর* প্রবন্ধ , রূপ ও 
রঙ্গ । ২৩শে আবণ, ১৩৩২ সাল। 

+ রাজকুঞ্চবাবু তৎ-প্রণীত “গ্রহলাদচরিত্র" নাটক অভিনয়ে বেঙ্গল থিয়েটারকে প্রচুর 
জর্থ উপাজ্জন করিতে দেখিয়! স্বয়ং একটী থিয়েটার করিবার সম্কল্প করেন। তাহার 
অনেক বন্ধু-বান্ধব তাহাকে পরামর্শ দেদ--*বারাঙ্গনা-সংশ্লিষ্ট থিয়েটারে অনেকে যাইতে 
ইচ্ছ! করেন না,__কিস্তু যাঁদ বালক লইয়! স্ত্রী চরিত্র অভিনীত হয়, তাহ। হইলে সর্বব- 
সাধারণেই থিয়েটার দেখিতে পারেন এবং তাহার ন্যায় সুলেখকের নাটক অভিনীত 
, হইলে অর্থাগমও যথেষ্ট হইবে ।”--তাহাদের এইরাপ বাক্যে উৎসাহিত হই! রাজকৃষ্বাবু 
বন অর্থব্যয়ে মেছুর়ারাজার স্ীটে “বীপ! থিয়েটার” নাম দিয়া এই নূতন নাট্যশালা প্রতিতিত 
করেন এব নুতন নুতন নাঁটকাঁদি রচন| করিয়া! অতিনয় করিতে থাকেন.। বিস্ত। 


সপ্তত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৬৭ 


প্রবোধচন্ত্র ঘোষ তিনজন প্রোগ্রাইটার হইয়া উক্ত থিয়েটার ভাড়া' 
লইলেন এবং পসটি থিয়েটার নাম দিয়া অভিনয় ঘোষণা করিলেন। 
গিরিশচন্দ্রের বিহ্বমঙগল, বুদ্ধদেব-চরিত, মলিনা-বিকাঁশ, বেল্লিকবাজার 
প্রভৃতি নাটকাদি অভিনয় হইতে লাগিল। নীলমাধব বাবুর নাম 
থিয়েটারের ম্যানেজার বলিয়া বিজ্ঞাপিত হইত। গিরিশচন্দ্র এই থিয়েটারে 
যোগদান করেন নাই | তথাপি ষ্টার থিয়েটারের স্বত্বাধিকাঁরিগণ, এ সকল 
নাটকাদির অভিনয়-স্বত্ব তাহাদের নিজস্ব, কিন্ত গ্রন্থকার এঁ সকল নাটকার্দি 
অন্ত থিয়েটারে অভিনয় করিবার অন্থমতি দিয়াছেন এবং নীলমাঁধব বাবু, 
তাহার সিটি থিয়েটারে অভিনয় করিয়াছেন,_এই অজ্ভুহতে গিরিশচন্দ্র এবং 
নীলমাধব বাবুর নামে হাইকোর্টে অভিযোগ আনয়ন করেন। গিরিশচন্্ 
সে সময়ে রুগ্ন পুক্রটিকে লইয়া মধুপুরে গিয়াছিলেন। এ সংবাদে তিনি 
সত্বর কলিকাতায় ফিরিয়৷ আসিলেন। অক্পদ্দিন পরেই শিশুপুত্রের মৃত্যু 
হয়। এই অশান্তির সময় ্রার থিয়েটাবের স্বত্বাধিকারিগণের সহিত 
তাহার এইরূপ স্বত্বে একটি লেখাপড়া হয় :--্টার থিয়েটারের স্বত্বাধিকারি- 
গণ তাহার নামে মকন্দম! তুলিয়া লইবেন, কিন্তু নীলমাধৰ বাবুর নামে 
চাঁলাইতে পারিবেন । * গিরিশচন্দ্রকে তাহারা যাবজ্জীবন মাসিক একশত 


অভিনেত্রীর পরিবর্তে বালক লইয়! অভিনয় করায় গাহার থিয়েটারে তেমন দর্শক সমাগম- 
হইল না,-এমন কি বাহার তাহাকে বালক লইর়। অভিনয়ের পরামশ দ্িয়াছিলেন-- 
তাহাদের মধ্যেও বড় কেহ একট। থিয়েটারে আসিতেন ন1। দর্শকাভাবে ক্রমে তিনি 
ধণ-জালে জড়িত হইতে লাগ্গিলেন,--নিরুপার হইয়! শেষে বালকের পরিবর্তে অভিনেত্রী 
গ্রহণ করিলেন। কিন্ত তাহাতেও সুবিধা করিতে না পারয়া অবশেষে চারি পয়সার 
টিকিটে প্রতাহ ছুইবার করিয়া অভিনয় করিতে লাগিলেন । খণের দায়ে অতঃপর 
তাহার থিয়েটার বিক্রয় হইয়! যায় । “হধাসিস্ধু' উষধ বিক্রেতা! প্রিয়নাথ দাস থিয়েটার বাটা 
ক্রয় করিয়াছিলেন ; নীলমাধব বাবু প্রভৃতি তাহার নিকট হইতে থিয়েটার ভাড়া! লন। 

* হাইকোর্টে নীলমাধববীবুই জয়লাভ করিয়াছিলেন। জষ্রিস্‌ উইলসন সাছেক' 
বিচার করিয়া র্বায় প্রকাশ করেন, যে কোনও মুক্ত্রিত নাটক বাজারে বিক্রয় হইতে 
আরস্ত হইলেই দে নাটক সকল [থয়েটারেই বিন! বাধার অভিনীত হইতে পারিবে। 
বন্ৃকাল পরে নৃতন আইন প্রবর্তনের ফলে নাটকাভিনয়ের এই স্বাধীনত| রহিত হয়। 


৩৬৮ গিরিশচন্দ্র 


টাকা করিয়! পেন্দেন দিবেন, কিন্তু তিনি কোনও প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্ত 
থিয়েটাবে যোগদান বা তাহাদের কোনরূপ সাহাষ্য করিতে পারিবেন না। 
যগ্চপি তিনি কোনও নাটকাদ্দি বচন! করেন, তাহীর অভিনয়-স্বত্ব তাহারা 
উপযুক্ত মুল্য দিয়! ক্রয় বিয়া লইবেন। যগ্যপি কোনও নাটক তাহাদের 
মনোনীত না হয়, তাহা তিনি অন্য থিয়েটাবে দিতে পারিবেন; তবে 
তাহাঁদেব থিয়েটারে গিয়। শিখাইতে পারিবেন না । উভয় পক্ষেব মধ্যে 
যিনি এই স্বত্ব ভঙ্গ করিবেন, তাহাকে পাঁচ হাজার টাকা ড্যামেজ দিতে 
হইবে । নিদারুণ মানসিক অশান্তিতে গিবিশচন্দ্রেব আব থিয়েটাব কবিবাৰ 
ইচ্ছা ছিল না)--তিনি এই এগ্রিমেণ্টে সহি করিয়া দিয়া উদ্বেগ দূৰ 
কবিলেন। 


ল্বিতন্তীনম-ভ্সন্মুম্নীভ্লন্ন 


প্রথম হইতেই গিরিশচন্দ্রেব বিজ্ঞান শিক্ষায় অনুবাঁগ ছিল; _বহপূর্বের 
দুই একথানি মাসিক পত্রিকায় তাহাব বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধও বাহিব 
হইগ্লাছিল। দ্বিতীয় পক্ষের পত্বী-বিয়োগেব পর চিত্ত স্থৈ্য্যেব নিমিত্ত 
গণিত চচ্চার ন্যায় ইনি বিজ্ঞানান্থণীলনও করিতেন। ষ্টার থিয়েটাবে 
কাধ্যকালীন গ্িবিশচন্দ্র ডাক্তার মহেন্ত্রলীল সরকারেব বিজ্ঞান-সভাব 
(90197009 4১980010007 ) মেস্বব হইয়া প্রায় গ্রত্যেক লেকৃচারে উপস্থিত 
হইতেন। এক্ষণে তিনি যথে্ঈ অবসর পাইয়া নিয়মিত ভাবে উক্ত সভায় 
যাতায়াত আরম্ভ করিলেন। লেকৃচাঁর দিবস, নির্দিষ্ট সময়েব' তিন চাঁবি 
ঘণ্টা পূর্বে উপস্থিত হইয়া, লেকৃচাঁরের উপযোগী যন্ত্রাদি ও গ্যাস প্রস্ততের 
কার্ধ্য পধ্যবেক্ষণ করিবার নিমিত্ত, তিনি তথায় শিশি পরিষ্ণারের কাধ্য 
পর্যন্ত করিতেন। এইরূপে প্রত্যেক লেকচারে যোগদান এবং বহু 
বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ অধ্যয়ন করিয়৷ বিজ্ঞান-শান্ত্রে স্থলত:ং একট! জ্ঞানলাভ 


সপগ্ুত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৬৯ 


করেন। . গিরিশচন্ত্রের উৎসাহ ও প্রতিভা! দর্শনে ডাক্তার সরকাঁর-_ 
তাহাকে বিশেষরূপ শ্নেহ করিতেন। 

এইরূপে প্রায় বৎসরাধিক গিরিশচন্দ্র বিজ্ঞান ও গণিতচর্চা এবং 
অবশিষ্ট সময় তাহার গুরুত্রাতা অর্থাৎ পরমহংস দেবেব সন্গযাসী 
শিষ্গণের সহিত শ্রীরামরুঞ্ণ-প্রসঙ্গ এবং ধন্্ীলোচনায় অতিবাহিত 
রুরিতেন। পাঠকগণেৰব বোধ হয় ম্মরণ আছে, -গিরিশচন্ত্র একদিন 
পরমহংসদেবকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন,_-“আঁমি এখন কি, করিব?” 
ঠাকুর তছৃত্তবে বলিয়াছিলেন,_"এখন যাহা, করিতেছ, তাহাই 
করিয়া যাঁও, পবে যখন এক দিক (সংসার) ভাঙ্গিবে তখন যাহা! 
হয় হইবে” ( ৩১৮ পৃষ্ঠা )। ঠাকুর এক্ষণে তাহাকে কোন্‌ পথে লইয়া 
যাইবেন, গিবিশচন্ত্র তাহাবই প্রতীক্ষা! করিতেছিলেন। “তিনি এখন 
তাহাব সন্যাসী গুরুত্রাতাগণের সঙ্গেই নিরস্তর কালযাঁপন করিতেন 
এবং ঠাকুরের অলৌকিক গুণাবলী ও অপার করুণার কথা তাহাদেব 
সহিত 'আঁলোচন1 করিয়াই উল্লসিত অন্তরে অবস্থান করিতেন।, এপ 
চচ্চাকালে তাহার সংসারের সর্বপ্রকার বিপদ ও প্রলোভনকে গোম্পদেব 
ন্যায় জ্ঞান হইত; ক্ষুধা, তৃষ্ণা এবং সর্ববগ্রকাঁব দুঃখ-কষ্ট অবিচিলিতভাবে 
সহ করাটা কিছুই মনে হইত না, এবং দিনরান্র যে কোথ! দিয়া 
চলিয়া যাইত, তাহার জ্ঞান থাকিত না। স্বামী নিরঞ্রনানন্দ নামক তাহার 
এক গুরু-ভ্রীতা৷ একদিন এঁকালে তাহাকে বলেন, “ঠাকুর ত তোমায় 
সন্গ্যাসী করিয়াছেন, তুমি কি করিতে আর বাঁটীতে রহিয়াছ ? চল, দুই 
জনে কোথাঁও চলিয়া যাই। গিরিশ বলিলেন,_-তোমরা যাহা বলিবে, 
তাহা ঠাকুরের কথা জ্ঞানে আমি এখনই করিতে প্রস্তুত, কিন্ত নিজে ইচ্ছা 
করিয়া সন্ন্যাসী হইতেও আমার সামর্থ্য নাই ; কাৰণ ঠাকুবকে আমি 
যে বকল্ম! দিয়াছি ।, স্বামী নিরঞ্রনানন্দ বলিলেন-__-“তবে চলিয়! আইস, 

২৪ 


৩৭৩ গিরিশচন্দ্র 


সর্বস্ব ত্যাগ করিয়া চলিয়া আইস, আমি বলিতেছি । গিরিশও আর: 
কিছুমাত্র চিন্তা না করিয়া নগ্নপদে, এক বন্ত্রে বাটা ছাড়িয়া তাহার সহিত 
বাহির হইলেন এবং এ বেশে অন্ঠান্ সন্যাসী গুরুভ্রাতাগণের নিকট উপস্থিত 
হইলেন। তীহারা তখন, এতকাল ভোগন্থথে লালিত-পালিত গিবিশের 
দেহে ভিক্ষাটনাদির কষ্ট কখন সহ হইবে না৷ স্থির করিয়া এবং গিরিশের স্তায় 
বিশ্বাসী ভক্তের এরূপ পরিশ্রমে শরীর নট করিবার কিছুমাত্র আবশ্ঠকতা 
নাই বুঝিয়া তীহাকে এ কথা বুঝাইয়! বলিলেন এবং বাঁটীতে সকল বিষয়ের 
বন্দোবস্ত কবিয়া দিয়া স্বামী নিরঞ্রনানন্দের সহিত ঠাকুরের জন্মভূমি 
৬কামারপুকুবে গমন করতঃ শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণীর শ্রীপাদপদ্ম দর্শন করিয়া 
আঁসিবাব পরামর্শ দিলেন। গিরিশও তাহাদিগের এ কথা ঠাকুরেরই 
কথা জ্ঞানে এরূপ অনুষ্ঠান কবিলেন। 
০ল্তপ্রুহ দকম্পন্নে গন্ন 

“ঠাকুব এবং শ্রীশ্রমাতাঠাকুবাণীর জন্মভূমি ৬কামারপুকুর ও জয়রাম- 
বাটা গ্রামে গমন করিয়। গিরিশচন্ত্র নিজ জীবন পরিচালনার জন্য 
নৃতনালোঁক প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। সেখানে কৃষাঁণদিগের সহিত 
তাহাদ্দিগের স্থুখদুঃখের আলোচনায় তাহাদিগের সরল ধর্শ-বিশ্বাস, 
নির্ভবণীল জীবন ও নিঃস্বার্থ ভালবাসাব অনুষ্টানে ঠাকুব এই সকল দীন 
গ্রাম্লোকের ভিতব আঁবিভূতি হইয়া কি ভাবে বাল্য ও কৈশোরে 
ইহাদিগের জীবন মধুময় কবিয়া তুলিয়াছিলেন, তদ্িষয়ের চর্চায় এবং 
সর্ববোপরি শ্রীশ্রীমাতাঠাকুবাণীর অদ্ভুত অকৃত্রিম ভালবাসায় গিরিশের 
বিশ্বাসী কবি-হদয় এককালে পূর্ণ হইয়া উঠিম্বাছিল। ইতিপূর্বে 
 শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণীব পুণ্যদর্শন এমনভাবে গিরিশ কখনও প্রাপ্ত 
হন নাই, হইবার চেষ্টাও করেন নাই। গিরিশ এখন প্রাণে 
প্রাণে বুঁঝিলেন, বাস্তবিকই ইনি তাহার মাতা,” অপরের সংসারে 


সপ্তত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৭১ 


তাহাকে নানা কারণে কিছুকালের জন্ত রাখিয়! দি্লাছিলেন মাত্র । * 
গিরিশ ঠাকুরের সম্মুখে যেমন আপনার বিছ্যা-বুদ্ধি'বয়স প্রভৃতি সকল 
কথা ভুলিয়া পিতার ন্নেছের বালক হইয়া যাইতেনঃ এখানেও তন্তরপ 
সকল কথ ভুলিয়! শ্ীশ্রীমার ন্নেহে আপ্যায়িত হুইয়া বালকের ন্যায় কয়েক 
মাস নিশ্চিন্ত মনে কাটাইয়াছিলেন। দরিদ্র ভিখারী নুদূর গ্রামাস্তর 
হইতে ভিক্ষা করিতে আসিয়া ভাঙগ! বেহালার সহিত ন্থুর মিশাইয়া গান 
ধবিত-_- 

“কি আনন্দের কথা উমে (গো মা ) 

ওম! লোকের মুখে শুনি, সত্য বল শিবাণী, 

অন্নপূর্ণা নাম তোর কি কাশীধামে। 

অপর্ণে, যখন তোমায় অর্পণ করি, 

ভোলানাথ ছিলেন মুষ্টির ভিখারী, 

আজ কি সুখের কথা শুনি শুভঙ্করি, 

বিশ্বেশ্বরী তুই কি বিশ্বেশ্বরের বামে । 

থ্যাপা খ্যাপা* আমায় বল্তো৷ দিগণ্থরে, 

গঞ্জনা সয়েছি কত ঘরে পরে, 

এখন দ্বারী নাকি আছে দিগম্থরের দ্বারে, 

দরশন পায়না ইন্দ্র চন্দ্র যমে ! 

বিষয় বৃদ্ধি বটে বিশ্বাস হইল মনে, 


* গ্িরিশচন্্র বলিতেন, “একদিন দেখিলাম--মাত! ঠাকুরাণী সাবান, বালিসের 
ওয়ার ও বিছানার চাদর লইয়া নিকটবর্তী পুকুরঘাটের দিকে বাইতেছেন। রাত্রে 
শয়ন করিবার সময় দেখি, হামার বিছান! সাদ! ধপ.ধপ্‌ করিতেছে। এ কার্ধ্য মায়েরই 
, বুঝি প্রাণে কষ্ট হইল, আবার মা'র অপার স্বেছের কথ! ভাবিয়া হৃদয় আনন্দে 
আগত হইয়া উঠিল। 


৩৭২ গিরিশচন্দ্র 


তা না হ'লে গৌরীর এতেক গৌরব ক্যানে, 

নয়নে না দেখে আপন সন্তানে 

মুখ বাঁকায়ে বয় রাধিকার নামে ।* 
তখন গিরিশ উহাতে ঠাকুরের ও শ্রীশ্রীমার বাল্য জীবনের জলস্ত ছৰি 
দেখিতে পাইয়৷ উল্লাসে আত্মহাঁঝ৷ হইতেন। * গিবিশ মাঠে-ঘাটে সরল 
কষাণদেব সহিত বেড়াইতেন, 1 উদব পূর্ণ করিয়া মাঁব নিকট প্রসাদ 
পাঁইতেন এবং চেষ্টা না কবিয়৷ তঃই শ্রীশ্রীঠাকুরেব জীবন-কথা আঁলোচন৷ 


* নিরিপচন্দ্রের মুখে শুনিয়াছ-_-"ভিখারী যখন এই গ্রান গাহিতেছে, আমরা 
একদিকে কাদিতেছি এবং অন্তদিকে স্ত্রীলোকদের মধ্যে মাতাঠাকুরাণীও নয়নজলে 
ভাসিতেছেন।” 

1 গিরিশচন্ত্র-বিরচিত 'বাঙ্গাল' নামক গল্পে বর্ণিত হইয়াছে :_হরেন্ত্র ও রাধাকান্ত 
ক'লকাতার কোনও স্কুলে এক ক্লাসে পড়িত। হরেন্ত্র ধনাঢ্য সন্তান রাধাকান্ত 
পাড়াগেয়ে ভালমানুষ-_ন্কুলে “বাঙ্গাল বলিত। স্কুলের দিন ফুরাইল, এখন উভয়ে 

ংসারে। হরেন্ত্র পিতার মৃত্যুর পর অগধ সম্পত্তির অধিকারী হইয়াছে, __রাধাকাস্ত 

“মেসে' থাকিয়া সওদাগরি অফিসে ২৫২ টাক! বেতনে বিল-সরকারের কার্য করে। 
বহুকাল পর হঠাৎ একদিন হরেন রাঁধাকান্তকে দেখিতে পাইয়! তাহার বাটীতে লইয়া 
যান এবং তাহাকে অফিসের কাজ ছাড়ায়! আপনার বৈষয়িক কর্ণ নিযুক্ত করেন। 
পারিবারিক অশান্তি বশতঃ হরেন্দ্র রাধাকান্তের দেশে বেড়াইতে যাইতে উৎস্থক 
হুইলেন। কিন্তু গৃহস্থ রাঁধাকাস্ত আবাল্য হুখ-প্রতিপালিত ধনাঢ্য সন্তানকে ঠাহার 
পল্লী গ্রামের পর্ণকুটারে লইয়। যাইতে ভীত হইয়! গড়িলেন। কিন্তু হুরেন্্র ছাড়িল না। 
রাধাকান্তকে অগত্য। ঠাহাকে সঙ্গে লইয়! দেশে যাইতে হইল। হরেন্ত্ের এই পল্লীবাস 
বর্ণনার সহিত গিরিশচন্দ্রের 'জয়রামবাটী' গ্রামে অবস্থানের অনেকটা আতা 
আছে। যথ! ৫৪ 

“হরেন চণ্তীমণ্ডুপে যখন মাছুরে বসিয়। দা-কাট! তামাক পরম তৃপ্তির সহিত 
টানিতে লাগিল, __রাধাকান্তের ম।, ছেলের বন্ধুকে ছেলের মত যত্ব করিয়া চিশড়েভাজা, 
চালভাজ। তেল-নুন মাথিয়। জল খাইতে দিল, তখন রাধাকান্ত আড়ই। কিন্ত হরেন 


সপ্তুত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৭৩ 


কবিয়া সর্বক্ষণ উচ্চ কবিত্ব বা আধ্যাত্ম-চিন্তায় ভরপুর হইয়া থাকিতেন। 
ফিরিবাঁর কালে গিরিশ শ্রীত্রীমাকে অকপটে অন্তরের সকল কথা খুলিয়া 
বলিয়! অতঃপর তাহাব ইতিকর্তব্যতা সম্বন্ধে জিজ্ঞাস! করিয়৷ লইয়াছিলেন। 
এখন হইতে সম্পূর্ণ অন্য এক ব্যক্তি হইয়৷ গিরিশ কলিকাতায় ফিবিলেন 
এবং ঠাকুরের অলৌকিক চরিত্র এবং শিক্ষা-দীক্ষ! লইয়া পুস্তক 
সকলেব প্রণয়নে অবশিষ্ট জীবন নিয়োগ কবিতে কৃতসঙ্কল্প হইলেন ।» 
ভক্ত গিবিশচন্দ্র । উদ্বোধন, আষাঢ়, ১৩২৭ সাল। শ্রীশ্রীশচন্দ্র মতিলাল 
প্রণীত এবং স্বামী শ্রীসারদাননের দ্বারা সম্যক সংশোধিত, পরিবর্তিত ও 
পরিবর্ধিত। | 
কলিকাতায় ফিরিয়া আসিবাঁৰ পব পাথুবিয়! ঘাটার স্থুগ্রসিদ্ধ 
৬প্রসন্নকুমার ঠাকুর মহোঁদয়েব দৌহিত্র স্বর্গীয় নাগেন্্রভ্ষণ মুখোপাধ্যায় 


যেরূপ তৃত্থির সহিত ভাজাতুজি, গুড়পাটালি খাইল, অতি উপাদের ব্য তাহাকে 
এরূপ ভাবে খাইতে রাধাকাস্ত দেখে নাই। তাহার পর অন্ন, কলায়ের দাল, 
নজিনাথাড়! চচ্চড়ি, আধপোড়! পোন! মাছ ভাজা, উত্তম ঘৃতহুদ্ধ-_পুজবৎ যত্বের 
সহিত বাধাকান্তের মা! হরেন্্রকে খাইতে দিল । হরেন্দ্র বাটাঠে যাহ! খাইত-. 
তাহার দ্বিগুণ খাইল। তথাপি মা-মাগী ঘোমট!। টানিয়। কথ! কহিয়। বলিল,__ 
“বাবা, আর দুটি ভাত ভাঙ্গিয়া খাও। আহা! বাবা-এ খেয়ে যোয়ান বয়মে কি 
ক'রে থাকৃবে?” এই সকল ন্বেহবাকেয হরেন্দ্রের চক্ষে জল আসিল। রাধাকাস্ত 
সাবান সন্্রে লইগ়াছিল। বালিসের ওর, বিছান! ,প্রভৃতি কাচিয়৷ রাখিয়াছিল। 
* »' * পরদিন প্রাতে রাধাকান্তের চাকর-_রাখাল, মাহিন্দর ও অন্তান্ত কৃষি চাকরেরা, 
হাতে কলিক! টানিতে টানিতে হরেন্রকে আমর করির়। জিজ্ঞাস! করিতে লাগিল, 
“ইযাগ| বাবু, ভোমার বাড়ী কি নিজ কলকাতায় 7 * * হরেন প্রায়ই কৃষকধিগকে 
খাওয়ার এবং তাহাদের মহিত খায়। সন্ধ্যার পর তাহাদ্বের সহিত নৃত্যগীত করে। 
সাতার দেক্গ--একমঙে ছোটে-_কখনও হা তাহাদের তামাক সাজিয়া খাওয়ার ।” ইত্যাদি 


৩৭৪ গিরিশচন্দ্র 


মহাঁশয় গিরিশচন্ত্রকে লইয়া ১২৯৯ সাল “মিনার্ভা থিয়েটার নামে একটা 
নূতন বঙ্গালয় প্রতিষ্ঠিত করেন। গ্রেট ন্তাসান্তাল থিয়েটারের জমী এ 
পর্য্যন্ত খালি পড়িয়াছিল। উক্ত জমীব স্বত্বাধিকারী মহ্ত্দ্রলাল দাসের 
নিকট “লিজ” লইয়া সেই স্থানেই মিনার্তা থিয়েটারের ভিত্তি স্থাপিত হইল । 
বল! বাহুল্য, ষ্টাব থিয়েটারের স্বত্বাধিকারিগণেব সহিত এগ্রিমেন্ট খারিজেব 
জন্ত নাগেন্ত্রভুষণ বাবু গিরিশচন্দ্রকে ড্যামেজের পাঁচ হাজাব টাকা প্রদ্দান 
করেন। সেই টাকা দিয়! গিবিশচন্ত্র টার থিয়েটারের সহিত সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ 
করিলেন । 


অফত্রিংশ পরিচ্ছেদ 


সিসম্ন্ভাম্ গ্িল্তিস্ণভুজ্ভর 


নীলমাঁধব বাবুর অধ্যক্ষতায় সিটি থিয়েটার সম্প্রদায় বীণ। থিয়েটাবে 
ন্যুনাধিক এক বসব কাল থিয়েটার পরিচালন! করিয়াছিলেন ; কিন্ত ক্ষুদ্র 
রঙ্গালয়ে স্থানে অল্পত৷ ও নাঁনা অস্থবিধাবশতঃ তাহারা একটা নূতন 
নাট্যশাল। নির্মাণেব নিমিত্ত একজন ধনীব সন্ধান করিতেছিলেন ৷ গিরিশ 
বাবুর প্রস্তাবে নাগেন্জরভূষণ বাবু ইহাদিগকে তাহার নৃতম রঙ্গালয়ের 
লভ্যাংশ দানে স্বীকৃত হওয়ায়, সিটি সম্প্রদায় নবোৎসাহে এই নূতন 
রঙ্গালয়ের ভিত্তি স্থাপন হইতেই তাহার সহিত যোগদান করেন। কিন্ত 
নাগেন্দ্রভৃষণ বাবু থিয়েটার নির্শীগে যে টাকা ব্যয় হইবে অঙ্গমান করিয়া 
ছিলেন, কার্ধ্য প্রায় অর্ধাংশ হইয়া আসিলে বুঝিলেন--তাহা় প্রায় তিন 
গুণ অধিক খরচ পড়িবে । এ নিমিত্ত তাহাকে দেনাও করিতে হইয়াছিল । 
তিনি দিটি সম্প্রদার়ফে এই সময়ে স্পষ্টই বলিলেন,_-“আমি রঙ্গালয় 
নির্মাণে খণগ্রন্ত হইখাঁছি, এখনও ধাণ করিতে হইবৈ,-_মর্তদিম আমার 
এই খণ পরিশোধ সা হয়, ততদ্দিদ "আমি আপনাদিগকে স্পন্যাঞ্শ দিতে 
পারিব না|” লীলমাধববাবু প্রমুখ সিটি সম্প্রদায় জিদ 'ধদিলেন,__ 
আমর! কাহার চাকুরী ক্ষপ্ধিব না, প্রথম হইন্ডেই আপাঙিগকে অংশ 
দিতে হইবে ।” গিগ্সিশচন্জ সক্ষল দিক বিন্যেম! কক! -মধ্যন্থতা 
করিলেন, “নধগে্জভৃষণ ারু 'খগ পঞিল্পোধ হইগেই আটটি পঞ্গরদায়কে 
লন্ভাংশ দিবেন, কিন্ত এই বর্দছে খাছাকে এখন বটিতিই পাকা জেখাপড়। 
করিয়া দিতে হইবে ।” নাগেন্দ্রবাবু ইহাতে সম্মত হইলেন, কিন্তু নীলমাধব- 
বাবু সম্মত হইলেন ন!। গিরিশচন্দ্র অনেক বুঝাইলেন- নীলমাধববাবু 
কোনও মতে স্বীকৃত না হুইয়! দল লইয়া চলিয়! গেলেন। 








গর 
গন্দরভূষ 
না 

গীয় 

স্ব 





অফত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৭৭ 


গিরিশচন্দ্র একটু বিপদগ্রস্ত হুইয়া পড়িলেন; কিন্তু তাহার ম্বভাঁব. 
ছিল, কোনও বিষয়ে বাঁধা পাইলে অন্ুমাত্র নিরুৎসাঁহ না হইয়া, নবোদ্চমে 
সেই কার্যে সাঁফল্য লাভের নিমিত্ত বদ্ধপরিকর হইয়া! উঠিতেন। তিনি 
নবব্রতী অভিনেতা ও নবীন যুবকগণকে লইয়া একটা নৃতন দল গঠনে 
রূতসন্কল্প হইলেন । উদ্তোগ-আয়োজন চলিতেছে, এমন সময়ে নটকুলশেখর 
অর্দেন্দুশেখর আসিয়া তাহার সহিত মিলিত হইলেন- মণিকাঞ্চন সংযোগ 
হইল। পাঠকগণ জ্ঞাত আছেন, অর্দেন্দুবাবু স্থায়ীভাবে একস্থানে 
থাকিতেন না, কখনও কলিকাতায় কখনও বা ভারতেব পূর্ব ও পশ্চিম 
নানা স্থানে ঘুরিয়৷ বেড়াইতেন। ইহার কিছু দিন পূর্বে তিনি কলিকাতায় 
আসিয়াছিলেন। অর্দেন্দুবাবুকে সহকাবী পাইয়া গিব্রিশচন্দ্রের বিশেষ 
স্থবিধা হইল ।" 

শ্রীযুক্ত সুরেন্ত্রনাথ ঘোষ ( দানিবাবু » শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেব ও 
নিখিলেন্দ্রকুষখ দেব ভ্রাতুদ্বয়, স্বর্গীয় বিনোদবিহাবী সোম ( পদবাঁবু ), 
কুমুদনাথ সরকার, কৃষ্ণলাল চক্রবর্তী অনুকুলচন্দ্র বটব্যাল, মাণিকলাল 
ভ্টাচার্ধ্য, শ্রীযুক্ত নীলমণি ঘোষ, নিবাবণচন্ত্র মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি 
যুবকগণকে লইয়া! নূতন দল গঠিত হইল। ইহার্দিগকে সম্পুর্ণ নৃতনভাবে- 
শিক্ষাদান করিয়া বঙ্গ রঙ্গতৃমিব পুরাতন ধার! বদলাইয়াদিবেন-_-গিরিশচন্্ 
স্থিব করিয়াছিযোন। 

“স্যামি আন্মনবাদ - 

নাটরকীভিনয়েও নৃতন যুগ আনিবার নিমিত্ত গিন্িশচন্তর এই সময়ে 
মহাকবি সেকম্পীয়ারের “ম্যাকৃবেথ নাটকের দ্বিতীয়বার অনুবাদ করেন। 
পাঠকগণের বোধ হয় স্মরণ আছে, গ্রেট স্াসান্তাল থিয়েটারে 'রুদ্রপাল: 
নাটকাভিনয় প্রসঙ্গে হাইকোর্টের ভূতপূর্র্ব বিচারপতি . দ্বগীয় 'রুদাস 
বন্য্যোপখ্যা মহাস্য় পিবিগচ্তক্ধে বজিযছিলেন,-_যতেরেধ নেক 


৩৭৮ গিরিশচন্দ্র 


ডাঁকিনী ( ৮/1%0,) দের ভাষার বঙ্গীন্থবাদ বড়ই কঠিন (১৭৩ পৃষ্টা 
রষ্টব্য)। গিরিশচন্দ্র গতনুক্য বশত: উক্ত নাটকের অন্বাদে প্রবৃত্ত হইয়। 
প্রায় তাহা শেষ করিয়! আনিয়াছিলেন, কিন্ত আযাটুকিনসন কোম্পানীর 
অফিস ফেল হইবার সময় পাওুলিপিখাঁনি খোয়! যায় ( ১৩৩ পৃষ্ঠা ভরষটব্য )। 
এক্ষণে তিনি পুনরায় অতি যত্রের সহিত এ নাটকথানি নূতন করিম 
অনুবাদ কবেন। তাহার মুখে শুনিয়াছিলাম, পূর্বস্থতি হইতে অনেক 
স্থানে তিনি সাহায্য পাইয়াছিলেন। 

'ম্যাক্বেখ অন্্বাদদে গিরিশচন্দ্র কিরূপ অন্ভুত পাণ্ডিত্য প্রকাশ 
করিয়াছিলেন, তাহার পরিচয় স্বরূপ নাটকের প্রারস্তেই প্রথম ডাকিনীব 
উক্তির মূল ও অন্বাদ উদ্ধৃত করিতেছি ₹__ 

167) 9191] 6 (0702 0899 81911) 
[0 001015091 1181000105) ০ 10 1? 

সম্ভবতঃ গুরুদাসবাবুব ধাবণা ছিল, সাধারণ অনুবাদক এমন একটা 
ইহার অন্থবাদ করিবে, যাহাতে ডাকিনীর ভাষার ত্ধাত” (80106) 
বজায় থাকিবে নাঃ যথা__ 

আবার মিলিব বল কোথা তিন জনে-_ 
ধ্বনি, দামিনী, বা বারি বরিষণে ? 

০ ভাষার বিশেষত্ব রক্ষার নিমিত্ত কিরূপ 
প্রয়াস করিয়াছেন পাঠ করুন :-- 

দিদিলে।, বল্না আবার মিল্ব কবে তিন বোনে-- 
বখন বর্বে মেঘ! ঝুপুর ঝুপুর, 


চক্‌ চকাচক্‌ হান্বে চিকুর, 
কড় কড়াকড় কড়াৎ ফড়াৎ ডাক্বে বখন ৰন্ঝনে ? 


অস্টন্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৭৯ 
পুনশ্চ, ১ম অঙ্ক, ৩য় দৃষ্টে ১ম! ডাকিনী £-_ 


4 ৪9110178 ৮719 0180. 01198101169 11) 1067 181), 
4100 10011170170, 2170. 0000001)+0, 800. 00001001910 :- 
এলে! চুলে মালার মেয়ে, বসে উদোম গায়, 
ভোর কৌচড়ে ছেচা বাদীম, চাকুম চাকুম থায়। 
উক্ত দৃশ্তেই ডাঁকিনীগণ “নাঁচন-কৌদন” কবিতেছে ২_- 
[11106 60 0101106, 2070. 6101009 0 20109, 
400 60109 89112, 0 170819 01) 0109 : 
16808 1 6179 01%02)15 00106 81, 
তিন পাক তোর, তিন পাঁক মোর, 
তিন তিরিখো ন' পাক হবে, আর তিন পাক ঘোর; 
থাম্‌ থাম্‌ থাম্‌ নাঁচোন কৌদন । পুয়লে। কুহুক ঘোর। 
৪র্থ অঙ্ক, ১ম দৃশ্তে জলস্ত কটাহে কুহক-স্ষ্টির আয়োজনে ডাকিনীগণ :__ 
90818 ০£ 01801, 6০০9) ০01 দা91 ? 
71601758 200100য ) েকন 800. ঠ016 
0£ 009 15511070 ৪৪16-৪৪৫, 81780 ; 
10০0৮ 01 209101001, 08200 11616 081 1 
[1167 01 018910119102106 ৩৪৯ ; 
0811 ০1 609৮ : 800. 81175 01 7৩ল্ম, 
911560. 1 610০-1901098 6০117389 3 
10৪6 ০0£1101, 800. 7188৮8 1108 ; 
10291 01 101700-56882190, 0৪০৩, 
[01601,-006115670. 07 & 018 
11810 6106 209] 01280 8408. 815) : 


শ৮৩ 


গ্িরিশচজ্ছ 


00 0167560 ৪, 61255 01590.0010, 
17017 0106 17707601005 ০0০00] 09010001). 
ছেড়ে দে নেকৃড়ে বাঘেব দাত, 
সাঁপেব এসো মিশিয়ে নে তার সাথ; 
শুটকী কবা ডাইনী মবা, 

নোনা হাঙ্গর ক্ষিধেয জবা, 

টু'টাটে নে না ছিড়ে, 

বার ক'রে নে ভুঁড়ি ফেঁড়ে ) 

বিষের চাবার শেকড় খানা, 

আধার রেতে খুঁড়ে আনা : 
দেবতাকে গাল দেছে সেটে, 

নে এ যীনুদীর মেটে; 

ছাগলের পিভি থোবা, 

নিয়ে লো কড়ায় চোবা ; 

কবব ভূইয়ের ঝাউয়ের ডাটা, 
গেরণেব বেতে কাটা ; 

তুরকির নাকেব বৌটা, 

বিয়িয়ে ছেলে খানার ধারে 

মুখ টিপে তার দেছে সেরে, 
স্কালিনেলে আডুল চেলে, 

এনে দে লো কড়ায় ফেলে, 

থকথকে ঘন ঘন, . 

কর ঝোল কথা শোন) 


অষ্টত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৮১ 


বাঘের তুঁড়ি তার উপরে, 
মসল! রাখ কড়া ভ'রে। 
ভাব অক্ষুপ্জ রাখিয়া! অথচ সরল এবং ওজস্ষিনী ভাষায় তাহার অন্বাদ 
কিরূপ সুন্দর হইয়াছে, তাহা দেখাইতে হইলে সমস্ত বইখানি উদ্ধাত 
করিতে হয়, আমর! কেবলমাত্র সর্বজন-প্রশংসিত বিশি্ কএকটা স্থান 
নিম্নে উদ্ধৃত করিলাম 
১। রাজহত্যা-সঙ্কল্লে লেডি ম্যাকৃবেথ :_-( ১ম অঙ্ক, ৫ম দৃশ্য) 
001076, 00092 7০. 91168 
11096 %9100 00 101৮2] 01501051068) 81080 009 18979 
4100 1 009, 000 6159 00, 60 %1)9 ০৪১ ৮00-0011 
0£ 01798 01061671108 01010 0) 101000, 
১6০]) 91) 016 8009988 900. 1085889 0 7170189 ; 
11910 110 090201)11)061008 ড181617)8 01 108,0079 
17985 10 091] [)11098, 7)0" 1596]) [)52,09 10096] 
1[1)9 900 8১0 161 90106 €০ 107 ৮7070181215 10769868, 
400 699 [0 [011] 10: 0811১ 700 1010:21716 00110196629, 
ড1)97556] 1) 00712 511701985 80108690093, 
০০, ৮916 000 109/001918 10190101911 00108, 00308 1010100 
4150 0001] 099 10 61)০ 00010658006 0£ 13911 ! 
11080 ময 19910 1.10119 969 206 61১6 %/00100 1 10195 ; 
০: 1)685০], 10991) 0107008)) 616 01905 ০0৫ 018 0920, 
[০ ০], «17010, 1)010 !” 
আয় আয়, আয়রে নরকবাসি পিশাচনিচয় ! 
ডাঁকিছে জিঘাংস! তোরে আয় ত্বরা করি; 


৩৮২ 


গিরিশচন্দ্র 


হর নারী-কোমলতা হাদি হ'তে মম, 
আপাদমস্তক কর কঠিনতাময় 1 

কর ঘন শোনিত-প্রবাহ 

রুদ্ধ বাখ হৃদয়ের দ্বার, 

মানব-্বভাব-জাত অন্তাপ যেন নাহি পশে ; 
না টলায় উদ্দেশ্য ভীষণ, দ্বন্দ নাহি উঠে মনে, 
ঘদবধি কার্য নাহি হয় সমাধান ! 

এস হত্যা-উত্তেজনাকারি, 

ভ্রম যারা অনৃস্থ শরীরে, 

মানব-স্বভাবে পাঁপ-উত্তেজনা হেতু, 

এস এস নাবীর হাদয়ে, 

পয়ঃ পরিবর্তে বিষ দেহ পয়োধবে ! 


আয় আয় ঘোঁররূপ! তামসী ব্রিযাঁমা, 
ভীষণ নরক-ধূমে আবরিয়৷ কায়! 
যেন তীক্ষ ছুরী না হেরে আঘাত ) 
ওমাচ্ছন্ন আবরণ ভেদিয়া গগন 

“কি কর, কি কর।” নাহি বলে। 


২। ম্যাকৃবেথ (১ম অঙ্ক, ৭ম দৃশ্য) 
1616 ৮7916 0008, 1191) 2519 00788, 10670 ৮0,776 61] 


1৮ ৮1679 0019 4010৮]. [6 0109 999985818010]0 


০০910 80006] 0) %00 90188006008, 8100. 08601), 
1018 1019 907999,59১ 9000988 ; 8189 1708 01019 0101 
11110156109 $006 10০-81] 200. 0139 01)0-81] 1676, 


10 1919, 01001) 61019 10801. 800. 81008] 06 61)9)-, 


অফত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৮৩, 


০0. 5100] 6109 116 6০0 00279,--1300, 11) 61)689 08968) 
9 9111 19959 )000)91)0 17679 7 01) ০1000 69901) 
1310000 10862006101895 10101) 101176 6801) 1960 
10 1015206 6006 10567060],  111915 ০9592041810 080. )080109 
(07000091709 1)9 176019189 0 00 70014010:0. 01)911099 


110 00] 010 11099, 


এ কঠিন ব্রত যদি উদযাপনে হ'ত উদ্যাপন, 
শ্রেয়; তবে শীঘ্র সমাধান । 

লব্ধকাম হত্যা] যদি বারিতে পারিত পরিণাম, 
অস্ত্রাঘাতে ফুরাত সকলি, 

ভুঞ্জিতে না হ'ত ফলাফল ইহকালে। 
সংকীর্ণ এ ভব-কুলে দাড়ায়ে নির্ভয়ে, 
করিতাম অবহেলা! পরলোকে । 

কিন্ত এই গুরু পাপে দণ্ড ইহলোকে ; 
অন্তে শিখে এ শোণিত খেলা, 

শিক্ষকে দেখায় সেই খেলা প্রাণনাশী। 
বিষম অপক্ষপাতী বিধির নিয়ম, 

যার বিষপাত্রঃ আনি ধরে তার মুখে । 


৩। ডাক্তারের প্রতি ম্যাকৃবেথ :-_( ৫ম অঙ্ক, ৩য় দৃশ্য) 
08786 01000 1000 10011019687 60 8, 2001100 01999910. 2 
[10010 9010 0109 11)922801ণ্য ৪, 00990. ৪0:7০ ; 

"15820 08 &09 6698 020900199০৫ 0106 1)1920) ১ 


150) 201) 80009 ৪8499 01012510705 8801090৮০, 


৩৮৪ গিরিশচন্দ্র 


(0198086 011০ ৪0000 1১08010 ০01 01190 ]96711008 960, 
10101) ৮1175 0190) 089 1792 ? 
পাব না কি মনোব্যাধি করিতে মোচন, 
্ৃতি হ'তে উখাড়িতে নাৰ কি হে তুমি 
দুরন্ত পন্তাঁপ বদ্ধমূল? 
অগ্নিবর্ণে থরে থরে মস্তিষ্ক মাঝারে 
লেখা অনুতাপ লিপি-_ 
আছে কি কৌশল তব মুছিবাবে তায়? 
অন্যব গরল যার প্রবল গীড়নে ! 
ব্যথিত হৃদয়াগার_ 
বিস্বৃতি অমৃত বারি করি দান 
ধৌত কর- পাব যদ্দি। 
উদ্ধত অংশ পাঠে স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে ইংরাঁজি এবং বাঙ্গালা 
ভাষায় প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি না থাকিলে এরূপ চমৎকার অনুবাদ সহজ 


সাধ্য নহে। 
ম্যাক জস ভ্ন্মজ্স 


'ম্যাকৃবেথ নাটকের রিহারস্তাল আবস্ত কালীন এমাবেন্ড থিয়েটার 
হইতে পণ্ডিত শ্রীহবিভূষণ ভট্রাচাধ্য এবং সিটা থিয়েটার হইতে 
ব্গীয় অঘৌরমাথ পাঠক ও শরৎচন্দ্র বন্যোপাধ্যায় (রাঁু বাবু ) আসিয়া 
গিরিশচন্ত্রের সহিত যোগদান করেন। প্রায় সাত মাস ধরিয়া ম্যাকৃবেখ 
এবং তৎদঙ্গে গিরিশচন্দ্রের “মুকুল-ুগ্ধরা” নামক আর একথানি নাটকের * 
রিহারন্তাল চলিয়াছিল । 


* ষ্টার থিয়েটারের নিত গিরিশ্চন্্র পূর্বে 'মুকুল-মুঞ্জরা' ও 'আবৃহোসেন' রচন। 
করিয়াছিলেন। নান! কারণে পুস্তক ছুইধানি তথায় জতিনীত হয় নাই। 


অফন্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৮৫ 


নবনির্মিত রঙ্গালয়ের নামকরণের নিমিত্ত প্রথমে তিনটি নাম প্রস্তাবিত 
হয় ক্লাসিক, মিনার্ভা ও আঁনন্দময়ী থিয়েটার । অবশেষে সর্ববাদী 
সম্মতিক্রমে “মিনার্ভা থিয়েটার” নাঁমই গৃহীত হয়। উত্তরকালে স্বর্গীয় 
অমরেন্ত্র নাথ দত্ত যে সময়ে এমারেল্ড থিয়েটার ভাড়া লইয়াছিলেন, তিনি 
তাঁহার থিয়েটারের 'ক্লাসিক' নাম রাখিয়াছিলেন। 

১৬ই মাঘ, ১২৯৯ সাল (২৮শে জানুয়ারী, ১৮৯৩ থুঃ ) ম্যাকৃবেথ 
লইয়! মিনার্ভ থিয়েটার প্রথম খোল! হয়। প্রথম অভিনয়-রজনীর 
অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-₹_ 

ডন্ক্যান পণ্ডিত শ্রীহরিভূষণ ভট্টাচার্য, ম্যাকম- শ্রীযুক্ত সুবেন্ধর 
নাথ ঘোষ (দানি বাবু), ডনাল্বেন- শ্রীযুক্ত নিথিলেন্দ্রকুষ দেব 
ম্যাকৃবেথ__গিরিশচন্্র ঘোষ, ব্যাক্ষৌ- _কুমুদনাথ সরকার, ম্যাকৃডফ 
ও হিকেট-_অধোঁরনাথ পাঠক, লেনক্স-_বিনোদবিহারী সোম (পদ বাবু), 
রস _কৃষ্ণলাল চক্রবর্তী, মেনটিয়েখ, ওয় হত্যাকারী ও ওয়া ডাকিনী-_ 
শ্রীযুক্ত নিবারণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, আ্যাঙ্গাস-_-অন্গকুলচন্ত্র বটব্যাল, 
কেথনেস, ২য় হত্যাকারী ও রক্তাক্ত সৈনিক - শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেব 
ফ্রিয়েন্দ_ শ্রীমতী কুন্মকুমারীঃ বুদ্ধ সিউয়াড- শ্রীযুক্ত ঠাকুরদান 
চট্টোপাধ্যায় (দাস বাবু), যুবা সিউয়ার্ড ও ২য়া ডাঁকিনী-_ 
শ্রীযুক্ত নীলমণি ঘোঁষ, সিটন- শ্রীযুক্ত নন্দহরি ভ্রাচার্ধ্য (প্রম্পটার ) 
স্বারপাল, "১ম ডাকিনী, বৃদ্ধ, ১ম হত্যাকারী ও ভাক্তার__অর্ধেন্দুশেখর 
মুস্তফী, দৃতদ্বয়--মাঁণিকলাল ভট্রাচাধ্য ও তিতুরাম দাস, ম্যাক্ডফের 
পুজ- চয়ন কুমারী, লেডী ম্যাক্বেধ__তিনকড়ি দাসী, লেভী ম্যাকৃডফ 
-_ প্রমদাসুন্বরী, পরিচারিকা- হরিমতী (ডেকৃচি ) ইত্যাদি। সঙ্গীত- 
শিক্ষক শ্রীযুক্ত দেবক্ বাগচী, রঙ্গভূমি-সজ্জাকর -ধর্মদীস সুর, 
জহরলাল ধর ও শ্রীযুক্ত শশীভূষণ দে ( সহকারীঘয় )। 

২৫ 


৩৮৬ গ্িরিশচজ্জ 


ষোড়শ পরিচ্ছেদে বণিত হইয়াছে, মিসেম্‌ লুইসের সহিত ঘনিষ্ঠতায় 
এবং লুইস থিয়েটারে প্রায়ই অভিনয় দর্শনে যুবক গিরিশচন্দ্রের নাটা- 
প্রতিভা স্কুরিত হুইয়া থাকে ।. তৎপরে কলিকাতায় আগত লবগ্রতিষ্ঠ 
বহু বিলাতী থিয়েটারে মেকৃসপিয়ারের শ্রেষ্ঠ নাটকগুলির অতিনয় দেখিয়। 
তিনি পাশ্চাত্য নাট্যকলায় বিশেষ অভিজ্ঞত। লাভ করেন। সেই 
অভিজ্ঞতায় ও স্বভাবপ্রদত্ত নাট্যপ্রতিভায় তিনি ম্যাকৃবেথের শিক্ষাদানে 
এবং স্বয়ং ম্যাকৃবেথের ভূমিকা অভিনয় করিয়! প্রতিপন্ন করেন-_বাঙ্গালীর 
বাবা বাঙ্গাল! ভাঁষাতেও বিলাতের সুবিখ্যাত অভিনেতৃগণেব ন্যায় রম 
স্থষ্টিকরা যাঁয়। নাটকের প্রত্যেক ভূমিকাই সুন্দর এবং নির্দোষভাবে 
অভিনীত হইয়াছিল। 

অর্ধেন্দুশেখর পাঁচটা বিভিন্ন রসের ভূমিক! গ্রহণ করিয়৷ অসাধারণ 
অভিনযশ্চাতুর্্যের পরিচয় দিয়াছিলেন। সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য-_ স্বর্গীয় 
তিনকড়ি দাসীর লেডী ম্যাকবেথের অভিনয় । বিলাতের বড় বড় শিক্ষিতা 
অভিনেত্রী যে ভূমিকা অভিনয় করিতে ভীতা৷ হন, সেই ভূমিকা এক নগণ্যা 
অশিক্ষিত! বাঙ্কালী স্ত্রীলোকের দ্বার অভিনয় যে একেবাবেই অসম্ভব, 
ইহাই শিক্ষিত সমাজের ধারণা ছিল, কিন্তু তিনকড়ি তাহাব অসামান্ত 
অধ্যবসায় এবং গিরিশচন্দ্র অদ্ভুত শিক্ষা-গ্রভাবে তাহাদের সেই ভ্রান্ত 
ধারণা দূর করিয়াছিলেন । 

গিরিশচন্দ্ের আশ্চর্ধ্য শিক্ষাদান ও অভিনয়'কৌশল এবং তাহার 
অদ্ভুত অন্বাদ-শক্তির পরিচয় পাইয়া কি শক্র, কি মিত্র 'উভয় পক্ষই বিস্মিত 
ও মুগ্ধ হইয়াছিলেন। এমন কি, ধাঁহীর! গিরিশচন্দ্রের একাস্ত পক্ষপাতী, 
তাহাদদেরও আশ্চধ্যের সীম! ছিল না । এই সময় হইতেই তিনি বিজ্জন- 
সমাজে ইংরাজী সাহিত্যে সুপপ্ডিত বলিয়! সমাদৃত হন। 

"ইংলিশম্যানের, সম্পাদক অভিনয় দশনে লেখেন,--/. 73908৯11 


৩৮৮ গিরিশচন্দ্র 


6006 00105970510109 01 80 [771%1181) ৪৮৪৪০.৮ অর্থাৎ বাঙ্গালী ম্যাকৃবেথ 
একটা হাঁসির কথা, কিন্তু যাহ! হইয়াছে, তাহ! ইংরাজী ্টেজের অভিনয়- 
নিপুণতার আশ্চর্য্য অন্থকরণ। স্বর্গীয় গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় 
ম্যাকৃবেথ অভিনয় দেখিবার নিমিত্ত কৌতৃহলাক্রাস্ত হইয়া! সাধারণ বঙ্গ- 
রঙ্গালয়ে এই প্রথম আগমন করেন। গিরিশচন্ত্রের অভিনয় এবং তাহার 
অন্বাঁদ__এই উভয় শক্তিরই অপূর্ব লীলা-বিকাশ দেখিয়া ভূয়সী প্রশংসা! 
করিয়া যান। তৃতপূর্বব “ইত্ডিয়ান নেসন' পত্রিকার সম্পাদক, মেট্রোপলি- 
টন ইনিষ্টিটিউসনের প্রিন্সিপাল, পণ্ডিতপ্রবর স্বর্গীয় এন, ঘোষ প্রকাশ 
করিয়াছিলেন যে, সেক্সপিয়ারের ম্যাক্বেথ নাটক, ফরাসী ভাষায় স্থন্দর 
রূপ অন্ুবাদিত হইয়াছে, কিন্তু গিরিশবাবুর অন্বাদ তাহা অপেক্ষা 
উৎকৃষ্ট” ক্লাসিক থিল্নেটারে যৎকালে ম্যাক্বেথের পুনরভিনয় 
হয়, সে সময়ে হাইকোর্টের ভূতপূর্বব বিচারপতিত্বয় মহাঁমান্ত চন্দ্রমাঁধব 'ঘোঁষ 
ও গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, সবিখ্যাত কে, জি, গুপ্ধ এবং স্ুপ্রসিদধ 
ব্যারিষ্টার পি, এল, রায় একযোগে মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন,-_ 
শ[0. 680091966 61)9 10100168019 10£0829 ০0% 918198]99819 
9৪ ৪, 688 0170 0:010)977 016800]%য ) 170৮ 73890 01251) 
(0708701% 015088 1098 70670010190 61196 01800016 699 ৮ 
97901691017 0]. 0109 11019) 810. 1019 69109196101) 18 2) 10900 
1019099 00169 ০৮) 01 0106 01121091.৮ ৰ 

ব্গীয় মহারাজ যতীন্ত্রমোহন ঠাকুর মহোদয় বলিয়াছিলেন,_-“গিরিশ 
বাবুর অনুবাদের এই বিশেষত্ব দেখিলাম, যে যে স্থানে অনুবাদ কর! অতীব 
দুরূহ, সেই সেই স্থানে তাহার শীক্তিমত্ত! সমধিক প্রকাশ পাইন্বাছে ।” 

'ম্যাকৃবেখ অভিনয়ে নাট্যশিল্পের বহু উন্নতি সাধিত হ্ইয়াছিল। 
গিগ্িশচন্ত্র বিখ্যাত চিত্রকর উইলিয়ার্ড সাহেবকে নিযুক্ত করিয়া, সমস্ত 


অফন্ভিংশ পরিচ্ছেদ ৩৮৯ 


চিত্রপট অস্কিত করাইয়া ছিলেন। তাহার অঙ্কিত "ড্রপ সিন” যীহারা 
দেখিয়াছেন, তাহারা মুক্তকণ্ঠে বলিয়াছেন, এরূপ দৃশ্বপট পূর্বে তাহারা 
আর কখনও দেখেন নাই। * এই ণ্ডপ সিনের, বিশিষ্টতা ছিল 
এই-_৪69: 01001 এর 7910%10£ যেন 01] [0917017% এর 
মতন দেখাইত। প্রসিদ্ধ রূপ-সজ্জাকর পিম সাহেবকে নিযুক্ত করিয়া 
গিবিশচন্ত্র আধুনিক রঙ্গালয়ে সাজ-সজ্জ!-নৈপুণ্যেরও অনেক উৎকর্ষ সাধন 
করিয়াছিলেন। 

যেরূপ অক্রান্ত পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং যথেষ্ট অর্থব্যয়ে এই নাটক 
অভিনীত হইয়াছিল, আধিক হিসাবে কিন্তু সেরূপ ফললাভ হয় নাই। 
শিক্ষিত সমাজে ইহার কতকটা আদর হইলেও দর্শক সাধারণের মন 
ম্যাকৃবেখ আকৃষ্ট করিতে পারে নাই। তাহাদের চিরপরিচিত পৌরাণিক 
বা সামাজিক নাটকের পরিবর্তে এই রুদ্ররসাত্মক বিলাতী নাটক তেমন 
রুচিকর হইল না। ক্রমশ: বিক্রয় হাঁস হইতে থাঁকায় নাটকের অভিনয় 
বন্ধ হইল। সেই সঙ্গে গিবিশচন্দ্রের একে একে সেক্সপিয়ারের সর্বশ্রেষ্ঠ 
নাটকগুলিব বঙ্গান্গবাদ-বাসনা মন হইতে বিলীন হইল। বঙজগদেশের 
দুর্ভাগ্যঃ তাই বঙ্গ নাট্যশালার নাট্যকারগণকে সাধারণ শ্রোতার 
মুখ চাহিয়া নাটক লিখিতে হয়। গিবিশচন্ত্রের অল্ল-আয়াস-রচিত 
'আবুহৌসেন” কৌতৃক-গীতিনাট্যের অভিনয়কালীন দর্শকবুন্দের প্রথম 
হইতে শেষ পধ্যন্ত মহা উল্লাসে হাশ্ত ও করতালি ধ্বনিতে রঙ্গালয় 
কম্পিত হইতে দেখিয়া, ম্যাকবেথ-অনুবাদক *আবুহোসেনের রচগ্গিতা 
হইয়াও সাধারণ দর্শকের রুচি দর্শনে ক্ষুব্ধ হইয়া বলিয়াছিলেন,_-“নাটক 
দেখিবার যোগ্যতালাভে ইহার্দের এখনও বু বৎমর লাগিবে,_নাটক 


* ১৩২৯ সাল, ১ল৷ কার্তিক, বুধবার মিনার্ভ! থিয়েটার ভল্মীতৃত হয়। সেই সঙ্গে এই 
দৃষ্তপটথানিও চিরদিনের জন্ত লুগ্ হয়। 


৩৯০ গিরিশচন্দ্র 


বুঝিবার সাধারণ দর্শক এখনও বাঙ্গালায় তৈয়ারী হয় নাই। পেশাদার 
থিয়েটার প্রতিষ্ঠানে আমার যে আপত্তি ছিল-_ইহাঁও তাহার একটা 
কারণ ।” 
সুুইভনশন্যুগনলা 
২৪ শে মাঘ (১২৯৯ সাল) রবিবার, মিনার্ভা থিয়েটাবে গিবিশচন্দ্রের 
"মুকুল-মুগ্জবা” নাটক প্রথম অভিনীত হয়।* প্রথমাভিনয় রজনীর 
অভিনেতা ও অঠিনেত্রীগণ £-_ 











* নুহ্দ্বর হীযুক্ত সতীশচন্ত্র বহুর সৌদন্তে যিনার্ভা ধিম়্েটার হইতে প্রকাশিত এই 
সপ্তাঙ্থের একথানি পুরাতন হ্থাগবিল পাইকাছি। গিরিশচন্রের 'হাগ্বল' লিখিবার 
বিশিষ্ট! ছিল-_বিনা আড়ন্বরে বক্তব্য প্রকাশ। পাঠকগণের কৌতুহল নিবারণার্থে 
কিয়দংশ উদ্ধত করিলাম £- 

“সিন।ত্ড। ধিম্মেটার, ৬নং বিউন দ্র, কলিকাত। | শনিবার, ২৩শে মাঘ, 
১২৯৯ সাল, রাত্রি » ঘটিক!। ম্যাক়ুবেখ (তৃতীয় অভিনয় রজনী)। | 109৮6 
15819 25৪7160 7)95611 01 70010196217 210 || 10001100210 0165511 
1106 791606 ৬101) 50100 20161652005 10 0175 81710 01906, সধোগ্গ ইংরাজ 
চিত্রকর ছ্বার। চিত্রপটগুলি, চি্রিত, ও ইংরাজ তত্বাবধানে পরিচ্ছদ প্রস্তত। 

খুলিয়! কালেয় দ্বার, আছে যার অ'ধকার, দেখ আলি চিত্র পরিচ্ছদ । 
উচ্চ কাব্য অভিনয়, বদি কারু প্রাণে লয়, বিকাশ হইবে ভার চিত্ব-কোঞনদ । 

[015 17019601179 016 0200778£5 15/741) ৪০০০9105010 1776 0) (৬/০ 
[1651005 000831015, 0779 701 108 ৬1101012৬17 0015 01702. আমার উৎসাহ- 
দ্বাতাগণ ছুইবার ( অর্থ।ৎ স্তাসান্কাল ও ষ্টার থিয়েটার প্রতিষ্ঠার সময় ) (যরাপ টৎমাহ 
প্রদান করিয়াছেন, তরস| করি এবারও সেইরূপ করিবেন। 

পরদিন রবিষার, ২৪শে মাঘ, ১২৯৯ সাল, সন্ধ্যার সময়--ইগিরিশচল্্র ঘোষ 
(অধীন) প্রণীত নৃঙন মিলনাস্ত নাটক-_স্যুকুুতস-হ্ুগুডন্্! | ধম অভিনয় রজনী । 
[10955 55:21150 109 0650 93 50081 117 11906116015 1706৬ [31605 ৪০০৪০৮- 


৪106 10 ৪7 900015090156 08010, 1708 0019 85 00000106870 0163518 


অফ্নত্রিংশ পারিচ্ছেদ ৩৯১ 


অচ্যুতানন্দ--অধোয়নাথ পাঠক; জয়ধবজ- পণ্ডিত শ্রীহরিভূষণ 
ভট্টাচার্যা, চক্্রধবজ--শ্রীযুক্ক চুনীলাল দেব, বীরসেন- শ্রীযুক্ত ঠাকুরদা 
চট্টোপাধ্যায় ( দীস্তুবাবু ), মুকুল--জীযুক্ত সুরেজ্্রনাথ ঘোষ (দানি বাবু), 
ক্ষিতিধর-ত্রীুক্ত নিথিলেক্ত্রকু্ণ দেব, সুপ্ষণ-্রীযুক্ত নীলমণি ঘোঁষ, 
বরুণটাদ-_-অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী, মন্ত্রী-_কুমুদনাথ সরকার, ভজনয়াম-__ 
বিনোদবিহারী সোম (পদ বাবু), তারা--তিনকড়ি দাসী, শুগ্রবা_ 
শ্ামতী কুন্মকুমারী, চামেলি-_হবিস্ুন্দবী ( বিড়াল ), পান্া-_ প্রীমর্তী 
হরিদাসী'(টল) ইত্যাদি। 

“মুকুল মুঞ্তবা” আদিরসাত্মক দৃশ্ঠ কাব্য । প্রকৃত প্রেম কাহাকে বলে, 
প্রকৃত প্রেমিক-প্রেমিকার লক্ষণ কি-_প্রেমেব কিরূপ অধ্ভুতি শক্তি _ 
গিবিশচন্ত্র তাহার অসামান্ত কবি-প্রতিভীয় সেই ছবি এই নাটকে নিখৃ'তত- 
ভাবে অঙ্ধিত করিগ্নাছেন। প্রেমালোকে জড়েরও কুঞ্চিত হাদ-কমল যে 
পূর্ণ বিকশিত হইতে পারে,_এই নাটকে মুকুলের চবিপ্রে তাহা অতি 
স্ুনাররূপ প্রন্ফুটিত ছুইয়াছে। তাঁরা, যুবরাজ এবং মুঞ্জরার প্রেম- 
চরিগ্রও বড়ই বৈচিত্র্যময়+_-ইহা বিলার্তী আদর্শে গঠিত উপচ্ঠাসের 
প্রেমিক-প্রেমিকার চিত্র নহে--খাটি এ দেশের জিনিষ । 





1 501091019, 04009 010100£1157 15168515108 016 001105909, ৪০ ৪5 10 
18500 016 10026 01 & 9৬০181015 150600101, লধিনয় নিবেদন, যথাযোগ্য 
দৃষ্তগট ও পরিচ্ছদ প্রস্তুত করিয়াছি। যথানাধ্য সম্প্রদায়কে শিক্গ! দিয়াছি। গুরমা 
করি, দর্শকবৃন্দ নিজগুণে আগার এ নব উদ্ভমে উৎসাহ প্রদান করিবেন । 91561 
8150 10 90681 1061016 06 000110 ৬/10) 176৬ 0005 09 ৬৪9 01 
81181) 00011061511 00 50195018066 11%887 11%7%7216 07 240862% ০ 
9010599, 001 91015500016 076 চ/09016 1606100017 01117619061, 

0, 0. 07171099), 0181১9661 


৩৯২ গিরিশচন্দ্র 


নৃতন নাটকের প্রত্যেক অভিনেতা ও অভিনেত্রীর নিখুত ছবি প্রায় 
দেখা যায় না, কিন্তু এই নাটকের পাত্র-পাত্রীগণ কি আরুতি-প্রকৃতি-_ 
কি বয়স হিসাবে এরূপ সামপ্শ্য রক্ষা করিয়াছিলেন, _যে অভিনয়-সাফল্যে 
কোন চরিত্রেরই উচ্চ-নিম্ন বিচার করিবার সুযোগ ছিল না,_-সকলেই স্ব- 
স্ব চরিত্র অতি কৃতিত্বের সহিত অভিনয় করিয়াছিলেন। বরুণচাদ ও 
ভজনবামের হাম্তরম দর্শকসাঁধারণের এতটা মুখরোচক হইয়াছিল যে 
বহুদিন ধরিয়া তাঁহাদের ভূমিকাঁব সরস 'বুকনি” নাট্যামোদীগণের মুখে মুখে 
চলিয়াছিল। “ছড়ায় এত ভালবাসা কোথায় পায় ?”__“( আমায় ) 
বিলিয়ে দিতে চাঁও কি প্রাণসই 1*-_-"কেন ফুল ফোটে কে জানে!” 
প্রভৃতি “মুকুল-মুগ্তরা নাটকের গানগুলি সঙ্গীতপ্রিয়গণের মুখে এখনও 
শুন! যায়। 

সৌনাধ্য স্ষ্টির সুবিকাশে এই নাঁটকখানি গিবিশচন্দ্রের সর্বশ্রেষ্ঠ 
নাটকগুলির মধ্যে স্থান পাইয়াছে। “বঙ্গবাসী”-সম্পাদক রায় সাহেব স্বর্গীয় 
বিহারীলাল সরকার-লিখিত “জন্মভূমি মাসিক পত্রিকায় (ফাল্গুন, ১২৯৯ 
সাল) এই নাটকের পনের-পৃষ্ঠা ব্যাপি এক দীর্ঘ সমালোচনা বাহির 
হইয়্াছিল। নিম কির়দংশ উদ্ধৃত করিলাম £__ 

“মুকুল-মুগ্তুব! নাটকথানি চরিত্রে, ঘটন! বৈচিত্র্যে এবং নাট্যমঞ্চের 
প্রকৃত ফলোপধায়ক কাধ্যকারিত্বে পরিপূর্ণ । ভাষা, ভাব, শিল্প, সৌন্দধ্য, 
কবিত্বঃ কাব্যের বরণীয় বিষয়মাত্রের সবিশেষ বিকাশ “মুকুল মুগুরায়” । 
নাট্যসঙ্গত তর্দীয় লিপি-কৌশল অতি সুন্দর । *& * * মুকুল-মুঞ্জুরায়” 
গিবিশবাবুকে অন্তান্ত নাট্যকার হইতে অনেক স্বতন্ত্র করিয়া ফেলিয়াছে”_ 
এবং “মুকুল-মুগ্জুরায়' গিরিশবাঁবুকে সহজে বুঝিয়! লওয়া যায়। “মুকুল- 
ুঙ্ুবা' বাক্‌বিস্তাসের, ঘাত-প্রতিঘীতের এবং কল্পনা-উদ্ভাবকতার উচ্চতম 
আদর্শ। রহস্য ও সৌন্দর্য তীব্রভাবে এবং উজ্জ্লরাগে উচ্ক্বসিত ও. 


অফ্টত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৯৩ 


উদ্ভতাদিত। মানব-চরিত্রের গভীরতান্ুভব করিবার শক্তি গিরিশবাবুর 
কিদৃশী এবং রহস্-রসাবতরণে বিজয়লাভ করিবার ক্ষমতা তাহার কতদুর, 
“মুকুল-ুষ্গুরায়' তাহা! স্পন্টীরুত হইয়াছে 
অনানুক্ছো তন্ন 

১৩ই চৈত্র (১২৯৯ সাল) মিনার্তা থিক্নেটারে গিরিশচন্ত্রের কৌতুকপূর্ণ 
“আবুহোসেন, গীতিনাট্য প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমীভিনয় রজনীর, 
অতিনেত! ও অভিনেত্রীগণ £-_ 

আবুহোসেন- অর্দেন্দুশেখর মুন্তফী, হারণ-অল-রসিদ-_দাস্থ বাবু, 
উজীর-_পদবাবুঃ মশ্ডর-_রাখুবাবু, ১ম বৈতালিক--অঘোরনাথ পাঠক, 
২য় বৈতালিক ও ধোস্বোওয়ালা-_তিতুরাম দাস, পাগলগণ-_পণ্ডিত 
শ্রহরিভূষণ ভট্টাচার্য, কুমুদনাথ সরকার, পদবাবুঃ রাণবাবু ও শ্রীযুক্ত 
নীলমণি ঘোঁষ ; বিচার প্রার্থ পুরুষগণ- শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেব, শ্রীযুক্ত 
নিথিলেন্্রকষ দেব, শ্রীযুক্ত নিবারণচন্ত্র মুখোপাধ্যায় ও অনুকুলচন্্ 
বটব্যাল ওরফে ত্যাঙ্গাস, * হকিম--কৃষ্ণলাল চক্রবর্তী, ইমাম-__কুমুদনাথ 
সরকার, মেওয়াঁওয়ালা-্রীযুক্ত নিবারণচন্ত্র মুখোপাধ্যায়, রোশেনা-- 
হরিক্থন্দরী (বিড়াল '১ বেগম---ট্রীমতী বসন্তকুমারী ( ভূষণকুমারীর ভগ্রী ), 
আবুহোসেনের মাতা-_গুলফন হরি, দ্াই--তিনকড়ি দাসী, ১ম! সথী-_- 
শ্রীমতী কুন্মকুমীরী, বিচার-প্রাথিনী স্ত্রীঘবয-_ শ্রীমতী হেমস্তকুমারী ও 
শ্রীমতী হরিদাসী (টল) ইত্যাদি-_ 

আরব্যেপন্তাসের একটী গল্প অবলম্বনে গিরিশচন্দ্র সম্পূর্ণ নৃতন 
ভঙ্গিতে এই কৌতুকপূর্ণ গীতিনাট্যখানি রচন! করেন। গিরিশচন্দ্রের এই 


লা ০ ০৫5 ০১ ০ 


* ম্যাকৃষেধ নাটকে “4১785'এর ভূমিক! অভিনয় করিয়া অনুকুলবাবু সাধারণের 
নিকট 'জ্যাঙ্গাস' নাঁষে পরিচিত হুন। 


৩৯৪ গিরিশচন্দ্র 


অপূর্ব্ব রচনা-চাতুর্যের উপর সঙগীতাচার্য শ্রীহুক্ত দেবকঠ বাগচী এবং 
এবং স্থপ্রসিত্ধ নৃত্যশিক্ষক স্বর্গীয় শরৎচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (রাঁণু বাবু) 
ইহাতে স্থুর এবং নৃত্য সংযোজনায় বিশেষরূপ নৃতনত্ব প্রকাশ করায়, 
«আবুহৌসেন' দর্শকমণ্ডলীর নিকট এক অপূর্বব জিনিষ হইয়া! উঠিয়াছিল। 
আজি পধ্যন্ত “আবুহোসেন” চিরনূতন হইয়া নাট্যামোদীগণকে আনন্দ 
প্রদান করিতেছে । দাঁই ও মণ্ুরের দ্বৈত সঙ্গীত ও নৃত্যের মৌলিকতায় 
এবং চমৎকারিত্বে তিনকড়ি দ্রাসী ও বাঁণু বাবু রঙ্গমঞ্চে এক অপূর্ব বসের 
বন্তা ছুটাইয়াছিলেন । “আবুহোৌসেনের অন্নুকবণে এ পর্যন্ত রঙ্গালয়ে 
বহসংখ্যক গীতিনাট্যের স্থষ্টি হইয়াছে এবং এখনও হুইতেছে। এই 
গীতিনাট্যের গানগুলি যেমনি চটকদাব সেইরূপ কবিত্বপূর্ণ। ছুইখানি 
গীত উদ্ধৃত করিতেছি *-_ 
১ম। আবুহোসেনের নিদ্রাভঙে সখিগণ £-_ 
জুটুলো অলি ফুটুলো৷ কত ফুল। 
দোলে হায় ধীর পবনে সৌরতে আকুল । 
ঝর্‌ ঝর্‌ ঝরছে শিশির, যেন সোনায় গাথা! মাল! মতির, 
পাঁধীর তানে প্রাণে হানে তীর; 
আকাশে উষা হাসে, জলে কমলকুল ॥ 
২য়। বোশেনার প্রতি সখিগণ £-- 
একে লো৷ তোর এই ভরা যৌবন। 
বসে করেছে অবশ, আবেশে চলে নয়ন ॥ 
ঘোর বিরহ-বিকার তাতে, জোব করেছে নারীর ধাতে, 
বাই কুপিতে সরল মন মাতে,_ 
ভরা হৃদি, গুরু উরু-_বিষম কুলক্ষণ। 


অকত্রিংশ পারচ্ছেদ ৩৯৫ 


' “রাম রহিম ন! ভুদা করে! দিল্কি সীচ্চ! রাখো জী!” গ্ানখানি 

বোঁধ হয়, এরূপ বাঙ্গালী নাই যে শুনেন নাই। 

আবুহোসেনের ভূমিকা গ্রহণে স্বর্গীয় অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী মহাশয় 
দেশব্যাপী স্ুযশ অর্জন করিয়াছিলেন। এই তরল হাম্যরসাত্মক 
গীতিনাট্যের ভিতরেও গিরিশচন্দ্রেব প্রতিভাব বিকাশ পাঁইয়াছে--পাগলা 
গারদের দৃশ্তে। সাহিত্যিক, এতিহাঁসিক, বৈজ্ঞানিক প্রভৃতি পাগলদের 
চিত্র বিশেষরূপ উপভোগ্য । 

আবুহোসেনের অভিনয়ে মিনার্তা থিয়েটাব সর্ধসাঁধারণেব নিকট যেরূপ 
সমা€ত হইয়াছিল, সেইরূপ অজন্ব অর্থাগমে সুপ্রতিষ্ঠিত হইয়। উঠিয়াছিল। 

সগুমীতে ন্বিস্র্জন্ন 

২২শে আশ্বিন (১৩০* সাল) মিনার্ভা! থিয়েটাবে গিরিশচন্দ্রের 'সপ্তমীতে 
বিসর্জন” পঞ্চরং প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেত। 
ও 'অভিনেত্রীগণ £-- 

মামা _অর্ধেদদুশেখর মুস্তফী, গৌসাই-_পণ্ডিত শ্রীহরিভূষণ ভট্টাচার্য, 
গৌবদ্ধন (কাণ্তেন বাবু)__-পদবাঝুঃ উকীল ও প্যালারাম_ কুমুদনাথ 
সবকার, সাতকড়ি ও দালাল-_শ্রীধুক্ত গোবর্ধনচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, বলরাম 
-_ শ্রীযুক্ত দেবকণঠ বাগ্চী, যাত্রার দলের অধিকারী পূর্ণচন্ত্র বন্থঃ আদালতের 
বেলিফ-_ ত্যাঙ্গীস,ওয়ারেণ্টেব আসামী ও ধনী-_কঞ্খলাল চক্রবর্তী, বিরাজ 
_-তিনকড়ি দাসী, বিরাজের মাতা--গুলফন হরি, রেবতী--ভবতাবিণী, 
যণোদা দাস্থ্বাবুঃ কষ্১--টল হরি, রাঁধিকা-_ভূষণকুমাঁরী ইত্যাদি-_ 

পূজার বাজারে কাণ্ডেন বাবুদের অবস্থা বর্ণনা বিনা এই সামাজিক 
শ্নেধাতক পঞ্চরং খানি লিখিত | ইংরাজিতে যাহাকে 12%0785881728 বলে, 
ইহা! সেই প্রক্কৃতির | ইহ! সঙ্থন্ধে অধিক আলোচন! নিপ্রয়োজন। সামাজিক 
নাটক বান্ডব সংসারে ঘটনা! ও চরিত্র লইয়! রচিত হয়, এইরূপ বিজপাত্মক 


৩৯৬ গিরিশচন্দ্র 


প্রহসনের গল্প এবং চরিত্র সম্ভব রাজ্যের প্রীস্তসীম! হইতে আহত হইয়া 
থাকে-__ইহার সকলই উচ্ছঙ্খল। 


ভকন্বা 


নই পৌষ (১৩০ সাল) গিরিশচন্দ্রের “জনা” পৌরাণিক নাঁটক মিনার্ডা 
থিয়েটারে প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতৃগণ £__ 

নীলধবজ-_পত্তিত শ্রীহরিভূষণ ভট্টাচার্য, প্রবীর- শ্রীযুক্ত স্থরেন্ত্নাথ 
ঘোঁষ ( দাঁনিবাবু ), অগ্নি ও ভৈরব__-অঘোরনাঁথ পাঠক, বিদূষক-_অর্দন্দু- 
শেখর মুস্তফী, শ্রীকৃষ্ণ__রাণুবাবুঃ মহাদেব ও ভীম- দাস্্বাবু অজ্জুন__ 
শীযুক্ত চুনীলাঁল দেব, বুষকেতু-_কৃষ্ণলাল চক্রবর্তী, অন্ুশাৰ ও উলুক-__ 
আ্যাঙ্গান্ ১ম গঙ্গারক্ষক-_পদবাবু, ২য় গঙ্গারক্ষক- শ্রীযুক্ত গোবর্ধনচন্র 
বন্দোপাধ্যায়, কাম- শ্রীমতী হরিদাসী (টল ), মন্ত্রী-্রীযুক্ত নিবাঁবগচন্দ্র 
মুখোপাধ্যায়, সেনাপতি ও পাঁওবদূত-_্রীযুক্ত নীলমণি ঘোঁষ, সেনা- 
নায়ক-__বিজয়কৃ্ণ বন্থ, প্রবীরের দৃত-_মাঁণিকলাল ভট্টাচার্য, জনা-_ 
তিনকড়ি দাসী, স্বাহা ও রতি-_ শ্রীমতী শরৎকুমারী, মদনমঞ্জরী- _ভূষণ- 
কুমারী, বসন্তকুমারী--্রীমতী কুনুমকুমারী, নায়িকা-_ভবতারিণী, 
্রাহ্মণী ও গঙ্গা__হরিমতী ( গুলফন ) ইত্যাদি । 

মহাঁভারতেব অশ্বমেধ-পর্বান্তর্গত “জনা”র উপাখ্যান লইয়া এই 
নাটকখাঁনি বচিত। এরূপ নব বসের সম্মিলন বঙ্গনাট্য-সাহিত্যে বড়ই 
বিবল । «জনা' ও 'পাঁওব-গৌরক গিরিশচন্দ্রের সর্বশ্রেষ্ঠ পৌরাণিক নাটক । 
জনার মাতৃত্ব এবং বিছুষকের ভক্কি-রসে নাটকখানি সমুদ্ভাসিত হইয়। 
উঠিয়াছে। 

একদিকে গিরিশচন্দ্র যেইরূপ গ্রধান চরিত্রগুলির শিক্ষাদান করিতেন, 
অন্তদিকে সেইরূপ অন্তান্ত ভূমিকাগুলির শিক্ষাদানে অর্ধেন্দুবাবু এক একটা 


অষ্টত্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৯৭ 


সজীব ছবি খাড়া করিয়া দিতেন। উভয়ের সহযোগিতায় মিনার্ভা 
থিয়েটারের প্রত্যেক বহিগুলিই নিখুঁতভাবে অভিনীত হইয়৷ আসিতেছিল। 
নাট্যসম্পদে “জনা যেরূপ অতুলনীয়, ইহার প্রত্যেক ভূমিকাও সেইরূপ 
জীবন্তভাবে অভিনীত হইয়াছিল। পরলোকগতা৷ তিনকড়ি দাসী লেডী 
ম্যাকৃবেথের পর জনার ভূমিকা অভিনয় করিয়া অভিনেত্রীগণের মধ্যে 
সর্বশ্রেষ্ঠ বলিয়৷ অভিহিত হইয়াছিলেন। 
অধিকাংশ সংস্কত নাটকে বিদুষক-চরিত্র পেটুকঃ সরল ও রাজার 
প্রণয়-্ত্রীকূপে চিত্রিত হইয়াছে, কিন্ত গিরিশচন্দ্র এই চরিত্রে শ্েষছলে 
ভক্তিভাব মিশাইয়া অতীব উজ্জ্বল এবং পরম উপভোগ্য করিয়া 
তুলিয়াছেন। এ চরিত্র কি দেশী কি বিলাতী কোন নাটকেই এ পর্যন্ত দেখা 
যায় নাই। পণ্ডিতপ্রবর শ্রীযুক্ত হীরেন্্র নাথ দত্ত বেদাস্তরত্ব মহাশয়. 
১৩৩১ সালে, ষ্টার থিয়েটারে আহুত গিরিশচন্্রস্থতি-সভার সভাপতি 
হইয়া, গিরিশচন্ত্রের বিদুষক-চরিত্র সষ্টির অসামান্য নৈপুণ্য বিষয়ে-_এই 
ভাবেই মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন। মর্খম্প্শী এবং নাটকীয় বিচিত্র 
রসে গ্রীত-রচনায় গিরিশচন্দ্র চিরদিনই সিন্ধহস্ত ছিলেন। “আবু হোঁসেনের, 
স্তায় 'জনা”র গীতগুলিও সাধারণে বহু প্রচারিত হইয়া! পড়ে। “নাহিত্য- 
সম্পাদক স্বর্গীয় স্বরেশচন্দ্র সাজপতি মহাশয়ের পরম প্রিয় নীলধ্বজ-রাজ্যে 
শ্রীকফ্ের আগমনে বালকগণের কৃষ-লীলার গীতথানি 'জনা+ হইতে উদ্ধৃত 
করিলাম £- 
“ঘরে কি নাইকো নবনী-_ 

কেন অমন ক'রে পরের ঘরে চুরি করিস্‌ নীলমণি ? 

ওরে, ক্ষিদে যদি পায়, মা বলে ডেকোরে আমায়, 

সইবে কেন পরে, কত কথা বলে যায় ! 

ওরে, পথে জু আছে বসে, যেও ন! যাছুমণি। 


৩৯৮ গিরিশচন্দ্র 


থেতে ব'সে ছড়িয়ে ফেলে দাও, 
মুখে তুলে খাইয়ে দিলে কইরে যাদু খাও ? 
মন্দ বলে-__তবু কেন পরের বাড়ী যাও? 
ওবে, ঘরে কি তোব মন ওঠে না, মিষ্টি কি পবেব ননী ?” 


আবাল-বুদ্ব-বনিতাঁব চিরপ্রিয় এই নাটক সম্বন্ধে বিস্তৃত আলোচনার 
ভার সমালোচকগণের হন্তে অর্পণ কবিয়া আমর! আর একটী প্রয়োজনীয় 
কথার উল্লেখে 'জনা,-গ্রসঙ্গ শেষ করিব। 

অর্দেন্দুবাবু বিদূষকের ভূমিকাভিনয়ে যথেষ্ট সুখ্যাতি লাভ করিয়া- 
ছিলেন; কিন্তু কয়েক রাত্রি অভিনয় করিয়া তিনি মিনার্ভা থিয়েটার 
পরিত্যাগ করতঃ এমাবেল্ড থিয়েটাব ভাঁড়া লইয়! স্বয়ং স্বত্বাধিকারী হইয়া 
থিয়েটার পবিচালনে প্রবৃত্ত হন।* গিবিশচন্দ্রকে বাধা হইয়া স্বয়ং 





*₹ পাঠকগণ পঞ্চত্রংশ পারচ্ছেদে জ্ঞাত আছেন -_-গোপাললাল বাবুর সখ মিটিয়। 
গেলে তিনি ঠাহার এমারেন্ড থিয়েটার, পঞ্িত জ্$রিভূষণ ত্র চণা, শ্রীযুক্ত পূর্ণচন্্র ঘোষ, 
মতিলাল সুর এবং ব্রঙ্গনাথ মিত্র এই চারিজনকে লিজ (ভাড়া) দেন। ইহীরা 
বৎমরাধধি থিয়েটার চালাইবার পর গোপালবাবু পুনরায় থিয়েটার নিজহস্তে লইয়া 
সথপ্রসিদ্ধ নাট্যকার শ্বগাঁ মনোষেশহন বনু মহাশয়কে ডাইরেক্টার ও দ্বগা__ 
কেদারনাথ চৌধুরী মহ্থাশক্কে মানেজার ক'রয়! থিয়েটার চালাতে থাকেন। কয়েক 
বৎসর ন।নাভাবে থিয়েটার পরিচা!ল 5 হইবার পর ১৯২ ধুষ্ঠাবের জুন মাস হউতে ন্বগাঁর 
মহ্েন্দ্রলাল বন্ধ এবং স্থপ্রসদ্ধ গীত-নাটাকার ন্বগ্গর় অতুল্কুক মিত্র মহাশয় এসারেন্ডের 
লিঙ্গ গ্রহণ করেন। ইহাদের সময়ে অতুলবাবু কর্তৃক নাটকাকারে পরিবর্্িত বিষবৃক্ষ, 
কপালকুগুলা, মাধবীকন্কণ প্রভৃতি স্থখাতির নহিত অভিনীত হইয়াছিল । ১৮৯৪ খাটাকের 
মার্চ.ম'সে ইহাদের লিজ ফুরাঈলে অর্ধেন্ুবাবু আ|সয়া 'লেদী' হইলেন? 1কস্ত তিনি 
নাট্যবিশারদ হইলেও বাবসারী ছিলেন না, ন্ং থিয়েটার চালাইতে গির খণের দায়ে 
অবশৈষে তাছার 'বসতবাটা'খানি পধাস্ত বিক্রয় হই! যায়। 


অফন্রিংশ পরিচ্ছেদ ৩৯৯ 


বিদূষকের ভূগিকা লইয়া রঙ্গমঞ্চে অবভীর্ঘণ হইতে হুয়। অনেক্ষে সন্দেহ 
করিয়াছিলেন--অর্ধেন্দৃবাবু বিদূষকের অভিনয়ে যেরূপ হাস্যরসের স্যষ্ট 
করিতেন, গিরিশচন্ত্র বোধ হয় সেরূপ পারিবেন ন! ) কিন্তু গিক্সিশচন্্র 
অর্ধেন্দুবাবুর অনুসরণ ন| করিয়! বিদুষকের ছবি বদলাইয়৷ দিলেন। 








'বঙ্গীর নাটশ।লার নটচ্ড়ামণি স্বর্গীয় অর্ধেনুশেখর মুস্তফী” নামক পৃত্তিকার গিরিশচন্দ্র 
অর্ধেন্দুবাবু সম্বন্ধে লিথিয়াছেন £-_ 

শ্যখন শ্রীতুক্ত নাগেন্্রতৃষণ মুখোপাধ্যায় যিনার্ভ থিয়েটার প্রতিঠিত করেন, 
তখন আমি ও অর্দোন্দু পুনর্ধার একত্রিত হই। মধ্যে তিনি নানা স্থান মণ করেন। 
মিনার্ভায় প্রথম অভিনক ম্যাকবেধ-_ ইহাতে অর্ধেন্তু 2০০৩7, ৬/1007, 0101791 ও 
[০০০ এই চারিটী অংশ গ্রহণ কয়েন । এই অতনয়ে গাহার পূর্ব-প্রতি&ঠ। পুনরুদীপ্ত 
হইল। পরে আবুছৌসেনে 'আবুছোদেন', যুকুল-ঘুগ্তরায় 'বরণটাদ', জনায় 'বিদুষক' 
প্রভৃতি অভিনয-দক্ষতায় নবশ্রেণীর দর্শক চমৎকৃত ও প্রত্যেক নাট।ামোমীর মুখে অর্দেনদূর 
ভূম্বনী ব্যাথা। | জনার 'বিদুষক' ছুই চারি রঙ্জনী অভিনয়ের পর তিনি য়ং দ্বত্বাধিকারী 
হুইয়! থিয়েটার চাল।ইবেন--এই অভি প্রায়ে এষারেন্ড থিয়েটার ভাড়া লইলেন। কতক. 
গুলি অভিনেতা তাহার থিয়েটারে যোগদান করিলেন। এইট! অর্দেন্দুর জীবনে একটা 
ভ্রম। তিনি অভি'নত। ছিলেন, বিষরী ছিলেন না । তিনি শিক্ষ1 দিতে জানিতেন, কিন্ত 
কিবপে নকল দিক সামঞ্জন্ রাখিয়! থিয়েটার চালাইতে হয়, তাহ। জানিতেন না। যথ! 
নুতন নাটকের অতিনয়ের তারিখ বিজ্ঞাপিত হইয়াছে, সকলকে বিশেষ শিক্ষ। দিবার 
প্রয়োজন, বড় বড় অংশ, যাহাতে সর্বাঙগীন পুষ্ট হয়, তাহার বিশেষ চেষ্ট। আবন্তক, কিন্ত 
র্দেনদু কোন এক ক্ষু্র অংশ ভাল হয় নাই, তাহা কিরূপে সম্পূর্ণ হইবে, তাহারই জন্ত 
বিব্রত। যাহা। বড় অংশ গ্রহণ করিয়াছে, তাহার! শিক্ষা গ্রহণের জন্য উতনৃক হইলে 
বিরক্ত, ছুত্র অভিনেত| ফোনগরপে শিখিতেছে না, অর্ধেন্দু তাহাকে ফোনরপে 
শিখাইবেরই। বন্দি কোনও অসিনর-শিক্ষালয় থাকি, বথায় ছাত্রের! শিক্ষিত হইয়। 
রঙ্গালয়ে প্রবেশ করিবে, কাহার এরপ -শিক্ষান্বান প্রশংসার হইত, বিত্ত রঙ্গালয়,_-কার্ধ্য 
চালাইতে হইবে, অভিনর-রাত্ি বিজ্ঞাপিত -হইববাছে, এখন জার সমস্ন' অপব্র করিধার 


৪০৯ গিরিশচ্র 


তিনি অর্দেন্দুবাবুর তরল হান্তের পরিবর্তে গা্ভীধ্য আনিয়া 990 00080 
জিনিসটা কি-_দর্শকগণকে অভিনয় করিয়। বুঝাইয়। দেন। গিরিশচন্দ্রের 
অভিনয়ে বাহক হান্তরসের আবরণে বিদুষকের অন্তনিষ্িত ভক্তি-রস- 
ধারার আস্বাদনে দর্শকমণ্ডলী যেরূপ পুলকিত-_সেইরূপ বিস্মিত হইয়া 
উঠিলেন। 'জনা+র অভিনয় আরও সতেজে চলিতে লাগিল । 


ন্বভ্্কিন্লেল্স বৎখল্িত্ন 

১*ই পৌষ (১৩৯ সাল) মিনার্ত। থিয়েটাবে গিরিশচন্দ্রের “বড়দিনের 
বখ্সিস” পঞ্চরংখাঁনি সর্বপ্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাঁভিনয় রজনীর 
অভিনেত। ও অভিনেক্ীগণ £__ 

পরি মন্ত্রী-_পণ্ডিত শ্রীহরিভূষণ ভট্টাচার্য, নজর-_রাণুবাবু, পুঁটে মিত্র-_ 
পদবাবু; গয়ারাম-_-অঘোরনাথ পাঠক, মি: ডস- শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ ঘোষ 
(দানিবাবু), তুলু বাবা- হেমন্তকুমারী, প্রেমদাস-_দাক্সবাবু; শ্তামধন ঘোঁষ _ 
খগেন্দ্রনাথ সরকার, থিয়েটারের ম্যানেজার--অর্দেন্দুশেখর মুস্তফী, পরি- 
রাণী--আসমানি, গুলজার-_-তিনকড়ি দাঁসী, মিসেস হাজরা! ও ভেটুকিমাঁছ 
ওয়ালী-_টল হরি, মিসি বাবা-_শ্রীমতী হিঙ্গণবাঁলা ( হেনা ), প্রেমদাসী-_ 
গুলফন হরি, ফুলকপি ও ফুলওয়ালী--ভূষণকুমারী, লেবুওয়ালী-_ 
শরৎকুমারী ইত্যাদি। 

বড়দিন উপলক্ষে “বেকুবের একৃজাই” ( চ8189199 ০1 70018) নাম 





নয, ইহা! তিনি শিখাইবার জেদে অল্প বুঝিতেন। তাহার কার্যে কেহ বাধা দিলে 
অতিশর বিরক্ত হইতেন, নিখুত না! হইলে সে অভিনেতার নিষ্তার নাই। এরূপ কার্যে 
ফলাফল তিনি দ্বর়ং থিয়েটার করিয়া, অল্পদিনের মধ্োই বুবিয়াছিজেন। এই প্রকার 
নান! বিবয়ে কার্যের উপযোগিঙ| তিনি বৃঝিতেন না, এ নিমিত্ত খণগ্রস্ত হই! তিনি 
দিয়েটার রাখিতে পারিলেন না|” (২৯ ও ৩০ পৃষ্ঠা ) 





খর কল বা 
'পকরংখানি। মু খা নি এবং পুঁজিন বাইট পাস কর়াইয়। 
ধড়ধিনের মান রাখেন । এখানিও-প্তধমীতে বিপর্জাস” পরার অভ্র । 


পয আুঞল 
বরা অগ্রহারণ (১৩০১ সাল) গিখিশচহ্রোর শ্রপ্পের ফুজ” গীতিনাট্য 
মিনার্ভ ধিরেটারে শ্রথম অভিনীত হয়| প্রথমাতিনয় রজনীর অভিনেতৃগণ £-- 
বীর-_শরতচন্্র বন্যোপাধ্যায় (ক্সাঁপুবাবু ), অধীয়--শ্রীবুক সরেজানাঁখ 
ঘোষ ( দাঁনিবাধু), মনহ্রা--তিনকড়ি দামী। মনখরা- শ্রীমতী হিজনবালা 
₹ হেন), যৃদী--প্রবতী কুক্মকুমাযী, বেলা- ভূষণকুষাবী ইতি । 
এখানি একখানি রূপক গীতিনাট্য ৷ প্রেম ইহার বিষ, ফি বে 
প্রেম লে মধুকদন লিখিয়াছেন £”- 
প্যে যাহারে ভাববাসে, সে বাইবেং্তার পাশে, 
মদন-যাজার বিধি লঙ্ঘিব কেমনে? 
, বদি অধহেলা করি, রুষিবে শর'জনি, 
সিরা আসরের যারা 


খই গীিনাট্যের, বিদয়ীূত প্েম--ম শ্ধ,নহে।, ০ 
চা, নব নাসুগাগ্‌। সি রং 





৪০২ ' লিরিশচন্্র 
গিরিশচন্দ্র বহপূরব্ব “কমলে কামিনী” নাটিকে ( ২য় অঙ্ক, ১ম গর্ভাফের 
ক্রোড়াঙ্ক ) এই প্রেমের আভাস দিয়াছেন। রানির চণ্ডী, সহচদ্বী 
পন্মাকে বলিতেছেন-_ 
“না ঝরিলে নয়নের জল, 
না ফোটে কমল, 
প্রেমে কমলিনী পাঁনে-_ 
না চায় চৈতন্য রবি 1” 
কেবল “কমলে কাঁমিনী”তে নয়, অন্ঠান্ত নাটকেও এ আভাস আমবাঁ 
পাইয়া থাকি । এ অশ্র-_আনন্দাশ্র। 
এই গীতিনাট্যের নায়ক ছুইটী,_-ধীর এবং অধীর, নায়িকাও ছুইটী-_ 
যূথী এবং বেলা । ইহাদের সাংসারিক পরিচয় নাই, জিজ্ঞাসা করিলে বলে 
_“আমরা স্বপ্নের মানুষ, স্বপ্পে কথা কই, স্বপ্নে দেখা দিই, ঘুম ভাঙ্গ লেই 
চলে যাই ।” ধীর উদাসী-_নাবী-বিরাগী, অধীর-_অন্ুরাগী। কিন্ত 
উভদ্বেব প্রকৃতিগত এই বিষম বৈষম্য থাকিলেও পরম্পরের স্বার্থশূন্ত 
সৌখ্যে পরম্পরে আঁবদ্ধ। নায়িকাফুগলেরও অনুরূপ ভাব। স্থার্থশূন্ত 
সৌহার্দের বন্ধনে উভয়ে বাঁধা। নামে আকৃষ্ট হইয়৷ ইহার! সকলেই নগর- 
প্রীস্তেব উপবনে স্বপ্নের ফুল দেখিবার জন্য সমাগত । উপবন রমণীয়, 
রাত্রি বম্যতর1, মদন আব স্থির থাকিতে পাঁরিলেন না-_শব ' গ্রয়োগ 
করিলেন। কিন্তু শরে আহত হুইল--কেবল বেলা ুখী ও অধীর। 
ধীর নারী-বিরাগীঃ সে সর্বদাই বলে £__ 


“সাবধান সাবধান, তোরে সদ! বলি প্রাণ, 
সাবধান কুটালনয়ন]। 
যদি দেবী মৃত্তি হয়, চেও মাত্র রাজা পার, 


সাহনে বদন তুলে বদন দেখ না।” 


'অফ্টশ্রিংশ পরিচ্ছেদ ৪৯৩ 
অধীর এবং বেলা! পরস্পরের প্রতি পরম্পরে প্রথম আকুষ্ট হইল। 
যুখী ধীরের অনুরাগিদী, কিন্ত এ অনগুরাগ-_নিক্ষপ্ গ্রতিদানবিহীন। 
অনঙ্গের সৃষ্ট এই অগ্ুরাগ বৈজ্ঞানিক ভাষায় যাহীকে যৌন আকর্ষণ এবং 
প্রাকৃতিক নির্বাচন বলে,__-অবস্থান্ুসাঁরে রিষের বিষে জর্জরিত হয়। 
এই জন্ত এই সন্তোগমূলক অন্ুরাগের প্রথম আকর্ষণেই মনখরার 
আবির্ভাব। মনখর! বলিতেছে-_ 
“পিরীত ক'রে আমার মনখরা, 
তাইতে নাম নিয়েছি মনখরা 
ও গীঃ ৪ 
জেলে দেব রিষের বাতি, দেখি যদি প্রেম করা । 
কিন্তু মহামায়া স্বয়ং যে স্বপ্নের ফুল পরিস্ফুট করিবার জন্ত অবতীর্ণ 
হুইয়াছেন-_-মদনের সকল প্রয়াসই সেখানে নিক্ষল। মানবের সংসার- 
প্রবৃত্তি মোহ হইতে উদ্ভুত । এই মোহ মানবকে জন্ম-জন্মান্তরেও পবিত্যাগ 
করে না, পূর্ব জন্মের সংস্কাররূপে তাহা সঙ্গে থাকে। ধীর সংসার- 
বাসনায় উদ্দামীন হইলেও তাহীর মোহ সম্পূর্ণ কাটে নাই। সে মোহ 
্বার্থশূন্ত সৌহার্দ্যেব রূপ ধারণ করিলেও তাহ! মোহ। মহামায়া তাঁহাকে 
বলিতেছেন__ 
“দিন গিয়েছে রাত হয়েছে, ফের হয়েছে ভোর। 
ঠাউরে দেখ ছিটেফোটা যায়নি নেশার ঘোর ॥” 
অর্থাৎ জন্মের পর আবার জন্ম হইয়াছে, তোমার সংসার-বাসনা প্রবল 
না হইলেও 'ঠাউরে দেখ ছিটেফ্টোটা যায়নি নেশার ঘোর | স্বর্ণশৃঙ্খল 
ইইলে কি হয়, এই নিঃস্বার্থ সৌহারদ্যও বন্ধন। মহামায়ার কৃপায় কিন্ত 
এই নিসার সৌহীরদা-_স্ার্থশন্ত প্রেমে পরিণত হইয়! মোহের বন্ধন মোচন 
খরিরা দি্। 


১১. গিরিশ 


অননগের সুই 'অস্জরাগনবিয়াগের সংঘর্ষে এই অপুর্ঝ, দীকিনাটোর 
'আখ্যানি ভাগ গটজহইগাছে। যৌন আাকর্বণে উহা নীরা বখন, গার 
এবং সখীঘয়ের পরম্পরের জন্ত স্বার্থত্যাগে ইহাব অন্থুর, শান" বাহাকে 
অমৃত বলিয়া আখ্যান দিয়াছে _এই গীতিনাট্যের পরিণাম ফল তাহাই” 
এক কথায় জীবঝুক্তি। এই অস্বৃতত্বলাভের জন্ট শাস্ত্রের উপদেশ--গ, 
তগ, ধ্যান-ধারণা গ্রভৃতি। কবির ইঙ্গিত স্বার্থশূন্ত ভালবাসা--তুমি ভাল, 
তাই তোমায় ভালবাসি। মানব স্বভাঁবতঃ উদাসী, মহামায়ার কৌশলে 
নারী তাহাকে মোহমুগ্ধ করিয়া! সংসারে আবদ্ধ কবে। সে বন্ধন মুক্তির 
উপায়-_ মহামায়া ত্বয়ংই বলিয়া দিতেছেন,_-“দেখ্লি, কেমন মোহের কাটা, 
প্রেমের কাটা দিয়ে উঠে গেল, 'এখন দুটোই ফেলে দে-_- 

ছুটে! কাটা ফেলে দে দেখ, সেই সেই সেই বে। 
দেখ. খুঁজে পেতে আর কি পাবি, আমি 'ত নেই বে॥” 

ইহাই জীবন্মুক্তিব ইঙ্গিত। পাঠক এই দিক দিয়! এই গীতিনাট্য 

আলোচন! করিলে, ইহার রস সম্যক উপলব্ধি করিতে পারিবেন। 
সম আ্যক্ঞাব্ পাও 

১১ই পৌষ (১৩১ সাল) গিরিশচন্দ্রের “সভ্যতার পাণ্ডা” পঞ্চরং 
মিনার্ত৷ থিয়েটাবে প্রথমে অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতা! 
" €"অভিনেত্রীগণ £-- 

পুরাতন বর্ষ__শ্রীবুক্ গোবদ্ধনচন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, নূতন বর্ষ--রাপুবাবুঃ 
নীলকান্ত ও সেল মাগ্টার__অঘোরনাথ পাঠক, পুরোহিত_-রবিকচন্তর 
ভট্টাচাধ্য, চপ --দানিবাবু, শনীভূষণ--পণ্ডিত শ্রীহরিকূষণ ভট্টাচাধ্য, 
দ্বীছ- পঞ্যকুমার চক্ররর্তী, সর্বেশ্বর--ঠাকুরদাস চট্টোপাধ্যার (ফ্ঁস্বাবু), 
নসে ও বিডার-স্টাথাচরণ কু, বছিনাথ-্প্রিমুক নিখিলে্রবষ দে 
রুম্মাস...্ভীঙুক নীলদপি খোব। খুনে বরসভানাঠ যুব! বর নঃপির্চার 





যারা (8. চর 


জানে বোধ, হিলিলে-.উনূত বামাচরণ লেন। সভাড়ীস্-ত্িনকছি 
ফাঁসী, বতারিহী-ও বৃদা--গতারিবী, বিশেগরী---গুয়কঘ হরি, কুমুদিনী 
-ছরিনুন্বরী (ব্ল্যাকী ) ইত্যার্দি- 
সভ্যতার পা1--ইহাও একখানি রূপক- পঞ্চরং। ' পূর্ব পূর্ব 
পধরংএব স্তাঁয় ইহাও সামাজিক প্লেষাত্বক নব্য সভ্যতার চিত্র। এই 
সকল বিজ্রপরসাত্মক বচনার মধ্য দিয়। আমরা--জাতীয় ধর্ম, আচার ও 
অনুষ্ঠান এবং প্রাচীন সভ্যতাব উপর গিবিশচন্দ্রেব প্রগাঢ় তি 
ও অন্থবাগের পবিচয় পাই। দৃষ্টান্তস্বরূপ “সভ্যতাব' গীতখানি উদ্ধৃত 
করিলাম £-- 
“আমাব মুখে হাসি, চোঁথে ফাসী ভূবনমোহিনী | 
মাদকতা, প্রবঞ্চনা চিরসঙ্গিনী ॥ 
অনাচাব-_-আমাব কগঠহাব, 
দাসী হযে চবণ সেবা! কবে ব্যভিচা, 
আমি মধুমাথ! কথা কয়ে, 'আগে ভোলাই কামিনী ॥ 
:_. হ্বদাঁসনে সযতনে পৃজি অহস্কাব, 
সে যে প্রাণপতি আমার, 
আমাৰ হৃদয়ধতন, যতনেব ধন, জৌব করি তো! তার, 
, আমি তার গববে গববিণী, আদরে আদরিণী ॥ 
বর্তমান ষমাঁজে হিন্দুব সেই প্রাচীন সভাতা, নিষ্ঠা, আচার প্রসৃতি ' 
কিরুপ পশ্ুভাবে একাধিপত্য ক ঃ এ গ্রহনে তাহা পণ্ুশাণার 
দৃষ্থে উজ্জলভাবে চিত্রিত | সমাঁজেব উপব প্রভাব বিস্তার করুক 
খান্ছাই ভরুক, থাতীয় যুগ কবি প্রচিভার উদ্দীপনার সময়ের এইরাপ চিত্র 
স্্িত/কি থাকেন), লীশ্বাতা সভা জাতির ইতিহাষেন্ড কাহার 





8৫ 


84) গিরধাচ 
নিদর্শন পাও! যবাগ। রলমঞ্চের খই চিত. ঈমানের তুলি গতি, 
মতি,, প্ররুদ্ধি। গ্রবৃত্তি-_প্রভৃতির নির্ণয়ে স্ডবিগৎ, উ্ধিযাদিষগাখকে 
স্বহায়ত! করিবে এই আন্তই জাতীয় রছমঞ্চ যুগধর্মের মগ বনধিরা। 
কথিত হয়। ূ 

গিরিশচন্দ্র ইহাতে যেরূপ অতি সুন্দর ষড়খতুর ছয়থানি গান রচনা 
করিয়াছিলেন, সেইব্ধপ বহু অর্থ-ব্যয়ে বিলাঁতি প্যানোরমা+ প্রবর্তন 
করাইয়া ষড়খতুর আশ্চর্য্য দৃশ্ব প্রদর্শনে রঙ্গমঞ্চের চিত্রশিল্লের উন্নতিসাধন 
কবেন। 

ক্ল্রক্রেভ্ি সবাই 

€ই জ্যৈষ্ঠ (১৩২ সাল) মিনার্তা থিয়েটাবে গিবিশচন্দ্রের তত ও 
জ্ঞানমূলক “করমেতি বাঁই' দৃশ্যকাব্যথানি প্রথম অভিনীত হয়। প্রথম 
অভিনয় রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £__ 

শ্রীক্ণ-_ শ্রীমতী কুস্থমকুমাখী, বাজা- শ্রীযুক্ত খগেন্্রনাথ সরকার, 
মনত্রী- শ্রীযুক্ত বামাচরণ সেন,পবগুবাম- শ্রীযুক্ত গোবর্ধনচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, 
আলোক--শ্রীবুক্ত হ্থরেন্দ্রনাথ ঘোষ ( দানিবাবু)১ আগমবাশীশ-__পণ্ডিত 
শ্রীহরিভূষণ ভট্টাচাধ্য। টুকরো_ অক্ষয়কুমার চক্রবত্তী; গেমো-_ শ্রীযুক্ত 
নীলমণি ঘোষ, বৈষ্ভ--বিজয়কুষ্ণ বনু, বাধিকা-_ভূষণকুমারী, কৃত্তিকা”- 
জগত্তারিণী, করমেতি-__তিনকড়ি দাঁসী, অস্থিকাঁ_-গুলফম হরি ইত্যাদি। 

“ভত্তমাল গ্রন্থের উপাখ্যান লইয়া এই নাটকথানি রচিত। 
গিষিশচন্ত্র তীহার অসামান্ত প্রতিভাবলে এই ভক্তিবসাত্বক উপাখ্যান 
অবলম্বন করিয়া! একদিকে সবস ভক্তিতৃত্ব এবং অন্যদিকে কঠোর বৈদাস্তিক 
তত্বের মংঘর্ষে একখানি অতীব বা্াহী ও মর্শম্পর্শী নাটকের হ্যা 
করিযাঁছেন। ইহারি সকল চরিতই পরিস্ফুট, কিন্ত মিন সেটা 


সুরঘাত্ডিত হয় নাই। 





৪১১ 





টিপ ফির পা ক'সেই” থপ পরে 
বৃতৰ পুত্তক। 'এরজঞ্তীত দিশবর্ভীগ কিঝি। সাঁধার। ধবল, সপীওবের,, 
অঙ্ঞাড়সাঁস, দক্ষষজ। প্াশীর যুদ্ধ, খায়, দেখনীদবধ প্রভৃতি বহু 
পূর্বাভিনীত নাটকের পুনরূভিন' ধোৰণা করিয়া নিমটাদ, কীচক, দক্ষ, 
ক্লাইভ, যোগেশ রাম ও ইন্্রজিৎ গ্রভৃতিব ভূমিকা গ্রহণে বীজমঞ্চে অবতীর্ণ 
হইয়াছিলেন। 

“পাগুবের অজ্ঞাতবান” মিনার্ভায় পুনরভিনয়কালীন স্বর্গীয় অঘো.বনাথ 
পাঠক প্রথমে কীচকেব ভূমিকা! অভিনয় কবেন। এই ভূমিকায় অল্লীতার 
আঘ্রাণ পাইয়! পুলিস-কমিশনাব নাঁটকেব অভিনয় বন্ধ কবিয়া দিয়াছিলেন। 
অনেক যুক্তি দেখাইয়৷ এবং ছুই এক স্থল কিঞ্চিং পবিবর্তন কিয়া 
গিবিশচন্দ্র ইহাঁব উদ্ধার সাধন করেন, এবং স্বয়ং কীচকের ভূমিকা অভিনয় 
কবিয়৷ নাট্যামোদীগণকে পূর্ণানন্দ প্রদান কবেন। শ্রীযুক্ত সুরেন্্রনাথ 
ঘোষ (দানিবাবু) বৃহন্নলাৰ ভূমিকাঁভিনয়ে অসামান্ত নাট্যপ্রতিভার 
পৰিচয় দিয়াছিলেন তিনকড়ি দাসী, পণ্ডিত হবিভূষণ ভট্টাচার্যা এবং 
শ্যুক্ত গোব্ধনচন্দ্র বন্্যোপাধ্যায়েব ত্রৌপদী, ভীম এবং উত্তরেব চবিত্রা- 
ভিনয়ও বিশেষ উল্লেখযোগ্য । 

মিনার্ভায় অভিনীত প্রফুল্ল নাটক সম্বন্ধে ৩৫২ পষ্ঠায় সবিস্তৃত লিখিত 
হইয়াছে । এ নিমিত্ত এ স্থলে আব কিছু লেখা হইল না। 

“দ্মেঘনাদিবধের অভিনয় যেরূপ সর্ধাজনুন্দর হইয়াছিল,_-তৎসঙ্গে 
না্যিশিষ্দী ধর্শদাসবাক্-প্রদর্শিত হ্বর্গ ও নরকের অপূর্বব দুহ্ে এবং গোবর্ধন 
বাবুর হৃত্য-দংঘোনার নুতনত্ে্খাটকখানি আরও চমকপ্রদ হইয়া 
উদ্িয়াছিল |. পাখযের জডুম এবং মেখনাদবধ অভিনয়ে 
নৃক লাটকের বার মিনার্ডা ডু অর্থাখয় হইছিল; 


ধ্ 






৪১ শিরিন 
স্মিমাঙভাক সহজ টিআজদা? 

প্রায় চান়্ি বংসর মিনার্ভা থিয়েটার পিগৌরবে পাঁঠচাজিত ধরিয়া 
গিরিশচন্দ্র থিয়েটার পরিত্যাগ কঞিতে বাধ্য হন। খ্বস্থাধিকারী নাগে্রুষণ 
বাধু খা মূলধন লইয়াই নৃতন' নট্যুশাল! প্রতিষ্ঠায় প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। 
নাট্যশাল! সম্পূর্ণ করিতে এবং ম্যাকৃবেথ ও মুকুল-যুগ্তরার দৃশ্ঠপট ও 
পৌধাঁক-পরিচ্ছদ প্রস্তুত এবং অন্তান্ত নানাকাবখে তীস্থাকে বিস্তব টাকা 
খপ কবিতে হইয়াছিল। 

অভিনেতা ও অভিনেত্রী নিয়োগ, পদচ্যুতি বা তাহাদেব বেতন বৃদ্ধি 
ইত্যাদি ক্ষমতা গিবিশচন্দ্রেব হস্তে স্তস্ত ছিল। টিকিট বিক্রয় ও টাকাঁকড়ি 
সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য নাগেন্দ্রভৃষণ বাবুব উপব ছিল। গিবিশচন্ত্রের 
সহিত তাহাব কোনওরূপ সম্বন্ধ ছিল না। 

থিয়েটারের আঁয় যথেষ্ট হইতে লাগিল, কিন্তু ব্যয় অপবিমিত,_-খণ 
পরিশোধেব প্রতি লক্ষ্য নাই। এইরূপে কয়েক বৎসর মধ্যে নাগেক্জবাবু 
দুশ্ছেগ্ খণজালে জড়িত হইয়া! পড়িলেন। থিয়েটাবেব বিক্রয়ের হাস নাই, 
--কিন্তু আয়ের সমস্ত অর্থই সুদ গ্রাস কবিতে থাঁকে। অবশেষে বাধ্য 
হইয়া তিনি থিয়েটাবের অর্ধাংশ শ্রীযুক্ত প্রমথনাঁথ দাস নামক জনৈক 
যুবককে বিক্রয় কবেন। 
*.*ীহ্র ধিয়েটাবের সাঁজ-সবঞ্জাম সরবরাহ করিতেন, তাঁহারা তাহাদের 
প্রাপাধুনয়মিতরূপে না পাওয়ায় অতিশয় অগহষ্ট হইয়া উঠিয়াছিলেন ) 
কিন্ত গিরিশচক্জেব মুখ চাহিয়া তখনও তীহাঁরা সববরাহ কবিতেন। ক্রমে 
যখন তীহাদ্দের পাওনা অত্যন্ত অধিক হইয়া পড়িল, তখন তাহার! 
গিরিশচন্দ্র কাছে আসিয়া কাদাঞাঁটি আরম্ভ কবিলেন। একপ অবস্থায় 
তিনি আর স্থির থাঁকিতে পারিলেন না, ভিনি বরং ক্যাসের দারিতব লইয়া 
অধ দেরেজনার বু যহাশয়কে পাওনাদারদের সহিত একটা বাব 








নাসেজভূষপধারুজমন্োনীবাবরীও কউ 
গৈ রা তে লাগিলেন, হাই খিরিশচন্জের মিনার) থিয়েটার 
পরিত্যাখের প্রধান কারখ। তিনি এবং দেবেজ্্রবাঁধু সর্বাগ্রে থিয়েটাব 
পরিত্যাগ করেন $ গবে অস্তান্ত অভিনেতা ও ম্মভিনেত্রীগণের মধ্যে 
অধিকাংশই ইঠাদের অনুসরণ করেন। মিনার্তাক্স সুগঠিত দল এইন্ধপে 
ভাঁগিয়৷ গেল। 

গিরিশচন্দ্র মিনার্ভা ত্যাগ-সংবাদ প্রচার হইবামাত্র, ষ্টার থিয়েটারের 
স্বন্থাধ্কাবিগণ সেই রাত্রেই গিরিশচন্দ্রের বাঁটাতে আসিয়া, যথেষ্ট শ্রদ্ধা $ 
ভক্তি প্রদর্শনে তাহাকে নিজ সম্প্রদায়ের নাট্যাচাধ্যরূপে বরণ করিয়। লইয়া 
যান। বীণা থিয়েটার পরিচালনে খণগ্রন্ত হইয়৷ কবিবর শ্বর্গীয় রাঁজকুষণ বার 
ট্রার থিয়েটারে আঁিক্! নাট্যকার হুইয়াছিলেন। ইতিপূর্বে তাহার মৃত্যু 
হওয়ায় কাহাদের নাটক লিখিবাব লোক ছিল না,-_গিবিশচন্দ্রকে লইয়া 
তাহাদের লে অভাব দুব হইল। 


উন্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
উান্রে পুলা গিল্িস্পচ্তিতক 


এবার ছার থিয়েটারে আসিয়! গিরিশচন্ত্র ম্যানেজারের পদগ্রহণে 
সন্ত হওয়ায় “লাট্যাচাধ্ ( 1059880 069৮0) হলিয়। তাহা 
নাফ, লোনিত হু । । এই উপাধি ইনাট্যশালায় এই প্রম প্রচলিত হয় 
এডি জারা তু রাটকরালাখাযাদ 


৪১৪ গিরিশচঞ্জ 


স্াাঞলাপাজ্ডা় 

+১ই আশ্বিন ( ১৩০৩ সাল) 'কালাপাহাড়, ষ্টাৰ থিয়েটারে প্রথম, 
অভিনীত হয়। প্রথমাঁভিনয় রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-- 

কালাপাহাড়-_ অমৃতলাল মিত্র, চিস্তীমণি-_ গিরিশচন্দ্র ঘোষ, মুকুন্দদেব, 
শ্রীযুক্ত অক্ষয়কালী কোঙাব, মন্ত্রী_বিষুচবণ দে» বীরেশ্বর- শ্রীযুক্ত 
উপেন্্রনাথ মিত্র, সলিমান-__স্থরেন্্নাথ মিত্র ( ফটাই ), লাটু-শ্রীযুক্ত 
স্থবেন্্রনাথ ঘোঁধ ( দানিবাবু )১ ছুলাল--শ্রীযুক্ত অসিভূষণ বন্থু * জেলদারগা 
__নটবর চৌধুরী, ফেরেব খী-জীবনক্ণ সেন, চঞ্চলা__ প্রমদাহুন্দরী, 
ইমাঁন--আীমতী নগেন্দ্রবাল!। দোলেনা- শ্রীমতী নবীন্ন্দরী, মুবলার 
ছায়ামুর্তি_গঙ্গ। বাঁইজী ইত্যার্দি। 

বাঙ্গালাব নবাব সলিমানেব সেনাপতিত্ব গ্রহণ কবিয়৷ কালাপাহাড় 
উড়িয্বাধিপতি মুকুন্দদেবকে সিংহাসনচ্যুত এবং জগন্নাথদেবের মৃষ্তি দগ্ধ 
করেন,-_এই এতিহাসিক সত্যটুকু কালাপাহাঁড় নাটকে থাঁকিলেও ইহাকে 
ঠিক খ্রতিহাসিক নাটক বলা যাঁয় না। শ্রীশ্রীবামরুষ। পরমহংসদদেবেব 
অপূর্ধব গুরুভাব প্রকাশই ইহার প্রধান উপাদান। পাঠকগণ জ্ঞাত 
আছেন--প্রথমে গিবিশচন্ত্র নাস্তিক ছিলেন, মানুষকে গুরু বলিয়া তিনি 
বিশ্বাস কবিতে চাহিতেন না; অবশেষে পরমহংসদেবের কৃপায় তিনি 
নবজীবন লাঁভ কবেন। এই নাটকে বর্ণিত চচিস্তামণি চবিজ্র-_ 
পরমহংসদেবের চরিত্রের ছায়া মাত্র অবলম্বন করিয়া গঠিত। গিরিশচন্দ্রে 
প্রথম ধর্শ-জীবনে যে হদয়-বন্দ সুচিত হইয়াছিল, কালাপাহাড়-চরিত্রে 
তাহার আভাস পাওয়া যায়)--এই চরিত্র শ্রীশ্রীপরমহংসদেবের 





* বাট্যাচার্যয জীযুক্ত অমৃতলাল বনু মহাশয়ের কনিষ্ঠ পুত্র শীমীন অসিডৃধণ বনু 
সলালের' ভৃষিকা লই! এই প্রথম ধঙ্গখঞ্চে বাধির ইন । 


উনডত্বারিশ পরিচ্ছেদ 1৪১৫ 
প্রভাবে অনুকল্লিত। প্রেম, তৃক্তি ও ভালবাসা! যে ঈশ্বর-লাতের প্রকট 
পদ্থা-_এই নাটকে গিরিশচন্দ্র তাহা উজ্জলবর্ণে চিত্রিত করিয়াছেন ।, 
ইহার অধিকাংশ চরিত্রেরই পরিণাম-_গ্রেম, ভক্তি ও ভালবাসার বলে 
সংসার-যন্ত্রণা হইতে মুক্তিলাভ। 

প্রেম এবং ঈীর্ধার অপূর্ব্ব সংঘর্ষে এই নাটকের গল্প এবং চকিল্র 
অতিনিপুণভাবে পরিশ্ুট হইয়াছে । চঞ্চলা চরিত্রের ইহাই ভিত্তি এবং 
এই ছুইটী পরম্পর বিরোধীভাব- সে তাহার মাঁতা-পিতা হইতে 
উত্তরাধিকার-স্ত্রে পাঁইয়াছিল। চঞ্চলা-_প্রেমে কুম্থমকোমলা। আবার 
ঈর্যাজনিত প্রতিহিংসায় ভীষণা। বঙ্গনাট্যসাহিত্যে ইহা! কবির একটা 
অপূর্বব দাঁন। চঞ্চল! এবং ইমানের চরিত্র ছুইটি পাশাপাশি অস্কিত 
করিয়৷ গিরিশচন্দ্র স্বার্থমূলক এবং নিংন্বার্থ প্রেমেব সজীব ছবি অঙ্কিত 
করিয়াছেন। বীরেশ্বর গিরিশচন্ত্রের আর একটী অপূর্বব স্থষ্টি। ভগবানের 
নিকট কেহ শক্তি, কেহুবা৷ মুক্তি চায় এবং সেই শক্তিলাভ করিয়! স্বভাবতই 
তাহার অপব্যবহার করে। বীরেশ্বর তাহাই করিয়াছিল, পরিণামে 
পত্বীর অলৌকিক ভালবাসাই তাহার উদ্ধারের কারণ হয়। 

এ নাটকে আর একটী অতি স্থুন্দর ভাব অঙ্কিত হইয়াছে,--তাহা 
জাতিনির্ব্িশেষে ধর্মীরাগ এবং ঈশ্বর প্রেম । পরমহংসদেব-কথিত 
সর্ববধর্ম সমন্বয়ের ইহা আভাস মাত্র । সকল চরিত্রের বিশদ সম়ালোচন। 
করিবার স্থানীভাব, নহিলে এই নাটকের প্রত্যেক চরিত্রের বিশ্লেষণ 
বাছ্ছনীয়। আমর! ছুই একটা প্রধান চরিত্রের ইঙ্গিতমাত্র করিয়া 
ক্ষাস্ত হইলাম। 

ভাবে, ভাষায়, নাটকীয় ঘাত-প্রতিঘাঁতে, চরিত্রের অভিব্যক্তিতে এবং 
সূর্ধ্বোপরি ধর্প্রাণতায় এ নাটক কেবল বঙ্গসাহিত্যে কেন--পাশ্চাত্য 
নাট্যসাহিত্যেও তুলনাহীন।.. গভীর হ্বার-রহস্যের এরপ মর্রস্পর্শী বিশেষণ, 


৪১৬ গিরিশচন্জ 


জগতের নাট্যুনাহিত্যে বিরল বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। লোক্ধির এবং 
অলৌকিক উত্তরের সমাবেশে এ নাটক যেমন বহত্তময় তত্বপূর্ণ তেমনই 
মনোজ হইয়াছে । অসংশয়ে বলিতে পারা যায়--এমন দিন আসিবে, যেদিন 
এই অপূর্ব দৃশ্তকাব্য নাট্যজগতে আপনার যোগ্যস্থান অধিকার করিবে। 

“কালাপাহাঁড়” অভিনয় দর্শনে, চঞ্চলার চরিত্র বিশেষ লক্ষ্য করিয়া--. 
সাহিত্যরস-রসিক, পণ্ডিত প্রবর, সুগ্রসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার মহেন্ত্রলাল 
সরকার মহাশয় গিবিশচন্ত্রকে বলিয়াছিলেন,__“তোমার চরিত্র স্থগ্টি সব 
সেকৃসপীয়রের মত, আশীর্বাদ কবি, তুমি চিরজীবী হও ।” সহৃদয় রস 
ব্যক্তির এই আন্তরিক আঁশীর্বচন বার্থ হইবে না, কালাপাহাড়-_জাতীয় 
সাহিত্যে গিরিশচন্দ্রকে চিরজীবী করিয়! রাখিবে। 

উত্তরকালে মনোমোহন থিয়েটারে “কালাপাহাড়' পুনরভিনীত 
হইয়াছিল। শ্রীযুক্ত স্্রেন্দ্রনীথ ঘোঁষ ' দানিবাবু ) “চিস্তামণির এবং 
শ্রীমতী তাবান্ন্দরী “ঞ্চলার, ভূমিকাভিনয়ে বিশেষরূপ কৃতিত্ব প্রদর্শন 
করিয়াছিলেন । 


হীল্রক্ষ জুব্বিজ্পী 


৭ই আষাঢ় (১৩০৪ সাল) ষ্টার থিয়েটারে “হীরক জুবিলী” প্রথম 
অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয়-রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £__ 

নট _-অমৃতলাল মিত্র, মাতাল-_শ্রীযুক্ত তুরেন্ত্রনাথ ঘো় (দানিবাবু ) 
বঙ্গবাসী- মক্েন্ত্রনাথ চৌধুরী, পুরোহিত-_হরিচরণ ভট্টাচার্য্য; মুটে-_জ্রীযুজ্ত 
কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, হ্বীপান্তর-প্রত্যাগত পুরুষ- জীবনরুষ্ণ সেন, 
সাড়ীওয়ালা _শণীহৃষণ ঘোষ ছুরিকাচিওয়ালা--আন্ুরবালা, খবরের 
কাগজওয়ালা-_-শ্রীমতী সরযূবালা, ফুলওয়ালী-_বসন্তকুমারী, খিলিওয়ালী 
_ভ্রীমতী নগেস্তরবালা, চুটকিওয়ালী--গঙ্গ। বাইজী ইত্যাদি 


উনচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৯৭ 

মহাাণী ভিট্োরিয়ীয় যাঁট বৎসর রাজ্যকাঁল পূর্ণ হওয়ায় 'ভায়মণ্ড 

জুবিলী: উৎসব উপলক্ষে “নটের রাজতক্তি উপহার দ্বরূপ এই গীতি- 
নাটাখানি রচিত হয়। 

পুস্তকথানি ক্ষুদ্র, মহারাণীর গুণকীর্তন ইহার প্রধান লক্ষ্য হইলেও 
গিরিশচন্দ্রের ব্বদেশপ্রাণতা৷ এবং জাতীয়তা এই নাটিকার পত্রে পত্রে-_ছত্রে 
ছত্রে পরিস্ফ,ট হইয়াছে। “হীরক জুবিলী”_-রঙ্গে; ব্যঙ্গে এবং বস-তরঙে-_ 
দর্শকগণের বিশেষ উপভোগ্য হওয়ায় অনেক দিন ধরিয়া' ইহার অভিনয় 
হইয়াছিল। সাময়িক চিত্র হইলেও তাৎকালিক অবস্থা বর্ণনায় ইহা 
সাহিত্যে চির আদরণীয় হইয়। থাকিবে। 

“ব্ঙ্গবাসী”র মুখ দিয়া মহারাণী ভিক্টোরিয়ার নিকট গিরিশচন্দ্র যে 
রাজনৈতিক আবেদন করাইয়াছেন,__“তোমার শ্বেত জন্তানের সহিত 
মন্ত্রণা-গুছে +সে ভারতের উন্নতি সাধন ক+র্বো! ।»__তাহার এ কল্পনা 
কালে যে অন্ততঃ কতক পরিমাণে কার্যে পরিশ্ফুট হইয়াছে, তাহা 
অস্বীকার করিবার উপায় নাই। 

গ্পাল্রত্ঠ শস্ূম্ম 

২৭শে ভাদ্র (১৩০৪ সাল) ষ্টার থিয়েটারে “পারন্য প্রহ্নঃ প্রথম 
অভিনীত হয়| গ্রথম অভিনয় রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_ 

হারুণ-উল-রসিদ-_অধোরনাথ পাঠক, জাফের-_ননিলাল দত্ত, সুল- 
তান মহম্মদ--মহেন্্রনাথ চৌধুবী, এলফ দল ও জেলে--হরি5বণ ভট্টাচার্য, 
সুরুদ্দিন-্রীযুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, এলমোইন--শ্রীধুক্ত অক্ষয়কালী 
কোঙার, সেনজাবা-্রীযুক্ত উপেন্ত্রনাথ মিত্র, ইব্রাহিম-_জীবনকফ্ণ সেন, 
দালাল ও ইয়ারগণ- _বিষুচরণ দে, ননিলাল দত, হীরালাল দত্ত, 
আঁশুতোধ চট্টোপাধ্যায়, শশীভূষণ ঘোষ; পারিসানা-_ শ্রীমতী নরীন্ুন্দরী, 
আরসা-_কামিনীমণি। এনসানি-_গঙ্গামণি বাইজী, জেলেনী-_-স্ীতী 


৭ 


8১৮ গিরিশ 


বথেজবালাঃ গরিদারিক।--নলিনী ইত্যুদি। সঙ্গীত-পিক্ষক-রৃযতারগ 
.সাহ্াগ এবং ইুতাশিক্ষক-স্পীযূজ খানিনাধ চট্োপান্যায় । 
আরব্যোশন্তাস যেরূপ “আবুছোসেনের' মূল ভিত্তি।--“পাঁরুক্য গুন 
তন্জপ পারন্টোপন্তাসের গল্প অববান্ধনে রচিত। ইহার নায়ক মুফদিনের 
উদারতা, নারিকা পারিসানার পতিগ্রাগতা, হাকুশ-উল-রসিদের মহান্ু- 
ভব্তা, এলমোইনের স্বার্ধপরতা, সেনজারার সন্ধদয়তা, ইব্রাহিমের ধর্দোর 
ভগ্ডামি ইত্যাদি নানা রসে “পারস্য প্রস্থন নাট্যামোদীগণের পরম গ্রিক 
হইয়াছিল । ইহার গানগুলির রচনা যেরূপ সুন্দর, _সঙ্গীতাচাধ্য রামতারণ 
বাবুপ্রদত্ত জুর সংযোগে সেইরূপ স্বমধুর হইয়! উঠিয়াছিল। লবঞ্সতিঠ 
অভিনেত৷ ও অভিনেত্রীগণ কর্তৃক '“পারস্ত প্রন্থনের অভিনয় অভি সুন্ার 
হইয়াছিল। কোকিলকন্টি গায়িকা শ্রীমতী নরাহ্ুন্দরী “পারিসানার? 
ভূমিকাভিনয়ে উচ্চ প্রশংসা! লাভ করিয়াছিলেন। তাহার বীণা-বিনিন্দিত 
স্বর-লহরীতে দর্শকমণ্ডলী মাতোয়ারা হইয়া উঠিতেন। স্বর্গায় জীবনক্ক 
সেন ভগ ইব্রাহিমের জীবস্ত চিত্র প্রদর্শনে প্রবল হাস্ত তরঙ্গে রঙ্গভূমি 
উচ্ডুমিত করিয়া তুলিতেন। 
সিটি, মিনার ও মনোমোহন থিয়েটারে “পারিসানা” নাম দিয়া এই 
সরস গীতি-নাট্যথানি বহুবার অভিনীত হয়। গীতিনাটয নাটকীয় চরিপ্রের 
অবতারণা--'পারস্ত প্রন্থনের বৈশিষ্ট্য । এই পুস্তকের মর্স্পশী বরলংখ্যক 
প্রীত হইতে আমর! ছুইথানি পাঠকগণকে উপহার দিতেছি ।-- 
২ম। গোলাম-বাজারে বিক্রয্নের নিগ্িত্ত আনীত পারিসানা 
“যে! লেওয়ে, মো পাঁওয়ে, দিল মেরি নেছি। 
গরদি সহি, বেদরদি সহি ॥ 
মন্থুল হোকে, কই কদরসে গুমুকো দেখে, 
ছাতি'পর উঠার স্বাখে, জমিন্মে তোড়কে ধেঁকে। 


8২০ গিরিশচন্জ 
১ উজ ওরসে বহে, যো ধ্যারস! রাখে, 
মুঝে ধ্যারসি রাখো, য্যায় সি রহি ॥+ 
জীতদাসীর হৃদয়ের কি গভীর প্রাণম্পর্শী অভিব্যক্তি ! 
২য়। সঙ্গীত-রচনায় সিদ্ধক্বি গিরিশচন্দ্র বলিতেন, _প্মানব-্দয়ের 
এমন ভাব নাই, যাহা অবলম্থনে সঙ্গীত রচন! করা যায় ন1।” ভাঁকিনী, 
যোগিনী, চণ্ড, চেড়ী, বানরী, নারদের টেকী, নিন্দা, নিদ্রা-্প্ু-তঙ্জা, 
কিরণ-কিছ্ধরী, ভাব-সঙ্গিনী, শ্বর-স বনী, ছায়া-সঙ্গিনী, সাগরবাল! প্রভৃতি 
বিভিন্ন ভাব এবং রসের কতই ন সঙ্গীত তিনি বচন! করিয়াছেন। এই 
গীতথানি স্ুপ্রসিদ্ধ গ্রীক দার্শনিক ইপিকিউবাসের প্রবর্তিত মজ 
€ 17001001681) [1)11030])1 ) অবলম্বনে রচিত :-_ 
“কাল কি হবে, আজকে ভেবে কি হবে। 
ভেবে ভেবে ভবের খেলা, বুঝতে পারে কে কবে? 
ভেবে ভেবে যাঁয় তো চিরকাল, 
ভেবে কে বদলেছে কার হাল, 
আজ ভাবে কাল সুখে রবে আসে না সে কাল 
সময়েব আোত কয়ে যায় ওঠ! নাবা ঢেউ চলে তায়, 
কাল ভেবে যে কাল কাটাবে, ভয়ে ভয়ে সে রবে। 
ছেড় না, দিন পেয়েছ, আমোদ করে নাও তবে ॥* 
পাঁঠকগণের মধ্যে বোধ হয় অনেকেই জানেন, __ইপিকিউরাঁসের মত ছিল, 
-138707)000655 0::91010500606 15 0119 5%7/727 60%8%5 01110. 
হহ্ান্স্ণান্ন 
8ঠ| পৌষ (১৩৪ সাল) গিরিশচন্ত্রের 'মায়াবসান' সামাজিক, 
নাটকখানি টার থিয়েটারে প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর 
অভিনেন্তা ও অভিনেত্রীগণ £- 


উনচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪২১ 


কালীকিস্কর বন্থ--গিরিশচন্ত্র ঘোষ, মাধব_ল্নরেন্্রনাথ মিত্র (কষ্টরাই), 
যাঁদব__শ্রীবুক্ত কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়, হলধর- শ্রীযুক্ত স্থরেত্্নাথ ঘোষ 
(দবানিবাবু % সাতকড়ি চাটুজ্যে _হুরিচরণ ভট্টাচার্য, শাস্তিরাম_-নটবর 
চৌধুরী, গণপতি শর্খ-_্রীযুক্ত অক্ষয়কালী কোঙার, কৃষ্ণখন বসু-ননি- 
লাল দত্ত, টি, রে- শ্রীযুক্ত উপেন্দ্রনাথ মিত্র, মিঃ ডিম শ্রীযুক্ত হীরালাল দত্ত, 
মিঃ গু'ই__জীবনরুষ্ণ সেন, দীননাথ চক্রবর্তী-_মহেন্ত্রনাথ চৌধুবী (মাষ্টার) 
ম্যাঁজিদ্রেট-_-বিষুচবণ দে, অন্পূর্ণা__ শ্রীমতী তারাস্ন্দবী, মন্দাকিনী-__ 
বসম্তকুমারী, নিস্তাবিণী- শ্রীমতী সরযুবালা, বিদ্দু--শ্রীমতী নগেম্ত্রবালা 
রঙ্গিণী---শ্রীমতী নরীন্রন্দরী, ম্যাজিষ্ট্রেট-পত্রী--কামিনীন্বন্দরী ইত্যাদি । 
“কালাপাহাঁড়' রচনাব প্রায় এক বংসর পরে গিরিশচন্দ্র “মায়াবসান, 
রচনা! করেন। কালাঁপাহাড় নাটক যেমন শ্রশ্রীবামকৃষ্ণদেবের ভাবে,__- 
মায়াবসান নাঁটক তেমনি স্বামী বিবেকানন্দের ভাবে অনুপ্রাণিত ॥ যবনিকা! 
পতনেব পূর্বেবে ছুইখানি নাটকে যে ছুইটী সঙ্গীত সংযোজিত হইয়াছে, 
আমর! সেই ছুইটা নিয়ে উদ্ধত কবিলাম। পাঠকগণ তাহ! হইতেই দুইথানি 
নাটকের প্রকৃতি, গতি ও পরিণতি সম্পূর্ণ বুঝিতে পারিবেন। 
১ম। কাঁলাঁপাহাড় নাটকেব শেষ গীত £__ 
“প্রেম-রমে আজ হৃদয় বসেছে। 
দেখরে দেখ হদয়-নিধি__ 
সিংহাসনে বসেছে ॥ 
রূপেব ছটা দেখবে ভূবনময়, 
ঝলকে পুলক উথলে বয়, 
জয় জয় জয়, জগন্নাথের জয়--- 
মনোমোহন চাদবদন হেরে, 
ভবের বাধন থযেছে।” 


৪২২ গিরিশচউ 


২য়। মায়াবসাঁন নাটকের শৈষ গীত ৪. 
“মেদিনী মিশিল; তরল দগ্গিলে 
তপন শুধিল বারি। 
তপন নিভিল, অনিল বহিল, 
“বিপুল ব্যোমচারী ॥ 
নীরব রব শৃন্ঠ শরীরে, 
শূন্যে শৃন্ত মিশিল ধীরে, 
নিবিড় তিমিরে চেতন ঝলসে 
মায়! কায়াহারী ॥” 

"কালাপাহাড়ে' যেরূপ ভগবৎ প্রেম, ভক্তি ও ভালবাসার বিকাশ, 
'মায়াবসানে' সেইরূপ জ্ঞান ও চৈতন্োদয়ে অবিদ্ার নাশ। কালীকিষ্কর 
বন্থু এই নাটকের নায়ক-_কঠোর সত্যান্ুবাগী, জ্ঞানপিপান্থ, পরছুঃখ- 
কাতর, কিন্তু দীর্ঘকাল ধরিয়া কেবল জড়বিজ্ঞানের আলোচনা করিয়াছেন। 
যখন তীহার স্থখের সংসার-_পরের অনিষ্টসাধনে চিরব্রতী সাতকড়ি 
চাটুজ্যের চক্রে ছিন্নভিন্ন হুইয়া গেল, তখন এই চাটুজ্যেকেই কালীকিঙ্কর 
বলিতেছেন, -“সমস্ত রাত্রি জাগরণ ক'রে দুরবীক্ষণে আকাশে তারার 
গতি লক্ষ্য করেছি, অন্ুবীক্ষণে কীটাণুর ব্যাভার দেখেছি, _বিজ্ঞানচ্চ, 
জীবন উপেক্ষা ক'রে তড়িৎ পবীক্ষা, রাসায়নিক পরীক্ষা, নিজ দেহের 
ভ্রব্যগুণ পরীক্ষা! করেছি। যা! যা! দেখেছি, যা যা ভেবেছি, সব ওত্তে টুফে 
'রেখেছি। কেন জান? ভেবেছিলেম, এ প্রকাশ ক'রলে মান্থষের 
উপকার হবে; কিন্ত আজ বুঝেছি যে, মানব-ছৃঃখের এক কণাও 
কমবে না।” 

বিজ্ঞান আলোচন! এবং পরীক্ষা করিয়া! কাঁলীকিস্কর যে সক সিদ্ধান্তে 
উপলীত হইতেন, তাহা লিখিয়া রাঁখিভেন। চাটুত্যে ভীহার লেখা 


উনচতারিংগলেছিচ্ছেদ ৪২৩ 


কাঁগজগুলি চুরি করিবায় গন আবিয়াছিল। উদ্দে্ঠ ছিল, দেখলি 
পুড়াইয়া! ফেলিগ্না তীহাঁকে চরম আঘাত দিবেন। কালীকিস্কর প্রশ্ন 
করিলেন--“তাতে ভোমার লাভ?” কিস্তু চাটুজযে জাভালাভ খতাঁয় 
না, পরের যাহাতে দুঃখ, পরের যাহাতে অনিইই--তাহাতেই তাহার 
আনদা। বলিল--“আমি আমুদে লোক, আমোদ ক'রেই বেড়াই। কার 
কি হলো-_-কাঁর কি হবে, অত ধার ধাঁরি নে।” চাটুজো চলিয়া! গেল, 
কাঁলীকিস্কর ভাবিতে লাগিলেন,_-"পরের অনিষ্ট জীবনের ব্রত; কিন্ত 
আশ্চর্য -একে তো আমি একদিনও বিমর্ধ দেখি না!” তাহার মনে 
আজ ঘোরতর দ্বন্ব উপস্থিত__ম্থখ কি? ছুঃংখ কি? আনন্দ কোথায়? 
ভাবিতে ভাবিতে তীহাঁর মনে হইল-_“নিষ্ষম্প দীপশিখার ন্যায় মন! 
শুনেছি_সেই আনন্দের অবস্থা! কিন্ত একি সম্ভব? কখন না__ 
কল্পন৷ মাত্র । প্রলোভন বাক্য! সুখ ছুঃখ প্রবল গ্রতিদবম্ত্ী, বায়ু- 
সঙ্বর্ষণে ঘোরতর ঘূর্ণবাযু উপস্থিত হয়। দীপ নির্বাণ সন্তব, নিষম্প 
দীপ অসম্ভব--স্বভাবে অসম্ভব। এ যে দীপ কম্পিত হচ্ছে, প্রবল বাযুতে 
নির্বাণ হবে, বাুহীন হ'লেও নির্বাণ হবে। এ দীপ নির্বাণ হবে, 
মৃত্যুতে কি জ্ঞানদীপ নির্বাণ হবে? অসম্ভব। জড়েরই পরিবর্ভন-_ 
জড়েরই ধ্বংস। চৈতন্তের বিনাশ! কল্পন! করা"যায় না। বিপদ-_. 
ঘোর বিপদ-_অনস্ত বিপদ! একি? একি আভাস? আত্মত্যাগ !-__ 
মে কি? সে কি?নৃতন বথা- নুতন কথা! আপনার জন্তই সব, 
আপনার অন্তই যন্ত্রণা । আত্মত্যাগ সম্ভব-_সম্তব--সম্ভব !” 

এই চরম জানলাঁভ করিয়া কালীকিত্বর তাহার সযত্র-শিক্ষিত শিল্পা 
র্গিণীকে তাহ! দিবার নিমিত ব্য হইয়া উপ্ভিলেন। ইতোপূর্বেরই তিনি 
স্ংলাঁর, আত্মীয় স্বজনের মমতা! মন হইতে দুর করিয়াছেন, কিন্তু গুরু- 
শিবের গন অতি বৃড়- পূর্ণকান দা দিয়া তাহা সহজে ক্ষা্টে না । তাই 


৪২৪ গিরিশছন্জ 


তিনি পরিণামে রক্ষিণীকে বলিতেছেন,--"তোমায় একটা কথা বলতে, 
এসেছি, এই আমার শেষ কথা ।. তুমি কথাটা বুঝলে আমার বন্ধন কাটে। 
শুনেছিলে কি ? আত্মত্যাগ | মনে ক'রেছিলেম। একটা কথার বথা চলে 
আস্ছে; ত। নয়, সত্যই আত্মত্যাগ আছে। মরণে আত্মত্যাগ হবে না, 
আত্ম! সঙ্গে যাবে? এইথানে আপনাকে বিলিয়ে দিলে তবে আত্মত্যাগ হবে।* 

রঙ্গিণী বলিল,-_“ছোটবাবু, কি ঝল্ছ? আঁমি তোমার কথা কিছু 
বুঝতে পাচ্ছি নে।” 

কালীকিঙ্কর তাহার উত্তর দিলেন,__“তোমায় এতদিন উপদেশ 
দিয়েছি--পরের উপকার কর; আমিও পরহিতে জীবন উৎসর্গ করে- 
ছিলেম। কিন্তু শান্তি পাইনি কেন জান? মুখে বগৃতেম, নিষ্ধাম ধর্ম-_- 
নিষ্াম ধর্ম) কিন্তু অভিমান ফল-কামন ছাড়ে না। সুখ-আশায় পরহিত 
করেছি, ধর্ম উপার্জন করতে পরহিত কবেছিঃ আত্মো্গতির জন্ত পরহিত 
করেছি, ফল-কামনায় পরহিত করেছি । আজ গঙ্গাজলে ফল বিসর্জন দিয়ে 
পরকাধ্যে রইলেম; রইলেম কি--জগতে মিশলেম। 

রঙ্গিণী। আমিও আভাস পাচ্ছি, আমিও মিলিয়ে যাঁচ্চি। 

কালীকিস্কর। বেশ। আমাদেব অপূর্ব মিলনে আর বিচ্ছেদ হবে না। 

রঙ্গিণী। সত্য-_অবিচ্ছিন্ন মিলন !-_প্রতি পরমাগুতে মিলন-__ 
(অনন্ত মিলন!” 

নাটকের পরিণাম এবং তাঁহার রচনার উদ্দেশ্তের বথঞ্চিৎ আভাম 
আমরা গিরিশচন্দ্রের কথাতেই ব্যক্ত করিলাম। এই পরিপাঁমে' উপনীত 
হুইতে যে কিছু ঘটনা এবং চরিত্রের প্রয়োজন, গিরিশচন্দ্র সে সকলের 
অপূর্ব সমাবেশ করিয়াছেন। একদিক দিয়া চাঁটুজ্যে যেমন, অন্যদিকে 
পুরাতন তৃত্য শান্তিরাম তেম্নি এক অপূর্ব স্টি। শান্তিরাম নিরক্ষর 
মুর্খ হইলেও তাহার উক্তি সকল সাংসারিক জ্ঞান এরং অভিজ্ঞতায় পূর্ণ ॥ 


উনচ্বারিং পরিচ্ছেদ ৪২৫ 


যে ভাব মহাকবি সেরুস্পিয়র মনস্তত্ববিদ এবং দার্শনিক হাঁমূলেটের মুখ 
দিয়া বাঁছির করিয়াছেন, এই শান্তিরাম ভাহার গ্রাম্য ভাষায় তাহার 
অনুরূপ ভাব ব্যক্ত করিতেছে, _“্মনের পচা পাক উটুকে দেখলে কেউ 
কাকুকে ছুর্জন বল্‌তো৷ নি, ত৷ আমর! মু্কৃাু,। আমরা আর তোমাদের, 
কি বল্বো 1” * 
রঙ্গিণী এই নাটকের আর একটা বিচিত্র সৃষ্টি । রঙ্জিমী দরিদ্র-কন্তা-_ 
কালীকিক্করের সবযত্ব-শিক্ষিতা | গুকবাক্যে অক্ষুণ্ন বিশ্বাস এবং সত্যনিষ্ঠা-_ 
এ চরিত্রের বিশেষত্ব । ইহারই ন্নেহে কালীকিঙ্কর উতৎকট ইচ্ছাশক্তি 
প্রয়োগ করিয়া মৃত্ু-ঘ্বার হইতে ফিরিয়া আসিয়াছিলেন। যে শক্তির 
উদ্বোধন করিতে কারাবদ্ধ কালাপাহাড় বলিয়াছিলেন £-_ 
“শক্তি, ভুমি প্রত্যক্ষ তৃবনে 
বিরাজিত, বিদ্যমান অস্তবে অন্তরে 
নেহাঁবি তোমারে, আজীবন করিয়াছি 
তৰ উপাসনা, এ সম্কটে প্রবঞ্চনা 
করো না করো না ! দেহ বল, এ শৃঙ্খল 
হোঁক দূব! করি চুর কঠিন পির! 
জড় বা চেতন অন্বেষণ প্রয়োজন 
নাহি, হও যেব! তুমি, বাপিত আকাঁশ- 
ভূমি, কিবা! পুরুষপ্রকৃতি, নিরাকার 
অথবা সাকার, আকর্ষণ করি ব্রহ্ম 
তেজে, ত্বরা দেহ তেজ, তেজের আকর !” 
কালাপাহাড়, ৪র্ঘ গর্ভাঙ্ক, ২র অন্ক। 


দ. ৮1055 5৮61 17121) 20687 115 05510 800 170 21500145027 
1019878 ? ৮2150150৯০৮ 105 9০5 2, 


৪২৬ খিরিশচষ্জ 


সেই শক্তিরই বলে কানীকিঙর মৃত্যুদুখ হইতে “0৮ 909 
[10০ % বলিয়া ফিরিয়া আসেন। বিস্ত কাঁলাপাহাঁড় যাহার শব 
করিতেছেন”-তাহ! ত্রক্ষশক্তি! কালীকিঙ্কর যাহার আহ্বান করিতেছেন 
-্*তীহা জড় । 

“কালাপাহাঁড়” এবং “মায়াবসাঁনে+ ধর্দশজগতের ছুইটী উচ্চ তত্বের 
অবতারণা করা হইয়াছে । কিন্তু দুঃখের বিষয়, যে ছুইখানি নাটক 
গিরিশচন্ত্রের উর্বর ও পরিণত মন্তিষ্ের ফল, সেই ছুইখানিই তাহার 
মন্তিফ-বিরৃতির পরিচায়ক বলিয়া রঙ্গালয় হইতে প্রচারিত হয় এবং 
অধিকাংশ দর্শকও সেই মতের সমর্থন করেন। 

এই “মায়াবসানের সঙ্গে সঙ্গে গিরিশচন্দ্রেরও টার থিয়েটারের মায়ার 
অবসান হয়। 


চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
হাফ আক্কডাই ও পীচ্গান্লি 


হাঁফ আকৃড়াই সঙ্গীতের জন্য বাগবাজার সুববিখ্যাত। বাগহাজার- 
নিবাসী স্বর্গীয় মোহনটাদ বস্থ ইহার আবিষারকণ এক সময়ে কলিকাতায় 
বহু ধনাঢ্য ভবনে হাফ. আকৃড়াই-এর লড়াই শিক্ষিত ভদ্রমণ্ডলী এবং 
জনসাধারণের পরম উপভোগ্য ছিল। গিরিশচন্ত্রের সময়ে কবিবর 
মনোমোহন বন্ুই হাফ. আঁকৃড়াই গানের উৎকৃষ্ট বাধনদার ববির! স্প্রসিদ্ধ 
ছিলেন। «করি পরিণক' নাটক-প্রণেতা শ্বর্গীয় রামলাল বন্যোপাধ্যায়ের 
'ভোষ্ঠতাত স্বর্গীয় গোপালযাঁল বন্দোপাধ্যায়ের নামও বিশেষ উল্লেখধোগ্্য । 


চত্বারিংণ পরিচ্ছেদ ৪২৭ 


গিরিশচন্্ বন্ু-বাক্ষবগগণ কর্তৃক অন্রষ্ধ হইয়া ছুই চারিটী আরে গাঁন 
বাবিরা জয়লাত করিয়াছিলেন। কিন্তু তীহার সমস্ত উদ্ধম ও অধ্যবসার 
থিয়েটারের উদ্নতিকয়ে প্রযুক্ত হওয়ায় ছাঁফ, আকুড়াইএর প্রতি তেমন 
অধিক মনঃসংযোগ করিতে পারেন নাই। কালত্রমে শিক্ষিতগণের কচির 
পরিবর্তনে এবং সৌথীন ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অনুরাগ ও সহা্ভূতির অভাবে 
এই বনুব্যয়সাধ্য সঙ্গীত-সংগ্রাম লুগ্তপ্রায় হইয়াছে । বছকাঁল পরে গত 
১৩২৫ সালে শোভাবাজার রাজবাটাতে সমারোহ সহকারে ইহার শেষ 
আসর হইয়াছিল। ঘোড়ানাকো সম্প্রদায়ের বীধনদার হইয়াছিলেন-_ 
নাট্যাচার্যয শ্রীযুক্ত অমতলাল বন্থ এবং প্রতিপক্ষ কীসারিপাড়া অম্প্রদায়ের 
বাধনদার ছিলেন স্বর্গীয় শশীভূষণ দাস । 

গিরিশচন্দ্র যে কয়েকটা আসবে গান বাঁধিয়াছিলেন, তাহ! রক্ষিত ন৷ 
হওয়ায় আমরা! বিশেষ চেষ্টা করিয়! কয়েকটা গীতের ভাঁবার্থ মাত্র জাত 
হইয়াঁছি ; কেবলমাত্র দুইখানি গীত সংগ্রহে সমর্থ হুইয়াছিলাম। 
মতপ্রকাঁশিত গিরিশ-গীতাবলী হইতে তাহ! উদ্ধৃত করিতেছি । হাইকোর্টের 
ভূতপূর্ব্ব ডিপুটী রেজিষ্রীর ভবানীপুর-নিবাসী স্বর্গীয় গিরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় 
মহাশয়ের বাটাতে এই গীত ছুইটী গীত হয়। গিরিশচন্ত্র সে সময়ে স্যাসান্তাল 
থিয়েটারের ম্যানেজার,_তিনি কালীঘাটের হইয়। গান বীধিয়াছিলেন। 
প্রতিবাদী ভবানীপুরের দল ছিল।তীহাদের বাধনদার ছিলেন-_ 
পূর্ববো্লিখিত স্বর্গীয় গোপাললাল বন্দ্যোপাধ্যায় । 

গিরিশচন্্র রাঁধাতন্ত্রের 'প্রক্তি-পৃূজ/' অবলম্বন করিয়া এই চাপানটা 
দেন ১- 

“কুমুদিনী মোদিনী বিলাইয়ে প্রাণ, 
কছে অনিঙ্গ আসি, কলি সম্ভাধি- 
গপ্রেমসিঃ খোল লে! বন্ধান !” 


৪২৮ গিরিশচন্্র. 


শাখী-শাঁখা-শিরে পিক গায়, 
কুহুতান হানে ফুলবাণ-_ 
কুলমান মজে তায়। 
নীল তমাল প'রে, লতিক! বিহরে, 
শিহরে মরি ধীর বাঁয়। 
অন্গরাগে, তারা জাগে, 
নির্শাল গগনে বসি, ক্সীর-নীরে যেন শশী, 
কৌমুদী দলিলে পশি হাসে সোহাগে ! 
তরঙ্গে তবী কেন হেরি হায়, 
অপরূপ যুগলরূপ কিবা তায়, 
যেন নীবদে দামিনী, মেঘ-মোহিনী, 
পুলকে ঝলকে কি লীলায়,_- 
কি লীলা, চন্দ্রাবলি, বল আমায়, 
তুলা-নিশায় কি কবে দৌঁহে সই ?” 
বিপক্ষের বাঁধনদাবেব উত্তব দিতে বিলম্ব হওয়ায়, অনববত ঢোঁলই' 
বাজিতে লাগিল। হাইকোর্টে ভূতপূর্বব জজ স্বগাঁয় বমেশচন্্র মিত্রেব জো 
ভ্রাতা স্বর্গীয় কেশবচন্ত্র মিত্র সে সময়ে একজন উৎকৃষ্ট ঢোলবাদক ছিলেন। 
তিনি দুইজন সহকারী সমেত তিনবার ঢোল বাজাইলেন, তথাপি যখন 
উত্তর প্রস্তত হইল না, তখন তিনি তীহাদেব দলের লোক হইয়াঁও বিরজ্তু 
হইয়৷ ঢোল ফেলিরা দেন। 
ইঞ্তারা উত্তর দানে অসমর্থ হওয়ায় গিরিশচন্দ্র শ্বয়ং ইহার' 
উত্তর দিয়াছিলেন। উত্তরের প্রথম ছত্রটী মাত্র সংগ্রহ করিতে 
পারিয়াছি। যথা 
“রাস-রস-মাধুরী করি, সখি, পাঁন।” 


চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪২৯ 


তৎপরে বিরহের আসর । গিরিশচন্দ্র গ্রথমে “ড্রৌপদী হরণে” পাঁগুক- 
'লাক্ছিত জয়দখের প্রতি জয়দ্রথ-পত্রীর উক্তিত্বরূপ এই চাপানটা দেন £-_ 
“আমারে তুলেরে প্রাণ, ভাল তে ছিলে। 
কি জন্ত আর দেখিনে হে, পথ তৃলে কি এলে? 
শুন্ছি লোকে, প্রাণ, ক'রে ভাখ-_ 
ঢুকলে গে কার অন্দরে ! 
মুখে ছাই, দেখ্লে ঘর কামাই, 
ধরলে খপ্‌ ক'রে, সরমে মরমে মরি ছিঃ-- 
গায়ে কি দাগ দেখি? 
ননদী কাছে না যায়, যে ব্যাভার, 
ভ্যালা বুড়ো প্রাণ মন্তানি মচ.কেচে এবার, 
পাঁচ চুলো! গোলাম ওরে প্রাণ !” 
বিপক্ষদল আশাবজ্জিত এক অসঙ্গত উত্তর দেন। গিরিশচন্ধের দল 
্রহ্যুত্তর দিবার নিমিত্ত আসব লইয়াছেন__মহা উৎসাহে সাজ-বাজনা 
আরস্ত হইয়াছে । বিপক্ষ সম্প্রদায় গতিক খারাপ বুঝিয়৷ কাউরে ঢোল 
বাজাইয়া আমর তজ করেন। শুনা যায়, বিপন্মদল পরাজিত হইয়া, 
ক্রোধে গিরিশচন্ত্রকে প্রহাবের উদ্যোগ করে,_-তিনি লুকাইয়া তাহার এক 
সাব-জঞ্ বন্ধুর (্বর্গীয় ব্রজবিহারী মোম ) গাড়ীর দ্বার বন্ধ করিয়া 
পলায়ন করেনু। 
যে সময় ষ্টার থিয়েটারে গিরিশচন্দ্র ম্যানেজার ছিলেন, সেই সময়ে 
বাগবাজ্রারের ন্ুপ্রসিদ্ধ জমীদার স্বর্গায় নন্দলাল বন্থর বাটীতে একবার 
হাফ. আকৃড়াই-লড়াই হয়। প্রথম পক্ষের বীধনদার ছিলেন- স্বীয় 
গোপাললাল বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিতীয় পক্ষের বাঁধনদার ছিলেন- স্বর্গীয় 
মনোমোহন বঙ্গ; গিরিশচন্ত্ধ মনোমোহনবাবুর সহকারী হইয়াছিলেন। 


৪৪৬ গিরিশচজ 


গোঁপাঁলবাতু গীক্ধারীর ছাগপতি উপলঙ্গ্য বি চাঁপান দেন? 
মনোমোহনযাঁবু উত্তর দানে ইতস্তত: করায়, গিক্সিশচন্ত্র উত্তর বারা দিয়া 
ত্বপক্ষের সন্মান রক্ষা করিয়াছিলেন। গীতথানির প্রথম কয়েক ছঞ্র মাত 


আমর! সংগ্রহ করিতে পারিয়াছি $--- ূ 
গর্থধষির অভিশাপে, মরি মনস্তাপে, 
কুলোকে কু-কথ রটায়,__ 


এমন ভারত-ছাড়া কথাঃ বল, কোথায় পাও 1?” 

গিরিশচন্দ্র বলিতেন_“হাফ, আকৃড়াই বা কবির লড়াইএ জয়লাভ 
করিবার কৌশল এই,_-ধিনি পুরাণ, উপপুরাণ প্রভৃতি শাস্তর"গ্রস্থ হইতে 
উপার্ধান সংগ্রহ করিয়া চাপাঁন দিবেন, সর্বশান্ত্রবিশারদ প্রতিথক্ষের 
বাধনদার তাহার তো৷ জবাব দিবেনই। কিন্তু জয়াভিলাষী চাঁপানদারকে 
এস্থলে একটু কূটনীতি অবলম্বন করিতে হইবে। যেমন - রাবণবধের পর 
বিভীষণের সহিত মন্দোদরীব পুনরায় বিবাহ হয়। বাঁবণের জীবিতকালে 
মন্দোদরী মনে মনে বিভীষণের অনুরাগী ছিলেন কি না, তাহা তো কেহ 
নিশ্চন্ন করিয়া বলিতে পাবে না । এই অনুমিত অনুরাগ কল্পনা-সাহায্যে 
বাস্তবে পরিণত করিয়৷ চাঁপানদার তাহাব বিষয় স্থির করিলেন £-- 

লক্ষ্মণ নাক-কাণ কাটিয়া দিলে গ্রতিহিংসাপরায়ণা স্থর্পণথ! লঙ্কাপুবে 
রাবণকে উত্তেজিত করিয়া! অস্তঃপুরে গিয়া! উপস্থিত। মন্দোদরী হূর্পণথার 
সুখে সমস্ত বৃত্তান্ত অবগত হইয়া উপহাস করিয়। বলিল, "ছিঃ ছি: ঠাকুবি, 
কুন্বরী সেঙ্জে মানুষের সঙ্গে প্রেম করতে গেলে । প্রেম করা দুরে থাক, 
নাফ কাঁপ ছুটো কেটে দিলে ! ছিঃ ছিঃ-_-এই তুমি সতীর বড়াই কয়?” 
মন্দোদরীর এইরূপ উক্তিতে কুপিতা হইয়া সুর্গণখ! যেন বলিল--”আমি, 
তে অসততী, আর তুই বে কত সতী, লঙ্কাপুরে তা জান্তে ক্কারো৷ বাঁকী, 
দষ্টু। বিভীষণের সঙ্গে এত তোয় কিমের কথ! লা! ?--লুকিকনে পুকিয়ে 


চত্বারিধি পরিচ্ছেদ ৪ 


ছ'জনের ছালি-তামাসা কে না দেখেছে, ইত্যাদি।” বিভীষণ পরম দন্মিক- 
বলিয়া সর্বজনবিদিত । ক্ষাবগের ' জীবিতকালে মন্বোদরীর সহিত কুভাকে 
কথোপকথন তাহার পক্ষে কখনই সম্ভবপর নহে। কিন্তু আবার রাবণের! 
মৃত্যুর পর মন্দোদরীকে বিরাহও করিলেন। কাধাকারণের সুর ধরিয়া 
এবং শেষের সহিত মিল রাখিয়! চাপানটা বেশ জটিল হইয়া উঠিল। 
এইবপ চাপান দিয়া গিরিশচন্দ্র একটী আসর জিতিয়াছিলেন। হাঁফ. 
আকৃড়াই একেই বন্বায়সাধ্য, তাহার উপর জয়-পরাজয়ে উভয় পক্ষের 
ঝগড়া. মনোবিবাদ, সময়ে সময়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামাও ঘটিত। এইরূপ নানা 
কারণে এবং সময় ও সমাজের রুচি পরিবর্তনে ইহার প্রভাব একপ্রকার 
লুপ্ত হইয়া আসিয়াছে । 
হাফ আকৃড়াইয়ের ন্যায় সে সময়ে পাঁচালিরও খুব আদর ছিল। 
ভদ্রসমাজে পাঁচালির প্রতিপত্তি বড় একটা আর দেখা যায় না। ইহা 
এক্ষণে অপেক্ষাকৃত নিয় শ্রেণীতে গিয়া, তাহার ক্গীণ অস্তিতটুকু রক্ষা 
করিতেছে মাত্র । গিরিশচন্দ্রের রচিত ছুইখানি পাঁচালি সঙ্গীত শ্রদ্ধাম্পদ 
শ্রীযুক্ত দেবেন্্রনাথ বন্থ মহাশয়ের নিকট হইতে পাইয়াছিলাম। “গিরিশ- 
গীতাব্লী' হইতে নিয়ে তাহা উদ্ধৃত করিলাম :__ 
(১) 
দ্রিদ্‌ চতুরঙ্গ এলো গ্রাণকান্ত।, 
গুণ গুণ গুণ গু৭, গুণ গুণ ক'রে, 
অ্রমরা দিশেহারা, 
রিষে বিষে কোহেলাকেঁদে সারা, 
করো ছুরস্ত বসন্ত শান্ত ॥ 
ধ! কিটিতাক্‌, ধূম কিটিতাক্‌, 
ধি মেৰন-তরঙ্গ, 


টি িরিশছ। 
অঙ্গে অজে রসরাজ সঙ্গ, রজে আতিষ্কে অনঙ্গভঙ্জ, 
বারে বারে, কে জেনে কে হারে, 
তোম্‌ দেরে দেরে দেরে তানা না না, 
নয়নে নয়নে হানা, 
স্ুরথসমর ঘোরে ক্লাস্ত নিতান্ত ॥ 
(২) 
দ্রিস্‌ চতুরঙ্গে বাশী ফোকে কাল! । 
ধা কিটিতাক্‌, ধূম কিটিতাক্‌ 
বাজে বাণী তেলেঙ্গা,__ 
চাজ। গোপিনী-প্রাণ কবে ঝালাপাল! ॥ 





একচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 


ল্লাসপ্ু্র-ন্োক্ীবিনআআাম্স গিন্িষ্পচুত্জ্র 


প্রসিদ্ধ ক্ল্যারিওনেট-বাদক এবং সঙ্গীতাঁচাধ্য শ্বর্গায় অমৃতলাল দত্ত 
(হাবু বাবু) মহাশয়, রাজসাহী-তালন্বের জমীদার স্বর্গীয় ললিতমোহন 
মৈত্র মহাশয়ের বিশেষ আগ্রহ এবং যত্বে তাহার রামপুর-বোয়ালিয়ার 
প্রানাদতুল্য ভবনে মধ্যে মধ্যে গিয়া অবস্থান করিতেন। ললিতমোহন 
বাবু যেরূপ গীতবাগ্প্রিয়, সেইরূপ নাট্যান্গরাগী ছিলেন। কমিকাতার 
সাধারণ নাট্যশালার স্থায় রামপুরবোয়ালিয়ায় একটী সাধারণ নাঁট্যশালা 
প্রতিষ্ঠ করিবার জন্ত সময়ে সময়ে তিনি বিশেষরূপ উৎসাহিত 
হট] উঠিতেন। 


একচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৩৩ 


গিবিশচন্দ্র যে বংসর ( ১৩*৪ সাল, ফান্তন) ষ্টার থিয়েটার পরিত্যাগ 
কবেন, সে বসর কলিকাতায় প্রথম প্লেগ দেখা দেয়। প্রেগের আতঙ্কে 
ঝটিক।-বিক্ষু সাগরের ন্তায় কলিকাতি। বিচঞ্চল হইয়৷ উঠিয়াছে, আবাল- 
বুদ্ব-বনিতা দলে দলে সহর ত্যাগ করিয়া যাইতেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য 
একপ্রকার বন্ধ বলিলেই হয়,-সে দৃশ্য যিনি দেখিয়াছেন, তিনি তাহা 
জীবনে বিশ্বত হইবেন না। এই সময়ে লণিতমোহন বাবু সুযোগ 
বুঝিয়া, হাবুবাবুব সাহায্যে কলিকাতার সাধারণ নাট্যশালা হইতে 
অভিনেতা ও অভিনেত্রী সংগ্রহ পূর্বক রামপুব-বৌয়ালিয়ায় বঙ্গালয 
প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন। 

হাবুবাবু স্বয়ং গুণী ছিলেন, তাহার উপব গুরুভ্রাত! বিবেকানন্দ স্বামীব 
পবম আত্মীয় ৭লিয়া৷ গিবিশচন্দ্র তাহাকে বিশেষ শ্রীতিব চক্ষে দেখিতেন। 
ললিতবাবুব আগ্রহাতিশয্যে হাবুবাবু আসিয়৷ গিবিশচন্দ্রকে বামপুব- 
বোধালিয়ায় লইয়া বাইবার জন্য ধবিয়া৷ বসিলেন এবং বলিলেন, “ললিতবাবু 
আপনাব সন্মান ও উপযুক্ত পারিশ্রমিক প্রদানে সম্মত, এবং এ সময়ে 
আপনাব কলিকাতা পরিত্যাগও বাঞ্ছনীয় |৮ 

টার থিয়েটাবেব সহিত গিরিশচন্দ্র তখন সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন কবিয়াছেন, 
কলিকাতাতে এই হুলস্থল ব্যাঁপাব»_গিরিশচন্ত্র অগত্যা এ প্রস্তাবে সম্মত 
হইলেন এবং তিন সহন্র মুদ্রা “বোনাঁস* স্ববপ পাইয়া বামপুববোয়ালিরায় 
গমন করিলেন। ্বগীয় নীলমাধব চক্রবর্তী, প্রবোধচন্ত্র ঘোষ, শ্রাযুক্ত 
স্ববেন্্রনাথ ঘোষ (দীনিবাবু ), ভূষণকুমাবী, স্ুশীলাবালা প্রভৃতি লব্ধ 
প্রতিষ্ঠ অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণও যথাযোগ্য বেতন এবং অল্পাধিক 
“বোনাস? পাহুযা ইতিপূর্বে রামপুর-বৌয়ালিয়ায় যাত্রা করিয়াছিলেন । 

ললিতমোহনবাবু উদ্যোগী পুকষ ছিলেন। অল্পদিনের মধ্যেই 
রঙ্গালয়-নিন্মীণ-কাঁধ্য শেষ করিয়া আনিলেন। এদিকে গিরিশচন্দ্র দল 

তে 


৪৩৪ গিরিশচন্দ্র 


স্থগঠিত কবিয়া কয়েকখানি উৎকৃষ্ট নাটক অভিনয়ার্থে প্রস্তুত করিলেন । 
থিয়েটাবের নামকরণ হইল-_“মার্ভাল ( 11778] ) থিয়েটার ।” 
প্রথম বাঁত্রে ধরবনমঙ্গল' নাটক অভিনীত হয়। অভিনয় আব্ত 
হইবাঁব পূর্ব্বে গিবিশচন্ত্র কর্তৃক রচিত নিম্নলিখিত কবিতাটী পঠিত হয় ঃ-_ 
“ইতিহাস কবে গান, রাজসাহী বাজস্থান্‌ 
স্বজলা স্ুফলা শ্যাম। হৃন্দবী প্রদেশ ; 


নব রস-বশ-চিত, সুধীবুন্দ বিবাজিত 
মবালম্বভাব-গুণ-আকর অশেষ ! 
বিকাঁশ নটেব প্রাণ, সহৃদয় বিদ্যমান 


অমানীব মানদাতা৷ সম্মান-পয়োধি 
উত্তেজিত নব আশে, অন্তব পুলকে ভাসে, 
উৎসাহ পাইব-_ক্রটি হয় শত যদি। 


দুর্দান্ত তুদ্দিনোদয়, আসিয়াছি পেয়ে ভয়, 
উচ্চাশ্রয়ে অভয়ে গাইব হৃবিনাম ; 

এই ক্ষুদ্র রঙ্গালয়, তব দৃশ্ঠ যোগ্য নয়__ 
ত্যজি দোষ, গুণ ধব-_-ওহে গুণধাম ! 

কর যদি তিবন্কাব মানি লব পুবস্কাব 
বহু মানে শির পাতি করিব গ্রহণ) 

সবিনয়ে নিবেদন, জানায় হে অকিঞ্চন-_ 


বু আশে আসিয়াছি- কবে না বঞ্চন !5 
খ্যাতনাম৷ অভিনেতৃগণ-সম্মিলনে অভিনয়ও যেরূপ উৎকৃষ্ট হইয়াছিল, 
_ দর্শকগণের ভিড়ও সেইরূপ অসম্ভব হইয়াছিল। পরম আগ্রহে বহু দূর 
হইতে বহু গ্রামের দর্শকগণ আসিতে থাকে--সমন্ত দেশে একটা হুলস্থুল 
পড়িয়া যায় । 


একচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 8৩৫ 


অল্পদিন অভিনয়ে পর ললিতমোহনবাবুর অভিভাঁবকগণ বুঝিলেন 
যে ক্ষুদ্র সহবে টিকিট বিক্রয় করিয়া লাভবান হওয়া ছুবাকাজ্জা মাত্র ।__ 
তাহারাই উদ্যোগী হইয়। থিয়েটার বন্ধ করিয়া! দেন। এদিকে কলিকাতায় 
তখন প্লেগেব আতঙ্ক অপেক্ষাকৃত কমিয়া গিয়াছে । জন্প্রদায় নিভয়ে 
কলিকাতায় প্রত্যাবর্তন কবেন। সহৃদয় ললিতমোহনবাবুব যত্ব এবং 
সদ্ধবহারে সম্প্রদায় পৰম আনন্দে তথায় অবস্থান করিয়াছিলেন। 


০লিগ্েল্র সমস সন্কীত্ন্ন 


প্লেগেব সময কলিকাতা প্রায় প্রত্যেক পল্লীতেই হবিনাম যঙ্কীর্তন 
সম্প্রদাষ স্থাপিত হয। “দক্িপাঁড়া সক্কীর্তন সম্প্রদায়, কর্তৃক অনুকদ্ধ 
হয়৷ গিবিশচন্ত্র একখানি গান বীধিযা দিয়াছিলেন। সাময়িক সঙ্গীত 
যে ভাবে বচিত হয,_এ গীতখানিতে তাহা হইতে একটু নৃতনত্ব এবং 
বিশেষত্ব আছে । নিম্নে সংকীর্তন-গীতখানি উদ্ধৃত হইল £__ 


“কলিকাতা আনন্দধাম। 
প্লেগ বন্ধু হয়ে এসেছে হে ছড়াছড়ি হবিনাঁম ॥ 
কাঁপিরে ভূবন গগনভেদী রোল, 
হুহুঙ্কীরে উ্্‌লে উঠে হরি হবি বোল, 
মত্ত হয়ে নৃত্য সদ! গর্জে শত খোল, 
বঙ্কারে করতালি ঝঞ্চা সম অবিরাম ॥ 
মবণ তো হবে, এড়ায় কে কবে, 
চাঁব যুগে কে মরে এমন নামের উৎসবে? 
হরিবোল- বোল হরিবোল-_ 
হরি হরি- ধুলোট হয় ভবে, 


৪৩৬ গিরিশচন্দ্র 


ওরে ভয় কি তবে গভীর রবে-_ 

নাম গেয়ে আয় পৃবাই কাম ॥ 

যে নামে হয় বে মৃত্াঞ্জয়, 
তত্ব জেনে মত্ত হয়ে গার বে মৃত্যুঞ্জয়, 

যে অভয় নামে__নাঁই বে যমের ভয়, 
নামেব সনে হদমাঝাবে নাচে নব ঘনশ্যাম ॥ 

প্রেগ,__-থাকৃবি যদি থাক্‌, 

শমনদমন নামে শমন হঃয়েছে অবাক্‌, 
হরিনাম প্রাণভরে শোন, এই কথাটী বাখ্‌, 

নাম শুনে প্রাণ ত্জবে যে জন-_ 

কিনবে হবি গুণধাম ॥৮ 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 


লাঙ্িনিক্ে গ্িক্রিশীভক্র 


রামপুর বোয়ালিয়া হইতে কলিকাতায় ফিবিয়া আঁসিবাঁর অল্পদিন 
পবেই গিরিশচন্দ্র নাট্যবথী স্বর্গীয় অমবেন্দ্রনাথ দণ্ডেব প্রতিষ্ঠিত ক্লাসিক 
থিয়েটাবে যোগদান করেন। অমরেন্দ্রনাথ স্থবিখ্যাত “বেলিব্রাদার্স 
অফিসেব মুতস্দ্দী ৬ঘারিকানাথ দক্ডেব তৃতীয় পুত্র এবং পণ্ডিতবর শ্রীযুক্ত 
হীরেন্দ্রনাথ দত্ত মহাঁশয়েব অনুজ ছিলেন। আশৈশব নাট্যান্ুরাগ বশতঃ 
অমববাবু গিবিশচন্ত্রের নিকট প্রায়ই যাতায়াত কবিতেন। তিনি দৃব 
সম্পর্কে গিরিশচন্দ্রেব ভাঁগিনেয় ছিলেন। অমরেন্দ্রনাথের বিনয়, সৌজন্ত 
এবং মিষ্টভাষিতায় গিবিশচন্ত্র প্রথম হইতেই ইহাকে শ্নেহের চক্ষে 


দেখেতেন। 


দ্বিতত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৩৭ 


সান্নিক্ সত্ররেল্স সম্পীদতক্ভ 
বিংশতি বসব বয়ঃক্রমে অমববাবু গিবিশচন্ত্রকে সম্পাদক করিয়া 
“সৌরভ” নামক একখানি মাসিকপত্র ১৩*২ সাল, শ্রাবণ মাস হইতে 
বাহিব করেন। এই মাসিকপত্রে গিবিশচন্দ্রের কয়েকটা প্রবন্ধ ও কবিতা 
প্রকাশিত হইয়াছিল, এবং “ঝালোয়াব-দুহিতা” নামে একখানি উপন্যাস 
ক্রমশ: বাহিব হইতে থাকে । কাগজখানি বেণী দিন চলে নাই। 


ক্লাসিক শ্রিজেজোল্র শ্রভিষ্ী 

মমববাঁবু তাহাব ন্বনাবজাত নাট্যপ্রতিভাব উন্মেষণীয়, বেলি 
বাডীব কেসিষাঁবেব পদ পবিত্যাগ কথিয়। নাট্যাভিনয়ে প্রণোদিত হন। 
গিবিশচন্ত্র তখন মিনাঁত। থিয়েটাবে,__তীহাবই নিকট শিক্ষাগ্রহণ করিয়। 
এবং তাহারই পৃষ্ঠপোষকতার অমববাধু লব্ধপ্রতিষ্ঠ অঠিনেত। শ্রীযুক্ত চুনীলাল 
দেব, শ্রীযুক্ত স্ববেন্নীথ ঘোষ ( দানিবাবু) প্রভৃতি মিনার্ত৷ থিয়েটারে 
অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণকে লইয়া €1770197) 10174008610 010” নাম 
দিয়া করিগ্টিয়ান এবং মিনা থিয়েটাবে ছুই বাত্বি “পলাশীর যুদ্ধ” 
অভিনয় কবেন। অমববাবু স্বয়ং সিবাজনোৌলাব ভূমিকা অভিনয় করিয়া 
স্থনট বলিয়া সুখ্যাঁতিলাভ করিয়াছিলেন। অতঃপর ১৩০৩ সালের শেষ 
দিকে তিনি এমাবেন্ড থিয়েটার ভাড়া লইয়! ক্লাসিক থিয়েটার প্রতিষ্ঠিত 
কবেন। 


* অর্ধেন্দুবাবুব পব বেনাবসী দাস নামক জনৈক মাডোযারী এমাধেন্ড থিয়েটাব ভাড। 
লইয়াছিলেন। ১৩০২ সাল পথ্যন্ত এইবাপ নানাভাবে কাটিবাৰ পৰ ১৩০৩ সালে প্রথম 
হইতে ম্বগীয নীলমাধব চক্রবর্তী প্রমুখ সিটি সম্প্রদ্ধাষ “এমারেন্ড' ভাড়া লইয| প্রায় দশ মাস 
অভিনয় করেন। ্বর্ীয় অতুলকু্ণ মিত্র কর্তৃক নাটকাকাবে পবিবন্তিত বন্ধিমচন্দ্রের 
"দেবী চৌধুবাণী” অভিনয কবিয! সিটি খিয়েটাব সুপ্রতিষ্ঠিত হইয়! উঠিতেছিল। এমন 
সময়ে এমাষেন্ড থিয়েটার অমববাবুব হস্তগত হইল । 





৪৩৮ গিরিশচন্দ্র 


ক্লাসিক থিয়েটাবেও গিরিশচন্দ্র ষ্টার খিযেটাবেৰ ন্যায় ম্যানেজারেব 


পদ গ্রহণে অসনম্মত হওয়ায় “নাট্যাচাধ্য” বলিয়া তাহার নাম বিজ্ঞাপিত 
হইয়াছিল। প্রথমে আসিয়া তিনি কোনও নৃতন নাটকাঁদি বচন! কবেন 





নাই। মধ্যে মধ্যে প্রফুল্ল, মেঘনাদ বপ, দক্ষবজ্ঞ প্রভৃতি নাটকে যোগেশ, 
মেঘনাদ ও রাম, দক্ষ প্রভৃতিব ভূমিকাডিনয় করিতেন মাত্র । 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৩৯ 


ক্লাসিকে গিবিশচন্দ্রের যোগদানের পূর্ধেও অমরবাবু তাহার নিকট 
যাতায়াত করিতেন এবং থিয়েটাব সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে তীহাৰ উপদেশ 
এবং সাহায্য গ্রহণ করিতেন। হবিবাজ, কাজের থতম, আলিবাবা, 
নাট্যাকাবে গঠিত বঙ্িমচন্দ্রের ইন্দিরা» নির্মল! গ্রভৃতি এ পর্য্যন্ত র্লাসিকে 
অভিনীত অধিকাংশ পুস্তকই গিবিশচন্ত্র দেখিয়া দিয়াছিলেন এবং 
“আলিবাবায়” কয়েকখানি গানও বীধিয়া দেন। 
গিল্লিশ্শচতেক্রল্র লখকল্সশে আস্াব্র হাগ্গদান্ন 

ক্লাসিকে গিবিশচন্দ্রেব প্রথম বচন! “দেলদাব |” তাহাৰ লেখকবপে 
নিযুক্ত হইয়া এই দেলদার__আমার প্রথম লেখা । গিরিশচন্দ্রের হৃদয় 
যেপ উদার, সেইবপ ন্নেহপ্রবণ ছিল। আমি নিধুক্ত হইবাব পব 
তিনি আমাঁব পিতৃপবিচয় প্রাপ্ত হন। সেই হইতে বন্ধু-পুত্র-জ্ঞানে জীবনের 
শেষ দিন পর্যন্ত আমীকে অকপট পুন্র-ন্নেহে প্রতিপালিত করিয়াছিলেন। 
কিন্ত আমা জীবনেব এই পবম স্থুযোগ এবং সৌভাগ্যলাভেব মূল শ্রীযুক্ত 
দেবেন্্রনাথ বন্ু__গিবিশচন্দ্রেব পিতৃত্বসেয়। ইহাব ভ্রাতুষ্পুত্র স্বগীয 
ভূপেন্্রনাথ বস্থুর সহিত বিশেষ ঘনিষ্ঠতা থাকায় আমি প্রায়ই ইভাদেব 
বাডী যাইতাম। ইত:পুর্ববে আমি সামুদ্রিকবিদ্ভাবিশারদ স্বর্গীয় বমণরুষ্ণ 
চট্টোপাধ্যাষ-প্রতিষ্ঠিত ও সম্পাদিত 'অন্রষ্ট* নামক মাসিক পত্রিক 
পরিচালন কবিতাম। রমণকঞ্চবাবুব অকালমৃত্যুতে এই কাগজথানি 
বন্ধ হইয়! যাঁয়। দেবেন্্রবাবু আমাকে কর্মপ্রার্থ জানিয়া, গিরিশচন্দে 
নিকট লইয়া যান এবং আমাকে তাহার লেখক নিযুক্ত করিয়া! দেন। 

তাকাল 

২৮শে জ্যৈষ্ঠ (৯৩০৬ সাল ) ক্লাসিক থিয়েটাবে গিবিশচন্দেব "দেলদাব” 
গীতিনাট্য প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাতিনয় বজনীর অভিনেতা ও 
অভিনেতৃগণ £-_ 


88৪০ গিরিশচজ্জ্র 


দেলদাষ-_শ্রীযুক্ত নৃপেন্দ্রচন্্র বন্থ, নেসা- শ্রীযুক্ত পূর্ণচন্ত্র ঘোষ, গহন-__অমধেব্দ্রনাথ দত্ত, 
সবল-_শ্ীযুক্ত সববেন্দ্রনাথ ঘোষ ( দানিবাবু ), কুহকী- অঘোবনাথ পাঠক, পিযাসা-_ শ্রীমতী 
কুহমবমারী ধাধা ভূষণকুমাবী, বেখা _প্রমদাহুন্দবী, কুহকিনী- শ্রীমতী পান্নাবাণী। 
সঙ্গীতশিক্ষক- শ্রীযুক্ত পূর্ণচন্ত্র ঘোষ. নৃতাশিক্ষক-_ শ্রীযুক্ত নৃপেন্্রচন্্র বহু, বঙ্গতৃমি- 
নজ্ঞ।কব-__-আশ্তোষ পালিত। 

'্বপ্নেব ফুল” গীতিনাট্যেব সায় “দেলদাকখাঁনিও একখানি রূপক । 
সাইত্রিশ বসব বয়সে গিরিশচন্দ্র 'মোহিনীপ্রতিমা” লিখিয়াছিলেন। 
তাভীব সহিত এই দেলদাবেব কিছু কিছু সারৃশ্ত আছে। অভিমীনশন্ত 
নিঃস্বার্থ ভালবাস! পাষাণ-প্রতিমাকেও সজীব কবে, 'মোহিনী প্রতিমা'ব 
এই চিত্র “দেলদাঝে পরিশ্ফুট হইয়াছে। 

দেলদাব গীতিনাটোব প্রস্তাবনায় গ্িবিশচন্দ্র বলিতেছেন, _এই 
দুনিয়া! বিপবীত-ন্ী অর্থাৎ ভালমন্দমিশ্রিত। ইহাতে ভাল দেখিলে 
সবই ভাল, মন্দ দেখিলে সবই মন্দ । কৰিব ভাব বুঝাইবাঁর জন্য আমবা 
প্রস্তাবনা-গীতটী নিম্নে উদ্ধৃত কবিলাম :-_ 

“চল্‌ চল্‌ ছুনিয়৷ দেখে আসি আয। 
গুনেছি সখেব বাজাধ, সথ ক'ষে পায় যে যা চাষ ॥ 
বিকোয সুধা আব গবল, কুটীল আব সবল, 
বিকোয অনল শীতল জল, 
মনেব গুণে বিকোয সখেৰ ফল , 
সুধা ফেলে গবল কেনে এমন সথ কে কোথায় পাষ। 
কেন সথে জ্ব'লে হয়লো৷ সাবা, সথ হ'লে ত' নিবে যায়” 
যে সরল মনে _খোঁলা প্রাণে--ভাল চোখে ভাল দেখে»_-এ ছুনিয়ায়' 
মনের গুণে সেই সথের ফল পায়। দেলদার--প্রন্তাবনায় তাহাই 
বলিতেছে £- 
প্রনিয়ায় সবই দেখ্বার--ওর আর রকম-বেরকম নেই। মন্দকিছু 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 8৪১ 


না দেখলেই মন্দ নেই,__ভাঁল না দেখলেই ভাল নেই। আমি ভালই 
দেখি, মন্দ দেখিনে।” ইহার অনতিপূর্বেরেই সে বলিয়া'ছে “জেনেশুনে 
দেলদাবি হয় না। ভালমন্দ জেনেষে দেলদীবি কবে, তাৰ দেলদ!বি 
নয _-ঝকৃমারি !” 

এ দেলদাবি অর্থ - ভাঁলমন্দ নির্বিচাবে আপনাকে বিলাইয়া দেওয়!। 
“মোহিনীপ্রতিমা” গ্বীতিনাট্যেব “জাহানা,_ দেলদাবে পবিস্বুট হুহয়াছে। 
সাহানা বাঁলতেছে,_“আমি তাবে যত ভালবাসি, তিনি যদি তত 
ভাঁলবাম্তেন তাহলে তাৰ হাত ধ'বে, আমাৰ ব'লে প্রথম যেদিন 
দাড়াতেম, তখন আমাঁদেব পবম্পরেব মুখেব ভাঁব দেখে, তার কঠোঁব 
প্রাণও তৃপ্ত হ'ত 1৮ (২য় অঙ্ক, »য় গর্তাঙ্ক ) দেলদাব একই কথা 
বলিতেছে,_ “যখন বকের বায়ে দাডিযে মুখ চেপে হেসে, আঁড়নরনে 
দেখ্বে, ছু'জনেব মুখ দেখেই আমাঁব ঘটক বিদাঁয় পাঁব।৮ : প্রস্তাবনা ) 

্বার্থশূন্ত এই ভালবাসাব চিত্রই উভয় গীতিনাট্যেব কল্পনা । 
গিবিশচন্দ্র কথনও কখনও একটী মহাজন-পদ বলিতেন -_ 

“সথী-ভ।ব হাদে ধবে!, যতন কবো, সদাই থাকো ঝাপ নেহাবে। 
খেলে সে প্রেমেব ননি. সতা বাণী, কাম-কামন! যাবে দূবে ॥৮ 

এই ইঙ্গিতে উপর সাঁহান৷ এবং দেলদীব গঠিত। ইহাই গৌড়ীয় 
বৈষ্বগণ বণিত সখিতাব, এবং সখী ব্যতীত প্রেম-চিত্র সম্পূর্ণ হয় না। 
“মোহিনী-প্রতিমাস্ৰ সর্বশেষে গিরিশচন্দ্র তাহাই ইঙ্গিত করিয়াছেন । 
হেমন্ত সাহানীকে বলিতেছে, শুধু আমাদের মুখের ভাব তুলিতে তুল্লে 
হবে না,__এ মুখখানিও চাই। আমার হৃদয়ের যোগিনীও সেই পুরুষ 
প্রকৃতির আরাধনা! ক'র্বে।” 

বাহুল্যভয়ে আমরা *দেলদারের বিস্তৃত আলোচন! করিলাম না।. 
কেবল মুল ভাবের ইঙ্গিত করিলাম মাত্র। ইহাতে আর একটা কথা 


৪৪২ গিরিশচন্ক্ 


বলিবাব আছে, এই গীতিনাট্যে গিরিশচন্দ্র ছুইটী নৃতন সৃষ্টি করিয়াছেন__ 
ভাবসঙ্গিনী ও স্ববসঙ্গিনী। মনেব ভাব ও প্রাণেব কথা যেন মুন্তিমতী 
হইয়া ইহাঁদেব সঙ্গীতেব ভিতর দিয়া সপ্রকাশ হইতেছে । পুবাতন 
গ্রীশদেশীয নাটকে “কোবাঁস” যে কার্ষ্য কবে, এই ভাব ও স্ববসঙ্গিনীদেব 
কাধ্য কতকট! তাভাবই অগ্চুৰূপ | 
এই গীতিন।ট্যেব সঙ্গীত-বচনায় গিবিশচন্দ্র তাহাব অসাঁমান্ত কবিতব- 
শক্তিব পবিচয দিধাছেন। £ষ্টান্তম্ববপ নিম্নে ছুইখানি গীত উদ্ধত 
কবিলাম 1 
১ম। পিযাস! ও স্ববসর্গিনাগণ-_ 
“কমন ফুল প"বেছে (মদিনা, 
তবাপ ভাবে তউ৮5। মোজ, দেখা এল যাঁননী । 
নার্মিনা ম।ভিনা (বাশ, (দাখ চাদ যায ভোস হেসে, 
তই “দিনা যনামাহিনী, গববে আমোদিনা । 
নাখতে শশী, বাখ্তে নিশিব মান, 
অবোল! পাখীব মুখে গ।ন, 
গানে প্রাণ মিলিয়ে মমান, ঢালুবো তান-তথঙ্গিনী ॥ 
২য। দেলদাব ও স্বব-সঙ্গিনীগণ__(হাখ্িব__পঞ্চম সোয়াবী ) 
শভিম।ন ভাব সাজ যে বাখ্তে জানে মান। 
ভাপ নয মায শুকিয়ে ফুলধন! বাগান ॥ 
ন। জানি কেষন মনে কান, 
নাবে ছাডতে অভিমান, 
মনেব ছলে, আগুন জেলে, প্রাণ কৰে শ্ুশান ॥ 
সাধতে কি সাধ কবে না, 
ধব্তে সেধে মন সরে না 
মনৰ ঘোবে বুঝতে নাবে নেব টান। 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 8৪৩ 


2াওু্র-লৌন্রব্র 

“দেলদাৰ” অভিনীত হইবাব পব অমববাবুব *শ্ররুষ” গীতিনাট্য 
“মজা+ নামে একখানি প্রহসন এবং তৎকর্তক নাটকাঁকাবে গঠিত বাস্কম- 
চন্ত্রেব কৃষ্ণকান্তেব উইল- ভ্রমর” নাম দিয়া ক্লাসিক থিয়েটাবে বিশেষ 
স্খ্যাতিৰ সহিত অভিনীত হয়। “মজা” অনেকগুলি গীত গারশচন্ত্ 
বাধিয়া দিযাছিলেন এবং “ভ্রমবেব বাকণীপুকুব ও পোষ্টাকিসেব দুইটা 
দৃশ্য লিখিযা দেন। “ভ্রমর অভিনযে ক্লাসিক থিযেটাৰ সুধশে এবং 
প্রভৃত মর্থ-সমীগমে সুপ্রতিষ্ঠিত হইয়া উঠিযাঁছিল। 

৬ই ফাল্গুন (১৩০৬ সাল) ক্লাদিকে গিবিশচন্দ্রেব 'পাগুব-গৌবব 
প্রথম অন্ভিনীত হয। প্রথমাভিনয় বজনীব অভিনেতা ও 
অভিনেত্রীগণ £_ 

দরণ্ডী_ পণ্ডিত এহনিভুষণ ভটাচ।য্য, কঞ্চকী-শিবিশচন্্র (ঘাষ, ভীম্_মাহন্দ্লাল বনু, 
ভীম অমবেন্রনাথ দত্ত, ব্রন্গা-_শশীভূষণ ঘোষ, মহাদেব ও দুব্নাসা_ চও্ডচবণ দে, 
উন্্ অনিকদ্ধ, বিছুব ও সহদেব- শ্রীযুক্ত হীধ(ল।ল চট্টোপাধ্য।য, কাণ্তিক ও হুর্যোধন__ 
গ|ষ্ঠবিহাবা চক্রবন্তী, নাবদ, শকুনি ও দ্বাবকাব দূত-_অক্ষষকুমাষ চক্রবর্তী, বলবাম- শ্রীযুক্ত 
নতীক্্রনাথ দে শ্রীকৃষ্ং_প্রমদান্রন্দনা, সান্যকী ও কর্ণ-_ শ্রীযুক্ত অতীন্দ্নাথ ভটাচার্য্য, 
প্রায় ও নকুল-_্রীযুক্ত ক্ষিতীশচন্দ্র ভট্টাচাষা, ড্রোণ ও সহিস- শ্রীযুক্ত শ্রীশচন্ত্র বাঘ, 
যুধিষ্তিব_-নটবৰ চৌধুবী, অজ্জ্কন_ শ্রীযুক্ত নীলমণি ঘোষ, দুংশাসন__তিতুবাম দীস, 
প্রতিকামী ও দূত--বনমালী দাস, ঘেসেডা-্রীযুক্ত নৃপেন্দ্রন্্র বন, কুন্তী-_হবিমতী 
( গুলফম), রুক্সিণী_ভূষণকুমাধী, সবতদ্রা-_তিনকডি দাসী, দ্রৌপদী--শ্রীমতী গোলাপ- 
সুন্দবী, উব্বশী-_শ্রীমতী কুন্ুনকুমাবী, উত্তব| শ্রীমতী টুকুমণি, জয়-_বাণীমণি,ঘেসেডানী-_ 
লক্ষ্মীমণি। সঙ্গীতশিক্ষক-_ শ্রীযুক্ত জানকীনাথ বনু, নৃত্যশিক্ষক- প্রযুক্ত নৃপেন্দ্রন্্র বন্থ, 
বঙ্গতৃমি-সজ্জাকর-_আশগুতোষ পালিত। 


পাঁগুব-গৌরব+__গিরিশচন্দ্রের স্ুবিখ্যাত পৌরাণিক নাটক। এই 
নাটকেব অভিনয়ে ক্লাসিক থিয়েটার দেশব্যাপী গৌরবলাভ কবিয়াছিল। 


88৪ গিরিশচন্দ্র 


নাটকেব ৪র্থ অঙ্কে গিবিশচন্দ্র ভীম্মেব মুখ দিয়া বলিযাঁছেন,__“মীয়াব 
সংসাবে ধর্ম মাত্র ্বতাবা”-_সেই ধর্্মেব আবার সাব ধর্ম “আশ্রিত 
রক্ষণ_ইহাই নাটকেব ভিত্তি । 

দণ্ডীব উপাখ্যান মহাভারতেব অন্তর্গত নহে, _ণ্তীপর্ধর বলিয়া 
একখানি পৃথক গ্রন্থ আঁছে, তাহা হইতেই এই নাটকেব উপাদান সংগৃহীত । 
গিবিশচন্ত্র কুকক্ষেত্র যুদ্ধেব পূর্বে নাটকীয় ঘটনাব কাল নির্দেশ 
কবিয়াছেন। এই কাল নির্দেশ তীহাঁৰ নাটকত্ব-চ্জানেব বিশেষ 
পবিচায়ক। ছুই চাঁবিজন ব্যতীত ভাঁবতেব সকল বিশিষ্ট বাঁজাই 
কৌববপক্ষ অবলখন কবিয়াছে। পাগুবপক্ষে এই ছুই চাবিজন সহায়, 
আব ভবশ|_ ধন্মবল এবং শ্রীরঃ। এই সঙ্কট সমযে ঘটনা-চক্রে 
শ্রীকৃষ্ণকে বৈবী কবিতে হইল । যিনি এই বৈবিতাঁব মূল_-তিনি আবাঁব 
শ্রীকজেব ভগিনী-_"সুভদ্রা সম্বন্ধে ফু পবম আন্মীর |” কিন্তু পাঁওবেব 
বল ধর্ম আব বসা যে শ্রীকৃষ্ণ, অবি--তিনিউ,__উহাঁবই সহিত সাংঘাতিক 
যুদ্ধে পাগডবগণেব প্রাণান্তিক পণ। ঘটনাব সংঘর্ষে, ঘাত-প্রতিঘাঁতে, 
হৃদয়-ছন্দে এব* চবিত্র-পবিপুষ্টিতে গিবিশচন্দ্রেব পাঁওবগৌবব অপূর্বব। 


গিল্রিম্পচত্দ্রেক্র ীনল্লাণিক চল্লিভ্র 


বীব এবং ভক্তি এই দুই বস এ নাটকেব জীবন। গিরিশচন্ত্র 
পোবাঁণিক চবিত্র বিকৃত কবিয়! নাটক লিখিবাঁব পক্ষপাতী ছিলেন না। 
তিনি বলিতেন-__-এই সকল চবিব্র অক্ষুণ্ন রাখিয়া ব্যাস-বান্মীকির স্থষ্টির 
ছায়ামাত্র প্রতিফলিত করিতে পাঁবিলেই যথেষ্ট কৃতিত্ব । আমাদের পুরাণ 
__ভাঁৰ এবং চবিজ্রস্থষ্টিব অক্ষয় ভাগাব,_-“এমন পাঁচ সাতটা সেক্ষপীয়রকে 
আসিয়া শিখিতে হইবে, ব্যাস-রচিত ভারতে কি কি ভাৰ আছে। 
ম্যাকবেথ, হাঁমলেট, ওথেলো, লীয়ার প্রভৃতি সেক্ষপীয়র-রচিত উচ্চশ্রেণীর, 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 8৪৫ 


নাটক। এসকল কঠোর নাটকেও পিতার আদেশে মাতার মন্তকছেদন 
নাই, গর্ভস্থ শিগুবধ নাই এবং কোন জাতীয় কোন নাটক বা কবিতায় সুপ্ত 
শিশুহস্তা অশ্বথমাঁরও মার্জনা! নাই ।” ( “পৌবাণিক নাটক” প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য ) 

কুরুপাগুবেব সাংঘাতিক সংঘর্ষেব পূর্বে এই নাঁটকেব চবিন্ত্র সকল যেন 
আশগ্মেয়গিবিব কন্দবকদ্ধ গৈরিকেব ন্তায় গজ্জিয়া উঠিতেছে। এক পক্ষে 
শ্রীকৃষ্ণ এবং অপব পক্ষে তীম্ম, ভীম, অর্জুন এমন ভাবে চিত্রিত এবং পবিপুষ্ট 
হইয়াছে যে সে ওজ্জল্যে গিবিশচন্দ্রের নাম বঙ্গসাহিত্যে চিবদিন সমুজ্জল 
হইয়া থাকিবে । নাটকীয় ঘটনায় উর্ব্বশীব চবিত্র প্রধান হইলেও স্ুৃভদ্রা 
এই নাঁটকেব নাধিকা | স্থৃভদ্রা একদিকে যেমন 'প্রতিজ্ঞায় কঠিনা। 
অন্যদিকে তেমনই কাকণ্যে কোমলা। 

রুগী চক্তিভ্রেন্স হিশ্পিউভা। 

কিন্তু এই নাটকে অতি অপূর্ব স্বষ্টি__কঞ্চুকী ; ব্রাহ্মণ-_-সত্যভাষী, 
সবল বিথ্বাসী এবং প্রভৃব কল্যাণ সাধনে দপণ ও নির্ভীক। বয়স 
যে কত হইয়াছে, তাাব নির্ণঘ নাই, নিজেই একস্থলে বলিতেছে,_ 
“আচ্ছা! দ্যাখ, আমাব কত বযস ঠাওবাচ্ছিস্? খুব বস তো মনে 
কচ্চি? তা তাই বটে। আচ্ছা মনে কব, তোব মত ছুড়ীও 
দেখেছি, তাব মত কেলে ছোঁভাও দেখেছি । দেখেছি ত-_-বল ?-_ 
আচ্ছা । কিন্তু তাৰ মত আমি ছোড়া দেখিনি ।-_-তার কি কল্পি বল? 
কেমন? তুই বল্বি, আমি বুড়ো হয়ে বোকা হয়েছিঃ পুব পশ্চিম 
জানিনি। "আমায় সেই ছোড়া বলেছিল, পুব-পশ্চিমেব ধার ধারিসনে। 
বলেছিল,_-সব বিশ্বাস কবিস।” (৩য় অঙ্ক, ৪র্থ গভাঙ্ক ) গিবিশচন্্র 
এই বুদ্ধের মুখে বার্দক্যেব যে ভাষা যোজনা কবিয়াছেন, তাহাও অতি 
অপূর্ব তিনি তাহাব নাটকে যে সকল বিদষক-চবিত্র চিত্রিত কবিয়াছেন, 
তন্মধ্যে জনা ও তপোবলেব বিদূষক ( সদানন্দ ) বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য । 


৪৪৬ গিরিশচজ্ 


কঞ্চুকী যদিচ বিদূষক নহে, কিন্তু অপর ছুই বিদূষক--নাটকে যে কাজ 
কবিতেছে, কঞ্চুকীব বর্তমান কার্য একই প্রকাঁবেব। ইহারা সকলেই 
সত্যবাদী, সবলবিশ্বাসী এবং প্রতুব পরম হিতৈষী। কিন্তু অবস্থাগত হইয়৷ 
এই তিন চবিত্রই পবম্পব পৃথকভাবে গঠিত হইয়াছে । তুলনায় 
সমালোচনা কবিবাব পক্ষে আমাদের স্থানাভাব এবং অন্যান্ত চবিত্রেবও 
উক্তি উদ্ধত কবির! বিশদ আলোচন! করিতে হইলে সমগ্র পুস্তকখানি 
উদ্ধত কবিতে হয়। এজন্য আমরা চবিত্রেব মূলভাঁবেব ইঙ্গিতমাত্র কবিয়া 
ক্ষাস্ত হইলাম। 

গিবিশচন্ত্র স্বয়ং কঞ্চকীব ভূমিকা গ্রহণ কবিয়! সরল বিশ্বাসী, প্রতৃভক্ত 
ব্রাহ্মণেব চিত্র হাঁবভাব এবং কথাবার্তীয় যেন মূর্ত্য কবিয়া তুলিয়াছিলেন। 
উদার, দৃঢপ্রতিজ, নিভীক ভীমেব ভূমিকাঁভিনয়ে অমবেন্ত্রনাথ অসামান্ত 
কৃতিত্বেৰ পৰিচয় দিয়াছিলেন। স্তৃভদ্রা, উর্বশী, ভীম্ম, দণ্তী, শ্রীকৃষ্ণ, 
ঘেসেড়া, ঘেসেড়ানী প্রভৃতি প্রত্যেক চবিব্রেবই সর্বাঙ্গ স্থন্দব অভিনয 
দর্শনে দর্শকমণ্ডলী পবম পবিতৃপ্ত হইয়াছিলেন। সঙ্গীতাচাধ্য শ্রীযুক্ত 
জাঁনকীনাথ বন্থু মহাশিয় কর্তৃক স্ুমধুব স্থর-সংযোজনায় এবং তাহাব শিক্ষায় 
স্থভদ্রার ভূমিকায় তিনকড়ি দাসী তাহাঁব অসাধাবণ অভিনেত্রী-গৌববেব 
সহিত সুগায়িকা বলিয়া পবিগণিতা৷ হন । 

কবিবব নবীনচন্ত্র সেন একদিন সন্ত্রীক অভিনয় দেখিতে আসিয়া- 
ছিলেন। অভিনর়াস্তে তিনি অমরবাবুকে বলেন, “অভিনয় দর্শনে মুগ্ধ 
হইয়াছি। কৃষ্খসঙ্গিনীগণেব গীত শ্রবণে আমব! দু'জনে কেবল কাদিয়াছি। 
গিরিশের আমরা গোলাম হইয়া রহিলাম।” 

»া€ব-শৌৌল্লব ব্লু সহ্দহ্ছে একটী কা 

গিরিশচন্ত্রের সঙ্গে থাকিয়া আমি যে সকল নাটকাঁদির লেখকতা 
করিয়াছি, সে সম্বন্ধে যেটুকু বিশেষত্ব দেখিয়াছি, পাঠকবর্গকে তাহা! 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৪৭ 


উপহাব দিলাম | সাধারণতঃ নাটকের প্রথম দুই অন্ক লিখিতে তীাহাঁব 
একটু বিলম্ব হইত, যেন সন্তর্পণে পদক্ষেপ কবিতেছেন। এমন অনেক 
সময় হইয়াছে যে প্রথম অঙ্ক এমন কি দ্বিতীয় অঙ্ক পর্য্যন্ত লিখিয়া তিনি 
নিশ্মমভাঁবে ফেলিয়া! দিয়া নূতন কৃবিয়া আবাব মাবন্ত কবিয়াছেন। 
ক্রমে গল্প ও চবিত্র-পুষ্টিব সঙ্গে সঙ্গে তাহাব ভাব ও কল্পনা যত ক্ষত 
পাইত, ততই বচন! দ্রুত চলিত এবং ছাচে ঢালাই কবাঁব মত ম্ুস্পষ্ট 
আকাঁব ধাবণ কবিত। এই 'পাগ্ুবগৌবব বখন লেখা হয়,__রাত্রি 
জাগবণে অনভ্যাসবশতঃ লিখিতে লিখিতে আমাৰ সমযে সমবে বিষম 
নিদ্রাকর্ষণ হইত । তিনি ইহাতে বিবন্ত হইযা উঠিতেন। আমিও বিশেষ 
লজ্জিত হইতাম। এমনই কবিয়! তৃতীয় অস্ক পর্য্যন্ত চলিল। চতুথ অঙ্কে 
এইবূপ বাঁধা অতিশয় বিবস্তিকব হইবে বুঝিয়া আমি সে বাত্রে লিখিবাঁব 
সমযে উপযু যপবি তিন চাব বাটা চা পান কবিলাম। আমাব চক্ষে নিদ্রা 
নাই। যখন চতুর্থ অঙ্ক লেখা শেষ হইল, তথন বাত্রি আডাইটা। 
গিবিশচন্দ্র বলিলেন, “আজ এই পর্যন্ত থাক্‌। তুমি শোওগে।” শোব 
কি, তখন আমাঁব মনে হইতেছে যে মহানিদ্রা ব্যতীত এ চক্ষে আব ঘুম 
আসিবে না। তাহাকে বলিলাম,_-“আমাব চক্ষে আদৌ ঘুম নাই, লেখা 
চলুক না কেন?” শুনিয়া তিনি বলিলেন,_-ণবেশ, আমি প্রস্তত, আমার 
সব সাজান বহিয়াছে। তুমি পাব্লেই হ'ল, লিখিতে চাও-_লেখ।” 
পঞ্চম অঙ্ক আবন্ত হইল। তিনি বিভোর হুইয়া বলিয়৷ যাইতে লাগিলেন, 
আমিও দ্বিগুণ উৎসাহে লিখিয়া যাইতে লাগিলাম। নাটক সমাপ্ত হইল। 
সর্বশেষ সঙ্গীত “হেব হব-মনমোহিনী কে বলে বে কালো মেয়ে!" 
গানথানির প্রথম তিন ছত্র সঙ্গে সঙ্গে বাধিয়া তিনি বলিলেন,_ণ্থাক্‌, 
আজ এই পর্যস্ত। গানগুলি সব কাল বেঁধে দেব। তুমি দৌর- 
জানালাগুলো৷ খুলে দাও, ঘর বড় গরম হ'য়ে উঠেছে ।” দরজা-জানালা 


৪৪৮ গিরিশচক্্র 


খুলিয়া! দেখি-_বিলক্ষণ বৌদ্র উঠিয়াছে, ঘড়িব পানে চাহিয়া! দেখি-_বেলা 
তখন ৮টা। তিনি ব্যস্ত হইয়া বলিলেন,__“্যাও যাও, বাড়ী যাও, 
শ্লানাহাব ক'বে সমস্ত দিন ঘুমিয়ে সন্ধ্যাব পব এসো ৮ 
দ্বিভীক্সল্রাল্স মিন্নাড্ডাল্স 

পাঠকগণ জ্ঞাত আছেন,_মহেন্দ্লাল দাঁসের জমী লিজ লইয়া 
নাগেন্দ্রতৃষ্ণ বাবু মিনাত রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠিত কবিয়াছিলেন, এবং খণজালে 
জভিত হইয়া অবশেষে তিনি তাহাব বন্ধকাধীন ( ৪9%)9০৮ ০০ 
701012880 ) রঙ্গালয়েব অর্ধাংশ শ্রীযুক্ত প্রমথনাথ দাসকে বিক্রর কবেন। 

তৎপবে উত্তগেব দেনা দাঁয়ে উক্ত বন্ধকাধীন থিরেটাব-বাটী হাইকোটে 
নিলাম হয,__খুলনা'র উকীল স্বর্গীয় বেনীভূষণ বায় এবং বাবু অতুলচন্্র 
বায় উভয়ে উত্ত বাটা নিলামে খবিদ কবেন। শ্রীপুবের ( জেলা খুলন! ) 
নাধালক জমাদাব শ্রীযুক্ত নরেন্দ্রনাথ সবকাবেব বিষয়-সম্পত্তিব (969%০)র 
উল্ত বেণীভূষণবাবু ম্যানেজাৰ এবং অতুলবাবু তাহাৰ সহকাবী ছিলেন। 
নরেন্্রবাবু সাবালক হইয়! নাট্যানুবাগবশতঃ উহাদের নিকট উক্ত থিয়েটাব- 
বাটী উচ্চদরে ক্রয় কবিষা মিনার্ভা থিয়েটার পরিচালনে প্রবৃত্ত হন। 

নবেন্ত্রবাবু স্বরং নাট্যকাব এবং অভিনেতা ছিলেন। 'মদালসা” নামক 
তত্প্রণীত একখানি নাটক মিনাতা৷ থিরেটাবে প্রথম অভিনাত হয়, এই 
সমথে ৬তুর্গাদাস দে-প্রণীত “শা নামক একখানি নাটক আভিনাত 
হইয়াছিল, উওয় নাটকেই তিনি নায়কের ভূমিকা অভিনয় কথিয়াছিলেন | 
কিন্তু তাহাব থিয়েটার সেরূপ ওমিল না। 

এঁদকে ভ্রমব ও পাগুবগোববাদির অভিনয়ে ক্লাসিক থিয়েটাব বঙ্গ- 
নাট্যশালাগুলির মধ্যে সব্বোচ স্থান অধিকাঁব কবিয়৷ বসিয়াছে, স্থানাভাবে 
শত শত দর্শক ফিরিয়া যাইতেছে । উন্নতির এই চবম সময়ে কোনও 
কারণবশতঃ অমরবাবুর সহিত গ্িরিশচন্ত্রের মনোমালিন্ত ঘটে। এই 


[ঘচত্বার্িংশ পরিচ্ছেদ ৪৪৯ 


স্থযোগে নরেন্ত্রবাবু মিনার্তা থিয়েটারকে উন্নীত করিবার জন্ত গ্িরিশচন্ত্রের 
নিকট জাসিয়া পরম আগ্রহের সহিত তাহাব সাহায্য প্রার্থনা করেন। 
গিরিশচন্ত্র নরেন্ত্বাবুর স্বরূপ অবস্থ৷ শুনিয়! দয়া-পরবশ-চিন্তে তাহার 
থিয়েটাবে যোগ দিলেন। 

অমববাবুব চিন্তা হইল পাছে নিষ্রভ মিনা থিয়েটার গিরিশচন্দ্র 
প্রভায় পুনরায় সমুজ্জল হহরা উঠে। তিনি গিরিশচন্দ্রকে ক্লাসিকে 
আনিবাব সঙ্কল্পে তাহাব উপর 177)01)06191, বাহির কবিবার জন্য 
হাইকোর্টে মকদ্দমা রুজু কবিলেন। অমববাবুব তরফে ব্যারিষ্টাব ছিলেন_ 
মিঃ জ্যাকসন, 117 ৬ 0. 83806116৩ এবং মিঃ আব মি গিাঁবশবাঁবুব 
তবফে ব্যাঝিষ্টার ছিলেন-__মিঃ ইভান্স ও নিঃ গার্থ। বিচারপতি সেল 
সাহেবের ঘবে মকদ্দম| হয় । তীহ1ব বিচারে গিবিশচন্দ্রই জয়লাভ করেন। 


এনীভাব্াম্। অভ্ডন্স্্ 
মিনাভায় যোগদান কবিয়! ত্ববাঁয় নূতন ন।টক অভিনয়ে আয়োজন 
কবিবার জন্ত গিরিশচন্দ্র, বাঙ্কমচন্দ্রের “সীতারাম+ উপন্তাস_ নাটকাকাবে 
পরিবস্তিত কবিয়া দ্রিলেন। মকন্দম! প্রভৃতি লইয়া গিরিশচন্দ্র তখন এত 
ব্যস্ত ও বিব্রত যে নৃতন নাটক বচনা করিবাঁৰ সম্পূর্ণ সময়াভাঁৰ। এক 
সপ্তাহে “সীতাবাম? বিহীরস্তাঁলে পড়িল । 
৯ই আধাঁড় (১৩৭ সাল ) “সীতারাম* মিনার্ভ থিয়েটাবে প্রথম 
অভিনীত হুয়। 'প্রথমাভিনয় বজনীর প্রধান প্রধান অভিনেতা ও 
অভিনেত্রীগণ :__ 
সীতাবম__গিবিশচন্্ ঘোষ, গঙ্গ।বাম-_ শ্রীযুক্ত সুধেন্দ্রনাথ ঘোষ ( দানিবাবু), চক্রচুড-- 
অধে(বনাথ পাঠক, মুন্ময-্রধুক্ত প্রিষনাথ ঘোষ, শাহ ফকীব-্রীযুক্ত কালীচব্ণ 
বন্দোপাধ্যায,_গঙ্গাধৰ স্বামী- ঠাকুবদান চট্োপাধায ( দান্বাবু ), চাদশাহ-_ শ্রীযুক্ত 
কেদাবনাথ দাস, ফৌজদাব-গালক-_আঙ্গ।স, এ মোসাহেব- শ্রীযুক্ত নীলম্ণি ঘোষ, 
২৯ 


৪৫৬ গিরিশচন্দ্র 


পিযাবীলাল-_্রীযুক্ত কুঞ্জলাল চক্রবত্তী, পাঁড়ে_ কিশোবীমেহন কব, চণ্ডাল- শ্রীযুক্ত চুণীলাল' 
দেব, ভ্রী-তিনকডি দাসী, জয়ন্তী-_হ্ণীলাবাল!, নন্দা__সবোজিনী, রমা শ্রীমতী পুটুরাণ, 
মুবলা-_&মতী হুধীব।বাল! ( পটল ), ধাত্রী- শ্রীমতী হিঙ্গনবালা ( হেন ) ইত্যাদি। 
উস্পন্ঠাস্ এন নাটকে হৈহম্পিউ্ 

দুই চাঁরিটা দৃশ্য ব্যতীত উপন্তাসের প্রার সমস্ত দৃশ্য ও উঞ্জি গিবিশ- 
চন্দ্র নাটকে সন্ধিবেশিত করিয়াছিলেন । নৃতন সংযোজিত দৃশ্তের ভিতর 
তশ্লিখিত সীতারামেব পরিণাম দৃশ্ঠটী বিশেষ উল্লেখযোগ্য । যে সহান্ু- 
ভূতি আকর্ষণ নাটকীয় চবিত্র স্থষ্টির প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য-_বঙ্কিম- 
চন্দ্রের বরিত পবিণামে তাহা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হইয়া! বায়। কপজ মোহ-_ 
সীতারামের সর্বনাশের কারণ। বীব সীতাবাঁমকে বীবত্বের বমণীয় চিত্র 
দেখাইয়া সয়তান মজাইয়াছিল, কিন্ত মজাইলেও সয়তান একেবাবে 
তাহাকে মন্ুস্তত্হীন করিতে পাবে নাই। বঙ্ধিমচন্দ্রের বর্ণনায় এই মনুম্তত্ব 
বকারে পরিণত হইয়াছে,__কিন্তু গিবিশচন্দ্রেব পবিণাম-দৃশ্যে তাহা 
উজ্জলভাবে ফুটিয়া উঠিয়াছে। নাটকের এই পবিণাম-দৃশ্তে সীতারামেব 
অন্তদ্বন্দে দর্শকবুন্দ সীতারামেব উপব সম্পূর্ণ সহান্ুভূতিসম্পন্ন হইয়া 
অশ্রুসিক্ত নয়নে বঙ্গালয় ত্যাগ কবেন, ইহ আমর! বহুবার দেখিয়াছি । 
উপন্থাঁস এবং নাঁটকেব পাথক্য-_-আবও একটু বিশদভাবে আলোচন৷ 
করিলে আমাদেব বক্তব্য পাঠকবর্গেব হদয়ঙ্গম হইবে। উপন্যাসে সীতা- 
বামেব পৰিণাম বণিত হইক্সাছে,__“সীতারাম অনায়াসে নিজ মহিষী 
ও পুত্রকন্তা ও হতাবশিষ্ট সিপাহীগণ লইয়া মুসলমান কটক কাটিয়া 
বৈরিশূন্য স্থানে উত্তীর্ণ হইলেন।” শ্রী ও জয়ন্তী সম্বন্ধে বণিত হইয়াছে-_ 
“সেই বাত্রিতে তাহার কোথায় অন্ধকারে মিশিয়া গেল-_কেহ+ 
জাঁনিল না।” 

ইহাবই পূর্বের শ্রী, সীতারামেব পায়ে হাত দিয়া বলিয়াছে--“আমি 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 8৫১ 


আব সন্যাসিনী নই, আমার অপবাধ ক্ষমা করিবে? আমায় আবার 
গ্রহণ করিবে?” পাঠক এবং দর্শককে এতদুঝ পর্যন্ত প্রস্তত করিয়া 
আনিয়া বঞ্চিমবাবুব বণিত অনিশ্চিত পবিণ।ম-_চিত্তাকর্ষক হয় না। 
শা মৃত্যু সঙ্গল্প করিয়া আসিয়াছিল। তাহা ঘটিল না । সীতারামও 
মৃত্যু সংস্কল্প কবিয়া দুর্গেব বাহিব হইয়াছিলেন, কিন্তু কতকটা তাহাব 
নিজের বীর্যের এবং কতকটা শ্রীভগবানের অন্ুকম্পায় তাহা ঘটিল না। 
সীতারামেব চরিত্রহীনতায় ভাগ্যেব পবিবর্তনে তাহাব মস্তিক্ষে যে 
বিপর্যয় উপস্থিত হইয়াছে, তাহাতে পতি-পত্বীভাবে শ্রী ও সীতারামের 
মিলন সম্ভবপৰ নহে। গিরিশচন্দ্র এইন্প অবস্থায় যে পবিণাম-দৃশ্য 
কল্পনা কবিয়াছেন, আমবা তাহাব কিষদংশ নিয়ে উদ্ধত করিলাম। 
পাঠক তাহা হইতে গিবিশচন্দ্বেব কৃতিত্ব বুঝিবেন।-- 

ভাগ্য বিপর্যয়ে ধেন কুহকাচ্ছন্ন সীতারাম জীবনেৰ ঘটনা বিশ্লেষণ 
কবিরা আপনাকে আপনি ঠিক চিনিতে পাবিতেছেন না, ভাঁবিতেছেন__ 

“জীবনে কোনটা ঠিক ? আমি সীতারাম--ভাবতবিজয়ী যবন বিরুদ্ধে 
হিন্দুবাজ্য সংস্থাপন কর্বো_-সেইটে ঠিক? -একাকী প্যারীলালের 
সাহাধ্যে যবনসৈন্ধ জর কবেছি - সেইটে ঠিক? হিন্দুব জন্য সর্বস্ব অর্পণ 
ক+বে জীবনদানে প্রস্তুত ছিলেম--সেইটে ঠিক? কি রণবঙ্গিণী মৃত্তি দেখে 
উন্মাদ হ,য়েছিলেম-__সেইটে ঠিক? তার জন্ত পতিপ্রাণা বমাব মৃত্যু 
কাবণ হঃয়েছিলেম, মেইটে ঠিক? নন্দাব বিষপানে মৃত্যু-_সম্তান- 
সন্ততির মুখে মিষ্টান্রের স্তায় বিষ প্রদান-_সেইটে ঠিক?-না কোনটা 
ঠিক? আমি কোন্‌ সীতারাম? প্রজাপালক-_হিন্দধর্ব-সংস্থাপক-_ 
আ'ত্মত্যাগী--পরহিতরত সীতারাম-__-সেইটে ঠিক না কোনটা ঠিক? না 
কামুক সীতারাম-_সেইটে ঠিক ?” 

ভারনার কুল ন! পাইয়া হৃদয়-্বন্দে ব্যাকুল হইয়া সীতারাম কাতর 


৪৫২ গিরিশচজ্জ 


প্রাণে ভাবিতেছেন,__“দেহস্থখ এ' মন্াস্তিক দুঃখের কারণ--সত্যই 
কারণ,_ বোধ হয় বুঝেছি, না বুঝে থাকি--ভগবান। এ দুঃখের সময় 
বুঝিয়ে দাও!” সীতারামেব শ্রীব প্রতি বিরাগ আসিয়াছে কিন্তু মোহ 
কাটিতেছে না,_-এই সময়ে শ্রী আসিয়। বলিল,__“মহারাজ, আমায় 
গ্রহণ করুন ।” 

বিক্ষিগুচিত্ত সীতাঁবাম বলিলেন _ “ক"র্বো_ কণব্বো-- গ্রহণ করবো 
নদীর জলে গ্রহণ করবো কি কোথায় গ্রহণ কণব্বো ? দেখ-_অট্রালিকায় 
গেলে তোমাব সঙ্গে আমাব কথা হবে না--সেথখা বমা ম'বেছে - আমায় 
ভাল বেসে মবেছে! নদীব জলে তোমায় গ্রহণ কব! হবে না--যবন 
সৈন্ত মরেছে ! প্রান্তবে তোমায় গ্রহণ কবা হবে না- প্রান্তবে অনেক 
প্রাণনাশ হযেছে! নগবে তোমার গ্রহণ কবা হবে না-সোণাব মহন্মদপুব 
ভম্মীভূত হয়েছে! কুটাবে তোমায় গ্রহণ কবা হবে না__কুটীব শূন্য কবে 
কুটাববাসী পালিয়েছে ' কণ্র্বো-_কণব্বো গ্রহণ ক+ব্বো - চল স্থান 
খুঁজিগে চল! ক'ব্বো কণ্ব্বো_ গ্রহণ ক'ব্বো আমার এখনও মমতা 
যাঁর নি। কম্র্বো--ক*ব্বো- তোমায় গ্রহণ ক'ব্বো, চল - চল-স্থান 
খু'জিগে চল! তুমি কি আমায় চাও? তবে এস--স্থান খুঁজিগে চল ” 


সীভ্ডাল্রানম লাক শ্শিক্কা দ্কান্ন 


সীতাবামেব প্রত্যেক চরিত্রই অতি স্থন্বর্ূপে অভিনীত হইয়াছিল+-_ 
'এমন কি চগ্ডাল, প্যাবীলাল, পাড়ে, ফৌজ্দাব-শ্টালক প্রভৃতি ছোঁট 
ছোট ভূমিকাগুলি যেন একটা ছবি হইয়াছিল। নাটকের সর্বশেষ 
দৃশ্যে গিরিশচন্ত্র যে অভিনয-প্রতিভাব পবিচয় দিয়াছিলেন, তাহা 
অতুলনীয় 

নাটকখাঁদির নিখুত অভিনয় প্রদর্শনের নিমিত্ত গিরিশচন্দ্র অতি 


ঘিচত্বারিংশ: পরিচ্ছেদ ৪৫৯ 


যত্বের সহিত শিক্ষাদান করিয়াছিলেন। তিনি স্বয়ং নৃত্য গীতে পারদর্শী 
না হইলেও একজন উচ্চদরের সমজদার ছিলেন, তাহার নাটকাদির 
গানে যে সকল সুর বা নৃত্য সংযোগ্জিত হইত, তন্মধো যেগুলি তাহার 
মনোমত না হইত,_সে সকল গান বা নৃত্যেব ভাবোৌপযোগী তিনি 
একটী “আদরা” করিয়া দিতেন,_-সেই আদর্শে সঙ্গীত এবং নৃত্যশিক্ষক-_ 
উন্যয়ে গানের স্থুব ও নৃত্যেব ভঙ্গি ঠিক করিয়া লইতেন। আবু. 
হোসেন গীতিনাট্যেব “বাম বহিম না ভুদা! করো” গীতটাব সব সঙ্গীতাচাধ্য 
দেবকবাঁবু এবং বর্তমান সীতাবাম নাটকেব উড়েনীগণেব নৃত্যেব ভঙ্গি 
নৃত্যাচাধ্য বাণ্বাবু এইবপে গ্রিবিশচন্দ্রের নিকট ঠিক কবিয়া লইয়া- 
ছিলেন। “বিষাদ” নাটকেব “হেবি চম্পক কলি পড়ে-_ঢলি ঢলি” গীতটির 
স্ুব গিরিশচন্্ স্বযং প্রদান কবিয়াছিলেন। তাহাঁব রচিত বহু সঙ্গীতের 
স্থবেব মুখপাত তাহারই কবা। 

ব্পপন্াঁস শু সাউিক্কে গীভ-ল্র্ম্মাজ সার্থক্ক্য 

উপন্যাস এবং নাটকের পার্থক্য--আর এক দিক দিগ্ধা আমরা বুঝিতে 
চেষ্টা কবিব। সীতারাম মুষ্টিমেয় সৈম্ত লইয়৷ সুচিবুহ প্রস্তুত করিয়! 
বিশাল সাগরের ন্তায় মুসলমান সৈন্য ভেদ কবিতেছেন,_-এই সময় শ্রী ও 
জয়ন্তী গাহিতেছে-_ 


“জয় শিব শঙ্কব । ত্রিপুর নিধনকর ! 
রূণে ভযঙ্কব ! জয জযধে । 
চক্র গদাধব । কৃষ্ণ পীতাম্বব ! 


জয জয় হবিহধ । জয জযরে 1” 
_-সীতারাম, ওয় খণ্ড, ত্রয়োবিংশতম পরিচ্ছেদ । 
যাহার! হরিহর--এক আত্মা বুঝিয়াছেন এবং জীবন-মরণ ভেদ জ্ঞান 
রহিত হইয়াছেন, এ সন্গীত সেই দন্ভ্যাসিনীদের উপযোগী । শ্রীভগবান 


৪8৫৪ গিরিশচন্দ্র 


রক্ষাকর্তা, তাহার নিকট বিজয় প্রার্থনা করা এই সঙ্গীতের প্রধান 
উদ্দেশ্ট ; কিন্তু নাট্যকবিকে অবস্থা বিবেচন! করিয়া সঙ্গীত সংযোজন 
করিতে হয়। এন্থলে মুষ্টিমেয় সৈম্ত অসাধ্য সাধনে অগ্রসব হইতেছে, 
তাহাদেব একমাত্র ভবসা নিজেব বীধ্যবল। এই নিমিত্ত প্রলযেব 
চিত্র সম্মুখে বাখিয়৷ মৃতুঞ্জয়েব জয়গান করিতে করিতে মৃত্যুকে অগ্রাহ্‌ 
কবিয়া অগ্রসব হওয়াই অধিকতব উপযোগী । গিবিশচন্ত্র বঙ্ধিমচন্দের 
উক্ত সঙ্গীতেব পবিবর্তে নিয়লিখিত সঙ্গীতটী যোজনা করিয়াছিলেন 

'ত্রিপুবাস্তকীবী, ভৈবব শুলধাবী, ভুবন সংহাব কাবণ হে। 

উদ্ধ বদদে “নাশ নাশ' বব, স্থ্টিধবংশকব প্রলয ভৈবব, 

বব বোম্‌ বব বাম্‌ ঘোব বব দশ-দিশা-গ্রন্থি ভগ্ন হে ॥ 

ভূতপ্রেত সনে ভাওব ন্ট, টল টল ঢল ঢল ত্রিভুবন-_ 

পদভবে কম্পন আপন জীবন নাণন হ ॥” 


স্থবিখ্যাতা অভিনেত্রী এবং স্ুুধাকগ্ঠী গায়িকা পরলোঁকগতা স্থুণালা- 
বাল! এই নাটকে “জয়ন্তী” ভূমিকা অভিনয়ে বিশেষরূপ মুযশ অঞ্জন 
কবিয়াছিলেন। এই জয়ন্তীব ভূমিকাঁভিনয়ই স্ুশীলাবালাঁর প্রতিষ্ঠাব 
মূল। গিবিশচন্দ্র-বচিত নিম্নলিখিত জযন্তীর গীতখানি সে সময়ে 
সাধারণে অতিশয় গ্রসিদ্ধিলাভ করিয়াছিল :-- 


“উদাব অন্বব, শুন্য সাগধ, শূন্তে মিলাও প্রাণ । 
শুম্যে শূন্যে ফোটে কত শত ভূবন, 
হাবকা-চন্ত্রম। কত শত তপন, 

শূন্যে ফোটে অভিমান ॥ 
অহম্‌ অহম্‌ হাত শৃন্তে বিভাসিত, 
শৃঙ্যে বিকসিত মনোবুদ্ধিচিত, 


মদ-মাৎসর্ধা, ভোক্তা-ভোজ্য, শৃন্ত সকলি এ ভান ॥” 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 8৫৫ 


খোদা উপন্স খোদকাজি 
মিনার্ত। থিয়েটারে “সীতাবাম অভিনয় কালীন ক্লাসিক থিয়েটারেও 
-অমববাবু সীতাবামেব অভিনয় ঘোষণা কবেন। যে সময়ে উভয় থিয়েটার 





স্বর্গীয় বক্ষিমচন্ত্র চট্টোপাধ্যায় 


৪৫৬ গিরিশচন্দ্র 


সীতাবাম অভিনীত হইতেছিল,-সে সমযে একদিন “মহাভাবত”- 
নাট্যকাব স্বর্গীয় প্রফুললচন্্র মুখোপাধ্যায় বেঙ্গল থিয়েটাবেব কোনও বিশিষ্ট' 
কর্তৃপক্ষকে বলেন,_-“আপনাবাও “সীতাবাম” অভিনয় ককন না?” তিনি 
উত্তরে বলেন,__“আমবা তো সীতাবাম বহুদিন পূর্বে ( বেঙ্গল থিয়েটাবে ) 
অভিনয় করেছি। নাটকে আমবা যেটুকু নৃতনত্ব কবিয়াছিলাম, গিরিশ- 
বাবু বা অমরবাঁবু কেহই তাহা পাবেন নাই।” প্ররফুল্লবাবু সাগ্রহে 
জিজ্ঞাসা করিলেন,_-“কিকপ” ? তিনি বলিলেন, “মেন! হাতীর ( মুনুয় ) 
সহিত আমবা জয়ন্তীব বিবাহ দিয়াছিলাম |” প্রফুল্লবাবু বিস্মিত হইয়া 
বলিলেন, _“সে কি মহাশয়, জয়ন্তী যে সন্যাসিনী ?” উত্তবে তিনি বলিয়া- 
ছিলেন,_-“বঙ্কিমবাবু জযন্তীকে সমস্ত জীবন সন্নযাসিনীব অবস্থাতেই রেখে 
দিয়েছেন। আমবা ভাব্লুম, একটা স্থন্দবী যুবতী চিবকালটাই কি 
গেকয়! পবে চিমটে ঘাডে ক'বে বেড়াবে,তাই তাৰ একটা হিল্লে 
ক'বে দিরেছিলুম। মুন্ময়কে না মেবে তাবই সঙ্গে শেষটা জয়ন্তীর 
বিবাহ দিয়ে ছু'ড়িটার একটা গতি ক'বে দেওয়া! গেল।” * ইহার 
উপর আব কথা কি? 
মশিহল্সঞ 

৭ই শ্রাবণ (১৩০৭ সাল ) মিনার্তা থিয়েটাবে গিরিশচন্দেব “মণিহবণ 
গীতিনাট্য প্রথম অভিনীত হয। প্রথমাভিনয় ব্নীর অভিনেতা ও 
অভিনেত্রীগণ :-_ 

সত্রাজিত শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেব, জানুবান_-অঘোবনাথ পাঠক, সত্রাজিত-দুত-_ শ্রীযুক্ত 
প্রিষনাথ ঘোষ, হুর্ধয__্ীযুষ্ট নবেন্্নাধ সবকার, উবা-ঈ্রীযুক্ত কুপ্জলাল চক্রবর্তী, শ্রীকৃষ-_ 
স্ুশীলাবালা, এসেন- ত্যাঙ্গাস, কুমাব_ শ্রীমতী চাকশীল! , জান্ুবান দৃতত্রয--জ্ঞানকালী 
চট্টোপাধ্যায়, ষাখিকলাল ভট্টাচার্য ও প্রমথনাথ ঘোম, রল্বিণী-_স্রীতী পান্ল!' ( পানি ), 


% “বঙ্গালয়ের রঙ্গ-কথা” পুলকের ২৫ পৃষ্ঠা ডষ্টব্য। 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৫৭ 


বাণী__সবোজিনী, জান্বুবতী__্রীমতী হিলগনবাল (হেনা), সহচবীদধ-_প্রীমতী প্রকাশমণি 

ও নগেন্দ্রবাল! ইত্যাদি। সঙ্গীতশিক্ষক- শ্রীযুক্ত দেবকণ্ঠ বাগচি, নৃত্যশিক্ষক-_শরৎচন্্র 

বন্দোপাধ্যায় ( বাণুবাবু), বঙ্গভূমি-সজ্জাকব-_ধর্মমনাস সব । 
সগিহল্রশ-ল্রদম্াক্র কণা! 


জান্ুবতীব বিবাহ বা স্যমস্তক মণি উদ্ধাবে শ্রীকু্চের কলঙ্ক মোচন-_ 
এই পৌরাণিক বিষয় লইয়৷ «মণিহবণ” রচিত হয়। এই গীতিনাট্যখানি 
বচনাব একটু বিশেষত্ব আছে। তৎকালে প্রত্যেক শনিবারে মহা- 
সমাবোহে “দীতারাম” অভিনীত হইতেছে; গিবিশচন্ত্র “সীতাবামেব, 
ভূমিকায় রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হন। সেদিন ববিবার-__ প্রফুল্ল” অভিনয়__ 
যোগেশ_-গিবিশচন্দ্র তখনও অভিনয় আবন্ত হয় নাই। চুণীলাল বাবুর 
জোষ্ঠ ্রাতা মিনার্ভা থিয়েটারেব স্তুপ্রসিদ্ধ ব্যাড মাষ্টাব নস্তিবাবু (স্বর্গীয় 
নবেন্জকৃষ্ণ দেব) গিবিশচন্ত্রকে বলিলেন, “ববিবাবে আপনার একখানি 
পুবাতন নাটকের সঙ্গে আপনাব নূতন একখানি ছোট গীতিনাট্য যোগ 
করিয়া দিলে, আপনাকে আব উপবি উপরি দুই দিন খাঁটিতে হয় না।” 
গিরিশচন্দ্র বলিলেন,_-“ছুই রাত্রি অভিনয়েব পব কল্য দিবাভাগে একটু 
বিশ্রাম না কবিয়৷ লিখিতে বমি কিরূপে ? অথচ নৃতন বহিখানি লেখা! শেষ 
করিয়া কল্য সোমবাব হইতেই রিহারস্তালে ফেলিতে ন! পাঁবিলে বৃত্য-গীত 
শিক্ষা হইবে কি করিয়া? নাচগানই গীতিনাট্যের প্রধান অঙ্গ । কথা যেন 
মুখস্থ হইল; স্চারুরূপে নৃত্য-গীত শিক্ষা না হইলে বই তো জমিবে না| । আচ্ছা 
_-দেবগুরু প্রসাদেন জিহ্বাগ্রে মে সরম্বতী”-_( এইরূপ সঙ্কটের সময় 
গিরিশচন্দ্রের মুখে অনেকবার আমর! এই উক্তিটি শুনিয়াছি ) কাগজ-কলম 
নিয়ে এসো,ঠাকুরের কপার আমি আজই বই লিখে দ্িচ্চি।” লেখক কাগঞ্জ- 
কলম আনিলে, সঙ্গে সঙ্গে বিষয় নির্বাচন করিয়া বচন! আরম্ভ হইল। 

তিনি একবার অভিনয় করিতে রঙ্গমঞ্চে গমন করেন, আবার আসিয়া 


৪৫৮ গিরিশচজ্ঞ 


বই লিখিতে বসেন। একজন হসিয়ার লোককে নিয়োগ কর! হইল-_ 
সে যেন তাহার অভিনয়-কাল উপস্থিত হইলেই যথাঁসময়ে আসিয়! তাহাকে 
খবব দেয়। এইরূপে অভিনয়ের অবসরে অবসবে গীতিনাট্যখানি রচিত 
হইয়। গেল। অভিনয়ান্তে গ্রেজে বসিয়া এই গীতিনাট্যেব আটাশথানি 
গান বাধিয়! দিয়৷ চুণীলাল বাবুকে বলিলেন, “ইচ্ছ৷ করো, আব একখানি 
নক্সা আজই লিখিয়া দিতে পাবি।” চুধীবাবু সাগ্রহে সম্মতি জানাইলে 
তিনি সেই বাত্রেই “07)8709919 10190911887” নামক আর একথাঁনি 
পঞ্চবং লিখিযা দিয়া বাটা আসিলেন। সপ্তাহ মধ্যেই নাচ-গান ও 
রিহাবস্যাল সম্পূর্ণ হইয়৷ রবিবাবে “মণিহবণ” 'প্রশংসাব সহিত অভিনীত 
হয়। %017726815 1015997789৮ পবে অভিনীত হইবাব কথা ছিল, 
কিন্ধু দুঃখেব বিষ, ইহাব পাুলিপিখানি থিষেটাব হইতেই হারাইয়া বাঁধ । 

বাঁয়সাহেৰ স্বর্গীয় বিহাবীলাল সবকাঁৰ অভিনয় দর্শনে পরম প্রীত 
হুইয়৷ তৎসম্পাদিত “বঙ্গবাসী? সংবাদ পত্রে ( ১৩ই আবণ, ১৩০৭ সাল) 
এক স্থৃদীর্ঘ সমালোচনা বাহিব কবেন, তাহা হইতে কয়েকছত্র মাত্র উদ্দাঃ 
কবিলাম ৪ 

“বিবিধ পূর্ণ প্রস্ফুট কুনুমবাঁজি-বিবাজিত পৌবাণিক কাব্যোদানেখ 
কোন প্রান্ত নিপতিত অনাদূত উপেক্ষিত একটা ঈষদ্‌ মুকুলিত কুস্থন 
লইয়৷ গিবিশবাবু তাহাতে স্বকীয় নাটকীয় কল্পনা-প্রহ্ত নুতন চবিত্র, 
গীত, নৃত্য, ভাব, রসেব ললিত লতাপুষ্প, আব শ্ামল কিশলয়গুচ্ছ 
জড়াইয়াঃ নয়ননন প্রীতি প্রদ তোড়া তৈয়ারী করিয়াছেন ।” ইত্যাদি 

ভমন্ুভনাকল 

১ল! ভাদ্র (১৩০৭ সাল) জন্মাষ্টমী উপলক্ষে, মিনার্ভী থিয়েটাবে 
গিরিশচন্ত্রের “নন্ভুলাল” গীতিনাট্য প্রথম অভিনীত &র। প্রথমাভিনয় 
রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_ 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৫৯ 


কংস__কিশোরীমোহন কব, কংস-পাধিষদ ও আযান-দানিবাবু, বস্থদেব ও ১ম 
ব্রাহ্মণ (বাচস্পতি )-_অঘোরনাথ পাঠক, নন্দ আক্কাস, উপানন্দ- শ্রীযুক্ত কুঞ্জলাল 
চক্রবন্তী, বলবাম-_গ্রীমতী পু টুমণি, শ্রীকৃষ্ণ, দেবকী ও দবৌষান্নী-__তিনকড়ি দাসী, প্রীদাম, 
মযাগশাযা ও বৃন্দা__ শ্রীমতী সুধীশাবাল! ( পটল ), সুবল ও নিদ্রা- শ্রীমতী হবিমতী, বস্দাম 
9 তন্দ্রা শ্রীমতী প্রমদান্রন্দবী ( ছোট ). ১ম দবোযান ও হিজডা_বাণুবাবৃ, খ্য দবোযান 
ও দর্থ ব্রাহ্মণ (শিব!মণি )---প্রীযুক্ত নিখিলেন্্রু দেব, ১য ব্রাহ্মণ ( তর্কীলঙ্কাব )__মাণিক 
লাল ভট্টাচার্যা, ৩7 ব্রাহ্মণ (বিগ্যাবাগীশ )__প্রমথনাথ ঘোষ, গোঁপ- শ্রীযুক্ত নবেন্দুনাথ 
এপকাব, স্বপ্ন ও বিশাখা- শ্রীমতী পান্না (পানি 1, যশোদা সবোজিনী, বোহিণী ও ললিতা-_ 
বসভ্তকুমাধী, বিষুপ্রাণা. বাধিকা ও গেপিনী-_ম্শীলাবালা, জটিলা--নগেন্দ্রবালা, কুটিলা-_ 
শীমতী প্রকাশমণি ইতা।দি। জঙ্গীতশিক্ষক- শ্রীযুক্ত দেবকণ্ঠ বাগচি ও শ্রীযুক্ত নবেন্দনাথ 
সধকাধ, নৃতাশিক্ষক-_ব।ণুব|বু । 


এই ত্রয়াঙ্ক পৌবাণিক গীতিনাট্যখানি জন্মাষ্টমী উপলক্ষে লিখিত 
হয। 'প্রথম অঙ্কে শ্রীরুষ্ণেব জন্ম, ন্িতীয় অঙ্কে শ্রীরুষ্ণের অন্ভিক্ষা এবং 
তৃতীয় অঙ্কে কুষ্ণকাঁলী-_এই তিনটা বিষয় নাট্যাকাঁবে গ্রথিত হইয়াছে। 
মণিহবণ গীতিনাট্যখানি যেবপ চলিযাছিল, এখানি যদিচ সেৰপ চলে 
নাই, কিন্ত প্রতি বসব জন্মাষ্টমীতে ইহাব প্রথম অঙ্ক “জন্মাষ্টমী নামে 
প্রত্যেক সাধারণ বঙ্গনাট্যশালায় অভিনীত হইয়! থাকে । নন্দোৎসবেব 
জমাট ছুইখানি গান নিয়ে উদ্ধত কবিলাম ।__ 


১ম। নন্দীলয়ে ভিজড।গণ-_ 
কেলে গোপাল দোলে কোলে । 
কেলে ছেলে আলো দিচ্চে ঢেলে ॥ 
হিজডা নেবে ছেলের আলাই-বালাই, 
জীও খোকা, কালী মায়ীৰ দোহাই ; 
নেব জৌড়া টাকা, নেব জোডা শাড়ী, 
না পেলে হিজড়া ফিরবে না! বাড়ী ; 


৪৬০ গিরিশচন্দ্র 


থোকা নিষে বুকে, চাদ মুখটা দেখে, 
লাখে লাখে চুমো দে কেলে-চাদেব মুখে, 
মাব কোল জুড়ে খেল্বে কেলে ছেলে ॥ 
»্য। নন্দালযে গোপ-গোপিনীগণ-_ 
দৈ ঢেলে দে হলুদে গুলে, 
আমোদেদ ঢেউ উঠেছে গোকুলে। 
নন্দ ঘোষেব ঘব ক'বে আলো, 
দেখ্‌ দেখু কে কালে! এলো-- 
যশোমতীব কোল জোড। ভলো , 
গোঁকুলবামী সবাই মিলে নাচি আষ কুতুহলে, 
নন্দেব গোপাল ধাকুক কুশলে, 
দেখবে কে কালোনিধি, দেগ্ল যাই আপন ভুলে । 
€দ্শাললীল্লা 


নন্দহুলাল+ যেবপ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে লিখিত হইয়াছিল, সেইরূপ 
“আগমনী” ও “অকাল বোঁধন ৬শারদীয়া পৃজা উপলক্ষে এবং “দোললীলা 
১২৮৪ সাল, ফাল্গুন মাসে দোল উৎসব উপলক্ষে লিখিত হইয়াছিল,__ 
তিন খানিই স্াসান্তাল থিয়েটাবে অভিনীত হয়। 'আণমনী ও অকাল 
বোধন সম্বন্ধে ২০২ পৃষ্ঠায় আমরা আলোচনা করিয়াছি; কিন্তু ভ্রম. 
ক্রমে “দৌললীলা; সম্বন্ধে কোন কথা বলা হয় নাই। এই ক্ষুদ্র গীতি- 
নাট্যথানি স্বর্গীয় কেদাবনাথ চৌধুরী মহাশয় পুস্তকাকারে প্রকাশিত 
করেন। তিনি গ্রন্থের প্রাবস্তে নিয়লিখিতরূপ ভূমিকাটা লিখিয়্াছিলেন :__ 

“ন্যাশনাল থিয়েটারের অভিনেত। ও অভিনেত্রীগণের কাধ্য-সৌকর্ধার্থে 
মাত্র, দোললীলা নামক অন্তর নাট্যরাঁসক পুন্তকথানি প্রকাশিত হইল। 
গ্রন্থকারের গানগুলি রচনা করিবার সমন দুইটি অনুরোধ রক্ষা করিতে 
হইয়াছিল। প্রথমটি,--দোললীল। আগ্ত্তই আননাশ্চক- অন্ত রমের 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৬১ 


কিছুমাত্র সমাবেশ থাকে না । অথচ নাটকাকাবে লিখিত হইলে অপর 
বমেব অবতারণার প্রয়োজন । নুতবাং গ্রন্থকারকে প্রাচীন বাসলীলা 
হইতে ইহাব আভাস লইতে হইয়াছে। দ্বিতীয়টি, হোবি শ্রেণীর গীতি 
বঙ্গভাষায় ছিল না, হিন্দি ভাষায় ইহার প্রাচুর্য দেখ! যায়, তাতে কবিই 
গায়ক, স্ুরেব ও ছন্দের জন্য তাহাকে ব্যস্ত হইতে হয় না। আমাদের 
গ্রন্থকাবের হিন্দি গানেব অবয়বে উপর লক্ষ্য রাখিতে হইয়াছে। 
অনুবোধে কবিতা হর না। ইহাতে কবিত্ব আছে কি না জানিয় 
সাধারণে দেখিবেন। 


শ্রকেদারনাথ চৌধুবী-_প্রকীশক 1” 


গুুনল্লান্স কালিক্ষে 


গিবিশচন্ত্রকে মিনাভা খিয়েটাবে মানিয়া আথিক সচ্ছলতা হইলেও 
নবেন্দ্রবাবু আন্তরিক তৃপ্তিলাভ কবিতে পাবিলেন না। তাহাব অভিপ্রায় 
ছিল, তিনি নাটক লিখিবেন এবং নাঁটকেব প্রধান প্রধান ভূমিকা অভিনয় 
করিবেন। গিবিশচন্দ্র তাহাকে ভবসা দিযাঁছিলেন, প্তুমি কিছুদিন 
অপেক্ষা কবোঃ ক্লাসিকেব সহিত প্রতিদ্বন্বিতাঁয় আগে থিয়েটারেব প্রতিষ্ঠা 
হউক, তাহাব পব তোমাকে অমি তৈয়ারি কবিয়। দিব।” কিন্তু নরেন্র- 
বাবু ধৈর্য ধরিতে পাবিলেন না । এই সময় স্থযোগ-প্রয়াসী তাহাৰ কয়েক- 
জন স্বার্থপর উপদেষ্টা বিবিধপ্রকাবে তাহাব কর্ণে কুমন্ত্রণা দিতে আন্ত 
কবিল। ইহাদেবই প্রবোচনায় নরেন্্রবাবু গিরিশচন্ত্রের সহিত অকৌশল 
করিয়৷ ফেলিলেন এবং যাঁহাব! স্বার্থ সাধনেব জন্য তৎপর হইয়াছিল, 
তাহারা সত্বরেই কৃতকার্য হইল। অপবিণত-বুদ্ধি নবেন্্রনাথ আপ- 
নার ইষ্ট ভুলিয়া তাহার ইঞ্টেটের তাৎকালীন ম্যানেজাব স্বর্গীয় অতুলচন্্ 
রায়ের সহযোগে গিরিশচন্দ্রের এপ্রিমেপ্ট বাতিল (০৪961) কবিলেন। 


৪৬২ গিরিশচন্দ্র 


ওদিকে অমরেন্দ্রনাথও আপনার ভূল বুঝিতে পারিয়া গিবিশচন্দ্রকে 
পুনরায় ক্লাসিকে লইযা যাইবাঁব জন্য বিশেষভাবে উদ্যোগী হইয়াছিলেন। 
তিনি এ সুযোগ ছাড়িলেন না । গ্িরিশচন্দ্রেব নিকট আসিয়া আত্মনক্রটি 
স্বীকার এবং মার্জনা ভিক্ষা কবিয়া গিরিশচন্দ্রকে পুনবায় তাহাব ক্লাসিকে 
লইয়া আসিলেন ;_-এবং তীাহাব থিয়েটাবেব “হ্যাগুবিলে” ( *ই অগ্রহায়ণ, 
১৩*৭ সাল) বিশেষ ড্রষ্টব্য* উল্লেখ কবিয়া নিম্নলিখিত বিজ্ঞাপন 
বাহিব কবিলেন £-_ 

“নাট্যামোদী সুরীবুন্দকে আনন্দে সহিত জানাইতেছি, যে, নটকুল- 
চুড়ামণি পৃজ্যপাদ শ্রীযুক্ত বাবু গিবিশচন্দ্র বোঁষ মহাশয়ের সহিত, "আমাদেব 
সকল বিবা-বিসম্বাদ মিটিয়া গিয়াছে । বাঙ্গালায় যে কয়েকটা স্থাধী রঙ্গমঞ্চ 
স্থাপিত হইয়াছে, সকল গুলিবই ্থষ্টিকর্তা--স্রীবুক্ত গিবিশচন্ত্র! প্রায় 
সকল অভিনেতা ও অভিনেত্রী-_'গিবিশচন্দ্রেব' শিক্ষা গৌববান্বিত ! 
তাহাব মধ্যে আমিও একজন । গিবিশবাবুব সহিত বিবাদ কবিধা, নিতান্তুই 
ধটতাব পৰিচয় দিয়াছিলাম।__বড়ই স্খেব বিষয়, সমস্ত মনোমালিন্য অন্তব 
হইতে মুছিয়া ফেলিষা, তাহা শ্নেছনয় কোলে আঁবাব তিনি টানিন্না 
লইয়ীছেন। গিবিশবাবুব কোনও থিয়েটাবেব সহিত, এখন কোনও 
প্রকাব সম্বন্ধ নাই । তাহাব সমস্ত নৃতন নূতন নাটক, গীতিনাট্য ও পঞ্চবং 
এখন 'ক্লাসিকে* অভিনীত হইবে। ক্রাসিক থিয়েটাব' ব্যতীত অপব' 
কোনও বঙ্গমঞ্চেব সহিত গিরিশবাবুব কিছুমাত্র সম্পর্ক নাই। শ্রীযুক্ত 
“গিরিশচন্দ্র এখন পক্লাসিকেব+! নিবেদনমেতি 1৮ 

গিবিশচন্দ্র ক্লাসিকে যোগ দিলে নরেন্্রবাবুও বুঝিলেন-_-তিনিও বিষম 
ভুল করিয়াছেন; কিন্ত গিরিশচন্দ্র এই অব্যবস্থচিত্ব যুবকেব উপব 
কোনও রূপ আস্থা স্থাপন কবিতে পারিলেন না । নবেন্দ্রনাথের সকল 
দিক দিয়া সকল চেষ্টাই বিফল হইল । 


ঘ্িচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 8৬% 


"্বুতানল শক্ত 

ক্লাসিকে যোগদান করিবার অল্পদিন পবেই অগ্রহায়ণ মাসের 
(১৩৯৭ সাল) কৃষ্ণা! ত্রয়োদণী তিথিতেঃ গিরিশচন্দ্রের একমাজ, 
কন্তার সথতিকা রোগে মৃত্যু হয়। নানারূপ চিকিৎসায় গিবিশচন্দ্র কন্াঁর 
জীবনের আশ! পরিত্যাগ কবিয়াছিলেন ;__ তথাপি মৃত্যুর পুক্ধদিনে 
কন্তা যখন বলিলেন, “বাপি বদি তারকেশ্বরে গিয়। আমার জন্ঠ বাবাঁব 
চবণামৃত লইরা আসে, তাহা হইলে আমি ভাল হই।” মুমুষু কন্তাৰ 
তৃপ্তির জন্ত তিনি তৎপবদ্দিন তাবকেশ্ববে গমন করেন। আমিও তাহার 
সঙ্গে গিয়াছিলাম। মোহান্তের গদিতে পূজার টাকা জমা দিবার সময় 
জনৈক কর্মচাবী গিবিশচন্দ্রের দিকে পুনঃ পুনঃ চাহিয়া বলিলেন, 
“মহাঁশয়কে যেন পূর্ববে কোথায় দেখিয়াছি ।” গিরিশচন্দ্র বলিলেন, “আমি 
থিয়েটারের নটো! গিরিশ ঘোষ ৮ লোকটী আপ্যায়িত কবিবার পূর্বেই 
তিনি বাবাব মন্দিবে পুজা দ্রিবার নিমিত্ত প্রবেশ কবিলেন। পুজা দিয়া 
তিনি গম্ভীবভাবে মন্দির হইতে বাহির হইলেন । পুজা দিয় গিরিশচন্দ্র 
মনে আশাব সঞ্চার হয় নাই। কলিকাতায় যখন আমবা ফিবিয়া 
আসিলাম, তখন তাহার প্রিয়তমা কন্ঠাব দেহ ভম্মীভূত হইয়াছে । এই 
দুহিতা,--একটী কন্তা ও তিনটা অপোগগ্ড পুত্র রাখিয়৷ সতীলোকে গমন 
কবেন। তন্মধ্যে মধ্যম পুত্র ও কন্তাটি গিবিশচন্দ্রের জীবিতাবস্থাতেই 
ইহলোক ত্যাগ করে। শ্রীমান ছুর্গাপ্রস্ন ও ভগবতী প্রসন্ন 
বন্থুকে রাখিয়া গিবিশচন্ত্র মানব-লীল। সংবরণ করেন। কয়েক 
বখসর গত হইল ভগবতীপ্রসন্নও ইহধাম ত্যাগ করিয়াছে। 
শ্রীভগবান শ্রীমান হুর্গাপ্রলন্নকে দীর্ঘজীবী করুন। কলিকাতাঁর চোর- 
বাগানের প্রসিদ্ধ বন্গ-বংশোপ্ত? শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমাব বন্--গিরিশচন্দের, 
জামাতা । 


৪৩৬৪ গিরিশচন্দ্র 
অভ্র ঞ্বান্ল! 
এবার ক্লাসিকে আসিয়া মহারাণী ভিক্টোরিয়াব স্বর্গারোহণ উপলক্ষে 
গিরিশচন্দ্র 'অশ্রধাবাঃ নামক একথানি সামরিক ক্ষুদ্র নাট্য প্রথম বচন 
কবেন। 
১৩ই মাঘ (১৩০৭ সাল) ক্লাসিক থিয়েটাবে “অশ্রধাবা” প্রথম 
অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় বজনীব অভিনেতৃগণ :-__ 
ভাবতমাতা-_শ্রীমতী কশ্মমকৃমাবী, দু্তিক্ষ-_অক্ষষকুমাব চক্রবর্তী, প্রগ-_নটবৰ চৌধুবী, 
অবাজকতা- পণ্ডিত শ্রীহবিভূষণ উ্টাচার্ষা, ভাবত সন্ভানগণ-_অমবেল্্নাথ দত্ত, প্রবোধচন্দ 
(ঘাষ, গে।ষ্টবিহাবী চক্রবন্তথী উতা।দি 
ভাবতবাসী নব-নাবীব গভীর শোকোচ্ছাসেব সঙ্গে সঙ্গে হর্ষোললাসমনত 
দুতিক্ষ, প্লেগ ও অবাজকতাব রূপক-চিত্র এই গীতিনাট্যে জীবন্তৃভাঁবে 
প্রশ্ফুটিত হইযাঁছে। ইহার গীতগুলি স্ুপ্রসিদ্ধ অমৃতলাল দত্ত (হাবু বাবু) 
কর্তৃক সুরলয়ে স্থগঠিত হইয়াছিল । 
হ্নন্র মভ্িন্৷ 
' ৭ই বৈশাখ (১৩০৮ সাল) গিবিশচন্ত্রেব 'মনেব মতন” নাটক ক্লাসিক 
থিষেটাবে প্রথম অভিনীত হবঘ। প্রথমাঁভিনয় বজনীর অভিনেতা ও 
অভিনেঞআ্ীগণ $-_ 
মিজ্ঞান-_শ্রীযুক্ত শ্ববেন্্নাথ ঘোর (দানিবাবু ), কাউলফ--অমবেন্দ্নাথ দন্ত, মাযের 
খ_নটবৰ চৌধুবী, টাহাব-_ প্রযুক্ত নুপেন্দচন্ত্র বঙ্গ, নেহাব-_অক্ষযকুমাৰ চক্রবর্তী, ফকিব 
--অঘোধনাথ পাঠক, সমবকন্দাধিপতি__প্রবোধচন্্র ঘোষ, কাজি-_শ্রীযুক্ত অতীন্দনাথ 
ভট্টাচাধা, বণিক-_ চওাচনণ দে, দূত বামচন্দ্র চট্টেপাধায, ভৃতাদ্বষ-_মাণিকলাল ভটর|চ।ঘা 
9 স্তরীযুক্ত হাবাল।ল চট্টোপাধ্যায, গোলেন্দাম_শ্রীমতী তাবানুন্দবী, দেলেবা--শ্রীনতী 
কুহ্থমকুমাধী, সানিযা__গুল্ফম হবি, পবিযা-_বাণীমণি, মনিযা-_কিষণবালা ইত্যাদি। 
সঙ্গীত-শিক্ষক- শ্রীযুক্ত দেবক্ঠ বাগ্চি, নৃতাশিক্ষক শ্রীযুক্ত নৃপেন্দ্রন্ত্র বন, বঙ্গভূমি- 
সজ্জাকব-_-আশগুতোষ পালিত। 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৬৫ 


মায়াতর, মোহিনী প্রতিমা স্বপ্রের ফুল, দেলদাব এবং আমাদের 
বর্তমান আলোচ্য নাটক “মনের মতনে” একটা ক্রম-বিকাশেব ধারা আছে। 
মায়াতরূ, মোহিনী প্রতিমা, স্বপ্নেব ফুল ও দেলদাব এই চাঁবিখাঁনি গীতি- 
নাট্যই প্রেমমূলক। মনেব মতনও তাহাই, তবে গীতিনাট্য রূপে ভিত্তি 
পত্তন কবিয়া ইহা নাটকেব আকাঁবে গঠিত হইয়াছে । তৎসম্বন্ধে একটা 
বিম্ধকর ইডিহাঁস আছে। দ্বিতীয় অক্ষেব দ্বিতীয় গর্ভাঙ্কে দেলেবার 
বাঁটীতে কাউলফ দেলেবা এবং ছদ্মবেশী বাঁদস! মির্জাঁন একত্র বসিয়া 
আমোদ-প্রমোদ করিতেছিলেন, কথায় কথায় বেগম গোলেন্দামেব 
আলোচনা তুলিয়া দেলেরা পবিহাঁস করিতে আঁবস্ত কবিল। সহসা 
ছন্মবেনী মিক্কান উখিত হইযা কঠোবস্ববে ডাকিলেন_-“কাউলফ.!” 
বাদসাব মুখ দিযা! এই সন্তাঁষণ বাঁহিব হইতেই গিবিশচন্দ্র বলিয়। উঠিলেন,_ 
“একি--এ যে "নাটকেক, সূত্রপাত হইল, এ তো! আব "গীতিনাট্য* হইতে 
পাঁবে না ।” কোনও বিখ্যাত সমালোচক (৪1 91667 13819150 ) 
বলিয়াছেন,_-“কবির হৃদয় বাঁণীব বীণ! স্বরূপ,--দেবী তাহাতে যে স্ব 
তোলেন, সেই স্ুবই বাঁজে।, গিবিশচন্দ্র মুহূর্ত পূর্বেও জানিতেন না» যে 
এই গীতিনাট্য নাটকের আকাঁব ধাঁবণ কবিবে। সহসা বাণীব অঙ্কুলী- 
স্পর্শে দৃশ্কাব্যের স্ব উঠিল। বিস্মিত গিবিশচন্্র বলিলেন»_-এ থে 
নাটক হয়ে উঠলে । আচ্ছা, তবে তাই হোক ।” 

প্রেমই মনৈব-হদয়েব চরম বিকাশ, কিন্তু প্রেমের পরম শত্র-_অবিশ্বাঁস, 
ঈর্ষা এবং সংশয় । গিবিশচন্দ্র এই নাঁটকে প্রেম এবং সংশয়েব অপূর্ব সংঘর্ষ 
দেখাইয়াছেন। ওথেলো! দৃশ্যকাব্যে মহাকবি সেকস্পীয়াৰ বলিয়াছেন, 

“সংশয় বিষম শক্র দাম্পত্য জীবনে 1” * 


সপ পিস 


* শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ বনু কর্তৃক অনুদিত । ত্য অঙ্ক, ওয় দৃগ্। 


২০৩ 








৪৬৬ গিরিশচন্দ্র 


সেকস্পীয়াঁব “ঘ1760128 [919” নামক মিলনান্ত নাটকেও প্রেম এবং 
সংশয়েব চিত্র অস্কিত কবিয়াছেন, এ নাটকেও বন্ধুর উপর সংশয় । কিন্ত 
সুচনীয় সামান্ততঃ এই সাদৃশ্য থাকিলেও “মনের মতন” নাটকের পৰিণাম 
/176925 8]9 হইতে যেমন সম্পূর্ণ বিভিন্ন, ঘটনা-শোতও তেমনই 
সম্পূর্ণ অন্থরূপ ৷ 

গিবিশচন্ত্র পাঁবস্য-উপসন্তাসেব একটা গল্প অবলম্বনে এই মনৌবম দৃশ্য 
কাব্য গঠন কবিয়াছেন। বাদসা মিক্ান প্রেমিক, কিন্তু ঘটনাচক্রে 
সন্দেহ-পীড়িত, কিন্তু তাহাব সন্দেহ সম্পূর্ণ নৃতন প্রকৃতিব, ওথেলো যে রূপ 
ভাবিয়াছিল যে ডেসডিমোন! কেসিওব প্রণয়াঁকাঁজ্িণী, মির্জানেব সন্দেহ 
সেবপ নয়। বাদসাহেব সন্দেহ-_কাঁউলফ, গোলেন্দামেব প্রমপ্রীর্থ। 
মিজ্জান বেগমকে বলিতেছেন,_“তুমি নির্দোষী, তুমি পতি গ্রাণাঃ তুমি 
সত্যবাদিনী, তোমায় দেখে আমি বুঝতে পেবেছি। কিন্তু কাউলফ, 
কি সাহসে সেই বাববিলাসিনীদেব সমক্ষে তোমাৰ নাম উচ্চাবণ 
কঃবেছিল ?” কাঁউিলফ বীব, বাদসাব সুহৃদ এবং সেনাপতি,_সৌন্দর্যের 
উপাঁসক, দেলেবাব সৌন্দধ্যে মুগ্ধ__তাহাব প্রণয়প্রার্ী,- যে দেলেব! 
তাঁহাব সর্ধনাশেব হেতু । যন্ত্রণা হইতে শান্তিলীভের আশায় কোন এক 
ফকিবেব নিকট গিয়া দে বলিতেছে,--"আমি ভুলেও তুল্তে পাচ্ছিনি,__ 
আমাৰ সর্ধনাশের হেতু হ'য়েও আমাঁব প্রাণেব সহিত জড়িত |” 

এ নাটকে অপব ছুই প্রধান চবিত্র টাহাঁর ও নেহাঁব-_দুই বন্ধু রূপেব 
মোহে আচ্ছন্ন। পবিণীমে-_মির্জান এবং কাঁউলফ, প্রেমিক যুগলেব সকল 
সন্দেহ এবং ক্ষোভ বিদুবিত হইয়াছে-_ প্রণয়িনী যুগলকে পুনরায় মনের 
মতন বপে পাইয়াছে। টাহাব ও নেহার দুই অব্যবস্থচচিত্ত যুবকেব 
রূপজ মোহ বিদুরিত হুইয়া হাদয়ে প্রেমের বিকাঁশে মনের মতন 
পাইয়াছে। 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৬৭ 


আমরা পূর্বেই বলিয়াছি, মায়াতক, মোহিনী প্রতিমা, ব্বপ্রের ফুল এবং 
দেলদাঁব এই কয়েকখাঁনি গীতিনাঁটয এবং মনেৰ মতন দৃশ্যঙাব্যে একটা 
ক্রমবিকাশেব ধারা আঁছে। একটু ইঙ্দিত কবিলেই পাঠক তাহ! বুঝিবেন। 
“দেলদারের বেখা বলিতেছে,_ 


“বেতে মই ভষ যদি হয়, 

এমন তো নয-ন| গেলে নয | 
মন চেযেছে, দেখি কেমন । 
ফিববো, না হয মনে মতন। 
যা হয ভবে, নি তো৷ খেলে, 
মনেব স্রোতে দিই গ! ঢেলে ।” 


কাউলফেব সহিত সাক্ষাৎ পবিচয়েব পূর্বে দেলেবা গাহিতেছে,_- 


“আমাধ অগাধ জলে জাল মেলা, 
পাবি হাবি ভুল্নত নাবি, খেলে দেখি এ খেল|। 
তন পাই পাবে!, নইলে জলে ঝাঁপ দেবো, 
থাক্তে সাগব, তীন্বে কেন নুডি কুডোধে! । 
যে ঢেউ দেখে পাথ ভষ, বন্ধ তা তবে তে| নয, 
হয ব! না হয়, যা হয হবে, শেষ দেখে যাবে! , 
যৌবন সাধেধ মেলা, সাধ ক'ধে নি এই বেলা ।” 


তবে যে.ঈর্ষা৷ এবং সংশয়ের চিত্র “দেলদাবে' আব্ছাঁয়াব রূপে দেখা যায়, 


“মনের মতনে” তাহ! পবিস্ফুট | 

শ্ীবামকৃষ্ণেব সহিত মিলনেব পৰ গিবিশচন্ত্র যে সকল নাটক 
লিখিয়াছেন, তাহার অধিকাংশ চবিত্রেব পৰিকল্পনা পবমহংসদেবেব ভাবে 
অন্ুপ্রাণিত। এ নাটকে ফকিবের চরিত্র দৃষ্টান্ত স্বরূপ উল্লেখ কবিতে 


পারা যায়। 


৪৬৮ গিরিশচন্দ্র 


হিন্কিগান্য ল্রচন্ন। সম্ঘ্রক্ছে হ্বামীভিল্র ক্ুহ্া 
'মনেব মতন” মুদ্রিত হইবার পর, একদিন বিবেকানন্দ স্বামী 
গিরিশচন্দ্রেব বাটীতে আরিয়া নাটকথানি পাঠ কবিতে কবিতে বলিলেন, 
“জি সি, তোমাৰ ফকিবের গান দু”খানি চমতকাঁব হয়েছে, কিন্তু ভাষার 
মাথামুণ্ড নাই__না বালান হিন্দি- না উদ্দ২এ কি বল দেখি?” 
উত্তবে গিরিশচন্দ্র বলিলেন,__প্থাটি হিন্দি ঝা উদ, সাধাৰণ দর্শক বুঝিতে 
পারে না, দুই চারিজন তাহাব মর্ম গ্রহণ কবিতে পারে । হিন্দি কি উদ 
একটা ডৌল আব ধবণ দেখাতে পাব্লেই চবিত্র ষে স্বতন্ত্র তাহাঁও দেখান 
হয়, আব দশক ও গানেব মন্ত্র গ্রহণ কবে। আমাৰ তাহাই প্রয়োজন, 
নইলে দীনবন্ধু বাবু “লীলাবতী” নাটকে উড়িয়া চবিত্রেব মত প্রতি কথায় 
টীক। করিয়া দিতে হয ।৮ 
পাঠকগণেব অবগতিব নিমিত্ত ফকিবেব একখানি গীত উদ্ধত 
কবিলাঁম £-- 
“লাগ| বহো মোৰ মন, 
পবম ধন কি মিলে বিন্‌ যতন। 
ধাহা ভাসাওয়ে যাই ভ।স্‌কে চল্‌ না, 
কব আধিযা উঠে, উস্বা ক্| ঠিক|না, 
ম্গন বহেকো। আপা সাম।ল্‌ না 
হবদম উসিপর নজব যেল্ন। ; 
ওহি হায় দোস্ত, আওব কহ! মিলে কোন্‌? 
ওহি আপনা, সব, ভি বেগানা, 
সমজ লে না কো আপন -- 
এক হায--উও পবম ধন!” 
সুযোগ্য অভিনেতা ও অভিনেএ্রগণের স্থসংমিলনে নাটকথানি নিখুঁত 
রূপে অভিনীত হইয়! দর্শকগণের গ্রীতি উৎপাদন করিয়াছিল। মিজ্জাঁন 


দ্িচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৬৯ 


ও গোলেন্নামেব 'ভূমিকাভিনয় বিশেষপ উল্লেখযোগ্য । মিনার্ভা থিয়েটাবে 
এই নাটকখানি পুনবভিনীত হয়। লব্ধপ্রতিষ্ঠ নট-নাট্যকাব শ্রীযুক্ত 
অপবেশচন্ত্র মুখোপাধ্যায় “কাউলফেব* ভূমিকাঁভিনয়ে বিশেষ কৃতিত্ব 
প্রকাশ কবিয়াছিলেন। 


কস্পাল ক্লু ওলা 


পঞ্চদশ পবিচ্ছেদে লিখিত হইযাছে,_স্তাব্‌ বাঁজা বাধাকান্ত দেবে 
নাটমন্দিবে গ্তাসান্তাল থিযেটাঁব অল্প্রদাষ কর্তৃক “কপাঁলকু গুলা” নাটকাঁকাঁবে 
গঠিত হইযা সর্ধব প্রথম অন্ভিনীত হয়। তাঁহাব পব গিবিশচন্ত্র কন্তুক 
পুনবাঁষ নাটকাঁকাবে পধিবন্তিত হইঘ। গ্রেট স্যাঁসান্তাল থিয়েটাবে অভিনীত 
হইয়ছিল্ল। পাঁগুলিপি বঙ্গিত না হওয়া রাঁসিক থিয়েটাবেব জন্ত তিনি 
গুনবাৰ একবাত্রে চবিজজন লেখক লইয়া কপাঁলকু গুলা নাঁটকাঁকাবে 
পবিণত কবেন। এপ দ্রুত বচনা সত্বেও গিবিশচন্দ্রেব তুলিকান্ি 
“কপালকুগুলা' বিশেষদপ প্রদ্ষুটিত হইযাছিল। বস্কিমচন্ত্রকে অক্ষুণ্ন 
বাঁখিয়৷ কাপালিকেব মুখ দিধ| তাগ্রিক সাধন-তত্বে যে আভাস তিনি 
দিরাছিলেন,__-তাহাতে দর্ণকগণ একটু নৃতনব্বও পাইযাঁছিলেন। 

১৭ই স্োষ্ঠ (১৩০৮ সাল) ক্লামিক থিবেটাবে কপালকুণ্ডলা প্রথম 
'অভিনীত হয়। 'প্রথমাভিনয বজনাব অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ ২ 

নবকুমাঘ-অমবেন্দ্রনাথ দন্ত, ক।পালিক-_মঘোবনাথ পাঠক, জ।তজীব--গ্রবোধনন্ত্র 
ঘোষ, বালক ভূতা--দনিবাবু, সার্দাঘ উডে--নটবব চৌধুধী, কপালকুগুল-_ গ্রীমতা কুস্তম- 
কুমাবী, মতিবিবি- জ্রীমতী তাসানুন্দবী, মেহেবটনিস|-এ্রীমতী ভৃবনেশ্ববী, ।মা-_বণী- 
মণি, পেশন|ন- লক্ষ্মীমণি ইত্যাদি | 

নবকুমার, কপালকুগুলাঃ কাঁপালিক 'প্রভ্তি ভূমিকাঁভিনয়ে অমরবাবু, 
শ্রীমতী কুনুমকুষারী, পাঠক ম্হাঁশয় প্রভৃতি প্রতোক অভিনেত। ও 


৪৭০ গিরিশচন্দ্র 


অভিনেত্রী বিশেষ কৃতিত্বেব পরিচয় দিয়াছিলেন; কিন্তু মতিবিবির 
ভূমিকায় বিশেষতঃ নবকুমার কর্তৃক তাহার প্রত্যাখ্যান-দৃশ্বে শ্রীমতী 
তাবাস্ুন্ববীৰ অভিনয় অতুলনীয় হইয়াছিল। 
প্শীল্টী জ্মিক্াজ গিল্িশ্চত্ক্র 

শ্রমতী কুম্থমকুমাঁবীব “মতিবিবি'ব ভূমিকা অভিনয় করিবাঁৰ মনে মনে 
ইচ্ছা ছিল। কিন্তু উক্ত ভূমিকায় শ্রীমতী তাঁবান্ুন্দবী পূর্বব হইতেই 
নির্বাঁচিতা হওয়ায় কুস্ুমকুমাবী একটু মনঃক্ষুধা হইয়াছিলেন। গিধিশচন্জ্ 
তাহীব মনোভাব অবগত হইয়। বলিঘাছিলেন, “শক্তিশালী অভিনেতা ও 
অভিনেত্রীব পক্ষে সকল ভূমিকাই সণান আদবশীয। পূর্বে ন্যাসান্তাল 
থিবেটাবে স্থপ্রসিদ্ধা অভিনেত্রী শ্রীমতী বিনোদিনীকে যখন “কপালকুগ্ডলা”ব 
ভূমিক! দেওর! হয, তাঁহ।ব কথা বা ভাঁবে মতিবিবিব ভূমিক! গ্রহণেব জন্য 
কোনও বপ আগ্রহ প্রকাশ পায় নাই। ফলতঃ কষেকটা দৃশ্যে তাহাঁব 
অরিনয এত উৎকৃষ্ট ও হাদম গ্রাহী তইনাছিল বে দণকবৃন্দ তাহাকেই সর্বোচ্চ 
প্রশংসা দিয়] ঘাষ। নাট্যক(ব যে চবিত্রকেই উচ্চাসন দিন না কেন, 
অভিনেতা বা অভিনেত্রীব কৃতিত্বে অতি ক্ষুদ্র ভূমিকাও সজীব হইয়া 
দর্শকেব উচ্চ প্রশংসা লাঁভ কবিতে পাবে” তাহা এই উক্তি প্রতিপন্ন 
কবিবাঁব জন্য গিবিশচন্ত্র কপালকুগুলাব ছুই তিনটী অভিনয় বজনীতে 
অধিকাবী, চট্টীবক্ষক, মাতাল, মুটে ও 'প্রতিবাসী এই পাঁচটী ভূমিকাব 
অভিনয় কবেন। বলা বাহুল্য--এই পাঁচটা ভূমিকাতেই তিনি পবস্পব 
বিবোধী রসাভিনয়ে উচ্চ প্রশংসা লাভ কবিম্াছিলেন। উনভ্রিংশ পবিচ্ছেদে 
উল্লিখিত হইযাছেঃ__এইরূপ অবস্থাগত হইয়া গিবিশচন্দ্র স্তাঁসান্ঠাল 
থিয়েটারে “মাধবীকন্কণে” সাতটী ভূমিকা অভিনয় কবেন। 

“কপাঁলকুগুলা”র় গিরিশচন্দ্র যে কয়েকটা নূতন দৃষ্ঠ বচন! করিয়াছিলেন, 
তন্মধ্যে কাঁপালিক সংক্রান্ত ছুইটা দৃশ্য ১৩৩১ সাল, ১৫ই কান্তিক তারিখের 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৭১ 


পপ ও রঙ্গে” (১ম বর্ষ, ওয় সংখ্যা) প্রকাশিত হইয়াছিল। একটী 
হাস্যরসাত্মক দৃশ্ নিয়ে উদ্ধত করিলাম। 


ভুভীক্ অহ গজ হুম 
সপ্তগ্রাম-মতিবিবিব বাঁটীব সম্ুখ । 
দুইজন মুটেব প্রবেশ । 


১ম মুটে। হাদে মামু, বা চিজ চেপিয়েছে, গবদাঁনাটা ঝুকি পবতিছে 
এ সাঁতগাঁব মন্দি কেডা আলো? 

২ মুটে। আবে ব্যাগম আইচেবে--ব্যাগম আইচে। 

১ম মুটে। কোয়ান্‌ থে আলো, কইতে পাঁবিস? 

২য় মুটে। ব্যাগমগুলা ক্যাবল গুবতিছে,-এ হানে আনতিছে-_ 
ওহানে যাতিছে, যেহাঁমে আড্ডা গাড়তিছে--লটন জুলাইচে__ 
তেবোনাঁলঅল। পাঁক বাখতিছে। 

১ম মুটে। হাদে ব্যাগমট। কেমনবে মামু? 

২য মুটে। ব্যাগমটা বড় জবব,_এই গোলাপ শুকৃতিছে, এই আতর 
ন|কে গুজতিছে; মাবতিছে হে! ফুলির তোব! ছুড়িই মারতিছে। সোণা 
খাতিছে-বূপা পাইখানা যাঁতিছে,_ক্যাবলই চুল হিচুড়ছে__চুল 
হিচুড়ছে। 

১ম মুটে। হাদে মামু, ব্যাগমডা চ্যাটাইপব চাঁদব বিছুয়ে শোয়, 
কি বলিস? 

২য় মুটে | ব্যাগমডা শোবে? তোর মত ছোট লোক পাইছিস 1 
ব্যাগমড। খালি ঘুরতি আছে আর বকৃতি আছে। 


৪৭২ গিরিশচন্দ্র 


১ম মুটে। হ্যাঁদে_ ব্যাগমডা মাইয়! মানুষ না! মরদবে মামু? 

২য় মুটে। ও মাইয়াঁও হতি পাবে__মবদও হতি পাবে । ও ঘোড়াৰ 
ওপব চড়চে, হাতীৰব ওপব চড়চে, উটিব উপব চড় চে--তাঁজ মাথায় 
দিতিছে-আর ট্যাব! হয়ে চলতিছে। 

১ম মুটে। হ্যাদে মামু, ব্যাগমডাঁকে দেখবাঁৰ মৌব বড ঝোঁক আছে। 

২য় মুটে। ঝোঁক কর্বা কিসে? বিডাঁব মতন পাঁগড়ি জবাঁয়ে সব 
ব্যাগমডাঁবে ঘিবি বইচে। ব্যাঁগমডা ফিকিব ফিকিব হাঁসতিছে আব 
ইদ্দিক-উদ্দিক চাইতিছে, আব বলতিছে_-ইডাঁবে পাঁকড লও, ওডাঁব 
ঝুটা ধব1৮__-আাব তেবনল খেঁচে সব ছুটতিছে। 

১ম মুটে । মামুঃ বাঁগমডাঁবে মুই দেখ্বাঁব চাই। 

২য মুটে । আচ্ছ! চল, দবয়াঁনজীবে কয়ে যদ্দি দেহাঁতে পাবি, তাঁব 
ফিকিব কবব আানে। গাঁট থে কিছু ছাঁববাঁৰ হবে, নইলে দবয়ানজী পথ 
ছাড়বে না। 

১ম মুটে। কাছায় মুই চাঁব আনা বাঁদি বাঁথ্চি, চাঁব আন! দিলি 
অইবে না? 

২য়মুটে। তা হতি পাবে। 

১ম মুটে। হ্যাদে মামু, ঝুল ঝুল কবি ঝুলতিছে, ঠন ঠন কৰি 
বাঁজতিছে,__বিচে লটগন জলতিছে, তাঁবে কি কযবে? 

২য় মুটে। তাঁব কয়-_ঝাঁব। 

১ম মুটে। আব হাদে মামু? এ যে পানি ছিটার। আব গোঁলাঁপেব 
খোসবে! ছিটায়। তাবে কি কষ? 

২য় মুটে। তুই পুচ করতিছিস, মোব গরদানটা! ঝুকি যাঁতিছে, 
চল বাঁড়ীব মদ্দি ঘুসি। মোট বইবার আইচিদ- মোট 
বোয়ে যা। 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৭৩ 


১ম মুটে। হাঁদে মামু১ খোসবেো দেহিছিস--পবাঁণটা তব কবে 


দিছে! 
[ উভয়েব বাটাব মধ্যে প্রবেশ | 





আমবা বহুবাঁৰ বলিয়াছি থে গীতব্চনাঁয় গিবিশচন্ত্র সিদ্ধ কবি। 
এমন ভাঁব এবং রস নাই, যাহা লইয়া! গিরিশচন্দ্র গান রচনা! কবেন নাই। 
কাপালিকেব ছইখানি ভয়ানক এবং শ্যামান্ন্দবীব একখানি মধুব বসাখ্িত 
গীত উদ্ধত কবিতেছি। এই তিনখানি গীতে__কঞ্পনা বচনাভঙ্গি এবং 
শব্যোৌজনাঁব পার্থকা পাঠক সহণ্ছই হাদধঙ্গম কবিবেন। 
১। পুজাবত কাপালিকেব গীত £-- 
বিমামাজ্্বল জ্|ল| বিভসিহ কপাল, 
গল খল কবাল ভাগিনা । 
সছ্যাচ্ছদিত নপমু্শোভিত কব, 
ঘোব গভাবু ক।দন্বিনা-বধণা, ভীম ভননরামিনা ॥ 
অতি বিশ।ল ধদননওল-__ 
লব লক বধন-লে| ]ুন লসনা, 
ক্ধিবধাব-ক€ত বিপুল দশনা, 
মাস্থ চন্ম সাধ, কঙ্কাল ভাপ-- 
[বভৃঘিত দিকবমন| ব্যে।মগ্রাসিনা ॥ 
অতি গশাণ কটা বেষ্টিত নদ-কব-কিস্কিণ, 
মহাঁক।ল ক।মিন।, 
উতৎ্কট আসব-পান-মগনা, 
বন্কনযনা শবাসন। বিভীষণা। , 
নিবিড মেঘজ(ল লটপট কেনী, নবমাংসা শী_- 
ঈশান-মদ্দিনী উল টল মেদিনী 1 
ভ্যঙ্কবী ভীষণ! শ্শানবাসিনী ॥ 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৭৫ 


২। দৃঢ় হন্তে নবকুমাঁবকে ধরিয়া! কাপাঁলিকের গীত-_ 


নব-কধিব-তৃষাতুব নেহাব ভূমি দুবে । 
শতশিবান।দিনী, ভৈববী-সঙ্গিনী, 
শিবানীশ্রেণী “ফে" ববে ভুবন পৃৰে ॥ 
নঘশিধ চর্ণ কত গৃধিণী চঞ্চ-বলে, 
উন্নত তকশিব প্রভগ্রন দলে, 
ঘন ঘন ঘোপ গভীব বোলে, 
যথা ?ভ্রবব কবতালে গায বিকট হবে ॥ 
দ।বানল বলে, প্রবল বঞ্জি ছলে, 
ঘন ঘন।ক।ধে ধুম গগনমগ্ডলে, 
ভীন জ্যোতি শশধল তবকা__ 
অস্থি-গ্রন্থি বত শোভে মেদিনী-উবে ॥ 
৩য়। কপালকুগ্ডলাব প্রতি শ্যামান্ুন্দবী__ 
(তায।ব কচ। শিখীত ত।ইতে জানো না। 
পুক্ষ পানণ পিবাত ম।(গা, নূলে পথে ভয মোণ! ॥ 
পবশে প্রাণ থ।বাব শ। বশে, গ'লবে প্রেম বসে, 
মন! ম|টা উঠবে লো ভেমে, 
হয,লো এটি মোণা, দাগ থাকে না 
পরেশ পপশে 
এখন মন মজে নি, তাই বোঝে! নি, 
তাইতে পিধাত মানা না, 
আনান ঠেকে শেখা, নয কথা শোনা ॥ 


স্বশানিলন্পী 


কেপালকুগুলা” দর্শকমগুলীর হৃদয় গাহী হওয়ায়, 'অমববাবুর উৎসাহ 
এবং অন্রুরোধে গিরিশচন্দ্র পুনবায় “মৃণালিনী' নাঁটকাকাবে গঠিত কবেন। 


৪৭৬ গিরিশচক্ 


গিবিশচন্্র কর্তৃক নাট্যাকাবে পবিব্তিত “মৃণা'লিনী+ সর্ব প্রথম গ্রেট 
ন্যাসান্তাল থিষেটাবে অভিনীত হয়। বিংশ পবিচ্ছেদে এতদ্সম্বন্ধে 
স্থবিস্তৃত লিখিত হইয়াছে । গ্রেট স্তাঁসান্তাল হইতে পাঁওুলিপি পাইয়া 
বেঙ্গল থিয়েটাবেও উচ্চ প্রশংসাব সহিত বহু শত বজনী “মুণালিনী, 
অভিণীত হয়। ,অমববাব বেঙ্গল থিয়েটাব হইতে মৃণালিনীর খাতা 
আনন কবাধ। গিবিশচন্দ্রকে এবাব বেণী পবিশ্রম কবিতে হয় নাই, 
তথাপি একটু নৃতনত্েব জন্ক লক্ষমণসেনেব রাঁজসভা, মুমলমানেৰ ভয়ে 
লক্ষণসেনেব গুপদ্বাব দিষা! পলাঁষন, গিবিজাযা ও দিগ্িজযেব প্রেমালাপ 
প্রভৃতি কষেকটা দশ্য এবং করেকখাঁনি নূতন গান সংযোজিত কবিয়া 
দিমাঁছিলেন। 

১০ আাবণ ( ১৩৮ সাল) ব্লাসিক থিষেটাবে “মুণালিনী' 'প্রথম 
অভিনীত হঘ। প্রথমাঁভিনষ বজনীন অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £__ 

পশুপতি-গিবিশচন্দ ঘোর, জমাকেশ _ হাঘাবনাথ পাঠক হেমচন্দ্র _অমবেন্্নাথ দত, 
দিগ্রিভয_-প্রযুক্ু নুপেন্গঞ্জ বঙ্গ, বো]মকেশ_ শ্রীমুন্ধ ভীব।লাল চট্োপাধা।য মাধবাচাগ্য 
_-গ9ত ৪ ভশিভূষণ ভট্টাচার্য, লক্্রণনেন-_নটবদ চৌপুপা, শান্বণীল--পপুক্ষ অই জ্রনাথ দে, 
মৃণলিনী-কিসণঝাল শিবিজায|--&/মতা কুক্রমনুঘাবী, মানোবম _প্রমদাজন্দণী ইত্যাদি । 

মহা সমাবোতে মুণ।লনীব সর্ধাঙ্গস্থুন্দর অভিনয হইয়াছিল। তিনটা 
বৃহৎ অশ্বীবোভণে মুসলমান সৈম্ত্রয বঙ্গমঞ্চে বাহিব হইত। প্রথম ছুই 
বাজি অনিনযেব পব কোঁনও বিশেষ কাঁবণে গিবিশচন্ত্র পশুপতি”ব ভূমিক! 
পবিত্যাগ কবায়, তীহাব সুযোগ্য পুত্র শ্রীযুক্ত স্থবেন্রনাথ ঘোষ 
( দাঁনিবাঁবু) তৃতীয়ািনয বজনী হইতে প্রথম «পশুপতিব' ভূমিকায় বঙ্গমঞ্চে 
অবতীর্ণ ভন। যে সকল ভূমিকা অভিনয় করিয়া স্ুরেন্দ্রবাবু 
বঙ্গনাট্যশালার প্রন্ুত গৌবব অর্জন কবিয়াছেন,_পশুপতিব ভূমিকা 
তাহাব অন্যতম | 


ছিচত্বারিংশ পারচ্ছেদ ৪৭৭ 


পশুপতি-ভূমি কাভিনয়ে গিরিশচন্দ্র অসম্মতি 


যে বিশেষ কাবণে গিবিশচন্ত্র পশুপতিব ভূমিকা পবিন্যাঁগ কবেন, 
তাহা এই £_- 

চতুর্থ অক্কেব শেষ দৃশ্যে মুসলমান কর্তুক পশুপতিব গৃহে অগ্নি প্রদত্ত 
হইয়াছে । পশুপতি “মষ্টভূজা” মৃত্তি বিসর্জন কবিবাব নিমিত্ত দেবী-মন্ৰিবে 
আসিরাঁছেন। মনোবমা ভম্মীভূতা। হইয়াছে নিশ্চয় কবিষা, একদিকে 
পশুপতিব অন্তবে যেরূপ অগ্নি জলিতেছে--অন্তদিকে বাঁহিবেও সেইবপ 
উদ্দে-_নিয়ে__চতুর্দিকে__অগ্রিশ্যুলিঙ্গ ছুটিতেছে। ই্টেজ-ম্যানেজাৰ উপর 
হইতে তুবড়িব শিল্মুখ কবিয়া সেই অগ্রি-স্কুলিঙ্গেব খেল দেখাইতেন। 
পশুপতিব ভূমিকা গিবিশচন্দ্র বে পাগড়ি পবিতেন, মাথা গবম হৃইবাব 
আশঙ্কীয় তাঁহাৰ ভিতবেব টাদি খুব পাতলা কাপড়ে প্রস্তুত কবা৷ হইত। 
দ্বিতীয় বজনীতে তুবড়িব অগ্নি সেই চা্দিব উপব পড়ায় মন্তকেব চর্ম স্থানে 
স্থানে দগ্ধ হইয়! ফোস্ক! পড়ে । গিবিশচন্ত্র কাতব হইয়! ষ্টেজ-ম্যানেজারকে 
নিবৃত্ত হইতে বলেন, কিন্ত দশকবৃন্দেব আনন্দ-কোলাগল এবং কবতালি- 
ধ্বনিতে তীাহাঁৰ কাতবোক্তি ্রেজ ম্যানেজীবেৰ কর্ণে পহু ছিলনা__ 
মমানভাবে তুবড়িব খেলা চলিতে লাগিল। অসীম ধৈয্যে গিবিশচন্্র 
তাহা সহ করিয়া অভিনয় সমাপ্ত কবিলেন। অভিনয়ান্তে অভিনেতা ও 
'অভিনেত্রীগণ তাহাব দগ্ধ পোষাক এবং মন্তকেব কেশে বছু ফোস্ক! দেখিয় 
যেরূপ ব্যথিত হইলেন, সেইরূপ বিস্বয়েব সহিত তাহার অটল ধৈর্যেব পুনঃ 
পুনঃ প্রশংসা করিতে লাগিলেন। তৃতীয় বজনীতে গিবিশচন্ত্র কিন্তু আব 
এ অগ্নি-পবীন্ষীয় অগ্রসর হইতে সম্মত হইলেন ন1। 

সুণালিনীব নিমিত্ত গিরিশচন্দ্র যে কয়েকখানি নৃতন গান বাঁধিয়া 
দিয়াছিলেন, তন্মধ্য হইতে ছুইখানি গীত নিম্নে উদ্ধত কবিলাম।-_ 


৪৭৮ গিরিশচন্দ্র 
১ম। পর্যটকের গীত -- 


মন, বাযু পধাজিত তব গমনে । 
কাব অন্বেষণে, মন, বত ভ্রমণে ? 
বুদ্ধি স্মৃতি সাথী পবিহবি, চল আশ! ধবি,_ 
পিযাসা কি মিটিল না ভ্রমণ কবি? 
আত্মহাবা, চল ক্ষিপ্তপাপা, নিবাশ-সাগষে পন্থাহাবা ; 
মন, বুঝ যতনে_ দিন গেল, মন, ভুল কেমনে ? 
২য়। পরম্পব মাঁল্য বিনিময় কবিয়া দিগ্রিজয় ও গিবিজায়া-_ 
শিবিলাযা ৷ তুই যা সবে, তোবে মাল! দিছি বাগ ক'বে। 
দিখ্বিজয । তই মা ধ'বে, কে সঘধে প্রাণ ধবে। 
গিতি। ভুই আামাল চাখেব ঝাল।ই, 
দিখি। তোব বাছে কাছে ঘুষিলো ঠাই, 
গিবি। তোবে আমি দেখতে পাবি নে, 
দিখি। ও কথা ধাবও ধাধিনে_ 
ও কথা কাণে ধধি নে, 
গিবি। নে নে, তুই স'থে যা 
দিশ্বি। এই যে-এই যে-তুই বদন তুলে চা; 
গিবি। কেন বে ছোড়া, কেন থে মুখপোডা, 
তুই আস্বি কি গাষেব জেবে ? 
দিখ্বি। ও ছুঁড়ি, ও ছুঁডি,_ 
ওলো!'গ্রাণ কাদে যে তোব তবে । 





ভ্ভিম্পাষ্প 
১২ই আশ্বিন (১৩০৮ সাল) গিবিশচন্দ্রের “অভিশাপ” গীতিনাট্য 
ক্লাসিক থিয়েটাবে প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতা 
ও অভিনেত্রীগণ £-_ 


ঘিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৭৯ 


বিষু- প্রমদাহন্দবী, নাবদ-_পঞ্ডিত প্রীহধিভূষণ ভটাচাধ্য, পর্র্বত-__অঘোষনাথ পাঠক, 
অন্বরীষ-_প্রবোধচন্দ্র ঘোষ, কণাদাস-_্রীযুক্ত হুয়েন্্রনাথ ঘোষ (দানি বাবু), তিলকদাস-_ 
শ্রীযুক্ত অহীন্ত্রশাথ দে, আগড়ব্যেম-_ যুক্ত অতীন্দ্রনাথ ভট্টাচাধ্য, ডমৃববাগীশ--প্রীমুত্ত 
হীবালাল চট্টোপাধ্যায, মন্ত্রী-নটবৰ চৌধুরী, দাকক-_গোষ্টবিহাী চক্রবততী, ছুষ্টা সস্বতী-_- 
শ্রীমতী তার়ানুন্দবী, গ্রীমতী-_প্রীমতাঁ কুন্থমকুমাধী, বল্পবী__বাঁমিমশি, সুষমা_ প্রীমতী 
ভূবনেশ্বরী, বিধু-কিস্কবী-_ভুমণকুমাবী, তমঃ__বিনোদিনী (ইাদি) ইত্যাদি। সঙ্গীভ- 
শিক্ষক--ভ্রীযুক্ত দেবক বাগচী, নৃত্তয-শিক্ষযিত্রী-_শ্রীমতী কুহ্বমকুমারী | * 


এখানি পৌবাণিক গীতিনাট্য | “অদ্ভুত রাঁমায়ণ হইতে গল্লাংশ গ্রহণ 
করিয়া ইহা বচিত হইযাছে। 
গিবিশচন্দ্র সকল পৌবাঁণিক নাটকেই তাঁহাঁব হ্্টি-শক্তির বিশিষ্ট 
পৰিচয় দিযাছেন। এ গীতিনাট্যে ছুষ্টা সবন্থতীব অবতাঁবণা তাহাঁব 
ৃষটান্ত। ইহাব একদ্রিক যেমন কৌতুক-_অন্যদিক তেমনই উচ্চভাঁবপূর্ণ। 
উদাহবণ স্বরূপ দুষ্টা সবস্বতীব সঙ্গিনীগণের গীতটা নিয়ে উদ্ধত হইল £__ 
“অভিযানে স্বজন ভূবন__অভিম।নেৰ এ মেলা, 
অভিমানেধ মধুব গানে সংসাবে চলে খেল! । 
অহঙ্করধ এ ভব-পাখ।ব, এমন শক্তি আছে কাধ, 
জ্ঞানতবণী বিনা পাথ|ব হ'তে পানে পা? 
মোহময এ ঘোর আধাধ, 
আশধাবে সাভার তরঙ্গে ওঠা লাঝ করে বাষে বাৰ, 
সধল মনে শত্বণ নিলে তবে সে জন পায় ভেল!, 
নইলে নাচে দ্ু'বেলা, মহ।মায। ষে ক'রে হেল! |” 


সস 


* স্ত্রীলোক কর্তৃক নৃত্যশিক্ষা বঙ্গ নাট্যশালায় এই প্রথম । শ্রীমতী কুহুমকুমাধীব নৃত্য- 
শিক্ষা-কৌশল দশনে গ্রীত হইযা, গিরিশচন্ত্র এই গীতিনাট্যেব দ্বিভীয়াভিনয় ব্জনীতে কুনুম- 
কুমারীকে একঠানি সুবর্ণ-পদক প্রদান কবেন। এই সমযে সুপ্রসিদ্ধ নৃত্য-শিক্ষক শ্রীযুক্ত 
নৃপেন্্র্্র বন্থু ক্লাসিক থিষেটান্ব পরিত্যাগ কিয়! কিছুদিনের জন্য অন্য থিষেটারে যোগদনি 
কষিয়াছিলেন। 


৪৮০ গিরিশচন্দ্র 


মাস্তি 

২৪শে জ্যৈষ্ঠ (১৩০৯ সাল) ক্লাসিক থিয়েটাবে গিবিশচন্দ্রের শান্তি, 
নামক রূপক গীতিনাট্য প্রথম অভিনীত হয়। প্রথম অভিনয় বজনীব 
অভিনেত। ও অভিনেত্রীগণ £__ 

বুটিশ-বাজমন্্রী_পর্ডিত শ্রীহবিভূষণ ভট্টাচ।র্যা, লর্ড কিচনাব--মঘোবনাথ পাঠক, 
ডি'লবি- শ্রীযুক্ত অতীন্দ্রনাথ ভটাচাধ্য, ডিউযেট- শ্রীযুক্ত অহীন্দ্রনাথ দে, বুযব-বাজলকষ্ী-_ 
শ্রীমতী বুক্ুমকুমাবী, বুযব-বমণা-_প্রমদানুন্দবী ইত্যাদি । সঙ্গীত-শিক্ষক- শ্রীযুক্ত দেবক 
বাগ্চি বঙ্গভূমি সজ্জ।কধ- শ্রীযুক্ত নবগে।পাল বায, নৃত্য-শিক্ষযিত্রী_ শ্রীমতী বুন্মকুমাবী | 

এই ক্ষুদ্র রূপকথা নি বুয়ব-যুদ্ধেব অবসানে সন্ধিস্থাপন উপলক্ষে রচিত 
হয়। স্থপ্রসিদ্ধ সজ্জাকর পিম সাহেব অভিনেত! ও অভিনেত্রীগণকে 
ইংবাঁজ ও বুয়বেব বেশে যথাযথবপে সাঁজাইয়! দিয়াছিলেন। 

ভ্রীক্ভডি 

ওবা শ্রাবণ (১৩*৯ সাল) গিবিশচন্দ্রেব “ভ্রান্তি” ন।টক ক্লাসিক 
থিয়েটারে 'প্রথম অভিনীত হর । 'প্রথমাঁভিনয় বজনীব অভিনেতা ও 
অভিনেত্রীগণ £-- 

বঙ্গলাল_ শিবিশচন্্র পোম, নিধঞ্জন__অমবেন্দনাথ দত্ত, পুবগন- শ্যুক্ত সুবেন্্রনাথ 
ঘোষ (দানি বাবু), উদযনাবাধণ--অঘোধনাথ পাঠক, শালিগ্রাম-_পর্ডিত শ্রীহবিভূষণ 
ভটটাচাধ্য, মুণিদকুলি খাঁ_নটবৰ চৌধুবী, সবফবাজ খা-্রীযুক্ত অতীন্দ্রনাথ ভট্টাচাধা, 
গোলাম মহম্মদ ও ২য প্রহবী- গোষ্টবিহাধী চন্রবন্তী, গযাবাম ও জনীদব-_--শ্রীযুক্ত হীব।লাল 
চট্টোপাধ্যাঘ, জমীদাষ ও ১ম প্রহবী__চণ্ডীচবণ দে, মুসলন|নদ্বয়-শ্রীযুক্ত অধীন্দ্রনাথ দে ও 
ননিলাল বন্দ্যোপাধ্যায, জমীদাব ও জমাদাব-_ শ্রীযুক্ত ঝ|মচন্দ্র চট্োোপাধ্যায়, বৃদ্ধ মুসলমান ও 
ঘাজদূত--পান্নালাল সবক।ব, অননদা__প্রমদাস্থন্দধী, মাধুবী-_ শ্রীমতী ভুবনেশ্বরী, ললিতা 
বাণীমণি, গঙ্গা_ শ্রীমতী কুহ্মকুমাবী, বৃদ্ধা কুমুদিনী ইত্যাদি । সঙ্গীত-শিক্ষক- শ্রীযুক্ত 
দেবকঠ বাগ্চি, নৃত্য-শিক্ষযিত্রী- শ্রীমতী কুহুমকুমাবী, বঙ্গভূমি-সঙ্জা কর-_শ্রীযুক্ত কালী- 
চয়ূণ দ।স। 


দ্বিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৮ ১ 


বাঙ্গালার নবাব মুশিদকুলিখাঁব বিরুদ্ধে বাজসাহীব জমীদাব রাজ! 
উদয়নাবায়ণেব বিদ্রোহ--ইতিহাঁস-বর্ণিত হইলেও '্রাস্তি” নাটককে 
এরতিহাসিক নাটক বল! চলে না । মহাকবি মেকৃসপীয়াবের হাম্লেট, 
ম্যাকৃবেথ, লীয়ার যেমন এঁতিহাসিক চরিত্র হইয়াও কল্পনাপ্রধান-_ভ্রাস্তিও 
তাহাই । একটা কাল্পনিক ত্রাস্তি--হাওয়াঁয় হাওয়ায় পুষ্ট হইয়া কেমন 
কবিয়া মহা ঝড় তুলিতে পাবে, এ নাটকে তাহাই প্রদশিত হইয়াছে 

মানবজীবনের অধিকাংশ স্থখ-দুঃখই কল্পন! প্রস্থত, ভ্রাস্তিব উপব 
প্রতিষ্ঠিত__সত্যেব সহিত তাহাব সংশ্রব অতি সামান্থ । গিরিশচন্দ্র এ 
নাটকে তাহা অতি উজ্জল বর্ণে চিত্রিত কবিয়াছেন' সংসারে একমাত্র 
যাহা সত্য, তাহ! প্রচ্ছন্ন বহিয়'ছে, আর সেই বসম্বূপের চাঁবিদিকে 
কল্পনা সহায়ে রসের তবজ উঠিতেছে--পড়িতেছে। ইহাই সংসাবেব 
দৈনন্দিন খেল! । ৃ 

বাঁজসাহীব জমীদার উদযনাবায়ণ তীহাব পালিত বন্ধু-কন্তা ললিতা 
এবং নিজ-কন্ঠ মাধুরীকে লইয়! দেবীপূজার জন্ট বনে আনিয়াছেন। এই 
মাধুবী সম্বন্ধে একটু রহস্য আছে। মাধুবী তাহার পবিণীত। পত্বী অন্নদাব 
কন্তাঃ পিতার অনভিমতে গোপনে বিবাহ কবিয়া উদয়নাবায়ণ পত্বীকে ঘবে 
আনিতে পারেন নাই, কিন্তু তীহাব গর্ভজাত। কন্তাকে যত্বে পালন 
কবিতেন। লোকে বলিত-_মাধুবী উদয়নারায়ণেব উপপত্বীর বন্তা!। 
তাহার মাতা কাঁশীতে গিয়া গ্রাণত্যাগ করিয়াছে। উদয়নারায়ণও পত্বীব 
কোনও সঠিক সংবাদ জাঁনিতেন না। এইটুকু পূর্ব ইতিহাঁস। 

মাধুবী এবং ললিতা যখন পু্পিত-যৌবনা, সেই সময়ে উদয়না থায়ণ 
একদিন ইহাদের লইয়া বনে দেবীপৃজার্থে আসিয়াছিলেন। দৈবেব নির্যন্ধে 
সেইদিন রাঁজমহলের জমীদার শালিগ্রামের পুত্র নিরগ্রন এবং মাঁলদহের 
জমীদার-পুত্র পুরঞ্জন- সেই বনে শিকার করিতে আসে। উভয়ে 

৩১ 


৪৮২ গিরিশচন্দ্র 


অভিন্বন্বদয় বন্ধু। নিরপ্রনেব সহিত ললিতার এবং মাধুরীর সহিত 
পুবঞ্জনৈর সাক্ষাৎ হইল। কিন্তু জীবনের এই বিশিষ্ট ঘটনা পরম্পরে 
পবম্পরের নিকট ব্যক্ত করিল ন1,_ কেননা উভয়েই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল-_ 
উভয়ে চিরজীবন অবিরাহিত্ত থাকিবে । সধথ্যের স্থলে দাম্পত্য প্রেমকে হৃদয়ে 
স্থান দিবে না । অতঃপর উদয়নাবায়ণেব প্রাসাদে হোরি উৎসবে উভয়েবই 
নিমন্ত্রণ হইল। স্থযোগ পাইয়া! ললিতাঁর সহিত নিবঞ্জন এবং পুবঞ্জনের 
সহিত মাধুরী আবিব খেলিল, তাহাতে বং ধবিল--যুবক এবং যুবতীদয়েব 
অন্তবে। ইতিমধ্যে হোলি খেলিতে খেলিতে নিরঞ্জন যখন ললিতাঁব কাছে 
মনোভাব ব্যক্ত করিতেছিল, সেই সময় দূৰ হইতে কে "মাধুবী” বিয়া 
আহ্বান করে। যুবতীব সহজাত লজ্জায় 'সথীবা ডাকছে” অছিলা কবিয়া 
ললিত! চলিয়৷ গেল। এই খানেই ভ্রান্তিব বীজ। নিবঞ্জন ললিতাঁকে 
মনে কবিল,__মাঁধুবী__উদরনাবায়ণেব কন্টা । একটা না একটা কাবণে 
বাধা পড়িয়া এ ভূল ভাঙ্গিবাব আব স্থুযোগ হইল না, এবং এই ভ্রান্তি 
হইতেই যত কিছু অনর্থের সৃষ্টি 

এ নাটকের স্থচন৷ মহাকবি কাঁলিদাসেব অভিজ্ঞান শকুস্তলার অনুবূপ, 
পশুষুগয়াৰ পবিণতি প্রেম-মুগয়ায়। অভিজাত্য অভিমান, আঁশ! নিবাশা, 
গঞ্জন! লাঞ্ছনা, সৌহার্দ্য শত্রুতা, প্রেম, প্রতিহিংসা প্রভৃতির সংঘর্ষে এই 
দৃ, কাব্যে অস্কেব পর অঙ্ক যেরূপভাঁবে গঠিত হইয়াছে, তাহা নাট্যসাহিত্যে 
অতি বিরল। সম্বদয় পাঠক নাটকের সর্বত্র সে ঘাঁত-গ্রতিঘাতেৰ 
পবিচয় পাইবেন। 

নিরগ্রনেব ভ্রান্তি কতবাব কত স্থলে সংশোধিত হইবাঁব স্থযোগ 
আসিয়াছে, কিন্তু গিরিশচন্দ্রেব অপূর্ব্ব কলাকৌশল ও নাট্য-নৈপুণ্যে সে 
সুযোগ দূর হইতে দুরে সরিয়া গিয়াছে, অথচ তাহাতে গল্পের স্বাভাবিক 
গতির কোনও ব্যতিক্রম ঘটে নাই। র্ধলাল একস্থলে বলিতেছেন, 


ছিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৯৮৩ 


“আর একটু আগে তোমার এই কথ! জানূলে ঘটনা-মোত আর একরকম 
চলতে! 1৮ নাটকের বিস্তৃত আলোচন! বা চরিত্র বিশ্লেষণ করিবার আগ্রহ 
এবং ইচ্ছা! থাকিলেও আমাদের স্থানাভাব; কিন্তু ত্রাস্তির অপূর্ব স্থষ্ট 
“বঙ্গলালের' কিছু পরিচয় ন! দিয়। তাহাকে সহজে বিদায় দেওয়া! যায় ন!। 

ভ্রান্তি এবং মীয়াবসাঁন এই দুই নাটক রচনায় দীর্ঘ পাঁচ বৎসরের 
ব্যবধান থাঁকিলেও মনে হয় যেন মায়াবসানেব “কালীকিস্কব+ ত্রাস্তিতে 
“রঙ্গলাল'রূপে পুনর্জন্ম গ্রহণ করিয়াছে । তবে মায়াবসানে যাহাব বীজ 
বপন কব! হইয়াছে, ভ্রান্তিতে তাহা বৃক্ষ রূপে পবিণত । কালীকিঙ্কব বস্তুর 
শেষ কথা» “মুখে বলতেম+ নিফাম ধর্ম-নিফ্ধাম ধর্ম; কিন্তু অভিমান 
ফল-কামন! ছাড়ে না। ম্ুখ-আশীয় পরহিত কবেছি, ধন্ম উপার্জন 
ক'বতে পবহিত করেছি, আস্মোন্নতির জন্ত পবহিত ক'বেছি, ফল-কামনায় 
পরহিত করেছি । আজ গঙ্গীজলে ফল বিসর্জন দিয়ে পরকার্যে রইলেম, 
বইলেম কি--জগতে মিশলেম।” 

নিবভিমান, ফল-কামনাশৃন্ত বঙ্গলালের চবিত্র আলোচনা করিলে পাঠক 
'আমাদেব সহিত এক মত ভইবেন, আঁশ! কবি। 

নিরঞ্জন ও পুরঞ্জনের বন্ধু বাতীত রঙ্গলালেব অন্য পরিচয় নাটকে নাই। 
দ্বাস্তি নাটকে তাহাঁব এইটুকুই প্রয়োজন, স্থতরাং তাহার এইটুকু পরিচয়ই 
দেওয়৷ হইয়াছে । কিন্তু কার্ধযতঃ সে সকলেব বন্ধু। কথায় কাঁজে তাহাকে 
যেটুকু ধরা যায়, তাহাতে মনে হয়, তাহার সন্ত! যেন সমগ্র সংসার ব্যাপিয়া 
বিদ্ভমান। 'রঙ্গলাল মানবধন্্ী, নিফামকর্্ী। মানুষ তাহার দেবতা, 
নিঃস্বার্থ সেবা তাহার কশ্মা। দেবীমুত্তির সম্মুখে সে গঙ্গাকে বলিতেছে_ 
“অমন পাথুবে মাঁকে মানি না মানি, তাতে বড় এসে যায় না। ***% 
আমার দেবতা প্রত্যক্ষ! আমার দেবতা কথা কয়) আমার দেবতার প্রাণ 
আছে; আমার দেবতা অমন দৃষ্টিভোগ থায় না, সত্যি ভোগ থায়ঃ আমার 


8৪৮৪ গিরিশচজ্ 


দেবতা পবম সুন্দর !” গলা প্রশ্ন করিল,_-"কে তোমার দেবতা শুনি ?” 
বঙগলাল উত্তর দিল,-_“মানষ আমার দেবতা! * ** আমার দেবতা 
প্রাণময় মানুষতযাঁৰ সেবা ক'রূলে প্রাণ ঠাণ্ডা হয়। যার 
সেবা কবে মনকে জিজ্ঞাসা কর্তে হয় না, ভাল কবেছি কি মন্দ 
কবেছি। যে দেরতাৰ পৃজায় কোন শাস্ত্রে নিন্দা নাই, তর্ক- 
বিতর্ক নাই ।” 

পুবঞ্ধনকে বলিতেছে,_-"সংসাব যে সাঁগব বলে, এ কথা ঠিক। কুল- 
কিনাঁবা নাই। তাতে একটী ক্ুবতাবা আছে, দয়া । দয়! যে পথ দেখায়, 
সে পথে গেলে নবাবও হয় না, বাদশাও হয় না, তবে মনটা কিছু ঠাণ্ডা 
থাকে। এটী প্রত্যক্ষ, তর্কযুক্তিব দরকাব নাই ।” 

এ কথা বঙ্গলাল কালীকিস্কর বস্ত্-ূপে তাহার শিষ্য 'বঙ্গিণীব নিকট 
শিখিয়াছিলেন। বঙ্গিণী বলিতেছেঃ “ঘোর অন্ধকাঁব, কেবল দূরে একটা 
ক্ষীণ আলো-_দয়া। সকলই অন্ধকাঁব! কেবল দয়াবই উজ্জ্বল শিখ' 
দেখতে পাচ্ছি।» কালীকিঙ্কব বলিলেন-_“বালিঝ৷ আমাব শিক্ষার্দাত্রী | 
বালিক৷ আমাৰ গুক।” 

কালীকিস্কবের পুবাতন ভূত্য শান্তিবামও একদিন তাহাকে বলিয়াছিল, 
“মনেব পচ] পাক উটুকে দেখলে কেউ কাঁরুকে ছৃক্জন বলতে৷ নি। তা 
আমবা মুকখ্যঃ আমরা আর তোমাদেব কি বল্‌বো 1% 

এ শিক্ষাও বঙ্গলাল ভুলে নাই। পুরঞ্জনকে বলিতেছে, “ছুর্জনেব 
দণ্ড, কপটতাঁর শাস্তি বল্‌তে কইতে বড় সোজা, কিন্তু মনটা উঠকে-পাটুকে 
দেখলে ক'জন যে বুকে হাত দিয়ে বল্তে পারে, আমি দুর্জন নই, তা! 

আমি আমাব মন দিয়ে বুঝতে পারি নি।* 

শাস্ত্রে বলে 'পূর্ববজন্মাজ্জিতা বিদ্যা” পূর্বজন্মের সংস্কার মানুষ তুলে না। 
রঙ্গলালের হৃদয়ে এ দুটী কথ! যদ্দি দৃঢ়ূপে অঙ্কিত না হইত, তাহ! হইলে 


ঘিত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৮৫ 


শত্রু মিত্র, সুজন দুর্জন নির্বিশেষে নর-সেবা সম্ভব হইত না। এই 
সেবাকার্যে তাহার সত্যমিথ্যার বিচার পধ্যস্ত নাই । গঙ্গা যখন তাহাকে 
তিরস্কার কবিল,_-“এই গঙ্গাতীরে তুমি আমায় মিথ্যা কথা কইতে 
শেখাচ্চঃ আর তুমিও মিথ্যা কথা কও ?" 

বঙ্গলাল উত্তর করিল,__“আমি তো তোমায় বলি নাই যে আমি ধর্মপুন্র 
যুধিষ্ঠিব, মিথ্য! কথা কই না ।” সত্য! যে পবার্থে জীবন উৎসর্গ কবিয়াছে, 
সে সত্যমিথ্যাব পার। রঙ্গলাল যখন কারাগার হইতে নিরঞ্জন ও তাহাৰ 
পিতা শালিগ্রামকে উদ্ধার করে, কথায় কাজে সে কি চতুরতার সহিত ন! 
প্রহবীদ্বয়কে প্রতাবিত করিতেছে! তাবপব পিতাপুভ্রে যখন উদ্ধার 
হইল, তখন সে প্রতাঁবিত প্রহবীদ্বয়কে বক্ষা করিবাব জন্তু আপনি বন্ধন 
পবিল। গন্গ। জিজ্ঞাীসিল»__“কি কচ্ছ, ধবা দেবে না কি?” 

বঙ্গলাল অতি সহজভাবে বলিল, “তা নয় তে! কি, এই গরীব দু'জনের 
সর্বনাশ করবো ?” 

বঙ্গলাল সাই প্রফুলপ। কোন অবস্থায় কাতর বা বিষ নহে। 
পবকার্্য সাঁধনের জন্ত গণিকার গালি সে সচন্দন তুলসীপত্রেব ন্যায় গ্রহণ 
কবে। গঞ্গাকে বলিতেছে, “ভুমি একবাৰ তোমাঁব জেতের ঝুলি ধবে গাল 
দাও ।” গঙ্গা বলিল, “দেখ দিনবাঁতই দিচ্ছি। তোমাৰ গালে লজ্জা 
আছে কি? এমন বেহায়া পুকষ জন্মে দেখি নি” 

রঙ্গলাল নিভীক। নবাব মুশিদকুলীরখাঁকে বলিতেছে,__“তৌমাঁব মত 
গোলামি আমি চাই নে।” তাহার অন্তবের তেজ, বল-_অদ্ভুত। মুশিদ- 
কুলীরথা প্রশ্ন করিলেন,_-“তোমাব এত্ত বল ক্যায়সে ? তোমাব এত জৌব 
ক্যায়সে ?” র্ঙগলাল বলিলঃ-_“আঁমি যদি আপনার জন্য বাঁচতেম, তা 
হলে তোমারই মত আমার প্রাণে দরদ হতো, মর্তে চাইতেম না। 
কিন্ত আমার মনে হয় কি জানো? যে মরবার সময় পধ্যস্ত যদি হাত 


8৮৬ গিরিশচন্দ্র 


উঠে, তাহলে একটী পরেব কাঞ্জ কবে যাব। আমি পরের জন্য বেচে 
আছি ।» 

মুশিদকুলিখা পরের জন্ত বাচার কোন হেতু খুঁজিয়া৷ পাইলেন না। 
বলিলেন, “তোম কেয়া ধবমকা ওয়াস্তে আয়া! কবে! ?” রঙ্গলাল বলিল, 
“নবাব সাহেব, যে ধর্মেব জন্ত পবেব কাজ করে, সে আপনাকে বিলোতে 
পাঁবে নাই |” 

পাঠক স্মরণ ককন, কালীকিস্কর বস্থুও এই সত্যেব আভাস পাইয়। 
বলিয়াছিলেন, “মবণে আত্মত্যাগ হবে না, আত্মা সঙ্গে যাঁবে, এইখানে 
আপনাকে বিলিয়ে দিলে তবে আত্মত্যাগ হবে |” 

রঙ্গলাল কেবল কন্মী নহে, কবি । গঙ্গাকে বলিতেছে,_-“কিন্ত গঙ্গা, 
একটা ছোট ফুল ফুটে কি কথা কয়, তা৷ কি তুমি শুনেছ ? মেঘের মুখে কি 
প্রেম, তা কি তুমি দেখেছ? টাঁদে তাবাঁয় নীববে কেন ভেসে যায়, ত৷ 
কি তুমি ভেবেছে? দেবতাব প্রত্যক্ষ মৃত্তি মানুষকে কি তুমি ঠাঁওব কবেছ ? 
দেখ, এ ছুনিয়। একটা দেখ্বাব জিনিস । দেখলে দেখতে পাব। যদি 
দেখতে শেখ, তাহলে আমাব মত একটা ছোটখাট কীটপতঙ্গ দেখবে না ! 
তোমাৰ প্রাণ উদাব আকাঁশে মিশিয়ে যাবে, তুমি আপনাকে খুজে পাবে 
না। দেখ্বে যে রসেব তবঙ্গ বইছে ।” 

শ্রীবামকৃষ্ণের উপদিষ্ট, শ্রীবিবেকানন্দেব প্রচারিত নারায়ণ-জ্ঞানে 
নব-সেবা এই চবিত্রের ভিত্তি। 'লোকহিতায়” উৎস্ষ্ট জীবন-_-এই মহা- 
পুরুষেব চরিত্রের সকল দিক 'ত্রাস্তি' নাটকের ক্ষুদ্র কর্মক্ষেত্রে মল্পূর্ণ 
বিকাশলাভ করে নাই--কবিতে পাবেও না। গিরিশচন্ত্র অতি সুকৌশলে 
ঘাত-গ্রতিঘাতের ভিতর দিয়া রঙ্গলালের মুখে তাহার কতকট! আভাস 
দিয় গিয়াছেন। তাহা অনুধাবন করিবার বিষয়। সে ভার পাঠকেক্ক 
উপর দিয়া আমবা নিরন্ত হইলাম। 


দ্িত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৮৭ 


ভ্রাস্তিতে আব একটী দেখিবাব মত চবিত্র_গঙ্গা,» _বঙ্গলালেব 
কর্মসঙ্গিনী। তাহাঁব প্রতি এঁকাস্তিক অনুবাগে গণিকা গঙ্গা _উচ্চব্রতে 
দীক্ষিতা হইয়াছে-__“পোড়ারমুখে। কি এক মন্ত্র দিলে, পবেব ভীবন! 
ভাবতে ভাবতেই গেলুম |” 

এ নাটকেব আব একটী চবিভ্র অন্নদা-_-উদয়নাবায়ণেব পবিণীতা 
কিন্ত পরিত্যঞ্ড! পত্বী। প্রেমবলে এই নারীব দিব্য দৃষ্টি উন্মীলিত। 
কালাপাহীড়েব চ্িঞ্চলাঃ ও শিবাঁজীমহ্ষী 'পুতলাবাই,__-এই চবিত্রের 
অন্ুবূপ । 


০ ১ন্মলক্ষ মভিহ্য 


ধাঁহাঁবা ভ্রান্তি” পাঠ কবিয়াছেন অথবা ইহাঁব অভিনয় দেখিয়াছেন, 
তাহাবা আমাদেব সহিত একবাক্যে বলিবেন বে ভ্রান্তি” একখানি উচ্চ 
অন্গেব নাটক । দেশপ্রসিদ্ধ ডাক্তীব পণ্ডিতবব মহেন্ত্রলাল সরকার 
বলিরাছিলেন,_-"এ অন্গুখ অবস্থাতেও গিবিশেব বই বলে ভ্রান্তি পড়তে 
আবস্ত কর্লুম। বড় মিষ্টি লাগুলো-_-একেবাবেই সবটা পড়ে ফেল্লুম। 
বেঙ্গলাল' আর গগঙ্গাবাই,_ এই ছুইটি 008%065.ই 01109. রঙ্গলাল 
সব্বার চেয়ে ভাল লেগেছে । গিবিশেব এখনও লেখ্বাব বেশ জোর 
আছে, এখনও সে 019 হয় নি।” রায় সাহেব স্বর্গীয় বিহাবীলাঁল 
সরকার বঙ্গবাঁসীতে ( ২১শে ভাত্র, ১৩০৯ সাল ) লিখিয়াছিলেন, 'ত্রাস্তি 
__নাটকেব আরস্কাস্ত মণি। কি অচ্যুত আকর্ষণ ! *** গিবিশবাবু 
তুমি ধন্য ! তুমি বঙ্গলাল আঁকিয়াছ, আর তুমি ব্লাল সাজিয়া বঙমঞ্চে 
আপন চিত্র দেখাইয়া, রঙ্গনাট্যমঞ্চে বঙ্গ-রসের যে উৎস ছুটাইয়াছ,_ 
পরোপকার মহ্থাব্রতের যে ধ্যান কথা শুনাইয়াছ, তাহা অনেক দিন শুনি 
মাই, দেখি নাই |» ইত্যাদি 


৪৮৮ গিরিশচক্ঘ 


যেরূপ যত্তের সহিত গিরিশচন্দ্র এই নাটকের শিক্ষাদান করিয়াছিলেন, 
ইহার অভিনয়ও সেইবপ সর্ববাঙগন্নন্দব হইয়াছিল। রঙ্গলাঁলের ভূমিকায় 


ম্প ক সদ ৯ স্পিল ৭ ৭ আগে কায 
রি শন 1 0». গিনি 
টা ০ 


ভ্রান্তি নাটকে__ 
পরঙগলালেব' ভূমিকায় গিরিশচন্দ্র এবং 


“গঙ্গার ভূমিকায় শ্রীমতী কুহ্ুমকুমাবী | 





নবীন যুবার সায় সাঁজসজ্জায় 
গিবিশচন্দ্রকে যেমন মানা- 
ইয়াছিল, যুবাজনোচিত 
উৎসাহে তাহার অভিনয়ও 
সেইরূপ হ্থদয়গ্রাহী ইহয়া- 
ছিল। 

অভিনয় দশনে স্থগ্রসিদ্ধ 
সাহিত্যিক শ্রীযুক্ত দীনেশ্র- 
কুমাব বায় তৎ-সম্পাদিত 
বস্থমতীতে ( ২২শে ভাদ্র, 
১৩০৯ সাল) লিখিয়া- 
ছিলেন,--"* * * ল্রান্তিব 
গ্রত্যেক কথা ভাবিতে 
হয় _- ভাবিয়া দেখিতে 
পাঁবিলে আমি যে সত্য- 
সত্যই এতটুকু-_আমাব 
যেস্পর্ধার কিছুই নাই-_ 
আমাঁব মধ্যে পুরুষকারেব 
কিছুই নাই-_তাছা বেশ 
হৃদয়ঙম হয়। নিরঞ্জন, পুর- 
প্রনের অকৃত্রিম বন্ধুতা_ 
হায়! জগতে তাহা হূর্লভ। 


ছিচত্বারিংশ পঞ্িচ্ছেদ ৪৮৯ 


আর রঙগলাল, গঙ্জ-_কবির অপূর্ব স্বষ্টি; এমন স্বার্থত্যাগ বাঙ্গালী একবাব 
চক্ষু খুলিয়৷ দেখিবে কি? এক দিকে স্বার্থ, হিংসা, দ্বে_-আর একদিকে 
স্বর্গের পবিত্রতা । দীড়াও রঙ্গলাল, এই অধ্ুপতিত বাঙ্গালীব সম্মুখে, 
তোমার বাছে শিক্ষা গ্রহণ কবিলে বাঙ্গালীর শ্রী ফিবিবে! গঙ্গ! বার- 
বিলাসিনী--ফকিব বঙ্গলাল কেমন ধাবে ধীবে তাহাকে পরহিতবতে দীক্ষিত 
কবিল ! নাটকেন কথ! বলিব নাঃ নাটককাঁবেব কৃতিত্বেব পরিচয় আবাব 
নূতন কবিয়৷ কি দিব? এখন অভিনয়ের কগা ; _পুবঞ্জন-__নিরঞ্জন দুইজনই 
পাকা অভিনেতা, অভিনয়-কৌশলে উন্য়েই বিশেষ পারদর্শী, দর্শকগণ 
এই ছুই যুবক অভিনেতার অভিনয় দর্শনে মোহিত হুইয়াছিলেন। বঙ্গলাল 
নিজে গিবিশবাবু, চিব প্রশংসিতেব আবাঁব কি বলিয়া প্রশংসা! কবিতে হয় 
জানিনা। * * তাহাব পব অভিনেত্রীগণেব কথা ; গঙ্গা, অনা, মাধুবী, 
ললিতা এই চাঁবিটি অভিনেত্রী-__কাহাকে বাখিয়৷ কাহাব প্রশংসা! কবিব-__- 
চাঁবিজনই নিজ নিজের অংশ উৎকৃষ্ট অঠিনয় কবিয়াছেন। উন্মাদিনী 
অন্নদাব কথ! শুনিয়া হৃদয় অবনত হয়। গঙ্গা গণিকা-_হউক গণিকা, 
কিন্ত তাহা পবহিতেচ্ছা পুববাসিনীবও অন্ুকবণীয়, আ'ব তাহার অভিনয় 
কেমন স্বাভাবিক । * * * ভ্রান্তি দেখিবাব ভিনিস- দেখাইবার জিনিস! 
ভ্রান্তিব একটী গান এই স্থানে উদ্ধত কবিবাব প্রলোভন সংববণ কবিতে 
পাঁবিলাম ন। ১ গানটা এই__ 


“নাই তে তেমন বনে কুন্ুম, মনে যেমন ফোটে ফুল। 
মধুভবে থধে থবে আপনি কুন্ম হয আকুল ॥ 
সোহাগেষ চাদেব কিষণ খেলে এ ফুলে, 
ফুলে ফুলে অজানা-তান হাসি মুখ তুলে, 
মধু উছলে যবে, মাতে ফুল আপন মৌধভে, 
আলোক-লতাব মাল! গাথা, বিকিযে গিষে চায় না! মূল ॥" 


গিরিশবাবুর রচনায় স্বর্গের অমৃত বর্ষিত হউক !” 


৪৯৬ গিরিশচন্দ্র 


এই নাটকের তৃতীয় অগ্ক, ষষ্ঠ গর্তাঙ্কে, দেবী-মন্দিরে ললিতা ও যোগ- 
বালাগণের গীতখানি উদ্ধত কবিলাম। গীতেব বিশেষত্ব এই, সাকার 
ভাবে নিবাকাব যোগমায়! বর্ণিত হইয়াছে । গীতখানি রচনা! কবিয়া 
গিরিশচন্দ্র বড়ই আনন্দলাভ কবিয়াছিলেন।__ 


ত্রিকাল-মোহিনী, যোগিনী-সোহিনী, মুক্তিযোগ বঙ্গিনী। 
দাহিত-বাসনা-বিভূতি-ভূষণা, জ্ঞানককণা-সঙ্গিনী ॥ 

সন্ত! নিত্য, নিত্যবিত্ত, সত্যচিত্ত-বাসিনী-_ 
সাধক শাস্তি, বিবেক কান্তি, শ্রাস্তি ত্রান্তিনাশিনী ; 
উপাধি নগন|, সমাধি মগনা, ত্রিগুণাতীত অঙ্গিনী। 
কাৰণার্ণব, ( অ) নাদি প্রণব, ভাবাভাবভঙ্গিনী ॥ 


ক্লাসিকেব পব মিনার্ভী ও মনোমোহন থিয়েটাবে ভ্রীন্তিব পুনবভিনয় 
হয়। রঙ্গলালেব ভূমিকা দাঁনি বাবু গ্রহণ কবিয়াছিলেন। অন্নদা ও 
গঙ্গাব ভূমিকাভিনয়ে পবলোকগত! তিনকড়ি দাসী ও স্ুণীলাঁবাল! যশস্থিনী 
হইয়াছিলেন। 


আআহ্ন্না 


১*ই পৌষ (১৩০৯ সাল) ক্লাসিক থিয়েটারে গিরিশচন্ত্রের “আয়না” 
প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাঁভিনয় রজনীব অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণঃ-_- 
গৌরীশঙ্কর মিত্র_নটবব চৌধুবী, ব্রজেন্দ্র- ্রীযুক্ত অতীন্্রনাথ ভট্টাচার্য, সদাশিব গু ই__ 
চণ্ডীচৰণ দে, আনন্দবাম- শ্রীযুক্ত পূর্ণচন্ত্র ঘোষ, স্ষ্টিধর_অমবেন্রনাথ দত্ত, মিঃ রামসহাষ 
দে__পঙ্ডিত শ্রীহবিভূষণ ভট্টাচার্ধ্য, মটকো- শ্রীযুক্ত ননিলাল বন্্যোপাধ্যায, কিনু স্তাকরা-_ 
রীযুক্ত অহীন্দ্রনাথ দে, নিক উকীল-_গোষ্ঠবিহাবী চক্রবর্তী, গৌরীশঙ্কর়ের দেওযান-_শখীভূষণ 
আশ, চিনিবাস- প্রীযুক্ত হীবালাল চট্টোপাধ্যায়, ভুলো পোদ্দার পান্নালাল সরকার, 
চা-ওয়ালা--প্রীযুক্ত নৃপেন্দ্রচন্দ বন, রামেশ্ববী--্রীমতী জগতারিণী, কিশোয়ী--ফিরণবালা, 


দিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৯১ 


তডিৎনুন্দবী--কিয়ণশশী ( ছোট বাণী), বামা- কুমুদিনী ইত্যাদি । সঙ্গীতশিক্ষক- শ্রীযুক্ত 
পূর্ণচন্্র ঘোষ, নৃত্যশিক্ষক-_্রীযুক্ত নৃপেন্মরচন্্র বন, বঙ্গভূমি-সম্জ্াকব-_ শ্রীযুক্ত কালীচরণ দাস। 

ইহা একথানি সামাজিক নক্সা--বড়দিন উপলক্ষে লিখিত। বিয়ে 
পাগল! বুড়োর লাঞ্ছনা উপলক্ষ্য করিয়া এই আয়নায় সমাজের অনেক 
বিকৃত ছবি গ্রতিবিষ্িত হইয়াছে । নক্মাখাঁনি হইতে একখানি শ্নেষাত্মক 
গীত পাঠকগণকে উপহাব দিলাম ।-_ 


পুকষ। 


ত্রী। 


পু। 
স্্ী। 
উভয়ে। 


পু 


স্ত্রী 


উভভয়ে।* 


চা-ওয়াল! ও চ1,ওয়ালী-_ 


সাহেবব! দেখলে ভেবে, বাঙ্গল৷ বববাঁদে যাবে, 
গবম গরম চ না! খেলে। 
জেনানা চা পা না খেতে, মেম কাদে তাই দুকুৰ ধেতে, 
বলে, 'পুয়োৰ জেনান! ঝ।চবে কিসে চা না পেলে? 
আয গাডোযান, মজুব মুটে, 
কুলে! ছেডে আয লো ছুটে, 
গরম গবম চায়েব মজ! নিয়ে যা লুটে,_ 
আয চলে কাজ ষেলে। 
তিন আনা রোজ তে! পেলি, কি ক'ব্লি যদি চা ন! খেলি? 
(ওবে ও গাডোযান মূটে 1) 
আজ তো! নগদ পয়স! দেছে, ভত খেলে কি থাকৃৰি বেঁচে, 
( ওলো৷ ও ঝাড়.নীবে ।) 
ডাক্তাধ সাহেব ঠিক বলেছে, কবোগেৰ ঘব এ ভাতে-ডালে ; 
বাবুঝ! সব চ| চিনেছে, মযরা! গেছে “গো টু হেলে” । 


কবি গিরিশচন্দ্র চিবদিন কল্পনালোকে ভ্রমণ করিলেও সামাজিক 
সমসায় এবং সমাজের কল্যাণে তাহার দৃষ্টি চিরসজাগ ছিল। দৃষ্াত্ত 
স্বরূপ "আয়না, হইতে নিয়ে আর একখানি গীত উদ্ধত করিলাম। কি্ত, 
ইহার প্রকৃষ্ট পরিচয় পাঠক তাহার সামাজিক নাটকে পাইবেন। 


৪৯২ গিরিশচন্দ্র 


গীত। 
যারা পবাশবেৰ দোহাই দিয়ে দুঃখে কাদ বিধবার । 
কুমারী ঘবে ঘবে, পাৰ কে কবে, ব্যবস্থা কি কর তার? 
মেযে পাব ক'ব্ৃতে কত গিয়েছে ভিটে, 
হেঁটে স্মলকজ কোর্টে, গেছে চাকবীটী ছুটে, 
ফেন খেষে ছেলে কত ঘুমোয আধ পেটে । 
থাকুক জেতেৰ অভিমান, থাকুক কন্ঠাদানেৰ কাঁণ, 
বেখে দাও হিন্দ্যানীব ভাণ ;_ 
আইবুড়ো৷ পাৰ ক'ব্তে গিযে গেবস্ত যায ছাষেখাব। 
যুবতী কুমাবী আছে, দোজববে, কি ভীবে। আধ ? * 


সশুজ্ণঞ্ম 


১০ই বৈশাখ (১৩১১ সাল) ক্লাসিক থিয়েটাবে গিরিশচন্দ্রেব 'সতনাম 
ন'টক প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় বজনীব অভিনেতৃগণ £-- 


আওবঙ্গজেব-_শ্রীযুক্ত সুবেন্ত্রনাথ ঘোষ ( দপিবাবু ', হামিদ খাঁ_নটবব চৌধুবী, বিগ 
সিংহ ও মীবসাহেব গোষ্ঠবিহাবী চক্রবর্তী, কাধতবফ খাঁ চণ্ডীচৰ্ণ দে, কবিম- শ্রীযুক্ত 
হীবাল।ল চট্টোপাধ্যায়, মোহ।ন্ত-_ যুক্ত পূর্ণচন্দ্র থে।য, ফকিধবাম- পণ্ডিত শ্রীযুক্ত হখিভৃষণ 
ভটাচারধ্য বণেন্দ-_ মমবেন্দ্রন।থ দন্ত, চধণদাস- _অনুকুলচন্্র বটব্যাল (আ্যাঙ্গাস ), পবশু- 
বাম-্রাযুক্ত অহীন্দ্রনাথ দে, বধুবাম_ শ্রীযুক্ত অতীন্্রনাথ ভট্টাচার্য, বৈষ্ণবী- শ্রীমতী কুন্ধম- 
কুমাবী, সোহিনী- শ্রীমতী পান্নাধাণী গুলসানা-_-বাগমণি, পান্না-_শ্রীমতী হয়িহন্দধী 
(ব্ল্াাকী) ইত্যাদি। সঙ্গীত-শিক্ষক- শ্রীযুক্ত দেবকণ্ঠ বাগ্চি ও শশিভৃষণ, বিশ্বাস, নৃত্য- 
শিক্ষক- শ্রীযুক্ত নৃপেন্ত্চন্্র নন । 


সম্রাট আওবঙ্গজেবেব রাজত্বকালে “সৎনামী” সম্প্রদায়ের বিদ্রোহ অব- 


সা চি শপ 





স্ব 


*  পরাশব মুনি বিধবা-বিবাহেৰ ব্যবস্থা দেন। সেই মত অবলম্বন করিয়া স্বর্গীয় 
বিদ্যাসাগর মহাশয় বিধবা-বিবাহ গ্রচলনেত্ব চেষ্ট। পাইয়ীছিলেন। 


ছিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৯৩ 


লম্থনে এই এঁতিহাসিক নাটকখানি বচিত হয়। (1) [09 0801)07008 
1990)675 06 0116 1860 91 0. 01. 1011962 200. 8, (2) 3051 
[7019 07 70617 আাণঞ্ঠ 2. 9, 2) 870 09006)8 (8) 9০০%৮,৪ 
71560 01 1091181)5 (4) 0810000% 79510%? (5) [017 
[10109601098 17115101701 10019) (0) 110£101 10)10980য ( ৫৪- 
০7) গ্রন্থ সমুহ হইতে ইহার উপাদান সংগৃহীত। ভগবানকে “সংনাম, 
বলিয়া ডাকায় এই সম্প্রদায় 'সতনামী” বলিয়া অভিহিত হইত। 
বৈষ্ণবী নায়ী জনৈকা বাজপুত-রমণী - হিন্দু “জোয়ান অফ. আ'র্ক--এই 
বিদ্রোহেব নেত্রী ছিলেন। ইহার্দেব শৌধ্য-বীর্যো উপযু্যপবি মোগল- 
বাহিনী পবাজিত হওয়ায় সম্রাট স্ববং ব্ণস্থলে আগমন পূর্বক স্থুকৌশলে 
বিপক্ষদল দমিত করেন । আদিবস ইহাব প্রধান আশ্রয় এবং প্রধানতঃ 
বীববন ইহার অঙ্গীভূত। 

গিবিশচন্দ্র এই নাটকে দেখাইয়াছেন যে ন্যায়, অন্যায়, পাপপুণ্য- 
নিধ্বিচাঁবে দয়া, মায়া, প্রেম, মম্তা__এমন কি যুক্তিকামন1-শূন্ত হইয়! 
লক্ষাপথে অগ্রসব হইতে না পারিলে উচ্চ সঙ্কল্প সিদ্ধ হয় না। আবও 
প্রতিপন্ন কবিয়াছেন যে বিশ্বাম_-অসাধ্য সাধনে সমর্থ এবং বমণীব 
মোঁহিনীশক্তি-অমৌঘ । 

এই নাঁটকের নায়ক-চবিত্র-্ষ্টিব বিশেষত্ব এই যে__কবি যে সকল 
উচ্চগুণে নায়ককে ভূষিত করিয়াছেন, সেই সকল উচ্চ হাদ্বৃত্তিই রণেন্ত্রে 
সন্দনাশেব 'কাঁরণ হইয়াছে । নায়িকা-_ “গুলসানাচরিত্রে প্রেম ও 
প্রতিহিংসা-_এই ছুই বিপরীত ভাবের অদ্ভুত ছন্দ প্রদশিত হইয়াছে। 
গুলসানা-_গিরিশচন্দ্রের একটী অপূর্ব স্থষ্টি। নাটকের অন্তান্ত চরিত্রের' 
মধ্যে প্রধান_বৈষবী, ফকরিরাম, চরণদাস ও আওরঙ্গজেব । 

ফকিররাম এবং চরণদাস উভয়েই সংনামী সিদ্ধ পুরুষ। ফকির- 


৪৯৪ গিরিশচন্দ্র 


রাম দেশকে মোগল-শৃঙ্খল হইতে মুক্ত করিবার স্প্রে চির-বিভোর-__ 
সম্ভবতঃ এই জন্যই তিনি পরিব্রাজক। চবণদাঁস তাহার শিল্ত, দা্য- 
ভক্তিসিদ্ধ__গুরুগত প্রাণ । চবণদাসেব কন্মাশ্রয়_ দেশের জন্য নয়__ 
গুকব জন্ত । কিন্তু গিরিশচন্দ্রের সর্ববাঁপেক্ষ। কৃতিত্ব_-আওরঙগজেবের চিত্র 
অন্কনে। ভাঁবত-সআাট সদা সতর্ক, সাবধান-_-সাবহিত। শুভ অবসব 
তিনি কখনও পবিতাযগ কবেন না । কাল- কর্মক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইবাব 
সঙ্গে সঙ্গেই তিনি যেন তাহাঁব কেশাগ্র ধরিয়া স্বীয় কাধ্য সাধন 
করাইয়। লন। কেহই সম্রাটেব বিশ্বামভাজন নহে__কিস্ত আপনার 
উপব তাহার প্রভৃত বিশ্বাস। বাদসা অপেক্ষা আপনাকে অধিক 
বিচক্ষণ বাজ্ঞানী মনে কবা তাহার কাছে অপবাধ। সম্রাটেব উক্তিতে 
আড়ম্বব নাই, কপটতা৷ নীই, বাহুল্য নাই। গিরিশচন্দ্র যে সকল 
বাক্রকীয় গুণে ভাবত-সম্রাটকে--কেবল ভাবত-সম্রাটকে কেন- প্রধান 
গ্রধান মোগল-নেতাগণকে ভূষিত করিয়াছেন, তাহা হিন্দুৰব আদর্শ 
স্থানীয়__-অন্ুকরণ যোগ্য,_একথা গ্রন্থকার ভূমিকাতেই পুনঃ পুনঃ ইঙ্গিত 
করিয়াছেন। 

কিন্ত অতি অশুভক্ষণে গিবিশচন্দ্র "“সত্নাম” নাটক রচনা কবিয়া- 
ছিলেন। এই নাটকখানি হিন্দু-মুলমান-ছন্দ বিষয়ক, স্ুতবাং পরম্পব বিবদ- 
মান বিবোধী সম্প্রদায়ের পরম্পবেব প্রতি কটুক্তি প্রয়োগ নাটকে অপরি- 
হা । গিরিশচন্দ্র “সৎনাম" গ্রস্থেব ভূমিকায় একথা দৃষ্টান্তসহ উল্লেখ করিলেও 
মুসলমান-সন্প্রদ/য় বিশেষরূপ চঞ্চল হইয়া উঠেন। সে সময়ের মুসল- 
মান সংবাদপত্রসমূহেও অগ্নিতে কুৎকাবের ম্যায় এতদ্সম্বন্ধে তীব্র 
আলোচনা হইতে থাকে । যাঁধাই হউক একদিকে মুসলমান সম্প্রদায়ের 
দাঁরণ চাঞ্চল্য, অন্যদিকে হিন্দুজাতির পরাজয়ে সাধারণ দর্শকগণও সেরূপ 
প্রসন্ন নহে, এই উভয় কারণ মিলিত হুইয়। “সতনাম” অকালে কালগ্রাসে 


ত্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৯৫ 


পতিত হইল। থিয়েটারের কর্তৃপক্ষগণ চতুর্থ রজনীতে (৮ই জৈষ্ঠ) 
উত্তেজিত মুসলমানগণের জনত৷ দর্শনে তাহাদের প্রীতির নিমিত্ত 
“নৎনামের” অভিনয় বন্ধ করিয়া! দিয়া তৎপরিবর্তে ভ্রমর? ও «দৌললীলার' 
অভিনয় ঘোষণ! করেন। 

ইহার কিছুকাল পবে ৬ বিহারীলাল দন্থের ন্াসান্তাল থিয়েটারে 
( রয়েল বেঙ্গল রঙ্গমঞ্চে ) “ভারত-গৌরব” নাম দিয়া স্ুপ্রসিদ্ধ নট-নাটা- 
কাব শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেব কয়েক রাত্রি “সতনাম” নাটক অভিনয় করেন। 
চুণীলাল বাবু রণেন্দ্রের এবং স্ুবিখ্যাতা অভিনেত্রী তিনকড়ি দাসী 
বৈষ্ণবীব ভূমিকা গ্রহণ কবিয়াছিলেন। “সৎনামের, ইহাই শেষ অভিনয় । 





ব্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 


স্াগুত্ডিক্ শু সানিনক্ষ পজ্জে গিল্ল্রিশ্শচজ্্র 


ক্লাসিক থিয়েটাবেব একটী বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা__“রঙ্গালয়, 
নামক সাণ্াহিক সংবাদপত্র প্রচাব। ইংবাজি ও বাঙ্গাল সংবাদপত্রসমূহে 
থিষেটারে অভিনীত নাটকাঁভিনয়েব মধ মধ্যে সমালোচন! বাহির হলেও 
সকল সংবাদপত্রের সম্পার্দকই যে সাহিত্যবথী অক্ষয়চন্ত্র সরকার প্রভৃতির 
নায় নাট্যকলার উন্নতিকল্পে অতি যত্তের সহিত দোষ-গুণ উভয়ই দেখাইয়। 
দিতেন, তাহ নহে। অভিনয়-মাধুধ্য বিকাশে নিমিত্ত অভিনেতৃগণকে 
কিরূপ কঠোর সাধনা কবিতে হয়, তাহাঁৰ মর্ম-গ্রহণে সকলেই যে মনোযোগী 
হইতেন বা তৎসহন্ধে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন তাহাও ঠিক বলা যায় না। 
এ নিমিত্ত সময়ে সময়ে নাটক বিশেষতঃ: নাটকেব অভিনয়ে--যথাযথ 
সমালোচনার পরিবর্তে অযথা স্ত্তি বা অযথা নিন্দা গ্রচারিত হইত; 


৪১৬ গিরিশচন্দ্র 


কখনও কখনও ব! ব্যক্তিগত বিদ্বেষেব বিষও সমালোচনায় ফুটিয়া৷ উঠিত। 
এই সময়ে ছুই একখানি বাঙ্গালা সংবাদপত্রের সম্পাদক থিয়েটাবওয়ালাদেব 
গালি দ্বিবার জন্যই যেন উঠিয়া পড়িয়! লাগিয়াছিল। 

বঙ্গালয়ের দর্শকগণ মধ্যে মনেকেই সংবাদপত্র পাঠ কবিয়া থাঁকেন, 
এইরূপ এক পক্ষের কথা শুনিয়! নাট্যাভিনয় সম্বন্ধে তাহাদের একটা বিকৃত 
ধাঁবণ জন্মিত। কারণ অপব পক্ষেব কোঁন কথাই শুনিবাঁর তাহাদের স্থযোঁগ 
ছিল না। এই অভাব দূৰ কবিবার মানসে এবং তৎসঙ্গে নাট্যকলা 
সংক্রান্ত প্রবন্ধার্দি প্রকাশে সাধারণকে নাট্যকলা-বসাম্বাদনে প্রস্তুত 
কবিবাব নিমিত্ত অমববাঁবু একখানি সাপ্তাহিক পত্র প্রচাবার্থ গিবিশচন্দ্রে 
পবামর্শ গ্রহণ কবেন। গিবিশচন্ত্র এইরূপ একখাঁনি সংবাদপত্রেব অভাব 
বহুদিন হইতেই অনুভব কবিতেন। তাহার সম্পূর্ণ উৎসাঁহ পাইযা এবং 
ত।হার পৃষ্ঠপোষকতায় অমববাবু সত্ব কার্য্যন্ষেত্রে অবতীর্ণ, হইলেন। 


“ল্রত্কাজ্শক” স্াাগুধহিক্ক জর 


স্থপ্রসিদ্ধ পণ্ডিত পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়েব সম্পাদ্কতায় ১৩০৭ 
সাল, ১৭ই ফাল্গুন, শুক্রবার হইতে “বঙ্গালয়* নাঁমক সচিত্র সাপ্তাহিক 
সংবাদপত্র বাহিরতহইতে থাকে । প্রথম সংখ্যাতেই গিরিশচন্দ্রের আত্মকথা, 
বঙ্গালয়, ইংরাজ বাজত্বে বাঙ্গালী ও নটের আবেদন শীর্যক চারিটা প্রবন্ধ এবং 
'সেয়ান ঠকলে বাপকে বলে না” নামক একটা গল্প বাহিব হয়। যে পথ্যন্ত 
ন৷ রঙ্গালয় সু প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, গিরিশচন্দ্র প্রত্যেক সপ্তাহেই তাহাতে 
নিয়মিত লিখিতেন। রঙ্গালয়ের প্রথম সংখ্যায় সুচনাম্বরূপ গিরিশচন্ত্রের 
ঘে আত্মকথা” শীর্ষক প্রথম প্রবন্ধ বাহির হইয়াছিল, আমরা নিম্নে তাহা 
উদ্ধত করিলাম। ইহা পাঠ করিলেই রঙ্গালয় প্রকাশে গিরিশচন্ত্রের 
মনোভাঁব -পাঠকগণের উপলব্ধি হইবে ।_ 


ত্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৯৭ 


“অনেক সংবাদপত্রেই প্রায় রঙ্গালয়ের বিষয় কিছু না কিছু থাকে, 
ইহাতে প্রকাশ পায় যে, বঙগালয়ের কথা অনেকে জানিতে চান, তবে 
আপনাব কথা আপনি যেমন বলা যায়, অপবের দ্বার! সেরূপ হয় না। 
আপনার কথা আপনার! যতদূর পাবি বলিব, এই নিমিত্তই “রঙ্গীলয়েব, 
আয়োজন। আমাদের সহিত সম্বন্ধ নাই, এরূপ ব্যক্তি বা বস্ত্র হইতে 
পাবে না। কারণ, রঙ্গালয় জগতের একটা ক্ষুদ্র অন্ুরূপ। সুতবাং 
সমস্ত বিষয়ই রঙ্গালয়ের স্তম্তে উল্লিখিত হইবে । তবে আমাদেব অন্তর 
যেবপ আলোকিত ও সে আলোকে সে বস্তু যেরূপ দেখিব, সেইরূপ বর্ণ 
কবিব। এক বস্ত দুইজনে দুইভাবে দেখেন সন্দেহ নাই। কেরাণী» 
মফিসেব সময় বুষ্টি হইলে, বিধাতাকে নিন্দা কবেন, কিন্তু কষকের আনন্দে 
সীমা থাকে না। কেহবা রঙ্গালয় উৎসন্ন না যাওয়াতে ক্ষুণ্ন, কেহ বা 
সম্পূর্ণ উৎসাহ প্রদান করেন। অত্যাচাবী ধনীব__বিচাবপতি ঘুষ খাইলে 
ভাল হয়, কিন্তু দরিদ্রের তাহাতে সর্বনাশ । রাজশাসন না থাকিলে, 
চোঁবেব ভাল-_পগৃহস্থের অমঙ্গল । এইরূপ সমস্ত বিষয়েই মতান্তব। 
আমাদেব সহিতও অনেকের মতান্তর হইবাব সম্তভাঁবন! | 

আমাদের মতে স্বদেশ ধনধান্যে পূর্ণ হউক, সকলে নীবোগ হউন, 
ঘবে ঘবে আনন্দকার্য উপস্থিত হউক, আমরা পরম স্থখে কালাতিপাত 
করিতে পারিব। দেশে সঙ্গীত শিল্পেব উন্নতি হউক, সুযোগ্য নাটককাব 
জন্মগ্রহণ করুন, অরসিক দ্বণিত হউন, স্বরসিকের সম্মান হউক, আমাদেব 
বিশেষ মঙ্গল । বাজপুরুষেরা সুখে থাকুন, নটে উৎসাহ প্রদান ককন,__ 
আমরা পরম আনন্দে থাকিব। হিংক, নিন্দক, কুৎসিত-আচারী ব্যক্তি 
জগতে না থাকে, যে বস্ত যেরূপ-_-তাহার সেরূপ আদর হয়, জগতে 
মার্জনাণীল ব্যক্তি অধিক হন, সম্ত্রান্ত ধনাট্য ব্যক্তি আনন্দময় হন, আমরা 
শিল্পী, আমাদের পরম মঙ্গল। বাণিজা-বিষ্তার এবং বিজ্ঞানের উন্নতি 


৩২ 


টৈ ০১ গিরিশচন্দ্র 


দ্বাবা নানাবিধ আবিষ্ষাবে রঙ্গালয় সুলজ্জিত হউক--আমাদের পরম 
আনন । 

বল! হইল যে সমস্ত বিষয়েব সহিত আমাঁদেব সম্বন্ধ, সমস্ত বিষয়েবই 
চচ্চা রঙ্গালয়ে হইবে । 'আত্মবক্ষ! পরম ধর্ম । আমবা আত্মবক্ষার সর্বদা 
চেষ্টা করিব। কুৎসিত্প্রকৃতি ব্যক্তিমাত্রেই বঙ্গালয়েব প্রতি বিদ্বেষ 
প্রকাশ কবেন। মিথ্যা অপবাদ বঙ্গালয়েব প্রতি অর্পণ কবিতে কিছুমাত্র 
সন্ভুচিত নেন, যে কথা বলিলে লোকে বঙ্গালয়কে ঘ্বণ! কবিবেন, মন্দ কল্পনা 
প্রভাবে সেই কথাই হৃষ্টি কবেন। আমবাও বঙ্গালয হইতে তাহাদেব 
প্রতি তীব্রদৃষ্টি কবিব। 

সহাদয় ব্যক্তি মাত্রেই আমাদের সর্ধবদা ন্নেহ কবেন-_আশীর্বাদ 
করেন--উপদেশ প্রদান কবেন,_'আমবাঁও তাহাঁদেব নিকট সম্পূর্ণ 
কৃতজ্ঞ, তাহাদেব আশীর্বাদ ও উপদেশ আদবে মস্তকে ধাঁবণ কবি। যে 
নকল ব্যক্তি বঙ্গালয়েব প্রতিপাঁলনের নিমিত্ত অন্তুকম্প৷ প্রদর্শনে রঙ্গালয়ে 
পদার্পণ কবেন, তীহাদেব আমগবা সেবক। যথাসাধ্য তাহাঁদেব গ্রীতি 
সাধনে আমবা চিব যত্ববান্‌। ূ 

ধাহাদেব উৎসাহে, যত ও আয়াসে বঙ্গবাসী বঙ্গালয প্রথম দেখিয়াছিল, 
বাঁজপদে 'ও উচ্চপদে প্রতিটিত হইয়াঁও বীহাঁবা অভিনব শিক্ষা দিয়াছিলেন, 
নব বঙ্গ ভাসাঁব পুষ্টি সাধনে নাটক কৃষ্টি কবিয়াছিলেন, ধাহাঁবা আমাদের 
পথপ্রদর্শক ও গুক, গুকদক্ষিণা স্বরূপ আমবা তাহাদের পদে প্রণাম 
কবি।* 'আামাদেব দৃষ্টিতে তীহাব! দ্েবস্থীনীর ও পরমপূজ্য। আম়বা 
তাভাদেব দাসান্ুদাস। তাহাদেব মধ্যে কেহ কেহ স্বর্গগত হইয়াও 


* মহাধাঁজ! যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর, মাইকেল মধুহ্দন দত্ত, দীনবন্ধু মিত্র গ্রভৃতিকে লক্ষ্য 
করিয়। লিখিত। 


ত্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৪৯৯ 


আমাদেব প্রতি রুপাদৃষ্টি করেন__এই আমাদের ধাবণাঃ সর্বদাই তাহাদের 
স্বতি আমাদের হাদয়ে জাগরূক থাঁকিবে। 

রাজার প্রতি আমাদের পবম শ্রদ্ধা । বাল্য রঙ্গালয়_-সকল দেশেই 
হতাদৃত হইয়! থাকে -আমাদেবও সেই দুর্ভাগ্য, কিন্তু নিরপেক্ষ রাঁজার 
প্রভাবে আমাদের প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশে কেহই সম্পূর্ণ সাহদী হন না। 
বাজদাঁবে আমদেব ব্যবসা- ব্যবসা বলিয়া গণ্য--জঘন্ক ব্যবসা নয়-_ 
অনেক বাজপুরুষ আমাদের উত্সাহ প্রদানার্থে আয়ান স্বীকারে রঙ্গালয়ে 
উপস্থিত হন, ও মিষ্ট সম্ভাষণে আমাদের হৃদয় উন্নত কবেন। কৃতজ্ঞতা 
সহকাবে যদি কখনও কোন উপহাব দিই, তাহা যত্ে গ্রহণ কবিয়া 
আমাদেব সন্মানিত কবেন। বাজপ্রতিনিধি কপাঁয় আমাঁদেব তত্বাবধাঁবণ 
কবিয়া থাকেন। রাজার গুণে আমরা সম্পূর্ণ বাঁজতক্ত। 

সাধুব প্রতি আমাদেব অচল ভক্তি। সাধু সন্যাসী সদাসর্ধদা 
আমাদেব বঙ্গালয়ে উপস্থিত হন। ঘ্বৃণিতা অভিনেত্রীকেও পদধূলি দেন, 
দক্ষতাঁব প্রশংসা কবেন, ধর্মপুস্তক অভিনয় দর্শনে আনন্দ কবেন-- 
ভাবদশাপন্ন হন, তাহাদেব ভক্তগণকে অভিনয় দেখিতে উপদেশ দেন। 
কেহ দ্বণা কবিয়! আমাদেব গ্রতি কুবচন নিক্ষেপ কবিলে, তাহাদের বুঝান 
ও যাহাতে আমাদেব ধর্ম্োনতি হয়) তাহা। সর্বদাই কামনা করেন। আমব। 
তাহাদেব চরণে শত শত প্রণাম করিয়া “বঙ্গালয়” কার্ধ্যে প্রবৃত্ত হইলাম । 

আমাদেব আত্মকথা সংক্ষেপে বলিলাম। ক্রমে কার্যে আমাদের 
আরও পবিচয় পাইবেন। পবিশেষে বন্তব্য-_আমবা নিরপেক্ষ, কাহারও 
তোষাঁমোদ বা কাহারও প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করিব না । মনে-জ্ঞানে যাহা 
সত্য জানি, __সত্যের দাঁস হইয়া তাহা প্রচার করিব। বলা বাহুল্য-_ 
আমরা সাঁধাবণের উৎসাহপ্রার্থী ।৮ 

প্রায় দুই বৎসর রঙ্গালয় প্রকাশিত হইবার পর রঙ্গালয় সংক্রান্ত 


৫০০ গিরিশচক্্ 


লোকজন, আসবাৰ ও হিসাবপজ্জ এত বাড়িয়া যাইতে লাগিল, যে থিয়েটার 
ও একখানি বৃহৎ সাপ্তাহিক সংবাদপত্র একসঙ্গে পরিচালন! করা৷ 
অস্তবিধাজনক হইয়া উঠিল । অমরবাবু যদি বঙ্গালয়ের স্বত্ব প্রদান করেন, 
তাহা হইলে বলয় প্রচাবেব উদ্দেগ্ত বজায় রাখিয়া পাঁচকড়িবাবু স্বয়ং 
কাগজথানি পবিচালনা কবেন, এইবপ তিনি ইচ্ছা! প্রকাশ কবিলেন। 
অমববাধু ওদার্যযগুণে রঙ্গালয়ের স্বত্ব ছাড়িয়া দিতে সম্মত হইলে; 
পাঁচকড়িবাধু গিবিশচন্ত্রকে বলেন” -“আজকাল সকল সংবাদপত্রে গ্রাহক 
বৃদ্ধির নিমিত্ত পহাব প্রদান কবা হয়। যগ্যপি আপনা'ব কয়েকখানি 
নাটক আমাকে এক বৎসবেব নিমিত্ত উপহার প্রদানে অনুমতি দেন, তাহা 
হইলে আপনাদের অনুগ্রহে 'আামি স্বাধীনভাবে জীবিকানির্ববাহে সমর্থ হই |” 
রঙ্গালয়েব স্থায়িত্ব কামনায় গিরিশচন্দ্র আনন্দের সহিত এক বৎসরেব 
নিমিত্ত তাহার কালাপাহাড, নসীরাম, মুকুল-মুঞ্জবা ও চগ নাটক 
বঙ্গালয়েব উপহাব নিমিন্ত প্রদান কবেন। 


“ম্বাক্যে-সন্কিিল্র” মম্িক শক্ত 


ইহার প্রায় দশ বসব পবে অমববাবু “্না্্য-মন্দিঝ” নামে একখানি 
মাসিকপত্র বাহিব করিবাব অভিপ্রায় করেন । অমরেন্দ্রনাথ সে সময়ে ্টাব 
থিয়েটাবে এবং গিরিশচন্দ্র মিনার্ভায়। অমববাবুব উৎমনাহ এবং আগ্রহে 
গিরিশচন্্র “বঙ্গালয়ের' ন্যায় 'নাট্য-মন্দিবের,ও পৃষ্ঠপোষকতায় সম্মত হইয়া- 
ছিলেন। ১৩১৭ সাঁল,শ্রাবণ মাঁস হইতে '“নাট্য-মন্দিরঃ বাহির হইতে আরম্ত 
হয়। প্রথম বর্ষের নাট্য-মন্দিবে গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধাদিতে মোট ৬২টী বিষয় 
ছিল; তাহার তিন ভাগের এক ভাগ গ্রিরিশচন্ত্রের লিখিত। দ্বিতীয় 
বর্ষেও গিরিশচন্দ্ের কয়েকটা প্রবন্ধ বাহির হয়; কিন্তু সেই বসরেই তিনি 
ইহলোক পরিত্যাগ করেন। আমর! এই মাসিক পত্রিকায় গিরিশচন্দ্র, 


ভ্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫০১ 


লিখিত “নাট্য-মন্দির শীর্ষক প্রথম প্রস্তাবনা-গ্রবন্ধটী নিয়ে উদ্ধত করিলাম । 
পাঁঠক দেখিবেন, আজিকালিকার সাধারণ বঙ্গালয়ের বিবোধী সমালোচিক- 
গণ যে ভাবে সমালোচনা কবিয়! থাকেন, তখনও অর্থাৎ ১৭ বৎসর পূর্বে 
সেই একই ভাবের সমালোচনা চলিত। বর্তমান সমালোচকদ্দিগেব 
নৃতনত্ব কিছুই নাই। প্ররস্তাবনা-গ্রবন্ধ__ 

“পবিব্রাজক মাত্রেই বিদেশে যাইয়া! তথাকার লোকেব আচীর-ব্যবহাব 
-_ রীতি-নীতি-_-মর্ধিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক অবস্থা! জানিবার ইচ্ছা 
কবেন। তাহাঁব সহজ উপায়-_নাট্য-মন্দিব দর্শন । তথায় দেখিতে পান, 
শিল্পীবা কিরূপ উন্নত, কবি কিরূপ ভাবাঁপন্ন এবং দর্শকবৃন্দও কি বসে 
আকৃষ্ট । মানবেব প্রধান পৰীক্ষা-_তাহাব রুচি | সে কচি পবিচয়-__“নাঁট্য- 
মন্দিবে' সম্পূর্ণ প্রাপ্ত হন। অতি উচ্চ হইতে নিয়স্তবেব মনুষ্য পর্যস্ত 
এককালীন দেখিতে পান; এবং জাতীয় কচি সীংসাঁবিক অবস্থায় কিৰপ 
পবিমাণে প্রভেদ হইয়াছে তাহাও বুঝিতে পাঁরেন। সময় কি মুস্তিতে 
মানব হৃদয়েব সহিত ক্রীড়া কবিয়া চলিতেছে, সে মুত্তি পৃথিবীব্যাপী বা সে 
দেশীয়, তাহাঁও বুঝিতে পার! যাঁয়। মানব কাঠিন্ত ধীবণ করিয়া, কাধ্য 
সংঘর্ষণে প্রবৃত্ত হয়; কিন্তু কার্যযান্তে সেকঠিন আবরণ পরিত্যাগ করিতে 
প্রায় সকলেই ব্যন্ত। মুকুটধাঁরী হইতে শ্রমজীবী পর্যন্ত কার্যের বিবাম 
প্রার্থনা করিয়৷ থাকে । যাহাঁদের দৈনিক অনেব জন্য কঠোব পরিশ্রমে 
দিবা অতিবাহিত হইয়াছে, তাহারাও বিরামদায়িনী নিদ্রার আবাহন 
উপেক্ষা কবিয়া, কথক সময় কিঞ্চিৎ আনন্দে কাটাইবাব চেষ্টা কথিয়া 
থাকে । শ্রমজীবী ব্যক্তির সহিত একত্রে বসিয়া, নাঁচ-গান, হাস্ত- 
পরিহাসে নিদ্রাব পূর্ববকাল অতিবাহিত কবে। কার্যযক্লান্ত মানবেব আনন্দ 
প্রদানের জন্ঠ, প্নাট্য-মন্দির' সথষ্টি হয়) এবং তথায় ছোট বড় সকলেই 
আনন্দ করিতে যান। 


৫০২ শিরিশচজ্দ্র 


কিন্তু “নাট্য-মন্দিরঃ কলাবিষ্ভাবিশারদেব কার্্যস্থল। কেবল আনন্দ- 
দানে তাহাব তৃপ্তি নহে । তাহাব আজীবন উদ্যম, কিরপে আনন্দ-শ্রোত 
মানব-হৃদয় স্পর্শ কিয়া, মানবেব উন্নতি সাঁধন কবিতে পাবে। গাস্তীর্য ও 
মাঁূর্ধ্যপূর্ণ দৃশ্য সকল অঙ্কিত কবিযা, দর্শকেব চক্ষেব সম্মুথে ধবে। দর্শক 
তুষাঁবাবৃত হিমাদ্রি-শেখবেব চিত্র দর্শনে মহাদেবের ধ্যানভূমিব আভাস 
পান। কোকিলকুজিত-পুম্পিত-কুগ্তবনে বাঁধারষেব লীলাভূমি অনুভব 
কবিতে পাবেন। মহাকালের মুকুব স্বরূপ বিশাল সমুদ্র-অস্কিত চিত্রপট 
দর্শন করিয়া; অনস্তেব আভাস প্রান্তে স্তম্ভিত হন। বাহ চাকৃচিকাযমণ্ডিত 
পাপেব ছবি দেখিয়! তাহাব মনে পাঁপেব প্রতি ঘ্বণাব উদ্রেক হয়। 
আত্মত্যাগী মহাপুকষেব বিশ্বপ্রেমে প্রেমে আভাস পান। উদধাঁটিত 
মানব-হৃদয়ে বিপুব ছন্দ দেখেন, এবং তাঁহাব হৃদম হইতে যে__সে সকল 
বিপু বর্জনীয়, তাহাও বুঝিষা যাঁন। অন্তঃস্থলম্পর্শী তানলহরীব সবস 
সলিলে হৃদ্পদ্ন প্র্ফুটিত হইয়া বিমল অশ্রজল শ্লোতাঁব চক্ষে আনে। 
ক্ষুদ্র কাঁপট্যেব ক্ষুদ্র [ক্রয়াকলাপ নিজ চতুবতা-প্রভাবে বিফল হইয়া, 
কিরূপ হান্তাম্পদ হয়_তাহাও দেখিতে পাঁন। 'নববসে আপ্নত হইয়া 
দর্শক তাহাব স্থখস্বপ্রে যামিনী যাপন কবেন। 

বঙ্গদেশেও সেই আনন্দপ্রাদায়িনী “নাট্য-মন্দিব+ হইয়াছে । এ 
'নাট্য-মন্দিবেক যে অনেক ক্রুটী বহিয়াছে, এবং উন্নতিব যে অনেক অপেক্ষা, 
তাহা মন্দিব অধ্যক্ষের! অকপটে স্বীকাব কবেন। কিন্তু তাহাদের প্রাণপণ 
উদ্ধম ও আজীবনের আকিঞ্চন, নিন্দাব বিষদস্ত হইতে পবিজ্রাণ পায় না। 
নিন্দকেব এক আশ্চর্য্য শক্তি। তাহাবা একরপ মর্ধজ্ঞ ! সমুদ্রেব গর্জন 
না শুনিয়াও-_ফবাঁসী দেশে নাট্য-মন্দিব কিরূপে চলিতেছে, তাহ! ত্াহাবা 
জানেন; এবং আমাদের দেশেব নাট্য-মন্দিব যে ফবাঁপী দেশের নাট্য- 
মন্দির নয় তজ্জন্ত স্বণা করেন। গৃহে বসিয়া বিলাতের "ভুরি লেন” 


ব্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫০৩ 


থিয়েটাবও দেখিয়াছেন, সার্‌ হেন্বি আর্ভিংকে তথায় আনাইয়া, 
তাহাব অভিনয়ও শুনিয়াছেন, স্থৃতবাং কথায় কথায় বিলাতেব নাট্য- 
মন্দিবেব সহিত আমাদেব নাট্য-মন্দিবে তুলন! কবিয়! দ্বণা প্রকাশ 
কবেন। আমাদেব দৃশ্ত-পট সেবপ নয়, আমাদের সাজ-সবঞ্জম সেৰপ 
নয, অভিনয় সেরূপ নয়, এই নিমিত্ত নাসিক উত্তোলন কবিয়৷ থাকেন। 
কিন্তু দেখা যার,যে এবপ নাঁসিকা উত্তোলকেব বাকাচ্ছটা ব্যতীত-_ফবাসী, 
ইংলগু বা 'আমেরিকাঁব কিছুই নাই। তাহাব প্রাসাদ তুলনাষ কুটাবও 
নর, তাহাঁব পৰিচ্ছদ প্রতিদিন তুলনা কবিয়াই দেখিতে পাবেন, পবিচ্ছন্ন 
অবস্থায় থাকিলে থাকিতে পাবিতেন, তাহারও চেষ্টা দেখা যায় না। পুত্র- 
কঙ্াকে যেরূপ যত্বে এ সকল প্রদেশে শিক্ষা প্রদান কব! হয়, তাহাবও ত» 
কেনিও আভাষ পাঁওযা যাঁষ না। এই সকল ব্যক্তি যদি কেবল 
নাসিক! উত্তোলন কবিষ! ক্ষান্ত থাকিতেন, তাহ! হইলে আমাদেব বক্তব্য 
কিছু ছিলনা । কপিব লাঙ্গুলেব স্তাঁষ তাহাৰ নাসিক তিনি যতদুব 
উত্তেলন কবিতে পাবেন--ককন, তাহাতে আমাদেব আপত্তি নাই। 
কিন্ত তাহাদেব বিষ উদগীবণ বহু 'অনিষ্টসাধক। আমবা অপক্ষপাতী 
সমালেচিকেব পদধূলি গ্রহণ কবি। কিন্তু ওরূপ সমালোঁচকেব অনিষ্টকৰ 
কাধ্যে বড়ই দুঃখিত ! তীহাদেব কলুষ-বাঁক্যে অপবেব মন কলুষিত কবিতে 
পাবেন, সেই নিমিত্ত এই মাসিক প্নাট্য-মন্দিব* সাঁধাবণকে উপহার: 
দিবাব জন্ম আমবা যত্র করিতেছি। “নাট্য-মন্দিবেধ” স্বরূপ অবস্থা, 
কুটাব হইতে অট্টালিক। পর্য্যন্ত জ্ঞাপন কবিতে আমবা৷ উৎস্থক। “নাট্য- 
মন্দিরের” স্তন্তে সাধাবণ বঙ্গালয়েব অবস্থা পুঙ্থানুপুঙ্ঘরূপে বণিত থাকিবে। 
সকল সম্প্রদায়ের মুখপাত্রস্বরূপ সংবাঁদ-পত্র আছে, কিন্তু রঙ্গালয়েব কিছুই 
নাই। টিকিট না পইয়! বিবক্ত হুইয়! যাহা লেখেন, তাহাও শুনিতে হয়। 
কিন্ত অনেক দিন শুনিয়া আসিতেছি, আব শুনিতে ইচ্ছুক নহি । আমর! 


৫০৪ গিরিশচন্দ্র 


আপনাদের আপনি সমালোচক হইয়া ণ্নট্যি-মন্দির” প্রকাশিত করিব। 
সাহিতযও আমাদেব প্রধান আলোচনাব সামগ্রী । কায়মনোবাক্যে তাহাৰ 
আলোচনা কবিব। কতদৃব রুতকার্ধ্য হইতে পাঁরিব, তাহা! সাধারণেব 
উৎসাহের উপর নির্ভব কবে। 'আঁমব! দ্বাবে দ্বাবে সেই উৎসাহেব প্রার্থী ।” 

আমবা যতদূব জানিতে পাবিয়াছিঃ গিবিশচন্ত্রের বচিত কতকগুলি 
কবিতা এবং 'হাবা” নামক একটী গল্প প্রথমে “নলিনী” নামক মাসিক 
পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পবে 'কুস্থমম।লাষ' তাহার “চন্দ্রা নামক 
উপন্তান এবং গগ্ঠ প্রবন্ধ বাহিব হইতে থাকে । তাহার পব জন্মভূমি, 
উদ্বোধন, রক্ালয়, নাট্য-মন্দিব, সাহিত্য গ্রভৃতি বহু পত্রিকায় তাহাব 
কবিতা, উপন্তা'স, গল্প ও নান! জাতীয় প্রবন্ধ বাঁহিব হয়। “প্রতিধ্বনি, 
নাঁমক গ্রন্থে গিবিশচন্ত্র-বিবচিত যাবতীয় কবিতা সংগৃহীত হইয়৷ প্রকাশিত 
হইয়াছে। চন্দ্রা” উপন্তাসখানিও স্বতন্ব পুস্তকাঁকারে প্রকাশিত 
হইয়াছিল * ; কিন্তু তাহার গল্প ও প্রবন্ধগুলি একত্র কবিয়। এ পর্য্যন্ত 
পুস্তকাকাবে বাহিব হয় নাই,_-গিবিশ-গ্রন্থাবলীতে বিশৃঙ্খলভাবে কতকগুলি 
প্রকাশিত হইয়াছে মাত্র । আমর! কবিতাগুলি বাঁদ দিয়া যে সকল পত্রে 
তাহার অন্তান্ত উপন্তাঁস, গল্প ও প্রবন্ধ প্রথম প্রকাশিত হয়, তাহাঁব একটী 
তালিক! নিয়ে প্রকাশিত কবিলাঁম।__ 


শশা শট শিট শা পপীস্স্স্ীকপিপপস্প স্পটী 


* এই “চন্দ্রা উপন্তাসে পাগলিনীব চবিত্র বিশেষ উল্লেখযোগ্য । গিবিশচন্দ্র এই 
চন্মিত্রে যে মানসিক শক্তিব ক্রম বিকাশ অসামান্ত কৃতিত্বেষ সহিত বর্ণনা কবিবাছেন, তাহা 
বাঙ্গাল! উপন্যাস-সাহিত্যে বিধল। এই বমণী গঙ্গাষ সন্তান বিসর্জন দিধা পাগল হইযাছিল। 
পাগলিনী সন্তানকে পালন কবিতে পাধিল না বটে, কিন্তু তাহাৰ কল্পনায় শিশু দিন দিন 
বন্ধিত হইতে লাগিল,_অবিকল তাহাব স্বাভাবিক আকৃতিৰ অনুরপ। এই হত পুত্র 
যখন যৌবনে পদার্পণ কবিয়াছে, পাগলিনী তাহার চিত্র দেখিযাই তৎক্ষণাৎ আপনা পুত্র 
বলিয়৷ চিনিতি পাবিল। 


ত্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫০৫ 


উঞ্পন্ব)ণস 


১। ঝাঁলোয়ার ছুহিতা__“সৌবভ মাসিক পত্রে কিয়দংশ, পবে 
“উদ্বোধনে, প্রথম হইতে প্রকাশিত হয়। ( উদ্বোধন, ১ম বর্ষ, 
১৩০৫-৬ সাল) 

২। লীল!-_( নাট্য-মন্দিব, ১ম বর্ষ) ১৩১৭-১৮ সাল) 


গন 


১। হাঁবা--( নলিনী, ৮ম সংখ্যা, অগ্রহাযণঃ ১২৮৭ সাল) 

২। নবধর্ম বা “নক্সা” (১) --(কুস্ুমমালা১ ১২৯১ সাল) 

৩। নসে বা নঝা (২)--( এ শর ) 

৪। বাচেব বাজী-_ জন্মভূমি, ১ম খণ্ড) জ্যষ্ঠ, ১২ ৮) 

৫| বাঙ্গাল--( উদ্বোধন, ১ম বর্ষ, ১৫ই জৈষ্ঠ, ১৩০৬) 

৬। গোববা_( প্র শত্রু ১লাআষাঢ, ক) 

৭। বড়বউ--( এ ত্র ১৫ইকার্তিক, এ) 

৮। ভূতির বিয়ে “সেম্ান ঠকুলে বাঁপকে বলে না বঙ্গালয়ঃ ১ম বর্ষ, 
১৭ই ফাল্তন, ১৩০৭ সাল) 

৯। সই-_( নন্দন কাঁনন, ১ম বর্ষ, ১ম খণ্ড) 

১০। কর্জনার মাঠে--( প্রয়াস, ৩য় বর্ষ, ১৩০৮ সাল) 

১১। পুজার তত্ব-_( বস্গুমতী, আশ্বিন, ৬পৃজার সংখ্যাঃ ১৩১১) 

১২। প্রীয়শ্চিত্--( উদ্বোধন, ১০ম বর্ষ, আষাঢ়, ১৩১৫ সাল) 

১৩। টাঁকের ওঁষধ বা 'ধর্মদাস”--(জন্মভূমিঃ ১৭ বর্ষ, বৈশাখ, ১৩১৬) 

১৪। পিতৃ-প্রাক্মশ্চিত্ত-_-(উদ্বোধন, ১১শ বর্ষ, অগ্রহায়ণ, ১৩১৬ সাল) 

১৫। সাধের বউ-_( নাটা-মন্দির, ২য় বর্ষ, ভান, ১৩১৮ সাল ) 


৫০৬ 


১। 
২। 
৩। 
৪ | 
৫ । 
৬। 
৭। 
৮ 
৭ | 
১০ । 
১১। 
১২। 


১৩। 


১৪ | 
১৫। 
১৬ 

১৭। 
১৮। 


১৯ । 


গিরিশচন্দ্র 


একা" 

ঈশ-জ্ঞান-__( কুম্ুমমাঁলা। ১২৯১ সাল ) 
সাঁধন-গুর-_-( সৌবভ, ভাদ্র, ১৩০২ সাল) 
কর্ম-_( উদ্বোধন, ১ম বর্ষ, মাঘ ও ফাল্গুন ১৩০৫) 
তাও বটে-_তাঁও বটে 1__(তত্মগ্জবী, ৫ম বর্ষ, ১ম সংখ্য।) ১৩০৮) 
ধর্মস্থাপক ও ধর্ম্যাজক--( বঙ্গালয়, ১৩ই বৈশাখ, ১৩০৮) 
ধর্ম _( উদ্বোধন, ৪র্থ বর্ষ, ১৫ই মাঘ, ১৩০৮) 
গুরুব প্রয়ৌজন--( উদ্বোধন, ৪র্থ বর্ষ, ১৫ই ভাদ্র, ১৩০৯) 
প্রলাপ না সত্য 1--( এ ৫ম বর্ষ, ১ল! অগ্রহায়ণ, ১৩১০) 
নিশ্চই অবস্থা_( উদ্বোধন, ৬ষ্ঠ বর্ষ, ১ল! মাঘ, ১৩১*) 
শ্রীবামকুষ্ণ ও বিবেকানন্দ__( এ ৭ম বর্ষ, ১৫ই এ, ১৩১১) 
বামদাদা-_( তন্বমঞ্জবী, ৯ম সংখ্যা, ১৩১১ সাল) 
স্বামী বিবেকানন্দ বা শশ্রীশ্রীবামকুষ্দেবেব সহিত স্বামী 
বিবেকানন্দেৰ সন্বন্ধ”-_-( তত্মঞ্জবী,৮ম বর্ষ, ফান্তুন) ১৩১১ সাল) 
পবমহংস দেবেব শিগ্ঠ-ন্নেহে ( উদ্বোধন, ৭ম বর্ষ, 

১ল] বৈশাখ, ১৩১২ ) 
বিবেকানন্দ ও বঙ্গীয় যুবকগণ-_( এ 2ম বর্ষ, ১লা মাঘ, ১৩১৩) 
ধরবতাবা__! উদ্বোধন, ১০ম বর্ষ, জ্যেষ্ঠ) ৩১৫ সাল) 
শান্তি-___( এ, ১০ বর্ষ, শ্রাবণ, ১৩১৫) 
গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্_( এ, ১১দশ বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৬ সাল) 
ভগবান শ্রীশ্রীবামকৃষ্চ দেব _( জন্মভূমি, ১৭শ বর্ষ, 

আযাট, ১৩১৬ ) 
স্বামী বিবেকা'নন্দেব সাধন-ফল ( উদ্বোধন, ১৩শ বর্ষ, 
বৈশাখ, ১৩১৮) 


১। 
| 
2 
৪ । 


৫ | 


৬। 


৭ | 
৮ | 
৯ | 


১০। 


১১। 
১২। 
১৩। 
১৪। 
১৫। 


ত্রিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫০৭ 


স্মাভ্-৩উ ক 


পুরুষ অংশে নাবী অভিনেত্রী--( বঙ্গালর, ২রা! চৈত্র, ১৩০৭ ) 
অভিনেত্রী সমালোচন। ( রঙ্গালয়, ৯ই চৈত্র» ১৩০৭ সাল ) 
বর্তমান রঙ্গভূমি _( এ ২৬শে পৌষ, ১৩০৮ সাল) 
পৌবা।ণক নাটক-_( এ ১মবর্ষ, ১৩০৮ সাল) 
অভিনয় ও অভিনেতা ( অচ্চনা, ৬ষ্ঠ বর্ষ, আষাঢ়, শ্রাবণ ও 
ভাদ্র, ১০১৬ সাল । পবিবদ্ধিত অংশ- _নাট্যমন্দিব ১ম বর্ষ, 
জ্যেষ্ঠ ১৩১৮) 
বঙ্গালর়ে নেপেন-_( বঙ্গ-নাট্যশালায় নৃত্যশিক্ষা ও তাহাব 
ক্রম বিকাশ। ৯ই এপ্রিল, ১৯৭৯ খুঃ, ১৩১৬ সাল, মিনার্ড 
থিয়েটাব হইতে ন্বতন্তর পুস্তিকা প্রকাশিত ) 
নাট্য-মন্দিব_-(নাট্য-মন্দিব, ১ম বর্ষ, শ্রাবণ, ১৩১৭ সাল ) 
নাট্যকাব__( নাট্য-মন্দিব, ১ম বর্ষ, শ্রাবণ, ১৩১৭ সাল) 
নটের আবেদন--( এ ত্র ভাদ্র এর) 
কেমন কবিয়! বড় অভিনেত্রী হইতে হয় ?--( নাট্য-মন্দিব, 
১ম বর্ষ, ভাদ্র, ১৩১৭) 
রঙ্গালয়__( নাট্য-মন্দিব, ১ম বর্ষ, আখ্বিন, ১৩১৭ সাল) 
বহুরূপী বিদ্া__( এ ত্ পৌষ শর ) 
কাব্য ও দৃশ্ব-_( এ রী এ এ ) 
নৃত্যকলা-__ ( বব ২য় বর্ষ, মাঘ, ১৩১৮ সাল) 
স্বর্গীয় অর্দেন্দুশেখব মুস্তফী__( নটের জীবনী ও নাট্যলীল! ) 
১৩১৫ সাল, ১*ই আশ্িন, মিনার্ভ। থিয়েটাব হইতে শ্রীযুক্ত 
মনোমোহন পাড়ে কর্তৃক প্রকাশিত। 


৫৬৮ 


১। 
| 
৩। 
৪ | 
৫ | 
৬ | 
গ | 


৮। 


শ। 
চা 


১। 
| 


১। 
২। 
ত। 
৪ | 
€। 
৬। 
৭। 
৮1 


গিরিশচন্দ্র 


০্শোকশশ্রন্ 
্বর্থীয় মহেন্্লাল বন্থ--( বঙ্গালয়, ২র! চৈত্র, ১৩০ টা ্ 
স্বর্গীয় বিহাবীলাল চট্যোপাধ্যায় (এ, ১৩ই বৈশাখ, রর 
স্বর্গীয় অঘোবনাঁথ পাঁঠক-_( এ ৩০শে জৈষ্, নর রি 
স্বর্গীয় লক্ষ্মীনাবায়ণ দর্ত_(উদ্বোধন, ৭ম বর্ষ, ১লা রা রর ৰ 
কবিবব স্বর্গীয় নবীনচন্ত্র সেন___( সাহিত্য, মাঘ, ১ 
নবীনচন্ত্র--( সাহিতা, ফান্তুন, ১৩১৫ সাল) এ 
নাট্যশিল্পী ধন্মদাস__( নাঁট্য-মন্দিব, ১ম বর্ষ, ভাদ্র, ৰ 
স্বর্গীয় অমৃতলাল মিত্র ( নাচঘব, ১ম বর্ষ, ১৩৩১ সাল 
সামাজিক ওল 
সমাজ-সংস্কাব-_( জন্মভূমি ১৮শ বর্ষ আশ্বিন, ১৩১ রর ) 
ত্ী-শিক্ষা-_( নাটা-মন্দিব, ২য় বর্ষ, শ্রাবণ, ১৩১৮ স 
হ্িভভাঁন্ম-এশরনহ। 
বিজ্ঞান ও কল্পন1-_( কুস্থুমমাঁলাঃ ১২৯১ সাল) 


গ্রহফল-_ ( এ শী ) 
নিলিত্ধ এছ 
ভারতবর্ষের পথ-_-( কুস্থমমালা; ১২৯১ সাল) 
দীননাথ-_ (এ প্র ) 
ফুলেবহাব-- (& প্র ) 
পাখি, গাও ( এ শ্রী ) 
গরুড়_ ( এ এ ) 


ইংরাজ রাজত্বে বাঙ্গালী--( রঙ্গালয়, ১৭ই ফাল্তুনঃ ১৩০৭ সাল) 
পলিসি--( রঙ্গালয়, ১৬ই চৈত্র, ১৩০৭ সাল) নিত 
বাজনৈতিক আলোচনা (বঙ্গালয়, ওরা জ্যেষ্ঠ, ১৩০ 


চতুশ্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ বমি 


৯। রামরুষ্চ মিশনের সন্ত্যাসী-__( বন্থুমতীঃ ৪ট1 ভাত্র ১৩১১) 
১*। বিশ্বাস-_-( জন্মভূমি, ১৬শ বর্ষ, জ্যৈষ্ট, ১৩১৫ সাল) 
১১। কবিবব ব্জনীকান্ত সেন--( নাট্য-মন্দির, ১ম বর্ষ, 
আশ্বিন, ১৩১৭ ) 
১২। সম্পাদক-_(বঙ্গালয়। ২৭শে বৈশাখ, ১৩০৮ সাল হইতে 
নাট্য-মন্দিবে পুনমুদ্রিত। ১ম বর্ষ, অগ্রহায়ণ, ১৩১৭ ) 





চতুশ্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 
ছ্িভীমলাল্র ০হানিওপ্যা্থিক ক্ন্কিশসা। 


ক্লাসিক থিয়েটাবে কাধ্যকালীন একদিন শীতকালেব বাত্রে থিয়েটার 
হইতে বাটী ফিরিয়া আমিবাঁব সময় গ্িবিশচন্ত্র শুনিতে পাইলেন, বাটাব 
সন্মুখস্থ মাঠে একজন হিন্দৃস্থানী গাড়োয়ান অশ্দুট চীৎকাব কবিতেছে। 
বাটাতে আসিয়! ভূত্য পাঠাইয়! জ্ঞাত হইলেন, গাড়োয়ানের ভারি জ্বর 
হইয়াছে, শীত-বস্ত্র নাই, গরুর গাঁড়ীব নীচে শুইয়া শীত নিবারণেব বুথা 
চেষ্টা করিতেছে । তখন বাত্রি প্রায় আড়াইটা, অন্ত উপায় না থাকায় তিনি 
আহীবান্তে শয়ন কবিলেন। কিন্ত কিছুতেই তাহার নিদ্রা হইল না_ 
কেবলই মনে হইতে লাগিল, আমি তো দিব্য গরম বিছানায় লেপ গায়ে 
দিয়! শুইয়া আছি, আর এ ব্যক্তি জরে__শীতে খোলা! জাঁরগায় আর্তনাদ 
করিতেছে । প্রভাত হুইবামাত্র তিনি একথাঁনি কম্বল ও ওঁষধ কিনিয়া 
আনাইয়। রোগীকে দিয়া তবে সুস্থ হইলেন। 

ইহার অল্লদিন পরেই গিরিশচন্ত্রের প্রতিবামী একজন পরামাণিকের 


৫১০ গিরিশচন্দ্র 


কলেরা হয়। তিনি তাহাকে দেখিতে যাইলে পরামাঁণিক-_“বাবু ওষুদর, 
বাবু ওষুদ” বলিয়া! কাতরোক্তি করিতে থাকে । গিরিশচন্র ওষধের 
ব্যবস্থা কবিলেও যথাসময়ে ওষধ না পড়ায় বোগী এক প্রকার বিনা 
চিকিৎসায় মাঁবা যায়। 

গিবিশচন্ত্র পূর্বে অফিসে কাধ্যকালীন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎস৷ 
কবিতেন এবং নান! কাবণে তাহা ছাড়িয়া দেন-_-এতদ্সন্বন্ধে সপ্তদশ 
পরিচ্ছেদে বিস্তৃতভাবে লিখিত হইয়াছে । পূর্বোক্ত ঘটনার পব পুনবায় 
তিনি বহুসংখ্যক গ্রন্থ ও ওঁষধ ক্রয় কবিয়া চিকিৎসা আবস্ত কবেন এবং 
জীবনের শেষ পধ্যন্ত দীনদবিদ্রেব সেবায় ব্রতী হইয়া ছিলেন। একদিন 
অদ্ধাম্পদ দ্েবেন্দ্রবাবু গিকিশচন্দ্রকে জিজ্ঞাসা কবেন,__“আপনি আবাব 
চিকিংসা। আবন্তু করিলেন কেন?” উত্তরে গিবিশচন্দ্র বলেনঃ__ 
“থিয়েটাবেব কার্যে এখন আব আমায় পূর্ব স্যাঁয় খাটিতে হয় না, হাতে 
অনেক সময় | নিষ্কন্্া হইয়া বসিয়! থাকিলে হয় আত্মচচ্চায়, নয় পরচ্চায় 
সময় কাটাইতে হয়। এ কার্য্যে ব্রতী হইব সে সকল হইতেও অব্যাহতি 
পাওয়া যাঁয় এবং দীনদবিদ্রেব উপকারও হয়।” 

এই জময়ে তিনি এন্রান্তি নাটক লিখিতেছিলেন। “রঙ্গলাল, 
চবিজ্রেব নানাগুণেব মধ্যে তাহাব চিকিৎস! বিদ্যায় পাঁবদর্শিতা) গিবিশ- 
চন্দ্রেব তাঁংক।লীক চিকিৎসান্থবাগেব ছায়াপাত বলিয়। আঁম"দের মনে হয়। 
বঙ্গলালেব সুখ দিয় তিনি এক স্থানে বলিয়াছেন,__"সংসাঁর যে সাঁগব 
বলে, এ কথ৷ ঠিক, কুল-কিনাবা! নাই । তাতে একটা ফধ্রবতারা আছে-_ 
দয়া । দয়! যে পথ দেখায়, সে পথে গেলে নবাঁবও হয় না, বাদসাঁও হয় না, 
তবে মনটা! কিছু ঠাণ্ডা! থাকে । এটা প্রত্যক্ষ, তর্ক-যুক্তির দরকার নাই ।” 

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় যিনি যে রোগীর অবস্থা আন্ুপূর্ধ্বিক 
বুঝিয়া নুশ্্স বিচারে যে ভাবে ওষধ নির্ধবাচন করিতে পারেন, তিনিই সেই 


চতুশ্ত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫১১ 


পরিমাণে সুফল প্রাপ্ত হন। এই সুক্ষ বিচারে গিরিশচন্দ্র অসামান্য শক্তির 
পরিচয় দিয়া শত শত কঠিন বোগ আরোগ্য কবিয়াছেন। আমরা দৃষ্টান্ত- 
স্বরূপ কয়েকটা ঘটনাব উল্লেখ কবিতেছি £-_ 

১। বস্গুপাড়া পল্লীস্থ স্থবিখ্যাত ব্যাবিষ্টীৰ ইভান্স সাঁহেবেব বাবু 
এবং গ্রিবিশচন্দ্রেব বাল্যবন্ধু স্বর্গীয় নৃপেন্্রচন্ত্র বস্থ মহাঁশয়েব জোষ্টপুত্র 
শ্রীযুক্ত ক্ষীবোদচন্্র বনুব স্ত্রী বহুদিন ধবিয়! স্নায়বিক দৌর্ববল্য ও হৃদ্‌বোগে 
কষ্ট পাইতেছিলেন। কলিকাতাঁৰ তাৎকাঁলীন বড বড় ভাক্তারগণেব 
চিকিৎসার কোন ফললাভ হয় নাই। অবশেষে ক্ষীরোদবাবুর অন্থুরোধে 
গিবিশচন্দ্র গিয়া রোগিণীকে দেখেন এবং প্রশ্নে পব প্রশ্ন কবিয়া উপসর্গ- 
গুলি শুনিতে শুনিতে যখন জ্ঞাত হইলেন-_-“বোগিণী ঘুমাইবাব সময় 
কালো কালো কুকুব-বাচ্ছা স্বপ্পে দেখে--তখন তিনি আনন্দ এবং 
উৎসাহের সাঁহত বালয়া উঠিলেন,__“ক্ষাবোদঃ তুই ভাবিস নে, তোব 
স্ত্রীকে আমি আবাম ক/র্বো ।” বাটীতে আসিয়া বই খুলিয়! উক্ত লক্ষণের 
সহিত মিলাইযা তিনি যে ওঁষধ নির্বাচন করেন, তাহা সেবন করিয়া 
বোগিণী অন্নদিনেই আবোগ্যলীভ কবেন। 

২। বাগবাজাবেব লন্ধপ্রতিষ্ঠ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক শ্রযুক্ত 
অক্ষয়কুমাব মিত্র বলেন।_“বস্থপাড়া পল্লীস্থ অবিনাশচন্দ্র ঘোঁষ মহীশয়েব 
সত্রীব একটা সন্তান প্রসবেব পব বক্তত্ত্রাব হইতে থাকে-_সঙ্গে সঙ্গে .উন্মাদের 
লক্ষণ দেখা দেয়। এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় কোনও ফল না হওয়ায় 
অবিনাশবাবু গিবিশবাবুব নিকট আসেন। আমি সে সময় গিবিশবাবুব 
বাঁটাতে উপস্থিত থাকায়, তিনি আমাকে ওষধ নির্বাচন কবিতে বলিলেন। 
আমি তিনটা ওউঁষধ নির্বাচিত করিলাম । তাহাতে তিনি বলিলেন-_-“ইহা 
তো রক্তত্রীবনিবারণের ওষধ ব্যবস্থা করিলে, রোগীর মানসিক লক্ষণের 
কি করিলে? এই বলয় তিনি নিজে একটা ওষধ নির্বাচিত করিলেন। 


৫১২ গিরিশচন্দ্র 


আমি বলিলাম, “মহাশয়, ইহাতে বক্তত্রাব তো আরও বৃদ্ধি হইবে» 
তদুত্বরে তিনি বলিলেন, “তাহা হউক, রোগীর উপস্থিত মানসিক লক্ষণ 
অর্থাৎ এই উন্মাদের অবস্থা ধবিয়াই ওঁষধ নির্ব্বাচন কবিতে হইবে ।, তখন 
আমার হানিমানের অমূল্য উপদেশের কথা স্মবণ হইল-_“চিকিৎসাকালীন 
বোগীব মানসিক লক্ষণেব প্রতি সর্বোপবি লক্ষ্য রাখিতে হইবে।, 
আশ্চর্যেব বিষয় _ সেই ওধধেই বোগীব সমস্য উপসর্গ দুব হইল |” 

৩। রাজ! বাজবল্লভ স্ত্রীটস্থ স্থপ্রসিদ্ধ “বামাব লবি* অফিসেব বড়বাঁবু 
শ্রীযুক্ত বামচন্দ্র বন্ৰ্যোপাধ্যায়কে গিবিশচন্দ্র বিশেষ ন্নেহ কবিতেন। বাম- 
বাবুব প্রথম শিশু পুভ্র শ্রীমান নরেন্দ্রনাথেব কঠিন গীডা হওয়াঁয় তিনি 
বড়ই ব্যাকুল হইয়া পড়েন। গিবিশচন্ত্র শিশুকে দেখিয়! এবং বোগেব 
সমস্ত লক্ষণ মিলাইয়৷ একটী উষধ নির্ব্বাটিত করিয়া বলেন, 'দেখ, তোমা 
পুত্রের পীড়াঁয় তুমি যেবপ অস্থির হইয়া উঠিয়াছ, আমিও তোমাব পুত্র 
বলিষা সেইরূপ চঞ্চল হইয়াছি। এবপ অবস্থায় আমি যে ওধধ নির্বাচিত 
কবিলাম, তাহা এই কাগজে লিখিয়া রাখিয়া যাইতেছি। তুমি কোনও 
ন্ুচিকিৎসককে আনাইয়া পুত্রকে একবাব দেখাও। তিনি যে ওষধ 
দিবেন, সেই ওষধেব সহিত যদি আমাৰ ওষধ এক হয়, তাহা হইলে 
তৎক্ষণাৎ খাইতে দিবে। ইহাতেই শিশু আবোগ্য হইয়। যাইবে ।, 
রামবাবু বলিলেন”_-“কোন্‌ স্মচিকিৎসককে আপাঁন দেখাইতে বলেন ? 
গিরিশচন্দ্র উত্তবে বলেন--“হোঁমিওপ্যাথিক চিকিৎসা-শান্ত্রে একটী বোগেব 
একশত প্রকাৰ ওষধ আছে। রোগীর অবস্থা এবং রোগে লক্ষণ ও 
উপসর্গাদি আনুপুব্বিক অবগত হইয়া স্ল্সমবিচাঁর করিয়া যিনি ওষধ 
নির্বাচিত করেন, তীাহাকেই আমি স্থচিকিৎসক বলি। নচেৎ ডাক্তার 
আসিল- ছু একটা! কথা জিজ্ঞাসা করিল - পাঁচ মিনিটের মধ্যেই একটা। 
উষধের ব্যবস্থা করিয়া! চলিয়া গেল--দে চিকিৎসকগণের উপর আমার 


চতুশ্ত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫১৩ 


শ্রদ্ধা নাই। হ্াবিসন রোডের ডাক্তাব অক্ষয় দত্বকে তুমি ডাঁকাও । 
তিনি রোগীব সমস্ত অবস্থা অবগত না হইয়! ওষধ দেন না_-এ নিমিত্ত 
অক্ষয়বাবুব উপর আমার বিশেষ শ্রদ্ধা আছে » 

বামবাবু তাহাই করিলেন। অক্ষয়বাবু আদিয়া' বোগীব আন্ুপূর্ববিক 
অবস্থা অবগত হইয়া যে ওষধ লিখিয়া দিয়া যাইলেন,__রামবাবু তাহা 
পড়িয়া বিস্মিত হইলেন গিরিশচন্দ্রও সেই ওঁষধ লিখিয়! দিয়া গিয়াছেন। 
যাহাই হউক এই ওষ্ধ সেবনে শিশু আরোগ্যলাভ কবে। 

৪। কলিকাতা মিউনিসিপ্যাল অকিসেব রাসায়নিক পবীক্ষক 
ডাক্তাব শ্রীযুক্ত শশীভূষণ ঘোষ এম বি, মহাঁশয়েব ভগ্নী বহুদিন ধরিয়া 
নানা বোগে অস্থিচম্্সাব হইয়াছিলেন। শশীবাবুব মেডিক্যাল কলেজের 
সহপাঠী বন্ধু ও লব্ধপ্রতিষ্ঠ চিকিৎসকগণ নানারূপ চিকিৎসা! কবিয়! 
অবশেষে তাহা জীবনেৰ আশা পবিত্যাগ করেন। ডাক্তারেবা তরল 
খাগ্চ খাইতে দিতেন, শেষে এমনটা হইল যে সাগু-বালি পধ্যন্ত বোগিণী 
আব হজম কবিতে পারিতেন না। শশণীবাবুব অনুবোধে গিরিশচন্দ্র আসিয়া 
রোগিণীকে দেখেন, এবং নানারপ প্রশ্ন কবিয়া অবশেষে বলেন-_ “তোমার 
কি খাইতে ইচ্ছ! হয়? বোগিণী ধলিলেন--*শশ! খাবাব ইচ্ছা হয়।, 
গিবিশচন্দত্র, যে বোগী সাগু হজম কবিতে পাবে না, তাহাকে শশা! খাইতে 
বলিলেন ;_ এবং এই লক্ষণ মিল।ইয়া ওষধ দানে তাঁহাকে আরোগ্য 
করেন। , 

৫। কলিকাতা পোর্ট কমিশনাঁবেব ইন্‌স্পেক্টাঁব এবং গিধিশচন্দ্রের 
প্রতিবাসী শ্রীযুক্ত শৈলেশ্বব বস্তু মহাঁশয়ের পুত্র বহুদিন ধবিয়া আমাশয় 
গীড়ার় ভূগিতেছিল বোগ সাবিমাও সাবে না । গিবিশচন্ত্র পূর্বোক্ত রূপ 
“বালক আদা খাইবার জন্য বায়না! কবে জ্ঞাত হইয়া যে ওষধ নির্বাচন 
করেন তাহাতেই গীড়ার উপশম হয়। 


৪) 


৫১৪ গিরিশচন্দ্র 


৬। পুস্তকের কলেবব-বৃদ্ধিভয়ে, আমরা আর একটী ঘটনার উল্লেখ 
করিয়া বর্তমান পবিচ্ছেদ সমাপ্ত করিব। গিরিশচন্ত্রেব পল্লীস্থ জনৈক 
বিশিষ্ট বন্ধু, হাইকোর্টের তাৎকালীন আ্যাঁড ভোকেট ভেনারল কেন্রিক 
সাহেবের “বাবু স্বর্গীয় জ্ঞানেন্্রনাথ ঘোষ মহাশয়ের জনৈক আত্মীয়ের কঠিন 
পীড়া! হয়। কোনও স্থুপ্রসিদ্ধ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তাহার চিকিৎসা 
করিতেছিলেন। গিরিশচন্দ্র প্রত্যহ জ্ঞানবাবুব নিকট রোগীর কিরূপ 
অবস্থা এবং ডাক্তাব কি ওঁষধ দরিয়া যাইলেন--সংবাঁদ লইতেন। সেদিন 
সন্ধ্যার পর থিয়েটাবে বাহির হুইতেছেন-__ এমন সময়ে সংবাদ পাইলেন, 
ডাক্তার আসিয়া “সাল্ফার' দিয়া গেলেন। ওধধটা যেন তাহার মনঃপৃত 
হইল না, কিন্তু সেদিন থিয়েটারে তাঁহাকে অভিনয় করিতে হইবে, অগত্য। 
বাধ্য হইয়৷ তিনি আর অপেক্ষা করিতে পাবিলেন না। কিন্তু থিয্ন্টাব 
হইতে আসিয়াই তিনি ডাক্তারি বই খুলিয়া বসিলেন। রোগীর যেরূপ 
অবস্থা--তাহাতে কি ওষধ নির্বাচন কর! যাইতে পাবে--তাহা নির্ণয়ের 
নিমিত্ত তিনি বহু গ্রন্থ দেখিতে দেখিতে, ভাক্তাঁর ফ্যারিংটনের গ্রন্থে এক 
স্থলে পাঠ করিলেন,-_-৭ক্ * * বোগীব এই সব লক্ষণ দেখিয়! অনেক 
চিকিৎসক ত্রমে পড়িয়া! “সাল্ফার, বাবস্থা কবেন। কিন্তু এইরূপ অবস্থায় 
“সাল্ফার”- -পাছাড় হইতে যে নামিয়৷ যাইতেছে, তাহাকে ধাক্কা দিলে 
(0091)106 9, 1081) 110 13 0176 0০0. 8)11]8) তাহার অব্থ। 
যেরূপ হক্গ, রোগীব পবিণামও তদনুরূপ হইয়া থাকে। গিরিশচন্ত্র সমস্ত 
রাত্রি উৎকণ্ঠায় অতিবাহিত করিয়া গ্রভাত হইতে না হইতে খবর লইয়া 
জানিলেন যে রাধ্রি-শেষে বোগীর মৃত্যু হইয়াছে । 

ডাক্তার প্রতাঁপচন্তর মজুমদার, অক্ষয়কুমার দত্ত চন্ত্রশেখর 
কালী প্রভৃতি স্বগ্রমিদ্ধ চিকিৎসকগণ বস্থুপাড়া পল্লীতে চিকিৎসারথে 
আসিলেই প্রথমে খোঁজ লইতেন-_গিরিশবাবু রোগীকে দেখিয়াছেন 


চতুশ্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫১৫ 


কি না? গিরিশচন্দ্রেব সতর্ক চিকিৎসাব উপব তাহাদের বিশেষ 
শ্রদ্ধ|! ছিল। 

ধেব নিমিন্ত প্রাতে ও বৈকাঁলে ভদ্রগৃহস্থ হইতে বহু দীন-দবিদ্রের 
আগমনে গিরিশচন্দ্রেব বাড়ী একটা ডাক্তাবখানা বলিয়া বোধ হইত। 
কেবল বিনামূল্যে গুঁষধধ দান নহে,_যে সকল গরীবেব স্থুপখ্যের অভাবে 
বোগ সারিয়াও সারিতেছে না, অনেক সমযে তিনি নিজথরচে তাহাদের 
পথ্যের উপযুক্ত বাবস্থা করিয়া দিতেন। 


ভাত্ভাপ্প কাক্ডিলাভ্ন 


মেডিক্যাল কলেজের কৃতী ছাত্র এবং স্থুপ্রসিদ্ধ অন্ত্র-চিকিৎমক 
ভাক্তার, জে; এন, কাঞ্জিলাল গিরিশচন্ত্রের বিশেষ অনুবাগী ছিলেন। কিন্তু 
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় তাঁহার আঁদৌ বিশ্বাস ছিল না। তিনি 
গিরিশচন্দ্রকে বলিতেন-_প্যাথলজি না জানিলে কখনও চিকিৎসা-বিষ্ঠায 
পারদর্শী হওয়া যায় না।* একদিন রাব্বে তিনি গিরিশচন্দ্রের বাটীতে 
আসিয়া ঘন ঘন কাসিতে লাগিলেন। গিরিশচন্দ্র বলিলেন, “অত 
কাসিতেছ, একটা আমাদেব ওষুদ্ খাও।” কাঞ্জিলালবাবু বলিলেন,খাইতে 
পারি, কিন্ত যদি সারিয়! যাঁয়, হোমিওপ্যাথিক ওঁষধ খাইয়া সাবিয়া গেল, 
তাহা বলিতে পারিব না। এমনই সাবিয়া যাইতে পারে ।” গিরিশচন্্ 
হাসিতে হামিতে বলিলেন, “আচ্ছ! তাই, ওধধের গুণ তোমাকে স্বীকার 
করিতে হইবে না” কাঞ্জরিলালবাবু গুঁষধ খাইয়া অক্লক্ষণ পরে বাটা 
চলিয়! গেলেন। তৎপর দিন আসিলে গিরিশচন্দ্র জিজ্ঞাসা করিলেন)__ 


পপ পা ০ পপ 


* কা্জিলাল ডাক্তারের এই কথাটা তিনি তাহার 'য্যায়সা-ক। ত্যায়সা" প্রহসনে ডাঃ 
নন্নীধ মুখে বসাইয়া! দিয়াছেন।। যথ! £--“বদি, হকিম, হ্যোমিওপ্যাথ--ওঝা। রোগের কি 
জানে, প্যাথলজি পড়েছে?” (সপ্তম দৃষ্ ) 








৫১৬ গিরিশচন্ 


কেমন ছিলে ?, কাঞ্জিলালবাবু বলিলেন, রাত্রে আব কাসি হয় নাই 
বটে, কিন্ত আপনাঁব উষধেব গুণে নয়, ওষধ না খাইলেও আব কাঁসি হইত 
না।, গিরিশচন্দ্রকে কঠিন কঠিন রোগ আরোগ্য করিতে দেখিয়াও 
কাঞ্জিলালবাবু গৌড়ামি ছাড়িতে পাঁবেন নাই । কিন্তু গিরিশচন্দ্র অনেক 
সময়ে উৎকট বোগ সম্ন্ধে তীহাঁৰ সহিত হোমিওপাথিক চিকিৎসাঁব 
আলোচনা কবিতেন। 

এইবপে গিবিশচন্দ্র কাঞ্জিলাল বাবুব হৃদয়ে থে বীজ বপন কিয়া 
গিয়াছিলেন, তাহার মৃত্যুব কয়েক বসব পবে সেই বীজ অস্কুবিত হইয়! 
ক্রমে.বৃক্ষাঁকাবে পরিণত হয়। কাঞ্জিলাল ডাক্তার এলোপ্যাথি ত্যাগ করিয়া 
( বল! বাহুল্য, তিনি অন্্-চিকিৎসায় প্রচুব অর্থ উপার্জন কবিতেন ) 
একেবারে গৌড়া হোমিওপ্যাথ হইয়! উঠেন। ডাক্তাব কাঞ্রিলাঁল প্রায়ই 
আক্ষেপ কবিতেন-_গগিরিশবাবুব জীবদ্দশায় ভোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা 
আবন্ত করিলে তাহা নিকট কতই না! শিখিতে পারিতাম,_-আর 
তাহারও কত আনন্দ হইত!” বড়ই পরিতাপের বিষয়, কাঞ্জিলাল 
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সুপ্রতিষ্ঠিত হুইয়াই অকালে ইহলোক ত্যাগ 
করেন। 

গিবিশচন্দ্র হীপানি পীড়ায় আক্রান্ত হইয়! জীবনের শেষাবস্থায় যে দুই 
বসব কাশীতে গিয়। অবস্থান করিয়াছিলেন, _কানী রামকৃষ্ণ সেবাশমেব 
কঠিন কঠিন বোগীব চিকিৎসা! তিনিই কবিতেন। এলাহাঁবাদ, জৌনপুর 
হইতে শিক্ষিত ব্যক্তিগণ তাহার নিকট চিকিৎসার্থে আসিতেন। যথা- 
সময়ে আমরা তাহা'ব উল্লেখ করিব। 





পঞ্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 


উস্পহ্াম্প্-ঞ্রল্ানে ক্লান্পিক্ষেল্র আন্রন্মভি এছ 
গিক্িশজত্জ্ল্র মিম্মাওুাাজ অপ্রভ্বান্ত্ুল্ন 


অমববাবু এ পধ্যস্ত বিশেষ প্রতিপত্তির সহিতই ক্লাসিক থিয়েটাঁব 
চাঁলাইয়া আসিতেছিলেন ; কিন্তু ১৩১* সাল হইতে মিনার্ভা থিয়েটার 
ভাড়া লইয়া ক্লাসিক ও মিনার্তা উভয় থিয়েটারই পরিচ।লন! করিতে 
যাওয়া-__তাঁহাঁর অবনতির কাঁরণ হইল । 

শ্রীযুক্ত নবেন্্রনাথ সরকার মিনার্ত৷ থিয়েটাব ছাড়িয়। দিবার পব উক্ত 
থিয়েটারের তাৎকালীন স্বত্বাধিকারী-_খুলনার উকীল স্বগীয় বেণীভূষণ বায় 
এবং জমীদাঁব প্রিয়নাথ দাস--উভয়েব নিকট হইতে অমববাবু তিন 
বৎসবের জন্য মিনার্তাব লিজ গ্রহণ কবেন। সর্ত ছিল-_অমরবাবু বাটী 
স্থুসংস্কত করিবেন এবং দশ হাজার টাকা ডিপজিট রাখিবেন ) কিন্ত 
কাধ্যতঃ উপস্থিত ঠিনি কয়েক সহন্্ মাত্র টাকা দিয় থিয়েটারের দখল 
গ্রহণ করেন। 

১৩১* সাল, ২১শে কার্তিক-__মিনার্ভ৷ থিয়েটাব স্থসংস্কত কবিয়৷ পণ্ডিত 
ক্ষীবোদ প্রনাদেব “বঘুবীর নামক নৃতন নাটক লইয়া! অমববাবু মিনার্ভার 
উদ্বোধন করেন। বঘুবীবেব ভূমিকাভিনয়ে তাহাব বিশেষ সুনাম হইয়াছিল, 
কিন্তু থিয়েটাবে সেরূপ অর্থ সমাগম হইল না। এইরূপে এক বৎসব 
মিনার্ভ। থিয়েটার চাঁলাইস্া তিনি ক্ষতিগ্রস্তই হইলেন। ক্লাসিক থিয়েটাব 
হইতে অমরবাবু যথেষ্ট অর্থ উপার্জন কবিলেও কিছুই সঞ্চয় করিতে পাঁবেন 
নাই। বাল্যকাল হইতেই মিতব্যয়িতা শিক্ষা! তাহার হয় নাই-_ ত্র আক 
তত্র ব্যয়'--শেষে তিনি খণ'জালে জড়িত হইয়া পড়িলেন। লবপ্রতিষ্ঠ 


পঞ্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫১৯ 


কণ্টাক্টার ( বর্তমান মনোমোহন থিয়েটারের স্বত্বাধিকারী ) শ্রীযুক্ত 
মনোমোহন পাড়ে মহাশয়ের নিকট হইতে অমরবাবু প্রায়ই খণগ্রহণ 
কবিতেন। প্রথম প্রথম তিনি টাকা শোধ কবিয়া দিতেন, _কিস্তু ক্রমশঃ 
টাঁক! বাকী পড়ায় খণের মাত্রা বৃদ্ধি পাইতেই থাকে। কথা ছিল, প্রত্যেক 
সপ্তাহে অমরবাবু থিয়েটার হইতে আড়াইশত টাকা কবিয়া' মনোমোহন 
বাবুকে খণ-পবিশৌধ হিসাবে দিয়া যাইবেন, কিন্তু তাহার অন্যান্য 
পাওনাদারও ছিল, এ জন্ত তাহাও সব সপ্তাহে ঘটিয়। উঠিত না। 

এই সময়ে ক্লাসিক থিয়েটাবে ভাড়ার নিমিত্ত বেলচেম্ার সাহেবকে 
ছুই হাঁজার টাঁক৷ দ্িবাঁব প্রয়োজন হওয়ায় অমরবাবু বিশেষ বিব্রত হইয়া 
মনোমোহনবাবুকে টাকার নিমিত্ত পুনবাঁয় ধরিয়া বসেন। মনোৌমোহনবাবুর 
তখনও প্রায় দশ হাজার টাকা পাওনা হওয়ায় তিনি আর টাক! দিতে 
অসন্মত হন। অবশেষে ক্লাসিক থিয়েটারের স্বত্ব বিক্রয়ের খোস কবল! 
লিখিয়া দিয়া! অমরবাবু তাহার নিকট উক্ত টাক! গ্রহণ করেন। বথা 
থাকে, তিন মাঁসের মধ্যে এই কবল রেজিস্্রী হইবে না । অমরবাবু এই 
তিন মাসেব মধ্যে টাক! পরিশোধ করিতে না পাঁবিলে তবে রেঝজিদ্্রী হইবে। 

ক্লাসিক থিয়েটারের স্বত্ব বিক্রয়ের একে এই কঠিন সর্তঃ তাহাতে 
বৎসরাবধি মিনার্ভ থিয়েটার চালাইয়া লাভ হওয়া দূরে থাক্‌__খাণের 
পরিমীণ বৃদ্ধিই হইতে লাঁগিল। তাহার উপর মিনার্তা থিয়েটারের 
স্বত্বাধিকারী পূর্বোক্ত বেণীভৃষ্ণ রায় ও প্রিয়নাথ দাস ডিপজিটের বাকী 
টাকার জন্ত কড়া তাগাদা আরম্ভ করিলেন__সে টাক! না দিলে লিজ 
কাটিয়া যাঁয়_এই স্কট-অবস্থায় অমরবাবু মিনার্তা থিয়েটারের বাকী 
ছুই বসরের লিজ মনোমোহনবাবুকে হস্তান্তর করিয়া! দিলেন। মনোমোহন 
বাবু & লিজ পাইয়! বেশীভূষণবাবুদের পাওনা টাকা পরিশোধ করিয়া দিলেন 
এবং নিজের প্রাপ্য টাকা হইতে অমরবাবুকে অব্যাহতি প্রদান করিলেন। 


পঞ্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫২১ 


মিনার্তা থিয়েটারের লেসি হইয়া মনোমোহনবাবু শ্রীযুক্ত চুনীলাল দেবকে 
থিয়েটার সাঁব-লিজ দিলেন। কথা হইল-_ চুনীবাবু তাহাকে ৭৫০২ টাঁকা 
করিয়া মাসিক ভাডা দিবেন, এবং ভাড়াব টাক! সপ্তাহে সপ্তাহে দিয়া 
যাইবেন। চুনীবাবু স্বয়ং অধ্যক্ষ এবং পরিচালক হইয়া _মিনার্তা 
থিয়েটাবেব অভিনেত! ও 'অভিনেত্রীগণের সহিত একটা 81)87€এব ব্যবস্থা 
কবিয়া থিয়েটার চালাইতে আরম্ভ কবিলেন। ন্বর্গায় মনৌমোঁহন 
গোস্বামীব নৃতন সামাজিক নাটক “সংসাক মিনার্ভ! থিয়েটাবে প্রথম 
অভিনীত হয়। নাঁটকথানি পাঁচ ফুলেব সাজি হইলেও দর্শকগণেব 
হৃদয়গ্রাহী হইয়াছিল। এই সময়ে ক্লাসিক থিয়েটাবে হঠাৎ “সতনাম' 
নাটক বন্ধ হইয়া যাঁওয়ায় ক্লাসিক-প্রত্যাগত বহু দর্শকসমাগমে “সংসার 
বেশ জমিয়া যাঁয়। 

শনিবাঁবে “দংসাঁক+ অভিনয়ে কতকটা আধিক স্বচ্ছলত। হইল এবং 
চুনীবাঁবুও সপ্তাহে সপ্তাহে মনোমোহনবাবুকে ঠিক ভাড়া দিয়া যাইতে 
লাঁগিলেন। কিন্তু ববি ও বুধবাবে অতি সামান্য বিক্রয় হওয়ায় তিনি 
বিশেষ চিন্তিত হইয়া পড়িলেন। তখনও ক্লাসিক অক্ষুণ্ন প্রতাঁপে 
চলিতেছে । থিয়েটাব জমাইতে হইলে ভাল নাটক চাই-_তাল অভিনেতা 
ও অভিনেএ চাই--কিন্তু চুনীবাবুব টাকা কোথায়? 

হঠখৎ এমন একটী অভাবনীয় ঘটন! ঘটিল, যাহাতে মিনার্ভা থিয়েটাবেব* 
সমস্ত দৈন্ট দুব হইয়া সৌভাগ্যের স্থচনা হইল । 


শিক্সেলাকল্্রে ভষ্পহান্ত্ 


সুবিখ্যাত ল্ুমতী” সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠাতা স্বর্গীয় উপেন্্রনাথ 
সুখোপাধ্যায় মহ!শয় স্থলভ মুল্যে সৎসাহিত্যের প্রচাব কবিয়া সাহিত্যজগতে 
অমরত্বলাভ করিয়াছেন। কিন্ত এই সময়ে তিনি, তিন সহম্্র “অতুল 


৫২২ 'গিরিশচন্ঞ 


গ্রন্থাবলী” একেবারে ছাঁপাইয়! একটু মুস্কিলে পড়েন। তাহার স্থবৃহৎ গুদীমে 
বই রাখিবার আর স্থান সংকুলান হইতে ছিল নাঁ। এ নিমিত্ত তিনি__ 
বুধবার ক্লামিক থিয়েটাব ভাড়া! লইয়া প্রত্যেক দর্শককে “অতুল গ্রন্থাবলী 
উপহার দিবেন সঙ্কল্প কবিলেন। ইহাতে অমববাবু সম্মত আছেন কি না? 
_জাঁনিবার জন্ত উক্ত থিয়েটাব-সংশ্রিষ্ট কোনও ব্যক্তি মারফত প্রন্তাব 
করিয়া পাঠান। অমরবাবু নানা কাবণ দেখাইয়। উপেন্ত্রবাবুব প্রস্তাব 
প্রত্যাখান কবেন। 

অমববাবু অসম্মত হইলেন বটে, কিন্তু চুনীবাবু তীহাব মিনার্ভ। 
থিয়েটারে উপহাব দানে অভিনয় কবিতে সহজেই সম্মত হইলেন। ব্যবস্থা! 
হইল-উপেন্দ্রবাবু দর্শক্দিগকে উপহাঁৰ জোগাইবেন এবং বিনামূল্যে 
হাগুবিল ছাঁপাইয়! দিবেন, থিয়েটাব সম্প্রদায় কেবল অভিনয় ও প্র্যাকার্ড 
ছাঁপাইবার ভার লইবেন। লভ্যাংশ__আধা-আধি। 

বহুকাল পূর্বে স্যাঁসান্যাল থিয়েটাঁব ভাড়। লইয়! যোগেন্ত্রনাথ মিত্র 
দর্শকগণকে অস্কুবীয়, ইয়ারিং, আয়না, এসেন্স প্রভৃতি উপহার দিয়াছিলেন, 
--পাঠকগণ পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদে তাহা জ্ঞাত হইয়াছেন। এমারেক্ড 
থিয়েটাবেৰ ভাঙ্গা অবস্থাতে আব একবাঁব এইরূপ ইয়ারিং নাকছাবি 
প্রভৃতি উপহার দেওয়া হয়___কিন্তু পুস্তক উপহাঁব-_রঙ্গীলয়ে এই প্রথম । 

সেদিন বুধবার (৮ই ভাদ্র, ১৩১১ সাল ) মিনার্ভা থিয়েটারে নন্দবিদায়, 
লক্ষণবর্জজন এবং কুক ও দর্ভীর অভিনয় ; তৎসঙ্গে প্রত্যেক দর্শককে 'অতুল 
রন্থাবলী” উপহাব প্রদান কৰা হইবে-বিজ্ঞাপিত হয়। ' উপহাব- 
প্রত্যাশায় গ্যালারি, পিট ও ষ্টলের সমস্ত আসনগুলিই বিক্রন্ধ হইয়া! যাঁয়। 
থিয়েটারের কর্তৃপক্ষগণ আর স্থান দিতে না পারিয়া অৎশেষে হতাশ দর্শক- 
মণ্ডলীকে সম্বোধন করিয়া! বলিলেন,--“আমর! আগামী কল্য বৃহস্পতিবারেও 
এই একই অভিনয় এবং এই একই উপহার প্রদান করিব। ধাহাদের 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫২৩ 


ইচ্ছা হয়, আজ হইতেই টিকিট ও উপহার লইতে পারেন।, জঙ্গে সঙ্গে 
প্রায় তিন শত টাকার টিকিট বিক্রয় হইয়! যায়। সময়ের অল্পতা বশতঃ 
তৎপরদিবস বৃহস্পতিবারের অভিনয় উত্তমরূপে বিজ্ঞাপিত হইল না) 
তথাপি উভয় রাত্রে দেড়হাজার টাঁকাঁর উপব টিকিট বিক্রর হইয়াছিল। 

গেই অপ্রত্যাশিত বিক্রয়ে উৎসাহিত হইয়৷ মিনার্ভা সম্প্রদায় তৎপর 
সপ্তাহ বুধ ও বৃহস্পতিবার মাইকেল মধুস্দন দত্তের গ্রস্থাবলী উপহার দিবা 
প্রস্তাব করিল। অমর বাবু এই সংবাদ পাইয়৷ আর স্থিব থাকিতে পাঁরিলেন 
না। তিনিও গচুব অর্থব্যয়ে চাবি পাঁচ দিনেব মধ্যে মাইকেল মধুহদনেৰ 
গ্রস্থাবলী ছাপাইয়! তৎপব সপ্তাহে বুধ ও বৃহস্পতি-_দুই দিনই উক্ত গ্রন্থাবলী 
উপহার প্রদানে অভিনয় ঘোষণা করিলেন। উভয় থিয়েটাবেই একই 
উপহাঁর-_অপবাহ হইতে দলে দলে দর্শক সমাগমে হেদুয়ার মোড় হইতে 
বিডন উদ্যানের সম্তুখ পধ্যস্ত সমস্ত বিডন স্ট্রীট লোকে লোকারণ্য হইয়! 
গেল-_থিয়েটাবে এরূপ জনসমাঁগম বহুকাল কেহ কখনও দেখে নাই। 
উপেন্্র বাবুব পৃষ্ঠপোষকতায় মিনার্তা থিয়েটার উপহারেব বন্য! ছুটাইল। 
এরূপ অবস্থায় অমববাবু বাধ্য হইয়া “হিতবাদী”র স্বত্বাধিকাবিগণের 
শবণীপন্ন হইলেন। ভাদ্র ও আশ্বিন এই ছুইমাস উভয় থিয়েটারে 
উপহাবের প্রতিদ্ন্দ্িতা চলিল-_অতুল-্রন্থাবলী হইতে আরম্ভ করিয়া 
কালীপ্রসন্ন সিংহের মহাভারত ও শব্ধকল্পদ্রম পধ্যস্ত উপহার প্রদত্ত 
হইয়াছিল। 

এইরূপ উপহারদানে দুর্ধল মিনার্তা থিয়েটার দিন দিন যেরূপ বল 
সঞ্চয় করিতে লাঁগিল;__-অপরপক্ষে চল্তি” ক্লাসিক থিয়েটার বন্মতীর 
প্রতিযোগিতায় উপহার প্রদানে পশ্চাৎপদ হইয়া অধিক বিক্রয়ও করিতে* 
পারিল না, তৎসঙ্গে আত্মমর্ধ্যাদাও হারাইল) আবার অল্প বিক্রয়ের 
অর্দাংশ হিতবাঁদীকে দিতে বাধ্য হওয়াঁয় ক্রমেই নিস্তেজ হইয়া পড়িল। 


৫২৪ গিরিশচন্দ্র 


ফলতঃ মিনার্ভ উপহীব প্রদানে যেপ দিন দিন উন্নতিলাভ করিতে 
লাগিল, ক্লাসিকের সেইৰপ অবনতি হইতে লাগিল। 

ক্রমে ক্লাসিক থিয়েটাবে বেতনাদি বাঁকি পড়িয়া! যাইতে লাঁগিল,__ 
এই সময়ট! অমববাবুব বড়ই দুঃসময় । গিরিশচন্ত্র তাঁহাকে এই সময়ে 
কয়েক সহমত টাকা খণদান কবিয়া ছুইবাঁব বিপদ হইতে উদ্ধাব করেন। 
মেই টাকা অমববাবু ক্রমশঃ পরিশোধ করিতেছিলেন। শেষে খণ পবিশোধ 
হইল বটে-_কিন্তু গিবিশচন্রেব তিনমাসের বেতন বাকী পড়িয়া গেল। 
অমববাঁবুব পাঁওনাদারেব অভাব ছিল নাঁ। দেনা শোধেব নিমিত্ত 
হাইকোর্টে দবখাস্ত কবিয়া তাহাবা ক্লাসিক খিয়েটাবে বিসিভাঁব নিযুক্ত 
কবিয়া দিলেন। ইহাব ফলে-__অমব বাবুকে ইনসল্ভে্ট লইতে হয়। 


গিক্িশিকজ্দ্রেল্র মিনায় মাঙ্গল্তান্স 


“সংসাবঃ অভিনয়ের পৰ হইতে উগ্যমণীল চুনীলালবাবু একে একে 
স্ুবিখ্যাতা অভিনেত্রী তিনকড়ি দ।সীকে এবং ইউনিক থিয়েটাঁব * হইতে 
শ্রীমতী তাঁবান্থন্দবী ও ষ্টাব থিবেটাব হইতে অর্দেন্দুশেখর মুস্তফী মহাঁশয়কে 
'আনিবা নিজ সম্প্রাদ/যেব পবিপুষ্টি সাধন কবিতেছিলেন। সর্বশেষে 
ক্লাসিক হইতে গিবিশচন্ত্রকে লইয়া গিয়া খিয়েটারকে প্রতিদ্ন্দ্ীহীন 
কবিলেন। পুর্ধে উল্লিখিত হইয়াছে যে ক্লাসিকে গিবিশচন্দ্রের তিন মাসের 

বেতন পড়িয়া যার। বেতন পাইবাঁব তখন সম্ভাবনাও অতি অল্প। এই 


শপ পাপ শাীস্প্পীী | সপে | পাস 
সপ | সপ” সব আপ ২ সস সা 


* স্বগীয বিহাবীলাল চট্টে।পাধ্যাযেব মৃত্যুষ পৰ বেঙ্গল থিযেটাব বন্ধ হইয়া যায। 
সত্বাধিকাবী৷ স্বর্গীয় অন/থনাথ দেবেব নিকট উক্ত থিষেটাব ভাড়া লইয| অবোবা, ইউনিক, 
স্যাসান্তাল, গ্রেট স্াসান্তাল, গ্রাও্ড স্যাসান্থ।ল, থেস্পিয়ান টেম্পল, প্রেসিডেন্সি প্রতৃতি 
নান! থিষেটাব সম্প্রদায় থাক্রমে অভিনয কবেন। তাহাব পর বছুদিন থিয়েটার খালি 
পড়িয়। থাকে। উপস্থিত প্র স্থানে 'বিডন স্্ীট পোষ্টাফিসের' নৃতন বাটা নির্মিত হইয়াছে। 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫২৫ 


অবস্থায় চুনীবাবুর সনির্ধন্ধ অনুরোধে গিরিশচন্দ্র মিনার্তায় যোগদানে আক 
ইতস্ততঃ করিলেন না । 

মনোমোহন বাঁবু অক্লান্ত পরিশ্রমে একমাত্র রিহাঁরশ্যাল ব্যতীত থিযনেটাব 
সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় তত্বাবধান কবিতে লাঁগিলেন,_-এ নিমিত্ত তিনি 
থিয়েটারের ভাড়া ব্যতীত, সমগ্র বিক্রয়ের (01083 9919 ) উপব শতকরা 
পাচ টাকা কমিশন পাইতেন। হাইকোর্টের উকীল স্বর্গীয় মহেন্্রকুমাব 
মিত্র এম-এ, বি-এল * এই অম্প্রদায়ের আইন-আদালত সম্বন্ধে পবামর্শ- 
দীতা (17688] 05156") ছিলেন, ইহাব জন্য ইনিও একটা কমিশন 
পাইতেন। 

কয়েক মাস স্থনাম ও ুশৃঙ্খলার সহিত অভিনয় কবিয়া সম্প্রদীয় 
মাঘ মাসে বায়না লইয়া! মালদহে গমন করে। অশুভক্ষণে সামান্য কাবণে 
তথায় মনোমোহন বাঁবুব সহিত চুনীবাবুব মনোমালিন্ত ঘটে । কলিকাতায় 
ফিবিয়া আসিয়! মনোমোহন বাবু থিয়েটাব আসা বন্ধ করেন। এদিকে 
নান! কাবণে চুনীবাবুও থিয়েটার ছাঁড়িলেন। মহেন্ত্রবাবু মধ্যন্থ হইয়া 


শপ ৭০ টপ 


* মহেন্দরবাবু পূর্বে শ্রীযুক্ত নবেন্্রনাথ সবকাবেব ট্টেটেব ম্যানেজাব ছিলেন। ইহাধই 
উৎসাহে নবেক্দ্রবাবু গিবিশচন্দ্রকে মিনার্ভায় লইযা যান। তৎপবে মহেন্্রবাবু ম্যানেজারি 
ছাড়িয! দিলে নষেব্্রবাবুও অন্তান্য লোকে পবামর্শে গিবিশচন্দ্রে সহিত অসদ্ধযবহার করেন। : 
মাহন্দ্রবাবু নাট্যকলাভিজ্ঞ ছিলেন। কলিকাতা! বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনি এম-এ পৰীক্ষা 
প্রথমত্রেণীতে * উত্তীর্ণ হন। নাটকে" প্রশ্নপত্রে সেই বৎসব প্রথম স্থান অধিকাধ 
কবিয়াছিলেন। মহেন্্রবাবুব নানাগুণে গিবিশচন্দ্র তাহাধ বিশেষ পক্ষপাতী ছিলেন। 
গিবিশচন্ত্রেযর শেষ কর্মা-ছ্রীবনেব সহিত মহেন্দ্রবাবু বিশেষবপ জডিত। মহেন্দ্রবাবু_ 
বর্তমান মিনার্ডা থিয়েটারের প্রোপ্রাইটার শ্রীযুক্ত উপেন্্রকুমাব মিত্র বি-এ মহাশয়েব জ্যেষ্ঠ, 
এবং শিশিব পাবলিশিং হাউসের স্বত্বাধিকারী ও 'সচিত্র শিশিব'-সম্পাদক গ্রযুক্ত শিশিরকুমাব 
মিত্র বি-এ মহাশয়ের পিত| । 


৫২৬ গিরিশচন্দ্র 


সিদ্ধান্ত করিলেন,-_চুনীবাবুর কর্তৃত্বকালীন দৃশ্যপট, পরিচ্ছদ ইত্যাদির 
জন্য চুনীবাঁবু একহাঁজার টাকা নগদ পাইবেন এবং থিয়েটারেব অন্তান্ত 
যাহা দেন! ছিল, তাহা! পরিশোধ করিবার ভাব মনোমোহন বাবু স্বয়ং 
গ্রহণ করিবেন । 

যখন চুনীবাবু তাহার হাতে গড়া মিনার্ভার এই “তৈরী-হাট” সহসা 
পরিত্যাগ করিলেন, তখন মনোৌমোহনবাবুও থিয়েটার ভাড়া দিবাঁব সক্কল্প 
করিলেন। মহেন্দ্র বাবু বলিলেন, “থিয়েটারে লোকমান হইবে না 
কেন ছাড়িয়। দিতে চাহিতেছ ? আমাব কথায় বিশ্বাস কবো-__স্বয়ং 
থিয়েটার চালাও |” মহেন্দ্রবাবুর আগ্রহ দেখিয়া! এবং শাহাব বুদ্ধিমত্তার 
উপব দৃঢ় বিশ্বাস থাকায় মনোমোহন বাবু তাহাকে বলেন, “ভূমি যদি 
বখ্রা লইয়া আমার সহিত কাধ্যে যোগ দাও, তাহা হইলে আমি 
থিয়েটার চাঁলাইতে সম্মত আছি।” সেইপই হইল-_মহেন্দ্রবাবু এক 
তৃতীয়াংশ অংশ গ্রহণে 1,882] ০05159: রূপে মনোমোঁহন বাবুর সহখোগে 
থিয়েটার চালাইতে আবন্ত কবিলেন। মনোমোহন বাবু তাহাব বাঁল্য- 
বন্ধ শ্রীবুক্ত অপবেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়কে চুনীবাবুব অধ্যক্ষতার সময়েই 
মিনার্ভা থিয়েটাবে আনিয়াছিলেন। অপবেশবাবু মিনার্ভা থিয়েটরের 
সহিত মালদহেও গিয়াছিলেন। চুনীবাবুর স্থলে তাহাকেই ম্যানেজার 
কর! হইল। 


হল্ল-€ঙ্গীল্ী 


মিনার্ভা থিয়েটাবে আসিয়া গিরিশচন্দ্র তাহার বিখ্যাত সামাজিক 
নাটক “বলিদান' লিখিতে প্রবৃত্ত হন। নাটকখাঁনির রচনা প্রায় সমাপ্ত 
হইয়া! আসিলে সম্মুখে শিবরাত্রি উপলক্ষে একখানি শিব-ভক্তিমূলক গীতি- 
নাট্যের আবশ্যক হওয়ায় তিনি দুই অন্কে সমাপ্ত এই “হর গৌরী+ গীতি- 
নাট্যথানি লিখিয়৷ দেন। 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫২৭ 


রামেশ্বরের “শিবায়ন” অবলম্বনে গ্রন্থথানি রচিত। কিন্তু গিরিশচন্দ্রের 
নিজের কৃতিত্ব_-এই গীতি-নাট্যের সর্ধাংশেই স্ুপ্রকাশ। প্রজাপতি জীব 
স্থষ্টি করিয়াছেন, সতীদেহত্যাগে মানব পতি-পত্রীর সম্বন্ধ বুঝিয়াছে, কিন্তু 
স্ষ্টির উদ্দেশ্ত এখনও সম্পূর্ণপে সাধিত হয় নাই। ধরণীব আদিমবাসী- 
গণ এখনও ঘর বাধিতে শিখে নাই, বনে বনে শীকাব করিয়। ফেরে, _ 
বিজ্ঞান ইহাকে মানবেব *110007)% 4৪০” শিকার-বৃত্তির যুগ বলিয়া 
নির্ধারিত করিয়াছে । ইহার সঙ্গে সঙ্গেই “০019010 42০, বেদিয়া- 
বৃত্তির যুগের প্রবর্তন । তৎপরে 8800160148০. অর্থাৎ কৃষি- 
বৃত্তির যুগ। তাহার পর শিল্প-কলার (4) ক্রমোন্নতি । গিরিশচন্দ্র 
শিবায়নের গল্পে মানব-জাতির ক্রমবিকাঁশের এই বৈজ্ঞানিক ধার! অতি 
দক্ষতার সহিত অঙ্কিত কবিয়াছেন। ইহার গল্লাংশ হান্ত-রস প্রধান। 
এতৎ সম্বন্ধে আর অধিক কিছু না বলিলেও চলে। পুস্তকখানি পাঠ 
করিলেই পাঠক গিরিশচন্ত্রের কৃতিত্ব হ্বদয়ঙ্গম করিবেন। 

২*শে ফাল্গুন (১৩১১ সাল) মিনার্ভা থিয়েটাবে “হর-গৌরী” প্রথম 
অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনে্তে! ও অভিনেত্রীগণ £__ 

হর--তাবকনাথ পালিত, নারায়ণ- শরীক্ষেত্রমোহন মিত্র, নাবদ--শ্রঃমন্মথনাথ পাল 
( হাহুবাবু), কাণ্তিক__নগেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, গণেখ__্রীননিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্দ্র_ 
সণীন্্রনাথ মণ্ডল ( মণ্ট,বাবু), মদন__-কিবণবালা. নন্দী--প্রমঅতুলচন্ত্র গঙ্গোপাধ্যায়, ভূঙ্গী-_ 
ভ্ানকালী চট্প।ধ্যায়, কুবেব--শ্রীত্রলেন্ত্রনাথ চক্রবত্তী, বিশ্বকর্্া-_-শ্রীঅমৃতলাল দাস, 
ব্যধ__ত্রীজীবন্নকৃষ্ণ পাল, গৌবী-_শ্রীমতী তাবাহুন্দরী, লক্্মী-__ত্রীমতী মনোবমা, জয়া_ 
এমতী গোলাপহন্দরী, বিজয় সরোজিনী ( নেডা ), পৃথিবী-_সবোজিনী, রৃতি--শ্রীমশ্ী 
'ফিরোজাবাল। ( নেনি ), মেনরা- নগেক্্রবাল। ইত্যাদি। সঙ্গীত-শিক্ষক-_অ২তলাল দত্ত 
(হাবু বাবু), নৃত্য-শিক্ষক-_গ্রীাতকড়ি গঙ্গোপাধ্যায়, বঙ্গতৃমি-সজ্জীকব_ শ্ামাচরণ কুও। 

এই গীতিনাট্যে গিরিশচন্দ্র হরপার্বতীর দেব-ভাঁব পরিস্ফুট না করিয়া 
ভাষায় ও ভাবে একটী মধুর গাহ্‌স্থা চিত্র অস্কিত করিয়াছেন। কিন্ত 


৫২৮ গিরিশচন্দ্র 


কবিব কৃতিত্বে এই গার্হস্থ্য চিত্রের ভিতর দিয়া নায়ক-নায়িকার দেবত্ব 
দেখা দিয়াছে। নিখুঁত স্বাভাবিক অভিনয়ে শ্রীমতী তারাস্মন্দরী গৌরীর 
ভূমিকা মূর্ত করিয়া তুলিয়াছিলেন, কিন্তু তারকনাথ পালিত মহাঁদেবের 
ভূমিকায় সেরূপ কৃতিত্ব দেখাইতে পাবেন নাই। এ নিমিত্ব অভিনয়ের 
আদর্শ দিবাব জন্য গিরিশচন্ত্ স্বয়ং কয়েক রাত্রি শিবের ভূমিকায় রঙ্গে 
অবতীর্ণ হুইয়াছিলেন। মেনকাঁর ভূমিকায় নগেন্দ্রবালা__ণএসেছিম 
তে থাকৃনা উম! দিন কত” এবং “জামাই নাকি শ্বশীনবাঁী শুনতে 
পাই'__দুইখানি গীতে দর্শকমগ্ডলীকে বিমুগ্ধ কবিয়াছিলেন। 

দীর্ঘকাল পৰে মনোমোহন থিয়েটারে এই গীতিনাটাখানি পুনরভিনীত 
হয়। অভিনয় দর্শনে সাধাবণে বিশেষ শ্রীতিলাভ কবায়, বহুদিন ধরিয়া 
তথায় ইহা অভিনীত হইয়াছিল। 


ক্তিশদ্কান্ম 


বিলিদান' গিবিশচন্দ্রের স্ববিখ্যাত সামাজিক নাটক। ইহার অভিনয় 
দর্শনে স্থপ্রসিদ্ধ নাট্যকার স্বর্গীয় ডি, এল, বায় বলিয়াছিলেন, _প্যদি 
বলিদানের স্ায় সামাজিক নাটক লিখিতে পাবি, তবেই সামাজিক গ্রন্থ 
লিখিব।” বাস্তবিক সমাজ-চিত্র প্রদর্শনে গিবিশচন্দ্রের সমকক্ষ কেহ 
ছিলেন না এবং এখনও নাই-_-এ কথা বলিলে অত্যুক্তি হয় না। কবি 
নাটকের শেষে বলিয়াছেন, “্বাঙ্গালায় কন্ঠ সম্প্রদান নয়- বলিদান !” 
এই মর্শেদী সিদ্ধান্তে উপনীত হঈতে যাহা! কিছু অবস্থা এবং ঘটনার 
প্রয়োঞ্জন»_একটার পর একটা বলয় সংযোগ করিয়া যেমন শৃঙ্খল গঠিত 
হয়, নিখুত শিল্পী গিরিশচন্দ্র সেইরূপ সংযোজনা করিয়াছেন । 

বিলিদান,__বাঙ্গালার গৃহ-চিত্র। কন্ঠাদায়গ্স্ত গৃহস্থের উৎপীড়ন 
এবং লাঞ্ছনা সমাজের নিত্য ঘটনা-_সম্পূর্ণ নৃতনত্ববিহীন। পুরাতন ক্ষত 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫২৯ 


যেমন শলা কাঘাতে বেদনাবোধ বা রক্তমোক্ষণ করে না, বাঙ্গালার এই 
সামাজিক ক্ষত তেমনি অসাড় হইয়া! উঠিয়াছে। কিন্তু কৰিব মাঁয়া- 
দণ্ড স্পর্শে সেই পুবাতন ক্ষতে আবাঁব অভিনব চেতনার সঞ্চার হইয়াছে। 
হাইকোর্টেব বিচারপতি স্বর্গীয় সাবদাঁচবণ মিত্র মহোদয়েব অনুবোধে 
নাটকখানি রচিত এবং তীহাকেই উৎসর্গীকৃত হয়। উৎসর্গ-পত্রে একটু 
বিশেষত্ব আছে। নিম্ে উদ্ধত কবিলাম £-_ 


“পণ্ডিত প্রবব মাননীয় শ্রীযুক্ত সাবদাচব। মিত্র সহ্দয়েযু-_ 


মহোদয়, এই নাটকখানি মহাশয়েক আদেশে বচিত। পবীক্ষার্থে 
সবিনষে মহাঁশয়কে অর্পন করিলাম। কঠিন পবীক্ষ1।। পঠন্দশার, উন্চ- 
প্রতিভায়, সহযোগিগণেব প্রতিদ্বন্দ্িত। নিবাঁশ কবিম়াছিলেন। সংসাঁব- 
পবীক্ষায়, উত্তরোত্তব নিজ গৌবব বর্ধন পূর্বক বিচারপতির আঁসন গ্রহণ 
করিয়াছেন। তবে নট ও নাট্যকারেব উৎসাহবর্ধন মহীশয়েব স্বভাবসিন্ধ। 
বৌবনাবস্থার, বঙ্গ নঞ্চ হইতে “নিমটাদ"রূপে দর্ণকমগ্ডলীব মধ্যেঃ মহাঁশেব 
প্রথম দর্শন পাই। তদবধি আমি মহাঁশয়েব অন্ুকম্পাভাজন। সেই 
অন্থকম্পাই, এস্থলে আমার উকীল। বিচাবপ্রার্থীব অবস্থায়, মহাশয়ের 
সমীপে উপস্থিত--অন্রুগত শ্রাগিরিশচন্দ্র ঘোষ ।” 
. ২৬শে চৈত্র (১৩১১ সাল) মিন থিয়েটারে “বলিদান” সর্ধপ্রধম 
অভিনীত হয়। প্রথমভিনয় বঙ্জনীব অভিনৈত! ও অভিনেত্রীগণ £_- 
ককুণ।মঃ_-শিঃবণচন্্র নেব, বপঠাদ--অন্ধে ঘুশেখব ুস্তকী, দুললচাদ-_গ্রীহবেন্বন।থ 
ঘোষ (দানিবাবু), মোহিতমোহন- শ্রীক্ষেত্রমোহন মিত্র, ঘনগ্তাম_শ্রীমণীন্্না+ মণ্ডল 
(মটবাবু), কিশোব_হ্ীমপবেণচন্্র মুখোপাধ্যা়, কালী ঘটক-__শ্রীজীবনকৃষ্ণ পাল, 
কনমানাথ- প্রীমগ্থনাথ পাল ( হাছু বাবু), নলিন- ধীবেন্দ্র নাথ, মুকুন্দলাল-_শ্রীঅতুলচন্ত্র 
গঙ্গোপাধ্যায়, ইনস্পেক্টায় _ প্রনগেন্্রনাথ ঘোষ, উকীল-জ্ঞানকালী চট্টোপাধ্যায়, সবস্্তী__ 
প্রীতী তারাহন্দবী, যশোমতী-সরোজিনী, বাজলক্রী__নগেক্দ্রবালা, জৌবি_ সুশীল বালা, 
৩৪ 


৫৩০ গিরিশচন্দ্র 


মত,ঙগনী-্বীমতী হুধীবাবালা (পটর), কিধযয়ী-_কিরণবালা, হিরগ্মধী _গ্রীমতী 
চাকবাল।, জ্যোতির্্ধী--্ীমতী মনোবম|, ভামিনী--শ্ীমতী পান্গ।হন্দবী, করুণামধেষ ঝি__ 
এমতী চপনাহুন্দরী ইত্যাদি। শিক্ষক- গিরিশচন্দ্র ঘোষ ও অর্দেন্দুশেখব মুস্তফী 
(সহকাবী), বঙ্গভূমি-সক্জ্রীকর- গ্ঠামমচবণ কু । প্ডিতবব বায বৈকুষঠনাথ বনু 
বাহাদ্রুব এই ন!টকেব গীতগুলিৰ শব সংযোজনা কিয়া দিযাছিলেন। 


পাঠক দেঁখিবেন_সেই সময়ে খ্যাতনামা অভিনেতাঁমাত্রেই এই 
নাটকে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন, এবং কেবল তাহাঁই নহে, সকলেই যেন 
পবম্পব প্রতিযোগিতা করিয়া! এই সমাঁজ-চিন্রকে দর্ণকের চক্ষে সজীব 
করিয়া তুলিতে বদ্ধপরিকর হইয়াছিলেন। 

এই সর্ববজন-সমাদূত নাটকের নায়ক “ককণাময়' হইতে সামান্। 
“ঝি, পর্যাপ্ত সকল চরিত্রই জীবন্ত এবং গ্রন্থকাবেব হৃষ্টি-নৈপুণ্যেব 
পরিচায়ক। হার প্রত্যেক চরিত্র সমালোচনা কবিয়া দেখাইতে আনন্দ 
মাছে; কিন্ত গ্রন্থের অত্যধিক কলেবব-বুদ্ধির ভয়ে আমাদের সে স্ুথলীভে 
বঞ্চিত হইতে হইল । তবে দুলালটাদ এবং জোবিব চবিত্বে যে বিশেষত 
আছে, আমরা পাঠকগণকে তাহারই একটু ইঙ্গিত করিতেছি । 

বন্থমতী+-সম্পাদক এই নাটকের যথেষ্ট প্রশংসা! করিলেও “ছুলালটাদ, 
সম্বন্ধে তীব্র মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন, যথা--"ছুলালচাদ্দের রসিকতা 
বড়ই অস্বাভাবিক হইয়াঁছেঃ যত বড় মূর্খ ই হউক না কেন, ষত বড় আছুরে 
বয়াটেই হউক না কেন, ভদ্রলোকের ছেলে পিতামাতার সম্মুখে এতদৃব 
বেয়াদবি করিতেই পারে না।” ( বন্থমতী, ৩*শে বৈশাখ, ১৩১২ সাল) 
আমাদের কিন্তু মনে হয়__সমাঁলোচক একটু ভ্রমে পতিত হুইয়াই এইরূপ 
মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছেন। দুলালাদের কোন উক্তিই রসিকতা 
নহে--তাহার সকল কথাই সারলোর অভিব্যক্তি )--কেবল শিক্ষাহীনতা, 
অনংসংসর্গ এবং মাদদক-প্রভাবে তাহার ভাষা বিকৃত হইয়াছে মান্র। 
রূপচাঁদদের যৌবনের পাপাচার :ঘেন মৃত্তিমস্ত হইয়! ছুলালঠাদরূপে তাহাকে 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৩১ 


সময়ে-অসময়ে লাঞ্ছিত করিতেছে। রূপর্চাদ বলিতেছেন,-_্আ্যা১ তুই 
কি বলছিস? তুই করুণাময়ের মেয়েকে জোব ক'রে বাগানে নিয়ে যাবার 
জোগাড় ক'রেছিলি?” ছুলাল উত্তর দ্িতেছে,__“কেন বাবা, দোষ 
কি বাব?-_-বাঁপকে। বেটা, সেপ।ইকো। ঘে ড়া ?” বিন্দি বামৃমিব কথা 
তে শুনেছি বাব।, তুমি রাতারাতি নোপাট করেছিলে বাবা!” (১ম 
অঙ্ক, ৩ম গর্ভাঙ্ক )। ধাহারা সমাজের সকল স্তরের সহিত সাক্ষাৎ-সন্বন্ধে 
পরিচিত, তাহারা অবশ্যই স্বাকাঁব করিবেন যে এরূপ চবিত্রের আদর্শ 
বিবল হইলেও, ছুলভ নহে। তবে সে আদর্শ সকল সময়ে ছাপাখানাব 
গণ্তীব ভিতর দেখা যাঁর না। ছুলালচারদদের পিতা কোন বপে পুত্রকে 
সংযত কবিবার প্রয্না করিলেই ছুলালরাদ পিতার চবিত্রকে যেন ভূগর্ভ 
হইতে টানিয়া তুপিয়৷ তাহাব সম্মুথে উপস্থিত করে। পরিণামে ছুলাল- 
টাঁদের এই সারল্যই তাহাকে মহত্বের পথে চালিত করিয়াছিল। 

দুরাচার স্বামী কর্তৃক লাঞ্িতা এবং পরিত্যক্ত। হইয়াও জোবি যে 
অসাধারণ তিভক্তিপরায়ণ৷ ও পতিপ্রেমোমাদিনী-__শুধু ইহাই তাহাব 
বিশেষত্ব নহে, পরের হৃঃখে তাহার হৃদয় গলিয়া যায় ;--নিংস্বার্থ প্রেমিকা 
জোবি ছুলালঠাদের শিক্ষয়িত্রী--জঘন্ত বিলাসের এবং স্বণিত ভোগলিগ্পাঁর 
পৃতিগন্ধময় পঞ্ক হইতে উদ্ধৃত করিয়া! এই অসংঘতঃ অসংবৃত এবং 
উপহাসাম্প্দ চরিঘ্নকে জোবি যে আসনে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিল, তাহ! 
মহৎ হইতেও মহভ্তর এবং পরম শাস্তিময়। আত্মবলিদানের কঠোর 
পরীক্ষায় উত্তীর্ঘ হইয়! দুলাল ডাকিতেছে,__পাগলিঃ পাগলি--দেখে যা, 
তোর পড়! তুলি নি। আর জাল! নেই, আমার প্রাণ জল হয়ে গিয়েছে ।” 
(৫ম অঙ্ক, ৮ম গর্ভাঙ্ক ) কিন্ত পাগলি তখন কোথায় ? যেখানে সংসার- 
সন্তপ্ত।, লাঞ্িতা, বঞ্চিত, পরিত্যক্তা, উৎ্পীড়িতা-_নিঃস্বার্থ পতিগ্রাণার 
পরম শাস্তিময় স্থান__সেই মধুহুদনের শ্রীচরণে ! 


৫৩২ গিরিশচজ্ছ 


করুণাময়ের ভূমিকাভিনয়ে গিরিশচন্দ্র অামান্ত অভিনয়-প্রতিভার 
পরিচয় দিয়াছিলেন। স্বীর গৃহিণী সরস্বতীর সহিত কন্তার বিবাহের 
কথাবার্তা কহিতে কহিতে কাগজে বিবাহের দ্রব্যাদির ফর্দ করা 
হিরগ্মীর জল-নিমজ্জন-দৃশ্ঠের শেষভাগে রঙ্গমঞ্চে প্রবেশ কবিয়া “এই যে 
খুজে পাওয়৷ গিয়েছে । তাইতো বলি-_ আমার শান্ত মেয়ে-_বাস্তায় যাবে 
না, লজ্জাশীল৷ রাস্তায় যাঁবে না।” বলিয়া সেই শোক-মত্বাবস্থাতেও 
আশ্বস্তভাঁব প্রদর্শন--আখার পবক্ষণেই__গভীর বেদনায় শুষ্ককণে “মা, মা, 
অন্ন দিতে পাবি নাই, এই যে আকঠ জল খেয়েছ !” (৪র্থ অঙ্ক, ৭ম গর্ভাঙ্ক) 
বলিয়া! বসিয়৷ পড়া, বিকৃত মন্তিষে বূপঠাদ মিত্ধের বাঁটাতে বিবাহেব কণ্টণক্ট 
সহি কৰা প্রস্ততি দৃশ্গুলি বিনি দেখিয়াছেন, তিনি কখনও ভূলিবেন নাঃ 
যিনি দেখেন নাই-_বর্ণনায় তাহাকে তাহার আভাস প্রদানের প্রয়াস বুথ! । 

সে সময়ের কি ইংরাজি, কি বাঙ্গালা-সকল সংবাদপত্রেই বলিদান 
নাটকের ভূয়সী সুখ্যাতি বাহিব হইয়াছিল। কয়েকখানি সংবাঁদপত্রেব 
মন্তব্য আংশিক উদ্ধত করিলাম £_ মেট্রোপলিটন ইনষ্রিটিউসনেত্ন প্রিন্িপ্যাল 
স্থপশ্তিত এন, ঘোষ, অভিনয় দর্শনে তৎসম্পার্দিত “ইয়ান নেসনে, 
(১৪ই আগস্ট, ১৯০৫ থূঃ ) লিখিয়াছিলেন-__ 

“ক %1]1)9 10195 19 80 110667089]5 [09115010 07:86690. * * 139) 
(32191) 091)00097 01)939, 609 68190690 ৪50০0] 0£ 60০ 101%, 
[00959 %109 0087৮ 01 29701080007 60 70974906195. 11050 ০0৫ 0006 
806078 2100. 00698393 819 01) 60 1)6 1818. 8০০৮ বঙ্গবাসীতে 
(২৭শে বণ, ১৩১২ সাল) বাহির হইয়াছিল,_-”বঙ্গের রঙ্গমঞ্চে বাঙ্গালীর 
ঘরের ছবি যে এতটা! পরিস্ফুট হইবে, দর্শকের হৃদয় যে এতট1 উদ্বেলিত 
হইবে, “বলিদান” অভিনয় দেখিবার পূর্বেবে আমর! তাহা স্বপ্েও ভাঁবি 
নাই।” শোভাবাজাব রাজবাটা হইতে প্রকাশিত্র .'সাহিত্য সংহি-া”য় 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৩৩ 


€ ৭ম খণ্ড, ৩য় সংখ্যা ) লিখিত হয়,_“ইছা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নাটক বাঙ্গালা 
ভাষায় অগ্যাপি প্রচারিত হইয়াছে বলিয়া আমাদের বিশ্বাস নাই।” 


স্িল্লাজ্কপেদ্দীলা 

“বলিদান' নাটকের পর গিরিশচন্দ্র “রাণাগ্রতাপ' নাটক লিখিতে 
প্রবৃন্ত হন। এই সময়ে শুন! গেল- স্টার থিয়েটারে স্বর্গীয় ডি, এল, রায়ের 
রাণাপ্রতাপ” রিহাঁরস্যালে পড়িয়াছে। গিরিশচন্দ্রের নাটক তখন 
সবেমাত্র ছুই অঙ্ক লেখা হইয়াছে । * সম্পূর্ণ করিয়া! রিহারস্যালে ফেপিতে 
বিলম্ব হইবে। এই জন্ত তিনি “রাণাপ্রতাপ” রচনার সঙ্কল্প পরিত্যাগ 
করিলেন। 'সাহিত্য”-সম্পাঁদক স্বর্গীয় স্থুরেশচন্দ্র সমাঁজপতি বহুদিন হইতে 
তাহাকে সিবাঁজনোৌল। নাটক লিখিবাঁর জন্য বিশেষরূপ অন্থরোধ কবিতে- 
ছিলেন। গিরিশচন্দ্র এসিয়াটিক সোসাইটির সভ্য ছিলেন, তিনি এই 
নাটক লিখিবার উদ্দেশ্যে তথা এবং অন্ঠান্ত স্থান হইতে তৎসাময়িক 
ইতিহাস আনাইয়। সিরাজ-চরিত্র অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করিলেন। 
রাশি রাশি পুস্তক অধ্যয়নের পর সিরাজনদৌলা লেখা আবস্ত হইল। 

সিরাঁজনদৌলাব বাল্যজীবন হইতে আরম্ভ করিয়া নাটক লিখিতে 
গেলে ছুইখানি পর্চাঙ্ক নাটক লেখ! প্রয়োজন। কিন্তু বঙ্গ-নাট্যশালার 
দর্শকগণের ধৈর্যাচ্যুতিৰ আশঙ্কায় তিনি একথানি নাটকেই সিরাজ-চরিত্র 
সমাপ্ত করিবার সঙ্কল্প করেন। কিন্তু এ সঙ্কল্প কার্যে পরিণত করিতে 
তাহাকে ৰিলক্ষণ বেগ পাইতে হইয়াছিল। ছুই তিনটা দৃশ্য অগ্রসর হয়, 
আর তাহা নিন্মমভাবে পরিত্যাগ করেন, এইরূপে ছুই তিনবারে 21০$এর 
পরিকল্পনা সুম্প্ই আকার ধারণ করিল, এবং লেখাঁও ভ্রুতগতি চলিতে 
লাগিল। কিন্তু তথাপিও প্রথম অঙ্ক সমাপ্ত করিতে এক পক্ষ বিলম্ব হয়। 


* এই দুই অন্ব পঞ্চম বর্ধের 'অর্চন।' মাসিক পত্রিকায় পর্বে প্রকাশিত হয়। 


৫৩৪ গিরিশচন্দ্র 


এই প্রথমাঙ্কে সিরাজনৌলার জীবনের প্রায় অর্ধেক ঘটন! সন্িঝিষ্ট হইয়াছে । 
বাকী কয়েক অঙ্কে এতিহাসিক চিত্রেব সঙ্গে সঙ্গে সিরাজ-চরিত্রেব ক্রম 
বিকাশ এবং তাঁহার মর্দাস্তিক পরিণাম গিরিশচন্দ্র যে ভাঁবে চিত্রিত 
করিয়াছেন, তাহ! দেখিলে বিস্মিত হইতে হয়। সিরাজেব স্বদেশ বাঁৎসলা, 
তাহার যৌবনস্থলভ চাপল্য, অনুতাপ এবং সর্বোপরি তাহা গারস্থ্য 
জীবনের প্রীতিময় চিত্র এবপ ভাবে অঙ্কিত হইয়াছে যে বাঙ্গীলাঁয় কোনও 
এঁতিহাসিক নাঁটকে তাহাঁব তুলন| নাই। সিরাজন্দৌলা! এঁতিহাঁসিক 
নাটক হইলেও নাটকীয় ঘটনাব যথাযথ সংযোগ এবং পরিপুষ্টিব জন্য 
গিরিশচন্ত্র জহরা ও কবিমচাঁচা এই ছুইটা কাল্পনিক চবিত্র নাটকেব অঙ্গে 
সন্নিবেশিত কবিয়াছেন। 
২৪শে ভাদ্র (১৩১২ সাল) মিনার্তী থিয়েটারে সিরাজন্দৌল! সর্বপ্রথম 

অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীব অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_ 

সিন্নাজদ্দৌল_্রহবেন্্নাথ ঘোষ (দানিবাবু), মীরজাফব খ|_. নীলমাধৰ চত্রবন্তী মীধণ 
্রানুটবিহারী মিত্র , সকতজঙ্গ, ভ্াীফটন ও মু'সালা-_এ্রীমন্মথনাথ পাল (হাছুবাবু), গ্লাজবলভ 
ও লছমন সিংহ-জ্ঞানকালী চট্টোপাধ্যায়, ব্াহূর্লভ ও মীঘকাসিম- _কুমুদনাথ মুখোপাধ্যাব, 
মোহনলাল- তায়কনাথ পালিত,জগৎশেঠ মহাতাব চাদ ও আমিক্নবেগ- প্রীনগেন্দ্রনাথ ঘে।ষ, 
জগৎশেঠ স্বরূপটাদ ও মী দাউদ-_গীদাতকড়ি গঙ্গোপাধ্যায, মাণিকঠ।দ ও বাসবিহাবী__ 
শ্রীপেন্্রনাথ ভট্টাচার্য, মীব মদন ও মহম্মদী বেগ_ মণীন্দরনাথ মণল (মণ্ট.বাবু), উমিটাদ__ 
এহবিদাস দত্ত, করিমচাচা গিবিশচন্দ্র ঘোষ,দানসা- _অর্ধেন্দুশেখব মুস্তফী,ক্লাইভ- শ্রীক্ষেত্র- 
মোহন মিত্র, ড্রেক ও কুট--্রীউপেন্দ্রনাথ বস।ক, হলওয়েল ও ওয়াটস্‌-_অটলবিহারী দাস, 
চেম্বার্স ও সিনফ্রে'--্রীত্রজেন্রনাথ চক্রবর্তী, ওয়ালস্‌ ও কিলপ্যাটি ক- শ্রীনির্মালচজ্জ 
গঙ্গোপাধ্যার, আলিবদ্দী-বেগম ও জহবা--শ্রীমতী তাবানুন্দরী, ঘমেটাবেশম ও ওয়াটস্‌-পত্তী 
- এীমতী স্থুধীরাবালা! (পটল ), আমিনা বেগম ও জোবেদী-_্রীমতী ভূষণকুমাবী (ছোট), 
লুৎফউন্লিসা-_নুশীলাবাল!, উন্মৎ জহর হৃবাসিনী ইত্যাদি। সঙ্গীত-শিক্ষক--শশীভূষণ 
বিশ্বাস ও ্রীতারাপদ বায়, নৃত্য-শিক্ষক-_ এসাতকড়ি গঙ্গোপাধ্যায়, বঙ্গভূমি-সক্জাকর-- 
স্ীকালীচরণ দাস। 


৫৩৬ গিরিশচন্দ্র 


অপবেশবাবু নাঁন! কারণে মিনার্তা থিয়েটার পরিত্যাগ করায় সিবাছ- 
দৌলার বিহারস্তাল-কাল হইতে গিরিশচন্দ্রের নাম ম্যানেজার বলিগ্গ 
বিজ্ঞাপিত হয়। 

অর্ধেন্দুবাবুর সহযোগিতায় “বলিদান+ নাটকের ন্যায় “সিবাঁজদ্দৌলা”ও 
নির্ধতভাবে অভিনীত হইয়াছিল। গিবিশচন্ত্র যেরূপ প্রধান প্রধান 
ভূমিকাগুলির শিক্ষাদাীনে ব্যাপৃত থাকিতেন_ অর্ধেন্দুবাবু সেইরূপ 
ছোঁটোখাটো ভূমিকাগুলির শিক্ষাদানে চরিত্রগুলি জীবন্ত কবিয়া দিতেন। 
সিবাঁজন্দৌলা নাটকে হিন্দু, মুসলমান, ফরাসী, ইংরাজ প্রভৃতি বিস্তব ছোট 
ছোট ভূমিকা আছে+__অর্দেন্দুবাবু অতি কৃতিত্বের সহিত সেগুলি 
ফুটাহিয়া দিয়াছিলেন। 

প্রত্যেক চবিত্রের অভিনয় সমালোচনার আমাদের স্থানাভাঁব, অথচ 
ধাহার কথা বাদ দেওয়া যাইবে, তীহা'র পক্ষে যথার্থই অবিচার কব! হইবে, 
এজন্ত কবিম চাঁচার ভূমিকায় গিরিশচন্দ্রের কেবল মাত্র একটী দৃশ্তাঁভিনয়েব 
কথা উল্লেখ করিয়া আমরা নিরস্ত হইলাম। সিরাজদ্দৌলাকে পলায়নেব 
সুযোগ প্রদানের নিমিত্ত কবিম চাঁচা যখন নবাবের সহিত পোষাক বদল 
করিলেন এবং নবাব প্রস্থান করিলে স্বয়ং নবাবের বেশে গমনকালীন 
পুনরায় পশ্চাঁৎ চাহিয়া পিরাজের উদ্দেশ্টে সিংহাসনকে তিনবার কুণিস 
কবিলেন- গিরিশচন্দ্রের ভক্তিকরণরস-মিশিত সেই নির্বাক অভিনয়' 
দর্শনে কেহই অস্র সংবরণ করিতে পাঁরিতেন না । 

“মিবাজদ্দোলা” নাট্যজগতে যুগগ্রবর্তন করিয়াছিল, এই নাঁটকেব 
উচ্চ গুশংসা-ধ্বনিতে সমস্ত বঙ্গদেশ ধ্বনিত হইয়া উঠিয়াছিল। ভাবত- 
বিখাত আালগঙ্চান্বব্রভিশক্ষ কংগ্রেস-উপলক্ষে কলিকাতায় 
আসিরা এই নাটকের অভিনয় দেখিতে আসেন। অভিনয়াস্তে পরম 
প্রীতি সহিত গিরিশচন্দ্র সহিত সাক্ষাৎ করিয়া তাঁহার যথেষ্ট সুখ্যাতি 


পঞ্চচত্বারংশ প:রচ্ছেদ ৫৩৭ 


করিয়। যান। ইতিপূর্বে নানা কারণে মিনার্তা থিয়েটার হাইকোর্ট হইতে 
প্রকাশ্ত নিলামে উঠে। গিরিশচন্দ্রের উৎসাহে মিনার্তার কর্তৃপক্ষগণ 
৫৯৪০৯ টাঁকায় উক্ত থিয়েটার খরিদ করিয়াছিলেন। এক সিরাজদৌলা 
অভিনয়েই এ বিপুল অর্থরাঁশির শীঘ্রই পূরণ হইয়া! যায়। 

১৯১১ খু ৮ই জানুয়াবী তাঁরিখে গতর্ণমেন্ট “সিরাজন্দৌল!” নাটকের 
অভিনয় ও প্রচার বন্ধ কবিয়৷ দেন। এ নিমিত্ত এতদ্সম্বন্ধে অধিক কিছুনা 
বলিয়৷ দুইজন প্রখ্যাতনাম! সিরাঁজ-চরিত্র-লেখকেব পত্র এবং কয়েকখানি 
সংবাদপত্রের মন্তব্য_উদ্ধত কবিলাম। 


সক্খবমমল্্রুজ্ স্ভ্র 


“গলানীব যুদ্ধ'-প্রণেত। কবিবর নবীনচন্ত্র সেন 'সিরাজন্দৌলা/ পাঠে 
গিরিশচন্ত্রকে ১১ নং ইয়র্ক বোড, রেঙ্গুন হইতে ১৯৯৬ খৃঃ, ২৫শে ফেব্রুয়াবী 
তাবিখে লিখিয়াছিলেন £__ 

“ভাই গিরিশ ! 

২০ বৎসর বয়সে “পলাশীর যুদ্ধ' লিখিতে আরম্ভ কবিয়াছিলাম। 
৬০ বংসব বয়সে তুমি “সিবাজন্দৌলা” লিখিয়াছ শুনিয়! তাহার একখানি 
আনাইয়া এই মাত্র পড়া শেষ করিয়াছি। তুমি আমার অপেক্ষা অধিক 
শক্তিশালী, আমার অপেক্ষা অধিক ভাগ্যবান। আমি যখন 'পলাশীর 
যুদ্ধ” লিখি; তখন সিরাজের শক্র-চিত্রিত আলেখ্যই আমাদেব একমাত্র 
অবলম্বন ছিল। শ্রীভগবাঁন তোমাকে আরও দীর্ঘজীবী করিয়া বঙ্গনাহিত্যের 
মুখ আরও উজ্জল করুন ! 

আমি নবযুবক সিরাজের পত্ীর মুখে শোক-সঙগীত প্রথম সংস্করণ 
“পলাশীর বুদ্ধে' দিয়াছিলাম। শোঁকের সময়ে সঙ্গীত মুখে আসে কি না 
বড় সন্দেহের কথ! বলিয়া! বঙ্কিমবাবু বলিয়াছিলেন। সেই জন্ত আমি 


৫৩৮ গিরিশচন্দ্র 


সঙ্গীত পরে উঠাইয়া দিয়াছিলীম। তুমি চিরদিন গৌঁয়ার। দেখিলাম, 
তুমি সেই সন্দিপ্ধ পথ অবলম্বন কবিয়াছ। 

তোমার গীতাবলীব' সঙ্গে তোমার জীবনী প্রকাশিত হইয়াছে দেখিয়া 
উহার একখণ্ডও পাঠাইতে গুরুদাঁস বাবুকে লিখিলাম। এই স্থদৃব প্রবাস 
হইতে ঈশ্ববেব কাছে প্রার্থনা কবি, তোমাৰ অদ্ভূত জীবন যেন সুখ- 
শাস্তিতে শেষ হয়! | শ্নেহাকাজ্জী-_শ্রীনবীনচন্দ্র সেন |” 


অক্ষসবালুল পত্র 


স্বনামখ্যাত ঁতিহামিক এবং অন্তান্ত এতিহাঁসিক গ্রন্থ-প্রণেত৷ শ্রীযুক্ত 
অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় সি-আই-ই, বাঁজলাহী, ঘোড়ামাবা হইতে 
১৯০৬ খৃঃ ৮ই ফেক্রয়াবী তাঁবিখে লিখিয়াছিলেন :__ 

“পবম শুভাশীর্বাদ বাশয়ঃ সন্ত ।-_ 

বাল্য-স্থুহৎ জলধবেব যোগে আপনার “সিবাঁজদ্দৌল!” নাটক পায়, 
তাহাব যৌগেই, এই কৃতজ্ঞতার চিহুম্বৰপ পত্র পাঠাইলাম। আমি 
অভিনয় দর্শন কবি নাই; তাহার কথা লোকমুখে শুনিয়াছি মাত্র। 
আঁমাব পক্ষে আপনার এই নাটকখানির সমালোচনা কবা শোভা পায় 
না) নচেৎ আমি সমালোচন| কবিতে পাঁরিতাম। ইতিহাস যাহ 
' বুঝাইবাঁর চেষ্টা কবিয়াছে, আপনি তাহাকেই প্রত্যক্ষবৎ ফুটাইয়া তুলিবার 
চেষ্টা করিয়াছেন। স্থানে স্থানে অনেক কথা বলিবাব ছিল; পুস্তক 
অভিনয়ের পূর্বের আমার সঙ্গে দেখ! হইলে, তাহার আলোচনা করিতাম; 
এখন অনাবশ্তক। সে সকল ছোট খাট বিষয় আমি ধরি না; মোটেব 
উপর আপনি যে ইতিহাসের মর্যাদা রক্ষা করিয়া নাটকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি 
কবিতে পারিয়াছেন, ইহাই আপনার রচনা প্রতিভার প্রচুর আত্মগ্রসাদ । 
ইতিহাঁস লিখিয়া সুখী হইতে পারি নাই;--লিখিতে লিখিতে অশ্রবিসর্জন 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৩৯ 


করিয়াছি। নাটক পড়িয়াও সুখী হইতে পারিলাম নাঃ পড়িতে পড়িতে 
অশ্র" বিসর্জন করিলাম। ভগবতী ভারতী আপনার লেখনীর উপর 
পুষ্পচন্দন বর্ষণ করুন। অলমতি বিস্তবেণ। 
চিরশুভাকাজ্কিনঃ-_শ্অক্ষয়কুমাব শন্মরণঃ ।৮ 
স্বিখ্যাত বাগী স্বর্গীয় স্থরেনরনাথ বন্যোপাধ্ায়-সম্পাদিত “বেলী, 
সংবাদপত্রে (৩র। ফেব্রুয়ারী, ১৯০৬) প্রকাশিত হইয়াছিল ₹__ 

কি জ % 100) 0010 0116 07871089010 000. 0136 1101াণ্য [০010৮ 
01 19 5£/27-%-7020/2 28 06861090 0 00001) ৪, 17101) ৪100. 
90. 971007106 [01909 11) 001 179:010109] 11691860719, 45 9, 01609 
107 019 8689 10 19 %9%/2/27/, 800. 2৮ 76001169100 10681, 
69191) 60 106970196 009 0159159 800. 0001016স 01087806019 
8109 6109 11690 20010011083 10088179110 1] 16. 605 

স্থবিখ্যাত “ছ্টস্ম্যান” সংবাদপত্রে ( ১৭ই ফেব্রুয়ারী, ১৯০৬) বাহিব 
হইয়াছিল :__ 

[016 901011080) 2 (1019 6108619 1089 10690 0187176 ১০2)- 
%-)925/4/5 0 3.0. 01)0905 101 0106 70856 059 000106105 জা1010 
01781)890, 8000988, 1[)9 8001)01 10100816 68598 019 087৮ ০ 
177% 0170৫) 01159 15 19109990680 07 1. 1. 111669 
8100 0139 19108100716 01091506918 819 76110189090. 85০৮ 

রায় বাহাুর শ্রীযুক্ত জলধর সেন তৎমম্পাদিত “বন্ুমতী” সংবাদপত্রে 
( ৫ই ফাল্গুন, ১৩১২ সাল ) লিখিয়াছিলেন £-_ 

« * * * কবিবর শ্রীযুক্ত গিরিশচন্দ্র ঘোষ মহাশয় “সিরাঁজদ্দৌলা” 
অবলম্বন করিয়া যে নাটক লিখিয়া অভিনয় করিতেছেন, তাহ সাহিত্যে 
চিরম্ীবী হৃইয়! থাঁকিবে। ইতিহাসের সিরাজন্দৌল! সেকালের মানুষ, তাহাকে 


৫৪০ গিরিশচন্দ্র 


এ কালের লোক ভাল করিয়া! বুঝিতে পারে নাই। নাঁটকের সিরাজ- 
'দৌলাকে সকলেই বুঝিতে পারিয়াছে। ধীহার! অভিনয় দর্শন করিয়াছেন, 
তাহারাই তাহা! মুক্তকণ্ঠে ত্বীকার করিতেছেন। ইতিহাস বড় গম্ভীর, বড় 
স্থসংযত, বড় শৃঙ্খলাবদ্ধ। নাটক সেরূপ নহে। তাহাতে সত্যের সহিত 
কল্পনা মিশাইয়া গিরিশবাবু আসলকথা ফুটাইয়৷ তুলিয়া, সিরাঁজদৌলাকে 
রক্তমাংসের মাগ্ষের মত লোক সমক্ষে ধ্াড় করাইয় দিয়াছেন। * * 
করিম চাঁচা! এবং তাঁহাঁব জহর! চাচী কবি-কল্পন! হইয়াও, ইতিহাস ধরিয়াই 
ফুটিয়! উঠিয়াছে। * * গিবিশবাবু ইতিহাসের মর্যাদা রঙ্গ! করিয়াছেন; 
-_ নিবস্কুশ অধিকারের দোহাই দিয়া, কালি ঢালিয়৷ ইতিহাস বিকৃত 
করেন নাই।” ইত্যাদি 

প্রবীণ সাহিত্যিক শ্রীযুক্ত জ্ঞানেন্ত্রনাথ দাস এম-এ মহাশয়, তাহাব 
“সময় সংবাদপত্রে ( ১৮ই ফাল্ন, ১৩১২ সাল ) লিখিয়াছিলেন £__ 

« * * *% অভিনয় দেখিয়া আমর অপর্ধ্যাপ্ত আনন্দলাভ করিয়াছি। 
সাহিত্য, ইতিহাস ও নাট্য, এই তিনের এমন উৎরুষ্ট সমবায় আমবা 
ইতিপূর্ব্র দেখি নাই। * * বাজ্যাঁভিষেকের পর দিরাজদ্দৌলাঁর অল্প- 
বয়ফত| জনিত মানসিক অস্থিরতামাত্র ছিল, তাঁহাঁব আর কোন দোঁষ ছিল 
না, ববং তিনি দয়ার্্, ক্ষমাণীল ও প্রজাহিতৈষী ছিলেন) কেবল শক্রপক্ষ 
এবং বিশ্বাসঘাতক বন্ধুবর্গ তাহাকে চারিদিক হইতে বাতিব্যস্ত করিয়! তাহার 
শোচনীয় পরিণাম সাধন করিয়াছিল। “সিরাজদ্দোলা” দেখিবার সময় পাশ্চাত্য 
নাট্য-রাজ্যেশ্বর সেক্সপীয়রের “দ্বিতীয় রিচার্ড নাটক আমাদের শ্বতি-পথে 
উদ্দিত হইয়াছিল। মেই নাঁট্যেও বিশ্বাসঘাতক আত্মীয়বর্গ ইলগ্ডের রাজা 
নিরীহ দ্বিতীয় রিচার্ডের রাজ্যগ্রাস ও হত্যা করিয়াছিল। কিস্ত তদপেক্গা 
গিরিশবাবুর কল্পনা অধিকতর মনোহর হইছে । তিনি যে এক হোঁসেন 
কুলীথার প্রতিহিংসা-পরায়ণা স্ত্রীরপে জহরার হবি করিীছেন, তাহা আতি 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৪১ 


বিচিন্ত ও ততনহিত মহা ভয্মানক হুইয়াছে। সংস্কত অলঙ্কার শাস্ত্রের 
নিয়ম ধরিলে জহরাকেই আলোচ্য নাট্যের নায়িকা বলিতে হয়। এই 
রমণীই সমস্ত ঘটনার অন্ততম মূল ও গুধান চালক। নাট্যের সর্বপ্রধান 
ব্যক্তি সিরাজন্দৌলাঁর অংশ এত স্বাভাবিক ও স্থন্দর ভাবে অভিনীত 
হইয়াছিল যে, অনেক সময়ে আমাদের ভ্রম হইয়াছিল যে বুঝি অভিনয়ের 
পরিবর্তে বা সত্য ঘটন! দেখিতেছি। বিশ্বাসঘাতকতা, মারামারি ও 
কাটাকাটার মধ্যে নবাব-মহিষী লুৎফউন্নিসাঁব সুন্দর কোমল অংশ অতি 
মনোৌবম হইয়াছিল। অন্তান্ত অংশগুলিও যথা-যোগ্য ভাবে অভিনীত 
হইয়াছিল । সঙ্গীত-প্রিয়দের জন্য কয়েকটা উত্তম গীতও ছিল ।% 


হ্াপান্নী শীড়াল্র লুজ্রস্পীভ 


“বলিদান' ও “সিবাজনোৌল!” নাটক রচনায়-_এই সময়ে গিবিশচন্দ্রের 
যশঃ প্রভা যেমন উজ্জলতব হইয়া! সমগ্র বঙ্গদেশকে উদ্ভাসিত কবিয়া তুলিতে 
ছিল, তেমনি অপরদিক হইতে অত্যধিক শাঁবীরিক ও মাঁনসিক পবিশ্রমে 
দুবস্ত হীপের গীড়া করালরূপ ধাবণ করিয়া কবির দেহে ধীবে ধীবে প্রবেশ 
লাঁভ কবিতেছিল। ভাদ্র মাসে (১৩১২ সাল) সিবাজন্দৌলা অভিনীত 
হয়। এই বৎসর হেমন্ত খতুব প্রারস্তে তিনি হাপানী পীড়ায় প্রথম 
অবক্রীন্ত হন। এই অসুস্থ অবস্থায়ও বড়দিনের নিমিত্ত তিনি 'বাসব, , 
রচনা! করিয়াছিলেন । 


শ্বাসক্প 


“বাসর'-__-আধ্যরাজ-মহিম!-কীন্তিতি একখানি গীতপ্রধান নাটক। 
রাঁজা বিক্রম্নদদিত্য সংক্রান্ত একটী উপকথ! 'অবলম্নে গ্রন্থথানি রচিত। 
রাঁজাঁব কর্তব্য, সতীর পতিভক্তি, ব্রাহ্মণের ধর্ম ও সত্যনিষ্ঠা ইত্যাদি 
প্রাচীন ভারতের গৌরধ-চিত্র ইহাতে উজ্জলবর্ণে চিত্রিত হইয়াছে, 


৫৪২ গিরিশচন্দ্র 


১১ই পৌষ (১৩১২ সাল) বড়দিন উপলক্ষে, এই নাটকখানি 
মিনার্ভা থিয়েটারে প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাতিনয় রজনীর অভিনেতা 
ও অভিনেত্রীগণ £-_ 

বিক্রমাদিত্য-_তায়কনাথ পালিত, মন্ত্রী__মণীন্্রনাথ মণ্ডল ( মণ্ট,বাবু ), গঙ্গাধর-_ 
খগেক্সনাথ সরকার, বিষুপদ-_স্রীব্রজেন্্রনাথ চক্রবর্তী, শুরধবজ--এনগেন্্রনাথ ঘোষ, 
অধ্যাপক ও নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ _নীলমাধব চক্রবর্তী, জগন্নাথ প্রীন্রেজ্্রনাথ ঘোষ (দানিৰাবু ), 
বিধাতাপুকষ- _অদ্ধেন্দুশেখর মুস্তফী, পুরোহিত প্রীঅতুলচন্ত্র গঙ্গোপাধ্যায, সন্যানী-__ 
শ্রীসত্োন্রনাথ দে, বাছ্কয়-__শ্রীহরিদাস দত্ত, কাণী ও যণঠী-_্রীমতী প্রকাশমণি, বিশ্বাবতী-_ 
সুণীলাবালা, ব্রাব্মণী-__শ্রীমতী তারাহুন্দরী, নুমতি_ শ্রীমতী শশীমুখী, সরহ্গতী- ্ীমতী 
ভূষণকুমাবী ( ছোট ), পুবোহিত পত্ী_-শ্রীমতী চপলাহুন্দবী, অধ্যাপক-পত্রী__নগেন্দ্বালা, 
সৃতিকার ঝি--নগেন্দ্রবালা (পটলেব দিদি) ইত্যাদি। সঙ্গীত-শিক্ষক- এীদেবকণ্ঠ 
বাগচি, নৃত্য-শিক্ষক__প্রীসাতকড়ি গঙ্গোপাধ্যায, বঙ্গতৃমি-সম্জ্বীকব-__প্রীকালীচবণ 
দাস। 

ইঁপানী পীড়ায় গিরিশচন্দ্র থিয়েটাবে আসিতে অক্ষম হওয়ায় নাট্যা- 
চাঁ্য অর্ধেন্দুশেখর ইহার শিঙ্ষ! প্রদান করেন। নাটকে যথেষ্ট হাস্যরস, 
এবং *বিক্রমাদ্দিত্য” ও «বিস্বাবতী, চরিত্রের বিশেষত্ব সত্বেও «বাসর, বঙ্গ- 
নাঁট্যশালা় স্থায়ী প্রভাব বিস্তাব করিতে পাবে নাই। 


হুত্গেশ্শিনন্কিন্টী 


গিরিশচন্দ্র কর্তৃক নাটকাঁকারে পরিবর্তিত হইয়া ন্যাসান্তাল থিয়েটারে 
“ুর্গেশনন্দিনী”র প্রথম অভিনয় হয়ঃ বিংশ পরিচ্ছেদে পাঠকগণ তাহা 
জাত আছেন। পাঁওুলিপি রক্ষিত ন! হওয়ায় গিরিশচন্দ্র পুনরায় ইহা 
নাট্যাকারে গঠিত করেন এবং আবশ্তক মত কয়েকটী নূতন দৃশ্ত এবং 
কয়েকখানি গানও ইহাতে সংযোজিত করিয়াছিলেন । 

২৯শে মাঁঘ (১৩১২ সাল) মিনার্ভা থিয়েটারে দুর্গেশনন্দিনী প্রথম 


পঞ্চচত্বীরিংশ পরিচ্ছেদ ৫৪৩ 


অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর গ্রধীন প্রধান অভিনেতা ও 
অভিনেত্রীগণ £-- 

বীষেন্্রসিংহ__গিরিশচন্্র ঘোষ, বিদ্যাগগিগজ- অর্দেন্দুশেখক় মুস্তফী, জগৎসিংহ__ 
তারকনাথ পালিত, ওসমান- প্রীহুয়েন্্রনাথ ঘোষ (দানিবাবু), কতলু খা-_মণীন্দ্রনাথ 
মগুল (মণ্ট,বাবু), অভিয়াম স্বামী _নীলমাধব চক্রবর্তী, তিলোত্বমা-_গ্রীমতী প্রকাশমণি 
(২য় রজনী হইতে সুশীলাবাল! ), বিমলা-_তিনকড়ি দাসী, আয়া _এ্রীমতী তারানুন্দবী, 
আসমানি-_ শ্রীমতী চপলাহুন্দরী ইত্যাদি । 


গিবিশচন্ত্র যেরূপ নিপুণতার সহিত দুর্গেশনন্দিনীর চরিব্রগুলি নাটকে 
ফুটাইয়! ছিলেন, স্বনাম প্রসিদ্ধ অভিনেতা! ও অভিনেত্রীগণ কর্তৃক অভিনীত 
হওয়ায় তাহার অভিনয়ও সেইরূপ উৎকৃষ্ট হইয়াছিল । বীরেন্্রসিংহ-_ 
স্বয়ং গিবিশচন্দ্র__বধ্যভূমে ক্ষতিয়োচিত তেজ এবং গর্ষেব মৃত্যু আলিঙ্গন__ 
একটী দেখিবার জিনিস। অর্ধেন্দুধাবু_আদল কি নকল বিচ্যাদদিগ্‌- 
গজ-_মভিনয়ে তাহা নির্ণয় করা কঠিন হইয়াছিল। বিশেষ আহাবে 
বসিধ৷ আসমাঁনির সমক্ষে তাহার জলপানেব ভর্গি-গলনালি সঞ্চালনেব 
অভিনয় এত স্বাভাবিক হইয়াছিল-_ঘে তাহা প্রশংসার অতীত । বঞ্ধিমচন্্ 
বিমলাব চরিত্র যেরূপ পরিকল্পনা কবিয়াছিলেন, তিনকড়িব অভিনয়- 
চাতুণ্যে সেই চিন্রই পরিশ্ফুট হুইয়াছিল। জগতসিংহ, অভিরাম স্বামী 
তিলোত্তমা ও আসমানির ভূমিকাভিনয়েও কৃতিত্ব প্রকাশ পাইয়াছিল। 
কিন্তু সর্বাপেক্ষা গৌরবলাঁভ করিয়াছিলেন-_নুরেন্্রবাবু এবং শ্রীমতী 
তাবান্ন্দরী। ওসমান ও আয়েষার ভূমিকায় ইহীরা উভয়ে যেরূপ 
সুক্কলা-জ্ঞানের পরিচয় দিয়াছিলেন, তাহা অতুলনীয় । এখনও পর্ধ্ত্ত 
“দুর্গেশনন্দিনী” অভিনয়ে ইহাদের নাম বিজ্ঞাপিত হইলে রঙ্গালয়ে 
'আশাতীত দর্শক সমাগম হয়। গিরিশচন্দ্র কর্তৃক নাটকাকারে গঠিত 
এই দুর্গেশনন্দিনীর সকল থিয়েটারেই অভিনয় হইয়া থাকে । একখানি 
গীত নিয়ে উদ্ধত করিলাম । 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৪৫ 


জগৎসিংহেব উদ্দেশে আয়েষা £-_ 
্‌ যার ছবি দিবানিশি, যতনে হৃদয়ে রাখো, 
আপন ভুলিয়া মন, তার সুখে সুখী থাকে । 
করিধাছ প্রেমদান, চাহনি তো! প্রতিদান, 
তবে কেন হীনপ্রাণ, সলিলে নয়ন ঢাকো। 
দেখিতে নে মুখে হাসি, সতত তুমি প্রয়াশী, 
হ'য়ে তাবি অভিলাষী, সাধে বাদ সেধে৷ নাকে | 
সীল্রক্ধনিস 
“সিরাজদ্দৌলা অভিনয়ে আশাতীত কৃতকার্যাতা লাঁভ কবিয়া 
গিরিশচন্দ্র পুনবায় “মীরকাসিম” এরতিহাসিক নাটক রচনায় প্রবৃত্ত হন। 
অষ্টাবিংশ পবিচ্ছেদে লিখিত হইয়াছে, _“সিরাজন্দৌলা, মীরকাসিম, 
ছত্রপতি শিবাজী প্রভৃতি প্রত প্রতিহাসিক নাটক বহুকাল পবে বচিত 
হয়। যথাসময়ে তাহার আলোচনা করিব।”-_বাস্তবিক ইতিহাস 
অক্ষপ্ন বাখিয়। এই তিনখানি নাটক রচনায় তিনি বথাসাধ্য চেষ্টা 
পাইয়াছিলেন, এবং তাহার পরিশ্রমও সার্থক হইয়াছিল। সিরাজদ্দৌলা 
রচনাব পর হইতেই স্বদেশী যুগে প্রবর্তন। এই যুগে মীরকাপিম লিখিত 
হওযাঁর বহুল পরিমাণে ব্বদেশীভাব ইহাতে প্রতিফলিত হইয়াছিল। 
“২বা! আধাঁত (১৩১৩ সাল) মীরকাসিম মিনার্তা থিয়েটারে প্রথম । 
অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_ 
মীরজাফব*_-গিরিশচন্ত্র ঘোষ,মীবকাসিম_ শ্রীহুরেন্্রনাথ ঘোষ (দানি বাবু), স্থজাউদ্দৌল! 
€ লাল সিং__মণীন্দ্রনাথ মণ্ডল (মণ্ট,বাবু) , সাহ আলম ও আমিয়ট-_খ, 7330061195 
(75150. ), আলী ইব্রাহিম-__তাধকনাধ পালিত. সামসেরউদ্দিন ও ডাক্তার ফুলাবটন-_ 
মন্মথনাথ পান (হাঁছু বাবু), তকী খ|- এ্ীনগেন্দ্রনাথ ঘোষ, মহম্মদ আসীন- শ্রীউপেন্স- 
নাথ বদাক, হায়বতুদ্রা ও আরাব আলী-শ্রীজীবনকৃঞ্ণ পাল, ফৌজদার-দূত- শ্রীননিলাল 
বন্দ্যোপাধ্যায়, জগৎশেঠ মহাতাব চাদ ও সমক --প্ডিত প্রহরিভূষণ ভট্টাচার্য, জগৎশেঠ 


৩৫ 


৫৪৬ গিরিশচন্দ্র 


স্বরূপটাদ-_ প্রীনুটবিহারী মিত্র ; রায়দুর্লভ/কৃক্চন্র ও সলিমান--জানফালী চট্টোপাধ্যায়, 
যাজবললত-ও মহম্মদ ইসাখ-_পান্নালাল সরকার, রামনারায়ণ ও আলম খা-_ প্রীউপেন্্রনাথ 
ভট্টাচার্য, নন্দকুমাব-__শ্রীসাতকডি গঙ্গোপাধ্যায়, ভ্যান্সিটার্ট--অটলবিহারী দাস ; হলওযেল, 
হে ও মেজর আডাম্দ- অর্দধেন্দুশেখয় মুস্তফী, হেষ্টিংস-গ্র্তী প্রকাশমণি ; ইলিস, 
ব্যাটসন ও মন্যো- ্রীক্ষেতরমোহন মিত্র, মাঝি-_মন্মথনাথ|বন্থ, কেন্ড ও জোন্দ- প্রী-্রজেন্দ- 
নাথ চক্রবত্তী, জন কার্ণাক- এীসত্যন্দ্রনাথ দে, গুবগিন খা _খগেন্্রনাথ সরকাব, খোজা 
পির শ্রীহরিদাস দত্ত, খোজা! বাজিদ ও জাফর খ--্রনির্মলচন্ত্র গঙ্গোপাধ্যায়, মণিবেগম 
- শ্রীমতী সুধীধাবাল! (পটল), বেগম- _স্শীলাবাল1, তাঝ়া-_তিনকড়ি দাসী ইত্যাদি । 
শিক্ষক- গিবিশচন্দ্র ঘোষ ও অর্দেন্দুশেখর মুস্তফী। সঙ্গীত-শিক্ষক__এীতাবাপদ বাষ। 
সিরাজদৌলার সায় মীরকাসিমের অভিনয়ও সর্ববাঙহুন্মর হইয়াছিল । 
এই ছুইখানি নাটকই গিরিশচন্দ্র শেষ জীবনের বিজয়-বৈজযন্তী | 
নবাব সিবাজন্দোলা1 ও নবাব মীরকাসিমের পতন এবং বঙ্গে ইংবাজ- 
রাঁজশ্রীর প্রথম অত্যুরয়ের ইতিহাঁস এই নাটক ছুইথানিতে যেবপ 
পরিস্ফুট--তৎসঙ্গে নাট্যসৌন্ধ্যও সেইরূপ পরিপুষ্ট। মীতকাঁসিম 
নাটক একাদিক্রমে সাত মাস কাঁল ধরিয়া প্রত্যেক শনিবারে মিনার্ভায় 
অভিনীত হইয়াছিল, অথচ উহা কাহারও নিকট আদৌ পুরাতন হয় 
নাই। দর্শক সমাগমে ইহা সিরাজদ্দৌলাকেও অতিক্রম করে। এই 
বৎসর মিনার্তা থিয়েটারের আর লক্ষাধিক টাক! হইয়াছিল । 
অভিনেত্রী-সংসর্গে বঙ্গনাট্যশাল! দুষিত বলিয়া! যে সম্প্রদাক্ঈ-বিশেষ 
থিয্নেটারের নামে নাসিকা কুঞ্িত করিতেন, তীহার্দের মধ্যে বছ সন্তান্ত 
ব্যক্তিই এই ছুই নাটকের অভিনয় দেখিবার জন্য থিয়েটারে পদার্পণ করেন। 
১৯১১ খ্রীঃ, ১৮ই জানুয়ারী তারিখে গভণমেন্ট কর্তৃক মীর়কাসিম 
নাটকের অভিনয় ও প্রচার বন্ধ হয়। এনিমিত্ত এতদ্সহ্ন্ধে আমরা 
বিশদ সমালোচনা না করিয়া! তৎসাময়িক কয়েকখানি সংবাদপত্রের মন্তব্য 


মা উদ্ধৃত করিলাম £--- 


পঞ্চচত্বাব্িংশ পরিচ্ছেদ ৫৪৭ 


“8100 011181) 01800 015089+8 709দা 13190011089] 0:810)8) 
41117 7889100”) 1020) ৪৪ [006 00 009 00808 0£ 609 14109759 
]1)6806 10: 009 9786 01005 00. 98010871886 1188 096], ৪ 
00970709108] 9000989১ 1১06] 2010) 0109 10180010010 8700 11691%7 
000168 0৫ ঘ16. 11109 ঠ109168008 19911000108 £0110790. 09 
809988100, ০0? 1017. [0986100 %০ 006 (0101:906১ 006 ৪69100008 1816 
0186 005 20167 0080. অ16]) 009:10886 130019 00100108707 10: 009 
300699602, 9 009 20012900908 100086198 900 006 ৪৪008 
80808591008 7680:৮90, ৮০ 0 1১০01) ৪1098 60 0, 61617 000117089 
1)958) 161) 191097081)19 0061) 2100. 00708007010798 ৪7৮) 19961) 
২0:৮০ 07 990£915 0980656 01%7-দ112176 109 01999 
81000009 7201) 01618 900. 902201919% 01089906928, ৪1] ০ 00912) 
৩7 ৪111011 0)8181)81190. 60 70:00096 80 63:06119176 8806 
90806, া1))01) 996 77086 899 60 101] 1981586 16. 85০৮” 
13670081999 23 20 গ 0109 1906. 

“* * গিরিশবাবু তাহার পরিণত বয়সের সকল শক্তি ও আগ্রহ, 
তাহার অদম্য উৎসাহ ও অনন্তসাধারণ লিপিকুশলতার সহায়তায় এই 
নাটক থানিকে তাহার ব্বকীয় কীতিন্তস্তে পরিণত করিয়াছেন ; এই স্তম্ভের 
বনিয়াদ হইতে চূড়া পর্যস্ত শ্বদেশ-প্রেমের পাঁকা নোনায় গঠিত।& * 
গিরিশবাবুর রচনা-কৌশলে মুগ্ধ হইয়াছি, অভিনয়ের পারিপা্যে 
পরিতৃপ্ত হইয়াছি। ইতিহাসে পাঠ করিয়াছি, মীরকাসিম প্রজাহিতৈষী 
নরপতি ছিলেন, ইংরাজবণিকের কর্মচারীর হন্তের ক্রীড়াপুত্তলিকা 
হুইয়া তিনি নবাবী করিতে ইচ্ছুক ছিলেন না, তাই তিনি ইংরাজের সঙ্গে 
লড়িয়াছিলেন, হটিয়াছিলেন ও শেষে সর্বন্ব-বঞ্চিত হইয়! নিরাশ্রয় অনাথের 
স্যায় মরিয়াছিলেন। এই কক্কালটুকু অবলম্বন করিয়া এমন একখানি 
বিচিত্র ও বিপুল নাটক গিরিশবাধু ভিন্ন অন্য কেহ রচনা করিতে পাঁবিবেন 
কি নাজানি না। ইত্যার্দি*___বন্থুমতী, ৩*শে আধাঁঢ়, ১৩১৩ সাল। 


৫৪৮ গিরিশচন্দ্র 


"109 95099010610 19191) 00801751 ঢা) 13101 1010 7088860)+ 
7183 79990. 88220 &6 ঠ8৪ [.01)11700: 71)9805 8881969 20860119117 
11) 91110900106 6119 601)071006106 ০৫ 61118 [01609, া1)101) 06815 
101) 00 10010970763 0 011৪ ঠ0100100003 195110৭. 0796 101100৫ 
106 890985100. 07 111 108339]0 6০0 0106 61001078800. 6179 86160- 
00৪ 10110 01906 0110 70167 1090. ৮101) 6109 [7890 10019 00231) 
10: 61৮5 [0:0906100 01 10019100009 100090199. 11072 ৪০6106 9) 
00100 799.01095 ৪, 10161) 809 [970 01 93091190085 800 (109, 
10070 ৪0019009 668616190. 01091] 810009019%0100 |, % 00056 01010018- 
91016 171801)07,--3 09069810080, 1700 1 0%910)1091 1901. 


হ্যাক্সসনাক্কা-জ্যাম্রষ্ল। 

১৩১৩ সালেব হেমস্তাগমে অর্থাৎ কাত্তিক মাসেব প্রারস্তেই গিরিশ- 
চন্দ্র পুনরায় হাঁপানী গীড়ায় আক্রান্ত হন। শীতকালে দারুণ যন্ত্রণায় 
যখন তিনি গৃহে আবদ্ধ সেই সময়ে বড়দিনের কিয়ন্দিবস পূর্বের 
মিনার্ভাব কর্তপক্ষগণ একদিন তাহাকে দেখিতে আসিয়া ছুঃখ 
প্রকাশ করিয়া বলিলেন, “মহাশয় সব থিয়েটাবে নূতন 
বই হইতেছে, আঁপনি পীড়িত, আমধা কিছুই কবিতে পারিলাম ন1।৮ 
সেই কগ্ন অবস্থায় গিরিশচন্দ্র বলিলেন, “ভাঁবিবেন না, যাহা! হোক কিছু 
একটা কবিয়া দিব?” সেই দ্দিনই তিনি স্ুপ্রসিদ্ধ বাসী নাট্যকাব 
মলিয়ারের গ্রন্থাবলী পড়িতে আঁবন্ত কবিলেন এবং কয়েক দ্বিবসের মধ্যেই 
মলিয়াবের *]4 40001 11606910” অবলম্বনে য্যায়স-কা-ত্যায়সা” 
প্রহসন রচনা করিয়া বড়দিনেব নৃতন প্রহসনের অভাব পূর্ণ করিলেন । * 


* গিবিশচন্দ্েষ প্রদশিত পথ অনুসরণ কবিয়। তৎপরে সুপ্রসিদ্ধ গীতিনাটাকাৰ শ্বগীয 
অতুলকৃষ্ণ মিত্র মহাশর “মলিয়াবেব' গ্রস্থাবলম্বনে তুফানী, ঠিকে ভুল, বঙ্গরাজ প্রভৃতি 
অনেকগুলি গীতিনাট্য ও প্রহ্ন বচন! করেন এবং তাহা হখ্যাতিব সহিত মিনার্তায 
অভিনীত হয়। 


পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৪৯ 


১৭ই পৌষ (১৩১৩ সাল) মিনার্ভা থিয়েটাবে 'য্যায়সাঁকা- 
ত্যায়সা” প্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতা ও 
'অভিনেত্রীগণ £_ 
হাক়াধন- অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী, রসিক- এহয়েন্্রনাথ দোষ (দানি বাবু, সনাতন_- 
অটলবিহাধী দাস, মাণিক-_প্রীনৃপেন্ত্রচন্দ্র বন্গ, মিঃ নন্দী- শ্রীক্ষেত্রমোহন মিত্র, মিঃ ঢোল 
_ শ্রীহত্বিদাস দত্ত, হোমিওপ্যাথি ডাক্তাব__প্রীদেবকণ্ঠ বাগচি, রতনমাল!-_শ্রীমতী হেমস্ত- 
কুমাধী, গরব- _হৃশীলাবালা ইত্যাদি । শিক্ষক-_গিবিশচন্ত্র ঘোষ ও অর্দেন্দুশেখস্ব মুস্তফী, 
সঙ্গীত-শিক্ষক-_ত্রীদেবকণঠ বাগচি, নৃত্য-শিক্ষক- শ্রীনৃপেন্্রচন্্র বনু, রঙ্গভূমি-সজ্জাকব_ 
ঞকালীচন্বণ দাস, বংশীবাদক ও এ্রক্যতান বাদনাধ্যক্ষ-_শ্ীঅমৃতল।ল যোব। 
প্রহসনখানি দর্শকমণ্ডলীর বিলক্ষণ হাদয়গ্রাহী হইয়াছিল, এ নিমিত্ত 
'য্যায়সা-কা-ত্যায়সা” বহুদিন পধ্যস্ত রঙ্গমঞ্চ অধিকার করিয়াছিল । প্রায় 
সকল থিয়েটারেই ইহার অভিনন্ন হইয়া থাকে । গ্রন্থখানি গিরিশচন্দ্র তাহার 
পিতৃম্বসেয় শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ বন্থুর নামে উৎসর্গীরুৃত করেন । যথা £__ 
"ন্নেহাম্পদ শ্রামান্‌ দেবেন্দ্রনাথ বস । 
ভায়া _তোমার উদ্যোগ ও সাহায্য ব্যতীত শয্যঁশায়ী অবস্থায় এ 
প্রহসনখানি লিখিতে পারিতাঁম না । তুমি চিরদিনই আমার সহায়, এই 
ক্র গ্রন্থখানি তোমার নামে উৎসর্গীকৃত করিয়া আমি যে তৃপ্ত, তাহা 
নহে তবে তোমারই সাহায্যে এই গ্রন্থখানি রচিত হইয়াছে, এ নিমিত্ত 
ইহাঁর সহিত তোমার নাম জড়িত থাকে, ইহাই আমার অভিগ্রার। ইতি 
আঁীর্বাদক--শ্রাগিরিশচন্দ্র ঘোষ ।” 


ষড়চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 


০ক্গাহিল্দুল্জে পিন্রিস্পচজুক্র 


বসম্তাগমে রোগমুক্ত হইয়া গিরিশচন্দ্র সুপ্রসিদ্ধ সংবাদপত্র-সম্পাদক 
পণ্ডিত পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি কয়েকটা স্থহাদদের উৎসাহে 
“মহম্মদ সা” ( অর্থাৎ নাঁদ্ির সাঁব ভারত আক্রমণ ) নাটক লিখিতে আবন্ত 
করেন; কিন্তু সিরাজন্দৌলার সহিত কল্লিত নাটকের ঘটনা! ও চরিত্রগত 
বিস্তব সৌসাদৃশ্য দেখিয়া প্রথম দুই অঙ্ক রচনার পর, উহা! পরিত্যাগ 
করেন এবং "ছত্রপতি শিবাঁজী” নাটক লিখিতে প্রবৃত্ত হন। নাটক রচন৷ 
শেষ হইলে জ্যৈষ্ঠ মাস (১৩১৪ সাল) হইতে মিনার্তা থিয়েটারে তাহার 
শিক্ষাদান-কাধ্য আরম্ভ হয়। 

এই বৎসরের প্রারস্তে বৈশাখমাসে নদীয়া কুড়,লগাছির বিস্যোৎসাহী 
জমীদার, হাইকোর্টের উকীল, পণ্ডিতবর প্রসন্নকুমাঁর রাঁয় এম.এ, বি-এল, 
মহাশয়ের জোষ্ঠ পুত্র বাবু শরৎকুমার রায় বি-এ, এক লক্ষ আট হাজার 
টাকার প্রকাশ্ত নিলামে স্বর্গীয় গোপাললাল শীলের এমারেন্ড থিয়েটার 
ক্রয় করেন। ইতিপূর্বে এই থিয়েটার-বাটা ভাড়া লইয়! ব্লাসিক থিয়েটার, 
সম্প্রদায় অভিনয় করিতেন। শরতবাবু থিয়েটার কিনিয়৷ কাধ্য সুশৃঙ্খলার 
নিমিত্ত একজন উপযুক্ত অধ্যক্ষের বিশেষরূপ অভাব অনুভব করিতে 
লাগিলেন। তাহার পিতা প্রসন্নবাঁবু বহুদর্শী ও বিচক্ষণ ছিলেন। তিনি 
শরৎবাবুব নিকট গিরিশচন্দ্রের নাম উল্লেখ করিয়া বলেন,_্যদ্দি আদর্শ 
নাট্যশালা স্থাপন করিতে চাও, তাহা হইলে তাহার স্তায় উপযুক্ত ব্যক্তির 
হস্তে কাঁধ্যভার অর্পণ কর।” উদ্ঠেগণীল শরৎবাবু দশ হাজার টাকা 


ষড়চত্বায়িংশ পরিচ্ছেদ ৫৫১ 


বোনাস ও চারিশত টাক। মাসিক বেতন দিয়া গিরিশচন্দ্রকে অধ্যক্ষ 
পদে নিযুক্ত করিলেন। নব প্রতিঠিত সম্প্রদায়ের নাম হইল- “কোহিনুর 
থিয়েটার” । 

আঘাঢ় মাসের শেষে গিরিশচন্দ্র কার্ম্যভার গ্রহণ করেন । তিনি যখন 
যোগদান করিলেন, তখন 
বাটার সংস্কারকাধ্যও শেষ 
হয় নাঁই চ দৃশ্যপ ট, 
পোষধাক-পরিচ্ছদ, সাজ- 
সব্জাম প্রভৃতি সকলই 
অভাব। স্থবিখ্যাত 
নাট্যকার পণ্ডিত স্বর্গীয় 
ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যা- 
বিনোদ মহাশয় “াদবিবি, 
নাটক লিখিতেছেন, 
তাহারও শেষাঙ্ক তখন 
অসম্পূর্ণ । গিরিশচন্দ্র 
বিপুল উদ্যমে ও পুঙ্থানু- 
পুঙখ পর্যবেক্ষণে অনিয়ম- 
প্রক্ষিপ্ত সকল কাধ্য 
শৃঙ্খলাবন্ধ হইয়! উঠিল । 
কাধ্যের সত্বরতা বশতঃ 
াদ বিবির বাকী অংশ 
তিনি স্বয়ং লিখিয়। 
'ভিনয়োঁপবোগী করিয়া পণ্ডিত ক্ষীরোদপ্রসাদ বিষ্াবিনোদ 





৫৫২ গিরিশচন্দ্র 


লইলেন এবং দ্িবারাত্র বিহারন্তাল দিয়া সম্প্রদায়কে সুশিক্ষিত কবিয়া 
তুলিলেন। বঙ্গনাট্যশালাব আদি ই্রেজ-ম্যানেজার ধর্দাীস বাবু, 
গিরিশচন্দ্রেব উপদেশ ও সাহায্যে দ্বিগুণ উৎসাহে বাটাব সংস্কার-কার্যে 
মনোনিবেশ করিলেন,__মকলদিকেরই সুব্যবস্থা হইল । সম্প্রদায়স্থ সকলেই 
গিবিশচন্দ্রেব উৎসাহে উৎসাহান্বিত । যে কোন উপায়ে দিবারাত্র পবিশ্রম 
করিয়া শ্রাবণ মাসের মধ্যেই থিয়েটার খুলিতে হইবে, কারণ_ কোনও শুভ 
কার্য্যান্ষ্ঠান ভাদ্রমাসে হিন্দুব পক্ষে নিষিদ্ধ । আশ্বিন'মাস পথ্যন্ত অপেক্ষা 
করিতে হইলে স্বস্বাধিকরীকে বিস্তব ক্ষতি স্বীকাব কবিতে হয়। কিন্ত 
কর্্মবীর গিরিশচন্দ্রের নিকট কোন কাধ্যই অসাধ্য নহে, আহাব-নিদ্রা 
পরিত্যাগ কবিয়৷ পলিতকেশ বৃদ্ধ,যুবকের স্ায় অহোরাত্র পবিশ্রম করিতেছেন 
দেখিয়া সকলেই পরমোৎসাহে স্ব স্ব কাধ্য স্ুচারুরূপে সম্পন্ন করিতে 
লাগিলেন । ২৬শে শ্রাবণ, ববিবার,কোহিনুর?থিয়েটার মহাসমারোহে খোলা 
হইল। ক্ষীরোদবাবুব প্টাদ বিবি” এই রান্রে প্রথম অভিনীত হয়। 
নুবিখ্যাত প্রফেসব স্বগাঁয় দক্ষিণাচরণ সেন মহাশয় গিরিশচন্দ্রের উৎসাহে, 
তাহাব সম্প্রদায় লইয়! চাদবিখি নাটকের গীতগুলি সুদক্ষতাঁর সহিত 
ক্যতাঁন বাদনের সহিত গঠিত করিয়! বঙ্গনাট্যশালার দর্শকগণকে নৃতনত্ব 
প্রদর্শনে মুগ্ধ করিয়াছিলেন । প্রথম অভিনয় রজনীতে ২২৫ টাকার 
: টিকিট বিক্রয় হইয়াছিল । 


চক্রশভি ন্পিবাভ্লী 
এই সময়ে ৩২শে শ্রাবণ (১৩১৪ সাল) গিরিশচন্ত্রে “ছত্রপতি 
শিবাজী” মিনার্ভ| থিয়েটারে প্রথম অভিনীত হয়। গিরিশচন্দ্র তৃতীয় অঙ্ক 


পর্য্যন্ত এই নাটকের শিক্ষাদান করিয়া! কোহিন্থরে যোগদান করিয়াছিলেন । 
প্রথিতযশ। স্বর্গীয় অমরেন্দ্রনাথ দত্ত তৎপরে মিনার্ভার অধ্যক্ষপদ গ্রহণ 


ষড়চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৫৩ 


করিয়৷ শেষ.ছুই অঙ্কের অভিনয়-শিক্ষা! সম্পূর্ণ করেন। প্রথমাভিনয় বজনীর 
অভিনেত৷ ও অভিনেত্রীগণ ১--- 

শিবাজী- অময়েন্দ্রনাথ দত্ত, দাদোজী কোওদেব ও সায়েন্ত। খা-_নীলমাধব চক্রবস্তী, 
বামদাস স্বামী_-এনগেন্্রনাথ ঘোষ, শস্তাজী- গ্ীমতী শশীমুখী (শিশু) ও শ্রীধীবেন্্রনাথ 
পিংহ ( মুবা ), তানাজী--্রীপ্রিয়নাথ ঘোষ, গঙ্গাজী-__গ্রীনৃপেন্দ্রজ্জ বনু ; ফেবঙ্গজী, খোবান 
খ। ও পোলাদ খ-_ সত্যেন্দ্রনাথ দে, মোরোপস্ত- শ্রীরামকালী বন্দ্যোপাধ্যায়, সুধ্যাজী-_ 
এীদিতাংশুজ্যোতি মজুমদাব (বকু বাবু), আফজল খাব, 1321760166 ( 2১119065010, 
শন্তাজী মোহিতে, পুজারী ও জমাদার- _অক্ষষকুমার চক্রবর্তী, মল্লিক্জী ও মুলান! আহম্মদ 
শ্রীহরিদাস দত্ত, কৃষ্াজীপন্ত-_অনুকুলচন্দ্র বটব্যাল ( আ্যাঙ্গাস ), আওবঙগজেব_ তাবকনাথ 
পালিত, জাফৰ খা _-সতীশচন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, দিলির খাঁ প্রীঅহীন্দ্নাথ দে, ফ্ামসিংহ ও 
উদযভ[নু-্রীহীবালাল চট্টোপাধ্যাং, আবুল ফতে খাঁ শ্রীনিম্লচন্ত্র গঙ্গোপাধ্যায়, 
জিজাবাই-_প্রীমতী প্রকাশমণি, সইবাই-_ঞ্রীমতী কুমুমকুমাবী, পুতলাবাই-_হুশীলাবালা, 
লগ্্ীবাই_ শ্রীমতী স্ুধীবাবাল! ( পটল), বিজাপুষ-বেগম- প্রীমতী পান্নাহগন্দরী, মুলান! 
আহম্মদেব পুত্রবধূ বীমতী বাক! বাণী ইত্যাদি। সঙ্গীত-শিক্ষক- এীদেবক্ঠ ৰাগচি ও 
ভ্রীতাবাপদ বাধ, নৃত্য-শিক্ষক- এরীনৃপেন্দরচ্দ্র বনু, বঙ্গতূমি-সঙ্জ্।কর--শ্ীকালীচরণ দ।স। 


মীরকা'সিমের” স্তাঁয় ছত্রপতি শিবাজী*ও-_স্বদেশীযুগে রচিত হওয়ায় 
বঙ্গরঙ্গমঞ্চের উপর অসামান্ প্রভাব বিস্তাব করিয়াছিল। তিন সপ্তাহের 
পর ২৮শে ভান্র হইতে কোহিনুর থিয়েটারেও “ছত্রপতি শিবাজীর” অভিনয় 
আরম্ভ হয়। উভয় থিয়েটারে এই নাটকের অভিনয় লইয়! নাট্যজগতে 
তুমুল আন্দোলন উপস্থিত হইয়াছিল। কোহিহ্ুরে আওরঙ্গজেব, শিবাজী, 
গঙ্গাজী, জিজিবাই, লক্ষমীবাই প্রভৃতি ভূমিক! গ্রহণে গিরিশচন্ত্র, দানিবাধুঃ 
াছ্বাঝু তিনকড়ি দাসী, শ্রীমতী তারানুন্দরী প্রভৃতি রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ 
হওয়ায় অভিনয় ষে অতি উৎকৃষ্ট হইয়াছিল, তাহা বলাই বাহুল্য । 
প্রতিযোগিতারর--অভিনয়-নৈপুণ্য-প্রদর্শনে-উভয় থির়েটারই নুযনাধিক 
স্ুখ্যাতিলাভ করিয়াছিল। সে সময়ে এমন একখানি সংবাদপত্র. ছিল না, 


৫৫৪ গিরিশচন্দ্র 


যাহার স্তস্ত ছত্রপতির সুখ্যাতিতে পরিপূর্ণ না হুইয়াছিল। উভর 
থিয়েটারের অভিনয় তুলনায় 'বঙ্গবাসী'তে একটী দীর্ঘ সমালো৪ন! বাহির 
হইয়াছিল। তন্মধ্যে গিরিশচন্ছের “আওরঙ্গজেব+__ভূমিকাঁভিনয় সঙ্ন্ধে 
এক ছত্র এই,_-“তাঁহারই তুলনা! তিনি এ মহীমণ্ডলে |” 

১৯১১ খৃঃ, জানুয়ারী মাসে গভর্ণমে্ট কর্তৃক “ছত্রপতি শিবাজী”রও 
অভিনয় এবং প্রচাব নিষিদ্ধ হয়। এ নিমিত্ত এ নাটক সম্বন্ধেও আমরা 
কোনও আলোচনা করিব না । কেবল শিবাজীর তৃতীয়! মহিষী “পুতলা- 
বাই+ চরিত্র বিশেষরূপ উল্লেখযোগ্য বলিয়৷ তাহার উল্লেখ করিতেছি £__ 

গিরিশচন্দ্র বলিতেন,__“প্রেম নর-নারীর তৃতীয় নেত্র উন্মীলিত কৰে । 
ইহার আভাস কালাপাহাড়েব চঞ্চলায় এবং ভ্রাস্তির "অন্নদা*য় গিবিশচন্্র 
কিছু কিছু দিয়াছেন; কিন্তু “পুতলা”য় আমর! তাহার পূর্ণ বিকাশ 
দেখিতে পাই। পুতলা সতী, প্রেমবলে--পতির ভূত, ভবিষ্তৎ ও 
বর্তমান তাহার নখ-দর্পণে । পুতলা--গিরিশচন্দ্রের একটি অপূর্ব সৃষ্টি ! 

এ নাটক সন্বন্বেও আমর! তৎমাময়িক কয়েকখানি সংবাদপত্রের 
মন্তব্য উদ্ধত করিলাম ।-_- 

ভাবত প্রসিদ্ধ স্বর্গীয় স্ববেন্্রনাথ বন্্যোপাধ্যায় কর্তৃক সম্পাদিত 
“বেঙ্গলী”তে লিখিত হয় )-- 00096900901 03009 ০0? 6105 10990 8700 
10096 00076:60)1 10790)93 959৮ [)7০010990 010 6139 10190, 8692০. 
অর্থাৎ ভারতবর্ষের রঙ্গালয়সমূহে এ পর্যস্ত সর্বাপেক্ষা শ্রেঠ এবং সর্বাপেক্ষা 
ওজন্বিতাপূর্ণ যতগুলি নাটক অভিনীত হইয়াছে, __“ছত্রপতি” তাহাদের, 
মধ্যে অন্যতম |” মহাবাষ্ট্রেব স্থসন্তান তেজস্বী পণ্ডিত স্বর্গীয় সখারাম গণেশ 
দেউস্কর তৎসম্পার্দিত “হিতবাদী'তে (১৭ই আশ্বিন, ১৩১৪ সাল), 
লিখিয়াছিলেন-_-“* * * মহারান্রীয়েরা ছত্রপতি শিবাজীকে যেরপ শ্রদ্ধার 
চক্ষে দর্শন কদ্দিয়। থাকেন, গিরিশবাবুর নাটকে তাহা বিন্দুমাত্র ক্ষ হয়, 


ষড়চত্বাবিংশ পরিচ্ছেদ ৫৫৫ 


নাই দেখিয়া আমরা আনন্দিত হুইয়াছি। শিবাজীর চরিত্রের বিবিধ' 
সদগুণ এবং তাহার সহচর ও কর্মচারীদিগের চরিত্রের বিশেষত্ব এই 
নাটকে অতীব দক্ষতার সহিত পবিশ্যুট করা হইয়াছে। জাতীয় 
অভাদয়ের পক্ষে প্র সকল গুণের প্রয্বোজনীয়তার বিষয় চিন্তা করিলে 
বলিতে হয়, গিবিশবাবু অতি স্ুসময়েই এই নাটকের প্রচার করিয়াছেন। 
বাঙ্গালীব জাতীয় ভাব বর্ধন বিষয়ে এই নাটক বিশেষ সহাত্পতা করিবে» 
বলিয়া আমাদিগেব বিশ্বাস । ইত্যাদি” 

বায় বাঁহাছুর শ্রীযুক্ত জলধর সেন তৎ-সম্পাদিত বস্থুমতী'তে (৪টা 
আশ্বিন, ১৩১৪ সাল ) লিখিয়াছিলেন,-__”* * * তীহার উর্বর কল্পনার 
লীলা কোথাও ইতিহাঁসের সত্যকে ব্যর্থ ৰা ক্ষুগ্ন করে নাই। ক্ষুদ্র লেখক 
অতি-বঙ্জনেব প্রলোভনে শিবাজীব প্রকৃত মূর্তি বিকৃত করিয়! ফেলিত, 
গিবিশবাবু তাহা! উজ্জল করিয়! দেখাইয়াছেন। শিবাজীর কনিষ্ঠ মহিষী 
পুতুলাবাই ও ম্বদেশভক্ত ব্রাহ্মণ-যুবক গঙ্গাজী গিরিশবাবুর নৃতন সৃষ্টি ; 
ইহাব! শিবাজী চরিত্রের দুইটী বিভিন্ন বিশেষত্ব--যেন শিবাজীর স্তর 
হইতে মনুম্ব-মুর্তিতে আত্মপ্রকাশ করিয়া কোথাও তাহাকে কর্তব্যপথে 
পবিচাঁলিত করিতেছে, কোঁথাও মৌন ছায়ার ন্যায় তাহার অন্থুব্তী 
হইয়াছে। শিবাজীর অভিনয় দেখিতে দেখিতে মনে হয়, যেন 
শিবাজী দেশ বিশেষে, যুগ বিশেষে জন্মগ্রহণ করেন নাই; ধরাঁতলে' 
যখন অত্যাচার প্রবল হয়, দরিদ্র উৎপীড়িত হয়, দেবমুত্তি চূর্ণ হয়, 
সতীলক্ষমীগণ পাষগু-হন্তে নিগৃহীত হন-_:তখনই সেই দেশকে রক্ষা 
করিবাঁব জন্ত বিধাতা একজন শিবাজীকে হত্রপতিরূপে প্রেরণ করেন + 
এই জন্যই শিবাজী শিবশক্তি স্ভূত--শন্করের অংশ । গিরিশবাবু শিবাজী- 
জননী জিজিবাইকে বে ভাবে অঙ্কিত করিয়াছেন, এই হতভাগ্য জাতির 
মাতৃত্বের বরণীয় আদর্শ সেইরূপ মহনীয় হওয়া কর্তব্য । গরিক্লিশবাবু তাহার 


৫৫৬ গিরিশচন্দ্র 


পরিণত বয়সের সংযত কল্পনাব সকল শক্তি সকল জ্যোতিঃ ঢালিয়৷ এই 
প্রাত:ম্মবণীয় মহারাষ্্রী দেশনায়কের উজ্জ্বল- চিরপূজ্য-_বরণীয় মহনীয় 
দ্নেবমূত্তি অঙ্কিত করিয়া তুলিয়াছেন। নাটক কোনরূপেই ইহা অপেক্ষা 
ইতিহাসের অধিক অন্তবর্তী হইত না। ইত্যাদি” 

ইংরাজ-সম্পাঁদিত £ছেটসম্যান' সংবাদ পত্রে (১৭ই নভেম্বর, ১৯৯৭ 
খুঃ) প্রকাশিত হইয়াছিল, __ণ্]79 [01001911600 138১0 (9281) 
(01)97001 91)09928 [0০001] 09,009, (01017908109 019 10201 
09919 161) ৪0208 ০0% 0179 70080 807001176 27)01067)68 11) 01)6 
116 ০0 9158)1১ 29 21081910996 11000 (189 12:29 80018790969 চম1)101 
৪76 200909060৮০ 009 111001759%1006806 010 9০ 0008.910]8 
978৮ 61018 00101100601 15 111190. 70000) 16 1788 1১96 
7117011105 007 21১006 66 9918 100 0189 18109 &0010101000 
88 01800109090. 0) ৪৮০1 089 800 6%015 10 0109 559100706 0109 
8৪18 ০0 6101:908 1)9,0 60 79 860100905 616 18729 ০0৮9:101/ 
119110106 ৮০ ঠি1] 0115 90)909106 [0197 1100595. 8০০. 


হ্গহিনুল্লরেক্স স্পোজ্নীজ গ্পভন্ন 


বঙ্গনাট্যশালার সর্বশ্রেষ্ঠ রত্বগুলির একত্র সমাবেশে, উন্নতির সর্বোচ্চ 
শেখরে উখিত হইয়া, এক বৎসরের মধ্যে কোহিন্থুর থিয়েটারেব যেকপ 
শোচনীয় পতন হইয়াছিল, বোধ হয্ন বঙ্গের কোনও রঙ্গালয়ের ইতিহাসে 
এরূপ ঘটে নাই। 

কোহিনুর থিয়েটার খুলিবার অল্লদিন পরেই হ্বত্বাধিকীরী শরৎবাবুর 
মাতৃবিয়োগ হয়। সঙ্গে সঙ্গে শরত্বাবুও অসুস্থ হইয়া পড়েন। ক্রমশঃ 
পীড়! বৃদ্ধি হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি মধুপুরে বায়ু পরিবর্তনের 


ষড়চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৫৭ 


নিমিত্ত গমন করেন। দারুণ পরিশ্রমে এবং হেমস্তাগমে গিরিশচন্দ্রও, 
পুনবায় পানী পীড়ার আক্রান্ত হইয়া! পড়িলেন। থিয়েটার খুলিবার ছয়মাস 
গত হইতে না হইতে পৌষমাসে শরৎবাবুর মৃত্যু হয়। তাহার মৃত্যুব 
তিনদিন পরে তাঁহাঁব পিতৃদেবও স্বর্গাবোহণ করেন। শরত্বাবুব মৃত্যুর 
পব, তাহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা শ্রযুক্ত শিশিবকুমার রায়, শবৎবাবুব এষ্টেটের 
একুজিকিউটাঁব হইয়া থিয়েটারেব পবিচালন-ভার গ্রহণ করিলেন। 
গিবিশচন্দ্রের পীড়া ও শবতবাঁবুব অকাল মৃত্যুতে কোহি্গরের অবস্থা 
অতিশয় বিশৃঙ্খল হইয়! পড়িল। গিরিশচন্তর কোনও নৃতন নাটক 
লিখিবাব অবসর পাঁইলেন নাঃ থিয়েটাবের আয়ও ক্রমশঃ কমিতে 
লাগিল। শিশিরবাঁবুব পক্ষে এ কাঁজ নূতন, গিবিশচন্দ্রের সহিত তিনি 
ইতিপূর্ব্বে পবিচিত ছিলেন না। তিনি পুনরায় স্বাস্থ্যলাভ করিয়া কত 
দুব আব কাধ্যক্ষম হইবেন, শিশিরবাবুর মনে এই সন্দেহেব উদ্রেক হওয়ায় 
তিনি গিবিশচন্দ্রের বেতন বন্ধ করিয়া, দিলেন। 

গিবিশচন্দ্র শিশিরবাঁবুর অভিপ্রায় বুঝিতে পাঁবিলেন না । বসন্ভাগমে 
শবীব কথঞ্চিৎ সুস্থ হইলে তিনি “ঝান্সির বাঁ নাটক লিখিতে আরম্ত 
করিলেন। ছুই অঙ্ক লেখ! শেষ হইবার পব একদিন কোনও উচ্চতম 
পুলিস কর্চারী কথা প্রসঙ্গে তাহাকে এঁতিহাসিক নাটক লিখিতে 
নিষেধ করিয়া! দিলেন। স্ুতবাং গিরিশচন্দ্র *ঝাশ্সিব রাণী, লিখিতে* 
বিবত হইয়া একখানি সামাজিক নাটক রচনায় প্রবৃত্ত হইলেন। চাবি 
অন্ক লেখা শেষ হইলে & দেখিলেন, তাহার তিন মাসে বেতন বাকী 





* ১৯১২ খু, ২৭শে জুলাই তাবিখে প্রকাশ্ত নিলামে কোহিনুব থিষেটার ধণেব 
দাখে বিভ্রীত হইয়। যায। একলক্ষ এগাব হাজার টাকায মিনার্ভা খিয়েটাবেব স্বত্বাধিকাৰী 
যুক্ত মনোমোহন পাড়ে মহাশয তাহা! থবিদ করেন। তাহাব উৎসাহে এবং সকলের 
অনুষোধে গ্রস্থকারের পরম স্নেহতাজন ও পবমাস্ধীয পঞ্ডিতবর শ্রীযুক্ত দেবেন্ত্রনাথ বন 


€₹৫৮ শিরিশচন্দ্ 


পড়িয়াছে,-_পুনঃ পুমঃ তাগাদা দ্বত্বেও থিয়েটারের কর্তৃপক্ষগণ উদাসীন । 
সুতরাং তাহাকে আদালতের আশ্রয় লইতে হইল । শিশিরবাবু এ সময়ে 
্বর্গীয় শরত্বাঁবুর এ্টেটের দেনা এবং বিশৃঙ্খল থিয়েটার লইয়া বিব্রত হইয়া 
পড়িয়াছিলেন,--তিনি বুঝিতে পারিলেন না যে গিরিশচন্দ্রের সহিত 
সধ্যবহার করিলে, সর্বপ্রকারে তাহার সাহায্যলাভে-_পুনরায় তিনি সকল 
দিক গুছাইয়া লইতে পাবিতেন । এই একটা ভুলে গিরিশচন্দ্র সহিত 
তাঁহার সন্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হইল। 
আদালতের আশ্রয় লইতে গিরিশচন্দ্রের ইচ্ছ! ছিল নাঃ কিন্তু কোনও 
সুযোগ্য এটর্ণী তাহাকে বলেনঃ যে আপনি বদি নালিস না কবিয়া অন্য 
থিরেটারে যোগদান করেন, তাহ! হইলে ইহারাই আপনার বিকজে 
'মাদালতে অভিযোগ করিবে । গিরিশচন্দ্র বুঝিলেন কথ! সত্য, তিনি 
তাহার প্রাপ্য বেতন এবং বোনাসের দকণ বাকী চারি হাজার টাকাব 
জন্য হাইকোর্টে মকদ্দমা রুজু করিলেন। বিচাবে জয়লাভ করিয়া খবচা 
সমেত তিনি সমস্ত টাকা প্রাপ্ত হন। 
কোহিম্থুরের সহিত গিরিশচন্দ্রের সন্থন্ধ বিচ্ছিন্ন হইলে, ষ্টার থিয়েটাব 
তাহাকে লইবার জন্ত চেষ্টা কর্পিতেছিলেন ; কিন্ত মিনার্ভাও নিশ্চিন্ত ছিল 
না। “মিনার্ভাপক্ষীপ্ তীক্ষবুদ্ধি মহেন্দ্রকুমার মিত্রের একান্ত যত্র এবং 
' আগ্রহ দর্শনে, শ্রীরণ মাধ হইতে গিরিশচক্র পুনরায় মিনা থিয়েটারে _ 
মাসিক চারিশত টাফা বেতন এবং খরচ বাদ থিয়েটারের লাভের 
পঞ্চমাংশের অধিকারী হছইয়া--যোগদান করিলেন। 





মহাশয় উক্ত নাটকের পঞ্চম অন্ক লিখিয়! দেন। “গৃহলক্দী' নামে এই নাটক মিনা 
থিয়েটারে (৫ই আশ্বিন, ১৩১৯ সাল) প্রথম অভিনীত হয়। পয়িশিষ্টে ইহান্ধ বিস্তৃত 
বিবরণ ষ্টব্য। 


সপ্ত চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 


মসিন্নান্ভান্স ক্ম্দভাব্বন্েক্স জন্যস্াান্ন। 
হ্াঞ্পানীল্স আক্রসল জ্বিন জন্য 
হুই ম্বহুস্ল্স ক্াম্নী গচন্ন। 


এবার মিনার্ডা থিয়েটারে আসিয়া গিরিশচন্দ্র প্রথমে পশান্তি কি 
শাস্তি?” নামক সামাজিক নাটক রচনা! করেন। ১৩১৫ সালে নানা 
কারণে কলিকাতায় বিধবা বিবাহ লইয়া তুমুল আন্দোলন উপস্থিত হয়। 
সেই সময়ে মিনার্তা থিয়েটারের কর্তৃপক্ষগণ গিরিশচন্দ্রকে এ বিষয় লইয়া 
একথাঁনি সামাজিক নাটক লিখিতে অহরোধ করেন। বলিদান্‌ নাটক 
অন্থুরোধে লিখিত হইলেও গিরিশচন্দ্রের তাহাতে সম্পূর্ণ সহাহ্ভূতি ছিল, 
কিস্তু এই বিরাট উত্তেজনার সময়, উত্তেজনার বিষয় লইয়া নাটক লিখিতে 
তিনি প্রথমতঃ সম্মত হন নাই, কেননা সে বচনা অনেকের মন:পীড়ার 
কারণ হইতে পাঁরে। যাহাই হউক কর্তৃপক্ষের সনির্বন্ধ অনুরোধ তিনি 
উপেক্ষা করিতে পারিলেন না, এবং পারিলেন না৷ বলিয়াই বঙ্গনাট্য- 
সাহিত্যের এই অপূর্ব সম্পদ আমর! লাভ করিয়াছি। 


স্পাভ্ডি ক্কি শশাভ্তি? 


এই নাটকে গিরিশচন্দ্র বিধবাবিবাহ সমন্ধে কোনও মতামত প্রকাশ 
করেন নাই? নাটকের শেষে তিনি পাগলেব মুখ দিয়! বলিয়াছেনঃ_ 
“বিবেচনা করুন, বিধবা সন্বন্ধে খবিদের যেরূপ ব্যবস্থাঃ তা--শান্তি কি 
শাস্তি?” কিন্ত সমাজের প্রতি কৌশলে এই প্রশ্ন প্রয়োগ করিলেও 
সুঙ্ষদর্শী পাঠক বা দর্শকের কাছে কবির মনোভাব লুক্কায়িত থাকে না। 
গিরিশচন্দ্র যে খধিদিগের সিদ্ধান্ত এবং আদেশ শিরোধাধ্য করিয়া লইয়! 


৫৬০ গিরিশচন্দ্র 


ছিলেন, তাহা! সহজেই বুঝা যাঁয়। প্রসন্নকুমাবেব পুত্রবধূ নির্মনলা 
বলিতেছে,__“বিধবাবিবাহ প্রচলিত হ'লে ব্রহ্ষচারিণী থাঁকবে না. হিন্দু- 
সমাজেব এ গঠন থাকৃবে না, আঁর এক গঠন হবে, হিন্দু সংসাবেব অন্ঠ 
অবস্থা হবে। বাবা, যে দেশে বিধবাবিবাহ প্রচলিত, সে দেশেও যে 
বিধব!, চির-বৈধব্য-ব্রত গ্রহণ করে, সেই প্রকৃত সতী বলে গণ্য» (২য় 
অঙ্ক, ৪র্থ গর্ভাঙ্ক)) কিন্তু কন্ঠার প্রতি মমতাব প্রেরণায় প্রসন্নকুমাব তাহা 
হাদয়ঙ্গম করিতে পাঁরিলেন না। বিশেষতঃ এই সময় তাহাব বিধবা কন্তা 
হুবনমোহিনীব অধঃপতনে তাহার সঙ্বল্প দৃঢ়তর হইল। প্রসন্নকুমার 
বিধবা কন্ত! প্রমদার পুনরায় বিবাহ দিলেন। কিন্তু এ সম্বন্ধে হরমণি 
বলিতেছে,_-প্যারা সমাজ মানে না, তার! টাকাঁব জন্ত বিধবা বিবাহ 
কবে ।” (৩য় অঙ্ক, ৪র্থ গর্ভাঙ্ক) 

বিধবাবিবাহেব সাঁপক্ষে যে সকল যুক্তি আছে, গিবিশচন্্র সে সকলেরও 
মবতাঁরণা কবিতে ত্রটি করেন নাই। প্রসন্বকুমাব তাহা পত্রীকে 
বুমাইতেছেন, “এখনো! বল্ছ (বিধবা বিবাহ) মহাপাপ! ভ্রুণহত্যা_ 
মহাপাপ নয়? স্বেচ্ছাঁচারিনী হওয়া মহাপাপ নয়? নীতিবিবোধী কাজ 
মহাপাপ নয়! উপায় থাকৃতে উপায় না কবা মহাপাপ নয়! চক্ষেব 
উপব অনাচার দেখ্বে--চর্ষেব উপব মেয়ে ভ্রষ্ট হবে দেখবে- চক্ষেব উপব 
উপপতির আনাগোনা দেখবে? বোঝো- এখনো বোৌঝো।৮ ইহা 
উত্তবে তাহাব পত্রী বলিলেন, _“ ইন্দ্রিয় কি এতই ছুর্দম, যে নিষ্ঠাচাব_ 
ধন্মাচরণে দমিত হয় না?” প্রত্যুত্তরে প্রসন্নকুমার বলিলেন, “ইন্দ্রিয় 
ছুর্দম কি না-তোমার সন্দেহ আছে? পুভ্রশোকাঁতুরা নারী, বৎসর 
ফেবে না, আবার পুত্র প্রসব করে ।- ইন্দ্রিয়-তাড়নায় উপপতির দাসী 
হর, শোণিত-সহ্বন্ধ বিচাৰ থাকে না ।” ( ২য় অন্ক, ৭ম গর্ভাঙ্ক ) 

এ কথার উত্তর পার্বতী মৃত্যু-শ্যায় দিয়! গিয়াছে । মৃতাশয্যা 


সগুচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৬১ 


তিনি তববন্মোহিনীকে বলি:তছেন,_"আমি তোমায় দেখি নাই, তাই 
«তো মা গায়ে কালি মাথ্তে পেরেছ। অ'মি তোমায় জোর ক'রে এনে 
কেন ক:ছে রাখিনি ? তুমি নিরাশ্রয় হয়ে পথ ভুলেছ ; ধর্মে তোমার মতি 
হোক 1” (€ম অঙ্ক, ১ম গর্ভাঙ্ক ) 

পিতামাতার কর্তব্যের ত্রুটি ভূবনমোহিনীর অধঃপতনের কারণ। সত্য 
বটে, নাট্যকার ভাবে ও ভাষায় নাটকের ভিতর আত্মপ্রকাশ করিতে 
পারেন নাঃ কিন্ত এই সামাজিক নাটক একটা উদ্দেশ্ত ধরিয়া রচিত। 
হিন্দুভাব গিরিপচন্দ্রের মজ্জাগত ছিল, এ নাটকে গিরিশচন্ত্র যে সকল 
চরিত্র স্ষ্টি করিয়াছেন, তাহাঁবা তাহার মুখপাত্র না হইলেও হিন্দুভাবে 
ভাবিতা, সুতরাং তাহাদের উপর কবির মনেব ছায়াপাত হইয়াছে । 
তথাপি তিনি এই সামাজিক প্রশ্নের সমাধান না করিয়া সমস্যার আঁকারেই 
রাখিয়া গিয়াছেন; এবং নাটকেরও নামকরণ করিয়াছেন, বিধবা- 
বিবাহ-_-স্পাভিড কে শাক্তি ৩ 


২২শে কান্তিক ( ১৩১৫ সাল ) এই নাটক মিনার্ভ৷ থিয়েটারে প্রথম 
অভিনীত হয়। প্রথম অভিনয়-রজনীর অভিনেতা ও অভিনেআীগণ £-_ 

প্রসন্নকুমাব-_ এীন্বেন্্রনাথ ঘোষ (দানিবাবু), বেণীমাধব- ্রীপ্রিযনাথ ঘোষ, 
গামাদান__দতীশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশ-_তাবকনাথ পালিত, পাগল--ব* 7321767- 
199 1551. ( থাকবাবু), প্রবোধ-__ন্থবাসিনী (মালিনী ), সর্বেশ্বব__শ্রীনগেন্রনাথ ঘোষ, 
থেচী-__প্ীসত্যেন্দ্রনাথ দে, বটকুষ্-_গ্রীহবিদাস দত্ত, হেবো-_শ্রীহীরালাল চট্টোপাধ্যায়, 
শুভম্কব__অন্দয়কুম।ব চক্রবর্তী, মিঃ বাহ ও ডাক্তাৰ- এঅহীন্দ্রনাথ দে, মিঃ মল্লিক-_ 
এউপেন্দ্রনাথ বসাক, মিঃ বড়াল ও ঘটক-_শ্রীসাতকডি গঙ্গোপাধ্যাঘ, ম্যাজিষ্টেট-_-পণ্ডিত 
শ্রহবিভূষণ ভট্টাচাধ্য, পুলিস-ইন্স্পেক্টাব-_শ্রীবিভূতিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায়, জমাদাব, বেসো৷ ও 
স্বর্ণকাব-__মন্মথনাথ বন, কোচম]ান_ _আীনিম্মলচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায, বেহাবা ও ১ম বৃদ্ধ-_ 
শ্রমধুহ্দন ভট্টাচায্য, ১ম পাহাবাওয়াল! ও ২য বৃদ্ধ__ত্রীননিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, ২ পাহারা" 
ওয়াল।-_পান্নীলাল সবকার, শু'ডী- শ্রীনৃপেন্দ্রন্দ্র বন্ছ, পাব্বতী- গ্রীম্তী প্রকাণমণি, 


৫৬২ গিরিশচন্দ্র 


নির্মলা- ব্রীমতী হেমস্তকুমাবী, ভুবনমোহিনী_ সরোজিনী (নেড়।), প্রমদা- প্রীমতী 
শশীমুখী, হরমণি-__হৃশীলাবাল!, চিতেখ্ববী__এ্ীমতী চপলানুন্দরী, ১ম! দাসী--শ্রীমতী। 
শরৎকুমারী, ২য় দাসী ও দাই-__নগেন্দ্রবালা ইত্যাদি । সঙ্গীত-শিক্ষক--প্রীদ্দেবকণ্ঠ বাগ্চি। 

প্রত্যেক অভিনেতা ও অভিনেত্রী এই নাটকের ভূমিকাভিনয়ে 
রুতিত্বের পরিচয় দিয়াছিলেন। স্থুরেন্্বাবুর «প্রসন্নকুমীরের+ অভিনয় বড়ই 
মর্মস্পর্শী হইয়াছিল । থাকবাবু দেখিতেও যেরূপ সুপুরুষ ছিলেন, 'পাগলের” 
ভূমিকা অভিনয়ও করিয়াছিলেন-_সেইরপ স্বন্দর।* হেবোর ভূমিকায় 
হীরালালবাবু দর্শক-হ্ৃদয়ে একটী জীবন্ত চিত্র অস্কিত করিয়! ছিলেন। 

নাটকথানি গিরিশচন্দ্র স্বর্গীয় দীনবন্ধু মিত্রের নামে উৎসর্গারুৃত 
করিয়াছিলেন । যথা £-.. ৃ 

পনাট্যগুরু ত্বর্গীয় দীনবন্ধু মিত্র মহাশয় শ্ররণেযু-_ 

বঙ্গে রঙ্গালয় স্থাপনের জন্ঠ মহাশয় কর্মক্ষেত্রে আসিয়াছিলেন। আমি 
সেই রঙ্গালয় আশ্রয় করিয়া! জীবনযাত্রা নির্বধাহ করিতেছি, মহাশয় আমার 
আন্তরিক কৃতজ্ঞতাভাজন। শুনিয়াছি, শ্রদ্ধা-_-সকল উচ্চ স্থানেই যায়। 
মহাঁশয় যে উচ্চ স্থানে যেরূপ উচ্চ কার্য্যেই থাকুন, আমার শ্রদ্ধা আপনার 
চরণ স্পর্শ করিবে-_এই আমার বিশ্বাস। যে সময়ে “সধবার একাদশী”র 
অভিনয় হয়, সে সময়ে ধনাঢ্য ব্যক্তির সাহায্য ব্যতীত নাটকাভিনয় করা 
এক প্রকার অসম্ভব হইত) কারণ পরিচ্ছদ গ্রভৃতিতে যেরূপ বিপুল বায় 


* এই ন্তান্তবংশীয় নাট্যামোদী যুবা__বিনয়, সৌজন্য এবং কলা-বিদ্ধায় গিরিশচন্দ্র 
বিশেব স্রেহাকর্ষণ করিয়াছিলেন। গীড়িতাবস্থায় ইহায়ই বাঁটাতে থাকিয়৷ নাট্যাচার্যয 
অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী মহাশয়ের মৃত্যু হয়। বিশেষ ভক্তি-শ্রদ্ধাব সহিত সহৃদয় নয্বেন্্বাবু 
ঠাহার পবিচর্য্যা] করেন। তীহায় অকাল-মৃত্যুতে বঙ্গনাট্যশালাব অভিনেতাগণ একজন; 
উচ্চপ্রাণ এবং প্রকৃত হুহৃদ হার়াইয়াছেন। ইনি সাধাবণের নিকট 'থাক' বাবৃ' নামে 
সুপয়িচিত ছিলেন । 


সপ্তচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৬৩ 


হইত, তাহা নির্বাহ করা সাধারণের সাধ্যাতীত ছিল। কিন্ত আপনার 
সমাজ-চিত্র সধবার একাদশী'তে অর্থব্যয়ের প্রয়োজন হয় নাই। সেইজন্ 
সম্পত্তিহীন যুবকবৃন্দ মিলিয়া “সধবাঁর একাদশী” অভিনয় করিতে সক্ষম 
হর। মহাশয়ের নাটক যদি না থাকিত, এই সকল যুবক মিলিয়া 
“্যাসান্তাল থিয়েটার" স্থাপন করিতে সাহম করিত না। সেই নিমিত্ত 
আপনাকে রঙ্গালয়-অষ্টা বলিয়৷ নমস্কাব করি । 

আপনাকে আমার হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা প্রদান করিবার ইচ্চ৷ চিরদিনই 
ছিল, কিন্ত উপহার দিবার যোগ্য নাটক লিখিতে পারি নাই, এই জন্ত 
বিরত ছিলাম । এক্ষণে দেখিতেছি, জীবনের শেষ সীমায় আসিয়৷ উপস্থিত 
হইয়াছি। তবে আর কবে আশ! পূর্ণ করিব! সেই নিমিত্ত এই 
নাটকথানি অযোগ্য হইলেও আপনার পুণ্য-স্বতির উদ্দেশে উৎসর্গ 
কবিলাম। ভাবিলাম, ক্ষুদ্র ফুলেও দেবপূজা! হইয়৷ থাকে । ইতি-_ 

চিরকৃতজ্ঞ- _শ্রাগিরিশচন্দ্র ঘোষ ।” 

মনোমোহন ও “আর্ট থিয়েটার-পরিচালিত ষ্টার থিয়েটারে এই 

নাটকের পুনরভিনয় হয়। 


গ্ীড্1 রস্পভ৪ ছুই হুল ক্ষাম্পী গন্ন। 

পুর্ব পূর্ব বৎসরের ন্যায় এ বংসরও (১৩১৫ সাল) হেমস্ত খতুর 
আরস্তের সঙ্গে এবং শাস্তি কি শাস্তি নাটকের শিক্ষাদানের পরিশ্রমে 
তাহার আব্যর হীপানী দেখা দেয় এবং তিনি সমস্ত শীতকাল কষ্ট পান। 
এইরূপে প্রতি বৎসর গীড়াক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসকগণের পবামর্শে ও বন্ধু- 
বান্ধবগণের আগ্রহে তিনি পূর্ধব হইতে সাবধান হইবার নিমিত্ত ১৩১৬ এবং 
১৩১৭ সালে আশ্ষিনমাসেই কাণীধামে গিয়া সমস্ত শীতকাল যাপন করেন। 
ইহাতে আশাতীত ফললাভ হয়, বিশ্বেশ্বরের কৃপায় তিনি ছুই বৎসরই 
হাঁপানীর পীড়া হইতে অব্যাহতি পাইয়াছিলেন। পূর্বে উল্লিখিত হুইয়াছে, 


৫৬৪ গিরিশচন্দ্র 


হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় তাহাব যৌবনকাল হইতে অনুরাগ 'ছিল এবং 
দীনদবিদ্রগণকে বিনামূল্যে চিকিংসা ও তাহাদের পথ্যাঁদির ব্যবস্থা করিয়া 
বহুসংখ্যক অনাথেৰ জীবনরক্ষাব কাবণ হইতেন। কাণীধামে আসিয়া 
তাহার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাব বিশেষ চচ্চা হইতে লাগিল। তাহাব 
প্রধান কারণ, কাশীধামেব “বামকৃষ্-সেবাশ্রমের পরিচালকগণ তাহাব 
অব্যর্থ ওষধ-গুয়োগ-নৈপুণ্য দেখিয়া আশ্রমের কঠিন পীড়াত্রাস্ত ব্যক্তি 
মাত্রকেই তীাহাব চিকিৎসাধীনে রাখিতেন। বহু লোকের আবোগ্য- 
সংবাদ অবণে কাণীধামেব বনু সন্ত্রান্ত ব্যক্তি গিরিশচন্দ্রের নিকট আসিতে 
লাগিলেন। কাশীর হিন্দুম্থানী মাত্রেই তাহাকে “ডাক্তার সাব বলিয়া 
ডাকিতেন। ক্রমে তাহার চিকিৎসা-নৈপুণ্যেব সুখাতি একূপ বহু বিস্তৃত 
হইয়া পড়িল, যে সুদুব জৈনপুবেব প্রসিদ্ধ উকীল শঙ্তৃপ্রসাদ, এলাহা- 
বাদের গভর্ণমেণ্ট উকীল বায় গোকুলপ্রসাদ বাহাদুব, উকীল বাবু 
সারদাপ্রসাদ এম-এ. বি এল প্রভৃতি লব্ধ প্রতিষ্ঠ সন্ত্রস্ত ব্যক্তিগণ চিকিৎসাব 
জন্য তাহার কাছে কাণীধামে আসিতে লাগিলেন। বাবু সারদাপ্রসাদেব 
ৃষ্টিশক্তি ক্ষু্র হইয়াছিল । সেই সময়ে “এলাহাবাদ একুজিবিসনেব* মহা 
সমাবোহে আয়োজন চলিতেছে । সাব্দাপ্রসাদ বাবু ক্ষোভ প্রকাশ 
করিয়া বলেন,-“দৃষ্টিশক্তি যেবপ দ্রুত বিনষ্ট হইতেছে, তাহাতে আমাৰ 
আব “এলাহাবাদ একৃজিবিসন” দেখা! হইবে ন1।” গিবিশচন্ত্র তাহাব 
চক্ষুব অবস্থা পরী কবিয়া বলেন,_-“আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন, আমি 
আপনাকে এলাহাবাদেব এক্জিবিসন দেখাইব।” গিরিশচন্দ্রেব 'উধধ 
প্রয়োগে সাবদা প্রসাদবাবু সম্পূর্ণৰপে আকবোগ্য না! হইলেও এএলাহাবাদ 
প্রদর্শনী” দেখিয়াছিলেন এবং তজ্জন্ত ত।হাকে যথেষ্ট ধন্তবাদ দেন । গিবিশচন্দ্র 
কলিকাতা আপিলেও বায় গোকুলপ্রসাঁদ বাঁহাছৃব প্রভৃতি অনেকেই আব- 
্যক হইলে ওঁধধের ব্যবস্থার নিমিতু টেলিগ্রাম ও পত্র প্রেবণ করিতেন। 


সপ্তচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৬৫ 


কাশীধামের পশ্চিমাংশে সেণ্টঁল হিন্ুকলেজ হইতে অল্পদুরে, সিক্রায় 
বাবু বামপ্রসাদেব বাগান বাড়ীতে গিরিশচন্ত্র অবস্থান করিতেন।. ছুই 
বৎসর শীতকাল গিরিশচন্দ্র মহানন্দে কাশীধামে অতিবাহিত করিয়াছিলেন । 
ভোরে উঠিয়া বদূর ভ্রমণ কবিয়া আসিয়া বেলা প্রায় ১১টা পর্যন্ত সমাগত 
বোগীগণেব অবস্থা শ্রবণ ও ওধধাদিব ব্যবস্থা করিতেন। পরে ন্নানাহার 
কবিরা কিঞ্চিৎ বিশ্রামপূর্বক ২টাব সময় পোষ্টপিয়ন আসিলে পত্রপাঠে 
'আবহ্থকমত জবাব দিতেন। অপরাহ্‌ হইতে সন্ধ্য। পথ্যস্ত পুনরায় সমাগত 
বোগীগণেব ওষধ-পথাদিব ব্যবস্থা কবিতেন। সন্ধ্যাৰ সময় রামকৃষ্ণ- 
মদ্বৈত-আশ্রমেব সন্ন্যাসীগণ, রামকৃষ্জমিশন সেবাশ্রমের সেবকগণ, স্থুপ্রসিদ্ধ 
ডাক্তাব নৃপেন্দ্রন্দ্র মুখোপাধ্যায় সেণ্টশল হিন্দু কলেজেব সহকারী 
প্রিন্সিপ্যাল উন্ওয়ালা সাহেব ও তথাকাঁব শ্রীযুক্ত পবেশনাথ বন্যোপাধ্যায় 
বি-এ প্রভৃতি শিক্ষকগণ, থিয়োজফিক্যাল সোসাইটার পুস্তকপ্রকাশ- 
বিভাগেব ম্যানেজার শ্রীযুক্ত অস্থিকাকান্ত চক্রবন্তী, কাণীর প্রসিদ্ধ উকীল 
মানন্দকুমীর চৌধুবী এম-এ, বি-এল ও শ্রীযুক্ত সতীশচন্ত্র দে বি-এল, 
ভূতপূর্বব কলিকাতা হাইকোর্টের উকীল এবং গিরিশচন্দ্রের হেয়াব স্কুলের 
সহপাঠী পণ্ডিত অবিনাশচন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায় এম-এ, বি-এল, পেন্সন প্রাপ্ত 
সাব জজ ললিতকুমাব বনু, সুবিখ্যাতি ভূদেববাবুর পৌর শ্রীযুক্ত বটুকদেব 
মুখোপাধ্যায় এম-এ। চন্দননগর-নিবাপী জমীদাব শ্রীযুক্ত পঞ্চানন 
বন্দ্যোপাধ্যায়, হিন্দু কলেজের লাইব্রেরীয়ান শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, 
এতদ্ব্তীত 'কাশীধামের বান্ধব সমিতি, হরিহর সমিতি, মিত্রসমাজ থিয়লেটারের 
পরিচালকগণ প্রভৃতি নান! শ্রেণীর ভদ্র ও সন্রান্ত ব্যক্তিগণের সমাগম 
হইত। ধর্ম, সাহিত্য প্রভৃতি নানাবিধ প্রসঙ্গে রাত্রি ১*ট1 বাজিয়! 
যাইত। সকলে চলি গেলে রাত্রি ১২ট কোন কোন দিন ১টা পর্য্যস্ত 
তিনি লেখাপড়ার কাঁধ্য করিতেন। ইহা! ভিন্ন নিত্য সংবাদপজ্র পাঠ 


৫৬৬ গিরিশচন্দ্র 


এবং কারমাইকেল ও সেপ্টাল হিন্দুকলেজ লাইব্রেরী হইতে আনীত বিবিধ 
গ্রন্থ অবকাশ পাইলেই পাঠ করিতেন। শঙ্করাচার্যের গীর্তগুলি, সমগ্র 
তপোবল নাটক এবং অমরেন্দ্রনাথ দত্ত-প্রকাশিত 'নাট্য-মন্দির' মাসিক 
পত্রের জন্ত অধিকাংশ প্রবন্ধ ও “লীলা” নামক গল্প কাশীধামেই রচিত হয়। 
ছুই বংসরই আমি তাহার সঙ্গে ছিলাম । 


স্পহক্র কার্য 


“শান্তি কি শাস্তিদর অভিনয়ে অর্থাগম সম্বন্ধে আশানুরূপ ফল ন! হওয়ায় 
নৃতন নাটক লিখিবার প্রয়োজন হইল; কিন্তু কি লেখা যায়? ইহাই 
এক সমস্তা। অসংখ্য নাটক, নভেল প্রভৃতির জনক ইযুবোপীয় সমাজেব 
মত বাঙ্গালার সমাজ নানা বৈচিত্র্যময় নহে ;- ইহাতে সৎকীত্তিব যেমন 
অভ্রভেদী উচ্চতা নাই, পাপেরও তেমনই অতলম্পর্শী গভীবতা নাই। 
আমাদিগের এই বৈচিত্র্যহীন সমাজে যে কিছু সমস্তা আছে প্রফুল্ল, 
হারানিধি, বলিদান প্রভৃতি নাটকে তাহা একে একে প্রায় নিঃশেষিত 
হইয়াছে; একটা বিষয় আছে-_ভাঁই ভাই মামলা-মকন্দনায় সংসাব 
ছারখাঁব--গিরিশচন্দ্র এই বিষয় লইয়! কোহিম্থুবের জন্ত একখানি নাটক 
লিখিতেছিলেন, তাহার চারি অঙ্ক শেষ হইবার পর উক্ত থিয়েটাবের সহিত 
তাহার সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হয়, এবং স্বত্বাধিকাঁবীর সহিত মামল' বশতঃ এ চাবি 
অঙ্ক তখন আদালতের জিম্মায় ছিল। এখন কি লইয়া নূতন নাটক 
লেখা যাঁয়-__গিরিশচন্ত্র এই মহা সমস্যায় পতিত হইলেন। এ্ঁতিহাসিক 
নাটক পুলিশে পাশ হইবার পক্ষে অনেক বাধা । তবে ধর্মপ্রাণ ভারতে 
ধর্মের কখনই অনাদর হইবে না । এখানেও এক অন্তরায়__বাঙ্গাল! ভক্তি- 
প্রধান দেশ- -ভক্তিমূলক নাটকও অনেক রচিত হইয়াছে । এ বিষয়ের 
পুনরবতারণা-_চর্ব্বিত চর্বণ মাত্র। গিরিশচন্দ্র ভাঁবিতে লাগিলেন__ 


সপগ্তচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৬৭ 


একবার ্ানমার্গ ধরিয়া নাটক রচনা! করিলে হয় না? কিন্তু বিষয় 
বড় নীরস। যে উন্মাদনা নাটকে প্রন্নোজন, তাহা! ভক্তিমার্গে ই আছে-_ 
অদ্বৈতমার্গে নাই। কিন্তু তথাপি বেদান্ত বিষয় অবলম্বন পূর্বক অন্ভুত 
কৌশলে তাহাতে মানবীয় সহান্ৃভৃতি মিশাইয়! তিনি *শঙ্করাচার্য্য' লিখিতে 
প্রবৃত্ত হইলেন। 

নাটক রচন। সমাপ্ত হইলে ইহার সাফল্য সম্বন্ধে গিরিশচন্দ্রের প্রথমে 
সন্দেহ হইয়াছিল, কিন্তু পুজ্যপাদ স্বামী সারদানন্দের কথায় তাহার সে 
দ্বিধা দূর হয়। নাটকের সম্পূর্ণ শিক্ষাদানও তিনি করিতে পারেন 
নাই, কারণ এই সময়ে তিনি গীড়াবশতঃ কাশীধামে গমন করিয়াছিলেন। 
স্বর্গীয় রাঁধামাঁধৰ কর এবং পণ্ডিত শ্রীহরিভূষণ ভট্টাচার্য শিক্ষাদান কাধ্য 
সমাপ্ত কবেন»_কেবল মাত্র দানিবাঁবু কাশীধামে গিয়া! শঙ্করাঁচার্যের 
ভূমিকা পিতৃদেবের নিকট শিক্ষা করিয়৷ আসিয়াছিলেন। 

২রা মাঘ (১৩১৬ সাল) শঙ্কবাচাধ্য প্রথমে নিনার্ভা থিয়েটারে 
অভিনীত হয়। প্রথমাঁভিনয় রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £₹-_ 

শঙ্করাচাধ্য- শ্রীনুবেন্্রনাগ ঘোষ, শিশু-শঙ্কব (প্রথম অঙ্ক )--সরো- 
জিনী (নেড়া)১ অমরকরাজ-দেহাশ্রিত শঙ্কর ও বৃদ্ধ বৌদ্ধ কাপালিক-_ 
ীপ্রিয়নাথ ঘোঁষ, মহাদেব ও উগ্রতৈরব--শীসতীশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, 
বন্ধ ও গরণপতি-_শ্রীহীরালাল চট্টোপাধ্যায় ; গোবিন্দনীথ, ব্যাস ও মণ্ডন 
মিশ্র-_-পণ্ডিত শ্রীহরিভূষণ ভট্টাচার্য, সনন্দন_-শ্রসত্োন্তরনাথ দে? শাস্তি- 
রাম_ শ্রীনগেন্্রনাঁথ ঘোঁষ, রামদাঁস-_পান্নালাল সরকার, সথারাম ও 
প্রথম পণ্ডিত-_শ্রীমধুহদন ভট্টাচার্য, জগন্নাথ__শ্রীনৃপেন্্ন্দ্র বন; খষি, 
পুবোহিত ও ্ুধন্বারাঁজার সেনাপতি-_্রাগ্রমথনাথ পালিত, বৃদ্ধ বৌদ্ধ- 
কাপালিক শিল্-_ভ্রীউপেন্ত্রনাথ বসাক; চগ্ডাঁলবালক-- শ্রীমতী ননীবালা। 
২য় পণ্ডিত-_শ্রীমতুলচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়, অমরক বাজার মন্ত্রী_শ্রীহরিদাস 


৫৬৮ গিরিশচন্দ্র 


দত, এ ব্রাহ্ষণ-বিজয়কঞ্ত বন্থ, শিউলি-_শ্রীসাতকড়ি গঙ্গেপপাধায়, 
মহামায়া-_ভ্রীমতী রাজবালা, বিশিষ্টা--শ্রীমতী হেমন্তকুমারী, উভয়ভারতী 
ও কামকলা-_শ্রীমতী চাঁরুশীলা, রমা ও অশ্থালিক1-_শ্রীমতী নলিনীস্ুন্দবী, 
গঙ্গা ও যমজ-শিশুমাতা--শ্রীমতী 'সরযূবালা; সবমা__-্রামতী নীরদা সুন্দরী, 
কুমারী__স্থবাসিনী, শিউলিনী-__শ্রীমতী তিনকড়ি (ছোট) ইত্যাদি । 
সঙ্গীত-শিক্ষক-_-শ্দেবক্ বাগচি, নৃত্য-শিক্ষক-_শ্রীনৃপেক্্রন্ত্র বন্ধ, 
বঙ্গভূমি-সজ্জাকর-ধর্মদাস সুব ও শ্রীকালীচরণ দাঁস (সহকারী )। 

শঙ্করাচাধ্যেব বিহারস্তালকাঁলীন অভিনেতা ও অভিনেত্ীগণ 
একপ্রকাঁব হতাঁশ হইয়া পড়িয়াছিল এবং বিপুল অর্থব্যয়ে সাজসরঞ্জাম ও 
ধন্মদাসবাবুকে দিয়! দৃশ্ঠপটাঁদি প্রস্তুত কবিরা স্বত্বাধিকাবীও বিশেষরূপ 
চিন্তিত হইয়া পড়িয়াছিলেন; কিন্তু অভিনয় দর্শনে সম্পূর্ণ নূতন রসের' 
আম্বাদন পাইয়! যখন দর্শকগণ ঘন ঘন উল্লাস প্রকাশ করিতে লাগিলেন 
এবং অভিনব্বান্তে উচ্চ জয়ধ্বনি করিয়া বঙ্গালয় পবিত্যাগ কবিলেন-__ 
তখন তাহাদের বিম্বয় ও আনন্দের আর সীমা রহিল না। 

“চৈতন্যলীলা”র ন্ায় “শঙ্ক বাঁচার্য্য' নাটকও নাট্যজগতে এক যুগাস্তব 
উপস্থিত করিয়াছিল। বেদান্ত-প্রচারক নীবস শঙ্কব-চরিত্র, গিরিশচন্দ্রের 
অমৃতময়ী রচনার এরূপ সরস হইয়! উঠিয়াছিল, বে বঙ্গেব আঁবালবৃন্ধ-বণিতা 
'শঙ্করাচাধ্য দেখিবার জন্ত উন্ন্ত হইয়াছিল। এই নাটকের অভিনয় দশনে 
জনৈক পণ্ডিত বলিয়াছিলেন, “গিরিশবাবু কাযস্থকুলে জন্মগ্রহণ করিয়া 
ব্াঙ্গণকে বেদান্তেব স্থল্পমন্মন জলেব ন্যায় বুঝাইয়া দিলেন, তিনি শ্বসসান্ত্গৃহীত 
__তাহাব আর সন্দেহ নাই 1” 

নাটকের সকল চরিত্রই নূতন ছাচে ঢালা, তন্মধ্যে মহামায়া ও 
জগন্নাথের চরিত্র বিশেষ উল্লেখযোগ্য ৷ জগন্নাথ-চরিত্র সম্বন্ধে পৃজ্যপাঁদ 
লু্বাসী ভ্রন্ক্ষান্মন্দ্ গিরিশচন্দ্রকে বলিয়াছিলেন,__ণ্মায়িক ভাল- 





( ৫৬৮ পৃষ্ঠা) 


ব্রহ্মানন্দ স্বামী 





চা] 
*২ 
৬ 
চে 
শন 
৯ চ 
ধ 
৭ রী 
[০ 
8৪ মা ॥ 
ছ * 
ৰা 
ও রঃ 
সখ রব ॥ 
॥ 
এ ছাঃ 
ব নু $ 
শ 
ঃ $ $ 
। ্ স্ব) | 
৯৯ সু 1%। 
্ কঃ হ॥ 


সারদানন স্বামী 
( ৫৬৭,৫৯৫ এবং ৬০১ পৃষ্ঠা ষ্টব্য ) 


সপ্তচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৬৯ 


বামার ষে;মুক্তির অধিকারী হইতে পারে_-এ চরিত্র, গিরিশবাবুঃ তুমি 
মহাগুরুর কৃপায় চিত্রিত করেছ।” 
গিবিশচন্দ্র কঠোব বেদান্তের ভাঁব--কাব্যরমে কিরূপ সরস করিয়া 
তুলিরাছেন, তাহা মহামায়ার গীতখানি হইতে পাঠক পরিচয় পাইবেন | 
গীত 
(সনন্দনাদি শঙ্কবাচার্য্যেব শিল্তগণকে সঙ্গীতচ্ছলে সাধন-প্রথ! সব্ঘপ্ধে মহামায়াৰ 
উপদেশ,_পবিদ্ধামাযাব সংঘর্ণে বিছ্যামায়। ও আগ্যামাণ। পবম্পব ধ্বংস ন| হ'লে জীবেৰ 
চৈতগ্যলাভ হয় ন11”) 
প'ব্লে পৰে মাঁধেব বাধৰ, খুললে খোলে ন|। 
কীট। দিযে কাটা! তোল! কথায চলে ন| ॥ 
নোণাব-লোহীঘ ঘ'নে ঘ'দে, তবে লোখীৰ শেকল খসে, 
যত্বে গড়ে মোণার শেকল, কিনতে মেলে ন! ॥ 
সে শেকস শক্ত লোহার, আতে আতে বাধুনি তার, 
হার ব'লে পরেছে গলে, অম্নি ফেলে না ॥ 
লোহা শেকল মনন হ'লে, তখন চায় সে শেকল খোলে, 
চেনে, যে চোখ পেযেছে, চোখ ন| পেলে, না ॥ 
শঙ্করাচার্যের অভিনয় দর্শনে “বেঙ্গলী'তে ( ১৯শে মার্চ, ১৯১০ খুঃ) 
মন্তব্য প্রকাশিত হয় £_:"080 100180 05709100105) 0008009) 
90" 8611] 1) 603 01] ৮12০0: ০6 08025 00986 ০০৮ 105 
077216900% 1/19 500. 19015300990 68৪ 1106 ৪00 69801103 0: 
09188059006 16 1০3 0. 883) 0930 00000022015017, 0 
30000280293 07990. 01 108 13 10 16361 & 980179510 
80101906800 6799690 90 10)3 108869117 090 15 93 06361090 
6০ 010৮0, 0010 160 ৪0908351119 01990 ০910210212৮ 


09৪, 19 0119 07960. 011070৮190092 [1010 19 07059101811) 


৫৭০ গিরিশচন্দ্র 


017. 4. ৪60০906 ০1 17017010 71119901010 087 ১০17 £0699 
000৭ 91)800805 110 &00. 0০০19 ০90 000) 69 ৪1১)9০৮- 
1096657 0£ ৪, 0180)8610 1091101080099 809019117 11) 61099 
10065 ছা1190. 1616 01) 009 8699 2৪ 016 01997 ০ 01)6 09. 
80৮ ০0 01091) 00900151093 09100009080. 80108701017 
11001)08911)19 0891: 100 10003101760 006 07 701)98 01 0179 
৪10)9০06১ 108100 175৩110959 1101. 1)93 17909 109 01:9008 
00169 821298919 6০ ৪5৪17 ৪1190 0? 09869. ৮ *:100)2 01%5, 
10 81705 19 ৪0 811-10101)0 1099691-01939 সা1)101) 9009 5 0991 
£1500] 60 6103 812980-0591-108090 1070 01606 01910901906 ০6০.৮ 

বায় সাহেব স্বর্গীয় বিহারীলাল সবকাব “বঙ্গবাঁসী/তে লিখিয়াছিলেন, 
ক্ষ ** যিনি জ্ঞানযোগী শঙ্কবাচাধ্যেব চবিত্রাবলম্থনে নাট্য-বচনা করিতে 
পাবেন, আব সেই নাট্য-রচনার অভিনবে যিনি বঙ্গের লক্ষ লক্ষ লোককে 
মুগ্ধোন্ম্ত করিয়া তুলিতে পারেন, ধন্ত তাহার লেখনী। জ্ঞান-যোগীর 
জ্ঞান-কথা সাধাবণের কর জন বুঝিতে পারে? কিন্তু গিরিশবাবুসে সব 
জ্ঞানকথাব যেবপ সহজ বিশ্লেষণ করিয়াছেন, তাহ! সাধারণেব বোধগম্য 
হইয়াছে। তাই শত সহম্্র অভিনয়দর্শী চিত্রাপিতের ন্যায় বসিরা 
অভিনয়-সৌন্বর্যের স্থখোপভোগ করিয়৷ থাকেন। যিনি এমন জ্ঞানা- 
চবিত্র এমন করিয়! ফুটাইতে পারেন, আর ধিনি অভিনয়ে সে চরিত্রের 
পূর্ণ বিকাশ কবিতে পারেন, তিনি লমগ্র বঙ্গবাসীর ধন্তবাদ পাত্র নহে কি? 
ইতিহাসে শঙ্কর-চবিত্রের বৈচিত্র্য কোথায়? কিন্তু গিরিশচন্দ্র নান! 
চরিত্রের স্থষ্টি কখিয়া, প্রাসঙ্গিকক্রমে নাট্যকাব্যের যেরূপ বৈচিত্র্য সাধন 
কবিয়াছেন, তাহা তিনি ভিপ্ন আর কেহ করিতে পারেন কি না সন্দেহ। 
* * নাটকে নবরস। শঙ্করাচাধ্যের মাতা বিশিষ্ঠার করুণ-চিত্র মরে 


সগ্ডচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৭১ 


মর্মে অফ্কিত হইয়া যায়। শঙ্করাচার্যের কৃষক ভূত্য জগন্নাথ-_মমতাব 
সাকার স্থ্টি। মহামায়ার মহ| চিত্রে নাঁট্য-কাব্য-সৌন্দর্যযের পূর্ণোচ্ছাস !” 
ইত্যাদি 

নাটকথানি তিনি তাহার যৌবন-মুঘ্বদ এবং গুরুভ্রাত৷ জন ডিকেনসন 
কোম্পানীব” সর্বময় কর্তা স্বর্গীয় কালীপদ ঘোষকে উৎসর্গ করিয়াছেন। 
যথাঃ-- 

«আনন্দময় সহচব আনন্দধামবাসী-_ক্ষাঁগলীস্পদ তাম্ব । 

ভাই, আমব! উভয়ে একত্রে বহুবাঁব শ্রীদক্ষিণেশ্ববে মুত্তিমান্‌ বেদান্ত 
দর্শন ক'রেছি। তুমি এখন আনন্দধাঁমে, কিন্তু আমার আক্ষেপ তুমি 
নরদেহে আমাঁব “শঙ্করাচার্ধয৮ দেখলে ন7া। আমাব এ পুস্তক তোমায় 
উৎসর্গ কর্লেম, তুমি গ্রহণ কর। গিবিশ।” 

কাশীধাম হইতে আসিয়া! গিরিশচন্দ্র কয়েকরাত্রি শিউলিব ভূমিকা 
লইয়া রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন। এই সমষে শ্রীমতী তাঁবাস্থুন্দরী 
মিনার্তায় পুনরায় যোগদান কবেন। তিনিও শিউলিনী হইয়া! বাহিব 
হইতেন। ইহাতে নৃতন আকর্ষণ হওয়ায় শঙ্কবাচার্য্েব বিক্রয় আরও 
বাড়িয়া যায়। 

ক্সিম্ণাও্ডাক্স জত্ক্রস্ণেত্খন্র 

এই অময়ে মিনার্ভা থিয়েটাবে চন্রশেখর, অভিনীত হয়। অন্থুকন্ধ 
হইয়া গিবিশচন্দ্র এই নাটকে কয়েকটা অতিবিক্ত দৃশ্ট সংযোজিত করিয়া 
দেন এবং ছুই রাত্রি চন্দ্রশেখর এবং একরাত্রি শ্রীনাথ, সর্বেশ্বব 
(প্রতিবাসী) ও বকাউল্লার ভূমিকা অভিনয় করেন। দর্শকগণ পূর্বব-প্রচলিত 
অভিনয়ে নৃতনত্ব পাইয়া বিশেষ গ্রীতিলাঁভ কবিয়াছিলেন। ক্লাসিক 
থিয়েটারে অমরবাবুর বিশেষ আগ্রহ ও অনুরোধে গিরিশচন্দ্র এইরূপ এক 
রাত্রি, “ভ্রমরে” কৃষ্ণকান্তের ভূমিকা অভিনয় কবেন। 


৫ণ২ গিরিশচন্দ্র 


অশ্পোক ৃ 
শঙ্করাঁচাধ্য* নাটকেব আশাতীত সাফল্য গিরিশচন্দ্রকে পুনরায় ধর্ম- 
বিষয় অবলম্বনে নাটক রচনা করিতে উৎসাহ প্রদান কবে। তাহাব 
প্রথম ইচ্ছ৷ হইয়াছিল-_-“কুমারিল ভট্ট, লেখা,__কিন্ত গিবিশচন্ত্রের বিশেষ 
প্রিয়পাত্র শ্রীযুক্ত কুমুদ্ন্ধু সেন মহাশয়ের সনির্বন্ধ অনুবোধে তিনি “অশোক, 
লিখিতে প্রবৃত্ত হন। বেদান্তের ভাবে যে গিবিশচন্দ্রের মন্তিফ তখনও 
পর্য্যন্ত আচ্ছন্ন ছিল, অশোক নাটকে তাহাব পবিচয় পাওয়া যাঁয়। 

“মার চবিত্র যেমন অবিদ্ভার রূপানস্তর,_নাটকে উপগুপ্ত ও বৌদ্ধ 
ভিক্ষগণ তেমনি বিগ্ভামায়ার প্রতিমুত্তি। অশোক নাটকে দেখিতে পাঁওয়! 
যায় যে সকল চরিত্রেই মানবীয় সহানুভূতির (17075000) 97010801)য ) 
ভাব। ইহাতে পতি-পত্রীর সঙ্ন্ধ আছে, _কিন্ত তাহাতে সে উন্মাদনা 
নাই, ভ্রাতৃন্েহ-__পুত্র-বাৎসল্য আছে-_তাহাতে সে আসক্তি নাই। নায়ক 
অশোঁক যেন অন্ত জগতের লোঁক-_মানবীয় সহানুভূতির বহু দূরে । এই 
জন্যই সম্ভবতঃ এ নাটক সাধারণ দর্শকের সহানুভূতি আকর্ষণ করিতে 
পারে নাই । ষদি কখনও ধর্মপ্রাণ উচ্চ ভাবুক-_দর্শকবূপে রঙ্গীলয়ে আবি- 
ভূতি হন,”_তখন এ নাটকের যথাযোগ্য সন্মান ও আদর হইবে। নাটক 
খানি নিবিষ্ট চিত্তে পাঠ করিলে স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে গিবিশচন্দ্র ইহাতে 
"কি উচ্চাঙ্গের নাট্যকল! বিকাশ করিয়াছেন। এখন কথা--অশোঁক 
এরতিহাসিক নাটক কি ন1?-সে সময় অশোক সম্বন্ধে যাহা কিছু 
গ্রতিহানিকতত্ব আবিষ্কৃত হইয়াছিল, গিরিশচন্দ্র তন্ন তন্ন তাহার 'অনুসন্ধান 
করিয়া লিপিবন্ধ করিয়াছেন । তবে নাটক ইতিহাস নহে, ইতিহাসকে 
নাটকে পরিণত করিতে যাহা কিছু আবশ্যক, গিরিশচন্ত্র নিঃশঙ্কচিতে সে 
সকল গ্রহণ করিয়াছেন। বিদ্যামায়ার প্রভাবে কিরূপে অবিষ্ভাশক্তি- 
পরাভূত হয়--এ নাটকে তাহাই প্রধান বিষয় । 


সপগ্তচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৭৩ 


সাধারণ দর্শক এ নাটকের উচ্চরস গ্রহণ করিতে না পারিলেও 
কলিকাত! বিশ্ববিদ্ালয়ের তাৎকালিক ভাইস চ্যানসেলাব সম্ষুদ্দাগম 
চক্রবর্তী মনীষীপ্রবর স্তার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহোদয় এই নাটক 
খানিকে বি-এ ও এম-এ পবীক্ষায় পাঠ্যপুস্তকরূপে নির্বাচিত করিয়া, ইহার 
যথাযোগ্য স্থান নির্দেশ কবিয়া দিয়াছেন । 
শ্রীবৎস-চিন্তা' নাটকে বাতুল চরিত্রে আকালের বীজ নিহিত 
থাকিলেও “অশোক” নাটকে তাহার সর্বাঙ্গীন ও সর্বাঙগনুন্দর বিকাশ 
দেখিতে পাওয়া যায় । 
কিরূপ উচ্চভাবে নাটকখানি লিখিত হইয়াছিল, নিম্নলিখিত সঙ্গাত 
হইতে পাঠক তাহার কথঞ্চিৎ আভাস পাইবেন। উত্তপু-মস্তিষ্ক অশোক- 
সমক্ষে বৌদ্ধতিক্ষগণ গাহিতেছে £-_- 
"ক্রোধানল কেন হৃদয়ে জালি, 
পরম রতন দিব শান্তি ডালি, 
চিব শান্তি_-শান্তি- শাস্তি! 
যত্ব কৰি ধবি হৃদয়ে অহি, 
কেন দংশন-তাড়ন নিষত সহি, 
একি ভ্রান্তি শ্রান্তি- ভ্রান্তি ! 
ত্রান্তচিত নাহি বাহিবে অবি, 
অন্তরে রাখিয়া আদব কবি, 
ঠেকিয়ে শেখ, অবি বিবেকে দেখ, 
আসিয়ে ভবে, যদি মানব হবে, 
বিমল হৃদে হের শান্তি, 
অমুতময় কিবা কান্তি, 
কিবা কান্তি -কান্তি-_কান্তি! 


৫৭8 গিরিশচন্দ্র 


১৭ই অগ্রহায়ণ (১৩১৭ সাল ) "অশোক" মিনার্ভা থিয়েটারে প্রথম 
অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় রজনীর অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_ 
বিন্দসার-_ননীলাল দত্ত,সুদীম ও জনৈক জৈন-_প্রীঅহীন্দ্রনাথ দে, অশোক -্রীমরেন্্- 
নাথ ঘোষ, (দানিবাবু ), বীতশোক-_গ্রীঅপরেশচন্ত্র মুখোপাধ্যায়, কুনাল--ুশীলাবালা!, 
মহেন্দ্র- শ্রীমতী শশীমুখী, স্যগ্রোধ-_দবোজিনী, কহলাটক-_শ্রীনগেন্্রনাথ ঘোষ রাধাগুণ্ত_ 
প্রমথনাথ পালিত, আকাল-_তারকনাথ পালিত, উপগুপ্ত-_ পণ্ডিত প্রীহস্িভূষণ ভ্টাচাধ্য, 
মার-_প্রীপ্রিয়নাথ ঘোষ, চও্গিবিক, ২য় বৌদ্ধ ও ১ম রাজ-পারিষদ-_শ্রীমৃত্যুপ্রয় পাল , 
১ম বৌদ্ধ, আভীর ও তক্ষশিল।র মন্ত্রী-_অটলবিহারী দাস, তক্ষশিলার সভাপতি-- 
সত্যেন্দ্রনাথ দে, প্র সেনাপতি ও পাটলিপুত্রের ২য় রাজ পারিষদ--প্রীনরেন্দ্রনাথ সিংহ, 
তক্ষশিলার ১ম সদস্য ও প্রথম ঘাতক- এীউপেন্রনাথ বসাক,তক্ষশিলাব ধর্মযাজক- _-্হীরা- 
লাল চট্টোপাধ্যায়, তক্ষশিলাব দূত- শ্রীধর্ঘদাস মুখোপাধ্যায়, ২য় ঘাতক-_্রীজিতেন্্রনাথ দে, 
চগ্ডাল-সার্দাব-_-্রাহবিদাস দত্ত, ১ম ব্রাহ্মণ -_অক্ষষকুমার় চক্রবর্তী, তয় ব্রাহ্মণ-_এীমধুনাদন 
ভট্টাচার্য্য, পাটলিপুত্রেক দূত _মন্মধনাথ বন, বৌদ্ধ উপানকগণ-_প্রীননিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, 
পান্নালাল সরকাব ইত্যাদি , সুভদ্রাঙ্গী-_সবোজিনী, চন্দ্রকল! ও কাঞ্চনমাল!| - শ্রীমতী 
নীবদাহুন্দরী, পদ্মাবতী-_প্রীমতী তায়ানন্দরী, দেবী- ঞ্রমতী হেমন্তকুমাবী, সভ্বমিত্রা_ 
গ্ামতী ফির়োজাবালা, চিত্তহর।--গ্রমতী চাকণীলা, তৃষা--ঞীমতী তিনকডি ( ছোট ), 
চগ্ডাল-পত্বী_ শ্রীমতী রাধায়াণী, আতভীধ-পত্বী ও পর্জিচাবিকা- প্রীমতী নলিনীবাল!। 
শিক্ষক- পণ্ডিত এ্ীহরিভূষণ ভট্টাচাধ্য ও মহ্েন্দ্রকুমার মিত্র, সঙ্গীত-শিক্ষক-_শ্রীদেবক্ 
« ৰাগ্চি, নৃত্য-শিক্ষক-_প্রীসাতকড়ি গঙ্গোপাধ্যায়, রঙ্গভূমি-সজ্জাকর-_জ্ীক।লীচবণ দাস,। 
অশোকের ভূমিকা স্বয়ং দানিবাবু গ্রহণ করিয়াছিলেন, প্রকৃতপক্ষে 
অশোক চরিত্র ছুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম চণ্ডাশোক _নিটুর- নির্দয়_ 
দাস্তিক। দুরস্ত রাজ্য-লিগ্দায় তাহার হৃদয় অধিকৃত, সেখানে দাম্পত্য প্রেম, 
পুত্রবাৎসল্য প্রভৃতির অধিকার নাই। তারপর ধর্মাশোক-_ ত্যাগের 
মহিমায় মহান -আত্মজয়ের গৌরবে পরিপূর্ণ । চগ্ডাঁশোকের উদ্দেশ্ত-_পর- 
পীড়ন ও প্রতুত্ব স্থাপন, ধর্মীশোকের উদ্দেশ্ত- বৌদ্বধর্শের প্রচার । দাঁনিবাবু 


'« ভুমিকায় যথেষ্ট কৃতিত্ব এবং কলাকৌশল প্রদর্শন করিলেও বিচিত্র 


৫৭৬ গিরিশচক্্ 


অশোঁক-চরিত্র সাধারণ দর্শকের হাদয় অধিকার করিতে; পাঁরে নাইি। 
অশোকের চরিত্র অপেক্ষা বীতশোকের চরিত্র দর্শকবৃন্দের অধিকতর 
মর্মম্পর্শ করিয়াছিল। স্থপ্রসি্ষ নট ও নাট্যকার শ্রীযুক্ত অপরেশচন্্ু 
মুখোপাধ্যায় ইহার অভিনয়েও বিশেষ নৈপুণ্য দেখাইয়াছিলেন। 
বাতশোকের পর কুনালের ভূমিকায় সুণীলাবালার অভিনয় দর্শকগণেব 
অতীব হৃদয়গ্রাহী হইয়াছিল। আকালেব ভূমিকার স্বর্গীয় তারকনাথ 
পালিতও যথেষ্ট সুখ্যাতি অর্জন করিয়াছিলেন। 


“হ্মজাওডা সহোত্ক্রব্বাজুব্র হত্ডে 


ফাল্ধন মাঁসেব (১৩১৭ সাল) শেষভাগে গিরিশচন্দ্র কাণী হইতে 
কলিকাতায় ফিরিয়া আঁসেন। ১৩১৮ জালে মিনার্ভা থিয়েটারে বিশেষ 
পরিবর্তন হয়। মনোমোহন বাবুব পিতা পঙ্ডিতবর স্বর্গীয় বীরেশ্বর পাড়ে 
মহাশয়ের কাশীধামে জীবনের শেষভাগ অতিবাহিত করিবার ইচ্ছা ছিল। 
মনোমোহনবাবু পিতাঁর অভিপ্রায় মত কাশীধামে একটী বাটা এবং তাহাব 
নামে তথায় একটা শিবালয় প্রতিষ্ঠাব সন্কল্প করেন। এ নিমিত্ত কাশীতে 
কিছুকাল থাকিবার প্রয়োজন হওরাঁয় এবং অন্তান্ত কারণে তিনি থিয়েটাব 
ছাড়ি দিতে চাহেন। 

পাঠকগণ জ্ঞাত আছেন, মনোমোহন বাবু মহেন্দ্রবাবুকে থিয়েটাবের 
এক তৃতীয়াংশ বথ্ব! দিয়া, এ পর্যান্ত এক সঙ্গে মিনাত! চালাইয়া 
আসিতেছিলেন । এক্ষণে তিনি, থিয়েটারের বথেষ্ট সংস্কার সাধন করিলেও, 
প্রথমে যে বাইট হাজাঁব টাকায় তিনি মিনার্ত থিয়েটাব খবিদ করিয়াছিলেন 
এবং থিয়েটার-সংলগ্ন যে নূতন হোটেল-বাঁটী নির্দশীণ কবিতে তাহার ছয 
হাঁজাঁব টাক! খরচ পড়িয়াছিল,__তাহার এক তৃত'য়াংশ অর্থাৎ মোট বাইস 
হাজার টাক! লইয়া তিনি মহেন্দ্বাবুকে বখ্বা-বিত্রয় কবাল। লিখিয়া দেন। 


সপগুচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৭৭ 


উৎকৃষ্ট সাজসরঞ্জাম এবং লন্বপ্রতি্ঠ অভিনেতা ও অভিনেত্রী-পরি- 
বৃত মিনার্ত৷ থিয়েটারেব পূর্ণ অধিকাৰ পাইয়া, মহেন্্বাবু মনোমোহন- 
বাবুকে তাহার অংশের নিমিত্ত মাসিক ১৮০. আঠার শত টাঁকা করিয়া 
ভাড়া দিতে স্বীকৃত হন, এবং ১৩১৮ সাল, আষাঢ় মাস হইতে মনোমোহন 
বাবুৰ নিকট দশ বসবেব লিজ লইয়৷ থিয্নেটাব চাঁলাইতে আরম্ভ করেন। 
সহসা এই পরিবর্ভনে থিয়েটারে একটা বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হয়। ২রা 
আষাঢ়, শনিবার, স্বর্গীয় অতুলরুষ্ণ মিত্রেব “রকম ফের” নামক নৃতন 
গীতিনাঁট্যের প্রথম অভিনয় রজনী ঘোষিত হুইবাব পব, এই গীতিনাঁট্যের 
প্রধান নারক এবং আরও দুই এক জন গুণী ব্যক্তি তৎপূর্ব্ব বুহম্পতিরাঁর 
রাত্রে কর্ম পরিত্যাগের পত্র প্রেরণ কবেন। শুক্রবার প্রাতে মহেন্দ্রবাবু ব্যস্ত 
হইয়া গিরিশচন্দ্রের নিকট এই বিপদবার্তা জ্ঞাপন করিলেন, এবং সদুপায় 
নির্দেশের নিমিত্ত বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ কবেন। কর্মবীব গিরিশচন্দ্র 
তৎক্ষণাৎ থিয়েটাবে আসিয়া অভিনেতৃবর্গকে উৎসাহিত করিলেন, এবং 
বাগ্ধকা ভুলিয়া! স্বয়ং উক্ত গীতিনাঁট্যে 'জালিমএর ভমিকাভিনয় করিয়। 
বিশৃঙ্খল সম্প্রদায়ে শাস্তি স্থাপন কবিলেন। যৌবন হইতে বার্ধক্য পর্যস্ত 
তাহাব এই অদম্য উৎসাহ ও কাধ্যদক্ষত1-গুণেই তিনি, যখন যে থিয়েটাবে 
থাকিতেন, সেই থিয়েটাব সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করিয়া থাকিত। অন্ত, 
সম্প্রদায় যে তাঁহাঁব সম্প্রদায়কে কোনও অংশে ক্ষুপ্ন করিবে, তাহ! তিনি, 
কোনও মতে সহা করিতে পাবিতেন না। তিনি স্বাস্থ্যরক্ষায় সাবধানী 
ছিলেন, কিন্ত কাধ্য-সমুদ্রে একবার ঝণপাইয়। পড়িলে স্থাস্থ্যেব প্রতি 
লক্ষ্য বাখিয়! কার্য্য কর! তাঁহার পক্ষে আর অসম্ভব হইত। উপধু্পরি 
অভিনয়, থিয়েটারের সর্ধবিষয়ে তন্বাবধান, একসঙ্গে ছুইথানি পুস্তক 
(গীতিনাট্য ও প্রহসন) লিখিতে আরন্ত করিয়া তাহাব পৰিশ্রম বড়ই, 
অতিরিক্ত হইয়া উঠিল । 


৫৭৮ গিরিশচন্দ্র 


৩০শে আধাঢ়, শনিবার, মিনার্ভা থিয়েটারে “বলিদান নাটকে তিনি 
করুণাময়ের ভূমিকা গ্রহণ করিবেন বলিয়া বিজ্ঞাপিত হয়। সেদিন 
সন্ধার পর হইতেই বৃষ্টি হইতেছিল। যখন তিনি থিয়েটারে উপস্থিত 
হইলেন, তখন মুষলধারে বৃষ্টি পড়িতেছে। অতি অল্প দর্শকই তখন 
উপস্থিত, অনুমান ৫*২ টাকার অধিক টিকিট বিক্রয় হয় নাই । মহেক্র- 
বাবু বলিলেন, “এই দুর্য্যোগে ও এত অল্প বিক্রয়ে নিক্ষচল অভিনয়ে, আপ- 
নার আর ঠাণ্ডা লাগাইয়। স্বাস্থ্যভঙ্গ করিবার প্রয়োজন নাই ।” কিন্তু 
গিরিশচন্দ্রের “করুণাময়” অভিনয় দর্শনের নিমিত্ত সেই দারুণ দৃষ্যোগেও 
ক্রমশঃ দর্শক সমাগমে প্রায় চাবি শত টাঁকার টিকিট বিক্রয় হইল। তখন 
গিরিশচন্দ্র বলিলেন, “এই ভীষণ দুর্যোগে মুধলধারায় বৃষ্টি উপেক্ষা! কবিরা 
ধাহারা আমার অভিনয় দর্শন করিতে আসিয়াছেন, আমি তাহাদিগকে 
বঞ্চিত করিব না, ইহাতে স্বাস্থ্যভঙ্গ হয়, তাহাব আর উপায় কি?” হার, 
তখন কে জানিত যে বঙ্গালয়ে সেই কাল রাত্রি তাহার শেষ অভিনয় 
রজনী! করুণাঁময়ে চবিত্রাভিনয়ে বহুবার অনাবৃত গাত্রে বঙ্গমঞ্চে 
আসিতে হইত। সেই ভীষণ রজনীর দারুণ শীতল বায়ুস্পর্শে তাহাব 
বিশেষ ঠাণ্ডা লাগে, পরদিন হইতেই শরীর অসুস্থ হয়। হোমিওপ্যাথিক 
,চিকিৎসা হইতে লাগিল। কিন্তু শরীরেব গ্লানি কোনও মতে যায়, না, 
ক্রমে হীপও দেখ! দ্িল। ভাঞঙ্রমানে কতিপয় সুহাদের পরামর্শে তিনি 
সুপ্রসিদ্ধ কবিরাজ ও পণ্ডিত শ্রীযুক্ত শ্যামাদাস বাঁচস্পতি , মহাঁশয়েব 
চিকিৎসাধীন হন। কবিরাজ মহাশয় বলিলেন, “আপনাকে শীঘ্রই 
নীরোগ করিতেছি, স্স্থদেহে আপনাকে প্রত্যহ গঙ্গান্নান অভ্যান করাইয়৷ 
দীর্ঘজীবী করিব” প্রকৃতই কবিরাজ মহাশয়ের চিকিৎসা-নৈপুণ্যে দিন 
দিন তিনি আরোগ্যলাভ করিতে লাগিলেন। কবিরাজ মহাশয় প্রায় 
প্রত্যহই আসিতেন। পূর্ব দুই বৎসরের স্তাঁয় এ বংসরও আশ্বিন মাঁসে 


সগুচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৭৯ 


কাশী যঃইবার কথা, কিন্তু কবিরাজ মহাশয়ের চিকিৎসার অক্কৃবিধা! হইবে 
বলিয়া অপেক্ষা করিতে করিতে কার্তিক মাঁস কাটিয়া গেল। এই অবস্থা- 
তেও তিনি বাটীতে অভিনেতৃগণকে আনাইয়া! অল্পে অল্পে তাহার পূর্বব- 
রচিত “তপোবলের” শিক্ষাদানকার্য্য সমাধান করিতে লাগিলেন । 
ও্রক্ডিঞব্রমন্নি 

এই সময়ে ১৩১৮ সাল, আশ্বিন মাসে গিরিশচন্দ্রের রচিত যাঁবতীয় 
কবিতা সংগৃহীত হইয়া “প্রতিধ্বনি” নামে একখানি গ্রন্থ বাহির হয়। 
সাহিত্যবথী ত্বর্গীয় অক্ষয়চন্দ্র সরকার ইহাব ভূমিকা লিখিয়া দিয়াছিলেন। 
প।ঠকগণের গ্লীতির নিমিত্ত প্রথম কিয়াদংশ উদ্ধত করিতেছি £-- 

'ৃশ্তকাব্যে ব নাটকে, কবিব শক্তিরই প্রচুব পরিচয় পাওয়া যাঁয় বটে, 
কিন্তু তাহার বোধ-বেদনাব সম্যক পবিচয় পাওয়া যায় না। মনের পরিচয় 
পাওয়া গেলেও তাহার হৃদয়ের পরিচয় ভালরূপ পাওয়া যায় না। কবি 
গিরিশচন্দ্রেব শক্তির পরিচয় তাহার রচিত নাটকাবলীতে আমরা যথেষ্ট 
পাইয়াছি, কিন্তু সেইগুলি হইতে আমরা তাহার হাদয়ের পরিচয় যে 
সেইরূপ পাইপ়্াছি, তাহা বোধ হয় না। পরের মুখে ঝাল খাওয়া যেরূপ 
অসম্ভব, মধুর স্ব'দ লওয়াও সেইরূপ অসম্ভব । আবার পরের মুখে রসগ্রহ 
হওয়া যেরূপ অসম্ভব, পরের মুখ দিয়া হৃদয়ের কথ! প্রকাশ করাও 
সেইরূপ অসম্ভব। সেক্সপীয়ারেব নাটকগুলি পড়িয়!, তাহার (81170. ৪70 
1115 46) শক্তি এবং কলা-কৌশল বুঝিতে পারা যায়, কিন্ত এ গুলিতে 
সেক্সপীয়ারের বোধবেদন| ভাঁলরূপ বুঝিতে পারা যায় না। তাহার জন্ত অন্তত্র 
অনুমন্ধান আবশ্ক। কৰি গিরিশচন্দ্রকেও বুঝিতে হইলে, কেবল তাহার 
নাটকগুলি পড়িলে বা দেখিলে হুইবে না, অন্তত্র অনুসন্ধান আবশ্তক ৷ 

কবতায় কাবর মনের ভাব কুটিয়া উঠে। কবিতার তিতর দিয়া 
কবির বোৌধ-বেদনা বেশ বুঝা যাঁয়। নাটকে তেমন যায় না। নাটক 


৫৮০ গিরিশচন্দ্র 


কতকটা কৃত্রিম । কবিতা অপেক্ষাকত সহজ, স্বাভাবিক, সরল ও 
সাদামিদে। কবি ভাবেব আবেগে সরল মনে যাহা বলেন, তাহাই 
কবিতার আকারে প্রকাশিত হয়। 

কবি গিরিশচন্দ্রকে সম্যক বুঝিতে হইলে, তাহার নাটকও দেখিতে 
হইবে, তাহার কবিতাগুলিও পড়িতে হইবে। সাহিতা-সেবক পাঠক 
বলিবেন, সে সকল আমরা পড়িয়াছি, শুনিয়াছি। শুনিয়াছেন বটে, 
তখন সেগুলি ছিল ধ্বনি--_এখন শুনুন ওভ্ডঞ্র্লন্নি । ধ্বনি ক্ষণস্থায়ী, 
প্রতিধ্বনি আবহমান কাল থাকে ।” ইত্যাদি 

কাঁশিমবাঁজারাধিপতির নামে গ্রন্থথানি উতৎসর্গীকৃুত হইয়াছিল। 
নিম্নে উদ্ধত করিলাম $-_ 


“কাসিমবাজারাধিপতি অনারেবল্‌ মহারাজাধিরাঁজ 
মণীক্দ্রচন্দ্র নন্দী মহোদয় সমীপে 


মহারাজ, _বাল্যকালের সকল ব্যক্তি ও বস্তর প্রতি মহারাজেব 
আদর। সেই সময় “নলিনী” মাসিক পত্রিকার আমার বে সকল কবিতা 
বাহির হইত, তাহা মহারাজেব আদবের ছিল। সেই কবিতাগুলি একত্র 
করিয়া মুদ্রিত করিয়াছি এবং তাহার সহিত, এ পধ্যন্ত যে সমস্ত কলিতা 
প্রকাশিত হইষাঁছে, তাহাঁও যোগ কবিলাম। বাল্যে যাহ মহারাঁজেব 
আদরের 'ছিল, সেই আঁদরেব পরবন্তী কবিতাগুলিও আদর পঁইবে, এই 
সাহসে রাজ-হস্তে শুভিগ্রল্রম্ি অর্পণ করিলাম । আশা! পূর্ণ হইলে 
পরম সম্মানিত হইব। চিবান্ুগত-_শ্রাগিরিশচন্দ্র ঘোষ ।” 

গ্রন্থের গ্রচ্ছদ-প্ঠায় নিয়লিখিত কবিতাঁটী উদ্ধৃত হইয়াছিল £__ 

৭0ঘ ৪%৪9668৮ ৪00%5 8:56. 01705667096 91] ০07 880068% 
90190910.৮ 9791197. অতীব মধুব_অতি করুণ সঙ্গীত |” 


সপ্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৮১ 


ভ্ত্গান্খভল 


কলিকাতা, বহুবাঁজারেব সন্ত্রান্ত মতিলাল পরিবাঁবেব বংশধর এবং 
গিবিশচন্দ্রেব পবম ন্নেহভাঁজন শ্রীযুক্ত শ্রীশচন্ত্র মতিলাল বনুপূর্বেধ গিরিশ- 
চন্দ্রকে “বিশ্বামিত্রঁ নাটক লিখিতে অন্কুবেধ করেন। এই লইয়াই 
গিবিশচন্দেব সহিত মযতিলালেব প্রথম পবিচয়। অবসর পাইলেই 
মতিলাঁল বাবু তাহার অন্ঠবোধ ম্মবণ করাইয়া দিতেন। কাশীধামে 
অবস্থানকালীন সেই অন্গরোধ কাঁ্যে পবিণত হয়। “রামক্চ-সেবাশ্রম' 
লাইব্রেবী হইতে রামায়ণ আঁনাইয! তৎপাঁঠে গিবিশচন্দ্র “তপোবল, 
শিখিতে আরন্ত কবিলেন। 

কাঁশীধামে “তপোবল” বচিত হইলেও «মিনার্ভা”ব অবস্থা পরিবর্তন 
এবং তাহাঁব কঠিন পীড়াবশতঃ প্রায় দশ মাস পরে নাটকথানি ২বা 
অগ্রহায়ণ (১৩১৮ সাল) মিনার্ভী থিবেটাবে প্রথম অভিনীত হয়। 
প্রথমাঁভিনয় বজনীব অন্ডিনেতা ও অভিনেত্রীগণ £-_- 


বিশ্বামিত্র-_শ্রীন্বেন্দ্রনাথ থোষ (দানিবাবু ), বশিষ্ঠ পণ্ডিত শ্রীহরিভূষণ ভট্টাচার্য্য, 
্রঙ্গা ও বিশ্বামিরেৰ সেনাপতি-_শ্রীসত্যেন্্রনাথ দে. ব্রহ্মণ্যদেব- এ্ীমতী -নীর্দাহুন্দরী, 
ইন্দ্র ও কল্মাষপাদ---শ্রীহীব।লাল চট্টোপাধ্যায়, ধর্মবাজ__প্রীনবেন্দ্রনাথ সিংহ, অশ্ি ও ম 
্রাক্মণ-__ননীলাল দত্ত, শক্তি, ও অন্ববীষেব" পুবোহিত- এ অহীন্ত্রনাথ দে, ত্রিশঙ্কু-_ জীপ্রিয়- 
নাথ'ঘোষ, অন্ববীষ ও বিশ্বামিত্রেব মন্ত্রী-_শ্রীনগেন্্রনাথ ঘোষ, সদানন্দ- প্রীমন্মথনাথ পাল 
( হাদুবাবু ), যুববাজ-_্রীখগেন্্রনাথ দে, শুনঃশেফ-_ শ্রীমতী শশীমুখী, পরাশর- পারুল- 
বালা, ব্রহ্বুদূভ ও অন্বরীষেব ১ম দূত- শ্রীমৃত্যুপ্য় পাল, «য় ব্রাহ্মণ ও বিশ্বামিত্রের সভাসদ-_ 
প্রীউপেন্দ্রনাথ ৰসাক, নগৰ বক্ষক-_প্রীজিতেন্ত্রনাথ দে, ঘোষণাকাবী ও অন্ববীষের বয় 
দূত- শ্রীমধুতুদন ভট্টাচার্য, বেদসাতা- এীমতী নবীহন্দরী, হুনেত্রা- এমতী তাবাহুন্দরী, 
,অকন্ষতী- শ্রীমতী প্রকাশমণিঃ বদরী-_তিনকড়ি দাসী, অনৃষ্ঠস্তী- শ্রীমতী র্লাজবালা, 
মেনকা-_শ্রীমতী সরোজিনী ( নেড়। ), রস্তা- প্রীমতী চীকশীলা, উর্ধ্বশী--গ্রামতী তিনকড়ি 
( ছোট ), দ্ৃতাটী-প্রফুল্পবাল! ইত্যাদি । স্বত্বাধিকারী-_মহেন্দ্রকুমার মিত্র এম-এ, বি-এল, 


৫৮২ গিরিশচন্দ্র 


অধ্যক্ষ_গিরিশচন্্র ঘোষ, শিক্ষক- গির্িশচন্্র ঘোষ ও পণ্ডিত এহবিভূষণ ভট্টাচার্য), 
সঙ্গীত-শিক্ষক_ গ্রীদেবক্ঠ বাগ্চি, নৃত্য-শিক্ষক- শ্রীসাতকডি গঙ্গোপাঁধ্যায, বঙ্গতৃমি- 
সজ্জাকর-_ত্রীকালীচরণ দাস। 

ইত্তিপূর্ব্বেই কোহিহ্থর থিয়েটারে “বিশ্বামিত্র” নাম দিয়! একখানি নৃতন 
নাটকের অভিনয় চলিতেছিল, সুতরাং মিনার্ভায় যখন “তপোঁবল” খোলা 
হইল, তখন আর বিষয়েব নৃতনত্ব বহিল না। তাহা হইলেও তপোঁবলেব 
অভিনবত্ব দর্শকগণকে অপর্যাপ্ত আনন্দদাঁনে সমর্থ হইয়াছিল । বিশ্বা- 
মিত্র, বশিষ্ঠ, সদানন্দ, ব্রহ্মণ্যদেব, স্ুনেত্রাঃ বদবী প্রভৃতি প্রত্যেক ভূমিকাই 
দর্শকগণেব হৃদয়স্পর্শী হইয়াছিল, তাহার প্রধান কারণ, পীড়িত গিবিশনন্ত্র 
বাটাতে বসিয়া শিক্ষাদান ব্যতীত থিষেটাবে আসিতে ন! পাবায়, মহেন্্- 
বাবু হরিভূষণ বাবুকে লইযা! স্বয়ং শিক্ষাদীন করিতেন এবং বাহাতে 
অভিনয় নিখুত হয়, তদ্বিষয়ে বিশেষ ঘত্ত্রশীল হইয়াঁছিলেন। 


গ্েক্রিশ-প্রভিভ্ডা 


“তপোঁবল”-__কবি-প্রতিভাব শেষ দীপ্তি। তপঃ-গৌবব এবং ব্রাঙ্ষণ্য- 
মাহাআ্য-_এরই নাঁটকেব মূলীভূত বিষয। গিবিশচন্দ্র নাটকের শেষে 
বলিয়াছেন, ্নবত্ব দুর্লভ অতি বুঝুক মানব । 

নাহি জাতির বিচাব, 
লভে নব উচ্চ পদ তপোবলে 1” 

“ব্রাহ্মণ” সম্বন্ধে নাটকেব শেষ দৃশ্যে (৫ অঙ্কঃ ৬ গর্ভাষ্ক ) তিনি 

বলিয়াছেন “হে ব্রাহ্মণ 
বুঝি নাই মাহাত্ম্য তোমাব। 
যজ্ঞস্ব্রধারী, দেবতাঁর দেবতা ব্রাঙ্গণ !» 

রামায়ণ এ নাটকের মূল ভিত্তি হইলেও অভিনব সৃষ্-চাতুর্যে এবং 
নৈপুণ্যে ইহাকে সম্পূর্ণ নৃতন নাটক বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। গিরিশ- 


সপ্তচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৮৩ 


প্রতিভার শেষ দীপ্তি হইলেও ইহা তাহার মধ্যাহু-গৌরবে গৌরবাস্বিত। 
'তপোবলঃ নাটকের পরিণাম-দৃশ্ঠের কল্পনা যেমন নূতন-_তেমনই 
অতুলনীয় । ভাষা ও ভাবেব উচ্চতায়, রস-বৈচিত্র্যে এবং চরিত্রের ক্রম- 
বিকাশে--ইহ! গিরিশচন্দ্র প্রথম শ্রেণীর নাটকের সমকক্ষ । 
বশিষ্ঠ এবং বিশ্বামিত্রকে কেন্্র করিয়। এই নাটকেব রস এবং ঘটন। 
আবত্তিত হইতেছে । একদিকে বিশ্বামিত্র যেমন ক্ষত্রিয়-তেজে চঞ্চল, 
নঞ্ধা-বিক্ষুৰ সাগরেব ন্যায় আলোড়িত, _অন্তদিকে বশিষ্ঠদেব তেমনি 
্রাহ্মণ্য-মহিমায় স্থিব, ধাঁব, মেরুর ন্যায় অটল । সাগব-তরঙ্গ শৈলমূলে 
আছাড়িয়! ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে, কিন্তু পর্বতকে টলাইতে পাঁরিতেছে না১__ 
নিক্ষল আক্রোশে প্রতিহত হইতেছে, পাঠক এই অপূর্ব দৃশ্য “তপোবল, 
নাটকে দেখিবেন। বিশ্বামিত্র এবং বশিষ্ঠ ব্যতীত নাটকে প্রায় অন্ান্ 
সকল চবিত্রই অভিনব । 
স্থনেত্রা এবং অকন্ধতী উভয়েই সতীত্ব-মহিমায় মহিয়সী, কিন্তু চবিত্রে 
পবম্পব বিভিন্ন । নাঁটকেব উচ্চভাব-তরঙ্গে বিলাসিনী অগ্সরাও নবভাবে 
ভাঁবিতা __বিশ্বামিত্রেব প্রেমাকাঁজ্কিণী । স্বর্গে কেবল ভোগ, কিন্তু প্রেমের 
আদান-প্রদানে মর্ত্য- স্বর্গ হইতেও ধন্ত। ইন্দ্রের আদেশে মেনকা 
বিশ্বামিত্রকে ছলনা কবিতে আসিয়া বলিতেছে, “বিশ্বামিত্র ধর্দি আমায় 
পাঁয়ে স্থান দেন, আমি দেববাঁজেব শচী হবাব বাঞ্চা কবি না।৮ (৩য় অন্কঃ 
৪র্থ গর্ভাঙ্ক ) রস্তা যখন মেনকাকে প্রশ্ন করিল, 
“ত্যজিয়ে অমরে, নরে ভজিবারে 
সাধ কি অন্তরে তব ?” 
মেনক! উত্তরিল,__- 
"যদি নাহি কর উপহাস, 
হৃদয়েব সাধ মম করি লো প্রকাশ। 


৫৮৪ গিরিশচক্্র 


যাই যবে ধরণী ভ্রমণে, 

উঠে মম মনে, 

প্রেমের বন্ধনে বঞ্চে স্থথে নর-নারী। 

উদ্বাহ-বন্ধন--প্রাণে প্রাণে অপুর্ব মিলন! 

দেহ দান-_ প্রাণ যাবে চায়, 

নহে কাম-পিপাসায়, 

যখন যে চায়, সেবিতে তাহায়, 

স্বগেব মতন, নিয়ম নহেক তথা । 

নাহি হৃদয়-বন্ধন, 

কামক্রিয়া হেতু সম্মিলন, 

সত্য কহি, ধিককাব জন্মেছে মম প্রাণে ! 

ত্রিদিব মগ্ডলে 

ক্রীতদাসী আমরা সকলে, 

ধবা-নিবামিনী 

ভাগ্য মানি বতেক বমণী! 

প্রেমে দেহ বিতবণ--ধবার নিয়ম |” ( ৩র অঙ্ক, ১ম গর্ভাঙ্ক ) 

আমরা যতদূর দেখিয়াছি, গিরিশচন্দ্রেব পূর্বের আব কেহ ব্্গসাহিত্যে 
প্রইরূপ নৃতনভাবে অগ্গরা-চরিত্র অঙ্কিত করেন নাই। ৃ 
এ নাটকের আব এক নূতন স্য্টি-_“সদানন্ন'- _রাজ-বিদুষক। 

কৌতুকে__রহস্তে- রঙ্গে এবং সর্বোপরি অকৃত্রিম সৌহার্দ্যে ও আত্মত্যাগে 
সদাশয় সরল ব্রাহ্ণ__অসামান্ত মহিমায় মহিমান্বিত । সংস্কত নাটকেব 
বিদ্ধধক সাধারণতঃ রাজার প্রেমমন্ত্রীরূপে চিত্রিত হইয়া থাকে । কিন্তু 
গিরিশচন্দ্রের চিত্রিত সকল বিদুষক চরিব্রই নাটকীয় ঘটনার সহিত ঘনিষ্ট" 
ভাবে লিপ্ত। 


সগুচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৮৫ 





সদাঁননদ ও রক্রণাদাবব ভমিকাঁয়-- 


৫৮৬ গিরিশচন্দ্র 


বেদমাতা এবং ব্রহ্গণ্যদেবের চরিত্র স্বতঃই মনের মধ্যে মহান এবং 
গাণ্ভীর্্যময় ভাবেব উদ্রেক করে ; কিন্তু গিরিশচন্দ্র বহ্ষণ্যদেবকে রসে__ 
রঙ্গে সমুজ্জল করিয়। এইরূপ মানবীয়ভাবে পরিষ্ষট কবিয়াছেন যে 
দেখিলে বিস্মিত হইতে হয়। অথচ পবিণামে ইহাঁর আত্মপ্রকাশ অতি 
সহজভাবেই সাধিত হইয়াছে । বেদমাতা কার্্যক্ষেত্রে অবতীর্ণ এবং 
ঘটনার সহিত ঘনিষ্ঠভাবে লিপ্ত হইয়াও ককণায় এবং হিতৈষণায় অপৰপ 
গাী্য ও মাধুধ্যে পবিস্ফুট হইয়াছে । বিশ্বামিত্রের স্জিত তক, লতা, 
ফল, পুষ্প ও নব ন্বর্ণ নির্মাণে গিবিশচন্দ্র অতি কৌশলে আধুনিক 
বৈজ্ঞানিক ক্রম-বিকাঁশেব আভাস দিয়াছেন । 
আমবা পাঠকবর্গকে কয়েকটা বিষরেব ইঙ্গিত করিলাম মাত্র । অভিনয় 
দর্শনে ব| নাটক পাঠে দর্শক এবং পাঠক বুঝিবেন বে মৃত্যুব বৎসবেক 
পূর্ব্বে “তপোবল” রচিত হইলেও গিরিশচন্দ্রেব প্রতিভা তখনও 'অগুমাত্র 
কুগ্ন হয় নাই। গ্রন্থখানি শ্রীবিবেকানন্দেব শ্রীচবণাশ্রিতা-_গিবিশচন্দ্রের 
অশেষ স্নেহ-ভাগিনী, পবলোকগতা সিষ্টীব নিবেদিতাকে উৎসর্গ কবা 
হইয়াছিল। যথা :-- 
“পবিত্রা নিবেদিতা, 
বংসে !--তুমি আগীব নূতন নাঁটক হইলে অ'মোঁদ করিতে। 
আমাব নৃতন নাটক অভিনীত হইতেছে, তুমি কোথায়? কাল 
দাঁঙ্জিলিং যাইবাঁব সময় আমায় পীড়িত দেখিয়। নেহবাক্যে বলিয়! 
গিয়াছিলে, “আসিয়া যেন তোমায় দেখিতে পাই 1, আমি ৫1 জীবিত 
রহিয়াঁছি, কেন বসে, দেখা করিতে আইস ন1!? শুনিতে পাই, মৃত্যু- 
শধ্যায় আমায় স্মবণ কবিয়াঁছিলে, যদি দেবকার্যে নিযুক্ত থাঁকির! এখনও 
আমায় তোমার স্মবণ থকে, আমার অশ্রপূর্ণ উপহার গ্রহণ কর। 
শ্রাগিরিশচক্র ঘোষ |” 


অষ্টচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৮৭ 


হ্ঠাঞ্প জঙ্গন্দীষ্পচত্রভ্র লজ 

বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক স্যাব্‌ জগদীশচন্দ্র বসু ও ডাক্তার শ্রীবুক্ত নীলরতন 
সবকার সি-আই-ই এবং সিষ্টীর নিবেদিতা একসঙ্গে দীর্জিলিং বেড়াইতে 
যান। গিরিশচন্দ্রের বিশ্বাস, ভক্তি এবং নাট্য-প্রতিভা সম্বন্ধে সিষ্টাব 
নিবেদিতা ইহাঁদেব সহিত প্রায়ই নানারূপ কথাবার্তী কহিতেন। নিদাঁকণ 
বোগশব্যায় শারিতা৷ হইয়াও তিনি পীড়িত গিবিশচন্ত্র কেমন আছেন জানি- 
বার জন্ত উৎকহ প্রকাঁশ কবিতেন। স্যাঁব জগদীশচন্দ্র দাঁজ্জিলিং হইতে 
ফিবিয়া আঁসিয়! গিবিশচন্দ্রেব সহিত সাক্ষাঁৎ কবেন, এবং সিষ্টাব গিবিশ 
চন্ত্রকে কিরূপ আন্তবিক ভাঁলবা সিতেন, মুগ্ধচিন্তে তাহ বর্ণনা কবেন। 


অধ্টচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ 


জীবন্নেল্র স্শেঅ হুস্ট- আহন্নিক্কা। 

কবিবাঁজ শ্রীযুক্ত শ্ঠামাদাস বাচস্পতি মহাঁশয়েব চিকিৎসায় প্রথমে 
যেবপ উপকার হইয়াছিল, তাহার পবৰ আব সেরূপ ফল দর্শিল না। 
এ দিকে তখন এন শীত পড়িয়াছে যে, সেরূপ দূর্বল অবস্থায় কোনও 
চিকিৎসক তাহাকে একেবাবে পশ্চিমেব দারুণ শীতেব ভিতর গিয়! 
পড়িতে পরামর্শ দিলেন না। শীতকালে কলিকাত। মহানগবী সন্ধ্যাব 
পব হইতে .কতক বাত্রি পর্য্স্ত ধূমে আচ্ছন্ন হইয়া থাকে,_-এই ধৃম 
শ্বাসের সহিত ফুসফুসে প্রবেশ করিয়া হাঁপানী-বোগীব বিশেষ যন্ত্রণাগ্রদ 
হয়। যেষে পল্লীতে বস্তি আছে, তত্বৎস্থলে ধূম অধিক পরিমাণে দুষ্ট 
হয়। গিরিশচন্ত্রেব বাঁটীব সন্নিকটে বস্তি থাকায়, ধুমে তাহার অত্যন্ত 
কষ্ট হইত। একে তিনি বাধুপথ রোধ করিয়া থাকিতে পারিততন নাঃ 
তাহাতে এই ধূমের উৎপাত । পশ্চিম তো যাওয়া হইল নাঃ_-কলিকাতায় 


৫৮৮ গিরিশচন্দ্র 


বা তাহাব কাছাকাছি এমন কোন স্থান পাওয়া গেল না, যেখানে তিনি 
ধূমের হাত হইতে পবিভ্রীণ পাইতে পারেন। সকলই বিধি-বিডস্বন| ! 

১৩১৬ সাল, মাঘ মাসের শেষভাগে প্রথম কাশীধাম হইতে আসিয়া, 
কলিকাতায় ধূমেব যন্ত্রণায় তিনি ঘুুডাঙ্গায় সাহিত্যিক ও স্থকবি শ্রীযুক্ত 
স্থরেক্রনাবায়ণ বাঁধ মহাশয়েব আগ্রহাতিশয্যে তাহাঁব “ম্বেন্্র কুটাবে* গিষা 
ফাল্গুন ও চৈত্র ছুইমাঁস অবস্থান কবেন। গিরিশচন্দ্রেব সঙ্গে আমিও 
তথায় থাকিতাঁম। স্থবেন্ত্রবাঁবু যেরূপ শ্রদ্ধা-ভক্তির সহিত তাহাঁর পবিচ্ধ্যা 
কবিয়াছিলেন, তাহা জীবনে ভুলিতে পাবিৰ না। এ বৎসবও পুনবায় 
ঘুঘুভাঙ্গা যাইবার কথা হয়, কিন্তু তথায় ম্যালেবিয়৷ জর হইতেছে শুনিয়া 
সে সন্কল্ল পরিত্যাগ কব! হইল । 

গিবিশচন্দ্র পুনবায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা অধীনে আমিলেন। 
তাহাঁব পূর্ধ-স্থহৃৎ খ্যাতনামা ভাক্তাব শ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র ববাট মহাশয় 
ক্সপ্রসিদ্ধ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ইউনিয়ন সাহেবকে লইয়া চিকিৎস! 
কবিতে আবন্ত কবিলেন। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় গিবিশচন্দ্রে 
যেমন আজীবন অনুবাগ ছিল, নিজেও হোমিওপ্যাথি মতে চিকিৎসিত 
হইতে ভালবামিতেন। ডাঁঃ ইউনিয়ান তীহার মহিত কথাবার্তায় এবং 
পূর্ব হইতে সতীশবাবুব মুখে তাহাঁব উক্ত চিকিৎসায় অভিজ্ঞতা বিষয় 
অবগত হইয়া যে ওষধেব বাবস্থা কধিতেন, তাহা তাহাকে জানিতে দিতেন 
না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষষ, গিবিশচন্ত্র অনুমান কবিয়া যে ছুই একটী 
'উষধেব উল্লেখ কবিতেন, তাহাব মধ্যে চিকিৎসকের প্রদত্ত ওষধেব নাঁম 
থাকিত। যাহা হউক ক্রমশঃ তিনি নিরাময় হইয়। আঁসিতে লাগিলেন। 
কিন্তু তখনও অতি দুর্বল, চিকিৎসকের পরামর্শে প্রত্যহ প্রাতে গড়ী 
কবিয়! একবার বেড়াইয়৷ আসিতেন। এইরূপে যখন মাঘ মাসের প্রায় 
অর্ধেক দিন অতীত হইল, তখন সকলের আশ! হইল, এ বসর ভালয় 


অফ্টচত্বারিংশ পরচ্ছেদ ৫৮৯ 


ভাঁলয় কাঁটিম্না গেল। কিন্তু হায় আশা! বার বার প্রতারিত হইয়াও 
মন তোমায় প্রত্যয় কবিতে চাঁয়! ২*শে মাঘ, শনিবার, আহারাদির 
পব গিরিশচন্দ্র শয়ন কবিয়া আছেন ; আমিও আহারাদি করিয়া 
বৈঠকথানাঁয় বিশ্রাম কবিতেছি। দ্বিতীরা ভার্য্যাব লোকান্তুর হওয়ার পর 
হইতে গিবিশচন্দ্র আঁব অন্তঃপুবে শয়ন করিতেন না। এই স্থৃপীর্ঘ দ্বিতল 





১ নি 


র্গ্রা 





বন্থার গিবিশচন্দ্র 
 বৈঠকখানাব এক প্রান্ত, কাষ্ঠেব প্রাচীব দ্বাৰা! বিভাগ করিয়া তিনি 
নিজেব শয়নকক্ষে পবিণত করিয়। লইয়াছিলেন। এই দ্বিতল বৈঠকখানাব 
সহিত গ্িবিশচন্দ্ের কত স্মৃতিই ন। বিজড়িত,__ইহাই তাহার অধ্যয়ন কক্ষ 
_ইহীই তীহার চিকিৎসালয় ; এই স্থানে প্রত্যহ পরিচিত, অপব্িচিত 


৫৯০ গিরিশচন্ছ 


বহু ব্যক্তির সহিত তাহার সাহিত্য, ধর্ম প্রভৃতি নানা বিষয়ের আলোচনা 
হইত। বহিঃসংসারের নান! ছুঃখ-তাপ জালায় উত্যক্ত কর্ম-ক্রান্ত-জীবন__ 
এই কক্ষে আসিয়া পবম শান্তি লাভ করিত ! এই কক্ষই তাহার অমর- 
কবি-কল্পনার লীলা-বিলাস ভূমি! এই কক্ষই শ্রীশ্রীরামকৃষ্দেবের পদধূলি 
রক্ষে ধারণ করিয়া গয়া-গঙ্গা-বারাণসীব স্ঠায় তীর্থ-মহিমায় মহিমান্বিত ! 
এইথানে অমব মহাঁকবিব অস্তিম শ্বাস অনন্তে বিলীন হইয়াছে। 

বলিয়াছি, গিবিশচন্দ্র শয়ন করিয়াছিলেন । ক্ষণেক পবে আমায় 
ডাঁকিরা বলিলেন, “তুমি কি কোথাও বাহিব হইবে?” আমি বলিলাম 
“না” । তিনি বলিলেন, “আবশ্যক থাকিলেও কোথাও বাহির হইও না, 
আমি বড়ই অন্গুথ অনুভব করিতেছি ।” বেল৷ ৪টাব সময় তিনি পুনরায় 
আমায় ভাকিয়! 15007996019 লইতে বলিলেন । আমি [57000678505 
লইয়া! দেখিলাম, ১*২ ডিগ্রী জর! একটু ইতস্ততঃ করিয়। তাহার ভ্রাতা 
অন্ধাম্পদ অতুলকৃষ্ণবাবুর পরামর্শান্ুসারে অরের পরিমাণের কথা তাহাকে 
জ্ঞাপন করিলাম । তিনি বলিলেন, “সেইজন্তই এত অনুস্থতা বোধ 
করিতেছি ।” অতুলবাবু ততক্ষণাৎ চিকিৎসকগণকে সংবাদ দিলেন। 
চিকিৎসকগণের ব্যবস্থামত গিরিশচন্দ্র গষধ সেবন করিতে লাগিলেন । 

শনি ও রবিবারের পর সোমবারে ৯৮ ডিগ্রী উত্তাপ দর্শনে সকলেই 
আশ্বস্ত হইলেন। কিন্ত দেহের উত্তাপ দিন দিন হাস হইতে লাগিল। 
আমার উপর উত্তাপ পরীক্ষা করিয়! লিপিবদ্ধ করিবার এবং যথাসময়ে 
ওষধ খাওয়াইবাব ভার ছিল। মঙ্গলবার ৯৭ ও বুধবার ৯৬ ডিগ্রী উত্তাপ 
দেখিনা আমি বলিলাম, “এ কি আশ্চর্য্য, উত্তাপ বে প্রত্যহ কমিতেছে ৮ 
গিরিশচন্দ্র হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “দেখিতেছ কি, ক্রমে 001181)59 
হুইবে।” আমি সভয়ে বলিয়া উঠিলাম, “অমন কথা বলিবেন না!” তিনি 
গম্ভীর হইয়া রহিলেন, কোনও উত্তর দিলেন না । 


অষ্টচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৯১ 


ক্রমশঃ, শয়ন করা তাহার পক্ষে কষ্টকর হুইয়! উঠিল। শুইলেই 
খবাসরুদ্ধ হইয়া আসে। সোমবার রাত্রি কখনও শুইয়া কখনও বসিয়া 
অনিদ্রায় কাটিল। মঙ্গলবার সমস্ত রাত্রিঃ শয়ন করা দূরে থাক্‌, একটু 
বালিশে হেলান দিলেই দারুণ বন্্ণা বোধ করিতে লাগিলেন। রাত্রি 
২টার পব আমাকে শয়ন করিতে বলিলেন। অন্যান্ঠ ব্যক্তি জাগিয়া থাকায় 
এবং উপযু'পরি রাত্রি জাগরণে আমাব যে একটু বিশ্রামের প্রয়োজন, সে 
অবস্থাতেও তিনি তাহ! লক্ষ্য রাখিয়াছিলেন। আমি শয়ন করিতে ইতন্ততঃ 
কবায় তিনি বলিলেন, “অবুঝ হইও ন!, পালা করিয়। জাগো, তুমি পড়িলে 
বড়ই মুস্কিল হইবে। ইহাবা তে। রহিয়াছে ।” * আমি নিরুত্তর হইয়া 
শয়ন কবিলাম। কিন্ত নিদ্রা কোথায়? ঘড়িতে ৩টা বাজিল--শুনিলাম। 
এমন সময়ে গিরিশচন্দ্র যেন হ্ৃদয়েব সমস্ত আবেগ সঞ্চিত ও কেন্দ্রীভূত 
করিয়া অতি করুণকঠে তিনবার “রামকৃষ* নাম উচ্চারণ কবিলেন। 
শুনিয়াই আমি শিহরিয়! উঠিলাম। তাহার একপ কণম্বব আঁর কখনও শুনি 
নাই। সে আকুল আহ্বান প্রকাশ করিবাব সামর্থ্য আমার নাই ! নিমিষে 
আমার মনে হইল, যেন তিনি স্বীয় ইঠ্টদেবতা শ্রীশ্ররামকৃষ্ণদেবকে 
আত্মনিবেদন করিয়া দিয়া বলিতেছেন,-পপ্রভূ, আর কেন, শান্তি দাও 
- শাস্তি দাঁও-_শাস্তি দাও!” আমি তৎক্ষণাৎ উঠিয়। বসিলাম। 
আমাকে সহপ1 উঠিতে দেখিয়া, তিনি যেন ধ্যানভঙ্গের ন্যায় চকিত হইয়া 
বলিলেন--উঠিলে যে?” আমি বলিলাম, “ঘুম হইল না” চতুষ্পার্খে 


সপ পর ্্স্্্ পপ সা (পপ | পি সস সপ পর পর সপ 


* শ্রীযুক্ত বশীশ্বর সেন বি, এ, এবং আযুক্ত মতীশ্বর দেন (টাবু বাবু) ত্রাতৃযুগল 
শেষ রাত্রে জাগিবার জন্য এ সময়ে কক্ষান্তরে নিদ্রা যাইতেছিলেন। তাহাবা যেবপ কায়- 
মনে গিরিশচন্দ্র মেবা করিয়াছিলেন, তাহা! একমাত্র স্ুলস্তানের পিতৃ সেবায় সম্ভব। 
বামকৃষ্ণমিশন হইতে প্রেরিত গেবাপরায়ণ যুবকগণ এবং ব্রক্মচাবী হরিহর মুখোপাধ্যায়ের 
নামও এখানে উল্লেখযোগ্য । 


৫৯২ গিরিশচক্দ 


চাহিয়া দেখি, ঘাঁহাদের সে সময় জাগিবাব কথা, তাহাঁন! ঘুমাইয়া 
পড়িয়াছে। কিন্তু গিরিশচন্দ্রেব তাহাতে ভ্রক্ষেপও নাই | আমি কাহাকেও 
কিছু বলিলাম না, কিন্তু সেই বাত্রিতেই আমাঁব দৃঢ় বিশ্বাস জান্ময়াছিল, 
গিরিশচন্দ্র আমাঁদেব পবিত্যাগ কবিবেন ! আমি বলিলাম, “ন” বাবুকে 
ডাঁকিব?” তিনি বলিলেন, “ঘুম না হইলে তাহার অস্থথ হয়, এখন 
থাকৃ।৮ ৪ট! বাজিবাব পব বলিলেন, “অতুলকে তোলো |” আমি 
ভিতর বাটা হইতে ন,বাবুকে ডাকিয়া আনিলাম। গিবিশচন্দ্র ভ্রাতাকে 
বলিলেন--”একেবাঁরে নিদ্রা নাই, কিছু বুঝিতে পাঁরিতেছি ন11” 
সুবিজ্ঞ ভাক্তাব শ্রীযুক্ত বিপিনবিহারী ঘোষ, ডাঁঃ জে, এন, কাঞ্জিলালেব 
সহিত অতি সতর্কভাবে চিকিৎসা কবিতে লাগিলেন, কিন্ত কিছুতেই 
কিছু হইল না। সমস্ত বুধবার দ্রিবাবাঠি এই ভাবেই কাটিল, সমাগত 
সকলের রহিতই কথাবার্তা কহিতেছেন, কিন্ত নিদ্রা বাইবাব উপায় নাই; 
বলেন-__“খাড়া হুয়া বসিয়া কিবপে ঘুমাই_-এ কি হইল!” কয়েক 
সপ্তাহ পূর্বের স্থপ্রসিদ্ধ সাহিত্যবথী ন্বগাঁর অক্ষয়চন্্র সবকাব মহাঁশব 
গিবিশচন্দ্রকে দেখিতে আসিয়। চু চুড়াব “শিবপ্রিয়” নামক ওঁষধেব ধুম গ্রহণ 
করিতে বলেন, এবং চুঁচুডাষ গিয়৷ এক কৌটা পাঠাইরাও দেন। গিরিশচন্দ্র 
উক্ত ধুম গ্রহণ কবিয়৷ প্রথম প্রথম ফল পাইরাছিলেন. এ অবস্থাতেও তাহা 
ব্যবহাঁব কবিয়া কতকটা৷ শ্লেম্স! বাঁহিব হইয়া গেল। কিন্তু নিদ্রা যাইবাব 
কোন ওরূপ উপায় হইল না । ইতিপূর্ববে মিনা থিষেটাঁৰ ফবিদপুব 
এক্জিবিসনে বানায় গিযাছিল, দানিবাবুকেও (তাঁহার একমাত্র পুত্র 
শদ্ধেয় শ্রীনুক্ত স্বেন্ত্রনাথ ঘোষ ) যাইতে হইয়াছিল । সেইদিন ( বুধবাব ) 
সন্ধ্যাব পর অত্ুলবাবু দানিবাবুকে টেলিগ্রাম কবিলেন। কয়েক ঘণ্টা 
পবে তিনি আচ্ছন্ন অবস্থাতেই বলিলেন, “দাঁনি-_105888০.” অতুলবাবু 
হক্ষণাৎ বলিলেন, *হ্যা দানিকে টেলিগ্রাম করিয়াছি ।” তিনি আক 


অফ্টচত্বারিংশ- পরিচ্ছেদ ৫৯৩ 


কোনও উত্তর করিলেন না । বুধবাক়ও সমস্ত রাত্রি এইরূপ অনিদ্রীবস্থায় 
কাটিল। মাঝে মাঝে অবসন্নতাবশতঃ একটু একটু আচ্ছন্ন হইতে 
লাগিলেন। অকৃসিজেন্‌ শ্বাস গ্রহণ করিবার জন্য যন্ত্র আনয়ন কর! 
হইয়াছিল. তিনি ছুই একবার শ্বাস লইয়া! আর লইভে সম্মত হইলেন না । 

বুহম্পতিবাত্ব গ্র৫তে বঙ্গিলেন, “আমাকে সরাইয়া আমা বিছানা 
ঝাড়িয়া দাও” । তাহাই হছইল। বেল! ৯টার পর হইতে ধলিতে আরম্ত 
করিলেন “চলো” । আমবা ধলিলাম, “কোথায় যাইবেন ?* তিনি বলিলেন, 
“গাডী আসিয়াছে |» 

এইবপ ণচলো--চলো” প্রায়ই অতি আগ্রছেব সহিত বলিতে লাশি- 
লেন, অথচ জ্ঞান বেশ আছে। পর্লিচিত ব্যক্তিমাত্রকেই ছুই একটি কথা৷ 
ৰলেন। মেডিক্যাল কলেঙেব নুপ্রসিদ্ধ ডাক্তার ব্রাউন সাহেবের সহিতও 
কথ! কহিলেন। ডাক্তার সাহেব পবীক্ষান্তে “ীড়া সাংঘাতিক” বঙ্জিয়া 
প্রন্থান করিলেন । মধ্যাহ্ছকালে দেবেঞ্জ্রবাবু আসিয়া গিরিশচন্দ্রের কাছে 
বসিলেন। গিরিশচন্দ্র জল খাইতে চাহিলে দেবেন্দ্রবাবু জল দিলেন, তিমি 
স্বহন্তে গেলাস লইয়া পান করিলেন। দেবেন্দ্বাবু ছুই এক কোরা 
কমলালেবুও খাঁওয়াইয় দিলেন । কিন্তু কিছুতেই তাহাকে শয়ন করাইতে 
পারিলেন না। শেষে পুন:পুনঃ অন্বোধ করিয়া বুঝিলেন যে তাহার 
কথ! তিনি ধারণা করিতে পারিতেছেন না। তখন দেবেন্দ্রবাবু রামকৃষ্ণ-ভক্ত- 
জননী রশ্রীমার কথা তুলিলেন। বলিলেন,__“মার কাছে সংবাদ পাঠাব 
কি?” গিবিশচন্দ্র স্থিরভাবে কিছুক্ষণ দেবেন্দ্রবাবুর মুখের দিকে চাহিয়া 

"বলিলেন,--"দেখ, সব ভাল বুঝতে পাচ্চি নিঃ কেমন গুলিয়ে যাচ্চে ।” 

অপরাহ্কাল হইতে প্রায়ই আচ্ছন্ন হইয়৷ আমিতে লাগিলেন, এই 
সময়ে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করিলে তাহারই ছুই এক কথার উত্তর দিতেন 
মাত্র। পূর্বোক্ত "শিবস্রিয়” ওঁষধের ধুম গ্রহণে উপকার পাওয়ায় আর 


৫৯৪ ,শিরিশচন্দ্ 


চারি কৌটা ভ্যালুপেবেলে পাঠাইবার জন্য চু'চুড়ায় হারাঁণৰাবুকে পত্র 
পাঠাইয়াছিলাম। সেই সময়ে পিয়ন কৌটা! লইয়া আমিল। কেহ কেহ 
বলিলেন, “আর ওষধের প্রয়োজন কি ?” দেবেন্দ্রবাবু বলিলেন, “গিরিশদাদ। 
যখন স্বয়ং ভ্যালুপেবেলে ষধ পাঁঠাইতে লিথিয়াছেন, তখন গ্রহণ করা 
অবশ্য কর্তব্য |” ভ্যালুপেবেল গৃহীত হইল । কিয়ৎক্ষণ পবে গিরিশচন্দ্রেব 
আচ্ছন্নভাব একটু কাটিয়া গেলে আমি বলিলাম, “ভ্যালুপেবেল ডাকে 
“শিবপ্রিয়” আসিয়াছে |” তিনি বলিলেন, “টাক! দিয়াছ ?” আমি বলিলাম, 
“আজে হ্যা ।* তিনি বলিলেন, “বেশ করিয়াছ।” তখন বেল! প্রায় 
৪টা। কিয়ৎক্ষণ পরে আবার আচ্ছন্ন হইয়া পড়িলেন এবং এঁ অবস্থায় 
উচ্ৈঃস্বরে “শিবপ্রিয়* বলিয়া উঠিলেন। ক্রমে আচ্ছন্নীবস্থা উত্তরোত্তর 
বুছি হইতে লাগিল। কখনও “চলো”, কখনও নেশা! কাটিয়ে দাও”__ 
কখনও “রামকৃষ্” এইরূপ বলিতে লাগিলেন। 

রাত্রি ৮টার পর ফরিদপুব হইতে দানিবাবু আসিয়া পশ্থছিলেন। 
দানিবাবু আসিয়। যখন কাঁতরকণে “বাপি-_বাঁপি” বলিয়া ভাকিতে 
লাগিলেন, তখন পুক্রবৎসল পিতা কম্পিত হস্ত পুত্রশিরে অর্পণ করিয়া 
আশীর্বাদ করিলেন এবং জল চাহিলেন। পার্থে বেদানার রস ছিল, 
দাঁনিবাবু ব্যস্ত হইয়া খাওয়াইয়া দিলেন। কিঞ্চিৎ পান করিয়৷ ঘাড় 
নাড়িলেন। ফরিদপুর যাইবার সময়ে তিনি দানিবাবুকে বলিয়াছিলেন, 
“তুমি ঘুরিযা আইস, অনেক কথা আছে।” সেই কথা স্মরণ কবাইয়া 
দানিবাবু বলিলেন, প্বাপি, আমাকে যেকি বলিবে বলিয়াছিলে ?” 
উত্তরে তিনি কি জড়িতম্বরে বলিলেন, ঠিক বুঝা গেল না। ক্রমে 
আচ্ছন্্রভাব বাড়িতে লাগিল । চিকিৎসকগণ বলিলেন, “মহাশখ্বাস আরম্ভ 
হইয়াছে”। | 

সেদিন অপরাহ্ন হইতে বৃষ্টি পড়িতেছিল। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করিয়া 


অষ্টচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ ৫৯৫ 


রহুসংখ্যক রাক্তি তাহাকে দেখিতে আসিতে লাগিলেন, কারণ তীহার 
নঙ্কট অবস্থার সংবাদ সকাল হইতেই সহবে রাষ্ট্র হইয়৷ পড়িয়াছিল। 
রাত্রি ১২টার সময় ত্বামী সারদানন্দ প্রভৃতি শ্রীশ্রীরামকষ্চ পরমহংসদ্দেবের 
শিষ্প ও ভক্তগণ এবং স্তুপ্রসিদ্ধ নাট্যাচার্য্য শ্রীযুক্ত বাবু অম্তলাল বঙ্গ 
প্রভৃতি আত্মীয় স্বজনগণ তাহার ইঞ্টদেবের নাম গান আরম্ভ করিলেন। 
“রামকৃষ্ণ হরিযোল” ধ্বনিতে পল্লী পর্য্যন্ত প্রতিধবনিত হইতে লাগিল। 
রান্ত্রি ১টা ২০ মিনিটের (বৃহস্পতিবার, ২৫শে মাঘ, ১৩১৮ সাল) সময় 
গিরিশচন্দ্রের অস্তিমশ্বাস শ্রীশ্রীরামকষ্চ চবণে বিলীন হইল। তিন দিন 
অনিদ্রার পর মহাকবি মহানিদ্রায় মগ্ন হইলেন। 

পরদিন প্রভাত হইতে না হইতে শ্শ্রীরামকৃষ্ণদেবের অন্থান্ত ভক্তগণ ও 
বহুবিধ জনসমাগমে সমস্ত গৃহপ্রাঙ্গণ পরিপূর্ণ হুইয়৷ যাইল। মহাকবিকে 
'একবার শেষ দর্শন করিবার নিশিত্ত সকলের এরূপ আগ্রহ, যে, জনতার 
সুশৃঙ্খলতাঁসাধন একপ্রকার অসম্ভব হুইয়৷ উঠিল। নাট্যসম্রাটকে 
কিরূপে সাজাইয়৷ কিরূপ সমাবোহে শ্মশানে লইয়া যাওয়া হইবে, তাহা 
লইয়। সাধারণের মধ্যে এরূপ আন্শিলন উপস্থিত হইল্স, যে গিরিশচক্রের 
সহোদর অতুলবাবুরই বিভ্রম ঘটিতে লাগিল-_গিরিশচন্ত্র তাঁহাদের না 
সাধারণের ! 

বিচিত্র খষ্টায় বিচিত্র পুম্পলতায় সজ্জিত করিয়া ললাটে “রামরুষণ” 
নাম লিখিয়৷, দিয়া নাট্যস্রাটকে বাহিরে আনয়ন কর! হইল। ফটো- 
গ্রাফারগণ আসিয়। সম্মুখ-পথ রোধ করিলেন। কীর্নওয়ালাদের সহিত 
ফটো গ্রাফারগণের হুড়াছুড়ি দর্শনে আমর! বিনীতভাবে ফটোগ্রাফার- 
দ্রিগকে নিবেদন করিলাম, “মহাশয়গণ, অনুগ্রহ করিয়! গঙ্গাতীরে গিয়া 
ফটে। গ্রহণ করিবেন। এ গলি-পথে এত জনতায় আমাদিগকে মহা বিব্রত 
হইতে হইয়াছে ।” ক্রতবেগে জনতা৷ গঙ্গাতীরাভিমুখে প্রবাহিত হুইল। 


৫৯৬ গিরিশচন্ 


দেখিতে দেখিতে কাশীমিত্রেব শ্মশানঘাঁটে গিপ্িশচন্দ্রের বন্ধুবান্ধব ও 
শুণগ্রাহী বহু 'সন্্রাস্তব্যক্তিব সমাবেশে ৬রাধাকাস্তদেবের মুস্্ুনিকেতন 
হইতে গোলাবাড়ী ঘাট পধ্যস্ত মনুষ্য ও যানে পবিপূর্ণ হইয়া গমনাগমন 
ছুঃসাঁধ্য হইয়া উঠিল। মাননীয় ভূপেন্দ্রনাথ বনু, অমৃতবাঁজাব-সম্পাদক 
মতিলাল ঘোঁষ, “সাহিত্য-পবিষৎ-পত্রিকা»-সম্পার্দক স্ুুবিখ্যাত অধ্যাপক 
রামেন্ত্র্ন্দর' ত্রিবেদী, পণ্ডিত পাঁচকড়ি বন্দোপাধ্যায় ও স্ুরেশচন্ত্র 
সমাজপতি, রাঁয় সাহেব শ্রীযুক্ত দীনেশচন্দ্র সেন, €বিশ্বকোধ-সম্পাদক 
শ্রীযুক্ত নগেন্্রনাথ বন্ধ প্রাচ্য-বিদ্যামহার্ণব, শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ বস্থু, দেশ- 
প্রসিদ্ধ নাট্যকার দীনবন্ধু বাঁবুর পুত্র ললিতচন্দ্র মিত্র, স্থুপ্রসিন্ধ ডাক্তার 
আর, জি, কর, খ্যাতনামা নাট্যকাঁব ক্ষীধযোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ, 
নটচূড়ামণি স্বর্গীয় অর্ধেন্দু বাবুর জ্যেষ্ঠ পুত্র ব্যোমকেশ মুস্তধী 
এতত্িন্ন স্বামী সারদানন্দ প্রভৃতি শ্রীশ্রাবামকষ্খদেবেব শিষ্ত ও ভজ্ঞগণ 
এবং নাট্যাঁচাধ্য শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বন, অমরেন্দ্রনাথ দত্ত, শ্রীযুক্ত 
মনোমোহন পাড়ে, মহেন্ত্রকুমাঁব মিত্র, শ্রীধুক্ত শিশিরকুমাব 'রাঁয় প্রভৃতি 
থিয়েটারের কর্তৃপক্ষগণ ইত্যাদি প্রার্সি সহস্রাধিক ব্যক্তি শ্মশানে উপস্থিত 
হইয়াছিলেন। 

গিবিশচন্দত্রকে চিতা-শয্যায় শয়ন করাইয়া পুনরায় সহশ্রক্ঠে পরামকৃষণ 
হরিবোল” নাম গ্লীত হইতে লাগিল । সেই পরম সময়ে, অগ্নিদেব শত- 
জিহবা! বিস্তার করিয়া সেই বিশাল বপু গ্রাস করিবার পূর্বব-যূহূর্তে আব 
একবার মহাকবিকে প্রাণ ভরিয়া শেষ দেখ! দেখিবার জন্ত শ্মশান- 
ভূমিতে চতুন্দিকস্থ নির্ববাপিত চিতাস্ত,পের উপর এত জনতা। হুইল, যে কত 
লোঁক ব্খলিতপদ হইয়! শ্বশান-শয্যাঁয় গড়াগড়ি দিল, তাহার ইয়ত্তা! নাই, 
কিন্তু তাহাতে কাহারও ভ্রক্ষেপ নাই। বহুশত ব্যক্তি তাহাব পদতলে 
মস্তক লুন্তিত করিতে লাগিলেন, কেহ কেহ বা পরঘ ভক্তিসহকারে খট্টাস্থ 


৫৯৮ গিরিশচন্দ্র 


ফুল-মন্তকে স্পর্শ করিয়! দেবতার নির্দ্ীল্যত্বরূপ সযত্বে লইন্সা যাইতে 
লাঁগিলেন। সেরূপ দৃশ্ত জীবনে কখনও দেখি নাই! বাশ্পাকুললোচনে 
সেই লোকসমুদ্র দর্শনে বুঝিয়াছিলাম, বঙ্গদেশ গুণীর সন্মান করিতে 
শিখিয়াছে ! 

দেখিতে দেখিতে দ্বত, চন্দনকাষ্ঠ, ধুনা ও কপূবে ব্রন্ষণ্যদেব শত 
জিহ্বা বিস্তার কবিয়া নিমিষ মধ্যে লক্ষ লক্ষ নাট্যামোদীব প্রিয়দর্শন, 
বাণাপানি বাগ্দেবীর বরপুত্র, শ্রীত্রীবামকৃ্ণ-শ্রীচরণ-বজঃ-পৃতত সেই বিশাল 
বপু ভস্মে পবিণত কবিলেন॥। আর এ বিপুল সংসাঁব খু*জিয়া! সে উজ্জ্রল 
প্রতিভা-যুকুট-মগ্ডিত দেহের চিহনমাত্র খুঁজিষ! পাওয়া! যাইবে না । কেবল- 
মাত্র কয়েকটা ভক্ত এবং বেলুডমঠেব সন্ন্যাসীগণ নববন্ত্র পবিধানে নব 
তাত্রকুণ্ডে ভম্মাবশিষ্ট চিতা হইতে যত্রসহ অস্থি সংগ্রহ কবিয়া প্রস্থান 
করিলেন। সব শেষ হইল। 


উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ 


গেিল্তিশ-৩এস্নত্ক 


মানবেব সিম্তীপ্রণালী অবগত হইতে পারিলে প্রকৃত মানুষকে বুঝা 
বায়। আমবা বাছিয়া বাছিয়া' কয়েকটামাত্র গিবিশ-প্রসঙ্গ প্রকাশ 
কবিলাম। ইহা পাঠ কবিয়া সহদয় পাঠকগণ আনন্দ লাভ কবিলে 
ভবিষ্যৎ সংস্কবণে আরও অধিক প্রসঙ্গ প্রকাঁশেব বাসন! বহিল ॥ 


স্মাউ ক্র ভ্রম 

গিরিশচন্দ্র জীবনে বহু শোক পাইয়া ছিলেন। তাহার দারুণ শোক- 
সন্তপ্ত জীবনে সান্তনা ছিল-_-কবিত! এবং শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবেব শ্রীপাদপন্ম । 
শোক যতই তাহার হৃদয়ে উপধূর্পবি শেলাঘাত করিয়াছে, গিরিশচন্দ্র 
প্রতিভা ততই উজ্জ্বল হইতে উজ্জ্লতব প্রভা ধারণ করিয়াছে, শ্রীগুরুব উপর 
নির্ভর ততই দুঢ়তব হইয়াছে । তিনি বলিতেন, “জীবন যে কখনও ছুঃখেব 
আঘাত পাঁয় নাই, কবিতার সাধন। তাহাঁব বিড়ম্বনা _বিশেষ নাটক বচন! । 
না্ট্যকাঁবকে অনেক রকম অবস্থায় পড়িয়া সত্য উপলদ্ধি করিতে হয । 
প্রকৃত কবি নিজে যাহা অনুভব করেন নাঃ তাহা লিখেন না। ঈশ্বরের 
কুপায় আমি সংসারের দ্ব্য-_বেশ্টা ও লম্পট চরিত্র হইতে জগৎপুজ্য 
অবতার-চরিত্র পর্যন্ত দর্শন করিয়াছি । সংসার বৃহৎ রঙ্গালয়, নাট্যবঙ্গালয় 
তাহারই ক্ষুদ্র অনুকৃতি 1” 

গিরিশচন্দ্র বলিতেন,_-্যত প্রকার রচনা আছে, নাটক রচন। 
সর্বাপেক্ষা কঠিন এবং শ্রেষ্ঠ। ইতিহাস লেখা তাহার নীচে ।” 


৬০০ গিরিশচন্দ্র 


মাাউন্কে অনস্থাগ্জভ্ ভ্ভাব শু জ্ঞান. 

গিরিশচন্দ্র বলিতেন,_-“ঘোরতর ছুশ্চিন্তাঁয় মানবের মস্তি যখন জড়িত 
হয়, তখন তাহাব ভাব ও ভাষাও জড়িত হয়। নৃক্ষদর্শী নাট্যকাঁব 
সেইরূপ অবস্থায় চরিত্রেব মুখে জড়িত ভাব ও ভাষা ব্যক্ত কবেন। 
হাম্লেটেব মনে যখন আত্মহত্যা উচিত কি অনুচিত, এইরূপ দ্বন্দ 
চলিতেছে, তখন তিনি বলিতেছেন 470 6819 ৪0005 2217)56 &. ৪8৪ 
06 :00)0198. একদিকে বিপদ-সাগব, অপব দিকে তাহাব বিকদ্ধে 
অস্ত্রধারণা করাঁব কথা। হ্যামলেটের মস্তিষ্কের ভাব এই এক ছত্রে বিশেষ- 
রূপে পবিস্ফুট হইয়াছে” 

টিক-ল্রল্না-অ্রশাল্লী 

শন্ধাম্পদ শ্রীধুক্ত দেবেন্দ্রনাথ বস্ত্র মহাশয় একদিন গিরিশচন্ত্রকে 
জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, “কোন কোন নাট্যকাঁব নাটক লিখিবা'র পূর্বের 
নাঃকীয় গল্পটী কল্পনা করেন, কেহ প্রধান চরিত্র । আপনি কি কবেন ?” 
উত্তরে গিরিশচন্দ্র বলিয়াছিলেন, “আমি আগে নাঁয়ক-চরিত্র কল্পন! কবি, 
তাহার পর সেই চরিত্র ফুটাইতে ঘটনা প্রভৃতি স্থষ্টি করি।” 

অ্রভিজ্ড! 

গিবিশচন্দ্র বলিতেন,-_প্প্রতিভা চলা-পথে চলে না, সে আপনি 
আপনার পথ করিয়া লয়। পূর্বের বিলাঁত হইতে জাহাজ আফ্রিকা 
ঘুরিয়া ছয় মাসে ভারতবর্ষে আসিত। প্রতিভা মুয়েজ ক্যানাঁল' প্রস্তুত 
করিয়া ছয় মাসের পথ ছয় সপ্তাহে আসিবার উপায় উদ্ভাবন করিয়া 
দেয়। বাম্পীয়যানের উন্নতিতে তাহাও ক্রমে তিন সপ্তাহে পরিণত 
হইয়াছে ।, 

কবি সরলতা ও সত্যের উপাসক। প্রকৃত কবি বিজের কোনও 


উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬০১ 


রূপ মমোভাব সাধারণের নিকট গোপন করেন না, এবং সংসারে লোক- 
চরিত্র যেমন দেখেন, অকপটে তেমনি বর্ণনা! করেন। কিন্তু দোষ দেখাইয়া 
দিলে কে সন্তুষ্ট হয়? এইজন্ত লোকশিক্ষক কবি অনেক সময়ে নিন্দাভাজন 
হন। জীবনে যশোলাভ তাহাব ভাগ্যে কদীচ ঘটে। দিব্যদৃষ্টি-সহায়ে কৰি 
যে সকল সত্য উপলব্ধি কবেন, তাহার সমসাঁমক্িক লোক তাহা ধারণা 
করিতে পারে না। পবে যখন সাধাবণের সে সকল উপলব্ধি করিবার 
সময় আসে, তখন তাহার আদর হয়। প্রতিভার দুর্ভাগ্যঃ সে -সময়েব 
অগ্রবর্তী হইয়া জন্মগ্রহণ কবে। সময়ের ও মানব সাঁধারণেব দোঁষগুণ 
দেখাইয়৷ দেওয়া নাটাকাবেব প্রকৃত লক্ষ্য । কিন্ত লোকে কখন কখন 
ত্রান্তিবশতঃ এ সকল দোঁষ বাক্তিগতরূপে গ্রহণ করিয়৷ থাকেন, এবং 
সেইজন্য কবিকে সময়ে সময়ে অনেক নিন্দা, শত্রুতা, এমন কি নিধ্যাতন 
পর্য্যন্ত সহ কবিতে হয়।” এক সময় এইরূপ কোন ঘটনায় গিরিশচন্দ্র 
মর্শগীড়িত হইয়া লিখিয়াছিলেন,__ 
“তুচ্ছ লোকে কুচ্ছ করে, লেখনী ধরিয়া কবে, 
কখনো করিনি কারো কু-রব রটন।* 


সকলনন্নান্ল ও ভ্যন্ ক 


'গিবিশচন্ত্র বখন যে নাটক লিখিতেন, তখন-_-সেই নাটকীয় ভাব ও« 
চরিত্র লইয়৷ দিবারাত্র আচ্ছন্ন হইয়া থাকিতেন। দমীরকালিম” লেখা 
হইতেছির্ল, সেই সময় হঠাৎ একদিন পৃজনীয় স্বামী সারদানন্দ তাহার 
সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিলেন। তিনি মহ! আনন্দিত হইয়া বলিলেন, 
“কি হেঃ মঠ হইতে কবে আমিলে ?” ন্বামিজী বঙিলেন, “তিন দিন 
হইল, কলিকাতায় আসিয়াছি।” গিরিশচন্জ্র বলিলেন, পতিন দিন 
কলিকাতায় আসিয়াছ, আর আঁজ এখানে আঁসিলে ? কলিকাতায় যে 


৬০২ গিরিশচন্দ্র. 


কয়দিন থাঁকিবে, প্রত্যহ একবাৰ করিয়াও আসিবে। তোমাদের 
দেখিলে থাকি ভাল। অনেক দিন ধরিয়৷ ঠাকুরের কথা হয় নাই, 
একটু 7৪0:986100এর আবশ্বক হয়েছে । 'মীরকাসিম, নাটক 
লিখিতেছি। কেবল যড়ঘন্ত্র--কেবল যড়মন্ত্র_ প্রাণ হাপাইয়৷ উঠিতেছে। 
ঘুমাইলে স্বপ্নে দেখি, মীবকাসিম মুখেব কাছে আমিঙ্গা একগাল দাঁড়ি 
নাড়িতেছে |” 

“চৈতন্যলীলা” লিখিবার সময়েও গিবিশচন্ত্র একদিন নিদ্রাভঙ্গে অর্ধ- 
তন্দ্রাজড়িত অবস্থায় জুম্প& দেখিতে পান,_-মন্ত এক চাঁকামুখো বলরাম 
“হাঁরে-বে-বে* কবিয়া গাহিতে গাহিতে আসিতেছে । এই “হারে-রে-বে” 
লইয়াই “চৈতন্তলীলাপ্য় নিতাইয়ের গান রচিত হয়। 


স্বাউিক ল্রজ্সান শ্শিঙ্ষকষাাদ্কান্স 


হীপানী গীড়ায় কাতর হইয়া গ্রিবিশচন্দ্র যখন কিছুদিন ঘুঘুডাঙ্গায় 
স্থলেখক শ্রীযুক্ত স্ববেন্্রনারায়ণ বায় মহাশয়ের “ম্ুরেন্ত্র কুটীরে” থাকেন, 
সেই সময়ে সুবেন্ত্র বাঁবু তাহার বচিত “বেহুলা” নামক একখানি নাটক 
গিরিশচন্দ্রকে পড়িয়া শুনান। নাটকেব প্রথম দৃশ্েই সর্পাঘাতে মৃত 
সন্ত পুত্রের জন্য টাদসদাগব ও তৎপত্রী সনকা বিলাপ করিতেছেন। 
' ততশ্রবণে গিবিশচন্দ্র পুস্তক পাঠ বন্ধ করিতে বলিয়া কহিলেন, “চাদ 
সদাগবেব বিলাপ সনকাৰ বিলাঁপরূপে এবং সনকাব বিলাপ চাদ সদাগরেব 
বিলাঁপরূপে পাঁঠ কবে! 1” তাহাই করা হইল। তিনি বলিলেন, “কিছু 
অসামঞ্রস্ত বোধ হলো কি?” উত্তরে স্ুরেন্দ্রবাবু কহিলেন, “কই, কিছু 
তো! বুঝিতে পারিতেছি ন1।” গ্রিরিশচন্দ্র বলিলেন--”বাবাজি, নীটক' 
লিখিতে যখন চেষ্টা করিতেছ, তখন' এখন হইতে সতর্ক হও | নাটক লেখা 
কঠিন, সংসার ও লোক-চরিত্রের প্রতি নুক্ম দৃষ্টির আবশ্তক। তুমি 


উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬০৩ 


আপনিই বলিলে, মাতার বিলাপ ও পিতার বিলাপ একই রূপ হুইয়াছে, 
কিন্তু উভয়ের বিলাপ সম্পূর্ণ পৃথক হওয়া চাই। পুত্র-শোকে মা যেরূপ 
ভাষায় কাঁদে, পিত। সেরূপ ভাষায় কাদে না। শোক উভয়েরই, কিন্ত 
প্রকাশে ভাঁষা ও ভঙ্গী স্বতন্ত্র। নাটক সংসারেবই অনুকরণ ইহা, 
নাট্যকারের সতত স্মরণ রাখা উচিত 


আপনি আঙ্পন্যল্র শ্রভিত্বম্্রী 
গিবিশচন্দ্েব নূতন নাটক সাধারণে সমাদৃত হইলে, তিনি বিশেষ 
চিন্তিত হইতেন। বলিতেন, ইহাঁৰ পর আর কি নূতন লিখিব, যাহা 
সাধারণেব অধিকতর প্রিয় হইবে। কিন্তু গিরিশচন্দ্রের কোন নাটক 
সাধাবণেব নিকট সেরূপ আঘৃত না হইলে, তাহাব উৎসাহ বৃদ্ধি পাইত। 
বলিতেন-__“এবারে নিশ্চয়ই কিছু একট! নূতন করিতে হইবে।” তিনি 
প্রায়ই বলিতেন, “আমাব মুক্কিল হইয়াছে কি জানো-_-আমাঁর আপনাব 
সহিত প্রতিদ্বন্বীতা। বঙ্গাণয়কে জীবনে অবলম্বন কবিয়া সাধাবণেব 
তুষ্টি-সাধনেব জন্ত ব্রতী হইয়াছেন__-এমন নাট্যকাব উপস্থিত বঙ্গরঙ্গালয়ে 
কেহ নাই-_কেবল আমিই আছি। আমায় প্রতিবাব উদ্যম করিতে হয়, 
আপনাকে আপনি কেমন করিয়া হারাইব। যে নাটক লিখিব, তাহ! 

পূর্ববচিত নাটক অপেক্ষা কেমন করিয়! উচাইয়া যাইবে» 

শ্রভিজ্ঞান্ত্র স্কুল 

গিরিশচন্দ্র বলিতেন,__"স্বৃতিশক্তি, কল্পনাশক্তি এবং ইচ্ছা শক্তি 
সাধারণ অপেক্ষা প্রতিভাশালী ব্যক্তিদ্িগেব অধিক পরিমাণে থাকে ॥ 
কিন্তু এ শক্তিগুলি তাহাদের আয়ত্তের মধ্যে থাক! চাই। নতুবা আযর়ত্তা- 
তীত কল্পনা-শ্তির প্রভাবে মানুষ পাগল হইয়া! যায়। স্মৃতিশক্তি আবার 
এমন হওয়া চাই যে লিখিবার. সময় অনুভূতি-সিদ্ধ বিষয় সকল আপন! 


৬০৪ গিরিশচজ্ঞ 


হইতে মনে উদগ্ন হয়। নচেৎ মহাবীর কর্ণের ন্যায় কার্য্যকালে মহন্ত নকল 
বিস্বৃত হইতে হয়। আর ইচ্ছা-শক্তির দৃঢ়তা না থাঁকিলে কল্পনাও কাধ্যে 
পরিণত করা যাঁয় না। 


2ীজ্াক্র গোাভিত্্িব্র কাহ্বয 


গিবিশচন্ত্র গৌঁয়াবগোঁবিন্দ কাঠখোট্া ছেলেদের পছন্দ করিতেন। 
বলিতেন,_-“ইহাদেব একটু সুবিধা করিয়। লইয়া! চাঁলাইতে পারিলে, 
শিষ্ট-শান্ত, মিউ-মিউয়ে ছেলেদের চেয়ে বেশী কাজ পাওয়া! যাঁয়। পাড়ায় 
কোন বিপদ হইলে ইহাঁবাই আগে আসিয়া দেখা দেয়; নিঃসম্বল নিঃসহায় 
পবিবাবের শব-সৎকাবের জন্ত ইহাঁবাই আগে আসিয়! খাট ধরে। একটু 
মন্তস্তত্ব ইহাদের মধ্যেই থাকে ।” 


ভ্গান্নাজ্ ৩্রুবও$নতভ্ডা 


খ্যাতনামা পণ্ডিত শ্রীযুক্ত মোক্ষদাচবণ সামধ্যায়ী মহশিয় একদিন 
গিবিশচন্দ্রেব সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছিলেন। নান৷ প্রসঙ্গেব পব 
সাহিত্য-প্রসঙ্গ উঠিল। পণ্ডিত মহাশয় গিরিশচন্দ্রকে বলিলেন,__ 
“আপনার রচনা এত সবল যে, স্ত্রীলোকের পধ্যন্ত বুঝিতে কষ্ট হয় না__ 
ইহাই আপনার ভাষার বিশেষত্ব । আমরা লিখিতে যাইলে ভাষাটা 
সংস্কতানুগামী হইয়া পড়ে_-সাধারণে সহজে উপলব্ধি করিতে পারে ন!। 
কিরূপে প্রাঞ্জল ভাষায় লেখ যায়__এ সম্বন্ধে আমায় কিছু উপদেশ দিতে 
পারেন?” গিরিশচন্দ্র হাসিতে হাসিতে বলিলেন,_-“আঁপনি পণ্ডিত 
লোক, আপনাকে উপদেশ কি দিব বলুন, তবে একটা! কৌশল বলিয়া 
দিতে পারি।” পণ্ডিত মহাশয় সাগ্রছে বলিলেন__“কৌশল--সে কিরূপ ?” 
গিরিশচন্দ্র বলিলেন,_-“আপনার বাড়ীতে ছেলে-মেয়েদের সহিত যেরূপ 
ভাষায় কথা কহেন, দেইরূপ ভাবায় লিখিবেম্ ঃ দেখিবেন-_সে ভাষ। 


উন্পঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬০৫ 


বুঝিতে . কাহারও কোন কষ্ট হইবে না এবং বাঁরবাব অভিধান খুলিবারও 
প্রয়োজন হইবে না।” 
শস্িভ ল্রুম্মাস্পভ্ভি 
একদিন যুব গিরিশচন্দ্র অফিস যাঁইবার জন্য পথে বাহির হইয়াছেন, 

এমন সময়ে তাহার পরিচিত কোনও ভদ্রলোক আসিয়া অন্থরোধ করেন,__ 
"আমি বেহাই বাড়ীতে লিচু পাঠাইভেছি, তোমায় একট! কবিতা বেঁধে 
দিতে হবে।” গিরিশচন্দ্র তৎক্ষণাৎ লিখিয় দিলেন £-- 

স্থগোল কণ্টকময় পাত কুচ কুছ, 

সবিনয় নিবেদন পাঠা”তেছি কিছু । 

দেখিলেই বুঝিবেন রসভরা! পেটে, 

মধ্যেতে বিরাঁজ করে আটি বেঁটে ধেটে। 

সরস রসেতে যর্দি রসে তব মন, 

জানিবেন এ দাসেব সিদ্ধ আকিঞ্চন। 


হচকজশা-ন্নৈগ্ুঞয 
গিরিশচন্দ্র বলিতেন,--“কল1-কৌশল গোপনই শ্রেষ্ঠ কলা-নৈপুণ্য |” 


ভিভ্রকল্ ও ক্কন্বি 
গিরিশচন্দ্র বলিতেন,-_-“চিত্রকরের স্তায় কবিও চিত্র করেন। একজন 
বর্ণে মন্তজন কথায়। আমি আমার রচনায় ঠিক ঠিক ছবি তুলিবার 
চেষ্টা করিয়াছি ।” 
[875.0152 [২95917)60, 


গিরিশচন্দ্র বলিতেন, _“মিলটনের ”[2815.0$59 [,০8%” “মহাকাব্যেপ্ই 
সাঁধারণে বিশেষ আদর । 798:801589 7১9£81090 তত আদর করিয়া 


৬০৬ গিরিশচন্দ্র 


কেহ পড়ে না। আমি কিন্ত শেষোক্ত কাব্যের নিকট বিশেষ খণী। 
“[281780136 160817)90% না! পড়িলে আমি “চৈতন্তলীল!” যে রূপ ভাবে 
লিখিয়াছি, তেমন করিয়া লিখিতে পারিতাম ন1।” বলা বাহুল্য, 
“টৈতন্থ-লীল1” লিখিবাঁর পূর্বে গিরিশচন্দ্রেরে পরমহংসদেবের সহিত 
পরিচয় হয় নাই। 


ভঞ্পন্াত 


উপন্তাস-পাঠসম্বন্ধে গিবিশচন্ত্র বলিতেন,-_“ফিল্ডিং স্কট, ডিকেন্স, 
থ্যাকারে প্রভৃতিব উপন্তাস আগে পাঠ করা উচিত। (সমসাময়িক 
লেখকদিগের মধ্যে তিনি মেরি কোরেলির বড়ই সুখ্যাতি করিতেন। ) 
ফরাসী উপন্তাস-লেখকগণের গল্প-রচনা-শক্তি অতি উৎকষ্ট :_-যেমন ডুম! 
প্রভৃতি । ইংরাজ উপন্তাস-লেখকগণ যেমন চরিত্র অঙ্কনে, ফরাসী 
উপন্তাস-লেখকগণ তেমনি গল্প-হুজনে শ্রেষ্ঠ । কিন্তু ভিকুটর হিউগোর 
যেমন চরিত্রহ্ছজন-শক্কি, তেমনি গল্প-রচনা--তেম্নি কল্পনা-শক্তি ছিল। 
যদি এই সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্তান লেখকের হাস্তরসে অধিকার থাকিত, তাহা 
হইলে ইহাীকেই অনেকাংশে সেক্সপীয়রের সমকক্ষ কবি বলা যাইত |» 


হিন্দু স্শাভ্রক্কাল্লগতেণিক্স অভি শ্রন্থা 

হিন্দুশান্ত্কারগণের উপর গিবিশচন্দ্রের অগাধ শ্রদ্ধা ছিল। তিনি 
বলিতেন, “ইহারা চিন্তার যে সকল স্তর উদ্ভাবন করিয়াছেন, সাধারণ 
মানববুদ্ধি সে স্তরে উপনীত হইতে পারে না। নাস্তিকতার অন্থকুলে 
শান্ত্রকারগণ যে সকল তর্কযুক্তি দেখাইয়াছেন, ইয়ুরোপীয় বড় বড় দার্শনিক 
নাস্তিকগণের মস্তিফে সে সকল তর্কধুক্তি উদয় হয় নাই। স্বর্ৃত এই প্রথর 
তর্কযুক্তি অবশেষে পরান্ত করিয়া ইহীরা ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে মীমাংসা 
করিয়াছেন। আমি দেখিয়াছি, শান্ত্কারগণ আমার জন্ত পূর্ব হইতেই 


উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬০৭ 


তর্কযুক্তি.চিস্ত। দ্বার আমার জ্ঞাতব্য বিষয়-সকলের মীমাংসা করিয়া রাখিয়া 
গিয়াছেন। এমন অনুকুল বা প্রতিকূল যুক্তি চিন্তা কোথাও দেখি নাই, 
যাহা! পূর্ব্ব হইতেই শাস্তরকারগণের মন্তিফে উদয় হয় নাই, এবং তাহার 
মীমাংস! তাহারা করিয়া যান নাই ।” 


আআজ্ঞা-ভ্কীন্বন্নী ল্রলন্দী 


কোন সময় আত্মজীবনী লিখিবাঁর জন্ত অনুরোধ করিলে গিরিশচন্দ্র 
বলিয়াছিলেন, “সে বড় সহজ কথা নয়। বেদব্যাস তাহার জঙম্মবৃত্তাস্ত 
যেরূপ অকপটে বলিয়াছেন, যখন আত্মদোষ ব্যক্ত করিবার সেইরূপ সাহস 
হইবে, তখন আত্মজীবনী লিখিবার কথ। উত্থাপন হইতে পারে। নচেৎ 
আত্মজীবনী লিখিতে বসিয়া আপনাকে আপনাব উকীল হইতে হয়, কেবল 
'দোঁষস্থালনেব চেষ্টা এবং আত্মস্তরিত1 প্রকাশ ।” 


ভন্কস্ণত্তি 


গিরিশচন্দ্র বলিতেন,__ণ্যত বড় খ্যাতাপন্ন ও শক্তিশালী লেখক হউন 
না, আমি কখনও মনে মনে তর্ক-বিতর্ক না করিয়া তাহার কোন সিদ্ধান্ত 
মানিয়া লই নাই |” এই প্রণালীতে অধ্যয়ন করায় গিরিশচন্দ্রের তর্কশক্তি 
এত প্রখর হইয়াছিল যে সহজে তাহাকে পরাস্ত কর! এক গ্রকাগ্ 
ছুঃসাধ্য হইত। 

উর্কে গিরিশচন্দ্রের কখনও ওদ্ধত্যভাব প্রকাশ পাইত না, কিন্ত 
তিনি সে সময় আত্মহারা হইয়া যাঁইতেন। শ্রীশ্রীরামরুষ্কদেব তাহার 
প্রথর তর্কশক্তির পরিচয় পাইয়া, সময়ে সময়ে তাহাকে উপস্থিত কাহারও 
কাহারও সহিত তর্কযুদ্ধে নিয়োগ করিয়া দিতেন। এইকরূপে একদিন 
ত্বনামখ্যাত্ড মহিমচন্ত্র চক্রবর্তীর সহিত তাহার তর্কযুদ্ধ উপস্থিত হয়। 


৬০৮ খিযিশচজ্ঞ 
7 
ূ /2 নে 2৫ ৃ 


1 
) 
শি 


জিরা ৯ 
এ ৪/4মষত 


৮ চি টা 


| এ আছ হুশ সাযাটি 
ৃ এখগনাএলতস্প চান) ০০৪ 


96 
98৮68 পিক রাহ /-7৮ 


গা 
ইট কাই 
0 | লাপাইুণন ূ 


ক 


শরতের বসি ও পপর শা শপ পা পিল হা চ্ঞ 


পপ পপ সপ পপ পপ এ সপ 
ক 


দা 


৮০ 
সপ তো” ৮ পপ পাস পপ পপ পাশা শা 
নি 
ক 





? 
সপ | শা হল সপ পি হিট তত ই ভার সহ সর 


গিরিশচন্দ্রের হস্তাক্ষর 
কিছুক্ষণ তর্কের পর মহিমচন্দ্র গিরিশচন্দ্রের সিদ্ধাত্ত মাঁনিয়া৷ লইলেন। 
তর্কশেষে গিরিশচন্ত্র স্থানান্তরে গমন করিলে শ্রীশ্ররামকষ্ণদেব মহ্ছিমচন্দ্রকে 


উনপঞ্চাঁশও পরিচ্ছেদ ৬৩৯ 





ৰ স্বরূপ মুত্তি (007 [1839 ) 


বলিলেন, “আপনি দেখলে, ও জল খেতে ভুলে গেল ।* যর্দি ওর কথা না 
মানতে, তাহলে তোমায় ছিড়ে থেত।” কিন্ত ইদানিং তিনি আর বড় তর্ক 








* কিছুক্ষণ পূর্ব্বে গিবিশচন্দ্র জল চাহিয়াছিলেন, কিন্তু তর্ক কল্সিতে করিতে ভাহাধ 
তৃষ্কার কথ! মনেই ছিল ন!। 


৩৪ 


৬১০ গিরিশচন্দ্র 


করিতেন না । 'শঙ্করাচার্্য” নাটকের এক স্থলে গিরিশচন্দ্র লিখিয়াছেন :₹-_ 
“তর্ক-বুদ্ধি-নাশ হেতু তর্ক প্রয়োজন 1” (৩য় অঙ্ক, ৪র্ঘ গর্ভাঙ্ক ) 
উ্রীল্লামক্ন্মেগল্র হ০পান্ুক্ষীগুন্ন 

পূজ্যপাদ স্বামী বিবেকানন্দ ও গিরিশচন্দ্রের শ্রীরামকৃষ্ণদেব সম্বন্ধে 
আলোচন! শুনিবাঁব জন্য বহু ভক্ত আগ্রহে ছুটিয়া আসিতেন। কলিকাতা 
অবস্থানকালীন ব্বামিজী প্রায়ই সহচর ভক্তগণকে বলিতেন,-_-ণচল হে, 
0. 0.ব সঙ্গে খানিক 78156 191]. ক+র্তে যাঁই।* গিরিশচন্ত্রকে 
গুকনিন্বায় আহত করিয়া স্বামিজী তৎপরিবর্তে গুরু-গুণ-কীর্তন শ্রবণে 
অজন্ন আনন্দে ভোরপুর হইয়! প্রস্থান করিতেন। , 

স্পাল্তি 

গিরিশচন্দ্র একদিন আমায় কথা-প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করেন,_প্যগ্যপি 
তগবান সদয় হইয়া তোমায় কেবল মাত্র একটা বর দিতে চাহেন, তাহা 
হইলে তুমি কি বর প্রার্থনা করিবে? তাহার কাছে চাহিবার মত কি 
আছে?” আমি উত্তরে প্ধর্ম্ে যেন মতি থাকে” ইত্যাদি নানারূপ 
বলিলাম । গিবিশচন্্র বলিলেন, “তুমি সব ভাবিয়া চিন্তিয়া সাজাইয়া 
বলিতেছ। কথাঁটা কি জানো+__-টাঁকা, মান প্রভৃতি যে যাহ! চাহিতেছে, 
শাস্তির জন্যই চাহিতেছে ; মনে করিতেছে, এঁ সকল পাইলেই শাস্তি 
পাইবে। প্রত্যেক মনুম্তই শাস্তির প্রার্থী। যে যে অবস্থাগত হোক, 
সকলে শাস্তির প্রয়াসী। শাস্তি ভিন্ন আর দ্বিতীয় প্রার্থনা নাই 1” 

ন্বিগ্পত্কে অক্্যু্ঞল্স ভিত 

আর একদিন গিরিশচন্দ্র বলিযাছিলেন”_“তুমি পল্লীগ্রামে বাস করে ; 
হঠাঁৎ মাঠে যদি লাঠি হস্তে তোমাকে দস্্যুতে আক্রমণ করে, তুমি কি 
করিবে ?” আমি উত্তর করিতে ন! পারায় তিনি বলিক়্াছিলেনঃ “দেখ, 
এ সময় অনেকে ছুটিয়৷ পলাইবার চেষ্টা করে এবং লাঠিটি ঘাঁড়ে পাঁতিয়া 


উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬১১ 


০০৩০ ্ 


শু 
“ঘা 
ও 
ক 


৮ 
রী 


পি চা বর্গ টা. 
সী ক 
দঃ 
৮৮ 
গু নে” 
সন এ 
শা শির ক 





গভীর চিন্তা (1921) ০০051601017 ) 
ৃ লইবার*স্যোগ করিয়া দেয়। কিন্তু এরূপ বিপদে পড়িলে উচিত, দস্থ্য 
লাঠি উত্তোলন করিব! মাত্র তাহারই দিকে ছুঁটিয়া গিয়া তাহার কোমর 
' জড়াইয়! ধরিয়া পেটে মাথা গুঁজিয়। দেওয়া । আর সেই স্থুযোগে এক 
মুঠা ধূলা সংগ্রহ কারয়৷ যদ্দি কোনও রূপে দস্থ্যব চক্ষে নিক্ষেপ করিতে 
পার, তাহ! হইলে পলাইবাঁর এমন সুযোগ আর পাইবে না ।” 


৬১২ গিরিশচন্জ 


শ্রত্শাোভ্ডন্নে সঙ্গক্কার্মধ্যে শন্রক্ভি-্কান্স 

আমি এক সময় একখানি উপন্তাস পাঠ করিয়া গিরিশচন্দ্রকে বলি” 
"মহাশয়, এ গ্রন্থ-প্রণেতার একটি রচনা-বৈচিজ্ত্য এই, নায়ক যেখানে 
যেখানে নিঃস্বার্থভাবে কাধ্য করিতেছে, অচিরে, তন্গিমিত্ত সে পুবস্ত 
হইতেছে । বেশ সুকৌশলে গ্রন্থ-রচক্জিতা সংকার্য্যে উৎসাহ প্রদান 
করিয়াছেন।» গিরিশচন্দ্র গম্ভীরভাবে উত্তর করিলেন, *গ্রস্থকারের এরূপ 
পুরস্কাবের প্রলোভন দেখাইয়! সৎকার্যে গ্রবৃত্তিদান আমি আদৌ ভাল 
বলি না। প্রথমতঃ সত্যের সংসারে এরূপ সকল সময় দেখা যায় না। 
সৎকাঁধ্য করিয়া জীবনে কখন কেহ ফল পায়, কেহ বা ইহজীবনে পায়-ই 
না। কিন্তু সৎকার্যের অনুষ্ঠান--সৎকাধ্যের জন্ত-_স্থৃফল প্রাপ্তির 
জন্য নয়,--উচ্চপ্রকৃতি গ্রন্থকার এই উচ্চ আদর্শ মানব-চক্ষে ধরিবার 
গ্রয্ান পাইবেন। সংসারে এরূপ লোক আছে, যাহাবা! সৎকাধ্য করিয়া 
পুরস্কাবের প্রত্যাশা করে এবং না পাইলে সৎকার্যে আস্থাহীন হয়। তুমি 
যেরূপ পুস্তকের কথা বলিতেছঃ এপ্প পুস্তকে এই সকল লোকের ত্রাস্ত 
বিশ্বাসকে বদ্ধমূল করে, কিন্তু তাহারা যখন কর্মক্ষেত্রে বিপরীত দেখে 
তখন তাহাদের ধর্মেব প্রতিও বিশ্বাস হারাইয়৷ যায় ।” 


সমন্মেল্স মুল্য 


গিরিশচন্দ্র সময়ের মূল্য বুঝিতেন, কাহারও সময় নষ্ট করিতে তিনি 
ভালবাসিতেন ন। কোনও পাওনাদার গিবিশচন্দ্রের নিকট আসিয়া 
বৈঠকথানায় বসিতে না! বসিতে তিনি বাক্স হইতে টাকা বাহির করিয়া 
দিয়া! পরে ভূত্যকে বলিতেন, “বাবুকে তামাক দে ।” নচেৎ সঙ্গে সঙ্গে 
বলিতেন, “অমুক দিন অমুক সময় আসিবেন।” তিনি বলিতেন, “ছুই 
ঘণ্টা বাঁজে গল্পে বসাইয়! রাখিয়া! পরে টাকা দেওয়া বা! "অন্দিন আসিও, 


উনপকাশৎ পরিচ্ছেদ ৬১৩ 





ধ্যান ( 11907698108 ) 


বলা আমি একেবারে পছন্দ করি ন1। কাধ্য শেষ করিয়া নে তাহার 
স্থুবিধামত তিন ঘণ্ট। গল্প করুক, তাহাতে আমার আপত্তি নাই ।” 
অন্রভ্ডভন্ত চে 
একদিন ছুরস্ত হীঁপানী পড়ান যন্ত্রণাভোগ করিতে রা খিরিশচন্ত 


৬১৪ গিরিশচন্দ্র 


হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “দেখ, অকৃতজ্ঞ দেহটার উপর আর. আমাক 
কোনও মমতা নাই। এই দেহের পুষ্টির জন্ত কত উপাঁদের আহাৰ 
দিয়েছি, কত যত্বে ইহাকে সাজিয়েছি-গুজিয়েছি, _কিন্তু এই দেহই পরম যত্বে 
হাঁপানীকে ডাকিয়া আনিয়া আশ্রয় দিয়াছে । সত্য বলিতেছি, আমা 
প্রাণের ইচ্ছা নয় যে এই রোগ আমার সারিয়া যাঁয়। হাঁপানীব প্রত্যেক 
টানে দেহেব ক্ষণভঙ্কুরতাঁর কথা ম্মবণ কবাইয়! দেয়।” এই বলিয়া তিনি 
গদ্গদ্কঞ্ঠে সরল প্রার্থনার স্ববে বলিলেন,__”জগদীশ্বব, জগদীশ্বর, তুমি 
মঙ্গলময়-_-যেন জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্য্যন্ত এই বিশ্বাস থাকে ।” 
আাল্সশ্চিত্ড 

একদিন এক ব্রাঙ্গণ-পণ্ডিত কথাপ্রসঙ্গে গিরিশচন্ত্রকে বলিতেছিলেন, 
“কুতাঁপরাধের জন্ত ঈশ্বরেব নিকট ক্ষম! প্রার্থনা কবা উচিত। হিন্দুদিগেব 
গ্রাঁয়শ্চিত্ত-বিধিব এই উদ্দেশ্য ।৮ গিবিশচন্দ্র বলিলেন, __প্প্রার্থনার পূর্ব্বেই 
তো তিনি ক্ষমা করিয়াছেন। সংসাবে প্রতি পাদক্ষেপে আমাদের 
অপরাধ হইতেছে । তিনি দৌঁষ গ্রহণ করিলে মানুষের সাধ্য কি, এক 
মুহুর্ত স্থির থাকে !” 

ভীন্র অন্ত 

,. একদিন মধ্যাঙ্কে গিরিশচন্ত্র আহার করিয়। বৈঠকথানায় বিবার .পব 
শ্রযুক্ত মণিলাল মুখোপাধ্যায় নামক পন্লীস্থ একটী যুবা আফিলেন। 
গিরিশচন্দ্র তাহার শোককাতব মুখ দেখিয়া, কারণ জিজ্ঞাসা কবিয়া 
শুনিলেন, ভদ্রলোকটীর জো্ঠ পুত্র সম্প্রতি গায় ডুবিয়া মারা গিয়াছে। 
অনেকক্ষণ কথাবার্তার পর বাবুটী চলিয়া! গেলে নিত্য-নৈমিত্তিক অভ্যাস- 
মত গিরিশচন্ত্র শয়ন করিতে গেলেন। কিন্তু অল্পক্ষণ পরেই শসব্য্ত 
হইয়া পুনরায় বৈঠকথানায় আসিয়া বসিলেন। হঠাৎ উঠিয়া আমিবার 
কারণ জিজ্ঞাস! করায় তিনি বলিলেন,_-“শয়ন করিয়! মণিবাঁবুর ছেলেটার 


উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬১৫ 





সংকল্প-বিকল্প ( 10611097810 ) 
কথা ভাবিতেছিলাম। জলমগ্র হইয়! বালক শ্বাস-প্রশ্বীসের জন্য কিরূপ 
ছট্ফট্‌ (86:5৩ ) করিয়াছিল, মনে উদয় হইল। নেই কথ! ভাবিতে 
ভাবিতে আমারও ঠিক সেইরূপ শ্বাসরুদ্ধ হইবার উপক্রম হইল। 
আর মশারির মধ্যে থাকিতে পারিলাম না, বাতাসের জন্ত "প্রাণ যেন 
ইীপাইয়! উঠিতে লাগিল। তাড়াতাড়ি তাই বাহিরে আঙিলাম 1” 


৬১৬ গিত্বিশচক্দ্র 


ভ্বাসী ভ্বিন্বেক্ান্মম্দ্ 

এক দিন গিরিশচন্দ্র বলরাম বন্থুর বাটীতে গিয়া দেখেন,__স্বামী 
বিবেকানন্দ কয়েকজন যুবককে খণ্বেদ পড়াইতেছেন। তাহাকে দেখিয়! 
স্বামিজী বলিলেন,_-«এই যে 0. 0. এসেছ, একটু বেদ শোনো ।” 
গিরিশচন্্র বলিলেন, “ওতে ঠাকুরের ভাবসমাধির কথা কিছু আছে ?” 
এই বলিয়া তিনি পরমহংসদেবের ভাবসমাঁধির বর্ণনা! করিতে লাগিলেন। 
তাহার পর কথায় কথায় তিনি দেশের দুর্দশার কথা! উল্লেথ করিয়া বলিতে 
লাগিলেন, __“গ্রামেতে অসহায়! বৃদ্ধা_তার বিধবা মেয়েকে নিয়ে শুয়ে 
আছে, বদ্মাইস লম্পটের! বেড় কেটে সেই মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছে _তাঁর 
তুমি কি কচ্ছ? বাড়ীতে উৎসব, আর তার পাশের বাড়ীতে না খেয়ে 
মর্চে, তাৰ কি কচ্ছ?” দেশের এই ভাবের শোচনীয় অবস্থার কথা 
'তিনি এরূপ করুণকঞ্ঠে বলিতে লাগিলেন, যে সেই কথা শুনিতে শুনিতে 
্বামিজীর চক্ষু দিয়! দরবিগলিত-ধারে অশ্র-প্রবাহু বহিতে লাঁগিল। 
তিনি অত্যন্ত কাতরভাবে বলিতে লাগিলেন,__-“আ্যা__তাই তো 0. 0) 
কি ক/র্বো-কি করবো” বলিতে বলিতে তিনি যেন তন্ময় হইয়া 
গেলেন। ন্বামিজীর এই ভাব দর্শনে তাহার গুরুভ্রাতাগণ ব্যস্ত হইয়া 
গিরিশচন্দ্রকে এই প্রসঙ্গ হইতে বিরত হইবার নিমিত্ত ইঙ্গিত করিলেন। 

সকলে নিস্তব্ধ, কিছুক্ষণ পরে ব্রন্মানন্বস্বামী স্বামিজীকে বক্ষান্তবে 
লইয়া গেলেন। গিরিশচন্দ্র সমবেত ভক্তমণ্ডলীকে সম্বোধন করিয়া 
বলিলেন-_ণএই জন্যই ইনি জগজ্জপ্লীম্বামী বিবেকানন্দ! যার দয়া' নাই, 
তার ধর্ম কোথায় ?” 

স্কৃশ্ডি্ণন্তি 

গিরিশচক্ররের অদ্ভুৎ স্মরণ-শক্তি ছিল। রামায়ণ, মহাভারত, মিন্টন 

ও সেক্সপীয়ারের নাটকগুলির বহস্থান ছিনি মৌখিক আবৃতি কিয়! 


উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬১৭ 





দ্বণা ও বিরক্তি (710182056 ) 


যাইতেন? 1 যে লোকের সহিত একবাব শাহাব পরিচয় হইত, বহুকাল 
পর দেখা হইলেও গ্রথমে তাহার সহিত যে যে কথা হইয়াছিল-_অবিকল 
বলিয়। দিতে পারিতেন। তিনি যে গ্রন্থ পড়িতেন, তাহার প্রয়েজিনীয় 
স্থানগুলির পৃষ্ঠা এমন কি পডক্তি পথ্যন্ত তাহার কণ্ঠস্থ থারিত। 

গিরিধারী বস্থ নামক তাহার জনৈক বালাবন্ধু এক দিন তাঁকে 


৬১৮ গিরিশচন্দ্র 


বলেন, “প্রত্যহ যখন বহু বোগীকে তোমায় ওষধ দিতে হয়ঃ তখন একখানি 
খাতায়, রোগীদেব ও ওঁষধেব নাম লিখিয়া রাখ না কেন ?” ' গিরিশচন্ঞ 
বলিলেন, “আমা যখন মনে থাকে, তখন আর লিখিয়৷ রাখিবার 
আবশ্তক কি?” গিরিধাবীবাবু বলিলেন, “আট বৎসর পূর্বের তুমি আমাব 
মার অন্্রথৈ কি কি ওষধ দিয়াছিলে বল দেখি?” গিরিশচন্দ্র সেই 
ওষধগুলির নাম করিয়া গেলে, তাহার আর বিন্ময়েব সীমা রহিল না । 

গিবিশচন্দ্র কখনও দাগ দিয়! বই পড়িতেন না । বলিতেন_-“দাগ দিয়া 
বই পড়িলে [921০"কে সীমাবদ্ধ করা হয়। দেখ___বাড়ীর ঝি-চাঁকরেরা 
কিছু লিখিয়! লইয়! বাঁজাবে যায় না, কিন্তু সে সিকি পয়সা, আধ পয়সা, 
দেড় পয়সাব সমুদায় জিনিস খবিদ করিয়া আনিয়া তাহার হিসাব বুঝাইয়! 
দেয়--একটী পয়সারও তুলচুক হয় না। আব তুমি ফার্দ করিয়৷ বাজার 
কর,__প্রত্যেক বাবে সেটা দেখিতেছ ও কিনিতেছ, কিন্তু তাহাতেও 
হয় তে ভূল থাকিয়া যায়।” 

সমবভ্কাভি-লানল্ 

যেবার মোহনবাগান, ফুটবল খেলায় প্রথম “শিল্ড' পাইয়াছিল,__ 
সেদিন গিরিশচন্দ্রের উৎসাহ ও আনন্দ দেখিলে কে মনে কবিত যে ইনি 
বৃদ্ধ ও বোগজীর্ণ! তাহার এত আনন্দেব কারণ জিজ্ঞাসা করিলে. তিনি 
বলিয়াছিলেন,__»ইংরাঁজেব সঙ্গে বাঙ্গালীব ছেলেবা৷ দৈহিক বলে কখনও 
ষে প্রতিদ্বন্দী ক্ষেত্রে দাড়াইতে পাবে, ইহা কাহারও ধাঁবণ! ছিল না। 
কিন্তু ছেলের! যে গোর! সৈম্দলকে তাঁদেরই খেলাতে পরাজিত করিতে 
পারিয়াছে, ইহাতে আর কিছু না হউক, একদিন বাহুবলেও যে তাহারা 
গোরার প্রতিদ্বন্দী হুইয়! দাড়াইতে সক্ষম হইবে--এই আশার উদ্রেক 
করিয়া ৫দয়। ইহ! বড় কম কাজ নয়,--এই “শিল্ড জয়লাতে বাঙ্গালী- 
জাতি দশ বংসর আগাইয়া৷ গেল ।” 


৬১৭৪ 





আহলাদে আটখানা (71) 115 2199) 


অভ্ভিনস্থশ্ন্শিক্ষা অপালী 


বাঙগল! নাট্যশালায় ছুই জন শিক্ষকের চূড়ামণি ছিলেন একজন 
গিরিশচন্দ্র আর একজন অর্ধেন্দুশেখর। শিক্ষকতা সম্বন্ধে এই দুইজনকে 
ছাড়াইয়| কেহ যান নাই। দলগঠন করিয়া, দলেব উপযোগী নাটক 
লিখির়! গিরিশচন্দ্র এ দেশে থিয়েটারের স্থষ্টি কবিয়! গিয়াছেন, এই স্ৃষটি- 


৬২০ গিরিশচন্দ্র 


কার্য্যে অন্তান্ত উত্তরসাধকের মধ্যে অর্ধেন্দুশেখরের নামই বিশেষ উল্লেখ- 
যোগ্য । আমরা গিরিশচন্ত্রের শিক্ষকতা প্রসঙ্গে অর্েন্দুশখরের নাম 
কবিলাম এই নিমিত্ত, যে, এই দুই জন আচার্য্যের শিক্ষকতার প্রণালী 
কিরূপ ছিল, তুলনায় সংক্ষিপ্তভাবে বলিলেই পাঠক সহজেই বুঝিতে 
পারিবেন, শিক্ষাদান-কাধ্যে গিরিশচন্তরের বৈশিষ্ট্য ও স্বাতন্ত্য কোথায়? 
অর্দেন্দুশেখর নাট্যকার ছিলেন না, অন্তলোকের নাটক লইয়া তাহাকে 
শিখাইতে হইত । গিরিশচন্দ্র নিজে নাটক লিখিতেন এবং তাহার 
'অভিনয় সম্বন্ধে যথাযথ শিক্ষা দিতেন। কাঁজেই এক কথায় বলিতে গেলে 
বলিতে হয়ঃ গিরিশচন্ত্রকে বাঙ্গলার নাট্যশালা1 তৈয়ারী কবিতে গিয়া 
রথ ও পথ--ছই ই নির্মীণ করিতে হইয়াছে । আমবা অর্ধেন্দুশেখবের 
রিহারস্তালও দেখিয়াছি-_-গিরিশচন্দ্রের রিহারম্যালও দেখিয়াছি_ 
নাটকীয় চরিত্রের ও রূপ-কল্পনায় অর্ধেন্দুশেখব যেরূপ বুঝিতেন, শিক্ষার্থীকে 
হুবহু তাহারই অনুকরণ করিতে বলিতেন। ইহাতে শিক্ষার্থীর পক্ষে 
শিক্ষা কবাটা অনেক সময় কষ্টকর হইয়া পড়িত। আদর্শ হস্তলিপি 
লিখিয়! দিলাম তুমি বতটা পাঁঝে!, আদর্শের অনুকরণ করো!--এই ছিল 
অর্ধেন্দুেশেথরের শিক্ষা মূলমন্ত্র। সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষে এভাবে 
অগ্রসর হওয়া কষ্টকর হইলেও একট! ছবি তাহারা খাড়া! করিতে পারিত। 
গিরিশচন্দ্রের শিক্ষা-প্রণালী ছিল_সম্পূর্ণ অন্তধবণের। কোন নূতন 
নাটকের শিক্ষাদানের পূর্বেব তিনি অনেক সময়েই সমগ্র নাটকথানি 
সমবেত অভিনেতা ও অভিনেত্রীর সন্মুথে পাঠ করিতেন। এই পাঠের 
সময় শ্রোতারা নাটকীয় সকল চরিত্রের ছবি, রূপ ও করপনা--জীবস্ত ছবির 
মত দেখিতে পাইত। চরিত্রগত রস, চরিত্রের বৈশিষ্ট্য-_-সমগ্র নাটকের 
উপর গ্ঁত্যেক চরিত্রের গ্রভাব অভিনেতৃদ্দিগের সহজেই বোধগম্য হইত | 
যেমন কোন যন্ত্রের ক্ষুদ্র বৃহং প্রত্যেক অংশেরই কার্যযকাদ্দিতা৷ আছে, 


উনপঞ্চাশং পরিচ্ছেদ ৬২৯ 





ছুরভিনদ্ধি (1)100119 [010089 ) 


তেমনি নাটকীয় 01০4 ছোট বড় সকল চবিজ্রেরই প্রয়োজনীয়তা থাঁকে। 
সমগ্র নাটক প্রণিধাননা করিলে, তাহ! সম্যকরূপে হ্ৃদয়ঙম করা 
মায় না। 

তাহার পর গিরিশচন্ত্র গ্রত্যেক চরিত্রের বিশেষতঃ নাটকীয় বড় বড় 
চরিত্রের অভিনয় কিন্নপ হইবে, তাহ! অনেকট! শিক্ষার্থীদিগের ্বাভীবিক 


৬২২ গিরিশচজ্ 


শক্তির উপর নির্ভর করিয়াই শিখাঁইতেন। ধাহার কণ্ঠে যে ভাবে বলিলে 
সহজে দর্শকেব ও অভিনেতার হৃদয়গ্রাহী হয়, অজ-ভাঙ্গ বা ভাবের 
অভিব্যক্তি কোন্‌ অভিনেতার অঙ্গভঙ্গি; মুখ ও নয়নের ভঙ্গিতে লুন্দর 
হয়--নুপরিশ্ফুট হয় সেই দিকে তাহার খরদৃষ্টি থাকিত, অর্থাৎ অভিনয়- 
কল! বিকাশে ধাহার যতটুকু শক্তি বা সামর্থ্-_তাহার সেই শক্তি ও 
সামর্থ্যেব যাহাতে অনুণীলনের দ্বারা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি হয়, সেই দিকেই 
লক্ষ্য বাখিতেন। কাহাঁবও মৌলিকতা (07%09116 ) নষ্ট কবিয়া 
কেবল মান্ধ অন্ুকরণ-পটু করিতে তিনি চাহিতেন না। উদাহরণ দিয়! 
বলি,_'জগৎ সিংহ” শিখাইতেছেন কি “আয়েষা” শিখাইতেছেন-__তিনি 
আগে এই চবিত্রদ্ধয়েব যত প্রকার 109710:569610 হইতে পারে, দৃশ্তের 
পর দৃগ্তে অভিনেতা ও অভিনেত্রীকে নিজে সেই ভাবে অভিনয় করিয়া 
দেখাইয়। দিতেন । পবে তাহাদের বলিতেনঃ “এই বিভিন্নভাবে অভিব্যক্তির 
মধ্যে কোনটা কাহার ভাল লাগিল?” যেরূপ উত্তর পাইতেন, শিক্ষাকা্ধ্য 
সেইরূপ ভাবেই চলিত। 

এইরূপে অভিনর-কলার স্বাভাবিক বিকাশে অন্নুকরণের ক্লেশ হইতে 
মুক্তি পাইয়৷ অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের স্কৃত্তি হইত। অভিনয়েও রস 
সহজেই জমিয়া যাইত । এইভাবে শিক্ষা! দিতেন বলিয়া-__-গিরিশচন্দ্রের 
হাতেগড়া অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট ধার! বড় দেখা 
বাইত না। সামান্য দূত হইতে রাঁজা ও রাণীর অভিনয় পর্যন্ত সরল 
সচ্ছন্দ গতিতে ব্বাভাঁবিক ভাবেই সম্পন্ন হইত। তাহার শিক্ষাদদামে গঠিত 
নাটকে কোনও মামুলি ধাচ (969790-05]9 ) থাকিত না। স্বর্গীয় 
অমৃতলাল মিজ্রের স্বাভাবিক কণম্বর ছিল- একটু সুরেলা,__“গ্রেট 
ট্রাজিডিক্নান, মহেন্দ্রলাল বন্থুর কথ্ণন্বর ছিল প্রায় সুরবর্জিত। অনেক 
সময় একই ভূমিকা গিরিশচন্দ্রের এই ছুইটী কৃতী শিল্ত-_তাহারই শিক্ষকতায় 


উনপঞ্চ'শৎ পরিচ্ছেদ ৬২৩ 





বিভীষিকা! ( ঘা) ) 


্ব-্ব স্বভাব অনুযায়ী অঠিনয় করিয়াছেন,__অথচ উভয়ের অভিনয়েই 
রসের ব্যাঘাত কিছুমাত্র ঘটে নাই। 

শিক্ষাদান কালে ধেমন, তেমনই আবার নাটক লিখিবার সময়েও 
গিরিশচন্দ্র নিজ দলের প্রধান প্রধান অভিনেতা ও অভিনেত্রীগণের 
আবৃত্তি ও অভিনয় করিবার স্বাভাবিক ক্ষমতাঁৰ দিকে লক্ষ্য রাখিয়া 


৬১২৪ গিরিশচজ্ছ 


নাটকের ভাব ও ভাষা রচন! কবিতেন। এই জন্তই অভিনেতা ও 
অভিনের্তীরী তাহাঁর নৃতন নাটকে কোন ভূমিক! পাওয়া সৌভাগ্য বলিয়া 
মনে করিতেন। অল্প আয়াসে অভিনয়-নৈপুণ্য গ্রদর্শনের এরূপ স্থযোগ 
ও সুশিক্ষা তাহারা আর কোথাও পাইতেন না। 
ল্রগক্রিশ্গণতন ও ০০মস্্ওনীজাল্ 

গিবিশঃক্তু বলিতেন,_ কালিদাস মহাকবি, শকুস্তলা নাটকে ত 
উচ্চ অঙ্গের নাট্যকলার পরিচয় পাওয়া যাঁয়। প্রথম দৃশ্য দেখ :_ রা. 
পরিশ্রান্ত, ক্লীস্ত, মগকে শর সন্ধান করিয়াছেন, এমন সময় গুনিলেন, 
“মহারাজ, এ আশ্রম-মুগ, বধ কবিবেন ন1--বধ করিবেন না” তাহার 
পর মুনিগণ তাহাকে কথ মুনির আশ্রমে গিয়া আতিথ্য স্বীকাব করিয়া 
শ্রীস্তি দূর করিবাঁব নিমিত্ত অন্ুবৌধ কবিলেন। রাজা ভাবিলেন, “আজ 
রাত্রে দীর্ঘ শ্শ্র মুনিগণের সহবাস, শাস্ত্রীয় আলাপন এবং হরিতকী ভক্ষণ ! 
এই কল্পনায় রাঁজা চলিতেছেন, সহসা পথে তিনটা অপূর্ববা স্থদ্দবীর .সহিত 
সাক্ষাৎ । তাহাদের শিষ্ট হাস্তে, মিষ্ট ভাষায় রাজ! বিমোহিত, এখানে আর 
মদনের শর-সন্ধানের অপেক্ষা করে না। 

আবার দেখ_-আশ্রমের এই প্রেমকাহিনী তূর্বাসার শাপে রাজ। 
বিস্বত হইলেন; অভিজ্ঞান প্রাপ্তে সে মোহ কাটিয়া! গেল, শকুস্তলার চিত্র 
স্বৃতি-পটে ফুটিয়াছে। রাজ৷ বয়স্তসহ কুঞ্জে বসির! প্রণয়িনীর বাহ্চিত্র 
দেখিতেছেন, ভূঙ্গ শকুন্তলা মুখের কাছে উড়িয়৷ উড়িয়া তাহাকে ব্যতি- 
ব্যস্ত করিতেছে । রাঁজা বলিতেছেন, বয়স্ত এ ছুর্ক-ত্বকে নিবারণ করো ।» 
রাজা! অন্তরের চিত্র ও বাহ্চিত্রে অভিভূত হুইয়! যে কতদূর তন্ময় হইয়াছেন, 
তাহ। কি নিপুণভাবে ব্যক্ত হইয়াছে! ইহা! উচ্চ অঙ্গের কাব্যকল!। 

কিন্ত নাট্য-কলায় সেকৃসপীয়ার অদ্ধিতীয়ন । ঘটন]| পরম্পরার শুচনার 
সমাবেশে সেকৃ্সপীয়ারের সমকক্ষ কেহ নাই । জ্যামিতির যেমন [1,503 


উনপঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬২৫ 





রূপ-মুগ্ধ (97018652003 06৪65 ) 


প্রতিপন্ন করিয়া শেষে 0. ঘ* 1). অর্থাৎ 99986100, 709০1 108200- 
308৪ বলিয়া! লেখ! হয়, সেক্সপীপারের নাটকের পরিণামে ঠিক 
“সইরূপ ৫. 2. 7). লেখা যাইতে পারে।* হ্যাম্লেটের পিতার সহসা 


শ্সসপ ₹ 





ক (15802 6722 267075/75702176). ৬৮10101) 55 00 09৪ 06175017- 
:505150. 


৬২৬ গিরিশচন্দ্র 


মৃত্যু হইয়াছে, পিতৃ-বিয়োগের অল্পদিনমাত্র পরেই মাতা দেবরকে পাণিদান 
করিয়াছেন। যৃত্ধ নরপতির প্রেতাত্মা! পুস্বকে প্রতিশোধ লইতে উত্তেজিত 
করিতেছে । এরূপ অবস্থাগত চরিত্বের পরিপাঁম ৪9৫ বই আর; 
কিছুই হইতে পারে না। নাটকের পরিখাম [290 হইবে কি 
0০10905 হইবে, সেক্সপীরার তাহার প্রতি নাটকে তাহার বীজ প্রথম 
অস্কেই কোথাও ব! প্রথম দৃশ্টেই বপন করিয়াছেন। 
(ব্যাস ও সেকৃসপীয়ার ) 

সেক্সপীয়ার কল্পন1-শক্তিতে ব্যাসদেবের সমকক্ষ হইতে পারেন না৷। 
সত্য বটে, সেক্সপীয়ার যেখানে যে কল্পন! করিয়াছেন, অন্য কোঁন কবি 
তাহা হইতে উচ্চতর কল্পনা করিতে পারেন নাই, কিন্তু যে কল্পনায় কৃষ্ণ 
চবিত্র প্রতিভাত হইয়াছিল, তাহা অপেক্ষা সেকৃসপীয়াবের আসন 
নিয়ে। সেকৃসপীয়ার অন্তর্থন্দে ব্যক্তিগত প্রবৃত্তি ও প্রকৃতির অতি অদ্ভুত 
লীল! দেখাইয়াছেন, কিন্তু মহাকবি ব্যাসের দৃষ্টি আরও সুক্ষ । প্রবৃত্তি ও 
প্রকৃতির কোথা হইতে উদ্ভব, তিনি তাহাঁও দেখাইয়াছেন। দেখ না, 
দুর্য্যোধন মহামানী। বেদব্যাস দেখাইয়াছেন, যে সতী (গান্ধারী) 
স্বামীর অন্ধত্বের নিমিত্ত জগৎ-সংসার দেখিবেন না বলিয়! চক্ষে হলি দিয়া 
থাকিতেন, তাহার পুত্র মহামানী হইতে পারে কি না? আরও দেখ+_ 
চরিত্র ও ঘটনায় মহাকবি ব্যাসের কি নুক্ষঘৃষ্টি,_কীচক বধ করিংত 
হইবে। ভীম দ্রৌপদীকে বলিলেন, “কোনওরূপে তাহাকে তুলাইয়! 
নাট্যশালায় লইয়া আসিতে পার? দ্রৌপদী অনায়াসে তাহা কার্যে 
পরিণত করিলেন। দ্রৌপদীর প্রতিহিংসা-তৃষা' এত প্রবল যে নারীর ছল 
অবলম্বনে কীচককে ভুলাইয়া আনা তাঁহার কাছে কি! সীতাঃ সাবিত্রী 
বা দময়স্তীকে এরূপ অনুরোধ করিলে, তীহাঁরা প্রস্তাব শুনিয়াই মুচ্ছিতা।, 
হইয়া পড়িতেন। কিন্তু ধাহাকে পঞ্চ স্বামীর মন রাখিতে হয়, কীচকফে 


পথশশৎ পরিচ্ছেদ ৬৯৭. 


তুলাইয়া, আনা তাহার পক্ষে সহজসাধ্যই হইয়াছিল। মহাকবি কালিদাসও 
অতি হুক্দৃষ্টিসম্পরর কবি। শকুস্তলা রাঁজা দুশ্মস্ত কর্তৃক গ্রত্যাথ্যাতা 
হইয়! তাঁহাকে 'অনার্ধ্য' বলি গালি দিলেন। সীতা বা দময়স্তী কখনই 
এরূপ ছুর্বাক্য স্বামীকে বলিতে পারিতেন না। কিন্তু শকুস্তল! যে 


স্ব্গবেশ্া মেনকাঁর গর্ভজাতা, এই দূর্বাকা-প্রয়োগে তাহ। স্বম্পষ্ট হইয়! 
উঠিয়াছে। 


পঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ 


গিক্ি্পঙত্ক্র ও নজ্ীন্মচজ্্র 


“সিরাজদৌলা, অভিনীত হইবার পর, কবিবর স্বর্গীয় নবীনচন্দ্র সেনেব 
সহিত গিরিশচন্দ্রের যে সকল পত্র বিনিময় হইয়াছিল, আমরা নিম্নে তাহা 
প্রকাশ কবিলাম।-_. 


নবীনচন্দ্রের পত্র 


ৃ [108000 11 ০: 85080. 
ভাই গিরিশ! ২৫শে ফেব্রুয়ারী ১৯০৬। 
২০ বৎসর বয়সে “পলাশীর যুদ্ধ' লিখিতে আরম্ভ করিয়াছিলাম। ৬০ 
বমর বয়সে তুমি “সিরাজদ্দৌল/ লিখিয়াছ শুনিয়া! তাহার একখানি 
আনাইয়্া এইমাত্র পড়া শেষ করিয়াছি। তূমি আমার অথেক্ষ। অর্দিক 
শক্তিশালী ইত্যাদি (৫৩ পৃষ্ঠা দ্রব্য )। 


৬২৮ গিরিশচন্র 


গিরিশচন্দ্রের উত্তর 


১৩নং বন্থুপাড়া লেন, কলিকাতা । 
ণ্ই মার্চ, ১৯০৩ 


কবিবর শ্রীযুক্ত নবীনচন্দ্র সেন সহদয়েযু-_ 


ভাইজী ! 

তোমার পত্র পেয়ে আমাব, পত্রেব উত্তরেব আনন্দে নয়ঃ সত্যই 
আনন্দ হয়েছে। তাব বিশেষ কাবণঃ যখন তোমার সঙ্গে হামেসা দেখা 
হবার সম্ভাবনা ছিল, তখন তোমাঁব প্রতি আমার যে কিবপ শ্রদ্ধা ও 
ভালবাসা, আমি বুঝিতে পাঁবি নাই, কিন্তু যখন বহুদিন তোমার সংবাদ 
পেলেম না, আর কোথায় আছ, তাহাও জান্তেম না, তখন আমাব 
মনোভাব আমি আপনি বুঝতে পারলুম। আমি অনেক দিন হ'তে মনে 
করি, যে, আমাব ছন্দের সম্বন্ধে তোমাৰ সহিত একটা বাদাুবাদ কব্বো, 
কিন্তু আমার স্বভাব কাল য। কপ্রলে হয়ঃ ত। আজ কম্রবো না। এ 
রকম প্রকৃতির লোকের কাল বড় শীদ্র হয় না। আমার মনোগত ইচ্ছা, 
সাহিত্য সম্বন্ধে এই দূব হ'তে তোমাব সঙ্গে কথাবার্তা কই, কিন্তু কতদুব 
হয়ে উঠবে, ঈশ্বব জানেন। তুমি আমার “সিরাজদ্দৌলা"র প্রশংসা 
করেছ; আমি তোমাৰ একটা প্রশংসা করি, তোমাব “পলাশীর যুদ্ধে, 
সিবাজদৌলার চিত্র অন্যরূপ হলেও তোমার স্বদেশ-অন্ুরাগ ও সেই 
দুর্দান্ত সিরাজদ্দৌলার প্রতি অসীম দয়! “রানী ভবানী”র মুখে প্রকাশ পায় । 
আমার ধারণা, অনেক দেশান্থরাগী লেখকের তুমি আদর্শ। আমা 
উপর তোমার অকৃত্রিম ভালবাসা, এ আমার গুণে নর, এ আমি সম্পূর্ণ 
বুঝিঃ তোমার মাহাত্ম্য ! লেখা ও ব্যবহারে তুমি একজন প্ররুত বৈষব। 


পঞ্চাশ পরিচ্ছেদ ৬২৯ 


তোঁমার পত্রখানি আমি সকলকে দেখাই, তারা আনন্দ করে কিনা 
জানি না, কিন্ত আমার বড় আনন্দ হয়। 

তুমি আমার বই কিনে পড়েছ ; আমাব সঙ্গে প্রথম দেখা' হ'তে 
তুমি জানো, আমি একটা! গদি বং 
'বাউওুলে”, তুমি আপনার ৮ 
গুণে আমায় মাপ করে! । | 
কেমন আছ, পরিবারবর্গ 
কেমন-_উত্তবে আমায় 
সংবাদ দিয়ে। । আমি হীপা- 
নিতে তৃগছি। ঈশ্বরের 
কপায়, যদি আবার তোমার 
সঙ্গে দেখ হয, আমার মনে 
হচ্ছে, তিন দিনেও তোৌমাবি 
সঙ্গে কথ! ফুবোবে না। 
তুমি জানে! কি না! জানি না, 
আমাঁব বন্ধু-বান্ধব বড় কম, 
সে অন্ত কারে। দোষে নয়, 
আমার দোষে । আমি মনে 
' মনে তোমায় পরম বন্ধু বলিয়া ৃ 
জানি। এ পত্রখানি আমার তন্ময়তা 
হাতের লেখা নয়; আমার হাতের লেখা প্রঃ আমি না পড়ে 
দিলে মানুষের সাধ্য নাই যে পড়ে! যার হস্তাক্ষরঃ সে আমার 
সন্তানের তুল্য, আমার লঙ্গে বসে লেখে। আমি যে যে কথ! 
বল্লুম, তাঁ ষে আমার অন্তরের কথা, এই লেখকই তার সাক্ষী । 





৬৩০ গিরিশচজ্জ্ 


আমি বিরাজদৌলার ভূমিকায় তোমার সম্বন্ধে অক্ষনবাবু যে কটাক্ষ 
করেছেন, তার প্রতিবাদ লিখ্ছিলেম, কিন্তু এই লেখকই আমান নিবৃত্ত 
করে। এর নাম অবিনাশচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়। অবিনাশ আমায় একটা 
উপদেশ দিলে; বল্লে,_-সমশায়, স্বভাব-কবির “পলাশীর যুদ্ধ” কাব্য 
আর “সিরাজন্দৌোলা”র ওকালতী-__চুইটীতে বিস্তর প্রভেদ। আপনি সে 
সম্বন্ধে সমালোচনা! করিলে কাব্যের সম্মান বৃদ্ধি না ক'রে, ওকালতিব 
সম্মানই বেশী বাড়াবেন ।” 

আমার “পলাশীর যুদ্ধ সম্বন্ধে বক্তব্য ছিল, যা ইতিপূর্ধ্বে ব্লেম__ 
তোমার সিরাজের প্রতি স্নেহ ও তোমার দেশাহুরাগ ! শরমান নিখিল- 
নাথ রার ও সমাজপতি আমার এই মতের সম্পূর্ণ সমর্থন করেন। আজ 
রাত হ,য়েছে, শুইগে। শরীরটে বড় ভাল নয়। ছন্দ নিয়ে একটা বাদাহগ- 
বাঁদ কর্‌বে। শাসিয়ে রাখ্লুম ১ কাদে এ 'বাউওুলে” দ্বারা কতদূর হবে, 


তা ঈশ্বরকে মালুম । ইতি ন্নেহ-প্রাপ্ত__গিরিশ। 
নবীনচন্দ্রের পত্র 
8000005 11 01 1080. 
ভাই গিরিশ, ২৩শে যাচ্চ, ১৯০৬ 


তোমার ৭ই মার্চের পত্রথানি যথাসময়ে পাইয়াছি। তুমি যেরূপ 
ভোলানাথ, তুমি যে আমার পত্রের উত্তর দিবে, আমি কখনো মনে 
করিয়াছিলাম না। অতএব এই ত্যাগ স্বীকারের জন্ত আমার ধন্যবাদ 
বলিব কি? তাহার অর্থত বুঝি না, আমার আস্তরিক গ্রীতি গ্রহণ কর। 

পৌরাণিক কাল বহুদিন চলিয়া! গিয়াছে । অতএব এখন কলিকাতা- 
রে্গুণের মধ্যে সেতু বন্ধন করিয়া! তোমার ছন্দ সম্বন্ধে একট! লড়াই চলিবে 
কি না বড় সন্দেহের কথা। আমি একজন চিররোগী। শীষ যে 


পঞ্চাশ পরিচ্ছেদ ৬৩১ 


কলিকাত! যাইব, সে আশী! নাই। তুমিও কলিকাতার রঙ্গালর়ৈর রপূর্ণ 
বৃহৎ উদরটি লইয়া সমুদ্রের এপারে আসিবে তাহাঁও অসস্ভব। আমার 
বোধ হয়-_এ জীবনে তুমি “মহারাস্ট্রপরিথা”র বাহিরে, কলিকাতার পাচ 
রকমের আনন্দ ও পাঁচ রকমের দুর্গন্ধ ছাড়িয়া, কখনও যাও নাই। 
যদি একবার মহারাষ্ট্দুর্গের বাহিরে এই ব্রহ্গদেশে আসিয়া যুদ্ধ দাও, 
তবে একবাব ছন্দ লইয়া যুদ্ধ করি। ব্রদ্ধদেশ প্রকৃতই 1,900 ০ 728০0%৪ 
& 781708-_দেখিবার যোগ্যস্থান। তোমাকে একবার এখানে পাইলে 
তালা চাবি দিয়! ২ মাস বন্ধ করিয়া রাখিয়। একখানি নাটক লেখাইয়। 
লই। আমার বিশ্বাস রঙ্গালয়ের দায়ে নাটক লিখিয়৷ তোমার প্রতিভ৷ 
পূর্ণ-শ্বৃতি হইতেছে না 

কেবল সিবাঁজদৌল! নহে, তোমাব যখন যে বহি বাহির হয়, আমি 
তাহা কিনিয়া আনিয়া আগ্রহের সহিত পড়ি। শুনিয়াছি অনেক 
“সাহিত্যসিংহ” অগ্ঠের লেখা বাঙ্গল! বহি পড়েন না। কেবল নিজের 
বহিই পড়েন। অনেকের বহির পাঠকও বোধ হয় নিজে গ্রস্থকার। 
কিন্তু আমি ক্ষুদ্র লোক। আমাৰ সেই বড়মান্ুধী নাই। তোমাৰ 
“গীতাবলীব” একথগুও আনাইয়া তোমার জীবনীটি পড়িলাম। ঠিক 
কথা। তোমার বন্ধুবান্ধব বড় কম। তুমি পীঠস্থান কলিকাতায় এক, 
জীবন বলিদান দিলে। কিন্তু কলিকাতার অল্প লোকেই বোধ হয় 
তোমাকে চিনে, ও আমার মত তোমায় শ্রদ্ধা করে। 
* উরেশের ( সমাঁজপতির ) দ্বারা অক্ষয় বাবু এক দীর্ঘপত্র লিখিয়৷ 
আমি কেন এরূপ ভাবে সিরাজন্দৌলার চরিত্র অঞ্চিত করিয়াছি, তাহার 
লম্বাচৌড়া কৈফিয়ত চাহিয়াছিলেন। আমি বলিয়াছিলাম--তিনি 
লিখিরাছেন-_ইতিহাস, আমি লিখিয়াছি--কাব্য । তখন প্রত্িযাছিলাম 
মার্সষেন । তথাপি বাঙ্গালীর মধ্যে বোধ হয় আমিই প্রথম গরীব 


৬৩২ গিরিশচন্দ্র 


সিরাজনৌলার জন্য এক ফোটা চক্ষের জল ফেলিয়াছিলম । অক্ষয়বাবু 
তাহার পর আমাকে ক্ষম। চাহিয়া এক পত্র লেখেন এবং আমার- এক- 
পত্র ছাপাইতে চাহিয়াছিলেন। আমি লিখিয়াছিলাম যে পলাশীর যুদ্ধের 
জন্তে গবর্ণমেন্টেব বিষচক্ষে পড়িয়া এক জীবনে অশেষ হুর্গতিভোগ 
করিয়াছি । পত্রখানি ছাঁপাইলে আমার ছুর্গতি আরে! বাড়িবে মাত্র । 

ভাল, আমাব “কুকক্ষেত্র”থানি কি তুমি অভিনয় করাইতে পাব না? 
তাহাব ঘাত্রা, হইয়া ত শুনিতেছি কলিকাতা ও সমস্ত বঙগদেশ 
কাদাইতেছে। 

হাতেব লেখ। সম্বন্ধে আমিও তোমার কনিষ্ঠ কি জোষ্ঠ ভ্রাতা! 
ঢাকাব কালীপ্রসন্ন ঘোষ একবাব লিখিয়াছিলেন যে হাতেব লেখাব 
উপব বিবাহ নির্ভব কবিলে আমাৰ বিয়। হইত না। 

ভবসা কবি এখন ভাল আছ । “গীতাবলীব' ছবিতে দেখিলাম যে, 
শবীবটি একেবাবে খোয়াইয়াছ এবং মুত্তিথানি গণেশেব মত করিয়া! 
তুলিয়াছ। এখন কোন্‌ নৃতন খেয়াল লইয়! নিজে নাঁচিবাব ও বঙ্গদেশ 
নাঁচাইবার চেষ্টায় আছ? 

অমৃতবাঁবুকে ২ খানি পত্র লিখিয! উত্তব পাই নাই। দেখা হইলে 

বলিও । ভায়া বোধ হয় এখন “ম্বদেশী রসের রসিক । 
ৃ তোমারই-_নবীন। 
গিরিশচন্দ্র উত্তর | 
১৩নং বন্তুপাঁড়া লেন, কলিকাতা] । 

কবিবর শ্রীযুক্ত নবীনচন্দ্র সেন সমীপেষু ২৩শে এপ্রিল, ১৯০৬ 
ভাইজী, 

তোমর পত্রেব উত্তব দিই নাই, তাহাব কারণ “মীরকাঁসিম” লিখিতে 
ব্যস্ত ছিলাম। একুরক্ষেত্র* ভাল করিয়া দেখিবার অবকাশ ছিল না। 


পঞ্চাশ পরিচ্ছেদ ৬৩৩ 


নার নাটক হয় নিশ্চয়। কিন্ত এখন ভেসে যাবে। এখনো ন্বদেশের 
মৌখিক অনুরাগ খুব উচ্চ। যতদূর নাঁটক হোঁক বা ন! হোক, নাঁট্রোল্লিখিত 
ব্যক্তিগণের এইরূপ মৌখিক ঝাঁজ এখন সাঁধারণেব প্রিয়। মহাভারতের 
যেরূপ প্রকৃত ব্যাখ্যা তোমাৰ পকুরুক্ষেত্রে” হয়েছে, তা যদি সাধাঁরণে 
বুঝতে পারতো, তাহলে 
প্রকৃত নীতিশিক্ষ। ও কর্তব্য 
অনুষ্ঠান স্তর হতো। বুঝতো 
ধর্মপ্রাণ হিন্দুর ধর্ম ব্যতীত 
উপায় নাই। সময় ঘুর্চে,_ 
মহাভারতে দিন সত্বর 
ফিষবে। কাব্যখানি নাট- 
কাকারে পবিণত কৰা 
আমাব ইচ্ছা বহিল। 
দুশ্টী প্রশ্নেব উত্তব হ'লো। 
দেহের অবস্থা নিজ দেহেব 
অবস্থায় অনুভব কবো। 
তুমি যুদ্ধ না করিলে কি 
হয? আমি যুদ্ধ কর্বো? 
যুদ্ধ আব কিছু নয়, "“গৈবিশ- 
ছন্দে” একটা কৈফিয়ৎ। 
দৃঢ় প্রতিজ্ঞা “গৈবিশ ছন্দ” বলিয়! যে 
একটা উপহাসের কথ! আছে, তাঁর প্রতিবাদ । প্রতিবাদ এই, আমি 
বিস্তর চেষ্টা কৰে দেখেছি, গছ লিখি সে এক স্বতন্ত্র, কিন্তু ছন্দোবন্ধ 
ব্যতীত আমবা ভাষা কথা কইতে পারি না । চেষ্টা করলেও ভাষা কথা 





৬৩৪ গিঁরিশচজ্জ 


কইতে গেলেই ছন্দ হবে। সেইজন্য ছন্দে কখা নাটকের উপযোগী । উপস্থিত 
দেখা যাক--কোন্‌ ছন্দে অধিক কথা হয়। দীর্ঘ জিপদী, লু ত্রিপদী ব! যে 
যে ছন্দ বাঙ্গালায় ব্যবহার হয়, সকলগুলি পয্নারের অস্তর্গত | অমিত্রাঁক্ষব 
ছন্দ পড়িবার সময় আমার যেমন ভাঙ্গা লেখা; তেম্নি ভেঙ্গে ভেঙ্গে 
পড়তে হয়। যেখানে বর্ণনা, সেখানে স্বতন্ত্র, কিন্ত---যেখানে কথাবার্তা, 
মেইখানেই ছন্দ ভাঙ্কা। তারপব দেখা ধাউক, কোন ছন্দ অধিক। 
দীর্ঘত্রিপদীর দ্বিতীয় চরণের সহিত শেষ চরণে মিলিত হইয়া! অধিকাংশ 
কথা হয়। 

“দেখিলাম সরোবরে কমলিনী বান্ধিয়াছে করি ।* 
লঘুত্রিপদ্দীর দ্বিতীয় চরণ ও শেষ চরণ অনেক সময় মিলিত হয় । 

_.. শবিরস বদন রাদীব নিকট যাঁয়।” 

এ সওয়ায় পয়ার লঘুত্রিপদীর এক এক পদ বিশেষতঃ শেষ পদ পুন: পুন: 
ব্যবহৃত হয়। আমার কথা এই যে এ স্থলে নাটকের চৌন্ধ অক্ষরে বীধা 
পড়া কেন? চৌদ্দ অক্ষরে বাঁধা পড়লে দেখা যাঁয়--সময়ে সময়ে সবল 
যতি থাকে না। 

“বীববাহু চলি যবে গেলা যমপুরে 

অকালে ।” 
এরূপ হামেসাই হবে। বাঙ্গল! ভাষার ক্রিয়া “হইয়াছিল প্রভৃতি অনেক 
সময়েই যতি জড়িত করিবে। কিন্তু গৈরিশছন্দে সে আশঙ্কা নাই? 
যতি সম্পূর্ন করিয়া সহজেই লেখা যাইবে । আর এক লাভ, ভাষা 
নীচ হ*তে বিন চেষ্টায় উচ্চ স্তরে সহজেই উঠ্বে। সে স্ুবিধ চৌন্দর 
কিছু কম। কাব্যে তার বিশেষ প্রয়োজন নাই ; কিন্তু নাটকে অধিকাংশ 
সময় তার প্রয়োজন। এইতো পাতনাম! করিলাম; যদি তুমি ছুই এক 
'্যা তীর ছাড়ো, আমিও ছু'একটা কাটান তীর ছাড়বো । তবে যদি 


পঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬৩৫ 


তোমার ফুরসৎ না! হয়, শরীর ভাল ন! থাকে; বুদ্ধে আহ্বান করি না। 
“আম গেলে আম্মী--যৌবন গেলে কাদতে বসি।” যতদ্দিন তোমার 
সঙ্গ করা অনায়াসসাধ্য ছিলো) ততদিন তা! উপেক্ষা করেছি। কিন্তু 
এখন এই দূরদেশ ব্যবধানে কথা কইতে ইচ্ছা করে। তোমার তো পত্র 
লিখতে ক্লান্তি নাই। যদি মাঝে মাঝে লেখো, শোবার সময় পাঠ করে 
শুতে যাই। তোমার সমস্ত কুশল সংবাদ প্রতীক্ষায় রহিলাম। ইতি 


গুণান্ধ_-গিরিশ। 
গিরিশচন্দ্রের উত্তর 
১৩নং বন্থপাড়া লেন, কলিকাতা । 
কবিবর শ্রীযুক্ত নবীনচন্ত্র সেন। ২০শে জুলাই, ১২০৬ 


ভায়া, 

তুমি আমার যুদ্ধের আহ্বান ঠিক বুঝতে পারো নাই । যুদ্ধে আপোষে 
অস্ত্র পরীক্ষা করবার আমার ইচ্চা ছিল; হার-জিতের প্রতি কখনো! আমি 
লক্ষ্য রাখি নাই। যাই হোক, তোমার শরীর অস্থুস্থঃ ও সম্বন্ধে কথার 
আর প্রয়োজন নাই। আমি ভাবিয়াছিলাম, আস্তে আস্তে সময়ানুসাবে 
এ বিষয়ে কথাবার্তা কহিলে ভাষার কোঁন না কোন উপকার হইতে পাঁবে। 
এই তো যুদ্ধের কথ! । 

সত্যই খুব ব্যস্ত ছিলাম, এখনো আঁছি। মীরকামিম লইয়! ব্যস্ত 
ছিলীম, এখন আবার পরের কাজে পড়িয়াছি। মীরকাসিম সম্বন্ধে 
বাজারে সুখ্যাতি শুনিতে পাইতেছি। আর যে কয় রাত্রি অভিনয় 
হইয়াছে, লোকেরও যথেষ্ট ভিড়। ব্রাহ্গরা পথ্যস্ত সন্ধ্। এ আমার 
সামান্ত ভাগ্য নহে। আমার ছেলে দানি, মীরকাঁসিমের অংগ লহইয়া- 
ছিল, তাহার সুখ্যাতি একবাক্যে 


৬৩৬ গিরিশচন্দ্র 


মীরকাসিম ছাঁপাখানায় পাঠাইয়াছি, তবে কতদিনে প্রাফ দেখিয়া 
উঠিতে পারিবঃ তাহা আমার আমিরী মেজাজের উপর নির্ভর। তুমি 
তো! জানো ৪৮৪: ৮০ 4০ 6০-0%৮ ৮1990 5০০ 08 7006 02 61] 
ট০-0০০০ঘ্স._-আমার মটে।। এইতে যতদিনে ছাপা হয়। তবে 
অবিনাশ বাবাজী যে আমার লেখক, তাঁব কল্যাণে নেহাঁৎ আমিরীটে 
চল্বে না । মীবকাঁসিম ছাঁপা হইলেই আঁমাব 'বলিদান” ও “বাসরেব 
( বিক্রমাদিত্যেব ) সহিত পাণিয়ে দিব। 

আমি তো হাঁপে ভূগ্ছি। তোমায় কোন বন্ধু আশ্রয় কবেছে? 
আমার এক দাঁনির কথা বল্লুমঃ আব তো কাবে কথ! বল্বাব খুজে 
পাই না। তোমার পরিবাববর্গ, ছেলেপুলেব আন্নপূর্বক সংবাদ লিখবে। 
সকলেব শুভ সংবাদ শুন্লে একটু মনটা খুসী হবে, ভাব্বো, যাহোক 
থুকটা বুড়ো! আছে যে পবিবাঁববর্গ লয়ে একটু শান্তিতে কাটায়। বোধ 
5য় বুঝতে পেবেছ, এ পত্রেব লৌকিক উদ্ভব নয়। বাস্ধবান্ধব তো বেশী 
নাই,_-এ এক জনেব সঙ্গে তবু কথা কই। কবিগিরি কাঁজট! কি বুঝলে? 
আমি কি বুঝিছি-_-বলি_একটু দৃষ্টি খোলে তাতে একটু আনন্দও 
আছে। কিন্তু অস্তর্দষ্টি খুলে আপনার পেটেৰ ময়লা দেখে ঘোঁব অশান্তি 
হয়। মনে হয়, বুড়ো হলুম, তবু স্বভাব শৌধ্বালে! না। ইতি 

শ্নেহাম্পদ__গিরিশ। 


নবীনচক্দ্রের উত্তর 


ঠি71000205 1] ০1] 2090, 

ভাই গিরিশ, €[70117) (90595. ২৭।৮1৩০৬ 
তোমার ২০শে জুলাইর পত্র পাইয়াছি। আমি কিছু অন্ুস্থ ছিলাম, 
তুমিও “মীরকাসিম' লইয়া ব্যস্ত তাই এতদিন উত্তর লিখি নাই। সংবাদ- 


৬৩৮ গিরিশচন্দ্র 


পত্রেও দেখিতেছি “মীরকাঁসিমে বেশ প্রতিপত্তি হইয়াছে । তুমি 
ক্ষণজ্ন্া লোক । এই বয়সেও যেন তোমার প্রতিভা দিন দিন আরো 
বদ্ধিত হইতেছে । 

আমার অনুরোধ, তুমি 
৭দিনে প্রসব না করিয়াঃকিছু 
বেণী দিন সময় লইয়! “আমা- 
দেব দেশেব বর্তমান বাজ- 
নীতি, সমাজনীতি,শিল্পনীতি, 
ধর্মনীতি, দরিদ্রতা, অন্ন- 
হীনতা, জলহীনতাঃ শিক্ষা 
বিভ্রাট, চাঁকরি-বিভ্রাট, 
উ কি লি-ডাক্তারি-বি ভ্রাট, 
বিচার-বিভ্রাটঠ উ পা ধি- 
ব্যাধি--সকল বিষয়েব 
আদর্শ ধরিয়া এবং দেশো- 
ধারের উপায় দেখাইয়া 
একথানি 0020100-৮5219 
নাটক লিখিয়৷ দেশ রক্ষা 
কর। বর্তমান স্বদেশী আন্দো- 
লানটা স্থায়ী কব উহার বিরক্তি 
প্রধান লক্ষ্য হইবে। আমর! এতকাল সাহিত্য ও রঙগমঞ্চে যে ব্বদেশ 
লইয়। কাদিয়াছি, এতদিনে শ্রীভগবান যেন তাহা শুনিয়াছেন, 
এবং দেশের হৃদয়ে এই নব শক্তি সঞ্চারিত করিয়াছেন। উহা 
বঙ্গমঞ্চের দ্বাব! তুমি যেরূপ স্থায়ী ও বদ্ধিত করিতে পারিবে, আর কেহ 





পঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬৩৯ 


পারিবে না। “নীলদর্পণের, মত শ্রই একখানি বহি তোমাকে অমর 
করিবে। উহা! নগরে নগরে, গ্রামে গ্রামে--অভিনীত হইয়া দেশে নৃতন 
জীবন সঞ্চার করিবে। তুমি বঙ্গমঞ্চের দ্বারা ধর্ে ও প্রেমে দেশ বহুবার 
মাতাইয়াছ। এবার হ্বদেশ-প্রেমে মাতাইয়া তোমার জীবন-ব্রত উদ্যাপন 
কব। তুমি এই বহিখানিতে নিয়মিত অমিত্রাক্ষর ও মিত্রাক্ষর গণ্ভের 
সহিত চালাইবে। আমার ক্ষুদ্র শক্তিতে যতদূর পাবি, তোমার উত্ত 
বচনায় আমি সাহায্য করিব । আমাব অন্রোধটা রক্ষা করিবে কি? 
আমার এরূপ পেড়াপিড়ির দরুণ বঙ্কিমবাবু “আনন্দমঠ লিখিয়াছিলেন। 
ত্রাহাঁব হাতের চিঠি আমার কাছে আছে । এত বংসর পরে উহার কি 
অমৃত ফল ফলিয়াছে দেখিতেছ। তবে তিনি “আনন্বমমঠে” দেশোদ্ধাবের 
উপাঁয় দেখাইতে পারেন নাই। তুমি সেই মাতৃপুজার সঙ্গে পুজার 
পদ্ধতিও দেখাইবে। 

“দানি, বাবাজির মীরকাঁসিমের অভিনয় এত ভাল হইয়াছে শুনিয়াছি 
__বড় স্থুখী হইলাম। বাবাজির অভিনয় দেখিয়৷ বহুপূর্ধবে আমি স্থির 
কবিয়াছিলাম, যে অভিনরে বাবাজি পিতার যোগ্যপু্র হইবেন। 

আমার আর 'ছেলেপুলে” কি? যদ্দিও শ্রীভগবান একটি ক্ষুদ্র সৈন্যের 
প্রতিপালন ভার আমি দরিদ্রের স্কন্ধে অর্পণ করিয়াছেন,__-আর উহাই 
আমার জীবনের এক সাত্বনা--আমার নিজের এক সন্তান মাত্র। 
নির্মলকে তুমি কলিকাতায় বড় ভালবাসিতে এবং তাহার গানের প্রশংসা 
করিতে। বিলাত হুইতে ব্যারিষ্টার হয়! আমিলে এক বৎসর কলিকাতায় 
শিক্ষানবিসি করিয়া, নির্মল এখানে ব্যবসা করিতে গত বংসর আসে। 
আমিও 1%6508107 0? 8975108 অস্বীকার করিয়া তাহার সঙ্গে এখানে 
আমি। তুমি শুনিয়া সুখী হইবে- নির্মল প্রথম মাসেই ১২৯০ টাঁকা 
পায়, এবং এ ১॥* বৎসর যাবত তাহার আয় ১২০* হইতে ২০০০ + 


৬৪০" গিরিশচন্দ্র 


তাঁহার মাসিক ব্যয়ই প্রায় ১৫০০ । তাহার এই.আশাতীত কতকাধ্যতা 
শ্রীভগবানের কৃপা, আমার পিতার পুণ্যফল এবং আমার চট্টগ্রামের মুসল- 
মানদের সাহায্য । এখানে তাহাদ্দেব সংখ্যা অন্পঃ এবং ইহাঁবা আমাৰ 
পুর বলিয়া নির্মলকে অত্যন্ত সাহায্য করিয়াছে। শ্রীভগবানের অসীম 
দয়ায় আমার পিতৃত্ব ঘুচিয়া এখন দ্বিতীয় পুত্রত্ব অবস্থাঁ। কি আশ্ষ্য্য, 
এইমাত্র আমাঁব ৪ বসা বড় নাতিনী ঠাকুরাণী আঁসিয়৷ বলিল-_“তাতা ! 

তাতা! এই গ্রন্থাবলী নেও।” দেখিলাম “গিরিশ গ্রস্থাবলী” ! 
ন্েহাকাজ্জী-_শ্রীনবীনচন্ত্র সেন। 

নবীনচন্দ্রের পত্র 

1] ১০01] 10905 1806001). 

ভাই গিরিশ, ১২1১৪।০৬ 
তুমি এই নির্বাসিতেব সপ্রেম বিজয়ার আলিঙ্গন গ্রহণ কবিও। 
বাড়ীতে পুজা; কিন্ত পুত্র-_ছুইটি বড় মক্দমার় আবদ্ধ হওয়াতে এ বৎসব 
বাড়ী যাইতে পাবি নাই। পৃজা-এই নির্বাণেব দেশে নিরানন্দে 
কাটাইয়াছি। ইহার মধ্যে আনন্দ যাহা--তোমার পাঁচখানি নাটক 
পুজার উপহার পাইয়া অনুভব করিয়াছি। কিন্তু এ অপবায় কেন? 
তুমি ত মহাপুরুষ, কখনে। আমাকে তোমাব কোন বহি উপহার পাঠাও 
নাই। আমি বরাবর তোমার যখন যে বহি বাহির হইয়াছে কিনিয়া 
পড়িয়াছি। আমিও কখনো তোমাকে উপহার পাঠাই নাই, কারণ তুমি 
পড়িবে না। যাক; “মীরকাসিম” নূতন পড়িলাম। অন্ত বহি সকল আব 
একবার এই নিরাঁনন্দের সময় পড়িয়া বড়ই আনন্দ পাইলাম। (ন্রান্তি, 
ও “বলিদান” আমাব বড়ই ভাল লাগিল। “্র্ণলতার, পূর্বে কি পৰে 
হতভাগিনী বাঙ্গালার অধপতনের এমন জীবন্ত ছবি বুঝি আর দেখি 
নাই। একজন “রুদ্রসেন” নাম দিয়া সেক্ষপীয়ারের “অথেলোর অনুবাদ 


পঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬৪১ 


করিয়াছেন। তুমি উহা! একবার পড়িয়া দেখিবে কি? ভরসা করি 
তাহাতে তুমি “অমিত্রাক্ষব' ছন্দ ও তোমাঁর “অমিত্রছন্দে+ মধো তারতম্য 
কি বুঝিতে পারিবে । 

'মীবকাসিম'ও সিরাজন্দৌলার সমকক্ষ বলিয়া বোধ হইল। তবে 
মীবুকাসিমের প্রস্তাবন! (01০5) অধিকতর জটিল। ভাল, ইহারা উভয় 
যে এরূপ দেবচরিত্রসম্পন্ন ও দেশহিতৈষী ( 40891 ৪09 [28610 ) 
ছিলেন, তাহীব প্রমাণ কি? যদি কিছু থাকে, সে সকল একটা পরিশিষ্টে 
দিলে ভাল হয়। 

উপহাবেব সঙ্গে তোমাব কোন পত্র পাই নাই । ভবসা কবি তাহার 
কারণ _শাবীরিক অনুস্থত নহে । আবাঁব কি কোন নাটকি নেশার 
পড়িয়াছ ? 

তোঁমাঁর ভ্রান্তি নাটকের ফটোটাঁও কি ভ্রান্তি? এক একটা ফটো 
যেন নিতান্ত ভ্রান্তিই বোধ হইল । আঁপনি মহাপুকষ বলিয়া মুর্তিটা এক 
এক সময়ে এক বকম হয়? 

ন্লেহাকাজ্জী__শ্রীনবীনচন্ত্র সেন। 


পুঃ- ফাঁউনটেন পেনের কল্যাণে লেখাটাও আগাগোড়া তোমার 
ফটোঁব মত নানামুত্তি ধাবণ করিল। ক্ষমা কবিও। 


গিরিশচক্দ্রের উত্তর 
19, 1739591)8:8, 149,092 08100068- 
কবিবব শ্রীযুক্ত ন্বীনচন্দ্র সেন 1661) 0০06009:9 1996. 
ভায়া, 


ঠিক ধবেছ, শরীরের অস্থখের দরুণ পত্রেব উত্তব দিতে পারি নাই। 
সহজ উত্তর সহজেই দেওয়া যেতে পাঁর্তো, কিন্তু তোমার ফবমাস সম্বন্ধে 
৪১ 


৬৪২ গিরিশচন্দ্র 


ছু কথা বল্‌বো ও দু"কথা জিজ্ঞাসা কষুবো, এই জন্ত শরীরের আরাম 
অপেক্ষা করছিলেম, সে অবধি আর সে আরাম পাই নাই। পুবীতে 
হাওয়া বদল করতে গেলেম, শধ্যাগত হ,য়ে ফিরে এলেম। লাভের মধ্যে 
লা জগন্নাথ দর্শন হয়েছে । ব্যামো 
আমাব পুবানো কুটুম-_ 
হাপানী। পয়স! ব্যয় ক'রে 
তার পবিচধ্যা হচ্চে । 
নির্মলেব উন্নতিতে আমি 
আশ্চর্ধ্য হই নাই। তোমাঁব 
টেবিলে আমার পাশে সেই 
বালককে এখনো আমি 
দেখ্ছি। সে যে 7086116- 
1):,6105 তখন পাবতো না, 
তার মানে--1)008০7 
কবা তাৰ স্বভাব-সঙ্গত 
নয়। তোমায় বল! বাহুল্য, 
17080191180108এব সার অংশ 
লইয়া আইনেব তর্ক করিতে 
হয়। সে তর্কে নির্মল 
কপট শোক অবশ্থই সম্পূর্ণ পটু হয়েছে। 
আমি কায়মনোবাক্যে তাবে আশীর্বাদ কর্লেম। তাকে জিজ্ঞাস 
ক'রো-_-এ বুড়োকে কি তাব মনে আছে? 
সাত সমুদ্র তেবে৷ নদীর জল খেয়ে, শেষ দশায় তুমি যে তোমার 
পুত্রের কল্যাণে এরপ স্তখী হয়েছ, এ তোমার বন্ধু মাত্রেই আনন্দের 





পঞ্চাশ পরিচ্ছেদ ৬৪৩ 


বিষয়। আমি ঈথ্বরেব কাছে প্রার্থনা কবি, এ সুখ বুড়ো-বুড়ীতে অবাধে 
ভোগ করে৷ । 
একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেটী ক'রে এমন তাজা 
প্রাণ কি ক'রে বেখেছ? আমাব ধাঁবণ!, সচরাচর ডিপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট 
যেরূপ দেখি, তাদের সংসর্গে যদি পনেব দিন বাস ক”র্তে হয়, তাহলে 
পাগল হয়ে যাই। কোন কাজেব কথা বল্বার শক্তি নাই। 
তোমা প্রন্ত।বিত নাটক+যদ্দি ভগবান আমাব দ্বারা লেখান,আপনাকে ধন্য, 
জ্ঞান কণ্ষ্ঝে। কিন্ত লেখ্বাব আমি কতদূৃব যোগ্য,তা৷ বিশেষ ভাবনার বিষয়। 
তোমার বই যে আমি পড়ি না--এমত নয়। কিন্তু পড়বে! পড় বো 
কবে অনেক সময়ে পড়া হর না। অনেক দেখলে শুনলে বটে, কিন্তু 
আমার জোড়া আল্সে-কুঁড়ে দেখেছ কি না সন্দেহ। পিটে চাবুক না 
পড়লে, আমি নড়বাঁব বান্দা নই। তোমার পত্রেব উত্তর লিখবে কল্পন! 
কবেছি, এমন সময় তোমার পত্রেব উত্তর এলো । সমুদ্র ব্যবধানে যদি 
মনে মনে কোলাকুলি হয়, তুমি নিশ্চয় জেনো, সে কোলাকুলি হয়েছে। 
আর এক মজাব কথা, আমার হাওয়া ব্দলবার প্রয়োজন, তাই ভাব- 
ছিলেম, বেঙ্গুনে যাব। অনেকেই যেতে পবামর্শ দে, তবে “রাধা নাঁচবে 
কি না”জানি না! সকাল সকাল শুতে চন্লুম, প্রস্তাবিত নাটক সম্বন্ধে 
আম্বব অনেক কথ! আছে, একটু সুস্থ হয়েঃ তোমাব সঙ্গে আলোচনা 


রু'র্বো। নমস্কীর! ন্নেহাকাজ্ষী- গিরিশ । 
নবীনচক্দ্রের উত্তর 
1900090105 11. সু 00 1080. 
ভাই গিরিশ, ১৯।১১1০৬ 


তোমার ১৬ই অক্টোবরের পত্র পাইয়াছি। তুমি অসুস্থ 
শুনিয়া তোমাকে জালাতন করিতে এতদিন উত্তর দি নাই। নিজে ও 


৬৪৪ গিরিশচন্দ্র 


পুত্রবধূব পীড়া হওয়াতে “লেডি ও “অ-লেডি' ডাক্তারদের ছোটাছুটিতে 
বড় বিব্রত ছিলাম । বউ এখন সারিয়াছেন। 

তুমি তবে এবার একটা অসাধ্য কর্ম কবিয়াছ। তুমি কলিকাঁতার 
বাহিরে গিয়াছিলে ! শুধু তাই নহে, একেবাবে শ্রীক্ষেত্রে গিয়াছিলে ! 
সাধে কি গোটা ভাবতটায় এত ঘন ঘন ভূমিকম্প হইয়াছে! কেবল 
জগন্নাথদেবত্রয়েব চন্দ্রমুখ* মাত্র যদি দর্শন কবিয়া ফিবিয়া থাক, তবে তুমি 
বড় হতভাগ্য । তুমি পুরীর সমুদ্র শোভা একবার তোমার কবিত্ব ও 
ভাবভরা হৃদয়ে কি দেখ নাই? আহা! কি দৃশ্ত! আমি৭ মাঁস সেই 
সমুদ্র-সৈকতেব একটা বাঙ্গালায় ছিলাম এবং দ্রিনবাক্রি সমুদ্রের দ্দিকে 
আত্মহারা চাহিয়! থাঁকিতাম। 

নিন্ল তোমার আশীর্বাদ পাইয়। অত্যন্ত সুখী হইয়াছে । নির্মল 
তোমার ভক্ত। এখনো! সর্বদা তোমাৰ গান গাইয়' থাকে । একবার 
বাণাঘাটে তোমার একটি গান গাইলে, ববিবাধুকে জিজ্ঞাসা করিলাম__ 
“কেমন ? গানটা বড় সুন্দৰ না ?” তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন__পগানটি 
কার?” আমি বলিলাম__“গিবিশেব”। তিনি ধীবে ধীবে বলিলেন__ 
*শুনিয়াছি লোকটা বেশ গান বাধিতে পাবে” আমি অবাক হইয়া 
চাহিয়া রহিলাম ! 

ভায়া। আমাৰ ছুজনেব প্রাণটা বুঝি চিরদিনই তাজা থাঁকিবে। 
আমি তাজা বাখিয়াছি, তুমি কি রাখ নাই। আমি ডেপুটির পালে 
পড়িয়া নথি থাটিয়াছি। তুমিও বঙ্গভূমিব তরঙ্গে পড়িয়া যে কেবল 
রঙ্গরসটুকু পাঁইয়াছ এমন ত বোধ হয় না । একটা ছুটা নহে, এতগুলি 
রঙ্গভূমি সৃষ্টি করাঃ ও তাহাঁব পরিচালনা কবা, গ্রেংং তজ্জন্তে এতগুলি 
নাটক লেখা, বড় রসের কাধ্য নহে। 

. অতএব তুমি “আশল্সে কুঁড়ে না হইলে, এই তাত্্কুটসেবী বঙ্গদেশে 


পঞ্চাশ পরিচ্ছেদ ৬৪৫ 


“আল্সে কুঁড়ে” আব কে? এই কৈকিম্নত আমি শুনিব না। আমার 
প্রস্তাবিত নাটকটি তোমাকে লিখিতে হইবে । আব ৭ দিনে প্রসব করিতে 
পারিবে না। উহাব জন্টে দীর্ঘ সময় নিয়া, তোমায় নাটক মন্দিবেব 
সুদর্শন চুড়া স্ববপ উহা স্থাপিত কবিতে হইবে । 

হিমালঘ যখন একবাব টলিষাছেন, আব একবারও পারেন। একবাব 
বখন তুনি কলিকাতাব--ধৃলি, ধূম ও হট্গোলপূর্ণ কলিকাতাব- মায়া! 
কাটায়! পুরী যাইতে পাবিযাছ, তখন ইচ্ছা কবিলে এই *[8]0 &) 
[/2০0৪৮ব দেশেও আপিতে পাঁব। ৩ দিন অনন্ত সমুদ্রেব নির্মল বাতাস 
সেবন কবিলে ও তাহাব মবর্ণনীয শোভ1 দেখিলে, তোমাৰ ভাবুকের হৃদয় 
আনন্দে বিভোঁব হইবে । ন্নেহাকাজ্জী-_শ্রীনবীন চন্্র সেন। 


গিরিশচন্দ্রের উত্তর 


1:35 1360861)9/%, 1420065 0810006, 
কবিবব শ্রীযুক্ত নবীন চন্দ্র সেন, 14-_-12--06. 
ভাবা, 
যেদিন তোমার পত্র পাইলাম, সেদিন আমাব বড় অসুখ । 
মনে হইল, তুমি বদি নিকটে থাকিতে, ছুটিয়া আসিতে । এখনও উপশম 
হয় নাই। কবিবাজী ইস্তফ! দিয়া উপস্থিত নীলবতন সরকাবেব চিকিৎসায় 
আছি। *তাতেও কিছু বিশেষ ফল দেখিতেছি না । 
তোমাৰ স্মবণ থাকিতে পাবে, অমব দত্তব “সৌবভে” লিখিয়াঁছিলাম 
_-“সাহিত্যে কতদূর আমাব স্থান জানি না।” তুমি এ কথা লইয়া ব্যঙ্গ 
করিয়াছিলে। এখন রবি বাবুব কথায় কি বোঝো? তোমাৰ মতন 
গলা-প্রাণ আর বউমাঁর ভেড়ে নিন্দলের মতন লোক, ছুনিয়ায়' বড় বেণী 
নাই জেনো। ] 


৬৩৪৬ 


আমি তোমার ফবমাইস খাঁটিব, নিতাস্ত ইচ্ছ1! )-কতদূব কৃতক|ধ্য 
হইব, ঈশ্বরের ইচ্ছা । বিষয়টা ভাবুকেব ভাবিবার বটে ; বোঁগের তাড়নায় 
রাত্রি জাগিতে হয়, সে সময় নিবিবিলি পাঁইয়! এ বিষয়টাই উকি মাবে। 


আমি মাথা গবমেব ভয়ে ঝাঁড়িয়া ফেলি, কিন্তু সে একেবারে ছাডে না। 


প্রাণ তাজা বাথাব কথা 
বলিতেছ,_-প্রাণ তাজা 
ছিল, কিন্তু ভগবান- চিন্তা 
আসিয়া হুটপাট কবিতেছে। 
এ জীবনে কিরূপ লাভ হইবে, 
তাহা আমাব অহনিশি 
চিন্তা । সে সকল চিন্তাব 
শ্াতি কিবপ বহিতেছে, 
পাবি বদি, কখনো! তোমায় 
জানাইব। 

সমুদ্র দেখিয়াছি, ডিপুটা 
ম্যাকিষ্্রেটে অটলবাবুব 
বাড়ীতে হামেসা যাঁইতাম+__ 
সমুদ্র ঠিক সামনে তর্জন- 
গর্জন কবিতেন। কিন্ত 
জাহাজে না চডিলে তাহাব 
সম্পূর্ণ শোভ। হৃদয়ঙম হয় না। 





আতঙ্ক 


রেঙ্গুন যাইকাা তোমার অতিথি হইবার যে কত ইচ্ছা, তাহা তুমি বিশ্বাস 
কবিবে না। এখন আমাৰ বেড়াইবার ঝড় সাধ, কিন্তু হাপানি বুকে 
বাশ দিয়া চাঁপিয়। ধবিয়৷ বাখিয়াছে। আমা অন্তব নিয়তই বলে,_- 


পঞ্চাশৎ পরিচ্ছেদ ৬৪৭ 


তুমি আমার পরমাত্মীয়। কেন এরূপ মনে হয়, তাহ! কিছু বলিতে 
পারি না। অন্তবঙ্গ ও বহিবঙ্গেব কথা যাহা শাস্ত্রে দেখি, আমার বোধ হয়, 
তাহ। সত্য । 

ডাক্তার চন্দ্রশেখর কালীর একটা ফবমাইস আছে। তার কথা__ 
ইংবাজীতে যেমন [75, 9179 আছে, বাঙ্গ লাতে সেইরূপ চলুক । “সিদ্ধিপ্রদ 
লক্ষণচয়” ন'মক তাহাব হোমিওপ্যাথিক পুস্তকে 96 স্থানে সা ও 179: 
স্থানে তন্তা ব্যবহার কবিয়াছেন। যদি সেখানে একথানি পুস্তক পাও, 
সমস্ত বুঝিতে পারিবে । এ বিষয়ে তিনি তোমার মত কি জানিতে চান। 
বল তে! তাহাকে, তোমাব নিকট একখানি পুস্তক পাঠাইতে বলি, তিনি 
আহলাদেব সহিত পাঠাইবেন। উপস্থিত আমি তোমাকে তাহাব সমস্ত 
ভাঁব বুঝাইতে অক্ষম । 

অমবের বড় অস্ত্খ, শুনিয়াছ কি? একটু ভাল আছে-_শুনিলাম। 
আজ এইখানেই বিদায়। ইশ্বর তোমার তাজ! প্রাণ চিবদিনেব জন্য 
তাজা রাখুন। আশীর্বাদ করি, নির্মল চিবজীবি হউক। ইতি 


শ্নেহাকাজ্জী__গিরিশ। 


পরিশিষ্ট 
(১) 
গিরিশচন্দ্রের স্মৃতিরক্ষার্থ টাউনহলে বিরাট শোক-সভ। | 
( “গিরিশচন্তর-্বতি-সমিঠি” কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তিকা হইতে উদ্ধৃত) 
সভাপতি-__বর্ধমানাধিপতি মহারাজাধিরাজ 
মহাঁমাননীয় স্যার 


নিিভ্কল্সটল্ সহাভ্ডা ল্বাহাল্র । 

২২শে ভাদ্র, ১৩১৯, শুক্রবাব, অপবাহ্ৃ ৫ ঘটিকাঁব সময় কলিকাতাব 
টাউন হলে স্বর্গীয় মহাকবি গিবিশচন্দ্রে স্বৃতিবক্গাব জন্য এক মহতী সভাঁব 
অধিবেশন হইয়াছিল । গিবিশচন্দ্রেব মৃত্যুতে বাঙ্গালী জাতীব ও বঙ্গ- 
ভাষার যে মহা ক্ষতি হইয়াছে, তজ্জন্ত বিশেষ ভাবে শোক প্রকাশ ও 
মহাকবিব স্থৃতি যাহাতে বঙ্গদেশে স্থায়ীভাবে রক্ষিত হয়, তাঁহীব উদ্োগ- 
আয়োজন-কর্ে এই মহতী সভাঁব অনুষ্ঠান হয়। সম্পূর্ণ বিভিন্ন সম্পরদায়- 
তুক্ত ও পরম্পব বিপবীত ভাঁৰ ও কন্মানুষ্ঠানে বত বঙ্গেব শিক্ষিত অসংখ্য, 
আবালবৃদ্ধগণ এই সভায় উপস্থিত থাকিয়া! মহাকবি গিরিশচন্দ্রের টি 
অশেষ অদ্ধা প্রদর্শন কবিয়াছিলেন । 

মান্তবর শ্রীযুক্ত সারদাচবণ মিত্র মহাশয়ের প্রস্তাবে, বায় শ্রীযুক্ত 
বতীন্দ্রনাথ চৌধুরী মহাশয়েব অন্থমোদনে ও অধ্যাঁপক শ্রীযুক্ত মন্থমোহন 
বন্ধ মহাশয়েব সমর্থনে বর্ধমানের মহারাজাধিরাজ বাঁহীছুর সভাপতিব 
আষন গ্রহণ করেন। 


পরিশিষ্ট ৬৪৯ 


এই প্রস্তাব উত্থাপন করিয়! শ্রন্ধাম্পদ সারদীচরণ মিত্র বলেন -__ 
“মহাকবি, নটগুরু, নাট্যসম্রাট গিরিশচন্দ্র ঘোঁষ মহাশয় আমাদিগকে 
পবিত্যাগ করিয়া চলিয়! গিয়াছেন। তাহার অভাব সহজে পূর্ণ হুইবাঁর 
নহে। তিনি আমার জ্যেষ্ঠ সহোদরেব ন্তাঁয় ছিলেন। তীহাঁব সহোদব 
শ্রীযুক্ত অতুলকৃষখ ঘোষ আমাঁব সমপাঁগী। তীাহাঁব সহিত পরিচিত 
হইয়া আমি প্রথম জীবনে তাঁহাঁৰ সহিত অনেক সময় কাটাইয়াছি। 
তিনি আমাকে যথেষ্ট স্নেহ কবিতেন, আমিও তাহাকে অদ্ধা কবিতাম। 
ইদানীং নান! কার্যে ব্যন্ত থাকাষ যদ্দিও তাঁহাব সহিত আমাৰ সদাসর্ধবদ! 
আলাপের সুযোগ ঘটিত না, তত্রাচ অবসব মত প্রায় আমাদের দেখা 
সাক্ষাৎ ঘটিত। গিরিশবাঁবুব পাঠান্থবাগ অঙুলনায় ছিল। তিনি 
অবসব কাঁলেব অধিক সময়ই নানা পুস্তকাঁদি পাঠে ব্যয় কবিতেন। তিনি 
নানা বিষয়ে স্থপগ্ডিত ছিলেন। নাট্যসাহিত্যে তাঁহাব প্রভাবেব কথা 
বল! বাহুল্যমাত্র । গিবিশচন্দ্রেব ধর্ম, ইতিহাস ও সমাজতত্বপূর্ণ নাট্য- 
গ্রন্থাবলী তাহাকে অমব কবিয়া বাখিবে। আজ আমবা আমাদেব দেশেব 
সর্ধজনসমাদূত মহাকবিব বিরোগে শোকার্ত হইয়। শোকসভাব অধিবেশন 
কবিয়াছি। এমন মহাপুরুষেব স্থৃতি-সভাব যোগ্য সভাপতি পাওয়া বড় 
সহজসাধ্য নহে। বহু চিস্তাব পৰ আমবা বদ্ধমানেব মহাবাজাধিবাজ. 
বাহাছুবকে এই সভার সভাপতিত্বে ববণ করিবাব অভিলাষ করি। 
মহারাজা ধিরাঁজও মহাঁকবিব প্রতি শ্রদ্ধানিবন্ধন আমাদের অভিলাষ পূর্ণ 
কবিতে স্বীরুত হইয়া আমাদিগকে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করিয়াছেন। 
অতএব আমি প্রস্তাব কৰি যে বদ্ধমানাঁধিপতি মহাবাঁজাধিরাঁজ মহা মাননীয় 
স্যাঁব বিজয়টাদ মহাতাব বাহাদুর কে, সি, আই, ই; কে, সি, এস, আই) 
আই, ও, এম মহোদয় এই সভায় সভাপতির আসন গ্রহণ করেন ।” 

মহারাঁজাধিরাঁজ সভাপতির আসন গ্রহণ করিলে, প্রথমে সঙ্গীতাচাধ্য 


৬৫০ গিরিশচন্দ্র 


স্থক দেবকণ্ঠ বাগ্চি মহাশয় ভক্তি-গদগদ-চিত্তে “বঙ্গবাসী”-সম্পার্দক 
শ্রীযুক্ত বিহারীলাল সরকার-রচিত একটি স্থৃতি-সঙ্গীত * গাইয়া সকলকে 
মুগ্ধ করেন। 

তৎপরে সভাপতি মহা রাঁজাঁধিবাজ বাহীছুব সুগন্তীরম্বরে স্বীয় অভি- 
ভাঁষণে বলেন,__“অগ্যকাব এই মহতী সভা স্থখ-ছুঃখ, হর্-শোক 
উভয়ই মিশ্রিত। স্থখ ও শোক একত্র কেন? সুখ এই জন্ত-_-গিরিশ- 
চক্করেব ন্যায় প্রতিভাশালী মহাকবি আমাদেব মধ্যে ছিলেন । ছুঃথ 
কেন, তিনি আর আঁমাদেব মধ্যে নাই। অগ্যকাঁৰ এই সভাঁয় এমন 
অনেকে হয়ত উপস্থিত আছেন, ধাহাবা গিবিশবাবুব বচিত নানা রসপূর্ণ 
নাটকাদিব অভিনয় দেখিয়! তাহাঁব প্রতি শ্রদ্ধাবান হইরাছেন। আবার 





সপ পে ৯ সস . সঃ সপ 


গীতটী এই £-_ 
ঝিঝিট--একতালা। 

ওই শুন পুনঃপুন উঠে ধ্বনি-প্রতিধ্বনি, 
কোথ।য গিবিশ আজি, নট-কবি-চুডামণি। 
যে ভাবে যে আছে যথা, জানায বাথাব কথ, 
বুকে বয়ে মন্ম্ম ব্যথা, শোক বিকল ধধণী। 
সে যে শুধু কবি নয়, মানুষ মনীষাময়, 
দিগন্তে উজলি' রয় মহত্ব-বতন-খনি ! 
বিশ্ব-প্রেম বুকে বয়ে, বিশ্ব-প্রেম বিনিময়ে, 
যত কথা গেছে ক'য়ে, একে একে কত গণি ! 
এত গান কে গাহিল, এত প্রাণ কে ঢালিল, 
পুণ্যে তারে পেয়েছিল, ওই জন্মভূমি জননী-_ 
কেন মিছে কান! আর, কেন বা বেদন! ভার, 
নাহিক জীবন তা'ব, আছে তে| তার জীবনী । 





পরিশিষ্ট ৬৫১ 


এমন অনেকেও এখানে আছেন, ধাহারা তাহার গ্রস্থাবলী পাঠে গিবিশ- 
চন্দ্রকে “ক্ষেপা মায়ের ক্ষেপা ছেলে? বলিয়া চিনিতে পারিয়াছেন। তাহাব 
রচনাবলী হইতে অন্ততঃ ইহা! বেশ জান! যায় যে তিনি একজন মহা ভক্ত 
ছিলেন। তাহার নাটকাঁবলী পাঠ কবিয়া অনেকেই উপরুত হইবেন। 
তাহার নাটকসমূহে যে সকল ধন্মতত্ব লিপিব্ধ আছে, সে সকলেব 
আলোচনায় ভবিষ্যতে যে লোকে ডন্নত হইবে, তাহাতে সন্দেহ মাত্র নাই। 
এইরূপ একজন মহাঁকবিব স্থৃতি স্থায়ীভাবে বক্ষা কব! আমাদেব অবশ্য 
কর্তব্য ।” 

তৎপরে সভাপতি মহাবাঁজাধিরাজ বাহাদুর দেশমান্ঠ শ্রীযুক্ত 
ন্ুবেন্্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও উত্তবপাড়াৰ পৃ্জনায় রাজা শ্রীযুক্ত 
পিয়াবীমোহন মুখোপাধ্যায় মহোদয়দ্বয় প্রেবিত সভার সহানুভৃতিজ্ঞাপক 
পত্রদ্ধর পাঠ করিয়া তাহাদেৰ অপরিত্যজ্য কাবণে অন্ুপস্থিতিব বিষয় 
জ্ঞাপন কবিলেন। 

মহামান্ত শ্রদ্ধাস্পদ হ্যায় গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যার মহাশয় তখন প্রথম 
প্রস্তাবটি উত্থাপন করিয়া বলিলেন,__“আমাব উপর ঘে প্রস্তাবটি উত্থাপন 
করার ভার অপিত হইয়াছে । সে প্রস্তাবটা এই,--“বঙ্গীয় নাট্যজগতের 
অতুজ্জল নক্ষত্র, এঁতিহাসিক, সামাজিক ও ধর্ম্ৃতত্ব সম্বন্ধীয় বচবিধ 
_নাটকেব প্রণেতা এবং স্থপ্রসিদ্ধ অভিনেতা স্বর্গীয় মহাকবি গিবিশচন্ত্ 
ঘোষ মহোদয়ের মৃত্যুতে বঙ্গদেশের ও বঙ্গসাহিত্যের যে ক্ষতি হইয়াছে; 
তাহা সহজে অপনোদিত হইবে না । গিরিশচন্ত্রের মৃত্যুতে এই সভা 
গতীর শোক প্রকাশ করিতেছেন ।” প্রস্তাব পাঠ করিয়া তিনি বলিলেন, 
“যদিও অন্ঠান্ত বিষয়ের ন্যায় আমাদের বঙ্গীয় নাট্যশাল1 উন্নতির চরম 
সীমায় এখনও উঠে নাই, উত্তরোত্তর পরিবর্তন দ্বারা পূর্ণ উন্নতি পরে 
সাধিত হইবে, তত্রাচ ইহা! সর্ধববাদীসম্মত ও সকলের স্বীকাধ্য .যে গিরিশ 


৬৫২ গিরিশচন্ত 


চন্দ্রের ম্যায় নাট্য-কলা-কুশল ব্যক্তি বঙ্গীয় নাটাশালাব ও নাটকের 
প্রভূত উন্নতি সাধন কবিয়াছেন। পবে “গিরিশ-গৌরব' নামক খণ্ডকাব্য 
হইতে নিয়লিখিত হই চত্র উদ্ধৃত করিয়া বলিলেন__- 

টি “চিনেন জীবিত কালে, 

মবিলে অমর বলে, 
তাই কিহে চলে গেলে তুমি ?”* 
এই কয়েকটী কথা৷ গিবিশ- 

চন্দ্র সম্বন্ধে বর্ণে বর্ণে প্রযোজ্য । 
বাল্যে গিবিশচন্দ্র আমাব 
সহাধ্যায়ী ছিলেন এবং 
তখন হইতেই আমি তাহার 
গুণমুগ্ধ। গিবিশচন্দ্র যে 
কেবল আমাদেব শ্রদ্ধাম্পদ 
মাত্র তাহা নহে, গিবিশচন্ত্র 
আমাদের পুজাহ ছিলেন। 
তাহা কবি-প্রতিভা ও 
কবিত্বশক্তি অসাধাবণ ছিল। 
সেকৃসপিয়াবেব বিখ্যাত, 
নাটক “মাকৃবেথের” অনুবাদে 

মাতাল তিনি যে শক্তিৰ পরিচয় 
দিরাছেন, তাহ! অনন্যসাধাবণ। এই “ম্যাকৃবেথ* অভিনয়কালেও তিনি 





পা পা পপ পা 











" স্ুকৰি শ্রীযুক্ত কিবণচন্দ্র দত্ত মহ।শয়েব এই অতি হুন্দব কুদ্র কাব্যগ্রস্থখানি ধাহার। 
পাঠ কবিতে ইচ্ছা কবেন, তাহান্না। কলিকাতা, বাগবাজাব 'লশ্্রী-নিবাসে' সহদয় গ্রন্থকাবেব 
নিকট সন্ধান করিলে বিনামুল্যে প্রাপ্ত হইতে পারেন। 


পরিশিষ্ট ৬৫৩ 


নাট্যকলাভিজ্ঞতার বিশেষ পরিচয় দিয়াছিলেন। কেবল আমাব 
মত ব্যক্তি নহে, লক্ষ্মী ও সরম্বতীর ববপুত্র কলিকাতার খ্যাতনাম! 
মহাবাজ| যতীন্দ্রমোহন ঠাঁকুব প্রভৃতি মহোদয়গণ এই ম্যাঁকৃবেথ, 
অভিনয় দর্শনে মুগ্ধ হইয়। কবিকে বহুশ্রদ্ধা সম্মান দান কবেন। বঙ্গীয় 
নাট্যশাল!, সকল বিষয়ে নির্দোষ না হইলেও এ কথা৷ সকলেই স্বীকা 
কবিবেন যে গিরিশচন্দ্র সত্যসত্যই একজন লোক-শিক্ষক ও সমাজে 
হিতাকাজ্জী নীধী ছিলেন ।” 

পরে এই প্রস্তাব অন্থমৌদনকল্পে রাঁয় বাহাদুর ডাক্তার শ্রীযুক্ত চুনীলাল 
বন্থ মহাশয় বলেন,“পবম অদ্ধাম্পদ স্যার গুরুদাস যে প্রস্তাবেব 
প্রস্তাবক, তাহার অনুমোদনের বিশেষ আবশ্যকতা! নাই । কাবণ পূজ্যপাদ 
বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় অগ্যাবধি এমন কোনও প্রস্তাব লইয়! সাঁধারণেব 
নিকট উপস্থিত হয়েন নাই, যাহা জন-সমাজ কর্তৃক সসন্মানে সমথিত ও 
গৃহীত হয় নাই । এজন্য এই প্রস্তাব সম্বন্ধে আমাব বলিবাব কিছু নাই। 
তবে গিবিশচন্দ্রের সম্বন্ধে এই মাত্র বলা যাইতে পাঁবে যে অপব সাধারণেব 
ন্যায় গিরিশচন্দ্র কখনও আত্মদোষ গোপন কবিতে প্ররয়াসী হয়েন নাই। 
তাহার দূর্বল শাব উপব তিনি তীক্ষদৃষ্টি সর্বদা বাঁখতেন এবং সেই জন্য 
তিনি সেই গুলিকে জয় কবিতে পারিয়াছিলেন। গিরিশচন্দ্রের কীন্তিরাশিই 
তাহার স্বতিস্তত্ত, তবে আমাদেরও সেই স্থতি বক্ষার্থে কর্তব্য আছে”। 

পবে এই প্রস্তাব সমর্থন কবিয়া পণ্ডিত স্ুরেশচন্র সমাজপতি 
বলেন,-.দ্যুগ-প্রবর্তনকাঁবী নৃতন নৃতন শক্তি মানবসমাজে মধ্যে মধ্যে 
আবিভূতি হয়। ইহা জগতেব চিরন্তন নিয়ম। অন্মদীয় সমাজে সেই 
ভাবেই লোকগুরু শ্রশ্রীরামকুষ্ণদেব ও তদীয় শিষ্য গিরিশচন্দ্রের আবিভাব। 
গুরুদেবের ন্যায় নৃতন ভাঁব লইয়া শক্তিশালী মহাপুরুষ গিরিশচন্দ্র আমাদের 
মধ্যে আসিয়াছিলেন। মনীষা ও প্রতিভার অত্যভূদ্‌ সমাবেশে গিরিশচন্দ্র 


৬৫৪ গিরিশচন্্র 


দেশে নূতন ভাবের বস্তা ছুটাইয়াছিলেন। যথার্থই গিবিশচন্ত্র “ক্ষেপা! মায়ের 
ক্ষেপা ছেলে” ছিলেন” তৎপরে তিনি স্বরচিত “গিরিশচন্দ্র শীর্ষক 
নিম্নলিখিত প্রবন্ধটী পাঠ করেন ।-_ 
“গত ২৫শে মাঘ (১৩১৮ সাল) বৃহস্পতিবাব, বাত্রি ১টা, ২* মিনিটের 

সময় শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবেব রা 

একনিষ্ঠ ভক্ত ও প্রিয় 
শিল্ঠ, বাঙ্গালা বঙ্গভূমিব 
পিতৃত্ুল্যঃ নাট্যসাহিত্যেব 
চক্রবর্তী সম্রাট, কবিবব 
গিরিশচন্ত্র ঘোষ ইহলোক 
ত্যাগ করিয়াছেন । 

গিবিশচন্র অনভাসাধাবণ 
প্রতভার অধিকারী 
ছিলেন। তাহার বিয়োগে 
বাঙ্গালীর যে ক্ষতি হইল, 
তাহা সহজে পূর্ণ হইবাৰ 
নহে। চিরজীবন দেশেব 
সেবা করিয়া, মাতৃভাষাব 
পূজায় মগ্র থাকিরা, 
সাধনার সিদ্ধ হইয়া, চি 
কর্মবীর গিবিশচন্দ্র কর্ধ- কৌতুহল 

সত্র ছিন্ন করিলেন। বঙ্গের গৌরব-রবি অন্তমিত হইল। বঙ্গতৃমি ! 
তুমি যে রত্ব কালসমুদ্রে বিসর্জন দিলে, কুবেরের অলকায় সে রত্ব 
নাই। গিত্সিশ তোমার অঙ্ক শূন্য করিয়া দেশবাঁসীকে কাদাইয়া, 





পরিশিষ্ট ৬৫৫ 


বাঙলার নাট্যশালা ও নাট্যসাহিতোর সিংহাসন শুন্ত করিয়া, পৃথিবীর 
পান্থশালা ত্যাগ করিলেন। গিবিশে ন্বর্গাদপি গরীয়সী জননী 
জন্মস্ুমি! তোমার রত্রপ্রদীপ নিভিয়া গেল! বাঙগলায় পুপ্তীভূত-_ঘনীভূত 
অমানিশার অন্ধকাব ! এই অন্ধকারে স্তৃতির পবিত্র শ্মশানে, বাঙ্গালী ! 
অশ্রজলে গিবিশচন্দ্রের তর্পণ কব। 

গিবিশচন্দ্রেব জীবন অত্যন্ত বিচিত্র । বহু ঘাঁত-প্রতিঘাতে গিরিশচন্দ্রে 
“নিজত্ব” গঠিত হইয়াছিল। গিবিশচন্দ্র বু ভাবের আধার ছিলেন। 
পরম্পব-বিৰোধী বু ভাবেব এমন একত্র সমাবেশ মাঁনবজীবনে প্রায় দেখা 
যায় না। গিবিশচন্ত্র ভাবেব তবঙ্গে অভিভূত-_ মগ্র হন নাই । বীবের 
ম্যায় তাহাদিগকে আপনার অধীন কবিয়াছিলেন। ভাঁব-বীব গিরিশ 
হাসিতে হাসিতে সংসাবের হলাহল স্বযং পান কবিয়াছিলেন, গুকব কৃপায় 
নীলক্ হইতে পারিয়াছিলেন ; জীবেব দুঃখে কাদিতে কাঁদিতে গুকদত্ত 
অমৃত বাঙ্গীল! দেশেব দ্বাবে দ্বাবে বিতবণ করিষ! ধন্ হইযাঁছিলেন। 

গিবিশচন্ত্রের মনীষা! ও প্রতিভাঁব সমন্বয় হইয়াছিল। গিবিশচন্ত্ 
অসাধাবণ তীস্কবুদ্ধি ও স্বভাঁবত উজ্জল প্রতিভাব অধিকাবী ছিলেন। 
তাহার নাটকে, গাঁনে, কবিতায়, প্রবন্ধে, উপন্যাসে, বস-বচনায--সেই 
মনীষা ও গ্রতিভাঁর পৰিচয় দেদীপ্যনান। যে প্রতিভা নিত্য নৃতনের সৃষ্টি 
করিতে পাবে, যে প্রতিভা দেশ ও কালের প্রভাব অতিক্রম করিয়া, 
সন্থীর্ণতা, ক্ষুদ্রতা ও গতান্গগতিকতাঁকে বিজয় করিয়াঃ দিব্য অন্ুভূতির 
সাহাযো পৃতনেব স্থাষ্টি কবিয়া চরিতার্থ হয়, গিরিশচন্দ্র সেই প্রতিভার 
অধিকারী ছিলেন! চিরাঁচবিত সংস্কারের অনুশাসন, প্রচলিত পদ্ধতির 
প্রভাব গিরিশচন্ক্রের প্রতিভা ক্ষু্ করিতে পারে নাই। নাটক-কার 
গিরিশচন্দ্র নিপুণ ও সাহসী চিত্রকরের মত তুলিকাঁর ছই চারিটি টানে ছবি' 
সম্পূর্ণ ও সৃীব করিয়া দিতেন। মানসীর সীমন্তসিন্মূর উজ্জল করির়ু! 


৬৫৬ গিরিশচন্দ্র 


দিবার অথবা মোহিনীর কণ্ঠমালার মুক্তায় শুত্রতার আরোপ করিবার অন্ত 
গিরিশচন্দ্র কখনও “মিনিয়েচাঁর চিত্রকরেব ন্যায় বর্ণ-ফলকে ধীরে ধীরে ক্ষুত্র 
তুলিকা ঘর্ষণ করিতেন ন!! তীহাব প্রতিভা কৃত্রিম প্রসাধনের পক্ষপাতিনী 
ছিল ন1। বাণীর ববগুত্র গিরিশেব প্রতিভা কপালকুগুলার ন্ায় স্বভাঁব- 
স্থন্দরী। তাহার নাটকীয় প্রতিভা নিসর্গের মুকুর; জগৎ তাহাতে 
প্রতিবিদ্বিত হইত। তাই গিরিশচন্দ্র অনায়াসে, অবলীলায় বিশাল পটে 
ব্বর্গেব, মর্ত্যের ও নবকেব দেব মানব ও দানবের, বছিঃপ্রকৃতিব ও 
অন্ততঃ প্রকৃতির অপূর্ব চিত্র অঙ্কিত কবিতে পারিতেন। 

গিরিশচন্দ্রেব সৃষ্টি-শক্তি অতুলনীয় । তিনিও বিশ্বামিত্রেব ন্যায় 
সাহিত্যে নৃতন জগতের সৃষ্টি করিয়া গিয়াছেন। তাহার স্ষ্ট মাঁনব- 
পবিবাব, দেব-পরিবার প্রভৃতি যেমন অসংখ্য, তেমনই বিচিত্র । অনুভূতির 
উপাদানে কল্পনা মিশাইয়৷ তিনি চবিজ্রেব স্থষ্টি কবিতেন। আপনাব 
অনুভূত ভাব ঢালিয়৷ দিয়া মানসী প্রতিমার প্রাণ-গ্রতিষ্ঠা কবিতেন। 
মনোবৃত্তিব বিষম ছন্দ, পুণ্য ও পাপের সংঘর্ষ, ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাত ও 
এই সকলের অবশ্যম্ভাবী পরিণামে গিরিশচন্দ্র দিব্যদৃষ্টি ছিলেন। তিনি 
অনেক নৃতন, মৌলিক চরিত্রেব স্থষ্টি কবিয়া গিয়াছেন। সেই নৃতনেব 
বাজ্যেও তাহাব বিদূষক-চিত্রাবলী নূতন বলিয়া মনে হয়। সংস্কৃত 
সাহিত্যের *বিদূষক, ইংরাজী সাহিত্যে “বন” ফল্ট্রাফ, গ্রভৃতি 
গিবিশচন্দ্রের বিদূষক বা বকণচাদ প্রভৃতিব সন্গিহিত হইভে 
পাবে না। 

গিরিশচন্দ্র গীতি-কবিতায় সিদ্ধ ছিলেন। গিরিশের গান বাঙ্গালা 
অমর হইয়া! থাকিবে । তাহ! খাঁটা বাঙ্গালীর গাঁন। সে গানে বাঙ্গাল 
দেশের কবির, প্রেমিকের, নিবাশেব, স্থীব, ব্যঘিতের, বিপন্ের, 
সাধকেব, ভক্তের, ধর্মোন্মাদের হাদয়ের উচ্ছাস-_হুদয়-্পন্দন 'অন্ুভব করা 


পরিশিষ্ট ৬৫৭ 


যায়। তাহার রস-বচনাও অপূর্বব। তাহার ব্যঙ্গ বিদ্রীপ হীরকের ন্তায় 
সমুজ্জল। 

আদি-কবি বান্সীকি ও বেদব্যামের স্ষ্ট চরিত্বে যে গ্রতিভ। নৃতনতার 
ও যৌলিকতার আরোপ করিতে বিন্দুমাত্র সন্কুচিত হয় নাই, সে প্রতিভার 
শক্তি, সাহন ও সাফল্যের আলোচনা করিবার, পরিচন়্ দিবার শক্তি 
আমাদেব নাই। ভবিষ্ততে কোনও সৌভাগ্যবান শক্তিশালী ঘমালোচক 
সে সাধনায়, সিদ্ধ হইবেন। 

গিরিশচন্দ্র বাঙ্গালার নাট্যশালাঁর নবজীবন দান করিয়াছিলেন । 
তিনি রঙ্গভূমির জন্মদাতা কি না, এতিহাসিক তাহার নির্দেশ করিবেন । 
কিন্তু ইহা সত্য গিরিশচন্দ্রই এতদ্বিন পিতার মত বাঞ্ছালার রহ্বভূমির 
লালন পালন, এমন কি, শ্নান করিয়া আল্লিয়াছেন। এ জঅঙ্থন্ধে 
কালিদামেব ভাষায় বল! যায়, 

স পিতা পিতরক্কাপ়াং কেবলং জন্মহেতবঃ | 

দক্ষ, ম্যাকৃবেথ, যোগেশ প্রভৃতির ভূমিকায় থিরিশচন্দ্র যে অভিনম়- 
প্রতিভার পবিচয় দিয়াছেন, তাহা নট-সন্প্রদায়ের আদর্শ হইয়া থাকিবে। 

গিরিশচন্ত্রের অধ্যয়ন ও জ্ঞানার্জনের স্পৃহা দেখিয়৷ বিস্মিত হইতাঁম। 
শেষ বয়সেও গ্রন্থই তাহার একমাত্র অবলম্বন ছিল। গিরিশচন্দ্র চিরজীবন 
জ্ঞানসাগবের কূলে বমিয়! উপল সঞ্চয় করিয়াছিলেন। দর্শন, ৰিঞ্ঞান, 
সাহিত্য, পুবাণ, ইতিহাস, ধর্মশান্ত্র, সংবাদপত্র ও মাঁসিকপত্র, 
হোঁর্মিওপ্যা্থী চিকিৎসাশান্ত্র---তাহার নিত্য সহচর ছিল। তাহার 
তৃয়োদর্শন ও বিবিধ বিষয়ের জ্ঞান দেখিয়া বিন্ময়ের উদ্রেক হইত। বিতর্কে, 
যুক্তিবিন্তাসে__-গিরিশচন্দ্রের স্বাভাবিক পটুতা ছিল। মনীষার এমন 
অভিব্যক্তি এ জীবনে আর দেখিব কি? 

গিরিশচন্র শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের প্রসাদে নব-জীবন লাভ রবিযাছিলেন | 

৪২ 


৬৫৮ 


তিনি অগাধ বিশ্বাস ও দেবছূলভ তক্তির আধার ছিলেন। 
পূর্ববপৃরুষেব পুণ্যে ও প্রান্তনেব ফলে গিরিশ এই বিশ্বাস ও 


ভক্তির অধিকাবী হইয়াছিলেন। 


ত্যুকালে তিনি শ্রীশ্রীগুরুর চবণে 


সম্মিতমুখে আপনাকে নিবেদন ক | মৃত্ত্য যেন সেই বিশ্বাসেব 


হঠাৎ দুঃসংবাদে 
মোসাহেবী চাহিতেন না। 
বিধাতা লিখিয়৷ দিতে ভুলিয়া! গিয়াছিলেন। প্রকৃত প্রতিভা-_যশের 
ভিখারিণী নয়; সে বশকে--শের আঁকাঁজ্ষাকে বিজয় করিতে পাবে। 





আধার, ভক্তিব আধারকে 
স্পর্শ কবিতে কুন্টিত 
হইয়াছিল। শ্শানশায়ী 
গিবিশচন্দ্রেব শিবনেত্রে 
সেই অপূর্বন্বপ্লাবেশ, 
আব প্রশান্ত মুখে সেই 
প্রসন্ন হাঁস্তেব বেখা»_ 
তাহা কি ভূলিবাব? 
ধবাঁব পাহ্থশীল1+-_ 
কর্মভোগেব ভূমি ত্যাগ 
কবিবাবৰ জময় এমন 
হাঁসি হাসিয়। যাইবাব 
সৌভাগ্য কয়জনেব ঘটে ? 

গিবিশচন্দ্র যশেব 
কাঙ্গালী ছিলেন না। 
ব্ধুত, আত্মীয়তাব, বিনি- 
ময়ে তিনি সমালোচনা, 


ভস্ততিশ্ুক্কবান্ধবতা” গিরিশচন্দ্রেব ললাটে 


পরিশিষ্ট ৬৫৯ 


কবিবব। জীবনে তোগাব স্বতি করিবার অবকাশ দাও নাঁই; 
তুমি ত যশেব কাঙ্গাল ছিলে না! গিরিশচন্্র! আজ ব্রাঙ্মণের পুষ্পাঞ্জলি 
গ্রহণ কব। বাইশ বসব তোমাব স্নেহ ভোগ করিয়াছি। এখন তোমার 
স্মৃতি সেই ব্লেহের স্থান অধিকাঁব কবিয়া থাকুক । 

গিবিশচন্দ্রেব শেষ দাঁন_-শেষ বচনা-_€বিশ্বা মিত্র (তপোবল)। তিনি 
জাতিকে আম্মবিসর্জনেব উজ্জ্বল আদর্শ দাঁন কবিয়া গুকপদে আত্মনিবেদন 
কবিষাছিলেন। লোক-সেবা কবিতে কবিতে কর্দ্যজ্ঞেব ক্ষেত্র হইতে 
সাঁধনোচিত ধামে গমন কবিয়াছেন। তাহাব স্থষ্ট আদর্শ দেশে উজ্জল হইয়। 
থাকুক ।” 

প্রস্তাবটি সকলে দণ্ডায়মান হইয়৷ সসম্মানে গ্রহণ করিলেন। 

দ্বিতীয় প্রস্তাবটি এই £-_স্ব্গীয় গিবিশচন্দত্র ঘোষ মহোদয়ের মৃত্যুতে 
এই সভা তদীধ ত্রাঁতী শ্রীযুক্ত অতুলকৃষ্চ ঘোঁষ ও তীয় পুত্র শ্রীযুক্ত 
স্থরেন্্রনাথ ঘেষ মহাঁশয়দয়েব সভিত গভীর সমবেদনা ও সহান্ৃভৃতি 
প্রকাশ কবিতেছেন। এই সভাব সমবেদনা ও সহাম্ভৃতিজ্ঞাপক পত্র 
তাহাঁদেব নিকট প্রেরিত হউক ।৮ 

মাননীয় শ্রীঘুক্ত ভূপেন্্রনাথ বন্থ মহাশয় এই প্রস্তাব উথাপন 
কবিয়া বলেন,__গিবিশচন্দ্রেব মৃত্যুতে আমর সকলেই শোঁক-মন্তপ্ত,, 
এ কথ! বলাই বাহুল্য; এবং এ প্রকাব একটি প্রস্তাব যে সমবেত 
ভদ্রমগ্ডলী কর্তৃক গৃহীত হইবে, তদ্বিষয়ে সন্দেহ মাত্র নাই। বিশ বৎসর 
পূর্বে, শিক্ষিত সন্তান্ত ব্যক্তিবর্গ সাধাবণ নাট্যশালার সম্পর্কে থাকিতে 
ভাল বাসিতেন না, একথা অনেকেই জানেন। কিন্তু গত কয়েক 
বসরেব মধ্যে বঙ্গীয় সাধারণ নাট্যশাঁলার নানা উন্নতি সাধিত 
হওয়ায়, ইহা এখন আর শিক্ষিত-সমাজ কর্তৃক অনাদৃত 'নহে। বরং 
দেখা যাঁয় যে নাট্যশালাগুলি সমাজের হিতকর অনুষ্ঠানে পরিণত 'এবং 


৬৬০ গিরিশচন্জ 


তজ্জন্ত সন্ত্ান্ত ও শিক্ষিত সমাজের সহান্থভৃতি ও সমাদর পাইবার যোগ্য 
হইয়াছে। বর্তমান নাট্যশালাগুলি যে মার্জিত, সংস্কৃত ও উন্নত হইয়াছে 
তদ্ধিষয়ে সন্দেহ নাই । নাট্য-বিশারদ গিরিশচন্দ্র ঘোষ প্রমুখ সুধী মনীবি- 
গণ কর্তৃক বহ্গীয় নাট্যশালাগুলির এই উন্নতি সাধন হইয়াছে ইহা সর্বববাদী- 
সম্মত। মদীয় শিক্ষক বাবু অমৃতলাল বনু মহাশয়ও এই বিষয়ে আমাদের 
শ্রদ্ধার পান্র।” 

তৎপরে অমৃতবাজার-সম্পাদক শ্রীযুক্ত মতিলাল ঘোষ মহাশয় এই 
প্রস্তাব অন্রমোদনকল্পে বলেন,__“আমি ও আমাব প্রতিবেশী গিরিশ 
বাবু বু বৎসর পূর্বে পরিচিত এবং এক সঙ্গে বহু বংসব হ্ৃগ্তার 
সহিত কাটাইয়াছি। আমরা উভয়ে প্রায়ই আমার পৃজ্যপাদ অগ্রজ সেই 
ভক্ত-চুড়ামণি শিশিরকুমার ঘোঁষ মহাশয়েব সহিত কালাতিপাত করিতাম। 
গিরিশচন্্র একজন পবম ভাগবত ছিলেন তদ্দিষয়ে সন্দেহ মাত্র নাই। 
তাহার গ্রন্থে ভক্তিবসের বহুলপ্রচার ও প্রাধান্ত সকলেই লক্ষ্য কবিয়া 
থাকিবেন।” 

পরে প্রভুপাদ শ্রীযুক্ত অতুলরুষ্ণ গোম্বামী মহাঁশয় ওজন্বিনী ভাষায় 
বলেন,__প্রায় চারিশত বৎসর পূর্বে নদীয়ায় শ্রীচৈতন্দেব প্রথম 
,নাটকাভিনয় করেন। নাঁটকাভিনয়ে লোক-শিক্ষা হয় ইহাই তাহাব 
উদ্দেশ্টা ছিল। গিবিশচন্ত্রও সেই উদ্দেশ্টে গৌরচন্দ্রেব প্রদশিত 
পথ অবলম্বনে লোক-শিক্ষা-কার্য্যে নিয়োজিত হয়েন। মহৎ লোকেব 
দেহাস্তর ঘটলে তাহার সাধাঁবণ ক্রিয়াকলাপাদি বা দোধান্ুষ্ঠানাীদব 
আলোচনা কেহই কবেন না; সকলেই মৃতের গুণের আলোচনা করিয়া 
থাঁকেন। রসালের খোসা, আশ ও আঁটি ফেলিয়া সকলেই যেমন তাহার 
সেই অৃতায়মান রস গ্রহণ কবে, মহাত্মাগণেব তেমনই ছোট খাট দৌষ- 
গুলি ত্যাগ করিয়া! জীবনান্তে তাহাদের গুণাবলীই সাঁধাবণের আলোচ্য 


পরিশিষ্ট ৬৬১ 


হইয়া উঠে। গ্রিক্পিশচজ্রকেও ঠিক সেই ভাবে গ্রহণ করিলে আপনাদা 
দেখিবেন যে, এই মহাঁকৰি কেবল মাত্র কবি নহেন) তিনি একজন মহা- 
ভাগবত । গিরিশচন্্র তাহার “চৈতন্তলীলা” «বিন্ব মঙ্গল” আদি নাটক রচনা 
ও অভিনয় করিয়া বর্তমান বঙ্গীয় বৈষ্ব-সমাজের যে প্রভূত উপকার সাধন 
কবিয়াছেন, তাহা বল! নিশ্রয়োজন। গিরিশচন্দ্র তাহাব আচার্য্য, তাহার 
ইষ্টদেব ম্হাস্মা শ্রীবামকৃঞ্চদেবেব সংস্পর্শে থাকিয়া শ্রীগুরর অস্বতময় 
উপদেশাবশ্রী সম্যকভাবে গ্রহণ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন-_-একথা তাহার 
্রন্থাবলীব নিবি পাঠক ঘাত্রেই অবগত আছেন। গিরিশচন্দের ভক্তি- 
বস-পীযৃষ-পরিপূর্ণ নাটকাবলী আমাদের ও আমাদের ভবিষ্যদ্ংণীয়গণেব 
হৃদয়ে ভক্তি-লোত প্রবাহিত করিবে, তদ্বিষয়ে আব মতহ্বৈধ নাই” 
প্রস্তাবটা গৃহীত হইল । 

৩। তৃতীয় প্রস্তাব এই :-__ 

“স্বর্গীয় গিবিশচন্ত্রের উপঘুক্ত স্থতিরক্ষার অনুষ্ঠানের জন্য নিয়লিখিত 
ব্যক্তিগণ লইয়৷ একটি সমিতি গঠিত হইল” ।-__( স্থৃতি-সমিতির সভ্যগণের 
নামের তালিকাপাঠ ) 

্রস্তাবক প্রখ্যাত-নামা বাগ শন্ধাম্পদ শ্রীযুক্ত বিপিনচন্ত্র পাল মহাশয়। 
এই প্রস্তাবটি উপস্থাপিত করিয়! তিনি মর্্ম্পর্শী ওজন্বিনী ভাষায় বলিলেন-__ 
“গিরিশচন্দজ্রেব অনুষ্ঠিত কা্যাঁদি বুঝিতে বা সম্যকরূপে তাহার উপকারিতা 
উপলব্ধি করিতে দিন লাগিবে। গিরিশচন্দ্র একজন মহাকবি ছিলেন এবং 
তাহার শিক্ষা সার্ঘভৌমিক ছিল। কবি গিবিশচন্ত্রকে এক ভাবে ও 
মানুষ গিবিশচন্দ্রকে আর এক ভাবে গ্রহণ করিতে কেহ কেহ ইচ্ছুক, কিন্ধ, 
আমার মনে হয়-_সংসারের ধূলা-কাঁদায় মাথান এই কবি, আজকালকার 
কয়েকজন ব্যোমচাঁরী উড্ডায়মান কবির ন্তায়__ধাহারা বু উচ্চে আঁকাশে 
ভাঁব সংগ্রহ করিয়া আঁকাশ হইতে সংসারের লোকগণের উপর প্রতিভার 


৬৬২ গিরিশচন্দ্র 


ধারা বর্ষণ কবেন-_সাধাবণ্যে কবিত্বশক্তিব লীলাচাতুর্্য প্রকাশ করেন 
নাই। গিরিশচন্ত্র$এই সংসাবের মাহ্ষ-_-সংসারের ধূলা-খেলায় মলিন 
তইয়াও উন্নতি-সোপানে;দিন দিন আঁবোহণ করিয়া শেষে বহু উচ্চে উঠিয়া 
ছিলেন এবং উন্নতিব,চরম সীমায়ঃতাহাব সেই সংসার-ধুিবাশি সংস্কৃত 
হইয়া স্থবর্ণকণা-বৃষ্টিব গ্ঠায় রি 
সংসাববাসিগণেব  উপব 4 রে 
পতিত হইয়াছিল। আমাৰ | 
ধারণা, গিবিশচন্দ্র সেই জন্তই 
বি্বমঙ্গলেব চবিত্র ফুটাঁইয়! 
এ নামেৰ উচ্চাঙ্গেব নাঁটিক- 
খানি বচনা কবিতেঞ&পাবিয়া- 
ছিলেন ।» 

এই প্রস্তাবের অনুমোদন 
করিয়া নায়ক-সম্পাদক 
পণ্ডিতবর শ্রীযুক্ত পাঁচকড়ি 
বন্দোপাধ্যায় মহাঁশয মহা- 
কবিব স্থৃতি-রক্ষাকল্পে কোনও 
স্থায়ী-অন্তষ্ঠানেৰ জন্য উপস্থিত 
সভ্যমহোদয়গণেব নিকট 
অর্থভিক্ষাকল্পে লিলেন,__ 
“শৈবালদাম-বিজড়িত পক্কপূর্ণ 
সরোবরেই পঙ্কজ শতদল কমল ফুটিয়া থাকে । ধনীব মণি-কুট্টিমে 
পদ্ম ফুটে নাঁ। শতদল কমলই বাণীব পূর্ণার্ঘ্যের উপযোগী সম্ভার। 
গিরিশচন্দ্র বাঙ্গালার পক্কিল-ভাবপূর্ণ সরোঁধবের  শতদল-কমল। 





পরিশিষ্ট ৬৬৩ 


তাহার অভাব সহজে পূর্ণ হইবার নহে। আজ তাহারই স্থৃতি-সভা। 
তাহার স্থি যাহাতে স্থায়ীভাবে আমাদের দেশে রক্ষিত হয়, তজ্জন্ত 
কমিটি গঠিত হইয়াছে । বর্দমানাধিপতি মহাঁরাজাধিরাজ বাহার 
এই সমিতির সভাপতি । রায় শ্রীপুক্ত বতীন্ত্রনাথ চৌধুবী এম্‌ এ, বি-এল্‌ 
সমিতিব সম্পাদক। এই কমিটির হাতে মহাঁকবির স্বতি-রক্ষ1া উদ্দেশে 
যে কেহ যাহা দান কবিবেন,। তাহা সংবাদপত্রে বথাবীতি প্রকাশিত 
হইবে।” নাট্যকার পণ্ডিত ক্গীরোদপ্রসাদ বিদ্াবিনোদ মহাশয় সমর্থন 
কবিলে প্রস্তাবটি গৃহীত হইল। সর্বশেবে শ্রদ্ধেয় নাট্যাচার্য শ্রীযুক্ত 
অমুতলাঁল বন্থ মহাশয় সভাপতি মহাবাঞ্জাধিবাজকে খধন্তবাঁদ জ্ঞাপন 
কবিয়৷ বলিলেন,_-"গিবিশচন্দ্রেব এই সম্মানে আজ অভিনেতা মাত্রেই 
বুঝিতে পাঁবিবে যে নটজীবন হেয় নে । তাহাঁবা যদি গিবিশবাবুব পদাঞ্ক 
অন্ধসবণ কবিয়া আত্মোন্নতি কবিতে পাবেন, তাহাবাঁও সময়ে এইবপ 
সম্মানেব অধিকারী হইতে পাঁবিবেন। গিরিশবাবুব এই সম্মানে "আজ 
সমগ্র বঙ্গীয় নাট্যশাল! সন্মানিত ও সমস্ত নটকুল উৎসাহিত ।” 


( ২) 


গিল্িশচত্ঞ্র-স্মর্ভিস্ন ভ্ডা 

গিবিশচন্দ্রের পবলোঁক গমনেব পব প্রথম বৎসর বেলুড়মঠে তাহার, 
জন্মতিথি উপলক্ষে প্রথম উৎসব হয়। তাহার পব শ্রদ্ধেয় শ্রীযুক্ত দেবেন্রর- 
নর্ধি, বহু মহাশয়, স্বর্গীয় ভাক্তাব জ্ঞানেন্্রনাথ কাঞ্জিলাল, শ্রীযুক্ত শ্রীশচন্্ 
মতিলাল প্রভৃতিকে লইয়া প্রত্যেক বসব গিরিশচন্দ্রের জন্মতিথি উপলক্ষে 
ছোটখাটো! একটী উৎসব করিয়! আঁমিতেছিলেন। গ্রিরিশচন্দ্রের হযোগ্য 
পুত্র শ্রীযুক্ত স্বেন্্রনাথ ঘোষ মহাঁশয় অগ্যাবধি নিজ ভঙ্নে উক্ত তিথিতে 
উৎদব করিয়! থাঁকেন। 


৬৬৪ গিরিশচজ্ 


এই ক্ষুদ্র উৎসবই ক্রমে গিরিশচন্ত্র-স্বতি-সমিতি কর্তৃক সাধারণ উৎসবে 
পরিণত হয়। গিবিশচন্দ্রের পরলোক-প্রাপ্তির একাদশ বর্ষ পরে--এই 
স্মতি-সভাব প্রথম অধিবেশন ২৫শে মাধ (১৩৩০ সাল ) মনোমোহন 
থিয়েটারে হইয়াছিল । সন্ধ্যা ৬টায় সভার অধিবেশন নির্দিষ্ট হইয়াছিল, 
কিন্তু তাহাব অর্দঘণ্টা পূর্বেই বঙ্গালয় অসংখ্য দর্শকে পরিপূর্ণ হইয়া 
যায়। সভাপতি হ্ইয়াছিলেন-_স্বনামধন্ত দেশবন্ধু চিত্তবঞ্জন দাস। 
বু বক্তাগণেব বক্তৃতাঁৰ পব সভাপতি মহাশয় যাহ! বলিয়াছিলেন, তাহা 
সর্ববসাধারণেব বড়ই মর্মম্পর্শী হইয়াছিল। অমৃতবাজার ও ফরওয়ার্ড 
(৯ই ফেব্রুয়ারী ১৯২৪ ) বন্দে মাতরম্‌ ( ২৮শে মাঘ, ১৩৩০ সাঁল ) প্রভৃতি 
তাৎসাময়িক ইংবাঁজি ও বাঙ্গালা সংবাদপত্রে ইহাঁব রিপোর্ট বাহিব 
হইয়াছিল। আমব! সভাপতি মহাশয়ের অভিভাষণেব সাঁবাংশ পাঠক- 
বর্গকে উপহার দিতেছি £__ 

পৃতিন বসব পূর্বে ভগবানকে স্মরণ করিয়! প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম, 
যে ন্বরাঁজ ছাড়া কোন কথা কহিব না, স্বরাজেব কাধ্য ছাড়া অন্ত কোন 
কাধ্য করিব না, স্বরাজেব চিন্তা ছাড়া অন্য আর কোন চিন্তা করিব না, 
স্ববাজের সভ৷ ছাড়া অন্ত কোন সভায় যোগদান করিব না। তবে যদি 
বলেন, আজ কেন এ সভায় যোগদান করিলাম? ইহার উত্তর__ন্বরাজ 
কাহাঁকে বলে? ন্ব-বাজ-_নিজেব মূ্তি যাহাতে বিকাশ পায়-_তাহাই 
স্বরাজ। আমার স্ববাজ অর্থে সমস্ত জিনিস এসে পড়ে-_নিজেকে যেখানে 
গ্রকাশ। কবিকে চিন্তে গেলে-_-তীঁর ল্লেখাঁর ভিতর থেকে-_তীর 
কাধ্যের ভিতব থেকে-_তাকে চিন্তে হয়। তার লেখার মধ্যে শ্বরাজের 
কথা আমি পাই, তাই এই সভায় আজ আমি সভাপতিত্ব গ্রহণ করেছি । 
বেদান্তের কথা দুই একটা বলিলে আমার বোধ হয়__একেবায়ে অনধিকার 
চচ্চা হবে না। বেদান্তে বলে--ভগবান এক, আবার বহু--এই নিয়েই তো 


পরিশিষ্ট ৬৬৫ 


বেদাস্তে ঝগড়া । কেউ বল্ছে এক-_কেউ বল্ছে বহু। একের মধ্যেই 
আমরা বুকে পাই, আবাৰ বহুব মধ্যেই এক্‌কেই উপলব্ধি করি। 
কতকগুলি দেশ লইয়াই যে বিশ্ব-_তাহা নহে, এই ফুলের ( টেবিলের 
উপর ফুলের তোড়া দেখাইয়! ) মধ্যেই বিশ্ব বহিয়াছে,__ধিনি ধ্যানস্ত হইয়া 
দেখিবেন--তিনিই দেখিতে পাইবেন। আমি আমাৰ সম্পাদিত 'নারায়ণ, 
মাসিকপত্রে একটী স্তব লিখিয়াছিলাম _“হে ভগবান, তুমিই এক এবং 
ভূমিই বু; তোমাকে নহিলে আমাদেব চলে না, আঁধাব আমাদের 
নহিলেও তোমাব চলে না । গিবিশচন্ত্রকে আমি মহাকবি বলি কেন? 
যে কবিতায় ধন্ম নাই_-সে কবি অধিক দিন বাঁচে না । মহাকবি বলি 
কাকে ?_ বাব কবিতায়__বার রচনায়__জাতীয়তা আছে, ধর্ম আছে _ 
তাহাকেই মহাকবি বলি। চন্ডীদাস থেকে ঈশ্ববগুপ্ত পধ্যস্ত আমি 
আমাব “নাবায়ণ' পত্রে দেখাইয়াছি-_-কবিতাঁব মধ্যে জাতীয়তার কতবাব 
উত্থান ও পতন হইয়াছে। চণ্ডীদাসেব পব মহাপ্রভূর সময়ে এই ভাব 
বিশেষ জাগিয়! উঠিয়াছিল, তাহাঁৰ পবৰ আবাঁব ভাবতচন্দ্রেব সময় অনেকটা 
মলিন হুইয়! যায়, পবে বামগ্রসাদে তাহ! আবার জাগিয়! উঠে -আবার 
এই গিরিশ ঘোষে তাহা জেগে উঠেছিল। গ্িবিশবাবুর কবিতায়__ 
গানে-আমবা জাতীয়তা পাই- প্রাণ পাই-__দেশের একটা স্বরূপ-মুণ্ঠি 
দেখতে পাই, _ইহাই তাহার রচনাব বৈশিষ্ট্য । তাঁব কবিত৷ যাঁচাই 
করতে ইংলগু, স্কটলও, জান্্ীনিতে যেতে হবে না। তার কবিতায় 
বিলাতী ভাব নাই,__ভাব ধার কবতে তাঁকে বিদেশে যেতে হয় নাই। 
গিবিশচন্দ্র খাটি দেশী কবি,_-তিনি দেশীয় ভাবে-_দেশমাতৃকাঁর সেবা 
করেছেন-_দেশেব প্রাণের কথা ফুটিয়ে তুলেছেন__এই জন্যই তিনি 
মহাকবি-_দেশের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ কবি। এমন একদিন আন্বে, যেদিন 
সমস্ত জগৎ ভারতেব দ্বারে এসে _নতঙ্জীন্থু হঃয়ে--ভারতের ধর্ম, সাহিত্য, 


৬৬৬ গিরিশচন্দ্র 


কাব্য, নাটক আলোচনা ক/র্ব্”-তখন গিরিশচন্দ্র স্ববপ-মুক্তিতে তীঁদেব 
নিকট প্রকাশিত হবেন, এবং তখন তারা জান্তে পারবেন-_ গিরিশচন্দ্র 
কত বড !” 

পব বৎসব ষ্টটব থিয়েটাবে ( ৪ঠা ফাল্গুন, ১৩৩১ সাল ) গিবিশচন্দ্ের 
ত্রয়োদশ বাধিকী উর ভার অধিবেশন হইযাঁছিল। সভাপতি হইযা- 

রী ছিলেন-_পণ্ডিতবব শ্রীযুক্ত 

হীরেন্দ্রনাথ দত্ত বেদান্তরত্ব 
এম এ, বি-এল মহাশয। 
তিনি গিবিশচন্দ্রের 
প্রতিভ। সম্বন্ধে নানা কথা 
কহিয়া অবশেষে তাহাব 
“বিতিষক+ চবিত্র-স্ষ্টিব 
উল্লেখ কবিয়া বলেন, 
যেঃ কোন জাতির কোন 
নাটকে তাহা নাই বলি- 
লেও অত্যুক্তি হয় না। 

তৎপববৎসব ২৫শে 
মাঘ (১৩৩২ সাল) 
মিনার্ভ! থিয়েটারে চতুর্দশ 
বার্ষিকী স্থতি-সভার তধি- 
বেশনে মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত শ্রীযুক্ত হবপ্রসাদ শাস্ত্রী এম-এ, সি আই-ই 
মহোদয় সভাপতিব আসন গ্রহণ করিয়াছিলেন। গিবিশচন্ত্র সাহিত্যের 
ভিতর দিয়া কি অমূল্য সম্পদ দেশবাসীকে দিয়। গিয়াছেন, এতদ্সম্বন্ধে 
তিনি 'বহু সারগর্ত কথা বলেন। 





অপেক্ষ। 


পরিশিষ্ট ৬৬৭ 


গিল্লিম্শন তত্দল্স সম্ঞরল্প মুক্তি 
বর্ধমানাধিপতি মহারাজাধিরাজ শ্রীযুক্ত বিজয়টাদ মহাঁতাব বাহাছুব, 
কাশিমবাঁজাবাধিপতি মহাঁবাঁজ শ্রীমুক্ত মনীন্দরচন্দ্র নন্দী বাঁহাদুব, হাইকোটেব 
ভূতপূর্বব বিচাঁবপতি শ্তাঁব গুকদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মাঁননীর সাঁবদাচবণ মিত্র 
ও মাননীয় আশুতোষ চৌধুবী, মাননীয় ভূপেন্্রনাথ বন্সু, শ্রীযুক্ত প্রমথনাথ 
প্রামাণিক, ন্বর্গীয় রায় যতীন্দ্রনাথ চৌধুবী, স্বিখ্যাত পুস্তক-প্রকাশুক ও 
বিক্রেতা স্বর্গীয় গুকদাস চট্টোপাধ্যায়, শ্রীযুক্ত মনোমোহন পাড়ে, শ্রীযুক্ত 
কিব্ণচন্দ্র দত্ত, ডাক্তাব চন্দ্রশেখব কালী প্রভৃতি বহু গণ্যমান্য ব্যক্তিগণেব 
আন্ুকুল্যে পগিবিশচন্ত্র-ম্বতিসমিতি* কর্তক মহাঁকবিব একটা মর্মরমু্তি 
স্কাপনেব প্রস্তাব হয়। ইতিপৃর্বে এতদ্‌ উদ্দেশ্যে কনিকাতাব নাট্যুশালা 
গুলি সম্মিলিত হইয! সমবেত-অভিনষে তিন হাঁজীব, পাঁচশত মুদ্রা কমিটাব 
হস্তে তুলিয়া! দেন। 
বন্ধেব স্মপ্রসিদ্ধ ভাম্কব বি, ভি, ওয়াগ গিরিশচন্দ্রেব মন্মমব-মুগ্ডিটি নিন্মীণ 
কবেন। প্রস্তব মুণ্তি কলিকাতায় আসিলে “বঙ্গীয় সাহিত্য-পবিষত্-মন্দিবে, 
বহুদিন ধবিষা ইহ! বক্ষিত হয় । 


গিলিস্শ সাক 

,দেশপৃজ্য দেশবন্ধু স্বর্গীয় চিত্তরঞ্জন দাস মহাঁশয়েব উদ্যোগে, কলিকাতা 
কেবপোবেশন সেণ্টণল এভিনিউ সংলগ্ন পূর্বতন জোড়াঁপুকুব স্কোয়ার 
পার্কটী বিস্তৃত কবিয়! “গিরিশ পার্ক” নামকরণ কবিয়াছেন। “গিরিশচ্্র- 
স্বৃতি.সমিতি এইখানেই গিরিশচন্দেব মর্শব-ুষ্তি স্থাপনে সঙ্কল্প কবেন। 
প্রসিদ্ধ কন্ট্রাক্টাব কে, সি, ঘোষ কোম্পানী মৃত্তিব বেদী নির্মাণ করেন। 
আঁশ! করি, দেশবাসীর উৎসাহ এবং উদ্যে।গে প্রতিষ্ঠিত ণগরিশ পার্কে” 
গিরিশচন্দ্রের এই মন্বর মত্তির উন্মোচন উৎসব শীপ্রই সুসম্পন্ন হইবে। 


৬৬৮ গিরিশচজ্দ 


( ৩) 
মনাউক্ফে াওস্হ্ছি 

গিবিশচক্কেব হক্ম নাটাবসাহ্ভূতিব পবি5য় দিবাব জন্য সংস্কৃত 
অলঙ্কাব-শাস্মতে আমব। এই নাঁটকেৰ পঞ্চসন্ধি বিশ্লেষণ করিয়া 
দেখাইব। 

যদিও আমবা! গিরিশচন্দ্রেব মুখে *মুখং প্রতিমুখং গর্ভোবিমর্ষ উপ- 

ংহৃতি:» এই শ্লোকটী বহুবাঁব শুনিয়াছি, তথাপি তিনি সংস্কৃত অলঙ্কীব- 
শান্ত সম্যকভাবে আলোচনা কবেন নাই । কিন্তু কবিব সুক্ষনদর্শী প্রতিভা 
অজ্ঞাতসাবে সত্যেব কিরূপ অনুসবণ কবিয়াছে।ঃ_-সতনাম নাটকেব গল্প 
বিশ্লেষণ কবিলেই তাহা! বেশ বুঝা যাইবে। সংস্কৃত আলঙ্কাবিকগণ রসেব 
দিব দিয়া পঞ্চসন্ধিব বিচাঁব কবিয়াছেন, কিন্তু এন্থলে নাটকেব ঘটনা 
(10106) এবং উদ্দেশ্তেব দিক দ্রিষা পঞ্চসন্ধি বিচাব কবিতে হইবে । 

“সংস্কৃত অলঙ্কাব শাস্ত্রে মতে-_-নাটকং খ্যাতবৃত্ং স্যাৎ পঞ্চসন্ধি 
সমন্বিতম । নাটক পৌবাঁণিক অথবা! প্রতিহাঁসিক চবিত্রবিশিষ্ট এবং 
মুখ, প্রতিমুখ, গর্ভ, বিমর্ষ ও উপসংহ্ৃতি এই পঞ্চসন্ধিসমন্িত হইবে । 

এই পঞ্চসন্ধি নাটকীয় বস বা গল্প বিকাঁশেব পাঁচটি স্তর মাত্র। 
প্রথম স্তবে বীর্জ বপন ও ঘটনাব উৎপত্তি; দ্বিতীয়ে-_বিষয়াস্তব সুচন। ও 
প্রতিকূল অবস্থাব অবতাবণ|; তৃতীয়ে _-অন্থকৃূল ও প্রতিকূল অবস্থার 
সংঘর্ষ ; চতুর্থে বিভ্রপমাগম ও অতিক্রম ) পঞ্চমে-_ পরিণাঁম ফল।”% * 

শ্রহ্থ্ম অন্ক-_মুখসন্ছি__ীভ্ক ঙ্পান্ন ও হাস 

নাড়োল নগবে মহাস্ত নামে একজন সংনামী পণ্ডিত ছিলেন। 
বৈষ্ঞবী তাহাব কন্তা । মহান্তর এক শিষ্য ছিল-_বীর, ধীর, শাঙ্জজ্ঞ নাম 





* - যুক্ত দেবেন্জনাথ বু প্রণীত “শকুস্তলায় নাট্যকলা”” ( ৬৬ পৃষ্ঠ! )। 


পরিশিষ্ট ৬৬৯ 


রণেম্্র । আওরঙ্গজেব তখন হিন্দস্থানেৰ সম্রাট । বাদমাহী সেনা 
নাড়োলে আসিয়। একদিন অকারণে মহীস্তকে হত্যা করায় বৈষ্বীর 
সুপগ্তশক্তি জাগিয়া উঠিল; রণেন্ত্রকে বলিল-__নগবাল! মহিষাস্থুর বধ 
করেছেন, শুভ্ত-নিশুস্ত বব করেছেন, আমি শত্রু বধ ক্ষবো |” বণেক্ত 
গুরুহত্যা দর্শনে ইতিপূর্বরেই সঙ্কল্প করিয়াছে যে শক্রধবংস না করে যদি 
আমি পরকাল কামনা করি, যেন আমার শত্র-হন্তে মৃত্যু হয়।, এই 
উদ্দেশে সে সৎনামী-পবিব্রাজক ফকীররামেব উপদেশ গ্রহণ কবে। ফকীব- 
বাম তাহাকে উচ্চ কার্যে উৎসাহ দিয়! বমদীর মোহকারিণী শক্তি সম্বন্ধে 
সতর্ক হইতে বলেন। রণেন্্র বলে__-“রমণী হতে তাহার কোন ভয় নাই । 
প্রত্যুত্তর ফকীববাম বলেন, _“বাপুঃ তোমাৰ ভয় নাই, কিন্তু এটুকৃতে 
আমার ভয় হচ্ছে, । ইহাই নাটকেব বীজ । বৈষ্ণবী, রণেন্্র, ফকীররাম 


ও তাহাব শিষ্ক চবণদাস এবং পরশুরাম কাধ্যক্ষেত্রে অবতীর্ণ 
হইলেন । 


ভিজ্ঞীল অন্ক-_এ্রভিম্যুৎ্খ ভ্নক্হির _্ন্সুকুতল ও 
শ্রভিন্ুশ জ ব্ুস্থাক্ জনবভ্ভান্সরপী 


অনুকূল অবস্থা__ 

রণেন্ত্, বৈষ্ণবী প্রভৃতির উৎসাহে সৎনামী সম্প্রদায়ের মধ্যে আগুন 
জছলিয়াছে। আবাল-বৃদ্ব-বণিত উত্তেজিত বা অতঃপর কৌমাবীপৃক্তা কবিয়া 
বৈষ্ণবী বিদ্রোহের পতাকা ধারণ করিল। 
প্রতিকূল অবস্থা__ 

রণেন্ত্র নেতৃ-মুকুট ধারণ করিল) কিন্তু কৌমাবীব নিকট শক্তি প্রার্থনা 
না| করায় বৈষ্বী বলিয়া উঠিল-_“কি ক'ব্লে-_কি ক'লে ? এ দেখ__ 
দেবীর মুখ তমসাচ্ছন্্ হলো” । 


৬৭০ গিরিশচন্ু 


ভুভীম্্ অহ্-_গঞ্ডসন্কি-_অন্ুকুল ও 
৩ ভিকুতন সহচ্হর্খ্রঁ_ 

অন্ুকুল-_ 

বাঁদসাহী পাইকগণ নিবন্তব হিন্দুদেব উপর অত্যাচাঁব কবিবাব অছিলা৷ 
খুঁজিয়া বেড়ায়। শয্মক্ষেত্রে মককা লুট করিতে আসিয়া! এইবপ একজন 
পাঁইক চবণদাস কর্তৃক নিহত হইল। 
মোগল দুর্গীধিপতি কাবতবফ খা 
হত্যাকাবীকে চিহ্নিত কবিতে 
না পাঁবিয়। প্রাণদণ্ডেক ভীতি 
প্রদর্শন কবিষা' সহম্্র প্রজাকে 
কাবারুদ্ধ কবিলেন। তীহাব কন্তা 
গুলসাঁন! ইহীদেব মুক্তিব জন্য অনেক 
অনুনয় কবিলেও কোন ফল 
হইল না । কিন্তু চবণদাঁসেব কৌশলে 
সৎনামী সেনা সেই বাত্রে ছুর্গাধি- 
কাঁব কবিয়া বদ্ধ প্রজাগণকে মুক্ত 
কবিয়! দিল। কারতবফ খা বণে- 
ন্দের সহিত দন্দযুদদে পবাস্ত 
হইযা ফকীববাম কর্তৃক নিহত 

বাদ্ধক্যেব প্রারস্তে হইলেন । 

। প্রতিকূল-__ 

গুলসানা তথার উপস্থিত ছিল। অন্যেব অলক্ষিতে সে তথা 
হইতে পলাইল। অনুকূল ও প্রতিকূলেব সংঘর্ষে প্রতিকূল 
শক্তি প্রবল হইয়৷ উঠিল। গুলসান! দৃঢ় স্বল্প করিল--কোমলহদয় 





পরিশিষ্ট ৬৭১ 


রণেন্্রকে কটাক্ষ-সন্ধানে বিদ্ধ কবিষা পিতৃহত্যার প্রতিশোধ 
দিবে। 


চল্ভুর্থ ভহ- ল্িম্র লক্কি_ লিল" 
সমাগম ও আঅভিভ্রলম 


দেবীব ববে সতনামীদল দিনে দিনে দুদর্য হইয়া উঠিল। শত শত্র- 
দুর্গ একে একে তাহাদেব কবগত হইতে লাঁগিল। বণেন্রের হৃদয়ে 
এখনও প্রেমম্পর্শ কবে নাই। ক্রমে নানা ছলে-_কৌশলে- ছদ্মবেশে 
গুলসাঁনা বণেন্দ্রকে দুর্ভে্য মাঁধীঁজলে জড়িত করিল ;--কিন্তু সে নিজেও 
আপনাব মায়াজালে জড়াইয়া পডিল। রণেন্দ্রকে যেমন সে মুগ্ধ কবিষাঁছে, 
আপনিও তেমনি মুগ্ধ হইয়াছে । কেবল কঠোধ প্রতিহিংসা-তৃষ! তাহাঁব 
প্রেম-পিপাঁসাকে দমিত ক বিষ। বাঁখিল । 
বিদ্ধ সাঁগধ- 

কৌমাবী দেবীব নিষেধ-_বমণী-কটাক্ষে হদয না বিদ্ধ হয। গুলসানা 
বণেন্্রকে বিচলিত কিয়! সংনামী দীক্ষা গ্রহণ কবিল। কিন্ত আপনার 
প্রতিহিংসা-পণ হইতে এক পদ টলিল না। ক্রমে বণেন্ত্র যখন নিজ 
অন্তবে কলুষিত ভাঁব বুঝিল, তখন আব তাহাব প্রতিকাঁবের উপায় নাই। 
বৈষ্বীকে বলিল,__“ভগ্রিঃ তোমাব হস্তে তরবাবী রহিয়াছে, আমার 
“হৃদয় বিদীর্ণ কবিয়! যন্ত্রণাৰ অবসান কবো। আমি রমণী-প্রণয়ে মুগ্ধ-_ 
পু$পীষ্ট- আমাকে বধ কৰো! ।” 
বিদ্বু অতিক্রম 

বৈষবাঁ অস্তবে অন্তবে রণেন্দ্রে অবস্থা বুঝিল; কিন্তু রণেন্ত্রকে 
বুঝাইল--“তোমাব এ প্রেম নয়_দয়া। দেবীর পাঁয় মবর্জনা ভিক্ষা 
করিয়া যুদ্ধে অগ্রসর হও ।” বৈষ্ণবীর উৎসাহে রণেন্্র কথঞ্চিৎ আশ্বস্ত 


৬৭২ গিরিশচজ্ঞ 


হইয়া কৌমাবী-চরণে মার্জন! ভিক্ষা করিয়| যুদ্ধে মগ্রসব হইবার নিমিত্ত 
প্রস্থান কবিলেন। 
স্পহওলম আন্ক- উস্পসহহ্্রভি--পল্লিশাহ 

কৌমারীর বরে সৎনামী বীর্য হুর্যের সায়াহু-দীপ্তিব স্যাঁয় প্রভা বিস্তার 
করিয়া সম্রাট-সৈম্তকে ছাবখাব কবিতে লাগিল। আওবঙগজেব সম্স্ত 
হুইয়। উঠিলেন। এই সময় চাতুরীনিপুণা গুলসাঁনা আর এক কৌশল 
করিল; পঞ্চদশ মৌগলসৈন্ভ যেন তাহাঁকে বন্দী কবিবার চেষ্র' 
কবিতেছে, __এইভাবে তাহাঁদের সহিত কপটযুদ্ধ করিতে করিতে রণেন্দ্রকে 
ভূলাইয়৷ সংগ্রামের সন্ধিস্থল হইতে অন্তত্র লইয়া গেল। গুলসানাঁর 
আদেশে বণেন্দ্র বন্দী অবস্থায় সম্রাট-সমীপে নীত হইয়া! নিহত হইল, এবং 
সঙ্গে সঙ্গে গুলসানাও প্রাণ বিসঙ্জন করিল । 

অতঃপব বৈষ্ণবী সম্রাটেব নিকট স্বয়ং উপস্থিত হইয়া মৃত্যুভিক্ষা 
করিল। আওরঙ্গজেব তাহাকে সে দণ্ড দিলেন না । কিন্তু কৌমাঁরী 
দেবী_সেবিক] দৃহিতাকে নিজ অস্কে স্থানদান করিলেন। মৃত্যুব পূর্বে 
বৈষ্ণবী মোগল সম্রাটকে বলিল,__“শ্বেতবীরগণ (ইংরাজ ) তোমাৰ 
বংশ ধ্বংস করিয়া বীধ্যবলে ভারত-শাসন কবিবে। আব হিন্দুগণ__ 
কামিনী কাঞ্চন বর্জন কবিয়া যতদিন না দীন ভ্রাতৃসেবা করিবে ততদিন 
তাহাদেব মুক্তি নাই ।” 


(৪ ) 
গ্ুহতনঙ্ী (লা! জআ।কর্শ-গ্রুতিলী ১ 
ষড়চত্বাবিংশ পরিচ্ছেদে ( ৫৫৭ পৃষ্ঠায়) লিখিত হইয়াছ, কোহিম্থর 
থিয়েটারের জন্ত গিরিশচন্্র একখানি সামাজিক নাটক চাবি অঙ্ক পথ্যস্ত 
লিখিয়াছিলেন। গিরিশচন্দ্রেব পবমাত্মীয় স্বপণ্ডিত শ্রীধুক্ত দেবেন্দ্রনাথ 


পরিশিষ্ট 1৬৭৩ 


বন্থ মহাশয় ইহাব পঞ্চম অঙ্ক হিথিয়। দেন। গিরিশচন্তরে পরলোক 
গমনের সাত মাস পবে মিনার্ভ! থিয়েটাবে ৫ই আশ্বিন (১৩১৯ সাল) 
“গৃহলক্সী” গ্রথম অভিনীত হয়। প্রথমাভিনয় বজনীব অভিনেতৃগণ £-_ 
উপেন্ত্রনাথ__এন্বেক্্রনাথ ঘোষ ( দনিবাবৃ ।, শৈলেন্ত্রনাথ-_খি. 03 8761166 চ5৫7, 
( খাকবাবু ), নীবদ- এক্ষেত্রমোহন মিত্র, মন্মধ-_শ্রীসত্োন্্রনাথ দে, বৈগ্যনাথ__ 
শ্রীনগেন্্রনাথ দোষ, নিতাই-্র/প্রিষনাথ ঘোষ, হীকখেফাল-_গ্রীঅপবেশচন্ত্র মুখোপাধ্যায়, 
। জ্ _তারকনাথ পালিত, নকুলানন্দ__-পণ্ডিত এ্রীহবিভূষণ ভ্টাচাধ্য, শবৎ -খরহীয়ালাল 
চট্টোপাধ্যায়, “মতীশ ও পুলিসেব জমাদাব__অনুকূলচন্্র বটব্যাল (ত্যাঙ্গাস), প্রমথ ও 
জনৈক ভদ্রলোক-_শ্রামধুন্দন ভট্াচাধ্য ; বিহাবী, ডাক্তাব ও বেজিষ্রাব__ প্রীনবেন্ত্রনাথ 
সিংহ, জম।দার ও পুলিস ইন্স্পেক্টার _প্রীমৃতুযুঞ্জষ পাল, ভৈববা-_-ই্াহবিদাস দত্ত শ্তামা-_ 
মন্মথনাথ বন, পাওনাদাব ও পিয়াদ1_-।নিম্মলচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় (ভুলি), বেজিষ্টারের 
কর্মচাবী ও ১ দ্বাববান--এউপেন্দ্রনাথ বসাক,য় দ্বাববান ও পাহারাওয়ালা-__ত্র। জতেন্্রনাথ 
দে, ১ম পাওনাদাব ও পিযাদা--গ্রআশুতোষ ঘোষ, ২য় পাওনাদাব ও পিয়াদ1-_ শ্রীপু লনকুষঃ 
বন্দ্যোপাধ্যায়, বেলিফ- শ্রামন্মথনাথ বসাক, বিরজা- প্ীমত৷ তারাহুন্দবী, তবঙ্গি ণী-_এীমতী 
প্রকাশমণি, সবোজিনী-সাবাজিনী ( নেড়া ), মণি ও কুমুদিনীব মাত! _ শমী 
হেমন্তকুমারী, ফুলী--শ্রীমতী নাবপাহন্দরী কুমুদিনী-__এীমতী চাৰ শীল! ইত্যাদি । স্বত্বাধিকাবী 
শ্মনোমোহন পাড়ে, অধ্যক্ষ _এহবেন্দ্রনথ ঘোষ, শিক্ষক-_পণ্ডিত প্রীহবিভূষণ ভট্টাচাধ্য ও 
শহবেন্্নাথ ঘোষ, সঙ্গীত-শিক্ষক --শ্রীদেবক্ঠ বাগচী, নৃত্য-শিক্ষক-_প্ীসাত কড়ি 
গঙ্গোপাধ্যায়, রঙ্গভুমি-সঙ্জাকৰ-_ একালীচবণ দাদ। রি 
* যদিও গিবিশচন্দ্র নাটকথানি অসমাপ্ত অবস্থায় রাখিয়৷ গিয়াছিলেন, এবং 
তাহার পবিণাম কি হইবে, তাহা দেবেন্দ্বাবুকে জানাইয়া! দিয়৷ যান নাই, 
তথাপি তাহাব প্রিয়তম ভক্তের কগ্পন। এবং লিপিচাতুর্যে দর্শকগণ পঞ্চম অঙ্ক 
যে অষ্কউজ-গিবিত হইয়াছিল-_তাহা একেবারেই বুঝিতে পারেন নাই, 
বরং শেষাঙ্ক দর্শনে পবম আনন্দে নাটকেব ভূমি প্রশংস। করিয়! যান। 
চরিত্র-স্থত্টি এবং নাট্য-সৌন্দর্যে “গুহলক্মী” অতি অল্পদিনের মধ্যেই 
নাট্যামোদিগণের নিকট বিশেষ প্রতিষ্ঠালাভ করিয়াছিল । এ নাটকের 


৬৭৪ গিরিশচক্্র 


উপেক্দ্রেব চবিত্র সম্পূর্ণ নূতন ছাচে গঠিত হইয়াছে । গিবিশচন্দ্রেব সামাজিক 
নাটকে প্রায় সকল চবিত্রই কন্থা, কিন্ত এ নাটকেব নায়ক উপেন্ত্র এক 
প্রকাব নিশ্চেষ্ট কর্মহীন বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। সমগ্র নাটকেব ভিতর 
ইহা কাধ্য একটী এব* সেই কাধ্যেব ফলেই উপেন্দ্রে সংসাবে সকল 
অনিষ্টেব সৃষ্টি হইয়াছিল। 
আম্বা তাহাব পুত্র 
নীবদকে বিষয়েব মোক্তাব- 
নামা দিবাব কথা উল্লেখ 
কবিতেছি । সামান্য উত্তে 
জনায় উপেন্ত্র অসংযত 
এমন কি সংজ্ঞাশৃন্ত ভইয়া 
পঙডেন। অথচ ইহাঁবই 
চাবিদিকে লোভ, প্রতি- 
হিংস৷ প্রভৃতি দুজ্জয় 
বিপুচয় ঝঞ্ধাবিক্ষুন্ধ সাগ 
বেব স্তায় গর্জন কবিয়া 
তাহাকে মুুর্মহছু আহত 
কবিতেছে। ইহাতে 
পাহাড়কেও টলাইয়। 
দেয়-_উপেন্ত্র তো স্নায়বিক বিকাবগ্রস্ত বোগী! অন্ঠান্ত সামাজিক নাটকেব 
ন্যায় এ নাটকেবও চরিত্র-স্থষ্টি স্বাভাবিক এবং সকলগুধিঈ এুন্বক্ভাবে 
বিকাশ প্রাপ্ত হইয়াছে । বড় বউ “বিবজা*» চরিত্রের তুলনা নাই। একদিকে 
উপেক্জ্রের চবিজ্রে যেমন ধৈধ্যেব অভাব__ অন্যদিকে এই বড় বউ বিবজ! 
তেমনি সহিষ্ণভাব প্রতিমূর্তি । পুম্তকথানির বিশদ সমালোচনা কবিতে 





পরিশিষ্ট ৬৭৫ 


যাইলে অনেক কথা বলিবার আছে ।-_ পুত্রের উপর জননীর কুপ্রভাব যে 
কি বিষময় পরিণাম উৎপাদন করে-_-এ নাটকে তাহার চিত্র অতি 
নিপুণভাবে চিত্রিত হইয়াছে । কিন্ত অন্য সকল চরিত্র যাহাই হউক, 
গণিকা-কন্তা ফুলী এ নাটকের এক অপূর্ব স্থষ্টি ! “মোনাবাবুর এই মানসী 
কন্তা--সৌন্দর্যযে ও মাধুর্যে যেন একটী অপাধিব কুস্থম। হীরুঘোষাল, 
শব, কুমুদিনী এবং অবধূতের চরিত্র একেবারে সজীব। নাটকখানির 
সরভিনয়ও সর্ববাজনুন্দর হইয়াছিল । 
"" ১৯১২১৩ খরষ্টান্বেব বেঙ্গল গভর্ণমেন্টের রিপোর্টে প্রকাশিত 
হইয়াছিল £_-“1)75779৪ 31৪. 00870 006 ০0. 0118 0019 7১০০: 
659 10986 ০1 610০হ) ৪৪ )6 550101)9-1508150015 01 089 1869 
৪০ 91081) 0109000 01)0865 আ1)036 15080609801) 15 ৪. £98.9 
105৪ 6০0 09 7397%919919899.৮ 

[179 7367008] 40100101968 61010 29107. 19012-195 10885 
114) 2915, 587. 

নাটকথানি সাধারণে কিরূপ সমাদৃত হইয়াছিল; তাহা ইহার দ্বিতীয় 
সংস্করণে শ্রন্ধেয় শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ ঘোষ মহাশয়ের লিখিত “রুতজ্ঞতা- 
স্বীকার” পাঠে পাঠক অবগত হইবেন। যথা-_ ৪ 

“আমার পৃজাপাদ পিতৃদেব জীবনের শেষভাগে গৃহলক্ী” লিখিতে 
আরম্ত করেন; কিন্তু শারীরিক অনুস্থতানিবন্ধন এবং অন্ঠান্ত নান! কারণ 
কণড$ নাটকথানির চতুর্থ অস্ক পর্যযস্ত লিখিয়! রচনা স্থগিত রাখেন। তাহার 
্বগী হর পব; পুন্তকখানি অভিনয়ের বিশেষ উপযোগী দেখিয়! তাহা! 
সম্পূর্ণ কৃক্মিবার জন্য পৃজ্যপাদ পিতৃদেবের পিতৃত্বত্রেয আমার পরম শ্রদ্ধাম্পদ 
শ্ীযুক্তবাবু দেবেন্দ্রনাথ বস্থ খুল্লতাত মহাশয়কে অন্গুরোধ করি) এবং ইহার 
দ্বারা পঞ্চম অন্কটি লিখাইয়া৷ লই। দেবেজ্্বাবুর শ্রম যে বিফল হয় নাই, 


৬৭৬ গিরিশচন্দ্র 


অল্প সময়ের মধ্যে 'গৃহলক্ষী'র প্রথম সংস্করণ নিঃশেষিত হওয়ায় এবং 
অভিনয়কালে দর্শকবৃন্দের উচ্চ প্রশংসালাভ করায় তাহ স্থপ্রকাশিত 
হইয়াছে। শ্ীন্ুবেন্্রনাথ ঘোষ ।” 

অভিনয় আধন্ত হইবাব পূর্বে বঙ্গমঞ্চে পুষ্প-পত্র শোভিত গিবিশচন্দ্রেব 
প্রতিমুর্তির সম্মুখে সমবেত অভিনেতা ও অভিনেত্রী কর্তৃক নিম্নলিখিত 
“গিরিশ-বন্দন।” গীতটী গীত হয় ।-_ 


জয় 


“অদ্ধ শতাব্দী কর্মক্ষেত্রে অটল অদ্রির মত, 
সঘ্বণা-লজ্জা-ভয় বজ্ব-বঞ্ধা সহি সাধনে হইয়। বত, 
নাট্যশালা-নাটক-নট নবভাঁবে কবি গঠন, 

জ্ঞানধন্ম স্বদেশ-গ্রীতি বীজ করিয়া বপন, 

রঙ্গ মাত্র রঙ্গালয--কলঙ্ক কিয় দুর, 

বীবসচ্জ| ত্যলি, ফুলশধ্যা*পরি শযিত কে আজি শৃব? 
সে যে, বঙ্গের গৌবব, বঙ্গের সৌবভ, বঙ্গেব কৌস্তভহার, 
বঙ্গেব গিরিশ, বঙ্গের গ।াবিক, বঙ্গের সেকৃসপীয়ার। 


নাট্যশালা কুহ্গমমালায় সাজিয়া আজি যে নগবী, 

মত্ত করিছে নাট্যামোদীরে নিত্য নববস বিতবি, 

কষুব্ধচিত্ত হ'তেছে শিগ্ধ, পাষাণ হাদয় চূর্ণ, 

প্রেমিকজন প্রেমে বিভোব, তৃষিত প্রাণ পূর্ণ ! 

কেব! প্রাণপণে, এ বঙ্গ-প্রাঙ্গণে স্থজি এ নাট্যশালাঃ 
কঠোর সাধনে, তুলিল! জাগায়ে নিদ্রিত নাট্যকলা" - 
সে যে, হঙ্গের গৌবব, বঙ্গের সৌরভ, বঙ্গেব কোস্ত ভহার, 
বঙ্গের গিরিশ বঙ্গের গ্যারিক, বঙ্গের সেক্সপীয়ার! 


পরিশিষ্ট ৬৭৭ 


কেবা, পুরাগ-সমাজ-ইতিহাঁস হ'তে করিয়া চিত্র অঙ্কন, 
নবীন ছন্দে নাট্যজগতে যুগ কবিল! বন? 

নাটক নাটিকা-প্রহমন আদি বিবিধ কুমুমন্তরে। 

তীব্র অন্ুবাগে আজীবন কেবা পুজিল! নাট্যাগারে ? 
ধন্ত জনম, ধন্ঠ প্রতিভা, ধন্ঠ বচনা প্রাণময়, 

নবদেহ ধরি, নারায়ণ আসি দেখিলা যাহাঁব অভিনয় ! 
সে যে, বঙ্গেব গৌরব বঙ্গেব সৌবভ, বঙ্গেব কৌস্তভহার, 
বঙ্গের গিবিশ, বঙ্গেব গ্যারিক, বঙ্গেব সেক্সপীয়াব ! 


গুরুর অভাবে কে সে নটগুরু আপনি হইল! সিদ্ধ? 
“নিমঠাদ” বেশে গ্রথমাভিনয়ে কবিল৷ বঙ্গ মুগ্ধ ? 

উন্নত মাজ্জিত অভিনয়-কল। প্রচাব করিয়! বজে, 

বঙ্গ বঙ্গালয়-বীন্তি-মেখল! দানিলা অবনী-অঙ্কে । 
পুত্রকন্ত! সম নট-নটাগণে কবিল! শিক্ষ1 দান, 
চবণ-পরশে মুর্খ কতই লভিলা উচ্চ স্থান ! 

সে যে, বঙ্গেব গৌবব, বঙ্গের সৌবভ, বঙ্গেব কৌস্তভহাবঃ 
বঙ্গের গিবিশ, বঙ্গের গ্যারিক, বঙ্গেব সেক্সপীয়ার । 


'ীড়িত দরিদ্র-আর্ত-নিনাদে আর্রচিত্তে কেবা__ 
"্ঈ(রল] গ্রহণ আজীবন ব্রত দীন-অনাথ-সেব! ? 
বিপুলোগ্ভমে চিকিৎসা-শান্ত্রে লভিয়! গতীর জ্ঞান 
ভেষঞ্জ-পথ্য বিলায়ে নিত্য রাখিল1 লক্ষ প্রাণ ! 


৬৭৮ 


গিরিশচন্দ্র 


কাহাঁর বিহনে দীন-নয়নে ছুটিছে তগুধার-_ 

কে আর শুনিবে ব্যগ্র চিত্তে মর্মবেদনা তার ? 

সে যে, বঙ্গের গৌরব, বঙ্গের সৌরভ, বঙ্গের কৌন্ততহাঁর” 
বঙ্গের গিরিশ, বঙ্গেব গ্যাবিক, বঙ্গে সেক্সপীয়ার ! 


শ্রীবামরুঞ্ণ শ্রীমুখ-নি:স্ুত “ভৈরব” আখ্য! বাব 

বীবভক্ত মুক্তপুরুষ গ্ব বিশ্বাসাধার, 

গুরু-কপাবল-বর্ম পবিয়৷ বিজয়ী কর্মক্ষেত্রে, 

স্তুতি-নিন্দায় নহে বিচলিত, চকিত শত্র-মিত্রে ! 
বিরামবিহীন জীবন-সমরে উড়ায়ে বিজয়-নিশান, 
গুরুআজ্ঞ। পালি, «রামরুষ্” বলি তেয়াগিল কেবা প্রাণ? 
সেষে বঙ্গে গৌরব, বঙ্গের সৌবভ, বঙ্গের কৌন্তভহার, 
বঙ্গের গিরিশ, বঙ্গেব গ্যারিক, বঙ্গেব সেক্সপীরাৰ ! 


প্রীঅবিনাশচন্্রু গঙ্গোপাধ্যায় |”